তাফসীরে ইলমে গইব

Image result for কুরআনতাফসীরে ইলমে গইব

يعلم ما بين ايديهم و ما خلفهم و لا يحيطون بشيء من علمه إلا بما شاء

১) তিনি তাদের অগ্র ও পশ্চাত সম্পর্কে অবগত।তার ইলমের কোন অংশ কেউ অবগত হতে পারে না তবে যাকে তিনি ইচ্ছা করেন অবগত করান।

[সূরা বাকারা, আয়াত নং ২৫৫]

ইমাম বাইহাকী রহমতুল্লাহি আলাইহি  এই আয়াতের তাফসীরে লিখেছেন,

ولا يحيطون بشيء من علمه إلا بما شاء أي لا يعلمون من علمه إلا ما شاء أن يعلمهم إياه بتعليمه

তার ইলমের কোন অংশ কেউ জানে না, তবে যাকে ইচ্ছা তিনি তা জানান অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালা যাকে ইচ্ছা তাকে বিশেষ ইলম শিক্ষা দেন। [আল-আসমা ওয়াস সিফাত, ইমাম বাইহাকী রহমতুল্লাহি আলাইহি . পৃ.১৪৩]

ইমাম ইবনে কাসীর রহমতুল্লাহি আলাইহি  এই আয়াতের তাফসীরে লিখেছেন,

وقوله : ( ولا يحيطون بشيء من علمه إلا بما شاء ) أي : لا يطلع أحد من علم الله على شيء إلا بما أعلمه الله عز وجل وأطلعه عليه

অর্থাৎ আল্লাহর ইলমের ব্যাপারে কেউ অবগত হতে পারে না, তবে আল্লাহ তায়ালা কাউকে যদি অবহিত করেন তাহলে সে অবগত হতে পারে।

২. আল্লাহ তায়ালা সূরা কাহাফে হযরত খাজির আলাইহিস সালাম এর সম্পর্কে বলেছেন,

فَوَجَدَا عَبْدًا مِنْ عِبَادِنَا آتَيْنَاهُ رَحْمَةً مِنْ عِنْدِنَا وَعَلَّمْنَاهُ مِنْ لَدُنَّا عِلْمًا

অত:পর তারা উভয়ে আমার একজন নেককার বান্দার দেখা পেল, যাকে আমি আমার রহমত দান করেছি এবং আমার পক্ষ থেকে বিশেষ ইলম দান করেছি।[ সূরা কাহাফ, আয়াত নং ৬৫]

আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন,

عَالِمُ الْغَيْبِ فَلا يُظْهِرُ عَلَى غَيْبِهِ أَحَدًا إِلا مَنِ ارْتَضَى مِنْ رَسُولٍ فَإِنَّهُ يَسْلُكُ مِن بَيْنِ يَدَيْهِ وَمِنْ خَلْفِهِ رَصَدًا

অর্থাৎ তিনিই অদৃশ্য সম্পর্কে অবগত। অতএব তিনি তার গায়েবী বিষয় সম্পর্কে কাউকে অবহিত করেন না। তবে তার মনোনীত রাসূল ব্যতীত। সেক্ষেত্রে তিনি তার সামনে ও পেছনে প্রহরী নিয়োজিত করেন।

[সূরা জিন, আয়াত নং ২৬-২৭]

এ আয়াতের তাফসীরে ইবনে কাসীর রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন,

وهكذا قال هاهنا: إنه يعلم الغيب والشهادة، وإنه لا يطلع أحد من خلقه على شيء من علمه إلا مما أطلعه تعالى عليه

এখানে তিনি বলেছেন, আল্লাহ তায়ালা দৃশ্য-অদৃশ্য সব কিছু জানেন। কোন সৃষ্টি তার কোন ইলম সম্পর্কে জানতে পারে না তবে যাকে তিনি জানান, কেবল সেই জানতে পারে।

[তাফসীরে ইবনে কাসীর, খ.৬, পৃ.২৮৪]

ইমাম কুরতুবী রহমতুল্লাহি আলাইহি  বলেন,
قال علماؤنا: أضاف سبحانه علم الغيب إلى نفسه في غيرما آية من كتابه إلا من أصطفى من عباده....فالله تعالى عنده علم الغيب وبيده الطرق الموصلة إليه لا يملكها إلا هو : فمن شاء إطلاعه عليها أطلعه , ومن شاء حجبه عنها حجبه

আমাদের আলেমগণ বলেছেন, আল্লাহ তায়ালা কুরআনের অনেক আয়াতে গায়েব সম্পর্কিত জ্ঞানকে নিজের দিকে সম্পৃক্ত করেছেন, তবে তার নির্বাচিত বান্দাদেরকে কিছু গায়েবের সংবাদ দিয়ে থাকেন। সুতরাং একমাত্র আল্লাহর নিকটই গায়েবের ইলম রয়েছে। গায়েবের ইলম পর্যন্ত পৌছার রাস্তা সম্পর্কে তিনিই পরিজ্ঞাত। তবে তিনি যাকে ইচ্ছা তাকে গায়েব সম্পর্কে অবহিত করেন, যাকে ইচ্ছা তার থেকে গোপন রাখেন। [তাফসীরে কুরতুবী খ.৭, পৃ.২]

ইবনে হাজার আসকালানী রহমতুল্লাহি আলাইহি  ফাতহুল বারীতে লিখেছেন,

وأما ما ثبت بنص القرآن أن عيسى عليه السلام قال أنه يخبرهم بما يأكلون وما يدخرون وأن يوسف قال إنه ينبئهم بتأويل الطعام قبل أن يأتي ذلك مما ظهر من المعجزات والكرامات : فكل ذلك يمكن أن يستفاد من الاستثناء في قوله تعالى ( إِلَّا مَنِ ارْتَضَى مِن رَّسُولٍ ) ,فإنه يقتضي إطلاع الرسول على بعض الغيب , والولي التابع للرسول عن الرسول يأخذ وبه يكرم , والفرق بينهما أن الرسول يطلع على ذلك بأنواع الوحي كلها , والولي لا يطلع على ذلك الا بمنام أو إلهام , والله اعلم

কুরআনের স্পষ্ট নস দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে যে হযরত ইসা আ. তারা কী খায় ও সন্চয় করে সে সম্পর্কে বলেছেন এবং হযরত ইউসুফ আ. তাদের খাদ্যের ব্যাপারে ভবিষ্যৎবাণী করেছেন, গায়েব সংক্রান্ত এ বিষয়গুলো অবহিত হওয়ার বিষয়টি পবিত্র কুরআনের এই আয়াত দ্বারা বোঝা যায়, “ তিনিই গায়েব সম্পর্কে পরিজ্ঞাত। তিনি কারও সম্মুখে গায়েব প্রকাশ করেন না, তবে তার নির্বাচিত রাসূল ব্যতীত।” কেননা, এই আয়াত দ্বারা বোঝা যায়, রাসূলগণ কিছু গায়েব সম্পর্কে অবহিত। আর রাসূলের অনুসারী ওলীগণ তাদের কারণেই কিছু গায়েব সম্পর্কে অবহিত হন এবং তাদের মাধ্যমেই সম্মানিত হন। রাসূল ও ওলীর কিছু গায়েব সম্পর্কে অবহিত হওয়ার ক্ষেত্রে পার্থক্য হলো, রাসূল ওহী পাঠানোর সবগুলো পদ্ধতির মাধ্যমে গায়েব সম্পর্কে অবহিত হন, আর ওলী শুধু স্বপ্ন বা ইলহামের মাধ্যমে গায়েব সম্পর্কে অবহিত হন।” [ফাতহুল বারী, খ.৮, পৃ.৫১৪]

কাযী শাওকানী তাফসীরে ফাতহুল কাদীরে লিখেছেন,

إن الله سبحانه قد يطلع بعض عبيده على بعض غيبه

আল্লাহ তায়ালা কোন কোন বান্দাকে কিছু কিছু গায়েব সম্পর্কে অবহিত করে থাকেন।[ফাতহুল কাদীর, কাযী শাওকানী, খ.৩, পৃ.২০, শামেলা]

يخصص الرسول بالملك في اطلاعه على الغيب، والأولياء يقع لهم ذلك بالإلهام

ফেরেশতাদের মাধ্যমে গায়েব অবহিত হওয়ার বিষয়টি রাসুলগণের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য। ওলীগণ কিছু কিছু গায়েব সম্পর্কে অবহিত হয়ে থাকেন ইলহামের মাধ্যমে।

[তাফসীরে বায়যাবী, খ.১৩, পৃ.৩৬৪]

আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন ‘ আল্লামাকা মা লাম তাকুন তা’লাম ” আর্থাৎ, তিনি আপনাকে এমন জিনিস শিক্ষা দিয়েছেন যা আপনি জানতেন না “
( সুরা নিসা আয়াত ১১৩)

এ আয়াতে ব্যাখা করতে গিয়ে প্রসিদ্ধ তাফসীর গ্রন্থ “জালালাইন শরীফে” বলা হয়েছে ” আউযয়ু মিনাল আহকামে ওয়াল গাইব ” অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালা তাঁর রাসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা) কে শরীয়তের যাবতীয় হূকুম ও গায়েব সম্পর্কে শিক্ষা দিয়েছেন।

তাফসীরে সাভার ৪র্থ খন্ডে ২৭৫ পৃষ্টা রয়েছে,
“ইনণাহু(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা) লাম ইয়াখ রুজু মিনাদ দুনিয়া হাত্বা আ’লামাহু ল্লাহু বি জামইহি মুগি বাতিদ দুনিয়া ওয়াল আখেরাহ “
অর্থাৎ, আল্লাহর দুনিয়া এবং আখেরাতের সমস্ত গায়েব না জানানো পর্যন্ত রাসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা) দুনিয়া থেকে ইন্তেকাল করেন নি ।

তাফসিরে খায়েন ৪র্থ পারায় রয়েছে ;
” মা কানাল্লাহু লি ইয়াজ রাল মু’মিনিনা আলা মা ানতুম আলাইকুম “
উক্ত আয়াতের ব্যখ্যাু উল্লেখ করা হয়েছে – রাসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা) এরশাদ করেন , আমার কাছে আমর উম্মতকে তাদের নিজ নিজ মাটির আকৃতিতে পেশ করা হয়েছে যেমন ভাবে আদম (আলাহিস সালাম) এর কাছে পেশ করা হয়েছিল । আমাকে জানানো হয়েছে , কে আমার উপর ঈমান আনবে ? কে আমাকে অস্বিকার করবে ? যখন এ খবর মুনাফিকদের কাছে পোছলো তখন তারা ঠাট্টা করে বললো -কে তাঁর উপর ঈমান আনবে আর কে তাকে অস্বিকার করবে তাদের কে তাদের জন্মের পুর্বেই মুহাম্মদ(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা) জানতেন বলে বলেন । অথচ আমরা তাঁর সাথেই আছি – কিন্তু আমাদেরকে চিন্তে পারেন নি । এ খবর যখন রাসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা) এর নিকট পৌছলো । তখন তিনি মিম্বরের উপরে দাড়ালেন এবং আল্লাহর প্রশংসা করে ইরশাদ করলেন,

“( কালা মা বালআকওয়ামে তায়ানু ফি ইলমি লা তাসআলু নি আন শাঈন ফিমা বাইনাকুম ওয়া বাইনাস সাআতি ইল্লা আনবাইতুকুম বিহ্‌)
অর্থাৎ, এসব লোকেদের ( মুনাফিকদের) কি যে হলো আমার জ্ঞান নি্যে তারা বিরূপ সমালোচনা করছে । তোমরা এখন থেকে কেয়ামত পর্যন্ত যে কোন বিষয় সম্পর্কে আমাকে জিজ্ঞাসা করো আমি অবশ্যই উহা তোমাদের কে বলে দিবো”
(তাফসীরে খায়েন
ইলমে গইব হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নবুয়তের অন্যতম দলীল ।

Image result for রওজা শরীফের ছবিইলমে গইব হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নবুয়তের অন্যতম দলীল ।

১. হযরত আমর ইবনে আখতাব রাদ্বিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু হতে বর্নিত , তিনি বলেন , হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদিন আমাদেরকে নিয়ে ফজরের নামাজ পড়লেন । অতঃপর মিম্বরে আরোহন করলেন এবং আমাদের উদ্দেশে দীর্ঘ বক্তব্য প্রদান করলেন ; এমন কি যোহরের নামায পড়ালেন ।অতঃপর আবারো আরোহন করলেন মিম্বরে , আর বক্তব্য দেওয়া শুরু করলেন ,এমন কি আসরের নামাযের সময় উপস্থিত হল । অতঃপর মিম্বরে হতে নেমে আসরও পড়লেন । পুনরায় মিম্বরে আরোহন করে বক্তব্য দিতে দিতএ সুর্য অস্তমিত হয়ে গেল । সে দিন হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অতীতে যা কিছু এবং ভবিষ্যতে যা কিছু হবে সকল বিষয়ে আমাদেরকে সংবাদ দিয়েছেন । আমাদের মধ্যে যাঁদের স্মরণশক্তি অধিক তাঁরা সেসব (অদৃশ্য) সংবাদ বেশী মনে রাখতে পেরেছেন ।

( সুত্র : বুখারী শরীফ হাদিস নম্বর ৬২৩০ কিতাবুল কদর , মুসলিম শরিফ হাদিস নম্বর ২৮৯১ কিতাবুল ফিতান , তোরমিযী শরীফ হাদিস নম্বর ২১৯১ কিতাবুল ফিতান , আবু দাউদ শরীফ হাদিস নম্বর ৪২৮ কিতাবুল ফিতাম , মিসকাতুল মাসাবিহ : কিটাবুল ফিটাম ৪৬১ পৃষ্ঠা )

২.পবিত্র ক্বোরআনের ভাষায় বলা যায় - নবীপাক সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলায়হি ওয়া সাল্লাম-এর জন্য মহান আল্লাহ অজানা কিছুই রাখেন নি ; হোকনা তা অতীত কিংবা ভবিষ্যত । কিয়ামত পরবর্তি বেহেশত-দোযখের সংবাদ পর্যন্ত যেখানে লুকায়ে থাকতে পারেনি ।তাই তো তিনি উপস্থিত আনেক লোকের মনের খবর বলে দিয়েছেন , মুনাফিক্বেদের অন্তরে আবৃত অন্ধকার কুঠুরিতে লালিত কপটতা প্রকাশ করে মসজিদ থেকে তাদের অনেককে বের করে দিয়েছেন । এমন কি অনেক সাহাবীর আবেদন পরিপ্রেক্ষিতে তাদের বংশ তালিকা নিখুঁত ভাবে বলে দিয়েছেন এ গুলো কি প্রমান করে না নবীপাকের ইলমে গায়েব বিতর্কের উর্ধ্ধে একটি স্বীকৃত বিষয় ?

`৩.হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বাল্যবন্ধু নয় কেবল সারাজীবনের একান্ত সঙ্গী ইসলামের প্রথম খলিফা এবং নবীগনের পর যিনি শ্রেষ্ট মানুষ , সিদ্দিকে আকবর হযরত আবু বকর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ইসলাম গ্রহনের প্রক্কালে নবী করীমের কাছে তাঁর নুবুয়তের পক্ষে দলিল কি আছে জানতে চাইলে নবী করীম উত্তর দিতে গিয়ে ভ্রু কুঁচকে ফেলেন নি বরং দু'শ ভাগ দৃঢ়প্রত্যয় নিয়ে বলে দিয়েছিলেন কেন গত রাতে তুমি যে স্বপ্ন দেখেছ , আকাশের চন্দ্র-সুর্য তোমার কোলে এসে হাজির । আর সিরিয়া যাত্রাপথে সেই স্বপ্নের ব্যাখ্যাকারী তোমাকে যা কিছু বলেছে তাইতো আমার নুবুয়তের পক্ষে দলিল ।
এমন আশ্চর্যজনক তথ্যপ্রদানের অবস্থ হচ্ছে সিদ্দিক-ই-আকবরের স্তম্ভিত ! তিনি শতভাগ নিশ্চিত হলেন যে , এই অদৃশ্যজ্ঞানের সংবাদদাতা (নবী) কষ্মিণকালেও মিথ্যুক হতে পরেন না ।
৪.তদ্রুপ হযরত আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহুর কথা শোনা যাক । বদরের যুদ্ধের বন্দিদের কে মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ হলে অন্য বন্দীরা যথারীতি মুক্তিপণ আদায়ে ব্যস্ত । এ দিকে চাচা হযরত আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ও ঐ যুদ্ধবন্দীদের একজন । তিনি হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কাছে এসে আবেদন করলেন ইয়া হাবিবাল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ! আমি তো গরিব মানুষ ! মুক্তিপন দেয়ার মত আমার কাছে কোন সম্পদ নেই ।উত্তরে হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন " কেন চাচা ! আপনি যুদ্ধে আসার পুর্বে আমার চাচীর কাছে যে স্বর্নালন্কার লুকিয়ে রেখে এসেছেন সে গুলো কোথায় ? হযরত আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহূর সে গোপন সংবাদ তো দুনিয়ার বুকে অন্য কেউ জানার কথা নয় ! কিন্তূ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কিভাবে সুস্পস্টভাবে বলে দিলেন । তা রীতিমত বিষ্ময়ের ! না! এ ধরনের অদৃশ্য সংবাদদাতা কোনদিন মিথ্যুক হতে পারেন না । তাঁর কপালও চমকে উঠল । হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  হাতে নিজেকে সঁ'পে দিয়ে বলে উঠলেন হে আল্লাহর রাসুল ! আমাকে ইসলামের কালেমা শরীফ পড়িয়ে মুসলমান বানীয়ে দিন । আমি এতদিন ছিলাম গভীর অন্ধকারে নিমজ্জিত। এবার আলোতে আসতে চাই । নবীজি তাঁকে কালেমা পড়িয়ে নিজ হাতে বায়াত করে মুসলমান বানালেন । এ ভাবে একজন জাহান্নামী মুহুর্তে বেহেশতী হয়ে গেলেন । শুধু কি তাই ? নবীর পরশে শ্রেষ্ট সোনার মানুষে রুপান্তরিত হলেন ।
এ ভাবে হাজারো দৃষ্টান্ত রয়েছে যদ্বারা স্পস্ট প্রমাণিত হয় -মহান আল্লাহ তাঁর প্রিয় হাবীব কে ইলমে গায়েব দান করেছেন ।
এখন আরো কয়েকটি সহিহ হাদীসের উদ্ধৃতি পেশ করব যাতে সহীহ হাদীস ছাড়া অন্য কিছূ মানিনা বলে যারা গলার পানি শুকিয়ে ফেলে তারা বিষয়েটি শজে বুঝতে পেরে হিদায়াত লাভ করে ।

৫.হযরত ওমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত , তিনি বলেন একদা হুজুর নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালাম আমাদের সামনে দন্ডায়মান হলেন অতঃপর সৃষ্টিজগতের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তথা বেহেশত বাসীরা বেহেশতে এবং দোযখনাসীরা দোযখে প্রবেশ করা পর্যন্ত সবকিছু আমাদের সামনে বলে দিলেন । আমাদের মধ্যে যারা মুখস্ত রাখতে পেরেছে তারা মুখস্ত রেখেছে ; আর যারা ভুলে যাবার তারা ভুলে গেছে ।
[ বুখারী : হাদীস নং ৩০২০ : কিতাবু বাডয়িল খালক্ব ]

৬.হযরত হুযাইফা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্নিত । তিনি বলেন রাসুলে পাক সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের সামনে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে বক্তৃতা করলেন- সে দিন থেকে ক্বিয়ামত পর্যন্ত যা কিছু ঘটবে টার কোন বিষয়েই তাঁর বক্তব্যে বাদ দেননি । শ্রোতাদের মধ্যে যে মুখস্থ রাখার সে মুখস্ত রেখেছে আর যে ভুলে যাবা সে ভুলে গেছে ।
( বুখারী শরীফ হাদীস নং ৬২৩০ কিতাবুল কদর । মুসলিম শরীফ হা:নং২৮৯১ কিতাবুল ফিতন )

৭.হযরত আনাস বিন মালিক রাদ্বিয়াল্লাহু আহু হতে াপর এক হাদীস শরিফে দেখা যায় । তিনি বলেন একদা নবীপাক সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের মাঝে তাশরীফ আনলেন তখন সয়র্য পশ্চিমাকাশে দিকে ঝুঁকে পড়েছিল ( অর্থাৎ যোহরের নামাযের সময় হয়ে গিয়েছিল ) অতঃপর নবী করীম যোহরের মানায পড়লেন আর সালাম ফিরানোর পর মিম্বরে আরোহন করে ক্বিয়ামতের আলোচনা রাখলেন এবং ক্বিয়ামতের পুর্বেকার কতিপয় বড় বড় ঘটনা বর্ননা দিলেন আর উপস্থিত সাহাবিদেরকে সম্বোধন করে বললেন , খোদার কসম তোমরা আমার কাছে যা কিছু জানতে চাইবে আমি এই মজলিসেই সব প্রশ্নের উত্তর দেব ।
হযরত আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন হুজুরের বানীর এমন দৃঢ়তা দেখে আনসারী সাহাবাদের মধ্যে আনন্দের কান্নার রোল বয়ে গেলো । আর নবীপাক বারবার বলে যাচ্ছেন - তোমরা আমাকে প্রশ্ন কর , প্রশ্ন কর । অতঃপর এক ব্যক্তি দাড়িয়ে প্রশ্ন করল - হে আল্লাহর রাসুল ! পরকালে আমার ঠিকানা কোথায় হবে ? নবীপাকে বললেন জাহান্নাম । অথপর আবদুল্লাহ ইবনে হুযাফা বললেন -ইয়া রাসুল লাল্লাহ ! আমার পিতা কে ? নবী করীম বললেন - তোমার পিতা হুযাফা । নবীপাক আবার ও জোর তাগিদ দিয়ে বললেন , তোমরা প্রশ্ন কর , প্রশ্ন কর ।
অথপর ওমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু নবী করীম বরাবর সামনে গিয়ে বসলেন আর বললেন -আমরা সন্তস্ট আল্লাহ কে রব হিসাবে পেয়ে , ইসলাম কে ড্বীন হিসাবে আর মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে রাসুল হিসেবে পেয়ে । তিনি এসব কথা বলার সময় নবী করীম চুপ রইলেন । অতঃপর বললেন -সেই সত্তার কসম ! যার হাতে আমার প্রান , আমার এ দেয়ালের সামনে এই মাত্র বেহেসত ও দোযখ হাজির করা হয়েছে , যখন আমি নামায পড়ছিলাম , আজকের মত কোন ভাল-মন্দকেও দেখিনি ।
(সুত্র বুখারী শরীফ হাদীস নং৬৮৬৪ কিতাবুল ই'তিসাম , বিল কিতাবে ওয়াস সুন্নাহ :, মুসলিম শরীফ হাদিস নং ২৩৫৯ )
এ ভাবে অসংখ্য হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় রাসুলে আকরম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়া ষাল্লাম ইলমে গায়েবের অধিকারী ছিলেন । অবশ্যই তা আল্লাহ প্রদত্ত ।

৮.আর সত্তাগত আলিমুল গায়েব হলেন একমাত্র আল্লাহ । আর আল্লাহর রাসুলের ইলমে গায়েব আল্লাহ্‌ প্রদত্ত । যেমন এ পসঙ্গে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে -
'' মা কানাল্লাহু লি উতলিয়াকুম আলাল গাইবে ওয়া কিন নাল্লাহা ইজতাবিয়ু মির রুসুলিহু মাইয়া সায়ু ''
অর্থাৎ হে সাধারাণ লোকগন ! আল্লাহ তা'আলার শান নয় যে , তিনি তোমাদেরকে ইলমে গায়েব দান করবেন , তবে হ্যাঁ রাসুলগনের মধ্য হতে তিনি যাকে চান তাকে অদৃশ্যজ্ঞানের জন্য মনোনীত করেন ।( সুরা আলইমরান ১৭৯)
রসুলগণের মধ্য হতে যদি আল্লাহ পাক কাউকে নির্বাচিত করেন। তাহলে সর্বপ্রথমে কাকে নির্বাচিত করবেন টা সহজেই অনুমেয় ।
আরেক জায়গায় ইরশাদ হয়েছে ;
তিনি স্বীয় গায়েবের বিষয়ে কাউকে ক্ষমতাবান করেন না । কিন্তূ রাসুলদের মধ্য যার উপর তিনি সন্তষ্ট হন ( তাকেই ক্ষমতা বান করেন )
(সুরা জিন- আয়াত ২৬-২৭ )

৯.আল্লাহ তায়ালা ইরশদ করেছেন ' আল্লামাকা মা লাম তাকুন তা'আলাম " আর্থাৎ ' তিনি আপনাকে এমন জিনিস শিক্ষা দিয়েছেন যা আপনি জানতেন না "
( সুরা নিসা আয়াত ১১৩)
এ আয়াতে ব্যাখা করতে গিয়ে প্রসিদ্ধ গ্রন্থ জালালাইন শরীফে বলা হয়েছে " আউযয়ু মিনাল আহকামে ওয়াল গাইব '' অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালা তাঁর রাসুল সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহিস সালাম কে শরীয়তের যাবতিয় হূকুম ও গায়েব সম্পর্কে শিক্ষা দিয়েছেন ।
উপরে বর্নিত আয়াত এবনহ জালালাইন শরীফের ব্যাখ্যা দ্বারা বুঝা গেল
আল্লাহ রাব্বুল আলামিনন তানন হাবীব সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালাম কে ইলমে গায়েব জানাইয়াছেন । তাই আমরা বলি রাসুল সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালাম ইলমে গায়েব জানেন । অসংখ্য হাদিসে মাধ্যমে জানা যায় যে রাসুল সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালাম স্পস্ট বলে দিয়েছেন -কে কখন মৃত্যুবরন করবে ? কোন জায়গায় কে মারা যাবে এবং কার গর্ভে ছেলে সন্তান অথবা মেয়ে সন্তান রয়েছে ইত্যাদি।
যদি রাসুল সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালাম এ সব বিষয়ে গয়েব না জানতেন , তাহলে সম্স্ত গয়েবের সংবাদ কি ভাবে দিলেন ?
৯.তাফসীরে সাভার ৪র্থ খন্ডে ২৭৫ পৃষ্টা রয়েছে
"ইনণাহু সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালাম লাম ইয়াখ রুজু মিনাদ দুনিয়া হাত্বা আ'লামাহু ল্লাহু বি জামইহি মুগি বাতিদ দুনিয়া ওয়াল আখেরাহ "
অর্থাৎ আল্লাহর দুনিয়া এবং আখেরাতের সমস্ত গায়েব না জানানো পর্যন্ত রাসুল সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালাম দুনিয়া থেকে ইনতেকাল করেন নি ।
তাফসিরে খায়েন ৪র্থ পারায় রয়েছে ;
" মা কানা ল্লাহু লি ইয়াজ রাল মুক মিনিনা আলা মা ানতুম আলাইকুম "
উক্ত আয়াতের ব্যখ্যাু উল্লেখ করা হয়েছে - রাসুল সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালাম এরশাদ করেন , আমার কাছে আমর উম্মতকে তাদের নিজ নিজ মাটীর আকৃতিতে পেশ করা হয়েছে যেমন ভাবে আদম আলািহিস সালাম এর কাছে পেশ করা হয়েছিল । আমাকে জানানো হয়েছে , কে আমার উপর ঈমান আনবে ? কে আমাকে অস্বিকার করবে ? যখন এ খবর মুনাফিকদের কাছে পোছলো তখন তারা ঠাট্টা করে বললো -কে তাঁর উপর ঈমান আনবে আর কে তাকে অস্বিকার করবে তাদের কে তাদের জন্মের পুর্বেই মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালাম জানতেন বলে বলেন । অথচ আমরা তাঁর সাথেই আছি - কিন্তু আমাদেরকে চিন্তে পারেন নি । এ খবর যখন রাসুল সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালাম -এর নিকট পৌছলো । তখন তিনি মিম্বরের উপরে দাড়ালেন এবং আল্লাহর প্রসংসা করে ইরশাদ করলেন
(" কালা মা বালআকওয়ামে তায়ানু ফি ইলমি লা তাসআলু নি আন শাঈন ফিমা বাইনাকুম ওয়া বাইনাস সাআতি ইল্লা আনবাইতুকুম বিহ্‌")
অর্থাৎ " এসব লোকেদের ( মুনাফিকদের) কি যে হলো আমার জ্ঞান নি্যে তারা বিরূপ সমালোচনা করছে । তোমরা এখন থেকে কেয়ামত পর্যন্ত যে কোন বিষয় সম্পর্কে আমাকে জিজ্ঞাসা করো আমি াবশ্যই উহা তোমাদের কে বলে দিবো"
(তাফসীরে খয়েন )


বুখারী শরীফের ' বাদ্‌য়ু খালকে " শীর্ষক আলোচনায় ও মিশকাত শরীফের বাদয়ু খলকে ওয়া জিকরুল আমবিয়া শীর্ষক াধ্যায়ে হযরত উমর ফারূক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহূ থেকে বর্নিত অর্থাৎ হযরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন -- " রাসুল সাল্লাল্লাহু তায়ালা আনহু এক জায়গায় আমাদের সাথে অবস্থান করছিলেন । সে খানে তিনি আমাদের সৃষ্টির সুচনা তজেকে সংবাদ দিচ্ছিলেন - এমন কি বেহেস্তবাসী দোযখবাসী নিজ নিজ ঠিকানায় যাওয়ার াবধি পরিব্যাপ্ত যাবতিয় আবস্থা ও ঘটনা বলী প্ড়দান করেন ,যিনি ওসব স্মরণ রাখতে পেরেছেন তিনিতো স্মরণ রেখেছেন ; আর যিনি রাখতে পারেন নি তিনি ভুলে গেছেন । ( মেশকাত শরীফ ৫০৬)
মেশকাত শরিফের আল-ফিতনা অধ্যায়ে বুখারী ও মুসলিম শরীফ বরাত দিয়ে হযরত হুয়াইফা রাদিয়াল্লাহ আনহু থেকে বর্নিত হয়েছে
অনুবাদ : রাসুল সাল্লাল্লাহু তাআলা আলাইহিস সালাম সে স্থানে কিয়ামত পর্যন্ত যা কিছু ঘটবে সব কিছুর খবর দিয়েছেন । কোন কিছুই বাদ দেন নাই । যারা মনে রাখার তারা মনে রেখেছেন, আর যারা ভুলে যাওয়ার তারা ভুলে গেছেন ।( মিশকাত)
এ সমস্ত হাদীস শরীফের মাধ্যমে জানা গেল রাসুল সাল্লাল্লাহু তাআলা আলাইহিস সালাম সৃষ্তির শুরু থেকে কেয়ামত পর্যন্ত যা কিছু ঘটবে উহা জানতেন এবং উহার সংবাদ সাহাবাদের দিয়েছেন । 
নূরে মুজাস্‌সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ‘ইলমে গইব’-এর অধিকারী নন’ একথা বলার অর্থ হলো- সরাসরি কুরআন শরীফ-এর অনেক আয়াত শরীফকেই অস্বীকার করা; যা কাট্টা কুফরীর অন্তর্ভুক্ত।

Related imageনূরে মুজাস্‌সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ‘ইলমে গইব’-এর অধিকারী নন’ একথা বলার অর্থ হলো- সরাসরি কুরআন শরীফ-এর অনেক আয়াত শরীফকেই অস্বীকার করা; যা কাট্টা কুফরীর অন্তর্ভুক্ত।


মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “আল্লাহ পাক আলিমুল গইব। তিনি তাঁর মনোনীত রসূলগণ ব্যতীত কারো নিকট ইলমে গইব প্রকাশ করেন না।” নূরে মুজাস্‌সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অবশ্যই ‘আল্লাহ পাক প্রদত্ত ইলমে গইবের অধিকারী’, যা কুরআন শরীফ-এর অনেক আয়াত শরীফ দ্বারাই অকাট্যভাবে প্রমাণিত। কাজেই তিনি ‘ইলমে গইব’-এর অধিকারী নন’ একথা বলা- সরাসরি কুরআন শরীফ-এর অনেক আয়াত শরীফকেই অস্বীকার করার শামীল। আর কোন মুসলমান কুরআন শরীফকে অস্বীকার করলে সে ঈমানদার থাকতে পারে না বরং সে কাফিরের অন্তর্ভুক্ত হবে
‘গইব’ হচ্ছে এরূপ এক অদৃশ্য বস্তু বা বিষয়; যা মানুষ চোখ, নাক, কান ইত্যাদি ইন্দ্রিয়সমূহের সাহায্যে উপলব্ধি করতে পারে না এবং যা কোন দলীল-প্রমাণ ব্যতীত সুস্পষ্টভাবে ইলমের আওতায়ও আসে না। যেমন- জিন, ফেরেশতা, বেহেশত, দোযখ ইত্যাদি আমাদের জন্য গইব বা অদৃশ্য। কেননা এগুলোকে ইন্দ্রিয়ের সাহায্যে অথবা বিনা দলীলে শুধুমাত্র বিবেক বুদ্ধির দ্বারা অনুভব করা যায় না।
 ‘গইব’ দুই প্রকার। যথা- (১) যা যুক্তি প্রমাণভিত্তিক অর্থাৎ প্রমাণাদি দ্বারা অনুভব করা যায়। যেমন- বেহেশত, দোযখ মাখলুকাত, মহান আল্লাহ পাক-এর জাত, গুণাবলী এবং কুরআন শরীফ-এর আয়াতসমূহ দেখে এ সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা যায়।
(২) যা দলীলের দ্বারাও অনুভব করা যায় না। যেমন- ক্বিয়ামত কখন হবে, মানুষ কখন মারা যাবে ইত্যাদি। আর এ দ্বিতীয় প্রকার গইবকেই ‘মাফাতীহুল গইব’ বলা হয়।
কুরআন শরীফ-এ বর্ণিত ‘আল্লাহ পাক-এর নিকটেই রয়েছে গইবের চাবিকাঠি’ এ আয়াত শরীফ দ্বারা এরূপ গইবকেই বুঝানো হয়েছে।
 গইব যত প্রকারই হোক না কেন মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন হচ্ছেন (আলিমুল গইব) অর্থাৎ সর্ব প্রকার গইব বা অদৃশ্য বস্তু বা বিষয়ের ইলম আল্লাহ পাক-এর রয়েছে। আল্লাহ পাক বিনা মধ্যস্থতায় বা কারো মাধ্যম ছাড়াই ইলমে গইবের অধিকারী। আর এরূপ ইলমে গইব সম্পর্কেই মহান আল্লাহ পাক তাঁর কালাম পাক-এ ইরশাদ করেন, “আসমান-যমীনে আল্লাহ পাক ব্যতীত কারো ইলমে গইব নেই।” সূরা নমল/৬৫) অর্থাৎ বিনা মধ্যস্থতায় বা কারো মাধ্যম ব্যতীত যে ইলমে গইব তা শুধুমাত্র আল্লাহ পাক-এরই রয়েছে।
 পক্ষান্তরে আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হচ্ছেন “মুত্তালা আলাল গইব” অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তাঁর হাবীবকে সর্বপ্রকার ইলমে গইব দান করেছেন। যা কুরআন শরীফ-এর অনেক আয়াত শরীফ দ্বারাই অকাট্যভাবে প্রমাণিত।
মহান আল্লাহ পাক কালামুল্লাহ শরীফ-এর সূরা জিন’ এর ২৬, ২৭ নম্বর আয়াত শরীফ-এ ইরশাদ করেন, “তিনি (আল্লাহ পাক) আলিমুল গইব, তাঁর ইলমে গইব তাঁর মনোনীত রসূল ব্যতীত কারো নিকট প্রকাশ করেন না।” অর্থাৎ রসূলগণকে তিনি ইলমে গইব দান করেছেন। (সুবহানাল্লাহ)
এ আয়াত শরীফ-এর ব্যাখ্যায় বিশ্বখ্যাত ও নির্ভরযোগ্য তাফসীরগ্রন্থ “তাফসীরে খাযিন ও বাগবী শরীফ-এ” উল্লেখ আছে যে, “যাঁকে তাঁর নুবুওওয়াত ও রিসালতের জন্য মনোনীত করেন, তাঁকে যতটুকু ইচ্ছা ইলমে গইব দান করেন। তাঁর ইলমে গইব তাঁর নুবুওওয়াতের প্রমাণ স্বরূপ এবং তাঁর মু’জিযাও বটে।” শাব্দিক কিছু পার্থক্যসহ অনুরূপ ব্যাখ্যা তাফসীরে রুহুল বয়ান, জালালাইন, ছাবী ও আযীযীতেও উল্লেখ আছে।
মহান আল্লাহ পাক তাঁর কালাম পাক-এ ‘সূরা আলে ইমরান’-এর ১৭৯ নম্বর আয়াত শরীফ-এ আরো ইরশাদ করেন, “এটা আল্লাহ পাক-এর দায়িত্ব নয় যে, গইব বা অদৃশ্য সম্পর্কে তোমাদের (সাধারণ লোকদের) অবহিত করবেন। তবে আল্লাহ পাক তাঁর রসূলগণের মধ্যে যাকে ইচ্ছা ইলমে গইব দান করেন।”
উক্ত আয়াত শরীফের ব্যাখ্যায় বিশ্বখ্যাত ও মশহুর তাফসীর গ্রন্থ “তাফসীরে জালালাইন শরীফে” উল্লেখ আছে যে, “তবে আল্লাহ পাক যাঁকে (রসূল হিসেবে) মনোনীত করেন, তাঁকে ইলমে গইব দান করেন। যেমন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে মুনাফিকদের অবস্থা সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছিল।” উক্ত আয়াত শরীফ-এর এরূপ ব্যাখ্যা তাফসীরে বাইযাবী, খাযিন, কবীর, জুমাল, ছাবীসহ আরো বহু নির্ভরযোগ্য তাফসীরগ্রন্থে উল্লেখ আছে।
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে ইলমে গইবের অধিকারী তা ‘সূরা তাকভীর’-এর ২৪ নম্বর আয়াত শরীফ দ্বারাও প্রমাণিত হয়। যেমন, মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, তিনি (হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গইবের সংবাদ প্রকাশে কৃপণতা করেন না।”
এ আয়াত শরীফ-এর ব্যাখ্যায় তাফসীরে “মায়ালিমুত তানযীল”- কিতাবে উল্লেখ আছে, আল্লাহ পাক বলেন, নিশ্চয়ই হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট ইলমে গইব রয়েছে। সুতরাং তিনি তোমাদেরকে তার সংবাদদানে কৃপণতা করেন না। বরং তোমাদেরকে তা শিক্ষা দেন এবং গইব-এর সংবাদ প্রদান করেন।” অনুরূপ তাফসীরে খাযীন ও বাগবীতেও উল্লেখ আছে।
মহান আল্লাহ পাক ‘সূরা আর রহমান’-এর ১-৪ নম্বর আয়াত শরীফ-এ ইরশাদ করেন, “দয়াময় আল্লাহ পাক তাঁর হাবীবকে কুরআন শরীফ শিক্ষা দিয়েছেন, তিনি ইনসান সৃষ্টি করেন এবং তাঁকে বয়ান শিক্ষা দিয়েছেন।”
এ আয়াত শরীফ-এর ব্যাখ্যায় বিখ্যাত তাফসীরগ্রন্থ ‘তাফসীরে খাযিনে’ উল্লেখ আছে, “বলা হয়েছে যে, ইনসান দ্বারা উদ্দেশ্য হলেন হুযূর পাক ছল্ল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। আর বয়ান দ্বারা বুঝানো হয়েছে যে, যা ঘটেছে এবং যা ঘটবে, পূর্বাপর সমস্ত কিছুর ইলম আল্লাহ পাক তাঁকে দান করেছেন। কেননা তাঁকে পূর্ববর্তী-পরবর্তী এবং পরকালের সম্পর্কে সকল গইবী বিষয়ে ইলম দান করেছেন।” অনুরূপ তাফসীরে মায়ালিমুত তানযীল, হুসাইনী, ছাবীতেও উল্লেখ আছে।”
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তো অবশ্যই এমনকি পূর্ববর্তী নবী-রসূল আলাইহিমুস সালামগণ সকলেই যে ইলমে গইবের অধিকারী ছিলেন তার সূস্পষ্ট প্রমাণও কুরআন শরীফ-এ রয়েছে।
যেমন, হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “তোমরা কি খেয়েছ আর কি ঘরে রেখে এসেছ তা সবই আমি (হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম) বলে দিতে পারি।” (সূরা আলে ইমরান/৪৯)
আল্লাহ পাক আরো ইরশাদ করেন, “যখন তারা (হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম-এর সৈন্যবাহিনী) পিপিলিকা অধ্যুষিত উপত্যকায় পৌঁছলেন তখন এক পিপিলিকা বললো, হে পিপিলিকার দল! তোমরা তোমাদের ঘরে প্রবেশ কর। অন্যথায় হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম এবং তাঁর বাহিনী অজান্তেই তোমাদের পিষ্ট করে ফেলবেন। তার (পিপিলিকার) কথা শুনে হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম মুচকি হাসলেন এবং বললেন, হে আমার রব! আপনি আমাকে সামর্থ্য দান করুন যাতে আমি আপনার সেই নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করতে পারি যা আপনি আমাকে এবং আমার পিতা-মাতাকে দান করেছেন।” (সূরা নমল/১৮,১৯)
উক্ত আয়াত শরীফ-এর তাফসীরে রয়েছে, হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম পিপিলিকার সেই কথা তিন মাইল দূরবর্তী স্থান থেকে শুনেছিলেন যা তাঁর ইলমে গইবের অন্তর্ভুক্ত। (তাফসীরে জালালাইন, হাশিয়ায়ে শাইখযাদাহ)
কুরআন শরীফ-এর আয়াত শরীফসমূহ ও তার নির্ভরযোগ্য তাফসীর বা ব্যাখ্যা দ্বারা অকাট্য ও সুস্পষ্টভাবেই প্রমাণিত হয় যে, মহান আল্লাহ পাক পূর্ববর্তী সকল নবী-রসূল আলাইহিমুস সালামগণকেই ‘ইলমে গইব’ দান করেছেন। আর বিশেষ করে তাঁর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ইলমে গইবসহ সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সকল বিষয়ের ইলমই দান করেছেন। এ প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, আমাকে সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত বিষয়ের ইলম দেয়া হয়েছে। (মিশকাত শরীফ) অর্থাৎ আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হলেন, ‘মুত্তালা আলাল গইব’ যা উল্লিখিত আয়াত শরীফসমূহ এবং অন্যান্য বহু আয়াত শরীফ দ্বারাই সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত।
কাজেই ‘নূরে মুজাস্‌সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ‘ইলমে গইব’-এর অধিকারী নন’ একথা বলার অর্থ হলো- সরাসরি কুরআন শরীফ-এর অনেক আয়াত শরীফকেই অস্বীকার করা; যা কাট্টা কুফরীর অন্তর্ভুক্ত।
আসছেন মহাপবিত্র মহাসম্মানিত ১৯ শে রবিউছ ছানী শরীফ। সাইয়্যিদাতুনা হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার কিছু মুবারক কারামত

Related image
Image result for red flowerআসছেন মহাপবিত্র মহাসম্মানিত ১৯ শে রবিউছ ছানী শরীফ। সাইয়্যিদাতুনা হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার কিছু মুবারক কারামত
===============================================
মহিমান্বিত, নূরান্বিত, আলোকিত, উদ্ভাসিত, আনন্দিত, আন্দোলিত, হাস্যোজ্জ্বল, আড়ন্বরপূর্ণ, বেমেছাল শান-শওকত-জৌলুসযুক্ত এবং রহমত-বরকত-সাক্বীনাপূর্ণ এক মহান দিবস ১৯শে রবীউছ ছানী শরীফ। সর্বকালের সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, হাবীবে আ’যম, ফারূকে আ’যম, গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, হাবীবুল্লাহ, আওলাদে রসূল রাজারবাগ শরীফ-এর মহামান্য মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম এবং সাইয়্যিদাতুন নিসাইল আলামীন, আফদ্বালুন নিস, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদাতুনা মহামান্য হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনাদের কলিজা মুবারক-এর টুকরা মুবারক, নয়ন মুবারক-এর মণি মুবারক, হৃদয় মুবারক-এর প্রশান্তি, আদরণীয় প্রাণপ্রিয়া দ্বিতীয়া আওলাদ সাইয়্যিদাতুন নিসাইল আলামীন, ত্বহিরা, ত্বয়্যিবা, নিবরাসাতুল উমাম হযরত শাহযাদী ছানী আলাইহাস সালাম উনার আজিমুশশান বিলাদত শরীফ দিবস ১৯শে রবীউছ ছানী শরীফ। (সুবহানাল্লাহ!)
তাই এদিন মুরীদ-মুতাক্বিদ, আশিক আশিকাদের তথা সব হাক্বীক্বী দ্বীনদার মুসলমানদের জন্য এক মহান ঈদ। অর্থাৎ পবিত্র ঈদে বিলাদতে হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম। (সুবহানাল্লাহ!) এই মহান ঈদের শুরু আছে, শেষ নেই; আনন্দ আছে, বেদনা নেই; প্রাপ্তি আছে, বিয়োগ নেই।
যুগে যুগে অসংখ্য ওলীআল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা তাশরীফ আনলেও মহিলাদের মাঝে হক্কানী-রব্বানী ওলীআল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহিমা উনাদের সংখ্যা খুবই অপ্রতুল। যার কারণে মহিলাদের তালিম-তালক্বীন, হিদায়েত ও দ্বীনি জযবা অর্জনের ক্ষেত্রে আশানুরূপ সফলতা পরিলক্ষিত হয়নি।
দ্বীন ইসলামের ইলম সম্পর্কে জানা ও মানার ক্ষেত্রে নারীদের ক্ষেত্র ও পরিসর কিছুটা সীমিত। কারণ ইলম ও হিদায়েত লাভের ক্ষেত্রে পুরুষের সুযোগ-সুবিধা অনেকটায় প্রসারিত। কেননা পুরুষরা অবাধে মসজিদে যেতে পারে, ওয়াজ মাহফিলে যেতে পারে, আলিম-উলামাগণ উনাদের সাথে সরাসরি দেখা-সাক্ষাৎ তথা যোগাযোগ করতে পারে। কিন্তু সমাজে হক্কানী-রব্বানী আলিমা ও ওলীআল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহিমা উনাদের উপস্থিতি কম হওয়ায় ইলম ও হিদায়েত লাভে মহিলাদের সুযোগ-সুবিধা একান্তই সীমিত। আর যারা আলিমা দাবিদার রয়েছে, তাদের মাঝে লক্ষ-কোটি আক্বীদা-আমলের ত্রুটি পরিলক্ষিত হয়। যার কারণে তারা উলামায়ে ছু’তে পরিণত হয়েছে। তাই অনেক মেয়ে মাঝে দ্বীনি জ্ঞান অর্জনের আগ্রহ থাকলেও প্রয়োজনীয় সুবিধার অভাবে তা অনেক ক্ষেত্রে সম্ভব হয় না।
চিরন্তন সত্য যে, সংসর্গ প্রভাব বিস্তার করে। অর্থাৎ নেককার লোকের ছোহবতে নেককার হয় আর বদকার লোকের ছোহবতে বদকার হয়। একজন মহিলা বা বান্দীকে আল্লাহওয়ালী হতে হলে অবশ্যই একজন নেককার বুযূর্গ মহিলা ওলীআল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহিমা উনার ছোহবত ইখতিয়ার করতে হবে। ছোহবত ইখতিয়ার এবং নির্দেশনা মান্য করা ব্যতীত কস্মিনকালেও হিদায়েতের উপর কোনো মহিলা-মেয়ে ইস্তেকামত থাকতে পারবে না।
মহান আল্লাহ পাক এবং উনার প্রিয়তম হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা সীমাহীন রহমত-ইহসান করে সারা দুনিয়ায় দ্বীন ইসলাম পালনের এ কঠিন দুর্দিনে অন্ধকারাচ্ছন্ন হিদায়েতশূন্য নারীজাতিকে বাঁচানোর লক্ষ্যে, হিদায়েতদানের উদ্দেশ্যে এ হিজরী পনের শতকে যমীনে প্রেরণ করেছেন উনাদের মাহবুবা, লক্ষ্যস্থল, বেমেছাল বুযূর্গী, হুরমত ইজ্জতসম্পন্না একজন সুমহান মহিলা ওলীআল্লাহ আলাইহাস সালাম উনাকে। যিনি সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কলিজা মুবারক-এর টুকরা মুবারক তথা খাছ আওলাদ।
আজকের এই আত্মভোলা, পথহারা নারী জাতিকে সঠিক পথের সন্ধান দিতে এবং দু’জাহানে সফলতা দান করতেই সাইয়্যিদাতুন নিসাইল আলামীন, ত্বহিরা, ত্বয়্যিবা, নিবরাসাতুল উমাম হযরত শাহযাদী ছানী আলাইহাস সালাম উনার মুবারক তাশরীফ।
উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত বুযূর্গী-সম্মান অতুলনীয়া। তাই বর্তমান যুগে হক্ব মত ও পথ আশাকারিনী সকলেরই ফরয দায়িত্ব উনাকে মুহব্বত করা।
সাইয়্যিদাতুন নিসাইল আলামীন, ত্বহিরা, ত্বয়্যিবা, নিবরাসাতুল উমাম হযরত শাহযাদী ছানী আলাইহাস সালাম উনার মুবারক ছোহবত ইখতিয়ার করার তথা উনার মুবারক দীদার লাভ করার সৌভাগ্য অর্জনকারিনীগণ সর্বপ্রকার হীনমন্যতা মুক্ত হয়ে অতি সহজেই দ্বীনি জযবা ও প্রজ্ঞাসম্পন্ন হয়ে যাচ্ছেন। (সুবহানাল্লাহ!)
সাইয়্যিদাতুন নিসাইল আলামীন, ত্বহিরা, ত্বয়্যিবা, নিবরাসাতুল উমাম হযরত শাহযাদী ছানী আলাইহাস সালাম তিনি মহান বারে ইলাহী আল্লাহ পাক উনার প্রিয়তম হাবীব সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সাথে বান্দা ও উম্মতদের অপূর্ব উপায়ে সংযোগ ঘটিয়ে দিচ্ছেন। মুসলমানদের ঈমানী জযবা, আখলাক্বের পবিত্রতা ও ইসলামী মুহব্বত ফিরিয়ে দিচ্ছেন। মুসলমানদের ঈমানের প্রথম, প্রধান ও মূল শর্ত আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুহব্বত। যে মুহব্বত থাকলে মুসলমান স্বতঃস্ফূর্তভাবে সব ইসলামী তথা সুন্নতী আমল করে এবং সতর্কভাবে সব অনৈসলামী আমল থেকে দূরে থাকে।
মূলত, যতই ফিকির করা যাবে ততই উপলব্ধি করা যাবে উনার শান মান ফাযায়িল ফযীলত বুযূর্গী সম্মান অরাউল অরা অরাউল অরা অরাউল অরা।(সুবহানাল্লাহ!)
সঙ্গতকারণেই এ সত্য এখন আমাদের স্বতঃস্ফূর্তভাবে এবং বুলন্দ আওয়াজে উচ্চারণ করতে হবে। সর্বত্র বিস্তৃত করতে হবে। সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে হবে। মহান আল্লাহ পাক এবং উনার প্রিয়তম হাবীব সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সন্তুষ্টি যদি কেউ পেতে চায়, তবে তাকে অবশ্যই সাইয়্যিদাতুন নিসাইল আলামীন, ত্বহিরা, ত্বয়্যিবা, নিবরাসাতুল উমাম হযরত শাহযাদী ছানী আলাইহাস সালাম উনাকে মুহব্বত করতে হবে এবং উনার মহান ছোহবত ইখতিয়ার করতে হবে।
সাইয়্যিদাতুন নিসাইল আলামীন, ত্বহিরা, ত্বয়্যিবা, নিবরাসাতুল উমাম হযরত শাহযাদী ছানী আলাইহাস সালাম উনার রয়েছে লক্ষ-কোটি কারামত। যা উনার আযিমী শান ও মর্যাদারই বহিঃপ্রকাশ।
সন্তুষ্টি ও নিছবত লাভের প্রত্যাশায় দু’/চারটি উল্লেখ করা হলো-
*** আমাদের এক পীরবোন যিনি হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে বিশেষ দ্বীনি তালিমী সফরে একবার কুড়িগ্রামে যান। তখনও উনার বিয়ে হয়নি। সফরে অবস্থানস্থল স্মৃতি হোটেলে দাঁড়িয়ে সে এলাকার একজন পীরবোনের সাথে কথা বলছিলেন। ঠিক তখনই সাইয়্যিদাতুন নিসাইল আলামীন, ত্বহিরা, ত্বয়্যিবা, নিবরাসাতুল উমাম হযরত শাহযাদী ছানী আলাইহাস সালাম তিনি সেই সফরকারী পীরবোনকে দেখে বলেছিলেন, “দেখো, বেশি কথা বললে তোমাকে আবার ভাইয়ের বউ বানিয়ে নিবে।” কথাটি শুনে পীরবোনটি খুব লজ্জা পেয়ে যায়। পরবর্তীতে ২/৩ বছর পরে দেখা যায়, সত্যি উক্ত পীরবোন যে মহিলার সাথে কথা বলেছিল সেই মহিলার ভাইয়ের সাথেই উক্ত পীরবোনের শাদী অনুষ্ঠিত হয়। সুবহানাল্লাহ!
ঘটনাটি দ্বারা সহজেই সাইয়্যিদাতুন নিসাইল আলামীন, ত্বহিরা, ত্বয়্যিবা, নিবরাসাতুল উমাম হযরত শাহযাদী ছানী আলাইহাস সালাম উনার ইলমে গাইবের বিষয়টি প্রকাশ পায়।
*** এক পীরবোন সন্তানসম্ভাবা ছিলেন। বাচ্চা হওয়ার পূর্বে তিনি খুব চিন্তিত ছিলেন। মনে মনে খুব চাচ্ছিলেন যেন দ্বিতীয় বাচ্চাটি অপেক্ষাকৃত অধিক সুন্দর হয়। অবস্থা দর্শনে সাইয়্যিদাতুন নিসাইল আলামীন, ত্বহিরা, ত্বয়্যিবা, নিবরাসাতুল উমাম হযরত শাহযাদী ছানী আলাইহাস সালাম তিনি উক্ত পীরবোনের দিকে খুব দয়া-ইহসানের দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলেছিলেন, “চিন্তা করো না। এবারের বাচ্চাটি আরো অধিক সুন্দর হবে।” পরবর্তীতে তাই হয়েছিল। (সুবহানাল্লাহ!)
*** এক পীরবোন একদা স্বপ্নে দেখলেন সাইয়্যিদাতুন নিসাইল আলামীন, ত্বহিরা, ত্বয়্যিবা, নিবরাসাতুল উমাম হযরত শাহযাদী ছানী আলাইহাস সালাম তিনি উক্ত পীরবোনকে বলেছিলেন যে, “তুমি তো নতুন। অনেক কিছুই জান না, বুঝ না। তোমাকে আজকে কিছু বিষয় দেখাব- যা দেখলে তুমি বুঝতে পারবে যে, সবার বাহ্যিকের সাথে অন্তরের মিল নেই। অতঃপর সাইয়্যিদাতুন নিসাইল আলামীন, ত্বহিরা, ত্বয়্যিবা, নিবরাসাতুল উমাম হযরত শাহযাদী ছানী আলাইহাস সালাম তিনি একটা জায়গা দিয়ে উক্ত পীরবোনকে নিয়ে রওয়ানা হলেন। রাস্তার মাঝে অনেক মহিলাদের দেখে দেখে তিনি যখন যাচ্ছিলেন তখন কারো কারো চেহারা তিনি বিকৃত হতে দেখেন। আবার অনেকের চেহারা ঠিকই থাকলো। যাদের চেহারা বিকৃতি হলো তাদেরকে ভালোভাবে চিহ্নিত করতে বললেন।”
পরবর্তীতে দেখা গেলো, যাদের বিকৃত চেহারা তিনি দেখিয়েছিলেন তাদের নাম প্রকাশিত মুনাফিকদের তালিকায় দেখা গেল। নাঊযুবিল্লাহ!
মুবারক স্বপ্নটি দ্বারা সুস্পষ্টরূপে আশিকা-মুরিদাদের ঈমান-আক্বীদা হিফাযতের প্রতি সাইয়্যিদাতুন নিসাইল আলামীন, ত্বহিরা, ত্বয়্যিবা, নিবরাসাতুল উমাম হযরত শাহযাদী ছানী আলাইহাস সালাম উনার দয়া-ইহসান প্রকাশ পেয়েছে।
*** আমাদের এক পীরবোন সন্তানসম্ভাবা ছিলেন। কি সন্তান জন্মগ্রহণ করবে- তা সাধারণভাবে কারো পক্ষেই বলা সম্ভব নয়। তা মহান আল্লাহ পাক, উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং ওলীআল্লাহগণ উনারা ব্যতীত কারো পক্ষে জানা সম্ভব নয়। কিন্তু সাইয়্যিদাতুন নিসাইল আলামীন, ত্বহিরা, ত্বয়্যিবা নিবরাসাতুল উমাম আমাদের হযরত শাহযাদী ছানী আলাইহাস সালাম উনিতো ছহিবায়ে ইলমে গাইব। তাই তিনি ওই পীরবোনকে পূর্বেই বলেছিলেন যে, তার একটি কন্যা সন্তান জন্ম নিবে। সত্যি! যথাসময়ে দেখা গেল পীরবোন একটি কন্যা সন্তানই প্রসব করেছেন। (সুবহানাল্লাহ!)
*** আমাদের এক পীরবোন ছোটবেলা বালিকা মাদরাসায় অধ্যায়নরত অবস্থায় প্রায়শ তিনি তার বাবার সাথে দেখা করার জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠতেন। তাই তিনি মুয়াল্লিমাদের বারবার জিজ্ঞাসা করতেন যে, বাবা কখন আসবেন। কিন্তু মুয়াল্লিমাগণ তো তা বলতে পারতেন না। উপায়ন্তর না দেখে শিশু পীরবোন সাইয়্যিদাতুন নিসাইল আলামীন, ত্বহিরা, ত্বয়্যিবা, নিবরাসাতুল উমাম হযরত শাহযাদী ছানী আলাইহাস সালাম উনার খিদমতে জানার আগ্রহ পেশ করলে উনি বললেন ‘’লাল জুমু’আবার’’ হলে তোমার বাবা আসবে।‘’ জুমু’আবার’’ আর কখনই লাল হয়নি। সে পীরবোনের বাবাও আসেননি। অর্থাৎ আসার পূর্বেই তার বাবা ইন্তিকাল করেন।
মহান মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি আমাদের সকলকে সাইয়্যিদাতুন নিসাইল আলামীন, ত্বহিরা, ত্বয়্যিবা, নিবরাসাতুল উমাম হযরত শাহযাদী ছানী আলাইহাস সালাম উনার সন্তুষ্টি নছীব করুন। আমীন।
জয়তুন ও জলপাই এর মধ্যে পার্থক্য কি?
জয়তুন ও জলপাই এর মধ্যে পার্থক্য কি?

শুধুই নামে পার্থক্য। জলপাইকে ইংরেজিতে যেমন অলিভ নামে ডাকা হয় ঠিক তেমনই আরবিতে জলপাইকে ডাকা হয় জয়তুন নামে।
যুদ্ধে শান্তির প্রতীক হল জলপাইয়ের পাতা এবং মানুষের শরীরের শান্তির দূত হল জলপাইয়ের তেল যা অলিভ ওয়েল (Olive Oil) আরবিতে জয়তুন (زيت الزيتون )। যেটাকে Liquid Gold বা তরল সোনা নামেও ডাকা হয়। সেই গ্রীক (Greek) সভ্যতার প্রারম্ভিক কাল থেকে এই তেল ব্যাবহার হয়ে আসছে, রন্ধন কর্মে ও চিকিৎসা শাস্ত্রে।
অবশ্য বাংলাদেশে জলপাই তেলের ব্যবহার তেমন নেই। শুধুমাত্র শীতকালে শরীরে মাখার কাজে জলপাই তেল ব্যবহৃত হয়, তাও খুবই কম। এছাড়া খাওয়ার কাজে এটির ব্যবহার নেই বললেই চলে। স্বাস্থ্যের অত্যন্ত উপকারী এই জয়তুন বা জলপাই তেল l ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে বিশেষ করে তিউনিসিয়া, তুরস্ক, লেবানন, সিরিয়া, তুরস্কের সামুদ্রিক অঞ্চল, ইরানের উত্তরাঞ্চল তথা কাস্পিয়ান সাগরের দক্ষিণে ভাল জন্মে। ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে এর অর্থনৈতিক গুরুত্বও এর তেলের কারণে বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। জলপাইয়ের বা জয়তুনের আদি বাসস্থান এ অঞ্চলেই । পরবর্তীকালে এ ফল এশিয়া ও ইউরোপ মহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে।
জলপাইকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়; যথা- আরবীয় জলপাই বা জয়তুন (Olive), যা মরুভূমির দেশগুলোতে ভালো জন্মে এবং তেল তৈরিতে বেশি ব্যবহার হয়। দ্বিতীয় হলো ভারতীয় জাত (Indian Olive), যা ফল হিসেবে খাওয়া হয় এবং আচার, চাটনি তৈরিতে বেশি ব্যবহার হয়। ফলটির বৈজ্ঞানিক নাম: জলপাই (অলিয়া ইউরোপিয়া-Olea europaea)
পবিত্র মীলাদ শরীফ বিষয়ে প্রথম দিকে যারা কিতাব রচনা করেছেন উনাদের মধ্যে অন্যতম হলেন হাফিয হযরত আবুল খত্ত্বাব ইবনে দাহিয়্যাহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহি। যিনি ছিলেন পবিত্র হাদীছ শাস্ত্রের অন্যতম গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্ব

পবিত্র মীলাদ শরীফ বিষয়ে প্রথম দিকে যারা কিতাব রচনা করেছেন উনাদের মধ্যে অন্যতম হলেন হাফিয হযরত আবুল খত্ত্বাব ইবনে দাহিয়্যাহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহি। যিনি ছিলেন পবিত্র হাদীছ শাস্ত্রের অন্যতম গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্ব

পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ তথা পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিষয়ে প্রথম দিকে যারা কিতাব রচনা করেছেন উনাদের মধ্যে অন্যতম হলেন- হযরত আবুল খত্ত্বাব উমর ইবনে দাহিয়্যাহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহি (৫৪৪-৬৩৩ হিজরী)। উনার লিখিত কিতাবখানা হলো- كِتَابُ التَّنْوِيْرِ فِيْ مَوْلِدِ الْبَشِيْرِ وَالنَّذِيْرِ ‘কিতাবুত্ তান্উয়ীর ফী মাওলিদিল বাশীর ওয়ান নাযীর’ (কোনো কোনো কিতাবে كِتَابُ التَّنْوِيْرِ فِيْ مَوْلِدِ السِّرَاجِ الْمُنِيْرِ ‘কিতাবুত্ তান্উয়ীর ফী মাওলিদিস সিরাজিল মুনীর’ উল্লেখ আছে)। 
বাতিলপন্থীরা পবিত্র মীলাদ শরীফ উনার বিরোধিতা করতে গিয়ে হযরত আবুল খত্ত্বাব ইবনে দাহিয়্যাহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে জাহিল, মন্দভাষী, মিথ্যাবাদী প্রভৃতি অভিযোগে অভিযুক্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। নাঊযুবিল্লাহ! অথচ তিনি ছিলেন জগদ্বিখ্যাত আলিম, মুহাদ্দিছ ও ফুদ্বালাগণের অন্তর্ভুক্ত। যেমন কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে-
كان حضرت أبو الخطاب رحمة الله عليه المذكور من أعيان العلماء ومشاهير الفضلاء، متقناً لعلم الحديث النبوي وما يتعلق به، عارفاً بالنحو واللغة وأيام العرب وأشعارها، واشتغل بطلب الحديث في أكثر بلاد الأندلس الإسلامية، ولقي بها علماءها ومشايخها، ثم رحل منها إلى بر العدوة ودخل مراكش واجتمع بفضلائها، ثم ارتحل إلى إفريقية ومنها إلى الديار المصرية ثم إلى الشام والشرق والعراق ودخل إلى عراق العجم وخراسان وما والاها ومازندران، كل ذلك في طلب الحديث والاجتماع بأئمته والأخذ عنهم، وهو في تلك الحال يؤخذ عنه، ويستفاد منه 
অর্থ: হযরত আবুল খত্ত্বাব ইবনে দাহিয়্যাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ছিলেন সম্মানিত আলিমগণ ও প্রসিদ্ধ ফুদ্বালাগণ উনাদের অন্তর্ভুক্ত, পবিত্র হাদীছে নববী শরীফ ও উনার সংশ্লিষ্ট ইলমে যথোপযুক্ত, ইলমে নাহু ও ইলমে লুগাত এবং আরব্য ইতিহাস ও কাব্যে ব্যাপক পারদর্শী। আন্দুলুসের অধীন বিভিন্ন ইসলামিক দেশে তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফ অন্বেষণে মশগুল ছিলেন এবং এ কারণে তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার বিশেষজ্ঞ অনেক আলিম ও মাশায়িখগণ উনাদের সাথে সাক্ষাৎ করেন। অতঃপর তিনি সেখান থকে ‘র্বুরুল উদ্ওয়া’ (এটি মারাবিতূনদের শাসনাঞ্চল, ১০৪০-১১৪৭ ঈসায়ী, যাকে ‘আল-মাগ্রীবুল আক্বছা’ও বলা হয়। যা বর্তমান স্পেন ও উত্তর-পশ্চিম আফ্রিকার এক বিশাল অঞ্চল নিয়ে গঠিত ছিলো) এলাকায় সফর করেন এবং মারাকিশ্ শহরে প্রবেশ করে সেখানে অবস্থিত ফুদ্বালাগণ উনাদের সাথে মিলিত হন। অতঃপর আফ্রিকার অন্যান্য অঞ্চল সফর করে সেখান থেকে মিশর অতঃপর শাম, প্রাচ্য, ইরাক, খোরাসান, মাওয়ালাহা, মযান্দারন (বর্তমান ইরানের একটি প্রদেশ)। আর এসব অঞ্চল সফরের উদ্দেশ্য ছিলো পবিত্র হাদীছ শরীফ অন্বেষণ, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার ইমামগণ উনাদের সাথে সাক্ষাৎ এবং উনাদের নিকট থেকে পবিত্র হাদীছ শরীফ সংগ্রহ। সে সময় উনার থেকেও পবিত্র হাদীছ শরীফ গ্রহণ করা হতো ও উনার থেকে ফায়দা হাছিল করা হতো। সুব্হানাল্লাহ! (ওয়াফিয়্যাতুল আ’ইয়ান লি ইবনে খল্লিকান ৩/৩৯৪) 
কিতাবে আরো উল্লেখ আছে,
قال حضرت ابن خلِّكان في ترجمة الحافظ ابي الخطّاب بن دحيّة رحمة الله عليه: كان من أعيان العلماء ومشاهير الفضلاء.
অর্থ: হযরত ইবনে খল্লিকান তিনি হাফিয আবুল খত্ত্বাব ইবনে দাহিয়্যাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সম্পর্কে বলেন, তিনি ছিলেন সম্মানিত আলিমগণ ও প্রসিদ্ধ ফুদ্বালাগণ উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুব্হানাল্লাহ! (আল্-হাউয়ী লিল্ ফাতাওয়া ১/১৮২)
শুধু তাই নয়, উনার বংশগত মর্যাদাও ছিলো অনেক উচ্চ মানের। তিনি মাতার দিক থেকে ছিলেন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনার বংশধর। অন্যদিকে পিতার দিক থেকে তিনি ছিলেন প্রখ্যাত ছাহাবী হযরত দাহিয়াতুল ক্বলবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার বংশধর। এ কারণে উনাকে ‘দাহিয়্যাহ’ বলা হয়। এ সম্পর্কে কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে,
كان يذكر أن أمه أمة الرحمن بنت أبي عبد الله ابن أبي البسام موسى بن عبد الله بن الحسين بن جعفر بن علي بن محمد بن علي بن موسى بن جعفر بن محمد بن علي بن الحسين بن علي بن أبي طالب، رضي الله عنـهم، فلهذا كان يكتب بخطه " ذو النسبين دحية والحسين، رضي الله عنهما "
অর্থ: উল্লেখ করা হয় যে, হাফিয আবুল খত্ত্বাব ইবনে দাহিয়্যাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মাতা হলেন আমাতুর রহমান বিনতে আবু আব্দুল্লাহ ইবনে আবুল বাসসাম মূসা ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে হুসাইন ইবনে জা’ফর ইবনে আলী ইবনে মুহম্মদ ইবনে আলী ইবনে মূসা ইবনে জা’ফর ইবনে মুহম্মদ ইবনে আলী ইবনে হুসাইন ইবনে আলী ইবনে আবী ত্বলিব আলাইহিমুস সালাম। এ কারণে তিনি উনার লিখনীতে ‘যুন্ নাসাবাইন দাহিয়্যাহ ওয়া হুসাইন’ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা লিখতেন অর্থাৎ দাহিয়্যা ও হুসাইন এ দুই নসবের অধিকারী তিনি। সুবহানাল্লাহ! (ওয়াফিয়্যাতুল আ’ইয়ান লি ইবনে খল্লিকান ৩/৩৯৩-৯৪)
উপরোক্ত আলোচনা থেকে স্পষ্টরূপে প্রতীয়মান হলো, হাফিয আবুল খত্ত্বাব ইবনে দাহিয়্যাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ছিলেন একজন জগদ্বিখ্যাত আলিম ও মুহাদ্দিছ। ইলমে নাহু, ইলমে লুগাত ও কাব্য শাস্ত্রেও ছিলো উনার ব্যাপক ব্যুৎপত্তি। তিনি ছিলেন অত্যন্ত সম্মানিত একজন ব্যক্তি। সেই সময়ের বিভিন্ন মুহাদ্দিছগণ উনার কাছ থেকে পবিত্র হাদীছ শরীফ সংগ্রহ করতেন। সুবহানাল্লাহ! আর বংশীয় দৃষ্টিকোণ থেকে তিনি ছিলেন সর্বোচ্চ মর্যাদার অধিকারী। উনার শরীর মুবারকে বহমান ছিলো সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের খুন মুবারক। সঙ্গতকারণে উনার তাক্বওয়া-পরহেযগারীও যে ছিলো বেমেছাল তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। সুবহানাল্লাহ! 
তাই উনার লিখিত পবিত্র মীলাদ শরীফ বিষয়ক কিতাব كِتَابُ التَّنْوِيْرِ فِيْ مَوْلِدِ الْبَشِيْرِ وَالنَّذِيْرِ ‘কিতাবুত্ তান্উয়ীর ফী মাওলিদিল বাশীর ওয়ান নাযীর’ অথবা كِتَابُ التَّنْوِيْرِ فِيْ مَوْلِدِ السِّرَاجِ الْمُنِيْرِ ‘কিতাবুত্ তান্উয়ীর ফী মাওলিদিস সিরাজিল মুনীর’ অবশ্যই গ্রহণযোগ্য ও দলীলযোগ্য। যারা উনার বিরুদ্ধে বিষোদগার করে থাকে, মিথ্যারোপ করে থাকে তাদের বক্তব্য মোটেও গ্রহণযোগ্য নয় বরং উনার ব্যাপারে বিষোদগারকারীরা বাতিল ফিরক্বার অন্তর্ভুক্ত। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সকলকে সঠিক বুঝ দান করুন। আমীন!
ইসলামের নামে গনতন্ত্র,নির্বাচন, ভোট, রাজনীতি,পদ প্রার্থীতা সবই হারাম। জায়িয মনে করা কুফরী।

ইহুদী খ্রিস্টানরা যে গনতন্ত্রের যে বিষবৃক্ষ রোপন করেছে, আমি বলবো তারা তাদের মিশনে শতভাগ সফল হয়েছে । তারা আসলেই গোলাম বানিয়ে ফেলেছে নির্বোধ নামধারী মুসলমানদের। বিভক্তি এবং শাষনের নীল নক্সা উভয়টাই তারা সফল বাস্তবায়ন করেছে। আফসোস মুসলমানের জন্য........ যারা কিনা আজো গনতন্ত্র নামক কুফরীতন্ত্র দিয়ে ইসলাম প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখে।

ইসলামের নামে গনতন্ত্রভোটরাজনীতি,নির্বাচনপদপ্রর্থীতা সম্পূর্ণ হারাম এ বিষয়ে পুর্নাঙ্গ বিশ্লেষণ : 
মুসলমানদের উপর নিজের পূর্ন কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করার জন্য ইহুদী খ্রিস্টানদের সবচেয়ে ভয়াবহ অস্ত্র হচ্ছে গনতন্ত্র। তারা খুবই সুক্ষ্ম এবং ব্যাপক ভাবে এই হারাম গনতন্ত্রের বীজ মুসলমানদের মাঝে বপন করেছে এবং এক শ্রেনীর ধর্মব্যয়ী এজেন্ট নিয়োগ করেছে এই গনতন্ত্রকে ইসলামী গনতন্ত্র নামে প্রচার করার জন্য। শুধু তাই নয়তারা রাজনীতিভোট,নির্বাচন ইত্যাদিও মুসলমানদের ইসলাম প্রতিষ্ঠার অঙ্গ হিসেবে প্রচার করে যাচ্ছে। 
এর একমাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছে মুসলমানদের ইসলামী অধিকার থেকে দমীয়ে রাখা,মুসলমানদের জড় পদর্থে রুপান্তর করা।
 তাই এখনই জানার এবং বোঝার সময় এসেছে ইসলাম এবং গনতন্ত্র কি জিনিস। 
গনতন্ত্র কি কখনো ইসলামী গনতন্ত্র হতে পারে কিনা?
মুসলমানরা কি ভোট নির্বাচন করতে পারে কিনা? 
মুসলমানরা রাজনীতি করতে পারে কিনা? 

(
১) ইসলাম কি ?? 
 ইসলাম হচ্ছে আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে আল্লাহ পাক উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি পবিত্র ওহী মুবারকের মাধ্যমে নাজিলকৃত একমাত্র পরিপূর্ণমনোনীত,নিয়মতপূর্ন,সন্তুষ্টিপ্রপ্ত দ্বীন। যা কিয়মত পর্যন্ত বলবত থাকবে। আল্লাহ পাক ইরশাদ মুবারক করেন- 
ان الدين عند الله الاسلام 
অর্থ: নিশ্চয়ই ইসলাম হচ্ছে আল্লাহ পাক উনার কাছে একমাত্র দ্বীন।" সূরা আলে ইমরান ১৯] 

আল্লাহ পাক আরো ইরশাদ মুবারক করেন,

اليوم اكملت لكم دينكم واتممت عليكم نعمتي و رضيت لكم الاسلام دينا 

অর্থ: আজ আমি তোমাদের দ্বীনকে পরিপূর্ণ করে দিলামতোমাদের প্রতি আমার নিয়মত পূর্ন করে দিলাম এবং আমি তোমাদের দ্বীন ইসলাম উনার প্রতি সন্তুষ্ট রইলাম।" [সূরা মায়িদা ৩]
আল্লাহ পাক আরো বলেন-
 
يايها الذين امنوا ادخلوا في السلم كافة ولا تتبعوت خطوات الشطان انه لكم عدو مبين
অর্থ: হে ঈমানদারগণ ! তোমরা ইসলামে পরিপূর্ণ ভাবে প্রবেশ কর। শয়তানকে অনুসরণ করো না। নিশ্চয়ই শয়তান তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু" সূরা বাক্বারা ২০৮] 


সূতরাং দেখা যাচ্ছেইসলাম ব্যতীত কোন মতবাদ সেটা ওহী দ্বারা হোক বা মানব রচিত হোক কোনটাই আল্লাহ পাক কবুল করবেন না। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ পাক বলেন-

ومن يبتغ غير الاسلام دينا فلن يقبل منه وهو في الاخرة من الخسرين 

অর্থ: যে ব্যক্তি ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন ধর্মের নিয়মনীতি তালাশ করে তার থেকে সেটা কখনো কবুল করা হবে না এবং পরকালে সে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।"[সূরা আল ইমরান ৮৫] 
অতএবযারা ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন নীয়মনীতি ইসলামের নামে বা ইসলামের সাথে মিশ্রিত করতে চায়যেমন- ইসলামী গনতান্ত্র,ইসলামী রাজতন্ত্রইসলামী রাজনীতিইসলামী সমাজতান্ত্র ইত্যাদি কি করে জায়িয হতে পারে ? 
নাইসলামের সাথে গনতন্ত্ররাজনীতিরাজতন্ত্রসমাজতান্ত্র ইত্যাদি যুক্ত করে ইসলাম উনার নামে চালিয়ে দেয়া স্পষ্ট হারাম কেউ জায়িয বললে ঈমানদার থাকতে পারবে না। 

(
২) গনতন্ত্র কি ? 

 গনতন্ত্র হচ্ছে মানব রচিত শাসন ব্যবস্থা। যার আইন কানুন,নীয়ম-নীতি,তর্জ-তরীকা মানুষের দ্বারা রচিত। মূলত গনতন্ত্র শুধু মানব রচিত মতবাদই নয়বরং বিধর্মীদের দ্বারা বিশেষ করে এটা ইহুদীদের দ্বারা উদ্ভাবিত এবং প্রবর্তিত। আর সম্পূর্নটাই খ্রিস্টানদের সংস্কারকৃত শাষন পদ্ধতি। পূর্ববর্তী জামানায় নাজিলকৃত আসমানী কিতাব বিকৃত হওয়ায় নফসানিয়তের দরুন উক্ত কিতাব সমূহ বিকৃতি বা পরিত্যাগ করার পর বিধর্মীরা তাদের দেশ পরিচালনা করার জন্যনিজেরা যে আইন প্রনয়ন করেছিলো পরবর্তীতে সেগুলো বিভিন্ন নামে পরিচিতি লাভ করে। তারমধ্যে অন্যতম হচ্ছেগনতন্ত্র। যা খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দীতে গ্রীসে উৎপত্তি লাভ করে এবং বর্তমান বিশ্বে ব্যপক প্রচার লাভ করেছে। 
গনতন্ত্রের ইংরেজি হচ্ছে- Democracy। যা এসেছে গ্রীক Demos এবংKratos থেকে। Demos অর্থ জনগন এবং Kratos অর্থ শাষন। পলিটিক্যাল সাইন্স বা রাষ্ট্র বিজ্ঞানের বইয়ে উল্লেখ করা হয়েছে যে, " গনতান্ত্র শব্দের অর্থ হচ্ছে- 'গনঅর্থ জনগনআর 'তন্ত্রঅর্থ নিয়ম-নীতি বা পদ্ধতি। অর্থাৎ গনতন্ত্রে জনগনের নিয়মনীতি অনুযায়ীবা পদ্ধতি অনুযায়ী শাষন ব্যবস্থা বা সরকার পরিচালনা করা হয়। এ ক্ষেত্রে আধুনিক গনতান্ত্রের প্রবক্তা আব্রাহাম লিঙ্কনের উক্তি উল্লেখ্য। তার ভাষায়-- Democracy is a Government of the people, by the people and for the people"। যার অর্থ হচ্ছেগনতান্ত্রিক সরকার জনগনের,জনগনের দ্বারা ও জনগনের জন্য।" 
এখন আপনারাই বলুন গনতন্ত্র কি ইসলাম সম্মত হতে পারে ?? 

(৩) নির্বাচন কিএবং এর ইতিহাস কি ?? 

 নির্বাচনের প্রাচীন ইতিহাস : প্রাচীন গ্রীসে খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম এবং ষষ্ঠ শতাব্দীতে নির্বাচন প্রথা চালু ছিলো। 
Election সম্পর্কে ধর্ম,মিথলজী বিষয়ক Encyclopedia man,myth's magic এ বলা হয়েছে Election, the word derived from the Greek word eloge (choice).The idea is basic to the traditional structure of Christian theology. 
অর্থাৎইলেকশন বা নির্বাচন শব্দটি উৎসরিত হয়েছে বা পত্তি লাভ করেছেগ্রীক শব্দ Eloge হতেযার অর্থ ছিলো পছন্দ। নির্বাচনের ধারনা প্রাচীন খ্রিষ্টীয় ধর্মতত্ত্বের ব্যাখ্যার উপর প্রতিষ্ঠিত।"" 
এ ব্যাখ্যাটি এরূপ যেতাদের গড নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তিবর্গ অথবা জাতিকে বিশেষ ভাবে পছন্দ করতেন তার রাজত্বে বিশেষ কিছু ভূমিকা পালনের জন্য,যাকে বলা হত নির্বাচন। এ প্রসঙ্গে আরো উল্লেখ আছে-- 
The idea that God specially choses certain individuals or nations for some peculiar role in the scheme of his Providence is known as election. 
আরো বর্নিত আছে-

এ বিষয়ে Man, maths & encyclopedia " গ্রন্থে আছে-however that the doctrine of election found its most notable expression in Christianity. 
মূলকথা হচ্ছেনির্বাচন হচ্ছে খ্রিষ্টীয় ধর্মতত্ত্বের সাথে সংশ্লিষ্ট একটি বিষয়। যা কিন মোটেও ইসলাম সম্মত হতে পারে না। যারা ইসলামের নামে নির্বাচনের কথা বলে তারা কতবড় মিথ্যাবাদী এবং প্রতারক চিন্তা করুন। অর্থাৎসুকৌশলে তারা খ্রিষ্টীয় মতবাদ মুসলমানদের মাঝে ঢুকিয়ে দিচ্ছে 
আধুনিক কালের নির্বাচনের এবং ভোটের ইতিহাস : 

আধুনিক ভোট ব্যবস্থার সূত্রপাত ঘটে ইংল্যান্ডে ১৬৮৮ সালে ইংল্যান্ডে ১৬৮৮সালে বিপ্লবের পর রাজনৈতিক ক্ষমতা পার্লামেন্টের হাতে চলে যায়। পার্লমেন্টে ১৮৩২ সালে প্রথম সংস্কার আইনে সমস্ত মধ্যবিত্ত শ্রেনীকে ভোটাধিকার দেয়। এরপর পর্যায়ক্রমে ১৮৬৭ সালে কারখানার শ্রমিকদের,১৮৮৪ সালে কৃষি মজুরদের১৯১৮ সালে সীমিত সংখ্যক নারীদেরএবং ১৯২৮ সালে সকল নারীদের ভোটাধিকার দেয়া হয়। ১৯১৮ সালের পূর্বে বৃটেনে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাজুয়েটরা সাধারণ কেন্দ্র ও বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্র এ দুটি কেন্দ্রের ভোটাধিকার ছিল। পরবর্তীতে ১৯৪৮ সালে সকল পদ্ধতির সমাপ্তি ঘটিয়ে একুশ বছর বা তদুর্ধ বয়সের সকল সম্প্রদায়ের জন্য সার্বজনীন ভোটাধিকার দেয়া হয়। 
অপর দিকে আমেরিকায় ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে বলা হয় যেকোন ব্যক্তিকে তার জাতী,ধর্মঅথবা পূর্বপুরুষদের দাসত্বের জন্য ভোটদানের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। ১৯৩৩ সালে সপ্তদশ সংশোধনীতে সিনেট সদস্যদেরজনগনের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হয়। ১৯২০ সালে মহিলা ভোটাধিকার স্বীকৃত হয়। ১৯৭১ সালে ভোটারদের বয়স সীমা কমিয়ে ১৮ বছরে আনা হয়। 
ভোটের প্রকারভেদ এবং ব্যালট প্রথা : 

ভোট হলো দুই প্রকার। যথা- 
প্রকাশ্য ভোটদান। 
 গোপনে ভোটদান। 

প্রকাশ্য ভোটদান ব্যবস্থায় ভোটদানকারীরা বিপরীত পক্ষীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকেতাই এটি সর্বত্র পরিত্যক্ত হয়েছে। 
আর গোপনে ভোটদান ব্যবস্থা কারো দ্বারা কোন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না তাই তাদের ভাষায় নির্ভয়ে এবং স্বাধীনভাবে ভোট প্রদান করতে পারে। তাই ব্যালট পেপারের মাধ্যমে সর্বত্রই এ ব্যবস্থা চালু রয়েছে। 
ব্যালট : ব্যালট হচ্ছে একটি কাগজের শীটযার দ্বারা গোপনে ভোট প্রদান করা হয়। Ballot শব্দটি এসেছে ইটালীয় ব্যালোটা Ballotia হতে। যার অর্থ হচ্ছে- ছোট বল। এটি এভাবে উৎপত্তি হয়েছে যেপ্রাচীনকালে এর দ্বারা ভোট গ্রহন করা হতো এবং গ্রীসে এই পদ্ধতি প্রচলিত ছিলো। জনতার দরবারে অথবা আইন সভায় খ্রীষ্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দীতে এবং কখনো কখনো রোমান সিনেটে এই পদ্ধতি চালু ছিলো। সাধারণত সাদা এবং কালো বল হ্যাঁ এবং না বোধক ভোটে ব্যবহৃত হতো। 
অপরদিকে আমেরিকায় উপনিবেশিক কালের শুরুতে সীম শস্যকণা ব্যালোট হিসাবে ব্যবহৃত হতো। উল্লেখ্যকোন কোন সংগঠন এখনো নতুন সদস্য গ্রহনে ভোটাভুটিতে সাদা এবং কালো বল ব্যবহার করে থাকে। বর্তমানে গনতান্ত্রিক দেশসমূহে কাগজের ব্যালট বা ব্যালট পেপার নির্বাচনে ভোটারদের ছদ্মনাম হিসাবে কাজ করে এবং এভাবেই অধিকাংশ ভোটারদের ইচ্ছা প্রকাশ পায়। 
গোপন ভোটদানের পদ্ধতি হিসাবে ব্যালট পেপার ব্যবহারের প্রথম প্রমানিক ঘটনা ঘটে ১৬২৯ সালে আমেরিকার চার্চে। অতঃপর আমেরিকান ঔপনিবেশে এই ব্যালট পেপারের প্রচলন ছড়িয়ে পড়ে। এরপর ব্যালট পেপারের অনেক সংস্কার হয় এবং পরবর্তীতে একই কলামে বিভিন্ন দলের প্রতীক সংযুক্ত হয়,যা সাধারণত বর্নমালা অনুযায়ী সংযুক্ত হয়।
উল্লেখ্য১৯৫০ সালের মধ্যে এই ব্যালোট প্রথা প্রায় সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। 
সাধারণভাবে নির্বাচন বলতে বুঝায়, "একাধিক পদপ্রার্থী থেকে ভোটদানের মাধ্যমে একজনকে নির্বাচিত করা।" যে বা যারা পদের মুখাপেক্ষী তারা তাদের পদের জন্য মানুষের নিকট তাদের মুখাপেক্ষীতা প্রকাশ করে থাকে তখন মানুষ তাদের বিবেচনায় উপযুক্ত মনে করে তাকেই ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে। উল্লেখ্যনির্বাচিত ব্যক্তি পদের মুকাপেক্ষীপদ নির্বাচিত ব্যক্তির মুকাপেক্ষী নয়। প্রকৃতপক্ষে নির্বাচন হচ্ছে গনতন্ত্রের মূল ভিত্তি। কেননা নির্বাচনের মাধ্যমেই গনতন্ত্র বাস্তবায়িত হয়। আর নির্বাচন তখনই প্রয়োজন হয়যখন কোন পদে একাধিক ব্যক্তি প্রার্থী হয়। 
মূলকথাগনতন্ত্রের মূল বিষয় হচ্ছে সার্বভৌমত্ব জনগনের। অর্থাৎ জনগনইহচ্ছে গনতন্ত্রের মূল অথবা গনতন্ত্রে জনগনই সকল সার্বভৌমত্বের মালিক 

গনতন্ত্রনির্বাচনভোট,ব্যালট,পদ প্রার্থীতা সম্পর্কে আলোচনা সমূহের তথ্যসূত্র : 

√ Encyclopedia Britannica 

√ Encyclopedia Americana 

√ World book 

√ man myth magic 
√ Lexicon encyclopedia 

√ MacMillan encyclopedia 

√ new book of knowledge 

√ Frank and Wagnalls encyclopedia 

√ Wordsworth encyclopedia 

√ Encyclopedia of democracy 

√ After two centurics, should Condorcet's voting procedure be implemented-Felsenthal Dan 

√ Constitutional choices for new democracy 

√ charnwood , Abraham lincon 

√ the modern democracy 

√ political idea of modern world 

√ Leberal democracy, Pall mall
 

 বাংলা একাডেমী বিশ্বকোষ। 

 বাংলাদেশ সংবিধানের ভাষ্য। 

 রাষ্ট্র বিজ্ঞানসৈয়দ মকসুদ আলী। ইত্যাদি.... 

উপরোক্ত আলোচনা থেকে স্পষ্ট ভাবেই প্রমানিত হচ্ছে যেগনতন্ত্রনির্বাচন,ভোটব্যালটপদ প্রর্থীতা সব কিছুই খ্রীষ্ট ধর্মীয় বৈশিষ্ট্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। ইসলাম উনার সাথে এই সকল বিষয়ের কোন প্রকার সম্পর্ক নেই। এইটা সম্পূর্ণ বিধর্মীদের তর্জ তরীকা। সূতরাং যারা ইসলামের নামে গনতন্ত্র,ভোট,নির্বাচন করবে তারা মূলত বিধর্মীদের এজেন্টপ্রথম শ্রেনীর ভন্ড এবং মুনাফিক। 

উপরোক্ত আলোচনায় অকাট্যভাবে প্রমাণ করে দেখিয়েছি যেগনতন্ত্র,ভোট,নির্বাচন সবগুলাই খ্রিস্টানদের প্রথা। এগুলার সাথে পবিত্র ইসলাম উনার কোন সম্পর্ক নাই। এবং কোনভাবেই ইসলামী গনতন্ত্রইসলামী ভোটইসলামী নির্বাচন বলারও এক বিন্দু মাত্র সুযোগ নেই। যদি কেউ ইসলামের নামে চালিয়ে দিতে চায় সেটা স্পষ্ট কুফরী হবে। 

এখন আমরা দেখবো গনতন্ত্র যে সব কারনে ইসলাম সম্মত বা ইসলামী গনতন্ত্র হতে পারে না। 
গনতন্ত্রে সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক বা সকল ক্ষমতার উৎ হচ্ছে একমাত্রজনগন। আর একারনে গনতন্ত্রীরা নিজেরাই নিজেদের আইনকানুননীয়ম-নীতি প্রনয়ন করে থাকে। অর্থাৎ গনতন্ত্রে জনপ্রতিনিধিরাই একমাত্র আইনপ্রনেতা। এখানে পবিত্র ইসলাম উনার বিধানের কোন মূল্য বা মর্যাদা নেই।একারনে গনতন্ত্রে ইসলামী ধ্যান ধারনার খিলাপ বহু আইন প্রনয়ন হয়ে থাকে 

এর কিছু উদাহরণ দিলে বুঝতে সহজ হবে। যেসব কারনে গনতন্ত্র ইসলাম সম্মত হতে পারে না তার কতিপয় উদাহরণ ,
(১) ওয়ারিছ সত্ত্বের ক্ষেত্রে : 

কুরআন শরীফ-সুন্নাহ শরীফ উনার ফতোয়া হচ্ছেদাদা জীবিত থাকতে পিতা ইন্তেকাল করলে নাতি ওয়ারিছ হবে না। এ বিষয়ে সূরা নিছা ১১-১২ নং আয়াত শরীফে পরিস্কার উল্লেখ করা হয়েছে। 
অথচ১৯৬১ সনে প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানের গনতান্ত্রিক সরকার আল্লাহ পাক উনার উক্ত ফতোয়াকে ইয়াতিমের জন্য ক্ষতিকর বলে রদ বা বাতিল ঘোষণা করে। নাউযুবিল্লাহ !! 
অতপর উক্ত সরকার কথিত গনতন্ত্রের ধারাবাহিকতায় ১৯৬১ সালে মুসলিম পারিবারিক অধ্যাদেশ জারী করে কুরআন-সুন্নাহ শরীফ পরিবর্তন,পরিবর্ধন,সংশোধন ও সংযোজন করে মনগড়া নতুন আইন জারী করে যে, "দাদা জীবিত থাকতে পিতা ইন্তেকাল করলেও নাতি ওয়ারিছ হবে।" নাউযুবিল্লাহ !! 
যা উক্ত অধ্যাদেশের ৪নং ধারায় বলা হয়েছে। এখানে স্পষ্ট ভাবেই দেখা যাচ্ছেগনতন্ত্রীরা আল্লাহ পাক উনার আইনকে বাতিল ঘোষনা করে তাদের মনগড়া আইন ইসলামের নামে চালিয়ে দিয়েছেযা মানা এবং আমল করা উভয়টাই প্রকাশ্য কুফরী। এখন প্রশ্ন হচ্ছেকি করে এমন কুফরী এবং ইসলাম বিরোধী মতবাদকে ইসলামী গনতন্ত্র বলা যেতে পারে ? 

(
২) বিয়ের বয়স : 

পবিত্র কুরআন শরীফ এবং সুন্নাহ শরীফে কোথাও ছেলে ও মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার জন্য কোন বয়স নিদৃষ্ট করে দেয়া হয় নাই। অর্থাৎ ,১০,১৫ ইত্যাদি বছরের কমে অথবা ৪০,৬০,৮০ ইত্যাদি বয়সের চেয়ে বেশি বয়সে বিয়ে করা যাবে বা যাবে না এমন কোন শর্ত ইসলামে বর্ননা করা হয় নাই। 
কিন্ত গনতান্ত্রিক সরকার তাদের নিয়ম অনুযায়ী কোন মেয়ের বিয়ে বসার জন্য কমপক্ষে ১৮ বছর বয়স হওয়া আইন করে দিয়েছে এবং ১৮ বছরের নীচে কোন মেয়েকে বিয়ে দেয়াবিয়ে করাকোন মেয়ের জন্য বিয়ে বসা দন্ডনীয় অপরাধ বলে সাব্যস্ত করা হয়েছে। নাউযুবিল্লাহ !!
 যেমনএ প্রসঙ্গে ১৯২৯ সালের বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের ২এর (ক) উপধারায় বলা হয়েছে- " শিশু বা নাবালক বলিতে ঐ ছেলে-মেয়েকে বুঝাইবেযার বয়স ছেলে হইলে একুশ বছরের নিচে এবং মেয়ে হইলে আঠারো বছরের নিচে হইবে।" 
আর নাবালকের বিয়ের শাস্তি সম্পর্কে এই আইনের ৪ ধারায় বলা হয়েছে- " একুশ বছরের অধিক কোন পুরুষ বা আঠারো বৎসরের অধিক বয়স্কা কোনমহিলা কোন শিশুর সহিত বিবাহ চুক্তি সম্পাদন করিলেতাহার একমাস পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদন্ড কিংবা এক হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয় প্রকার দন্ডই হতে পারে।" নাউযুবিল্লাহ !! 
উক্ত আইনের ৫ এবং ৬ ধারায় এরুপ বিবাহ সম্পাদনকারী ও অভিভাবকের জন্য একই শাস্তি উল্লেখ করা হয়েছে। নাউযুবিল্লাহ! 
এখানে স্বরনীয় যেস্বয়ং হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজেই হযরত আয়েশা ছিদ্দীকা আলাইহাস সালাম উনার সাথে উনার ৬ বছর বয়স মুবরকে আকদ মুবারক সম্পন্ন করেছিলেন ও ৯ বছর বয়স মুবারকে ঘর মুবারকে তুলে নিয়েছিলেন। 
এখন গনতন্ত্রীদের নিকট প্রশ্নতাহলে কি হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামহযরত ছিদ্দীকা আলাইহাস সালামএবং উনার পিতা আবু বকর ছিদ্দীক আলাইহিস সালাম উনারা কি গনতান্ত্রিক নিয়মে দন্ডনীয় হবেন? (আসতাগফিরুল্লাহনাউযুবিল্লাহ)
 
এটা কল্পনা করলে কি কেউ ঈমানদার থাকতে পারবে ?এই গনতন্ত্রই ইসলামী আইন বাতিল করে ইসলাম বিদ্বেষী আইন চাপিয়ে দিয়েছে। এখন এই আইন যদি কেউ মেনে নেয় তাহলে সে কি মুসলমান থাকতে পারবে? 
তাহলে কি করে ইসলামের নামে গনতন্ত্র করা যেতে পারে ? 

(
৩) সাক্ষীর ক্ষেত্রে : 

আল্লাহ পাক ইরশাদ মুবারক করেন, " তোমরা পুরুষদের মধ্য হতে দুজন সাক্ষী দাড় করাও। যদি দু'জন পুরুষ না পাওয়া যায় তাহলে একজন পুরুষ ও দুজন মহিলার সাক্ষ্য গ্রহণ কর।"  [সূরা বাক্বারা ২৮২ আয়াত শরীফ] 

অর্থাৎ ইসলামে দু'জন মহিলার সাক্ষ্য একজন পুরুষের স্বাক্ষ্যের সমান। কিন্তু গনতন্ত্রে তথা ভোট প্রথায় একজন পুরুষের সাক্ষ্য একজন মহিলার স্বাক্ষ্যের সমান। 
যেটা স্পষ্ট কুরআন শরীফ উনার আয়াত শরীফের প্রকাশ্য বিরোধিতা। অর্থাৎগনতন্ত্রে আল্লাহ পাক উনার বিধানের বিরোধিতা করে আইন প্রনয়ন করা হয়।তাহলে কি করে গনতন্ত্রকে ইসলামী বলা যেতে পারে ? 

(
৪) নারী নেতৃত্ব মানার ক্ষেত্রে : 

ইসলামে খিলাফত পরিচালনা করার জন্য যেসকল শর্ত উল্লেখ করা হয়েছে তাহলো- 

মুসলমান হওয়া।
আক্বেল হওয়া। 
বালেগ হওয়া।
পুরুষ হওয়া। 
স্বাধীন হওয়া। 
বাক শক্তি সম্পন্ন হওয়া। 
শ্রবনশক্তি সম্পন্ন হওয়া। 
দৃষ্টিশক্তি সম্পন্ন হওয়া। 
সাহসী ও শক্তি সম্পন্ন হওয়া। 
পরহেযগার হওয়া। 
মুজতাহিদ হওয়া। 
কুরাঈশ বংশের হওয়া। 

অথচ গনতান্ত্রিক শাষন ব্যবস্থায় এসব নীতির কোন গুরুত্ব নেই। এখানে মহিলারাও শাষক হতে পারে। নাউযুবিল্লাহ !! 
হাদীস শরীফে স্পষ্ট বলা আছে- 

ঐ জাতী কখনো কল্যাণ লাভ করতে পারে না যারা তাদের শাষনভার কোন মহিলার হাতে অর্পন করেছে।" (বুখারী শরীফ- কিতাবুল ফিতান। )

নারী নেতৃত্ব হারাম হওয়া সত্ত্বেও গনতন্ত্রে নারী শাষক হতে পারে। এখানে মহিলা কর্তৃত্ব- নেতৃত্ব- প্রধান হওয়াটা গ্রহনযোগ্য। এমনকি কাফের মুশরিকদেরও কোন পার্থক্য নেই। 
খলীফা হওয়ার ওহী দ্বারা নাজিলকৃত শর্ত সমূহকে অমান্য করে নারী নেতৃত্ব বৈধ থাকে গনতন্ত্রে। এই গনতন্ত্র কি করে ইসলাম সম্মত হতে পারে ? 

(
৫) অধিকাংশের মত গ্রহণ : 

গনতন্ত্রে অধিকাংশের মতামতই গ্রহনযোগ্য। অর্থাৎ অধিকাংশ জনপ্রতিনিধি যেরায় দিবে সেটাই কার্যকর হবে। গনতন্ত্রে একটা কথাই আছে - majority must be granted. 
এখানে বেদ্বীন বদদ্বীনকুফরী-শেরেকীযেকোন বিষয় অধিকাংশের মতামতে গ্রহনযোগ্য। নাউযুবিল্লাহ !! 
অথচ আল্লাহ পাক বলেন- 

وان تظع اكثر من في الارض يضلوك عن سبيل الله 

অর্থ: তুমি যদি জমিনের অধিকাংশ লোকের অনুসরণ করতবে তারা তোমাকে গোমরাহ করে ফেলবে।" [সূরা আনআম ১১৬] 
অর্থাৎ ইসলামে অধিকাংশের কোন গুরুত্ব নেই এখানে গুরুত্ব হচ্ছে কুরআনএবং সুন্নাহ শরীফ। গনতন্ত্রে অধিকাংশ জনগন যা বলবে সেটাই হবে। আর ইসলামে অধিকাংশের কোন গুরুত্ব নেই এখানে একজনও যদি শরীয়ত অনুযায়ী কিছু বলে সেটাই গ্রহনীয়। সূতরাং অধিকাংশের মত গ্রহন করার মত কুফরী নিয়ম যেখানে আছে সেই গনতন্ত্র কি করে ইসলামী গনতন্ত্র হতে পারে? 

(
৬) জনগন সার্বভৌম ক্ষমতার উৎ : 
গনতন্ত্রোর মূল বিষয় হচ্ছে জনগনএখানে সার্বভৌম ক্ষমতা জনগনের। অথচ মুসলমান সকল মানুষের আক্বীদা হচ্ছেসর্বময় ক্ষমতার একমাত্র অধিকারী হচ্ছেন আল্লাহ পাক। এ বিষয়ে অনেক আয়াত শরীফ বর্নিত আছে। 

যেমন- সূরা মায়িদা ১০২/ সূরা হাশর ২৪/ সূরা আল ইমরান ২৬,১২৯/ সূরা আনআম ১৭,৫৭/সূরা ফাতির ১০/ সূরা বাকারা ১১৭/ সূরা শুরা ৭৩/সূরা হাদীদ ৩/ সূরা ফুরকান ২ ইত্যাদি সহ আরো অনেক আয়াত শরীফে মহান আল্লাহ পাক উনার সার্বভৌমত্বের কথা বলা হয়েছে। 
এখন কেউ যদি সার্বভৌমত্ব জনগনের বলে সে মুসলমান থাকতে পারবে ?কুরআন শরীফ অস্বীকার করে কাট্টা কাফির হয়ে যাবে। 
তাহলে কি করে গনতন্ত্র ইসলামী গনতন্ত্র হয় ? 

(
৭) পদপ্রার্থীতার ক্ষেত্রে :
 
গনতন্ত্রে ক্ষমতায় আসার একমাত্র উপায় হচ্ছে পদপ্রার্থীতা। আর ইসলামে পদপ্রার্থী হওয়া সম্পূর্ণ হারাম। এবং পদপ্রার্থী হতে স্পষ্ট নিষেধ করা হয়েছে । 
হাদীস শরীফে বর্নিত আছে- 
"আল্লাহ পাক উনার কসম ! আমরা এ কাজে (শাষন কাজে) এমন কোন ব্যক্তিকে নিয়োগ করি নাযে ওটার প্রার্থী হয় এবং ঐ ব্যক্তিকে নিয়োগও করি নাযে ওটার লোভ বা আকাঙ্খা করে।"  (দলীল-  মুসলিম শরীফ  ৪৬১০।) 

ইসলামে পদপ্রার্থী হওয়া সম্পূর্ণ নিষেধ অথচ গনতন্ত্রে পদপ্রর্থী হওয়ার কোন বিকল্প নাই। পদপ্রার্থী হওয়া হচ্ছে দুনিয়ালোভী হওয়া। কোন নেককার লোক পদপ্রার্থী হতে পারে না। 
এখন পদপ্রার্থী হওয়ার গনতন্ত্র কি করে ইসলামী গনতান্ত্র হতে পারে? 

(
৮) হারাম হালাল এবং হালালকে হারাম করা : 

ইসলামে হারামকে হালাল এবং হালালকে হারাম করা কুফরী। কিন্তু গনতন্ত্রে হারাম হালাল একাকার। এখানে একের পর এক হারাম আইন বাস্তবায়ন করা হয়। পর্দার বিরুদ্ধে আইন করা হয়ধর্মনিরপেক্ষতার আইন করা হয়পুরুষ নারীর সমান অধিকারের আইন করা হয়। এরকম অসংখ্য হারাম প্রতিষ্ঠা করা হয়। 
সূতরাং যেখানে হারামকে হালাল এবং হালালকে হারাম করা হয় সেই গনতন্ত্র কি করে ইসলামী গনতন্ত্র হয় ??? 
পরিশেষে এদেশের সংবিধানের একটা ধারা বা আইন বলে পোস্টের ইতি টানবো। বাংলাদেশের সংবিধানের ৫৫(১) ধারায় বলা হয়েছে
the executive power of republic shall, in accordance with this constitution, be exercised by or on the authority of the prime minister. 
অর্থ : প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক বা তার কর্তৃত্বে এই সংবিধান অনুযায়ী প্রজাতন্ত্রের নির্বাহী ক্ষমতা প্রযুক্ত হবে।" 
অর্থাৎ দেশের প্রজাতন্ত্রের সকল নির্বাহী ক্ষমতা সব কিছু প্রধানমন্ত্রীর হাতে। সে যা বলবে সেটাই হবে। অর্থাৎ মহিলা প্রধানমন্ত্রী সকল আদেশ নিষেধ যারাইসলামের নামে গনতন্ত্র করবে তারা মানে নিতে বাধ্য থাকবে। এবং উক্তমহিলাই হবে সর্বময় অভিভাবক 
এখন যারা ইসলামের নামে গনতন্ত্র করবে তাদের মহিলা নেত্রীর পদলেহন ছাড়া বিকল্প কোন পথ নাই।
উপরোক্ত আলোচনা থেকে স্পষ্ট প্রমান হলো ইসলামের নামে গনতন্ত্র সর্বঅবস্থায় হারাম। জায়িয মনে করা কুফরী। যারা ইসলামের নামে গনতান্ত্র করার কথা বলে তারা মূলত ধর্মব্যবসায়ীভন্ড এবং মুনাফিক। 
কিছু বেক্কেল মার্কা পাবলিকের কথা শুনলে হাসি ধরে রাখা যায় না। এরা নাকি গনতন্ত্ররাজনীতি করে ইসলাম কায়েম করছে। হা হা হা !! 

এদের তিন হাত বডির ভিতর ইসলাম নাইএদের নিজের ঘড়ের ভিতর ইসলাম নাইসুন্নতের আমল করাতো দূরের কথা ফরজ ওয়াজিব আমলই ঠিক নাই এরা করতেছে ইসলাম কায়েম। এদের অবস্থা হয়েছে সেই গাধার মত..... এক গাধা ছিলো সে একটু পরপরই বসে পড়তোপথ চলতে পারতো না। গাধার মালিক খুব বিপদে পরে গেলকিভাবে তাহলে গন্তব্যে পৌঁছানো যাবে?? 
এমন সময় এক ব্যক্তি এই ব্যাপার দেখে তাকে বুদ্ধি দিলোএক কাজ করো একটা লাঠির আগায় কিছু মূলা বাঁধো তারপর গাধার পিঠে বসে লাঠি সহ মূলাটা গাধার নাকের আগায় ধরো তারপর দেখো গাধা কেমন দৌড়ায়। লোকটি তাই করলো গাধার নাকের ঢগায় মূলা ধরলোআর গাধাও মূল খাওয়ার লোভে ব্যপক দৌড়াইতে লাগলো ..... কিন্তু যতই দৌড়ায় মূলা আর ধরা যায় না... 
মুসলমান নামধারী কিছু নাদানকে বিধর্মীরা গনতন্ত্র নামক মূলা নাকের আগায় বেঁধে দিয়েছে । এরা ইসলাম কায়েম করার জন্য খুব দৌড়াচ্ছে... কিন্তু ইসলাম আর কায়েম হচ্ছে না। 
ওরে গাধার দল !! মূলার লোভ ছেড়ে দিয়ে হাক্কীকী ভাবে ইসলামে দাখিল হও। গনতন্ত্র দিয়ে কোনদিন ইসলাম প্রতিষ্ঠা হবে না। কবে তোমাদের বিবেক জাগ্রত হবে কে জানে ?? 
আল্লাহ পাক আমাদেরকে পবিত্র ইসলাম উনাকে বুঝার তৌফিক দান করুন। 
আমীন।