সুমহান ১৬ ই ‍যিলক্বদ শরীফ












১. সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল ‘আলামীন, আফদ্বলুন নাস ওয়ান নিসা বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ আসার পূর্বে উনার সম্মানিত শাদী মুবারক
অধিকাংশের মতে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ আসার পূর্বে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার দুইটি শাদী মুবারক হয়। সর্বপ্রথম শাদী মুবারক হয় মাস‘ঊদ ইবনে ‘আমর ইবনে ‘উমায়ের ছাক্বাফীর সাথে। তার সাথে জুদায়ী হওয়ার পর উনার শাদী মুবারক হয় সম্মানিত কুরাইশ বংশ উনার ‘আমিরী শাখার হযরত আবূ রুহ্ম ইবনে আব্দিল উয্যা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার সাথে। উনার সম্মানিত বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হয়। সুবহানাল্লাহ! কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
وَكَانَتْ ام المؤمنين سيدتنا حضرت ميمونة عليها السلام فِي الْجَاهِلِيَّةِ عِنْدَ مَسْعُودِ بْنِ عَمْرِو بْنِ عُمَيْرٍ الثَّقَفِيِّ، فَفَارَقَهَا وَخَلَفَ عَلَيْهَا ام المؤمنين حضرت أَبُو رُهْمِ بْنُ عَبْدِ الْعُزَّى بْنِ أَبِي قَيْسِ بْنِ عَبْدِ وُدِّ بْنِ نَصْرِ بْنِ مَالِكِ بْنِ حِسْلِ بْنِ عَامِرِ بْنِ لُؤَيٍّ رضى الله تعالى عنه فَتُوُفِّيَ عَنْهَا، فَتَزَوَّجَهَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
অর্থ: “জাহিলী যুগে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি মাস‘ঊদ ইবনে ‘আমর ইবনে ‘উমায়ের ছাক্বাফীর নিকট ছিলেন। তার থেকে জুদা হওয়ার পর উনার সম্মানিত শাদী মুবারক হয় হযরত আবূ রুহ্ম ইবনে আব্দুল উয্যা ইবনে আবূ ক্বইস ইবনে আবদে উদ্দ ইবনে নছ্র ইবনে মালিক ইবনে হিস্ল ইবনে ‘আমির ইবনে লুওয়াই ‘আমিরী কুরাইশী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার সাথে। তিনি সম্মানিত বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার পর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ-এ আবদ্ধ করেন।” সুবহানাল্লাহ! (‘উয়ূনুল আছার ২/৩৭৫, জাম‘উল ওয়াসায়িল ফী শরহিস শামায়িল ২/৬৮, তালক্বীহ্ ইত্যাদী)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ:
খায়বারের জিহাদ অনুষ্ঠিত হয় ৭ম হিজরী সনের শুরুর দিকে মুহররমুল হারাম শরীফ মাসে। আর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত ‘উমরাতুল কাযা আদায় করার জন্য যান ৭ম হিজরী সনের শেষের দিকে শাওওয়াল শরীফ মাসে। তখন উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি উনার সম্মানিত বোন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল ফযল লুবাবাহ্ কুবরা বিনতে হারিছ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা উনাকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার বিষয়ে আলাপ করার জন্য বলেন। তখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল ফযল লুবাবাহ্ কুবরা বিনতে হারিছ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি উনার সম্মানিত আহাল সাইয়্যিদুনা হযরত খ¦াতিমুল মুহাজিরীন (হযরত ‘আব্বাস ইবনে ‘আব্দুল মুত্ত্বালিব) আলাইহিস সালাম উনাকে বিষয়টি জানান এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট বিষয়টি পেশ করার জন্য বলেন। সুবহানাল্লাহ! তখন সাইয়্যিদুনা হযরত খ¦াতিমুল মুহাজিরীন আলাইহিস সালাম তিনি উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার পক্ষ থেকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার বিষয়ে প্রস্তাব মুবারক পেশ করেন। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে সম্মানিত ওহী মুবারক প্রাপ্ত হয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার প্রস্তাব মুবারক কবূল করেন। সুবহানাল্লাহ!
এ প্রসঙ্গে যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
وَامْرَأَةً مُؤْمِنَةً إِنْ وَهَبَتْ نَفْسَهَا لِلنَّبِيِّ إِنْ أَرَادَ النَّبِيُّ أَنْ يَسْتَنْكِحَهَا خَالِصَةً لَكَ مِنْ دُونِ الْمُؤْمِنِينَ
অর্থ: “যদি কোন মু’মিন মহিলা নিজেকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ পেশ করেন, তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি তিনি ইচ্ছা মুবারক করলে উক্ত মু’মিন মহিলা উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ-এ আবদ্ধ করতে পারেন। এটা বিশেষ করে আপনার জন্য তথা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য খাছ। মু’মিন উনাদের জন্য নয়।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৫০)
হযরত ইমাম মুহম্মদ ইবনে ইঊসুফ ছালিহী শামী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ শরীফ ১১তম খ-ের ২০৭ নং পৃষ্ঠায়’ উল্লেখ করেন,
عن حضرت قتادة رحمة الله عليه قال تزوج رسول الله صلى الله عليه وسلم حين اعتمر بمكة ام المؤمنين سيدتنا حضرت ميمونة بنت الحارث عليها السلام وهبت نفسها للنبي صلى الله عليه وسلم وفيها نزلت وامرأة مؤمنة إن وهبت نفسها للنبي إن أراد النبي أن يستنكحها خالصة لك من دون المؤمنين
অর্থ: “হযরত কাতাদাহ্ রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ-এ ‘উমরাতুল কাযা আদায় করেন, তখন তিনি উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ-এ আবদ্ধ করেন। সুবহানাল্লাহ! আর উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি নিজেই উনাকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ পেশ করেন। এ প্রসঙ্গে নাযিল হয়-
وَامْرَأَةً مُؤْمِنَةً إِنْ وَهَبَتْ نَفْسَهَا لِلنَّبِيِّ إِنْ أَرَادَ النَّبِيُّ أَنْ يَسْتَنْكِحَهَا خَالِصَةً لَكَ مِنْ دُونِ الْمُؤْمِنِينَ
‘যদি কোন মু’মিন মহিলা নিজেকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ পেশ করেন, তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি তিনি ইচ্ছা মুবারক করলে উক্ত মু’মিন মহিলা উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ-এ আবদ্ধ করতে পারেন। এটা বিশেষ করে আপনার জন্য তথা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য খাছ। মু’মিন উনাদের জন্য নয়।’ সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৫০)
৭ম হিজরী শরীফ উনার ১৬ই যিলক্বদ শরীফ লাইলাতু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ রাত) নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হয়। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ৫০ বছর ৪ মাস ১৩ দিন। সুবহানাল্লাহ!
এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ থেকে ১০ মাইল দূরে সারিফ নামক স্থানে। আর এই স্থানেই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ‘মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার অনুষ্ঠিত হওয়ার পর উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার সাথে প্রথম রাত্র মুবারক অতিবাহিত করেন। তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ মুবারক করেন যে, এই সারিফ নামক স্থানেই আপনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করবেন এবং এই স্থানেই আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ হবে। সুবহানাল্লাহ!
উল্লেখ্য যে, বিশুদ্ধ মতে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইহরাম অবস্থায় উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ করেন আর ইহরাম থেকে হালাল হয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হওয়ার পর উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার সাথে প্রথম রাত্র মুবারক অতিবাহিত করেন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে,
عَن حضرت ابْنِ عَبَّاسٍ رضى الله تعالى عنه أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَكَحَ ام المؤمنين سيدتنا حضرت ميمونة عليها السلام وَهُوَ مُحْرِمٌ وَبَنَى بِهَا حَلَالًا بِسَرِفَ، وَمَاتَتْ بِسَرِفَ
অর্থ: “হযরত ইবনে ‘আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইহরাম অবস্থায় উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ সম্পন্ন করেন আর ইহরাম থেকে হালাল হয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হওয়ার পর উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার সাথে সারিফ নামক স্থানে প্রথম রাত্র মুবারক অতিবাহিত করেন। সুবহানাল্লাহ! আর উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি সারিফ নামক স্থানেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে আহমদ শরীফ ১/৩৫৯)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত রয়েছে,
عَن حضرت ابْنِ عَبَّاسٍ رضى الله تعالى عنه قَالَ تَزَوَّجَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ام المؤمنين سيدتنا حضرت ميمونة عليها السلام وَهُوَ مُحْرِمٌ، وَبَنَى بِهَا وَهُوَ حَلاَلٌ، وَمَاتَتْ بِسَرِفَ
অর্থ: “হযরত ইবনে ‘আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইহরাম অবস্থায় উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ সম্পন্ন করেন আর ইহরাম থেকে হালাল হয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হওয়ার পর উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার সাথে প্রথম রাত্র মুবারক অতিবাহিত করেন। সুবহানাল্লাহ! আর উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি সারিফ নামক স্থানেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ)
ইমাম ত্ববারানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার লিখিত বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘আল মু’জামুল কাবীর শরীফ’ উনার মধ্যে বর্ণনা করেন,
عَنْ حضرت أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رضى الله تعالى عنه أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَزَوَّجَ اُمّ الْمُؤْمِنِيْنَ سَيِّدَتنَا حَضْرَتْ مَيْمُوْنَة عَلَيْهَا  السَّلَامُ بِسَرِفٍ، وَبَنَى بِهَا بِسَرِفٍ، وَمَاتَتْ بِسَرِفٍ
অর্থ: “হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ করেন সারিফ নামক স্থানে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হওয়ার পর উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার সাথে প্রথম রাত্রি মুবারক অতিবাহিত করেন করেন এই সারিফ নামক স্থানে এবং এই সারিফ নামক স্থানেই উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন।” সুবহানাল্লাহ! (আল মু’জামুল কাবীর শরীফ)
অপর বর্ণনায় রয়েছে,
وَمَاتَتْ بِسَرِفَ وَدَفَنَّاهَا فِي الظُّلَّةِ الَّتِي بَنَى بِهَا فِيهَا.
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি সারিফ নামক স্থানে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হওয়ার পর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যে ছাঁয়ায় (যে স্থানে) উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার সাথে প্রথম রাত্রি মুবারক অতিবাহিত করেন, সেখানেই উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনাকে সম্মানিত দাফন মুবারক করা হয়। অর্থাৎ সেখানেই উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ অবস্থিত।” সুবহানাল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ)

সম্মানিত মোহরানা মুবারক:
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার সম্মানিত মোহরানা মুবারক ছিলো ৫০০ দিরহাম। সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
تَزَوَّجَهَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى مَهْرِ خَمْسِ مِائَةِ دِرْهَمٍ
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি তিনি উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনাকে ৫০০ দিরহাম মোহরানা মুবারক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ-এ আবদ্ধ করেন।” সুবহানাল্লাহ! (ইবনে সা’দ, শারহুয যারক্বানী ‘আলাল মাওয়াহিব)

সম্মানিত ওলীমা মুবারক:
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
واولم على اُمّ الْمُؤْمِنِيْنَ سَيِّدَتنَا حَضْرَتْ مَيْمُوْنَة عَلَيْهَا  السَّلَامُ وبنى بها بسرف
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ‘সারিফ’ নামক সম্মানিত স্থান মুবারক-এ উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ওলীমাহ্ মুবারক করেন এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার পর প্রথম রাত্র মুবারক অতিবাহিত করেন।” সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে হাক্বা শরীফ ১/৪২১, তাফসীরে রূহুল বয়ান ১/২৫১, জামি‘উ লাত্বফিত তাফসীর ৪/২৬৫)
কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে,
عَنْ حضرت أَبِي عَبْدِ اللَّهِ رحمة الله عليه قَالَ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وآله حِينَ تَزَوَّجَ اُمّ الْمُؤْمِنِيْنَ سَيِّدَتنَا حَضْرَتْ مَيْمُوْنَة بِنْت الْحَارِثِ عَلَيْهَا  السَّلَامُ أَوْلَمَ عَلَيْهَا وَ أَطْعَمَ النَّاسَ الْحَيْسَ .
অর্থ: “হযরত আবূ আব্দুল্লাহ রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন উম্মু মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ করেন তখন উনার সম্মানার্থে সম্মানিত ওলীমাহ্ মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! আর মানুষদেরকে ‘হাইস’ নামক খাবার মুবারক খাওয়ান। সুবহানাল্লাহ! (কিতাবুল কাফী ১২/১৯৪)
অপর বর্ণনা রয়েছে,
لما وقع من البركة في وليمتها حيث أشبع المسلمين خبزا ولحما
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ওলীমা মুবারক-এ এতো অধিক বরকত হয় যে, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা তৃপ্তিসহকারে রুটি এবং গোশত খান।” সুবহানাল্লাহ! (‘উমদাতুল ক্বারী শরহু ছহীহুল বুখারী ২৯/৩৮০)
*************
২. উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় নসবনামাহ্ মুবারক

উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার উনার মহাসম্মানিত পিতা হচ্ছেন সাইয়্যিদুনা হযরত খুযাইমাহ্ ইবনে হারিছ আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! তিনি উনার মহাসম্মানিত পিতা উনার দিক থেকে ১৮তম মহাসম্মানিত পুরুষে যেয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মিলিত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! যেমন-
اُمُّ الْمُؤْمِنِيْنَ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ مَيْمُونَةُ بِنْتُ الْـحَارِثِ بْنِ حَزْنِ بْنِ بُـجَيْرِ بْنِ الْـهَزْمِ بْنِ رُوَيْبَةَ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ هِلَالِ بْنِ عَامِرِ بْنِ صَعْصَعَةَ بْنِ مُعَاوِيَةَ بْنِ بَكْرِ بْنِ هَوَازِنَ بْنِ مَنْصُوْرِ بْنِ عِكْرَمَةَ بْنِ خَصَفَةَ بْنِ قَيْسِ بْنِ عَيْلَانَ بْنِ مُضَرَ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ.
১. اُمُّ الْمُؤْمِنِيْنَ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ مَيْمُوْنَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত মাইমূনাহ্ আলাইহাস সালাম।
২. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ اَلْـحَارِثُ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছ আলাইহিস সালাম।
৩. حَزْنٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত হায্ন আলাইহিস সালাম।
৪. بُـجَيْرٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত বুজাইর আলাইহিস সালাম।
৫. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ اَلْـهَزْمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত হায্ম আলাইহিস সালাম।
৬. عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ رُوَيْبَةُ সাইয়্যিদুনা হযরত রুওয়াইবাহ্ আলাইহিস সালাম।
৭. عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ عَبْدُ اللهِ  সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আব্দুল্লাহ আলাইহিস সালাম।
৮. هِلَالٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত হিলাল আলাইহিস সালাম।
৯. عَامِرٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আমির আলাইহিস সালাম।
১০. صَعْصَعَةُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত ছ’ছ‘আহ্ আলাইহিস সালাম।
১১. مُعَاوِيَةُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত মু‘আবিয়াহ্ আলাইহিস সালাম।
১২. بَكْرٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত বাক্র আলাইহিস সালাম।
১৩. هَوَازِنُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত হাওয়াযিন আলাইহিস সালাম।
১৪. مَنْصُوْرٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত মানছূর আলাইহিস সালাম।
১৫. عِكْرَمَةُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত ‘ইক্রামাহ্ আলাইহিস সালাম।
১৬. خَصَفَةُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত খ¦ছাফাহ্ আলাইহিস সালাম।
১৭. عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ قَيْسٌ সাইয়্যিদুনা হযরত ক্বইস্ আলাইহিস সালাম।
১৮. عَيْلَانُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আইলান আলাইহিস সালাম।
১৯. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ مُضَرُ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত মুদ্বর আলাইহিস সালাম।
সাইয়্যিদুনা হযরত মুদ্বর আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত পূর্বপুরুষ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর আবুল বাশার সাইয়্যিদুনা হযরত ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার পর্যন্ত নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সল্লাম উনার এবং উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ আশার আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় নসবনামাহ মুবারক হুবহু একই। সুবহানাল্লাহ! (মিরআতুল আনসাব ৫৭, ইমতা‘উল আসমা’ ৬/১৮৮,  সীরাতে ইবনে হিশাম ৬/৬৩, আর রওদ্বুল উন্ফ ৪/৪২৮, তাহ্যীবু সীরতি ইবনে হিশাম ১/৪৩৯, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/১৪৪, মুখতাছারু তারীখে দিমাশ্ক্ব ৪/২৩৫, ‘উয়ূনুল আছার ২/৩৭০, মুস্তাদরকে হাকিম ৪/৩১, আস সুনানুল কুবরা লিল বাইহাক্বী ৭/৭০, আল মু’জামুল কাবীর লিত ত্ববারনী ১৭/২৩৬, আল আহাদ ওয়াল মাছানী ৫/৫৩০, আল মুন্তাখাব ১/১৮, আল মুখ্তাছারুল কাবীর ফী সীরতির রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১/১০৩, শারহুয যারক্বানী, বিদায়াহ্-নিহায়াহ্ ৫/৩১৬, তারীখুল উমাম ওয়াল মুল্ক ২/২১৪, আনসাবুল আশরাফ ১/১৯৬, আল আনসাব ১৩/৪১১, তারীখে বাগদাদ ৮/৩৪১, তারীখে ত্ববারী ১১/৬২২, ত্ববাক্বাতে খলীফাহ্ ১/৪০৪ ইত্যাদী)
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিতা মাতা হচ্ছেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত হিন্দ বিনতে ‘আউফ আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! তিনি ছিলেন সম্মানিত বনী হিম্ইয়ার গোত্রের। সুবহানাল্লাহ!
তিনি হচ্ছেন-
اُمُّ الْمُؤْمِنِيْنَ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ مَيْمُوْنَةُ بِنْتُ هِنْدِ بِنْتِ عَوْفِ بْنِ زُهَيْرِ بْنِ الْـحَارِثِ بْنِ حَمَاطَةَ بْنِ رَبِيْعَةَ بْنِ ذِىْ جَلِيْلِ بْنِ جُرَشِ بْنِ اَسْلَمَ بْنِ زَيْدِ بْنِ الْغَوْثِ بْنِ سَعْدِ بْنِ عَوْفِ بْنِ عَدِىِّ بْنِ مَالِكِ بْنِ زَيْدِ بْنِ سَهْلِ بْنِ عَمْرِو بْنِ قَيْسِ بْنِ مُعَاوِيَةَ بْنِ جُشَمِ بْنِ عَبْدِ شَـمْسِ بْنِ وَائِلِ بْنِ الْغَوْثِ بْنِ قَطَنِ بْنِ غَرِيْبِ بْنِ زُهَيْرِ بْنِ اَيْـمَنَ بْنِ الْـهَمَيْسَعِ بْنِ حِمْيَرِ بْنِ سَبَاَ بْنِ يَشْجُبَ بْنِ يَعْرُبَ بْنِ قَحْطَانَ بْنِ هُوْدِ النَّبِــىِّ بْنِ شَالَـخِ بْنِ اَرْفَخْشَذَ بْنِ سَامِ بْنِ نُوْحِ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ.
১.  اُمُّ الْمُؤْمِنِيْنَ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ مَيْمُوْنَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُউম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত মাইমূনাহ্ আলাইহাস সালাম।
২. سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ هِنْدٌ عَلَيْهَا السَّلَامُ সাইয়্যিদাতুনা হযরত হিন্দ আলাইহাস সালাম।
৩. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ عَوْفٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আউফ আলাইহিস সালাম।
৪. زُهَيْرٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত যুহাইর আলাইহিস সালাম।
৫. اَلْـحَارِثُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছ আলাইহিস সালাম।
৬. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ حَمَاطَةُ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত হামাত্বহ্ আলাইহিস সালাম।
৭. رَبِيْعَةُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত রবী‘আহ্ আলাইহিস সালাম।
৮. ذُوْ جَلِيْلٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত যূ জালীল আলাইহিস সালাম।
৯. جُرَشٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত জুরাশ আলাইহিস সালাম।
১০. اَسْلَمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত আসলাম আলাইহিস সালাম।
১১. زَيْدٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত যায়েদ আলাইহিস সালাম।
১২. اَلْغَوْثُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত গ¦ওছ্ আলাইহিস সালাম।
১৩. سَعْدٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত সা’দ আলাইহিস সালাম।
১৪. عَوْفٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আউফ আলাইহিস সালাম।
১৫. عَدِىٌّ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আদী আলাইহিস সালাম।
১৬. مَالِكٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত মালিক আলাইহিস সালাম।
১৭. عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ زَيْدٌ  সাইয়্যিদুনা হযরত যায়েদ আলাইহিস সালাম।
১৮. سَهْلٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত সাহ্ল আলাইহিস সালাম।
১৯. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ عَمْرٌو عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আমর আলাইহিস সালাম।
২০. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ قَيْسٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ক্বইস্ আলাইহিস সালাম।
২১. مُعَاوِيَةُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত মু‘আবিয়াহ্ আলাইহিস সালাম।
২২. جُشَمٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত জুশাম আলাইহিস সালাম।
২৩. عَبْدُ شَـمْسٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আবদু শাম্স আলাইহিস সালাম।
২৪. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ وَائِلٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ওয়াইল আলাইহিস সালাম।
২৫. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ اَلْغَوْثُ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত গ¦ওছ্ আলাইহিস সালাম।
২৬. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ قَطَنٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ক্বত্বন্ আলাইহিস সালাম।
২৭. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ غَرِيْبٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত গ¦রীব আলাইহিস সালাম।
২৮. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ زُهَيْرٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত যুহাইর আলাইহিস সালাম।
২৯. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ اَيْـمَنُ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত আইমান আলাইহিস সালাম।
৩০. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ اَلْـهَمَيْسَعُ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত আল হামাইসা’ আলাইহিস সালাম।
৩১. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ حِمْيَرٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত হিম্ইয়ার আলাইহিস সালাম।
৩২. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ سَبَاُ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত সাবা’ আলাইহিস সালাম।
৩৩. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ يَشْجُبُ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ইয়াশ্জুব আলাইহিস সালাম।
৩৪. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ يَعْرُبُ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ইয়া’রুব আলাইহিস সালাম।
৩৫. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ قَحْطَانُ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ক্বহ্ত্বান আলাইহিস সালাম।
৩৬. هُوْدٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত হূদ আলাইহিস সালাম।
৩৭. شَالَـخٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত শালাখ আলাইহিস সালাম।
৩৮. اَرْفَخْشَذُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত আরফাখ্শায আলাইহিস সালাম।
৩৯. سَامٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত সাম আলাইহিস সালাম।
৪০. نُوْحٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত নূহ আলাইহিস সালাম।
(মাক্বাতিলুত্ব ত্বালিবিয়্যীন, মাস‘ঊদী, ত্ববারাী, শারহুয যারক্বানী, আল ইস্তী‘য়াব, ইবনে হিশাম, আর রওদ্বুল উন্ফ, ‘উয়ূনুল আছার, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ, আল আনসাব, জমহুরাতুল আনসাব, আল মুন্তাখ¦ব ইত্যাদী)
কেউ কেউ বলেছেন, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিতা মাতা সাইয়্যিদাতুনা হযরত হিন্দ বিনতে ‘আউফ আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন বনূ কেনানাহ গোত্রের।
 ************

৩.এক নজরে
সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল ‘আলামীন, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত পরিচিতি মুবারক

উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে বিশেষ ব্যক্তিত্বা মুবারক। সুবহানাল্লাহ! তিনি শুধু যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারিণী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত মুহব্বত মুবারকই হচ্ছেন সম্মানিত ঈমান। সুবহানাল্লাহ!
নিম্নে এক নজরে উনার সম্মানিত পরিচিতি মুবারক তুলে ধরা হলো-
সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক: সাইয়্যিদাতুনা হযরত মাইমূনাহ্ আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত ও পবিত্র লক্বব মুবারক: উম্মুল মু’মিনীন, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আত্ব ত্বাহিরাহ, আত্ব ত্বইয়্যিবাহ্, মালিকাতুল জান্নাহ, মালিকাতুল কায়িনাত এছাড়াও আরো অসংখ্য-অগণিত। সুবহানাল্লাহ!
যেই সম্মানিত লক্বব মুবারক-এ সম্মানিত পরিচিতি মুবারক গ্রহণ করেছেন: উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত পিতা আলাইহিস সালাম: সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছ আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহাস সালাম: সাইয়্যিদাতুনা হযরত হিন্দ বিনতে ‘আউফ আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত বংশ মুবারক: বনূ হিলাল। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ: আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালত মুবারক প্রকাশের ৩১ বছর পূর্বে ৩রা রজবুল হারাম শরীফ সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (ইয়াওমুল ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ)। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার সম্মানিত স্থান মুবারক: সম্মানিত ও পবিত্র মক্কা শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত অবস্থান মুবারক: সম্মানিত ও পবিত্র মক্কা শরীফ এবং সম্মানিত ও পবিত্র মদীনা শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ: সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার সূচনালগ্নে। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে ‘আযীমুশ শান মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ: ৭ম হিজরী শরীফ উনার ১৬ই যিলক্বদ শরীফ লাইলাতু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ রাত)। সুবহানাল্লাহ!
‘আযীমুশ শান মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আ’যীম শরীফ অনুষ্ঠিত হওয়ার সময় দুনিয়াবী দৃষ্টিতে উনার সম্মানিত বয়স মুবারক: ৫০ বছর ৪ মাস ১৩ দিন। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়া: ৩ বছর ৩ মাস ২৬ দিন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ: ৫১ হিজরী শরীফ উনার ১৯শে যিলহজ্জ শরীফ সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (ইয়াওমুল ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ)। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার সম্মানিত স্থান মুবারক: সম্মানিত ও পবিত্র মক্কা শরীফ থেকে ১০ মাইল দূরে সম্মানিত ও পবিত্র সারিফ নামক স্থানে। সুবহানাল্লাহ! এখানেই উনার ‘আযীমুশ শান মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আ’যীম শরীফ অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। সুবহানাল্লাহ!
দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত অবস্থান মুবারক: ৯৪ বছর ৫ মাস ১৬ দিন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ: সম্মানিত ও পবিত্র মক্কা শরীফ থেকে ১০ মাইল দূরে সম্মানিত ও পবিত্র সারিফ নামক স্থানে। সুবহানাল্লাহ!

*************************

৪. মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল ‘আলামীন, আফদ্বলুন নাস ওয়ান নিসা বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সংক্ষিপ্ত জীবনী মুবারক-১

যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اَلنَّبِـىُّ اَوْلـٰى بِالْمُؤْمِنِيْنَ مِنْ اَنْفُسِهِمْ وَاَزْوَاجُهۤٗ اُمَّهٰتُهُمْ.
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন মু’মিন উনাদের নিকট উনাদের জানের চেয়ে অধিক প্রিয়, উনাদের মহাসম্মানিত পিতা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং উনার মহাসম্মানিতা ‘আযওয়াজুম মুত্বহহারাত’ (হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম) উনারা হচ্ছেন সমস্ত মু’মিন উনাদের মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহিন্নাস সালাম।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৬)
 হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা ছিলেন মোট ১৩ জন। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নেয়ার মুবারক ধারাবাহিকক্রম অনুযায়ী উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন ‘আছ ছালিছাহ্ ‘আশার তথা ১৩তম’। এ জন্য উনাকে ‘উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম’ বলা হয়। তিনি সকলের মাঝে ‘উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম’ হিসেবে পরিচিতি মুবারক গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ! উনার মূল মহাম্মানিত ও মহাপবিত্র ইসম বা নাম মুবারক হচ্ছেন ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত মাইমূনাহ্ আলাইহাস সালাম’। সুবহানাল্লাহ! তিনি শুধু যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং উনার মাহবূব  হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারিনী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত মুহব্বত মুবারকই হচ্ছেন সম্মানিত ঈমান। সুবহানাল্লাহ! উনাকে সম্মানিত মুহব্বত মুবারক করা, উনার সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম মুবারক করা, সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করা এবং উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়া সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের জন্য ফরযে আইন। সুবহানাল্লাহ! তাই উনার সম্মানিত জীবনী মুবারক জানাও সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের জন্য ফরযে আইন। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত পিতা আলাইহিস সালাম:
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত পিতা হচ্ছেন সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছ ইবনে হায্ন আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছ ইবনে হায্ন আলাইহিস সালাম তিনি ছিলেন বনূ হিলাল গোত্রের সবচেয়ে সম্মানিত ও অনুসরণীয় বিশেষ ব্যক্তিত্ব মুবারক। সুবাহনাল্লাহ! উনার সবচেয়ে বড় পরিচয় মুবারক হচ্ছে তিনি হচ্ছেন উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত আব্বাজান আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ! তাহলে উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি মহাসম্মানিত পিতা আলাইহিস সালাম উনার দিক থেকে ১৮তম পুরুষে যেয়ে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মিলিত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! উনার ৭ম পুরুষ হচ্ছেন সাইয়্যিদুনা হযরত হিলাল ইবনে ‘আমির আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুনা হযরত হিলাল ইবনে ‘আমির আলাইহিস সালাম তিনি ছিলেন আরবের প্রসিদ্ধ গোত্র ‘বনূ হিলাল’ গোত্রের মহাসম্মানিত প্রথম পুরুষ। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক অনুযায়ী উনার সম্মানিত বংশ মুবারক উনার নামকরণ মুবারক করা হয় ‘বনূ হিলাল’ হিসেবে। সুবহানাল্লাহ! এজন্য উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনাকে ‘আল হিলালিয়্যাহ’ বলা হয়। সুবাহনাল্লাহ! যেমন- কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
أم المؤمنين سيدتنا حَضْرَتْ ميمونة بنت الحارث الهلالية عليها السلام
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ্ ‘আশার সাইয়্যিদাতুনা হযরত মাইমূনাহ্ বিনতে হারিছ আল হিলালিয়্যাহ্ আলাইহাস সালাম।” সুবহানাল্লাহ! (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/২০৮, দালাইলুন নুবুওওয়াহ্ লিল বাইহাক্বী ৭/২৮৯, সীরাতে ইবনে ইসহাক্ব ৫/২৪৭, মুসনাদে আহমদ ৬/৩২৯, আখ্বারু মাক্কাহ্ ২/২১৩, আর রওদ্বুল উন্ফ ১/৪৩১, আস সীরাতুল হালাবিয়্যাহ ২/৭৮১, ‘উয়ূনুল আছার ২/১৫৮, নিহায়াতুল ঈজায ১/৩৩৯, বাহ্জাতুল মাহাফিল ১/৩৭৯, তারীখুল খ¦মীস ২/২৯৪, মাওয়াহিবুল লাদুননিয়্যাহ্ ১/৫০৩, শারহুয যারক্বানী ৭/১৬১, শরফুল মুস্ত¡ফা শরীফ ৩/৬১, বিদায়াহ্-নিহায়াহ্ ৫/৩০০, সিমতুন নুজূম ১/৪৭০ ইত্যাদী)
হযরত ইমাম আল্লামা যারক্বানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন,
"الهلالية"  عليها السلام نسبة إلى جدها هلال عليه السلام
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনাকে ‘আল হিলালিয়্যাহ’ বলা হয় উনার মহাসম্মানিত পূর্বপুরুষ সাইয়্যিদুনা হযরত হিলাল আলাইহিস সালাম উনার সাথে নিসবত করে।” সুবহানাল্লাহ! (শরহুয যারক্বানী আলাল মাওয়াহিব ৪/৪১৮)
আর উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার ৮ম পুরুষ সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আমির ইবনে ছ’ছ‘আহ্ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক অনুযায়ী উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনাকে ‘আল আমিরিয়্যাহ আলাইহাস সালাম’ বলা হয়। সুবহানাল্লাহ! যেমন-
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
أم المؤمنين سيدتنا حَضْرَتْ ميمونة بنت الحارث بن حزن الهلالية العامريّة عليها السلام
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ্ ‘আশার সাইয়্যিদাতুনা হযরত মাইমূনাহ্ বিনতে হারিছ ইবনে হায্ন আল হিলালিয়্যাহ্ আল ‘আমিরিয়্যাহ্ আলাইহাস সালাম।” সুবহানাল্লাহ! (জাম‘উল ওসায়িল ফী শরহিস শামায়িল ১/২৪৯, মুন্তাহাস সূল ‘আল ওয়াসায়িলিল উছূল ২/২৫০)

মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম:
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম তিনি কে, যদিও এ বিষয়ে অনেকে অনেক ইখতিলাফ করেছেন, তবে বিশুদ্ধ কথা হচ্ছে- উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম হচ্ছেন- ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত হিন্দ বিনতে ‘আউফ আলাইহাস সালাম।’ সুবহানাল্লাহ! তিনি ছিলেন উনার সম্প্রদায়ের মধ্যে সবচেয়ে সম্মানিতা ব্যক্তিত্বা মুবারক। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক উনার কায়িনাতে একমাত্র তিনিই সেই সুমহান ব্যক্তিত্বা মুবারক যিনি দুইজন মহাসম্মানিতা উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিমাস সালাম উনাদের মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ তিনি হচ্ছেন উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম উনার এবং  উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের উভয়ের মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! এদিক থেকে তিনি ছিলেন এক অনন্য বেমেছাল শ্রেষ্ঠত্ব মুবারক উনার অধিকারিণী। সুবহানাল্লাহ! তাহলে উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুর্যূগী-সম্মান মুবারক এবং বংশীয় পবিত্রতা মুবারক কতো বেমেছাল, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত শান মুবারক-এ বর্ণিত রয়েছে,
التي توصف بأنها أكرم عجوز في الأرض أصهاراً. فسيدتنا  حَضْرَتْ هند بنت عوفٍ عليها السلام هذه أم كل من:
أم المؤمنين سيدتنا  حَضْرَتْ زينب بنت خزيمة الهلالية عليها السلام زوج النبى صلى الله عليه وسلم
أم المؤمنين سيدتنا  حَضْرَتْ ميمونة بنت الحارث زوج النبى صلى الله عليه وسلم
سيدتنا  حَضْرَتْ أسماء بنت عميس الخثعمية رضي الله تعالى عنها، تزوجت من حضرت جعفر بن أبي طالب رضي الله تعالى عنه  ، ثم تزوجها سيدنا حضرت أبي بكر الصديق  عليه السلام ثم تزوجها سيدنا حضرت علي بن أبي طالب كرم الله وجهه عليه السلام
سيدتنا حضرت سلمى بنت عميس الخثعمية رضي الله تعالي عنه، زوج سيدنا حضرت حمزة بن عبد المطلب. عليه السلام
أم الفضل سيدتنا  حَضْرَتْ لبابة الكبرى بنت الحارث الهلالية رضي الله تعالى عنها، زوج سيدنا حضرت العباس بن عبد المطلب عليه السلام 
 سيدتنا  حَضْرَتْ لبابة الصغرى بنت الحارث الهلالية رضي الله تعالى عنها ، سيدنا حضرت أم خالد بن الوليد رضي الله تعالى عنه
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা হযরত হিন্দ বিনতে ‘আওফ আলাইহাস সালাম তিনি এমন সুমহান মহাসম্মানিতা ব্যক্তিত্বা মুবারক যে, উনার সম্মানিত প্রশংসা মুবারক করা হয় এভাবে- ‘নিশ্চয়ই তিনি হচ্ছেন আত্মীয়তার দিক থেকে দুনিয়ার যমীনে সবচেয়ে সম্মানিতা মহিলা।’ সুবহানাল্লাহ! কেননা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত হিন্দ বিনতে ‘আওফ আলাইহাস সালাম তিনি যেই সমস্ত মহাসম্মানিতা ব্যক্তিত্বা মুবারক উনাদের মহাসম্মানিতা আম্মাজান ছিলেন উনারা হচ্ছেন,
১. উম্মুল মু‘মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম তিনি। যিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা যাওজাতুম মুত্বহ্হারত (উম্মুল মু’মিনীন আলাইহাস সালাম) ছিলেন। সুবহানাল্লাহ!
২. উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি। যিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা যাওজাতুম মুত্বহ্হারত (উম্মুল মু’মিনীন আলাইহাস সালাম) ছিলেন। সুবহানাল্লাহ!
৩. সাইয়্যিদাতুনা হযরত আসমা’ বিনতে ‘উমায়েস আল খ¦ছ‘আমিয়্যাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা। তিনি সর্বপ্রথম হযরত জা’ফর ইবনে আবী ত্বালিব রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার আহলিয়াহ্ ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! তারপর (উনার সম্মানিত শাহাদাত মুবারক উনার পর) সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি উনাকে সম্মানিত শাদী মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর (উনার সম্মানিত বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পর) ইমামুল আউওয়াল মিন আহ্লি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত র্কারামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি উনাকে সম্মানিত শাদী মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!
৪. সাইয়্যিদাতুনা হযরত সালমা বিনতে ‘উমায়েস আল খ¦ছ‘আমিয়্যাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি। তিনি ছিলেন, সাইয়্যিদুশ শুহাদা’ সাইয়্যিদুনা হযরত হামযাহ্ ইবনে ‘আব্দুল মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত আহলিয়াহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহা। সুবহানাল্লাহ!
৫. সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল ফযল লুবাবাহ্ কুবরা বিনতে হারিছ আল হিলালিয়্যাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি। তিনি ছিলেন, খ¦াতিমুল মুহাজিরীন সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আব্বাস ইবনে ‘আব্দুল মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিতা আহলিয়াহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহা। সুবহানাল্লাহ!
৬. সাইয়্যিদাতুনা হযরত লুবাবাহ্ ছুগরা বিনতে হারিছ আল হিলালিয়্যাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি। তিনি ছিলেন, সাইয়্যিদুনা হযরত খ¦ালিদ ইবনে ওয়ালীদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার সম্মানিতা আম্মাজান। সুবহানাল্লাহ!
আল্লামা দিয়ার বাক্রী রহমতুল্লাহি আলাইহি (বিছাল শরীফ: ৯৬৬ হিজরী শরীফ) তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘তারীখুল খমীস শরীফ’ উনার মধ্যে উল্লেখ করেন,
فكان يقال: أكرم عجوز في الأرض أصهارا: سيدتنا حضرت هند الجرشية عليهاالسلام، لأن أصهارها: رسول الله صلى الله عليه وسلم، و سيدنا حضرت حمزة عليه السلام ، وسيدنا حضرت علي عليه السلام ، وسيدنا حضرت جعفر رضي الله تعالي عنه، وسيدنا حضرت أبو بكرالصديق عليه السلام ، وسيدنا حضرت العباس عليه السلام ، و سيدنا حضرت شداد بن الهاد رضي الله تعالي عنه.
 অর্থ: “এ কথা প্রচলিত ছিলো যে, দুনিয়ার যমীনে আত্মীয়তার দিক থেকে সবচেয়ে সম্মানিতা মহিলা হচ্ছেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত হিন্দ বিনতে ‘আওফ আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! কেননা উনার মহাসম্মানিত আত্মীয় হচ্ছেন-
১. স্বয়ং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
২. সাইয়্যিদুশ শুহাদা’ সাইয়্যিদুনা হযরত হামযাহ্ ইবনে আব্দুল মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
৩. সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
৪. সাইয়্যিদুনা হযরত জা’ফর ইবনে আবী ত্বালিব রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি। সুবহানাল্লাহ! 
৫. সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! 
৬. সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আব্বাস আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
৭. সাইয়্যিদুনা হযরত শাদ্দাদ ইবনে হাদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা ‘আনহু তিনি।” সুবহানাল্লাহ! (তারীখুল খমীস ১/২৬৭)
কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে,
سيدتنا حضرت هند بنت عوف بن زهير بن الحارث عليها السلام، التي قيل عنها إنها أكرم عجوز في الأرض أصهارا، حيث إن أصهارها: رسول الله صلى الله عليه وسلم، وسيدنا حضرت أبو بكر الصديق عليه السلام، وسيدنا حضرت حمزةعليه السلام، و سيدنا حضرت العباس عليه السلام، و سيدنا حضرت جعفر رضي الله تعالي عنه، و سيدنا حضرت علي بن أبي طالب عليه السلام أجمعين. وكان لها أيضا أصهار آخرون من المبرزين وذوي المكانة والمنزلة بين أقوامهم.
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা হযরত হিন্দ বিনতে ‘আউফ ইবনে যুহাইর ইবনে হারিছ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত শান মুবারক-এ বলা হয় যে, ‘নিশ্চয়ই তিনি হচ্ছেন আত্মীয়তার দিক থেকে দুনিয়ার যমীনে সবচেয়ে সম্মানিতা মহিলা।’ সুবহানাল্লাহ! কেননা উনার মহাসম্মানিত আত্মীয় হচ্ছেন-
১. স্বয়ং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
২. সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
৩. সাইয়্যিদুশ শুহাদা’ সাইয়্যিদুনা হযরত হামযাহ্ ইবনে আব্দুল মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
৪. সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আব্বাস আলাইহিস সালাম তিনি।
৫. সাইয়্যিদুনা হযরত জা’ফর ইবনে আবী ত্বালিব রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু তিনি। 
৬. সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
এছাড়াও উনার আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিলো উনাদের সম্প্রদায়ের মধ্যে যাঁরা সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ, সম্মানিত ও নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্ব মুবারক উনাদের সাথে।” সুবহানাল্লাহ! (নিসাউন নাবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
সাইয়্যিদাতুনা হযরত হিন্দ বিনতে ‘আউফ আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন বনূ হিম্ইয়ার গোত্রের। সুবহানাল্লাহ! উনার ২৯তম পূর্বপুরুষ সাইয়্যিদুনা হযরত হিম্ইয়ার ইবনে সাবা’ আলাইহিস সালাম তিনি ছিলেন সাইয়্যিদুনা হযরত হূদ আলাইহিস সালাম উনার বংশধর। সুবহানাল্লাহ! আর সাইয়্যিদুনা হযরত হূদ আলাইহিস সালাম তিনি ছিলেন সাইয়্যিদুনা হযরত নূহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত সাম আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত বংশধর। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুনা হযরত হিম্ইয়ার আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক অনুযায়ী পরবর্তীতে উনার বংশ মুবারক উনার নামকরণ মুবারক করা হয় ‘বনূ হিমইয়ার’ হিসেবে। সেই দিকে নিসবত মুবারক রেখে সাইয়্যিদাতুনা হযরত হিন্দ বিনতে ‘আউফ আলাইহাস সালাম উনাকে ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত হিন্দ বিনতে ‘আউফ আল হিম্ইয়ারিয়্যাহ্ আলাইহাস সালাম’ বলা হয়। সুবহানাল্লাহ! আর উনার ৭ম পুরুষ সাইয়্যিদুনা হযরত জুরাশ ইবনে আসলাম আলাইহিস সালাম উনার দিকে নিসবত করে উনাকে ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত হিন্দ বিনতে ‘আউফ আল জুরাশিয়্যাহ্ আলাইহাস সালাম’ বলা হয়। সুবহানাল্লাহ!

*********************************************
৫ .মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল ‘আলামীন, আফদ্বলুন নাস ওয়ান নিসা বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সংক্ষিপ্ত জীবনী মুবারক-২

উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিতা আখাওয়াত বা বোন আলাইহিন্নাস সালাম
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনারা ছিলেন মোট ১২ বোন। সুবহানাল্লাহ! উনারা হচ্ছেন-
১. উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
২. সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল ফযল লুবাবাহ্ কুবরা বিনতে হারিছ আল হিলালিয়্যাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি। তিনি ছিলেন খাতিমুল মুহাজিরীন সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আব্বাস ইবনে ‘আব্দুল মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিতা আহলিয়াহ্। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুনা হযরত ফযল ইবনে আব্বাস  রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি, সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ‘আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি, সাইয়্যিদুনা হযরত ‘উবাইদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি, সাইয়্যিদুনা হযরত মা’বাদ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি, সাইয়্যিদুনা হযরত কুছাম ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুর রহমান ইবনে ‘আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি অর্থাৎ উনারা প্রত্যেকেই ছিলেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল ফযল লুবাবাহ্ কুবরা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা উনার সম্মানিত আওলাদ। সুবহানাল্লাহ!
৩. সাইয়্যিদাতুনা হযরত লুবাবাহ্ ছুগরা বিনতে হারিছ আল হিলালিয়্যাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি। সুবহানাল্লাহ! তিনি ছিলেন হযরত খালিদ ইবনে ওয়ালীদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার সম্মানিতা আম্মাজান। সুবহানাল্লাহ!
৪. সাইয়্যিদাতুনা হযরত ‘আছমা বিনতে হারিছ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা। কেউ কেউ বলেছেন, তিনিই হচ্ছেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত লুবাবাহ্ ছুগরা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা।
৫. উম্মু হুফাইদ সাইয়্যিদাতুনা হযরত হুযাইলাহ্ বিনতে হারিছ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা।
৬. উম্মু যিয়াদ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ‘আয্যাহ্ বিনতে হারিছ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা। এবং
৭. সাইয়্যিদাতুনা হযরত র্বাযাহ্ বিনতে হারিছ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা। উনার সম্মানিত আওলাদ হচ্ছেন হযরত ইয়াযীদ ইবনে আছাম্ম রহমতুল্লাহি আলাইহি।
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি এবং উপরে বর্ণিত ৬ জন উনারা হচ্ছেন সহোদর বা আপন বোন। সুবহানাল্লাহ! এ হিসেবে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনিসহ উনারা মোট ৭ জন হচ্ছেন আপন বোন। সুবহানাল্লাহ! তবে কেউ কেউ এর ব্যতিক্রমও বলেছেন।
আর উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার বৈপিত্রেয় বোন হচ্ছেন-
১. উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম (সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাইনাব বিনতে খুযাইমাহ্ আলাইহাস সালাম)। সুবহানাল্লাহ!
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে, 
قَالَ اَبُو الحسن علي بْن عبد العزيز الجرجاني النسابة كانت ام المؤمنين سيدتنا حضرت زينب بنت خزيمة عليها السلام اخت ام المؤمنين سيدتنا حضرت ميمونة بنت الحارث عليها السلام لامها
অর্থ: “নসববীদ হযরত ইমাম আবুল হাসান আলী ইবনে আব্দুল আযীয জুরজানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিতা বৈপিত্রেয় বোন। অর্থাৎ মায়ের দিক থেকে বোন।” সুবহানাল্লাহ! (আল ইস্তি‘য়াব ৪/১৮৫৩, আল বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ্ ৪/১১০, তারীখুল খমীস ১/২৬৬, শারহুয যারক্বানী ‘আলাল মাওয়াহিব ৪/২১৬ ইত্যাদী)
২. সাইয়্যিদাতুনা হযরত আসমা বিনতে ‘উমায়েস আল খ¦ছ‘আমিয়্যাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি। তিনি সর্বপ্রথম হযরত জা’ফর ইবনে আবী ত্বালিব রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার আহলিয়াহ্ ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! তখন সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে জা’ফর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি, সাইয়্যিদুনা হযরত মুহম্মদ ইবনে জা’ফর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আওন ইবনে জা’ফর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি অর্থাৎ উনারা ৩ জন সম্মানিত বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তারপর (উনার সম্মানিত শাহাদাত মুবারক উনার পর) সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি উনাকে সম্মানিত শাদী মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন সাইয়্যিদুনা হযরত মুহম্মদ ইবনে আবূ বকর আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর (উনার সম্মানিত বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পর) ইমামুল আউওয়াল মিন আহ্লি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত র্কারামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি উনাকে সম্মানিত শাদী মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন সাইয়্যিদুনা হযরত ইয়াহ্ইয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আওন রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি অর্থাৎ উনারা সম্মানিত বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
৩. সাইয়্যিদাতুনা হযরত সালমা বিনতে ‘উমায়েস আল খ¦ছ‘আমিয়্যাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি। তিনি সর্বপ্রথম সাইয়্যিদুশ শুহাদা’ সাইয়্যিদুনা হযরত হামযাহ্ ইবনে ‘আব্দুল মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত আহলিয়াহ্ ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! তখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আমাতুল্লাহ বিনতে হামায্হ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি সম্মানিত বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুনা হযরত সাইয়্যিদুশ শুহাদা’ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশের পর সাইয়্যিদুনা হযরত শাদ্দাদ ইবনে হাদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি উনাকে সম্মানিত শাদী মুবারক করেন। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে শাদ্দাদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুর রহমান ইবনে শাদ্দাদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি অর্থাৎ উনারা ২ জন সম্মানিত বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
৪. সাইয়্যিদাতুনা হযরত সালামাহ্ বিনতে ‘উমাইস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা।
৫. কেউ কেউ সাইয়্যিদাতুনা হযরত সুলাইমা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা উনার নাম মুবারকও উল্লেখ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! সে হিসেবে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিতা বৈপিত্রেয় বোন উনারা ৫ জন। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনিসহ উনারা ছিলেন মোট ১২ বোন। সুবহানাল্লাহ! উনাদের প্রত্যেকেরই আম্মাজান ছিলেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত হিন্দ বিনতে ‘আউফ আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত ভাই:
স্বাভাবিকভাবে কিতাবে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার দুইজন সম্মানিত ভাই উনাদের বর্ণনা পাওয়া যায়। সুবহানাল্লাহ! উনারা হচ্ছেন-
১. সাইয়্যিদুনা হযরত সায়িব ইবনে হারিছ ইবনে হায্ন রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি। সাইয়্যিদুনা হযরত খাতিমুল মুহাজিরীন আলাইহিস সালাম (সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম) তিনি উনার সম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ফার‘আহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে সাইয়্যিদুনা হযরত সায়িব ইবনে হারিছ ইবনে হায্ন রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার নিকট সম্মানিত শাদী মুবারক দেন। সুবহানাল্লাহ!
২. সাইয়্যিদুনা হযরত ক্বত্বান ইবনে হারিছ ইবনে হায্ন রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু।
উনারা দু’জন হচ্ছেন উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ভাই। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ:
পৃথিবীর কোনো কিতাবে উম্মুল মু’মিনীন আস সাবি‘য়াহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত আত্বওয়ালু ইয়াদান আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের মহাসম্মানিত তারীখ মুবারক উল্লেখ নেই। এটা মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত আফসোসের বিষয় যে, মুসলমানরা উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের মহাসম্মানিত তারীখ মুবারক সংরক্ষণ করতে পারেনি। না‘ঊযুবিল্লাহ!
উল্লেখ্য যে, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আছ ছমাদ, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি হচ্ছেন একমাত্র যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মাহবূব হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ সম্মানিত নি‘য়ামত মুবারক। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে, আখাছ্ছুল খাছভাবে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের সাথে উনার রয়েছেন বেমেছাল হাক্বীক্বী দায়িমী তা‘য়াল্লুক্ব-নিসবত মুবারক এবং যিয়ারত মুবারক। সুবহানাল্লাহ! যার কারণে একমাত্র উনার পক্ষেই সম্ভব হয়েছে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের, আখাছ্ছুল খাছভাবে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মহাম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের মহাসম্মানিত তারীখ মুবারক এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হওয়ার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র তারীখ মুবারকসমূহ প্রকাশ করা। সুবহানাল্লাহ!
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আছ ছমাদ, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন যে, “উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালত মুবারক প্রকাশের ৩১ বছর পূর্বে ৩রা রজবুল হারাম শরীফ সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (ইয়াওমুল ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ) বনূ হিলাল গোত্রে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন।” সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত শৈশবকাল মুবারক
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি উনার মহাসম্মানিত শৈশবকাল মুবারক উনার মহাসম্মানিত পিতা-মাতা আলাইহিমাস সালাম উনাদের এবং উনার সম্মানিত ভাই-বোন উনাদের সাথে বনূ হিলাল গোত্রে অতিবাহিত করেন। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার সূচনালগ্নেই সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ আসার পূর্বে উনার সম্মানিত শাদী মুবারক
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ আসার পূর্বে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার কয়টি শাদী মুবারক হয় এবং কার কার সাথে হয়, এ বিষয়ে অনেক ইখতিলাফ রয়েছে। তবে অধিকাংশের মতে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ আসার পূর্বে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার দুইটি শাদী মুবারক হয়। সর্বপ্রথম শাদী মুবারক হয় মাস‘ঊদ ইবনে ‘আমর ইবনে ‘উমায়ের ছাক্বাফীর সাথে। তার সাথে জুদায়ী হওয়ার পর উনার শাদী মুবারক হয় কুরাইশ বংশের ‘আমিরী শাখার হযরত আবূ রুহ্ম ইবনে আব্দিল উয্যা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার সাথে। উনার সম্মানিত বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হয়। সুবহানাল্লাহ! কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
وَكَانَتْ مَيْمُونَةُ فِي الْجَاهِلِيَّةِ عِنْدَ مَسْعُودِ بْنِ عَمْرِو بْنِ عُمَيْرٍ الثَّقَفِيِّ، فَفَارَقَهَا وَخَلَفَ عَلَيْهَا أَبُو رُهْمِ بْنُ عَبْدِ الْعُزَّى بْنِ أَبِي قَيْسِ بْنِ عَبْدِ وُدِّ بْنِ نَصْرِ بْنِ مَالِكِ بْنِ حِسْلِ بْنِ عَامِرِ بْنِ لُؤَيٍّ، فَتُوُفِّيَ عَنْهَا، فَتَزَوَّجَهَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
অর্থ: “জাহিলী যুগে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি মাস‘ঊদ ইবনে ‘আমর ইবনে ‘উমায়ের ছাক্বাফীর নিকট ছিলেন। তার থেকে জুদা হওয়ার পর উনার সম্মানিত শাদী মুবারক হয় হযরত আবূ রুহ্ম ইবনে আব্দুল উয্যা ইবনে আবূ ক্বইস ইবনে আবদে উদ্দ ইবনে নছ্র ইবনে মালিক ইবনে হিস্ল ইবনে ‘আমির ইবনে লুওয়াই ‘আমিরী কুরাইশী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার সাথে। তিনি সম্মানিত বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার পর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ-এ আবদ্ধ করেন।” সুবহানাল্লাহ! (‘উয়ূনুল আছার ২/৩৭৫, জাম‘উল ওয়াসায়িল ফী শরহিস শামায়িল ২/৬৮, তালক্বীহ্ ইত্যাদী)
*******************************************************************

৬.মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল ‘আলামীন, আফদ্বলুন নাস ওয়ান নিসা বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সংক্ষিপ্ত জীবনী মুবারক-৩

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ:
৭ম হিজরী শরীফ উনার ১৬ই যিলক্বদ শরীফ লাইলাতু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ রাত) নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হয়। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার বয়স মুবারক ছিলেন ৫০ বছর ৪ মাস ১৩ দিন। সুবহানাল্লাহ! তিনি ৩ বছর ৩ মাস ২৬ দিন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেন। সুবহানাল্লাহ!

সম্মানিত তাক্বওয়া মুবারক
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার বেমেছাল সম্মানিত তাক্বওয়া মুবারক উনার বিষয়ে উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি বলেন,
إِنَّهَا كَانَتْ مِنْ أَتْقَانَا لِلَّهِ، وَأَوْصَلِنَا لِلرَّحِمِ
 অর্থ: “নিশ্চয়ই উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি আমাদের মধ্যে মহান আল্লাহ পাক উনাকে সবচেয়ে বেশী ভয় করতেন অর্থাৎ সবচেয়ে বেশি মুত্তাক্বী ছিলেন এবং সবচেয়ে বেশী আত্মীয়তার সম্পর্ক অটুট রাখতেন (মুস্তাদরকে হাকিম ৪/৩৪, মুসনাদে হারিছ ১/৫১৩, হিলইয়াতুল আউলিয়া ৪/৯৪, ইছাবাহ্ ৮/২৪ ইত্যাদী)
হযরত ইবনে হাজার আসক্বালানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘ইছাবাহ্’ উনার মধ্যে বলেন, ‘এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ খানা ছহীহ সনদে বর্ণিত।’ সুবহানাল্লাহ! (ইছাবাহ্ ৮/২৪)
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে একই পাত্র মুবারক থেকে পানি নিয়ে সম্মানিত গোসল মুবারক করা:
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنِ حضرت ابْنِ عَبَّاسٍ رضى الله تعالى عنه عَنْ ام الؤمنين سيدتنا حضرت الثالثة عشر عليها السلام (سيدتنا حضرت مَيْمُونَةَ عليها السلام) قَالَتْ كُنْتُ أَغْتَسِلُ أَنَا وَرَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ إِنَاءٍ وَاحِدٍ
অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি (উনার সম্মানিত খালা) উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণনা করেন। উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, আমি এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ আমরা একই সম্মানিত পাত্র মুবারক থেকে পানি নিয়ে সম্মানিত গোসল মুবারক করতাম।” সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে আহমদ ৪৪/৩৭৮)

হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদেরকেসহ সমস্ত কায়িনাতবাসীকে তা’লীম দান:
ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘মুসনাদে আহমদ শরীফ’ উনার মধ্যে উল্লেখ করেন,
عَنْ حضرت نُدبَةَ رحمة الله عليها مَوْلَاةِ ام الؤمنين سيدتنا حضرت الثالثة عشر عليها السلام (سيدتنا حضرت مَيْمُونَة عليها السلام) زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَتْ: أَرْسَلَتْنِي ام الؤمنين سيدتنا حضرت الثالثة عشر عليها السلام (سيدتنا حضرت مَيْمُونَةُ بِنْتُ الْحَارِثِ عليها السلام) إِلَى امْرَأَةِ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ وَكَانَتْ بَيْنَهُمَا قَرَابَةٌ، فَرَأَيْتُ فِرَاشَهَا مُعْتَزِلًا فِرَاشَهُ، فَظَنَنْتُ أَنَّ ذَلِكَ لِهِجْرَانٍ، فَسَأَلْتُهَا، فَقَالَتْ: لَا، وَلَكِنِّي حَائِضٌ، فَإِذَا حِضْتُ، لَمْ يَقْرَبْ فِرَاشِي، فَأَتَيْتُ ام الؤمنين سيدتنا حضرت الثالثة عشر عليها السلام (سيدتنا حضرت مَيْمُونَة عليها السلام) فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لَهَا، فَرَدَّتْنِي إِلَى ابْنِ عَبَّاسٍ، فَقَالَتْ: أَرَغْبَة عَنْ سُنَّةِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ لَقَدْ كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَنَامُ مَعَ الْمَرْأَةِ مِنْ نِسَائِهِ الْحَائِضِ، وَمَا بَيْنَهُمَا إِلَّا ثَوْبٌ مَا يُجَاوِزُ الرُّكْبَتَيْنِ
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার দাসী হযরত নুদ্বাহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহা উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি আমাকে (উনার সম্মানিতা বোন উনার ছেলে তথা উনার সম্মানিত ভাগিনা) সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ‘আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার সম্মানিতা আহলিয়াহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহা উনার নিকট পাঠালেন। সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ‘আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার এবং উনার সম্মানিতা আহলিয়াহ্ উনার অর্থাৎ উনাদের উভয়ের সম্পর্ক খুব গভীর ছিলো। কিন্তু আমি দেখলাম যে, উনার সম্মানিতা আহলিয়াহ রহমতুল্লাহি আলাইহা উনার বিছনা মুবারক এবং সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ‘আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার সম্মানিত বিছানা মুবারক থেকে পৃথক। অর্থাৎ উনারা উভয়ে পৃথক পৃথক বিছানায় শয়ন করেছেন। ফলে আমি ভাবলাম যে, নিশ্চয়ই এটা জুদায়ীর লক্ষণ। অর্থাৎ উনাদের উভয়ের মাঝে জুদায়ী ঘটতে পারে। তখন আমি উনার সম্মানিতা আহলিয়াহ রহমতুল্লাহি আলাইহা উনাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি জবাবে বললেন যে, না। বরং আমি স্বাভাবিক মাজুরতার মধ্যে আছি। যখন আমি স্বাভাবিক মাজুরতার মধ্যে থাকি, তখন তিনি আমার বিছানার নিকটবর্তী হন না। (যার কারণে আমরা উভয়ে এখন আলাদা বিছানায় শয়ন করেছি।) তারপর আমি যখন উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার নিকট এসে এ বিষয়টা আলোচনা করলাম। অর্থাৎ উনাকে পুরো বিষয়টা খুলে বললাম, তখন তিনি আমাকে ইবনে ‘আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা উনার নিকট পাঠালেন। (উনাকে ডেকে আনার জন্য। যখন হযরত ইবনে ‘আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা তিনি উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক আসলেন, তখন) উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি (হযরত ইবনে ‘আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা উনাকে উদ্দেশ্য করে) বললেন, আপনি কি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত সুন্নত মুবারক থেকে দূরে সড়ে গেছেন? নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তখনও হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের সাথে (একই সম্মানিত ও পবিত্র বিছানা মুবারক-এ)  ঘুমাতেন, যখন হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা এই বিশেষ শান মুবারক গ্রহণ করতেন। এই অবস্থায় নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উম্মুল মু’মিনীন আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের উভয়ের মাঝে শুধু একটি সম্মানিত ও পবিত্র কাপড় মুবারক থাকতো, যা দুই হাটু মুবারক অতিক্রম করতো। সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে আহমদ ৪৪/৪০২, আল মু’জামুল কাবীর লিত ত্ববারনী ২৪/১২)
ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, হযরত ইমাম আব্দুর রাজ্জাক্ব রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি এবং হযরত ইমাম ত্ববারানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি অর্থাৎ উনারাসহ আরো অন্যান্য ইমাম মুজতাহিদ রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনারা উনাদের নিজ নিজ কিতাবে উল্লেখ করেছেন,
عَنْ حضرت مَنْبُوذٍ رحمة الله عليه عَنْ أُمِّهِ قَالَتْ كُنْتُ عِنْدَ ام الؤمنين سيدتنا حضرت الثالثة عشر عليها السلام (سيدتنا حضرت مَيْمُونَة عليها السلام) فَأَتَاهَا حضرت ابْنُ عَبَّاسٍ رضى الله تعالى عنه فَقَالَتْ: يَا بُنَيَّ، مَا لَكَ شَعِثًا رَأْسُكَ؟ قَالَ: حضرت أُمُّ عَمَّارٍ رحمة الله عليها مُرَجِّلَتِي حَائِضٌ. قَالَتْ: أَيْ بُنَيَّ، وَأَيْنَ الْحَيْضَةُ مِنَ الْيَدِ؟ " كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَدْخُلُ عَلَى إِحْدَانَا وَهِيَ حَائِضٌ، فَيَضَعُ رَأْسَهُ فِي حِجْرِهَا، فَيَقْرَأُ الْقُرْآنَ وَهِيَ حَائِضٌ،
অর্থ: “হযরত মানবূয রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার সম্মানিতা আম্মাজান উনার থেকে বর্ণনা করেন। উনার আম্মাজান বলেন, একদা আমি উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার নিকট ছিলাম। তখন হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি উনার নিকট আসলেন। উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি  হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে উদ্দেশ্যে করেন, হে বৎস! কি ব্যাপর, আপনার মাথার চুল মুবারক এলোমেলো কেন? তিনি বলেন, হযরত উম্মু ‘আম্মার রহমাতুল্লাহি আলাইহা (আমার সম্মানিত আহলিয়াহ্) তিনি আমার চুল মুবারক পরিপাটি করে থাকেন। তিনি এখন স্বাভাবিক মাজুরতায় আছেন। তিনি বলেন, হে বৎস! হাতে কি কিছু থাকে?  আমরা যখন এই বিশেষ শান মুবারক-এ থাকতাম, তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাদের নিকট আসতেন এবং আমাদের সম্মানিত কোল মুবারক-এ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল হুদা মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাথা মুবারক) রাখতেন। সুবহানাল্লাহ! তারপর তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ তিলাওয়াত মুবারক করতেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে আহমদ ৪৪/৩৯২, মুছান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক্ব ১/৩২৫, আল মু’জামুল কাবীর লিত্ব ত্বাবারানী ২৪/১৪৪, মুসনাদে হুমাইদী ১/৩১৬, মুছান্নাফে আবী শায়বাহ্ ১/১৮৪ ইত্যাদী)
 মুসলিম শরীফসহ আরো অন্যান্য কিতাবে উল্লেখ রয়েছে,
عَنِ حضرت ابْنِ عَبَّاسٍ رضى الله تعالى عنه أَنَّهُ قَالَ: إِنَّ امْرَأَةً اشْتَكَتْ شَكْوَى، فَقَالَتْ: إِنْ شَفَانِي اللهُ لَأَخْرُجَنَّ فَلَأُصَلِّيَنَّ فِي بَيْتِ الْمَقْدِسِ، فَبَرَأَتْ، ثُمَّ تَجَهَّزَتْ تُرِيدُ الْخُرُوجَ، فَجَاءَتْ ام الؤمنين سيدتنا حضرت الثالثة عشر عليها السلام (سيدتنا حضرت مَيْمُونَة عليها السلام) زَوْجَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تُسَلِّمُ عَلَيْهَا، فَأَخْبَرَتْهَا ذَلِكَ، فَقَالَتْ: اجْلِسِي فَكُلِي مَا صَنَعْت، وَصَلِّي فِي مَسْجِدِ الرَّسُولِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. فَإِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَقُولُ: ্রصَلَاةٌ فِيهِ أَفْضَلُ مِنْ أَلْفِ صَلَاةٍ فِيمَا سِوَاهُ مِنَ الْمَسَاجِدِ، إِلَّا مَسْجِدَ الْكَعْبَةِ
অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার এক মহিলা অত্যন্ত অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন তিনি বলেন, যদি মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে সুস্থ করেন, তাহলে আবশ্যই আমি বাইতুল মুকাদ্দাস শরীফ যেয়ে নামায আদায় করবো। তারপর উক্ত মহিলা তিনি যখন আরোগ্য লাভ করেন, তখন তিনি বাইতুল মুকাদ্দাস শরীফ-এ যাওয়ার প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। অতঃপর তিনি উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার নিকট এসে উনাকে সালাম মুবারক দিয়ে এই বিষয়ে উনাকে অবহিত করেন। তখন উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি উক্ত মহিলাকে বলেন, আপনি বসুন এবং আমি যা তৈরী করেছি তা খান। আর আপনি (বাইতুল মুকাদ্দাস শরীফ না যেয়ে) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদে নববী শরীফ-এ নামায আদায় করুন। সুবহানাল্লাহ! কেনানা, নিশ্চয়ই আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ইরশাদ মুবারক করতে শুনেছি, ‘মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদে নবীব শরীফ উনার মধ্যে নামায আদায় করা অন্যান্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক-এ নামায আদায় করার চেয়ে হাজার গুন শ্রেষ্ঠ এবং উত্তম। তবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদে কা’বা শরীফ উনার বিষয়টি আলাদা।” সুবহানাল্লাহ! (মুসলিম শরীফ, মুসনাদে আহমদ ৪৪/৪০৮, আস সুনানুল কুবরা লিল বাইহাক্বী ১০/১৪১, জামি‘উল উছূল ১১/৫৪০, তারীখে বাগদাদ ২/১৯৯ ইত্যাদী)

**********************************************************

মালিকাতুল কায়িনাত, ক্বায়িদাতুল্লাহ ওয়া ক্বায়িদাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি ‘আলাল ‘আলামীন, আফদ্বলুন নাস ওয়ান নিসা’ বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় লক্বব মুবারক

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
وَلِلّٰهِ الْاَسْـمَاءُ الْـحُسْنٰـى فَادْعُوْهُ بِـهَا.
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক উনার অনেক সুন্দর সুন্দর সম্মানিত নাম মুবারক তথা সম্মানিত লক্বব মুবারক রয়েছেন, তোমরা সেই সম্মানিত নাম মুবারক তথা সম্মানিত লক্বব মুবারক দ্বারা উনাকে আহ্বান মুবারক করো।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত সূরা আ’রাফ শরীফ: সম্মানিত আয়াত শরীফ ১৮০)
মহান আল্লাহ পাক তিনি যেমন অসীম, ঠিক তেমনিভাবে উনার সম্মানিত লক্বব মুবারক উনাদের সংখ্যাও অসীম। সুবহানাল্লাহ! অনুরূপভাবে মহান আল্লাহ পাক উনার মাহবূব হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার পরিপূর্ণ ক্বায়িম মাক্বাম হওয়ার কারণে উনার সম্মানিত লক্বব মুবারক উনাদের সংখ্যাও অসংখ্য-অগণিত। সুবহানাল্লাহ! এক কথায় তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন; এছাড়া সমস্ত সম্মানিত লক্বব মুবারক উনার অধিকারী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ! ঠিক একইভাবে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সরাসরি সংশ্লিষ্ট এবং সম্পৃক্ত হওয়ার কারণে তথা উম্মুল মু‘মিনীন আলাইহাস সালাম হওয়ার কারণে উনার সম্মানিত লক্বব মুবারক উনার সংখ্যাও অসংখ্য-অগণিত। সুবহানাল্লাহ! তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া যত সম্মানিত লক্বব মুবারক রয়েছেন, সমস্ত সম্মানিত লক্বব মুবারক উনাদের অধিকারিণী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ!
 এখানে উনার কতিপয় মহাসম্মানিত মহাপবিত্র বরকতময় লক্বব মুবারক উল্লেখ করা হলো:
১. اُمُّ الْمُؤْمِنِيْنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ  (উম্মুল মু’মিনীন আলাইহাস সালাম) একমাত্র যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মাহবূব হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারাসহ সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
২. اُمُّ الْمُؤْمِنِيْنَ اَلثَّالِثَةُ عَشَرَ عَلَيْهَا السَّلَامُ  (উম্মুল মু‘মিনীন আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম) সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নেয়ার মুবারক ধারাবাহিকক্রম অনুযায়ী উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন ‘আছ ছালিছাহ্ ‘আশার তথা ১৩তম’। এ জন্য উনাকে ‘উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম’ বলা হয়। সুবহানাল্লাহ!
৩. اَهْلُ بَيْتِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ(আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!
৪. سَيِّدَةُ النِّسَاءِ عَلَى الْعَالَمِيْنَ  (সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন) সারা কায়িনাতে যত মহিলা রয়েছেন উনাদের প্রত্যেকের সাইয়্যিদাহ্। সুবহানাল্লাহ!
৫. سَيِّدَةُ نِسَاءِ اَهْلِ الْجَنَّةِ  (সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ) জান্নাতবাসী সমস্ত মহিলাগণ উনাদের সাইয়্যিদাহ। সুবহানাল্লাহ!
৬. اٰيَةُ اللهِ  (আয়াতুল্লাহ)- মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত নিদর্শন মুবারক।
৭. اَلْبُشْرٰى  (আল বুশরা)- সম্মানিত সুসংবাদ মুবারক, সম্মানিত সুসংবাদ মুবারক দানকারিণী।
৮. جَامِعةُ النِّعْمَةِ وَالنِّسْبَةِ (জামি‘য়াতুন নি’মাতি ওয়ান নিসবাহ)- সমস্ত সম্মানিত নি‘য়ামত মুবারক ও নিবসত মুবারক উনাদের মালিকাহ, সমস্ত সম্মানিত নি‘য়ামত মুবারক ও নিবসত মুবারক দানকারিণী।
৯. اَلْـحَافِظَةُ (আল হাফিযাহ)- সর্বোত্তম হিফাযতকারিণী, সর্বশ্রেষ্ঠ সংরক্ষণকারিণী।
১০. اَلْـحَامِدَةُ  (আল হামিদাহ)- সর্বোত্তম প্রশংসাকারিণী।
১১. حَبِيْبَةُ اللهِ  (হাবীবাতুল্লাহ)- মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীবাহ্।
১২. اَلْـحَلِيْمَةُ  (আল হালীমাহ)- পরম ধৈর্যশীলা, মহাসহনশীলা।
১৩. اَلْـخَالِصَةُ  (আল খ¦ালিছাহ)- খালিছাহ, পূত-পবিত্রা, পবিত্রতা দানকারিণী।
১৪. اَلْـخَبِيْرَةُ  (আল খ¦বীরাহ)- মহাবিচক্ষণা।
১৫. اَلْـخَلِيْلَةُ  (আল খ¦লীলাহ)- আখাছ্ছুল খাছ মাহবূবাহ।
১৬. خَلِيْلَةُ الرَّحْـمٰنِ  (খ¦লীলাতুর রহমান)- মহান আল্লাহ উনার আখাছ্ছুল খাছ মাহবূবাহ।
১৭. اَلذَّاكِرَةُ (আয যাকিরাহ)- সর্বোত্তম যিকিরকারিণী।
১৮. ذِكْرُ اللهِ  (যিক্রুল্লাহ)- মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত যিকির মুবারক। অর্থাৎ উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি নিজেই যিকরুল্লাহ। সুবহানাল্লাহ!
১৯. ذَاتُ الْـخلق العظيم  (যাতুল খুলুক্বিল আযীম)- সর্বোত্তম সুমহান চরিত্র মুবারক উনার অধিকারিণী।
২০. ذَاتُ السَّكِيْنَةِ  (যাতুস সাকীনাহ)- সাকীনাহ, শান্তি, প্রশান্তি, ইতমিনান মুবারক উনাদের মালিকাহ।
২১. ذَاتُ الْعِزَّةِ  (যাতুল ‘ইযযাহ)- সম্মানিত ইজ্জত মুবারক উনার মালিকাহ।
২২. ذَاتُ الْفَضْلِ  (যাতুল ফাদ্বল)- সম্মানিত ফযল মুবারক উনার মালিকাহ।
২৩. اَلرَّافِعَةُ (আর রাফি‘য়াহ)- সুউচ্চ মর্যাদা-মর্তবা মুবারক উনার অধিকারিণী এবং সুউচ্চ মর্যাদা-মর্তবা মুবারক দানকারিণী।
২৪. رَحْـمَةُ الْاُمَّةِ (রহমাতুল উম্মাহ)- সমস্ত উম্মতের জন্য সম্মানিত রহমত মুবারক।
২৫. لِّـلْـعَـالَـمِيْنَ ٌ رَحْـمَة (রহমাতুল্লিল ‘আলামীন)- সমস্ত আলমের জন্য সম্মানিত রহমত মুবারক।
২৬. رَفِيْقَةُ اللهِ (রফীক্বতুল্লাহ)- মহান আল্লাহ পাক উনার রফীক্বাহ, হাবীবাহ।
২৭. رَفِيْعَةُ الدَّرَجَاتِ (রফী‘য়াতুদ দারাজাত)- সকল সুউচ্চ সুমহান মর্যাদা-মর্তাবা ও মাক্বামাত মুবারক উনাদের মালিকাহ।
২৮. اَلزَّاهِدَةُ (আয যাহিদাহ)- দুনিয়াবিরাগিণী, মহান আল্লাহ পাক উনার দিকে দায়িমীভাবে রুজু, মহান আল্লাহ পাক উনার দিকে দায়িমীভাবে রুজু করানে ওয়ালা।
২৯. اَلـزَّكِـيَّةُ (আঝ ঝাকিয়্যাহ)- পূত-পবিত্রা, মহাবিচক্ষণা।
৩০. اَلسَّابِقَةُ بِالْـخَيْرَاتِ (আস সাবিক্বাতু বিল খইরাত)- খইর, কল্যাণ, ভালাই ইত্যাদি সর্ববিষয়ে অগ্রগামিণী।
৩১. اَلسَّاجِدَةُ (আস সাজিদাহ)- সর্বোত্তম সিজদাকারিণী।
৩২. اَلسَّخِىَّةُ(আস সাখি¦য়্যাহ)- মহাদানশীলা।
৩৩. سَعِيْدَةُ  (আস সাঈদাহ)- সর্বশ্রেষ্ঠ সুখী, সর্বশ্রেষ্ঠ নেকবখ্ত, সৌভাগ্যবান।
৩৪. اَلسَّلَامُ (আস সালাম)- সর্বশ্রেষ্ঠ শান্তিদাতা।
৩৫. اَلسَيِّدَةُ (আস সাইয়্যিদাহ)- সাইয়্যিদাহ, সর্বশ্রেষ্ঠা।
৩৬. سَيِّدَةُ الثَّقَلَيْنِ (সাইয়্যিদাতুছ ছাক্বলাইন)- দুই প্রধান সৃষ্টিজীব- জিন ও ইনসানের সাইয়্যিদাহ।
৩৭. سَـيِّـدَةُ الْكَوْنَيْنِ (সাইয়্যিদাতুল কাওনাঈন)- দুই জগতের সাইয়্যিদাহ।
৩৮. اَلشَّافِعَةُ (আশ শাফি‘য়াহ)- সর্বোত্তম সুপারিশকারিণী, সর্বশ্রেষ্ঠ শাফা‘য়াতকারিণী।
৩৯. اَلشَّافِـيَةُ (আশ শাফিয়াহ)- শিফাদানকারিণী, আরোগ্যদানকারিণী, সমস্ত উম্মতের জন্য যাহিরী-বাতিনী আরোগ্যদানকারিণী।
৪০. اَلشَّاكِرَةُ (আশ শাকিরাহ)- যথার্থ পুরস্কারদানকারিণী, যথাযথ শুকরিয়া আদায়কারিণী।
৪১. اَلشَّاهِدَةُ (আশ শাহিদাহ)- উপস্থিত, হাযির-নাযির, সাক্ষ্যদানকারিণী।
৪২. اَلشَّرِيْفَةُ (আশ শারীফাহ)- সর্বোচ্চ শরীফ, সর্বোচ্চ মর্যাদাবান, সর্বোচ্চ সম্ভ্রান্তশীলা।
৪৩. اَلصَّابِرَةُ (আছ ছাবিরহ)- চরম ধৈর্যশীলা।
৪৪. اَلصَّاحِبَةُ (আছ ছাহিবাহ)- মালিকাহ, অধিকারিণী।
৪৫. صَاحِبَةُ الشَّفَاعَةِ (ছাহিবাতুশ শাফা‘আহ)- সম্মানিত শাফায়াত মুবারক উনার মালিকাহ।
৪৬. صَاحِبَةُ الْفَضِيْلَةِ (ছাহিবাতুল ফাদ্বীলাহ)- সম্মানিত ফযীলত মুবারক উনার মালিকাহ।
৪৭. صَاحِبَةُ الْـخَيْرِ (ছাহিবাতুল খইর)- সমস্ত কল্যাণ মুবারক উনাদের মালিকাহ।
৪৮. صَاحِبَةُ الْكَوْثَرِ (ছাহিবাতুল কাওছার)- সম্মানিত কাওছার মুবারক উনার মালিকাহ, সম্মানিত খাইরে কাছীর মুবারক তথা সমস্ত সম্মানিত ভালাই বা কল্যাণ মুবারক উনাদের মালিকাহ।
৪৯. صَاحِبَةُ الدَّرَجَةِ الْعَالِيَةِ الرَّفِيْعَةِ (ছাহিবাতুদ দারাজাতিল ‘আলিয়াতির রফী‘য়াহ) সুউচ্চ সুমহান সম্মানিত দারাজাত তথা সম্মান ও মাক্বামাত মুবারক উনার মালিকাহ।
৫০. اَلطَّاهِرَةُ (আত্ব ত্বাহিরাহ)- পূত-পবিত্রা, পূত-পবিত্রতাদানকারিণী।
৫১. اَلظَّاهِرَةُ (আয যাহিরাহ)- অত্যন্ত সুস্পষ্ট, উজ্জ্বল, সুউচ্চ মর্যাদাবান, সর্বশ্রেষ্ঠ বিজয়িনী।
৫২. اَلْعَادِلَةُ (আল ‘আদিলাহ)- চরম ন্যায়বিচারকারিণী, চরম ন্যায়পরায়ণা।
৫৩. اَلْعَارِفَةُ (আল ‘আরিফাহ)- পরিচিত, অবহিত, জ্ঞাত। অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার হাক্বীক্বী সম্মানিত পরিচয় মুবারক লাভকারিণী, মহান আল্লাহ পাক উনার হাক্বীক্বী সম্মানিত পরিচয় মুবারক দানকারিণী।
৫৪. اَلْعَافِـيَةُ (আল ‘আফিয়াহ)- মাফকারিণী, ক্ষমাকারিণী।
৫৫. اَلْعَالِـمَةُ (আল ‘আলিমাহ)- ‘আলিমাহ, মহাজ্ঞানী।
৫৬. اَلْعَلِيْمَةُ (আল ‘আলীমাহ)- ‘আলীমাহ, সর্বজ্ঞাত।
৫৭. اَلْعَزِيْزَةُ (আল ‘আযীযাহ)- মাহবূবাহ, মহাসম্মানিতা, বেমেছাল মর্যাদা-মর্তবা ও প্রভাব-প্রতিপত্তি মুবারক উনার অধিকারিণী, মালিকাহ।
৫৮. اَلْعَلِـيَّةُ (আল ‘আলিয়্যাহ)- সুউচ্চ, মহামর্যাদাবান, মহাসম্মানিতা।
৫৯. اَلْغَالِبَةُ (আল গ¦ালিবাহ)- গ¦ালিবাহ, মহাবিজয়িনী, সর্বাধিক প্রাধান্য বিস্তারকারিণী।
৬০. اَلْغَنِيَّةُ (আল গ¦নিয়্যাহ)- মহাসম্পদশালিনী, মহাধনী, অমুখাপেক্ষী, বেনিয়াজ।
৬১. اَلْفَاضِلَةُ (আল ফাদ্বিলাহ)- মহাসম্মানিতা, সুউচ্চ মর্যাদা-মর্তবা মুবারক উনার অধিকারিণী, সর্বশ্রেষ্ঠা, সর্বসেরা।
৬২. اَلْفَائِقَةُ (আল ফায়িক্বাহ)- সর্বশ্রেষ্ঠা, অনন্যা।
৬৩. اَلْفَارِقَةُ (আল ফারিক্বাহ)- হক্ব ও নাহক্বের মাঝে পার্থক্যকারিণী।
৬৪. اَلْفَصِيْحَةُ (আল ফাছীহাহ)- সুভাষিণী, বিশুদ্ধভাষিণী।
৬৫. اَلْقَاسِمَةُ (আল ক্বাসিমাহ)- বণ্টনকারিণী।
৬৬. اَلْقَائِدَةُ  (আল ক্বায়িদাহ)- সাইয়্যিদাহ, মহানপরিচালিকা, সম্মানিত হিদায়াত উনার পথে পরিচালনাকারিণী।
৬৭. قَائِدَةُ الْـخَيْرِ (ক্বায়িদাতুল খইর)- কল্যাণের দিকে পরিচালনাকারিণী, যিনি সবাইকে কল্যাণের দিকে নিয়ে যান।
৬৮. قَائِدَةُ اللهِ (ক্বায়িদাতু ইলাল্লাহ)- মহান আল্লাহ পাক উনার  দিকে পরিচালনাকারিণী, যিনি সবাইকে মহান আল্লাহ পাক উনার দিকে নিয়ে যান।
৬৯. قَائِدَةُ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ (ক্বায়িদাতু ইলা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দিকে পরিচালনাকারিণী, যিনি সবাইকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দিকে নিয়ে যান।
৭০. اَلْقَرِيْبَةُ (আল ক্বরীবাহ)- চিরনিকটবর্তী, অতি নিকটস্থ, অতি ঘনিষ্ঠ।
৭১. اَلْقَوِيَّةُ (আল ক্বওইয়াহ)- সর্বশক্তিমান, মহাশক্তিধর।
৭২. اَلْكَامِلَةُ (আল কামিলাহ)- পরিপূর্ণ, পরিপূর্ণতাদানকারিণী।
৭৩. اَلْكَرِيْـمَةُ (আল কারীমাহ)- মহাসম্মানিতা, মহামর্যাদাবান, মহাদানশীলা।
৭৪. اَلْمُؤْتَـمَنَةُ (আল মু’তামানাহ)- চির বিশ্বস্ত, সর্বশ্রেষ্ঠা আমানাতদার, আমানতের যথাযথ হিফাযতকারিণী।
৭৫. اَلْمَأْمُوْنَةُ (আল মা’মূনাহ)- নিরাপদ, চির বিশ্বস্ত, আমানদানকারী, নিরাপত্তাদানকারী।
৭৬. اَلْـمُؤْمِنَةُ (আল মু’মিনাহ) সর্বশ্রেষ্ঠা ঈমানদার, সর্বশ্রেষ্ঠা মু’মিনাহ, সম্মানিত ঈমান মুবারক দানকারিণী।
৭৭. مَأْوَى الْجِنِّ وَالْاِنْسِ  (মা’ওয়াল জিন্নি ওয়াল ইন্স) জিন-ইনসানের আশ্রয়স্থল।
৭৮. اَلْمَاجِدَةُ (আল মাজিদাহ)- গৌরবময়ী, মহামর্যাদাবান, মহান, গৌরবান্বিত, মর্যাদাদানকারিণী।
৭৯. اَلْمُبَاركَةُ (আল মুবারিকাহ)- বরকতদানকারিণী, কল্যাণদানকারিণী।
৮০. اَلْمُبَارَكَةُ (আল মুবারকাহ)- বরকতময়, কল্যাণময়।
৮১. اَلْـمُبَشِّرَةُ  (আল মুবাশশিরাহ)- সুসংবাদদানকারিণী।
৮২. اَلْمُبَلِّغَةُ (আল মুবাল্লিগহ)- সম্মানিত দ্বীন উনার প্রতি আহ্বানকারিণী।
৮৩. اَلْمُتَبَسِّمَةُ (আল মুতাবাসসিমাহ)- হাস্যোজ্জ্বল, যিনি মুচকি হাসি মুবারক দেন।
৮৪. اَلْمُجَاهِدَةُ (আল মুজাহিদাহ)- মুজাহিদাহ, জেহাদকারিণী।
৮৫. اَلْمُجِيْبَةُ (আল মুজীবাহ)- জবাবদানকারিণী, সাড়াদানকারিণী, কবুলকারিণী।
৮৬. اَلْمَجِيْدَةُ  (আল মাজীদাহ)- মহামর্যাদাবান, মহীয়ান, গৌরবান্বিত, গৌরবময়ী।
৮৭. اَلْمَحْمُوْدَةُ (আল মাহমূদাহ)- চরম প্রশংসিত।
৮৮. اَلْمُخْتَارَةُ (আল মুখ¦তারহ)- মনোনীত, সর্বশ্রেষ্ঠা, শ্রেষ্ঠত্বদানকারিণী।
৮৯. اَلْمُخْتَصَّةُ  (আল মুখতাচ্ছাহ)- বিশেষ ব্যক্তিত্বা মুবারক, আখাছ্ছুল খাছ ব্যক্তিত্বা মুবারক।
৯০. اَلْـمَخْصُوْصَةُ بِالعِزَّةِ  (আল মাখ¦ছূছাতু বিল ‘ইজ্জাহ)- বিশেষ সম্মান-ইজ্জত মুবারক উনার অধিকারিণী, আখাছ্ছুল খাছ সম্মান-ইজ্জত, মর্যাদা-মর্তবা মুবারক উনাদের মালিকাহ।
৯১. اَلْـمُرْشِدَةُ (আল মুরশিদাহ)- সৎ পথ প্রদর্শনকারিণী, হিদায়াতদানকারিণী।
৯২. اَلْـمُزَكِّيَةُ (আল মুযাক্কিয়াহ)- তাযকিয়াদানকারিণী, পবিত্রতাদানকারিণী।
৯৩. اَلْـمُسْتَجِيْبَةُ  (আল মুস্তাজীবাহ)- সাড়াদানকারিণী, জবাবদানকারিণী।
৯৪. اَلْمُسْتَفِيْضَةُ (আল মুস্তাফীযাহ)- ফয়েযদানকারিণী।
৯৫. اَلْمُسْتَقِيْمَةُ (আল মুস্তাক্বীমাহ)- সরল, সঠিক, ইস্তিকামত রাখনে ওয়ালা।
৯৬. اَلْمَسْعُوْدَةُ (আল মাস‘ঊদাহ)- সৌভাগ্যশীলা, সর্বশ্রেষ্ঠা ভাগ্যবান, সৌভাগ্যদানকারিণী।
৯৭. اَلْمَشْهُوْدَةُ  (আল মাশহূদাহ)- উপস্থিত, হাযির-নাযির।
৯৮. اَلْـمُشَفَّعَةُ  (আল মুশাফ্ফা‘আহ)- যেই সুমহান ব্যক্তিত্বা মুবারক উনার সুপারিশ কবুল করা হয়।
৯৯. اَلْمُصْلِحَةُ (আল মুছলিহাহ)- ইছলাহদানকারিণী, সংশোধনকারিণী।
১০০. اَلْمُصَدِّقَةُ (আল মুছদ্দিক্বাহ)- সত্যায়নকারিণী।
১০১. مُطَهَّرٌ (আল মুত্বহ্হারহ)- পূত-পবিত্রা।
১০২. مُطَهِّرٌ (আল মুত্বহ্হিরহ্)- পূত-পবিত্রতাদানকারিণী।
১০৩. اَلْمَعْرُوْفَةُ (আল মা’রূফাহ)- পরিচিত, প্রসিদ্ধ, মশহূর।
১০৪. اَلْـمُعَزَّزَةُ (আল মু‘আয্যাযাহ)- মহাসম্মানিতা, মহামর্যাদাবান, সম্মান দানকারিণী, মর্যাদা দানকারিণী।
১০৫. اَلْمَعْشُوْقَةُ (আল মা’শূক্বাহ)- মা’শূক্বাহ, সকলের নিকট সর্বাধিক মাহবূবাহ।
১০৬. اَلْمُعَظَّمَةُ (আল মু’য়ায্যামাহ)- মহাসম্মানিতা, মহামর্যাদাবান, সম্মান দানকারিণী, মর্যাদা দানকারিণী।
১০৭. اَلْمُعَلِّمَةُ (আল মু‘য়াল্লিমাহ)- মু‘য়াল্লিমাহ, তা’লীমদানকারিণী।
১০৮. اَلْمُعِيْنَةُ (আল মু‘ঈনাহ)- সর্বশ্রেষ্ঠ সাহায্যকারিণী।
১০৯. اَلْـمُقَدِّسَةُ (আল মুক্বদ্দিসাহ)- উৎসর্গকারিণী, পবিত্রতাদানকারিণী।
১১০. اَلْـمُقَدَّسَةُ (আল মুক্বাদ্দাসাহ)- উৎসর্গকৃত, মহাপবিত্রা, পবিত্রতা দানকারিণী।
১১১. اَلْمُكَرَّمَةُ (আল মুর্কারমাহ)- মহাসম্মানিতা, সম্মান দানকারিণী।
১১২. اَلْمَالِكَةُ (আল মালিকাহ)- মালিকাহ, অধিকারিণী।
১১৩. مَالِكَةُ الْـجَنَّةِ (মালিকাতুল জান্নাহ)- সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার মালিকাহ।
১১৪. مَالِكَةُ الْكَائِنَاتِ (মালিকাতুল কায়িনাত)- সমস্ত কায়িনাতের মালিকাহ।
১১৫. مَالِكَةُ جَامِعِ النِعَمِ(মালিকাতু জামিয়িন নি‘য়াম)- সমস্ত সম্মানিত নি‘য়ামত মুবারক উনাদের মালিকাহ।
১১৬. اَلْـمُنْتَصِرَةُ (আল মুনতাছিরহ)- সর্বশ্রেষ্ঠ বিজয়িনী, মহাশক্তিধর।
১১৭. منّة الله (মিন্নাতুল্লাহ)- মহান আল্লাহ পক উনার সর্বশ্রেষ্ঠ অনুগ্রহ মুবারক।
১১৮. اَلْـمُنْذِرَةُ (আল মুনযিরহ)- ভীতিপ্রদর্শনকারিণী, সতর্ককারিণী।
১১৯. اَلْـمُنِيْبَةُ (আল মুনীবাহ)- মালিকাহ, মুনীবাহ, সমস্ত কায়িনাত যেই সুমহান ব্যক্তিত্বা মুবারক উনার গোলাম।
১২০. اَلْـمُغِيْثَةُ (আল মুগীছাহ)- সর্বশ্রেষ্ঠ সাহায্যকারিণী, ত্রাণকর্তা, উদ্ধারকারিণী।
১২১. اَلْـمُنِيْرَةُ (আল মুনীরহ)- আলোদানকারিণী, উজ্জ্বল, নূর দানকারিণী, হিদায়াত দানকারিণী, ফয়েযদানকারিণী, সম্মানিত রহমত মুবারক দানকারিণী।
১২২. اَلْمَوْعِظَةُ (আল মাও‘িয়য¦হ)- সর্বশ্রেষ্ঠ নছীহতকারিণী।
১২৩. اَلْمُهَذَّبَةُ (আল মুহায্যাবাহ)- পূত-পবিত্রা, মহাপবিত্রা, পবিত্রতা দানকারিণী।
১২৪. اَلنَّاصِحَةُ (আন নাছিহাহ)- সর্বশ্রেষ্ঠ নছীহতকারিণী, উপদেশদানকারিণী।
১২৫. اَلنَّاهِـيَةُ (আন নাহিয়াহ)- (সম্মানিত শরী‘য়াত উনার খিলাফ সমস্ত কাজে) নিষেধকারিণী, বারণকারিণী।
১২৬. اَلنِّعْمَةُ (আল নি’মাহ)- সর্বশ্রেষ্ঠ নি‘য়ামত মুবারক।
১২৭. نِعْمَةُ اللهِ (নি’মাতুল্লাহ)- মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে সর্বশ্রেষ্ঠ নি‘য়ামত মুবারক।
১২৮. اَلنَّقِيْبَةُ (আন নাক্বীবাহ)- সাইয়্যিদাহ।
১২৯. اَلنُّوْرُ (আন নূর)- নূর মুবারক।
১৩০. اَلنُّوْرُ الْمُكَرَّمَةُ (আন নূরুল মুকাররমাহ)- মহাসম্মানিত নূর মুবারক।
১৩১. اَلنُّوْرُ الْمُطَهَّرَةُ (আন নূরুল মুত্বহ্হারহ)- মহাপবিত্র নূর মুবারক।
১৩২. نُوْرُ اللهِ (নূরুল্লাহ)- মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত নূর মুবারক।
১৩৩. نُوْرُ الْكَائِنَات (নূরুল কায়িনাত)- সমস্ত কায়িনাতের জন্য নূর মুবারক, আলোকবর্তিকা।
১৩৪. اَلْـهَادِيَةُ (আল হাদিয়াহ)- সর্বশ্রেষ্ঠ হিদায়াতকারিণী।
১৩৫. هَدِيَّةُ اللهِ (হাদিয়্যাতুল্লাহ)- মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে মহাসম্মানিত হাদিয়া মুবারক, তোহফা মুবারক।
১৩৬. اَلْوَاسِعَةُ (আল ওয়াসি‘আহ)- সীমাহীন ইলম মুবারক উনার অধিকারিণী, মহাদানশীলা।
১৩৭. اَلْوَاعِظَةُ (আল ওয়া‘য়িযহ)- সর্বশ্রেষ্ঠ ওয়ায়েজ, নছীহতকারিণী, উপদেশদানকারিণী।
১৩৮. اَلْوَافِـيَةُ (আল ওয়াফীয়াহ)- পরিপূর্ণ, পরিপূর্ণতাদানকারিণী।
১৩৯. اَلْوَسِيْلَةُ (আল ওয়াসীলাহ)- সর্বশ্রেষ্ঠ ওয়াসীলাহ মুবারক, সর্বশ্রেষ্ঠ মাধ্যম মুবারক।
১৪০. اَلْوَهَّابَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ (আল ওহ্হাবাহ আলাইহাস সালাম)- সর্বশ্রেষ্ঠ দানশীল, সীমাহীন দানকারিণী। সুবহানাল্লাহ!
এছাড়াও অসংখ্য-অগণিত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় লক্বব মুবারক উনাদের মালিকাহ হচ্ছেন উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!

****************************************************************
হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের যারা মানহানী করবে, তাদের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদ-। তারা নামধারী মুসলমান হোক বা কাফির হোক অথবা নাস্তিক হোক কিংবা যেকোনো ধর্মেরই অনুসারী হোক না কেন। তাদের তাওবা গ্রহণযোগ্য হবে না। এমনকি যারা তাদেরকে সমর্থন করবে, তাদেরও একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদ-


হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক এক কথায় উনারা শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারিণী হচ্ছেন উনারা। সুবহানাল্লাহ! উনারা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সংযুক্ত এবং সম্পৃক্ত। সুবহানাল্লাহ! সম্মানিত শরীয়ত মুবারক উনার সম্মানিত ফতওয়া মুবারক অনুযায়ী- উনাদের যারা মানহানী করবে, সেটা সরাসরি হোক বা ইশারা ইঙ্গিতেই হোক, স্বাভাবিক অবস্থায় হোক অথবা মাতাল বা নেশাগ্রস্থ অবস্থায় হোক অর্থাৎ যেকোনো অবস্থায়ই হোক না কেন- অবশ্যই অবশ্যই তাদের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদ-। তারা নামধারী মুসলমান হোক বা কাফির হোক অথবা নাস্তিক হোক কিংবা যেকোনো ধর্মেরই অনুসারী হোক না কেন। তাদের তাওবা গ্রহণযোগ্য হবে না। এ মৃত্যুদ- থেকে রেহাই পাওয়ার তাদের কোনো সুযোগ নেই এবং এ বিষয়ে কোনো প্রকার ওজর-আপত্তিও গ্রহণযোগ্য হবে না। শুধু তাই নয়, তাদেরকে শাস্তিস্বরূপ দৃষ্টান্তমূলকভাবে মৃত্যুদ- দিতে হবে। তা শরীয়তের অন্যান্য বিধান অমান্য করার কারণে যেরূপ কঠিন শাস্তি দেয়া হয়, তার চেয়ে আরো লক্ষ কোটি গুণ বেশি কঠিনভাবে যন্ত্রণাদায়ক ও লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি দিয়ে মৃত্যুদ- দিতে হবে। এমনকি যারা তাদেরকে সমর্থন করবে, তাদেরও একই হুকুম। সুবহানাল্লাহ!
এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اِنَّ الَّذِيْنَ يُؤْذُوْنَ اللهَ وَرَسُوْلَهٗ لَعَنَهُمُ اللهُ فِـى الدُّنْيَا وَالْاٰخِرَةِ وَاَعَدَّ لَـهُمْ عَذَابًا مُّهِيْنًا.
অর্থ: “নিশ্চয়ই যারা মহান আল্লাহ পাক উনাকে এবং উনার রসূল, উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে কষ্ট দেয়, তাদের উপর মহান আল্লাহ পাক উনার লা’নত দুনিয়া ও আখিরাতে এবং মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদের জন্য লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৭)
সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ عَلِـىٍّ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ اٰذَانِـىْ فِـىْ عِتْـرَتِـىْ فَقَدْ اٰذَى اللهَ عَزَّ وَجَلَّ.
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের ব্যাপারে আমাকে কষ্ট দিলো, সে মূলত যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনাকেই কষ্ট দিলো।” নাঊযুবিল্লাহ! (দায়লামী, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৯)
সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ عَلِـىٍّ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ اٰذَانِـىْ وَعِتْرَتِـىْ فَعَلَيْهِ لَعْنَةُ اللهِ.
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি আমাকে এবং আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে কষ্ট দিবে, তার উপর মহান আল্লাহ পাক উনার লা’নত। অর্থাৎ সে মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে লা’নতগ্রস্থ।” নাঊযুবিল্লাহ! (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৯)
আর মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
مَلْعُوْنِيْنَ اَيْنَمَا ثُقِفُوْاۤ اُخِذُوْا وَقُتِّلُوْا تَقْتِيْلًا.
অর্থ: “লা’নতগ্রস্ত অবস্থায় তাদেরকে যেখানেই পাওয়া যাবে, সেখানেই পাকড়াও করা হবে এবং অবশ্যই তাদেরকে ক্বতল করা হবে, মৃত্যুদ- দেয়া হবে।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৬১)
মহান আল্লাহ পাক তিনি অন্যত্র ইরশাদ মুবারক করেন-
وَالَّذِيْنَ يُؤْذُوْنَ رَسُوْلَ اللهِ لَـهُمْ عَذَابٌ اَلِيْمٌ.
অর্থ: “আর যারা মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কষ্ট দেয়, তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা তাওবা শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৬১)
সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ عَلِـىٍّ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ سَبَّ نَبِيًّا فَاقْتُلُوْهُ وَمَنْ سَبَّ اَصْحَابِـىْ فَاضْرِبُوْهُ.
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি কোনো নবী-রসূল আলাইহিস সালাম উনাকে গাল-মন্দ করবে, উনার মানহানী করবে, আপনারা তাকে ক্বতল করুন, মৃত্যুদ- দিন। আর যে ব্যক্তি আমার হযরত ছাহাবায়ে রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উনাদেরকে গাল-মন্দ করবে, উনাদের মানহানী করবে, আপনারা তাকে প্রহার করুন।” সুবহানাল্লাহ! (আশ শিফা ২/২২১, ফাতাওয়ায়ে বায্যাযিয়্যাহ ২/২৪২, আল মু’জামুছ ছগীর লিত ত্ববারনী ১/৩৯৩)
হযরত ইমাম আবূ ‘আব্দিল্লাহ মুহম্মদ ইবনে আব্দিস সালাম ইবনে সাহনূন রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন,
اَجْمَعَ الْعُلَمَاءُ اَنَّ شَاتِـمَ النَّبِـىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلْمُتَنَقِّصَ لَهٗ كَافِرٌ وَّالْوَعِيْدُ جَارٍ عَلَيْهِ بِعَذَابِ اللهِ لَهٗ وَحُكْمُهٗ عِنْدَ الْاُمَّةِ الْقَتْلُ وَمَنْ شَكَّ فِـىْ كُفْرِهٖ وَعَذَابِهٖ كَفَرَ.
অর্থ: “সমস্ত হযরত ইমাম-মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ উনারা এ বিষয়ে ইজমা’ করেছেন যে, নিঃসন্দেহে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গাল-মন্দকারী, উনার মর্যাদাহননকারী, মানহানীকারী ব্যক্তি কাফির এবং তার জন্য মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে। তার ব্যাপারে সমস্ত উম্মত উনাদের ফায়ছালা হলো, তাকে শাস্তিস্বরূপ ক্বতল করতে হবে, মৃত্যুদ- দিতে হবে। আর যে ব্যক্তি এ ধরণের লোকদের কাফির হওয়ার ব্যাপারে এবং শাস্তিযোগ্য হওয়ার বিষয়ে অর্থাৎ তার একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদ- হওয়ার বিষয়ে সন্দেহ পোষণ করবে, সেও কাফির হবে (এবং তাকেও শাস্তিস্বরূপ মৃত্যুদ- দিতে হবে)।” সুবহানাল্লাহ! (শিফা শরীফ ২/২১৫, আস সাইফুল মাসলূল ১২০ পৃ., নিহায়াতুস সুওয়াল ২৬১ পৃ.)
কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে,
يُقْتَلُ عَلـٰى كُلِّ حَالٍ اَسَرَّ ذٰلِكَ اَوْ اَظْهَرَهٗ وَلَا يُسْتَتَابُ.
অর্থ: “যে কোনো অবস্থায় হোক না কেন তাকে ক্বতল করতে হবে, মৃত্যুদ- দিতে হবে। চাই সে গোপনে গাল-মন্দ করুক বা প্রকাশ্যে গাল-মন্দ করুক। তার তওবা গ্রহণযোগ্য হবে না।” (আশ শিফা ২/২১৬, আস সাইফুল মাসলূল ১২৭-১২৮ পৃ.)
আর সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنِ الْاِمَامِ الثَّالِثِ سَيِّدِنَا حَضْرَتْ اَلْـحُسَيْنِ بْنِ عَلِىٍّ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِمَا السَّلَامُ اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَنْ سَبَّ اَهْلَ الْبَيْتِ فَاِنَّـمَا يَسُبُّ اللهَ وَرَسُوْلَهٗ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.
অর্থ: “ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হুসাইন ইবনে হযরত আলী আলাইহিমাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে গাল-মন্দ করলো, মানহানী করলো, সে মূলত মহান আল্লাহ পাক উনাকে এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকেই গাল-মন্দ করলো, উনাদেরই মানহানী করলো।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৮)
অতএব, সম্মানিত ও পবিত্র কুরআন শরীফ এবং সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের আলোকে সম্মানিত ফতওয়া মুবারক হচ্ছেন- নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের যারা মানহানী করবে, তাদের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদ-। আর হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে বিশেষ ব্যক্তিত্বা মুবারক। কাজেই, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের যারা মানহানী করবে, তাদের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদ-। তারা নামধারী মুসলমান হোক বা কাফির হোক অথবা নাস্তিক হোক কিংবা যেকোনো ধর্মেরই অনুসারী হোক না কেন। তাদের তাওবা গ্রহণযোগ্য হবে না। এ মৃত্যুদ- থেকে রেহাই পাওয়ার তাদের কোনো সুযোগ নেই এবং এ বিষয়ে কোনো প্রকার ওজর-আপত্তিও গ্রহণযোগ্য হবে না। শুধু তাই নয়, তাদেরকে শাস্তিস্বরূপ দৃষ্টান্তমূলকভাবে মৃত্যুদ- দিতে হবে। তা শরীয়তের অন্যান্য বিধান অমান্য করার কারণে যেরূপ কঠিন শাস্তি দেয়া হয়, তার চেয়ে আরো লক্ষ কোটি গুণ বেশি কঠিনভাবে যন্ত্রণাদায়ক ও লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি দিয়ে মৃত্যুদ- দিতে হবে। এমনকি যারা তাদেরকে সমর্থন করবে, তাদেরও একই হুকুম। সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কে কিতাবে অনেক ওয়াক্বেয়া মুবারক বর্ণিত রয়েছে। যেমন-
ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত যায়িদ ইবনে হাসান আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত বংশধর, ছাহিবু জুরযান, অত্যন্ত ন্যায়পরায়ণ ও ইনসাফগার শাসক, আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যদুনা হযরত ইমাম হাসান ইবনে যায়েদ আদ দায়ী ইবনে মুহম্মদ ইবনে ইসমা‘ঈল ইবনে হাসান ইবনে যায়েদ ইবনে হাসান ইবনে আলী ইবনে আবী ত্বালিব আলাইহিমুস সালাম (বিছাল শরীফ : ২৭০ হিজরী) উনার সম্মানিত জীবনী মুবারক-এ উল্লেখ রয়েছে,
قَالَ اَبُو السَّائِبِ عُتْبَةُ بْنُ عَبْدِ اللهِ الْـهَمْذَانِـىُّ قَاضِىُ الْقُضَاةِ كُنْتُ يَوْمًا بِـحَضْرَةِ الْـحَسَنِ بْنِ زَيْدِ ۣ الدَّاعِىِّ بِطَبَرِسْتَانَ وَكَانَ يَلْبَسُ الصُّوْفَ وَيَاْمُرُ بِالْمَعْرُوْفِ وَيَنْهٰى عَنِ الْمُنْكَرِ وَيُوَجِّهٗ فِـىْ كُلِّ سَنَةٍ بِعِشْرِيْنَ اَلْفَ دِيْنَارٍ اِلـٰى مَدِيْنَةِ السَّلَامِ تُفَرَّقُ عَلـٰى صَغَائِرِ وَلَدِ الصَّحَابَةِ وَكَانَ بـِحَضْرَتِهٖ رَجُلٌ ذَكَرَ اُمَّ الْمُؤْمِنِيْنَ الثَّالِثَةَ سَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ اَلصِّدِّيْقَةَ عَائِشَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ بِذِكْرٍ قَبِيْحٍ مِّنَ الْفَاحِشَةِ فَقَالَ يَا غُلَامُ اضْرِبْ عُنُقَهٗ فَقَالَ لَهُ الْعَلَوِيُّوْنَ هٰذَا رَجُلٌ مِّنْ شِيْعَتِنَا فَقَالَ مَعَاذَ اللهِ هٰذَا رَجُلٌ طَعَنَ عَلَى النَّبِـىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ اَلْـخَبِيْثٰتُ لِلْخَبِيْثِيْنَ وَالْـخَبِيْثُوْنَ لِلْخَبِيْثٰتِ وَالطَّيِّبٰتُ لِلطَّيِّبِيْنَ وَالطَّيِّبُوْنَ لِلطَّيِّبٰتِ اُولٰٓئِكَ مُبَرَّءُوْنَ مِـمَّا يَقُوْلُوْنَ لَـهُمْ مَّغْفِرَةٌ وَّرِزْقٌ كَرِيْـمٌ  فَاِنْ كَانَتْ اُمُّ الْمُؤْمِنِيْنَ الثَّالِثَةُ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اَلصِّدِّيْقَةُ عَائِشَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ خَبِيْثَةً فَالنَّبِـىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَبِيْثٌ فَهُوَ كَافِرٌ فَاضْرِبُوْا عُنُقَهٗ فَضَرَبُوْا عُنُقَهٗ وَاَنَا حَاضِرٌ
অর্থ: ইমামুল আলাম, কাযীউল কুয্যাত হযরত ইমাম আবুস সায়িব ‘উতবাহ ইবনে ‘উবাইদুল্লাহ ইবনে মূসা হামযানী শাফি‘য়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি (বিছাল শরীফ : ৩৫০ হিজরী শরীফ) তিনি বলেন, আমি একদা তাবারিস্তানে ছাহিবু জুরযান, আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যদুনা ইমাম হযরত হাসান ইবনে যায়েদ আদ দায়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ উপস্থিত ছিলাম। তিনি সূফী উনাদের পোষাক পরিধান করতেন (অনেক উচ্চ পর্যায়ের মাশায়েখগণ উনাদের ইমাম ছিলেন) এবং সৎকাজের আদেশ করতেন ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করতেন (অর্থাৎ অত্যন্ত ইনসাফগার ও ন্যায়পরায়ণ শাসক ছিলেন)। তিনি প্রতি বছর সালাম শহর তথা বাগদাদ শরীফে ২০ হাজার স্বর্ণমুদ্রা প্রেরণ করতেন। যা শিশু ও হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের বংশধরগণ উনাদের মাঝে বন্টন করা হতো। সুবহানাল্লাহ! এক দিনের কথা- ছাহিবু জুরযান, আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যদুনা ইমাম হযরত হাসান ইবনে যায়েদ আদ দায়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার উপস্থিতীতে এক লোক উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সায়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীকাহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত শান মুবারক-এ অপছন্দনীয় ফাহিশামূলক কিছু কথাবার্তা বললো। নাঊযুবিল্লাহ! তখন তিনি একজনকে বললেন, হে বৎস! তুমি তার গর্দান উড়িয়ে দাও। তখন আলবীগণ উনারা উনাকে বললেন, সে তো আমাদের অনুসারী! তিনি বললেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি আশ্রয় দান করুন! এ নিকৃষ্ট লোকটি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত শান মুবারক-এ অপবাদ দিয়েছে। না‘ঊযুবিল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
اَلْـخَبِيْثٰتُ لِلْخَبِيْثِيْنَ وَالْـخَبِيْثُوْنَ لِلْخَبِيْثٰتِ وَالطَّيِّبٰتُ لِلطَّيِّبِيْنَ وَالطَّيِّبُوْنَ لِلطَّيِّبٰتِ اُولٰٓئِكَ مُبَرَّءُوْنَ مِـمَّا يَقُوْلُوْنَ لَـهُمْ مَّغْفِرَةٌ وَّرِزْقٌ كَرِيْـمٌ
‘দুশ্চরিত্রা মহিলারা দুশ্চরিত্র পুরুষের জন্য এবং দুশ্চরিত্র পুরুষরা দুশ্চরিত্রা মহিলাদের জন্য। সচ্চরিত্রা মহিলা উনারা সচ্চরিত্র পুরুষ উনাদের জন্য এবং সচ্চরিত্র পুরুষ উনারা সচ্চরিত্রা মহিলা উনাদের জন্য। উনাদের সম্পর্কে তারা যা বলে, উনারা সেটা থেকে পবিত্র। সুবহানাল্লাহ! উনাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও সম্মানজনক রিযিক্ব।’ সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা নূর শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ২৬)
উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীকাহ আলাইহাস সালাম তিনি যদি খবীছাহ তথা দুশ্চরিত্রা হন, নাঊযুবিল্লাহ! নাঊযুবিল্লাহ! নাঊযুবিল্লাহ! তাহলে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিও খবীছ। নাঊযুবিল্লাহ! নাঊযুবিল্লাহ! নাঊযুবিল্লাহ! কাজেই, এই ব্যক্তি কাফির। আপনারা তার গর্দান উড়িয়ে দিন। তখন উনারা শস্তিস্বরূপ উক্ত ব্যক্তির গর্দান উড়িয়ে দিলেন, শাস্তিস্বরূপ তাকে মৃত্যুদ- দিলেন। সুবহানাল্লাহ! কাযীউল কুয্যাত ইমাম হযরত আবুস সায়িব ‘উতবাহ ইবনে ‘উবাইদুল্লাহ শাফি‘য়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমি তখন উক্ত মজলিসে উপস্থিত ছিলাম।” সুবহানাল্লাহ! (শরহু উছূলি ই’তিক্বাদি আহলিস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘য়াহ ৭/১৩৪৫, আস সাইফুল মাসলূল ‘আলা মান সাব্বার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ৪১৯পৃ.)
মাহবূবে এলাহী, আরিফ বিল্লাহ, আদীব, শা‘িয়র, ছাহিবুস শুজা‘য়াহ, ছাহিবু হুসনিস সীরাহ, আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যদুনা ইমাম হযরত মুহম্মদ ইবনে যায়েদ ইবনে মুহম্মদ ইবনে ইসমা‘ঈল ইবনে হাসান ইবনে যায়েদ ইবনে হাসান ইবনে আলী ইবনে আবী ত্বালিব আলাইহিমুস সালাম (শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ : ২৮৭ হিজরী শরীফ) তিনি ছিলেন ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত যায়িদ ইবনে হাসান আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত বংশধর। অর্থাৎ তিনি হচ্ছেন আখাছ্ছুল খাছ আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সুবহানাল্লাহ! তিনি ছিলেন অত্যন্ত ন্যায়পরায়ণ ও ইনসাফগার শাসক। তিনি উনার সম্মানিত আপন বড় ভাই ছাহিবু জুরযান, আল ইমামুল ‘আদিল, আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যদুনা ইমাম হযরত হাসান ইবনে যায়েদ আদ দায়ী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার পর ২৭০ হিজরী শরীফ থেকে ২৮৭ হিজরী শরীফ পর্যন্ত অত্যন্ত ইনসাফ ও ন্যায়পরয়াণতার সাথে সম্মানিত শাসনকার্য মুবারক পরিচালনা করেন। উনার সম্মানিত জীবনী মুবারক-এ উল্লেখ রয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ جَعْفَرِ بْنِ الْفَضْلِ الطَّبَرِىِّ رَحْمَةُ اللهُ عَلَيْهِ قَالَ اِنَّ مُحَمَّدَ بْنَ زَيْدٍ اَخَا الْـحَسَنِ بْنِ زَيْدٍ رَحْمَةُ اللهُ عَلَيْهِ قَدِمَ عَلَيْهِ مِنَ الْعِرَاقِ رَجُلٌ يَّنُوْحُ بَيْنَ يَدَيْهِ فَذَكَرَ اُمَّ الْمُؤْمِنِيْنَ الثَّالِثَةَ سَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ اَلصِّدِّيْقَةَ عَائِشَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ بِسُوْءٍ فَقَامَ اِلَيْهِ بِعَمُوْدٍ وَّضَرَبَ بِهٖ دِمَاغَهٗ فَقَتَلَهٗ فَقِيْلَ لَهٗ هٰذَا مِنْ شِيْعَتِنَا وَمِـمَّنْ يَّتَوَلَّانَا فَقَالَ هٰذَا سَـمّٰى جَدِّىْ قَرْنَانَ وَمَنْ سَـمّٰى جَدِّىْ قَرْنَانَ اسْتَحَقَّ عَلَيْهِ الْقَتْلَ فَقَتَلْتُهٗ
অর্থ: “হযরত আবূ জা’ফর ইবনে ফযল ত্ববারী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যদুনা ইমাম হযরত হাসান ইবনে যায়েদ আদ দায়ী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার সম্মানিত ভাই মাহবূবে এলাহী, আরিফ বিল্লাহ, আদীব, শা‘িয়র, ছাহিবুস শুজা‘য়াহ, ছাহিবু হুসনিস সীরাহ, অত্যন্ত ন্যায়পরায়ণ ও ইনসাফগার শাসক, আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যদুনা ইমাম হযরত মুহম্মদ ইবনে যায়েদ ইবনে মুহম্মদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট ইরাক থেকে এক ব্যক্তি আগমণ করলো। সে উনার সামনে এসে ইনিয়ে বিনিয়ে কান্নার স্বরে উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত শান মুবারক-এ এলোমেলো (কিছু খারাপ কথা) বললো। না‘ঊযুবিল্লাহ! তখন সাথে সাথে আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যদুনা ইমাম হযরত মুহম্মদ ইবনে যায়েদ ইবনে মুহম্মদ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি একখানা লোহার খুঁটি নিয়ে তার সম্মুখে দাঁড়িয়ে তার মস্তিষ্কের উপর (মাথার তালুর উপর) আঘাত করে তাকে হত্যা করে ফেললেন। সুবহানাল্লাহ! তখন উনাকে বলা হলো যে, সে তো আমাদের অনুসারী এবং যারা আমাদেরকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করেছে, সে তাদের অন্যতম। (জবাবে) তিনি বললেন, সে আমার মহাসম্মানিত নানাজান, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত শান মুবারক-এ অপবাদ দিয়েছে, উনার মানহানী করেছে। না‘ঊযুবিল্লাহ! আর যে আমার মহাসম্মানিত নানাজান, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত শান মুবারক-এ অপবাদ দেয়, উনার মানহানী করে, তাকে শাস্তিস্বরূপ ক্বতল করা, শাস্তিস্বরূপ মৃত্যুদ- দেয়া অপরিহার্য হয়ে যায়। তাই আমি তাকে শাস্তিস্বরূপ হত্যা করেছি, শাস্তিস্বরূপ মৃত্যুদ- দিয়েছি। সুবহানাল্লাহ! (শরহু উছূলি ই’তিক্বাদি আহলিস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘য়াহ ৭/১৩৪৩, আস সাইফুল মাসলূল ৪২০পৃ.)
উল্লেখ্য যে, উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার যেই হুকুম মুবারক অন্যান্য হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরও একই হুকুম মুবারক। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার যারা মানহানী করবে, তাদের একমাত্র শাস্তি যেমন মৃত্যুদ-, তেমনিভাবে অন্যান্য হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরও যারা মানহানী করবে, তাদেরও একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদ-। তারা নামধারী মুসলমান হোক বা কাফির হোক অথবা নাস্তিক হোক কিংবা যেকোনো ধর্মেরই অনুসারী হোক না কেন। তাদের তাওবা গ্রহণযোগ্য হবে না। এ মৃত্যুদ- থেকে রেহাই পাওয়ার তাদের কোনো সুযোগ নেই এবং এ বিষয়ে কোনো প্রকার ওজর-আপত্তিও গ্রহণযোগ্য হবে না। শুধু তাই নয়, তাদেরকে শাস্তিস্বরূপ দৃষ্টান্তমূলকভাবে মৃত্যুদ- দিতে হবে। তা শরীয়তের অন্যান্য বিধান অমান্য করার কারণে যেরূপ কঠিন শাস্তি দেয়া হয়, তার চেয়ে আরো লক্ষ কোটি গুণ বেশি কঠিনভাবে যন্ত্রণাদায়ক ও লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি দিয়ে মৃত্যুদ- দিতে হবে। এমনকি যারা তাদেরকে সমর্থন করবে, তাদেরও একই হুকুম। সুবহানাল্লাহ!

***********************************************************************
হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা একমাত্র মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত সমস্ত কায়িনাত থেকে বেনিয়ায, উনাদের সাথে কারো তুলনা করা যাবে না


মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
اِنَّـمَا يُرِيْدُ اللهُ لِيُذْهِبَ عَنْكُمُ الرِّجْسَ اَهْلَ الْبَيْتِ وَيُـطَـهِّـرَكُمْ تَطْهِيْرًا.
অর্থ: “হে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম! নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি চান আপনাদের থেকে সমস্ত প্রকার অপবিত্রতা দূর করে আপনাদেরকে পবিত্র করার মতো পবিত্র করতে। অর্থাৎ তিনি আপনাদেরকে পবিত্র করার মতো পবিত্র করেই সৃষ্টি মুবারক করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৩)
এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার তাফসীরে স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
هُمْ اَهْلُ بَيْتٍ طَهَّرَهُمُ اللهُ مِنَ السُّوْءِ وَاخْتَصَّهُمْ بِرَحْمَتِهٖ
অর্থ: “উনারা হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদেরকে সমস্ত প্রকার অপবিত্রতা ও পাপ থেকে পূত-পবিত্র রেখেছেন এবং উনার সম্মানিত রহমত মুবারক দ্বারা খাছ করে নিয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন,
فَاَنَا وَاَهْلُ بَيْتِىْ مُطَهَّرُوْنَ مِنَ الذُّنُوْبِ.
অর্থ: “আমি এবং আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম আমরা সকলেই যুনূব তথা সমস্ত প্রকার ছগীরা-কবীরা এবং যাবতীয় অপছন্দনীয় কাজ থেকে পূত-পবিত্র।” সুবহানাল্লাহ! (দালায়িলুন নুবুওওয়াহ লিল বায়হাক্বী, শিফা শরীফ ১/৩২৫, সীরাতে হালবিয়্যাহ ১/৪২, আল মা’রিফাতু ওয়াত তারীখ ১/৪৯৮, খছাইছুল কুবরা ১/৬৬, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১/২৩৫, দুররে মানছূর লিস সুয়ূত্বী ৬/৬০৬, ইবনে আবী হাতিম ৯/৩১৩৩ ইত্যাদি)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন,
نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ طَهَّرَهُمُ اللهُ مِنْ شَجَرَةِ النُّبُوَّةِ وَمَوْضِعِ الرِّسَالَـةِ وَمُـخْتَلِفِ الْمَلَائِكَةِ وَبَيْتِ الرَّحْمَةِ وَمَعْدِنِ الْعِلْمِ.
অর্থ: “আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে (আমাদেরকে) সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক উনার বৃক্ষ, সম্মানিত রিসালাত মুবারক উনার স্থান, বিভিন্ন ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের, উনাদের দ্বারা সম্মানিত খিদমত মুবারক, সম্মানিত রহমত মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারক উনার খনি মুবারক (ইত্যাদি সমস্ত কিছু) থেকে পবিত্র রেখেছেন, ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী) করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে দুররে মানছূর ৬/৬০৬, ইবনে আবী হাতিম ৯/৩১৩৩)
ইমামুল মুহাদ্দিছীন মিনাল আউওয়ালিন ইলাল আখিরীন, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “আলোচ্য সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে- اَهْلُ بَيْتٍ نَـحْنُ (আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম) বলেÑ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে উনার নিজের অন্তর্ভুক্ত করে নিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! আর طَهَّرَهُمُ اللهُ - মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে পবিত্র করেছেন। সুবহানাল্লাহ! অর্থ হলো- মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে ছমাদ তথা বেনিয়ায করেছেন। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা একমাত্র মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূরপাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের মুহতাজ ও উনাদের সম্মানার্থে উনারা সম্মানিত এবং উনাদের প্রতিই উনারা দায়েমীভাবে রুজু। সুবহানাল্লাহ! ফলে উনারা সমস্ত কিছু থেকেই বেনিয়াজ। সুবহানাল্লাহ! কাজেই সম্মানিত নুবুওয়াত মুবারক, সম্মানিত রিসালাত মুবারক, বিভিন্ন ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের, উনাদের দ্বারা সম্মানিত খিদমত মুবারক, সম্মানিত রহমত মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারক উনার খনি মুবারক ইত্যাদি বরকতময় নিয়ামত মুবারক উনাদের প্রতি রুজু হওয়ার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের কোন সুযোগ নেই। অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা সমস্ত কিছু থেকে পবিত্র, ছমাদ তথা বেনিয়ায। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের কারণেই সম্মানিত নুবুওয়াত মুবারক, সম্মানিত রিসালাত মুবারক, সমস্ত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা, সম্মানিত রহমত মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারকসহ সমস্ত কিছুই ফযীলতপ্রাপ্ত হয়েছেন, সম্মানিত হয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
اَللهُ الصَّمَدُ
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি ছমাদ তথা  বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী)।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত সূরা ইখলাছ শরীফ : সম্মানিত আয়াত শরীফ ২)
ইমামুল মুফাসসিরীন মিনাল আউওয়ালিন ইলাল আখিরীন, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি যেমন সমস্ত মাখলূকাত থেকে, সমস্ত কিছু থেকে ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী)। সুবহানাল্লাহ! ঠিক তেমনিভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একমাত্র যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত সমস্ত মাখলূকাত থেকে, সমস্ত কিছু থেকে ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী)। সুবহানাল্লাহ! আর ঠিক একইভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত সমস্ত কায়িনাত থেকে, সমস্ত কিছু থেকে ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী)। সুবহানাল্লাহ! উনারা সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক, সম্মানিত রিসালাত মুবারক, বিভিন্ন ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের, উনাদের দ্বারা সম্মানিত খিদমত মুবারক, সম্মানিত রহমত মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলম উনার খনি মুবারক ইত্যাদি সমস্ত কিছু থেকে পবিত্র, ছমাদ তথা বেনিয়ায। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! উনাদের শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযুর্গী-সম্মান মুবারক এক কথায় উনারা শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন। এছাড়া যত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক রয়েছেন, সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারী হচ্ছেন উনারা। সুবহানাল্লাহ! উনারা একমাত্র মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের মুহতাজ। এছাড়া কায়িনাতের অন্য কারো মুহতাজ নন; বরং কায়িনাতের সকলেই উনাদের মুহতাজ। সুবহানাল্লাহ! মূলত সমগ্র সৃষ্টি জগতের মাঝে একমাত্র নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পরেই উনাদের শ্রেষ্ঠত্ব মুবারক, ফযীলত মুবারক। সুবহানাল্লাহ!
তাহলে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত পবিত্রতা মুবারক, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল, তা এখান থেকে স্পষ্ট হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ! আর সেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে আখাছ্ছুল খাছ বিশেষ ব্যক্তিত্বা মুবারকই হচ্ছেন হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা। সুবহানাল্লাহ! তাহলে উনাদের সম্মানিত পবিত্রতা মুবারক, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা-কল্পনার উর্ধ্বে। যা কস্মিনকালেও ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। সুবহানাল্লাহ! কাজেই, উনাদের সাথে সৃষ্টি জগতের কারোই তুলনা করা যাবে না। সুবহানাল্লাহ! এ সম্পর্কে সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ لَّا يُقَاسُ بِنَا اَحَدٌ.
অর্থ: “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। আমাদের সাথে অন্য কারো ক্বিয়াস বা তুলনা করা যাবে না।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! (দায়লামী ৪/২৮৩, জামি‘উল আহাদীছ ২২/২১৯, কানযুল উম্মাল ১২/১০৪, জাম‘উল জাওয়ামি’ ১/২৪৯৫০, যাখায়েরুল ‘উক্ববাহ ফী মানাক্বিবে যাওইল কুরবা লিমুহিব্বে ত্ববারী ১/১৭, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৭ ইত্যাদি)

****************************************************************