সুমহান ১৩ ই যিলক্বদ শরীফ











১. এক নজরে
সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল ‘আলামীন, আফদ্বলুন নাস ওয়ান নিসা বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত পরিচিতি মুবারক

সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল ‘আলামীন, আফদ্বলুন নাস ওয়ান নিসা বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে বিশেষ ব্যক্তিত্বা মুবারক। সুবহানাল্লাহ! তিনি শুধু যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারিণী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত মুহব্বত মুবারকই হচ্ছেন সম্মানিত ঈমান। সুবহানাল্লাহ!
নিম্নে এক নজরে উনার সম্মানিত পরিচিতি মুবারক তুলে ধরা হলো-
সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক: সাইয়্যিদাতুনা হযরত জুওয়াইরিয়াহ্ আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত ও পবিত্র লক্বব মুবারক: উম্মুল মু’মিনীন, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, আফদ্বলুন নাস ওয়ান নিসা বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আত্ব ত্বাহিরাহ, আত্ব ত্বইয়্যিবাহ্, মালিকাতুল জান্নাহ, মালিকাতুল কায়িনাত, এছাড়াও আরো অসংখ্য-অগণিত। সুবহানাল্লাহ!
যেই সম্মানিত লক্বব মুবারক-এ সম্মানিত পরিচিতি মুবারক গ্রহণ করেছেন: উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত পিতা আলাইহিস সালাম: সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছ ইবনে আবূ দ্বিরার আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত বংশ মুবারক: বনূ মুছ্ত্বলিক্ব। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ: আনুষ্ঠানিকভাবে  সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালত মুবারক প্রকাশের ২ বছর পূর্বে ১৩ই যিলক্বদ শরীফ ইয়াওমুল খমীস শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার সম্মানিত স্থান মুবারক: সম্মানিত বনূ মুছ্ত্বলিক্ব গোত্রে। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত অবস্থান মুবারক: সম্মানিত বনূ মুছ্ত্বলিক্ব গোত্র এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ: ৫ম হিজরী শরীফ উনার সম্মানিত যিলহজ্জ শরীফ মাসে। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে ‘আযীমুশ শান মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ: ৫ম হিজরী শরীফ উনার ২৮শে যিলহজ্জ শরীফ লাইলাতুল জুমু‘য়াহ শরীফ (জুমু‘য়াহ্ শরীফ রাত)। সুবহানাল্লাহ!
‘আযীমুশ শান মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আ’যীম শরীফ অনুষ্ঠিত হওয়ার সময় দুনিয়াবী দৃষ্টিতে উনার সম্মানিত বয়স মুবারক: ২০ বছর ১ মাস ১৫ দিন। সুবহানাল্লাহ! 
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়া: ৫বছর ২ মাস ১৪ দিন। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের  সময় উনার সম্মানিত বয়স মুবারক: ২৫ বছর ৪ মাস।
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ: ৫০ হিজরী শরীফ উনার ১৭ই সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ (রবী‘উল আউয়াল শরীফ) ইয়াওমুছ ছুলাছা’ শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার সম্মানিত স্থান মুবারক: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত অবস্থান মুবারক: ৬৪ বছর ৪ মাস ৪ দিন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ: সম্মানিত জান্নাতুল বাক্বী’ শরীফ। সুবহানাল্লাহ!

*********
২. মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল ‘আলামীন, আফদ্বলুন নাস ওয়ান নিসা বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় নসবনামাহ মুবারক

হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা ছিলেন মোট ১৩ জন। উনাদের মধ্যে ৬ জন ছিলেন সম্মানিত কুরাঈশ বংশের। ১ জন ছিলেন বনূ আসাদ গোত্রের। ২ জন ছিলেন বনূ হিলাল গোত্রের। ২ জন ছিলেন বনূ নাযীর গোত্রের। আর বনূ নাযীর গোত্র ছিলেন ইহুদী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত। ১ ছিলেন বনূ মুছ্ত্বলিক্ব গোত্রের এবং ১ জন ছিলেন মিশরের বনূ ক্বিব্ত্ব গোত্রের। বনূ মুছত্বলিক্ব এবং বনূ ক্বিব্ত্ব  গোত্র ছিলেন ঈসায়ী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত। উম্মুল মু’মিনীন উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত পিতা হচ্ছেন সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছ আলাইহিস সালাম। তিনি ছিলেন বনূ মুছ্ত্বলিক্ব গোত্রের সর্দার। সুতরং উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন ঈসায়ী সম্প্রদায় থেকে। সীরাতগ্রন্থগুলোতে উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার ইসম বা নাম মুবারক পাওয়া যায় না। ‘মিরআতুল আনসাব’ কিতাব উনার অনুকরণে উম্মুল মু’মিনীন উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় নসবনামাহ্ নি¤œরূপ-
اُمُّ الْمُؤْمِنِيْنَ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ جُوَيْرِيَةُ بِنْتُ الْـحَارِثِ بْنِ اَبِـىْ ضِرَارِ بن حَبِيْبِ بْنِ حَارِثِ بْنِ عَائِدِ بْنِ مَالِكِ بْنِ الْـمُصْطَلِقِ خُزَيْمَةُ بْنِ مَالِكِ بْنِ عَمْرِو بْنِ رَبِيْعَةَ بْنَ حَارِثَةَ بْنِ عَمْرِو بْنِ خُزَاعَةَ بْنِ عَمْرِو بْنِ عَامِرِ بْنِ قَمْعَةَ بْنِ اِلْيَاسِ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ
১.   اُمُّ الْمُؤْمِنِيْنَ سَيِّدَتُناَ حَضْرَتْ جُوَيْرِيَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত জুওয়াইরিয়াহ্ আলাইহাস সালাম।
২. الْـحَارِثُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছ আলাইহিস সালাম।
৩. اَبُوْ ضِرَارٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ দ্বিরার আলাইহিস সালাম।
৪. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ حَبِيْبٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত হাবীব আলাইহিস সালাম।
৫. حَارِثٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ  সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছ আলাইহিস সালাম।
৬. عَائِدٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আয়িদ আলাইহিস সালাম।
৭. مَالِكٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত মালিক আলাইহিস সালাম।
৮. الْـمُصْطَلِقِ خُزَيـْمَةُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত মুছ্ত্বলিক্ব খুযাইমাহ্ আলাইহিস সালাম।
৯. مَالِكٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত মালিক আলাইহিস সালাম।
১০. عَمْرٌو عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আমর আলাইহিস সালাম।
১১. السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ رَبِيْعَةُ  সাইয়্যিদুনা হযরত রবী‘আহ্ আলাইহিস সালাম।
১২. حَارِثَةُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছাহ্ আলাইহিস সালাম।
১৩. عَمْرٌو عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আমর আলাইহিস সালাম।
১৪. خُزَاعَةُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত খুযা‘আহ্ আলাইহিস সালাম।
১৫. عَمْرٌو عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আমর আলাইহিস সালাম।
১৬. عَامِرٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আমির আলাইহিস সালাম।
১৭. قَمْعَةُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত ক্বম্‘আহ্ আলাইহিস সালাম।
১৮. اِلْيَاسُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত ইল্ইয়াস আলাইহিস সালাম।
সাইয়্যিদুনা হযরত ইল্ইয়াস আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত পূর্বপুরুষ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!
 (মিরআতুল আনসাব ৫৬ পৃ.)

***********************

৩. সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল ‘আলামীন, আফদ্বলুন নাস ওয়ান নিসা বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সংক্ষিপ্ত জীবনী মুবারক-১

যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اَلنَّبِـىُّ اَوْلـٰى بِالْمُؤْمِنِيْنَ مِنْ اَنْفُسِهِمْ وَاَزْوَاجُهۤٗ اُمَّهٰتُهُمْ.
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন মু’মিন উনাদের নিকট উনাদের জানের চেয়ে অধিক প্রিয়, উনাদের মহাসম্মানিত পিতা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং উনার মহাসম্মানিতা ‘আযওয়াজুম মুত্বহহারাত’ (হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম) উনারা হচ্ছেন সমস্ত মু’মিন উনাদের মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহিন্নাস সালাম।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৬)
 হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা ছিলেন মোট ১৩ জন। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নেয়ার মুবারক ধারাবাহিকক্রম অনুযায়ী সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল ‘আলামীন, আফদ্বলুন নাস ওয়ান নিসা বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন ‘আছ ছামিনাহ্ তথা অষ্টম’। এ জন্য উনাকে ‘উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম’ বলা হয়। তিনি সকলের মাঝে ‘উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম’ হিসেবেই পরিচিতি মুবারক গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি শুধু যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং উনার মাহবূব  হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারিণী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত মুহব্বত মুবারকই হচ্ছেন সম্মানিত ঈমান। সুবহানাল্লাহ! উনাকে সম্মানিত মুহব্বত মুবারক করা, উনার সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম মুবারক করা, সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করা এবং উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়া সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের জন্য ফরযে আইন। সুবহানাল্লাহ! তাই উনার সম্মানিত জীবনী মুবারক জানাও সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের জন্য ফরযে আইন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত পিতা-মাতা আলাইহিমাস সালাম:
সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল ‘আলামীন, আফদ্বলুন নাস ওয়ান নিসা বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত পিতা হচ্ছেন সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছ ইবনে আবূ দ্বিরার আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ! তিনি ছিলেন আরবের বিখ্যাত খুযা‘আহ্ গোত্রের শাখা ‘বনূ মুছ্ত্বলিক্ব’ গোত্রের সাইয়্যিদ (সর্দার)। সকলেই উনাকে বেমেছাল-তা’যীম-তাকরীম করতো এবং উনার সম্মানিত নির্দেশ মুবারক অনুযায়ী চলতো। সুবহানাল্লাহ! উনার বেমেছাল শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক বুঝার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, তিনি হচ্ছেন উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত আব্বাজান আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ! আল্লামা মুহম্মদ জিয়াউদ্দীন আহমদ আলভী নক্শাবন্দী মুজাদ্দিদী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার লিখিত বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘মিরআতুল আনসবা’ উনার বর্ণনা অনুযায়ী উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি মহাসম্মানিত পিতা আলাইহিস সালাম উনার দিক থেকে ১৭তম পূর্বপুরুষ সাইয়্যিদুনা হযরত ইল্ইয়াস আলাইহিস সালাম উনার নিকট যেয়ে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মিলিত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! উনার ১৩তম পূর্ব পূর্বপুরুষ সাইয়্যিদুনা খুযা‘আহ্ ইবনে ‘আমর আলাইহিস সালাম তিনি ছিলেন ‘বনূ খুযা‘আহ্’ গোত্রের প্রথম পুরুষ। উনার দিকে নিসবত করে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনাকে ‘আল খুযা‘িয়্যাহ্’ বলা হয়। সুবহানাল্লাহ! আর  উনার ৭ম পূর্বপুরুষ হচ্ছেন সাইয়্যিদুনা হযরত মুছ্ত্বলিক্ব আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত নাম মুবারক ছিলেন ‘সাইয়্যিদুনা হযরত খুযাইমাহ্ আলাইহিস সালাম’। সুবহানাল্লাহ! তবে তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত মুছ্ত্বলিক্ব আলাইহিস সালাম হিসেবেই প্রসিদ্ধি লাভ করেন। তিনি  ছিলেন আরবের বিখ্যাত গোত্র ‘বনূ মুছ্ত্বলিক্ব’ গোত্রের মহাসম্মানিত প্রথম পুরুষ এবং একজন প্রসিদ্ধ ব্যক্তিত্ব মুবারক। সুবহানাল্লাহ! উনার দিকে নিসবত করে উনার সম্মানিত বংশ বা গোত্র মুবারক উনার নামকরণ মুবারক করা হয় ‘বনূ মুছ্ত্বলিক্ব’ গোত্র হিসেবে। সুবহানাল্লাহ! এজন্য উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনাকে ‘আল মুছ্ত্বলিক্বিয়্যাহ্’ বলা হয়। সুবাহনাল্লাহ! যেমন- কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
  جُوَيْرِيَةُ بِنْتُ الْحَارِثِ بْنِ أَبِي ضِرَارِ الْخُزَاعِيّة، ثُمّ الْمُصْطَلِقيّة
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন আছ ছামিনাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত জুওয়াইরিয়াহ্ বিনতে হারিছ ইবনে আবূ দ্বিরার আল খুযা‘িয়্যাহ্ আল মুছ্ত্বলিক্বিয়্যাহ্ আলাইহাস সালাম।” সুবহানাল্লাহ! (আর রওদ্বুল উন্ফ, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ)
আর উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক সীরাতগ্রন্থগুলোতে পাওয়া যায় না।

উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ইখ্ওয়ান ভাইগণ এবং সম্মানিতা আখাওয়াত বা বোনগণ:
সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল ‘আলামীন, আফদ্বলুন নাস ওয়ান নিসা বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনারা কয় ভাই-বোন ছিলেন এ বিষয়ে সীরাতগ্রন্থগুলোতে আলোচনা নেই। তবে বিভিন্ন কিতাবের বর্ণনা থেকে উনার পাঁচ (৫) ভাই  এবং এক (১) বোন উনাদের সম্মানিত নাম মুবারক পাওয়া যায়। উনারা হচ্ছেন-
১. বিশিষ্ট ছাহাবী সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আমর ইবনে হারিছ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি। সুবহানাল্লাহ! উনার সূত্রে বুখারী শরীফসহ আরো অন্যান্য কিতাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণিত রয়েছে। সুবহানাল্লাহ!
২.বিশিষ্ট ছাহাবী সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে হারিছ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু। সুবহানাল্লাহ!
৩.বিশিষ্ট ছাহাবী সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছ ইবনে হারিছ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু। ‘আর রওদ্বুল উন্ফ’ কিতাবের বর্ণনা অনুযায়ী সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছ ইবনে হারিছ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি এবং উনার ভাই সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আমর ইবনে হারিছ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি অর্থাৎ উনারা উভয়ে উনাদের মহাসম্মানিত পিতা সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছ ইবনে আবূ দ্বিরার আলাইহিস সালাম উনার সঙ্গে একসাথে ঈমান আনেন। সুবহানাল্লাহ!
৪. হযরত আব্দুর রহমান ইবনে হারিছ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু। উনার ব্যাপারে তেমন কোনো বর্ণনা পাওয়া যায় না।
৫. ‘আমির ইবনে হারিছ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু। উনার ব্যাপারেও তেমন কোনো বর্ণনা পাওয়া যায় না।
আর কিতাবে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার একজন বোন উনার সম্মানিত নাম মুবারক পাওয়া যায়। তিনি হচ্ছেন-
১. সাইয়্যিদাতুনা হযরত ‘উমরাহ্ বিনতে হারিছ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা। উনার সূত্রে ত্বাবারনী শরীফসহ আরো অন্যান্য কিতাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণিত রয়েছে। সুবহানাল্লাহ!
 (বুখারী শরীফ, ত্ববারনী শরীফ, শু‘য়াবুল ঈমান, আর রওদ্বুল উন্ফ, উস্দুল গবাহ্, তাহ্যীবুল কামাল, আছ ছিক্বাত লিইবনে হিব্বান, আল জারহু ওয়াত তা’দীল লিইবনে আবী হাতিম, আল ওয়াফী ইত্যাদী)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ:
পৃথিবীর কোনো কিতাবে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম  উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের মহাসম্মানিত তারীখ মুবারক উল্লেখ নেই। এটা মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত আফসোসের বিষয় যে, মুসলমানরা উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম  উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের মহাসম্মানিত তারীখ মুবারক সংরক্ষণ করতে পারেনি। না‘ঊযুবিল্লাহ!
উল্লেখ্য যে, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি হচ্ছেন একমাত্র যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মাহবূব হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ সম্মানিত নি‘য়ামত মুবারক। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে আখাছ্ছুল খাছভাবে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের সাথে উনার রয়েছেন বেমেছাল হাক্বীক্বী দায়িমী তা‘য়াল্লুক্ব-নিসবত এবং যিয়ারত মুবারক। সুবহানাল্লাহ!
এ প্রসঙ্গে আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
أَخْبِرْنِي عَنِ الْإِحْسَانِ قَالَ أَنْ تَعْبُدَ اللَّهَ كَأَنَّكَ تَرَاهُ فَإِنْ لَمْ تَكُنْ تَرَاهُ فَإِنَّهُ يَرَاكَ.
 অর্থ: “আমাকে ইহসান সম্পর্কে সংবাদ দিন। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তুমি এমনভাবে যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত ইবাদাত মুবারক করো, যেন তুমি উনাকে দেখতে পাচ্ছো। আর যদি তুমি উনাকে দেখতে না পাও, তবে (ধারণা করো যে) তিনি তোমাকে দেখছেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুসলিম শরীফ)
অর্থাৎ ইহ্সানের দুইটি দরজা- ১. যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনাকে দেখে দেখে ইবাদাত বন্দেগী করতে হবে। ২. যদি তা সম্ভব না হয়, তাহলে ধারণা করতে হবে যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে দেখছেন। দায়িমীভাবে এই দুইটি অবস্থার যে কোনো একটি অবস্থা থাকতে হবে। সুবহানাল্লহ!
আর দায়িমী হুযূরী বলতে যেটা বুঝায়- সেটা হচ্ছে, সবসময় যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনাকে দেখে দেখে ইবাদত-বন্দেগী করা। সুবহানাল্লাহ! আর ২৪ ঘন্টা দায়িমীভাবে তো হুযূরী থাকবেই, তবে নামায উনার মধ্যে বিশেষ হুযূরী থাকবে। সুবহানাল্লাহ!
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মাহবূব হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের সাথে সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে দায়িমীভাবে দেখে দেখে সমস্ত ইবাদত-বন্দেগী করতে হবে। সুবহানাল্লাহ! তাহলে হুযূরী পূর্ণতায় পৌঁছবে, অন্যথায় কস্মিনকালেও হুযূরী পূর্ণতায় পৌঁছবে না।” সুবহানাল্লাহ!
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ১৪৩৯ হিজরী শরীফ উনার ২৩শে রমাদ্বান শরীফ লাইলাতুস সাব্ত শরীফ সম্মানিত তারাবীহ নামায এবং মক্ববূল মুনাজাত শরীফ শেষে ইরশাদ মুবারক করেন, “আজ আমি যখন সম্মানিত ‘ঈশার নামায উনার সম্মানিত নিয়ত মুবারক করলাম, তখন দেখলাম যিনি উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস  সালাম উনার বিশেষ যিয়ারত মুবারক করালেন। সুবহানাল্লাহ! সবসময় তো উনাদের সম্মানিত যিয়ারত মুবারক রয়েছে, তবে এটা বিশেষ যিয়ারত মুবারক। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা সম্মানিত রুকু ও সম্মানিত সিজদাহ মুবারক উনার তাসবীহ্ মুবারকগুলো নিয়ন্ত্রণ মুবারক করে থাকেন। সুবহানাল্লাহ!
স্বাভাবিকভাবে যদি ধরা হয়, তাহলে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের পুরো বিষয়টা নিয়ন্ত্রণ করেন উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি। এরপরে হচ্ছেন বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি।” সুবহানাল্লাহ!
তাহলে যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার, উনার মাহবূব হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে, আখাছ্ছুল খাছভাবে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের সাথে মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার কতো বেমেছাল তা‘য়াল্লুক্ব-নিসবত মুবারক, তা এখান থেকে স্পষ্ট হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ! তিনি দায়িমীভাবেই উনাদের হাক্বীক্বী দায়িমী দীদার মুবারক, তা‘য়াল্লুক্ব-নিসবত মুবারক-এ মশগূল রয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! যার কারণে একমাত্র উনার পক্ষেই সম্ভব হয়েছে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের, আখাছ্ছুল খাছভাবে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মহাম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের মহাসম্মানিত তারীখ মুবারকসমূহ প্রকাশ করা। সুবহানাল্লাহ! তিনি ১৪৩৯ হিজরী শরীফ উনার ৪ঠা শাওওয়াল শরীফ লাইলাতুছ ছুলাছা’ শরীফ হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের প্রত্যেকের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের মহাসম্মানিত তারীখ মুবারকসমূহ ঘোষণা মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন যে, “উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে  সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালত মুবারক প্রকাশের ২ বছর পূর্বে ১৩ই যিলক্বদ শরীফ ইয়াওমুল খমীস শরীফ বনূ মুছ্ত্বলিক্ব গোত্রে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন।” সুবহানাল্লাহ!

***********************************************

৪. সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল ‘আলামীন, আফদ্বলুন নাস ওয়ান নিসা বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালামউনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সংক্ষিপ্ত জীবনী মুবারক-২

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের দিবস মুবারক উদ্যাপনের গুরুত্ব-তাৎপর্য ও ফাযায়িল-ফযীলত মুবারক:
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত ও পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন,
سَلَامٌ عَلَيْهِ يَوْمَ وُلِدَ وَيَوْمَ يَمُوتُ وَيَوْمَ يُبْعَثُ حَيًّا.
অর্থ: “হযরত ইয়াহইয়া আলাইহিস সালাম উনার প্রতি সম্মানিত সালাম তথা সম্মানিত রহমত, বরকত, সাকীনা, সন্তুষ্টি-রেযামন্দি মুবারক। যেদিন তিনি সম্মানিত বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন, যেদিন তিনি সম্মানিত বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন এবং যেদিন তিনি পুনরুত্থিত হবেন।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা মারইয়াম শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১৫)
হযরত রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত শান মুবারক-এ ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
السَّلَامُ عَلَيَّ يَوْمَ وُلِدْتُ وَيَوْمَ أَمُوتُ وَيَوْمَ أُبْعَثُ حَيًّا
অর্থ: “আমার (হযরত ঈসা রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার) প্রতি সম্মানিত সালাম তথা সম্মানিত রহমত, বরকত, সাকীনা, সন্তুষ্টি-রেযামন্দি মুবারক। যেদিন আমি সম্মানিত বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছি, যেদিন আমি সম্মানিত বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করবো এবং যেদিন আমি পুনরুত্থিত হবো।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা মারইয়াম শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৩)
সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফদ্বয় উনাদের ব্যাখ্যায় আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “আলোচ্য সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফদ্বয় উনাদের মধ্যে বর্ণিত ‘সালাম’ উনার অর্থ মুবারক হচ্ছেন- সর্বপ্রকার সম্মানিত নিয়ামত, রহমত, বরকত, সাকীনাহ, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক।” সুবহানাল্লাহ!
তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, “যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আলোচ্য সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফদ্বয় উনাদের মাধ্যমে সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সবাইকে বিষয়টি জানিয়ে দিলেন যে, মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত মাহবুব ব্যক্তিত্ব মুবারক তথা হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের, হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের এবং হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের সাথে সংশ্লিষ্ট সম্মানিত দিন ও রাত মুবারক-এ সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের উপর আখাচ্ছুল খাছ সর্বপ্রকার সম্মানিত নিয়ামত, রহমত, বরকত, সাকীনাহ, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক বর্ষিত হয়ে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! বান্দা-বান্দী, উম্মতের মধ্যে যারা এ সকল সম্মানিত দিন ও রাত মুবারক উনাদেরকে তা’যীম-তাকরীম মুবারক করবেন, উনারাই এ সকল আখাচ্ছুল খাছ সর্বপ্রকার সম্মানিত নি‘য়ামত, রহমত, বরকত, সাকীনাহ, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক লাভে ধন্য হবেন।” সুবহানাল্লাহ!
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اَلنَّبِـىُّ اَوْلـٰى بِالْمُؤْمِنِيْنَ مِنْ اَنْفُسِهِمْ وَاَزْوَاجُهۤٗ اُمَّهٰتُهُمْ.
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন মু’মিন উনাদের নিকট উনাদের জানের চেয়ে অধিক প্রিয়, উনাদের মহাসম্মানিত পিতা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং উনার মহাসম্মানিতা ‘হযরত আযওয়াজুম মুত্বহহারাত’ (হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম) উনারা হচ্ছেন সমস্ত মু’মিন উনাদের মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহিন্নাস সালাম।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৬)
কাজেই, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম  তিনি হচ্ছেন একমাত্র মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মাহবূব হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারাসহ, সাইয়্যিদুনা হযরত রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ইয়াহইয়া আলাইহিস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারাসহ সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িানাতবাসী সকলেরই মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!  এখন বলার বিষয় হচ্ছে সাইয়্যিদুনা হযরত রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ইয়াহইয়া আলাইহিস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের দিন যদি আখাছ্ছুল খাছ সর্বপ্রকার সম্মানিত নিয়ামত, রহমত, বরকত, সাকীনাহ, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক বর্ষিত হয়, তাহলে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম  মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের দিন ও রাত মুবারক-এ কতো বেমেছাল আখাছ্ছুল খাছ সর্বপ্রকার সম্মানিত নি‘য়ামত, রহমত, বরকত, সাকীনাহ, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক বর্ষিত হয়ে থাকেন সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ!

সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
عن ابن عباس قال : قالت جويرية بنت الحارث - وكان اسمها برة فحول النبي صلى الله عليه و سلم اسمها وسماها جويرية
অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালামউনার সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক ছিলেন ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত র্বারাহ্ আলাইহাস সালাম’। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক পরিবর্তন করে রাখেন ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত জুওয়াইরিয়াহ্ আলাইহাস সালাম’।” সুবহানাল্লাহ! (ছহীহ্ ইবনে খুযাইমাহ্ ১/৩৭০, ছহীহ্ ইবনে হিব্বান ১৩/১৪৩, আস সুনানুল কুবরা লিন নাসায়ী ৯/৭১, আদ দা’ওয়াতুল কাবীর লিল বাইহাক্বী ১/১৯৬ ইত্যাদী)
উনার সম্মানিত ও পবিত্র লক্বব মুবারক:
উম্মুল মু’মিনীন, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, আত্ব ত্বাহিরাহ, আত্ব ত্বইয়্যিবাহ্, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আছ ছমাদ, মালিকাতুল জান্নাহ, মালিকাতুল কায়িনাত এছাড়াও আরো অসংখ্য-অগণিত। সুবহানাল্লাহ!

সম্মানিত পবিত্রতা মুবারক:
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
اِنَّـمَا يُرِيْدُ اللهُ لِيُذْهِبَ عَنْكُمُ الرِّجْسَ اَهْلَ الْبَيْتِ وَيُـطَـهِّـرَكُمْ تَطْهِيْرًا.
অর্থ: “হে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম! নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি চান আপনাদের থেকে সমস্ত প্রকার অপবিত্রতা দূর করে আপনাদেরকে পবিত্র করার মতো পবিত্র করতে। অর্থাৎ তিনি আপনাদেরকে পবিত্র করার মতো পবিত্র করেই সৃষ্টি মুবারক করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৩)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন,
نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ طَهَّرَهُمُ اللهُ مِنْ شَجَرَةِ النُّبُوَّةِ وَمَوْضِعِ الرِّسَالَـةِ وَمُـخْتَلِفِ الْمَلَائِكَةِ وَبَيْتِ الرَّحْمَةِ وَمَعْدِنِ الْعِلْمِ.
অর্থ: “আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে (আমাদেরকে) সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক উনার বৃক্ষ, সম্মানিত রিসালাত মুবারক উনার স্থান, বিভিন্ন ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের, উনাদের দ্বারা সম্মানিত খিদমত মুবারক, সম্মানিত রহমত মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারক উনার খনি মুবারক (ইত্যাদি সমস্ত কিছু) থেকে পবিত্র রেখেছেন, ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী) করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে দুররে মানছূর ৬/৬০৬, ইবনে আবী হাতিম ৯/৩১৩৩)
এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের পরিপূর্ণ মিছদাক্ব হচ্ছেন উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! উনাকে মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র করার মতো পবিত্র করেই সম্মানিত সৃষ্টি মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ!  তিনি একমাত্র মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মাহবূব হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের মুহতাজ। এছাড়া কায়িনাতের অন্য কারো মুহতাজ নন; বরং কায়িনাতের সকলেই উনার মুহতাজ। সুবহানাল্লাহ! তিনি সমস্ত কিছু থেকে পবিত্র, ছমাদ তথা বেনিয়ায। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! উনার কারণেই সম্মানিত নুবুওয়াত মুবারক, সম্মানিত রিসালাত মুবারক, সমস্ত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা, সম্মানিত রহমত মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারকসহ সমস্ত কিছুই ফযীলতপ্রাপ্ত হয়েছেন, সম্মানিত হয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত শৈশবকাল মুবারক
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি উনার মহাসম্মানিত শৈশবকাল মুবারক উনার মহাসম্মানিত পিতা-মাতা আলাইহিমাস সালাম উনাদের সাথে এবং উনার সম্মানিত ভাই-বোন উনাদের সাথে বনূ মুছ্ত্বলিক্ব গোত্রে অতিবাহিত করেন। সুবহানাল্লাহ!

প্রথম শাদী মুবারক
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার প্রথম শাদী মুবারক স্বীয় গোত্রর হয় মুসাফি’ ইবনে ছাফ্ওয়ান মুছত্বলিক্বী  খুযা‘য়ীর সাথে। সে একজন প্রসিদ্ধ কবি ছিলো এবং সে বনূ মুছ্ত্বলিক্বের জিহাদে কাফির অবস্থায় নিহত হয়। কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
وكانت قبل رسول الله صلى الله عليه وسلم عند مسافع بن صفوان
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ আসার পূর্বে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি মুসাফি’ ইবনে ছাফওয়ানের নিকট ছিলেন।” (আস সীরাতুল হালাবিয়্যাহ্ ৩/৪৫০)
কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে,
وَكَانَ زَوْجُهَا قَبْلَ أَنْ يُسْلِمَ ابْنُ عَمِّهَا مُسَافِعُ بنُ صَفْوَانَ بنِ أَبِي الشُّفَرِ.
অর্থ: “সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণের পূর্বে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার চাচাতো ভাই মুসাফি’ ইবনে ছাফওয়ান আবীশ শুফার।” (সিয়ারু আ’লামিন নুবালা’ ২/২৫২)
কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে,
تزوجها قبله مسافع بن صفوان وقتل يوم المريسيع
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ আসার পূর্বে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত শাদী মুবারক হয় মুসাফি’ ইবনে ছাফ্ওয়ানের সাথে। সে মুরাইসী’র জিহাদের দিন নিহত হয়।” (সিয়ারু আ’লামিন নুবালা’ ২/২৫২)
উল্লেখ্য যে, মুসাফি’ ইবনে ছাফ্ওয়ান অবশ্যই বনূ মুছত্বলিক্ব গোত্রের লোক ছিলো, তবে সে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার আপন চাচাতো ভাই ছিলো না। বরং দূর সম্পর্কীয় চাচাতো ভাই ছিলো।

বনূ মুছ্ত্বলিক্বের জিহাদের উদ্দেশ্যে রওয়ানা:
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ থেকে ৯ মান্যিল দূরে বনূ মুছ্ত্বলিক্বের অধীনে ‘আল মুরাইসী’ নামে একটি কূপ ছিলো। বনূ মুছ্ত্বলিক্বের জিহাদে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদেরকে নিয়ে এই কূপের নিকট সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন বিধায় এই জিহাদকে ‘মুরাইসী’র জিহাদও’ বলা হয়।
বনূ মুছ্ত্বলিক্ব¡ ছিলো কুরাইশদের অন্যতম মিত্রশক্তি। তারা উহুদের জিহাদে কুরাইশদের সহযোগীতা করেছিলো এবং তাদের সাথে সরাসরি জিহাদে অংশগ্রহণও করেছিলো। ৫ম হিজরী শরীফ উনার শেষের দিকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট সংবাদ আসে যে,  বনূ মুছ্ত্বলিক্বের প্রধান হযরত হারিছ ইবনে আবূ দ্বিরার আলাইহিস সালাম (তখনও ঈমান আনেননি) তিনি কুরাইশ ও মুনাফিক্বদের ওয়াস্ওয়াসায় পড়ে নিজের ও আরবের অন্যান্য গোত্রের লোকদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বাহিনী নিয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শরীফ আক্রমণের  প্রস্তুতি নিচ্ছেন। না‘ঊযুবিল্লাহ! নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সংবাদ পেয়ে প্রকৃত অবস্থা জানার জন্য হযরত বুরাইদাহ্ ইবনে হুছাইব আসলামী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে পাঠেন। তিনি সেখানে পৌঁছে সরাসরি হযরত হারিছ ইবনে আবূ দ্বিরার আলাইহিস সালাম উনার সাথে কথা বলে বুঝতে পারলেন, ঘটনা সত্য। তিনি সাথে সাথে ফিরে এসে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ প্রকৃত অবস্থা জানান। তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদেরকে খুব দ্রুত জিহাদের প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য সম্মানিত নির্দেশ মুবারক দেন। সুবহানাল্লাহ! সম্মানিত নির্দেশ মুবারক অনুযায়ী সকলেই খুব দ্রুত প্রস্তুত হয়ে যান। তারপর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি  হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের মধ্য থেকে একজনকে সম্মানিত ও পবিত্র মদীনা শরীফ উনার দায়িত্ব দিয়ে সম্মানিত জিহাদ উনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। সুবহানাল্লাহ! সময়টি ছিলো ৫ম হিজরী শরীফ উনার সম্মানিত যিলহজ্জ শরীফ মাস উনার মাঝামাঝি দিকে। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত স্বপ্ন মুবারক:
ইমাম বাইহাক্বী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার ‘দালাইলুন নুবুওওয়াহ শরীফ’-এ এবং হযরত ইমাম জালালুদ্দী সুয়ূত্বী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘খছায়িছুল কুবরা শরীফ’-এ এছাড়াও আরো অন্যান্য ইমাম মুজতাহিদ রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনারা উনাদের স্বীয় কিতাবে বর্ণনা করেন,
قَالَتْ جُوَيْرِيَةُ بِنْتُ الْحَارِثِ رَأَيْتُ قَبْلَ قُدُومِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِثَلَاثِ لَيَالٍ، كَأَنَّ الْقَمَرَ يَسِيرُ مِنْ يَثْرِبَ حَتَّى وَقَعَ فِي حِجْرِي، فَكَرِهْتُ أَنْ أُخْبِرَ بِهَا أَحَدًا، مِنَ النَّاسِ حَتَّى قَدِمَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি (বনূ মুস্ত¡লিক্বের জিহাদ-এ)  সম্মানিত তাশরীফ নেয়ার পূর্বে আমি তিন রাত একখানা সম্মানিত স্বপ্ন মুবারক দেখি যে,  যেন সম্মানিত ও পবিত্র মদীনা শরীফ উনার দিক থেকে চাঁদ ছুটে এসে আমার সম্মানিত কোল মুবারক-এ পড়লো। সুবহানাল্লাহ! এ বিষয়ে কাউকে কিছু বলাটা পছন্দ করিনি। অবশেষে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত তাশরীফ মুবারক রাখলেন।” সুবহানাল্লাহ! (দালাইলুন নুবুওওয়াহ লিল বাইহাক্বী ৪/৫০, মুস্তাদরকে হাকিম ৪/২৮, খছায়িছুল কুবরা শরীফ ১/৩৯১, ইমতা‘উল আসমা’ ৬/৮৪, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ৪/৩৭৪ এবং ১১/২১১, তাফসীরে মাযহারী ৯/৩০৬, শরহুয যারক্বানী ৩/৭, তারীখে ত্ববারী ১১/৬১০, আল বিদায়াহ্ ওয়ান নিহায়াহ্ ৪/১৮২ ইত্যাদী)

***************************

৫. সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল ‘আলামীন, আফদ্বলুন নাস ওয়ান নিসা বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালামউনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সংক্ষিপ্ত জীবনী মুবারক-৩

বনূ মুস্ত¡লিক্বের সম্মানিত জিহাদ মুবারক:
মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে সম্মানিত ও পবিত্র  ওহী মুবারক প্রাপ্ত হয়ে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ৫ম হিজরী শরীফ উনার সম্মানিত যিলহজ্জ শরীফ মাস উনার মাঝামাঝি সময়ে সম্মানিত জিহাদ মুবারক উনার উদ্দেশ্যে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ হতে রওয়ানা করে বনূ মুছ্ত্বলিক্বের ‘আল মুরাইসী’ নামক কূপের নিকট তাশরীফ মুবারক গ্রহন  করেন। সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছ আলাইহিস সালাম উনার নেতৃত্বে গঠিত কাফিরদের সম্মিলিত বাহিনীর নিকট সব খবর পৌঁছলে তারা  ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। অন্যান্য আরব গোত্র জিহাদের ইচ্ছা ত্যাগ করে যার যার মত বিক্ষিপ্ত হয়ে যায়। সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছ আলাইহিস সালাম উনার সাথে শুধু উনার গোত্রের লোকেরাই অবশিষ্ট থাকে। তারা সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়ায় এবং দীর্ঘক্ষণ তীর-বর্শা ছুড়ে ছুড়ে মুসলমান উনাদেরকে প্রতিরোধ করার চেষ্ট করে। অবশেষে সম্মানিত মুসলিম বাহিনী হঠাৎ এক সাথে আক্রমণ করে শক্র বাহিনীকে পরাজিত করেন। সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছ আলাইহিস সালাম তিনি সেখান থেকে সরে দূরে চলে যান।
এই জিহাদে ১১ জন কাফির মারা যায় এবং অন্যরা সকলে বন্দী হয়। কাফিরদের হাতে সম্মানিত মুসলমান উনাদের মধ্য হতে কেউ সম্মানিত শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেননি। তবে অজান্তে হযরত উবাদা ইবনে সামিত রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার হাতে হযরত হিশাম ইবনে সাবাবা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু নামে একজন ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি সম্মানিত শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। শত্রু পক্ষের পুরুষ-মহিলা-শিশু মিলে প্রায় ৬০০ জন বন্দী হয় এবং তাদের দুই হাজার উট, পাঁচ হাজার ছাগল-ভেড়া গনীমত হিসেবে সম্মানিত মুসলমান উনারা লাভ করেন। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ :
যুদ্ধবন্দীদের মধ্যে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনিও ছিলেন। তিনি হযরত ছাবিত ইবনে ক্বইস্ ইবনে শাম্মাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার মতান্তরে উনার চাচাতো ভাই উনার ভাগে পড়েন। তখন উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি উনার দেখা সম্মানিত স্বপ্ন মুবারক উনার বাস্তব রূপ লাভের প্রত্যাশা করতে থাকেন। যেটা কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
 قَالَتْ جُوَيْرِيَةُ بِنْتُ الْحَارِثِ رَأَيْتُ قَبْلَ قُدُومِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِثَلَاثِ لَيَالٍ كَأَنَّ الْقَمَرَ يَسِيرُ مِنْ يَثْرِبَ حَتَّى وَقَعَ فِي حِجْرِي، فَكَرِهْتُ أَنْ أُخْبِرَ بِهَا أَحَدًا، مِنَ النَّاسِ حَتَّى قَدِمَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَلَمَّا سُبِينَا رَجَوْتُ الرُّؤْيَا
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি (বনূ মুস্ত¡লিক্বের জিহাদ-এ)  সম্মানিত তাশরীফ নেয়ার পূর্বে আমি তিন রাত একখানা সম্মানিত স্বপ্ন মুবারক দেখি যে,  যেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার দিক থেকে একখানা চাঁদ ছুটে এসে আমার সম্মানিত কোল মুবারক-এ পড়লেন। সুবহানাল্লাহ! এ বিষয়ে কাউকে কিছু বলাটা আমি পছন্দ করিনি। অবশেষে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত তাশরীফ মুবারক রাখলেন। সুবহানাল্লাহ! যখন আমরা বন্দী হলাম, তখন আমি আমার দেখা সম্মানিত স্বপ্ন মুবারক উনার বাস্তব রূপ লাভের প্রত্যাশা করলাম।” সুবহানাল্লাহ! (দালাইলুন নুবুওওয়াহ লিল বাইহাক্বী ৪/৫০, মুস্তাদরকে হাকিম ৪/২৮, খছায়িছুল কুবরা শরীফ ১/৩৯১, ইমতা‘উল আসমা’ ৬/৮৪, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ৪/৩৭৪ এবং ১১/২১১, তাফসীরে মাযহারী ৯/৩০৬, শরহুয যারক্বানী ৩/৭, তারীখে ত্ববারী ১১/৬১০, আল বিদায়াহ্ ওয়ান নিহায়াহ্ ৪/১৮২ ইত্যাদী)
সম্মানিত স্বপ্ন মুবারক উনার বাস্তবতা প্রত্যাশা করার কারণেই উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি হযরত ছাবিত ইবনে ক্বইস্ ইবনে শাম্মাস আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার সাথে মুকাতাবার বিষয়টি ফায়ছালা করলেন। মুকাতাবা বা চুক্তি হলো- উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি  হযরত ছাবিত ইবনে ক্বইস্ ইবনে শাম্মাস আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে ৯ আউক্বিয়াহ্ স্বর্ণ দিবেন, তাহলে তিনি উনার অধীনতা থেকে মুক্ত হয়ে যাবেন। সুবহানাল্লাহ! তখন উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি সরাসরি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নিয়ে বললেন, 
يَا رَسُولَ اللهِ، إنّي امْرَأَةٌ مُسْلِمَةٌ أَشْهَدُ أن لا إله إلا الله وأنك رسول الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم، وأنا جويرية بنت الحارث ابن أَبِي ضِرَارٍ سَيّدِ قَوْمِهِ، وَقَدْ أَصَابَنِي مِنْ الْبَلَاءِ، مَا لَمْ يَخْفَ عَلَيْك، فَوَقَعْت فِي السّهْمِ لِثَابِتِ بْنِ قَيْسِ بْنِ الشّمّاسِ، فَكَاتَبْتُهُ عَلَى نَفْسِي فَجِئْتُك أَسْتَعِينُك عَلَى كِتَابَتِي، قَالَ: فَهَلْ لَك فِي خَيْرٍ مِنْ ذَلِكَ؟ قَالَتْ: وَمَا هُوَ يَا رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم؟ قَالَ: أَقْضِي عَنْك كِتَابَتك وَأَتَزَوّجُك؛ قَالَتْ: نَعَمْ يَا رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم: فَفَعَلَ رَسُولُ اللَّه صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَبَلَغَ النَّاسَ أَنَّهُ قَدْ تَزَوَّجَهَا.
অর্থ: “ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! নিশ্চয়ই আমি একজন মুসলমান মহিলা। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত কোন মা’বূদ নেই এবং নিশ্চয়ই আপনি মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সুবহানাল্লাহ! আমি হচ্ছি সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছ ইবনে আবূ দ্বিরার আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিতা আওলাদ সাইয়্যিদাতুনা হযরত জুওয়াইরিয়াহ্ আলাইহাস সালাম। আমার উপর যে বিপদ আপতিত হয়েছে, তা আপনার কাছে গোপন নেই। অর্থাৎ সবকিছুই আপনার জানা রয়েছে। আমি হযরত ছাবিত ইবনে ক্বইস্ ইবনে শাম্মাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার ভাগে পরেছি। উনার সাথে মুকাতাবা করেছি। আমি আপনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ এসেছি এবং আপনার নিকট আমার মুকাতাবার বিষয়ে সাহায্য প্রার্থনা করছি। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আপনি কী এর চেয়ে উত্তম কিছু প্রত্যাশা করেন? উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ আলাইহাস সালাম তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! সেটা কী? নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন- আমি আপনার পক্ষ থেকে আপনার চুক্তিকৃত নির্ধারিত অর্থ পরিশোধ করে দিবো এবং আপনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ করবো। সুবহানাল্লাহ! উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ আলাইহাস সালাম তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! হ্যাঁ। আমি এটাই চাই। তারপর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাই করলেন। সুবহানাল্লাহ! তখন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের মাঝে এ সংবাদ মুবারক পৌঁছে গেলো যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (আবূ দাঊদ, মুসনাদে আহমদ, আল মু’জামুল কাবীর লিত ত্ববারনী, মুস্তাদরকে হাকিম, আস সুনানুল কুবরা লিলবাইহাক্বী, শরহু মা‘য়ানিল আছার, ওয়াক্বিদী, ইবনে হিশাম, ইবনে সা’দ, তারীখে ত্ববারী, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ, ইছাবাহ, শরহুয যারক্বানী, ইবনে সা’দ ইত্যাদী)
 সেটাই উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি বলেন,
فَلَمَّا سُبِينَا رَجَوْتُ الرُّؤْيَا، فَأَعْتَقَنِي رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَتَزَوَّجَنِي
  অর্থ: “যখন আমরা বন্দী হলাম, তখন আমি আমার দেখা সম্মানিত স্বপ্ন মুবারক উনার বাস্তব রূপ লাভের প্রত্যাশা করলাম। সুবহানাল্লাহ! তারপর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে মুক্ত করে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ করেন।” সুবহানাল্লাহ! (দালাইলুন নুবুওওয়াহ লিল বাইহাক্বী ৪/৫০, মুস্তাদরকে হাকিম ৪/২৮, খছায়িছুল কুবরা শরীফ ১/৩৯১, ইমতা‘উল আসমা’ ৬/৮৪, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ৪/৩৭৪ এবং ১১/২১১, তাফসীরে মাযহারী ৯/৩০৬, শরহুয যারক্বানী ৩/৭, তারীখে ত্ববারী ১১/৬১০, আল বিদায়াহ্ ওয়ান নিহায়াহ্ ৪/১৮২ ইত্যাদী)
উপরোক্ত আলোচনা থেকে এই বিষয়টি অত্যন্ত সুস্পষ্ট যে, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বনূ মুছ্ত্বলিক্বের জিহাদে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক রাখার পূর্বে তিন রাত যে সম্মানিত স্বপ্ন মুবারক দেখেছেন, সেই সম্মানিত স্বপ্ন মুবারক দেখার সাথে সাথেই তিনি ভিতরে ভিতরে সম্মানিত ঈমান মুবারক এনেছেন। সুবহানাল্লাহ! কিন্তু তিনি তা কারো কাছে প্রকাশ করেননি। আর তিনি বন্দী হওয়ার সাথে সাথে উনার সম্মানিত স্বপ্ন মুবারক উনার বাস্তবতা অবলোকনের প্রত্যাশা করছিলেন তথা হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহাস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার প্রত্যাশা করছিলেন। সুবহানাল্লাহ! যার কারণে তিনি নিজেই হযরত ছাবিত ইবনে ক্বইস্ ইবনে শাম্মাস আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার কাছে মুকাতাবার প্রস্তাব দেন এবং সরাসরি নূরে মুজসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট গিয়ে সাহায্য প্রার্থনা করেন। সুবহানাল্লাহ! আর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যেহেতু সম্মানিত ইলমে গইব মুবারকসহ সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত প্রকার সম্মানিত ইলম-কালাম মুবারক উনাদের মালিক এবং কায়িনাতের কোনো কিছুই উনার নিকট অস্পষ্ট নেই। সুবহানাল্লাহ! তাই উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি যখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ এসে সাহায্য প্রার্থনা করছিলেন, তখন তিনি এ বিষয়টি জানতেন যে, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি ভিতরে ভিতরে কী প্রত্যাশা করছেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি ভিতরে ভিতরে প্রত্যাশা করছেন  যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি তিনি যেন উনাকে উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ গ্রহণ করে উম্মুল মু’মিনীন আলাইহাস সালাম হিসেবে কবূল করে নেন। সুবহানাল্লাহ! যার কারণে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি সাহায্য প্রার্থনা করার সাথে সাথে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
فَهَلْ لَك فِي خَيْرٍ مِنْ ذَلِكَ قَالَتْ: وَمَا هُوَ يَا رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم قَالَ: أَقْضِي عَنْك كِتَابَتك وَأَتَزَوّجُك؛ قَالَتْ: نَعَمْ يَا رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم: فَفَعَلَ رَسُولُ اللَّه صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَبَلَغَ النَّاسَ أَنَّهُ قَدْ تَزَوَّجَهَا.
অর্থ: “আপনি কী এর চেয়ে উত্তম কিছু প্রত্যাশা করেন? তখন উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! সেটা কী? নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন- আমি আপনার পক্ষ থেকে আপনার চুক্তিকৃত নির্ধারিত অর্থ পরিশোধ করে দিবো এবং আপনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ করবো।” সুবহানাল্লাহ!
তখন উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ আলাইহাস সালাম তিনি সাথে সাথে বলে উঠেন,
نَعَمْ يَا رَسُولَ اللهِ،
ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! হ্যাঁ। আমি এটাই চাই।
তারপর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ করেন। সুবহানাল্লাহ!
৫ম হিজরী শরীফ উনার ২৮শে যিলহজ্জ শরীফ লাইলাতুল জুমু‘য়াহ শরীফ (জুমু‘য়াহ্ শরীফ রাত) সম্মানিত জিহাদ মুবারক শেষে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়ার পূর্বেই এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হয়। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে উম্মুল মু’মিনীন  সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ২০ বছর ১ মাস ১৫ দিন অর্থাৎ প্রায় ২০ বছর। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ বছর হিসেবে ২০ বছর আর দিন হিসেবে ২০ বছর ১ মাস ১৫ দিন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে,
عَنْ جُوَيْرِيَةَ، قَالَتْ: تَزَوَّجَنِي رَسُوْلُ اللهِ -صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ- وَأَنَا بِنْتُ عِشْرِيْنَ سَنَةً.
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন আমাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ করেন, তখন আমার সম্মানিত বয়স মুবারক  ২০ বছর।” সুবহানাল্লাহ! (সিয়ারু আ’লামিন নুবালা’ ২/২৬৩, তারীখুল ইসলাম ২/৪৮১, ইবনে সা’দ ৮/১২০ ইত্যাদী)
সম্মানিত মোহরানা মুবারক:
মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার সম্মানিত মোহরানা মুবারক ছিলেন ৫০০ দিরহাম।’ সুবহানাল্লাহ!
*******************************************************************

৬. সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল ‘আলামীন, আফদ্বলুন নাস ওয়ান নিসা বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালামউনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সংক্ষিপ্ত জীবনী মুবারক-৪

উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানার্থে বনূ মুছ্ত্বলিক্বের সবাইকে মুক্ত করে দেয়া:
যখন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের মাঝে এ সংবাদ মুবারক পৌঁছে গেলো যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ করেছেন, তখন উনারা বনূ মুছত্বলিক্বের সবাইকে মুক্ত করে দেন। সুবহানাল্লাহ! হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের এই মহত্ত্ব ও উদারতা দেখে বনূ মুছত্ব¡লিক্বের সবাই সম্মানিত ঈমান এনে মুসলমান হয়ে যান। সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
فتزوجها فقال المسلمون أصهار رسول الله صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم َ تحت أيدينا أي أنهم في الأسر فأعتقوا جميع الأسرى الذين كانوا تحت أيديهم فلما رأى بنو المصطلق هذا النبل والسمو وهذه الشهامة والمروءة أسلموا جميعاً ودخلوا في دين الله وأصبحوا من المؤمنين.
অর্থ: “অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনাকে সম্মানিত নিসবতে ‘আযীম শরীফ করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত শ্বশুর বংশের লোক, উনারা কিভাবে আমাদের অধীনে থাকবেন? অর্থাৎ উনারা কিভাবে আমাদের নিকট বন্দী থাকবেন? না‘ঊযুবিল্লাহ! তারপর হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের নিকট যত বন্দী ছিলেন, উনারা  সবাইকে মুক্ত করে দেন। সুবহানাল্লাহ! বনূ মুছত্বলিক্বের লোকেরা যখন এই মহত্ত্ব, মর্যাদা, উদারতা এবং মানবাত, বদান্যতা অবলোকন করেন, তখন উনারা সকলেই ইসলাম গ্রহণ করে মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত দ্বীন উনার মধ্যে দাখিল হন এবং সম্মানিত মু‘মিন উনাদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে যান।” সুবহানাল্লাহ! (রওয়াই‘উল বায়ান তাফসীরু আয়াতিল আহকাম ১/৪৫৭)
উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি বলেন,
فَمَا رَأَيْنَا امْرَأَةً كَانَتْ أَعْظَمَ بَرَكَةً عَلَى قَوْمِهَا مِنْهَا أُعْتِقَ فِي سَبَبِهَا مِائَةُ أَهْلِ بَيْتٍ مِنْ بَنِي الْمُصْطَلِقِ
অর্থ: “আমি কোনো মহিলাকে তার সম্প্রদায়ের জন্য উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার থেকে অধিকতর কল্যাণকামী দেখিনি। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানার্থে বনূ মুছত্বলিক্বের একশত পরিবার মুক্তি পায়।” সুবহানাল্লাহ! (আবূ দাঊদ শরীফ, মুসনাদে আহমদ শরীফ, শরহু মা‘আনিল আছার, ছহীহ ইবনে হিব্বান, মুস্তাদরকে হাকিম ইত্যাদী)
এখানে এক শত পরিবারের কথা বলা হয়েছে। এখন প্রতি পরিবারের লোক সংখ্যা যদি গড়ে ৬ থেকে ৭ জন ধরা হয়, তাহলে বনূ মুছ্ত্বলিক্বের ৬০০ থেকে ৭০০ জন লোককে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানার্থে মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানার্থে বনূ মুছত্বলিক্বের সমস্ত লোককে মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত পিতা আলাইহিস সালাম উনার এবং সম্মানিত দুই ভাই উনাদের সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ:
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
فَأَقْبَلَ أَبُوهَا حضرت الْحَارِثُ بْنُ أَبِي ضِرَارٍ عليه السلام بِفِدَاءِ ابْنَتِهِ فَلَمَّا كَانَ بِالْعَقِيقِ نَظَرَ إلَى الْإِبِلِ الَّتِي جَاءَ بِهَا لِلْفِدَاءِ فَرَغِبَ فِي بَعِيرَيْنِ مِنْهَا فَغَيَّبَهُمَا فِي شِعْبٍ مِنْ شِعَابِ الْعَقِيقِ ثُمَّ أَتَى إلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَالَ يَا مُحَمَّدُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَصَبْتُمْ ابْنَتِي وَهَذَا فِدَاؤُهَا فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَيْنَ الْبَعِيرَانِ اللَّذَانِ غَيَّبْتهمَا بِالْعَقِيقِ فِي شِعْبِ كَذَا وَكَذَا فَقَالَ حضرت الْحَارِثُ عليه السلام أَشْهَدُ أَنْ لَا إلَهَ إلَّا اللَّهُ وَأَنَّكَ مُحَمَّدٌ رَسُول الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فواللَّهِ مَا اطَّلَعَ عَلَى ذَلِكَ إلَّا اللَّهُ فَأَسْلَمَ حضرت الْحَارِثُ عليه السلام وَأَسْلَمَ مَعَهُ ابْنَانِ لَهُ، وَنَاسٌ مِنْ قَوْمِهِ
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছ ইবনে আবূ দ্বিরার আলাইহিস সালাম তিনি উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহাস সালাম উনাকে মুক্ত করার জন্য মুক্তিপণসহ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ আসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। পথিমধ্যে তিনি যখন ‘আক্বীক্ব নামক স্থানে আসলেন, তখন তিনি মুক্তিপণ হিসেবে যে সকল উট নিয়ে আসছিলেন, সেগুলোর দিকে তাকালেন। এগুলোর মধ্যে দুইটি উট উনার নিকট পছন্দ হলো। ফলে তিনি উক্ত দুইটি উট ‘আক্বীক্বের উপত্যকাসমূহ হতে একটি উপত্যকায় লুকিয়ে রাখলেন। তারপর তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ এসে বললেন, ইয়া রসূলিল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনারা আমার মহাসম্মানিতা আওলাদ আলাইহাস সালাম উনাকে গণীমত হিসেবে লাভ করেছেন। এই নিন উনার মুক্তিপণ। তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, সেই উট দুইটি কোথায়, যেগুলো আপনি ‘আক্বীক্বের উমুক উপত্যকায় লুকিয়ে রেখে এসেছেন? সুবহানাল্লাহ! তখন সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছ আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত কালিমা শরীফ পাঠ করলেন,
أَشْهَدُ أَنْ لَا إلَهَ إلَّا اللَّهُ، وَأَنَّكَ مُحَمَّدٌ رَسُول الله صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত কোনো ইলাহ্ নেই এবং নিশ্চয়ই নিশ্চয়ই আপনি মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।’ সুবহানাল্লাহ! (তিনি আরো বললেন,) মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! এই বিষয়ে যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত আর কেউ অবগত নয়। তারপর সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছ আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেন এবং উনার সাথে উনার সম্মানিত দুইজন ছেলে রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুমা উনারা ও উনার সম্প্রদায়ের অনেক লোক সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেন।” সুবহানাল্লাহ! (খছায়িছুল কুবরা শরীফ ১/৩৯২, উস্দু গবাহ্ ১/২১২)
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত পিতা উনার সাথে উনার যে দুই ভাই সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেছেন, উনাদের সম্পর্কে ‘আর রওদ্বুল উন্ফ’ নামক কিতাবে উল্লেখ রয়েছে,
وَهُمَا الْحَارِثُ بْنُ الْحَارِثِ رضى الله تعالى عنه وَعَمْرُو بْنُ الْحَارِثِ رضى الله تعالى عنه
অর্থ: “আর উনারা দুইজন হচ্ছেন সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছ ইবনে হারিছ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আমর ইবনে হারিছ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি।” সুবহানাল্লাহ! (আর রওদ্বুল উন্ফ)
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ভাই সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে হারিছ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ:
আল্লামা হযরত আবূ উমর ইবনে আব্দুল বার রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এবং আল্লামা হযরত ইবনে আছীর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি অর্থাৎ উনারা উনাদের কিতাবে উল্লেখ করেন,
حضرت عبد الله بن الحارث بن أبي ضرار رضى الله تعالى عنه واسمه حضرت حبيب رضى الله تعالى عنه هُوَ أخو ام المؤمنين سيدتنا حضرت الثامنة عليها السلام (سيدتنا حضرت جويرية عليها السلام) بِنْت الْحَارِث عليه السلام زوج النَّبِيّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قدم على النَّبِيّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي فداء أسارى بني المصطلق غيب فِي بعض الطريق ذودا كن معه، وجارية، سوداء، فكلم رَسُول اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي فداء الأسارى، فَقَالَ لَهُ رَسُول اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: نعم، فما جئت بِهِ؟ قَالَ: مَا جئت بشيء. قَالَ: فأين الذود والجارية السوداء التي غيبت بموضع كذا؟ قَالَ أشهد ان لا إِلَهَ إِلا اللَّهُ وأنك رَسُول الله صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ والله مَا كَانَ معي أحد، ولا سبقني إليك أحد، فأسلم.
 অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে হারিছ ইবনে আবূ  দ্বিরার রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার সম্মানিত নাম মুবারক সাইয়্যিদুনা হযরত হাবীব রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু। তিনি উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ভাই। তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট বনূ মুছ্ত্বলিক্বের বন্দীদের মুক্তিপণ নিয়ে আসেন। আসার সময় কিছু দূর অগ্রসর হয়ে পথিমধ্যে উনার সাথে থাকা মুক্তিপণের উট এবং একটি কালো দাসী লুকিয়ে রাখেন। তারপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ এসে বন্দীদের মুক্তিপণের বিষয়ে কথা-বার্তা বলেন। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ মুবারক করেন, হ্যাঁ। আপনি এজন্য কি নিয়ে এসেছেন? তিনি বলেন, আমি কোনো কিছুই নিয়ে আসিনি। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তাহলে ঐ উটগুলো এবং কালো দাসী কোথায়, যেগুলো আপনি অমুক স্থানে লুকিয়ে রেখেছেন? তখন তিনি সাথে সাথে সম্মানিত কালিমা শরীফ পাঠ করেন,
أشهد ان لا إِلَهَ إِلا اللَّهُ وأنك رَسُول الله صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত কোনো মা’বূদ নেই এবং নিশ্চয়ই আপনি  মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লম।’ সুবহানাল্লাহ! (তিনি আরো বলেন,) মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! তখন আমার সাথে আমি ব্যতীত দ্বিতীয় আর কেউই ছিলো না এবং আমার অগ্রবর্তী হয়ে আপনার নিকট কেউ আগমনও করেনি। সুবহানাল্লাহ! তারপর তিনি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেন।” সুবহানাল্লাহ! (উস্দুল গ¦বাহ্ ৩/১০১, ইস্তি‘য়াব ১/২৬৭)

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা এবং বাক্বা:
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত পিতা সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছ আলাইহিস সালাম তিনি উনাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ আসলেন। এসে উনাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ আরজী পেশ করলেন। তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন যে, এটা উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ইখতিয়ার মুবারক। তিনি ইচ্ছা মুবারক করলে যেতেও পারেন, আবার ইচ্ছা মুবারক করলে থাকতেও পারেন। তখন উনার মহাসম্মানিত আব্বাজান আলাইহিস সালাম তিনি উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ এসে বললেন যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বিষয়টি পুরোপুরিভাবে আপনার সম্মানিত ইখতিয়ার মুবারক উনার উপর ছেড়ে দিয়েছেন। আপনি ইচ্ছা করলে আমার সাথে যেতেও পারেন, আবার ইচ্ছা করলে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ থাকতেও পারেন। কাজেই, আপনি আমার সাথে চলুন। উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি জবাবে বললেন,
فَإِنِّي قَدِ اخْتَرْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
“নিশ্চয়ই আমি মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত রসূল, মাহবূব হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকেই গ্রহণ করলাম। অর্থাৎ আমি কস্মিনকালেও আপনার সাথে যাবো না; বরং আমি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারকেই সম্মানিত অবস্থান মুবারক করবো।” সুবহানাল্লাহ!
অপর বর্ণনায় রয়েছে,
اخترت اللَّه ورسوله صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.
“আমি যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনাকে এবং উনার মহাসম্মানিত রসূল, মাহবূব হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকেই গ্রহণ করলাম।” সুবহানাল্লাহ!
এই সম্মানিত ওয়াক্বেয়া মুবারক থেকে এই বিষয়টিই স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা এবং বাক্বা। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছে কুদসী শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
يَا مُـحَمَّدُ صَـلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَنَا وَاَنْتَ وَمَا سِوَاكَ خَلَقْتُ لِاَجْلِكَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَـلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَا رَبِّ اَنْتَ وَمَا اَنَا وَمَا سِوَاكَ تَرَكْتُ لِاَجْلِكَ.
 অর্থ: “হে আমার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি এবং আপনি। আর আপনি ছাড়া যা কিছু রয়েছে সমস্ত কিছু আমি আপনার সন্তুষ্টি মুবারক উনার জন্যই সৃষ্টি করেছি। সুবহানাল্লাহ! জবাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আয় বারে এলাহী! শুধু আপনি, আমিও না। আপনি ছাড়া আর যা কিছু রয়েছে, সমস্ত কিছুই তরক করেছি আপনার রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করার লক্ষ্যে।” সুবহানাল্লাহ!
এই সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছে কুদসী শরীফ উনার পরিপূর্ণ মিছদাক্ব হচ্ছেন উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যেমন মহান আল্লাহ পাক উনার মাঝে ফানা এবং বাক্বা, তেমনিভাবে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনিও যিনি খালিক্ব¡ মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের মাঝে ফানা এবং বাক্বা। সুবহানাল্লাহ!

গোলাম হাদিয়া মুবারক করা:
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে,
عَنْ حضرت جَابِرٍ رضى الله تعالى عنه أَنَّ ام المؤمنين سيدتنا حضرت الثامنة عليها السلام (سيدتنا حضرت جويرية عليها السلام) قَالَتْ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنِّي أُرِيدُ أَنْ أَعْتِقَ هَذَا الْغُلَامَ. قَالَ أَعْطِهِ خَالَكِ الَّذِي فِي الْأَعْرَابِ يَرْعَى عَلَيْهِ فَإِنَّهُ أَعْظَمُ لِأَجْرِكِ.
অর্থ: “হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন। একবার উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ আরজী করনে, আমি এই গোলামটি আযাদ করে দিতে চাই। তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আপনি গোলামটি আযাদ না করে গ্রামে বসবাসরত আপনার সম্মানিত মামা উনাকে হাদিয়া করে দিন। তিনি তাকে দেখাশুনা করবেন। এতে আপনি অধিক ফযীলত পাবেন।” সুবহানাল্লাহ! (মাজমাউয যাওয়াইদ ৮/১৫৩, কাশফুল আসতার ‘আন যাওয়ায়িদিল মুসনাদ ২/৩৭৪)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ  শরীফ বর্ণনা:
আল্লামা হযরত ইবনে হাজার আস্ক্বালানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন,
وروت ام المؤمنين سيدتنا حضرت الثامنة عليها السلام (سيدتنا حضرت جويرية عليها السلام) عن النبي صلّى اللَّه عليه وسلّم أحاديث.
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি অনেকগুলো মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা মুবারক করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (ইছাবাহ্ ৮/৭২)
আল্লামা হযরত ইমাম শামসুদ্দীন যাহাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার ‘সিয়ারু আ’লামিন নুবালা’ নামক কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
جَاءَ لَهَا سَبْعَةُ أَحَادِيْثَ مِنْهَا عِنْدَ البُخَارِيِّ حَدِيْثٌ وَعِنْدَ مُسْلِمٍ حَدِيْثَانِ.
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার থেকে সাতখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণিত রয়েছে। এই সাতখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মধ্য থেকে ইমাম বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি একখানা এবং ইমাম মুসলিম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি দুইখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের স্বীয় কিতাবে লিপিবদ্ধ করেছেন।” (সিয়ারু আ’লামিন নুবালা’)
মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার পুরো জিন্দেগী মুবারকই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার অন্তর্ভুক্ত। তবে রাবীগণ উনার থেকে মাত্র ৭ খানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করতে সক্ষম হয়েছেন। কেননা, তিনি যা করেছেন এবং উম্মতদেরকে যা করতে আদেশ মুবারক করেছেন, প্রত্যেকটাই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ অনুযায়ীই করেছেন।” সুবহানাল্লাহ!

উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার থেকে যাঁরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন:
আল্লামা হযরত ইবনে হাজার আস্ক্বালানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন,
روى عنها ابن عباس رضى الله تعالى عنه وجابر رضى الله تعالى عنه وابن عمر رضى الله تعالى عنه وعبيد بن السباق رحمة الله عليه والطفيل ابن أخيها رحمة الله عليه وغيرهم.
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার থেকে হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি, হযরত জাবির রদ্বিয়অল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি, হযরত ইবনে ‘উমর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি, হযরত ‘উবাইদ ইবনে সাব্বাক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এবং উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ভাতিজা হযরত তুফাইল রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি অর্থাৎ উনারাসহ আরো অনেকেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (ইছাবাহ্ ৮/৭২)
*******************************************************************

৮. সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল ‘আলামীন, আফদ্বলুন নাস ওয়ান নিসা বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালামউনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সংক্ষিপ্ত জীবনী মুবারক-৫

সম্মানিত বিশেষ ইবাদাত মুবারক:
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে,
عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنْ ام المؤمنين سيدتنا حضرت الثامنة عليها السلام (سيدتنا حضرت جويرية عليها السلام) أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَرَجَ مِنْ عِنْدِهَا بُكْرَةً حِينَ صَلَّى الصُّبْحَ وَهِيَ فِي مَسْجِدِهَا ثُمَّ رَجَعَ بَعْدَ أَنْ أَضْحَى وَهِيَ جَالِسَةٌ فَقَالَ مَا زِلْتِ عَلَى الْحَالِ الَّتِي فَارَقْتُكِ عَلَيْهَا قَالَتْ نَعَمْ قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَقَدْ قُلْتُ بَعْدَكِ أَرْبَعَ كَلِمَاتٍ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ لَوْ وُزِنَتْ بِمَا قُلْتِ مُنْذُ الْيَوْمِ لَوَزَنَتْهُنَّ سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ عَدَدَ خَلْقِهِ وَرِضَا نَفْسِهِ وَزِنَةَ عَرْشِهِ وَمِدَادَ كَلِمَاتِهِ
অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণনা করেন যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একদিন সকালে ফজরের নামায আদায় করে উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার কাছ থেকে বের হন। তখন তিনি উনার নামাযের স্থানে বসে ছিলেন। তারপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি চাশতের পর ফিরে এসে দেখেন যে, তিনি তখনও বসা আছেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমি আপনাকে যেই অবস্থায় রেখে গিয়েছি, আপনি কি এখনও সেই অবস্থায়ই আছেন? তিনি বলেন, হ্যাঁ। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, অবশ্যই আমি আপনার কাছ থেকে যাওয়ার পর চারটি বাক্য মুবারক তিনবার বলেছি। সেগুলো এতো ফযীলতপূর্ণ যে, আপনি আজ পর্যন্ত যত দু‘আ পড়েছেন, সবগুলো যদি এ দু‘আ মুবারক উনার সাথে ওযন করা হয়, তাহলে এই দু‘আ মুবারক উনার ওযন বেশি হবে। সুবহানাল্লাহ! (আর তা হলো)
سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ عَدَدَ خَلْقِهِ وَرِضَا نَفْسِهِ وَزِنَةَ عَرْشِهِ وَمِدَادَ كَلِمَاتِهِ
‘সুবহানাল্লহি ওয়া বিহামদহী ওয়া রিদ্বা নাফসিহী ওয়া যিনাতা ‘আরশিহী ওয়া মিদাদা কালিমাতিহী।” সুবহানাল্লাহ! (মুসলিম শরীফ)
অপর বর্ণনায় রয়েছে,
عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنْ ام المؤمنين سيدتنا حضرت الثامنة عليها السلام (سيدتنا حضرت جويرية بِنْتِ الْحَارِثِ عليها السلام) أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَرَّ عَلَيْهَا وَهِيَ فِي الْمَسْجِدِ تَدْعُو، ثُمَّ مَرَّ بِهَا قَرِيبًا مِنْ نِصْفِ النَّهَارِ، فَقَالَ لَهَا: ্রمَا زِلْتِ عَلَى حَالِكِ قَالَتْ: نَعَمْ، قَالَ: " أَلَا أُعَلِّمُكِ ـ يَعْنِي ـ كَلِمَاتٍ تَقُولِينَهُنَّ: سُبْحَانَ اللَّهِ عَدَدَ خَلْقِهِ، سُبْحَانَ اللَّهِ عَدَدَ خَلْقِهِ، سُبْحَانَ اللَّهِ عَدَدَ خَلْقِهِ، سُبْحَانَ اللَّهِ رِضَا نَفْسِهِ، سُبْحَانَ اللَّهِ رِضَا نَفْسِهِ، سُبْحَانَ اللَّهِ رِضَا نَفْسِهِ، سُبْحَانَ اللَّهِ زِنَةَ عَرْشِهِ، سُبْحَانَ اللَّهِ زِنَةَ عَرْشِهِ، سُبْحَانَ اللَّهِ زِنَةَ عَرْشِهِ، سُبْحَانَ اللَّهِ مِدَادَ كَلِمَاتِهِ، سُبْحَانَ اللَّهِ مِدَادَ كَلِمَاتِهِ، سُبْحَانَ اللَّهِ مِدَادَ كَلِمَاتِهِ
অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণনা করেন যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একদিন সকালে উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার কাছ থেকে বের হন। তখন তিনি নামাযের স্থানে বসে সম্মানিত দো‘আ মুবারক পাঠ করছিলেন। সুবহানাল্লাহ! তারপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দ্বিপ্রহরের কাছাকাছি সময়ে এসে ইরশাদ মুবারক করেন, আমি আপনাকে যেই অবস্থায় রেখে গিয়েছি, আপনি কি এখনও সেই অবস্থায়ই আছেন? তিনি বলেন, হ্যাঁ। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমি কি আপনাকে এমন কিছু বাক্য মুবারক তথা সম্মানিত দো‘আ মুবারক শিক্ষা দিবো না, যেগুলো আপনি পাঠ করবেন- (সেই সম্মানিত দো‘আ মুবারকসমূহ হচ্ছেন,)
سُبْحَانَ اللَّهِ عَدَدَ خَلْقِهِ، سُبْحَانَ اللَّهِ عَدَدَ خَلْقِهِ، سُبْحَانَ اللَّهِ عَدَدَ خَلْقِهِ، سُبْحَانَ اللَّهِ رِضَا نَفْسِهِ، سُبْحَانَ اللَّهِ رِضَا نَفْسِهِ، سُبْحَانَ اللَّهِ رِضَا نَفْسِهِ، سُبْحَانَ اللَّهِ زِنَةَ عَرْشِهِ، سُبْحَانَ اللَّهِ زِنَةَ عَرْشِهِ، سُبْحَانَ اللَّهِ زِنَةَ عَرْشِهِ، سُبْحَانَ اللَّهِ مِدَادَ كَلِمَاتِهِ، سُبْحَانَ اللَّهِ مِدَادَ كَلِمَاتِهِ، سُبْحَانَ اللَّهِ مِدَادَ كَلِمَاتِهِ
‘সুব্হানাল্লহি ‘আদাদা খ¦ল্ক্বিহী, সুব্হানাল্লহি ‘আদাদা খ¦ল্ক্বিহী, সুব্হানাল্লহি ‘আদাদা খ¦ল্ক্বিহী, সুব্হানাল্লহি রিদ্বা নাফ্সিহী, সুব্হানাল্লহি রিদ্বা নাফ্সিহী, সুব্হানাল্লহি রিদ্বা নাফ্সিহী, সুব্হানাল্লহি যিনাতি ‘আরশিহী, সুব্হানাল্লহি যিনাতি ‘আরশিহী, সুব্হানাল্লহি যিনাতি ‘আরশিহী, সুব্হানাল্লহি মিদাদা কালিমাতিহী, সুব্হানাল্লহি মিদাদা কালিমাতিহী, সুব্হানাল্লহি মিদাদা কালিমাতিহী।” সুবহানাল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ, মুসনাদে আহমদ শরীফ, জামি‘উল আহাদীছ ইত্যাদী)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন,
عَنْ ام المؤمنين سيدتنا حضرت الثامنة عليها السلام (سيدتنا حضرت جويرية بِنْتِ الْحَارِثِ عليها السلام) رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ دَخَلَ عَلَيْهَا يَوْمَ الْجُمُعَةِ وَهِيَ صَائِمَةٌ فَقَالَ أَصُمْتِ أَمْسِ قَالَتْ لَا قَالَ تُرِيدِينَ أَنْ تَصُومِي غَدًا قَالَتْ لَا قَالَ فَأَفْطِرِي
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি বর্ণনা করেন যে, একবার ইয়াওমুল জুমু‘য়াহ শরীফ (জুমু‘য়ার দিন) নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার নিকট সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নেন। সেদিন উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি রোযা রেখেছিলেন। তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ মুবারক করেন, আপনি কি গতকাল রোযা মুবারক রেখেছিলেন? তিনি বললেন যে, না। তারপর ইরশাদ মুবারক করেন, আপনার কি আগামীকাল রোযা রাখার ইচ্ছা মুবারক আছে? তিনি বললেন যে, না। তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, তাহলে আপনি রোযা মুবারক ভেঙ্গে ফেলুন।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ ام المؤمنين سيدتنا حضرت الثامنة عليها السلام (سيدتنا حضرت جويرية عليها السلام) زَوْج النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ دَخَلَ عَلَيْهَا فَقَالَ هَلْ مِنْ طَعَامٍ قَالَتْ لَا، وَاللهِ يَا رَسُولَ اللهِ مَا عِنْدَنَا طَعَامٌ إِلَّا عَظْمٌ مِنْ شَاةٍ أُعْطِيَتْهُ مَوْلَاتِي مِنَ الصَّدَقَةِ، فَقَالَ: ্রقَرِّبِيهِ، فَقَدْ بَلَغَتْ مَحِلَّهَا
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি বর্ণনা মুবারক করেন যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একবার উনার সম্মানিত ও পবিত্র হুজরা শরীফ-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নিলেন। তারপর বললেন, কোনো খাবার আছে কি? উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি বললেন যে, মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমাদের কোনো খাবার নেই। তবে ছাগলের কিছু গোশত আছে, যেটা আমার দাসীকে একজন ছদক্বাহ দিয়েছে। তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, সেটাই নিয়ে আসুন। কারণ, ছদক্বাহ্ তার যথাস্থানে পৌঁছে গেছে।” (মুসলিম শরীফ, জামি‘উল আহাদীছ, আল ফাতহুল কাবীর ইত্যাদী)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ:
মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম,  মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি ৫০ হিজরী শরীফ উনার ১৭ই সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রবী‘উল আউওয়াল শরীফ) ইয়াওমুছ ছুলাছা’ শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি দুনিয়ার যমীনে ৬৪ বছর ৪ মাস ৪ দিন সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ:
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ সম্মানিত জান্নাতুল বাক্বী’ শরীফ উনার মধ্যে অবস্থিত। সুবহানাল্লাহ!

মালিকাতুল কায়িনাত, ক্বায়িদাতুল্লাহ ওয়া ক্বায়িদাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি ‘আলাল ‘আলামীন, আফদ্বলুন নাস ওয়ান নিসা’ বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লক্বব মুবারক

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
وَلِلّٰهِ الْاَسْـمَاءُ الْـحُسْنٰـى فَادْعُوْهُ بِـهَا.
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক উনার অনেক সুন্দর সুন্দর সম্মানিত নাম মুবারক তথা সম্মানিত লক্বব মুবারক রয়েছেন, তোমরা উনাকে সেই সম্মানিত নাম মুবারক তথা সম্মানিত লক্বব মুবারক দ্বারা উনাকে আহ্বান মুবারক করো।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত সূরা আ’রাফ শরীফ: সম্মানিত আয়াত শরীফ ১৮০)
মহান আল্লাহ পাক তিনি যেমন অসীম, ঠিক তেমনিভাবে উনার সম্মানিত লক্বব মুবারক উনাদের সংখ্যাও অসীম। সুবহানাল্লাহ! অনুরূপভাবে মহান আল্লাহ পাক উনার মাহবূব হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার পরিপূর্ণ ক্বায়িম মাক্বাম হওয়ার কারণে উনার সম্মানিত লক্বব মুবারক উনাদের সংখ্যাও অসংখ্য-অগণিত। সুবহানাল্লাহ! এক কথায় তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন; এছাড়া সমস্ত সম্মানিত লক্বব মুবারক উনার অধিকারী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ! ঠিক একইভাবে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সরাসরি সংশ্লিষ্ট এবং সম্পৃক্ত হওয়ার কারণে তথা উম্মুল মু‘মিনীন আলাইহাস সালাম হওয়ার কারণে উনার সম্মানিত লক্বব মুবারক উনার সংখ্যাও অসংখ্য-অগণিত। সুবহানাল্লাহ! তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া যত সম্মানিত লক্বব মুবারক রয়েছেন, সমস্ত সম্মানিত লক্বব মুবারক উনাদের অধিকারিণী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ!
 এখানে উনার কতিপয় সম্মানিত বরকতময় লক্বব মুবারক উল্লেখ করা হলো:
১. اُمُّ الْمُؤْمِنِيْنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ (উম্মুল মু’মিনীন আলাইহাস সালাম) একমাত্র যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মাহবূব হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারাসহ সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
২. اُمُّ الْمُؤْمِنِيْنَ اَلثَّامِنَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ (উম্মুল মু‘মিনীন আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম) সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নেয়ার মুবারক ধারাবাহিকক্রম অনুযায়ী উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন ‘আছ ছামিনাহ্ তথা অষ্টম’। এ জন্য উনাকে ‘উম্মুল মু’মিনীন আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম’ বলা হয়। সুবহানাল্লাহ!
৩. اَهْلُ بَيْتِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ(আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!
৪. سَيِّدَةُ النِّسَاءِ عَلـٰى الْعَالَمِيْنَ (সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন) সারা কায়িনাতে যত মহিলা রয়েছেন উনাদের প্রত্যেকের সাইয়্যিদাহ। সুবহানাল্লাহ!
৫. سَيِّدَةُ نِسَاءِ اَهْلِ الْجَنَّةِ (সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ) জান্নাতবাসী সমস্ত মহিলাগণ উনাদের সাইয়্যিদাহ। সুবহানাল্লাহ!
৬. اٰيَةُ اللهِ (আয়াতুল্লাহ)- মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত নিদর্শন মুবারক।
৭. اَلْبُشْرٰى (আল বুশরা)- সম্মানিত সুসংবাদ মুবারক, সম্মানিত সুসংবাদ মুবারক দানকারিণী।
৮. جَامِعةُ النِّعْمَةِ وَالنِّسْبَةِ (জামি‘য়াতুন নি’মাতি ওয়ান নিসবাহ)- সমস্ত সম্মানিত নি‘য়ামত মুবারক ও নিবসত মুবারক উনাদের মালিকাহ, সমস্ত সম্মানিত নি‘য়ামত মুবারক ও নিবসত মুবারক দানকারিণী।
৯. اَلْـحَافِظَةُ (আল হাফিযাহ)- সর্বোত্তম হিফাযতকারিণী, সর্বশ্রেষ্ঠ সংরক্ষণকারিণী।
১০. اَلْـحَامِدَةُ (আল হামিদাহ)- সর্বোত্তম প্রশংসাকারিণী।
১১. حَبِيْبَةُ اللهِ (হাবীবাতুল্লাহ)- মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীবাহ।
১২. اَلْـحَلِيْمَةُ (আল হালীমাহ)- পরম ধৈর্যশীলা, মহাসহনশীলা।
১৩. اَلْـخَالِصَةُ (আল খ¦ালিছাহ)- খালিছাহ, পূত-পবিত্রা, পবিত্রতা দানকারিণী।
১৪. اَلْـخَبِيْرَةُ (আল খ¦বীরাহ)- মহাবিচক্ষণা।
১৫. اَلْـخَلِيْلَةُ (আল খ¦লীলাহ)- আখাছ্ছুল খাছ মাহবূবাহ।
১৬. خَلِيْلَةُ الرَّحْـمٰنِ (খ¦লীলাতুর রহমান)- মহান আল্লাহ উনার আখাছ্ছুল খাছ মাহবূবাহ।
১৭. اَلذَّاكِرَةُ (আয যাকিরাহ)- সর্বোত্তম যিকিরকারিণী।
১৮. ذِكْرُ اللهِ (যিক্রুল্লাহ)- মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত যিকির মুবারক। অর্থাৎ উম্মুল মু‘মিনীন আস সাবি‘য়াহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত আত্বওয়ালু ইয়াদান আলাইহাস সালাম তিনি নিজেই যিকরুল্লাহ। সুবহানাল্লাহ!
১৯. ذَاتُ الْـخلق العظيم (যাতুল খুলুক্বিল আযীম)- সর্বোত্তম সুমহান চরিত্র মুবারক উনার অধিকারিণী।
২০. ذَاتُ السَّكِيْنَةِ (যাতুস সাকীনাহ)- সাকীনাহ, শান্তি, প্রশান্তি, ইতমিনান মুবারক উনাদের মালিকাহ।
২১. ذَاتُ الْعِزَّةِ (যাতুল ‘ইযযাহ)- সম্মানিত ইজ্জত মুবারক উনার মালিকাহ।
২২. ذَاتُ الْفَضْلِ (যাতুল ফাদ্বল)- সম্মানিত ফযল মুবারক উনার মালিকাহ।
২৩. اَلرَّافِعَةُ (আর রাফি‘য়াহ)- সুউচ্চ মর্যাদা-মর্তবা মুবারক উনার অধিকারিণী এবং সুউচ্চ মর্যাদা-মর্তবা মুবারক দানকারিণী।
২৪. رَحْـمَةُ الْاُمَّةِ (রহমাতুল উম্মাহ)- সমস্ত উম্মতের জন্য সম্মানিত রহমত মুবারক।
২৫. لِّـلْـعَـالَـمِيْنَ ٌ رَحْـمَة (রহমাতুল্লিল ‘আলামীন)- সমস্ত আলমের জন্য সম্মানিত রহমত মুবারক।
২৬. رَفِيْقَةُ اللهِ (রফীক্বতুল্লাহ)- মহান আল্লাহ পাক উনার রফীক্বাহ, হাবীবাহ।
২৭. رَفِيْعَةُ الدَّرَجَاتِ (রফী‘য়াতুদ দারাজাত)- সকল সুউচ্চ সুমহান মর্যাদা-মর্তাবা ও মাক্বামাত মুবারক উনাদের মালিকাহ।
২৮. اَلزَّاهِدَةُ (আয যাহিদাহ)- দুনিয়াবিরাগিণী, মহান আল্লাহ পাক উনার দিকে দায়িমীভাবে রুজু, মহান আল্লাহ পাক উনার দিকে দায়িমীভাবে রুজু করানে ওয়ালা।
২৯. اَلـزَّكِـيَّةُ (আঝ ঝাকিয়্যাহ)- পূত-পবিত্রা, মহাবিচক্ষণা।
৩০. اَلسَّابِقَةُ بِالْـخَيْرَاتِ (আস সাবিক্বাতু বিল খইরাত)- খইর, কল্যাণ, ভালাই ইত্যাদি সর্ববিষয়ে অগ্রগামিণী।
৩১. اَلسَّاجِدَةُ (আস সাজিদাহ)- সর্বোত্তম সিজদাকারিণী।
৩২. اَلسَّخِىَّةُ(আস সাখি¦য়্যাহ)- মহাদানশীলা।
৩৩. سَعِيْدَةُ  (আস সাঈদাহ)- সর্বশ্রেষ্ঠ সুখী, সর্বশ্রেষ্ঠ নেকবখ্ত, সৌভাগ্যবান।
৩৪. اَلسَّلَامُ (আস সালাম)- সর্বশ্রেষ্ঠ শান্তিদাতা।
৩৫. اَلسَيِّدَةُ (আস সাইয়্যিদাহ)- সাইয়্যিদাহ, সর্বশ্রেষ্ঠা।
৩৬. سَيِّدَةُ الثَّقَلَيْنِ (সাইয়্যিদাতুছ ছাক্বলাইন)- দুই প্রধান সৃষ্টিজীব- জিন ও ইনসানের সাইয়্যিদাহ।
৩৭. سَـيِّـدَةُ الْكَوْنَيْنِ (সাইয়্যিদাতুল কাওনাঈন)- দুই জগতের সাইয়্যিদাহ।
৩৮. اَلشَّافِعَةُ (আশ শাফি‘য়াহ)- সর্বোত্তম সুপারিশকারিণী, সর্বশ্রেষ্ঠ শাফা‘য়াতকারিণী।
৩৯. اَلشَّافِـيَةُ (আশ শাফিয়াহ)- শিফাদানকারিণী, আরোগ্যদানকারিণী, সমস্ত উম্মতের জন্য যাহিরী-বাতিনী আরোগ্যদানকারিণী।
৪০. اَلشَّاكِرَةُ (আশ শাকিরাহ)- যথার্থ পুরস্কারদানকারিণী, যথাযথ শুকরিয়া আদায়কারিণী।
৪১. اَلشَّاهِدَةُ (আশ শাহিদাহ)- উপস্থিত, হাযির-নাযির, সাক্ষ্যদানকারিণী।
৪২. اَلشَّرِيْفَةُ (আশ শারীফাহ)- সর্বোচ্চ শরীফ, সর্বোচ্চ মর্যাদাবান, সর্বোচ্চ সম্ভ্রান্তশীলা।
৪৩. اَلصَّابِرَةُ (আছ ছাবিরহ)- চরম ধৈর্যশীলা।
৪৪. اَلصَّاحِبَةُ (আছ ছাহিবাহ)- মালিকাহ, অধিকারিণী।
৪৫. صَاحِبَةُ الشَّفَاعَةِ (ছাহিবাতুশ শাফা‘আহ)- সম্মানিত শাফায়াত মুবারক উনার মালিকাহ।
৪৬. صَاحِبَةُ الْفَضِيْلَةِ (ছাহিবাতুল ফাদ্বীলাহ)- সম্মানিত ফযীলত মুবারক উনার মালিকাহ।
৪৭. صَاحِبَةُ الْـخَيْرِ (ছাহিবাতুল খইর)- সমস্ত কল্যাণ মুবারক উনাদের মালিকাহ।
৪৮. صَاحِبَةُ الْكَوْثَرِ (ছাহিবাতুল কাওছার)- সম্মানিত কাওছার মুবারক উনার মালিকাহ, সম্মানিত খাইরে কাছীর মুবারক তথা সমস্ত সম্মানিত ভালাই বা কল্যাণ মুবারক উনাদের মালিকাহ।
৪৯. صَاحِبَةُ الدَّرَجَةِ الْعَالِيَةِ الرَّفِيْعَةِ (ছাহিবাতুদ দারাজাতিল ‘আলিয়াতির রফী‘য়াহ) সুউচ্চ সুমহান সম্মানিত দারাজাত তথা সম্মান ও মাক্বামাত মুবারক উনার মালিকাহ।
৫০. اَلطَّاهِرَةُ (আত্ব ত্বাহিরাহ)- পূত-পবিত্রা, পূত-পবিত্রতাদানকারিণী।
৫১. اَلظَّاهِرَةُ (আয যাহিরাহ)- অত্যন্ত সুস্পষ্ট, উজ্জ্বল, সুউচ্চ মর্যাদাবান, সর্বশ্রেষ্ঠ বিজয়িনী।
৫২. اَلْعَادِلَةُ (আল ‘আদিলাহ)- চরম ন্যায়বিচারকারিণী, চরম ন্যায়পরায়ণা।
৫৩. اَلْعَارِفَةُ (আল ‘আরিফাহ)- পরিচিত, অবহিত, জ্ঞাত। অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার হাক্বীক্বী সম্মানিত পরিচয় মুবারক লাভকারিণী, মহান আল্লাহ পাক উনার হাক্বীক্বী সম্মানিত পরিচয় মুবারক দানকারিণী।
৫৪. اَلْعَافِـيَةُ (আল ‘আফিয়াহ)- মাফকারিণী, ক্ষমাকারিণী।
৫৫. اَلْعَالِـمَةُ (আল ‘আলিমাহ)- ‘আলিমাহ, মহাজ্ঞানী।
৫৬. اَلْعَلِيْمَةُ (আল ‘আলীমাহ)- ‘আলীমাহ, সর্বজ্ঞাত।
৫৭. اَلْعَزِيْزَةُ (আল ‘আযীযাহ)- মাহবূবাহ, মহাসম্মানিতা, বেমেছাল মর্যাদা-মর্তবা ও প্রভাব-প্রতিপত্তি মুবারক উনার অধিকারিণী, মালিকাহ।
৫৮. اَلْعَلِـيَّةُ (আল ‘আলিয়্যাহ)- সুউচ্চ, মহামর্যাদাবান, মহাসম্মানিতা।
৫৯. اَلْغَالِبَةُ (আল গ¦ালিবাহ)- গ¦ালিবাহ, মহাবিজয়িনী, সর্বাধিক প্রাধান্য বিস্তারকারিণী।
৬০. اَلْغَنِيَّةُ (আল গ¦নিয়্যাহ)- মহাসম্পদশালিনী, মহাধনী, অমুখাপেক্ষী, বেনিয়াজ।
৬১. اَلْفَاضِلَةُ (আল ফাদ্বিলাহ)- মহাসম্মানিতা, সুউচ্চ মর্যাদা-মর্তবা মুবারক উনার অধিকারিণী, সর্বশ্রেষ্ঠা, সর্বসেরা।
৬২. اَلْفَائِقَةُ (আল ফায়িক্বাহ)- সর্বশ্রেষ্ঠা, অনন্যা।
৬৩. اَلْفَارِقَةُ (আল ফারিক্বাহ)- হক্ব ও নাহক্বের মাঝে পার্থক্যকারিণী।
৬৪. اَلْفَصِيْحَةُ (আল ফাছীহাহ)- সুভাষিণী, বিশুদ্ধভাষিণী।
৬৫. اَلْقَاسِمَةُ (আল ক্বাসিমাহ)- বণ্টনকারিণী।
৬৬. اَلْقَائِدَةُ (আল ক্বায়িদাহ)- সাইয়্যিদাহ, মহানপরিচালিকা, সম্মানিত হিদায়াত উনার পথে পরিচালনাকারিণী।
৬৭. قَائِدَةُ الْـخَيْرِ (ক্বায়িদাতুল খইর)- কল্যাণের দিকে পরিচালনাকারিণী, যিনি সবাইকে কল্যাণের দিকে নিয়ে যান।
৬৮. قَائِدَةُ اللهِ (ক্বায়িদাতু ইলাল্লাহ)- মহান আল্লাহ পাক উনার  দিকে পরিচালনাকারিণী, যিনি সবাইকে মহান আল্লাহ পাক উনার দিকে নিয়ে যান।
৬৯. قَائِدَةُ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ (ক্বায়িদাতু ইলা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দিকে পরিচালনাকারিণী, যিনি সবাইকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দিকে নিয়ে যান।
৭০. اَلْقَرِيْبَةُ (আল ক্বরীবাহ)- চিরনিকটবর্তী, অতি নিকটস্থ, অতি ঘনিষ্ঠ।
৭১. اَلْقَوِيَّةُ (আল ক্বওইয়াহ)- সর্বশক্তিমান, মহাশক্তিধর।
৭২. اَلْكَامِلَةُ (আল কামিলাহ)- পরিপূর্ণ, পরিপূর্ণতাদানকারিণী।
৭৩. اَلْكَرِيْـمَةُ (আল কারীমাহ)- মহাসম্মানিতা, মহামর্যাদাবান, মহাদানশীলা।
৭৪. اَلْمُؤْتَـمَنَةُ (আল মু’তামানাহ)- চির বিশ্বস্ত, সর্বশ্রেষ্ঠা আমানাতদার, আমানতের যথাযথ হিফাযতকারিণী।
৭৫. اَلْمَأْمُوْنَةُ (আল মা’মূনাহ)- নিরাপদ, চির বিশ্বস্ত, আমানদানকারী, নিরাপত্তাদানকারী।
৭৬. اَلْـمُؤْمِنَةُ (আল মু’মিনাহ) সর্বশ্রেষ্ঠা ঈমানদার, সর্বশ্রেষ্ঠা মু’মিনাহ, সম্মানিত ঈমান মুবারক দানকারিণী।
৭৭. مَأْوَى الْجِنِّ وَالْاِنْسِ (মা’ওয়াল জিন্নি ওয়াল ইন্স) জিন-ইনসানের আশ্রয়স্থল।
৭৮. اَلْمَاجِدَةُ (আল মাজিদাহ)- গৌরবময়ী, মহামর্যাদাবান, মহান, গৌরবান্বিত, মর্যাদাদানকারিণী।
৭৯. اَلْمُبَاركَةُ (আল মুবারিকাহ)- বরকতদানকারিণী, কল্যাণদানকারিণী।
৮০. اَلْمُبَارَكَةُ (আল মুবারকাহ)- বরকতময়, কল্যাণময়।
৮১. اَلْـمُبَشِّرَةُ  (আল মুবাশশিরাহ)- সুসংবাদদানকারিণী।
৮২. اَلْمُبَلِّغَةُ (আল মুবাল্লিগহ)- সম্মানিত দ্বীন উনার প্রতি আহ্বানকারিণী।
৮৩. اَلْمُتَبَسِّمَةُ (আল মুতাবাসসিমাহ)- হাস্যোজ্জ্বল, যিনি মুচকি হাসি মুবারক দেন।
৮৪. اَلْمُجَاهِدَةُ (আল মুজাহিদাহ)- মুজাহিদাহ, জেহাদকারিণী।
৮৫. اَلْمُجِيْبَةُ (আল মুজীবাহ)- জবাবদানকারিণী, সাড়াদানকারিণী, কবুলকারিণী।
৮৬. اَلْمَجِيْدَةُ  (আল মাজীদাহ)- মহামর্যাদাবান, মহীয়ান, গৌরবান্বিত, গৌরবময়ী।
৮৭. اَلْمَحْمُوْدَةُ (আল মাহমূদাহ)- চরম প্রশংসিত।
৮৮. اَلْمُخْتَارَةُ (আল মুখ¦তারহ)- মনোনীত, সর্বশ্রেষ্ঠা, শ্রেষ্ঠত্বদানকারিণী।
৮৯. اَلْمُخْتَصَّةُ  (আল মুখতাচ্ছাহ)- বিশেষ ব্যক্তিত্বা মুবারক, আখাছ্ছুল খাছ ব্যক্তিত্বা মুবারক।
৯০. اَلْـمَخْصُوْصَةُ بِالعِزَّةِ  (আল মাখ¦ছূছাতু বিল ‘ইজ্জাহ)- বিশেষ সম্মান-ইজ্জত মুবারক উনার অধিকারিণী, আখাছ্ছুল খাছ সম্মান-ইজ্জত, মর্যাদা-মর্তবা মুবারক উনাদের মালিকাহ।
৯১. اَلْـمُرْشِدَةُ (আল মুরশিদাহ)- সৎ পথ প্রদর্শনকারিণী, হিদায়াতদানকারিণী।
৯২. اَلْـمُزَكِّيَةُ (আল মুযাক্কিয়াহ)- তাযকিয়াদানকারিণী, পবিত্রতাদানকারিণী।
৯৩. اَلْـمُسْتَجِيْبَةُ  (আল মুস্তাজীবাহ)- সাড়াদানকারিণী, জবাবদানকারিণী।
৯৪. اَلْمُسْتَفِيْضَةُ (আল মুস্তাফীযাহ)- ফয়েযদানকারিণী।
৯৫. اَلْمُسْتَقِيْمَةُ (আল মুস্তাক্বীমাহ)- সরল, সঠিক, ইস্তিকামত রাখনে ওয়ালা।
৯৬. اَلْمَسْعُوْدَةُ (আল মাস‘ঊদাহ)- সৌভাগ্যশীলা, সর্বশ্রেষ্ঠা ভাগ্যবান, সৌভাগ্যদানকারিণী।
৯৭. اَلْمَشْهُوْدَةُ  (আল মাশহূদাহ)- উপস্থিত, হাযির-নাযির।
৯৮. اَلْـمُشَفَّعَةُ  (আল মুশাফ্ফা‘আহ)- যেই সুমহান ব্যক্তিত্বা মুবারক উনার সুপারিশ কবুল করা হয়।
৯৯. اَلْمُصْلِحَةُ (আল মুছলিহাহ)- ইছলাহদানকারিণী, সংশোধনকারিণী।
১০০. اَلْمُصَدِّقَةُ (আল মুছদ্দিক্বাহ)- সত্যায়নকারিণী।
১০১. مُطَهَّرٌ (আল মুত্বহ্হারহ)- পূত-পবিত্রা।
১০২. مُطَهِّرٌ (আল মুত্বহ্হিরহ্)- পূত-পবিত্রতাদানকারিণী।
১০৩. اَلْمَعْرُوْفَةُ (আল মা’রূফাহ)- পরিচিত, প্রসিদ্ধ, মশহূর।
১০৪. اَلْـمُعَزَّزَةُ (আল মু‘আয্যাযাহ)- মহাসম্মানিতা, মহামর্যাদাবান, সম্মান দানকারিণী, মর্যাদা দানকারিণী।
১০৫. اَلْمَعْشُوْقَةُ (আল মা’শূক্বাহ)- মা’শূক্বাহ, সকলের নিকট সর্বাধিক মাহবূবাহ।
১০৬. اَلْمُعَظَّمَةُ (আল মু’য়ায্যামাহ)- মহাসম্মানিতা, মহামর্যাদাবান, সম্মান দানকারিণী, মর্যাদা দানকারিণী।
১০৭. اَلْمُعَلِّمَةُ (আল মু‘য়াল্লিমাহ)- মু‘য়াল্লিমাহ, তা’লীমদানকারিণী।
১০৮. اَلْمُعِيْنَةُ (আল মু‘ঈনাহ)- সর্বশ্রেষ্ঠ সাহায্যকারিণী।
১০৯. اَلْـمُقَدِّسَةُ (আল মুক্বদ্দিসাহ)- উৎসর্গকারিণী, পবিত্রতাদানকারিণী।
১১০. اَلْـمُقَدَّسَةُ (আল মুক্বাদ্দাসাহ)- উৎসর্গকৃত, মহাপবিত্রা, পবিত্রতা দানকারিণী।
১১১. اَلْمُكَرَّمَةُ (আল মুর্কারমাহ)- মহাসম্মানিতা, সম্মান দানকারিণী।
১১২. اَلْمَالِكَةُ (আল মালিকাহ)- মালিকাহ, অধিকারিণী।
১১৩. مَالِكَةُ الْـجَنَّةِ (মালিকাতুল জান্নাহ)- সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার মালিকাহ।
১১৪. مَالِكَةُ الْكَائِنَاتِ (মালিকাতুল কায়িনাত)- সমস্ত কায়িনাতের মালিকাহ।
১১৫. مَالِكَةُ جَامِعِ النِعَمِ(মালিকাতু জামিয়িন নি‘য়াম)- সমস্ত সম্মানিত নি‘য়ামত মুবারক উনাদের মালিকাহ।
১১৬. اَلْـمُنْتَصِرَةُ (আল মুনতাছিরহ)- সর্বশ্রেষ্ঠ বিজয়িনী, মহাশক্তিধর।
১১৭. منّة الله (মিন্নাতুল্লাহ)- মহান আল্লাহ পক উনার সর্বশ্রেষ্ঠ অনুগ্রহ মুবারক।
১১৮. اَلْـمُنْذِرَةُ (আল মুনযিরহ)- ভীতিপ্রদর্শনকারিণী, সতর্ককারিণী।
১১৯. اَلْـمُنِيْبَةُ (আল মুনীবাহ)- মালিকাহ, মুনীবাহ, সমস্ত কায়িনাত যেই সুমহান ব্যক্তিত্বা মুবারক উনার গোলাম।
১২০. اَلْـمُغِيْثَةُ (আল মুগীছাহ)- সর্বশ্রেষ্ঠ সাহায্যকারিণী, ত্রাণকর্তা, উদ্ধারকারিণী।
১২১. اَلْـمُنِيْرَةُ (আল মুনীরহ)- আলোদানকারিণী, উজ্জ্বল, নূর দানকারিণী, হিদায়াত দানকারিণী, ফয়েযদানকারিণী, সম্মানিত রহমত মুবারক দানকারিণী।
১২২. اَلْمَوْعِظَةُ (আল মাও‘িয়য¦হ)- সর্বশ্রেষ্ঠ নছীহতকারিণী।
১২৩. اَلْمُهَذَّبَةُ (আল মুহায্যাবাহ)- পূত-পবিত্রা, মহাপবিত্রা, পবিত্রতা দানকারিণী।
১২৪. اَلنَّاصِحَةُ (আন নাছিহাহ)- সর্বশ্রেষ্ঠ নছীহতকারিণী, উপদেশদানকারিণী।
১২৫. اَلنَّاهِـيَةُ (আন নাহিয়াহ)- (সম্মানিত শরী‘য়াত উনার খিলাফ সমস্ত কাজে) নিষেধকারিণী, বারণকারিণী।
১২৬. اَلنِّعْمَةُ (আল নি’মাহ)- সর্বশ্রেষ্ঠ নি‘য়ামত মুবারক।
১২৭. نِعْمَةُ اللهِ (নি’মাতুল্লাহ)- মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে সর্বশ্রেষ্ঠ নি‘য়ামত মুবারক।
১২৮. اَلنَّقِيْبَةُ (আন নাক্বীবাহ)- সাইয়্যিদাহ।
১২৯. اَلنُّوْرُ (আন নূর)- নূর মুবারক।
১৩০. اَلنُّوْرُ الْمُكَرَّمَةُ (আন নূরুল মুকাররমাহ)- মহাসম্মানিত নূর মুবারক।
১৩১. اَلنُّوْرُ الْمُطَهَّرَةُ (আন নূরুল মুত্বহ্হারহ)- মহাপবিত্র নূর মুবারক।
১৩২. نُوْرُ اللهِ (নূরুল্লাহ)- মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত নূর মুবারক।
১৩৩. نُوْرُ الْكَائِنَات (নূরুল কায়িনাত)- সমস্ত কায়িনাতের জন্য নূর মুবারক, আলোকবর্তিকা।
১৩৪. اَلْـهَادِيَةُ (আল হাদিয়াহ)- সর্বশ্রেষ্ঠ হিদায়াতকারিণী।
১৩৫. هَدِيَّةُ اللهِ (হাদিয়্যাতুল্লাহ)- মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে মহাসম্মানিত হাদিয়া মুবারক, তোহফা মুবারক।
১৩৬. اَلْوَاسِعَةُ (আল ওয়াসি‘আহ)- সীমাহীন ইলম মুবারক উনার অধিকারিণী, মহাদানশীলা।
১৩৭. اَلْوَاعِظَةُ (আল ওয়া‘য়িযহ)- সর্বশ্রেষ্ঠ ওয়ায়েজ, নছীহতকারিণী, উপদেশদানকারিণী।
১৩৮. اَلْوَافِـيَةُ (আল ওয়াফীয়াহ)- পরিপূর্ণ, পরিপূর্ণতাদানকারিণী।
১৩৯. اَلْوَسِيْلَةُ (আল ওয়াসীলাহ)- সর্বশ্রেষ্ঠ ওয়াসীলাহ মুবারক, সর্বশ্রেষ্ঠ মাধ্যম মুবারক।
১৪০. اَلْوَهَّابَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ (আল ওহ্হাবাহ আলাইহাস সালাম)- সর্বশ্রেষ্ঠ দানশীল, সীমাহীন দানকারিণী। সুবহানাল্লাহ!
এছাড়াও অসংখ্য-অগণিত সম্মানিত লক্বব মুবারক উনাদের মালিকাহ হচ্ছেন উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!

*******************************************************************
৯. হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা একমাত্র মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত সমস্ত কায়িনাত থেকে বেনিয়ায, উনাদের সাথে কারো তুলনা করা যাবে না


মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
اِنَّـمَا يُرِيْدُ اللهُ لِيُذْهِبَ عَنْكُمُ الرِّجْسَ اَهْلَ الْبَيْتِ وَيُـطَـهِّـرَكُمْ تَطْهِيْرًا.
অর্থ: “হে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম! নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি চান আপনাদের থেকে সমস্ত প্রকার অপবিত্রতা দূর করে আপনাদেরকে পবিত্র করার মতো পবিত্র করতে। অর্থাৎ তিনি আপনাদেরকে পবিত্র করার মতো পবিত্র করেই সৃষ্টি মুবারক করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৩)
এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার তাফসীরে স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
هُمْ اَهْلُ بَيْتٍ طَهَّرَهُمُ اللهُ مِنَ السُّوْءِ وَاخْتَصَّهُمْ بِرَحْمَتِهٖ
অর্থ: “উনারা হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদেরকে সমস্ত প্রকার অপবিত্রতা ও পাপ থেকে পূত-পবিত্র রেখেছেন এবং উনার সম্মানিত রহমত মুবারক দ্বারা খাছ করে নিয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন,
فَاَنَا وَاَهْلُ بَيْتِىْ مُطَهَّرُوْنَ مِنَ الذُّنُوْبِ.
অর্থ: “আমি এবং আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম আমরা সকলেই যুনূব তথা সমস্ত প্রকার ছগীরা-কবীরা এবং যাবতীয় অপছন্দনীয় কাজ থেকে পূত-পবিত্র।” সুবহানাল্লাহ! (দালায়িলুন নুবুওওয়াহ লিল বায়হাক্বী, শিফা শরীফ ১/৩২৫, সীরাতে হালবিয়্যাহ ১/৪২, আল মা’রিফাতু ওয়াত তারীখ ১/৪৯৮, খছাইছুল কুবরা ১/৬৬, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১/২৩৫, দুররে মানছূর লিস সুয়ূত্বী ৬/৬০৬, ইবনে আবী হাতিম ৯/৩১৩৩ ইত্যাদি)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন,
نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ طَهَّرَهُمُ اللهُ مِنْ شَجَرَةِ النُّبُوَّةِ وَمَوْضِعِ الرِّسَالَـةِ وَمُـخْتَلِفِ الْمَلَائِكَةِ وَبَيْتِ الرَّحْمَةِ وَمَعْدِنِ الْعِلْمِ.
অর্থ: “আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে (আমাদেরকে) সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক উনার বৃক্ষ, সম্মানিত রিসালাত মুবারক উনার স্থান, বিভিন্ন ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের, উনাদের দ্বারা সম্মানিত খিদমত মুবারক, সম্মানিত রহমত মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারক উনার খনি মুবারক (ইত্যাদি সমস্ত কিছু) থেকে পবিত্র রেখেছেন, ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী) করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে দুররে মানছূর ৬/৬০৬, ইবনে আবী হাতিম ৯/৩১৩৩)
ইমামুল মুহাদ্দিছীন মিনাল আউওয়ালিন ইলাল আখিরীন, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “আলোচ্য সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে- اَهْلُ بَيْتٍ نَـحْنُ (আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম) বলেÑ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে উনার নিজের অন্তর্ভুক্ত করে নিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! আর طَهَّرَهُمُ اللهُ - মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে পবিত্র করেছেন। সুবহানাল্লাহ! অর্থ হলো- মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে ছমাদ তথা বেনিয়ায করেছেন। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা একমাত্র মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূরপাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের মুহতাজ ও উনাদের সম্মানার্থে উনারা সম্মানিত এবং উনাদের প্রতিই উনারা দায়েমীভাবে রুজু। সুবহানাল্লাহ! ফলে উনারা সমস্ত কিছু থেকেই বেনিয়াজ। সুবহানাল্লাহ! কাজেই সম্মানিত নুবুওয়াত মুবারক, সম্মানিত রিসালাত মুবারক, বিভিন্ন ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের, উনাদের দ্বারা সম্মানিত খিদমত মুবারক, সম্মানিত রহমত মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারক উনার খনি মুবারক ইত্যাদি বরকতময় নিয়ামত মুবারক উনাদের প্রতি রুজু হওয়ার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের কোন সুযোগ নেই। অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা সমস্ত কিছু থেকে পবিত্র, ছমাদ তথা বেনিয়ায। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের কারণেই সম্মানিত নুবুওয়াত মুবারক, সম্মানিত রিসালাত মুবারক, সমস্ত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা, সম্মানিত রহমত মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারকসহ সমস্ত কিছুই ফযীলতপ্রাপ্ত হয়েছেন, সম্মানিত হয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
اَللهُ الصَّمَدُ
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি ছমাদ তথা  বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী)।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত সূরা ইখলাছ শরীফ : সম্মানিত আয়াত শরীফ ২)
ইমামুল মুফাসসিরীন মিনাল আউওয়ালিন ইলাল আখিরীন, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি যেমন সমস্ত মাখলূকাত থেকে, সমস্ত কিছু থেকে ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী)। সুবহানাল্লাহ! ঠিক তেমনিভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একমাত্র যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত সমস্ত মাখলূকাত থেকে, সমস্ত কিছু থেকে ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী)। সুবহানাল্লাহ! আর ঠিক একইভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত সমস্ত কায়িনাত থেকে, সমস্ত কিছু থেকে ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী)। সুবহানাল্লাহ! উনারা সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক, সম্মানিত রিসালাত মুবারক, বিভিন্ন ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের, উনাদের দ্বারা সম্মানিত খিদমত মুবারক, সম্মানিত রহমত মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলম উনার খনি মুবারক ইত্যাদি সমস্ত কিছু থেকে পবিত্র, ছমাদ তথা বেনিয়ায। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! উনাদের শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযুর্গী-সম্মান মুবারক এক কথায় উনারা শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন। এছাড়া যত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক রয়েছেন, সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারী হচ্ছেন উনারা। সুবহানাল্লাহ! উনারা একমাত্র মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের মুহতাজ। এছাড়া কায়িনাতের অন্য কারো মুহতাজ নন; বরং কায়িনাতের সকলেই উনাদের মুহতাজ। সুবহানাল্লাহ! মূলত সমগ্র সৃষ্টি জগতের মাঝে একমাত্র নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পরেই উনাদের শ্রেষ্ঠত্ব মুবারক, ফযীলত মুবারক। সুবহানাল্লাহ!
তাহলে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত পবিত্রতা মুবারক, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল, তা এখান থেকে স্পষ্ট হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ! আর সেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে আখাছ্ছুল খাছ বিশেষ ব্যক্তিত্বা মুবারকই হচ্ছেন হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা। সুবহানাল্লাহ! তাহলে উনাদের সম্মানিত পবিত্রতা মুবারক, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা-কল্পনার উর্ধ্বে। যা কস্মিনকালেও ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। সুবহানাল্লাহ! কাজেই, উনাদের সাথে সৃষ্টি জগতের কারোই তুলনা করা যাবে না। সুবহানাল্লাহ! এ সম্পর্কে সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ لَّا يُقَاسُ بِنَا اَحَدٌ.
অর্থ: “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। আমাদের সাথে অন্য কারো ক্বিয়াস বা তুলনা করা যাবে না।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! (দায়লামী ৪/২৮৩, জামি‘উল আহাদীছ ২২/২১৯, কানযুল উম্মাল ১২/১০৪, জাম‘উল জাওয়ামি’ ১/২৪৯৫০, যাখায়েরুল ‘উক্ববাহ ফী মানাক্বিবে যাওইল কুরবা লিমুহিব্বে ত্ববারী ১/১৭, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৭ ইত্যাদি)