ইলমে গইব হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নবুয়তের অন্যতম দলীল ।
Image result for ইলমে গাইবইলমে গইব হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নবুয়তের অন্যতম দলীল ।
১. হযরত আমর ইবনে আখতাব রাদ্বিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু হতে বর্নিত , তিনি বলেন , হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদিন আমাদেরকে নিয়ে ফজরের নামাজ পড়লেন । অতঃপর মিম্বরে আরোহন করলেন এবং আমাদের উদ্দেশে দীর্ঘ বক্তব্য প্রদান করলেন ; এমন কি যোহরের নামায পড়ালেন ।অতঃপর আবারো আরোহন করলেন মিম্বরে , আর বক্তব্য দেওয়া শুরু করলেন ,এমন কি আসরের নামাযের সময় উপস্থিত হল । অতঃপর মিম্বরে হতে নেমে আসরও পড়লেন । পুনরায় মিম্বরে আরোহন করে বক্তব্য দিতে দিতএ সুর্য অস্তমিত হয়ে গেল । সে দিন হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অতীতে যা কিছু এবং ভবিষ্যতে যা কিছু হবে সকল বিষয়ে আমাদেরকে সংবাদ দিয়েছেন । আমাদের মধ্যে যাঁদের স্মরণশক্তি অধিক তাঁরা সেসব (অদৃশ্য) সংবাদ বেশী মনে রাখতে পেরেছেন ।

( সুত্র : বুখারী শরীফ হাদিস নম্বর ৬২৩০ কিতাবুল কদর , মুসলিম শরিফ হাদিস নম্বর ২৮৯১ কিতাবুল ফিতান , তোরমিযী শরীফ হাদিস নম্বর ২১৯১ কিতাবুল ফিতান , আবু দাউদ শরীফ হাদিস নম্বর ৪২৮ কিতাবুল ফিতাম , মিসকাতুল মাসাবিহ : কিটাবুল ফিটাম ৪৬১ পৃষ্ঠা )

২.পবিত্র ক্বোরআনের ভাষায় বলা যায় - নবীপাক সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলায়হি ওয়া সাল্লাম-এর জন্য মহান আল্লাহ অজানা কিছুই রাখেন নি ; হোকনা তা অতীত কিংবা ভবিষ্যত । কিয়ামত পরবর্তি বেহেশত-দোযখের সংবাদ পর্যন্ত যেখানে লুকায়ে থাকতে পারেনি ।তাই তো তিনি উপস্থিত আনেক লোকের মনের খবর বলে দিয়েছেন , মুনাফিক্বেদের অন্তরে আবৃত অন্ধকার কুঠুরিতে লালিত কপটতা প্রকাশ করে মসজিদ থেকে তাদের অনেককে বের করে দিয়েছেন । এমন কি অনেক সাহাবীর আবেদন পরিপ্রেক্ষিতে তাদের বংশ তালিকা নিখুঁত ভাবে বলে দিয়েছেন এ গুলো কি প্রমান করে না নবীপাকের ইলমে গায়েব বিতর্কের উর্ধ্ধে একটি স্বীকৃত বিষয় ?

`৩.হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বাল্যবন্ধু নয় কেবল সারাজীবনের একান্ত সঙ্গী ইসলামের প্রথম খলিফা এবং নবীগনের পর যিনি শ্রেষ্ট মানুষ , সিদ্দিকে আকবর হযরত আবু বকর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ইসলাম গ্রহনের প্রক্কালে নবী করীমের কাছে তাঁর নুবুয়তের পক্ষে দলিল কি আছে জানতে চাইলে নবী করীম উত্তর দিতে গিয়ে ভ্রু কুঁচকে ফেলেন নি বরং দু'শ ভাগ দৃঢ়প্রত্যয় নিয়ে বলে দিয়েছিলেন কেন গত রাতে তুমি যে স্বপ্ন দেখেছ , আকাশের চন্দ্র-সুর্য তোমার কোলে এসে হাজির । আর সিরিয়া যাত্রাপথে সেই স্বপ্নের ব্যাখ্যাকারী তোমাকে যা কিছু বলেছে তাইতো আমার নুবুয়তের পক্ষে দলিল ।
এমন আশ্চর্যজনক তথ্যপ্রদানের অবস্থ হচ্ছে সিদ্দিক-ই-আকবরের স্তম্ভিত ! তিনি শতভাগ নিশ্চিত হলেন যে , এই অদৃশ্যজ্ঞানের সংবাদদাতা (নবী) কষ্মিণকালেও মিথ্যুক হতে পরেন না ।
৪.তদ্রুপ হযরত আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহুর কথা শোনা যাক । বদরের যুদ্ধের বন্দিদের কে মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ হলে অন্য বন্দীরা যথারীতি মুক্তিপণ আদায়ে ব্যস্ত । এ দিকে চাচা হযরত আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ও ঐ যুদ্ধবন্দীদের একজন । তিনি হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কাছে এসে আবেদন করলেন ইয়া হাবিবাল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ! আমি তো গরিব মানুষ ! মুক্তিপন দেয়ার মত আমার কাছে কোন সম্পদ নেই ।উত্তরে হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন " কেন চাচা ! আপনি যুদ্ধে আসার পুর্বে আমার চাচীর কাছে যে স্বর্নালন্কার লুকিয়ে রেখে এসেছেন সে গুলো কোথায় ? হযরত আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহূর সে গোপন সংবাদ তো দুনিয়ার বুকে অন্য কেউ জানার কথা নয় ! কিন্তূ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কিভাবে সুস্পস্টভাবে বলে দিলেন । তা রীতিমত বিষ্ময়ের ! না! এ ধরনের অদৃশ্য সংবাদদাতা কোনদিন মিথ্যুক হতে পারেন না । তাঁর কপালও চমকে উঠল । হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাতে নিজেকে সঁ'পে দিয়ে বলে উঠলেন হে আল্লাহর রাসুল ! আমাকে ইসলামের কালেমা শরীফ পড়িয়ে মুসলমান বানীয়ে দিন । আমি এতদিন ছিলাম গভীর অন্ধকারে নিমজ্জিত। এবার আলোতে আসতে চাই । নবীজি তাঁকে কালেমা পড়িয়ে নিজ হাতে বায়াত করে মুসলমান বানালেন । এ ভাবে একজন জাহান্নামী মুহুর্তে বেহেশতী হয়ে গেলেন । শুধু কি তাই ? নবীর পরশে শ্রেষ্ট সোনার মানুষে রুপান্তরিত হলেন ।
এ ভাবে হাজারো দৃষ্টান্ত রয়েছে যদ্বারা স্পস্ট প্রমাণিত হয় -মহান আল্লাহ তাঁর প্রিয় হাবীব কে ইলমে গায়েব দান করেছেন ।
এখন আরো কয়েকটি সহিহ হাদীসের উদ্ধৃতি পেশ করব যাতে সহীহ হাদীস ছাড়া অন্য কিছূ মানিনা বলে যারা গলার পানি শুকিয়ে ফেলে তারা বিষয়েটি শজে বুঝতে পেরে হিদায়াত লাভ করে ।

৫.হযরত ওমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত , তিনি বলেন একদা হুজুর নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালাম আমাদের সামনে দন্ডায়মান হলেন অতঃপর সৃষ্টিজগতের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তথা বেহেশত বাসীরা বেহেশতে এবং দোযখনাসীরা দোযখে প্রবেশ করা পর্যন্ত সবকিছু আমাদের সামনে বলে দিলেন । আমাদের মধ্যে যারা মুখস্ত রাখতে পেরেছে তারা মুখস্ত রেখেছে ; আর যারা ভুলে যাবার তারা ভুলে গেছে ।
[ বুখারী : হাদীস নং ৩০২০ : কিতাবু বাডয়িল খালক্ব ]

৬.হযরত হুযাইফা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্নিত । তিনি বলেন রাসুলে পাক সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের সামনে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে বক্তৃতা করলেন- সে দিন থেকে ক্বিয়ামত পর্যন্ত যা কিছু ঘটবে টার কোন বিষয়েই তাঁর বক্তব্যে বাদ দেননি । শ্রোতাদের মধ্যে যে মুখস্থ রাখার সে মুখস্ত রেখেছে আর যে ভুলে যাবা সে ভুলে গেছে ।
( বুখারী শরীফ হাদীস নং ৬২৩০ কিতাবুল কদর । মুসলিম শরীফ হা:নং২৮৯১ কিতাবুল ফিতন )

৭.হযরত আনাস বিন মালিক রাদ্বিয়াল্লাহু আহু হতে াপর এক হাদীস শরিফে দেখা যায় । তিনি বলেন একদা নবীপাক সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের মাঝে তাশরীফ আনলেন তখন সয়র্য পশ্চিমাকাশে দিকে ঝুঁকে পড়েছিল ( অর্থাৎ যোহরের নামাযের সময় হয়ে গিয়েছিল ) অতঃপর নবী করীম যোহরের মানায পড়লেন আর সালাম ফিরানোর পর মিম্বরে আরোহন করে ক্বিয়ামতের আলোচনা রাখলেন এবং ক্বিয়ামতের পুর্বেকার কতিপয় বড় বড় ঘটনা বর্ননা দিলেন আর উপস্থিত সাহাবিদেরকে সম্বোধন করে বললেন , খোদার কসম তোমরা আমার কাছে যা কিছু জানতে চাইবে আমি এই মজলিসেই সব প্রশ্নের উত্তর দেব ।
হযরত আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন হুজুরের বানীর এমন দৃঢ়তা দেখে আনসারী সাহাবাদের মধ্যে আনন্দের কান্নার রোল বয়ে গেলো । আর নবীপাক বারবার বলে যাচ্ছেন - তোমরা আমাকে প্রশ্ন কর , প্রশ্ন কর । অতঃপর এক ব্যক্তি দাড়িয়ে প্রশ্ন করল - হে আল্লাহর রাসুল ! পরকালে আমার ঠিকানা কোথায় হবে ? নবীপাকে বললেন জাহান্নাম । অথপর আবদুল্লাহ ইবনে হুযাফা বললেন -ইয়া রাসুল লাল্লাহ ! আমার পিতা কে ? নবী করীম বললেন - তোমার পিতা হুযাফা । নবীপাক আবার ও জোর তাগিদ দিয়ে বললেন , তোমরা প্রশ্ন কর , প্রশ্ন কর ।
অথপর ওমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু নবী করীম বরাবর সামনে গিয়ে বসলেন আর বললেন -আমরা সন্তস্ট আল্লাহ কে রব হিসাবে পেয়ে , ইসলাম কে ড্বীন হিসাবে আর মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে রাসুল হিসেবে পেয়ে । তিনি এসব কথা বলার সময় নবী করীম চুপ রইলেন । অতঃপর বললেন -সেই সত্তার কসম ! যার হাতে আমার প্রান , আমার এ দেয়ালের সামনে এই মাত্র বেহেসত ও দোযখ হাজির করা হয়েছে , যখন আমি নামায পড়ছিলাম , আজকের মত কোন ভাল-মন্দকেও দেখিনি ।
(সুত্র বুখারী শরীফ হাদীস নং৬৮৬৪ কিতাবুল ই'তিসাম , বিল কিতাবে ওয়াস সুন্নাহ :, মুসলিম শরীফ হাদিস নং ২৩৫৯ )
এ ভাবে অসংখ্য হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় রাসুলে আকরম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়া ষাল্লাম ইলমে গায়েবের অধিকারী ছিলেন । অবশ্যই তা আল্লাহ প্রদত্ত ।

৮.আর সত্তাগত আলিমুল গায়েব হলেন একমাত্র আল্লাহ । আর আল্লাহর রাসুলের ইলমে গায়েব আল্লাহ্‌ প্রদত্ত । যেমন এ পসঙ্গে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে -
'' মা কানাল্লাহু লি উতলিয়াকুম আলাল গাইবে ওয়া কিন নাল্লাহা ইজতাবিয়ু মির রুসুলিহু মাইয়া সায়ু ''
অর্থাৎ হে সাধারাণ লোকগন ! আল্লাহ তা'আলার শান নয় যে , তিনি তোমাদেরকে ইলমে গায়েব দান করবেন , তবে হ্যাঁ রাসুলগনের মধ্য হতে তিনি যাকে চান তাকে অদৃশ্যজ্ঞানের জন্য মনোনীত করেন ।( সুরা আলইমরান ১৭৯)
রসুলগণের মধ্য হতে যদি আল্লাহ পাক কাউকে নির্বাচিত করেন। তাহলে সর্বপ্রথমে কাকে নির্বাচিত করবেন টা সহজেই অনুমেয় ।
আরেক জায়গায় ইরশাদ হয়েছে ;
তিনি স্বীয় গায়েবের বিষয়ে কাউকে ক্ষমতাবান করেন না । কিন্তূ রাসুলদের মধ্য যার উপর তিনি সন্তষ্ট হন ( তাকেই ক্ষমতা বান করেন )
(সুরা জিন- আয়াত ২৬-২৭ )

৯.আল্লাহ তায়ালা ইরশদ করেছেন ' আল্লামাকা মা লাম তাকুন তা'আলাম " আর্থাৎ ' তিনি আপনাকে এমন জিনিস শিক্ষা দিয়েছেন যা আপনি জানতেন না "
( সুরা নিসা আয়াত ১১৩)
এ আয়াতে ব্যাখা করতে গিয়ে প্রসিদ্ধ গ্রন্থ জালালাইন শরীফে বলা হয়েছে " আউযয়ু মিনাল আহকামে ওয়াল গাইব '' অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালা তাঁর রাসুল সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহিস সালাম কে শরীয়তের যাবতিয় হূকুম ও গায়েব সম্পর্কে শিক্ষা দিয়েছেন ।
উপরে বর্নিত আয়াত এবনহ জালালাইন শরীফের ব্যাখ্যা দ্বারা বুঝা গেল
আল্লাহ রাব্বুল আলামিনন তানন হাবীব সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালাম কে ইলমে গায়েব জানাইয়াছেন । তাই আমরা বলি রাসুল সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালাম ইলমে গায়েব জানেন । অসংখ্য হাদিসে মাধ্যমে জানা যায় যে রাসুল সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালাম স্পস্ট বলে দিয়েছেন -কে কখন মৃত্যুবরন করবে ? কোন জায়গায় কে মারা যাবে এবং কার গর্ভে ছেলে সন্তান অথবা মেয়ে সন্তান রয়েছে ইত্যাদি।
যদি রাসুল সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালাম এ সব বিষয়ে গয়েব না জানতেন , তাহলে সম্স্ত গয়েবের সংবাদ কি ভাবে দিলেন ?
৯.তাফসীরে সাভার ৪র্থ খন্ডে ২৭৫ পৃষ্টা রয়েছে
"ইনণাহু সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালাম লাম ইয়াখ রুজু মিনাদ দুনিয়া হাত্বা আ'লামাহু ল্লাহু বি জামইহি মুগি বাতিদ দুনিয়া ওয়াল আখেরাহ "
অর্থাৎ আল্লাহর দুনিয়া এবং আখেরাতের সমস্ত গায়েব না জানানো পর্যন্ত রাসুল সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালাম দুনিয়া থেকে ইনতেকাল করেন নি ।
তাফসিরে খায়েন ৪র্থ পারায় রয়েছে ;
" মা কানা ল্লাহু লি ইয়াজ রাল মুক মিনিনা আলা মা ানতুম আলাইকুম "
উক্ত আয়াতের ব্যখ্যাু উল্লেখ করা হয়েছে - রাসুল সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালাম এরশাদ করেন , আমার কাছে আমর উম্মতকে তাদের নিজ নিজ মাটীর আকৃতিতে পেশ করা হয়েছে যেমন ভাবে আদম আলািহিস সালাম এর কাছে পেশ করা হয়েছিল । আমাকে জানানো হয়েছে , কে আমার উপর ঈমান আনবে ? কে আমাকে অস্বিকার করবে ? যখন এ খবর মুনাফিকদের কাছে পোছলো তখন তারা ঠাট্টা করে বললো -কে তাঁর উপর ঈমান আনবে আর কে তাকে অস্বিকার করবে তাদের কে তাদের জন্মের পুর্বেই মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালাম জানতেন বলে বলেন । অথচ আমরা তাঁর সাথেই আছি - কিন্তু আমাদেরকে চিন্তে পারেন নি । এ খবর যখন রাসুল সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহিস সালাম -এর নিকট পৌছলো । তখন তিনি মিম্বরের উপরে দাড়ালেন এবং আল্লাহর প্রসংসা করে ইরশাদ করলেন
(" কালা মা বালআকওয়ামে তায়ানু ফি ইলমি লা তাসআলু নি আন শাঈন ফিমা বাইনাকুম ওয়া বাইনাস সাআতি ইল্লা আনবাইতুকুম বিহ্‌")
অর্থাৎ " এসব লোকেদের ( মুনাফিকদের) কি যে হলো আমার জ্ঞান নি্যে তারা বিরূপ সমালোচনা করছে । তোমরা এখন থেকে কেয়ামত পর্যন্ত যে কোন বিষয় সম্পর্কে আমাকে জিজ্ঞাসা করো আমি াবশ্যই উহা তোমাদের কে বলে দিবো"
(তাফসীরে খয়েন )


বুখারী শরীফের ' বাদ্‌য়ু খালকে " শীর্ষক আলোচনায় ও মিশকাত শরীফের বাদয়ু খলকে ওয়া জিকরুল আমবিয়া শীর্ষক াধ্যায়ে হযরত উমর ফারূক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহূ থেকে বর্নিত অর্থাৎ হযরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন -- " রাসুল সাল্লাল্লাহু তায়ালা আনহু এক জায়গায় আমাদের সাথে অবস্থান করছিলেন । সে খানে তিনি আমাদের সৃষ্টির সুচনা তজেকে সংবাদ দিচ্ছিলেন - এমন কি বেহেস্তবাসী দোযখবাসী নিজ নিজ ঠিকানায় যাওয়ার াবধি পরিব্যাপ্ত যাবতিয় আবস্থা ও ঘটনা বলী প্ড়দান করেন ,যিনি ওসব স্মরণ রাখতে পেরেছেন তিনিতো স্মরণ রেখেছেন ; আর যিনি রাখতে পারেন নি তিনি ভুলে গেছেন । ( মেশকাত শরীফ ৫০৬)
মেশকাত শরিফের আল-ফিতনা অধ্যায়ে বুখারী ও মুসলিম শরীফ বরাত দিয়ে হযরত হুয়াইফা রাদিয়াল্লাহ আনহু থেকে বর্নিত হয়েছে
অনুবাদ : রাসুল সাল্লাল্লাহু তাআলা আলাইহিস সালাম সে স্থানে কিয়ামত পর্যন্ত যা কিছু ঘটবে সব কিছুর খবর দিয়েছেন । কোন কিছুই বাদ দেন নাই । যারা মনে রাখার তারা মনে রেখেছেন, আর যারা ভুলে যাওয়ার তারা ভুলে গেছেন ।( মিশকাত)
এ সমস্ত হাদীস শরীফের মাধ্যমে জানা গেল রাসুল সাল্লাল্লাহু তাআলা আলাইহিস সালাম সৃষ্তির শুরু থেকে কেয়ামত পর্যন্ত যা কিছু ঘটবে উহা জানতেন এবং উহার সংবাদ সাহাবাদের দিয়েছেন ।
হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস্‌ সালাম-উনার পিতার নাম মুবারক ছিল হযরত তারিখ আলাইহিস সালাম, আযর নামক ব্যক্তি ছিল হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম-উনার চাচা।


Image result for ইবরহীম
হযরত ইব্‌রাহীম আলাইহিস্‌ সালাম-উনার পিতার নাম মুবারক ছিল হযরত তারিখ আলাইহিস্‌ সালাম। আযর নামক ব্যক্তি ছিল হযরত ইব্‌রাহীম আলাইহিস্‌ সালাম-উনার চাচা।


“নূরে মুজাস্‌সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পূর্বপুরুষগণ সকলেই ছিলেন মুসলমান। হযরত ইব্‌রাহীম আলাইহিস্‌ সালাম-উনার পিতার নাম মুবারক ছিল হযরত তারিখ আলাইহিস্‌ সালাম। আযর নামক ব্যক্তি ছিল হযরত ইব্‌রাহীম আলাইহিস্‌ সালাম-উনার চাচা।”

মহান আল্লাহ্‌ পাক ইরশাদ করেন, “আর যখন হযরত ইব্‌রাহীম আলাইহিস্‌ সালাম তাঁর চাচা আযরকে বললেন, আপনি কি মূর্তিকে ইলাহ্‌ (মা’বুদ) হিসেবে গ্রহণ করছেন?” (সূরা আনআম/৭৪)

এ আয়াত শরীফ-এ “আবূহু আযর” -এর শাব্দিক অর্থ উনার পিতা আযর। কিন্তু ইমাম-মুজতাহিদ ও আউলিয়ায়ে কিরামগণ-এর সর্বসম্মত মতে, এখানে “আবূহু” অর্থ উনার চাচা। অর্থাৎ “আবুন” শব্দের অর্থ পিতা না হয়ে এর অর্থ হবে চাচা। কারণ, কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ-এর অনেক স্থানেই ‘আবুন’ শব্দটি পিতা ব্যতীত অন্য অর্থেও ব্যবহৃত হয়েছে।
মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “পিতা-মাতা উভয়ের জন্যে রয়েছে মৃতের পরিত্যক্ত মালের এক ষষ্ঠাংশ; যদি মৃতের কোন পুত্র সন্তান থাকে।” (সূরা নিসা/১১)
এ আয়াত শরীফ-এ পিতা ও মাতা উভয়ের ক্ষেত্রেই “আবুন” শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে।
অনুরূপ ‘সূরা বাক্বারা’-এর ১৩৩ নম্বর আয়াত শরীফ-এ বলা হয়েছে, “(হযরত ইয়াকুব আলাইহিস্‌ সালাম-এর সন্তানদের কথা) আমরা আপনার ইলাহ্‌ ও আপনার পিতা (পূর্বপুরুষ) হযরত ইব্‌রাহীম, ইসমাঈল ও ইসহাক আলাইহিমুস্‌ সালাম-এর ইলাহ্‌-এর ইবাদত করব।”

হযরত ইসমাঈল আলাইহিস্‌ সালাম হলেন, হযরত ইয়াকুব আলাইহিস্‌ সালাম-এর চাচা। কাজেই উক্ত আয়াত শরীফ-এ চাচার ক্ষেত্রেও ‘আবুন’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে।
অনুরূপভাবে হাদীছ শরীফ-এরও বহু স্থানে চাচা’র ক্ষেত্রে (আবুন) শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে। যেমন, “তাফসীরে কবীর” ১৩-৪০ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করা হয়েছে, “হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আমার চাচা হযরত আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে আমার নিকট ফিরিয়ে দাও।” এখানেও ‘আবুন’ শব্দ দ্বারা চাচাকে বুঝানো হয়েছে।
হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “নিশ্চয়ই আমার চাচা (আবূ তালিব) ও তোমাদের পিতা উভয়ই জাহান্নামী।” এ সম্পর্কে “তাফসীরে মাযহারী” কিতাবের ৩য় খণ্ডের ২৫৬ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করা হয়েছে, “আরববাসীরা (আল আবু) শব্দটি চাচার ক্ষেত্রেও ব্যবহার করেন।”
“তাফসীরে কবীর” কিতাবের ১৩তম খণ্ডের ৩৮ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করা হয়েছে, (আম্মুন) চাচা শব্দটি সাধারণতঃ (আবুন) (পিতা) হিসেবেও ব্যবহৃত হয়।”
আরবী “আবুন” শব্দটির শাব্দিক অর্থ পিতা। কিন্তু কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ-এ এবং আরব দেশে প্রচলিত পরিভাষায় ‘আবুন’ শব্দটি চাচা অর্থেও ব্যবহৃত হতো। সুতরাং সূরা আনআম-এর ৭৪ নম্বর আয়াত শরীফ-এ “আবূহু” এর অর্থ হযরত ইব্‌রাহীম আলাইহিস্‌ সালাম-এর চাচা আযর।
হাদীছ শরীফ-এ এসেছে, “হযরত আব্দুল্লাহ্‌ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, নিশ্চয়ই হযরত ইব্‌রাহীম আলাইহিস্‌ সালাম-এর পিতার নাম আযর নয়। বরং উনার পিতার নাম মুবারক হলো হযরত তারিখ আলাইহিস্‌ সালাম।” (ইবনে আবি হাতিম, ইবনে কাছির- ৩/২৪৮)
“নিশ্চয়ই হযরত ইব্‌রাহীম আলাইহিস্‌ সালাম-এর পিতা (হযরত তারিখ আলাইহিস্‌ সালাম) মুশরিক ছিলেন না। বরং আযর (উনার চাচা) মুশরিক ছিল। কেননা, অকাট্যভাবে প্রমাণিত যে, নিশ্চয়ই হযরত ইব্‌রাহীম আলাইহিস্‌ সালাম-এর পিতা অন্য একজন অর্থাৎ হযরত তারিখ আলাইহিস্‌ সালাম; কিন্তু আযর নয়।” (তাফসীরে কবীর- ১৩/৩৯)
কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে, “নিশ্চয়ই হযরত ইব্‌রাহীম আলাইহিস্‌ সালাম-এর পিতার নাম ছিলো হযরত তারিখ আলাইহিস্‌ সালাম। আর আযর ছিলো উনার চাচার নাম। তখন চাচাকেও সাধারণতঃ আবুন (পিতা) বলা হত। (তাফসীরে কবীর- ১৩/৩৮)
মূলতঃ হযরত ইব্‌রাহীম আলাইহিস্‌ সালামসহ প্রত্যেক নবী-রসূল আলাইহিমুস্‌ সালামগণ-এর পিতা-মাতা বা পূর্বপুরুষ ছিলেন পরিপূর্ণ ঈমানদার, খালিছ মু’মিন। কেউই কাফির ছিলেন না।
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে, “নিশ্চয়ই সমস্ত নবী-রসূল আলাইহিমুস্‌ সালাম-এর পিতা বা পূর্বপুরুষ কেউই কাফির ছিলেন না। তার দলীল হচ্ছে আল্লাহ্‌ পাক-এর এ কালাম বা আয়াত শরীফ। (আল্লাহ্‌ পাক বলেন) “তিনি আপনাকে (হে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সিজদাকারীদের মধ্যে স্থানান্তরিত করেছেন।” (তাফসীরে কবীর- ১৩/৩৮)
আখিরী নবী, হাবীবুল্লাহ্‌ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যাদের মাধ্যমে যমীনে তাশরীফ এনেছেন অর্থাৎ হযরত আদম আলাইহিস্‌ সালাম থেকে হযরত আব্দুল্লাহ্‌ আলাইহিস্‌ সালাম পর্যন্ত সকলেই ছিলেন সিজদাকারী। অর্থাৎ সকলেই নামায, কালাম, যিকির, আযকার, ইবাদত, বন্দিগীতে মশগুল ছিলেন। উনারা সকলেই পূর্ণ পরহিযগার, মুত্তাক্বী ও ধার্মিক ছিলেন।

অনেকে “সূরা মরিয়ম”-এর ৪৭ নম্বর আয়াত শরীফ ও সূরা তওবা-এর ১১৪ নম্বর আয়াত শরীফ-এর বরাত দিয়ে বলে যে, “হযরত ইব্‌রাহীম আলাইহিস্‌ সালাম তাঁর পিতার জন্য ইস্তিগফার করেছেন কাজেই তাঁর পিতা ঈমানদার ছিলেন না।”
যারা একথা বলে তারা উক্ত আয়াত শরীফদ্বয়-এর অর্থই বুঝেনি। কারণ “সূরা মরিয়ম”-এর ৪৭ নম্বর আয়াত শরীফ-এ আল্লাহ পাক বলেন, “হযরত ইব্‌রাহীম আলাইহিস্‌ সালাম বলেন, আপনার প্রতি (বিদায়কালীন) সালাম, অচিরেই আমি আমার প্রতিপালক-এর নিকট আপনার জন্য মাগফিরাত কামনা করব।”
এবং “সূরা তওবার” ১১৪ নম্বর আয়াত শরীফ-এ আল্লাহ পাক বলেন, “হযরত ইব্‌রাহীম আলাইহিস্‌ সালাম কর্তৃক স্বীয় চাচার মাগফিরাত কামনা করা ছিলো কেবল মাত্র তার সাথে ওয়াদা করার কারণে।”
অর্থাৎ প্রথমতঃ হযরত ইব্‌রাহীম আলাইহিস্‌ সালাম উনার চাচার সাথে ওয়াদা করেছিলেন যে, তিনি তার জন্য ইস্তিগফার করবেন। উনার চাচা যেন তওবা করে, শির্‌কী ছেড়ে ঈমান গ্রহণ করে মুসলমান হয়ে যান সেজন্য দোয়া করবেন।

আর পরবর্তী “সূরা তওবা”-এর ১১৪ নম্বর আয়াত শরীফ-এ সেই ওয়াদা পালনার্থে এবং মুশরিকদের জন্য দোয়া করা নিষেধ হওয়ার পূর্বে হযরত ইব্‌রাহীম আলাইহিস্‌ সালাম উনার চাচার জন্য দোয়া করেছিলেন।
যেমন, এ আয়াত শরীফ-এর তাফসীরে এসেছে, “নিশ্চয়ই হযরত ইব্‌রাহীম আলাইহিস্‌ সালাম-এর এ ইস্তিগফার কামনা করাটা ছিল মুশরিকদের জন্য দোয়া করা নিষেধ হওয়ার পূর্বের। যেমন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (নিষেধ হওয়ার পূর্বে) উনার চাচা আবূ তালিবকে বলেছিলেন, আল্লাহ্‌ পাক-এর কসম! অবশ্যই আমি আপনার তওবা নছীব হওয়ার জন্য দোয়া করব।” (মাযহারী, ৬/১০০)
এছাড়া হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার চাচা আবূ তালিব-এর জন্য, হযরত ইব্‌রাহীম আলাইহিস্‌ সালাম উনার চাচা আযর-এর জন্য সরাসরি দোয়া করেননি; বরং তাদের ইস্তিগফার কামনা করেছেন। অর্থাৎ আযর ও আবু তালিব-এর যেন তওবা নছীব হয়, তারা যেন ক্ষমাপ্রাপ্ত হয়, ইসলাম গ্রহণ করে মুসলমান হয় সেজন্য দোয়া করেছেন। আর তাও ছিল মুশরিকদের জন্য দোয়া নিষেধ সংক্রান্ত বিধান (আয়াত) নাযিল হওয়ার পূর্বে।
আর চাচা হিসেবে আবূ তালিব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর এবং আযর হযরত ইব্‌রাহীম আলাইহিস্‌ সালাম-এর অনেক খিদমত করেছে। তার বিনিময় স্বরূপ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও হযরত ইব্‌রাহীম আলাইহিস্‌ সালাম তাদের ইস্তিগফার (তওবা কবুল হওয়ার দোয়া) কামনা করেছেন।
এ সম্পর্কে তাফসীরে উল্লেখ করা হয়েছে, “হযরত ইব্‌রাহীম আলাইহিস্‌ সালাম উনার চাচার জন্যে ইস্তিগ্‌ফার করেন। অর্থাৎ আযরের জন্যে ইস্তিগফার করেন। আযর ছিল হযরত ইব্‌রাহীম আলাইহিস্‌ সালাম-উনার চাচা। আর হযরত ইব্‌রাহীম আলাইহিস্‌ সালাম ছিলেন হযরত তারিখ আলাইহিস্‌ সালাম-উনার ছেলে।” (মাযহারী, ৪/৩০৮)
আল্লাহ্‌ পাক-এর নবী হযরত ইব্‌রাহীম আলাইহিস্‌ সালাম-এর পিতা হাক্বীক্বী পরহিযগার, মুত্তাক্বী, পরিপূর্ণ ঈমানদার ও মুসলমান ছিলেন। উনার নাম মুবারক ছিল হযরত তারিখ আলাইহিস্‌ সালাম। আর আযর নামক ব্যক্তি ছিল উনার চাচা।
পূর্ববর্তী সমস্ত নবী-রসূল আলাইহিমুস্‌ সালামগণের পূর্বপুরুষগণ এবং আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ্‌ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পূর্বপুরুষ হযরত আদম আলাইহিস্‌ সালাম থেকে শুরু করে হযরত আব্দুল্লাহ আলাইহিস্‌ সালাম পর্যন্ত সকলেই ছিলেন পুত-পবিত্র, পূর্ণ ধার্মিক ও পরিপূর্ণ মুসলমান। এটাই ছহীহ আক্বীদা। এটাই আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদা। আমাদের সকলকে এ আক্বীদাই পোষণ করতে হবে।
নূরে মুজাস্‌সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ‘ইলমে গইব’-এর অধিকারী নন’ একথা বলার অর্থ হলো- সরাসরি কুরআন শরীফ-এর অনেক আয়াত শরীফকেই অস্বীকার করা; যা কাট্টা কুফরীর অন্তর্ভুক্ত।
Image result for ইলমে গাইবনূরে মুজাস্‌সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ‘ইলমে গইব’-এর অধিকারী নন’ একথা বলার অর্থ হলো- সরাসরি কুরআন শরীফ-এর অনেক আয়াত শরীফকেই অস্বীকার করা; যা কাট্টা কুফরীর অন্তর্ভুক্ত।
মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “আল্লাহ পাক আলিমুল গইব। তিনি তাঁর মনোনীত রসূলগণ ব্যতীত কারো নিকট ইলমে গইব প্রকাশ করেন না।” নূরে মুজাস্‌সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অবশ্যই ‘আল্লাহ পাক প্রদত্ত ইলমে গইবের অধিকারী’, যা কুরআন শরীফ-এর অনেক আয়াত শরীফ দ্বারাই অকাট্যভাবে প্রমাণিত। কাজেই তিনি ‘ইলমে গইব’-এর অধিকারী নন’ একথা বলা- সরাসরি কুরআন শরীফ-এর অনেক আয়াত শরীফকেই অস্বীকার করার শামীল। আর কোন মুসলমান কুরআন শরীফকে অস্বীকার করলে সে ঈমানদার থাকতে পারে না বরং সে কাফিরের অন্তর্ভুক্ত হবে
‘গইব’ হচ্ছে এরূপ এক অদৃশ্য বস্তু বা বিষয়; যা মানুষ চোখ, নাক, কান ইত্যাদি ইন্দ্রিয়সমূহের সাহায্যে উপলব্ধি করতে পারে না এবং যা কোন দলীল-প্রমাণ ব্যতীত সুস্পষ্টভাবে ইলমের আওতায়ও আসে না। যেমন- জিন, ফেরেশতা, বেহেশত, দোযখ ইত্যাদি আমাদের জন্য গইব বা অদৃশ্য। কেননা এগুলোকে ইন্দ্রিয়ের সাহায্যে অথবা বিনা দলীলে শুধুমাত্র বিবেক বুদ্ধির দ্বারা অনুভব করা যায় না।
‘গইব’ দুই প্রকার। যথা- (১) যা যুক্তি প্রমাণভিত্তিক অর্থাৎ প্রমাণাদি দ্বারা অনুভব করা যায়। যেমন- বেহেশত, দোযখ মাখলুকাত, মহান আল্লাহ পাক-এর জাত, গুণাবলী এবং কুরআন শরীফ-এর আয়াতসমূহ দেখে এ সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা যায়।
(২) যা দলীলের দ্বারাও অনুভব করা যায় না। যেমন- ক্বিয়ামত কখন হবে, মানুষ কখন মারা যাবে ইত্যাদি। আর এ দ্বিতীয় প্রকার গইবকেই ‘মাফাতীহুল গইব’ বলা হয়।


কুরআন শরীফ-এ বর্ণিত ‘আল্লাহ পাক-এর নিকটেই রয়েছে গইবের চাবিকাঠি’ এ আয়াত শরীফ দ্বারা এরূপ গইবকেই বুঝানো হয়েছে।
গইব যত প্রকারই হোক না কেন মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন হচ্ছেন (আলিমুল গইব) অর্থাৎ সর্ব প্রকার গইব বা অদৃশ্য বস্তু বা বিষয়ের ইলম আল্লাহ পাক-এর রয়েছে। আল্লাহ পাক বিনা মধ্যস্থতায় বা কারো মাধ্যম ছাড়াই ইলমে গইবের অধিকারী। আর এরূপ ইলমে গইব সম্পর্কেই মহান আল্লাহ পাক তাঁর কালাম পাক-এ ইরশাদ করেন, “আসমান-যমীনে আল্লাহ পাক ব্যতীত কারো ইলমে গইব নেই।” সূরা নমল/৬৫) অর্থাৎ বিনা মধ্যস্থতায় বা কারো মাধ্যম ব্যতীত যে ইলমে গইব তা শুধুমাত্র আল্লাহ পাক-এরই রয়েছে।
পক্ষান্তরে আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হচ্ছেন “মুত্তালা আলাল গইব” অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তাঁর হাবীবকে সর্বপ্রকার ইলমে গইব দান করেছেন। যা কুরআন শরীফ-এর অনেক আয়াত শরীফ দ্বারাই অকাট্যভাবে প্রমাণিত।
মহান আল্লাহ পাক কালামুল্লাহ শরীফ-এর সূরা জিন’ এর ২৬, ২৭ নম্বর আয়াত শরীফ-এ ইরশাদ করেন, “তিনি (আল্লাহ পাক) আলিমুল গইব, তাঁর ইলমে গইব তাঁর মনোনীত রসূল ব্যতীত কারো নিকট প্রকাশ করেন না।” অর্থাৎ রসূলগণকে তিনি ইলমে গইব দান করেছেন। (সুবহানাল্লাহ)
এ আয়াত শরীফ-এর ব্যাখ্যায় বিশ্বখ্যাত ও নির্ভরযোগ্য তাফসীরগ্রন্থ “তাফসীরে খাযিন ও বাগবী শরীফ-এ” উল্লেখ আছে যে, “যাঁকে তাঁর নুবুওওয়াত ও রিসালতের জন্য মনোনীত করেন, তাঁকে যতটুকু ইচ্ছা ইলমে গইব দান করেন। তাঁর ইলমে গইব তাঁর নুবুওওয়াতের প্রমাণ স্বরূপ এবং তাঁর মু’জিযাও বটে।” শাব্দিক কিছু পার্থক্যসহ অনুরূপ ব্যাখ্যা তাফসীরে রুহুল বয়ান, জালালাইন, ছাবী ও আযীযীতেও উল্লেখ আছে।


মহান আল্লাহ পাক তাঁর কালাম পাক-এ ‘সূরা আলে ইমরান’-এর ১৭৯ নম্বর আয়াত শরীফ-এ আরো ইরশাদ করেন, “এটা আল্লাহ পাক-এর দায়িত্ব নয় যে, গইব বা অদৃশ্য সম্পর্কে তোমাদের (সাধারণ লোকদের) অবহিত করবেন। তবে আল্লাহ পাক তাঁর রসূলগণের মধ্যে যাকে ইচ্ছা ইলমে গইব দান করেন।”
উক্ত আয়াত শরীফের ব্যাখ্যায় বিশ্বখ্যাত ও মশহুর তাফসীর গ্রন্থ “তাফসীরে জালালাইন শরীফে” উল্লেখ আছে যে, “তবে আল্লাহ পাক যাঁকে (রসূল হিসেবে) মনোনীত করেন, তাঁকে ইলমে গইব দান করেন। যেমন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে মুনাফিকদের অবস্থা সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছিল।” উক্ত আয়াত শরীফ-এর এরূপ ব্যাখ্যা তাফসীরে বাইযাবী, খাযিন, কবীর, জুমাল, ছাবীসহ আরো বহু নির্ভরযোগ্য তাফসীরগ্রন্থে উল্লেখ আছে।
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে ইলমে গইবের অধিকারী তা ‘সূরা তাকভীর’-এর ২৪ নম্বর আয়াত শরীফ দ্বারাও প্রমাণিত হয়। যেমন, মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, তিনি (হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গইবের সংবাদ প্রকাশে কৃপণতা করেন না।”
এ আয়াত শরীফ-এর ব্যাখ্যায় তাফসীরে “মায়ালিমুত তানযীল”- কিতাবে উল্লেখ আছে, আল্লাহ পাক বলেন, নিশ্চয়ই হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট ইলমে গইব রয়েছে। সুতরাং তিনি তোমাদেরকে তার সংবাদদানে কৃপণতা করেন না। বরং তোমাদেরকে তা শিক্ষা দেন এবং গইব-এর সংবাদ প্রদান করেন।” অনুরূপ তাফসীরে খাযীন ও বাগবীতেও উল্লেখ আছে।
মহান আল্লাহ পাক ‘সূরা আর রহমান’-এর ১-৪ নম্বর আয়াত শরীফ-এ ইরশাদ করেন, “দয়াময় আল্লাহ পাক তাঁর হাবীবকে কুরআন শরীফ শিক্ষা দিয়েছেন, তিনি ইনসান সৃষ্টি করেন এবং তাঁকে বয়ান শিক্ষা দিয়েছেন।”
এ আয়াত শরীফ-এর ব্যাখ্যায় বিখ্যাত তাফসীরগ্রন্থ ‘তাফসীরে খাযিনে’ উল্লেখ আছে, “বলা হয়েছে যে, ইনসান দ্বারা উদ্দেশ্য হলেন হুযূর পাক ছল্ল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। আর বয়ান দ্বারা বুঝানো হয়েছে যে, যা ঘটেছে এবং যা ঘটবে, পূর্বাপর সমস্ত কিছুর ইলম আল্লাহ পাক তাঁকে দান করেছেন। কেননা তাঁকে পূর্ববর্তী-পরবর্তী এবং পরকালের সম্পর্কে সকল গইবী বিষয়ে ইলম দান করেছেন।” অনুরূপ তাফসীরে মায়ালিমুত তানযীল, হুসাইনী, ছাবীতেও উল্লেখ আছে।”
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তো অবশ্যই এমনকি পূর্ববর্তী নবী-রসূল আলাইহিমুস সালামগণ সকলেই যে ইলমে গইবের অধিকারী ছিলেন তার সূস্পষ্ট প্রমাণও কুরআন শরীফ-এ রয়েছে।
যেমন, হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “তোমরা কি খেয়েছ আর কি ঘরে রেখে এসেছ তা সবই আমি (হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম) বলে দিতে পারি।” (সূরা আলে ইমরান/৪৯)
আল্লাহ পাক আরো ইরশাদ করেন, “যখন তারা (হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম-এর সৈন্যবাহিনী) পিপিলিকা অধ্যুষিত উপত্যকায় পৌঁছলেন তখন এক পিপিলিকা বললো, হে পিপিলিকার দল! তোমরা তোমাদের ঘরে প্রবেশ কর। অন্যথায় হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম এবং তাঁর বাহিনী অজান্তেই তোমাদের পিষ্ট করে ফেলবেন। তার (পিপিলিকার) কথা শুনে হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম মুচকি হাসলেন এবং বললেন, হে আমার রব! আপনি আমাকে সামর্থ্য দান করুন যাতে আমি আপনার সেই নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করতে পারি যা আপনি আমাকে এবং আমার পিতা-মাতাকে দান করেছেন।” (সূরা নমল/১৮,১৯)
উক্ত আয়াত শরীফ-এর তাফসীরে রয়েছে, হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম পিপিলিকার সেই কথা তিন মাইল দূরবর্তী স্থান থেকে শুনেছিলেন যা তাঁর ইলমে গইবের অন্তর্ভুক্ত। (তাফসীরে জালালাইন, হাশিয়ায়ে শাইখযাদাহ)
কুরআন শরীফ-এর আয়াত শরীফসমূহ ও তার নির্ভরযোগ্য তাফসীর বা ব্যাখ্যা দ্বারা অকাট্য ও সুস্পষ্টভাবেই প্রমাণিত হয় যে, মহান আল্লাহ পাক পূর্ববর্তী সকল নবী-রসূল আলাইহিমুস সালামগণকেই ‘ইলমে গইব’ দান করেছেন। আর বিশেষ করে তাঁর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ইলমে গইবসহ সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সকল বিষয়ের ইলমই দান করেছেন। এ প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, আমাকে সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত বিষয়ের ইলম দেয়া হয়েছে। (মিশকাত শরীফ) অর্থাৎ আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হলেন, ‘মুত্তালা আলাল গইব’ যা উল্লিখিত আয়াত শরীফসমূহ এবং অন্যান্য বহু আয়াত শরীফ দ্বারাই সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত।
কাজেই ‘নূরে মুজাস্‌সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ‘ইলমে গইব’-এর অধিকারী নন’ একথা বলার অর্থ হলো- সরাসরি কুরআন শরীফ-এর অনেক আয়াত শরীফকেই অস্বীকার করা; যা কাট্টা কুফরীর অন্তর্ভুক্ত
https://www.cybermujahid.com/2015/07/blog-post_260.html



দেওবন্দী মালানারা নুর !!!!
Related imageদেওবন্দী মালানারা নুর !!!!

আর তাদের আলেম রশিদ আহমেদ গাংগুহিকে নিয়ে ওদের আকিদা হচ্ছে ;-
১. মাওলানা রশীদ আহমাদ সাহেব তো নূর এ নূর । তার মধ্য আর কিছুই নেই ।
(তাজকিয়াতুর রশীদ , পেজ ৩৫৯ )
২. এমন কি এই রশীদ আহমেদ গাংগুহি কে নবী পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে তুলনা করে মৌলভী মাহমুদুল হাসান লিখেছে যে ;-
প্রবৃত্তি পুজারীদের আবার হয়ত উলু হুবল ( হুবল মুর্তির জয় ) উচ্চারিত হল । প্রশ্ন করা হল এটা কেন ?
জবাব দেয়া হল যে ;- ইসলামের প্রবর্তকের নবী পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম 'র দ্বীতিয় সানী (দ্বীতিয় জন) এ জগত থেকে উঠে গেছে (মরে গেছে )
( মরসিয়াহ পৃ ৭ )
রশীদ গাংগুহির মৃত্যুর পর এই শোকগাথা রচনা করে মৌলভী মাহমুদুল হাসান ।
এই কারনেই কি আমাদের নবী পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নূর অস্বীকার করে গাংগুহি কে নূর বল ?
আমাদের নবী পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শরির মাটির , আর তাদের আলেম পুরাই নূর !!

৩. বেহেস্তি যেওর কিতাবের লেখক পরিচিতিতে আশরাফ আলি থানবীর কারামত বর্ননা করতে গিয়ে লিখে যে ;-
হযরত মালানা আশরাফ আলী থানবী দেশে ফিরিবার সময় বকশী নজির হোসেন ছাহেব স্বপ্নে দেখে যে ;- মালানা সাহেব জাহাজ হইতে অবতরন করিতেছে আর তার নূরে পুরো হিন্দুস্থান নূরানী হইয়া উঠিয়াছে
( বেহেস্তি যেওর লেখক পরিচিত পৃ ৮)
আর সে সুরা মায়েদা আয়াত নং ১৫ এর তাফসীর করেছে নিজে নিজে যে আসলে নূর ও কিতাব বলতে কোরান কে বোঝানো হয়েছে ।নবী পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নয় !! নাউযুবিল্লাহ
আর এটার দলিল দিতে সে পেশ করেছে ৩ টা তাফসীরের নাম রেফারেন্স ছাড়া , (১) ইবনে কাসীর (২) বয়ানুল কোরান ও (৩) মা'আরিফুল কোরান ।


বয়ানুল কোরান লিখেছে বিখ্যাত চটি লেখক ও সেক্স বিষ্শজ্ঞ আশরাফ আলী খাম্বা আর মা আরিফুল কোরান লিখেছে তাদেরই আলেম সফী (পাকিস্তানি )।
সুরা মায়িদার ১৫ নং আয়াতের নুর উনার তাফসীর
Related imageসুরা মায়িদার ১৫ নং আয়াতের নুর উনার তাফসীর
কোরআন শরীফে আল্লাহ তায়া'লা ইরশাদ করেন-
ﻗﺪ ﺟﺎﺀﻛﻢ ﻣﻦ ﺍﻟﻠﻪ ﻧﻮﺭ ﻭ ﻛﺘﺎﺏ ﻣﺒﻴﻦ.
অর্থঃ নিশ্চয়ই তোমাদের নিকট আল্লাহর পক্ষ থেকে একটা নূর এবং স্পষ্ট কিতাব এসেছে। [সূত্র— সূরা মায়িদা আয়াত- ১৫]

এখানে বাতিলেরা নুর বলতে কুরআন শরীফকে বুঝিয়ে থাকে । অথচ তাফসীরে এসেছে নুর বলতে মুহম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কেই বুঝান হয়েছে।

১. বিশ্ব বিখ্যাত মুফাসসিরে কোরআন হযরত ইবনে আববাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এর বিশ্ব বিখ্যাত তাফসীর গ্রন্থ ইবনে আববাস এর মধ্যে আছে-
قد جاءكم من الله نور و كتاب مبين يعني محمدا صلي الله عليه ؤسلم-
অর্থঃ নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট হতে তোমাদের কাছে নূর অর্থাৎ মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এসেছেন। (তাফসীরে ইবনে আববাস পৃষ্ঠা ৭২)।
২. দলিল নং ২
ইমাম আবু জাফর মুহাম্মদ ইবনে জারীর আত্-তবারী রহমতুল্লাহি আলাইহি বিখ্যাত তাফসীর গ্রন্থ ইবনে জারীর এর মধ্যে বলেন-
قد جاءكم من الله نور و كتاب مبين يعني باالنؤر محمدا صلي الله عليه ؤسلم الذي انار الله به الحق واظهربه الاسلام ومحق به الشرك-
অর্থঃ নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট হতে তোমাদের কাছে নূর অর্থাৎ মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এসেছেন, যে নূর দ্বারা আল্লাহ সত্যকে উজ্জ্বল ও ইসলামকে প্রকাশ করেছেন এবং শিরিককে নিশ্চিহ্ন করেছেন।
( তাফসীরে ইবনে জারীর ৬ষ্ঠ খন্ড, পৃষ্ঠা ৮৬, সূরা মায়িদা আয়াত ১৫)।
৩. দলিল নং ৩
মুহীউস্সুন্নাহ আল্লামা আলাউদ্দীন আলী ইবনে মুহাম্মদ রহমতুল্লাহি আলাইহি (যিনি ‘খাজিন’ নামে পরিচিত) তাফসীরে খাজেনের মধ্যে বলেন-
قد جاءكم من الله نور و كتاب مبين يعنى باالنؤر محمدا صلي الله عليه وسلم انما سماه الله نور الانه يهداى بالنور في الظلام-
অর্থঃ নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট হতে তোমাদের কাছে নূর অর্থাৎ মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এসেছেন। আল্লাহ তায়া’লা তাঁর নামকরণ করেছেন নূর, কারণ তাঁর নূরেতে হেদায়ত লাভ করা যায়। যেভাবে অন্ধকারে নূর দ্বারা পথ পাওয়া যায়। (তাফসীরে খাজিন ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা ৪১৭)।
৪. দলিল নং ৪
ইমাম হাফেজ উদ্দীন আবুল বারাকাত আব্দুল্লাহ ইবনে আহমদ আন- নাসাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি এই আয়াত শরীফ ( قد جاءكم من الله نور و كتاب مبين) প্রসঙ্গে বলেন-
والنور محمد عليه والسلام لانه يهتداي به كما سمي سراجا منيرا-
আর নূর হলেন মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। কেননা তাঁর নূরেতে হেদায়ত লাভ করা যায়, যেমন তাঁকে উজ্জ্বল প্রদীপ বলা হয়েছে। (তাফসীরে মাদারিক ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা ৪১৭)।
৫. দলিল নং ৫
ইমামুল মুতাকাল্লেমীন আল্লামা ফখরুদ্দীন রাযী রহমতুল্লাহি আলাইহি এই আয়াত শরীফ ( قد جاءكم من الله نور و كتاب مبين) প্রসঙ্গে বলেন-
ان المراد بالنور محمد صلي الله عليه و سلم وبالكتاب القران-
অর্থঃ নিশ্চয়ই নূর দ্বারা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং কিতাব দ্বারা আল কোরআন মজীদকে বুঝানো হয়েছে। (তাফসীরে কবীর ৩য় খন্ড, পৃষ্ঠা ৩৯৫, সূরা মায়িদা আয়াত ১৫)।
আর যারা বলে যে ‘নূর ও কিতাবে মুবীন’ দ্বারা কুরআন মজীদকেই বুঝানো হয়েছে, ইমাম রাযী রহমতুল্লাহি আলাইহি সে সম্পর্কে বলেন-
هذا ضعيف لان العطف يوجب المغايرة بين المعطوف والمعطوف عليه-
এই অভিমত দুর্বল, কারণ আতফ (ব্যাকরণগত সংযোজিত) মা‘তুফ (সংযোজিত) ও মা‘তুফ আলাইহি (যা তার সাথে সংযোজন কারা হয়েছে ) এর মধ্যে ভিন্নতা প্রমাণ করে। (তাফসীরে কবীর ৩য় খন্ড, পৃষ্ঠা ৩৯৫)।
৬. দলিল নং ৬
ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেনঃ
قد جاءكم من الله نور هو نور النبى صلي الله عليه وسلم-
অর্থঃ নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট হতে তোমাদের কাছে নূর এসেছে, তা হল নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নূর মোবারক।
(তাফসীরে জালালাইন শরীফ পৃষ্ঠা ৯৭)
৭. দলিল নং ৭
আল্লামা মাহমূদ আলূসী বাগদাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন-
قد جاءكم من الله نور هو نورعظيم هو نور الانوارالنبى المختار صلى الله عليه وسلم الى ذهب قتادة والزجاج-
অর্থঃ নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট হতে তোমাদের কাছে মহান নূর এসেছে । আর তিনি হলেন নূরুল আনোয়ার নবী মোখতার সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। এটাই হযরত কাতাদাহ ও যুজাজের অভিমত। (তাফসীরে রুহুল মাআনী ৬ষ্ঠ খন্ড, পৃষ্ঠা ৯৭)।
৮. দলিল নং ৮
আল্লামা ইসমাঈল হক্কী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন-
قيل المراد باالاول هو الرسول صلى الله عليه وسلم وبالثانى القران-
অর্থঃ বলা হয়েছে যে, প্রথমটা অর্থাৎ নূর দ্বারা রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে বুঝানো হয়েছে এবং দ্বিতীয়টা অর্থাৎ কিতাবে মুবীন দ্বারা কুরআন কে বুঝানো হয়েছে। (তাফসীরে রুহুল বয়ান ২খন্ড, পৃষ্ঠা ২৬৯)
আর অগ্রসর হয়ে বলেন-
سمى الرسول نورا لان اول شيئ اظهره الحق بنور قدرته من ظلمة العدم كان نور محمد صلي الله عليه و سلم كما قال اول ما خلق الله نورى-
অর্থ: আল্লাহ তায়া‘লা রসূল আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নাম রেখেছেন নূর। কেননা আল্লাহ তায়া‘লা তাঁর কুদরতের নূর থেকে সর্বপ্রথম যা প্রকাশ করেছেন তা তো মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নূর মোবারক। যেমন তিনি ফরমায়েছেন- আল্লাহ তায়া‘লা সর্বপ্রথম আমার নূর মোবারক কে সৃষ্টি করেছেন। (তাফসীরে রুহুল বয়ান ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা ৩৬৯)।
৯. দলিল নং ৯
ইমাম মুহীউস সুন্নাহ আবু মুহাম্মদ আল- হোসাইন আল-ফাররা আল-বাগাভী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন-
قد جاءكم من الله نور يعنى باالنؤر محمدا صلي الله عليه وسلم-
অর্থঃ নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট হতে তোমাদের কাছে নূর অর্থাৎ মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এসেছেন। (তাফসীরে মাআলিমুত তান্যীল, ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা ২৩, তাফসীরে খাযিনের পাদ টীকা)

এ ছাড়া আরো অনেক তাফসীর গ্রন্থর মধ্যে আছে যে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নূরঃ-
সুরা মায়েদা পারা ৬, ১৫ নং আয়াতে নূরের ব্যাখ্যাঃ-
১। তাফসীরে মারেফুল কোরআন পৃষ্ঠা ৫৪।
২। তাফসীরে আবি সউদ ২য় খন্ড, পৃ- ২৫১,
৩। তাফসীরে রুহুল বয়ান ২য় খন্ড, পৃ- ৩৬৯,
৪। তাফসীরে রুহুল মায়ানী ১ম খন্ড, পৃ- ৩৬০, ৬ষ্ঠ খন্ড, পৃষ্ঠা ৯৭,
৫। তাফসীরে ইবনে জারীর ৬ষ্ঠ খন্ড, পৃ- ৮৬,
৬। তাফসীরে কবীর ১১তম খন্ড, পৃ- ১৬৩,
৭। তাফসীরে কুরতুবী ৬ষ্ঠ খন্ড পৃ- ১১৮,
৯। তাফসীরে বায়জাভী ১ম খন্ড, পৃ- ৬৪,
১০। তাফসীরে মাজহারী ৩য় খন্ড, পৃ- ৬৮,
১১। তাফসীরে কবীর ৬ষ্ঠ খন্ড, পৃ- ৪৬২,
১২। ছফওয়াতুত তাফাসীর ২য় খন্ড, পৃ- ১৪০,
১৩। তাফসীরে দুররে মানসুর ২য় খন্ড, পৃ- ১৮৭, তাফসীরে নূরুল কোরআন ৬ষ্ঠ খন্ড, পৃষ্ঠা ১৬১, তাফসীরে নঈমী ৬ষ্ঠ খন্ড, পৃষ্ঠা ২৯৫।