হুযুরপাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র জীবনী মুবারক । (পর্ব- ১৮১১-১৮১৪)

পিডিএফ লিংক- https://drive.google.com/open?id=1umo8c6MnYMfK07E3v5CvZ7RMmdfA3FIF

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি হায়াতুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি শাহিদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি মুত্ত্বলা’ আলাল গইব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মহাসম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত জীবনী মুবারক (১৮১১)

৪র্থ হিজরী ৫ই শা’বান শরীফ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস:
নিম্ন দিক হতে দ্বিতীয় স্তরের অধিবাসী হবে মুশরিকরা। এ স্তরের নাম ‘জাহীম’। তৃতীয় পর্যায়ে ছাবিঈন তথা যাবূর শরীফ অনুসারী ও নক্ষত্রপূজারীদের স্তর। এর নাম ‘সাক্বার’। চতুর্থ পর্যায়ে অভিশপ্ত ইবলীস ও তার অগ্নিপূজক অনুচরদের স্তর। এর নাম ‘লাযা’। পঞ্চম স্তরের অধিবাসী হবে ইহুদীরা; এর নাম ‘হুতামাহ’ষষ্ঠ স্তরের অধিবাসী হবে খ্রিস্টানরা; এর নাম হবে ‘সাঈর’। অতঃপর হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি থেমে গেলেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, হে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম! আপনি সপ্তম স্তরের অধিবাসীদের সম্পর্কে কিছু বলছেন না কেন? হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! দয়া করে আমাকে এই স্তর সম্পর্কে সুওয়াল না করলে ভালো হয়। অতঃপর হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! জাহান্নামের এই সপ্তম স্তরে আপনার উম্মতের মধ্যে ওই সব লোক নিক্ষিপ্ত হবে; যারা দুনিয়াতে কবীরাহ গুনাহে লিপ্ত হয়েছে এবং তাওবা না করে মারা গেছে।” নাউযূবিল্লাহ! (মুকাশাফাতুল কুলূব ২৫-২৬)
 মুনাফিক্ব ও উলামায়ে সূ’রা জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তর ‘হাবিয়া’-এর মধ্যে প্রবেশ করবে এবং সেখানে কঠিন-ভয়াবহ ‘আযাব-গযব উপভোগ করবে; যেখানে ইহূদী, খ্রিস্টান, কাফির, মুশরিক, মূর্তি-পূজক, অগ্নিপূজক; এমনকি স্বয়ং মালঊন ইবলীসও প্রবেশ করবে না এবং এতো কঠিন-ভয়াবহ ‘আযাব-গযবও উপভোগ করবে না; বরং ইবলীস প্রবেশ করবে জাহান্নামের চতুর্থ স্তর ‘লাযা’-এর মধ্যে, যেখানে জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তর ‘হাবিয়া’-এর তুলনায় কমপক্ষে ৩৪৩০০০ গুণ কম শাস্তি হবে, আর ‘হাবিয়া’-এর মধ্যে জাহান্নামের চতুর্থ স্তর ‘লাযা’-এর তুলনায় কমপক্ষে ৩৪৩০০০গুণ বেশি শাস্তি হবে। অর্থাৎ তাহলে বুঝা গেল যে, মুনাফিক্বদের শাস্তি হবে ইবলীসের তুলনায় কমপক্ষে ৩৪৩০০০গুণ বেশি, আর স্বয়ং ইবলীসের শাস্তি হবে মুনাফিক্ব ও উলামায়ে সূ’দের তুলনায় ৩৪৩০০০গুণ কম। না‘ঊযুবিল্লাহ!
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি হায়াতুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি শাহিদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি মুত্ত্বলা’ আলাল গইব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মহাসম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত জীবনী মুবারক (১৮১২)
৪র্থ হিজরী ৫ই শা’বান শরীফ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস:

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে-
 قَاتِلُ حَضْرَتْ الْـحُسَيْنِ عَلَيْهِ السَّلَامُ فِـىْ تَابُوْتٍ مِّنْ نَّارٍ عَلَيْهِ نِصْفُ عَذَابِ اَهْلِ الدُّنْيَا.
 অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে যে সর্বনিকৃষ্ট ব্যক্তি শহীদ করবে, তাকে জাহান্নামে আগুনের বক্সে রাখা হবে। সমস্ত দুনিয়াবাসী তথা সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত জিন-ইনসানকে যত শাস্তি দেয়া হবে। ঐসর্বনিকৃষ্ট ব্যক্তিকে এককভাবে সকলের অর্ধেক শাস্তি দেয়া হবে।” সুবহানাল্লাহ!
আলোচ্য সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে اَهْلِ الدُّنْيَا ‘দুনিয়ার সমস্ত অধিবাসী’ দ্বারা সৃষ্টি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যারাই জাহান্নামে প্রবেশ করবে, জাহান্নামের সকল অধিবাসী উদ্দেশ্য। আর এর মধ্যে বণী ইসরাঈলের ৭০ হাজার হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে যারা শহীদ করেছে, তারাও অন্তর্ভুক্ত।
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শাহাদাত মুবারক উনার পরে দুনিয়ায় যে সমস্ত আযাব-গযব নিপতিত হয়েছিল পৃথিবীর ইতিহাসে সেটাও ছিল নজিরবিহীন
 পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
 عَنْ حَضْرَتْ يَّعْلَى بْنِ مُرَّةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰـى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم حَضْرَتْ حُسَيْنٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ مِّنِّـىْ وَاَنَا مِنْ حَضْرَتْ حُسَيْنٍ عليه السلام اَحَبَّ اللهُ مَنْ اَحَبَّ حَضْرَتْ حُسَيْنًا عَلَيْهِ السَّلَامُ حَضْرَتْ حُسَيْنٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سِبْطٌ مِّنَ الْاَسْبَاطِ.
অর্থ: “হযরত ইয়া’লা ইবনে মুররাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম তিনি আমার থেকে আর আমি সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনার থেকে অর্থাৎ উনার মাধ্যমে আমার পবিত্র বংশ মুবারক ক্বিয়ামত পর্যন্ত জারি থাকবেন। সুবহানাল্লাহ! যে ব্যক্তিই সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম উনাকে মুহব্বত করবেন স্বয়ং খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনিও ঐ ব্যক্তিকে মুহব্বত করবেন। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম তিনি পবিত্রতম বংশ মুবারকসমূহের মধ্যে একটি পবিত্রতম বংশ মুবারক। সুবাহানাল্লাহ! (পবিত্র তিরমিযী শরীফ)
 সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি হায়াতুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি শাহিদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি মুত্ত্বলা’ আলাল গইব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মহাসম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত জীবনী মুবারক (১৮১৩)
৪র্থ হিজরী ৫ই শা’বান শরীফ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস:
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্রতম শান মুবারক-এ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক করেন,
 إنّ حَضْرَتْ الحُسَيْنَ‏ عَلَيْهِ السَّلَامُ مِصْبَاحُ‏ الْهُدَى‏ وَسَفِيْنَةُ النَّجَاة.
 অর্থ: “অবশ্যই সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম তিনি হচ্ছেন, পবিত্রতম হিদায়েত উনার আলোকবর্তিকা এবং পরিপূর্ণ নাজাতের তরী।” (মুসীরুল আহযান, পৃষ্ঠা নং-৪)
 মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক করেন,
أَحِبُّوا أَهْلَ بَيْتِي لِحُبِّي
 অর্থ: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমরা আমার পবিত্রতম আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করো আমার পবিত্র মুহব্বত মুবারক উনার জন্যে। সুবহানাল্লাহ! (শরহে যুরকানী, মিশকাত শরীফ)
 উপরোক্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ থেকে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র শান-মান কত যে বেমেছাল যা কল্পনাতীত ও বর্ণনাতীত। উনার মুহব্বত মুবারকই মূলত পবিত্র ঈমান। উনার বিরুদ্ধাচরণ করেছে তারা কাট্টা কাফির। এই কাট্টা কাফির কুখ্যাত ইয়াযীদ বাহিনীরা উনাকে নিষ্ঠুর-নির্মমভাবে শহীদ করার পর তাদের ও পৃথিবীর কি ভয়াবহ অবস্থা হয়েছিল তার একটি দৃশ্য নিম্নে উল্লেখ করা হলো-
 হযরত উলামায়ে কিরামগণ লিখেছেন যে, “সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শাহাদাতী শাান মুবারক প্রকাশ করার সময় পূর্ণ সূর্যগ্রহণ হয়েছিল, আসমান ঘোর অন্ধকার হয়ে গিয়েছিল, ফলে দিনের বেলা তারকারাজি দৃষ্টিগোচর হয়েছিল। কিছুক্ষণ পর আকাশ কালো থেকে লাল বর্ণে পরিণত হয়েছিল এবং আকাশ থেকে রক্ত বৃষ্টি বর্ষিত হয়েছিল। সাতদিন পর্যন্ত এ রক্ত বৃষ্টি বর্ষণ অব্যাহত ছিল। সমস্ত ঘর-বাড়ির দেয়াল রক্তে লাল হয়ে গিয়েছিল এবং যেসব কাপড়ের উপর রক্ত পতিত হয়েছিল, সেসব কাপড় ছিঁড়ে টুকরো টুকরো হওয়ার পরও সেই রক্তের লালিমা যায়নি। যমীনও কান্নাকাটি করেছিল। পবিত্র বায়তুল মুকাদ্দাস শরীফ-এ যে পাথরটাই উঠানো হতো, সেই পাথরের নিচ থেকে তাজা রক্ত বের হতো। কলস ভর্তি পানি রাখলে তা রক্তে লাল হয়ে যেত। ইয়াযীদ লা’নতুল্লাহি আলাইহি বাহিনীরা যখন উট যবেহ করেছিল তখন সে উটের ভিতর থেকে রক্তের পরিবর্তে আগুনের লেলিহান শিখা বের হয়েছিলজিনদের মধ্যেও শোক-বেদনা ছড়িয়ে পড়েছিল। সারা জাহানজুড়ে এক অদ্ভুত ও বিস্ময়কর অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল।” কাজেই, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশের পরে দুনিয়ায় যে সমস্ত আযাব-গযব নিপতিত হয়েছিল পৃথিবীর ইতিহাসে সেটাও ছিল নজিরবিহীন।
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি হায়াতুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি শাহিদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি মুত্ত্বলা’ আলাল গইব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মহাসম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত জীবনী মুবারক (১৮১৪)
 ৪র্থ হিজরী ৫ই শা’বান শরীফ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস:
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম উনাকে ‘শিয়াদের ইমাম’ বলে অপপ্রচারকারীরা চরমভাবে বিভ্রান্ত শতকরা ৯৮ ভাগ মুসলমান উনাদের এদেশে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার ইতিহাসের ঐতিহাসিক দিন পবিত্র ১০ই মুর্হরম শরীফ অর্থাৎ পবিত্র আশূরা শরীফ উপলক্ষে বাংলাদেশের সংবাদপত্রগুলোর এলোমেলো ভাষ্য বিশেষ করে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম উনাকে ‘শিয়াদের ইমাম’ বলে আখ্যায়িত করা; যা সত্যিই আশ্চর্যজনক বটে।
 বলাবাহুল্য, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম তিনি সুন্নী মুসলমানগণ উনাদের ইমাম এবং তিনি যে হক্ব বা সত্যকে উড্ডীন করার জন্য নাহক্বের নিকট মাথা নত না করে মুবারক শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেন, সে মর্মান্তিক সত্য ঘটনায় উজ্জীবিত হয়ে বাতিলের বিরুদ্ধে সুন্নী মুসলমানগণ আজো সোচ্চার। সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম উনার মুবারক শান-মান ও ইজ্জত রক্ষায় আজও সুন্নী মুসলমানগণ তাদের জীবন কুরবানী করতে প্রস্তুত। মূলত, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম উনার প্রতি বাতিল ফিরকা শিয়া সম্প্রদায় লোক দেখানো মুহব্বত প্রকাশ করে থাকে। আর এর প্রমাণ এই যে- সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম তিনি একে তো ‘ছাহাবী’ তার উপর তিনি খাছ হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত। অর্থাৎ নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কারণেই তিনি মর্যাদাবান। অথচ এই শিয়া সম্প্রদায় আক্বীদা পোষণ করে থাকে যে, সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার প্রতি ওহী মুবারক নাযিল হওয়ার কথা ছিল, হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি ভুল করে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উপর ওহী মুবারক নিয়ে এসেছেন। অর্থাৎ তারা মূলত নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অস্বীকার করতে চায়। নাঊযুবিল্লাহ!
 উল্লেখ্য, যেসব পত্রিকা সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম উনাকে ‘শিয়াদের ইমাম’ বলে উল্লেখ করে তারা মূলত বাতিল ফিরকার অন্তর্ভুক্ত। শিয়া সম্প্রদায় তথা ইসলামবিদ্বেষী, সন্ত্রাসী, বিধর্মী ইহুদী-খ্রিস্টানদের দ্বারা বিভ্রান্ত হয়েই এরূপ করে থাকে।

হুযুরপাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র জীবনী মুবারক । (পর্ব- ১৮০১-১৮১০)

পিডিএফ লিংক- https://drive.google.com/open?id=1umo8c6MnYMfK07E3v5CvZ7RMmdfA3FIF

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি হায়াতুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি শাহিদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি মুত্ত্বলা’ আলাল গইব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মহাসম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত জীবনী মুবারক (১৮০১)
৪র্থ হিজরী ৫ই শা’বান শরীফ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস:
৪৬। كَارِهُ الْعِصْيَانِ (কারিহুল ইছইয়ানি) নাফরমানীকে ঘৃণাকারী।
৪৭। صَاحِبُ نِعْمَةِ اللهِ (ছাহিবু নি’মাতিল্লাহি) মহান আল্লাহ পাক উনার নিয়ামত উনার মালিক।
৪৮। صَاحِبُ هِدَايَةٍ (ছাহিবু হিদাইয়াতিন) হিদায়াত উনার মালিক।
৪৯। اَلسَّابِقُ (আস সাবিকু) উম্মতের অগ্রগামী ব্যক্তি।
৫০। اَلْاَوَّلُوْنَ (আল আউয়ালূনা) পবিত্র ও সম্মানিত ঈমান গ্রহণে প্রথম বা উম্মতের প্রধান।
৫১। اَلْاُمَّةُ الْوَسَطُ (আল উম্মাতুল ওয়াসাতু) শ্রেষ্ঠতম উম্মত।
৫২। اَلشَّاهِدُ عَلَى النَّاسِ (আশ শাহিদু আলান নাসি) পূর্ববর্তী উম্মতের স্বাক্ষীস্বরূপ।
৫৩। خَيْرُ اُمَّهٍ (খইরু উম্মাতিন) শ্রেষ্ঠতর উম্মত।
৫৪। اَلرَّاشِدُ (আর রাশিদু) হিদায়াতপ্রাপ্ত।
৫৫। اَلصَّادِقُ (আছ ছাদিকু) সত্যনিষ্ঠ।
৫৬। اَلْمُفْلِـحُ (আল মুফলিহু) সফলতা লাভকারী।
৫৭। اَلْاٰمِرُ بِالْمَعْرُوْفِ (আল আমিরু বিল মা’রূফি) সৎকাজের আদেশ দানকারী।
৫৮। اَلنَّاهِىُ عَنِ الْمُنْكَرِ (আন নাহিউ আনিল মুনকারি) অন্যায় কাজে বাধা প্রদানকারী।
৫৯। رَضِىَ اللهُ عَنْهُ (রদ্বিয়াল্লাহু আনহু) মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি সন্তুষ্ট।
৬০। رَضِىَ عَنْهُ (রদিয়া আনহু) তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি সন্তুষ্ট।
৬১। اَلنَّاسُ الْمُؤْمِنُ (আন নাসুল মু’মিন) পবিত্র ও সম্মানিত ঈমানদার ব্যক্তি।
৬২। صَاحِبُ الْـحُسْنٰـى (ছাহিবুল হুসনা) উত্তম পরিণতি উনার মালিক।
৬৩। اَلْمُبْعَدُ (আল মুবআদু) জাহান্নাম থেকে দূরে অবস্থানকারী।
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি হায়াতুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি শাহিদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি মুত্ত্বলা’ আলাল গইব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মহাসম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত জীবনী মুবারক (১৮০২)
৪র্থ হিজরী ৫ই শা’বান শরীফ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস:
৬৪। اَلْمُسْلِمُ (আল মুসলিমু) মুসলমান।
৬৫। اَلْمُؤْمِنُ (আল মু’মিনু) ঈমানদার।
৬৬। اَلْقَانِتُ (আল ক্বানিতু) অনুগতশীল।
৬৭। اَلصَّابِرُ (আছ ছাবিরু) ধৈর্যশীল।
৬৮। اَلْـخَاشِعُ (আল খাশিউ) বিনয়ী।
৬৯। اَلْمُتَصَدِّقُ (আল মুতাছদ্দিকু) দানকারী।
৭০। اَلصَّائِمُ (আছ ছায়িমু) রোযাদার।
৭১। اَلْـَحافِظُ (আল হাফিযু) ইজ্জত-আবরু হিফাযতকারী।
৭২। اَلذَّاكِرُ (আয যাকিরু) যিকিরকারী।
৭৩। صَاحِبُ مَغْفِرَةٍ (ছাহিবু মাগফিরাতিন) ক্ষমার মালিক।
৭৪। صَاحِبُ اَجْرٍ عَظِيْمٍ (ছাহিবু আজরিন আযীমিন) মহান পুরস্কার দানের অধিকারী।
৭৫। اَهْلُ الذِّكْرِ (আহলুয যিকরি) আহলে যিকির বা আল্লাহওয়ালা।
৭৬। اُولِـى الْاَمْرِ (উলিল আমরি) আদেশ দানকারী।
৭৭। اُولُو الْاَلْبَابِ (উলুল আলবাবি) বিচক্ষণ বা জ্ঞানী।
৭৮। اَلشَّاكِرُ (আশ্ শাকিরু) কৃতজ্ঞতা প্রকাশকারী।
৭৯। صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَارِثُ النَّبِـىِّ (ওয়ারিছুন নাবিয়্যি) নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ওয়ারিছ বা উত্তরাধিকারী।
৮০। صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَائِبُ رَسُوْلِ اللهِ (নায়িবু রসূলিল্লাহি) নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার স্থলাভিষিক্ত।
৮১। اَلَّذِيْنَ مَعَه (আল্লাযীনা মায়াহু) নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সঙ্গী।
৮২। اَشِدَّاءُ عَلَى الْكُفَّارِ (আশিদ্দাউ আলাল কুফফারি) কাফিরদের প্রতি কঠোর।
৮৩। رُحَـمَاءُ بَيْنَهُمْ (রুহামাউ বাইনাহুম) নিজেদের মাঝে সহানুভূতিশীল।
৮৪। صَاحِبُ الْفَضْلِ (ছাহিবুল ফাদ্বলি) কল্যাণের মালিক।
৮৫। صَاحِبُ الرِّضْوَانِ (ছাহিবুর রিদ্বওয়ানি) সন্তুষ্টি দানের মালিক।
৮৬। اَلسَّاجِدُ (আস সাজিদু) সিজদাকারী।
৮৭। اَلرَّاكِعُ (আর রাকিউ) রুকুকারী।
৮৮। اَلْقَائِمُ (আল ক্বায়িমু) ক্বিয়ামকারী।
৮৯। صَاحِبُ كَلِمَةِ التَّقْوٰى (ছাহিবু কালিমাতিত তাক্বওয়া) প্রকৃত তাক্বওয়া উনার মালিক।
৯০। صَاحِبُ الْاِيْـمَانِ (ছাহিবুল ঈমানি) পবিত্র ও সম্মানিত ঈমান উনার মালিক।
৯১। كَارِهُ الْكُفْرِ (কারিহুল কুফরি) কুফরী অপছন্দকারী।
৯২। كَارِهُ الْفُسُوْقِ (কারিহুল ফুসূক্বি) পাপকে অপছন্দকারী।
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি হায়াতুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি শাহিদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি মুত্ত্বলা’ আলাল গইব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম,
মহাসম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত জীবনী মুবারক (১৮০৩)
৪র্থ হিজরী ৫ই শা’বান শরীফ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস:
পবিত্র মদীনা শরীফ থেকে পবিত্র মক্কা শরীফ উনার দিকে পবিত্র হিজরত মুবারক: মুসলিম মিল্লাতকে যাহিরী-বাতিনী ইলম, বিলায়েত, কামালত হাদিয়া মুবারক করতঃ খালিছ আল্লাহওয়ালা-আল্লাহওয়ালী বানাতে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজেকে সর্বদা ব্যাপৃত রাখতেন। মহাসম্মানিত মসজিদে নববী শরীফে উনার তা’লীম-তালকীন ও দরস-তাদরীস মুবারক আর ফয়েজ মুবারক বিতরণ নিত্য চালু ছিলো। সুবহানাল্লাহ! পরশমণির মুবারক ছোহবত লাভের জন্য সর্বদা ভিড় লেগেই থাকতো। কিন্তু রহমতী মজলিস হতে উম্মাহকে বদবখত যালিম ইয়াযীদের জন্য মাহরুম হতে হয়েছে।
৬০ হিজরী সনে ইয়াযীদ সিংহাসনে আরোহণ করে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বাইয়াত দাবি করে। কিন্তু কাফির ইয়াযীদের প্রতি বাইয়াত হতে তিনি অস্বীকার করেন। তাই উনার বাইয়াত আদায় করতে ইয়াযীদ বাহিনীর লোকেরা উনার প্রতি চাপ সৃষ্টি করে। যার কারণে তিনি ৬০ হিজরী সনের ৪ঠা পবিত্র শা’বান শরীফ সম্মানিত মদীনা শরীফ হতে পবিত্র মক্কা শরীফে হিজরত মুবারক করেন। অতঃপর শত শত চিঠির মাধ্যমে কুফাবাসী কর্তৃক আকুল আবেদনের প্রেক্ষিতে ৩রা পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ তিনি উনার আহাল-ইয়াল আলাইহিমুস সালামসহ ৭২ মতান্তরে ৮২ জন উনাদের এক কাফেলা পবিত্র মক্কা শরীফ হতে কুফার উদ্দেশ্য নিয়ে রওয়ানা দেন।
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি হায়াতুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি শাহিদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি মুত্ত্বলা’ আলাল গইব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মহাসম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত জীবনী মুবারক (১৮০৪)
৪র্থ হিজরী ৫ই শা’বান শরীফ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস:
হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক জবান নিঃসৃত ওয়াজ মুবারক পবিত্র মীনায় সুমহান মদীনা শরীফ উনার আলিম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের প্রতি প্রদত্ত নছীহত শরীফ: কারবালার হৃদয় বিদারক ঘটনার এক বছর আগে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র মক্কা শরীফ উনার পার্শ্ববর্তী পবিত্র মীনায় সুমহান মদীনা শরীফ উনার আলিম ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে একদা এক বিশেষ তা’লীম মুবারকে এক বেমেছাল দীপ্তময় নছীহত মুবারক করেন। এ তা’লীম মুবারকে তিনি যে নছীহত শরীফ প্রদান করেন তার কিয়দাংশ নিম্নে উল্লেখ করা হলো:-
 হে লোকসকল! মহান আল্লাহ পাক তিনি (বানী ইসরাইলের) মৌলভীদেরকে যে তিরস্কার করেছেন ও উপদেশ দিয়েছেন তা থেকে তোমরা শিক্ষা ও উপদেশ গ্রহণ করো। তিনি ইরশাদ মুবারক করেন:
 لَوْلَا يَنْهَاهُمُ الرَّبَّانِيُّونَ وَالْأَحْبَارُ عَن قَوْلِهِمُ الْإِثْمَ وَأَكْلِهِمُ السُّحْتَ.
 অর্থ: “কেন (তাদের মধ্যকার) রাব্বানীগণ (আ’রিফ ও দরবেশরা) ও মাওলানারা তাদের (খারাপ) পাপ কথা বলতে ও হারাম ভক্ষণ করতে নিষেধ করলো না?” (পবিত্র সূরা মায়েদাহ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৬৩)
 মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
 لُعِنَ الَّذِينَ كَفَرُوا مِن بَنِي إِسْرَائِيلَ عَلَى لِسَانِ دَاوُودَ وَعِيسَى ابْنِ مَرْيَمَۚ ذَلِكَ بِمَا عَصَوا وَّكَانُوا يَعْتَدُونَ. كَانُوا لَا يَتَنَاهَوْنَ عَن مُّنكَرٍ فَعَلُوهُ ۚ لَبِئْسَ مَا كَانُوا يَفْعَلُونَ.
অর্থ: “বনি ইসরাইলের মধ্যে যারা কুফরীতে লিপ্ত হয়েছিল, তাদেরকে সাইয়্যিদুনা হযরত দাউদ আলাইহিস সালাম ও সাইয়্যিদুনা হযরত ঈসা ইবনে মারইয়াম আলাইহিস সালাম উনাদের কণ্ঠ মুবারকে লা’নত বা অভিসম্পাত করা হয়। কারণ তারা নাফরমানী করতো ও (মহান আল্লাহ পাক উনার নির্ধারিত) সীমালঙ্ঘন করতো। তারা যেসব মন্দ কাজ করতো তা থেকে তারা পরস্পরকে নিষেধ করতো না; তারা যা করতো তা কতই না নিকৃষ্ট কর্ম!’’ (পবিত্র সূরা মায়িদাহ্ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৭৮-৭৯)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি হায়াতুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি শাহিদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি মুত্ত্বলা’ আলাল গইব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মহাসম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত জীবনী মুবারক (১৮০৫)
৪র্থ হিজরী ৫ই শা’বান শরীফ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস:
কেন মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদের এভাবে তিরস্কার করলেন? কারণ, তারা যালেমদের, পাপাচারীদের যুলুম ও পাপ কাজ করা এবং ফিতনা-ফাসাদ সৃষ্টি করা দেখতো, কিন্তু তাদের কাছ থেকে পার্থিব সুযোগ-সুবিধা লাভ এবং যুলুমের হাত থেকে নিরাপদ থাকার উদ্দেশ্যে তাদের এসব থেকে নিষেধ করতো না। অথচ মহান আল্লাহ পাক তিনি নির্দেশ মুবারক দিয়েছেন,
فَلَا تَخْشَوُا النَّاسَ وَاخْشَوْنِ
 অর্থ: “তোমরা লোকদের ভয় করো না, কেবল আমাকেই ভয় করো।’’ (পবিত্র সূরা মায়েদাহ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৪৪)
পবিত্র মক্কা শরীফ থেকে চলে যাওয়ার সময় নছীহত শরীফ: সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত মদীনা শরীফে রক্তপাত এড়ানোর লক্ষ্যে মহাসম্মানিত আহাল-ইয়াল আলাইহিমুস সালাম তথা পরিবার-পরিজন ও ভক্ত-অনুরক্তদের নিয়ে মহাসম্মানিত মদীনা শরীফ ছেড়ে পবিত্র মক্কা শরীফে চলে যান এবং সম্মানিত মসজিদে হারাম শরীফে অবস্থান মুবারক গ্রহণ করেন। সেখানে থাকাকালে উনার কাছে কুফাবাসীর পক্ষ থেকে দাওয়াত আসতে থাকে। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসুলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কুফার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়ার আগের রাতে তিনি উনার মুবারক জিয়ারতে আগত আশেকীন মুহিব্বীন উনাদের প্রতি নিম্নোক্ত ভাষণ প্রদান করেন:-
 সকল প্রশংসা কেবল মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। উনার হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন্ নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত পবিত্র দুরূদ শরীফ এবং পবিত্র সালাম মুবারক । উনারা যা চাইবেন তা-ই হবে। উনার সম্মতি ছাড়া কারও পক্ষেই কোনো কাজ সম্পাদন করা সম্ভব নয়।
 আদম-সন্তানদের গলায় মৃত্যুর দাগ কেটে দেয়া হয়েছে (অবধারিত করে দেয়া হয়েছে) যেভাবে মহিলাদের গলায় হারের দাগ কেটে থাকেসাইয়্যিদুনা হযরত ইয়াকুব আলাইহিস সালাম তিনি যেভাবে সাইয়্যিদুনা হযরত ইউসুফ অলাইহিস সালাম উনার সাথে সাক্ষাৎ মুবারক উনার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা মুবারক করছিলেন ঠিক সেভাবেই আমি আমার পূর্ববর্তী ব্যাক্তিত্ব আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে সাক্ষাৎ মুবারক উনার আশা পোষণ করি। আর যে জায়গা আমার শাহাদাত্গাহ্ হবে এবং আমার জিসিম মুবারক উনাকে গ্রহণ করবে সে জায়গা আমার জন্য পূর্ব থেকেই নির্ধারণ করা হয়েছে। আমাকে এখন সেখানে পৌঁছতে হবে। আমি যেন দেখতে পাচ্ছি, কারবালার নাওয়াভীসে মরুভূমির নেকড়েরা আমার জিসিম মুবারক ছিন্নভিন্ন করছে এবং তাদের শূন্য উদর ভর্তি করছে। আর কোনো মানুষের জন্য মহান আল্লাহ পাক তিনি যা নির্ধারণ করে দিয়েছেন তা এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। মহান আল্লাহ পাক তিনি যাতে সন্তুষ্ট, আমরা মহাসম্মানিত হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারাও তাতেই সন্তুষ্ট। সুবহানাল্লাহ! সুবহানা রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! সুবহানা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম!
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি হায়াতুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি শাহিদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি মুত্ত্বলা’ আলাল গইব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মহাসম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত জীবনী মুবারক (১৮০৬)
৪র্থ হিজরী ৫ই শা’বান শরীফ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস:
 ইহা হচ্ছে মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে পরীক্ষা; আমি এ পরীক্ষায় ছবর বা ধৈর্যধারণ করবো। আর ধৈর্যশীলদের প্রতিদান পরম দাতা মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরতী হাত মুবারকে। যারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে আত্মীয়তা ও ঘনিষ্ঠতার সম্পর্ক মুবারক রাখেন, উনারা কখনোই উনার থেকে পৃথক হবেন না এবং বেহেশ্তে উনার সমীপেই থাকবেন। আর উনাদের মুবারক জিয়ারতে মহান আল্লাহ পাক উনার মহান হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূরুল মুনাওওয়ার বা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র চক্ষু মুবারক আনন্দিত হবেন। আমি প্রত্যুষে রওয়ানা হবো। ইনশাআল্লাহ। (ক্বেচ্ছেয়ে কারবালা, আল্-লুহূফ্)
 কারবালার প্রান্ত: সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কুফার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছেন তা’লীম মুবারক দানের জন্যে। ঐতিহাসিকভাবেই প্রমাণিত যে, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম উনাকে কুফায় আহ্বান করে কুফাবাসী ১৫০ হতে ১৫০০ টি চিঠি পাঠিয়েছিল। তাদের বারবার আরজীর প্রেক্ষিতে তিনি সেখানে তাশরীফ মুবারক রাখেন। পরবর্তীতে কুফাবাসীর মুনাফিকীর কারণে কারবালার হৃদয় বিদারক ঘটনা সংঘটিত হয়। এ প্রতিটি বিষয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেছেন। প্রতিটি বিষয়ই বিশদ আলোচনার মুবারক রয়েছে। সংক্ষেপে আলোচনা মুবারকের সারমর্ম হলো, পবিত্র মুহররমুল হারাম মাস উনার প্রথম দিকেই কাট্টা কাফির ইয়াযীদ বাহিনীর সৈন্যরা কাফিলাসহ উনাদের প্রতি যুলুম শুরু করে। নাউযূবিল্লাহ! যুলুমের চূড়ান্ত পর্যায়ে দুগ্ধপোষ্য সাইয়্যিদুনা হযরত আলী আছগর আলাইহিস সালাম তিনিসহ উনারা অনেকেই পবিত্র শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। নাঊযুবিল্লাহ! [মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ গবেষণা কেন্দ্র হতে প্রকাশিত ‘কারবালার হৃদয় বিদারক ইতিহাস’ নামক কিতাব মুবারকে এ বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে।]
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি হায়াতুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি শাহিদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি মুত্ত্বলা’ আলাল গইব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম,মহাসম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত জীবনী মুবারক (১৮০৭)
৪র্থ হিজরী ৫ই শা’বান শরীফ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস:
 আনুষ্ঠানিক খিলাফত মুবারক প্রদান: নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ উনার পূর্ব মুহূর্তেও উম্মতের জন্য দুয়া মুবারক, দয়া মুবারক করেছেনঅনুরূপভাবে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিও কারবালার প্রান্তরের কঠিন মুহূর্তেও মুসলিম উম্মাহর তাযকীয়াহ ও নাজাতের বিষয়টি চিন্তা করেছেন। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশের ঠিক পূর্বে স্বীয় আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনার নিকট উম্মাহর দায়িত্ব মুবারক অর্পণ করেন। সুবহানাল্লাহ! জাহিরী-বাতিনী নিয়ামতরাজি সিনা ব-সিনা সোপর্দ মুবারক করেন। আর এভাবেই তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনাকে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত খিলাফত ও সম্মানিত ইমামত মুবারক প্রদান করেন। যার কারণে ইলমে তাছাওউফসহ ইলম উনার প্রতিটি শাখায় উনার সিলসিলা মুবারক অদ্যাবধি জারি রয়েছে এবং ক্বিয়ামত পর্যন্ত জারি থাকবে। সুবহানাল্লাহ! সুবহানা রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! সুবহানা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম!
 মহাসম্মানিত শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ: ৬১ হিজরী সনের ১০ই মুহররমুল হারাম শরীফ পবিত্র আশূরা শরীফে পবিত্র জুমুয়াবার, জুমুয়াহ উনার নামাযের ওয়াক্তে সাইয়্যিদুশ শুহাদা সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কারবালার প্রান্তরে শাহাদাতী শান মুবারক গ্রহণ করেন। উনার জিসম মুবারকে ২১টি তীর, ৩৪টি বর্শা এবং ৪০টি তলোয়ারের আঘাত বিদ্ধ হয়। উনার মহাসম্মানিত শাহাদতি শান মুবারক প্রকাশের কারণে বেহুঁশ মানুষ ও জিন ব্যতীত সারা মাখলুকাতে শোকের ছায়া নেমে আসে। রক্তবৃষ্টি, গায়েবী কান্না ধ্বনি, পানি রক্তে পরিণত হওয়া, মাটি ও পাথর হতে রক্ত বের হওয়া, সূর্য গ্রহণ হওয়া ইত্যাদি তারই বাস্তব প্রমাণ। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি হায়াতুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি শাহিদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি মুত্ত্বলা’ আলাল গইব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম,মহাসম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত জীবনী মুবারক (১৮০৮)
৪র্থ হিজরী ৫ই শা’বান শরীফ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস:
 স্মরণীয় যে, সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত জিন-ইনসানকে জাহান্নামে যত শাস্তি দেয়া হবে, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে যে সর্বনিকৃষ্ট ব্যক্তি শহীদ করেছে, তাকে এককভাবে সকলের অর্ধেক শাস্তি দেয়া হবে:
 এ সম্পর্কে সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
 عَنْ حَضْرَتْ عَلِـىِّ بْنِ اَبِـىْ طَالِبٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تُـحْشَرُ ابْنَتِـىْ حَضْرَتْ فَاطِمَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ وَمَعَهَا ثِـيَابٌ مَّصْبُوغَةٌ  ۢبِدَمٍ فَتَتَعَلَّقُ بِقَائِمَةٍ مِّنْ قَوَائِمِ الْعَرْشِ فَتَقُوْلُ يَا عَدْلُ احْكُمْ بَـيْـنِـىْ وَبَيْنَ قَاتِلِ وَلَدِىْ فَيُحْكَمُ لِابْـنَـتِـىْ وَرَبِّ الْكَعْبَةِ.
 অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমার সম্মানিত লখতে জিগার, আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি হাশরের ময়দানে নূরুন নাজাত মুবারক রঞ্জিত (রক্ত রঞ্জিত) সম্মানিত পোশাক মুবারক নিয়ে উপস্থিত হবেন। অতঃপর তিনি সম্মানিত আরশ উনার স্তম্ভসমূহের একখানা সম্মানিত স্তম্ভ মুবারক উনার নিকটবর্তী হবেন। তারপর তিনি বলবেন, হে ন্যায়বিচারক (মহান আল্লাহ পাক)! আপনি আমার এবং আমার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শহীদকারীর মাঝে ফায়ছালা মুবারক (মীমাংসা) করুন। সম্মানিত কা’বা শরীফ উনার রব মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! অতঃপর মহান আল্লাহ পাক তিনি আমার লখতে জিগার, মহাসম্মানিতা আওলাদ, আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানার্থে এই বিষয়ে সর্বোত্তম ফায়ছালা মুবারক করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (দায়লামী শরীফ, শরফুল মুস্তফা শরীফ)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি হায়াতুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি শাহিদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি মুত্ত্বলা’ আলাল গইব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম,মহাসম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত জীবনী মুবারক (১৮০৯)
৪র্থ হিজরী ৫ই শা’বান শরীফ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস:
 সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
 عَنْ حَضْرَتْ عَلِىِّ بْنِ اَبِـىْ طَالِبٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَاتِلُ الْـحُسَيْنِ عَلَيْهِ السَّلَامُ فِـىْ تَابُوْتٍ مِّنْ نَّارٍ عَلَيْهِ نِصْفُ عَذَابِ اَهْلِ الدُّنْيَا.
 অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত র্কারামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে যে সর্বনিকৃষ্ট ব্যক্তি শহীদ করবে, তাকে জাহান্নামে আগুনের বক্সে রাখা হবে। সমস্ত দুনিয়াবাসী তথা সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত জিন-ইনসানকে যত শাস্তি দেয়া হবে। ঐ সর্বনিকৃষ্ট ব্যক্তিকে এককভাবে সকলের অর্ধেক শাস্তি দেয়া হবে।” সুবহানাল্লাহ! (দায়লামী শরীফ, আল মাক্বাছিদুল হাসানাহ, কাশফুল খফা’, শরহুয যারক্বানী আলালা মাওয়াহিব, শরফুল মুস্ত¡ফা শরীফ, তাফসীরে হাক্কী, তাফসীরে রূহুল বয়ান ইত্যাদি)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
وَقَالَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّ قَاتِلَ الْـحُسَيْنِ عَلَيْهِ السَّلَامُ فِـىْ تَابُوْتٍ مِّنْ نَّارٍ عَلَيْهِ نِصْفُ عَذَابِ اَهْلِ الدُّنْيَا وَقَدْ شُدَّتْ يَدَاهُ وَرِجْلَاهُ بِسَلَاسِلَ مِنْ نَّارٍ مَّنْكِبٌ حَتّٰى يَقَعُ فِىْ قَعْرِ جَهَنَّمَ وَلَه رِيْحٌ يَّتَعَوَّذُ اَهْلُ النَّارِ مِنْ شِدَّةِ نَتْنِ رِيْـحِه.
 অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে যে সর্বনিকৃষ্ট ব্যক্তি শহীদ করেছে, তাকে জাহান্নামে আগুনের বক্সে রাখা হবে। সমস্ত দুনিয়াবাসী তথা সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত জিন-ইনসানকে যত শাস্তি দেয়া হবে, ওই সর্বনিকৃষ্ট ব্যক্তিকে এককভাবে সকলের অর্ধেক শাস্তি দেয়া হবে। সুবহানাল্লাহ! তার হাত এবং পাগুলো আগুনের শিকল দ্বারা শক্তভাবে বাঁধা হবে। তারপর তাকে উপুড় করে জাহান্নামের অতল গহ্বরে নিক্ষেপ করা হবে। তার কঠিন দুর্গন্ধ থাকবে। সমস্ত জাহান্নামবাসী তথা সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যত লোক জাহান্নামে যাবে, তারা সকলেই সেই কঠিন পঁচা দূর্গন্ধ থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করবে।” (শরফুল মুস্তফা শরীফ)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি হায়াতুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি শাহিদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি মুত্ত্বলা’ আলাল গইব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মহাসম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত জীবনী মুবারক (১৮১০)
৪র্থ হিজরী ৫ই শা’বান শরীফ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস:
পঞ্চম হিজরী শতকের মুজাদ্দিদ, হুজ্জাতুল ইসলাম হযরত ইমাম গাজ্জালী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘মুকাশাফাতুল কুলূব’ উনার মধ্যে উল্লেখ করেছেন, “সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে এসেছে, মহান আল্লাহ পাক তিনি জাহান্নামকে এমনভাবে সৃষ্টি করেছেন যে, তার সাতটি দরজা রয়েছে। সম্মানিত কুরআন শরীফ উনার ভাষায়-
لَـهَا سَبْعَةُ اَبْوَابٍ.
 অর্থ: “জাহান্নামের সাতটি দরজা রয়েছে।” সম্মানিত সূরা হিজর শরীফ: সম্মানিত আয়াত শরীফ ৪৪)
সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে- “হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, ‘ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! জাহান্নামের দরজা এই পৃথিবীর ঘর-বাড়ির দরজার মতো নয়; বরং উপরে-নিচে স্তরে স্তরে বিন্যস্ত এবং এক দরজা হতে অপর দরজা পর্যন্ত সত্তর বছরের পথ পরিমাণ দূরত্ব। উপরের দিক থেকে প্রথম দরজার তুলনায় দ্বিতীয়টির এবং এভাবে পরবর্তী দরজাগুলোর একটির তুলনায় অপরটির উত্তাপ ও দাহন ক্ষমতা সত্তরগুণ অধিক হবে।’ অতঃপর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনাকে এসব স্তরে অবস্থানকারীদের সমন্ধে বলতে বললেন, হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি বললেন যে, ‘দোযখের সর্বনি¤œ স্তরে নিক্ষেপ করা হবে মুনাফিক্বদেরকে। এই স্তরের নাম হবে ‘হাবিয়াহ’। এ স্তরে মুনাফিক্বদের অবস্থান প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেছেন,
اِنَّ الْمُنٰفِقِيْنَ فِى الدَّرْكِ الْاَسْفَلِ مِنَ النَّارِ.
 অর্থ: “নিঃসন্দেহে মুনাফিক্বদের স্থান হচ্ছে, জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তরে।” (সম্মানিত সূরা নিসা শরীফ: সম্মানিত আয়াত শরীফ ১৪৫)