৬৯০ নং- সুওয়াল : জানাযা নামাযের জন্য জামায়াত শর্ত কিনা? শুধু একজন পুরুষ কিম্বা স্ত্রী লোক জানাযা নামায আদায় করে থাকলে তা আদায় হবে কি?

সুওয়াল : জানাযা নামাযের জন্য জামায়াত শর্ত কিনা? শুধু একজন পুরুষ কিম্বা স্ত্রী লোক জানাযা নামায আদায় করে থাকলে তা আদায় হবে কি?
জাওয়াব : জানাযা নামাযের জন্য জামায়াত শর্ত নয়। জানাযা নামায যেহেতু ফরজে কেফায়া সেহেতু তা একজন পুরুষ অথবা একজন স্ত্রীলোক আদায় করলেই আদায় হয়ে যাবে। (দুররুল মোখতার, জাদুল আখিরাহ্, আলমগিরী, নেহায়া ইত্যাদি)

আবা-৩৮
৬৮৯ নং- সুওয়াল : অনেক জায়াগায় দেখা যায় যে, জানাযা নামাযে তিন কাতারের জন্য তাক্বীদ করা হয়। ইহা কতটুকু শরীয়ত সম্মত?

সুওয়াল : অনেক জায়াগায় দেখা যায় যে, জানাযা নামাযে তিন কাতারের জন্য তাক্বীদ করা হয়। ইহা কতটুকু শরীয়ত সম্মত?
জাওয়াব : জানাযার নামায তিন কাতার হওয়া মুস্তাহাব। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আছে- যে (মৃত ব্যক্তির) জানাযার নামায তিন কাতারে পড়া হবে, সে মৃত ব্যক্তিকে মহান আল্লাহ পাক মাফ করে দিবেন। (সমূহ ফিক্বাহর কিতাব)
আবা-৩৮ 
৬৮৮ নং- সুওয়াল : প্রথম রাকায়াত হতে দ্বিতীয় রাকায়াতের কিরআত এক রকম হবে কিনা, জানাবেন।

সুওয়াল : প্রথম রাকায়াত হতে দ্বিতীয় রাকায়াতের কিরআত এক রকম হবে কিনাজানাবেন।
জাওয়াব : প্রথম রাকায়াত হতে দ্বিতীয় রাকায়াতের কিরআত ছোট হওয়া সুন্নাত। যদি দ্বিতীয় রাকায়াতের কিরআত প্রথম রাকায়াতের কিরআতের চেয়ে তিন বা ততোধিক আয়াতের বেশী পাঠ করা হয়, তবে মাকরূহে তান্যিহী হবে। (শামী, মারাকিউল ফালাহ)
আবা-৩৮
৬৮৭ নং- সুওয়াল : তাকবীরে উলার সময় হাত যদি কাঁধের নীচে থাকে অথবা যদি কানের উপরে উঠে তাহলে কি হবে?

সুওয়াল : তাকবীরে উলার সময় হাত যদি কাঁধের নীচে থাকে অথবা যদি কানের উপরে উঠে তাহলে কি হবে?
জাওয়াব : পুরুষের জন্য তাকবীরে উলার সময় কাঁধের নীচে অথবা কানের উপরে হাত উঠানো মাকরূহে তান্যীহী। তাদের জন্য সুন্নাত হলো- তাকবীরে উলার সময় হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলী কানের লতি স্পর্শ করা। আর মেয়েদের জন্য সুন্নাত হলো হাত কাঁধ বরাবর উঠানো এবং তাদের জন্য কাঁধের উপরে বা নীচে হাত উঠানো মাকরূহে তান্যিহী। (ছগিরী)
আবা-৩৮
৬৮৬ নং- সুওয়াল : জামা বা কোর্তার আস্তিন কুনুইর উপরে গুটিয়ে নামায আদায় করা কি?

সুওয়াল : জামা বা কোর্তার আস্তিন কুনুইর উপরে গুটিয়ে নামায আদায় করা কি?
জাওয়াব : মাকরূহে তাহরীমী। (শামী, মারাকিউল ফালাহ)
আবা-৩৮ 

৬৮৫ নং- সুওয়াল : মুকীম ও মুসাফিরের মুজার উপর মসেহের মুদ্দত কতদিন?

সুওয়াল : মুকীম ও মুসাফিরের মুজার উপর মসেহের মুদ্দত কতদিন?
জাওয়াব : মুকীমের জন্য একদিন বা ২৪ ঘন্টা আর মুসাফিরের জন্য ৩ দিন বা ৭২ ঘন্টা। আর মুদ্দতের গণনা শুরু হবে, মুজা পরিধানকারী ওযু ও পবিত্রতা অর্জন করে, মুজা পরিধান করার পর প্রথম যখন তার ওযু ভঙ্গ হবে। (সমূহ ফিক্বাহর কিতাব)
আবা-৩৮
৬৮৪ নং- সুওয়াল : নপুংষক, স্ত্রীলোক ও অপ্রাপ্ত বয়স্ক বালক যদি ইমাম হয়, তাহলে তাদের পিছনে পুরুষের এক্তেদা জায়েয কিনা?

সুওয়াল : নপুংষক, স্ত্রীলোক ও অপ্রাপ্ত বয়স্ক বালক যদি ইমাম হয়, তাহলে তাদের পিছনে পুরুষের এক্তেদা জায়েয কিনা?
জাওয়াব : না, পুরুষের জন্য নপুংশক, স্ত্রীলোক ও অপ্রাপ্ত বয়স্ক বালকের পিছনে এক্তেদা জায়েয নেই। (শরহে বেকায়া, নূরুল হেদায়া)
আবা-৩৮
৬৮৩ নং- সুওয়াল : ওযুওয়ালা ব্যক্তি তায়াম্মুম ওয়ালার পিছনে, ধৌতকারী মাসেহকারীর পিছনে, সোজা দাঁড়ানো ব্যক্তি, কুজো হয়ে দাঁড়ানো নামাযীর পিছনে, এক ইশারায় নামায পাঠকারী অপর ইশারায় নামায পাঠকারীর পিছনে, নফল আদায়কারী ফরয নামায আদায়কারীর পিছনে এক্তেদা জায়েয হবে কি?

সুওয়াল : ওযুওয়ালা ব্যক্তি তায়াম্মুম ওয়ালার পিছনে, ধৌতকারী মাসেহকারীর পিছনেসোজা দাঁড়ানো ব্যক্তি, কুজো হয়ে দাঁড়ানো নামাযীর পিছনে, এক ইশারায় নামায পাঠকারী অপর ইশারায় নামায পাঠকারীর পিছনে, নফল আদায়কারী ফরয নামায আদায়কারীর পিছনে এক্তেদা জায়েয হবে কি?
জাওয়াব : উপরোল্লিখিত যোগ্যতা সম্পন্ন ইমামের পিছনে উপরে বর্ণিত মুক্তাদীগণের এক্তেদা জায়েয হবে। (শরহে বেকায়া ও নূরুল হেদায়া)
আবা-৩৮
৬৮২ নং- সুওয়াল : নামাযে সালাম ফিরানোর সময় ডান ও বাম উভয় দিকে কি একই আওয়াজে সালাম ফিরাতে হবে?

সুওয়াল : নামাযে সালাম ফিরানোর সময় ডান ও বাম উভয় দিকে কি একই আওয়াজে সালাম ফিরাতে হবে?
জাওয়াব : প্রথম সালাম অর্থাৎ ডানদিকে সালাম ফিরানোর আওয়াজ হতে দ্বিতীয় সালাম অর্থাৎ বাম দিকে সালাম ফিরানোর আওয়াজ একটু নীচু স্বরের হওয়া সুন্নাত। (আলমগিরী, মুহীত)
আবা-৩৮
৬৮১ নং- সুওয়াল : সুত্রার পরিমাপ কি?

সুওয়াল : সুত্রার পরিমাপ কি?
জাওয়াব : সুত্রা ১ হাত লম্বা এবং এক আঙ্গুল পরিমাণ  মোটা হতে হবে। (মাবছুত, গায়াতুল আওতার, দুররুল মোখতার, শরহে বেকায়া ইত্যাদি)

আবা-৩৮
৬৮০ নং- সুওয়াল : দোয়া কুনুতের পূর্বে তাকবীর দেয়া কি? যদি কেউ দোয়া কুনুতের পূর্বের তাকবীর না দেয়, তাহলে কি করতে হবে?

সুওয়াল : দোয়া কুনুতের পূর্বে তাকবীর দেয়া কি? যদি কেউ দোয়া কুনুতের পূর্বের তাকবীর না দেয়, তাহলে কি করতে হবে?
জাওয়াব : দোয়া কুনুত পড়া যেমন ওয়াজিব, তেমনি তার পূর্বে তাকবীর দেয়াও ওয়াজিব। অতএব যদি কেউ উক্ত তাকবীর না দেয়, তবে তার প্রতি ওয়াজিব তরক করার করণে সিজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে। (আলমগিরী, তাবঈন)
আবা-৩৮
৬৭৯ নং- সুওয়াল : পুরুষেরা যদি নামাযের সিজদার সময় দু’হাত যমিনের উপর বিছিয়ে দেয় এবং দু’কুনুই রানের (উরু) সাথে লাগিয়ে রাখে, তাহলে কি কোন ভূল হবে?

সুওয়াল : পুরুষেরা যদি নামাযের সিজদার সময় দুহাত যমিনের উপর বিছিয়ে দেয় এবং দুকুনুই রানের (উরু) সাথে লাগিয়ে রাখে, তাহলে কি কোন ভূল হবে?
জাওয়াব : উভয় অবস্থাতেই পুরুষদের জন্য নামায মাকরূহ্ তাহরীমী হবে। (শামী)
আবা-৩৮
৬৭৮ নং- সুওয়াল : কোন ব্যক্তি ইন্তেকাল করলে, তার আত্মীয়-স্বজনদের জন্য কতদিন শোক করা জায়েয আছে?

সুওয়াল : কোন ব্যক্তি ইন্তেকাল করলে, তার আত্মীয়-স্বজনদের জন্য কতদিন শোক করা জায়েয আছে?
জাওয়াব : কোন ব্যক্তি ইন্তেকাল করলে তার আত্মীয়-স্বজনদের জন্য তিন দিন এবং কোন স্ত্রী লোকের স্বামী মারা গেলে তার জন্য ৪ মাস ১০ দিন শোক করা জায়েয। (সমূহ ফিক্বাহের কিতাব দ্রষ্টব্য)
আবা-৩৮
৬৭৭ নং- সুওয়াল : কোন নাপাকী ব্যক্তি মুর্দাকে গোসল করালে তার হুকুম কি?

সুওয়াল : কোন নাপাকী ব্যক্তি মুর্দাকে গোসল করালে তার হুকুম কি?
জাওয়াব : নাপাকী ব্যক্তি বা হায়েজ ওয়ালী মহিলা যদি কাউকে গোসল করায়, তাহলে তাদের গোসল করানোটা মাকরূহ তাহরীমী হবে। আর যদি কোন কাফির গোসল দেয়, তাহলে তা ঠিক হবেনা। তবে যদি কোন মুসলমান ব্যক্তি পাওয়া না যায়, তবে কাফির ব্যক্তি গোসল দিতে পারবে।
মূলত মুর্দাকে গোসল দানকারী ব্যক্তির, পবিত্র হওয়া ও ওযুর সহিত গোসল দেয়াই সুন্নত। (আলমগিরী, তাহ্তাবী, কাজিখান, কানইয়া)
আবা- ৩৮
৬৭৬  নং- সুওয়াল : যদি কারো নিকট পাগড়ী থাকে, কিন্তু আলস্যবসতঃ তা ব্যবহার না করে অর্থাৎ পাগড়ী ছাড়াই নামায আদায় করে, তাহলে তার নামাযের কি কোন ক্ষতি হবে?

সুওয়াল : যদি কারো নিকট পাগড়ী থাকে, কিন্তু আলস্যবসতঃ তা ব্যবহার না করে অর্থাৎ পাগড়ী ছাড়াই নামায আদায় করে, তাহলে তার নামাযের কি কোন ক্ষতি হবে?
জাওয়াব : তাহলে তার নামায মাকরূহ্ তাহরীমী হবে। (আলমগিরী, খোলাছা)
আবা-৩৮
৬৭৫ নং- সুওয়াল : ভাড়াকরা জায়গায় জুমুয়া ও পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের জামায়াত সহীহ হবে কিনা, দলীলসহ জানিয়ে বাধিত করবেন।

সুওয়াল : ভাড়াকরা জায়গায় জুমুয়া ও পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের জামায়াত সহীহ হবে কিনা,দলীলসহ জানিয়ে বাধিত করবেন।

জাওয়াব : হ্যাঁ, ভাড়াকরা জায়গায় সন্দেহাতীতভাবেই জুমুয়া ও পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের জামায়াত সহীহ্ হবে। পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায় করার জন্য তা জামায়াতেই হোক অথবা একাকিই হোক, যেমন ওয়াক্ফকৃত স্থান শর্ত নয়। তদ্রুপ জুমুয়ার জামায়াত শুদ্ধ হওয়ার জন্য ও আমাদের হানাফী মায্হাবে ওয়াক্ফকৃত স্থানের শর্তারোপ করা হয়নি। অর্থাৎ যে কোন স্থানে যে কোন নামায আদায় করলেই সহীহ্। কারণ জুমুয়ার নামায সহীহ্ বা শুদ্ধ হওয়ার শর্ত হলো- (১) امام رهنا - ইমাম বা খতীব থাকা, অন্যান্য নামাযের জন্য যে উপযুক্ত জুমুয়ার নামাযের ইমামতির জন্যও সে উপযুক্ত হবে। সুতরাং মুসাফির, রোগী ও গোলামের ইমামতিও জায়েয।
(২) جما عت هونا – জামায়াত হওয়া, আমাদের হানাফী মাযহাব মতে ইমাম ব্যতীত তিনজন মোক্তাদী হওয়া জামায়াতের জন্য শর্ত। এবং খুৎবার শুরু থেকে প্রথম রাকায়াতের সিজদা পর্যন্ত তিনজন মোক্তাদী উপস্থিত থাকতে হবে। অবশ্য সিজদা করার পর মোক্তাদী চলে গেলে জুমুয়া সহীহ্ হবে।
(৩) ظهر وقت هونا - যোহর নামাযের সময় হওয়া, যোহর ওয়াক্ত শুরু হবার পূর্বে ও শেষ হবার পরে জুমুয়ার নামায পড়লে জুমুয়া সহীহ বা দুরস্ত হবে না। অর্থাৎ যোহর ওয়াক্তের মধ্যেই জুমুয়া পড়তে হবে।
(৪) خطبه هونا - খুৎবা হওয়া, অর্থাৎ জুমুয়ার ফরয নামাযের পূর্বে খতীব মুসল্লীদের দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে আরবীতে কমপক্ষে এক তাসবীহ্ পরিমাণ পাঠ করবে। খুৎবা কমপক্ষে এক তাসবীহ্ পরিমাণ পাঠ করা ওয়াজিব। নামাযের পরে খুৎবা পড়লে জুমুয়ার নামায সহীহ্ হবে না। খুৎবা যোহর ওয়াক্তের মধ্যে হওয়া বাঞ্চনীয়। যোহর ওয়াক্তের পূর্বে বা পরে খুৎবা পাঠ করলে জুমুয়া সহীহ্ হবে না।
(৫) اذن عام رهنا -জনসাধারণের প্রবেশাধিকার থাকা, অর্থাৎ যে স্থানে জুমুয়ার নামায পড়া হবে, সে স্থানে সকলের প্রবেশাধিকার থাকা চাই।
(৬) شهر هونا শহর হওয়া, অর্থাৎ বড় মসজিদের ক্বওল পাওয়া যাওয়া। 
মূলত মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অন্যান্য হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালামগণ উনাদের উপর যে বিশেষ ছয়টি ফযীলত দেয়া হয়েছে, তন্মধ্যে একটি হচ্ছে-
جعلت لى الارض ممجدا وطهورا.
অর্থ : আমার জন্য যমিনকে মসজিদ (সিজদার স্থান) এবং পবিত্র করে দেয়া হয়েছে।
অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য সারা যমিনকে নামাযের স্থান করে দিয়েছেন।
তবে ওয়াক্ফকৃত স্থানে নির্মিত মসজিদে জুমুয়া ও পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায় করাতে যে ফযীলত রয়েছে, তা পাওয়া যাবেনা। (মুসলিম শরীফ, শরহে নববী, মেশকাত, মেরকাত, লুময়াত, আশয়াতুল লুময়াত, শরহুত্ ত্বীবী, তালীকুছ্ ছবীহ্, মোযাহেরে হক্ব, আইনুল হেদায়া, আলমগিরী, শামী, দুররুল মোখতার, ফাতহুল ক্বাদীর, বেনায়া, মাবছূত, তাতারখানিয়া, বাহরুর রায়েক, মারাকিউল ফালাহ্)
 আবা-৩৮
৬৭৪ নং-সুওয়াল :  সফর অবস্থায় ট্টেন, বাসে বা লঞ্চে বসে ফরয নামায আদায় করা যাবে কিনা? গেলে তার নিয়ম কি?

সুওয়াল : মাসিক রাহমানী পয়গাম, জুলাই/৯৬ইং সংখ্যায় নিম্ন বর্ণিত জিজ্ঞাসা ও জবাব ছাপা হয়-
জিজ্ঞাসা : সফর অবস্থায় ট্টেন, বাসে বা লঞ্চে বসে ফরয নামায আদায় করা যাবে কিনা? গেলে তার নিয়ম কি?
জবাব : এখানে তিনটি বিষয় জেনে রাখার দরকার।
১মঃ দাড়িয়ে নামায পড়া।
২য়ঃ কিবলার দিকে মুখ রাখা।
৩য়ঃ নিয়ম মুতাবেক রুকু-সিজদাসহ নামায পড়া।
অর্থাৎ ইশারায় রুকু সিজদা না করা। যদি ট্টেনে বা লঞ্চে বা বাসে উল্লিখিত তিনটির কোন একটি করা সম্ভব না হয়, তাহলে সে নামায ত্রুটিপূর্ণ অবস্থায় পড়ে নিবে, কিন্তু পরে দোহরানো জরুরী।
গাড়ীতে বা লঞ্চে বা বাসে নামায পড়ার নিয়ম এই যে, প্রথমে দাড়িয়ে তাহরীমা বাঁধার পর পড়ে যাওয়ার ভয় থাকলে টেক লাগিয়ে বা কোন কিছু ধরে দাঁড়াবে। মনে রাখতে হবে, হাত বাঁধা সুন্নত, কিন্তু দাঁড়ানো ফরয। কাজেই প্রয়োজনের সময় সুন্নত তরক করে ফরজ আদায় করতে হবে। গাড়ী, লঞ্চ, বাস কিবলা থেকে ঘুরতে থাকলে, মুসল্লীও ঘুরবে এবং সর্বদা ক্বিবলা মুখী থাকবে। সিজদার সময় পিছনের সিটে পা ঝুলিয়ে বসে সামনের সিটে কম করে ১ তাসবীহ পরিমাণ সময় সিজদা করবে। আর খালি জায়গা পেলে লঞ্চে, বাস বা ট্টেনের ফ্লোরে সিজদাহ করবে। আর যদি সিজদা করার মত কোন খালি জায়গাই না পাওয়া যায়, তাহলে ইশারায় রুকু সিজদা করে নামায পড়ে নিবে। তবে এক্ষেত্রে গন্তব্য স্থলে পৌঁছে নামায দুহরিয়ে পড়তে হবে। এমনিভাবে যানবাহনে যদি কেউ বসে নামায পড়ে বা ক্বিবলা থেকে চেহারা ফিরে যায়, তাহলেও নামায দুহরিয়ে নিতে হবে। [প্রমাণ- আহসানুল ফাতাওয়া ৪:৮৮]
এখন আমার প্রশ্ন হলো- সফরে যানবাহনে থাকা অবস্থায় নামায আদায়ের নিয়ম কি? রাহ্মানী পয়গামের প্রদত্ত উত্তর কতটুকু প্রযোজ্য ও শুদ্ধ হয়েছে। অনুগ্রহ করে জানিয়ে বাধিত করবেন।

জাওয়াব : মাসিক রাহমানী পয়গামের উক্ত উত্তর অশুদ্ধ, ভুল, মনগড়া ও নির্ভরযোগ্য ফতওয়ার খেলাফ হয়েছে। উক্ত প্রশ্নের সঠিক উত্তর হলো-
প্রথমতঃ সর্বাবস্থায় দাঁড়িয়ে নামায পড়া ফরয। অর্থাৎ নামাযী ব্যক্তি প্রথমে লক্ষ্য করবে যে, ট্টেনে, বাসে বা লঞ্চে যে কোন ভাবেই হোক দাঁড়িয়ে নামায পড়া সম্ভব কিনা? যদি দাঁড়িয়ে নামায পড়া সম্ভব হয়, তবে তার জন্য দাঁড়িয়ে নামায পড়াই ফরয।
কিন্তু দাঁড়িয়ে নামায পড়তে গেলে যদি মাথায় ছাদ লেগে যায় অথবা পড়ে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে, কিম্বা অধিক অসুস্থতার কারণে দাঁড়ানো অসম্ভব হয় অথবা দাঁড়িয়ে যথাযথ নিয়মে নামায পড়ার জায়গা না থাকে, তবে এসকল অবস্থায় দাঁড়ানোর ফরয সাকেত বা রহিত হয়ে যাবে এবং বসে নামায আদায় করতে হবে, এতে নামায পূর্ণরূপেই আদায় হয়ে যাবে।      আর নামাযী ব্যক্তির জন্য দাঁড়িয়ে হোক, বসে হোক, ইশারায় হোক, সর্বাবস্থায় ক্বিবলামুখী হয়ে নামায পড়া ফরজ। কোন অবস্থাতেই ইচ্ছাকৃতভাবে ক্বিবলা পরিবর্তন করা জায়েয নেই। সফর অবস্থায় যানবাহনে ক্বিবলা ঘুরার সাথে সাথে নামাযী ব্যক্তিও ঘুরে ক্বিবলামুখী হয়ে যাবে।
আর সফর অবস্থায় হোক অথবা মুক্বীম অবস্থায় হোক, যদি যথাযথ নিয়মে রুকু-সিজদা করে নামায আদায় করা যায়, তাহলে রুকু-সিজদা করেই নামায আদায় করবে। তবে যদি যানবাহনে অধিক ভিড়ের জন্য সিজদা করার মত কোন জায়গা না থাকে অথবা অসুস্থতার কারণে রুকু-সিজদা করতে না পারে, তবে ক্বিবলামুখী হয়ে (বসে হোক অথবা দাঁড়িয়ে হোক) ইশারায় রুকু, সিজদা করে নামায আদায় করবে। অর্থাৎ রুকুর ক্ষেত্রে মাথা একটু কম ঝুঁকাতে এবং সিজদার ক্ষেত্রে মাথা একটু বেশী ঝুঁকাতে হবে। এতেও নামায পূর্ণরূপেই আদায় হবে। উক্ত নামাযকে পূণরায় গন্তব্যস্থানে পৌঁছে দোহ্রায়ে পড়তে হবেনা।
উল্লেখ্য যে, রাহমানী পয়গামে আহ্সানুল ফতওয়ার এবারতের অনুবাদ করে গাড়ীতে, লঞ্চে বা বাসে নামায পড়ার যে নিয়ম বর্ণনা করা হয়েছে, অর্থাৎ কোন কিছুতে টেক লাগিয়ে অথবা কোন কিছু ধরে দাঁড়ানোর কথা বলা হয়েছে, তা কোন মতেই গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ এ ব্যাপারে সর্বজন স্বীকৃত ফক্বীহ্গণের অভিমত হলো- দাঁড়ানোর অসুবিধার দরুন দাঁড়ানোর ফরজ সাকেত বা রহিত হয়ে যায়। কাজেই যদি কোন মতেই দাঁড়িয়ে নামায পড়া সম্ভব না হয়, তবে বসেই নামায আদায় করবে। কিন্তু কোন কিছুতে টেক লাগিয়ে অথবা হাত বাঁধার সুন্নত তরক করে হাত দ্বারা কোন কিছু ধরে দাঁড়ানোর কোন নিয়ম, নির্ভযোগ্য কোন ফিক্বাহের কিতাবে উল্লেখ করা হয়নি। বরং এটি শুধুমাত্র আহ্সানুল ফতওয়ার লেখকের নিজস্ব অভিমত।
আর যদি যানবাহনে অত্যাধিক ভিড়ের কারণে রুকু-সিজদা করার জায়গা না থাকে অথবা অধিক অসুস্থতার কারণে নামাযী ব্যক্তি রুকু-সিজদা করতে অক্ষম হয়, তবে তাকে ক্বিবলামুখী হয়ে ইশারায় রুকু-সিজদা করে নামায আদায় করতে হবে অর্থাৎ রুকুর ক্ষেত্রে মাথা একটু কম ঝুঁকাতে এবং সিজদার ক্ষেত্রে মাথা একটু বেশী ঝুঁকাতে হবে। আর তাতে নামায পূর্ণরূপেই আদায় হয়ে যাবে। গন্তব্য স্থানে পৌঁছে উক্ত নামায দোহরায়ে পড়ার আবশ্যকতা নেই। তবে যানবাহন ঘুরার কারণে নামাযীর ক্বিবলা পরিবর্তন হলে, নামাযী ব্যক্তিও ক্বিবলার দিকে ঘুরে যাবে। ইচ্ছাকৃত ক্বিবলা ব্যতীত অন্য দিকে মুখ করে নামায আদায় করলে নামায বাতিল হয়ে যাবে।
(দোররুল মোখতার, বাহরুর রায়েক, গায়াতুল আওতার, ফতওয়ায়ে আলমগিরী, হাশিয়ায়ে তাহ্তাবী, শামী, মারাকিউল ফালাহ্, খোলাছা, নূরুল ইজা, বেহেস্তী জিওর ইত্যাদি)
আবা-৩৮
৬৭৩ নং- সুওয়াল : বিভিন্ন ইসলামী সম্মেলন ও মিছিলে দেখা যায়, “ভিডিও ক্যামেরা” করা হয়ে থাকে ইহা ইসলামের দৃষ্টিতে কতটুকু জায়েয? জানালে খুশী হবো।

সুওয়াল : মাসিক দ্বীন দুনিয়া আগষ্ট/৯৬ইং সংখ্যায় নিম্নোক্ত প্রশ্নোত্তর ছাপা হয়-
প্রশ্ন : বিভিন্ন ইসলামী সম্মেলন ও মিছিলে দেখা যায়, “ভিডিও ক্যামেরাকরা হয়ে থাকে ইহা ইসলামের দৃষ্টিতে কতটুকু জায়েয? জানালে খুশী হবো।
উ : মহান আল্লাহ পাক উনার কলিমা শরীফকে বুলন্দ করার জন্য শরয়ী বিধান মোতাবেক যেকোন অনুষ্ঠানকে ভিডিও করা শরীয়তসম্মত।
আর মাসিক পৃথিবীজুলাই/৯৬ইং সংখ্যায় নিম্নলিখিত প্রশ্নোত্তর ছাপা হয়-
প্রশ্ন : টেলিভিশনের অনুষ্ঠান দেখা জায়েয আছে কিনা। যদি থাকে কোন ধরণের অনুষ্ঠান দেখা জায়েয এবং কোন ধরণের অনুষ্ঠান দেখা নাজায়েয। অনুগ্রহ করে বিস্তারিত জানালে কৃতজ্ঞ থাকব।
উত্তর : টেলিভিশন একটি যন্ত্র এবং সর্বাধুনিক ও সর্বোৎকৃষ্ট প্রচার মাধ্যম। নিছক যন্ত্র হিসেবে এর কোন দোষ নেই। এতে যেসব অনুষ্ঠান প্রচার করা হয় শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে তার দোষগুণের উপরই নির্ভর করবে কোনটি দেখা জায়েয এবং কোনটি জায়িয নয়। নীতিগতভাবে একথা বলা যায় যে, টেলিভিশনে যেসব অনুষ্ঠান প্রচার করা হয়, তার মধ্যে যেসব অনুষ্ঠান বাস্তবে দেখা, শোনা ও উপভোগ করা নাজায়েয তা টেলিভিশনের পর্দায়ও নাজায়েয। যেসব অনুষ্ঠান নির্মল, নিষ্কলুষ ও শিক্ষণীয় এবং যাতে নারী সৌন্দর্য প্রদর্শিত হয়না - সর্বোপরি ইসলামী আকীদা বিশ্বাস ও তাহযীব তামাদ্দুনের খেলাফ নয় তা দেখা বাস্তবে যেমন জায়েয তেমনি টেলিভিশনেও জায়েয। পক্ষান্তরে যেসব অনুষ্ঠান অশ্লীল চরিত্র বিধ্বংসী এবং ইসলামী আকীদা বিশ্বাস ও তাহযীব তামাদ্দুনের বিপরীত তা দেখা যেমন বাস্তবে না জায়েয তেমনি টেলিভিশনের পর্দায়ও না জায়েয।
কাজেই টেলিভিশনের সকল অনুষ্ঠান দেখা ঢালাওভাবে জায়েয কিংবা না জায়েয বলা যাবে না। বরং টেলিভিশন এমন একটি প্রচার মাধ্যম, এর গোড়ায় যারা রয়েছেন তাদের হাতে যদি সুষ্ঠু পরিকল্পনা থাকে এবং তারা যদি এ ব্যাপারে যত্নবান হন তাহলে এর মাধ্যমে জাতিকে আদর্শ নৈতিকতা ও জাগতিক বিষয়াবলীর শিক্ষাদান এবং নিরক্ষরতা দূরীকরণসহ সার্বিক পুনর্গঠন করা এবং সমগ্র জাতির মাঝে চিন্তার ঐক্য আনয়ন করা ও সামাজিক শান্তিশৃংখলার পরিবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব।
এখন আমার সুওয়াল হলো- ভি.ডি.ও ক্যামেরা এবং টেলিভিশনে অনুষ্ঠান দেখা সংক্রান্ত মাসিক দ্বীন-দুনিয়া এবং মাসিক পৃথিবীর উপরোক্ত উত্তরসমূহ কি পবিত্র কুরআন শরীফ-পবিত্র হাদীছ শরীফ সম্মত হয়েছে? জানতে বাসনা রাখি।

জাওয়াব : মাসিক দ্বীন দুনিয়া ও মাসিক পৃথিবীর ভিডিও ও টেলিভিশনের অনুষ্ঠান সংক্রান্ত প্রদত্ত উত্তর সম্পূর্ণ মনগড়া, দলীলবিহীন ও পবিত্র কুরআন শরীফ-পবিত্র সুন্নাহ শরীফ তথা শরীয়তের খেলাফ।
কেননা ভিডিও ও টেলিভিশনের মূল বিষয়ই হচ্ছে ছবি। যা তোলা, আঁকা, দেখা ও দেখানো ইত্যাদি সবই হারাম ও নাজায়েয।
মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
ان اشدالناس عذابا عندا الله المصورون.
অর্থ : নিশ্চয়ই মানুষের মধ্যে ঐ ব্যক্তিকে মহান আল্লাহ পাক কঠিন শাস্তি দেবেন, যে ব্যক্তি প্রাণীর ছবি তোলে বা আঁকে।” (বোখারী শরীফ)
তিনি আরো বলেন,
كل مصور فى النار.
অর্থ : প্রত্যেক প্রাণীর ছবি তৈরীকারীই জাহান্নামে যাবে।” (ফতহুল বারী)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার ব্যাখ্যায় ফিক্বাহর কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে,
تصویر بنانا یا بنو انا بھر حال حرام ھے خواہ دستی ھو یا عکسئی، دنون کا ایک حکم ھے-
অর্থ : প্রাণীর ছবি তৈরী করা বা তৈরী করানো সর্বাবস্থায়ই হারাম। চাই হাতে হোক অথবা ক্যামেরায়, উভয়ের একই হুকুম।” (বাহারে শরীয়ত)
অর্থাৎ ক্যামেরা, ভিডিও বা হাতে যেকোন পদ্ধতিতেই হোক না কেন, প্রাণীর ছবি তোলা, আঁকা এবং রাখা, দেখা ইত্যাদি যেমন হারাম ও নাজায়েয, তেমনি তা কঠিন শাস্তি পাওয়ারও কারণ।
অথচ এ স্পষ্ট হারাম ও নাজায়েযকে দ্বীনের খেদমতের নাম দিয়ে উক্ত দ্বীন দুনিয়া পত্রিকায় মানুষ তথা প্রাণীর ছবিযুক্ত যেকোন অনুষ্ঠানকে ভিডিও-ক্যামেরা করা শরীয়তসম্মত বলে উল্লেখ করা হয়েছে। যা মূলত কুফরী হয়েছে। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত হয়েছে,
الحلال بين والحرام بين.
অর্থ : হালাল স্পষ্ট এবং হারামও স্পষ্ট।
অর্থাৎ দ্বীন ইসলামে কোনটি হালাল এবং কোনটি হারাম, তা সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করে দেয়া হয়েছে। অতঃপর যদি কেউ কোন হারামকে হালাল এবং কোন হালালকে হারাম করার অপচেষ্টা চালায়, তবে তা হবে সম্পূর্ণ কুফরী এবং সে কাফির হয়ে যাবে।
পবিত্র কুরআন শরীফ ‍উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
فيحلوا ما حرم الله زين لهم سوء اعمالهم والله لا يهد القوم الكافرين.
অর্থ : অতঃপর মহান আল্লাহ পাক যা হারাম করেছেন, তারা তা হালাল করে। মূলত তাদের জন্য মন্দ বা নিকৃষ্ট আমলই শোভন করে দেয়া হয়েছে এবং মহান আল্লাহ পাক কাফির সম্প্রদায়কে হিদায়েত দান করেন না।
অতএব, পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের উপরোক্ত সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দ্বারাই মাসিক দ্বীন দুনিয়ার প্রদত্ত বক্তব্য অশুদ্ধ, হারাম, নাজায়েয ও কুফরী প্রমাণিত হলো।
উল্লেখ্য, মাসিক দ্বীন দুনিয়া পত্রিকার ন্যায় মাসিক পৃথিবীর বক্তব্যও অশুদ্ধ, নাজায়েয, হারাম ও কুফরীমূলক হয়েছে।
যেমন উক্ত পৃথিবী পত্রিকায় বলা হয়েছে যে, “টেলিভিশনে যেসব অনুষ্ঠান প্রচার করা হয় ....... তেমনি টেলিভিশনেও জায়েয।
মূলত পৃথিবীর এ বক্তব্যও চরম জেহালতপূর্ণ, মনগড়া, দলীলবিহীন ও কোরআন-সুন্নাহ্র পরিপন্থী। কেননা বাস্তবে দেখা ও টেলিভিশনে দেখা এক জিনিস নয়। বাস্তবে যা দেখা যায় বা দেখা হয়, তা ছবি নয় কিন্তু টেলিভিশনে যা দেখা বা দেখানো হয়, তা হচ্ছে ছবি। যা শরীয়তে সম্পূর্ণরূপে হারাম।
সুতরাং বাস্তবে যেমন এক পুরুষ অপর পুরুষকে, এক মহিলা অপর মহিলাকে দেখা জায়েয। টেলিভিশনে ছবির কারণে তা দেখা কখনোই জায়েয হবেনা, বরং সম্পূর্ণরূপে হারাম হবে। এ ছাড়া টেলিভিশনে পুরুষ যেমন বেগানা মেয়েলোককে দেখে থাকে, তদ্রুপ মেয়েরাও বেগানা পুরুষকে দেখে থাকে। তাও শরীয়তে সম্পূর্ণ হারাম ও নাজায়েয।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
لعن الله الناظر والمنظور اليه.
অর্থ : যে দেখে এবং যে দেখায়, উভয়ের প্রতি মহান আল্লাহ পাক উনার লানত।
কাজেই কোন অবস্থাতেই টেলিভিশনে প্রাণীর ছবি সংক্রান্ত অনুষ্ঠান দেখা, শোনা ও উপভোগ করা জায়েয হবেনা। তা যতই নির্মল, নিষ্কলুষ ও শিক্ষণীয় হোক বা তাতে যতই উপকারিতা থাকুক না কেন?
যেমন মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ মুবারক করেছেন,
يسئلو نك عن الخمر والميسر قل فيهما اثم كبير ومنا فع للناس واثم اكبر من نفعهما.
অর্থ : “(হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আপনাকে মদ ও জুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। আপনি বলে দিন, মদ ও জুয়ার মধ্যে মানুষের জন্য ফায়দা রয়েছে। তবে ফায়দার চেয়ে গুণাহ্ই বড়।
সুতরাং মদ ও জুয়ার মধ্যে উপকারিতা থাকা সত্বেও তা যেমন গ্রহণীয় নয়, বরং শরীয়তে হারাম। তদ্রুপ প্রাণীর ছবির মাধ্যমে প্রচারিত অনুষ্ঠানে শিক্ষণীয় বিষয় বা উপকারিতা থাকা সত্বেও তা শরীয়তে হারাম যেহেতু শরীয়তে প্রাণীর ছবি তোলা, আঁকা, রাখা, দেখা সবই হারাম।
অতএব, স্পষ্ট হলো যে, মাসিক দ্বীন দুনিয়া ও মাসিক পৃথিবীর উপরোক্ত বক্তব্য সম্পূর্ণরূপে অশুদ্ধ ও শরীয়তের খেলাফ। সাথে সাথে স্পষ্ট নাজায়েয ও হারামকে জায়েয ফতওয়া প্রদানের কারণে কুফরী হয়েছে। তাই উক্ত কুফরীমূলক মনগড়া বর্ণনা থেকে তাদের খাছ তওবা করা ফরয-ওয়াজিব।
[বিঃদ্রঃ- বিস্তারিত জানতে হলে মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকার ২৫তম সংখ্যায় মাসিক পৃথিবীর ভুলের জাওয়াব পড়ুন। আরো বিস্তারিত জানতে হলে ৫ম, ৬ষ্ঠ ও ৭ম সংখ্যা পাঠ করুন। যাতে শত শত দলীল-আদিল্লার মাধ্যমে ছবি সংক্রান্ত বিষয়াদি হারাম, নাজায়েয প্রমাণ করা হয়েছে।]

আবা-৩৮