সুন্নতি খাবার গোশত
Related image২.গোশত( লা’হম)

গােশত হচ্ছে খাদ্যের সাইয়্যিদ বা সর্দার।

এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে

عن حضرت أبي الدرداء رضی الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله
علي وتلم سيد طعام أهل الدنيا وأهل الجنة الخ.

অর্থ : “হযরত আবু দারদা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, দুনিয়াবাসী ও জান্নাতবাসীদের খাদ্যের মধ্যে
গোশত হলো সাইয়্যিদ।” সুবহানাল্লাহ! (ইবনে মাজাহ শরীফ : কিতাবুত
ক্বিয়ামাহ : হাদীস শরীফ নং ৩৩০৫)।
 ২(১) তাদের গোশত  লাহুমুল কাতিফ : নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি গােশতের মধ্যে
কাধের গোশতকে উত্তম বলেছেন এবং খাসির বা বকরীর কাধের গোশতে সর্বাধিক
পছন্দ করতেন। এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে

عن حضرت أبي هريرة رضي الله تعالى عنه أن رسول الله صلى الله عليه وسلم
يعجبه في الشاة إلا الكيف

অর্থ : “হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত।
তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি বকরীর কাধের গোশতে সর্বাধিক পছন্দ করতেন।” (আখলাকুন নবী)।
২(২) পিঠের গােশত  লাহমুয যাহর : এ সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ
শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে

عن حضرت عبد الله بن جعفر رضى الله تعالى عنه يحدث ابن البير رضى الله
تعالى عنه وقد تكر لهم جورا أو بعيا أنه سمع رسول الله صلى الله عليه وسلم
قال والقوة يلقون لرسول الله صلى الله عليه وسلم اللحم يقول أطيب اللخم لخه                                                         ১৪


অর্থ : “হযরত আবদুল্লাহ ইবনে জা'ফর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার
থেকে তিনি হযরত ইবনে যুবায়ির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণনা।
করেন- তিনি উনাদের জন্য একটি মেষ অথবা উট যবেহ করেছিলেন। নরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে তিনি
ইরশাদ মুবারক করতে শুনেছেন, যখন লোকেরা উনার জন্য গোশত বললেন,
তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
ইরশাদ মুবারক করছিলেন, গোশতের মধ্যে অপেক্ষাকৃত উত্তম হচ্ছে পেটে
গোশত।" (ইবনে মাজাহ শরীফ : কিতাবুত ক্বিয়ামাহ : হাদীস শরীফ নং ৩৩০৮)
২(৩) বাহুর গােশত লাহমুয যিরা' : এ সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ।
শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে

صلى الله عليه وسلم

عن حديث أبي هريرة رضي الله تعالى عنه قال أتي الله
بلحم فرفع إليه الدرة وكانت تعجبه فتهم منها

অর্থ : “হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত।
তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার জন্য! গোশত আনা হল এবং উনাকে বাহুর গোশত পরিবেশন করা
হল। তিনি এটা পছন্দ করেছেন। তিনি তা নুরুল্লাহ মুবারক (দাত মুবারক) দিয়ে।
ছিড়ে ছিড়ে চিবিয়ে খেলেন।” (তিরমিযী শরীফ : কিতাবুত ক্বিয়ামাহ : হাদীছ
শরীফ নং ১৮৩৭, ইবনে মাজাহ শরীফ : হাদীছ শরীফ নং ৩৩০৭)।
অন্য বর্ণনায় বর্ণিত রয়েছে

বাহুর গ হু আলাইহি।
বিয়ে খেলেছেন তাকে

عن حضرت أم المؤمنين الثالثة الصديقة عليها السلام قالت ما كان الذرا أخب
اللحم إلى رسول الله صلى الله عليه وسلم ولكن كان لا يجد اللخم الا غبا فگان
عجل اليه لأنه أجلها ضجا.

অর্থ : “হযরত উম্মুল মু'মিনীন আছ ছালিছা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার
থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার নিকটে বাহুর গােশত অন্য সব অংশের গােশতের চেয়ে বেশী প্রিয়।
ছিল তা নয়, বরং প্রকৃত ব্যাপার এই যে, অনেক দিনের ব্যবধানে তিনি গােশত
খেতেন। এই জন্য উনাকে বাহু গোশত পরিবেশন করা হতো। কেননা বাহুর
গােশত তাড়াতাড়ি সেদ্ধ হয় এবং গলে যায় ।" (তিরমিযী শরীফ; কিতাবুত।
স্বয়ামাহ : হাদীছ শরীফ নং ১৮৩৮)।
২(8) ভুনা গােশত লাহমুন মাশউয়ী : নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ,
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ভুনা গােশতও গ্রহণ করেছেন।

إن حضرت أم المؤمنين السادسة أم سلمة عليها السلام أخبرته أنها قت إلى
با مشويا فأكل منه ثم قام إلى الصلاة وما توضا
رسول الله صلى                                                                                                                                  ১৫


মহাসম্মানিত সুন্নতী খাদ্যসমূহ

অর্থ : “হযরত উম্মুল মু'মিনীন আস সাদিসাহ আলাইহাস সালাম উনার থেকে
বর্ণিত। নুরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল
উনার মুবারক খেদমতে তিন (ছাগলের) পাজরের ভুনা গোশত পেশ করলেন
* নুরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি না।
হতে খেলেন, তারপর নামাযে দাড়িয়ে গেলেন কিন্তু (পুনরায়) ওযূ করেননি।”
(তিরমিযী শরীফ : কিতাবুত ক্বিয়ামাহ : হাদীস শরীফ নং ১৮২৯)
২(৫) নেহারী আল কুরা’ : এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার
মধ্যে বর্ণিত রয়েছে

عن حضرت عبد الرحمن بن عابس رحمه الله عليه عن أبيه قال سألت خضر
أم المؤمنين الثالثة الصديقة عليها السلام عن لحوم الأضاحي؟ قالت تا تخبأ
الا رسول الله صلى الله عليه وسلم شهرا

অর্থ : “হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আবিস রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার
থেকে বর্ণিত, উনার পিতা বলেন, উম্মুল মুমিনীন আছ ছালিছা হযরত ছিদ্দীকা
আলাইহাস সালাম উনাকে কুরবানীর গােশত সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করলাম। উম্মুল
মু'মিনীন আছ ছালিছা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি বললেন, আমরা
এক মাস পর্যন্ত নুরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার খিদমত মুবারক পেশ করার জন্য কুরবানীর পশুর পা তুলে
রাখতাম। এরপর তিনি তা খেতেন।” (নাসায়ী শরীফ : কিতাবুদ দহিয়্যা : হাদীছ
শরীফ নং ৪৪৩৩)।
নুরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
যেসব প্রাণীর গোশত গ্রহণ করেছেন সেসব কতিপয় প্রাণীর গোশত বিবরণ :
২(৬) উটের গােশত লাহমুল বায়ীর  বা লাহমুল বুদনাহু : হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন

ثم انصرف إلى المنكر فنحر ثلاثا وسيين بيده ثم آغطى عليا فنحر ما غبر
كلا من
وأشركه في هذه ثم آمر من كل بذرة ببضعة قعلث في قدر قطبخ
لحمها وشرب من مرقها.

অর্থ : “অতঃপর নুরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম তিনি কুরবানী উনার স্থানে এসে নিজ হাত মুবারকে (১০৫টি উটের
মধ্য থেকে) ৬৩ টি উট নহর করেন আর হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ।
আলাইহিস সালাম উনাকে বাকী (৩৭টি) উট নহর করার দায়িত্ব দেন এবং
উনাকে উনার কুরবানীর মধ্যে শরীক করে নেন। অতঃপর প্রত্যেকটি উট থেকে
এক টুকরা করে গোশত পাতিলে একত্রিত করে রান্না করতে বলেন। অতঃপর
উনারা উভয়ে উক্ত গোশত থেকে আহার করে এবং সুরুয়া পান করেন।”
(মুসলিম শরীফ : কিতাবুল হজ্জ : হাদীছ শরীফ নং ২৮৪০)।                                                       ১৬

২(৭) বকরীর গােশত - লাহমুশ শাত : এ সম্পর্কে বর্ণিত রয়েছে

عن حضرت عمرو بن أمية رضى الله تعالى عنه أخبره أنه رأى النبي صلى الله علیه
ولم يځت من كتف شاة في يده فدعي إلى الصلاة فألقاها والسكن التي يخت
بها ثم قام فصلى ولم يتوضأ


অর্থ : “হযরত আমর ইবনে উমাইয়্যাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার।
থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনাকে তিনি নিজ হাত মুবারক-এ বকরীর কাধের গােশত থেকে কেটে
খেতে দেখেছেন। তারপর নামাযের সময় হলে তিনি তা রেখে দিলেন এবং
ছুরিটিও (রেখে দিলেন) যা দিয়ে তিনি কেটে খাচ্ছিলেন। তারপর উঠলেন এবং
নামায আদায় করলেন। তিনি (নতুন) ওযু করলেন না।” (বুখারী শরীফ :
কিতাবুত ক্বিয়ামাহ : হাদীস শরীফ নং ৫৪০৮)
২(৮) মুরগীর গােশত - লাহমুদ দাজাজাহ:  বর্ণিত রয়েছে

عن حضرت ابن موسی رضی الله تعالى عنه قال رأيت رسول الله صلى الله عليه
وسلم يأكل لحم دجاج

অর্থ : “হযরত আবু মূসা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি
বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনাকে আমি মুরগির গোশত গ্রহণ করতে দেখেছি।” (তিরমিযী শরীফ :
কিতাবুত ক্বিয়ামাহ : হাদীস শরীফ নং ১৮২৭)।
 ২(৯) হুবারা নামক পাখির গােশত - লাহমুল হুবারা : বর্ণিত রয়েছে

عن حضرت ابراهيم بن عمر بن سفينة زخمه الله عليه عن أبيه عن جده قال
بالی
أكلت مع رسول الله صلى الله عليه وسلم لحم

অর্থ : “হযরত ইবরাহীম ইবনে উমর ইবনে সাফিনা রহমতুল্লাহি আলাইহি
(তিনি বুরাইদা ইবনে উমর ইবনে সাফিনা নামেও পরিচিত) উনার থেকে
পর্যায়ক্রমে উনার পিতা ও দাদার সুত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নূরে।
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে।
হুবারা গোস্ত খেয়েছি।" (আবু দাউদ শরীফ; কিতাবুত ক্বিয়ামাহ : হাদীছ শরীফ।
নং ৩৭৯৭, তিরমিযী শরীফ : কিতাবুত ক্বিয়ামাহ : হাদীস শরীফ নং ১৮২৮)।
২(১০) খরগােশের গােশত - লাহমুল আঝনাব : বর্ণিত রয়েছে

عن حضرت انس بن مالك رضي الله تعالى عنه قال انفجنا أرنبا يمر الظهران
ی آخدها فجئت بها إلى ابن طلحة
فسعوا عليها حتى تغوا فسعت عليها
فبعث إلى النبي صلى الله عليه وسلم يوركيها آؤ فخذيها فقبله 17                                                        ১৭

অর্থ : “হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে।
বর্ণিত। তিনি বলেন, মাররুয যাহরান নামক স্থানে আমাদের পাশ দিয়ে একটি
খরগোশ লাফিয়ে চলে গেল। দৃশ্য দেখে আমার সঙ্গীরা খরগোশ কে ধাওয়া
করেন, কিন্তু উনারা সেটিকে পাকড়াও করতে না পেরে ক্লান্ত ও ব্যর্থ হয়ে ফিরে
আসেন। তবে আমি ধাওয়া করে এর নাগাল পাই এবং ধরে হযরত আবু তালহা
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার কাছে নিয়ে আসি। (তিনি খরগােশটি জবাই
করে) নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনার মুবারক খিদমতে আমাকে দিয়ে উরু অথবা পেছনের অংশ পাঠান । নুরে।
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সেগুলাে
গ্রহণ করেন।" (বুখারী শরীফ : কিতাবুয যাবীহা ওয়াল সাঈদ : হাদীস শরীফ নং
৫৪৮৯)
 গোশত খাওয়ার উপকারিতা :
১. গােশত শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করে। এ প্রসঙ্গে বর্ণিত রয়েছে


قال خطرت الهري رحمة الله عليه اكل اللحم يزيد منبعین قوة

আর্থ : “ইমাম হযরত যুহরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, গোশত ভক্ষণ
দেহে ৭০ গুণ শক্তি বৃদ্ধি করে। সুবহানাল্লাহ! (যাদুল মা'য়াদ ফি হাদয়ি খাইরিল
ই'বাদ ৪র্থ খণ্ড ৩৪০ পৃষ্ঠা)।
২. গােশত চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে । এ প্রসঙ্গে বর্ণিত রয়েছে

قال حضرت محمد بن واسع رحمة الله عليه الله يزيد في البصر

অর্থ : “মুহম্মদ ইবনে ওয়াসি' রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, গােশত
চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে। সুবহানাল্লাহ! (যাদুল মা'আদ ফী হাদয়ি খাইরিল
ই’বাদ ৪র্থ খণ্ড ৩৪০ পৃষ্ঠা) ।
৩. গোশত শরীরের রং ফর্সা করে।
8. পেটের ক্ষুধা নিবারণ করে।
৫. আকৃতি সুন্দর করে ।
এ প্রসঙ্গে বর্ণিত রয়েছে

عن حضرت علی بن ابي طالب عليه السلام كلوا اللحم فانه يصفي اللون
يخمص البطن وحسن الخلق

| অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম উনার
থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, তােমরা গােশত খাও। কেননা গােশত শরীরের রং
ফর্সা করে, পেটের ক্ষুধা নিবারণ করে এবং আকৃতি সুন্দর করে।" (যাদুল মা'য়াদ
ফি হাদয় যাহারল হবাদ ৪র্থ খণ্ড ৩৪০ পৃষ্ঠা: তিব্বে নববী লি ইবনে কাইয়্যিম।
১ম খন্ডের ২৭৬ পৃষ্ঠা)
অন্য বর্ণনায় বর্ণিত রয়েছে

عن حضرت علی علیه السلام من تركه أربعين ليلة سناء خلقه 18                                                             ১৮

অর্থ : “সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম উনার
থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি ৪০ রাত গােশত খাওয়া পরিত্যাগ করবে
সে ব্যক্তির চরিত্র মন্দ হয়ে পড়বে।” (যাদুল মা'য়াদ ফি হাদয়ি খাইরিল ইবাদ
৪র্থ খণ্ড ৩৪০ পৃষ্ঠা; তিব্বে নববী লি ইবনে কাইয়্যিম ১ম খণ্ড ২৭৬ পৃষ্ঠা)।
| অন্যত্র বর্ণিত রয়েছে

قال حضرت نافع رحمة الله علیه گان حضرت ابن عمر رضی الله تعالی عنه
إذا كان رمضان لم يفته اللحم واذا سافر لم يفثة اللحم

অর্থ : “হযরত ইমাম নাফে রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত যে,
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি পবিত্র রমাদ্বান
শরীফে এবং সফরে গোশত পরিত্যাগ করেন।” সুবহানাল্লাহ! (যাদুল মা'য়াদ
ফি হাদয়ি খাইরিল ই’বাদ ৪র্থ খণ্ড ৩৪০ পৃষ্ঠা; তিব্বে নববী লি ইবনে কাইয়্যিম
১ম খন্ডের ২৭৬ পৃষ্ঠা)                                                                                                                ১৯
রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-১৮
রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-১৮
অনন্তকালব্যাপী পবিত্র সায়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল জারি এবং উনার কার্যক্রম।
ওহাবী, সলাফী আর লা মাযহাবীরা ছাড়া সকল সুন্নি মুসলমান বিশেষভাবে যারা কোন সিলসিলা ভূক্ত উনারা পবিত্র ১২ ই রবীউল আউয়াল শরীফ এই মর্যাদাবান দিবস কমপক্ষে ১ দিনের জন্যে হলেও পালন করে থাকেন। এই দিনে মাহফিলের আয়োজন করে তবারুকের ব্যবস্থা করেন। বাংলাদেশে পর পর ৩ দিন বা এক নাগাড়ে ১২ দিন পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনার অনুষ্ঠান পালন করা সহজেই চোখে পরে। কিন্তু যিনি যামানার লক্ষ্যস্থল ওলী আল্লাহ যামানার ইমাম ও মুস্তাহিদ, সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম তিনি বিশ্বে সর্ব প্রথম এই কায়িনাতের বুকে প্রথমে মাস ব্যাপী, পরে ৪৫ দিন ব্যাপী , পরে ৬৩ দিন ব্যাপী পবিত্র সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ উনার মাহফিল চালু করেন।
কিন্তু যিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হূযুর পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনার সঙ্গে নিবিড় ভাবে নিসবত মুবারক প্রাপ্ত তিনিতো কেবল কয়েকদিন বা মাস বা বছর ব্যাপী অনুষ্ঠান পালন করেই তৃপ্ত হবে না এটাই স্বাভাবিক। সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আযম হযরত মুরশিদ কিবলা আলাইহিস সালাম তিনি যেহেতু পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ এবং পবিত্র হাদিস শরীফ উনার পরিপূর্ণ মিছদাক তাই তিনি বিশ্ববাসীর হিদায়েত লাভের উদ্দেশ্যে, নাজাতের উদ্দেশ্যে প্রকাশ করেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ইজতিহাদ । " পবিত্র সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ পালন করা সকলের জন্য সকল সময়ের জন্য ফরয"।
মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুল খুলাফা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ঘোষণা মুবারক করেন , ‘হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা ২৪ ঘণ্টা তথা দায়িমীভাবে সারা জীবন সম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করেছেন" ফলে তিনিও হযরত সাহাবায়ে কিরাম রদিয়াল্লাহু আনহু উনাদের অনুসরণে সারা বছর তথা আজীবনব্যাপী সম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনার সম্মানিত মাহফিল মুবারক জারী করেন। আর এই অনন্তকাল ব্যাপী জারীকৃত মুবারক মাহফিল উনাকে আরও স্পস্ট করার জন্য জারী করেন বিশেষ ৬৩ দিন মাহফিল। সুবহানাল্লাহ।
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি সমস্ত জিন-ইনসান, কায়িনাতবাসীকে জানিয়ে দিন, মহান আল্লাহ পাক তিনি যে, ফযল, করম ও রহমত মুবারক হিসেবে উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পাঠিয়েছেন, সেজন্য তারা যেন খুশি প্রকাশ করে, ঈদ পালন করে তথা মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করে। এই খুশি প্রকাশ করাটা, ঈদ পালন করাটা, মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করাটা সবকিছু থেকে উত্তম; যা তারা দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য সঞ্চয় করে।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত সূরা ইউনূস শরীফ : সম্মানিত আয়াত শরীফ ৫৮)
এই সম্মানিত আয়াত শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার হাবীব, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করা প্রত্যেক মুসলমান, জিন-ইনসান, কায়িনাতবাসীর জন্য ফরয করে দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
তাহলে এখন বলার বিষয় হচ্ছে, এই মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ কতক্ষণ সময় ধরে পালন করতে হবে? এই সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اِنَّـاۤ اَرْسَلْنٰكَ شَاهِدًا وَّمُبَشّـِرًا وَّنَذِيْرًا. لِتُؤْمِنُوْا بِاللهِ وَرَسُوْلِهٖ وَتُعَـزِّرُوْهُ وَتُوَقّـِرُوْهُ وَتُسَبّـِحُوْهُ بُكْرَةً وَّاَصِيْلًا.
“নিশ্চয়ই আমি আমার হাবীব, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে শাহিদ তথা (উপস্থিত, হাজির, নাযির) সাক্ষ্যদানকারী, সুসংবাদদানকারী ও ভীতি প্রদর্শনকারী হিসেবে সৃষ্টি করেছি, প্রেরণ করেছি। যেন তোমরা ঈমান আনতে পারো মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের প্রতি। অতএব, তোমরা যথাযথভাবে নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম দাও, উনার সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম মুবারক করো এবং সকাল-সন্ধ্যা তথা দায়িমীভাবে অনন্তকাল যাবৎ উনার ছানা-ছিফত মুবারক করো তথা উনার মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করো।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত সূরা ফাতহ শরীফ : সম্মানিত আয়াত শরীফ : ৮-৯)
এই সম্মানিত আয়াত শরীফ উনার মাধ্যমে মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত জিন-ইনসান ও কায়িনাতবাসীর জন্য উনার হাবীব, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বিলাদত শরীফ উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করে সকাল-সন্ধ্যা, দায়িমীভাবে অনন্তকাল মহাসম্মনিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করার নির্দেশ মুবারক প্রদান করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
শুধু তাই নয়, মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত কায়িনাতবাসীকে নির্দেশ দেয়ার পূর্বেই তিনি নিজেই উনার হাবীব, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সৃষ্টি করার পর থেকে অদ্যবধি দায়িমীভাবে মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করে যাচ্ছেন এবং অনন্তকাল যাবৎ মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করতেই থাকবেন। (সুবহানাল্লাহ)
আর যখন থেকে হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে, তখন থেকে হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারাও নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করে যাচ্ছেন। (সুবহানাল্লাহ)
সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اُبَـىِّ بْنِ كَعْبٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنّـِىْ أُكْثِرُ الصَّلٰوةَ عَلَيْكَ فَكَمْ اَجْعَلُ لَكَ مِنْ صَلٰوتِىْ فَقَالَ مَا شِئْتَ قُلْتُ اَلرُّبُعَ قَالَ مَا شِئْتَ فَاِنْ زِدْتَ فَهُوَ خَيْرٌ لَّكَ. قُلْتُ اَلنّـِصْفَ قَالَ مَا شِئْتَ فَإِنْ زِدْتَ فَهُوَ خَيْرٌ لَّكَ قُلْتُ فَالثُّلُثَيْنِ قَالَ مَا شِئْتَ فَإِنْ زِدْتَ فَهُوَ خَيْرٌ لَّكَ قُلْتُ اَجْعَلُ لَكَ صَلٰوتِىْ كُلَّهَا قَالَ اِذًا تُكْفٰى هَمُّكَ وَيُكَفَّرُ لَكَ ذَۢنبُكَ .
অর্থ: “হযরত উবাই ইবনে কা’ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! নিশ্চয়ই আমি আপনার উপর বেশি বেশি ছলাত মুবারক পাঠ করতে চাই, আপনার ছানা-ছিফত মুবারক করতে চাই তথা আপনার মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করতে চাই। তাহলে আমি কী পরিমাণ সময় আপনার উপর ছলাত মুবারক পাঠ করবো, আপনার ছানা-ছিফত মুবারক করবো, আপনার মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করবো? অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আমি কত ঘণ্টা আপনার উপর ছলাত মুবারক পাঠ করবো, আপনার ছানা-ছিফত মুবারক করবো তথা আপনার মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করবো? আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনার যতক্ষণ ইচ্ছা। আমি বললাম, এক চতুর্থাংশ সময় তথা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৬ ঘণ্টা আপনার উপর ছলাত মুবারক পাঠ করবো, আপনার ছানা-ছিফত মুবারক করবো, আপনার মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করবো? আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনার যতক্ষণ ইচ্ছা, আপনি করুন। তবে যদি এর চেয়ে বেশি সময় করেন, তাহলে তা আপনার জন্য উত্তম হবে। আমি বললাম, তাহলে আমি অর্ধেক সময় তথা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১২ ঘণ্টা আপনার উপর ছলাত মুবারক পাঠ করবো, আপনার ছানা-ছিফত মুবারক করবো, আপনার মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করবো? আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনার যতক্ষণ ইচ্ছা, আপনি করুন। তবে যদি এর চেয়ে বেশি সময় করেন, তাহলে তা আপনার জন্য উত্তম হবে। আমি বললাম, তাহলে আমি আমার তিন ভাগের দুই ভাগ সময় তথা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৬ ঘণ্টা আপনার উপর ছলাত মুবারক পাঠ করবো, আপনার ছানা-ছিফত মুবারক করবো, আপনার মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করবো? আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনার যতক্ষণ ইচ্ছা, আপনি করুন। তবে যদি এর চেয়ে বেশি সময় করেন, তাহলে তা আপনার জন্য উত্তম হবে। তখন আমি বললাম, তাহলে আমি আমার সম্পূর্ণ সময় তথা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ২৪ ঘণ্টাই আপনার উপর ছলাত মুবারক পাঠ করবো, আপনার ছানা-ছিফত মুবারক করবো, আপনার মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করবো? তখন আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, যদি আপনি এরূপ করতে পারেন, তাহলে আপনার সমস্ত নেক মাক্বছূদগুলো পূর্ণ করে দেয়া হবে এবং আপনার সমস্ত গুনাহখতাগুলো ক্ষমা করে দেয়া হবে।” সুবহানাল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ, মুস্তাদরকে হাকিম শরীফ ২/৪২১, শুয়াবুল ঈমন শরীফ ৩/১৩৮, মিশকাত শরীফ, জামিউল আহাদীছ শরীফ ৩২/৩৭৩, জামিউল উছূল শরীফ ১১/৮৪৬৭, রিয়াদুছ ছালিহীন ১/৩৪৭ ইত্যাদি)
মূলত: নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূরপাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পূর্ন ইত্তেবা করার মাধ্যমেই হাক্বীকী ভাবে উনার সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করা সম্ভব।
নূরে মুজাসসাম , হাবীবুল্লাহ , হুযূরপাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অনুসরন প্রসঙ্গে, আল্লাহ পাক ইরশাদ মুবারক করেন,
وَمَا آتَاكُمُ الرَّسُولُ فَخُذُوهُ وَمَا نَهَاكُمْ عَنْهُ فَانتَهُوا ۚ وَاتَّقُوا اللَّـهَ ۖ إِنَّ اللَّـهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ
অর্থাৎ: নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ , হুযূরপাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যা এনেছেন, তা আঁকড়িয়ে ধর, যা থেকে বিরত থাকতে বলেছেন, তা থেকে বিরত থাক।
সুরা হাশর শরীফ: আয়াত শরীফ-৭
আর অনুসরনটা যে ২৪ ঘন্টা এবং সারাজীবনব্যপী করতে হবে তা হযরত উবাই বিন ক্বাব রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্নিত উপরোক্ত হাদীছ শরীফ থেকে সুস্পষ্ট।
রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-১৭
রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-১৭
অনন্তকালব্যাপী পবিত্র সায়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল জারি এবং উনার কার্যক্রম।
নামকরণে চরম পরিশুদ্ধ অন্তর মুবারকের বহিঃপ্রকাশঃ

আমাদের দেশসহ অনেক মুসলিম দেশে পবিত্র ১২ রবীউল আউয়াল শরীফ পালিত হয় অত্যন্ত ভাব গাম্ভীর্যের সাথে। অবশ্য অনেক তথকথিত মুসলিম দেশ এই সুমহান দিনের মর্যাদা বুঝতে অক্ষম থাকায় তারা এই বিশেষ দিন পালন করার নিয়ামত অর্জনে ব্যর্থ হচ্ছে। নাউযুবিল্লাহ। একটি বিষয় দিবালোকের মত স্পষ্ট যে "পবিত্র ১২ রবীঊল আউয়াল শরীফ " পালন আসলে অন্তরের পরিশুদ্ধতা, আকিদার বিশুদ্ধতার উপর নির্ভরশীল। চাইলেই কেউ অনুষ্ঠান পালন করতে পারেনা এবং পারবে না। কোন দেশ, জাতি, সমাজ,গোত্র, সিলসিলা সম্পর্কে ধারণা করতে চাইলে কেবল এই একটি মাপকাঠিই যথেস্ট। যারা এই বিশেষ দিনের প্রতি মর্যাদাবান উনারাই সকল দিক থেকে শ্রেষ্ঠ। সুবহানাল্লাহ।
আমাদের দেশের তথাকথিত মৌলভী শ্রেণী এই বিশেষ দিন পালন করতো "সীরাতুন্নবী সল্লাল্লাহু আলাইহিসসালাম" হিসেবে। কিন্তু এই নামকরণের মধ্যেই ছিল চরম পর্যায়ের মূর্খতা ও বেয়াদবী কেননা সীরাত শব্দ দ্বারা কেবল "চরিত্র মুবারক" কে বোঝায় অর্থাৎ চরিত্র মুবারক আলোচনার অনুষ্ঠানই ছিল "সীরাতুন্নবী সল্লাল্লাহু আলাইহিসসালাম" পালনের অনুষ্ঠান। নাউযুবিল্লাহ। অথচ মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই ইরশাদ মুবারক করেন " তোমাদের জন্য তোমাদের রসূল উনার মাঝে রয়েছে সকল বিষয়ের সর্বোত্তম আদর্শ" সুবহানাল্লাহ। তাই হক্কানী রব্বানী আউলিয়া কিরামগণ পবিত্র ১২ই রবীউল আউয়াল শরীফ দিবসের অনুষ্ঠান পালন করতেন " পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম" হিসেবে, অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনি যে দিন এই যমীনে তাশরীফ মুবারক এনেছেন সেই দিন খুশীর দিন । কিন্তু যিনি মহান আল্লাহ পাক উনার লক্ষ্যস্থল ওলী আল্লাহ, যিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক সল্লাল্লাহু আলাহি ওয়াসাল্লাম উনার সঙ্গে গভীর নিসবত প্রাপ্ত, ১৫ শতকের সুমহান মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম তিনি কেবল "ঈদে মিলাদুন্নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম" এই নাম মুবারক দ্বারা তৃপ্ত নন। হযরত মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম উনার অন্তর মুবারকের সেই ব্যাকুলতার কারণেই মহান আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনাকে চরম পর্যায়ের পরিতৃপ্তি দান করেন ফলে তিনি পবিত্র ১২ই রবিউল আউয়াল শরীফ দিবসকে ঘোষণা দেন " পবিত্র সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ দিবস" অর্থাৎ সহজ অর্থ করলে দাড়ায় " শ্রেষ্ঠ দিন সমূহের মধ্যে যে দিন শ্রেষ্ঠতম"। আর পবিত্র ১২ তম সংখ্যাকে তিনি সম্মানিত করেন " সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আদাদ" শরীফ হিসেবে। " সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আদাদ" অর্থ হচ্ছে সংখ্যার দিক থেকে যে সংখ্যা শ্রেষ্ঠতম। সুবহানাল্লাহ। এই শ্রেষ্ঠতম দিন মুবারক পালনের অনুষ্ঠান হচ্ছে পবিত্র "সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ মাহফিল"। আবার পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই নাম মুবারককে আরও সম্পূর্ণতা দান করেন " পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম" হিসেবে ঘোষণা দিয়ে । সুবহানাল্লাহ।
রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-১৬
রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-১৬
বিশ্বব্যাপী কোটি কোটি মাদরাসা, মাসজিদ প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা
বলা হয় "মহান আল্লাহ পাক হচ্ছেন বান্দার ধারণা অনুযায়ী" অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি মানুষের যত সুন্দর-বিশুদ্ধ-স্বচ্ছ বিশ্বাস থাকবে মহান আল্লাহ পাক সেই বান্দাকে সেভাবেই ধরা দেবেন। তাই যখন কোন নেক নিয়ত করার প্রয়োজন হয় তখন সরবোচ্চ নিয়তই করতে হয় আর এতে দেখা যায় মানুষ কোন নেক কাজ সম্পূর্ণ করতে না পারলেও কেবল নেক নিয়তের কারণে তিনি কাজটি সম্পূর্ণ হবার সকল সওয়াব পান, সুবহানাল্লাহ। কেউ যদি পবিত্র কুর‍য়ান শরীফ হেফজ করার নিয়ত করেন এবং তা শেষ না করেই ইন্তিকাল করেন তখন সেই ব্যাক্তিকে কবরে হাফেজ হিসেবেই তৈরি করে কিয়ামতের ময়দানে তোলা হবে। সুবহানাল্লাহ।
সারা বিশ্বে কোটি কোটি মাসজিদ মাদরাসা নির্মাণ করার পরিকল্পনা হচ্ছে সেই সরবোচ্চ, বিশুদ্ধ নিয়ত যার প্রতিদান কেবল মহান আল্লাহপাকই দান করতে থাকেন কারণ তিনি হচ্ছে সর্বোত্তম দাতা ও গণী।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছেন- المسجد بيت الله و المدرسة بيتى
অর্থ : নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “সম্মানিত মসজিদ হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক উনার ঘর এবং সম্মানিত মাদরাসা হচ্ছেন- আমার ঘর।” সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুল মুরসালীন,ইমামুল মুরসালীন ,নূরে মুজাসসাম ,হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
مَنْ بَنى لِلّهِ مَسْجِدًا بَنى اللهُ لَه بَيْتًا فِيْ الْجَنَّةِ অর্থ : “যে ব্যক্তি মহান আল্লাহপাক উনার জন্য মসজিদ তৈরী করবে মহান আল্লাহপাক তিনি সম্মানিত জান্নাতে তার জন্য বালাখানা তৈরি করবেন।” সুবহান্নাল্লাহ।“হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ইরশাদ মুবারক করতে শুনেছি- “যে ব্যক্তি মহান আল্লাহপাক উনার জন্য পবিত্র মসজিদ তৈরী করবে, মহান আল্লাহপাক তিনি সম্মানিত জান্নাতে তার জন্য অনুরূপ (বালাখানা) তৈরি করবেন।” (মিশকাত শরীফ) সুবহান্নাল্লাহ।
ক্বিয়ামত পর্যন্ত পবিত্র মসজিদ ও পবিত্র মাদরাসায় যত নেক আমল হবে, সমস্ত নেক আমলের ছওয়াব তার আমলনামায় পৌছতেই থাকবে। অপরদিকে উক্ত পবিত্র মসজিদ-মাদরাসার মাধ্যমে যতো ইলমী খিদমত হবে, তার ছওয়াবও উক্ত মসজিদ মাদরাসা নির্মাণের অংশ গ্রহনকারীগণ ক্বিয়ামত পর্যন্ত পেতেই থাকবেন। সুবহানাল্লাহ।
রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-১৫
রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-১৫
রাজারবাগ শরীফে দশ তলা বিশিষ্ট সুন্নতী মসজিদ ও মাদরাসা ভবন নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা প্রসঙ্গে
স্মরনীয় যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্রতম নির্দেশক্রমে ঢাকার রাজারবাগ শরীফে মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ (মাদরাসা) প্রতিষ্ঠিত হয়। সেই সুন্নতী জামে মসজিদ ও তৎসংশ্লিষ্ট মাদরাসায় তখন থেকেই অনেক আশিকীন, মুহিব্বীন, যাকিরীন, মুরীদীন ও ত্বলিবুল ইলমগণ উনারা অধ্যয়ন, যিকির-ফিকির, ইবাদত-বন্দিগী পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস মুতাবিক ইলম মুবারক চর্চা ও গবেষণা করে আসছেন।

উল্লেখ্য যে, পবিত্রতম সুন্নতী জামে মসজিদ ও তৎসংশ্লিষ্ট মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ (মাদরাসা) প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত হুবহু মসজিদে নববী শরীফ উনার আদলে ও আদর্শে সমস্ত পবিত্র দ্বীনি কার্যক্রম সমগ্র কায়িনাতবাসীর মাঝে পৌঁছে দেয়ার আপ্রাণ কোশেশ করা হচ্ছে। বর্তমানে পবিত্র দ্বীনি কার্যক্রম সারা বিশ্বব্যাপী প্রচার-প্রসার ও বিশ্বব্যাপী মহান নেতৃত্বদান এবং আরো অধিক সংখ্যক মাদরাসার ছাত্রগণের ইলিম হাছিলের সুবিধার্থে এবং তৎসঙ্গে প্রতিষ্ঠিত মুহম্মদিয়া গবেষণা কেন্দ্রে আরো ব্যাপকভাবে গবেষণার আঞ্জাম এবং গবেষকগণের সুবিধার্থে সুন্নতী জামে মসজিদ ও তৎসংশ্লিষ্ট মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ মাদরাসা ও গবেষণাকেন্দ্রকে আরো ব্যাপকভাবে সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ১৬ তলা বিশিষ্ট মসজিদ-মাদরাসা ভবন নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। আর সেটাও করা হয় নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক নির্দেশক্রমে, পবিত্র সুন্নত পালনের সুমহান লক্ষ্যেই। সুবহানাল্লাহ! কেননা পবিত্র মসজিদে নববী শরীফ উনাকেও প্রয়োজনে সংস্কার ও সম্প্রসারণ করা হয়। মূলত উক্ত সুন্নত অনুসরণে সুন্নতী মসজিদ ও মাদরাসা সম্প্রসারন ও সংস্কারের মাধ্যমে আরেকখানা পবিত্র সুন্নত মুবারকও পালন হয়ে যাচ্ছে। সুবহানাল্লাহ! 

শুধু তাই নয় এই পবিত্র মসজিদ উনার মধ্যে যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম ও সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা নামায আদায় করবেন, উনারা জুমুয়া শরীফ উনার নামায আদায় করবেন, খুতবা শরীফ পাঠ করবেন, পবিত্র রমাদ্বান শরীফ উনার ইবাদত বন্দেগী করবেন, ছলাতুত তারাবীহ, পবিত্র ইতেক্বাফ করবেন, পবিত্র শবে ক্বদর, পবিত্র শবে বরাতে উনারা সারারাত জেগে ইবাদত বন্দেগী করবেন। পবিত্র ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আদ্বহা উনার জামায়াত আদায় করবেন। অনন্তকাল ব্যাপী পবিত্র সুমহান সম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনার মাহফিল দায়িমীভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, হবে এবং হতেই থাকবে। সুবহানাল্লাহ! অনন্তকাল ব্যাপী মহাসম্মানিত হযরত উম্মাহাতুল মুমিনীন আলাইহিন্নাস সালাম, হযরত আহলে বাইতি হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, হযরত খূলাফায়ে রাশেদীন আলাইহিমুস সালাম উনাদের আলোচনা, ছানা-ছিফত চলতেই থাকবে। যে পবিত্র সুন্নতী জামে মসজিদে প্রতিদিন দফায় দফায় পবিত্র সুমহান মীলাদ শরীফ পাঠ হচ্ছে ও হতেই থাকবে। সুবহানাল্লাহ! সেই পবিত্র সুন্নতী মসজিদের কতবড় শান মান, মর্যাদা ফাযায়িল-ফযীলত, গুরুত্ব তা আমাদেরকে চিন্তা ফিকির করে উপলব্ধি করতে হবে। সুবহানাল্লাহ!