সুমহান পুত ও পবিত্র ১১ ই জুমাদাল উলা শরীফ উনার বেমেছাল ফযীলত মুবারক

Image result for ১১ জুমাদাল উলা শরীফআন নূর, নূরুল উমাম, রহমাতুল উম্মাহ, সাইয়্যিদাতুছ ছাক্বালাইন, উম্মু আবীহা,বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক আলোচনা করার, সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করার গুরুত্ব, তাৎপর্য ও বেমেছাল ফযীলত

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
اِنَّ ذِكْرَ الصَّالـحِيْنَ تَنْزِلُ الرَّحْمَةُ
অর্থ: “নিশ্চয়ই ওলীআল্লাহগণ উনাদের আলোচনা মুবারক করলে সম্মানিত রহমত মুবারক নাযিল হয়।” সুবহানাল্লাহ্! (ইহইয়ায়ে ‘উলূমিদ্দীন, ফাদ্বাইলে আশারাহ লিযামাখশারী, কাশফুল খফা)
এখন বলার বিষয় যে, যদি ওলীআল্লাহ উনাদের আলোচনা মুবারক করলে সম্মানিত রহমত মুবারক নাযিল হয়, তাহলে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতাবানাত (মেয়ে), লখতে জিগার মুবারক, আন নূর, নূরুল উমাম, রহমাতুল উম্মাহ, সাইয়্যিদাতুছ ছাক্বালাইন, উম্মু আবীহা, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত আলোচনা মুবারক করলে, উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করলে কতো সীমাহীন রহমত মুবারক বর্ষিত হবে, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! কেননা, উনার সম্মানার্থে, উনাকে মুহব্বত করেই মানুষ ওলীআল্লাহ হয়ে থাকে। সেই ওলীআল্লাহ উনাদের আলোচনা মুবারক করলে যদি রহমত নাযিল হয়, তাহলে যিনি সম্মানিত রহমত মুবারক উনার মালিক, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত বানাত (মেয়ে), লখতে জিগার মুবারক, আন নূর, নূরুল উমাম, রহমাতুল উম্মাহ, সাইয়্যিদাতুছ ছাক্বালাইন, উম্মু আবীহা, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত আলোচনা মুবারক করলে, উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করলে কি পরিমাণ রহমত, বরকত, সাকীনা, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক বর্ষিত হবে, তা কেউ কস্মিনকালেও ভাষা দিয়ে প্রকাশ করতে পারবে না। সুবহানাল্লাহ!
প্রকৃত কথা হলো, যারা আন নূর, নূরুল উমাম, রহমাতুল উম্মাহ, সাইয়্যিদাতুছ ছাক্বালাইন, উম্মু আবীহা, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত আলোচনা করবে, উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করবে, তারা মহান আল্লাহ পাক উনার, উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের আখাচ্ছুল খাছ রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক, মা’রিফাত-মুহব্বত মুবারক, তায়াল্লুক-নিসবত মুবারক হাছিল করবে। সুবহানাল্লাহ!
মাওলানা জালালুদ্দীন রূমী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার লিখিত বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘মছনবী শরীফ’ উনার ফযীলত বর্ণনা করতে যেয়ে হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা বলেছেন, “যারা ‘মছনবী শরীফ’ পাঠ করবে, তারা ওলীউল্লাহ না হলেও ‘মছনবী শরীফ’ পাঠ করা অবস্থায় তাদের নামগুলো ওলীউল্লাহ উনাদের দফতরে লিখা থাকবে।” সুবহানাল্লাহ!
আর দ্বিতীয় হাজারের মুজাদ্দিদ হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘মাকতূবাত শরীফ’ উনার ব্যাপারে বলেছেন, “কেউ যদি উনার সম্মানিত ‘মাকতূবাত শরীফ’ পাঠ করে, ‘মাকতূবাত শরীফ’ পাঠ করা অবস্থায় নবী না হওয়া সত্ত্বেও তার নাম ‘সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক’ উনার দফতরে লিখা হয়।” সুবহানাল্লাহ!
যদি তাই হয়, তাহলে আন নূর, নূরুল উমাম, রহমাতুল উম্মাহ, সাইয়্যিদাতুছ ছাক্বালাইন, উম্মু আবীহা, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক আলোচনা করলে, পাঠ করলে বান্দা-বান্দী, উম্মতের নাম কোন ত্ববকায় লিখা থাকবে, সেটা চিন্তা-ফিকির করতে হবে। সুবহানাল্লাহ! মূলত, তাদের নাম তখন সম্মানিত রিসালত মুবারক উনার তবক্বায় লিখা থাকবে। সুবহানাল্লাহ!
আর যদি কেউ  মুহব্বতের সাথে আন নূর, নূরুল উমাম, রহমাতুল উম্মাহ, সাইয়্যিদাতুছ ছাক্বালাইন, উম্মু আবীহা, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক আলোচনা করে, পাঠ করে, তাহলে অবশ্য অবশ্যই তার উপর জাহান্নাম হারাম হয়ে জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যাবে। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়, সে ব্যক্তি সর্বোচ্চ জান্নাতে স্বয়ং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে আবাদুল আবাদের তরে অবস্থান মুবারক করবে। সুবহানাল্লাহ! এতে বিন্দু থেকে বিন্দুতমও সন্দেহের অবকাশ নেই। কেননা, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ اَحَبَّ سُنَّتِـىْ فَقَدْ اَحَبَّـنِـىْ وَمَنْ اَحَبَّنِـىْ كَانَ مَعِـى فِـى الْـجَنَّةِ.
 অর্থ: “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি আমার কোনো একটি সম্মানিত সুন্নত মুবারক উনাকে মুহব্বত করলো, সে মূলত, আমাকেই মুহব্বত করলো। আর যে ব্যক্তি আমাকে মুহব্বত করলো, সে মূলত, আমার সাথেই সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ অবস্থান মুবারক করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (তুহফাতুল আহওয়াযী বিশরহি জামিয়িত তিরমিযী ৭/৩৭১, জামি‘উল উছূল ফী আহাদীছির রসূল ৯/৫৬৭, ক্বওয়া‘িয়দুত তাহদীছ ১/৫৫, তিরমিযী শরীফ, শরহুল বুখারী ১/৪০৯, মিরক্বাত শরীফ ১/২৬২, তিরমিযী শরীফ, মিশকাত শরীফ)
এখন বলার বিষয় হচ্ছে একটি সম্মানিত সুন্নত মুবারক উনাকে মুহব্বত করলে যদি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ অবস্থান করা যায়, তাহলে যেই সুমহান ব্যক্তিত্বা মুবারক নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারসম্মানিত ওজূদ মুবারক উনার সাথে সম্পৃক্ত, উনার মহাসম্মানিতা বানাত, লখতে জিগার মুবারক, সেই সুমহান ব্যক্তিত্বা মুবারক, আন নূর, নূরুল উমাম, রহমাতুল উম্মাহ, সাইয়্যিদাতুছ ছাক্বালাইন, উম্মু আবীহা, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালামউনাকে যাঁরা মুহব্বত করবে, তাদের ফায়ছালা কী হবে? তারা কার সাথে, কোন জান্নাতে অবস্থান করবে? মূলত, অবশ্য অবশ্যই ওই সকল ব্যক্তিরা স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে সর্বোচ্চ জান্নাত মুবারক-এ চিরস্থায়ীভাবে বসবাস করবে এবং উনাদের মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক ও জিয়ারত মুবারক-এ আবাদুল আবাদের তরে মশগূল থাকবে। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়, তারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আখাচ্ছুল খাছ উম্মত হিসেবে বিবেচিত হবে এবং স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার ওই সকল উম্মতদেরকে ইহকাল ও পরকালে দায়িমীভাবে শাফায়াত করবেন, উনার আখাচ্ছুল খাছ বিশেষ নেক দৃষ্টি মুবারক, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি, মা’রিফাত-মুহব্বত, তায়াল্লুক্ব-নিসবত মুবারক দান করবেন। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি আহলু বাইত রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার সম্মানার্থে আমাদের সবাইকে কবূল করুন। আমীন!
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার এক অনন্য বেমেছাল অভুতপূর্ব বিস্ময়কর মহাসম্মানিত তাজদীদ মুবারক ‘নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত শান মুবারক-এ ‘মুত্বহ্হার’ (পূত-পবিত্র) এবং ‘মুত্বহ্হির’ (পূত-পবিত্রতাদানকারী) বলতে হবে’

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُوْدٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَضَّرَ اللهُ امْرَءًا سَـمِعَ مِنَّا حَدِيْثًا فَبَلَّغَهٗ كَمَا سَـمِعَهٗ فَرُبَّ مُبَلَّغٍ اَوْعـٰى مِنْ سَامِعٍ.
  অর্থ: “ফক্বীহুল উম্মত হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাস‘ঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি ওই ব্যক্তির সম্মানিত চেহারা মুবারক সম্মুজ্জ্বল করুন, (উনাকে সম্মানিত রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক, মা’রিফাত-মুহব্বত মুবারক দান করুন,) যিনি আমার থেকে যেরূপ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ শুনবেন ঠিক হুবহু সেরূপ বর্ণনা করবেন। কেননা (পরবর্তীতে) যেই সকল সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারক উনাদের কাছে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ পৌঁছানো হবে, উনারা যাঁদের থেকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ শুনবেন, উনাদের থেকে অধিক বেশি বুঝবেন, উপলব্ধি করবেন, অনেক বেশি সম্মানিত ইলম মুবারক উনার অধিকারী হবেন।” সুবহানাল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ, ছহীহ ইবনে হিব্বান, মুসনাদে বাযযার, ত্ববারনী শরীফ)
এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার পরিপূর্ণ মিছদাক্ব হচ্ছেন আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! উনাকে মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত প্রকার সম্মানিত ইলম মুবারক হাদিয়া মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি হচ্ছেন সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত প্রকার সম্মানিত ইলম মুবারক উনার মালিক। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার বেমেছাল সম্মানিত তা‘য়াল্লুক-নিসবত মুবারক, মুহব্বত-ক্বুরবত মুবারক রয়েছেন, যা কায়িনাতের কারো পক্ষে ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। সুবহানাল্লাহ! যার কারণে তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত শান মুবারক-এ একের পর এক অনন্য বেমেছাল অভুতপূর্ব বিস্ময়কর মহাসম্মানিত তাজদীদ মুবারক প্রকাশ করছেন। সুবহানাল্লাহ! সেই মুবারক ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি তিনি এক অনন্য বেমেছাল অভুতপূর্ব বিস্ময়কর মহাসম্মানিত তাজদীদ মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! নি¤œ তা উল্লেখ করা হলো,
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “আমি একটি বিষয় ফিকির করতে থাকলাম যে, হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত শান মুবারক-এ বলা হয় ‘মা’ছূম’ তথা নিস্পাপ। হযরত ছাহাবা-ই কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের সম্মানিত শান মুবারক-এ বলা হয় ‘মাহ্ফূয’ তথা সংরক্ষিত। তাহলে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত শান মুবারক-এ কী বলা হবে? আমি বিষয়টি যখন ফিকির করতে থাকলাম, তখন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন,
فَاَنَا وَاَهْلُ بَيْتِىْ مُطَهَّرُوْنَ مِنَ الذُّنُوْبِ.
অর্থ: ‘আমি এবং আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম আমরা সকলে যুনূব তথা সমস্ত প্রকার ছগীরা-কবীরা এবং যাবতীয় অপছন্দনীয় কাজ থেকে পূত-পবিত্র।’ সুবহানাল্লাহ!
আমার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত শান মুবারক-এ مُطَهَّرٌ (মুত্বহ্হার) তথা পূত-পবিত্র এবং مُطَهِّرٌ(মুত্বহ্হির) তথা পূত-পবিত্রতাদানকারী বলতে হবে। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করলেন, আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত শান মুবারক-এ স্বয়ং যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত ত্বহারাত তথা পবিত্রতা মুবারক উনার বিষয়টি সম্পৃক্ত করেছেন। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন,
اِنَّـمَا يُرِيْدُ اللهُ لِيُذْهِبَ عَنْكُمُ الرِّجْسَ اَهْلَ الْبَيْتِ وَيُـطَـهِّـرَكُـمْ تَطْهِيْراً.
অর্থ: ‘হে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম! নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি চান আপনাদের থেকে সমস্ত প্রকার অপবিত্রতা দূর করে পবিত্র করার মতো পবিত্র করতে। অর্থাৎ তিনি আপনাদের থেকে সমস্ত প্রকার অপবিত্রতা দূর করে আপনাদেরকে পবিত্র করার মতো পবিত্র করেই সৃষ্টি মুবারক করেছেন।’ সুবহানাল্লাহ!
আমি আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে আমার নিজের অন্তর্ভুক্ত করে নিয়েছি। সুবহানাল্লাহ! তাই আমার এবং আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত শান মুবারক-এ مُطَهَّرٌ (মুত্বহ্হার) তথা পূত-পবিত্র এবং مُطَهِّرٌ(মুত্বহ্হির) তথা পূত-পবিত্রতাদানকারী বলতে হবে।” সুবহানাল্লাহ!
এই সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
اَنَّ النَّبِـىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَقُوْلُ نَـحْنُاَهْلُ بَيْتٍ طَهَّرَهُمُ اللهُ مِنْ شَجَرَةِ النُّبُوَّةِ وَمَوْضِعِالرِّسَالَـةِ وَمُـخْتَلِفِ الْمَلَائِكَةِ وَبَيْتِ الرَّحْمَةِ وَمَعْدِنِ الْعِلْمِ.
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সবসময় ইরশাদ মুবারক করতেন। আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে (আমাদেরকে) সম্মানিত নুবুওয়াত মুবারক উনার বৃক্ষ, সম্মানিত রিসালাত মুবারক উনার স্থান, বিভিন্ন ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের, উনাদের দ্বারা সম্মানিত খিদমত মুবারক, সম্মানিত রহমত মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারক উনার খনি মুবারক (ইত্যাদি সমস্ত কিছু) থেকে পবিত্র রেখেছেন, ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী) করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে দুররে মানছূর ৬/৬০৬, তাফসীরে ইবনে আবী হাতিম ৯/৩১৩৩)
অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা একমাত্র মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূরপাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের মুহতাজ ও উনাদের সম্মানার্থে উনারা সম্মানিত এবং উনাদের প্রতিই উনারা দায়েমীভাবে রুজু। সুবহানাল্লাহ! ফলে উনারা সমস্ত কিছু থেকেই পবিত্র, ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী)। সুবহানাল্লাহ! কাজেই সম্মানিত নুবুওয়াত মুবারক, সম্মানিত রিসালাত মুবারক, বিভিন্ন ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের, উনাদের দ্বারা সম্মানিত খিদমত মুবারক, সম্মানিত রহমত মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারক উনার খনি মুবারক ইত্যাদি বরকতময় নিয়ামত মুবারক উনাদের প্রতি রুজু হওয়ার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের কোন সুযোগ নেই। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের কারণেই সম্মানিত নুবুওয়াত মুবারক, সম্মানিত রিসালাত মুবারক, সমস্ত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা, সম্মানিত রহমত মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারকসহ সমস্ত কিছুই ফযীলতপ্রাপ্ত হয়েছেন, সম্মানিত হয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَنَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ لَّا يُقَاسُ بِنَا اَحَدٌ.
অর্থ: “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। আমাদের সাথে অন্য কারো তুলনা করা যাবে না।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! (দায়লামী ৪/২৮৩, জামি‘উল আহাদীছ ২২/২১৯, কানজুল উম্মাল ১২/১০৪, জাম‘উল জাওয়ামি’ ১/২৪৯৫০, যাখায়েরুল ‘উক্ববাহ ফী মানাক্বিবে যাওইল কুরবা লিমুহিব্বে ত্ববারী ১/১৭, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৭ ইত্যাদি)
কজেই সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য ফরযে আইন হচ্ছে আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার মহাসম্মানিত তাজদীদ মুবারক অনুযায়ী নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত শান মুবারক-এ ‘মুত্বহ্হার’ (পূত-পবিত্র) এবং ‘মুত্বহ্হির’ (পূত-পবিত্রতাদানকারী) বলা। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সবাইকে আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার মহাসম্মানিত তাজদীদ মুবারক অনুযায়ী নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের হাক্বীক্বী শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত,বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উপলব্ধি করে ইহকাল ও পরকালে হাকীক্বী কামিয়াবী হাছিল করার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!
মাহ্ফূয, মা’ছূম এবং মুত্বহ্হার ও মুত্বহ্হির’ সম্মানিত লফ্য মুবারক উনাদের সম্মানিত তাৎপর্য মুবারক

হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের এবং হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের শান মুবারক-এ বলা হয় ‘মাহ্ফূয’। হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত শান মুবারক-এ বলা হয় ‘মা’ছূম’। আর স্বয়ং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত নির্দেশ মুবারক হচ্ছেন উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত শান মুবারক-এ ‘মুত্বহ্হার ও মুত্বহ্হির’ বলা। সুবহানাল্লাহ!
 مَحْفُوْظٌ(মাহ্ফূয) শব্দ মুবারকখানা আরবী ব্যাকরণ অনুযায়ী اسم مفعول (ইসমে মাফ‘ঊল) উনার ছীগাহ। যা حِفْظٌ (হিফ্যুন) ক্রিয়ামূল হতে এসেছেন। অর্থ: সংরক্ষিত। যেহেতু হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের কর্তৃক সংরক্ষিত, তাই উনাদের শান মুবারক-এ ‘মাহ্ফূয’ বলা হয়। সুবহানাল্লাহ!
অনুরূপভাবে مَعْصُوْمٌ (মা’ছূম) শব্দ মুবারকখানা আরবী ব্যাকরণ অনুযায়ী اسم مفعول (ইসমে মাফ‘ঊল) উনার ছীগাহ। যাعَصْمٌ  (‘আছমুন) ক্রিয়ামূল থেকে এসেছেন।عَصْمٌ  (‘আছমুন) অর্থ- রক্ষা করা, বিরত রাখা। আর مَعْصُوْمٌ (মা’ছূম) অর্থ- নিষ্পাপ।
      যেহেতু সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা ছগীরাহ-কবীরাহ (ছোট-বড়), কুফরী-শিরকী এবং যাবতীয় অপছন্দীয় কাজ থেকে পবিত্র। তাই উনাদেরকে ‘মা’ছূম’ বলা হয়। সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কে আক্বাইদের কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
اَلْاَنْبِيَاءُ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ كُلُّهُمْ مَعْصُوْمُوْنَ
অর্থ: “সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা মা’ছূম তথা নিষ্পাপ।” সুবহানাল্লাহ!
আক্বাইদের কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে,
اَلْاَنْبِيَاءُ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ كُلُّهُمْ مُنَزَّهُوْنَ عَنِ الصَّغَائِرِ وَالْكَبَائِرِ وَالْكُفْرِ وَالْقَبَائِحِ.
অর্থ: “সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা ছগীরাহ-কবীরাহ (ছোট-বড়), কুফরী এবং যাবতীয় অপছন্দীয় কাজ থেকে পবিত্র।” সুবহানাল্লাহ!
 এটা হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত খুছূছিয়াত বা বৈশিষ্ট্য মুবারক। সুবহানাল্লাহ! আর উনারা এই সম্মানিত খুছূছিয়াত বা বৈশিষ্ট্য মুবারক লাভ করেছেন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে। সুবহানাল্লাহ! কেননা হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের কাউকে সম্মানিত নুবুওওয়াত-রিসালাত মুবারক দেয়া হয়নি যতক্ষণ পর্যন্ত উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি সম্মানিত ঈমান না এনেছেন, উনার সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম মুবারক করার, সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার এবং সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করার প্রতিশ্রুতি মুবারক না দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
وَاِذْ اَخَذَ اللهُ مِيْثَاقَ النَّبِـيّٖنَ لَمَاۤ اٰتَيْتُكُمْ مِّنْ كِتٰبٍ وَّحِكْمَةٍ ثُـمَّ جَآءَكُمْ رَسُوْلٌ مُّصَدِّقٌ لِّـمَا مَعَكُمْ لَتُؤْمِنُنَّ بِهٖ وَلَتَنْصُرُنَّهٗ قَالَ ءَاَقْرَرْتُـمْ وَاَخَذْتُـمْ عَلـٰى ذٰلِكُمْ اِصْرِىْ قَالُوْاۤ اَقْرَرْنَا قَالَ فَاشْهَدُوْا وَاَنَا مَعَكُمْ مِّنَ الشّٰهِدِيْنَ. فَمَنْ تَوَلّٰى بَعْدَ ذٰلِكَ فَاُولٰٓـئِكَ هُمُ الْفٰسِقُوْنَ.
অর্থ: “আর (আমার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি স্মরণ করুন ঐ সময়ের কথা) যখন মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের থেকে অঙ্গীকার মুবারক গ্রহণ করলেন যে, আপনাদেরকে সম্মানিত কিতাব মুবারক ও হিকমত মুবারক দেয়া হবে। অতঃপর আপনাদের নিকট একজন মহাসম্মানিত রসূল তথা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করবেন এবং তিনি আপনাদেরকে ও আপনাদের কাছে যা কিছু রয়েছে সমস্ত কিছুর তাছদীক্ব বা সত্যায়ন করবেন। আপনারা অবশ্যই অবশ্যই উনার প্রতি সম্মানিত ঈমান মুবারক আনবেন এবং উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিবেন। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, আপনারা কি তা স্বীকার করে নিলেন এবং এ মর্মে আমার সম্মানিত ওয়াদা মুবারক গ্রহণ করলেন? উনারা বললেন, আমরা স্বীকার করে নিলাম। মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, তাহলে আপনারা সকলে সাক্ষী থাকুন এবং আমিও আপনাদের সাথে সাক্ষী রইলাম। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর যে এই সম্মানিত ওয়াদা মুবারক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে অর্থাৎ ওয়াদা মুবারক উনার খিলাফ করবে, তারাই হচ্ছে ফাসিক্ব তথা চরম নাফরমান, কাট্টা কাফির।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আল ইমরান শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৮১-৮২)
আর مُطَهَّرٌ (মুত্বহ্হার) শব্দ মুবারকখানা আরবী ক্বাওয়াইদ অনুযায়ী  اسم مفعول (ইসমে মাফ‘ঊল) উনার ছীগাহ। অর্থ- পূত-পবিত্র। আর مُطَهِّرٌ (মুত্বহ্হির) শব্দ মুবারকখানা আরবী ক্বাওয়াইদ অনুযায়ী اسم فاعل (ইসমে ফায়িল) উনার ছীগাহ। অর্থ- পূত-পবিত্রতাদানকারী। সুবহানাল্লাহ! এই সম্মানিত শব্দ মুবারকদ্বয় উনাদের উৎপত্তি হচ্ছেন طُهْرٌ (তুহ্রুন) মূল ধাতু থেকে। অর্থ- পবিত্রতা। যেহেতু সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা সৃষ্টিগত বা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওজূদ মুবারকগত দিক থেকেই পূত-পবিত্র, পূত-পবিত্রতাদানকারী এবং উনাদের সম্মানার্থেই খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত সমস্ত কায়িনাতবাসী সকলেই পবিত্রতা মুবারক হাছিল করেছেন, করছেন এবং ক্বিয়ামত পর্যন্ত পবিত্রতা মুবারক হাছিল করবেন। সুবহানাল্লাহ! তাই স্বয়ং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজেই উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত শান মুবারক-এ ‘মুত্বহ্হার তথা পূত-পবিত্র’ এবং ‘মুত্বহ্হির তথা পূত-পবিত্রতাদানকারী’ বলার জন্য সম্মানিত নির্দেশ মুবারক দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূর মুবারক উনার একখানা অংশ মুবারক থেকে হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা সৃষ্টি। আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা একই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূর মুবারক থেকে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মূল নূর মুবারক থেকে সৃষ্টি। সুবহানাল্লাহ! এ সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছে কুদসী শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন,
فَخَلَقْتُكَ وَخَلَقْتُ اَهْلَ بَيْتِكَ مِنَ النُّوْرِ الْاَوَّلِ
অর্থ: “আমি আপনাকে এবং আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র প্রথম ভাগ নূর মুবারক তথা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র একই নূর মুবারক থেকে সৃষ্টি মুবারক করেছি।” সুবহানাল্লাহ!
অপর বর্ণনায় রয়েছে,
فَخَلَقْتُكَ وَاَهْلَ بَيْتِكَ مِنَ الْقِسْمِ الْاَوَّلِ
অর্থ: “আমি আপনাকে এবং আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র প্রথম ভাগ নূর মুবারক তথা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র একই নূর মুবারক থেকে সৃষ্টি মুবারক করেছি।” সুবহানাল্লাহ! (নুয্হাতুল মাজালিস, আল বারাহীন)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ اَلْـمِسْوَرِ بْنِ مَـخْرَمَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ حَضْرَتْ فَاطِمَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ بِضْعَةٌ مِّنِّىْ فَمَنْ اَغْضَبَهَا اَغْضَبَنِـىْ
অর্থ: “হযরত মিসওয়ার ইবনে মাখরমাহ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, উম্মু আবীহা আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন, আমার সম্মানিত জিসম মুবারক উনার সম্মানিত গোশত মুবারক উনার একখানা সম্মানিত টুকরো মুবারক। সুবহানাল্লাহ! তাই যে ব্যক্তি উনাকে অসন্তুষ্ট করলো, সে মূলত আমাকেই অসন্তুষ্ট করলো।” নাঊযুবিল্লাহ! (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মুছান্নাফে ইবনে আবী শায়বাহ শরীফ, শরহুস সুন্নাহ শরীফ ইত্যাদী)
এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফখানা বিশুদ্ধ হওয়ার ব্যাপারে কারো কোনো দ্বিমত নেই। সমস্ত ইমাম মুজতাহিদ ও আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা একবাক্যে এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফখানা উনাকে বিশুদ্ধ হিসেবে মেনে নিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্পষ্টভাবে ইরশাদ মুবারক করেছেন যে,
 حَضْرَتْ فَاطِمَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ بِضْعَةٌ مِّنِّىْ
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, উম্মু আবীহা আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন, আমার সম্মানিত জিসম মুবারক উনার সম্মানিত গোশত মুবারক উনার একখানা সম্মানিত টুকরো মুবারক।” সুবহানাল্লাহ!
সুতরাং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা একই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূর মুবারক থেকে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মূল নূর মুবারক থেকে সৃষ্টি। সুবহানাল্লাহ! তাই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত পবিত্রতা মুবারক উনার যেই হুকুম মুবারক, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত পবিত্রতা মুবারক উনাদেরও ঠিক একই হুকুম মুবারক। সুবহানাল্লাহ! এ প্রসঙ্গে স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজেই ইরশাদ মুবারক করেন,
فَاَنَا وَاَهْلُ بَيْتِىْ مُطَهَّرُوْنَ مِنَ الذُّنُوْبِ.
অর্থ: “আমি এবং আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম আমরা সকলে যুনূব তথা সমস্ত প্রকার ছগীরা-কবীরা এবং যাবতীয় অপছন্দনীয় কাজ থেকে পূত-পবিত্র।” সুবহানাল্লাহ!
এখানে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার নিজের এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত পবিত্রতা মুবারক উনার বিষয়টি একই হুকুমের আওতাভুক্ত করে দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
জলীলুল ক্বদর নবী ও রসূল হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি যখন তূর পাহাড়ে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নিবেন, তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ মুবারক করেছিলেন,
فَاخْلَعْ نَعْلَيْكَ اِنَّكَ بِالْوَادِ الْمُقَدَّسِ طُوًى.
অর্থ: “আপনি আপনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ খুলুন। কেননা আপনি সম্মানিত (তূর পাহাড়ের) পবিত্র তুয়া উপত্যকায় তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করতে যাচ্ছেন।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা ত্বহা শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৫)
 তূর পাহাড়ে মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত ও পবিত্র আরশে আযীম মুবারক থেকে ৭০ হাজার ভাগের এক ভাগ সম্মানিত নূর মুবারক বর্ষিত হয়েছিলেন। সুবহানাল্লাহ! যার কারণে সেই স্থানটি সম্মানিত ও পবিত্র হয়ে গেছেন। সুবহানাল্লাহ! তাই মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে তূর পাহাড়ে উনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ খুলে তাশরীফ মুবারক নেয়ার জন্য সম্মানিত নির্দেশ মুবারক করেছিলেন। সুবহানাল্লাহ! কিন্তু সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফ উনাদের স্পর্শকৃত সম্মানিত ও পবিত্র ধূলি-বালি মুবারক উনাদের পবিত্রতা, মর্যাদা সম্মানিত মূল আরশে আযীম মুবারক থেকেও লক্ষ কোটি গুণ বেশি। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়, সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফ উনাদের সম্মানিত ও পবিত্র ধূলি-বালি মুবারক পেয়ে সম্মানিত মূল আরশে আযীম মুবারক আরো পবিত্রতা হাছিল করেছেন, মর্যাদাবন হয়েছেন এবং অন্য সকলের উপর ফখর করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
সেটাই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মি’রাজ শরীফ উনার রাতে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেছিলেন,
يَا حَضْرَتْ مُـحَمَّدُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا تَـخْلَعْ نَعْلَيْكَ فَاِنَّ الْعَرْشَ يَتَشَرَّفُ بِقُدُوْمِكَ مُتَنَعِّـلًا وَّيَفْتَخِرُ عَلـٰى غَيْرِهٖ مُتَـبَـرِّكًـا.
অর্থ: “আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, দয়া করে আপনি আপনার সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফ খুলবেন না। অর্থাৎ আপনি আপনার সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফসহ আমার সম্মানিত ও পবিত্র আরশে আযীম মুবারক উনার মধ্যে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করুন। কেননা আমার সম্মানিত ও পবিত্র আরশে আযীম মুবারক আপনার সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফ উনাদের পরশ মুবারক পেয়ে, সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফ উনাদের সম্মানিত ও পবিত্র ধূলি-বালি মুবারক উনাদের স্পর্শ মুবারক লাভ করে ধন্য হবেন, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক হাছিল করবেন। সুবহানাল্লাহ! (শুধু তাই নয়,) আমার সম্মানিত ও পবিত্র আরশে আযীম মুবারক আপনার সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফ উনাদের স্পর্শ মুবারক পাওয়ার কারণে, সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফ উনাদের সম্মানিত ও পবিত্র ধূলি-বালি মুবারক লাভ করে বরকতময় হয়ে আরো পবিত্রতা হাছিল করবেন এবং অন্য সবার উপর ফখর করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (ফাতহুল মুত‘য়াল ফী মাদহি খইরিন নি‘য়াল শরীফ)
আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা যেহেতু একই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূর মুবারক থেকে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মূল নূর মুবারক থেকে সৃষ্টি এবং স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজেই উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত পবিত্রতা মুবারক উনার বিষয়টি একই সম্মানিত হুকুম মুবারক উনার আওতাভুক্ত করে দিয়েছেন, তাই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফ উনাদের স্পর্শকৃত সম্মানিত ও পবিত্র ধূলি-বালি মুবারক উনাদের পবিত্রতা, মর্যাদা মুবারকও সম্মানিত ও পবিত্র মূল আরশে আযীম মুবারক থেকে লক্ষ কোটি গুণ বেশি। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়, উনাদের সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফ উনাদের সম্মানিত ও পবিত্র ধূলি-বালি মুবারক পেলেও সম্মানিত ও পবিত্র মূল আরশে আযীম মুবারক আরো পবিত্রতা হাছিল করবেন, মর্যাদাবান হবেন এবং অন্য সকলের উপর ফখর করবেন। সুবহানাল্লাহ! তাহলে উনাদের সম্মানিত পবিত্রতা মুবারক উনার বিষয়টি কতো বেমেছাল, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান ও তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! উনারা হলেন- মুত্বহ্হার তথা পূত-পবিত্র এবং মুত্বহ্হির তথা পূত-পবিত্রতাদানকারী। সুবহানাল্লাহ!
আর এ কারণেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
اَنَّ النَّبِـىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَقُوْلُ نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ طَهَّرَهُمُ اللهُ مِنْ شَجَرَةِ النُّبُوَّةِ وَمَوْضِعِ الرِّسَالَـةِ وَمُـخْتَلِفِ الْمَلَائِكَةِ وَبَيْتِ الرَّحْمَةِ وَمَعْدِنِ الْعِلْمِ.
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সবসময় ইরশাদ মুবারক করতেন। আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে (আমাদেরকে) সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক উনার বৃক্ষ, সম্মানিত রিসালাত মুবারক উনার স্থান, বিভিন্ন হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের, উনাদের দ্বারা সম্মানিত খিদমত মুবারক, সম্মানিত রহমত মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারক উনার খনি মুবারক (ইত্যাদি সমস্ত কিছু) থেকে পবিত্র রেখেছেন, ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী) করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে দুররে মানছূর ৬/৬০৬, তাফসীরে ইবনে আবী হাতিম ৯/৩১৩৩)
অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা একমাত্র মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের মুহতাজ এবং উনাদের সম্মানার্থে উনারা সম্মানিত এবং উনাদের প্রতিই উনারা দায়েমীভাবে রুজু। সুবহানাল্লাহ! ফলে উনারা সমস্ত কিছু থেকেই পবিত্র, ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী)। সুবহানাল্লাহ! কাজেই সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক, সম্মানিত রিসালাত মুবারক, বিভিন্ন হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের, উনাদের দ্বারা সম্মানিত খিদমত মুবারক, সম্মানিত রহমত মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারক উনার খনি মুবারক ইত্যাদি বরকতময় নিয়ামত মুবারক উনাদের প্রতি রুজু হওয়ার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের কোন সুযোগ নেই। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের কারণেই সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক, সম্মানিত রিসালাত মুবারক, সমস্ত হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা, সম্মানিত রহমত মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারকসহ সমস্ত কিছুই ফযীলতপ্রাপ্ত হয়েছেন, সম্মানিত হয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত ও পবিত্র কুরআন শরীফ, সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ, সম্মানিত ইজমা’ শরীফ এবং সম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের সম্মানিত ফতওয়া মুবারক অনুযায়ী ‘নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের যারা মানহানী করবে, তদের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদ-। তারা নামধারী মুসলমান হোক বা কাফির হোক অথবা নাস্তিক হোক কিংবা যেকোনো ধর্মেরই অনুসারী হোক না কেন। তাদের তাওবা গ্রহণযোগ্য হবে না। এমনকি যারা তাদেরকে সমর্থন করবে, তাদেরও একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড-’

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اِنَّ الَّذِيْنَ يُؤْذُوْنَ اللهَ وَرَسُوْلَهٗ لَعَنَهُمُ اللهُ فِـى الدُّنْيَا وَالْاٰخِرَةِ وَاَعَدَّ لَـهُمْ عَذَابًا مُّهِيْنًا.
অর্থ: “নিশ্চয়ই যারা মহান আল্লাহ পাক উনাকে এবং উনার রসূল, উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে কষ্ট দেয়, তাদের উপর মহান আল্লাহ পাক উনার লা’নত দুনিয়া ও আখিরাতে এবং মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদের জন্য লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৭)
সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ عَلِـىٍّكَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ اٰذَانِـىْ فِـىْ عِتْـرَتِـىْ فَقَدْ اٰذَى اللهَ عَزَّ وَجَلَّ.
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের ব্যাপারে আমাকে কষ্ট দিলো, সে মূলত যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনাকেই কষ্ট দিলো।” নাঊযুবিল্লাহ! (দায়লামী, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৯)
সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ عَلِـىٍّكَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ اٰذَانِـىْ وَعِتْرَتِـىْ فَعَلَيْهِ لَعْنَةُ اللهِ.
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি আমাকে এবং আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে কষ্ট দিবে, তার উপর মহান আল্লাহ পাক উনার লা’নত। অর্থাৎ সে মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে লা’নতগ্রস্থ।” নাঊযুবিল্লাহ! (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৯)
আর মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
مَلْعُوْنِيْنَ اَيْنَمَا ثُقِفُوْاۤ اُخِذُوْا وَقُتِّلُوْا تَقْتِيْلًا.
অর্থ: “লা’নতগ্রস্ত অবস্থায় তাদেরকে যেখানেই পাওয়া যাবে, সেখানেই পাকড়াও করা হবে এবং অবশ্যই তাদেরকে ক্বতল করা হবে, মৃত্যুদ- দেয়া হবে।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৬১)
মহান আল্লাহ পাক তিনি অন্যত্র ইরশাদ মুবারক করেন-
وَالَّذِيْنَ يُؤْذُوْنَ رَسُوْلَ اللهِ لَـهُمْ عَذَابٌاَلِيْمٌ.
অর্থ: “আর যারা মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কষ্ট দেয়, তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা তাওবা শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৬১)
সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْعَلِـىٍّ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗعَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَمَنْ سَبَّ نَبِيًّا فَاقْتُلُوْهُ وَمَنْ سَبَّ اَصْحَابِـىْ فَاضْرِبُوْهُ.
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি কোনো নবী-রসূল আলাইহিস সালাম উনাকে গাল-মন্দ করবে, মানহানী করবে, আপনারা তাকে ক্বতল করুন, মৃত্যুদ- দিন। আর যে ব্যক্তি আমার হযরত ছাহাবায়ে রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উনাদেরকে গাল-মন্দ করবে, মানহানী করবে, আপনারা তাকে প্রহার করুন।” সুবহানাল্লাহ! (আশ শিফা ২/২২১, ফাতাওয়ায়ে বায্যাযিয়্যাহ ২/২৪২, আল মু’জামুছ ছগীর লিত ত্ববারনী ১/৩৯৩)
অপর বর্ণনায় এসেছে,
عَنْ حَضْرَتْ عَلِـىٍّ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗعَلَيْهِ السَّلَامُ عَنِ النَّبِـىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَمَنْ سَبَّ نَبِيًّا مِّنَ الْاَنْۢبِيَاءِ فَاقْتُلُوْهُ وَمَنْ سَبَّ وَاحِدًا مِّنْاَصْحَابِـىْ فَاجْلِدُوْهُ.
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্য থেকে যে কোনো একজন নবী-রসূল আলাইহিস সালাম উনাকে গাল-মন্দ করবে, মানহানী করবে, আপনারা তাকে ক্বতল করুন, মৃত্যুদ- দিন। আর যে ব্যক্তি আমার হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের মধ্য থেকে যে কোনো একজন হযরত ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে গাল-মন্দ করবে, মানহানী করবে, আপনারা তাকে প্রহার করুন।” সুবহানাল্লাহ! (আল ফাওয়াইদ ১/২৯৫)
সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنِ الْاِمَامِ الثَّالِثِ سَيِّدِنَاحَضْرَتْ اَلْـحُسَيْنِ بْنِ عَلِىٍّ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِمَا السَّلَامُاَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَنْ سَبَّاَهْلَ الْبَيْتِ فَاِنَّـمَا يَسُبُّ اللهَ وَرَسُوْلَهٗ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.
অর্থ:“ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হুসাইন ইবনে হযরত আলী আলাইহিমাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে গাল-মন্দ করলো, মানহানী করলো, সে মূলত মহান আল্লাহ পাক উনাকে এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকেই গাল-মন্দ করলো, মানহানী করলো।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ফী সীরাতি খইরিল ইবাদ ১১/৮)
অতএব, সম্মানিত ও পবিত্র কুরআন শরীফ এবং সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের আলোকে সম্মানিত ফতওয়া মুবারক হচ্ছেন- নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের যারা মানহানী করবে, তাদের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদ-। তারা নামধারী মুসলমান হোক বা কাফির হোক অথবা নাস্তিক হোক কিংবা যেকোনো ধর্মেরই অনুসারী হোক না কেন। তাদের তাওবা গ্রহণযোগ্য হবে না। এমনকি যারা তাদেরকে সমর্থন করবে, তাদেরও একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদ-। এ মৃত্যুদ- থেকে রেহাই পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই এবং এ বিষয়ে কোনো প্রকার ওজর আপত্তি গ্রহণযোগ্য হবে না। স্বাভাবিক অবস্থায় হোক অথবা পাগল, মাতাল বা নেশাগ্রস্থ অবস্থায় হোক অর্থাৎ যেকোনো অবস্থায়ই হোক না কেন- নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের যারা মানহানী করবে, তাদের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদ-। তাদের তাওবা গ্রহণযোগ্য হবে না। এমনকি যারা তাদেরকে সমর্থন করবে, তাদেরও একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদ-। এ মৃত্যুদ- থেকে রেহাই পাওয়ার কোন সুযোগ নেই এবং এ ব্যাপারে কারো কোন ওজর আপত্তিও গ্রহণযোগ্য হবে না।
বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফসহ’ আরো অন্যান্য কিতাবে এসেছে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কা’ব বিন আশরাফকে ক্বতল করার জন্য সম্মানিত নির্দেশ মুবারক দিয়েছেন। তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন,
مَنْ لِّكَعْبِ بْنِ الْاَشْرَفِ فَاِنَّهٗ يُؤْذِى اللهَ وَرَسُوْلَهٗصَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.
অর্থ: “আপনাদের মধ্যে কে আছেন, যিনি কা’ব বিন আশরাফকে হত্যা করতে পারবেন? কেননা, সে মহান আল্লাহ পাক উনাকে এবং উনার রাসূল, উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে কষ্ট দেয়।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, আবূ দাঊদ শরীফ, বাইহাক্বী শরীফ, শরহুস সুন্নাহ শরীফ, মুস্তাদরকে হাকিম শরীফ, শিফা শরীফ, আস সাইফুল মাসলূল ইত্যাদী)
তারপর বিশিষ্ট ছাহাবী হযরত মুহম্মদ ইবনে মাসলামা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি কা’ব বিন আশরাফকে অত্যন্ত সুকৌশলে হত্যা করেন। তাকে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার প্রতি দাওয়াতও দেননি। কেননা সে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কষ্ট দিয়েছে। আর উনাকে যারা কষ্ট দিবে, তাদের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদ-। তাদের তাওবার কোনো সুযোগ নেই।
আল ইমামুল কাবীর, মাফ্খরাতুল মাগরিব হযরত ইমাম কাযী আবুল ফযল ‘আয়ায ইবনে মূসা আল ইয়াহ্চুবী আস সাব্তী আল মালিকী আন্দালুসী রহমতুল্লাহি আলাইহি (বিলাদত শরীফ ৪৭৬ হিজরী শরীফ এবং বিছাল শরীফ ৫৪৪ হিজরী শরীফ) তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘আশ শিফা বিতা’রীফি হুকূকিল মুছত্বফা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ উনার ২য় খ-ের ২২১ পৃষ্ঠায় বলেন-
فَدَلَّ اَنَّ قَتْلَهٗاِيَّاهُ لِغَيْرِالْاِشْرَاكِ بَلْ لِلْاَذٰى وَكَذٰلِكَ قَتَلَ اَبَا رَافِعٍقَالَ حَضْرَتْ اَلْبَرَاءُ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ وَكَانَ يُؤْذِىْ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَيُعِيْنُ عَلَيْهِوَكَذٰلِكَ اَمْرُهٗ يَوْمَ الْفَتْحِ بِقَتْلِ ابْنِ خَطَلٍ وَّجَارِيَتَيْهِ اللَّتَيْنِ كَانَتَا تُغَنِّيَانِ بِسَبِّهٖ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَفِـىْ حَدِيْثٍ اٰخَرَ اَنَّ رَجُلًا كَانَ يَسُبُّهٗ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَمَنْ يَّكْفِيْنِـىْ عَدُوِّىْ فَقَالَ حَضْرَتْ خَالِدٌرَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ اَنَا فَبَعَثَهُ النَّبِـىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَتَلَهٗ.
অর্থ: “উক্ত সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত হলো যে, কা’ব বিন আশরাফকে র্শিক করার কারণে হত্যা করা হয়নি, বরং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কষ্ট দেয়ার কারণে হত্যা করা হয়েছে। একই কারণে ইহুদী আবূ রফে’কেও হত্যা করা হয়। হযরত বারা বিন আযিব রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু তিনি তার সম্পর্কে বলেন,
وَكَانَ يُؤْذِىْ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَيُعِيْنُ عَلَيْهِ.
সে মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কষ্ট দিতো, এবং উনার বিরুদ্ধে উনার শত্রুদেরকে সাহায্য করতো।’ নাঊযুবিল্লাহ!
অনুরূপভাবে সম্মানিত ও পবিত্র মক্কা শরীফ বিজয়ের দিন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইবনে খত্বাল ও তার দুই দাসীকে হত্যা করার জন্য সম্মানিত নির্দেশ মুবারক দেন, যারা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ব্যঙ্গ-বিদ্রƒপ করে কবিতা আবৃত্তি করতো। নাঊযুবিল্লাহ!
অপর এক সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে,
اَنَّ رَجُلًا كَانَ يَسُبُّهٗ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَمَنْ يَّكْفِيْنِـىْ عَدُوِّىْ فَقَالَ حَضْرَتْ خَالِدٌرَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ اَنَا فَبَعَثَهُ النَّبِـىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَتَلَهٗ.
 ‘এক ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গাল-মন্দ করতো, তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আপনাদের মধ্যে কে আছেন যিনি আমার দুশমনকে হত্যা করতে পারবেন? তখন সাইফুল্লাহিল মাসলূল (মহান আল্লাহ পাক উনার উন্মুক্ত তরবারী মুবারক) হযরত খালিদ ইবনে ওয়ালীদ রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু তিনি আরয করলেন, আমি আছি। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে প্রেরণ করেন। অতঃপর হযরত খালিদ ইবনে ওয়ালীদ রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু তিনি (তার নিকট গিয়ে) তাকে হত্যা করেন’।” সুবহানাল্লাহ! (আশ শিফা ২/২২১ )
আল ইমামুল কাবীর, মাফ্খরাতুল মাগরিব হযরত ইমাম কাযী আবুল ফযল ‘আয়ায রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘আশ শিফা বিতা’রীফি হুকূকিল মুছত্বফা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ উনার ২য় খ-ের ২১৪ পৃষ্ঠায় বলেন-
اِعْلَمْ وَفَّقَنَا اللهُ وَاِيَّاكَ اَنَّ جَمِيْعَ مَنْ سَبَّ النَّبِىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَوْ عَابَهٗ اَوْ اَلْـحَقَ بِهٖ نَقْصًا فِـىْ نَفْسِهٖ اَوْ نَسَبِهٖ اَوْ دِيْنِهٖ اَوْ خَصْلَةٍ مِّنْ خِصَالِهٖ اَوْ عَرَّضَ بِهٖ اَوْ شَبَّهَهٗ بِشَىْءٍ عَلـٰى طَرِيْقِ السَّبِّ لَهٗ اَوِ الْاِزْرَاءِ عَلَيْهِ اَوِ التَّصْغِيْرِ لِشَأْنِهٖ اَوِ الْغَضِّ مِنْهُ وَالْعَيْبِ لَهٗ فَهُوَ سَابٌّ لَّهٗ وَالْـحُكْمُ فِيْهِ حُكْمُ السَّابِّ يُقْتَلُ.
অর্থ: “জেনে রাখুন! মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে ও আপনাকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত শান মুবারক-এ বিশুদ্ধ আক্বীদা ও হুসনে যন মুবারক দান করুন, উনার হাক্বীক্বী শান-মান, ফাযায়িল ফযীলত, বুযুর্গী-সম্মান মুবারক উপলব্ধি করার তাওফীক্ব দান করুন এবং উনার যথাযথ হক্ব মুবারক আদায় করার তাওফীক্ব দান করুন। (আমীন!) যে ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গালি দেবে, নাঊযুবিল্লাহ! বা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কোনো অভিযোগে অভিযুক্ত করবে, নাঊযুবিল্লাহ! বা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওজুদ পাক মুবারক উনার সাথে বা উনার সম্মানিত ছিফত মুবারক উনার সাথে কোনো দোষত্রুটি সংযোজিত করবে, নাঊযুবিল্লাহ! বা উনার সম্মানিত বংশ মুবারক বা সম্মানিত দ্বীন (তথা সম্মানিত শরীয়ত মুবারক বা সম্মানিত সীরত মুবারক বা হুকুমত মুবারক) বা উনার কোনো সম্মানিত স্বভাব মুবারক ও সম্মানিত অভ্যাস মুবারক উনাদের সাথে দোষ-ত্রুটি সংযোজিত করবে। নাঊযুবিল্লাহ! আর এই দোষ-ত্রুটি সংযোজনের বিষয়টি স্পষ্টভাবে হোক বা ইশারা-ইঙ্গিতে হোক বা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিন্দা করার জন্য উনাকে কোনো বস্তু বা ব্যক্তির সাথে উপমা দিবে বা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অবজ্ঞা করবে, নাঊযুবিল্লাহ! বা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল সম্মানিত শান-মান মুবারক উনাকে তুচ্ছজ্ঞান করবে, হেয়জ্ঞান করবে, নাঊযুবিল্লাহ! বা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করবে এবং উনার কোনো সম্মানিত আদেশ-নির্দেশ মুবারক বা হুকুম-আহকাম মুবারক উনাদের ব্যাপারে দোষ-ত্রুটি অন্বেষণ করবে, নাঊযুবিল্লাহ! তাহলে সে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গাল-মন্দকারী হিসেবে, মানহানীকারী হিসেবে গণ্য হবে। নাঊযুবিল্লাহ! তার ব্যাপারে এ আদেশ কার্যকর হবে, যা সরাসরি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গাল-মন্দকারীর ব্যাপারে, মানহানীকারীর ব্যাপারে প্রযোজ্য হয়। তাকে শাস্তিস্বরূপ অবশ্যই ক্বতল করতে হবে, তাকে শাস্তিস্বরূপ অবশ্যই মৃত্যুদ- দিতে হবে।” সুবহানাল্লাহ! (শিফা শরীফ ২/২১৪)
আল ইমামুল কাবীর, মাফ্খরাতুল মাগরিব হযরত ইমাম কাযী আবুল ফযল ‘আয়ায আন্দালুসী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আরো বলেন-
وَكَذٰلِكَ مَنْ لَّعَنَهٗاَوْ دَعَا عَلَيْهِ اَوْ تَـمَنّٰى مَضَرَّةً لَّهٗاَوْ نَسَبَ اِلَيْهِ مَا لَا يَلِيْقُ بـِمَنْصِبِهٖ عَلـٰى طَرِيْقِ الذَّمِّ اَوْ عَبَثَ فِىْ جِهَتِهِ الْعَزِيْزَةِ بِسُخْفٍ مِّنَ الْكَلَامِ وَهَجْرٍ وَّمُنْكَرٍ مِّنَ الْقَوْلِ وَزُوْرٍاَوْ عَيَّرَهٗ بِشَىْءٍ مِّـمَّا جَرٰى مِنَ الْبَلَاءِ وَالْمِحْنَةِ عَلَيْهِ اَوْ غَمَصَهٗ بِبَعْضِ الْعَوَارِضِ الْبَشَرِيَّةِ الْـجَائِزَةِ وَالْمَعْهُوْدَةِ لَدَيْهِ وَهٰذَا كُلُّهٗاِجْمَاعٌ مِّنَ الْعُلَمَاءِ وَاَئِمَّةِ الْفَتْوٰى مِنْ لَّدُنِ الصَّحَابَةِ رِضْوَانُ اللهِ عَلَيْهِمْاِلـٰى هَلُمَّ جَرًّا.
অর্থ:“অনুরূপভাবে যে ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উপর অভিসম্পাত করবে (নাঊযুবিল্লাহ!) বা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য বদ দো‘আ করবে (নাঊযুবিল্লাহ!) বা উনার ক্ষতি কামনা করবে (নাঊযুবিল্লাহ!) বা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিন্দা করা, অপবাদ দেয়া, দোষী সাব্যস্ত করার উদ্দেশ্যে উনার সাথে এরূপ বস্তু সম্পর্কিত করবে, যা উনার সম্মানিত শান মুবারক উনার খিলাফ, নাঊযুবিল্লাহ! বা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত শান মুবারক-এ, সম্মানিত ত্ববীয়ত বা সুমহান চরিত্র মুবারক-এ নির্বুদ্ধিতামূলক বাক্য, অশ্লীল কথা, অপছন্দনীয় কথা এবং মিথ্যাকে সম্পৃক্ত করবে, নাঊযুবিল্লাহ! বা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র মু’জিযা শরীফ স্বরূপ যে সমস্ত শান মুবারক গ্রহণ করেছেন, তা পবিত্র তাবাস্সুমী শান মুবারক হোক অথবা মারীদ্বি শান মুবারক হোক অথবা তাকলিফী শান মুবারক হোক না কেন, সে বিষয়ে উনাকে তিরস্কার করবে, নাঊযুবিল্লাহ! অর্থাৎ, মানবীয় স্বভাবসুলভ কারণে স্বাভাবিকভাবে সাধারণ মানুষকে যেসব বিষয় স্পর্শ করে থাকে যেমন রোগব্যাধি, ক্ষুধা, পিপাসা ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে জিন-ইনসানকে মর্যাদা দানের লক্ষ্যে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষথেকে এই সকল বিষয়ে যে পবিত্র শান মুবারক গ্রহণ করেছেন সে পবিত্র শান মুবারক উনাকে অবজ্ঞা করবে, তুচ্ছ জ্ঞান করবে, নাঊযুবিল্লাহ! তাহলে সেও নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গাল-মন্দকারী হিসেবে গণ্য হবে। নাঊযুবিল্লাহ! তার ব্যাপারেও এ আদেশ কার্যকর হবে, যা সরাসরি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গাল-মন্দকারীর ব্যাপারে প্রযোজ্য হয়। তাকেও শাস্তিস্বরূপ অবশ্যই ক্বতল করতে হবে, তাকে শাস্তিস্বরূপ অবশ্যই মৃত্যুদ- দিতে হবে। সুবহানাল্লাহ! এ ব্যাপারে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের থেকে অদ্যবধি যত হক্কানী-রব্বানী আলিম-উলামা, ইমাম-মুজতাহিদ ও আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা অতীত হয়েছেন উনারা সবাই ইজমা’ তথা ঐকমত্য পোষণ করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (শিফা শরীফ ২/২১৪)
মূল কথা হলো, সম্মানিত ও পবিত্র কুরআন শরীফ, সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ, সম্মানিত ইজমা শরীফ এবং সম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের আলোকে সম্মানিত শরীয়ত মুবারক উনার ফতওয়া মুবারক হচ্ছেন, যে ব্যক্তি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, আকরামুল আউওয়ালীন ওয়াল আখিরীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিয়ে অথবা উনার সংশ্লিষ্ট যে কোনো বিষয় মুবারক নিয়ে বিন্দু থেকে বিন্দুতমও চূ-চেরা, ক্বীল-ক্বাল করবে, অর্থাৎ, উনার মহাসম্মানিত শান মুবারক উনার খিলাফ কোনো বক্তব্য পেশ করবে, কোনো কাজ করবে, যে কোনোভাবে উনার মানহানী করার চেষ্টা করবে, সে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গাল-মন্দকারী হিসেবে, মনহানীকারী হিসেবে সাব্যস্ত হবে। নাঊযুবিল্লাহ! তার ব্যাপারে এ আদেশ কার্যকর হবে, যা সরাসরি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গাল-মন্দকারীর ব্যাপারে, মানহানীকারীর ব্যাপারে প্রযোজ্য হয়। অর্থাৎ তার একমাত্র শাস্তি হলো মৃত্যুদ-। সে নামধারী মুসলমান হোক বা কাফির হোক অথবা নাস্তিক হোক কিংবা যেকোনো ধর্মেরই অনুসারী হোক না কেন। তার তাওবা গ্রহণযোগ্য হবে না। এমনকি যারা তাকে সমর্থন করবে, তাদেরও একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদ-।এ মৃত্যুদ- থেকে রেহাই পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আর পূর্বেই উল্লেখ্য করা হয়েছে যে, সরাসরি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, আকরামুল আউয়ালীন ওয়াল আখিরীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গাল-মন্দকারী বা মানহানীকারীর উপর যে শাস্তি কার্যকর হবে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হযরত আব্বা আলাইহিস সালাম উনাকে এবং মহাসম্মানিতা হযরত আম্মা আলাইহাস সালাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে গাল-মন্দকারী বা মানহানীকারীর উপরও একই শাস্তি কার্যকর হবে। অর্থাৎ তারও একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদ-। সে নামধারী মুসলমান হোক বা কাফির হোক অথবা নাস্তিক হোক কিংবা যেকোনো ধর্মেরই অনুসারী হোক না কেন। তার তাওবা গ্রহণযোগ্য হবে না। এমনকি যারা তাকে সমর্থন করবে, তাদেরও একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদ-।এ মৃত্যুদ- থেকে রেহাই পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কেননা উনাদেরকে গাল-মন্দ করার বা মানহানী করার অর্থই হচ্ছে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গাল-মন্দ করা বা মানহানী করা। না‘ঊযুবিল্লাহ!
এ সম্পর্কে সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَنَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ لَّا يُقَاسُ بِنَا اَحَدٌ.
অর্থ: “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। আমাদের সাথে অন্য কারো ক্বিয়াস বা তুলনা করা যাবে না।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! (দায়লামী ৪/২৮৩, জামি‘উল আহাদীছ ২২/২১৯, কানযুল উম্মাল ১২/১০৪, জাম‘উল জাওয়ামি’ ১/২৪৯৫০, যাখায়েরুল ‘উক্ববাহ ফী মানাক্বিবে যাওইল কুরবা লিমুহিব্বে ত্ববারী ১/১৭, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৭ ইত্যাদি)
আলোচ্য সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে-
نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ
(আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম) বলেÑ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে উনার নিজের অন্তর্ভুক্ত করে নিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
তাই সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنِ الْاِمَامِ الثَّالِثِ سَيِّدِنَاحَضْرَتْ اَلْـحُسَيْنِ بْنِ عَلِىٍّ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِمَا السَّلَامُاَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَنْ سَبَّاَهْلَ الْبَيْتِ فَاِنَّـمَا يَسُبُّ اللهَ وَرَسُوْلَهٗ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.
অর্থ:“ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হুসাইন ইবনে হযরত আলী আলাইহিমাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে গাল-মন্দ করলো, মানহানী করলো, সে মূলত মহান আল্লাহ পাক উনাকে এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকেই গাল-মন্দ করলো, মানহানী করলো।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ফী সীরাতি খইরিল ইবাদ ১১/৮)
কাজেই, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হযরত আব্বা আলাইহিস সালাম উনাকে ও মহাসম্মানিতা হযরত আম্মা আলাইহাস সালাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে গাল-মন্দ করা বা মানহানী করার অর্থই হচ্ছে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গাল-মন্দ করা, মানহানী করা। নাঊযুবিল্লাহ!
আল ইমামুল কাবীর, মুজতাহিদে মত্বলক্ব, হাফিয, শাইখুল ইসলাম হযরত আবূ বকর মুহম্মদ ইবনে ইবরাহীম ইবনে মুনযির নীশাপূরী শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি (বিলাদত শরীফ: ২৪২ হিজরী শরীফ; বিছাল শরীফ: ৩১৯ হিজরী শরীফ) তিনি বলেন-
اَجْمَعَ عَوَامُّ اَهْلِ الْعِلْمِ عَلـٰى اَنَّ مَنْ سَبَّ النَّبِـىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُقْتَلُ وَمِـمَّنْ قَال ذٰلِكَ مَالِكُ بْنُاَنَسٍ وَّاللَّيْثُ وَاَحْمَدُ وَاِسْحَاقُ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِمْ وَهُوَ مَذْهَبُ الشَّافِعِـىِّ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ.
অর্থ:“সকল আহলে ইলম তথা হযরত ইমাম-মুজতাহিদ ও আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা ইজমা’ তথা ঐকমত্য পোষণ করেছেন, যে ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গালি দিবে, মানহানী করবে, তাকে শাস্তিস্বরূপ অবশ্যই ক্বতল করতে হবে, শাস্তিস্বরূপ অবশ্যই মৃত্যুদ- দিতে হবে। সুবহানাল্লাহ! মালিকী মাযহাব উনার সম্মানিত ইমাম হযরত ইমাম মালিক বিন আনাস রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, হযরত ইমাম লাইস রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, হাম্বলী মাযহাব উনার সম্মানিত ইমাম হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এবং হযরত ইসহাক ইবনে রাওয়াহাইহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি অর্থাৎ উনারা সকলেই এই মত পোষণ করেছেন এবং এটা হযরত ইমাম শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মাযহাব।” সুবহানাল্লাহ! (আল ইশরাফ ‘আলা মাযাহিবে আহলিল ‘ইলম ৩/১৬, আল ইক্বনা’ ২/৫৮৪, আল ইজমা’ ৮৭ পৃ., শিফা শরীফ ২/২১৫, আস সাইফুল মাসলূল ‘আলা মান সাব্বার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১১৯-১২০পৃ., সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ফী সীরাতি খইরিল ইবাদ ১২/২৩, আল মাওয়াহিবুল লাদুননিয়্যাহ ২/৩৮৪, শরহুয যারক্বানী‘আলাল মাওয়াহিব ৭/৩৩৭, তাফসীরে কুরতুবী ৮/৮২, আল বাহরুর রায়িক্ব শরহু কানযিদ দাক্বাইক্ব ১৩/৪৯৬, রদ্দুল মুহতার আলাদ দুররিল মুখতার ৪/২৩২ ইত্যাদি )
হযরত ইমাম কাযী আবুল ফযল ‘আয়ায আন্দালুসী রহমতুল্লাহি আলাইহি (বিলাদত শরীফ: ৪৭৬ হিজরী শরীফ এবং বিছাল শরীফ: ৫৪৪ হিজরী শরীফ) তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘আশ শিফা বিতা’রীফি হুকূকিল মুছত্বফা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ উনার মধ্যে বলেন-
قَالَاَبُوْ بَكْرِ بْنُ الْمُنْذِرِ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِاَجْمَعَ عَوَامُّ اَهْلِ الْعِلْمِ عَلـٰى اَنَّ مَنْ سَبَّ النَّبِـىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُقْتَلُ وَمِـمَّنْ قَالَ ذٰلِكَ مَالِكُ بْنُاَنَسٍ وَّاللَّيْثُ وَاَحْمَدُ وَاِسْحَاقُ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِمْ وَهُوَ مَذْهَبُ الشَّافِعِـىِّ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ قَالَ الْقَاضِىْاَبُوالْفَضْلِ وَهُوَ مُقْتَضٰى قَوْلِاَبِـىْ بَكْرِ ۣ الصِّدِّيْقِعَلَيْهِ السَّلَامُ وَلَا تُقْبَلُ تَوْبَتُهٗ عِنْدَ هٰؤُلَاءِ.
অর্থ:“আল ইমামুল কাবীর, মুজতাহিদে মত্বলক্ব, হাফিয, শাইখুল ইসলাম হযরত আবূ বকর মুহম্মদ ইবনে ইবরাহীম ইবনে মুনযির নীশাপূরী শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, সকল আহলে ইলম তথা হযরত ইমাম-মুজতাহিদ ও আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা ইজমা’ তথা ঐকমত্য পোষণ করেছেন, যে ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গাল-মন্দ করবে, মানহানী করবে, তাকে শাস্তিস্বরূপ অবশ্যই ক্বতল করতে হবে, শাস্তিস্বরূপ অবশ্যই মৃত্যুদ- দিতে হবে। সুবহানাল্লাহ! মালিকী মাযহাব উনার সম্মানিত ইমাম হযরত ইমাম মালিক বিন আনাস রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, হযরত ইমাম লাইস রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, হাম্বলী মাযহাব উনার সম্মানিত ইমাম হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, হযরত ইসহাক ইবনে রাওয়াহাইহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি অর্থাৎ উনারা সকলেই এই মত পোষণ করেছেন এবং এটা হযরত ইমাম শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মাযহাব। সুবহানাল্লাহ! কাযী আবুল ফযল আয়ায রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, এটাই সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার অভিমত। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনিসহ উপরোক্ত সমস্ত হযরত ইমাম-মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের ইজমা’ তথা ঐকমত্যে (যে ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গাল-মন্দ করবে, মানহানী করবে,) তার তাওবা গ্রহণযোগ্য হবে না।” সুবহানাল্লাহ! (আশ শিফা বিতা’রীফি হুকূকিল মুছত্বফা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ২/২১৫, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ফী সীরাতি খইরিল ইবাদ ১২/২৩, আল মাওয়াহিবুল লাদুন্নিয়্যাহ ২/৩৮৪)
শায়েখ আল্লামা হযরত ইমাম মুহম্মদ ইবনে মুহম্মদ ইবনে শিহাব ইবনে ইঊসুফ আল বায্যাযীআল হানাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি (বিছাল শরীফ: ৮২৭ হিজরী শরীফ) তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘আল ফাতাওউল বায্যাযিয়্যাহ আওইল জামি‘উল ওয়াজীয শরীফ’ উনার মধ্যে বলেন-
اِذَا سَبَّ الرَّسُوْلَ عَلَيْهِ الصَّلـٰوةُ وَالسَّلَامُ اَوْ وَاحِدًا مِّنَ الْاَنْۢبِيَاءِ عَلَيْهِمُ الصَّلـٰوةُ وَالسَّلَامُ فَاِنَّهٗ يُقْتَلُ حَدًّا وَّلَا تَوْبَةَ لَهٗاَصْلًا سَوَاءٌبَعْدَ الْقُدْرَةِ عَلَيْهِ وَالشَّهَادَةِ اَوْ جَاءَ تَائِبًا مِّنْ قِبَلِ نَفْسِهٖ كَالزِّنْدِيْقِلِاَنَّهٗ حَدٌّ وَّجَبَ فَلَا يَسْقُطُ بِالتَّوْبَةِ كَسَائِرِ حُقُوْقِ الْاٰدَمِيِّيْنَ وَكَحَدِّ الْقَذْفِ لَا يَسْقُطُ بِالتَّوْبَةِ.
অর্থ: “যখন কোনো ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অথবা অন্য সকল হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্য থেকে যে কোনো একজন নবী-রসূল আলাইহিস সালাম উনাকে গাল-মন্দ করবে, মানহানী করবে, অবশ্যই তাকে হদ্দ বা শাস্তিস্বরূপ ক্বতল করতে হবে, শাস্তিস্বরূপ মৃত্যুদ- দিতে হবে। প্রকৃতপক্ষে তার কোন তাওবা নেই। চাই তাকে বন্দি করার পর তার উপর সাক্ষী পেশ করা হোক অথবা সে স্বেচ্ছায় তাওবাকারীরূপে আসুক সমান কথা। তার হুকুম জিন্দিকের হুকুমের অনুরূপ। কেননা তার উপর হদ্দ তথা শাস্তি ওয়াজিব হয়ে গেছে। কাজেই তার তাওবার দ্বারা তার হদ্দ তথা শাস্তি রহিত হবে না। যেমনিভাবে মানুষের যাবতীয় হক্বসমূহ এবং অপবাদের হদ্দ তথা শাস্তি তাওবার দ্বারা রহিত হয় না।”সুবহানাল্লাহ! (ফাতাওয়ায়ে বায্যাযিয়্যাহ ২/৪৪২)।
শায়েখ আল্লামা হযরত ইমাম মুহম্মদ ইবনে মুহম্মদ ইবনে শিহাব ইবনে ইঊসুফ আল বায্যাযীআল হানাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আরো বলেন-
قُلْنَا اِذَا شَتَمَهٗ عَلَيْهِ الصَّلـٰوةُ وَالسَّلَامُ سَكْرَانُ لَا يُعْفٰى وَيُقْتَلُ اَيْضًا حَدًّا وَّهٰذَا مَذْهَبُ اَبِىْ بَكْرِۣالصِّدِّيْقِ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَالْاِمَامِ الْاَعْظَمِ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ وَالثَّوْرِىِّ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ وَاَهْلِ الْكُوْفَةِ وَالْمَشْهُوْرُ مِنْ مَذْهَبِ مَالِكٍ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ وَاَصْحَابِهٖ قَالَ الْـخَطَّابِـىُّ لَا اَعْلَمُ اَحَدًا مِّنَ الْمُسْلِمِيْنَ اخْتَلَفَ فِـىْ وُجُوْبِ قَتْلِهٖاِذَا كَانَ مُسْلِمًا وَّقَالَ ابْنُ سَحْنُوْنَ الْمَالِكِىُّ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِاَجْمَعَ الْعُلَمَاءُ اَنَّ شَاتِـمَهٗ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَافِرٌ وَّحُكْمُهُ الْقَتْلُ وَمَنْ شَكَّ فِىْ عَذَابِهٖ وَكُفْرِهٖ كَفَرَ قَالَ اللهُ تَعَالـٰى فِيْهِ﴿مَلْعُوْنِيْنَ اَيْنَمَا ثُقِفُوْاۤ اُخِذُوْا وَقُتِّلُوْا تَقْتِيْلًا﴾وَرَوٰى حَضْرَتْ عَبْدُ اللهِ بْنُ مُوْسَى بْنِ جَعْفَرٍ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ عَنْ عَلِىِّ بْنِ مُوْسٰى رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ عَنْاَبِيْهِعَلَيْهِ السَّلَامُ عَنْ جَدِّهٖ عَلَيْهِ السَّلَامُ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَلِىِّ بْنِ حُسَيْنٍ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ عَنْاَبِيْهِ عَلَيْهِ السَّلَامُ عَنِ الْـحُسَيْنِ بْنِ عَلِىٍّ عَلَيْهِمَا السَّلَامُ عَنْاَبِيْهِ عَلَيْهِ السَّلَامُاَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَنْ سَبَّ نَبِيًّا فَاقْتُلُوْهُ وَمَنْ سَبَّ اَصْحَابِـىْ فَاضْرِبُوْهُ وَاَمَرَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِقَتْلِ كَعْبِ بْنِ الْاَشْرَفِ بِلَا اِنْذَارٍ وَّكَانَ يُؤْذِيْهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَكَذَا اَمَرَ بِقَتْلِ اَبِىْ رَافِعِ ۣ الْيَهُوْدِىِّ وَكَذَا اَمَرَ بِقَتْلِ ابْنِ خَطَلٍ لِّـهٰذَا وَاِنْ كَانَ مُتَعَلِّقًا بِاَسْتَارِ الْكَعْبَةِ.
অর্থ: “আমরা বলি যখন কোনো ব্যক্তি (পাগল,) মাতাল বা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গাল-মন্দ করবে, মানহানী করবে, না‘ঊযুবিল্লাহ! তাকেও ক্ষমা করা যাবে না। তাকেও হদ্দ তথা শাস্তিস্বরূপ অবশ্যই ক্বতল করতে হবে, শাস্তিস্বরূপ অবশ্যই মৃত্যুদ- দিতে হবে। সুবহানাল্লাহ! এটাই খলীফাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার, হযরত ইমামে আ’যম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার, হযরত ইমাম সুফ্ইয়ান ছাওরী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার এবং কূফাবাসী উনাদের অভিমত। এবং তা হযরত ইমাম মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ও উনার অনুসারীদের অভিমত হিসেবে প্রসিদ্ধ। হযরত ইমাম খত্তাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন-
لَا اَعْلَمُ اَحَدًا مِّنَ الْمُسْلِمِيْنَ اخْتَلَفَ فِـىْ وُجُوْبِ قَتْلِهٖاِذَا كَانَ مُسْلِمًا.
 ‘আমি এমন কোনো মুসলমান পাইনি, যিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গালি-মন্দকারীর ক্বতল তথা মৃত্যুদ- আবশ্যক হওয়ার ব্যাপারে মতবিরোধ করেছেন, যদি সে মুসলমান হয়ে থাকে।’ সুবহানাল্লাহ!
হযরত ইমাম ইবনে সাহ্নূন মালিকী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন-
اَجْمَعَ الْعُلَمَاءُ اَنَّ شَاتِـمَهٗ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَافِرٌ وَّحُكْمُهُ الْقَتْلُ وَمَنْ شَكَّ فِىْ عَذَابِهٖ وَكُفْرِهٖ كَفَرَ.
সমস্ত ইমাম মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা এ বিষয়ে ইজমা’ তথা ঐকমত্য পোষণ করেছেন যে, নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গাল-মন্দকারী,মানহানীকারী ব্যক্তি কাফির। তার হুকুম হলো, তাকে ক্বতল করতে হবে, মৃত্যুদ- দিতে হবে। আর যে ব্যক্তি এ ধরনের লোকদের কাফির হওয়ার ব্যাপারে এবং শাস্তিযোগ্য হওয়ার বিষয়ে সন্দেহ করবে, সে নিজেও কাফির হবে (এবং তাকেও হত্যা করতে হবে)।’ সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
مَلْعُوْنِيْنَ اَيْنَمَا ثُقِفُوْاۤ اُخِذُوْا وَقُتِّلُوْا تَقْتِيْلًا.
অর্থ: “লা’নতগ্রস্ত অবস্থায় তাদেরকে যেখানেই পাওয়া যাবে, সেখানেই পাকড়াও করা হবে এবং অবশ্যই তাদেরকে ক্বতল করা হবে, মৃত্যুদ- দেয়া হবে।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৬১)
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মূসা ইবনে জা’ফর আলাইহিমুস সালাম তিনি হযরত আলী ইবনে মূসা আলাইহিমাস সালাম উনার থেকে, তিনি উনার মহাসম্মানিত পিতা আলাইহিস সালাম উনার থেকে, উনার মহাসম্মানিত পিতা আলাইহিস সালাম তিনি উনার মহাসম্মানিত দাদা আলাইহিস সালাম উনার থেকে, তিনি মুহম্মদ ইবনে আলী ইবনে হুসাইন আলাইহিমুস সালাম উনার থেকে, তিনি উনার মহাসম্মানিত পিতা আলাইহিস সালাম উনার থেকে, তিনি ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হুসাইন ইবনে আলী আলাইহিমাস সালাম উনার থেকে, তিনি উনার মহাসম্মানিত পিতা সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণনা করেন- নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
مَنْ سَبَّ نَبِيًّا فَاقْتُلُوْهُ وَمَنْ سَبَّ اَصْحَابِـىْ فَاضْرِبُوْهُ.
অর্থ: “যে ব্যক্তি কোনো নবী-রসূল আলাইহিস সালাম উনাকে গাল-মন্দ করবে, মানহানী করবে, আপনারা তাকে ক্বতল করুন, মৃত্যুদ- দিন। আর যে ব্যক্তি আমার হযরত ছাহাবায়ে রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উনাদেরকে গাল-মন্দ করবে, মানহানী করবে, আপনারা তাকে প্রহার করুন।” সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কষ্ট দেয়ার কারণে তিনি কোন সতর্কীকরণ ছাড়াই কা’ব ইবনে আশরাফকে শাস্তিস্বরূপ ক্বতল করার সম্মানিত নির্দেশ মুবারক দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! একই কারণে তিনি আবূ রফে’ ইহুদীকেও শাস্তিস্বরূপ ক্বতল করার সম্মানিত নির্দেশ মুবারক দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! অনুরূপভাবে একই কারণে তিনি সম্মানিত কা’বা শরীফ উনার গিলাফ মুবারক উনার সাথে ঝুলন্ত থাকা সত্ত্বেও ইবনে খত্বালকে শাস্তিস্বরূপ ক্বতল করার, মৃত্যুদ- দেয়ার সম্মানিত নির্দেশ মুবারক দিয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ! (ফাতাওয়ায়ে বায্যাযিয়্যাহ ২/২৪২-২৪৩)
সৃষ্টির সূচনাতেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের বেমেছাল কল্পনাতীত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের বহিঃপ্রকাশ মুবারক


নুযহাতুল মাজালিস’ কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
قَالَ الْكِسَائِىُّ وَغَيْرُهٗ لَمَّا خَلَقَ اللهُ حَضْرَتْ اٰدَمَ عَلَيْهِ السَّلَامُ خَلَقَ مِنْ ضِلْعِهِ الْاَيْسَرِ حَضْرَتْ حَوَّاءَ عَلَيْهَا السَّلَامُ وَهُوَ فِى الْـجَنَّةِ وَاَوْدَعَهَا حُسْنَ سَبْعِيْنَ حَوْرَاءَ فَصَارَتْ حَضْرَتْ حَوَّاءُ عَلَيْهَا السَّلَامُ بَيْنَ الْـحُوْرِ الْعِيْنِ كَالْقَمَرِ بَيْنَ الْكَواكِبِ وَكَانَ حَضْرَتْ اٰدَمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ نَائِمًا فَلَمَّا اسْتَيْقَظَ مَدَّ يَدَهٗ اِلَيْهَا فَقِيْلَ لَهٗ حَتّٰى تُؤَدِّىَ مَهْرَهَا قَالَ وَمَا هُوَ قَالَ اَنْ تُصَلِّـىَ عَلـٰى سَيِّدِنَا مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ وَّقِيْلَ حَتّٰى تَعَلَّمَهَا مَعَالِـمَ دِيْنِهَا وَكَانَ حَضْرَتْ اٰدَمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ اَوْدَعَهُ اللهُ مِنَ الْـحُسْنِ وَالْكَمَالِ حَتّٰى اَنَّ خَدَّهُ الْاَيْـمَنَ يَغْلِبُ شُعَاعَ الشَّمْسِ وَكَانَ نُوْرُ سَيِّدِنَا مُـحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِىْ خَدِّهِ الْاَيْسَرِ يَغْلِبُ عَلَى الْقَمَرِ وَكَانَ حَضْرَتْ يُوْسُفُ عَلَيْهِ السَّلَامُ فِيْهِ فَلَمَّا نَظَرَ حَضْرَتْ اٰدَمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ فِـىْ وَجْهٖ حَضْرَتْ حَوَّاءَ عَلَيْهَا السَّلَامُ نَظَرَتْ حَضْرَتْ حَوَّاءُ عَلَيْهَا السَّلَامُ فِـىْ وَجْهِ حَضْرَتْ اٰدَمَ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ يَا حَضْرَتْ حَوَّاءُ عَلَيْهَا السَّلَامُ مَا اَرٰى اَنَّ اللهَ تَعَالـٰى خَلَقَ خَلْقًا اَحْسَنَ مِنْكِ وَمِنِّـىْ فَاَوْحَى اللهُ تَعَالـٰى اِلـٰى حَضْرَتْ جِبْرِيْلُ عَلَيْهِ السَّلَامُ خُذْ بَيَدِ حَضْرَتْ حَوَّاءَ عَلَيْهَا السَّلَامُ وَحَضْرَتْ اٰدَمَ عَلَيْهِ السَّلَامُ اِلَـى الْفِرْدَوْسِ الْاَعْلـٰى وَافْتَحْ لَـهُمَا قَصْرًا مِّنَ الْقُصُوْرِ فَفَتَحَ بَابَ قَصْرً مِّنَ الْيَاقُوْتِ الْاَحْمَرِ فِيْهِ قُبَّةٌ مِّنَ الْكَافُوْرِ عَلـٰى قَوَائِمِهِ الزَّبَرْجَدِ فِـىْ رَوْضَةٍ مِّنْ زَعْفَرَانَ فَفَتَحَ حَضْرَتْ جِبْرِيْلُ عَلَيْهِ السَّلَامُ بَابَ الْقُبَّةِ فَرَاٰى سَرِيْرًا مِّنَ الذَّهَبِ قَوَائِمِهٖ مِنَ الدُّرِّ عَلَيْهِ جَارِيَةٌ لَّـهَا نُوْرٌ وَّشُعَاعٌ عَلـٰى رَاْسِهَا تَاجٌ مِّنْ ذَهَبٍ مُّرَصَّعٌ بِالْـجَوَاهِرِ لَـمْ يَرَ حَضْرَتْ اٰدَمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ اَحْسَنَ مِنْهُ عَلَيْهِ صُوْرَةً جَمِيْلَةً قَالَ حَضْرَتْ اٰدَمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ يَا رَبِّ مَنْ هٰذِهِ الصُّوْرَةُ قَالَ حَضْرَتْ فَاطِمَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ بِنْتُ نَبِىِّ سَيِّدِنَا مُـحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ يَا رَبِّ مَنْ يَّكُوْنُ بَعْلُهَا فَقَالَ اللهُ تَعَالـٰى يَا حَضْرَتْ جِبْرِيْلُ عَلَيْهِ السَّلَامُ اِفْتَحْ بَابَ قَصْرٍ مِّنْ يَّاقُوْتٍ فَفَتَحَ لَهٗ فَرَاٰى فِيْهِ قُبَّةً مِّنَ الْكَافُوْرِ فِيْهَا سَرِيْرٌ مِّنْ ذَهَبٍ عَلَيْهِ شَابٌّ حُسْنُهٗ كَحُسْنِ حَضْرَتْ يُوْسُفَ عَلَيْهِ السَّلَامُ فَقَالَ هٰذَا بَعْلُهَا حَضْرَتْ عَلِىُّ بْنُ اَبِـىْ طَالِبٍ عَلَيْهِ السَّلاَمُ فَقَالَ يَا رَبِّ هَلْ لَّـهُمْ اَوْلَادٌ فَاَمَرَ اللهُ تَعَالـٰى حَضْرَتْ جِبْرِيْلُ عَلَيْهِ السَّلَامُ اَنْ يَّفْتَحَ بَابَ قَصْرٍ مِّنَ اللُّؤْلُؤِ فَفَتَحَ بَابَ قَصْرٍ مِّنَ اللُّؤْلُؤِ فِيْهِ قُبَّةٌ مِّنَ الزَّبَرْجَدِ فِيْهَا سَرِيْرٌ مِّنَ الْعَنْۢبَرِ عَلَيْهِ صُوْرَةُ حَضْرَتْ اَلْـحَسَنِ وَحَضْرَتْ اَلْـحُسَيْنِ عَلَيْهِمَا السَّلَامُ فَرَجَعَ حَضْرَتْ اٰدَمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ اِلـٰى مَوْضِعِهٖ.
অর্থ: “হযরত ইমাম কিসায়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনিসহ আরো অনেকেই বলেন, সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার মধ্যে যখন মহান আল্লাহ পাক তিনি আবুল বাশার সাইয়্যিদুনা হযরত আদম ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে সৃষ্টি মুবারক করার পর উনার বাম পাঁজরের হাড় মুবারক থেকে উম্মুল বাশার সাইয়্যিদাতুনা হযরত হাওয়া আলাইহাস সালাম উনাকে সৃষ্টি মুবারক করেন। তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি উম্মুল বাশার সাইয়্যিদাতুনা হযরত হাওয়া আলাইহাস সালাম উনার মধ্যে ৭০ জন সম্মানিতা হুর উনাদের সৌন্দর্য মুবারক হাদিয়া মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! ফলে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল বাশার আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত সৌন্দর্য মুবারক সকল সম্মানিতা হুর উনাদের মাঝে এরূপভাবে ফুটে উঠলো যেমন সমস্ত তারকারাজির মাঝে চন্দ্রের সৌন্দর্য। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল বাশার আলাইহাস সালাম উনাকে বেমেছাল সম্মানিত সৌন্দর্য মুবারক হাদিয়া মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি ঘুমিয়ে ছিলেন। যখন তিনি ঘুম থেকে উঠলেন, তখন তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল বাশার আলাইহাস সালাম উনার দিকে স্বীয় হাত মুবারক বাড়ালেন। তখন উনাকে বলা হলো, সম্মানিত মোহরানা মুবারক আদায় করা ব্যতীত সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল বাশার আলাইহাস সালাম উনাকে স্পর্শ মুবারক করা যাবে না। সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, উনার সম্মানিত মোহরানা মুবারক কী? মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, আপনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত শান মুবারক-এ তিনবার সম্মানিত দুরূদ শরীফ পাঠ করুন। সুবহানাল্লাহ! আর কেউ কেউ বলেন (কোনো কোনো বর্ণনা মতে), আপনি উনাকে সম্মানিত দ্বীনী তা’লীম মুবারক দিবেন- এই শর্তে স্পর্শ মুবারক করতে পারবেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে বেমেছাল সৌন্দর্য মুবারক এবং পূর্ণতা মুবারক হাদিয়া মুবারক করলেন। ফলে উনার সম্মানিত ডান গাল মুবারক উনার সৌন্দর্য মুবারক সূর্যের আলোক উজ্জ্বলকে হার মানালেন। যা ছিলেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত নূর মুবারক উনার এক অংশ মুবারক। সুবহানাল্লাহ! আর সম্মানিত বাম গাল মুবারক উনার মধ্যে এমন সৌন্দর্য মুবারক রাখা হলো, যা চন্দ্রের আলো থেকে সমুজ্জ্বল। আর এটা সাইয়্যিদুনা হযরত ইঊসুফ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত সৌন্দর্য মুবারক ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর যখন সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল বাশার আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত চেহারা মুবারক উনার দিকে এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল বাশার আলাইহাস সালাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত চেহারা মুবারক উনার দিকে দৃষ্টি মুবারক দিলেন, তখন সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, হে হযরত উম্মুল বাশার আলাইহাস সালাম! আমার দেখা মতে মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনার এবং আমার চেয়ে আর কাউকে এতো অধিক সৌন্দর্য মুবারক হাদিয়া মুবারক করেননি। সুবহানাল্লাহ! তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনাকে সম্মানিত আদেশ মুবারক করলেন, (হে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম!) আপনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল বাশার আলাইহাস সালাম উনার এবং সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের সম্মানিত হাত মুবারক ধরে উনাদেরকে ‘ফিরদাউসে ‘আলা’ উনার নিকট নিয়ে যান এবং উনাদের জন্য সেখানকার সম্মানিত বালাখানা মুবারকসমূহ থেকে দুইটি সম্মানিত বালাখানা মুবারক খুলে দিন। অতঃপর হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি লাল ইয়াকুত পাথরের একটি সম্মানিত বালাখানা মুবারক উনার দ্বার মুবারক উন্মুক্ত করে দিলেন। সুবহানাল্লাহ! সেখানে জাফরানের বাগানের মধ্যে কর্পূরের একখানা সম্মানিত গম্বুজ মুবারক ছিলো, যার পায়া ছিলো গোমেদ তথা পীতবর্ণের মণিবিশেষ দ্বারা তৈরি। অতঃপর হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি উক্ত গম্বুজ মুবারক উনার দরজা মুবারক উন্মুক্ত করে দিলেন। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি সেখানে একখানা স্বর্ণ নির্মিত খাট মুবারক দেখতে পেলেন, যার পায়া মুবারকগুলো ছিলেন মুক্তার। তিনি উক্ত খাট মুবারক উনার মধ্যে একজন মহাসম্মানিতা মহিলা আলাইহাস সালাম দেখতে পেলেন, যেই মহাসম্মানিতা মহিলা আলাইহাস সালাম উনার থেকে অবিরত ধারায় সম্মানিত নূর মুবারক এবং রশ্মি মুবারক বিচ্ছূরিত হচ্ছেন। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত মাথা মুবারক উনার মধ্যে জাওহার খচিত স্বর্ণের তাজ মুবারক শোভা পাচ্ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি উক্ত মহাসম্মানিতা মহিলা আলাইহাস সালাম উনার থেকে এতো অধিক বিস্ময়কর খুব ছূরত মুবারক উনার অধিকারিণী আর কাউকে কখনো দেখেননি। সুবহানাল্লাহ! তখন সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, আয় বারে এলাহী মহান আল্লাহ পাক! এতো অধিক বেমেছাল বিস্ময়কর সৌন্দর্য মুবারক উনার অধিকারিণী এই সুমহান ব্যক্তিত্বা মুবারক তিনি কে? মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, তিনি হচ্ছেন আমার যিনি হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত লখতে জিগার মুবারক, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, আয় বারে এলাহী, মহান আল্লাহ পাক! উনার মহাসম্মানিত যাওজুম মুকাররাম কে হবেন? অতঃপর মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, হে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম! আপনি ইয়াকুত নির্মিত সম্মানিত বালাখানা মুবারক উনার দরজা মুবারকখানা খুলে দিন। তারপর হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি উক্ত সম্মানিত বালাখানা মুবারক উনার দরজা মুবারকখানা খুলে দিলেন। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি সেখানে একখানা কর্পূর নির্মিত গম্বুজ মুবারক উনার ভিতর স্বর্ণের খাট মুবারক উনার মধ্যে সাইয়্যিদুনা হযরত ইঊসুফ আলাইহিস সালাম উনার ন্যায় (বরং উনার চেয়েও) অত্যধিক সৌন্দর্য মুবারক উনার অধিকারী একজন মহাসম্মানিত যুবক উনাকে দেখতে পেলেন। সুবহানাল্লাহ! তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, ইনিই হচ্ছেন সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত জাওযুম মুকাররাম সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম (হযরত আলী ইবনে আবী ত্বালিব আলাইহিস সালাম)। সুবহানাল্লাহ! তখন সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, আয় বারে এলাহী, মহান আল্লাহ পাক! উনাদের কী কোনো আওলাদ রয়েছেন? তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনাকে লু’লু’ তথা অতি মূল্যবান মুক্তা মুবারক দ্বারা নির্মিত একখানা সম্মানিত বালাখানা মুবারক উনার দ্বার মুবারক খুলে দিতে নির্দেশ মুবারক দিলেন। ফলে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি উক্ত সম্মানিত বালাখানা মুবারক উনার দ্বার মুবারক উন্মুক্ত করে দিলেন। সুবহানাল্লাহ! সেখানে জমরূদ নির্মিত একখানা গম্বুজ উনার মুবারক ভিতরে একখানা আম্বরের খাট মুবারক উনার মধ্যে সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম) উনার এবং সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম) উনার অর্থাৎ উনাদের উভয়ের সম্মানিত ছূরত মুবারক শোভা পাচ্ছিলেন। (উনাদেরকে দেখে, সবশেষে) সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি উনার স্বস্থানে ফিরে আসলেন। সুবহানাল্লাহ! (নুযহাতুল মাজালিস ২/১৭২)
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি উপরোক্ত সম্মানিত ঘটনা মুবারক দ্বারা সৃষ্টির শুরুতেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের বেমেছাল কল্পনাতীত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের বিষয়টি অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে প্রকাশ করে দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলকে জানিয়ে দিয়েছেন যে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা শুধু যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া যত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক রয়েছেন, সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারী হচ্ছেন উনারা। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় সিলসিলা মুবারক বর্তমান সময় পর্যন্ত যেভাবে জারী রয়েছেন এবং ক্বিয়ামত পর্যন্ত যেভাবে জারী থাকবেন

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ فَاطِمَةَ الْكُبْرَى عَلَيْهَا السَّلَامُ قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كُلُّ بني أُمٍّ يَنْتَمُونَ إِلَى عَصَبَةٍ إِلا وَلَدَ حَضْرَتْ فَاطِمَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ فَأَنَا وَلِيُّهُمْ وَأَنَا عَصَبَتُهُمْ.
অর্থ: “উম্মু আবীহা আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, প্রত্যেক মায়ের সন্তান স্বীয় পিতার দিকে সম্পর্কিত হয় কিন্তু উম্মু আবীহা আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিমাস সালাম উনারা ব্যতীত। আমিই উনাদের মহাসম্মানিত অবিভাবক এবং আমিই উনাদের মহাসম্মানিত পিতৃপুরুষ।” সুবহানাল্লাহ!(আল মু’জামুল কাবীর লিত ত্ববারনী ৩/৭৪, মুসনাদে আবী ইয়া’লা ১২/১০৯, মাজমাউয যাওয়ায়িদ ৯/৯৯, আল ফাতহুল কাবীর ৩/২২ ইত্যাদী)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে
عَنْ حَضْرَتْ عُمَرَ عَلَيْه السَّلَامُ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ كُلُّ بني أُنْثَى فَإِنَّ عَصَبَتَهُمْ لأَبِيهِمْ مَا خَلا وَلَدَ حَضْرَتْ فَاطِمَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ فَإِنِّي أَنَا عَصَبَتهُمْ وَأَنَا أَبُوهُمْ.
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত ফারুকে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এ কথা মুবারক ইরশাদ মুুবারক করতে শুনেছি যে, প্রত্যেক মহিলার সন্তানদের সম্পর্ক স্বীয় পিতার দিকে হয়ে থাকে; কিন্তু উম্মু আবীহা আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিমাস সালাম উনারা ব্যতীত। আমিই উনাদে মহাসম্মানিত পিতৃপুরুষ এবং আমিই উনাদের মহাসম্মানিত অভিভাবক।” সুবহানাল্লাহ! (আল মু’জামুল কাবীর ৩/৭৩, মাজমাউয যাওয়ায়িদ ৪/২৬০, আল জামি‘উছ ছগীর ২/১৫৯, আল ফাতহুল কাবীর ২/৩০৪, জামি‘উল আহাদীছ ১৫/৩২৫, কানযুল ‘উম্মাল ১২/১৬ ইত্যাদি)
সুতরাং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বংশ মুবারক উনার মহাসম্মানিত লখতে জিগার মুবারক, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার দুইজন মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ, সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ, সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের উভয়ের মাধ্যমে কিয়ামত পর্যন্ত জারী থাকবেন। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ উনাদের উভয়ের মাধ্যমে কিয়ামত পর্যন্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইতি শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা এবং আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নিবেন। সুবহানাল্লাহ!
আর সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পূর্বে সম্মানিত ইমামত মুবারক উনার বিষয়টি সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট হস্তান্তর মুবারক করেন। কিন্তু উনার সম্মানিত কুরবত মুবারক এবং সম্মানিত মূল নিয়ামত মুবারক উনার বিষয়টি উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান মুছান্না আলাইহিস সালাম উনার নিকট হস্তান্তরিত হন। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান মুছান্না আলাইহিস সালাম উনার মাধ্যমে সাইয়্যিদুন হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত কুরবত মুবারক এবং সম্মানিত মূল নিয়ামত মুবারক উনার বিষয়টি জরী থাকেন, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় সিলসিলা মুবারক জারী থাকেন। সুবহানাল্লাহ! আর সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার সম্মানিত কুরবত মুবারক এবং সম্মানিত মূল নিয়ামত মুবারক ও সম্মানিত ইমামত মুবারক উনার বিষয়টি উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম যাইনুল আবিদীন আলাইহিস সালাম উনার নিকট সম্মানিত হস্তান্তর মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! যিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুর রবি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হিসেবে সকলের মাঝে মশহূর। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুর রবি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাধ্যমে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত কুরবত মুবারক এবং সম্মানিত মূল নিয়ামত মুবারক ও সম্মানিত ইমামত মুবারক উনাদের বিষয়টি জারী থাকেন তথা সম্মানিত ইমামত মুবারক এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় সিলসিলা মুবারক জারী থাকেন। সুবহানাল্লাহ! আর সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুর রবি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত কুরবত মুবারক এবং সম্মানিত মূল নিয়ামত মুবারক ও সম্মানিত ইমামত মুবারক উনাদের বিষয়টি হস্তান্তরিত হন উনার মহাসম্মানিত আওলাদ ইমামুল খামিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম মুহম্মদ বাক্বির আলাইহিস সালাম উনার নিকট। উনার পর হস্তান্তরিত হন উনার মহাসম্মানিত আওলাদ ইমামুস সাদিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম জা’ফর ছাদিক্ব আলাইহিস সালাম উনার নিকট। উনার পর হস্তান্তরিত হন উনার মহাসম্মানিত আওলাদ ইমামুস সাবি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম মূসা কাযিম আলাইহিস সালাম উনার নিকট। উনার পর হস্তান্তরিত হন উনার মহাসম্মানিত আওলাদ ইমামুছ ছামিন মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আলী রেযা আলাইহিস সালাম উনার নিকট। উনার পর হস্তান্তরিত হন উনার মহাসম্মানিত আওলাদ ইমামুত তাসি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম মুহম্মদ ত্বক্বী আলাইহিস সালাম উনার নিকট। উনার পর হস্তান্তরিত হন উনার মহাসম্মানিত আওলাদ ইমামুল ‘আশির মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আলী নক্বী আলাইহিস সালাম উনার নিকট। উনার পর হস্তান্তরিত হন উনার মহাসম্মানিত আওলাদ ইমামুল হাদী ‘আশার মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান আসকারী আলাইহিস সালাম উনার নিকট। অতঃপর সম্মানিত ইমামত মুবারক নয়; শুধু সম্মানিত কুরবত মুবারক এবং সম্মানিত মূল নিয়ামত মুবারক উনার বিষয়টি হস্তান্তরিত হন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান আসকারী আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম উনার নিকট। উনার পর উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম উনার নিকট, উনার পর উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম উনার নিকট, উনার পর উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম উনার নিকট। এভাবে সম্মানিত কুরবত মুবারক এবং সম্মানিত মূল নিয়ামত মুবারক উনার বিষয়টি বংশানুক্রমে হস্তান্তরিত হতে থাকেন। সুবহানাল্লাহ!
আর সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত কুরবত মুবারক এবং সম্মানিত মূল নিয়ামত মুবারক উনার বিষয়টিও হস্তান্তরিত হতে থাকেন উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান মুছান্না আলাইহিস সালাম উনার মাধ্যমে। অর্থাৎ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান মুছান্না আলাইহিস সালাম উনার পর উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম উনার নিকট, উনার পর উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম উনার নিকট, উনার পর উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম উনার নিকট। এভাবে ১১তম ইমাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান আসকারী আলাইহিস সালাম উনার পর এসে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান মুছান্না আলাইহিস সালাম উনার মাধ্যমে জারিকৃত সম্মানিত কুরবত মুবারক এবং সম্মানিত মূল নিয়ামত মুবারক উনার বিষয়টি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ ইমামুর রবি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম যাইনুল আবেদীন আলাইহিস সালাম উনার মাধ্যমে জারিকৃত সম্মানিত কুরবত মুবারক এবং সম্মানিত মূল নিয়ামত মুবারক উনার বিষয়টি একত্রিত হয়ে যান। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ ১১তম ইমাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান আসকারী আলাইহিস সালাম উনার পর এসে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত কুরবত মুবারক এবং সম্মানিত মূল নিয়ামত মুবারক আর সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত কুরবত মুবারক এবং সম্মানিত মূল নিয়ামত মুবারক উনাদের বিষয়টি একত্রিত হয়ে যান। সুবহানাল্লাহ! যার কারণে ১১তম ইমাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান আসকারী আলাইহিস সালাম উনার পর থেকে শুধু একটি মাত্র মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় সিলসিলা মুবারক উনার মাধ্যমে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত কুরবত মুবারক এবং সম্মানিত মূল নিয়ামত মুবারক হস্তান্তর মুবারক হতে থাকেন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত কুরবত মুবারক এবং সম্মানিত মূল নিয়ামত মুবারক উনাদের বিষয়টি ১১তম ইমাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান আসকারী আলাইহিস সালাম উনার পর যেই সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারক উনার নিকট এসে একত্রিত হয়েছেন, তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক উনার পূর্বে উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম উনার নিকট তা হস্তান্তর মুবারক করেন। তিনি আবার উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম উনার নিকট হস্তান্তর মুবারক করেন, তিনি আবার উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম উনার নিকট হস্তান্তর মুবারক করেন। এভাবে বংশানুক্রমে একটি মাত্র মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় সিলসিলা মুবারক উনার মাধ্যমে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত কুরবত মুবারক এবং সম্মানিত মূল নিয়ামত মুবারক হস্তান্তরিত হতে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! এভাবে বংশানুক্রমে হস্তান্তরিত হতে হতে ৭০০ হিজরীর দিকে সেই সম্মানিত কুরবত মুবারক এবং সম্মানিত মূল নিয়ামত মুবারক উনাদের বিষয়টি হস্তান্তরিত হন আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আবূ বকর মুজাদ্দিদী আলাইহিস সালাম উনার নিকট। সুবহানাল্লাহ! যিনি সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, মুজাদ্দিদে আ’যম, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার মহাসম্মানিত পূর্বপুরুষ আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের মুবারক ইচ্ছা ভারতীয় উপমহাদেশকে বিশেষ করে বাংলাদেশকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত পরশ মুবারক উনার মাধ্যমে ধন্য করা। তাই সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত আওলাদ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আবূ বকর মুজাদ্দিদী আলাইহিস সালাম উনাকে হিন্দুস্তানের আজমীর শরীফ-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক রাখার জন্য বলেন। সুবহানাল্লাহ! আর এদিকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি খাজা মু‘ঈনুদ্দীন চিশতী আজমিরী সানজিরী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম প্রচারের জন্য হিন্দুস্তানের আজমীর শরীফ-এ তাশরীফ মুবারক রাখার জন্য সম্মানিত নির্দেশ মুবারক প্রদান করেন। তখন আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আবূ বকর মুজাদ্দিদী আলাইহিস সালাম তিনি এবং হযরত খাজা মু‘ঈনুদ্দীন চিশতী আজমিরী সানজিরী রহমতুল্লাহ আলাইহি তিনি অর্থাৎ উনারা উভয়ে অনেক সফর সঙ্গীসহ আজমীর শরীফ উনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা মুবারক দেন। তারপর সমরখন্দ, লাহোর, মুলতান হয়ে দিল্লী পৌঁছেন। পরবর্তীতে উনারা দীল্লি থেকে আজমীর শরীফ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক রাখেন। সুবহানাল্লাহ!
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আবূ বকর মুজাদ্দিদী আলাইহিস সালাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের মুবারক ইচ্ছা অনুযায়ী আজমীর শরীফ-এ থেকে যান এবং সেখানেই তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! আজমীর শরীফ-এ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ রয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! উনারই অধস্তন মহাসম্মানিত আওলাদ হচ্ছেন আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম সাইয়্যিদ মুহম্মদ আলাউদ্দীন আলাইহিস সালাম তিনি এবং আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম সাইয়্যিদ মুহম্মদ সালাহুদ্দীন আলাইহিস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা। সুবহানাল্লাহ! উনারা ১১ হিজরী শতকের শেষার্ধে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের মুবারক ইচ্ছা অনুযায়ী বাংলাদেশ ও তার অধিবাসীদেরকে সম্মানিত রহমত-বরকত মুবারক, সম্মানিত নিয়ামত মুবারক এবং সম্মানিত হিদায়েত মুবারক দানে ধন্য করার জন্য বন্দর নগরী চট্টগ্রামে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ! কিছুদিন চট্টগ্রামে সম্মানিত অবস্থান মুবারক করার পর উনারা দুই ভাই সম্মানিত রহমত-বরকত মুবারক, সম্মানিত নিয়ামত মুবারক এবং সম্মানিত হিদায়েত মুবারক দানে সকলকে ধন্য করার জন্য নূরানীগঞ্জের (নারায়নগঞ্জের) সোনারগাঁও-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ! উনারা পাথরে ভেসে এখানে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেছিলেন। সুবহানাল্লাহ! সেই সম্মানিত নিদর্শন মুবারক এখনও অক্ষতভাবে বিদ্যমান রয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম সাইয়্যিদ মুহম্মদ সালাহুদ্দীন আলাইহিস সালাম তিনি সোনারগাঁও এলাকায় সম্মানিত হিদায়েত মুবারক উনার কাজে ব্যস্ত থাকেন এবং সেখানেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! সেখানেই উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ রয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম সাইয়্যিদ মুহম্মদ আলাউদ্দীন আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত ও পবিত্র সোনারগাঁও-এ কিছু দিন সম্মানিত অবস্থান মুবারক করার পর সম্মানিত ও পবিত্র সোনারগাঁও উনার অদূরে যে স্থানে সম্মানিত হিদায়েত মুবারক উনার কেন্দ্র  গড়ে তুলেন উনার বর্তমান নাম মুবারক “সম্মানিত ও পবিত্র প্রভাকরদী শরীফ”। এই সম্মানিত ও পবিত্র প্রভাকরদী শরীফ উনার মাঝে রয়েছেন আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার মহাসম্মানিত পূর্বপুরুষ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্য থেকে কয়েকজন মহাসম্মানিত পূর্বপুরুষ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপাবিত্র রওযা শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম সাইয়্যিদ মুহম্মদ আলাউদ্দীন আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম সাইয়্যিদ মুহম্মদ মালাউদ্দীন আলাইহিস সালাম তিনি, উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম সাইয়্যিদ মুহম্মদ এলাহী বখস আলাইহিস সালাম তিনি, উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম সাইয়্যিদ মুহম্মদ ওয়ালী বখস আলাইহিস সালাম তিনি, উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান আলাইহিস সালাম তিনি, যিনি আমাদের মহাসম্মানিত হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ! আর উনারই মহাসম্মানিত কোল মুবারক-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক আনেন মুজাদ্দিদে আ’যম, আল জাব্বারিউল আউওয়াল, আল ক্বউইউল আউওয়াল, সুলত্বানুন নাছীর, হাবীবুল্লাহ, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
এভাবে সাইয়্যিদুন হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং সাইয়্যিদুন হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের সম্মানিত কুরবত মুবারক এবং সম্মানিত মূল নিয়ামত মুবারক তথা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত কুরবত মুবারক এবং সম্মানিত মূল নিয়ামত মুবারক বংশানুক্রমে মুজাদ্দিদে আ’যম, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার নিকট হস্তান্তর মুবারক হন। সুবহানাল্লাহ!
 সুতরাং মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা এবং উনার মহাসম্মানিত পূর্বপুরুষ আলাইহিমুস সালাম উনারা প্রত্যেকেই হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের যত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক ও খুছূছিয়াত বা বৈশিষ্ট্য মুবারক রয়েছেন, সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক ও খুছূছিয়াত বা বৈশিষ্ট্য মুবারক উনাদের অধিকারী হচ্ছেন উনারা। সুবহানাল্লাহ!

কাজেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের যত প্রকার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক ও খুছূছিয়াত বা বৈশিষ্ট্য মুবারক রয়েছেন, সমস্ত কিছুর অধিকারী হচ্ছেন উনারা। সুবহানাল্লাহ! আর এই সম্মানিত সিলসিলা মুবারকেই হযরত ইমাম মাহদী আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করবেন। সুবহানাল্লাহ!
এইভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত সিলসিলা মুবারক বর্তমান সময় পর্যন্ত এসেছেন এবং ক্বিয়ামত পর্যন্ত যেভাবে জারি থাকবেন। সুবহানাল্লাহ!