একজন কুতুবুজ্জামান- উনার দিদারে মাওলার দিকে প্রস্থান- সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযুর ক্বিবলা সাইয়্যিদ মুখলেছুর রহমান আলাইহিস সালাম উনার সাওয়ানেহে উমরী মুবারক-পর্ব-১৬৬

 


ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দাওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশফ্ ওয়া কারামত, ফখরুল আওলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছাহিবে ইস্মে আযম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার স্মরণে-

একজন কুতুবুয্ যামান উনার দীদারে মাওলা উনার দিকে প্রস্থান-

বন্য পশুরাও উনার তাঁবেদার

দার্জিলিং-এর গহীন জঙ্গলের বন্য হাতিকে লক্ষ্য করে ওলীয়ে মাদারজাদ, আওলাদুর রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার মুবারক নির্দেশনাদান-এর প্রেক্ষিতে কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই হাতি সংশ্লিষ্ট তাঁবু ও আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র গহীন জঙ্গলের ভেতর থেকে ফেরত নিয়ে আসে এবং যথাস্থানে রাখে। এক পর্যায়ে হাতিটি মাথা নিচু করে সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনাকে সালাম জানায়। অতঃপর হাতিটি উনার অদূরে বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে কী যেনো নিবেদন করে। প্রিয় পাঠক! তা আমরা জানিনা বলে আপনাদেরকে জানানো সম্ভব নয়। তবে আমরা মনে-প্রাণে বিশ্বাস করি, বেয়াদবীর জন্য হাতিটি অনুনয়-বিনয়সহযোগে ক্ষমা প্রার্থনা করে। সুবহানাল্লাহ!

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে: এক ইহুদী একদা এক হরিণীকে শিকারের পর গাছের নিচে আটক করে রেখেছে। একেতো বন্দি হওয়ার দুর্বিষহ যন্ত্রণা, তদুপরি ছোট বাচ্চার মমতায় ওই হরিণী উদ্বেলিত। ক্ষুধার্ত ছোট বাচ্চাদেরকে দুধ পান করাতে হবে। তাই সে মুক্তি চায়। কিন্তু মুক্তির উপায় কী? হরিণীর চোখে পানি। অঝোর ধারায় সে কাঁদছে। ওই পথ দিয়ে যাচ্ছিলেন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। তিনি হরিণীর নিদারুণ যন্ত্রণাকাতরতা জানেন। তবু কায়িনাতবাসীর ইবরত-নছীহতের লক্ষ্যে হরিণীর কাছ থেকে জানার জন্য তিনি জিজ্ঞেস করেন: কী হয়েছে তোমার?” হরিণীর বিনীত নিবেদন: ইয়া রহমতুল্লিল আলামীন, রউফুর রহীম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! এক ইহুদী আমাকে আটক করেছে। আমার ছোট বাচ্চারা ক্ষুধার্ত। ওদেরকে দুধ পান করাতে হবে। দয়া করে যদি আপনি কিছু সময়ের জন্য আমার বাঁধন খুলে দেন, তবে বাচ্চাদেরকে দুধ পান করিয়েই আমি আপনার মুবারক খিদমতে এখানে চলে আসবো।

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ওই হরিণীকে মুক্ত করে দেন। হরিণী অতি দ্রুত বাচ্চাদের কাছে গিয়ে বলে: আজ এক মুবারক ঘটনার অবতারণা হয়েছে। এক ইহুদী আমাকে আটক করেছে। আমার খোশ নছীব। ইতোমধ্যে আমি রহমতুল্লিল আলামীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক সাক্ষাৎ লাভ করি। তোমাদেরকে দুধ পান করানোর লক্ষ্যে সাময়িক মুক্তির জন্য আমি উনার ক্বদম মুবারকে সবিনয়ে প্রার্থনা জানাই। তিনি অল্প সময়ের জন্য আমাকে বন্দিদশা থেকে মুক্ত করে দেন। তখন ইহুদী সেখানে উপস্থিত ছিলো না। অতি দ্রুত ফিরে যাবো বলে আমি উনাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে হবে। তোমরা সত্বর দুধপান করে আমাকে যেতে দাও। বাচ্চারা বলে: মাগো! আমাদের দুধ পান-এর প্রয়োজন নেই। এতে বিলম্ব হবে। বিলম্ব হলে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সঙ্গে চরম বেয়াদবি হবে। আমরা দুধ পান করবো না। চলো আমরা একসঙ্গে এখনই উনার মুবারক খিদমতে গিয়ে হাজির হই।ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট ইহুদী ঘটনাস্থলে ফিরে দেখতে পায়, তার আটককৃত হরিণী যথাস্থানে নেই। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইহুদীকে বলেন: বাচ্চাকে দুধ পান করানোর জন্য হরিণীকে আমি অল্প সময়ের জন্য ছেড়ে দিয়েছি। সে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই ফিরে আসবে।

বিষয়টি ইহুদীর বিশ্বাস হয় না। ক্ষুব্ধ ইহুদী মনে মনে ভাবে, হরিণী কী মানুষ? সে কীভাবে প্রতিশ্রুতি দিবে? কীভাবে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবে? আর কেনোইবা সে ফিরে আসবে? আসলে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যে ওই হরিণীরও রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং হরিণী উনার একান্ত আজ্ঞাবহ, তা অজ্ঞ ইহুদী বুঝবে কী করে? ইহুদীর ক্ষোভ মিশ্রিত দুর্ভাবনা শেষ না হতেই হরিণী তার বাচ্চাদেরকে দুধ পান না করিয়েই বাচ্চাসহ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক খিদমতে ফিরে আসে। এ অভাবিত ঘটনা দেখে ইহুদী মুসলমান হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ! (চলবে)

আবা-২২৬

একজন কুতুবুজ্জামান- উনার দিদারে মাওলার দিকে প্রস্থান- সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযুর ক্বিবলা সাইয়্যিদ মুখলেছুর রহমান আলাইহিস সালাম উনার সাওয়ানেহে উমরী মুবারক-পর্ব-১৬৫

 


ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দাওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশফ্ ওয়া কারামত, ফখরুল আওলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছাহিবে ইস্মে আযম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের

সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম

উনার স্মরণে-

একজন কুতুবুয্ যামান উনার দীদারে মাওলা উনার দিকে প্রস্থান-

বন্য পশুরাও উনার তাঁবেদার

ওলীয়ে মাদারজাদ, আওলাদুর রসূল, সাইয়্যিদুনা দাদা হুযূর ক্বিবলা হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলিছুর রহমান আলাইহিস সালাম তিনি হলেন এমন পর্যায়ভুক্ত বেমেছাল মর্যাদাসম্পন্ন মাহবূব ওলীআল্লাহ। যে কারণে মহান আল্লাহ পাক সুবহানাহু ওয়া তায়ালা তিনি উনার মুবারক ঔরসেই পঞ্চদশ শতকের মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে মাদারজাদ, সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আযম, হুজ্জাতুল ইসলাম, ক্বইয়্যূমুযযামান, ছাহিবু সুলত্বানিন নাছীর, সুলত্বানুল আরিফীন, হাকীমুল হাদীছ, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, জামিউল আলক্বাব, জাব্বারিউল আউওয়াল, ক্ববিউল আউওয়াল, আওলাদুর রসূল, আস সাফফাহ, হাবীবুল্লাহ সাইয়্যিদুনা হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা কাবা আলাইহিস সালাম উনাকে আনুষ্ঠানিকভাবে যমীনে পাঠানো পছন্দ করেছেন। সুবহানাল্লাহ!

মাহবূব ওলীআল্লাহ উনাদের নিজস্ব কোন মত ও পথ থাকেনা। চূড়ান্ত কামিয়াবীর পর্যায়ে উনারা মহান আল্লাহ পাক উনার মুবারক মত উনার সঙ্গে আপন মত এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক পথ উনার সঙ্গে আপন পথ পরিপূর্ণরূপে মিলিয়ে দিয়ে থাকেন। তখন উনাদের ইচ্ছা ও উদ্দেশ্য মহান আল্লাহ পাক এবং উনার প্রিয়তম হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মুবারক ইচ্ছা ও উদ্দেশ্য উনাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে যায়। অবিচ্ছেদ্য নৈকট্য-ধন্য ওলীআল্লাহ উনাদের এমন অবস্থার মুবারক কার্যাবলী ও আচরণকে বুযুর্গী, সম্মান          কারামত অভিধায় অভিষিক্ত করা হয়। সুবহানাল্লাহ!

রহমতুল্লিল আলামীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক নুবুওওয়ত ও রিসালত প্রমাণ ও উপলব্ধির অন্যতম এক উপায়ের নাম মুজিযা। সকল নবী-রসূল আলাইহিমুসসালাম উনাদের সঙ্গে মুজিযা উনার নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। যেমন কারামত উনার সম্বন্ধ রয়েছে সকল স্ক্ষ্মূদর্শী ওলীআল্লাহ উনাদের সঙ্গে। মহান আল্লাহ পাক সুবহানাহু ওয়া তায়ালা উনার কুদরত মুবারক, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক  ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে মুজিযা মুবারক উনার রূপ পরিগ্রহ করেছে। আর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুজিযা মুবারক মাহবূব ওলীআল্লাহ উনাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হয়ে কারামত মুবারক উনার রূপ পরিগ্রহ করে থাকে। তবে কখনোই কারামত উনার প্রতি প্রলুব্ধ না হয়ে ছাহিবে কারামত উনার মুহব্বতে গরক হওয়া প্রয়োজন। মনে রাখা দরকার যে, প্রায় সকল হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা অনুক্ষণ মুজিযা শরীফ প্রত্যক্ষ করলেও উনাদের ঈমান গ্রহণে মুবারক মুজিযা উনার কোন প্রয়োজন হয়নি। ওলীয়ে মাদারজাদ, আওলাদুর রসূল, লিসানুল হক্ব, ফখরুল আওলিয়া, গরীবে নেওয়াজ, মুসতাজাবুদ দাওয়াত, ছাহিবে ইসমে আযম, ছাহিবে ইলম ওয়াল হিকাম ওয়াল কাশফ ওয়াল কারামত সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি সীমাহীন বুযুর্গী, মর্যাদা, শান, মান ও কারামত সম্পন্ন সূক্ষ্মদর্শী ওলীআল্লাহ! উনার বুযুর্গী, সম্মান ও কারামত সম্পর্কে সংশয়-সন্দেহ পোষণ করা ঈমান নড়বড়ে হওয়ার কারণ। উনার ইচ্ছা, উদ্দেশ্য ও ইখতিয়ার মহান আল্লাহ পাক উনার এবং নূরে মুজাসাসম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মুবারক ইচ্ছা, উদ্দেশ্য ও ইখতিয়ার উনাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত। সুবহানাল্লাহ!

কারণ তিনি কামিয়াবীর এমন উচ্চতম মাক্বামে অধিষ্ঠিত হয়েছেন, যেখানে উনার নিজস্ব কোন অভিপ্রায় ও উদ্দেশ্য আর অবশিষ্ট ছিলোনা। কাজেই, উনার মুবারক মাধ্যমে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং ফখরে কায়িনাত, রহমতে আলম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের ইচ্ছা ও অভিপ্রায় বাস্তবায়িত হয়েছে। জগৎ-সংসারের কার্যাবলী সম্পাদনের ক্ষেত্রে সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার মুবারক উসীলা অত্যন্ত তাৎপর্যবহ। কাজেই বন্য পশুরা উনার তাঁবেদার হতে বাধ্য। সুবহানাল্লাহ!

(চলবে)

আবা-২২৫

একজন কুতুবুজ্জামান- উনার দিদারে মাওলার দিকে প্রস্থান- সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযুর ক্বিবলা সাইয়্যিদ মুখলেছুর রহমান আলাইহিস সালাম উনার সাওয়ানেহে উমরী মুবারক-পর্ব-১৬৪

 

ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দাওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশফ্ ওয়া কারামত, ফখরুল আওলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছাহিবে ইস্মে আযম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার স্মরণে-

একজন কুতুবুয্ যামান উনার দীদারে মাওলা উনার দিকে প্রস্থান-

বন্য পশুরাও উনার তাঁবেদার

সুলত্বানুল হিন্দ, সুলত্বানুল আরিফীন, মাহবূবে সুবহানী, ছাহিবুল আসরার, মাখযানুল মারিফাত, মঈনুল মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, হাবীবুল্লাহ হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ওলীয়ে মাদারজাদ। তিনি ৭ম হিজরী শতকের মুজাদ্দিদ। তিন মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার প্রিয়তম রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের আখাছছুল খাছ লক্ষ্যস্থল সূক্ষ্মদর্শী ওলীআল্লাহ। তিনি বেমেছাল মর্যাদাসম্পন্ন মুজাদ্দিদ। বিজন প্রান্তরে ঘরে বসে থাকা বুযুর্গ ব্যক্তি তিনি যে নছীহত মুবারক করলেন, তা উনার অজানা ছিল না। এ মুবারক নছীহতের মাধ্যমে সুলুকের বিভিন্ন স্তর অতিক্রমণে সালিকের যে অপরিহার্য গুণ-বৈশিষ্ট্য থাকা আবশ্যক, তার প্রকাশ ঘটেছে। মুবারক নছীহত শেষে সুলত্বানুল হিন্দ, গরীবে নেওয়াজ, ওলীয়ে মাদারজাদ, আওলাদে রসূল, হাবীবুল্লাহ হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ওই বুযুর্গ ব্যক্তির নিকট থেকে চলে আসেন। আসার পর ঘর মুবারক উনার দুপ্রান্তে বসে থাকা দুটি বাঘ মাথা নত করে উনাকে সালাম জানায়। সুবহানাল্লাহ!

বাঘ মাথা নত করে উনাকে সালাম করেছে, এটি উনার মুবারক মর্যাদা পরিমাপের মানদ- নয়। মূল যা কথা তা আমরা অনতিপূর্বেই আলোচনা করেছি।

তা হলো :

من له الـمولى فله الكل

অর্থ : যিনি মহান আল্লাহ পাক উনার হয়ে যান, সমস্ত মাখলুক্বাত উনার অধীন হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক সুবহানাহূ ওয়া তায়ালা এবং রহমতুল্লিল আলামীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মুহব্বত-মারিফাত ও নিগূঢ় নৈকট্য যিনি যত বেশি হাছিল করেন, তিনি তত বড় ওলীআল্লাহ, উনার মর্যাদা ও মাক্বাম তত উপরে।

এমন মুবারক মর্যাদা, মান, শান ও গুণ-বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন সূক্ষ্মদর্শী ওলীআল্লাহ উনার প্রতি জগৎ-সংসার, সমগ্র সৃষ্টি একান্তভাবেই আজ্ঞাবহ। মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার প্রিয়তম রসূল, নূরে মুজাসসাম, মাশুকে মাওলা, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের উদ্দিষ্ট ব্যবস্থায় ফানা-বাক্বা হওয়া দুনিয়া ও আখিরাত বিরাগী এমন নৈকট্য হাছিলকারী ওলীআল্লাহ উনাদের প্রতি বন্য পশুরাও ফরমাবরদার হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ!

প্রেক্ষিত কারণে ওলীয়ে মাদারজাদ, আওলাদুর রসূল, মুসতাজাবুদ দাওয়াত, আফদ্বালুল ইবাদ, ছাহিবে ইলম ওয়াল হিকাম ওয়াল কাশফ ওয়াল কারামত, ছাহিবে ইসমে আযম, লিসানুল হক্ব, ফখরুল আউলিয়া, গরীবে নেওয়াজ, সাইয়্যিদুনা দাদা হুযূর ক্বিবলা হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলিছুর রহমান আলাইহিস সালাম উনার মুবারক নির্দেশে দার্জিলিংয়ের গহীন জঙ্গলের বন্য পশুরা উনার তাঁবেদার হবে, এটিই তো স্বাভাবিক ও সঙ্গত। জগৎসংসার, কুল-কায়িনাত পরিচালনার জন্য মহান আল্লাহ পাক তিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, রহমতুল্লিল আলামীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সঙ্গে হাক্বীক্বী তায়াল্লুক-নিসবতপ্রাপ্ত নৈকট্যধন্য এমন মাহবূব ওলীআল্লাহ উনাদেরকেই নিয়ামক মাধ্যম বানিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!

এ মর্মে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, মাহবূব ওলীআল্লাহগণ উনাদের মুবারক উসীলায় মানুষ বেঁচে থাকে, মানুষের ইন্তিকাল হয়, বৃষ্টি হয়, ফসল হয় এবং মানুষের বালা-মুছীবত দূর হয়। সুবহানাল্লাহ! পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে অন্যত্র ইরশাদ মুবারক হয়েছে এরূপ চল্লিশ জন মানুষ থেকে জমিন কখনো খালি থাকে না, যাঁদের মাধ্যমে মানুষ বৃষ্টি পায়, সাহায্যপ্রাপ্ত হয় এবং রিযিকলাভ করে থাকে। সুবহানাল্লাহ! মাহবূব ওলীআল্লাহগণ উনাদের বেমেছাল মান-শান সম্পর্কে অন্য হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে, উনাদের মাধ্যমেই মহান আল্লাহ পাক তিনি বিশ্বজগতের কার্যাবলী সম্পাদন করেন। অর্থাৎ কায়িনাত পরিচালনা করেন। সুবহানাল্লাহ! (চলবে)

 

আবা-২২৪

একজন কুতুবুজ্জামান- উনার দিদারে মাওলার দিকে প্রস্থান- সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযুর ক্বিবলা সাইয়্যিদ মুখলেছুর রহমান আলাইহিস সালাম উনার সাওয়ানেহে উমরী মুবারক-পর্ব-১৬৩

 

ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দাওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশফ্ ওয়া কারামত, ফখরুল আওলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছাহিবে ইস্মে আযম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার স্মরণে-

একজন কুতুবুয্ যামান উনার দীদারে মাওলা উনার দিকে প্রস্থান-

বন্য পশুরাও উনার তাঁবেদার

ঘরের দরজা মুবারক-এর দুপ্রান্তে দুটি বাঘ বসা রয়েছেতিনি মনে মনে ভাবলেন, বাঘের সামনে দিয়ে কীভাবে ঘরের ভেতর যাওয়া সম্ভব? ঘরের ভেতর থেকে বুযূর্গ ব্যক্তি ডেকেই যাচ্ছেনসুলত্বানুল হিন্দ, গরীবে নেওয়াজ, হাবীবুল্লাহ হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি স্থির সিদ্ধান্তে উপনীত হলেন যে, বাঘ দুটি নিশ্চয়ই ওই বুযূর্গ ব্যক্তি উনার খাদিম হবেনইলে ঘরের দরজায় বসে থাকবে কেন?

ঘরের ভেতর যাওয়ার জন্য তিনি নিমিষেই মনস্থির করলেন এবং দৃঢ় প্রত্যয়ে বাঘ দুটিকে অতিক্রম করে ভেতরে প্রবেশ করলেনদেখলেন সেখানে সৌম্যকান্তি ধ্যানমগ্ন এক বুযূর্গ বসে রয়েছেন

সুলত্বানুল হিন্দ, সুলত্বানুল আরিফীন, মাহবূবে সুবহানী, ছাহিবুল আসবার, মাখযানুল মারিফাত, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, হাবীবুল্লাহ, হযরত খাজা সাইয়্যিদ মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে লক্ষ্য করে ঘরের ভেতর বসে থাকা ওই  বুযুর্গ ব্যক্তি বললেন: আপনাকে দেখে মনে হয়, আপনি মহান আল্লাহ পাক সুবহানাহূ ওয়া তায়ালা এবং উনার প্রিয়তম হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মনোনীত মাহবূব ওলীআল্লাহসীমাহীন উচ্চতায় আপনার মুবারক মাক্বামআপনার মুবারক মাধ্যমে পবিত্র দ্বীন-ইসলাম যিন্দা হবেবিদয়াত-বেশরা অপসারিত হবেঅবলুপ্ত সুন্নত যিন্দা হবেজিন-ইনসান সকলে সুন্নত পালনে অভ্যস্ত হবেইসলাম ধর্ম উনার হাক্বীক্বী আবাদ শুরু হবে

ওই বুযুর্গ ব্যক্তি বলতে থাকেন: আপনি ঘরের সামনে দিয়ে অতিক্রম করাকালে দূর থেকেই আপনাকে দেখে আমি আপনার তুলনাহীন শান, মান ও মুবারক মাক্বাম উনার অতুল গভীরতা উপলব্ধি করেছিঘরের দুপাশে বসে থাকা দুটি বাঘ আমার আজ্ঞাবহ খাদিমসর্বক্ষণ আমাকে পাহারাদানের মাধ্যমে এরা এদের জনম ও জীবন স্বার্থক করেমূলত: এদের পাহারার কোন প্রয়োজনই নেই আমারহে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং রহমতুল্লিল আলামীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের আখাছছুল খাছ মাহবূব ওলীআল্লাহ! আপনাকে আমি দুটি মূল্যবান নছীহত করিনছীহত মুবারক দুটি আজীবন মনে রাখবেনআপনার মুবারক জীবন উনার সকল ক্ষেত্রেই কাজে লাগবে নছীহত মুবারক দুটি হলো:

১. মহান আল্লাহ পাক সুবহানাহূ ওয়া তায়ালা উনাকে যথার্থরূপে ভয় করলে কুল মাখলূক্বাত তার অনুগত হয়ে যায়এ মর্মে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, মাশুকে মাওলা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন:

من هاب الله تعالى هابه كل شىء

অর্থ: যে  ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করেন, সমস্ত মাখলূক্বাত উনাকে ভয় করে থাকে (মূলতঃ উনার একান্ত আজ্ঞাবহ হয়ে পড়ে)

২. নিয়ামত উনার জন্য মহান আল্লাহ পাক সুবহানাহূ ওয়া তায়ালা উনার কাছে আরজু করতে হয়নইলে নিয়ামত হাছিলের পথ রুদ্ধ হয়ে যায়এ মর্মে কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে:

انلزمكموها وانتم لـها كارهون

অর্থ: তোমরা চাইবেনা আর আমি তোমাদেরকে নিয়ামত-সমৃদ্ধ করবো, তা কী করে হয়?” (পবিত্র সূরা হুদ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২৮)

হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে:

من لـم يسئل الله يغضب عليه

অর্থ: যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে চায়না, সে ব্যক্তির উপর মহান আল্লাহ পাক তিনি অসন্তুষ্ট হন অসন্তুষ্টির অসংখ্য কারণের মধ্যে একটি মূল কারণ হলো, কুল মাখলূক্বাত মহান আল্লাহ পাক সুবহানাহূ ওয়া তায়ালা উনার প্রতি পরিপূর্ণরূপে মুখাপেক্ষীমহান আল্লাহ পাক উনার কাছে না চাইলে বান্দার স্বভাব-সঞ্জাত দায়িমী মুখাপেক্ষিতার সবিনয় প্রকাশ ঘটেনাএতে বান্দার অজ্ঞানতাজনিত ফখর মিশ্রিত অমুখাপেক্ষিতা প্রকাশ পায়নাউযুবিল্লাহ!

হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

السعى منا والاتمام من الله

অর্থ: মানুষ মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট আরজু করবে, আর তিনি বান্দা-বান্দির সকল আরজু পূরণ করে দিবেন অর্থাৎ বান্দা কোশেশ করবে আর পুরা করবেন মহান আল্লাহ পাকসুবহানাল্লাহ! (চলবে)

আবা-২২৩

একজন কুতুবুজ্জামান- উনার দিদারে মাওলার দিকে প্রস্থান- সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযুর ক্বিবলা সাইয়্যিদ মুখলেছুর রহমান আলাইহিস সালাম উনার সাওয়ানেহে উমরী মুবারক-পর্ব-১৬২

 

ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দাওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশফ্ ওয়া কারামত, ফখরুল আওলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছাহিবে ইস্মে আযম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার স্মরণে-

একজন কুতুবুয্ যামান উনার দীদারে মাওলা উনার দিকে প্রস্থান-

বন্য পশুরাও উনার তাঁবেদার

দার্জিলিং-এর অনেকাংশ বনজঙ্গলে ভরাউঁচু উঁচু পাহাড়-পর্বতও সেখানে রয়েছে অনেকসরকারি প্রয়োজনে একবার গহীন জঙ্গলের পাশে এক নির্দিষ্ট জায়গা পরিষ্কার করে সেখানে সাময়িক কর্মস্থল স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়এ কাজ দেখাশুনার দায়িত্ব দেয়া হয় হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদুনা দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনাকেতিনি উনার অধীনস্থ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে উদ্দিষ্ট কাজ দ্রুত সুচারুরূপে সম্পন্ন করতে মুবারক নির্দেশনা দান করেনসাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার মুবারক তত্ত্বাবধানে নির্দেশিত ব্যক্তিবর্গ ওই জঙ্গলের নিকটবর্তী নির্দিষ্ট জায়গায়  তাঁবু টাঙ্গানবিষয়টি তত্ত্বাবধান শেষে সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি উনার নির্দিষ্ট অফিসে চলে আসেনঅন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারী উনারাও সকলে কাজ শেষে মূল অফিসে ফিরে আসেন

বেশ কিছু সময় পর সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনাকে একজন প্রত্যক্ষদর্শী (মূল অফিসের একজন কর্মচারী) তিনি জানান যে, টাঙ্গানো তাঁবু সেখানে নেইতাঁবু- সংশ্লিষ্ট অন্যান্য দ্রব্যসামগ্রীরও কিছু অংশ সেখানে নেইঅবশিষ্টগুলো ইতস্তত বিক্ষিপ্ত অবস্থায় এখানে সেখানে পড়ে রয়েছেসংবাদ পেয়ে তৎক্ষণাৎ তিনি সেখানে গিয়ে দেখতে পান, সত্যি টাঙ্গানো তাঁবু নেইতিনি বুঝে ফেলেন যে, বন্য হাতিরা তাঁবু ভেঙ্গে অন্য কোথাও নিয়ে গেছেসে জঙ্গলে অন্যান্য আরো অনেক পশু রয়েছেইতোমধ্যে তিনি বন্য হাতির দেখা পানওই হাতি সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার অদূরে নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে থাকে

ওই হাতিকে লক্ষ্য করে ওলীয়ে মাদারজাদ, আওলাদুর রসূল, আফদ্বালুল আওলিয়া হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন: এখানে সরকারি প্রয়োজনে আমরা তাঁবু টাঙ্গিয়েছি এবং আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র রেখেছিএখানে অনেক জরুরি কাজ রয়েছে আমাদেরওই তাঁবু তোমরা কেন অন্যত্র নিয়ে গেছো এবং দ্রব্যসামগ্রী এলোমেলো করে ফেলেছো? এ কাজ তোমাদের ঠিক হয়নিঅবিলম্বে তাঁবু ও অন্যান্য জিনিসপত্র এখানে ফেরত দিয়ে যাওনইলে তোমরা অসুবিধায় পড়বেদেরি করার সময় নেইতাড়াতাড়ি করো

মহান আল্লাহ পাক উনার মাহবূব ওলী উনাদেরকে সাধারণ মানুষ চিনেনা, চিনতে পারেনাকিন্তু জীব-জন্তু-পশুরা চিনতে ভুল করেনাকাজেই ওলীয়ে মাদারজাদ, আওলাদে রসূল, হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার মুবারক নির্দেশনা বুঝতে বন্য হাতির কোন কষ্ট হয়নিনিগূঢ় নৈকট্য হাছিলকারী সূক্ষ্মদর্শী ওলীআল্লাহ উনাদের কামিয়াবীর চূড়ান্ত পর্যায় এই যে, উনারা মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার প্রিয়তম হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে ছাড়া সব কিছুই ভুলে যানউনাদেরকে ছাড়া অন্য সব কিছুকেই উনারা তুচ্ছ জ্ঞান করেন

ইলমে তাছাওউফ উনার একখানা ছবক রয়েছে যা হলো মহান আল্লাহ পাক উনাকে ছাড়া সবকিছুকেই ভুলে যাওয়া

আপন বৈরী সত্তা-সম্পৃক্ত জগৎ-সংসার পরিহার করেই উনারা মহান আল্লাহ পাক সুবহানাহূ ওয়া তায়ালা উনার এবং রহমতুল্লিল আলামীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মুহব্বত-মারিফাত এবং রিযামন্দী-সন্তুষ্টিলাভে সমর্থ হয়ে থাকেনকামিয়াবীর এমন পর্যায়ে উনাদের কাছে দুনিয়া ও আখিরাত একাকার হয়ে যায় এবং জান্নাত-জাহান্নামসহ কুল-কায়িনাতের সব কিছুই গায়রুল্লাহ হিসেবে গণ্য হয়এ মর্মে মুবারক ক্বওল শরীফ রয়েছে যে :

من له الـمولى فله الكل

অর্থ : যিনি মহান আল্লাহ পাক উনার হয়ে যান, সমস্ত মাখলূক্বাত উনার অধীন হয়ে যায়সুবহানাল্লাহ!

এ প্রসঙ্গে একখানা গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপযর্মণ্ডিত ঘটনা মুবারক রয়েছেএ মুবারক ঘটনা ৭ম হিজরী শতকের মহান মুজাদ্দিদ, সুলত্বানুল হিন্দ, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, হাবীবুল্লাহ হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টউনার বয়স মুবারক তখন আনুমানিক বিশআনুষ্ঠানিক পবিত্র ইলম মুবারক অর্জন শেষে তিনি বিভিন্ন দেশ ও জনপদ ছফর করছিলেনএক পর্যায়ে তিনি এক বিজন প্রান্তর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেনতিনি দেখতে পেলেন সামনে একটি ঘরঘরের ভেতর বসা একজন বুযুর্গ ব্যক্তি উনার মুবারক হাতের ইশারায় হযরত খাজা ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে ডাকছেন। (চলবে)

আবা-২২২

একজন কুতুবুজ্জামান- উনার দিদারে মাওলার দিকে প্রস্থান- সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযুর ক্বিবলা সাইয়্যিদ মুখলেছুর রহমান আলাইহিস সালাম উনার সাওয়ানেহে উমরী মুবারক-পর্ব-১৬১

 

ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দাওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশফ্ ওয়া কারামত, ফখরুল আওলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছাহিবে ইস্মে আযম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত

দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার স্মরণে-

একজন কুতুবুয্ যামান উনার দীদারে মাওলা উনার দিকে প্রস্থান-

দীর্ঘদিন নিখোঁজ থাকা একজন ছেলের

সুস্থ অবস্থায় সন্ধান লাভ

বাড়ীতে পৌঁছার পর মুহম্মদ ইউসুফ আলীর মা এবং আত্মীয়-পরিজনের সঙ্গে মহা-মিলনজনিত যে অনির্বচনীয় অবস্থার সৃষ্টি হয়, তা, শুধু অনুভব করা যায়বলা যায় নাদিন থাকার পর ছেলেকে বাড়ীতে রেখে মুহম্মদ আব্দুর রশীদ তিনি ঢাকা রাজারবাগ পাক দরবার শরীফে চলে আসেনবয়:বৃদ্ধ মুহম্মদ আব্দুর রশীদ তিনি এখনো রাজারবাগ দরবার শরীফই রয়েছেনবহাল তবিয়তেই রয়েছেনসাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি মহান আল্লাহ পাক সুবহানাহু ওয়া তায়ালা এবং নূরে মুজাসসাম, মাশুকে মাওলা, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মুবারক দীদারে নশ্বর দুনিয়া থেকে প্রস্থান করেছেন ১৪১৯ হিজরী সনের ১৩ রবীউল আউওয়াল শরীফ/ ১৪০৫ ফসলী সনের ২৩ আষাঢ়/ ১৯৯৮ ঈসায়ী সনের ০৭ জুলাই মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১১টা ৩০ মিনিটে। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)

মুহম্মদ আব্দুর রশীদ তিনি যাঁর মুবারক খিদমতে এসেছিলেন এবং দীর্ঘকাল যাঁর খিদমতে নিয়োজিত ছিলেন, সে সুমহান ব্যক্তিত্ব সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনিতো নেইতাহলে মুহম্মদ আব্দুর রশীদ এখনো কেনো এখানে রয়েছেন, তা জানতে চাইলে তিনি বলেন: এখানে ছাড়া কোথাও আমার একটুও ভালো লাগেনাএর বেশি কিছু ব্যাখ্যা আর তিনি দিতে পারেন নাসে যোগ্যতাও তার নেইইন্তিকাল অবধি এখানেই তার থেকে যাওয়ার ইচ্ছেছেলে মুহম্মদ ইউসুফ আলীও বেঁচে আছেভালো আছেতার বয়স এখন প্রায় চল্লিশসে বাড়ীতে গেরস্থালী কাজে ব্যাপৃত

আমরা ওলীয়ে মাদারজাদ, আওলাদুর রসূল, আফদ্বালুল আওলিয়া, ছাহিবে ইসমে আযম, ছাহিবে কাশফ ওয়া কারামত, সাইয়্যিদুনা দাদা হুযূর ক্বিবলা হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলিছুর রহমান আলাইহিস সালাম উনার অগণিত, অসংখ্য, বেমেছাল কারামত সম্পর্কে কিঞ্চিৎ আলোচনার কোশেশে বর্তমান পর্যায়ে উনার মুবারক উছীলায় ও সীমাহীন সম্মানার্থে একজন নিখোঁজ ছেলের সন্ধান পাওয়ার বিষয়ে এতোক্ষণ ধরে বলছিউনার বেমেছাল সম্মানার্থে দীর্ঘকাল নিখোঁজ থাকা ওই ছেলেকে সুস্থ অবস্থায় ফিরে পাওয়ার বিষয়টি নিঃসন্দেহে সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার অনন্য কারামতের অন্তর্ভুক্ত এবং বিষয়টি একান্তই ফিকিরেরসুবহানাল্লাহ!

 

বন্য পশুরাও উনার তাঁবেদার

মহান আল্লাহ পাক সুবহানাহূ ওয়া তায়ালা তিনি অনুগ্রহ করে পারিবারিক সূত্রেই ওলীয়ে মাদারজাদ, আওলাদুর রসূল, আফদ্বালুল আওলিয়া, ফখরুল আওলিয়া, মুসতাজাবুদ দাওয়াত, ছাহিবে ইসমে আযম, ছাহিবে কাশফ ওয়া কারামত সাইয়্যিদুনা দাদা হুযূর ক্বিবলা হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলিছুর রহমান আলাইহিস সালাম উনাকে পরিমিত স্বচ্ছলতাদান করেনআর্থিক কারণে আবশ্যক না হওয়া সত্ত্বেও প্রত্যয়ী ব্যক্তিত্বের মানুষ হিসেবে উচ্চ শিক্ষালাভের পর আত্মনির্ভরশীল হওয়ার লক্ষ্যে তিনি চাকুরীতে যোগ দেনউনার প্রথম কর্মস্থল হয় দার্জিলিংচাকুরীর সুবাদে সেখানে তিনি অবস্থান করেন বেশ কিছুদিনঅতঃপর বদলিসূত্রে তিনি চাকুরী করেন আসাম, কোলকাতা, রাজশাহী, বগুড়া, বরিশাল ও ঢাকায়

মহান আল্লাহ পাক সুবহানাহূ ওয়া তায়ালা এবং রহমতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাসসাম, মাশুকে মাওলা, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের ধ্যানে-খেয়ালে, যিকিরে-ফিকিরে, মুরাক্বাবা-মাশাহাদায়, তায়াল্লাকু-নিসবতে, মুহব্বত-মারিফাতে অনুক্ষণ মশগুল থাকার ক্ষেত্রে চাকুরী ও তৎসংশ্লিষ্ট পরিবেশ-পরিস্থিতি প্রতিকুল হওয়ায় চাকুরীর প্রতি উনার অনীহা ও ঘৃণা জন্মেএ অবস্থা বিরাজমান থাকে দার্জিলিং, আসাম, কোলকাতা, রাজশাহী, বগুড়া, বরিশাল ও ঢাকায়, অর্থাৎ সকল কর্মক্ষেত্রেইঅবশেষে তিনি চাকুরীতে ইস্তফা দিয়ে প্রতিকূল পরিবেশ-প্রতিবেশের আবিলতা থেকে নিজেকে মুক্ত করেনপ্রিয় পাঠক! এ বিষয়গুলো আপনারা অনেক পূর্বেই অবহিত হয়েছেন

(চলবে)

আবা-২২১