মূর্তি-ভাস্কর্য পক্ষের কথিত সাংবাদিকের যুক্তি খণ্ডন

 মূর্তি-ভাস্কর্য পক্ষের কথিত সাংবাদিকের যুক্তি খণ্ডন

মুহম্মদ আসাদুল্লাহ ইবনে সাইফুল্লাহ, ছাত্র-মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ মাদরাসা রাজারবাগ শরীফ, ঢাকা-১২০৭

মুজতবা হেকিম প্লেটো তার বৃহৎ অর্বাচীন লেখার শেষের দিকে নিজস্ব একটি বক্তব্য ‘আমার মতো ইসলাম বিষয়ে অজ্ঞ ব্যক্তির বোঝায় ভুল থাকতেই পারে’ তাকে মনে করিয়ে দিয়ে মূর্খতা ও শিশুসুলভ লেখাটির বিষয়ে কিছু আলোকপাত করার চেষ্টা করছি।
মূলতঃ সে কেবল ইসলাম বিষয়েই নয় বরং ইতিহাস, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং জেনিটিক্স সব বিষয়েই তার ব্যাপক অজ্ঞতা প্রকাশ করেছে এমন একটি অপাংক্তেয় লেখা বিডি নিউজের সম্পাদক কিভাবে প্রকাশ করলো তা ভেবে অবাক হই! 
তার দাবীকৃত অখ্যাত মুসলিম রিফর্ম মুভমেন্টের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হাসান মাহমুদের হাস্যকর, অযৌক্তিক ও দলীলবিহীন ছবি, মূর্তির পক্ষের একটি লেখা, ২০১৭ সালেই মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফের ২৬৩ তম সংখ্যায় খণ্ডন করা হয়েছে। হাসান মাহমুদের লেখা আর মুজতবা হেকিম প্লেটোর লেখার মধ্যে কোনরূপ জ্ঞানগত পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়নি। পবিত্র হাদীছ শরীফ ও ইতিহাস বিষয়ে সে এতখানি অজ্ঞ যে, সে বলেছে, ‘কাবাতে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লাত, মানাত, উজ্জা, হুবল, ওয়াদ ইত্যাদির প্রতিমা ভেঙেছিলেন আরাধনা করা হতো বলে। ভাস্কর্য-মূর্তির বিপক্ষে কিছু হাদিস আছে, কিন্তু সাধারণত বিপক্ষের দলিলে আমরা ব্যক্তির নাম ও ঘটনার বিবরণ পাই না, যা পক্ষের হাদিসগুলোতে পাই।’ তার এ বক্তব্য থেকে বোঝা যায়-
(১) আরাধনার উদ্দেশ্যে স্থাপিত প্রতিমা ভাঙার প্রমাণ পাওয়া যায়।
(২) আরাধনা ব্যতীত মূর্তি, ভাস্কর্য, প্রতিমা ভাঙার ইতিহাস ও হাদীছ শরীফে পাওয়া না যাওয়া । 
১নং বিষয়টি সঠিক। কিন্তু ২নং বিষয়ে সে কুটকৌশলে মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে। 
কা’বা শরীফে আরাধনার উদ্দেশ্যে ব্যতীত মূর্তি-ভাস্কর্য বা প্রতিকৃতি বিনষ্ট করার দলীল-
عن حضرت اسامة رضى الله تعالى عنه قال دخلت مع النبى صلى الله عليه وسلم الكعبة فرايت فى البيت صورة فامرنى فاتيته بدلو من الـماء فجعل يضرب تلك الصورة ويقول قاتل الله قوما يصورون ما لايـخلقون.
অর্থ: “হযরত উসামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সঙ্গে পবিত্র কা’বা শরীফ ঘরে প্রবেশ করলাম। অতঃপর আমি কা’বা ঘরের ভিতরে প্রাণীর ছবি দেখতে পেলাম। অতঃপর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হুকুমে আমি পাত্রে করে পানি নিয়ে আসলাম। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ঐ প্রতিকৃতিগুলিতে পানি নিক্ষেপ করলেন এবং বললেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি ঐ গোত্রের সাথে জিহাদ ঘোষণা করেছেন, যে গোত্র এরূপ প্রাণীর প্রতিকৃতি তৈরী করে। যা সে তৈরী করতে অক্ষম অর্থাৎ জীবন দিতে পারে না।” (মুছান্নাফ  ইবনে আবী শায়বা ৮ম খণ্ড পৃষ্ঠা ২৯৬, ত্বহাবী ২য় খণ্ড পৃষ্ঠা ৩৬৩)
উপরোক্ত হাদীছ শরীফ থেকে প্রমাণিত হয়, কা’বা শরীফে প্রতিমাগুলো ভাঙা হয়েছিল শুধুমাত্র আরাধনা করা হতো বলে নয় বরং প্রাণীর প্রতিকৃতি ছিল বলে।  
হাসান মাহমুদের বক্তব্যকে কেন্দ্র করে সে আরো লিখেছে, কুরআন-হাদীছের ৩৪,৩৫০টি ইসলামী সূত্রের মাত্র একটিতে ভাস্কর্য অবৈধ করা আছে।’ ছহীহ মুসলিম বুক ২৪- ৫২৫০। যদিও তার কথার সাথে আমরা একমত নই। তার দাবী অনুযায়ী আমরা অনলাইনে মুসলিম শরীফের উক্ত অধ্যায়ে অনুসন্ধান করে statue এর আরবী “صُورَةٌ” শব্দটি পেয়েছি মোট ৯ স্থানে। যার মাত্র একটির ইংরেজীতে অনুবাদ করা হয়েছে statue আর বাকি ৮টিতে করা হয়েছে- picture । কতটুকু গণ্ডমূর্খ ও আরবী বিষয়ে চরম অজ্ঞ হলে শুধুমাত্র অনুবাদকৃত ইংরেজী শব্দের উপর ভিত্তি করে বলে যে, মুসলিম শরীফে ১ জায়গায় ভাস্কর্য নিষেধ করা হয়েছে। মূলতঃ “صُورَةٌ” শব্দটি প্রতিকৃতি অর্থে ব্যবহৃত হয়, যার মধ্যে ছবি, মূর্তি, ভাস্কর্য ইত্যাদি সবই আওতাভুক্ত। যা আমরা গত ১৯ শে রবীউছ ছানী ১৪৪২ হিজরী তারিখে প্রকাশিত ফতওয়াতে আরবী বিভিন্ন শব্দের তাহকীক বা বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছি, ভাস্কর্য বা প্রতিমার বিভিন্ন সমার্থক শব্দ রয়েছে, যা দ্বারা হাদীছ শরীফে ভাস্কর্য প্রতিমা নিষেধাজ্ঞা সূচক বক্তব্যই আলোচিত হয়েছে। তথাপি তর্কের খাতিরে তার কথামত একটি জায়গায় ভাস্কর্য অবৈধ করা আছে ধরে নিলেও ইসলামী শরীয়তের বিধান অনুযায়ী সেটাই ভাস্কর্য নিষেধ হওয়ার জন্য যথেষ্ট। শরীয়ত বিষয়ে বিন্দুতম জ্ঞান না থাকার কারণে সে বিষয়টি বুঝতে পারেনি।
সে একটি গ্রাফ দিয়েছে যার মাধ্যমে সে দেখাতে চেয়েছে, ইসলামের মধ্যে মতধারার বিভাজন রয়েছে। মূলতঃ প্রত্যেক মতধারার সকলেই প্রাণীর প্রতিকৃতি (ছবি, মূতি, ভাস্কর্য) হারাম হওয়ার ব্যাপারে ঐক্যমত পোষণ করেছেন।  হানাফী, মালেকী, শাফেয়ী, হাম্বলী প্রত্যেক মাযহাবের ফতওয়া হচ্ছে, প্রাণীর প্রতিকৃতি তৈরী করা হারাম। (উমদাতুল ক্বারী, ফতওয়ায়ে শামী, শরহুল মুহাযযাব, মুগনী লি ইবনে কুদামা, আল ইনসাফ, আল আসাবি আলা শরহিছ ছগীর ইত্যাদি চার মাযহাবের কিতাব দ্রষ্টব্য)
দেওবন্দীদের দলীল:
আধুনিক যে কোন পদ্ধতিতে প্রাণীর প্রতিকৃতি তৈরী করা বা তৈরী করানো, হাতে তৈরী করা বা তৈরী করানোর মতোই হারাম ও নাজায়িয এবং প্রাণীর প্রতিকৃতি রাখাও তদ্রুপ হারাম। উক্ত আমলকারী ব্যক্তি ফাসিক এবং তাকে ইমাম নিযুক্ত করা হারাম। এবং তার পিছনে নামায পড়া মাকরূহ তাহরীমী। (ফতওয়ায়ে দারুল উলুম দেওবন্দ, ১ম খণ্ড পৃষ্ঠা ৭৪২)
বেরলভীদের দলীল :
تصویر بنانا یا بنوانابہر حال حرام ہےخواہ دستی ہو یا عکسی دنوں کا ایک حکم ہے
অর্থ: “প্রাণীর প্রতিকৃতি তৈরী করা বা তৈরী করানো প্রত্যেক অবস্থায় হারাম। চাই হাতে হোক অথবা ক্যামেরায় উভয়ের একই হুকুম অর্থাৎ হারাম।” (বাহারে শরীয়ত ৩য় খণ্ড পৃষ্ঠা ১২৩)
সালাফীদের দলীল:
আহলে হাদীছদের অন্যতম উস্তাদ কাজী শাওকানী তার “নাইলুল আওতার” কিতাবের ২য় খণ্ড ১১৬ পৃষ্ঠায় প্রাণীর প্রতিকৃতি তৈরী করার কঠোর শাস্তির কথা উল্লেখ করেছে। এছাড়া নাসিরুদ্দীন আলবানী তার ‘আদাবুল জিফাফ’ কিতাবে আধুনিক মনস্কদের কাছে হাতে আঁকা ও ক্যামেরায় তোলা ছবির পার্থক্যকারীদের খণ্ডন করতে গিয়ে বলেছে, আমার দৃষ্টিতে এদের উদাহরণ হলো ঐসব আহলে জাহিরের (যারা বাহ্যিক/শাব্দিক অর্থ গ্রহণ করে থাকে) মতো যারা পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত বদ্ধ পানিতে সরাসরি পেশাব করার হুকুমকে হারাম মনে করে, কিন্তু কোনো পাত্রে পেশাব করে তা বদ্ধ পানিতে ফেলাকে জায়িয মনে করে। কেননা তাদের ধারণা এ হাদীছ দ্বারা পাত্রে পেশাব করে তা বদ্ধ পানিতে ফেলার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা বোঝা যায় না। (হেকিম প্লেটোর জ্ঞানের দৌড় এরকমই)।
সে আরো লিখেছে, “সব ধর্মে প্রাণীর ছবি বা মূর্তি বানানো নিষিদ্ধ নয়।” তার বক্তব্য পড়ে বুঝা গেলো অন্য ধর্ম সম্পর্কেও সে খোঁজ রাখে না। কারণ ইহুদীদের ধর্মগ্রন্থে কোন প্রাণীর প্রতিকৃতি, মূর্তি-ভাস্কর্য বানানো শক্তভাবে নিষেধ করা হয়েছে। সেখানে বর্ণিত রয়েছে-
“এমন যেন না হয়, তোমরা বিকৃত হয়ে নিজেদের খোদাই করা প্রতিমূর্তি বানিয়ে নিবে, যা কোন পুরুষ কিংবা নারী অথবা যমীনের কোন প্রাণী বা উড্ডয়নকারী কোন পাখি বা যমীনে বিচরণশীল কোন চতুষ্পদ জন্তু অথবা যমীনের নিচে পানিতে বিচরণশীল মাছের অনুরূপ হয়।” (কিতাবুল ইস্তিছনা, খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ১৬-১৮) 
বাইবেলে (বিকৃতির পরও) এখনও পর্যন্ত প্রাণীর চিত্র প্রতিকৃতি তৈরির অবৈধতা বিদ্যমান রয়েছে। বলা হয়েছে- 
Do not make for yourselves images of anything in heaven or on earth or in the water under the earth.’ (BIBLE-Good news Bible, p. 80, The Bible society of India)
You shall not make for yourself an idol in the form of anything in the heavens above, on the earth below, or in the waters beneath. 
(https://biblehub.com/exodus/20-4.htm) 
হিন্দু ধর্মের একসময়ের পুরোহিতের ছেলে আবুল হোসেন ভট্টাচার্য (যিনি পরে ইসলাম গ্রহণ করেন) তার “মূর্তিপূজার গোড়ার কথা” বইয়ের ১৫৭ পৃষ্ঠায় হিন্দুধর্মে মূর্তিপূজার নিষেধাজ্ঞার প্রমাণ উল্লেখ করতে গিয়ে বলেন-
“নতস্য প্রতিমা অস্তিযস্য নাম মহদষশঃ। অর্থাৎ যাহার নাম মহদষশঃ অর্থাৎ যিনি যাবতীয় গুণের অধিকারী সেই পরম প্রভূর কোন প্রতিমা হইতে পারে না। -যজূর্বেদ ৩২ অ:৩য় মন্ত্র।”
প্রতিভাত হলো, শুধুমাত্র দ্বীন ইসলামে নয়, অন্যান্য ধর্মেও প্রাণীর প্রতিকৃতি তৈরি করা নিষিদ্ধ। 
মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ গবেষণা কেন্দ্র কর্তৃক প্রকাশিত ফতওয়ায় উল্লেখিত পবিত্র সূরা হাশর শরীফ উনার ২৪নং আয়াত শরীফ উল্লেখপূর্বক সে বলেছে, “তাদের বিবৃতিতে কোরানের আর রেফারেন্স চোখে পড়েনি; বাকি সব হাদিসসহ অন্যান্য উদ্ধৃতি দিয়েছেন তারা।”
তার কি জানা নেই! ভাত হয়েছে কি-না বুঝার জন্য একটা ভাত টিপে দেখাই যথেষ্ট, পাতিলের সমস্ত ভাত টিপে দেখার প্রয়োজন নেই। কাজেই শরীয়তের কোনো বিধান প্রমাণ করার জন্য একটি আয়াত শরীফই যথেষ্ট, একাধিক আয়াতের প্রয়োজন হয় না। যদিও সূরা হাশর শরীফ উনার সমর্থিত আরো একাধিক আয়াত শরীফ রয়েছে। যেমন সূরা আলে ইমরান শরীফ উনার ৬নং আয়াত শরীফ, সূরা আ’রাফ শরীফ উনার ১১নং আয়াত শরীফ, সূরা মু’মিন শরীফ উনার ৬৪নং আয়াত শরীফ, সূরা তাগাবুন শরীফ উনার ৩নং আয়াত শরীফ দ্রষ্টব্য। এছাড়া মহান আল্লাহ পাক তিনি সরাসরি মূর্তি নামক অপবিত্র হারাম জিনিস থেকে বিরত থাকতে বলেছেন। যেমন পবিত্র কুরআন শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنَّمَا الْخَمْرُ وَالْمَيْسِرُ وَالْأَنصَابُ وَالْأَزْلَامُ رِجْسٌ مِّنْ عَمَلِ الشَّيْطَانِ فَاجْتَنِبُوهُ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
অর্থ: হে মুমিনগণ! নিশ্চয়ই মদ, জুয়া, মূর্তি এবং ভাগ্য-নির্ধারক তীরসমূহ শয়তানের অপবিত্র কাজ। অতএব, এগুলো থেকে বেঁচে থাকো, অবশ্যই তোমরা কামিয়াবী হাছিল করবে। (পবিত্র সূরা মায়িদা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৯০)
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, 
فَاجْتَنِبُوا الرِّجْسَ مِنَ الْأَوْثَانِ وَاجْتَنِبُوا قَوْلَ الزُّورِ
অর্থ: তোমরা মূর্তিসমূহের অপবিত্রতা থেকে বেঁচে থাকো এবং মিথ্যা বলা থেকে দূরে থাকো। (পবিত্র সূরা হজ্জ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৩০)
তার লেখায় আরো হাস্যকর দিক হচ্ছে- সে বলেছে, ‘আরবী না জেনেও তাদের উদ্ধৃতি বাংলা অনুবাদ যাচাই করতে গুগল ট্রান্সলেটর ও অনলাইন ডিকশনারীর সাহায্য নিলাম’ তার এ শিশুসূলভ কথাটি তার জন্য কতটুকু আত্মঘাতী সে নিজেও আঁচ করতে পারেনি। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, রোযাদারের জন্য সাহরীর শেষ সময় নির্ধারণের উদ্দেশ্যে পবিত্র সূরা বাক্বারার ১৮৭ নং আয়াত শরীফে বর্ণিত আছে-
كُلُوا وَاشْرَبُوا حَتَّىٰ يَتَبَيَّنَ لَكُمُ الْخَيْطُ الْأَبْيَضُ مِنَ الْخَيْطِ الْأَسْوَدِ
অর্থ : তোমরা পানাহার করো যে পর্যন্ত তোমাদের নিকট কালো সূতা হতে সাদা সূতা স্পষ্ট না হয়। 
এখানে الْخَيْطُ الْأَبْيَضُ (আল খইতুল আবইয়াদ্বু) শব্দটির গুগল ট্রান্সলেট করে তার অর্থ আসে সাদা সূতা, الْخَيْطِ الْأَسْوَدِ  (আল খাইতুল আসওয়াদু) এর অর্থ আসে কালো সূতা। যা দ্বারা আয়াত শরীফের মূল বা প্রকৃত অর্থ কোনভাবেই প্রকাশ পায় না। মূলতঃ সাদা সূতা দ্বারা ছুবহে ছাদিক এবং কালো সূতা দ্বারা রাতের আঁধারকে বুঝানো হয়েছে যা কখনোই গুগল ট্রান্সলেটরের জ্ঞান দিয়ে অনুধাবন করা সম্ভব নয়।
তারপরেও গুগল অনুবাদ করতে গিয়েও সে চরম ভুল করেছে। যেমন الاصنام (আল আছনাম) শব্দের গুগল অনুবাদের কথা উল্লেখ করে সে লিখেছে- বাংলায় ‘মূর্তিপূজা’ ইংরেজিতে ‘idolatry’ যা স্পষ্ট প্রতারণা। কারণ গুগলে ‘আছনাম’ শব্দের অর্থ বাংলায় আসে মূর্তি, আর ইংরেজিতে আসে idol যা একটি বিশেষ্যপদ। অথচ সে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে এটিকে ক্রিয়াপদ হিসেবে উল্লেখ করেছে। 
সে আরো লিখেছে, ‘মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফের আলেমরা গাছের প্রাণ আছে এর বিরোধিতা করেন কিনা?’ এটার দ্বারা সে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বুঝাতে চেয়েছে, গাছের প্রাণ থাকার কারণে প্রতিকৃতি যদি বৈধ হয় তাহলে অন্য প্রাণীর প্রতিকৃতি বৈধ নয় কেন? এ বিষয়ে সুস্পষ্ট জাওয়াব ১৯শে রবীউছ ছানী ১৪৪২ হিজরীর প্রকাশিত ফতওয়ায় ৩ ও ৪ পৃষ্ঠায় মুসলিম শরীফ ২য় খণ্ড ২০২ পৃষ্ঠার বরাতে দেয়া আছে। সে যেন আবারো ফতওয়াটি পড়ে নেয়। 
তার জেনেটিক্স বিষয়ে নূন্যতম জ্ঞান না থাকার কারণে সে লিখেছে, ‘শুধু হাইব্রিড নয় বিজ্ঞানিরা জেনেটিক্স প্রযুক্তি দিয়ে জিন বদলে নতুন নানা উদ্ভিদ ও প্রাণী সৃষ্টি করতে সক্ষম, করেছেনও’। জেনেটিক্যাল প্রযুক্তি দিয়ে বিজ্ঞানিরা মহান আল্লাহ পাক উনার সৃষ্টির সাদৃশ্য ব্যতীত নতুন কোনো উদ্ভিদ বা প্রাণী সৃষ্টি করেছে এমন একটা দৃষ্টান্ত সে দেখাতে পারবে কি? মূলতঃ জেনেটিক্যাল প্রযুক্তি দিয়ে জিন বদলের মাধ্যমে বিজ্ঞানিরা বিভিন্ন প্রাণী বা উদ্ভিদের কিছু কিছু কাঙ্খিত বৈশিষ্ট্যের পরিবর্তন ঘটাতে সক্ষম হয়। যেমন জেনেটিক্যাল প্রযুক্তি দিয়ে মুরগীর গোশত উৎপাদনকারী জিন ও ডিম উৎপাদনকারী জিন বদলের মাধ্যমে বিজ্ঞানিরা যথাক্রমে অধিক গোশত উৎপাদনকারী ব্রয়লার মুরগী ও অধিক ডিম উৎপাদনকারী লেয়ার মুরগী উদ্ভাবন করেছে বটে, তবে মহান আল্লাহ পাক উনার সৃষ্ট মুরগী মুরগীই রয়ে গেছে, তৃতীয় নতুন কোন সৃষ্টির উদ্ভব ঘটাতে পারেনি। অর্থাৎ জেনেটিক্যাল প্রযুক্তির মাধ্যমে কিছু বৈশিষ্ট্যের পরিবর্তন ঘটানো যায় কিন্তু নতুন কিছু সৃষ্টি করা যায় না। 
আর নকল পা ও অন্যান্য কৃত্রিম অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পূর্ণাঙ্গ প্রতিকৃতি রূপে প্রকাশ না পাওয়ায় প্রাণীর প্রতিকৃতির হুকুমের আওতাধীন নয়। আর রোবট! সেটা যদি প্রাণীর প্রতিকৃতিবিহীন হয় তবে সেটা ব্যবহারেও কোনো সমস্যা নেই।
সে লিখেছে, ‘মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফের আলেমদের ইসলামী মতটি হচ্ছে, প্রতিরূপ তৈরী করলে মহান আল্লাহ পাক কঠিন শাস্তি দিবেন অথচ তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে একমাত্র শাস্তি হলো মৃত্যুদ- অর্থাৎ মানুষ এ সাজা দেবে।’ তার কাছে এ বিষয়টি সাংঘর্ষিক মনে হয়েছে। মূলতঃ সে যদি মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ গবেষণা কেন্দ্র থেকে প্রকাশিত ফতওয়ার বিষয়ে প্রতারণার আশ্রয় না নিতো তবে তার কাছে সাংঘর্ষিক মনে হতো না। উক্ত ফতওয়াতে স্পষ্ট উল্লেখ করা আছে, মূর্তি-ভাস্কর্য যদি পূজা ও সম্মান প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে তৈরী করা হয় তাহলে তা সুস্পষ্ট শিরক ও কুফরী। ইসলামী বিধান অনুযায়ী কোন মুসলমান যদি শিরক ও কুফরী করে সে মুরতাদ হয়ে যায়। আর মুরতাদের শরয়ী শাস্তি হচ্ছে তিনদিনের মধ্যে তওবা করতে হবে অন্যথায় মুরতাদের শরঈ শাস্তি হলো মৃত্যুদ-। অথচ সে “পূজা ও সম্মানের উদ্দেশ্যে মূর্তি-ভাস্কর্য তৈরি”র বিষয়টি গোপন করে ফতওয়াটি ভিন্ন ধারায় প্রবাহিত করার চেষ্টা করেছে। 
সে দাবী করেছে, খোলাফায়ে রাশেদীন আলাইহিমুস সালাম উনাদের শাসনামলে মুদ্রায় প্রাণীর ছবি ছিলো এবং এসব ছবি সঠিক কিনা তা যাচাই করে নিতে বলেছে। আমরা যাচাই করে দেখেছি, উক্ত মুদ্রা খোলাফায়ে রাশেদীন আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রবর্তিত মুদ্রা নয়। বরং পারস্য অগ্নি উপাসক শাসক খসরুর মুদ্রা।
তার প্রমাণ হচ্ছে-
After crushing a Persian army at Qadisiyyah in November of 636, the Muslim Arabs quickly overran Mesopotamia. At Nahavand in 642 the last Sasanian ruler, Yazdegerd III (r. 632-651), was decisively defeated, although it would take many years to incorporate all the Iranian territories into the Muslim Empire.
For decades, governors ruling a population that was still largely Zoroastrian (with Christian and Jewish minorities) were content to let local mints (34, by one estimate) continue to issue silver coins with the portraits and Pahlavi inscriptions of long-dead Khusrau II (r. 591-628) and the reverse image of a fire altar and attendants. Some local authorities added a simple Arabic phrase in the obverse margin, Bismillah – “In the name of Allah”.
Later, the names of Arab governors were added, along with Islamic texts, such as the shahada (“There is no god but Allah, Muhammad is the messenger of Allah”).
Gradually, Arabic inscriptions replaced Pahlevi, and dating based on the regnal year of the shah was replaced by the Islamic calendar, which takes Muhammad’s June 622 CE migration from Mecca to Medina (the Hijra) as a starting point. For example, 661 CE is 41 AH (Anno Hegirae – “year of the Hijra” in Latin). (https://coinweek.com/ancient-coins/coinage-first-caliphate)
সুতরাং বুঝা যাচ্ছে যে, মুজতবা হেকিম প্লেটো উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে পারস্যের অগ্নি উপাসক শাসক খসরুর মুদ্রাকে খোলাফায়ে রাশেদীন আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রবর্তিত মুদ্রা বলে চালিয়ে দেয়ার অপচেষ্টা করেছে।
মুজতবা হেকিম প্লেটোর উপস্থাপিত মুদ্রার ছবিটি পারস্যের অগ্নি উপাসক শাসক খসরুর মুখাবয়ব, যা এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটেনিকায় চিত্র সহকারে দেয়া আছে।
https://www.britannica.com/biography/Khosrow-II/images-videos
উক্ত মুদ্রা বিষয়ে উইকিপিডিয়ার Khosrow_II -এর আলোচনায় ডানপাশের সাইডবারে প্রদর্শিত চিত্রে Gold coin of Khosrow II, minted in 611 হিসেবে উল্লেখ আছে। https://en.wikipedia.org/wiki/Khosrow_II
উইকিপিডিয়া বাংলা ভার্সনে দ্বিতীয় খসরুর আলোচনায় ডানপাশের সাইডবারে প্রদর্শিত চিত্রে দ্বিতীয় খসরু এর স্বর্ণ মুদ্রা হিসেবে দেয়া আছে (https://bit.ly/3molPHM)
পরবর্তীতে ইসলামী শাসকদের সময়কালের প্রাণীর প্রতিকৃতিবিহীন মুদ্রার ছবি-
১. খলীফা হযরত উমর ইবনে আব্দুল আযীয রহমতুল্লাহি আলাইহি (682-720) উনার সময় মুদ্রা- https://en.wikipedia.org/wiki/Umar_II
২. খলীফা হারুনুর রশীদের (763-809) সময় মুদ্রা- https://en.wikipedia.org/wiki/Harun_al-Rashid
৩. খলীফা মামুনের (786-833) সময় মুদ্রা- https://en.wikipedia.org/wiki/Al-Ma%27mun
আর হযরত মুআবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার পানির পাত্রে ছোট্ট প্রাণীর ভাস্কর্য থাকার যে দাবীটি করেছে সেটি একটি ডাহা মিথ্যা। মূলতঃ উক্ত পাত্রটি ইসলাম বহিঃর্ভূত আমলকারী চরম যালিম শাসক মারওয়ানের পানির পাত্র। যার সাথে একজন ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার নাম মুবারক সংশ্লিষ্ট করা চরম গর্হিত অপরাধ।
(https://rawi-magazine.com/articles/mia/; https://www.metmuseum.org/art/collection/search/450386)  
সে আরো বলেছে, ‘বিজ্ঞানের কারণে বর্তমান বিশ্বে পশ্চিমা জ্ঞান অনুসরণ না করার উপায় নেই। নতুন করে ইসলামকে যারা ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেন তারা পশ্চিমা জ্ঞান ভান্ডারের কাছেই ঋণী।’ আলোচনার ধারাবাহিকতায় আমরা দেখতে পেয়েছি, মুজতবা হেকিম প্লেটো জ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় চরম দৈন্যতা প্রকাশ করেছে। তাই এ বিষয়ে কলেবর না বাড়িয়ে মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ গবেষণা কেন্দ্র থেকে এ যাবৎ ১৩ খণ্ডে প্রকাশিত ‘বিজ্ঞান মুসলমান উনাদেরই অবদান’ গ্রন্থসমূহ তাকে পাঠ করার পরামর্শ দেয়া হলো। সেখানে উল্লেখ করা আছে, জ্ঞান বিজ্ঞানের প্রতিটি শাখায় বিধর্মীদের কোনই অবদান নেই বরং সমস্ত বিধর্মীরাই বিজ্ঞানের প্রতিটি শাখা-প্রশাখায় মুসলমানদের থেকেই উপকৃত হয়েছে। 
ছবি, মূর্তি, ভাস্কর্য বিষয়ে প্রকাশিত ফতওয়াটির সারসংক্ষেপ উল্লেখ করা হলো: 

বানানোর মাধ্যম ও উদ্দেশ্য যেটাই হোক প্রাণীর প্রতিকৃতি (ছবি, মূর্তি, ভাস্কর্য) তৈরি করা হারাম
মূর্তি হোক বা ভাস্কর্য, খোদাই হোক বা কাঠ কেটে বানানো হোক, লোহার হোক বা প্লাষ্টিকের, মাটির হোক বা পাথরের, ক্যামেরার ছবি হোক বা হাতে আঁকা হোক, পূজার উদ্দেশ্যে হোক বা সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য হোক, যেটাই হোক যদি কোন প্রাণীর প্রতিকৃতি তৈরী করা হয় সেটাই পবিত্র ইসলাম উনার ফতওয়া অনুযায়ী হারাম। পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফে এটাই উল্লেখ আছে এবং এ বিষয়ে পৃথিবীর সকল ইমাম মুজতাহিদগণ একমত। 
বর্তমান আলেম নামধারীরা এ কথাটা কেন দৃঢ়তার সাথে বলছে না?  শুধু মূর্তি ভাস্কর্য শব্দ ব্যবহার করছে। অথচ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে,  
كُلُّ مُصَوِّرٍ فِى النَّارِ
অর্থ: প্রত্যেক প্রাণীর প্রতিকৃতি তৈরীকারীই জাহান্নামী। (মুসলিম শরীফ ৫৬৬২, মুসনাদে আহমদ ২৮১১)
প্রাণীর প্রতিকৃতি তৈরী করা হারাম এসকল হাদীছ শরীফ উনার ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে,
قال النووى قال العلماء: تصوير صورة الحيوان حرام شديد التحريم وهو من الكبائر لانه متوعد عليه بهذا الوعيد الشديد، وسواء صنعه لما يمتهن ام لغيره فصنعه حرام بكل حال وسواء كان فى ثوب او بساط او درهم او دينار او فلس او اناء او حائط او غيرها، فاما تصوير ما ليس فيه صورة حيوان فليس بحرام. قلت: ويؤيد التعميم فيما له ظل و فيما لا ظل له 
অর্থ: হযরত ইমাম নববী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, হযরত উলামায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা বলেছেন: প্রাণীর প্রতিকৃতি তৈরি করা হারাম, এমনকি কঠিন হারাম। এটা কবীরা গুনাহ। কেননা প্রাণীর প্রতিকৃতি অঙ্কনকারীদের ব্যাপারে পবিত্র হাদীছ শরীফ-এ কঠিন আযাব-গযবের প্রতিশ্রুতি রয়েছে। তিরস্কার করার জন্য তৈরি করুক অথবা তিরস্কার না করার জন্য তৈরি করুক, তা তৈরি করা সর্বাবস্থায় হারাম। অনুরূপ কাপড়ে, বিছানায়, রৌপ্য মুদ্রায়, স্বর্ণ মুদ্রায়, টাকা-পয়সায়, পাত্রে, দেয়ালে অথবা এছাড়া অন্যান্য কিছুতে প্রাণীর প্রতিকৃতি তৈরি করা হারাম। কিন্তু প্রাণহীন বস্তুর প্রতিকৃতি তৈরি করা হারাম নয়। আমি (হযরত ইবনে হাজার আসকালানী রহমতুল্লাহি আলাইহি) বলি, প্রাণীর প্রতিকৃতি যে হারাম এ ফতওয়া আমভাবে মূর্তি-ভাস্কর্য ও ছবির ব্যাপারে সমানভাবে প্রযোজ্য। (ফতহুল বারী- অধ্যায়: পোশাক পরিচ্ছদ: ক্বিয়ামতের দিন প্রাণীর ছবি অঙ্কনকারীদের শাস্তি প্রদান সম্পর্কে ১০ম খণ্ড  ৩৮৪ পৃষ্ঠা)
সুতরাং মাধ্যম যেটাই হোক বা উদ্দেশ্য যেটাই হোক প্রাণীর প্রতিকৃতি তৈরি করাই হারাম। যারা হালাল বলবে তারা নিশ্চিত ঈমানহারা হবে। মহান আল্লাহ পাক তিনি সবাইকে দ্বীনী সঠিক বুঝ দান করুন। আমীন!
আমরা আশা করবো মুজতবা হেকিম প্লেটোর যে বিষয়ে জ্ঞান নাই সে বিষয়ে সে যেন কথা বলা থেকে বিরত থাকে। নচেৎ সে যে গণ্ডমূর্খ তা সমাজে পুনরায় প্রকাশ পাবে, যার ফলে তার অপমান ও লাঞ্ছনার শেষ থাকবে না। আর তার মানসিক বিকাশ ও পরিপক্ক বুদ্ধিমত্তা অর্জনের জন্য তাকে ব্রয়লার মুরগীর গোশত ও লেয়ার মুরগীর ডিম খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হলো। 

সাংবাদিকের এই লেখার ভিত্তিতে জবাব - বিডি নিউজে মূর্তি ভাস্কর্যের পক্ষে Mujtaba Hakim Plato এর লেখা (https://bit.ly/3agpRPX) খন্ডন করলো মুহম্মদীয়া জামিয়া শরীফ মাদরাসার একটা ছাত্র। ওস্তাদরা না জানি কি করতো। মারহাবা !!!

লিংক- http://www.al-ihsan.net/view-post/%E0%A6%87%E0%A6%B8%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A6%BF%E0%A6%95/2/%E0%A6%AE%E0%A7%82%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BF-%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AF-%E0%A6%AA%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%95%E0%A6%A5%E0%A6%BF%E0%A6%A4-%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%AF%E0%A7%81%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BF-%E0%A6%96%E0%A6%A3%E0%A7%8D%E0%A6%A1%E0%A6%A8/134692?fbclid=IwAR2PMMGGLL25Ne8-UGGn0yrxZX68Fwrn_x66QAqAtJUWniwsZrfhOkP3new