বাল্যবিবাহ খাছ সুন্নত ১


               কল কায়িনাতের সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদাত
 অনন্তকালব্যাপী জারীকত মহাপবিত্রসাইয়্যিদুল আ'ইয়াদ শরীফ        উনার সুমহান সম্মানার্থে প্রকাশিত

কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে 
    বাল্যবিবাহ খাছ সুন্নত 

হওয়ার প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে
        শর’য়ী ফায়ছালা ও ফতোয়া 
Related image









গবেষণা কেন্দ্র : মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ






কুলকায়িনাতের সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদাত অনন্তকালব্যাপী জারীকত মহাপবিত্র।
সাইয়্যিদুল আ'ইয়াদ শরীফ উনার সুমহান সম্মানার্থে প্রকাশিত

بسم الله الرحمن الرحيم
وما كان المؤمن ولا مؤمنة إذا قضى الله ورسوله أمرا أن يكون لهم الخي مي
ومن يعص الله ورسوله فقد ضل ضلالا مبينا

অর্থ: “কোন মুমিন নর-নারীর জন্য জায়িয হবেনা, মহান আল্লাহ পাক
তিনি এবং উনার রসূল নুরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু।
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা যে ফায়ছালা করেছেন, সে ফায়ছালার মধ্যে চু
সেরা, ক্লীল ও কালো করা অর্থাৎ নিজস্ব মত পোষণ করা। আর যে ব্যক্তি মহান।
আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযুর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের নাফরমানী বা বিরােধিতা করবে সে
প্রকাশ্য গোমরাহীর গোমরাহ হবে। অর্থাৎ কাট্টা কাফির হবে।” (পবিত্র সূরা
আহযাব শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৬)

পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে
          বাল্যবিবাহ খাছ সুন্নত হওয়ার প্রমাণ।
       ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে শরয়ী।
                 ফয়সালা ও ফতোয়া
 
                 গবেষণা কেন্দ্র : মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ                  ১














প্রকাশনায় :
গবেষণা কেন্দ্র : মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ
৫/১, আউটার সার্কুলার রোড, রাজারবাগ শরীফ, ঢাকা-১২১৭
ফোন (পিএবিএঞ্জি) : ৯৩৩৮৭৮৭, ৮৩৩৩১৯২৭
মোবাইল : ০১৭১১-২৩৮৪৪৭, ০১৭১১-২৬৪৬১৪, ০১৭১১-৬৪৮৪
ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৯৩৩৮ ৭৮৮
ওয়েবসাইট : uswatun-hasanah.net; al-ihsan.net;
al-hilaal.net; attaqweemush-shamsi.net

প্রথম প্রকাশ :
পবিত্র জুমাদাল উলা শরীফ
ছামিন

১৪৪০ হিজরী সন
১৩৮৬ শামসি সন।

প্রাপ্তিস্থান :
মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ (বিক্রয়কেন্দ্র)
৫/১, আউটার সার্কুলার রোড, রাজারবাগ শরীফ, ঢাকা-১২১৭
ফোন (পিএবিএক্স) : ৮৩১৪৮৪৮ (বর্ধিত ১২৫),
মোবাইল : ০১৭৯১-৭২৪২৯৭

কম্পিউটার অলঙ্করণ :
মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ (কম্পিউটার বিভাগ)
৫/১, আউটার সার্কুলার রোড, রাজারবাগ শরীফ, ঢাকা-১২১৭
ফোন (পিএবিএক্স) : ৮৩১৪৮৪৮ (বর্ধিত ১২১)
মোবাইল : ০১৭১২-৮৫৫৩৪৫

মুদ্রণে :
মুহম্মদিয়া বুক বাইন্ডিং অ্যান্ড প্রিন্টিং প্রেস
১৩/২, গোলাপবাগ, ঢাকা। ফোন : ৭৫৪৭৭৯৬
মোবাইল : ০১৭১১-১৭৮৬৮৪, ০১৮৩৪-৯৬২১৬৮

হাদিয়া : ৬০ টাকা।                                      ২


والمشرف المركز الخن نخالة جامعة شريف والمجله الشهرية للبنات والجرائد
غله وشول الم، امام الشريعة والطرفة، فلك أعالي العث
اليومية الأخشان خلف الله
الأعظم، سلطان الأولياء تحرك المغرية، خره الخفة، مع الملة، لسان الأله، لا
المفسرين، رئيس المحدثيل، فاز الفقهاء، خاكم الحديث، حجه الاسلام ما
المجتهدین، مخي الشه، ماجى البدعة، واجب الالهام، زشرل ما، مسند الأوليان، سلطان
العارفين، إمام الصديقين، إمام الأسرة، المجلد الأعظم، فيوم الزمان، الخيار الأول، الغو
الأول، السلطان النصير، حبیب الله، جامع الألقاب، اهل بیت رسول الله ، مولانا
سیدنا حضرت امام الأمم عليه السلام
والقادر والجن والهند والمجد والمحلي
راجارباغ شریف، داگا

গবেষণা কেন্দ্র: মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ, দৈনিক আল ইহসান শরীফ এবং
মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ উনাদের সম্মানিত প্রতিষ্ঠাতা ও পৃষ্ঠপোষক
খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রাসুলুল্লাহ, ইমামুল শরীয়াহ ওয়াত তরিকার, কুতুবুল।
‘আলম, গৃবউছুল আ'যম, সুলত্বানুল আউলিয়া, মাখযানুল মা'রিফাহ, খ্যীনাতুর
রহমাহ, মুঈনুল মিল্লাহ, লিসানুল উম্মাহ, তাজুল মুফাসসিরীন, রঈসুল
মুহাদ্দিসীন, ফখরুল ফুকাহা, হাকীমুল হাদিস, হুজ্জাতুল ইসলাম, সাইয়্যিদুল
মুজতাহিদীন, মুহিউস সুন্নাহ, মাহিউল বিদয়াত, সাহিবুল ইলহাম, রাসূলে নুমা,
সাইয়্যিদুল আউলিয়া, সুলতানুল 'আরেফীন, ইমামুল ছিদ্দিকীন, ইমামুল
আইম্মাহ, মুজাদ্দিদে আ'যম, কইয়ূমুয যামান, জাব্বারিউল আউওয়াল, কৃউইয়ুল
আউওয়াল, সুলতানুল নাসির, হাবীবুল্লাহ, জামিউল আলকাব, আহলু বাইত
রসূলিল্লাহ, মাওলানা
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম
আল হাসানী ওয়াল হুসাইনী ওয়াল কুরাঈশী ওয়াল হানাফী ওয়াল কাদরী ওয়াল ।
| চিশতী ওয়ান নকশবন্দী ওয়াল মুজাদ্দিদ ওয়াল মুহাম্মদ
রাজারবাগ শরীফ, ঢাকা।                    ৩















 সুমহান ক্বওল শরীফ
تخمه وصلي وسلم على رسوله الكريم وعلى والدي رسول الله صلى الله
السلام وحضرت أهل بيته
عليه وسلم وحضرت أمهات المؤمنين عليه
الكريم عليهم السلام. أما بعد :

বর্তমানে ইহুদীদের এজেন্ট হিসেবে মুসলমানদের ঈমান আমলের সবচেয়ে
বেশি ক্ষতি করছে যারা, তারা হলাে “উলামায়ে সূ”। ইহুদীদের এজেন্ট
উলামায়ে ‘সরা হারাম টিভি চ্যানেল, পত্র-পত্রিকা, কিতাবাদি ও বক্তব্য বা
বিবতির মাধ্যমে খাছ সুন্নতী বাল্য বিবাহের বিরুদ্ধে বলছে। অর্থাৎ তাদের বক্তব্য
হচ্ছে সম্মানিত শরীয়ত উনার মধ্যে বাল্যবিবাহকে স্বীকৃতি দেয়া হয়নি। তাই
বাল্যবিবাহ করা বা দেয়া যাবে না। নাউযুবিল্লাহ!
| অথচ তাদের উপরোক্ত বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা, চরম বিভ্রান্তিকর ও
কুফরী মূলক। তাদের এসব বক্তব্যের কারণে তারা নিজেরা যে রূপ গোমরাহ ও
জাহান্নামী হচ্ছে, দ্রুপ তাদের উক্ত কুফরীমূলক বক্তব্য ও বদ আমলের কারণে
সাধারণ মুসলমান উনারা ই'তিকৃাদী বা আকীদাগত ও আ’মালী বা আমলগত
উভয় দিক থেকেই বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে এবং হবে অর্থাৎ গুমরাহ ও
জাহান্নামী হচ্ছে ও হবে। নাউযুবিল্লাহ!
| কারণ, তাদের উক্ত বক্তব্যের কারণে যারা এ আক্বীদা পোষণ করবে যে,
সম্মানিত শরীয়ত উনার মধ্যে বাল্যবিবাহকে স্বীকৃতি দেয়া হয়নি। তাই
বাল্যবিবাহ করা বা দেয়া যাবে না। নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ!
তারা ঈমানহারা হয়ে কাট্টা কাফির ও চির জাহান্নামী হবে। কারণ বাল্যবিবাহ
শুধু জায়িযই নয় বরং খাছ সুন্নত উনার অন্তর্ভুক্ত। আর সম্মানিত ইসলামী
শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে হালাল বা জায়েজ বিষয়কে হারাম বা নাজায়েজ বলা এবং
হারাম বা নাজায়েজ হালাল বা জায়েজ বলা সুস্পষ্ট কুফরী। কেননা কিতাবে
স্পষ্ট উল্লেখ আছে যে

استحلال المعصية كفر.

অর্থাৎ “গুনাহের কাজ বা হারামকে হালাল মনে করা কুফরী।" (শরহে
আকাইদে নাসাফী শরীফ)।
অতএব, বলার অপেক্ষা রাখে না যে, উলামায়ে “সূ"দের উক্ত বক্তব্য
সাধারণ মুসলমান উনাদের আক্বীদা বা ঈমানের জন্য বিশেষভাবে হুমকিস্বরূপ।
উল্লেখ্য, বাল্যবিবাহ করতে হবে বা দিতে হবে এরূপ বাধ্যবাধকতা
সম্মানিত শরীয়ত উনার মধ্যে নেই। অর্থাৎ সম্মানিত ও পবিত্র শরীয়ত কাউকে
বাল্যবিবাহ দিতে বা করতে সরাসরি আদেশ বা নির্দেশ করেননি।                   ৪




















তবে বাল্যবিবাহ যেহেতু সম্মানিত শরীয়ত মোতাবেক জায়েজ ও খাছ সুন্নত
তাই বাল্য বিবাহের বিরুদ্ধে বলা যাবে না। বললে কুফরী হবে, ঈমান নষ্ট হবে
এবং জাহান্নামী হবে। নাউযুবিল্লাহ! কারণ বাল্য বিবাহের বিরুদ্ধে বলার অর্থ
হচ্ছে স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের বিরোধিতা করা।
কেননা উনারাই বাল্যবিবাহকে বৈধতা দান করেছেন।
| অনুরূপ উলামায়ে “সূ দের উক্ত কুফরী মূলক বক্তব্য মুসলমানদের আমল
ক্ষেত্রেও বিশেষ ক্ষতির কারণ। কেননা যারা তাদের উক্ত বক্তব্যের কারণে
প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও বাল্য বিবাহ থেকে বিরত থাকবে তারা একটি খাছ সুন্নত
পালন করা থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি অশ্লীল, অশালীন, অসামাজিক
কাজের মশগুল হতে পারে। নাউযুবিল্লাহ!
কাজেই, যারা এ ধরনের কুফরী আক্বীদায় বিশ্বাসী ও কুফরী বক্তব্য
প্রদানকারী তারা এবং হক তালাশী সমঝদার মুসলমান উনারা উনাদের ঈমান ও
আমলকে যেন হিফাযত করতে পারেন অর্থাৎ সকল বিষয়ে সম্মানিত আহলে
সুন্নাত ওয়াল জামায়াত উনার আকিদা অনুযায়ী আক্বীদা পোষণ করতে পারেন।
এবং পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র
কৃিয়াস শরীফ মুতাবিক আমল করে মহান আল্লাহ পাক উনার রিযামন্দি হাছিল।
করতে পারেন সে জন্যেই “পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ
উনাদের দৃষ্টিতে বাল্যবিবাহ খাছ সুন্নত হওয়ার প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়
সম্পর্কে শরয়ী ফায়ছালা অর্থাৎ ফতওয়া” নামক কিতাবখানা প্রকাশ করা হলাে।
| মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সবাইকে অত্র কিতাবের বর্ণনা অন্যায়ী
আক্বীদা পোষণ করার ও আমল করার অর্থাৎ পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র
হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র কিয়াস শরীফ মোতাবেক আকীদা
পেষণ করার সাথে সাথে আমল করার তাওফিক দান করুন। আমীন।                              ৫














নং                                        সূচিপত্র                                   পৃষ্ঠা
১. সম্মানীত ইসলামী শরীয়ত উনার আলোকে নিকাহ বা বিবাহ -শাদীর ফযীলত ও গুরুত্ব......৭
২.নিকাহ বা বিবাহের উদ্দেশ্য এবং উপকারিতা........................................................................৮
৩. কিরূপ মেয়েকে নিকাহ বা বিবাহ করা উচিত.......................................................................১২
৪.নিকাহ বা বিবাহের আহকাম .................................................................................................১২
৫.সম্মানিত শরীয়ত উনার আলােকে বালিগ বা বালিগার সংজ্ঞা...............................................১৪
৬. বাল্যবিবাহ' শব্দের অর্থ ....................................................................................................... ১৪
৭.সম্মানিত শরীয়ত উনার মধ্যে বিবাহের বয়স নির্দিষ্ট করা হয়নি............................................১৫
৮. মহান আল্লাহ পাক তিনি স্বয়ং নিজেই বাল্যবিবাহকে বৈধতা দান করেছেন , যা অনেক আয়াত শরীফ উনাদের দ্বারাই অকাট্যভাবে প্রমাণিত ..........................................................................২০
৯. নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম করেছেন, যা অনেক পবিত্র আয়াত শরীফ উনাদের দ্বারাই অকাট্যভাবে শরীফ উনাদের দ্বারাই অকাট্যভাবে প্রমাণিত ....২৩
১০.নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বয়ং নিজেই বাল্যবিবাহ দিয়েছেন .................................................................................................................৩৩
১১. হযরত খুলাফায়ে রাশিদীন আলাইহিমুস ও হযরত ছাহাবায়ে কিরাম তিনি স্বয়ং নিজেই বাল্যবিবাহ করেছেন যা অসংখ্য পবিত্র ছহীহ হাদীছ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের অনেকেই বাল্যবিবাহ মুবারক দিয়েছেন ও করেছেন .................................................................................................৩৪
১২. অন্যান্য হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের।
মধ্যে অনেকেই বাল্যবিবাহ দিয়েছেন ও করেছেন...................................................................৩৫
১৩. বাল্যবিবাহ জায়িয বা বৈধ হওয়ার ব্যাপারে সকল ইমাম মুজতাহিদ
উনাদের মধ্যে ইজমা বা ঐক্যমত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে................................................................৩৬
১৪. সম্মানিত ইসলাম উনার সােনালী যুগে ঘরে ঘরে বাল্যবিবাহ হতাে ...................................৩৭
১৫. ৯৮ ভাগ মুসলমান ও রাষ্ট্রদ্বীন ইসলাম উনার দেশ বাংলাদেশ সহপৃথিবীর কোন দেশেই ব্রিটিশ কাফিরদের প্রণীত বাল্যবিবাহ বিরােধী আইন বহাল থাকতে পারে না,.....................................৩৮
১৬. সম্মানিত শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে বাল্য বিবাহের বিরােধিতা করা কুফরী,
যে কুফরী করে সে মুরতাদ হয় ................................................................................................৩৯
১৭. সম্মানিত শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে মুরতাদের ফায়ছালা ,.......................................................৪৪
১৮. উপসংহার .........................................................................................................................৪৬     ৬                                                                                                      
















সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার আলােকে
নিকাহ বা বিবাহ-শাদীর ফযীলত ও গুরুত্ব
এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,

ومن آياته أن خلق لكم من أنفسكم أزواجا لتسكنوا إليها وجعل بينكم مودة
ورخم، إن في ذلك لآيات لقوم يتفكرون

অর্থ : “মহান আল্লাহ পাক উনার নিদর্শনসমূহের মধ্যে এটাও একটি
নিদর্শন যে, তিনি তােমাদের জন্য তােমাদের থেকে জোড়া সৃষ্টি করেছেন যাতে
তোমরা তাদের মাধ্যমে শান্তি লাভ করতে পারে এবং তিনি তোমাদের মধ্যে ।
মুহব্বত ও স্নেহ-মমতা সৃষ্টি করে দিয়েছেন। নিশ্চয়ই চিন্তাশীল লােকদের জন্য।
এতে বহু নির্দশন মুবারক রয়েছে।” সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা রূম শরীফ :
পবিত্র আয়াত শরীফ ২১)।
পবিত্র সূরা রূম শরীফ উনার উল্লিখিত পবিত্র আয়াত শরীফ এবং অন্যান্য
পবিত্র আয়াত শরীফ হতে এটা সুস্পষ্টরূপে বুঝা যায় যে, মহান আল্লাহ পাক
উনার সৃষ্টি আশরাফুল মাখলুকাত মানব জাতিকে মহিলা ও পুরুষ রূপে সৃষ্টি
করেছেন এবং মহিলাকে পুরুষের আহলিয়া (স্ত্রী) রূপে মাতৃরূপে কন্যা ও
ভগ্রিরূপে স্থান দিয়ে মহিলা জাতিকে অনেক সম্মান ও মর্যাদা দিয়েছেন। তিনিই।
পুরুষ ও মহিলা উভয়ের মধ্যে মুহব্বত ও স্নেহ-দয়া মায়া মমতা ইত্যাদি দান
করেছেন এবং একের উপর অন্যের অধিকার সুপ্রতিষ্ঠিত করেছেন, যাতে মানব
জাতি মহান আল্লাহ পাক উনার নিয়ামত সমূহের শুকরিয়া আদায় করত উনার
প্রদত্ত সুশৃঙ্খল নিয়ম-কানুন অনুযায়ী পরস্পর পরস্পরের হক সুস্থ ও সঠিকভাবে
আদায় করে দুনিয়া ও আখিরাতের প্রকৃত সুখ শান্তি, খইর, বরকত লাভ করতে।
পারে এবং সাথে সাথে মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের খাছ রেযামন্দি ও
সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করতে পারে। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম মানব জাতিকে পারিবারিক আইন সম্পর্কে যত সুষ্ঠু ও
সুশৃঙ্খল নিয়ম কানুন শিক্ষা দিয়েছেন এবং নারী জাতির প্রতি যে সম্মান ও
মর্যাদা প্রদর্শন করেছেন বিশ্বের কোনাে ধর্মেই তা খুঁজে পাওয়া যায় না।
মহিলাদেরকে পিতা, মাতা ও আত্মীয় স্বজনের সম্পত্তি হতে এক অংশ এবং
স্বামীর সম্পত্তি হতেও এক নির্দিষ্ট অংশ দেয়ার হুকুম দিয়েছেন। এছাড়াও
পুরুষকে তার আহলিয়ার মোহরানা, খারাপ, পোশাক, বাসস্থান প্রদান করার
সাথে সাথে তাদের ইজ্জত-সম্মান হেফাজত করে ব্যবহার ও স্নেহ সহানুভূতির
সাথে জীবন যাপন করার মুবারক আদেশ দিয়েছেন।
কোন অবস্থায় আহলিয়ার মুখমণ্ডলে আঘাত না করার আদেশ, জাহেল
যুগের অভ্যাস মত একসঙ্গে তিন বা ততােধিক তালাক না দেয়ার নির্দেশ,                   ৭




















ইদ্দতকাল খোরপোষ প্রদানের আদেশ, মোহর আদায় না করে ।
ওয়ারিশগণের তা পরিশোধ করার নির্দেশ, একাধিক আউলিয়ার উপর।
রক্ষা করার নির্দেশ, আহলিয়ার খালা ও তাফবীজ তালাকের অধিকার।
আল্লাহ পাক উনার এবং উনার রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, ভয়!
ছয়াল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের পরেই মাতার হক আদায় করার নির্দে।
মাতার পায়ের নিচে জান্নাত অর্থাৎ উনার হক্ব আদায় ও খিদমত করার মাধ
জান্নাত প্রাপ্তির ঘােষণা; বিধবা, অবিবাহিতা, নাবালিগা, ইয়াতীম ভগ্নি, কন্যা
নিকট আত্মীয়দের তত্ত্বাবধান, খোরপোষ প্রদান ও সদাচরণের নির্দেশ ইত্যাদি
নারী জাতির যথাযথ হকু মান মর্যাদা একমাত্র সম্মানিত দ্বীন ইসলামেই রয়েছে।
কিন্তু পুরুষের মান-ইজ্জত ও অধিকার এতটুকুও ক্ষত করা হয়নি। পুরুষ ও
মহিলাকে স্বভাব সুলভ সমঅধিকার দেয়া হলেও খালিক মালিক রব মহান।
আল্লাহ পাক তিনি আহালকে তার আহলিয়ার সকল বিষয়ের দেখাশুনার দায়িত্ব
দিয়েছেন। যেমন ইরশাদ মুবারক হয়েছে

درجة

وللرجال عليه

অর্থ : “আর নারীদের উপরে পুরুষদের মর্যাদা রয়েছে।” সুবহানাল্লাহ!
(পবিত্র সূরা বাকারা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২২৮)
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন

الرجال قوامون على الياء

অর্থ : “পুরুষদেরকে মহিলাদের উপর কর্তৃত্ব বা দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।"
সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা নিসা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৪)
অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার রসূল নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের পরেই আহাল বা
স্বামীর স্থান দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ মু'মিন মুসলমান আহাল বা স্বামীর সম্মানিত।
শরীয়তসম্মত খিদমত বা তাবিদারী ও সন্তুষ্টির উপর পরকালের খইর বরকত।
প্রাপ্তির ঘোষণা দেয়া হয়েছে। সুবহানাল্লাহ!

 নিকাহ বা বিবাহের উদ্দেশ্য এবং উপকারিতা
এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন

هو الذي خلقكم من نفس واحدة وجعل منها زوجها ليسكن إليها.

অর্থ : “তিনি মহান আল্লাহ পাক যিনি তােমাদেরকে একজন মানুষ (হযরত
আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম) উনার থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং
উনার থেকে উনার সম্মানিতা আহলিয়া উনাকে পয়দা করেছেন এ জন্য যে,
তিনি যেন উনার সম্মানিতা আহলিয়া উনার মাধ্যমে ইতমিনান বা শান্তি লাভ
করেন।" সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা আ'রাফ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৮৯)               ৮

উপরােক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে খাছ করে আমাদের সম্মানিত ও
পানি আদি পিতা-মাতা উনের উত্থান থাকলেও এৰা ঘেরা সমস্ত আদম সন্তানকেই
বুঝানো হয়েছে। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন
من الناس لكم و الم لا آهن

অর্থাৎ পুরুষ ও মহিলা একে অন্যের পরিপূরক, অর্থাৎ পরম্পরা পরস্পরের পবিত্র
ঈমান, আমল, সৎ ও আধৰু হেফাজতের মাধ্যম। সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা
বাকারা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৮৭)

অন্যরা আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,

بسألكم حرث لكم


স্বরূপ।
(পবিত্র সূরা বাকারা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ২২৩)।

r fs33 s73ی ی 33
সুবহানাল্লাহ!
| আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে
وعاشروهن بالمعروف فإن كرهون على أن تكرهوا شيئا ويجعل الله

| অর্থ : “তোমরা আউলিয়াদের সাথে সৎভাবে জীবন যাপন করা। যদি
তােমরা তাদেরকে অপছন্দ করাে তবে জেনে রেখো, অতিসত্বর তোমরা যা
অপছন্দ করাে তাতে মহান আল্লাহ পাক তিনি অনেক খইর, বরকত দান
করা, তালহা (পবিত্র নিসা মধ্যে মুবা করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা নিসা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৯)।
এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে

عن حضرت أم المؤمنين الثالثة الصديقة عائشة عليها السلام قال قال وشول
الله صلى الله عليه وسلم البكاء من شئ فمن رغب عن سنتي فليس من

অর্থ : “হযরত উম্মুল মু'মিনীন আছ ছালিছা ছিদ্দিক্বা আলাইহাস সালাম
উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযুর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, বিবাহ বন্ধনে
আবদ্ধ হয়ে জীবনযাপন করা আমার সুন্নত মুবারক। যে ব্যক্তি আমার সুন্নত
মুবারক উনাকে অস্বীকার বা অবজ্ঞা করে সে আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়।
(তালবীসুল ইবলীস ১/২৬০)।

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরাে ইরশাদ মুবারক হয়েছে                                     ৯


حضرت عبد الله بن عمرو رضی الله تعالى عنه عن رسول الله صلى الله
عليه وسلم قال الدنيا كلها متاع وخير متاع الدنيا المرأة الصالحة

অর্থ : “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা
করেন, নুরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তি।
ইরশাদ মুবারক করেন, দুনিয়ার সমস্ত কিছুই সম্পদ এবং দুনিয়ার সমস্ত সম্পদের
মধ্যে শ্রেষ্ঠ সম্পদ হলো নেককার আহলিয়া (স্ত্রী)।” সুবহানাল্লাহ! (নাসায়ী শরি)।
| পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরাে ইরশাদ মুবারক হয়েছে

: حضرت انس رضی الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه
وسلم المرأة إذا صلت خمسها وصامت شهرها وحصنت فرجها وأطاعت
بعلها قلتها من أي أبواب الجنة شاءت

অর্থ : “হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি
বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
ইরশাদ মুবারক করেন,যে আহলিয়া যথাযথভাবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে,
রমাদ্বান শরীফ মাসে রোযা রাখে, নিজের ইজ্জত-আবরু সম্পূর্ণরূপে রক্ষা করে।
আহাল বা স্বামীর হক যথাযথভাবে আদায় করত আহাল বা স্বামীর আনুগত্য করে
চলে সে ইচ্ছামত সম্মানিত বেহেশত উনার যে কোনাে দরজা দিয়ে অবাধে প্রবেশ
করার অধিকার লাভ করবে।" সুবহানাল্লাহ! (মিশকাত শরীফ)
উল্লেখ্য যে, যে কোনাে জ্ঞানী ব্যক্তি পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ
শরীফ উনাদের উল্লিখিত পবিত্র আয়াত শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ পাঠ
করবে সে নিকাহ বা বিবাহের উদ্দেশ্য ও উপকারিতা জানতে ও বুঝতে পারবে।
নিকাহ বা বিবাহ শুধু একটি সম্পর্ক স্থাপনের বিষয়ই নয়, এটা একটি পবিত্র
ইবাদতও বটে। নিকাহ বা বিবাহ মানুষকে গুনাহ হতে রক্ষা করে, চক্ষু ও মনের
চাঞ্চল্য দূর করে এবং ইহকাল ও পরকালে প্রকৃত সুখ শান্তি প্রদান করে।
সুবহানাল্লাহ!
মুসলমান উনাদের নিকাহ বা বিবাহের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে মহান আল্লাহ
পাক উনার ও উনার রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সন্তুষ্টি মুবারক হাসিলের লক্ষ্যে উনাদের
নির্দেশিত নিয়মে নিজেকে পরিচালিত করে নেক সন্তান লাভ করা, যে সন্তান
তার ইহকাল ও পরকালে কামিয়াবীর কারণ হবে। এছাড়া সন্তানের মাধ্যম দিয়ে
মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার মহাসম্মানিত রসূল নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের রেযামন্দী বা
সন্তুষ্টি হাসিল করে পরকালে কঠিন আযাব গযব থেকে নিজেদের হেফাজত
করবে। সুবহানাল্লাহ!                                 ১০
অতএব, নিকাহ বা বিবাহের এত সব উপকারিতা থাকা সত্ত্বেও যে ব্যক্তি বা
সমাজ মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ।
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নির্দেশ সমূহ অমান্য করে।
নিজেদের ইচ্ছামত এবং বি ধর্মীয় রীতিনীতি মোতাবেক নাজায়েয বা হারাম ভাবে।
পারিবারিক জীবন যাপন করবে এবং যাদের মুখ্য উদ্দেশ্য হবে দুনিয়াবী ফায়দা।
হাছিল অর্থাৎ শ্বশুর পক্ষ হতে যৌতুক নিয়ে জীবন-যাপন করা। তাদের জন্য
তাদের আহলিয়া ও সন্তানাদি দুনিয়া ও আখিরাতে শান্তির পরিবর্তে দুঃখ-কষ্ট ও
বিপদের কারণ হবে। নাউযুবিল্লাহ!
তাই মহান আল্লাহ পাক তিনি ঈমানদারকে লক্ষ্য করে ইরশাদ মুবারক করেন

يا أيها الذين أمنوا الله من أزواجكم وأولادكم عدوا لكم فاخذوهم

অর্থ : “হে ঈমানদারগণ! তোমাদের কোনো কোনো আহলিয়া এবং সন্তান
তােমাদের দুশমন অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের হুকুম
পালন করা হয় তারা তোমাদের বাধা দেবে। অতএব, তাদের অনিষ্টতা হতে
সাবধান থাকো।” (পবিত্র সূরা তাগাবুন শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৪)
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন

إنما أموالكم وأولادكم فتنة والله عنده أجر عظيم

| অর্থ : “নিশ্চয়ই তোমাদের ধনসম্পদ সমূহ ও সন্তান সমূহ তোমাদের জন্য
পরীক্ষা স্বরূপ (পরীক্ষায় কৃতকার্য হলে) মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট বিরাট
পুরস্কার রয়েছে।” সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা তাগাবুন শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ
| মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন

ومن كان يريد ترك الدنيا

من كان يريد حرث الأخيرة ترد له في كونه
ته منها وما له في الأخيرة من تصيب

অর্থ : “যে ব্যক্তি আখিরাতের ফসল চায়, আমি (মহান আল্লাহ পাক)
তাদের ফসল বাড়িয়ে দেই, আর যে দুনিয়ার ফসল চায় আমি তাকে তার কিছু
অংশ দেই কিন্তু আখিরাতে তার জন্য কোন অংশ নেই।" (পবিত্র সূরা শুয়ারা
শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২০)।
অর্থাৎ, যে ব্যক্তি কোনাে নেক কাজ করে মহান আল্লাহ পাক তিনি তার এক
নেকী দশ গুণ বা ততোধিক আখিরাতে দিবেন এবং দুনিয়ায় সে ঐ নেক
কাজের বরকত ও সুফল লাভ করবে। সুবহানাল্লাহ! কিন্তু যে শুধু দুনিয়ার জন্যই
কোনাে কাজ করবে সে দুনিয়ায় তার কর্মের ততটুকু ফল পাবে যা তার জন্য
নির্ধারিত করা হয়েছে, পরকালে সে কোনাে প্রতিদান পাবে না । নাউযুবিল্লাহ!                      ১১


কিরূপ মেয়েকে নিকাহ বা বিবাহ করা উচিত
পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে

فالصالحات قانتات حافظات للغيب بما حفظ الله

অর্থ : “নেককার আহলিয়া গণ উনাদের আহালদের আনুগত্য হন,
হিফাযতকারী হন, আহালদের অনুপস্থিতিতে যা মহান আল্লাহ পাক তিনি
হেফাজত করতে বলেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা নিসা শরীফ : পবিত্র
আয়াত শরীফ ৩৪) ।
এ বিষয়ে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে

عن حضرت أبي هريرة رضي الله تعالى عنه عن التى صلى الله عليه وسلم قال
تنگه المرأه ژبع لمالها ولحسبها ولكملها ولدينها فاظفر بذات الدين

অর্থ : “হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত।।
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ
মুবারক করেন, চারটি বিষয় বিবেচনা করে মেয়ে বা মহিলাকে নিকাহ বা বিবাহ
করতে হবে। মাল-সম্পদ, বংশ বা নছবনামা, সৌন্দর্য ও দ্বীনদারী। তােমরা
দ্বীন দার কে প্রাধান্য দিবে।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ)।
| বাস্তবিকই দ্বীনদার আহলিয়াগণ সম্মানিত দ্বীন ইসলাম থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা দ্বারা
স্বামীর আনুগত্য, বিনীতা, শিষ্টাচারী, ন্যায়পরায়ণতা, সতী-সাধ্বী ইত্যাদি
সৎগুণের অধিকারিণী হয়ে সুখের সংসার গড়ে তুলতে পারেন। কাজেই রে।
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদেশ ও
নির্দেশ মুবারক মুতাবিক দ্বীনদার আহিলয়াকেই বিবাহ করা উচিত অর্থাৎ ফরয।

নিকাহ বা বিবাহের আহকাম

সাধারণ অবস্থায় অর্থাৎ আহলিয়ার খোরপোষ, মোহর ও আহলিয়ার
অধিকার আদায়ে সক্ষম হলে বিয়ে করা খাছ সুন্নত। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ,
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন

قال

عن حضرت أم المؤمنين الثالثة الصديقة عائشة عليها السلام قال
رسول الله صلى الله عليه وسلم التكاخ من شتى

অর্থ : “হযরত উম্মুল মু'মিনীন আছ ছালিছা ছিদ্দিক্বা আলাইহাস সালাম।
উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিকাহ বা বিবাহ।
হচ্ছে আমার সুন্নত মুবারক।” সুবহানাল্লাহ! (সুনানে ইবনে মাজাহ শরীফ)।                         ১২

অন্যত্র মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

عن خضرت أم المؤمنين الثالثة الصديقة عائشة عليها السلام قالت
تي فمن لم يعمل بسنتي فليس من
الله صلى الله عليه وسلم النيك اخ من

উনার থেকে বর্ণিত।

সুন্নত মুবারক থেকে,

ক. • হযরত উম্মুল মু'মিনীন আছ ছালিছা ছিদ্দিক্বা আলাইহাস সালাম
থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযুর পাক।
লােহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি আমার।
বারক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিল অর্থাৎ অস্বীকার করলাে সে আমার
মতের অন্তর্ভুক্ত নয়।” (ইবনে মাজাহ শরীফ)।
| যদি কেউ নিকাহ বা বিবাহ না করলে ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার আশঙ্কা হয়
হলে তার জন্য নিকাহ বা বিবাহ করা সম্মানিত শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে ফরয।
| বাদায়ে প্রণেতা হযরত ইমাম কাসানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন

الاخلاف أن التكاخ فرض حالة الوقاير حتى أن من تاقت نفسه إلى الياء
بحيث لا يمكن الصبر عنه وهو قادر على المهر والنفقة ولم يتزوج يأثم

| অর্থ : “যদি কোনাে ব্যক্তির আহলিয়ার মােহর আদায় ও খােরপােষ দেয়ার।
সামর্থ্য থাকে, আর বেগানা নারী থেকে নিজেকে হেফাজত করার মতো ধৈৰ্যশক্তি
থাকে তবে এ অবস্থায় তার উপর নিকাহ বা বিবাহ করা ফরয হওয়ার
ব্যাপারে কারো কোনো ইখতিলাফ নেই। আর যদি কারো অধিক পরিমাণ
আশঙ্কা না হয় কিন্তু নফসের ওয়াছওয়াছার কারণে যে কোনাে সময়ে
ব্যভিচারের সম্ভাবনা দেখা দেয়, তাহলে তার জন্য বিবাহ করা সম্মানিত শরীয়ত
উনার দৃষ্টিতে ওয়াজিব। উপরােক্ত দু'অবস্থাই মােহর ও খাের পােষের সামর্থ্য
থাকতে হবে। পক্ষান্তরে যদি বিয়ের পর আহলিয়া পবিত্র শরীয়ত মোতাবেক
চালানাে সম্ভব না হয় এবং আহলিয়া বা স্ত্রীর উপর যুলুম অত্যাচার ও তার হক
নষ্ট করার প্রবল আশঙ্কা হয় তাহলে বিবাহ করা নাজায়িয ও হারাম।"
(বাদায়েউস সানায়ে-৩/৩১১ আল বাহরুর রায়েক-৩/১৪০ বিবাহ অধ্যায়)
| আর এক্ষেত্রে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি।
ওয়া সাল্লাম তিনি ওই ব্যক্তিকে ধারাবাহিকভাবে রােযা রাখার উপদেশ।
দিয়েছেন । পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে

غ حضرت عبد الل رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه
وسلم يا معشر الشباب عليه الباءة فانه أغض للبصر وأحصن للفرج ومن
لم يستطع فعليه بالصوم فإنه له وجاء                                                                                               ১৩



















অর্থ : “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে
বর্ণিত। তিনি বলেন, নুরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি।
ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, হে যুব সম্প্রদায়! তােমাদের মধ্যে যে ।
বিবাহের সামর্থ্য রাখে, সে যেন বিবাহ করে নেয়। কেননা উহা চক্ষুকে অবনত
রাখে এবং লজ্জাস্থানকে রক্ষা করে। আর যে সামার্থ্য রাখে না সে যেন রােযা রাখে।
কেননা রোযা (কি লাগাতার হয়) নফস বা প্রবৃত্তির দমন করে রাখে।"
সুবহানাল্লাহ! (ছহীহ বুখারী শরীফ-২/৭৫৮, ছহীহ মুসলিম শরীফ-১/৪৪৯)।

সম্মানিত শরীয়ত উনার আলােকে বালিগ বা বালিগার সংজ্ঞা

সম্মানিত শরীয়ত উনার মধ্যে ১২ বছরের নিম্ন বয়স্ক বালককে নাবালিগ ও
৯ বৎসরের নিম্ন বয়স্ক বালিকাকে নাবালিকা ধরা হয়। ১৫ বৎসরের মধ্যে যদি
বালিগ হওয়ার চিহ্ন দেখা না যায় তবে ছেলে বা মেয়ের বয়স ১৫ বছর পূর্ণ।
হলেই বালিগ বা বালিগী বলে গণ্য হবে।
| পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে

قالت حضرت ام المؤمنين الثالثة الصديقة عائشة عليها السلام إذا بلغت

অর্থ : “হযরত উম্মুল মু'মিনীন সাইয়্যিদাতুনা আছ ছালিছা সিদ্দিকা
আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, মেয়েদের বয়স যখন নয় (৯) বছর হবে তখন
সে মহিলা হিসেবে অর্থাৎ প্রাপ্ত বয়স্কা বলে গণ্য হবে।” (তিরমিযী শরীফ ১১০৯,
সুনানু কুবরা বায়হাকী ১৪২৫, ফতহুল বারী ২/৭১২)।
| বালিকা বালেগ হওয়ার আলামত: ১। ইহতিলাম হওয়া, ২। মনি স্খলন
হওয়া, ৩। তার দ্বারা কোন স্ত্রীলোক হামেলা হওয়া।
বালিকার বালিগা হওয়ার আলামত: ১। স্বাভাবিক মাজুরতা প্রকাশ পাওয়া,
২। ইহতিলাম হওয়া, ৩। হামেলা হওয়া।
|বাল্যবিবাহ' শব্দের অর্থ
বাংলা একাডেমী থেকে প্রকাশিত সংক্ষিপ্ত বাংলা অভিধান নামক গ্রন্থের
৪৫২ পৃষ্ঠায় বাল্য শব্দের অর্থ লেখা আছে এভাবে
বাল্য: শৈশব, ছেলেবেলা, বালক বয়স।
বাল্যকাল: বালক বয়স।।
বাল্যবিবাহ: শৈশবে সংঘটিত বিবাহ, অপরিণত বয়সে কৃত বিবাহ।
বাল্য শিক্ষা: বালক বয়সের শিক্ষা।
উপরােক্ত শাব্দিক অর্থ দ্বারা এটাই বুঝা যাচ্ছে যে, অপ্রাপ্ত বয়সের
বিবাহকেই বাল্যবিবাহ বলে । এখন তা শিশুকালেও হতে পারে, শৈশবকালেও
হতে পারে বা কিশোরকালে হতে পারে।                                                                                ১৪


















সম্মানিত শরীয়ত উনার মধ্যে বিবাহের বয়স নির্দিষ্ট করা হয়নি

সম্মানিত শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে যে কোনাে বয়সের ছেলে মেয়ের মধ্যেই বিবাহ।
বন্ধন বৈধ বা জায়িয। অর্থাৎ পবিত্র ও সম্মানিত শরীয়তসম্মত। কেননা পবিত্র ও।
সম্মানিত শরীয়ত তথা পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজম।
শরীফ ও পবিত্র কিয়াস শরীফ উনাদের মধ্যে কোথাও বিবাহের বয়স নির্দিষ্ট করে।
দেয়া হয়েছে এরূপ একটি জঈফ দলীলও কেউ পেশ করতে পারবে না।।
পক্ষান্তরে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার পবিত্র আয়াত শরীফ দ্বারাই।
স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে, সম্মানিত শরীয়ত উনার মধ্যে বিবাহের বয়স নির্দিষ্ট
করা হয়নি।
এ প্রসঙ্গে পবিত্র “সুরা নিসা শরীফ উনার ৩নং পবিত্র আয়াত শরীফ উনার
মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন

ش طه في اليتامى فانكحوا ما طاب لكم من النساء مثنى

وإن خفتم الا
وثلاث ورباع

অর্থ : “আর যদি তোমরা ভয় কর যে, ইয়াতিম মেয়েদের হক যথাযথভাবে
পূরণ করতে পারবে না, তবে সেসব মেয়েদের মধ্য থেকে যাদের ভালাে লাগে
তাদের বিয়ে করে নাও দুই, তিন, কিংবা চারজন পর্যন্ত।” (পবিত্র সূরা নিসা
শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ নং ৩)
| এবার জানা দরকার ইয়াতিম কাকে বলে, “লিসানুল আরব’ অভিধান
ইয়াতীমের সংজ্ঞায় বর্ণিত আছে

اليتيم الذي يؤث آلية حتى يبلغ الحلم فإذا بلغ زال عنه إسم اليتيم واليتيمة
زال عنها إسم اليتيمة .
ما لم تتزوج قائما تترج

| অর্থ : “ইয়াতীম এমন সন্তানকে বলা হয়, যার পিতা মারা গিয়েছে, বালিগ
হওয়া অবধি সেই ইয়াতীম হিসেবে গণ্য হবে, বালেগা হওয়ার পর ইয়াতীম নামটি
তার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। আর মেয়ে সন্তান বিয়ের পূর্ব পর্যন্ত ইয়াতীম বলে
গণ্য হবে, বিয়ের পর তাকে আর ইয়াতীম বলা হবে না।” (লিসানুল আরব
১২/৬৪৫)।
| পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইয়াতীম প্রসঙ্গে বর্ণিত আছে

قال حضرت علی بن ابی طالب عليه السلام حفظ عن رسول الله صلى
الله عليه وسلم لا ثم بعد الحلام।                                                                                                      ১৫


অর্থ: “ইমামুল আউওয়াল মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আমরি মু'মিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন হযরত
কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে আমি পবিত্র হাদীছ শরীফ হিফয়
করে রেখেছি যে, বালিগা হওয়ার পর ইয়াতীম থাকে না।” (আবু দাউদ শরীফ
১৮৭৫. সুনানে কুবরা বায়হাকী ৬/৫৭ হাদীছ ১১৬৪২, মুজামুল কবীর তৃবারানী
৩৪২২. সুনানে ছগীর লি বায়হাকী ২০৪৯, শরহুস সুন্নহ ৯/২০০, ফতহুল বারী
২/৩৪৬, উমদাতুল কারী ২১/১০৭, কানযুল উম্মাল ৬০৪৬) এ পবিত্র হাদীছ
শরীফ উনার সনদ উত্তম ও সকল রাবি হিকমাহ।
| উপরে বর্ণিত পবিত্র আয়াত শরীফ “ইয়াতিম” ও তার ব্যাখ্যায় পবিত্র
হাদীস শরীফ এবং লুগাত থেকে যা বোঝা গেল, তা হচ্ছে-ইয়াতীম মেয়েদের
বিবাহ করা যাবে। আর মেয়েদের মধ্যে ইয়াতীম হচ্ছে সেই সব মেয়ে যারা
এখনো বালেগ হয়নি। অর্থাৎ অপ্রাপ্ত বয়স্ক।
| এ প্রসঙ্গে একখানা সহীহ পবিত্র হাদীছ শরীফ আছে যেখানে ইয়াতিমকে
বিবাহের বিষয়টি উল্লেখ আছে

عن حضرت أبي هريرة رضي الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه
فلا جواز فهو إذنها وان آب
عليها. قال وفي الباب عن حضرت ابن موسی رضی الله تعالى عنه و حضرت
ابن عمر رضى الله تعالى عنه و أم المؤمنين الثالثة الصديقة عليها السلام. قال
الف عیسی حدیث حضرت آبي هريرة رضي الله تعالى عنه حديث حسن

অর্থ : “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি
বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ইয়াতীম
কুমারী থেকে তার বিবাহের ব্যাপারে সম্মতি গ্রহণ করতে হবে। যদি সে চুপ
থাকে তবে তাই তার সম্মতি বলে গণ্য হবে। আর যদি অস্বীকার করে তবে তার
উপর তা কার্যকারী হবে না। এই বিষয়ে হযরত আবু মূসা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু।
উনার, হযরত ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার এবং উম্মুল মু'মিনীন আছ
ছালিছাহ হযরত সিদ্দিকা আলাইহাস সালাম উনাদের থেকেও পবিত্র হাদীস
শরীফ বর্ণিত আছে। ইমাম হযরত আবু ঈসা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন,
হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার থেকে বর্ণিত পবিত্র হাদীছ
শরিফখানা হাসান।" (সহীহ আবু দাউদ শরীফ ১৮২৫, তিরমিযী শরীফ ১১০৯)                      ১৬

সুতরাং প্রমাণিত হলেও ইয়াতীম মেয়ে বিবাহ করা যাবে, আর ইয়াতীম
হচ্ছে তারা যারা এখনো বালেগ হয়নি।
অর্থাৎ অপ্রাপ্ত বয়স্কা এ প্রসঙ্গে আরাে একটি ছইীহ পবিত্র হাদীছ শরীফ
বর্ণিত আছে

وقال أحمد وإسحاق إذا بلغت اليتيمة تشع سنين
جائز ولا خيار لها إذا أدركت واتا بدیث حضر أم المؤمنين الثالثة
الصدقة عليها السلام أن النبي صلى الله عليه وسلم بنى بها وهي بنت
تسع سنين

অর্থ : “হযরত ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ও
হযরত ইসহাক রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, যখন ইয়াতীম কন্যার বয়স
নয় (৯) বছর হয় আর তাকে বিয়ে দিয়ে দেয়া হয় এবং সে সম্মতি দান করে।
তবে এই বিয়ে জায়েজ। সাবালিকা হওয়ার পর আর তার ইখতিয়ার থাকবে না।
উনারা হযরত উম্মুল মু'মিনীন আছ ছালিছা ছিদ্দিক্বা আলাইহাস সালাম উনার
ঘটনাকে দলীল হিসাবে পেশ করেন যে, যখন উনার বয়স মুবারক নয় (৯) বছর
হয়, তখন তিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হুজরা মুবারকে।
তাশরীফ গ্রহণ করেন ।" (তিরমিযী শরীফ ৪র্থ খণ্ড ৪০৬ পৃষ্ঠা)
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন

واللائي يشن من المحيض من نسائه إن ابم عه لائه أشهر
واللائي لم يحضن

অর্থ : “তােমাদের (তালাকপ্রাপ্তা) স্ত্রীদের মধ্যে যারা মাজুর হওয়ার কাল অতিক্রম
করে গেলে, তার ইদ্দত সম্পর্কে তোমরা যদি সংশয়ে থাকে তাদের ইদ্দতকাল হবে
তিন মাস। এবং যারা এখনও বালিগা হওয়ার বয়সে পৌঁছেনি (নাবালিগা) তাদেরও
একই হুকুম ।" (পবিত্র সূরা তালাক শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ নং ৪)
| উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার তাফসীরে উল্লেখ আছে

صلى الله عليه وسلم فقالوا يا رسول الله آآت التي لم تحض
شالوا ال
والتي قد يست من المحيض فاختلفوا فيهما قال الله تعالى

অর্থ : “হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা উনারা জিজ্ঞেস
করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! ওই সমস্ত মেয়েরা যারা।
এখনও বালিগা হওয়ার বয়সে পৌঁছেনি অর্থাৎ অপ্রাপ্ত বয়স্কা এবং ঐ সমস্ত
মহিলা যারা মাজুর হওয়ার কাল অতিক্রম করে গেছে, তাদের হুকুম কি?                                 ১৭


তখন মহান আল্লাহ পাক রব্বল আলামীন তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন।

الاثي لم يبلغ التحيض

واللائي لم يحضن } فهى الآثار الحوار
ثلاثة أشهر

দুররুল মানসুর বালিকা (অপ্রনা বালিকা হও

অর্থ : (ঐ সমস্ত স্ত্রী লােক যারা এখনাে বালিগা হওয়ার বয়সে পৌঁছায়নি।
অর্থাৎ এমন কুমারী যারা নাবালিগা (অপ্রাপ্ত বয়স্ক) তাদের ইদ্দত তিন মাস ।
(তাফসীরে দুররে মানসুর ১৪তম খণ্ড ৫৪৯ পৃষ্ঠা)
| পবিত্র সূরা নিসা শরীফ উনার ৩নং পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে।
ইয়াতীম ছেলে মেয়ের নিকাহ বা বিবাহের বিষয়টিকে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। যার।
অর্থ হচ্ছে নাবালিগ নাবালিগা অর্থাৎ অপ্রাপ্ত বয়স্ক বা অপ্রাপ্ত বয়স্কা ছেলে।
মেয়ের নিকাহ বা বিবাহ বৈধ। আর পবিত্র সূরা তুলাকৃ শরীফ উনার ৪নং পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে
যে সকল মেয়েরা বালেগা হওয়ার বয়স পৌছেনি সেসকল মেয়েদের নিকাহ বা
বিয়ের বিষয়টি স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। যার অর্থ হলাে নাবালিগা বা অপ্রাপ্ত বয়স্কা
মেয়েদের নিকাহ বা বিবাহ বৈধ ।
| অতএব, পবিত্র কুরআন শরীফ উনার পবিত্র আয়াত শরীফ দ্বারা প্রমাণিত
হলাে যে, সম্মানিত শরীয়ত উনার মধ্যে নিকাহ বা বিবাহের বয়স নির্দিষ্ট করা।
হয়নি। যেকোনাে বয়সেই নিকাহ বা বিবাহ দেয়া বা করা জায়িয ও সম্মানিত
শরীয়তসম্মত।
তাছাড়া নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার সম্মানিত আমল মুবারক দ্বারাও প্রমাণিত যে, বিবাহের বয়স নির্দিষ্ট
করা হয়নি বরং যেকোনাে বয়সেই বিবাহ করা ও দেয়া জায়িয বা সম্মানিত
শরীয়তসম্মত। যেমন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম উনার এবং উম্মুল মু'মিনীন আল উলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা
আলাইহাস সালাম উনাদের মধ্যে যখন নিসবাতুল আযীম মুবারক সম্পন্ন হয়,
তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনার দুনিয়াবী বয়স মুবারক ছিলেন ২৫ বছর। আর উম্মুল মু'মিনীন আল উলা
সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার দুনিয়াবী বয়স মুবারক
ছিলেন ৪০ বছর। সুবহানাল্লাহ!
আবার যখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার এবং উম্মুল মু'মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীকৃা
আলাইহাস সালাম উনাদের আযীমুশ শান আকূদ মুবারক সম্পন্ন হয়, তখন নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়াবী
বয়স মুবারক ছিলেন প্রায় ৫০ বছর। আর উম্মুল মু'মিনীন আছ ছালিছাত্
সাইয়্যিদাতুনা হযরত সিদ্দিকা আলাইহাস সালাম উনার বয়স মুবারক ছিলেন ৬।
বার। সুবহানাল্লাহ!                                                                                                                    ১৮

এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ আছে

وأخبرنا أبو عبد الله الحافظ أبا أبو عبد الله محمد بن يعقوب خدني آئو
جعفر محمد بن الحجاج الوراق ثنا يحيى بن يحي أنبأ أبو معاوية عن
حضرت أم المؤمنين الثالثة الصديقة
الأعمش عن ابراهيم عن الآشوبر ع
عليها السلام قالت تزوجها رسول الله صلى الله عليه و سلم وهي ابنه سي
وبنى بها وهي إبنة تسع ومات عنها وهي بنت ثمان عشرة سنة

অর্থ : “হযরত হাফিয আবু আব্দুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হযরত
আবু আব্দুল্লাহ মুহম্মদ ইবনে ইয়াকুব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণনা
করে বলেন যে, আমার কাছে আবু জাফর মুহম্মদ ইবনে হাজ্জাজ ওয়াজরাকৃ
রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেছেন এবং তিনি বলেন, আমার কাছে।
ইয়াহইয়া ইবনে ইয়াহইয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেছেন, যে, আবু
মুআবিয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হযরত আ’মাস রহমতুল্লাহি আলাইহি
উনার থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি হযরত ইবরাহীম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার
থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি হযরত আসওয়াদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার
থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি হযরত উম্মুল মু'মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বা
আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন যে, নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে ৬ বছর বয়স
মুবারক আকৃত মুবারক করেন এবং উনাকে ৯ বছর বয়স মুবারক ঘরে তুলে।
নেন। আর তিনি যখন পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন তখন উনার
বয়স মোবারক ছিল ১৮ বছর।” (সহীহ মুসলিম শরীফ)
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনার উল্লেখিত মুবারক আমল উনার মাধ্যম দিয়ে মূলত এটাই ছাবিত করে
দেয়া হয়েছে যে, সম্মানিত শরীয়ত উনার মধ্যে বিবাহের বয়স মুবারক নির্দিষ্ট
করে দেয়া হয়নি। যেকোনো বয়সের ছেলে যেকোনো বয়সের মেয়েকে বিবাহ
করতে পারেন, ছেলের বয়স কম বা বেশী অথবা মেয়ের বয়স কম বা বেশী
হলেও কোনাে সমস্যা নেই। বরং প্রত্যেকটাই সুন্নত মুবারক উনার অন্তর্ভুক্ত।
সুবহানাল্লাহ!
| যদি তাই হয়ে থাকে তবে ৯৮ ভাগ মুসলমান ও রাষ্ট্রদ্বীন ইসলাম উনার
দেশের সরকার কি করে বিবাহের বয়স নির্দিষ্ট করে দিতে পারে এবং বাল্য।
বিবাহের বিরোধিতা করতে পারে? এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, বিবাহের বয়স।
নির্দিষ্ট করার ও বাল্য বিবাহের বিরােধিতা করার অর্থ হচ্ছে নতুন শরীয়ত জারী
করা অর্থাৎ নুবুওওয়াত দাবী করা। যা কাট্টা কফুরীর অন্তর্ভুক্ত ও চির জাহান্নামী।
হওয়ার কারণ।                                                                                                                          ১৯


মহান আল্লাহ পাক তিনি স্বয়ং নিজেই বাল্যবিবাহকে বৈধতা দান
করেছেন, যা অনেক পবিত্র আয়াত শরীফ উনাদের দ্বারাই
| অকাট্য ভাবে প্রমাণিত
উসুল উনার নির্ভরযোগ্য কিতাব ‘উসুলুল বাযদুভী নামক কিতাবে উল্লেখ আছে।

إن أول الشرع ثلاتة الكتاب والسنة والإجماع والأصل الرابع القياس.

অর্থ : “নিশ্চয়ই সম্মানিত শরীয়ত উনার দলীল হচ্ছেন প্রথমতঃ তিনটি।
পবিত্র কুরআন শরীফ ২. পবিত্র সুন্নাহ (হাদীছ শরীফ), ৩. পবিত্র ইজমা শরীফ।
চতুর্থ দলীল হচ্ছেন- ৪. পবিত্র কৃিয়াস শরীফ।” সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত শরীয়ত উনার প্রথম দলীল পবিত্র কুরআন শরীফ উনার অনেক পবিত্র
আয়াত শরীফ দ্বারাই বাল্যবিবাহ জায়িয বা বৈধ বলে প্রমাণিত। অর্থাৎ মহান।
আল্লাহ পাক তিনি স্বয়ং নিজেই বাল্যবিবাহকে বৈধতা দান করেছেন। সুবহানাল্লাহ!।
এ প্রসঙ্গে পবিত্র “সূরা নিসা শরীফ উনার ৩নং পবিত্র আয়াত শরীফ উনার
মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন

وإن خفته الا تقسطوا في اليتامى فانكحوا ما طاب لكم من اليساء مثنى
وثلاث ورباع

অর্থ : “আর যদি তোমরা ভয় কর যে, ইয়াতিমের মেয়েদের হক্ব যথাযথভাবে
পূরণ করতে পারবে না, তবে সেসব মেয়েদের মধ্য থেকে যাদের ভালাে লাগে
তাদের বিয়ে করে নাও দুই, তিন, কিংবা চারজন পর্যন্ত।" (পবিত্র সূরা নিসা
শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ নং ৩)
| এখন জানতে হবে যে, ইয়াতিম কাকে বলে, “লিসানুল আরব’ অভিধান
ইয়াতীমের সংজ্ঞায় বর্ণিত আছে

اليتيم الذي يوث ابؤه حتى يبلغ الحلم فإذا بلغ زال عنه إسم اليتيم واليتيم
ما لم تتوج اذا تزوجت زال عنها ام اليتيمة.

অর্থের : “ইয়াতীম এমন সন্তানকে বলা হয়, যার পিতার ইন্তেকাল হয়েছে,
বালেগ হওয়া অবধি সে ইয়াতীম হিসেবে গণ্য হবে, বালেগা হওয়ার পর সে আর
ইয়াতীম হিসেবে গণ্য হবে না অর্থাৎ ইয়াতীম নামটি তার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে
যাবে। আর মেয়ে সন্তান বিয়ের পূর্ব পর্যন্ত ইয়াতীম বলে গণ্য হবে, বিয়ের পর
তাকে আর ইয়াতীম বলা হবে না।” (লিসানুল আরব ১২/৬৪৫)।
| পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইয়াতীম প্রসঙ্গে বর্ণিত আছে

قال حضرت علي بن أبي طالب عليه التلاء حفظت عن رسول الله صلى الله
عليه وسلم لا يتم بعد احتلام                                                                                                                   ২০


অর্থ : “ইমামুল আউওয়াল মিন আহলে বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আমীরুল মুমিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন হযরত।
কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন,
ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম উনার থেকে আমি পবিত্র হাদীছ শরীফ হিফয করে রেখেছি যে,।
বালেগা হওয়ার পর ইয়াতীম থাকে না ।” (আবু দাউদ শরীফ ২৮৭৫, সুনানে
কুবরা বায়হাকী ৬/৫৭ হাদীস ১১৬৪২, মুজামুল কবীর তাবারানী ৩৪২২, সুনানে ।
ছগীর লি বায়হাকী ২০৪৯, শরহুস সুন্নাহ ৯/২০০, ফতহুল বারী ২/৩৪৬,
উমদাতুল কারী ২১/১০৭, কানযুল উম্মাল ৬০৪৬) এ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার।
সনদ উত্তম ও সকল রাবি হিকমাহ।
পবিত্র আয়াত শরীফে বর্ণিত “ইয়াতিম" ও তার ব্যাখ্যায় পবিত্র হাদীস
শরীফ এবং লুগাত থেকে যা বোঝা গেল, তা হচ্ছে-ইয়াতীম মেয়েদের বিবাহ।
করা যাবে। আর মেয়েদের মধ্যে ইয়াতীম হচ্ছে সেই সব মেয়ে যাদের পিতা।
মারা গেছে এবং যারা এখনাে বালিগ হয়নি। অর্থাৎ অপ্রাপ্ত বয়স্কা ।।
| এ প্রসঙ্গে একখানা সহীহ পবিত্র হাদীছ শরীফ আছে যেখানে ইয়াতিমকে
বিবাহ করা বিষয়টা উল্লেখ আছে

عن حضرت أبي هريرة رضي الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه
فهو إذا وان آب لا جواز
وسلم اليتيمة تأمر في تقها فإن صمت
عليها. قال وفي الباب عن خضرث ابن موسی رضى الله تعالى عنه و حضرت
ابن عمر رضي الله تعالى عنه و أم المؤمنين الثالثة الصديقة عليها السلام. قال
آئو علی حدیث حضرت أبي هريرة رضي الله تعالى عنه حديث حسن

অর্থ : “হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি
বলেন, সাইয়্যেদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ইয়াতীম কুমারী
থেকে তার বিবাহের ব্যাপারে সম্মতি গ্রহণ করতে হবে। যদি সে চুপ থাকে তবে
তাই তার সম্মতি বলে গণ্য হবে। আর যদি অস্বীকার করে তবে তার উপর তা
কার্যকারী হবে না। এই বিষয়ে হযরত আবু মূসা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার, হযরত
ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার এবং উম্মুল মু'মিনীন আছ ছালিছাহ হযরত
ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার থেকেও পবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণিত আছে। ইমাম।
হযরত আবু ঈসা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু
আনহু উনার থেকে বর্ণিত পবিত্র হাদীছ শরীফ খানা হাসান।" (সহীহ আবু দাউদ
১৮২৫, তিরমিযী শরীফ ১১০৯)                                                                                                   ২১


সুতরাং উপরোক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত হলো যে , ইয়াতিম
মেয়েকেও বিবাহ করা যাবে, আর ইয়াতীম হচ্ছে তারা যাদের পিতা মন
এবং যারা এখনাে বালিগ হয়নি। অর্থাৎ অপ্রাপ্ত বয়স্কা।। এ প্রসঙ্গে আরাে একটি ছহীহ পবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণিত আছে

فرضيت قاليكا جائز
وقال أحمد وإسحاق إذا بلغت اليتيمة تسع سنين فروج
ولا جاز لها إذا أدرگت والختان حدیث حضرت أم المؤمنين الثالثة التيقة
صلى الله عليه وسلم بنى بها وهي بنت تسع سني
عليها السلام أن ال

অর্থ : “হযরত ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ।
হযরত ইসহাক রহমতুল্লাহি আলাইহি উনারা বলেন, ইয়াতীম কন্যার বয়স নয় (৯)।
বছর হলে যদি তাকে বিয়ে দিয়ে দেয়া হয় এবং সে এতে সম্মতি দান করে তবে।
এই বিয়ে জায়েজ। সাবালিকা হওয়ার পর আর তার ইখতিয়ার (ইচ্ছা-স্বাধীনতা)।
থাকবে না। উনারা হযরত উম্মুল মু'মিনীন আছ ছালিছা ছিদ্দিক্বা আলাইহাস।
সালাম উনার বিষয়কে দলীল হিসাবে পেশ করেন যে, যখন উনার বয়স মুবারক নয়
(৯) বছর হয়, তখন তিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নুরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হুজরা
মুবারকে তাশরীফ গ্রহণ করেন।” (তিরমিযী শরীফ ৪র্থ খন্ড ৪০৬ পৃষ্ঠা)।
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে আরাে ইরশাদ
মুবারক করেন

দ্বয়কে দু তিনি সাইয়িনাহু খও পৃষ্ঠরাে

واللائي يسن من المحيض من نسائكم إني اتم قعده ثلاثه أشهر
واللائي لم يحضن

| অর্থ : “তােমাদের (তালাকপ্রাপ্তা) স্ত্রীদের মধ্যে যারা মাজুর হওয়ার কাল
অতিক্রম করে গেছে, তাদের ইদ্দত সম্পর্কে তোমরা যদি সংশয়ে থাক তাহলে
তাদের ইদ্দতকাল হবে তিন মাস। এবং যারা এখনও বালিগা হওয়ার বয়সে
পৌছেনি (নাবালিকা) তাদের একই হুকুম।” (পবিত্র সূরা ত্বালাক শরীফ : পবিত্র
আয়াত শরীফ নং ৪)।
| উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার তাফসীরে উল্লেখ আছে

الوا الئ صلى الله عليه وسلم فقالوا يا رسول الله آرات التي لم تحض
والتي قد يست من المحيض فاختلفوا فيهما قال الله تعالى

| অর্থ : “হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা উনারা জিজ্ঞেস করলেন,
ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! ঐ সমস্ত মেয়েরা যারা এখনও
বালিগা হওয়ার বয়সে পৌঁছেনি অর্থাৎ অপ্রাপ্ত বয়স্কা এবং ওই সমস্ত মহিলা যারা
বালিগা হওয়ার কাল অতিক্রম করে গেছে, তাদের হুকুম কি?                                                      ২২


তখন মহান আল্লাহ পাক রব্দুল আলামীন তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন

ثلاثة أشهر واللائي لم يحضن

না বালিগা অর্থাৎ হে বিষয় স্বীয়াত শরীফ উনার মধ্যে

অর্থ : ওই সমস্ত স্ত্রী লােক যারা এখনাে বালিগা হওয়ার বয়সে পৌঁছায়নি
তাদের ইদ্দত তিন মাস।” (তাফসীরে দুররুল মানছুর ১৪তম খণ্ড ৫৪৯ পৃষ্ঠা;
তাফসীরে আব্দুর রজ্জাক ৩য় খণ্ড ৩১৮ পৃষ্ঠা) পবিত্র সূরা নিসা শরীফ উনার ৩নং পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইয়াতীম
ছেলে মেয়ের নিকাহ বা বিবাহের বিষয়টিকে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। যার অর্থ হচ্ছে।
নাবালিগ নাবালিগী অর্থাৎ অপ্রাপ্ত বয়স্ক বা অপ্রাপ্ত বয়স্কা ছেলে মেয়ের নিকাহ বা।
বিবাহ বৈধ। আর পবিত্র সূরা তুলাক শরীফ উনার ৪নং পবিত্র আয়াত শরীফ উনার।
মধ্যে যে সকল মেয়েরা বালেগা হওয়ার বয়স পৌছেনি সেসকল মেয়েদের নিকাহ
বা বিয়ের বিষয়টি স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। যার অর্থ হলাে নাবালিগা বা অপ্রাপ্ত বয়স্কা
মেয়ের নিকাহ বা বিবাহ বৈধ।
অতএব, পবিত্র কুরআন শরীফ উনার একাধিক পবিত্র আয়াত শরীফ
উনাদের দ্বারা অকাট্য ভাবে প্রমাণিত হলো যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি স্বয়ং
নিজেই বাল্যবিবাহকে বৈধতা দান করেছেন। কাজেই, বাল্যবিবাহকে অবৈধ বলা
বা বাল্য বিবাহের বিরোধিতা করা মূলত মহান আল্লাহ পাক উনার বিরােধিতা
করা, যা কাট্টা কুফরীর।
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি স্বয়ং নিজেই বাল্যবিবাহ করেছেন যা অসংখ্য পবিত্র
ছহীহ হাদীছ শরীফ উনাদের দ্বারা অকাট্য ভাবে প্রমাণিত।
সম্মানিত শরীয়ত উনার দ্বিতীয় দলীল পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার অনেক
ছহীহ বা বিশুদ্ধ বর্ণনা দ্বারাও বাল্যবিবাহ শুধু জায়িয বা বৈধই প্রমাণিত হয় না
বরং খাছ সুন্নত বলে প্রমাণিত হয়। সুবহানাল্লাহ! কেননা নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বয়ং নিজেই পবিত্র
বাল্যবিবাহ মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! যা ছিহাহ সিত্তাহসহ প্রায় সকল
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার কিতাবসমূহে উল্লেখ রয়েছে। যেমন

عن حضرت أم المؤمنين الثالثة الصديقة عليها السلام أن النبي صلى الله
عليه وسلم زوجها وهي بنت ست سنين وأدخلت عليه وهي بنت تشع
ومن عنده يقا.

অর্থ : “হযরত উম্মুল মু'মিনীন আছ ছালিছা সাইয়্যিদাতুনা সিদ্দিকা
আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযুর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে (হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস
সালাম) উনার আকৃদ বা নিসবাতুল আযীম মুবারক সম্পন্ন হয় যখন উনার বয়স।               ২৩

মুবারক ছিল ৬ বছর। আর তিনি ৯ বছর বয়স মুবারকে নূরে মুজাস
হাবীবুল্লাহ, হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র হুজরা শ'।
তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেন এবং ৯ বছর উনার সাথে অবস্থান মুবারক করেন ৮।
সুবহানাল্লাহ! (সহীহুল বুখারী কিতাবু বাদইল ওয়াহই বাবু ইনকাহির কে।
ওয়ালাহুল সিগার)

صلى الله
عن حضرت أم المؤمنين الثالثة الصديقة عليها السلام أن الله
عليه وسلم تزوجها وهي بنت ست سنين وبنى بها وهي بنت تسع سنين.
قال هشام وأثبت أنها كانت عنده تسع سنين .

অর্থ : “হযরত উম্মুল মু'মিনীন আছ ছালিছা সাইয়্যিদাতুনা সিদ্দিকা।
আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ,
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে (হযরত ছিদ্দীক্বা।
আলাইহাস সালাম) উনার আকৃন্দ বা নিসবাতুল আযীম মুবারক সম্পন্ন হয় যখন
উনার বয়স মুবারক ছিল ৬ বছর। আর তিনি ৯ বছর বয়স মুবারকে নূরে।
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র
হুজরা শরীফে তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেন এবং ৯ বছর উনার সাথে অবস্থান
মুবারক করেন।” সুবহানাল্লাহ! হযরত হিশাম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন,
আমি বর্ণনা করেছি যে, নিশ্চয়ই হযরত উম্মুল মু'মিনীন আছ ছালিছাত্ ছিদ্দীক্বা
আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম উনার কাছে ৯ বছর অবস্থান মুবারক করেন।” (ছহীহুল বুখারী কিতাবু
বাদইল ওয়াহুই বাবু তাজউইজিল আবি ইবনাতাহু মিনাল ইমাম)

ژوة رضى الله تعالى عنه تزوج النبي صلى الله عليه وسلم
حضرت أم المؤمنين الثانية التتريقة عليها السلام وهى ابنه ست ولی بها
عنده تها.
وهي إنه يشع ومكث

অর্থ : “হযরত উরওয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে।
(উম্মুল মু'মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত সিদ্দিকা আলাইহাস সালাম) উনার নিসবাতুল।
আযীম মুবারক সম্পন্ন হয় যখন উনার বয়স মুবারক ছিল ৬ বছর। আর তিনি ৯
বছর বয়স মুবারকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার পবিত্র হুজরা শরীফে তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেন এবং ৯ বছর।
উনার সাথে অবস্থান মুবারক করেন।" সুবহানাল্লাহ! (ছহীহুল বুখারী ৭ম খণ্ড ২৭
পৃষ্ঠা কিতাবু বাদইল ওয়াহ্ই বাবু মাম বানা বিইমরায়াতিন ওয়া হিয়া বিনতু তিসয়ি সিনীনা )।           ২৪
                                                                                                                                                        
     ( চলবে ........)




0 Comments: