নসিহতে উম্মিল উমাম আলাইহাস ছলাতু ওয়াস সালাম - পর্ব ৫
Related imageসাইয়্যিদাতুন নিসায়িল আলামীন, বাহরুল আলিমা ,নূরে মদিনা 
' গুলে মুবিনা, আফদ্বালুন নিসা, ফক্বীহাতুন নিসা, রাহনুমায়ে দ্বীন,ছিদ্দীকায়ে কুবরা , 
 আন নি'মাতুল কুবরা আলাল আলাম, মাশুকায়ে ইলাহী ,
কায়মাক্বামে হযরত উম্মাহাতুল মু'মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম, সাইয়্যিদাতুন নিসা, মুতহহারাহ্, মুতহিরাহ,






হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম
উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মহামূল্যবান নসিহত
 মুবারক থেকে সংগৃহীত
পর্ব-৫
“নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম উনার অনুসরণ করার জন্যই মূলত মহান আল্লাহ 

 পাক তিনি উনাকে আমাদের মাঝে পাঠিয়েছেন”

সাইয়্যিদাতুন নিসা, মুতহহারাহ, মুতহহিরাহ হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম
 তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি সূরা নিসা শরীফ উনার ৬৪ নং
আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন,

وَمَا أَرْسَلْنَا مِن رَّسُولٍ إِلاَّ لِيُطَاعَ بِإِذْنِ اللّهِ

 অর্থ মুবারক: আমি রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পাঠিয়েছি মহান আল্লাহ 
 পাক উনার আদেশ-নিষেধ মুবারক অনুযায়ী আনুগত্য করার জন্য।
 এই মহাসম্মানিত আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম 
আলাইহাস সালাম উনার নসিহত মুবারক থেকে বুঝতে পেরেছি যে, মূলত নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পাঠানাে হয়েছে উনার
অনুসরণ-অনুকরণ করার জন্য। আর হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
تركت فيكم أمرين لن تضلوا ما ت تم بما كتاب الله وسنة رسوله
অর্থ মুবারক: আমি তােমাদের নিকট দু'টি জিনিস বা দু’টি নিয়ামত রেখে যাচ্ছি। সেই 
নিয়ামত মুবারক যতক্ষণ পর্যন্ত আঁকড়িয়ে ধরবে তোমরা কস্মিনকালেও গোমরাহ হবেনা।
১. মহান আল্লাহ পাক উনার কিতাব। ২. নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু 
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুন্নত মুবারক । (মিশকাত শরীফ)
 সুন্নত অর্থ হল: নিয়মনীতি, তর্জ-ত্বরিকা, পন্থা, চলার পথ।
, আর নারে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
 নিয়মনীতি,তর্জ-তরীকাই হল সুন্নতে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। অনেকে মনে
 করে যে, সুন্নত হল নফল। আর ফরয ত্যে ফরযই । আসলে এই কথা শুদ্ধ নয়। ইমাম
মুজতাহিদ উনারা ফরয, ওয়াজিব, সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ, সুন্নতে জায়েদা এগুলো পার্থক্য 
করেছেন আমলের গুরুত্ব বুঝানোর জন্য। অথচ আমরা ফরজ,নফল, সুন্নত যায়িদাহ,
সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ হিসেবে যে আমল করি সবই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক 
  ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুন্নত মুবারক তথা আদর্শ মুবারক ।
 মহান আল্লাহ পাক তিনি সূরা আহযাব শরীফ উনার ২১ নং আয়াত শরীফ উনার মধ্যে
ইরশাদ মুবারক করেন,
لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ
অর্থ মুবারক: “অবশ্যই নরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার মাঝে রয়েছে তোমাদের জন্য উত্তম আদর্শ মুবারক।"
 নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুন্নত 
 মুবারক উনার পরিপূর্ণ ইত্তেবা করলে এবং উনার আদর্শ মুবারক অনুযায়ী আমল করতে 
পারলে উনার সুপারিশ লাভ করা যাবে এবং জান্নাতে উনার সাথে অবস্থান করা যাবে।
এ প্রসঙ্গে নুরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি।
ইরশাদ মুবারক করেন,
" مَنْ أَحْيَا سُنَّتِي فَقَدْ أَحَبَّنِي ، وَمَنْ أَحَبَّنِي كَانَ مَعِيَ فِي الْجَنَّةِ 
অর্থ মুবারক: যে ব্যক্তি আমার সুন্নত মুবারক উনাকে মুহাব্বত করল সে মূলত আমাকে
মুহাব্বত করল । আর যে আমাকে মুহাব্বত করবে সে আমার সাথে জান্নাতে অবস্থান।
করবে। (তিরমিযী, মিশকাত শরীফ)
আর যারা সুন্নত মুবারক উনার অনুসরণ করবে না তারা সেই নিয়ামত মুবারক লাভ
 করতে পারবে না। অর্থাৎ তারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
 ওয়া সাল্লাম উনার সুপারিশ মুবারক পাবে না, উনার সাথে জান্নাতে অবস্থান করতে পারবে 
 না এমনকি তারা জান্নাত লাভ করতে পারবে না। 
 কিয়ামতের দিন অর্থাৎ হাশরের ময়দানে হিসাব-নিকাশ হওয়ার পর যে জান্নাতে
যাওয়ার সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। বলা হয়, জান্নাতে প্রবেশ করা পর্যন্ত জান্নাতী ব্যক্তি
পিপাসিত হবে না। তবে তার আগে যে কঠিন একটা অবস্থা হবে, সে সময় যে হাউযে
কাউসারের পানি মোবারক পান করবে সে ইতমিনান থাকতে পারবে।
 সেই হাউযে কাউসারের কাছে যখন মানুষ পানি পান করার জন্য যাবে তখন যারা নুরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুন্নত মুবারক
উনার অনুসরণ করবে না, সুন্নত মুবারক উনাকে গুরুত্ব দিবে না, তা'যীম-তাকরীম করবে না 
, হিফাযত করবেন তাদেরকে হাউযে কাউসারের কাছ থেকে তাড়িয়ে দেয়া হবে এবং
বলা হবে, তােমরা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম 
. উনার সুন্নত মুবারক উনার অনুসরণ করনি। তাই তােমাদেরকে পানি দেয়া হবে না, 
তোমরা চলে যাও।
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার সূরা তওবা শরীফ উনার
 ১২০নং আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন,
مَا كَانَ لِأَهْلِ الْمَدِينَةِ وَمَنْ حَوْلَهُم مِّنَ الأَعْرَابِ أَن يَتَخَلَّفُواْ عَن رَّسُولِ اللّهِ وَلاَ يَرْغَبُواْ بِأَنفُسِهِمْ عَن نَّفْسِهِ 
অর্থ মুবারক: “আরব, আযম কারাে জন্য জায়েয হবে না শাহিদুন নবী, নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে পিছিয়ে থাকা এবং উনার
থেকে নিজেকে বেশি প্রাধান্য দেয়া।"
মূলত: হায়াত থেকে মউত পর্যন্ত দায়িম এভাবেই শহিদুন নবী, নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হাক্কী ইত্তেবা তথা সুন্নত
মুবারক উনার সুক্ষাতিসুক্ষ, পুঙ্খানুপুঙ্খ অনুসরণ অনুকরণ করতে হবে। কোন অবস্থাতেই
সুন্নত মুবারক উনার ইত্তেবা থেকে বিরত থাকা যাবে না। 
মহান আল্লাহ পাক উনার যমীনে এমন কোন স্থান নেই যেখানে সুন্নত মুবারক উনার 
পরিপূর্ণ ইত্তেবা ও শিক্ষা দেয়া হয়। একমাত্র আমাদের প্রাণপ্রিয় শায়েখ সাইয়্যিদুনা
ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম এবং উনারই যাওজাতুম মুতাহহারাহ সাইয়্যিদাতুনা
হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনারাই পরিপূর্ণ সুন্নত মুবারক উনার শিক্ষা দিয়ে
থাকেন।
তাই মুসলিম উম্মাহ সকলের জন্য ফরজ-ওয়াজিব হচ্ছে উনাদের নুরুদ দারাজাত
 মুবারক (কদম মুবারক) এসে সেই নিয়ামত মুবারক হাসিল করে দুনিয়া ও আখিরাতে 
 কামিয়াবী হাসিল করা।