অঙ্গুলী চুম্বনের ফতওয়া
অঙ্গুলী চুম্বনের ফতওয়া

গবেষণা পরিষদ
মুহম্মদীয়া জামিয়া শরীফ

মহান আল্লাহ পাক উনার অসীম শুকরিয়া তিনি আমাদেরকে দ্বিতীয় ফতওয়া অঙ্গুলী চুম্বনের উপর প্রকাশ করার তওফীক ইনায়েত করেছেন। উক্ত ফতওয়া বিভিন্ন নকলী দলীল-আদিল্লার ভিত্তিতে দেয়া হয়েছে। কিছু কিছু লোক কিল্লতে ইলম কিল্লতে ফাহম (কম জ্ঞান, কম বুঝ)-এর কারণে সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছতে না পেরে সমাজে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করছে। অথচ মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
عن ابى هريرة رضى الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: من اقتى بغير علم كان اثمه على من افتاء. (رواة ابوداود(
এ ছাড়াও মুকাদ্দিমায়ে ইবনুছ ছালাহ, মুকাদ্দিমায়ে ইবনুছ ছালাহ, মুকাদ্দিমায়ে ইমাম আবু আমর, মুকাদ্দিমায়ে জুরজানিয়া, শরহে ফাইতুল মুছান্নাফ, তাকরিবুন নাওয়াবী, হেসনে হাসানী, ফতহুল মুবীন, হাদীছ শরীফ-এ আরবাঈন লি ইবনে হাযার আসকালানী, হাদীছ শরীফ-এ আরবাঈন লি ইমাম নবাবী, হাদীছ শরীফ-এ আরবাঈন লি ইমাম গাজজালী, আল বায়িসুল হাছীছ ফি ইখতেছারে উলুমিল হাদীছ, কুওওয়াতুল কুলুব (ইবনে হাযার মক্কী), মাকাসিদে হাসনাহ, মাকালাতে কাওসারী আফুবাতুল ফায়েলাহ (আবদুল হাই লাস্কৌবী রহমতুল্লাহি, এলাউস সুনান, দুররুল মুখতার, শামী, মুকাদ্দিমায়ে ফতহুল মুলহীম, যাফরুল আমানী, কাওলুল বদি, আল আছকার শায়খুল ইসলাম আবু যাকারিয়া আল হারাবি রহমতুল্লাহি আলাইহি শরহে মুনীয়া আল্লামা হালবী, তালীকাতে বরকতী মুফতী সাইয়্যিদ আমীমুল ইহসান বরকতী, আওয়ারিফুল মাআরিফ শায়েখ শিহাবুদ্দীন সোহরাওয়াদী রহমতুল্লাহি আলাইহি ইত্যাদি কিতাবে এবং হাফিজ শামসুদ্দীন যাহাবী, আল্লামা বদরুদ্দীন আইনী, হাফেজ সাখাবী, ফাফেজ যায়নাঈ, হাফেজ জয়নুদ্দীন ইরাকী, শায়েখ যাকারিয়া, ইবনে সাইয়্যিদুন্নাস ও আল্লামা আনওয়ার শাহ কাশ্মীরী রহমতুল্লাহি আলাইহি এ সমস্ত ফকীহগণ উনাদের স্ব-স্ব কিতাবে আমলের ক্ষেত্রে জঈফ হাদীছকে গ্রহণযোগ্য বলে উল্লেখ করেছেন। ফতওয়ার কলেবর বৃদ্ধির আশঙ্কায় উপরোক্ত কিতাবসমূহের ইবারত উল্লেখ করা সম্ভব হল না।
তবে এ ব্যাপারে উল্লেখযোগ্য কথা হল কোন জঈফ হাদীছ যদি বিভিন্ন রেওয়ায়েতে বর্ণনা করা হয় তাহলে তা হাসান লি গায়রিহির দরজায় পৌঁছে যায় এবং এটা তখন আহকাম, আনয়িদের দলীল হিসেবে গ্রহণযোগ্য হবে।
আল্লামা সুয়ুতী রহমতুল্লাহি উল্লেখ করেন,
ويعمل بالضعيف ايضافى الاحكام اذا كان فيه احتيا ط (تدريب الراوى ص ২৯৯)
অর্থ : জঈফ হাদীস শরীফ আহকামের জন্য গ্রহণযোগ্য যখন ওতে সাবধানতা অবলম্বন করা হবে অর্থাৎ যখন হাসান লি গায়রিহি হবে। (তাদরিবুর রাবী, ২৯৯ পৃষ্ঠা)
আল্লামা জাফর আহমদ ওসমানী রহমতুল্লাহি আলাইহ ও উনার এলাউস সুনান কিতাবের মুকাদ্দিমার ৫৮ পৃষ্ঠায় হযরত ইমাম সুয়ুতী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ইবারত উল্লেখ করেছেন।
উপরোক্ত বর্ণনার দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয় যে জঈফ হাদীছ ফজিলত হাসিলের জন্য আমল করা শুধু জায়েযই নয় বরং হাসান লি গাইরিহি হলে আহকামের ব্যাপারেও গ্রহণযোগ্য হয়। জঈফ হাদীস দ্বারা সাব্যস্ত মুস্তাহাব সব সময় আমল করলেও তা ফরয, ওয়াজিব বা সুন্নতে মুয়াক্কাদায় পরিণত হয় না। বরং মুস্তাহাবই থেকে যায়।
যেমন আল্লামা ইব্রাহিম হালবী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার গুনিয়াতুল মুস্তামালী ফি শরহে মুনিয়াতুল মুছাল্লি কিতাবে উল্লেখ করেছেন-
يستحب ان يمسح يدئه يبنديل بعد الغسل لماروت عاشه ضى الله تعالى عنها قالت كان للهنبى صلى اله تعالى عليه وسلم خر قة يثنق بها بعد الوضؤ رواه التر مدى وهو ضعيف ولكن يجوذيجز العمل بالضعيف فى الفضال.
অর্থ : গোসলের পরে রূমাল (কাপড়) দিয়ে শরীর মোছা মুস্তাহাব। হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত আছে- নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এক টুকরা কাপড় (রূমাল) ছিল যা দিয়ে তিনি অযুর পরে শরীর মুবারক মুছতেন। (তিরমিযি শরীফ)
এটা জঈফ হাদীছ শরীফ। ফজিলত হাছিল করার জন্য জইফ হাদীছ শরীফ আমল করা জায়িয আছে।
হযরত ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মওজুআতে কবীরে ১০৮ পৃষ্ঠায় বলেন,
الضعيف يعمل به فى فضائل الاعمال اتفاقاول ذا قال اءمتنا ان مسح الر قبة مستحب او سئة.
অর্থ : সকলে একমত যে জঈফ হাদীছ শরীফ ফযীলত হাছিল করার জন্য আমল করা জায়িয আছে। এজন্য আমাদের আইম্মায়ি কিরামগণ বলেছেন, ওযুর মধ্যে গর্দান মসেহ করা মুস্তাহাব বা সুন্নত।
এ হাদীছ শরীফ ও জঈফ। এটাও ফযীলত হাছিলের জন্য আমল করা যায়।
মূলত মহান আল্লাহ পাক উনার নৈকট্য বা সন্তুষ্টি হাছিল করতে হলে মুস্তাহাব বা নফল বেশি বেশি আমল করতে হবে। পবিত্র হাদীছে কুদসী শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন, বান্দারা নফল (মুস্তাহাব) ইবাদত করতে করতে আমার এত নৈকট্য লাভ করে যে আমি তাকে মুহব্বত করি। আমি যখন তাকে মুহব্বত করি তখন তার কান হয়ে যাই, সে আমার কানে শুনে। আমি তার চোখ হয়ে যাই সে আমার চোখে দেখে। আমি তার জবান হয়ে যাই, সে আমার জবানে কথা বলে। আমি তার হাত হয়ে যাই, সে আমার হাতে ধরে। আমি তার পা হয়ে যাই সে আমার পায়ে চলে। সে আমার কাছে যা চায়, তাই তাকে দেই। (বুখারী শরীফ, মিশকাত শরীফ)
নিয়মিত আমল যা মুস্তাহাবকে সুন্নতে মুয়াক্কাদা, ওয়াজিব বা ফরজে পরিণত করে না তার উদাহরণ হলো-
العلماء ائه فعله فنهى عنه فقال لم يثبت هذا الله فلحقه البرص من ساعته قراى النبى صلى الله عليه وسلم فى منا مه فشكى اليه فقال له الم تسمع نهى عنه فقال لم يصح عندى فقال صلى الله عليه وسلم يكفيك انه سمع ثم مسح يدنه بيده الضر يفة فذ هب ما يه فتاب عن مخالفة ما سمع.
অর্থ : নখ কাটা বা ছোট করা সুন্নত। তবে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বুধবার নখকাটা নিষেধ করা হয়েছে কেননা কাটিলে শ্বেত কুষ্ঠ হয়। বর্ণিত আছে কোন একজন আলিম (ইমাম ইবনুল হজ মক্কী মালেকী রহমতুল্লাহি আলাইহি বুধবার দিন নখ কাটলে তাকে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার বরাত দিয়ে নিষেধ করা হয়। তিনি বলেন, ইহা সহীহ হাদীছ শরীফ বলে প্রমাণিত নয়। অতঃপর উনার শ্বেত কুষ্ঠ হয়ে গেল। তিনি স্বপ্নে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে দেখে উনার অবস্থা সম্পর্কে অভিযোগ করলেন। তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলেন তুমি কি এ সম্পর্কে আমার নিষেধ বাণী শুন নাই? তিনি বলেন, এই হাদীছ শরীফ আমার নিকট সহীহ হিসাবে পৌঁছেনি। তারপর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তোমার জন্য এতটুকুই যথেষ্ঠ ছিল যে তুমি শুনিয়াছ এই হাদীছ আমার নাম মুবারকের সাথে সম্পর্কযুক্ত। আর হাত মুবারক দ্বারা তার শরীর মসেহ করে দিলেন। তৎক্ষনাৎ সেই রোগ নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল। তৎপর তিনি তৌবা করলেন যে জীবনে আর কখনো পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার বিরোধিতা করব না।
উপরোক্ত দুখানা পবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারা এ কথাই বুঝা গেল যে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার প্রতি যথাযথ গুরুত্ব আরোপ না করলে ভয়ংকর পরিণতির সম্মুক্ষীন হতে হবে। এখানে আরো উল্লেখ যে শরহে আকায়েদে নসফী ও অন্যান্য আকায়েদের কিতাবের বর্ণনা মাতাবেক পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার প্রতি তুচ্ছ-তাচ্ছিল্ল বা অবজ্ঞা প্রদর্শন করা কুফরী।
ইমামগণ প্রত্যেকেই ব্যক্তিগত রায়ের উপর জঈফ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাকে প্রাধান্য দিয়েছেন। ইমাম আবু হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন-
الله لضعيفص سرو لاالخبرا عليه وسلم اولى من القياس: الله صلى ولا يحل القياس مع وجوده.
অর্থ : নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে বর্ণিত, পবিত্র হাদীছ শরীফ যদিও রাবীদের কারণে জইফ হয় উহা কিয়াস হতে উত্তম। যে ক্ষেত্রে জইফ হাদীছ শরীফ পাওয়া যাবে সে ক্ষেত্রে কোন অবস্থাতেই কিয়াস হালাল নয়। (মুকাদ্দিমায়ে এলাউস সুনান, ৫৯ পৃষ্ঠা)
আব্দুল ফাতাহ বলেছেন,
بل اختلف ساد تنا الحنفيه- فيما اذا تعارض قول الصحابى والقياس فا يهما يقدم؟ قال فخر الاسلام للبزدوى: اقول الصحا بة مقد مة على القياس.
অর্থ : হানাফীগণের মধ্যে এ ব্যাপারে ইখতেলাফ আছে যে, যদি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম কাওল ও কিয়াসের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয় তবে কোনটা প্রাধান্য পাবে? এর জবাবে ফখরুল ইসলাম বায়দুবী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের কাওলই প্রাধান্য পাবে। (মুকাদ্দিমায়ে এলাউস সুনান, ৫৯ পৃষ্ঠা)
উল্লেখ্য যে, কিয়াসকে জইফ হাদীছ শরীফ উনার উপর প্রাধান্য দেওয়াতো দূরের কথা ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ উনাদের কথার উপরও কিয়াসকে প্রাধান্য দেয়া যাবে না।
জামিউর রুমুজ কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, হযরত ইমাম আযম আবু হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি বিশ বছর যাবৎ অজুতে পায়ের অঙ্গুলীর উপর দিয়ে খিলাল করে নামায পড়েছিলেন; পরে যখন জানতে পারলেন পায়ের আঙ্গুলের নীচে দিয়ে খিলাল করা মুস্তাহাব তখন তিনি বিগত ২০ বছরের সম্পূর্ণ নামায ক্বাযা পড়েছিলেন। ফতওয়া আলমগীরি ও ফতহুল ক্বাদির কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে নামাজের মধ্যে যদি মকরূহ তাহরীমী হয় তবে নামায দোহরান ওয়াজিব। আর মাকরুহ তানজীহি হলে দোহরান মুস্তাহাব। নামাযের মধ্যে কোন মুস্তাহাব তরফ হলে নামায দোহরানের আদেশ শরীয়তে নাই। তা সত্ত্বেও হযরত ইমামে আযম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি মুস্তাহাবের গুরুত্ব বোঝানোর জন্য তথা মুস্তাহাবের প্রতি সবাইকে উৎসাহিত করার জন্য পায়ের আঙ্গুলের নীচ দিয়ে খিলাল করে অজু সম্পন্ন করে ২০ বছরের নামাযের ক্বাজা আদায় করেছেন।
উপরোক্ত হযরত ইমামে আযম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ঘটনায় এটাই ছাবেত হয় যে ক্বিয়াসের উপর পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাকে প্রাধান্য দিয়েছেন এবং পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাকে বিনা বাক্যে মেনে নিয়েছেন আর মুস্তাহাবকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে কষ্টসাধ্য হওয়া সত্ত্বেও বিশ বছরের নামায দোহরায়ে পড়েছেন।
উল্লেখ্য যে, এমন কোন কিতাব নাই যে কিতাবের সমস্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার বিশুদ্ধতার ব্যাপারে সমস্ত মুহাদ্দিসিনগণ একমত হয়েছেন। কোন একটি হাদীছ শরীফ উনাকে কোন একজন সহীহ বলেছেন, আরেকজন জইফ বা হাসান বলেছেন ইত্যাদি। যেমন, ইমাম বুখারী ও মুসলিম রহমতুল্লাহি আলাইহি এমন বহু হাদীছ শরীফ সহীহ নয় বলে ছেড়ে দিয়েছেন অথচ ইমাম আবু দাউদ, ইমাম তিরমিজি, ইমাম নাসাঈ, ইমাম ইবনে মাজাহ, ইমাম দারে কুতনী রহমতুল্লাহি আলাইহি প্রমুখ ইমামগণ উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ শরীফ সহীহ বলে গ্রহণ করেছেন। (সায়েকাতুল মুসলিমীন)
এমনকি অনেক পবিত্র হাদীছ শরীফ ইমাম বুখারী ও মুসলিম রহমতুল্লাহি আলাইহি গ্রহণ করেছেন যা সিহাহ সিত্তার অন্যান্য ইমামগণ গ্রহণ করেন নাই।
মোল্লা আলী ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি লিখেছেন, ইমাম ছাখাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কিতাবের হাশিয়ায় উল্লেখ করেছেন সহীহ বুখারী ৮০ জন ও সহীহ মুসলিমের ১৬০ জন রাবীর বর্ণনায় ... হাদীছ শরীফ জঈফ বলে প্রমাণিত হয়েছে। (নুজহাতুন নাজার)
ইমাম নববী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, ইমাম দারে কুতনী, আবু আলী ও আবূ দাউদ দামেশকী বুখারী ও মুসলিমের ২০০ হাদীছ শরীফ জঈফ বলে উল্লেখ করেছেন। (মুকাদ্দিমায় শরহে মুনাম)
ইমাম কুস্তলনী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, সহীহ বুখারীতে এরূপ হাদীছ শরীফ আছে যা কারো মতে সহীহ আর কারো মতে জঈফ। (শরহে বুখারী)
কাশফূজ্জুনুন, মুকাদ্দিমায়ে ফতহুল বারী ইত্যাদি কিতাবে বুখারী শরীফ উনার কিছু কিছু হাদীছ শরীফ উনাকে জঈফ বলে প্রমাণ করা হয়েছে।
সহীহ বুখারী ও মুসলিম শরীফ-এ ২০ জন মরজিয়া, ২৩ জন কদরীয়া, ২৮ জন শিয়া, ৪ জন রাফেজী, ৯ জন খারেজী, ৭ জন নাসেবী ও ১ জন জহমিয়া কর্তৃক হাদীছ বর্ণিত হয়ছে। (সায়েকাতুল মুসলিমিন ১৯০ পৃষ্ঠা)
এর দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয়েছে যে, সমস্ত ছহীহ হাদীছ শরীফ উনার কিতাবেই (কারো কারো মতে) কিছু সংখ্যক জইফ পবিত্র হাদীছ শরীফ রয়েছে। সুতরাং এটাও প্রমাণিত হল যে, জঈফ হাদীছ শরীফ মাত্রই পরিত্যজ্য বা বাতিল নয়।
এখানে বলা আবশ্যক যে, সিহাহ সিত্তা ছাড়াও ৫০ এর অধিক সহীহ হাদীছ শরীফ-এর কিতাব রয়ে গেছে যা ইমাম নববী, ইবনে সালাহ, শাহ আব্দুল আজিজ রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ লিখেছেন, সহীহ বুখারী ও মুসলিমের মত আরো কতগুলি হাদীছ-এর কিতাব আছে, যেমন- সহীহ ইবনে ...সহীহ ইবনে হাব্বান, সহীহ ইবনে ওযায়না, .... ইবনুস সাকান, সহীহ মুন্তকা, সহীহ ... সারেজিয়াহ, সহীহ জুরকানী, সহীহ ইসফেহানী .... ইসলমাইলি, মোস্তাদরেক ইবনে হাকেমসজিদে ইমাম আজম, মুয়াত্তা ইমাম মালেক, মুয়াত্তা ইমাম মুহম্মদ, কিতাবুল আসার, কিতাবুল খিরাজ, কিতাবুল হিজাজ, কিতাবুল আমালী, মসনদে শাফী, মসনদে আবূ ইয়ালী, মসনদে আব্দুর রাজ্জাক, মসনদে আবু বকর ইবনে আবু শায়বা, মসনদে আবদ ইবনে হুমায়েদ, মসনদে আবূ দাউদ তায়লাসী, সুনামে দারে কুতনী, সুনানে দায়েমী, সুনামে বায়হাকী, কারেফাতুস সুনানে বায়হাকী, মাআনিসুল আসার, তাহাবী, মুশফিকিউল আসার-তাহাবী, মুয়জামে কবীর-তিবরানী, মুয়জামে আওসাতে-তিবরানী, ময়জামে সগীরে তিবরানী, কিতাবুল এ ইতেকাদ, কিতাবুদ দোয়া, মসনদে হারেস ইবনে ওসামা, মসনদে বাজ্জাজ, সুনানে আবী মুসলিম, সুনানে সাঈদ বিন মনসুর, শরহুস সুন্নাহ, শিফা, হুলইয়া ও তাহজিবুল আসার, আল মুখতারা ইত্যাদি পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার সহীহ কিতাবসমূহ।
জঈফ হাদীছ শরীফ ... আগমদ . জায়িজ, তা নমুনা স্বরূপ আরো . হাদীছ শরীফ উল্লেখ করা হল-
وعن ابى الدرداء قال رسول الله صلى الله عليه وسلم فقيل يا رسول الله ما حد العلم الذى اذا بلغه الرجل كان فقيها؟ فقتل رسول الله صلى الله عليه وسلم: من خفظ على امتى ا اربعين حديثافى امر دينها بعثه الله فقيها و كنت له يوم القيمة شافعا وشهيدا-
رواه البيقى فى شعب الا يمان قال قال الا لماء احمد هذا متن مشهور فيما بين الناس وليس اسناد صحيح.
অর্থ : আবূ দারদা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে জিজ্ঞাসা করা হল বলা হল- হে মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ইলমের কোন সীমায় দেখা হলে ....... ব্যক্তি ফকীহ হতে পারে? উত্তরে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “যে ব্যক্তি আমার উম্মতের জন্য তাদের দ্বীনের ব্যাপারে ৪০টি হাদীছ শরীফ ইয়াদ করেছে, (এবং অপরকে তা পৌঁছিয়েছে) কিয়ামতের দিন আল্লাহ পাক উনাকে ফকীহরূপে উঠাবেন। এ ছাড়া কিয়ামতের দিন আমি তার জন্য সুপারিশকারী ও সাক্ষী হব। বায়হাকীকী .. শোআবুল ঈমানে ইহা বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেন যে, ইমাম আহমদ রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন- পবিত্র হাদীছ শরীফ টি লোকের মধ্যে মশহুর তবে এর কোন ছহীহ সনদ নাই।
এ পবিত্র হাদীছ শরীফ খানা জঈফ হওয়া সত্ত্বেও ইমাম নববী, রহমতুল্লাহি আলাইহি, ইমাম গাজ্জালী রহমতুল্লাহি আলাইহি, ইমাম ইবনে হাযার আসকালানী রহমতুল্লাহি আলাইহিসহ অনেক ইমামগণও এ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার ফযীলত হাছিলের লক্ষ্যে পবিত্র হাদীছ শরীফ আরবাইন অযুতে গর্দান মসেহ করা ও অযু-গোসলের পর কাপড় (রূমাল) দিয়ে শরীর মোছা; এ দুটি কাজ নিয়মিতভাবে করে না এমন লোক অত্যন্ত কম। অর্থাৎ প্রায় সকল মুসলমানই এ কাজ দুটি করে থাকে। তা সত্বেও এ মুস্তাহব আজ পর্যন্ত ফরয, ওয়াজিব বা সুন্নতে মুয়াক্কাদার পরিণত হয়নি। আর কোন দিন হবেও না। বরং সবাই এ দুটিকে মুস্তাহাব জ্ঞান করেই নিয়মিত আমল করে আসছে। সুতরাং মুস্তাহাব আমল করতে হবে। কিন্তু যবরদস্তি করা যাবে না। তবে উৎসাহ পয়দা করার জন্য বুঝানো যেতে পারে। আমল করার নিয়ত থাকবে মহান আল্লাহ পাক উনার নৈকট্য লাভ।
উপরোক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার দ্বারা এটাই ছাবেত হল যে মুস্তাহাব (নফল) আমল দ্বারা মহান আল্লাহ পাক উনার পরিপূর্ণ নৈকট্য ও সন্তুষ্টি অর্জিত হয়। কারণ ফরয, ওয়াজিব, সুন্নতে মুয়াক্কাদা অবশ্যই পালন করতে হবে; এবং মোটামোটিভাবে সবাই করেও। আর তাই এ দিক দিয়ে সকলেই প্রায় সমান মর্যাদার অধিকারী, যদিও ইখলাসের কারণে পার্থক্য হয়ে থাকে। মূলত মর্যাদা বা আল্লাহ পাক উনার নৈকট্যের দিক দিয়ে প্রার্থক্য সূচিত হয় মুস্তাহাব (নফল) আমল দ্বারা। যেমন, ফরয নামায পাগড়ী ছাড়া পড়লে এক রাকাতে এক রাকাতের সওয়াব পাওয়া যাবে। আর যদি পাগড়ীসহ নামায পড়ে তবে এক রাকাতে সত্তর রাকাতের সওয়াব পাওয়া যাবে। যদিও পাগড়ী পড়া ফরয, ওয়াজিব, সুন্ন তে মুয়াক্কাদা কোনটাই নয়। তথাপিও সুনএত জায়েদা বা মুস্তাহাব ফরযকে সত্তর গুণ মর্যাদা বৃদ্ধি করে দিল। এভাবে মুস্তাহাব প্রত্যেক আমলের ক্ষেত্রেই মূল আমলকে মর্যাদাবান করে দেয়। এমনকি যে ব্যক্তি নিজে বেশি মুস্তাহাব আমল করেন তিনিও মর্যাদাবান হয়ে যান। যেমন ছাহাবায়ে কিরামগণ ইমাগণ ও আওয়ালিয়ায়ে কিরামগণ আমল করে মর্যাদাবান হয়েছেন।
জঈফ হাদীছ শরীফ উনাকে গুরুত্ব, সম্মান বা মর্যাদা না দিলে গজবে বা মসিবতে পড়তে হবে। এ প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফ থেকে দুটি ঘটনা বর্ণনা করা হল। এতে চিন্তা ফিকিরের যথেষ্ট উপাদন আছে।
বুধবার ও শনিবার দিনে শিঙ্গা লাগানো জঈফ হাদীছ শরীফ উনার দ্বারা নিষেধ আছে,
قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من يوم الاربعاء وسوم السبت فا صابه برص- ا احتجم.
অর্থ : নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি বুধবার ও শনিবারে শিঙ্গা লাগাবে তার শ্বেত কুষ্ঠ রোগ হবে। এ প্রসঙ্গে ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ুতী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার লালী ও তাআক্কুবাত কিতাবে মসনদুল ফিরদাউসে দায়লামী শরীফ হতে নকল করেছেন,
سمعب ابى يقول سمعب اب عمرو محمد بن جعفر بن مطر النيشافورى قال قلت يوما ان هذا الحديث ليس بصحيح فا فتصدث يوم الا ربعا فاصابنى البرص فرأيت رسول الله صلى الله تعالى عليه وسلم فى النوم فشكوت اليه حالى فاصابنى البرص فرأيت رسول الله صلى الله تعالى عليه وسلم فى النوم فشكوت اليه حالى فقال اياك والا ستهانة بحديشى فقلت بست يا رول الله صلى الله تعالى عليه وسلم فا نببت وقد عا فانى الله تعالى وذالك عنى.
অর্থ : আমি আমার পিতার নিকট শুনেছি, তিনি আবু উমর মুহম্মদ জাফর নিশাপুরী উনাকে বলতে শুনেছেন, তিনি বলেন আমি একদিন খেয়াল করলাম হাদীছ শরীফ খানা ছহীহ নয়। তাই জরুরতবশত: বুধবার দিন আমি শিঙ্গা লাগালাম। অত:পর আমার শ্বেত কুন্ঠে হয়ে গেল। এরপর স্বপ্নে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে দেখে আমি আমার অবস্থা সম্পর্কে অভিযোগ করলাম। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, সাবধান! আমার হাদীছ শরীফ উনাকে হালকা মনে কর না (হাদীছ শরীফ যদিও জঈফ হয়েছে রাবীর কারণে তথাপিও আমার নামের সাথে সম্পর্কযুক্ত)। অত:পর আমি বললাম, হে মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি তওবা করিতেছি (আমার অপরাধ হয়েছে। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ক্ষমা করে দিলেন)
অত:পর আমি ঘুম থেকে জেগে দেখি মহান আল্লাহ পাক আমাকে ক্ষমা করেছেন এবং এর চিহ্ন মাত্র আমার শরীরে নাই। হযরত ইমাম গাজ্জালী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার আরবাইন কিতাবেও এ ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন।
(খ) আল্লামা তাহতাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি হাশিয়ায়ে দুররে মুখতারে বলেন, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আছে-
النهى عن قص الاظناريوم الاريعاء فانه يورث البرص.
অর্থ : পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বুধবার দিন নখ কাটা নিষেধ করা হয়েছে। নিশ্চয়ই এতে শ্বেত কুষ্ঠ হয়।
এ প্রসঙ্গে আল্লামা শিহাবুদ্দীন খাফাজী মিসরী হানাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি নাসিমুর রিয়াজ ফি শরহে ইমাম কাজি এয়াজ কিতাবে বলেন-
قص الاظفار رتقليمها سنة وورد النهى عنه فى يوم الاربعاء رانه يورث البرص وحكى بعض.
নামক কিতাব রচনা করেছেন। শুধু তাই নয়, এ হাদীছ শরীফ-এর ফজিলত হাছিলের লক্ষ্যে স্কুল, কজেজে, ইউনিভার্সিটি ও মাদ্রাসায় পাঠ্যসূচিতে অন্তভুক্ত করে চল্লিশ হাদীছ সংঙ্কলন করে পড়ানো হয়।
وعن انس قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: طلب العلم فريضة على كل مسلم (رواه البيهقى(
অর্থ : হযরত আনাছ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ইলম তলব করা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ফরয। (বায়হাকী)
এ পবিত্র হাদীছ শরীফ খানা জঈফ হওয়া সত্ত্বেও প্রায় প্রত্যেক কিতাবেই এর উদ্ভৃতি এসেছে। ইলমের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা বুঝানোর জন্য সমস্ত মুহাদ্দিছিনয়ে কিরাম  ইলম অধ্যঅয়ে এর অবতারণা করেছেন। আর ইলম হছিলের উৎসাহ প্রদানের জন্য এ পবিত্র হাদীছ শরীফ খানাবর্ণনা করেছেন।
উপরোক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ দুখানা দ্বারা এটাই ছাবেত হল যে, পবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বইফ হলে ও এর দ্বারা তার গুরুত্ব মোটেও কমেনা বরং এর আমলেরও জরুরত রয়ে গেছে। এ জরুরত থাকার কারণেই ইমামগণ এ সমস্ত হাদীছ শরীফ উনার উপরে গুরুত্ব সহকারে আমল করেছেন এবং আমল করার জন্য উৎসাহিত করেছেন।
আমাদের আলোচ্য পবিত্র হাদীছ শরীফ খানাকে যদিও অনেকে দ্বইফ ও মওকুফ বলেছেন। কেউ কেউ মওকুফ হিসেবে সহীহও বলেছেন (ফাতওয়ায়ে বরকতীয়া)। এ ছাড়া দায়লামী শরীফ ও মারাকিউল ফালাহতে মরফু হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। আরো উল্লেখ যে আল্লামা ছাখাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মাকাসিদুল হাছানাহ কিতাবে, ইমাম হযরত মোল্লা আলী ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মওজুআতে কবীর কিতাবে, মুহম্মদ তাহের ফাত্তানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মাজমাইল বিহার কিতাবে এই পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাকে মারফু হিসাবে সহীহ বলে উল্লেখ করেছেন। নিম্নে ফতওয়াটির বিস্তারিত দলীল-আদীল্লা পেশ করা হল।
(, , ৩) আল্লামা ইবনে আবেদীন শামী বলেছেন,
كذا فى الفتاوى نحوه فى كنز العباد قهستنى و الصوفيه وفى كتاب الفردوس من قبل ظفرى ايهامه عند سماع اشهدان محدارسول الله فى ال اذان انا فا حه ومد خله فى صقوف الجنةوتمامه فى حواشى البحرا الر ملى عن معاصدا احسنه للسخاوى وذلك الجر احى واطال ثم قال ولم يصح فى المر فوع من كل هذا أشى.
অনুরূপভাবে ইমাম কাহেসতানীর কানযুল ইবাদ এবং ফতোয়ায়ে সুফীয়া ও কিতাবুল ফিরদাউসে আছে, যে ব্যক্তি আানে -
اشهدان محمدا رسول الله শুনে আপন বৃদ্ধাঙ্গুলীর নখ চুম্বন  করে, তার সম্পর্কে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আমি তার আগে থাকব ও বেহেশতে দাখিল করাবো। এর বিশদ বিবরণ ইমাম সাখাবীর মাকাসিদুল হাসনাহ হতে বাহরোর রায়েকের হাশিয়ায়ে রমলীতে বর্ণনা করা হয়েছে। জারাহীও অনুরুপভাবে একমত পোষণ করেছেন, তবে তিনি বাড়ায়ে ইহাও বলেছেন যে, এ ব্যাপারে বর্ণিত কোন মরফু হাদীছ ছহীহ হিসেবে প্রমাণিত হয় নাই। (ফতোয়ায়ে শামী, ৩৯৮ পৃষ্ঠা)
(, ৫) আল্লামা হাসান ইবনে আম্মার ইবনে আলী শরম্বালালী হানাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন-
وذكر الديلمى فى الفردوس من حديث ابى بك ر رضى الله عنه مفوعامن مسح العين بباطن الغلة البسبا يتن بعد تقبيلهما عند قول المؤذن اشهدان محدارسول الله وقال اشهدان محمد عبده ورسوله رضيت با الله ربا وبالا سلمام دينا وبمحمد صلى الله عليه وسلم نبيا حلت له وذاروى عن الخضوء شفاعتى عليه السلام بمثله بعمل فى الفضاعد.
ইমাম দায়লামী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ফিরদাউস কিতাবে হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম উনার মরফু হাদীছ শরীফ উনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, যে ব্যক্তি মুয়াজ্জিনের اشهدا ن محمدارسول الله শুনে শাহাদাত আঙ্গুল দুটির ভিতরের দিক চুম্বন করে চোখে লাগায় এবং -
اشهدان محمد عبده ورسوله رضيت باالله ريا ريالاسلام دينا وبمحمد صلى الله عليه وسلم نبيا.
এই দোয়া পড়বে তার জন্য আমার শাফায়াত অবধারিত। অনুরূপভাবে খিজির আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে বর্ণিত আছে, আমলের ফজিলত ও গুরুত্বের ক্ষেত্রে এই সমস্ত হাদীছ গ্রহণযোগ্য। (মারাকিউল ফালাহ, ১৩৭ পৃষ্ঠা, আল মওযুআতুল কবীর, ১০৮ পৃষ্ঠা)
(, , , ৯) আল্লামা কাহেসতানী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন,
واعلم انه يستحب ان يقال عند سماع الاولى سول من الشهادة الثانبة (صلى الله عليك) بار الله وعند سماع الشانية قرة عينى بك يا رسول الله ثم يقال اللهم متعنى با لسمع والبصصر بعد وضع ظغر الابما مين على العينين فانه صلى الله عليه وسلم يكون قاأ داله الى الجنه.
জেনে রাখ আযানের সময় শাহাদাতে ছানিয়া অর্থাৎ আশহাদু আন্না মুহম্মদুর রসূলুল্লাহ প্রথমবার শুনে-
عليك يا رسول الله صلى الله
বলা এবং উক্ত শাহাদাতের বাক্য দ্বিতীয়বার শুনে قرة عينى بك يارسول الله বলা মুস্তাহাব। তৎপর বৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয়ের নখ চুম্বন করে-
اللهم متعنى بالسمع والبصر
বলা মুস্তাহাব। এরূপ আমলকারীকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে টেনে বেহেশতে নিয়ে যাবেন। (জামেউর রুমুয, কানযুল ইবাদ, শরহে কবীর, শরহে ইলিয়াস)
(১০) আল্লামা সাখাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি দায়লামী শরীফ উনার বরাত দিয়ে লিখেছেন,
ل لما سمع ابى بكر قول المؤذن اشهدان محمدا رسو بتين الله قال هذا وقبل با طن الاغملتين السبا ومسح على عينيه فقال صلى الله عليه وسلم من فعل مثل ما فعل خليلى فقد حلت له شفاعتى.
হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম যখন মুয়াজ্জিনকে-
اشهدان محدا رسول الله
বলতে শুনলেন তখন তিনিও ইহা বললেন এবং শাহাদাত আঙ্গুল দুটোর ভিতরের দিক চুম্বন করে চোখে লাগালেন, এতে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, যে আমার এই প্রিয় বন্দুর কাজের অনুরূপ কাজ করবে, তার জন্য আমার শাফায়াত অবধারিত। (মাকাসিদুল হাসনাহ, ৩৮৪ পৃষ্ঠা)
(১১, ১২) ইমাম সাখাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি হযরত আবুল আব্বাস আহমদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার خوجبات الرحمة ةعزاعم المغرة কিতাব হতে উদ্ধৃতি দিয়ে স্বীয় কিতাবে উল্লেখ করেছেন, হযরত খিযির আলাইহি ওয়া সালাম বলেন,
اشهد من قال حين يسمع المؤذن بقول رسول الله مرحبابحبيبى وقرة ان محمدا عينى محمد ابن عبدالله ثم يقبل ابهاميه على عينيه لم ير مدا بدا- ويجهلهما.
যে ব্যক্তি মুয়াজ্জিনের اشهدان محمدار سو الله শুনে قرة عينى محمدابن عبد اللهمرحبا بحبيبى বলবে অত:পর উভয় বৃদ্ধাঙ্গুলী চুম্বনের পর চক্ষুদ্বয় মসেহ করে তাহলে কোন সময় তার চোখ ব্যাখা বেদনায় আক্রান্ত হবে না। (আল মাকাসিদুল হাসনাহ, ৩৮৪ পৃষ্ঠা)
(১৩) ইমাম সাখাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি ইমাম মুহম্মদ বিন সালেহ মাদানীর রচিত ইতিহাস হতে উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, আমি মাজদ মিশরী রহমতুল্লাহি হতে শুনেছি যিনি পূর্ণত্মা কামেল বান্দাগণের অন্যতম ছিলেন তিনি বলেন,
من صلى على النبى صلى الله عليه وسلم اذا سمع ذكره فى الاذان وجمع اصبعيه ال مسبحة والابهام وقبلهما ومسح بهما على عيئيه لم مد ابدا-
যে ব্যক্তি আযানে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পবিত্র নাম শুনে দুরূদ শরীফ পাঠ করে এবং কালেমায় অঙ্গুলী ও বৃদ্ধাঙ্গুলী চুম্বন করে চোখের উপরে মসেহ করে, কখনো তার চোখে যন্ত্রনা হবে না। (আল মাকাসিদুল হাসনাহ, ৩৮৪ পৃষ্ঠা)
(১৪) ইমাম সাখাবী, ইমাম মুহম্মদ বিন সালেহ রচিত ইতিহাস হতে নকল করে বলেন, ইরাকের অনেক ধর্মবক্তা হতে বর্ণিত হয়েছে যে, বৃদ্ধাঙ্গুলী চুম্বন করার সময় নিম্নোক্ত দরূদ শরীফ পড়বে-
صلى الله عليح يا سيدى يا رسول الله يا حبيب قلبى ربانور بصرى وياقرة عينى.
ইহার ফলে মহান আল্লাহ পাক উনার রহমতে তার চোখ কখনও যন্ত্রনা কাতর হবে না, ইহা পরীক্ষিত অতঃপর উক্ত ইমাম সাহেব বলেন, ইহা শুনার পর হতে অদ্যাবধি এই কল্যাণময় কাজ করে আসতেছি, আজ পর্যন্ত আমার চোখ ব্যাথাক্লিষ্ট হয় নাই এবং ইনশাআল্লাহ হবেও না। (আল মাকসিদুল হাসনাহ)
(১৫) ইমাম সাখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি ইমাম তাউস রহমতুল্লাহি আলাইহি হতে বর্ণনা করেন যে, তিনি খাজায়ে হাদীছ মুহম্মদ বিন আবু নসর বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি হতে নিম্নে বর্ণিত পবিত্র হাদীছ শরীফ শুনেছেন-
من قبل عند سماعه من المؤذن كلمة الشهدة ظفر ى ابها ميه ومسحهما على عينيه وقال عند المس ل اللهم احفط حد قتى ونورهما ببر كة حد قبى محمد رسول الله صلى الله عليه وسلم ونور هما لم يعم.
যে ব্যক্তি মুয়াজ্জিনের উচ্চারিত কলেমায়ে শাহাদাত শুনে স্বীয় বৃদ্ধাঙ্গুলীর নখে চুম্বন দেয় ও তার চোখে মসেহ করে আর এই দোয়া পড়ে,
ا اللهم احفط حد قتى ونور هما بيركة حدقتى محمد رسول الله صلى الله عليه وسلم ونورهما.
সে কখনও অন্ধ হবে না। (আল মাকাসিদুল হাসনাহ ৩৮৫ পৃষ্ঠা)
(১৬, ১৭) শাফেয়ী মাযহাবের বিখ্যাত কিতাব-
اعانة الطالبين على حل الفاظ فتح المبين এর ২৪৭ পৃষ্ঠা এবং মালেকী মাযহাবের বিখ্যাত কিতাব
كفاية الطالب الريانى لرسالة ابى زيد القير.
وانىএর ১৬৯ পৃষ্ঠায় বর্ণিত আছে যে, যখন আযানে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র নাম মুবারক শুনবে তখন দূরূদ শরীফ পড়বে তারপর বৃদ্ধাঙ্গুলী চুম্বন করে চোখের উপর রাখবে। ফলে কোন কালেও অন্ধ হবে না; আর চোখেও রোগ হবে না।
(১৮) মককাতুল মুকাররমার হানাফী ওলামাগণের নেতা শায়খুল মাশায়েখ রঈসুল মোহাক্কেকীন মাওলানা জামাল বিন আব্দুল্লাহ বিন উমর মক্কী রহমতুল্লাহি আলাইহি স্বীয় ফতওয়াতে বলেন-
سءلت عن تقبيل الابها مين وو ضعهما على العينين عند ذكر اسمه صلى الله عليه وسلم فى زام لا؟ اجيت يما ا الاذان هل هوجاأ نصه نعم تعبيا الا بها مين وو صهعهما على العينين عند ذكر اسمه صلى الله عليه وسلم فى الاذان جاأز زبل هو مستحب صرحبه مشاأخنا.
আমাকে প্রশ্ন করা হলো যে, আযানে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র নাম মুবারক উচ্চারন কালে বৃদ্ধাঙ্গুলী চুম্বন করা এবং চোখের উপর তা মসেহ করা জায়েয কি না? আমি উহার উত্তরে বললাম, হ্যাঁ, আযানে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালাম উনার পবিত্র নাম মুবারক শুনে বৃদ্ধাঙ্গুলী চুম্বন ও তা চোখের উপর স্থাপন করা জায়েয বরং মুস্তাহাব। এই আমল মুস্তাহাব হওয়ার ব্যাপারে আমাদের মাশায়েখগণ স্পষ্ট বর্ণনা দিয়েছেন। (মুনীরুল আইন ফি তাকবীমুল ইবহামহিন)
(১৯) শায়খ আল্লামা নুরুদ্দিন খোরাসানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমি আযানের মধ্যে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক নাম শুনে বৃদ্ধাঙ্গুলী চুম্বন করতাম, অতঃপর এই আমল বর্জন করলাম, ফলে আমার চোখে পীড়া দেখা দিল। (এর পরের ঘটনা এখানে উদ্ধৃত করা হলো)-
فرايته صلى الله عليه وسلم منا ما فقال لم تر كت مسح عينيك عندا لا ذان ان اردت ان تبر ععيناك فعدالى المسح فاستيقت ومسحت فبر أت ولم يعا ودنى مر ضهما الى الان.
ইহার পর আমি স্বপ্নে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাক্ষাৎ লাভ করলাম। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তুমি আযানের সময় বৃদ্ধাঙ্গুলী চুম্বন করে উহা চোখে লাগানো পরিহার করেছ কেন? যদি তোমার চক্ষু রোগ থেকে মুক্তির ইচ্ছা থাকে, তবে পুনরায় এই আমল শুরু কর। অতঃপর আমি জেগে এই কাজ শুরু করেছি। তখন আমার চুক্ষু(রোগ হতে) ভাল হয়ে যায়। এরপর অদ্যাবধি আমার চোখে আর কোন ধরণের রোগ হয় নাই।” (নাহজুস সালামাহ ফি তাকবীলিল ইবহাসাইনে ফিল ইকামাহ)
(২০) অঙ্গুলী চুম্বন এর প্রসঙ্গে আল্লামা আব্দুল হাই লক্ষেবী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন-
بعض فقها مستحب نو شته انه وحديح هم در اين باب نقل ميسازند مكر صحيح نيست ودرامر مستحب فاعل وتارك قابل ملامت وبشنيع نيستند درجامع الر موزحى ارد-
اعلم انه يستحب ان يعال عند سماع الا ولى منا لشهادة صله الله عليك يا رسول الله ثم سماع الثا نية قرة عينى بك يا رسول الله ئمح يقال اللهم متعنى با لسمع والبصر وبعد وضع ظغر البدين على العينين فانه صلى الله على وسلم يكو قاادا له الى الجنة.
কোন কোন ফিক্বাহ বিশারদগণ ইহাকে (অঙ্গুলী চুম্বন) মুস্তাহাব বলেছেন, এবং এ ব্যাপারে হাদীছ শরীফ উদ্ধৃত করেছেন, কিন্তু হাদীছটি সহীহ নহে। (ইহার অর্থ এই নয় যে পবিত্র হাদীছ শরীফ  বাতিল বরং পবিত্র হাদীছ শরীফটি আমলের ক্ষেত্রে গ্রহণীয়) মুস্তাহাব কাজ করা নও না করার জন্য কেউহ তিরষ্কৃত ও নিন্তিত হবে না। জামেউর রুমুয কিতাবে আছে- জেনে রাখ, আযানের সময় প্রথমবার শাহাদাত বাক্য শুনার পর-
صلى الله عليك يا ريول الله ও দ্বিতীয়বার শাহাদাত বাক্য শুনার পর-
قرة عينى يك يا رسول الله اللهم متعنى با لسمع والبصر.
তৎপর উভয় হাতের নখ চুম্বন করে চোখের উপর স্থাপন করবে। এরূপ আমলকারীকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজে টেনে জান্নাতে নিয়ে যাবেন।
(২১) ফতওয়ায়ে দেওবন্দ এর মধ্যে আছে-
سوال : اذان می بوقت شھادتین انگوھے کو بوسہ دینا کیساھے جو شخص اس سے منع کرے اس کی اقتدا نماز میی جائز جو انگو ھون کو بوسہ نہ ھے یا نھی اور دے وہ گنھگار ھے یا نہ اگر بو سہ دینا مستحب یا سنت ھے تو اس کی دلیل کیا ھے مستحب یا سنت ھے تو اس کی دلیل کیا ھے : استحیاب تقبیل ابھامین کی دلیل الجواب سمی کی یہ عبارت ھے یستحب ان یقال عند سمع الاولی من الشھادتین صلی اللہ علیک یا رسول اللہ و عند الثانیۃ منھا قرۃ عینی بك یا رسول اللہ صلی اللہ علیہ وسلم ثم یقول اللھم متعنی بالسمع و البصر بعد وضع ظفری الابھا مین علی العینین فانہ علیہ السلام یقون قاعد الہ فی الجنۃ کذافی کنذ العباد و قھستا نی و نحوہ فی الفتاوی الصوفیۃ و فی کتاب الفردوس من قبل ظفری ابھا میہ عند سماع اشھد ان محمدا  رسول اللہ صلی اللہ علیہ وسلم فی لاذ ان انا قائدہ ومدخلہ فی صفوف الجنۃ وتمامہ فی حواشی الجر الرملی عن المقاصد اغسنۃ للسخاوی و ذکر ذلک الجراحی و اطال ثمے قال و لم یصح فی المرفوع من کل ھذا شئی-
اخر عبارت شامی سے یہ بھی واضح ھوا کہ کوئی مفوع حدیث صحیح اس باے مین نھیی ھے غیات بہ کہ ضعیف حدیث پر بھی فضائل اعمال مین عمل کرنا درست ھے مگر اس کی شرط یہ ھے کہ اس فعل کو مسنون نہ سمجہ- کذا فی الدرالمختار پس چونکے بعض عوام کو اس مین غلو ھوگیا اور اس کو سنت سمجہ کر گرتے ھین اور تارک- پر طعن و ملامت کر تے ھین اس لئے ترک اس کا علماء محققین احوط سمچہ ھین اور رہ شخص گناہ گار نھیی اقتدائی اس کی درست ھے-
আযানে আশহাদু আন্না মুহম্মদুর রসূলুল্লাহ উচ্চারণের সময় অঙ্গুলী চুম্বন করা কি? যে ব্যক্তি উহা হতে কাউকে ফিরিয়ে রাখে তার পিছনে নামাযের ইত্তেদা করা কী জায়িয অথবা না? এবং যে ব্যক্তি অঙ্গুলী চুম্বন না করে ঐ ব্যক্তি কী গুনাহগার হবে অথবা না? অঙ্গুলী চুম্বন করা যদি মুস্তাহাব বা সুন্নাত হয় তাহলে ইহার দলীল কিরূপ?
উত্তর: উভয় বৃদ্ধাঙ্গুলী চুম্বন দেয়া মুস্তাহাব। ইহার দলীল হলো শামী কিতাবের এই ইবারত। আযানের সময় শাহাদাতে ছানিয়া অর্থাৎ আশহাদুআন্না মুহম্মদুর রসূলুল্লাহ প্রথমবার শুনে
صلى الله عليك يا رسول الله  বলা এবং দ্বিতীয়বার শুনে قرة عينى بك يا رسول الله বলা মুস্তাহাব; তৎপর দৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয়ের নখ চুম্বন করে।
اللهم متعنى بالسمع والبصر বলা মুস্তাহাব এরূপ আমলকারীকে রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে টেনে বেহেশতে নিয়ে যাবেন। ইহা ইমাম কাহেসতানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কানযুল ইবাদে উল্লেখ আছে। অনুরূপভাবে ফতওয়ায়ে সুফীয়াতে ও কিতাবুল ফিরদাউসে উল্লেখ আছে, যে ব্যক্তি আযানে
اشهد ان محمدا رسول الله শুনে আপন বৃদ্ধাঙ্গুলীর নখ চুম্বন করে তার সম্পর্কে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আমি তাকে টেনে বেহেশতের কাতারে প্রবেশ করাবো। উহার বিশদ বিবরণ ইমাম সাখাবীর মাকাসিদুল হাসনাহ হতে বাহরুর রায়েকের হাশিয়ায়ে মলীতে বর্ণনা করা হয়েছে। ইসমাইল জারাহী অনুরূপ তা পোষন করেছেন, তবে তিনি বাড়িয়ে ইহাও বলেছেন যে, এ ব্যাপারে বর্ণিত কোন মরফু হাদীছ শরীফ ও সহীহ ....... প্রমাণিত হয় নাই। (ফতওয়ায়ে দেওবন্দ দ্বিতীয় জিলদ ১০৭ পৃষ্ঠা)
শামী কিতাবের শেষোক্ত এবারতে ইহাও বর্ণনা করা হয়েছে যে, এ ব্যাপারে কোন মরফু সহীহ হাদীছ নেই দ্বঈফ হাদীছ শরীফও ফজিলতের আমলসমূহে আমল করা যায়েয, কিন্তু শর্ত হলো উক্ত কাজকে সুন্নাত  অর্থাৎ সুন্নতে মুয়াকাদা মনে করা যাবে না। ইহা দররুল মোখতার কিতাবে উল্লেখ আছে। সুতরাং যেহেতু কোন কোন ক্ষেত্রে এ ব্যাপারে বাড়াবাড়ী হয়ে গেছে আর ইহাকে সুন্নত অর্থাৎ সুন্নতে মোয়াক্কাদাও মনে করে থাকে এবং ইহার তরককারীকে তিরষ্কৃত ধিকৃত করে থাকে এজন্য এই আমল হতে বিরত থাকাকে ওলামায়ে মোকাক্কেকীন নাবধানতা অবলম্বন মনে করে থাকেন আর তরককারী গুনাহগার হবে না, আর এ ব্যক্তির পিছনে এক্তেদা করা জায়িয। (ফতওয়ায়ে দেওব্দ জিলদে সানী ১০৭ পৃষ্ঠা)
(২১) ছলাতে নখশী কিতাবে উল্লেখ আছে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من سمع اسمى فى اللذان ووضع ابها ميه على عينيه فانا طالبه فى صفوف القيامة وقااداه الى الجنة.
যে ব্যক্তি আযানের মধ্যে আমার নাম শুনলো এবং তার উভয় অঙ্গুলী দুচোখের উপর রাখল, আমি তাকে কিয়ামতের দিন ছফের মধ্যে তালাশ করবো এবং বেহেশতে প্রবেশ করাবো।
(২৩) অঙ্গুলী চুম্বন মুস্তাহাব। (ফতওয়ায়ে সিদ্দিকীয়া)
(২৪, ২৫) শাহ সূফী হযরত ছদরুদ্দিন আহমদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার লিখিত ইলমে তাসাউফ, মহান আল্লাহ পাক উনাকে পাইবার তত্ব, নকশবন্ধিয়া মোজাদ্দেদীয়া তরীকা কিতাবে এবং আহওয়ালে আনিয়া কিতাবে বর্ণিত আছে, একদিন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জুমায়া নামাযের পূর্বে মসজিদের মধ্যে বসেছিলেন, হযরত বিলাল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু আযান দিতে লাগলেন, যখন এই কালাম বললেন,
شهدان محمدا رسولا الله তখন হযরত আবু বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম দুহাতের আঙ্গুল উনার দুচোখের উপর ফিরালেন এবং বললেন, قرة عينى بك يا رسول الله যখন আযান শেষ হলো, তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, হে হযরত আবু বকর ছিদ্দীক আলাইহিস সালাম! যে ব্যক্তি এরূপ বলবে এবং শওক ও মুহব্বতের সাথে করবে, যেমন তুমি বলেছ ও করেছ, মহান আল্লাহ তায়ালা তার পুরাতন ও নতুন, আমাদান ও খাতায়ান, পুশিদা ও জাহের সমস্ত গুনাহ মাফ করবেন এবং আমি তার শুপারিশকারী হবো।
(২৬)
المؤذن وقال النووى مستحبة فيقول بمثل ما يثول ميه وضعف تقبيل ظغرى ابه مع مسبحتيه والمسح على عينيه عند قوله لم يثبت فى الحديث المر محمد رسول الله لا نه اتفقوا على ان الحديث فوغ لكن المحدثين به فى التر غيب والتر الضعيفيجوز العمل هيب فقط.
অর্থ : ইমাম নববী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন (আযানের জাওয়াব) দেয়া মুস্তাহাব। মুয়াজ্জিন যা বলবে, শ্রবণকারীও তাই বলবে। আর মুহম্মদুর রসূলুল্লাহ বলার সময় নিজের শাহাদাত অঙ্গুলীসহ বৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয়ের নখকে চুম্বন দেয়ার বিধান দ্বইফ রেওয়ায়েত সম্মত। কেননা ইহা মরফু পবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত হয়। কিন্তু মুহাদ্দিসীনে কিরাম এ ব্যাপারে ঐক্যমত পোষণ করেন যে, (আমলের জন্য) উৎসাহ প্রদান ও ভীতি প্রদর্শনের বেলায় দ্বঈফ হাদীছ অনুযায়ী আমল করা জায়িয। (রুহুল বয়ান ২য় খ-, ৪১০ পৃষ্ঠা)

(২৭)
قل يعضهمستابها مينير حشم ما ليده اين دعا بجواند (اللهم متفى(
কেহ কেহ বলেন, উভয় বৃদ্ধাঙ্গুলীর পীঠ চোখের উপর রেখে এই দোয়া পড়তে হবে।
الله متعى بالسمع والبصر (রুহুল বয়ান ৭ম খ-, ২২৮ পৃষ্ঠা)
(২৮, ২৯)
تاخن هر دو ابهام رابر حشم نهد بطريق وضع نه بطريق مد.
উভয় বৃদ্ধাঙ্গুলীর নখকে চোখের উপর রাখতে হবে, কিন্তু টানতে হবে না। (রুহুল বয়ান ৭ম খণ্ড, ২২৯ পৃষ্ঠা, ছালাতে নজুমী)
(৩০) আহসানুল ফতওয়া কিতাবে আছে,
سوال : اذان مین اشھد ان محمدا رسول اللہ پر جو لوگ انگوھے چو متے ھین وہ ثبوت میہ منسلکہ عبارت پیش کرتے ھین ملاحظہ فرما کر تصدیق یا تردید فرمائی جائے عبارت یہ ھے حضرت علامہ نبھانی رحمۃ اللہ علیہ نے "حجۃ اللہ  علی العالمیں مین یہ روایت درج فرمائی ھے بنی اسرائیل مین ایک شخص تھا جس نے دوسو سال تک خداکی نافرمانی کی مرنے کے بعد  لوگون نے اسکو گندی جگہ پر پھینک دیا- اللہ تعالی نے حضرت موسی علیہ السلام کو اسے اھاکر باعزت دفنانے کا اور اس کے لئے دعائے مغفرت کا حکم دیا- حضرت موسی علیہ السلام نے عرض کیا کہ لوگ اسکے نافرمان ھونے کی شھادت دیتے ھین ارشاد ھواھیک ھےکہ وہ گنھگار تھا مگر وجب تورات کو انکہ کھولتا تھا اور میرے محبوب محمد صلی اللہ علیہ وسلم کا نام دیکھتا تو وہ اس کا نام چومتا اور اپنی انکھون پر لگاتا تھا اس لئے وہ مجھے پیارا لگتا ھے مین نے دوسو سال کے گناہ بخسد یئی- اس کے لشامیۃ ویستحب فی الجواب باسم ملھم الصواب ان یقول عند سماع الاولی من الشھادۃ صلی اللہ علیک یا رسول اللہ وعند الثانیۃ منھا قرۃ عینی بک یا رسول اللہ صلى اللہ علیہ وسلم ثم یقول اللھم متعنی بالسمع و البصر بعد وضع ظفری الا بھا مین علی العینین فانہ علیہ السلام یکون فائدا لہ الی الجنۃ کذا فی کنذ العباد قھستانی نحوہ فی الفتاوی الصوفیۃ و ذکر ذلک الجر احی و اطال ثم قال ولم یصح فی المرفوع من کل ھذا شئی- علامہ شامی نے قھستانی و غیرہ کے حوالہ ے سے اس تقبیل کا استحباب نقل کنے کجراحی سے نقل کیا ھے کہ کسی حدیث سے بعد اسکا سبوت نھیی لھذا اس کی سنیت پر کوئی کر سنت سے دلیل نھین اور چونکے عوام اس بھی برہ کر ضروری سمجہ کر تارک تقبیل کر رملامت کرتے ھین لھذا اسکا ترک ضروری ھو گیا عبارت منسلکہ سے متعلق جس کتاب کا حوالہ پیش کیا گیا ھے وہ غیر معروف ھے- اگر صحیح بھی ھو تو ذیادہ یہ ثابت ھوگا کہ حضور کریم صلی اللہ علیہ وسلم کا نام کھین لکھا ھوا ھو تو اسے چومنا اور نکھون پر لگانا ث برکت و ثواب ھے- اور اس سے کسی کو باع انکار هھی یہ کیسے ثابت ھوا کہ ناخنون کو چوم وقت کر انکھون پر لگایا جائے خصوصا اذان کہ-
আযানের মধ্যে اشهدان محمدا رسول الله তে যে ব্যক্তি অঙ্গুলী চুম্বন করে সে ব্যক্তি তা প্রমাণের জন্য যে সমস্ত ইবারত পেশ করে থাকে তা সত্য মিথ্যা তাহকীক করে তার জওয়াব দিন। ইবারতটি হলো, হযরত আল্লামা নাবহানী রহমতুল্লাহি আলাইহি হুজ্জাতুল্লাহি আলাল আলামীনকিতাবে এই বর্ণনা করেছেন, বণী ইসাঈল বংশীয় এক ব্যক্তি ছিল যে দুশত বছর মহান আল্লাহ পাক উনার নাফরমানী করেছিল, উক্ত ব্যক্তির মৃত্যুর পর লোকেরা তাকে আবর্জনার মধ্যে ফেলে দিল, মহান আল্লাহ পাক হযরত মুসা আলাইহিস সালাম উনাকে উক্ত ব্যীক্তকে উহা হতে উঠিয়ে ইজ্জতের সাথে দাফন ও তাকে ক্ষমা করার জন্য দোয়া করতে আদেশ করলেন। হযরত মুসা আলাইহিস সালাম আরয করলেন, লোকেরা তার নাফরমানীর সাক্ষ্য দিচ্ছে, মহান আল্লাহ পাক বললেন, ইহা ঠিক যে, সে গুনাহগার ছিল, কিন্তু সে যখন তাওরাত কিতাব পড়ার জন্য খুলে আমার মাহবুব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম দেখতে পেত তখন সে তা চুমা খেত ও চোখে লাগাত। এ কারণেই সে আমার প্রিয় হয়ে গেছে আর আমি তার দুশত বছরের গুনাহ ক্ষমা করে দিয়েছি-
الجواب باسم المهم الصواب
শামী কিতাবে আছে আযানের সময় শাহাদাতে ছানিয়া অর্থাৎ اشهدان محمدا رسول الله প্রথম বার صلى الله عليك يا رسول الله বলা এবং উক্ত শাহদাহের বাক্য দ্বিতীয়বার শুনে قرة عينى بك يا رسول الله বলা মুস্তাহাব  .. বৃদ্ধাঙ্গীলীদ্বয়ের নখ চুম্বন করে চোখে রেখে
اللهم متعنى با لسمع والبصر বলা এর আমলকারীকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে টেনে বেহেশতে নিয়ে যাবেন। ইমাম কাহেসতানী রহমতুল্লাহি আলাইহি কানযুল ইবাদে এবং অনুরূপভাবে ফতওয়ায়ে সূফীয়াতে বর্ণিত আছে, ইসমাইল জারাহীও এমত পোষণ করেছেন, তবে তিনি বাড়ীয়ে ইহাও বলেছেন যে, এ ব্যাপারে বর্ণিত কোন মরফু হাদীছ শরীফ ও সহীহ হিসেবে প্রমাণিত হয় নাই। আল্লামা শামী রহমতুল্লাহি আলাইহি কাহেসতানী ও অন্যান্য মতামত দ্বারা অঙ্গুলী; চুম্বন করা মুস্তাহাব উল্লেখ করার পর জারাহীর ইবারত নকল করেছেন যে, কোন পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইহার প্রমাণ নাই। সুতরাং ইহাতে সুন্নতের অর্থাৎ সুন্নতে মোয়াক্কাদার দলীল নাই, যেহেতু আমলোক ইহাকে সুন্নাত অর্থাৎ সুন্নতে মোয়াক্কাদা হতেও বেশী জরুরী মনে করে অঙ্গুলী চুম্বন তরককারীকে তিরস্কার করে থাকে। সুতরাং উহা ত্যাগ করা উচিৎ। ইবারতের সাথে সংম্পৃক্ত যে কিতাবের ইতিহাস পেশ করা হয়েছে উহার কোন প্রসিদ্ধি নাই, এবং ছহীহ যদি হয়ও তবে ইহা বলা যেতে পারে যে, কোথাও নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম লিখা দেখে তা চুম্বন দেয়া বরকত ও সওয়াবের কারণ হবে। আর এব্যাপারে কেহ অস্বীকার করেনি। ইহা কি করে সাব্যস্ত হলো যে, অঙ্গুলী চুম্বন করে চোখে বুছা দেওয়া শুধু আযানের জন্যই খাছ। (আহসানুল ফতওয়া ১ম খ- ৩৭৯ পৃষ্ঠা)
(৩১, ৩২) অঙ্গুলী চুম্বন যা একমাত্র হযরত আবু বকর ছিদ্দিক্ব আলাইহিস সালাম হতে রেওয়ায়েতকৃত। আর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তা সমর্থন করেছেন। ইহা নিম্নে বর্ণিত হলো-
ودر محيط اوده كه يبغمير صلى الله عليه وسلم بمسجد درامد ونزديك ستون بنست وصد يق رضى الله عنه دربرابران حضرت نثته بود بلال رض الله عنه بر خاست وباذان اشتغال قرمود يون كفت اشهد ان محمدارسول الله ابو بكر رضى خود دويشم الله هر دو نا خن ايهامين خودرابرهر نهاده كفبت قرة عينى بك يا ريول الله جون بلال رضى الله فارغ شد حضرت رسول الله صلى الله عليه وسلم فرموده كه يا ابابكر هركه بكند جونبن كه بوكردى خداى بيامزد كنا هان جديد وقديم او راكر بعبمد بوده با شداكربخطا.
মুহিত নামক কিতাবে উল্লেখ আছে যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মসজিদে তাশরীফ এনে একটি স্তম্ভের নিকট বসেছিলেন, উনার পাশে হযরত আবু বকর ছিদ্দিক্ব আলাইহিস সালাম তিনিও বসেছিলেন। এর মধ্যে হযরত বেলাল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু আযান শুরু করেছিলেন, যখন-
اشهدان محمدا رسول الله উচ্চারন করলেন তখন হযরত আবু বকর ছিদ্দীক আলাইহিস সালাম আপন বৃদ্ধাঙ্গলীদ্বয়ের নখ চুম্বন করে আপন দুচোখের উপর রেখে-
قرة عينى بك يارول الله বললেন। (হে রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আপনি আমার চোখের মণি) হযরত বিলাল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার আযান শেষ হওয়ার পর, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, হে আবু বকর ছিদ্দীক আলাইহিস সালাম! আপনি যা করেছেন, যে ব্যক্তি তদ্রুপ করবে, মহান আল্লাহ তায়ালা তার সমুদয় গুনাহ মাফ করে দিবেন। (তাফসীরে রুহুল বয়ান ২২৯ পৃষ্ঠা)
(৩৩, ৩৪, ৩৫) হযরত শায়খ ইমাম আবু তালেব মুহম্মদ বিন আলী মক্কী রহমতুল্লাহি আলাইহি উল্লেখ করেছেন,
رایت کردہ از ابن عیینۃ رحمۃ اللہ کہ حضرت پیغمبر علیہ الصلاۃ ولاسلام بمسجد درامد دردھۃ محرم و بعد از انکے نماز جمعۃادا فرمودہ بود نزدیک اسطو انہ فرار گرفت و حضرت ابو بکر صدیق علیہ السلام بظھر ابھا  مین چشم خودرا مسح کرد و گفت قرۃ
হযরত ইবনে ওয়ায়না রহমতুল্লাহি আলাইহি হতে বর্ণনা করা হয়েছে যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জুমায়া নামায আদায় করার জন্য ১০ই মুহররম তারীকে মসজিদে তাশরীফ এনে একটা খুটির নিকটে বসলেন। হযরত আবু বকর ছিদ্দীক আলাইহিস সালাম তিনি আযানে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পাক নাম মুবারক শুনে নিজের বৃদ্ধাঙ্গুলী দুটোর নখ আপন চোখের উপরে মসেহ করতে করতে বললেন-
قرة عينى بك يا رسول الله হযরত বিলাল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু আযন শেষ হলে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, হে হযরত আবু বকর ছিদ্দীক আলাইহিস সালাম! যে কেহ আমার নাম শুনে আপনার মত দুহাতের আঙ্গুল চোখের উপর মসেহ করে এবং আপনি যা বলেছেন তা বলে, তা হলে মহান আল্লাহ তায়ালা তার নতুন পুরাতন ইচ্ছাকৃত ভুল ও প্রকাশ্য, গুপ্ত সমস্ত গুনাহ মাফ করে দিবেন। (কুওয়াতুল কুলুব, তাফসীরে জালালাইন, তাফসীরে রুহুল বয়ান, ৭ম খণ্ড ২২৯ পৃ:)
(৩৬) হযরত মাওলানা মুফতী সাইয়্যিদ মুহম্মদ আমিমুল ইহসান মুজাদ্দেদী বরকতী রহমতুলাহি আলাইহি লিখেছেন, আযানের শাহাদত বাক্য শ্রবণকালে বৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয় চুম্বন প্রসঙ্গে কোন ছহীহ মরফু হাদীছ শরীফ বর্ণিত হয়নি। হ্যাঁ দ্বঈফ বা দুর্বল হাদীছ শরীফ উনার প্রমান পাওয়া যায়, ও ফযীলতের আমলের ক্ষেত্রে দ্বঈফ হাদীছ শরীফ উনার উপর আমল করা মোস্তহাব, সুতরাং আযানের মধ্যে শাহাদাত বাক্য পাঠ করার সময় বৃদ্ধাঙ্গুলদ্বয় চুম্বন করা মুস্তাহাব; কেননা ইহা সহীহ মওকুফ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত এবং আল আক্কাসিদুল হাসমাহ কিতাবের ১৮১ পৃষ্ঠায় ইহা দ্বারা চোখের উপকারিতার উপর অনেক ঘটনাবলী বর্ণিত রয়েছে। এমনকি মাজমাউল বিহার কিতাবের বিখ্যাত লিখক ইহাকে মুসলীম বিশ্বের পরীক্ষিত ও প্রচলিত প্রথা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। (ফতওয়ায়ে বরকতীয়া)
(৩৭, ৩৮, ৩৯) হযরত ওহবা ইবনে মোনাবাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন বণী ইস্রাঈলের এক ব্যক্তি দুশত বছর মহান আল্লাহ পাক উনার নাফরমানীতে কাটিয়েছিল। ঐ ব্যক্তির মৃত্যুর পর জনগণ তাকে আবর্জনার মধ্যে ফেলে দিল। তখন মহান আল্লাহ পাক হযরত মুসা আলাইহি ওয়া সালাম উনার প্রতি ওহী অবতীর্ণ করলেন যে, উক্ত ব্যক্তিকে সেখান হতে তুলে তার জানাযার নামায পড়। হযরত মুসা আলাইহি ওয়া সালাম আরয করলেন ইস্রাইল বংশীয়য় সকল লোক ঐ ব্যক্তির নাফরমানীর সাক্ষ্য দিচ্ছে। মহান আল্লাহ পাক বললেন ইহা ঠিক,
الاانه كان كلما نشر التوراة ونظرالى اسم محمد صلى الله عليه وسلم قبله وضعه على عينيه وصلى عليه فشكرت ذلك له وغفرت ذنويه وزوجته سبعين حوراء.
কিন্তু ঐ ব্যক্তির অভ্যাস ছিল, যখন তাওরাত কিতাব খুলত এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র নাম মুবারক দেখতে পেত তখন এই নাম মুবারক চুম্বন করে চোখে লাগাত এবং দুরূদ পাঠ করত। এজন্যই আমি এ বান্দার হক্ক স্বীকার করেছি ও তার গুনাহ ক্ষমা করে ৭০ জন হুর তার বিবাহে দিয়েছি। (হিলইয়াতুল আওলিয়া আবুঈম ৪র্থ খ- ৪২ পৃষ্ঠা, সীরাতে হালবীয়া ১ম খ- ৮৫ পৃষ্ঠা, হুজ্জাতুল্লাহি আলাল আলামীন)
او اظهر الله تعالى جمال حبيبه فى صفاء ظفر ابها ميه ى ايها ميه مثل المراة فقبل ادم ظفرى ومسح على عينيه فصاراصلا لنريته فلما اخر جبر امل النبى صلى الله عليه وسلم بهذه القصه قال عليه السلام من سمع اسمى فى الاذ لم ان فقبل ظفرى ابها ميه ومسح على عينيه يلم ابدا.
“মহান আল্লাহ তায়ালা স্বীয় প্রিয় হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সৌন্দর্য্য হযরত আদম আলাইহি ওয়া সালাম উনার উভয় বৃদ্ধাঙ্গুলীর নখে স্বচ্ছ আয়নার মত বিকশিত করলেন, ইহা দেখে হযরত আদম আলাইহি ওয়া সালাম স্বীয় উভয় দৃদ্ধাঙ্গুলীর নখ চুম্বন করে উহা চোখে লাগালেন। তারপর এ সুন্নত তার বংশধরদের মাঝে প্রচলিত হয়ে গেল। হযরত জিব্রাইল আলাইহি ওয়া সালাম যখন এই ঘটনার সংবাদ দিলেন তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, যে ব্যক্তি আযানে আমার নাম মুবারক শুনে স্বীয় বৃদ্ধালীর নখ চুম্বন দিয়ে চোখে লাগায় সে কখনও অন্ধ হবে না। (রুহুল বয়ান ৭ম খ- ২২৯ পৃষ্ঠা)
ইহা ছাড়াও (৪১) ফতওয়া খাযানাতুর রেওয়ায়েত, (৪২) ফতওয়া সিরাজুম মুনীর, (৪৩) ফতওয়া মিফতাহুল জিনান, (৪৪) কিতাবুন নেয়ামুল ইনতিবাহ, (৪৫) জাআল হক, (৪৬) তরীকুল ইসলাম, (৪৭) শাহে নেকায়াহ ও (৪৮) মাজমাউল বিহার ও ইত্যাদি কিতাবসমূহে আযানে اشهد ان محمدا رسول الله শুনে বৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয় চুম্বন করে চোখে মসেহ করা যে মুস্তাহাব তা প্রমাণিত হলো। অঙ্গুলী চুম্বন ফরয ওয়াজিব বা সুন্নতে মুয়াক্কাদা নয় বরং ইহা একটি মুস্তাহাব আমল। এ ব্যাপরে কোন প্রকার বিতর্ক সৃষ্টি করা বা বাড়াবাড়ী করে ফেৎনা সৃষ্টি করা আদৌ জায়েয নেই, হারাম। কেউ যদি ইহা আমল করে, তবে ইহাকে যেমন বিদআত বলা যাবে না। তদ্রুপ কেউ যদি না করে, তাকেও গুনাহগার বলা যাবে না। তবে করাটা আফজল বা উত্তম। প্রকৃত জ্ঞানী তো তারাই, যারা ফরযকে ফরয, ওয়াজিবকে ওয়াজিব, সুন্নাতে মুয়াক্কাদাকে মুয়াক্কাদা, যায়েদাকে য়ায়েদা ও মুস্তাহাবকে মুস্তাহাব হিসেবে মেনে নিবে। জানা আবশ্যক যে, মুস্তাহাবকে যদি আমলের জন্য তাকিদ দেওয়া হয়, তা কখনই ওয়াজিব হবে না। ইহার বাহিরে যারা মত পোষন করবে তারা সীমা লঙ্ঘনকারী হিসেবে চিহ্নিত হবে।