৩৩৩ নং- সুওয়াল - মাসিক আল জামিয়ার ফেব্রুয়ারী সংখ্যায় “তারাবীহ নামায বা অন্যান্য সময়ে কোনআন শরীফ খতম করে পারিশ্রমিক গ্রহণ করা নাজায়েয বলা হয়েছে। আর উক্ত বক্তব্যের স্বপক্ষে কয়েকটি কিতাবের দলীলও পেশ করেছে এখন আমার প্রশ্ন হলো- উজরত বা পারিশ্রমিক সম্পর্কে তাদের উক্ত বক্তব্য শুদ্ধ হয়েছে কি?

সুওয়াল - মাসিক আল জামিয়ার ফেব্রুয়ারী সংখ্যায় তারাবীহ নামায বা অন্যান্য সময়ে কোনআন শরীফ খতম করে পারিশ্রমিক গ্রহণ করা নাজায়েয বলা হয়েছে। আর উক্ত বক্তব্যের স্বপক্ষে কয়েকটি কিতাবের দলীলও পেশ করেছে এখন আমার প্রশ্ন হলো- উজরত বা পারিশ্রমিক সম্পর্কে তাদের উক্ত বক্তব্য শুদ্ধ হয়েছে কি?
জাওয়াব - মূলতঃ কুরআন শরীফ পাঠ করে উজরত গ্রহণ করার ব্যাপারে ওলামায়ে মুতাআখ্খেরীনগণের মধ্যেও মতবিরোধ রয়েছে। তাঁদের মধ্যে খুব অল্প সংখ্যক আলেম উজরত গ্রহণ করা নাজায়েয বলেছেন। আর অধিকাংশ ওলামায়ে মুতাআখ্খেরীনগণের ফতওয়া হলো- কুরআন শরীফ খতম বা পাঠ করে পারিশ্রমিক গ্রহণ       করা জায়েয। ফিক্বাহ্ শাস্ত্রের উসূল হলো- ইখতিলাফযুক্ত মাসয়ালারঅধিকাংশ আলেমগণের মতই গ্রহণযোগ্য। যেমন রদ্দুল মোহতার কিতাবে উল্লেখ করা হয়-
وكذالو كان احد هما قول الاقدمناه من الحاوى.
অর্থঃ- (আল্লামা শামী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন) অধিকাংশ আলেমগণের মতের উপর ফতওয়া দেওয়া হবে।এটা আমি ইতিপূর্বে আল্লামা হাবী  রহমতুল্লাহি আলাইহি হতে বর্ণনা করেছি। তাছাড়া ফিক্বাহবিদগণের সর্বসম্মত মত হলো মতভেদযুক্ত মাসয়ালায় যেটাকে تر جيعø প্রাধান্য দেয়া হবে। তাঁর বিপরীত আমল করা ও ফতওয়া দেয়া সম্পূর্ণই হারাম। আর এটা স্পষ্ট প্রমাণিত যে, অধিকাংশ ওলামায়ে মুতাআখ্খেরীনগণের মতে কুরআন শরীফ খতম করে, উজরত গ্রহণ করা জায়েয। এটাকেই ترجيح প্রাধান্য দেয়া হয়েছে এবং এটার উপরই ফতওয়া।
          অতএব, কুরআন শরীফ খতম বা পাঠ করে পারিশ্রমিক গ্রহণ করার ব্যাপারে আল জামিয়ারউপরোক্ত বক্তব্য সম্পূর্ণই অশুদ্ধ ও জিহালতপূর্ণ। কারণ যেখানে আমরা আমাদের গবেষণা কেন্দ্র হতে প্রকাশিত লিফলেটে প্রায় ৩৩ খানা বিশ্ব বিখ্যাত ও নির্ভরযোগ্য কিতাবের নাম উল্লেখ করে বলেছি যে, উল্লেখিত সকল কিতাবেই কুরআন শরীফ পাঠ করে বা খতম করে পারিশ্রমিক গ্রহণ করা, ফতওয়া গ্রাহ্যমতে জায়েয বলা হয়েছে। সেখানে তার বিপক্ষে মাত্র ৭ খানা দলীল পেশ করা (তাও আবার অনির্ভরযোগ্য কিতাব হতে) তাদের জিহালতকে পুণরায় সুস্পষ্ট করে তোলে। আরো লক্ষণীয় বিষয় হলো- যেখানে আল্লামা ইবনে নজীম মিসরী  রহমতুল্লাহি আলাইহি, আল্লামা আলাউদ্দীন হাসফাকী  রহমতুল্লাহি আলাইহি, আল্লামা হামাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি, আল্লামা তাহতাবী  রহমতুল্লাহি আলাইহি, ইবনুশ শেহ্না  রহমতুল্লাহি আলাইহি আল্লামা কাজরুনী  রহমতুল্লাহি আলাইহি, আল্লামা আলী আকেন্দী  রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং ফতওয়ায়ে আলমগীরীর সংকলক, সাতশত আলেমসহ আরো বিখ্যাত প্রায় ৪০ জন ফক্বীহ্ বলেছেন, “কুরআন শরীফ পাঠ করে পারিশ্রমিক গহণ করা ফতওয়া গ্রাহ্য মতে জায়েয।সেখানে তাঁদের বক্তব্যের বিপরীতে আল্লামা রমলী, মাওলানা থানবী, মুফতী শফী সাহেবের বক্তব্যকে দলীল হিসাবে পেশ করা আহমকী নয় কি? মূলতঃ তারা যে, শরয়ী ইল্ম সম্পর্কে নেহায়েত অজ্ঞ,         তা আর বলার অপেক্ষাই রাখে না। কেননা তারা এর পূর্বে কদমবূছী ও লক্বব সম্পর্কেও মনগড়া, বিভ্রান্তিকর ও জিহালতপূর্ণ বক্তব্য পেশ করেছিল, যার দাঁত ভাঙ্গা জবাব আমাদের মাসিক আল বাইয়্যিনাতের বিগত সংখ্যাগুলোতে দেওয়া হয়েছে। ইনশাআল্লাহ  আগামী সংখ্যায় উজরত সম্পর্কে আল জামিয়ার জিহালতপূর্ণ বক্তব্য খন্ডনসহ কুরআন শরীফ খতম করে উজরত গ্রহণ যে জায়েয, তার বিস্তারীত ফতওয়া প্রকাশ করা হবে।
আবা-২২

উজরত ফতোয়া লিংক-
১. https://khawajarazi.blogspot.com/2018/10/blog-post_89.html
২.https://khawajarazi.blogspot.com/2018/10/blog-post_23.html
৩৩২ নং- সুওয়াল - বিত্র নামাজে দোয়া কুনূতের স্থলে কেউ যদি ভুলে ছানা পড়ে, তবে কি সিজ্দায়ে সাহু করতে হবে?

সুওয়াল - বিত্র নামাজে দোয়া কুনূতের স্থলে কেউ যদি ভুলে ছানা পড়ে, তবে কি সিজ্দায়ে সাহু করতে হবে?
জাওয়াব - দোয়া কুনুতের স্থলে ভুলে ছানা পড়ার পর স্মরণ হওয়ার সাথে সাথে দোয়া কুনুত পড়ে নিবে, এতে সিজ্দায়ে সাহু ওয়াজিব হবেনা।
আবা-২২
৩৩১ নং- সুওয়াল - কেউ যদি চার রাকায়াত নামায পূর্ণ করে অর্থাৎ আত্তাহিয়্যাতু পাঠ করার পর সালাম না ফিরায়ে ভুলে দাঁড়িয়ে যায়, তবে তার কি হুকুম?

সুওয়াল - কেউ যদি চার রাকায়াত নামায পূর্ণ করে অর্থাৎ আত্তাহিয়্যাতু পাঠ করার পর সালাম না ফিরায়ে ভুলে দাঁড়িয়ে যায়, তবে তার কি হুকুম?
জাওয়াব - শেষ বৈঠকে আত্তাহিয়্যাতু পড়ার পর সালাম ফিরানোর পূর্বে ভুলে যদি দাঁড়িয়ে যায়, আর পঞ্চম রাকায়াতে সিজ্দাহ্ করার পূর্বে স্মরণ হয়, তবে তৎক্ষণাৎ বসে আত্তাহিয়্যাতু না পড়ে একদিকে সালাম ফিরায়ে সিজ্দায়ে সাহু করবে, অতঃপর যথারীতি নামায শেষ করবে। আর যদি পঞ্চম রাকায়াতে সিজ্দা করার পর স্মরণ হয়, তাহলে আরো এক রাকায়াত পড়ে ৬ষ্ঠ রাকায়াত পূর্ণ করে সিজ্দায়ে সাহু দিয়ে নামায শেষ করবে। এতে চার রাকায়াত ফরজ এবং দুরাকায়াত নফল আদায় হবে। আর যদি পঞ্চম রাকায়তেই সিজ্দায়ে সাহু দিয়ে নামায শেষ করে ফেলে, তাহলে চার রাকায়াত ফরজ আদায় হবে এবং এক রাকায়াত বাতিল বলে গন্য হবে কিন্তু এটা করা ঠিক হবেনা।
আবা-২২
৩৩০ নং- সুওয়াল - কেউ যদি চতুর্থ রাকায়াতের পর বসতে ভুলে গিয়ে দাঁড়িয়ে পঞ্চম রাকায়াত পূর্ণ করে ফেলে, তাহলে কি সিজ্দায়ে সাহু দিলে চলবে?

সুওয়াল - কেউ যদি চতুর্থ রাকায়াতের পর বসতে ভুলে গিয়ে দাঁড়িয়ে পঞ্চম রাকায়াত পূর্ণ করে ফেলে, তাহলে কি সিজ্দায়ে সাহু দিলে চলবে?
জাওয়াব - চতুর্থ রাকায়াতের পর অর্থাৎ আখেরী বৈঠকে বসা ফরজ। এ ফরজ ভুলে তরক করার মধ্যে কয়েকটি নিয়ম রয়েছে- (১) ভুলে দাঁড়িয়ে যাওয়ার সময় যদি শরীরের নিম্নার্ধ সোজা হওয়ার পূর্বে স্মরণ হয়, তাহলে বসে আত্তাহিয়্যাতু, দরূদ শরীফ ও দোয়া মাছূরা পড়ে সালাম ফিরাবে, সিজ্দায়ে সাহু করতে হবেনা। নামায শুদ্ধভাবে আদায় হয়ো যাবে। (২) ভুলে যদি সম্পূর্ণ দাঁড়িয়ে যাওয়ার পর স্মরণ আসে অথবা দাঁড়ানোর পর সূরা ফাতিহা পড়ার পর স্মরণ হয় অথবা পঞ্চম রাকায়াতে রুকু করার পরও এমনকি সিজ্দার পূর্বে যদি স্মরণ হয়, তাহলে বসে আত্তাহিয়্যাতু পড়ে সিজ্দায়ে সাহু করতে হবে এবং বাকী নামায যথারীতি শেষ করতে হবে। (৩) আর যদি পঞ্চম রাকায়াতে সিজ্দা করার পর স্মরণ হয়, তাহলে না বসে দাঁড়িয়ে আরো এক রাকায়াত পড়ে ছয় রাকায়াত পূর্ণ করবে। এ নামায নফল হয়ে যাবে। পুণরায় তাকে চার রাকায়াত ফরজ আদায় করতে হবে। (৪) যদি ৬ষ্ঠ রাকায়াত না মিলিয়ে পঞ্চম রাকায়াত পড়ে নামায শেষ করে ফেলে, তবে এক রাকায়াত বাতিল হয়ে চার রাকায়াত নফল হবে। ফরজ চার রাকায়াত পুণরায় আদায় করতে হবে।
আবা-২২
৩২৯ নং- সুওয়াল - কেউ যদি আত্তাহিয়্যাতু পড়তে বসে ভুলে সূরা ফাতিহা বা অন্য কিছু পড়ে বা নামাযের নিয়্যত বেঁধে ছানা পড়ার পরিবর্তে ভুলে দোয়া কুনুত বা অন্য কিছু পড়ে অথবা ফরজ নামাযের তৃতীয় বা চতুর্থ রাকায়াতে সূরা ফাতিহার পরিবর্তে আত্তাহিয়্যাতু বা অন্য কিছু পড়ে, তাহলে কি সিজ্দায়ে সাহু ওয়াজিব হবে?

সুওয়াল - কেউ যদি আত্তাহিয়্যাতু পড়তে বসে ভুলে সূরা ফাতিহা বা অন্য কিছু পড়ে বা নামাযের নিয়্যত বেঁধে ছানা পড়ার পরিবর্তে ভুলে দোয়া কুনুত বা অন্য কিছু পড়ে অথবা ফরজ নামাযের তৃতীয় বা চতুর্থ রাকায়াতে সূরা ফাতিহার পরিবর্তে আত্তাহিয়্যাতু বা অন্য কিছু পড়ে, তাহলে কি সিজ্দায়ে সাহু ওয়াজিব হবে?
জাওয়াব - আত্তাহিয়্যাতু পড়তে বসে ভুলে অন্য কিছু যেমন সূরা ফাতিহা, ছানা, দোয়া কুনুত ইত্যাদি পড়লে সিজ্দায়ে সাহু ওয়াজিব হবে। আর নামাজের নিয়্যত বেঁধে ছানা পড়ার পরিবর্তে ভুলে দোয়া কুনুত বা আত্তাহিয়্যাতু ইত্যাদি কোন কিছু পড়লে অথবা ফরজ নামাযের তৃতীয় বা চতুর্থ রাকায়াতে সূরা ফাতিহার পরিবর্তে অন্য কিছু পড়লে যেমন- আত্তাহিয়্যাতু, ছানা বা যে কোন সূরা, তাহলে সিজ্দায়ে সাহু ওয়াজিব হবেনা। (সমূহ ফিক্বাহ্র কিতাব)
আবা-২২
৩২৮ নং- সুওয়াল - জানাযার নামায মাকরূহ্ ওয়াক্তে প্রস্তুত হলে উক্ত ওয়াক্তে তা আদায় করলে, আদায় হবে কি?

সুওয়াল - জানাযার নামায মাকরূহ্ ওয়াক্তে প্রস্তুত হলে উক্ত ওয়াক্তে তা আদায় করলেআদায় হবে কি?
জাওয়াব - হ্যাঁ, মাকরূহ্ তানযীহীর সাথে আদায় হবে। তবে ভাল ওয়াক্তে জানাযা প্রস্তুত হলে ভাল ওয়াক্তেই আদায় করতে হবে, যেন মাকরূহ্ ওয়াক্তে গিয়ে না পৌঁছে। আর ভাল ওয়াক্তে প্রস্তুত হলে তা মাকরূহ্ ওয়াক্তে পৌঁছানো উচিৎ হবেনা। (দুররুল মুখতার, জাওয়ারা তুন্নাইয়্যারাহ্)
আবা-২২
৩২৭ নং- সুওয়াল - তিলাওয়াতে সিজ্দাহ্ মাকরূহ্ ওয়াক্তে আদায় করা যায় কি?

সুওয়াল - তিলাওয়াতে সিজ্দাহ্ মাকরূহ্ ওয়াক্তে আদায় করা যায় কি?
জাওয়াব - তিলাওয়াতে সিজ্দাহ্ মাকরূহ ওয়াক্তে আদায় করা মাকরূহ্ তান্যিহী। বিলম্ব করে ভাল ওয়াক্তে আদায় করা উত্তম। (দুররুল মুখতার)
আবা-২২
৩২৬ নং- সুওয়াল - কোন এক ব্যক্তির সাথে আলোচনা কালে সে এক পর্যায়ে বললো- ইসলামী দলগুলির কারণে বাংলাদেশে ইসলাম টিকে রয়েছে? ইহা কতটুকা শরীয়ত সম্মত? দলীলসহ জানতে চাই।

সুওয়াল - কোন এক ব্যক্তির সাথে আলোচনা কালে সে এক পর্যায়ে বললো- ইসলামী দলগুলির কারণে বাংলাদেশে ইসলাম টিকে রয়েছে? ইহা কতটুকা শরীয়ত সম্মত? দলীলসহ জানতে চাই।

জাওয়াব - উপরোক্ত বক্তব্য শুদ্ধ হয়নি। কারণ দ্বীন ইসলাম টিকানোর মালিক কোন ব্যক্তি, দল, সম্প্রদায়, সমাজ এবং রাষ্ট্র কেহই নয় বা কাউকে জিম্মাদারীও দেয়া হয়নি। মহান আল্লাহ পাক তিনিই দ্বীন টিকাবেন, তবে মানুষের মাধ্যমে। কারণ মানুষের জন্য ইসলাম দেয়া হয়েছে। কাজেই একথা বলা কারো জন্য শুদ্ধ হবে না যে, আমরা দ্বীন টিকিয়ে রেখেছি। মহান আল্লাহ পাক  তিনি বলেন,
انا نحن نزلنا الذكر وانا له لحافظون.
অর্থঃ আমি কুরআন শরীফ নাযিল করেছি এবং আমিই ইহার হিফাযতকারী।
          তদ্রূপ ইসলাম মহান আল্লাহ্ পাক তিনি দিয়েছেন এবং মহান আল্লাহ পাক তিনিই ইহার হিফাজতকারী। কারণ বর্তমানে ইসলামী দলগুলি যে পদ্ধতিতে অর্থাৎ গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে যে আন্দোলন করছে, তা শরীয়ত সম্মত নয়। কারণ মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন,
ان الدين عند الله الاسلام.
অর্থঃ- মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট একমাত্র দ্বীন হলো- ইসলাম।
          মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো বলেন,
ومن يبتغى غير الاسلام دينا فلن يقبل منه وهو فى الاخرة من ال خاسرين.
অর্থঃ- যে ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্ম বা নিয়ম-নীতি তালাশ (আমল বা পালন) করে, তার থেকে সেটা গ্রহণ করা হবেনা বরং সে পরকালে ক্ষতিগ্রস্থদের অন্তর্ভূক্ত হবে।
          মূলতঃ গণতান্ত্রিক ভিত্তিতে আন্দোলন শরীয়ত সম্মত নয়। শরীয়ত সম্মত আন্দোলন হচ্ছে খিলাফত আলা মিন হাযিন্নুবুওওয়াতঅর্থাৎ নুবুওওয়াতের দৃষ্টিতে খিলাফত কায়েম করার জন্য কোশেশ বা চেষ্টা করা।
          মহান আল্লাহ পাক তিনি কুরআন শরীফে ইরশাদ করেন,
تعا ونوا على البرو التقوى ولا تعاونوا على الاثم والعدوان.
অর্থঃ- তোমরা নেকী ও পরহেযগারীর মধ্যে সাহায্য কর। পাপ এবং শত্রুতার (খোদাদ্রোহীতার) মধ্যে সাহায্য করোনা।
          অর্থাৎ যে সমস্ত কাজ দ্বীনি খিদমতের আঞ্জাম দেয়, সে সমস্ত কাজে সাহায্য-সহযোগিতা করতে হবে। আর যে সমস্ত কাজ দ্বীনের ক্ষতি সাধন করে, সে সমস্ত কাজে সাহায্য-সহযোগিতা করা যাবেনা।
          অতএব, গণতান্ত্রিক ভিত্তিতে আন্দোলন করে দ্বীন হিফাজত তো দূরের কথা বরং ফিকির (চিন্তা) করলে দেখা যাবে- অতি সুক্ষ্মভাবে মুসলমানদের মধ্যে ইসলামের নামে বেদ্বীনি, বদ্দ্বীনি, কুফরী, গোমরাহী ইত্যাদি মতবাদ বা আক্বীদা প্রবেশ করানো হচ্ছে।

আবা-২২
৩২৫ নং- সুওয়াল - আমাদের গোরস্থানের দক্ষিণ পশ্চিম কোনে পৃথকভাবে বেষ্টনী প্রাচীর দিয়ে একখানা ঘর উঠানো আছে, এখানে জানাযার নামায আদায় করা হয় এবং প্রতি বছর রমযান মাসে স্থানীয় লোকদের সুযোগ সুবিধামত তিন দশকে তিনটি দিন নির্ধারণ করতঃ কুরআন খতম ও মিলাদ মাহ্ফিল করে মৃত ব্যক্তিদের ইসালে সওয়াবের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। গোরস্থানের জানাযা চত্বরে এভাবে ইসালে সওয়াবের মাহ্ফিল করা শরীয়ত সম্মত কিনা জানালে কৃতার্থ হব।   প্রকাশ থাকে যে কুরআন খতম বিনা পারিশ্রমিকে জন সাধারণ স্বেচ্ছা প্রণোদিত হয়েই করে থাকে।

সুওয়াল - আমাদের গোরস্থানের দক্ষিণ পশ্চিম কোনে পৃথকভাবে বেষ্টনী প্রাচীর দিয়ে একখানা ঘর উঠানো আছে, এখানে জানাযার নামায আদায় করা হয় এবং প্রতি বছর রমযান মাসে স্থানীয় লোকদের সুযোগ সুবিধামত তিন দশকে তিনটি দিন নির্ধারণ করতঃ কুরআন খতম ও মিলাদ মাহ্ফিল করে মৃত ব্যক্তিদের ইসালে সওয়াবের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। গোরস্থানের জানাযা চত্বরে এভাবে ইসালে সওয়াবের মাহ্ফিল করা শরীয়ত সম্মত কিনা জানালে কৃতার্থ হব।
          প্রকাশ থাকে যে কুরআন খতম বিনা পারিশ্রমিকে জন সাধারণ স্বেচ্ছা প্রণোদিত হয়েই করে থাকে।
জাওয়াব - কুরআন শরীফ খতম ও মিলাদ মাহ্ফিলের মাধ্যমে ইসালে সওয়াব করা জায়েয রয়েছে। সেটা মসজিদে, কারো বড়ীতে, কোন মাঠে প্যান্ডেল করে এবং যেখানে জানাযার জন্য নির্দিষ্ট স্থান রয়েছে ইত্যাদি স্থানে ইসালে সওয়াব করা জায়েয রয়েছে।
আবা-২২
৩২৪ নং- সুওয়াল -এক জুময়ার নামায শেষে ইমাম সাহেব সমবেত মুসল্লীগণকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনারা সিজদায় আগে নাক দেন, না কপাল দেন? আমি এবং অন্যান্য মুসুল্লীগণ সমস্বরে বললাম, নাক আগে, পরে কপাল। তিনি বললেন, কপাল আগে পরে নাক। উঠার সময় আগে কপাল পরে নাক। কথা হলো আল্লাহ পাক উনার নিকট একটি সিজদার মূল্য অনেক। সেমতে সহীহ শুদ্ধ তরীকা কোনটি?

সুওয়াল - মাসিক মদীনা, ফেব্রুয়ারী/৯৫ নিম্নলিখিত প্রশ্নটি ছাপানো হয়।
প্রশ্নঃ- এক জুময়ার নামায শেষে ইমাম সাহেব সমবেত মুসল্লীগণকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনারা সিজদায় আগে নাক দেন, না কপাল দেন? আমি এবং অন্যান্য মুসুল্লীগণ সমস্বরে বললাম, নাক আগে, পরে কপাল। তিনি বললেন, কপাল আগে পরে নাক। উঠার সময় আগে কপাল পরে নাক। কথা হলো আল্লাহ পাক উনার নিকট একটি সিজদার মূল্য অনেক। সেমতে সহীহ শুদ্ধ তরীকা কোনটি?
উত্তরঃ- সিজদার সময় মাটিতে অঙ্গ স্থাপন করার শুদ্ধতম ধারাবাহিকতা হচ্ছে প্রথমে কপাল স্থাপন করতে হবে। উঠার সময় প্রথমে নাক, তারপর কপাল, তারপর হাত ও সর্বশেষ হাঁটু উঠবে। অর্থাৎ সিজদায় যাওয়ার সময় নীচের দিক শুরু করতে হবে এবং উঠার সময় উপরের দিক থেকে শুরু হবে।
জাওয়াব ঃ- মদীনা পত্রিকায় বর্ণিত উপরোক্ত তরীকা বা নিয়ম সুন্নাতের পরিপন্থী। মদীনা সম্পাদকের মনগড়া মতামত যা ভুল ও পরিত্যাজ্য।  সিজ্দায় যাওয়ার সময় শুদ্ধতম তরীকা বা নিয়ম হচ্ছে- রুকু থেকে সিজ্দায় যাওয়ার সময় প্রথমে হাঁটু, অতঃপর হাত, অতঃপর নাক ও সর্বশেষে কপাল স্থাপন করতে হবে এবং সিজ্দা থেকে উঠার সময় প্রথমে কপাল, অতঃপর নাক, অতঃপর হাত এবং সর্বশেষে হাঁটু উঠাতে হবে। (সমূহ ফিকাহ্র কিতাব দ্রষ্টব্য)।
আবা-২২
৩২৩ নং- সুওয়াল -  সিজ্দার তাসবীহ্র স্থানে ভূল বশতঃ রুকুর তাসবীহ যদি পড়া হয়, তাহলে করণীয় কি?

সুওয়াল - মাসিক মদীনা, ফেব্রুয়ারী/৯৫ সংখ্যায় নিম্নোক্ত প্রশ্নোত্তর ছাপা হয়।
প্রশ্নঃ- সিজ্দার তাসবীহ্র স্থানে ভূল বশতঃ রুকুর তাসবীহ যদি পড়া হয়, তাহলে করণীয় কি?
উত্তরঃ- নামাযের মধ্যে স্মরণ হলে ছেজদাহ সাহু দিতে হবে। নামাযের মধ্যে স্মরণ না হলে নামায হয়ে যাবে নতুন করে নামায পড়তে হবে না।
          আমরা জানি রুকু, সিজ্দার তাসবীহ পাঠ করা সুন্নাত। আর সিজ্দায়ে সাহু ওয়াজিব হয় তাখীরে রুকন ও তরকে ওয়াজিবের কারণে। এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে- মদীনার উত্তর কি সঠিক, না আমাদের জানাটা সঠিক?
জাওয়াবঃ- মাসিক মদীনার উত্তর অশুদ্ধ বা ভূল হয়েছে। আর আপনাদের জানাটাই বিশুদ্ধ বা সহীহ্। কারণ সুন্নাত তরক করার কারণে স্জিদায়ে সাহু ওয়াজিব হয় না বরং তাখীরে রুকন (নামাযের মধ্যে কোন ফরজ আদায় করতে তিন তাসবীহ পরিমাণ সময় দেরী করা) ও তরকে ওয়াজিব (ভুলে কোন ওয়াজিব তরক করলে) এর কারণেই সিজ্দায়ে সাহু ওয়াজিব হয়। (কুদুরী, হেদায়া, নেহায়া, শরহে বেকায়া  ইত্যাদি)।
আবা-২২
৩২২ নং- সুওয়াল - হায়েয, নেফাস ও ইস্তেহাজার সময় নামায, রোজার হুকুম কি?

সুওয়াল - হায়েয, নেফাস ও ইস্তেহাজার সময় নামায, রোজার হুকুম কি?
জাওয়াব - হায়েয ও নেফাসের সময় নামাযও পড়তে হবে না এবং রোজাও রাখতে হবে না। তবে সুস্থ হওয়ার পর নামাযের কাজ্বা আদায় করতে হবেনা কিন্তু ফরজ রোজার কাজ্বা আদায় করতে হবে। আর ইস্তেহাজার সময় নামায, রোজা উভয়ই করতে হবে। (গায়াতুল আওতার) 
আবা-২২