৩৩৩ নং- সুওয়াল - মাসিক আল জামিয়ার ফেব্রুয়ারী সংখ্যায় “তারাবীহ নামায বা অন্যান্য সময়ে কোনআন শরীফ খতম করে পারিশ্রমিক গ্রহণ করা নাজায়েয বলা হয়েছে। আর উক্ত বক্তব্যের স্বপক্ষে কয়েকটি কিতাবের দলীলও পেশ করেছে এখন আমার প্রশ্ন হলো- উজরত বা পারিশ্রমিক সম্পর্কে তাদের উক্ত বক্তব্য শুদ্ধ হয়েছে কি?


সুওয়াল - মাসিক আল জামিয়ার ফেব্রুয়ারী সংখ্যায় তারাবীহ নামায বা অন্যান্য সময়ে কোনআন শরীফ খতম করে পারিশ্রমিক গ্রহণ করা নাজায়েয বলা হয়েছে। আর উক্ত বক্তব্যের স্বপক্ষে কয়েকটি কিতাবের দলীলও পেশ করেছে এখন আমার প্রশ্ন হলো- উজরত বা পারিশ্রমিক সম্পর্কে তাদের উক্ত বক্তব্য শুদ্ধ হয়েছে কি?
জাওয়াব - মূলতঃ কুরআন শরীফ পাঠ করে উজরত গ্রহণ করার ব্যাপারে ওলামায়ে মুতাআখ্খেরীনগণের মধ্যেও মতবিরোধ রয়েছে। তাঁদের মধ্যে খুব অল্প সংখ্যক আলেম উজরত গ্রহণ করা নাজায়েয বলেছেন। আর অধিকাংশ ওলামায়ে মুতাআখ্খেরীনগণের ফতওয়া হলো- কুরআন শরীফ খতম বা পাঠ করে পারিশ্রমিক গ্রহণ       করা জায়েয। ফিক্বাহ্ শাস্ত্রের উসূল হলো- ইখতিলাফযুক্ত মাসয়ালারঅধিকাংশ আলেমগণের মতই গ্রহণযোগ্য। যেমন রদ্দুল মোহতার কিতাবে উল্লেখ করা হয়-
وكذالو كان احد هما قول الاقدمناه من الحاوى.
অর্থঃ- (আল্লামা শামী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন) অধিকাংশ আলেমগণের মতের উপর ফতওয়া দেওয়া হবে।এটা আমি ইতিপূর্বে আল্লামা হাবী  রহমতুল্লাহি আলাইহি হতে বর্ণনা করেছি। তাছাড়া ফিক্বাহবিদগণের সর্বসম্মত মত হলো মতভেদযুক্ত মাসয়ালায় যেটাকে تر جيعø প্রাধান্য দেয়া হবে। তাঁর বিপরীত আমল করা ও ফতওয়া দেয়া সম্পূর্ণই হারাম। আর এটা স্পষ্ট প্রমাণিত যে, অধিকাংশ ওলামায়ে মুতাআখ্খেরীনগণের মতে কুরআন শরীফ খতম করে, উজরত গ্রহণ করা জায়েয। এটাকেই ترجيح প্রাধান্য দেয়া হয়েছে এবং এটার উপরই ফতওয়া।
          অতএব, কুরআন শরীফ খতম বা পাঠ করে পারিশ্রমিক গ্রহণ করার ব্যাপারে আল জামিয়ারউপরোক্ত বক্তব্য সম্পূর্ণই অশুদ্ধ ও জিহালতপূর্ণ। কারণ যেখানে আমরা আমাদের গবেষণা কেন্দ্র হতে প্রকাশিত লিফলেটে প্রায় ৩৩ খানা বিশ্ব বিখ্যাত ও নির্ভরযোগ্য কিতাবের নাম উল্লেখ করে বলেছি যে, উল্লেখিত সকল কিতাবেই কুরআন শরীফ পাঠ করে বা খতম করে পারিশ্রমিক গ্রহণ করা, ফতওয়া গ্রাহ্যমতে জায়েয বলা হয়েছে। সেখানে তার বিপক্ষে মাত্র ৭ খানা দলীল পেশ করা (তাও আবার অনির্ভরযোগ্য কিতাব হতে) তাদের জিহালতকে পুণরায় সুস্পষ্ট করে তোলে। আরো লক্ষণীয় বিষয় হলো- যেখানে আল্লামা ইবনে নজীম মিসরী  রহমতুল্লাহি আলাইহি, আল্লামা আলাউদ্দীন হাসফাকী  রহমতুল্লাহি আলাইহি, আল্লামা হামাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি, আল্লামা তাহতাবী  রহমতুল্লাহি আলাইহি, ইবনুশ শেহ্না  রহমতুল্লাহি আলাইহি আল্লামা কাজরুনী  রহমতুল্লাহি আলাইহি, আল্লামা আলী আকেন্দী  রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং ফতওয়ায়ে আলমগীরীর সংকলক, সাতশত আলেমসহ আরো বিখ্যাত প্রায় ৪০ জন ফক্বীহ্ বলেছেন, “কুরআন শরীফ পাঠ করে পারিশ্রমিক গহণ করা ফতওয়া গ্রাহ্য মতে জায়েয।সেখানে তাঁদের বক্তব্যের বিপরীতে আল্লামা রমলী, মাওলানা থানবী, মুফতী শফী সাহেবের বক্তব্যকে দলীল হিসাবে পেশ করা আহমকী নয় কি? মূলতঃ তারা যে, শরয়ী ইল্ম সম্পর্কে নেহায়েত অজ্ঞ,         তা আর বলার অপেক্ষাই রাখে না। কেননা তারা এর পূর্বে কদমবূছী ও লক্বব সম্পর্কেও মনগড়া, বিভ্রান্তিকর ও জিহালতপূর্ণ বক্তব্য পেশ করেছিল, যার দাঁত ভাঙ্গা জবাব আমাদের মাসিক আল বাইয়্যিনাতের বিগত সংখ্যাগুলোতে দেওয়া হয়েছে। ইনশাআল্লাহ  আগামী সংখ্যায় উজরত সম্পর্কে আল জামিয়ার জিহালতপূর্ণ বক্তব্য খন্ডনসহ কুরআন শরীফ খতম করে উজরত গ্রহণ যে জায়েয, তার বিস্তারীত ফতওয়া প্রকাশ করা হবে।
আবা-২২

উজরত ফতোয়া লিংক-
১. https://khawajarazi.blogspot.com/2018/10/blog-post_89.html
২.https://khawajarazi.blogspot.com/2018/10/blog-post_23.html

0 Comments: