৫২১ নং সুওয়াল : স্বর্ণ বা রৌপ্য দ্বারা দাঁত, নাক ইত্যাদি বাঁধাই করা জায়িয কি?

সুওয়াল : স্বর্ণ বা রৌপ্য দ্বারা দাঁত, নাক ইত্যাদি বাঁধাই করা জায়িয কি?

জাওয়াব : রৌপ্য দ্বারা দাঁত বাঁধাই করা জায়িয আছে। স্বর্ণ দ্বারা বাঁধাই জায়িয নেই। আর কর্তিত নাক স্বর্ণ, রৌপ্য উভয়ই দ্বারা বাঁধা জায়িয রয়েছে। ছাহাবী হযরত আলফাজ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার এক জ্বিহাদে নাক কাটা গিয়েছিল। যার কারণে প্রথমে তিনি রৌপ্য দ্বারা নাক প্রস্তুত করে নিয়েছিলেন, তাতে দূর্গন্ধ হওয়ায় নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে স্বর্ণের নাক তৈরী করার অনুমতি দিয়েছিলেন। এটাই বিশুদ্ধ ফতওয়া। যদিও কোন কোন কিতাবে এর বিপরীত উল্লেখ করা হয়েছে। (জামে সগীর, তাহাবী, শামী, তাহতাবী, জরুরী ফতওয়া)
আবা-৩০ 
৫২০ নং- সুওয়াল : ‘মুসলিম শরীফ’ উনার দ্বিতীয় খণ্ডের ৩৩৬ পৃষ্ঠার একখানা পবিত্র হাদীছ শরীফ সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত জানতে চাই। যা বর্ণনা করেছেন, হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু। যার মধ্যে তাক্বদীর সম্পর্কে বলা হয়েছে। অর্থাৎ যার তাক্বদীরে যে পাপ লেখা রয়েছে, সে অবশ্যই সে পাপ করবে। তাহলে মহান আল্লাহ পাক কি বান্দার জন্য পাপ কাজ করা নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন? পাপ কাজ কি বান্দা নিজ থেকে করে থাকে, না মহান আল্লাহ পাক করিয়ে থাকেন। দয়া করে আমাকে বিস্তারিত জানাবেন।

সুওয়াল : মুসলিম শরীফউনার দ্বিতীয় খণ্ডের ৩৩৬ পৃষ্ঠার একখানা পবিত্র হাদীছ শরীফ সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত জানতে চাই। যা বর্ণনা করেছেন, হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু। যার মধ্যে তাক্বদীর সম্পর্কে বলা হয়েছে। অর্থাৎ যার তাক্বদীরে যে পাপ লেখা রয়েছে, সে অবশ্যই সে পাপ করবে। তাহলে মহান আল্লাহ পাক কি বান্দার জন্য পাপ কাজ করা নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন? পাপ কাজ কি বান্দা নিজ থেকে করে থাকে, না মহান আল্লাহ পাক করিয়ে থাকেন। দয়া করে আমাকে বিস্তারিত জানাবেন।

জাওয়াব : হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, “নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি আদম সন্তানের জন্য ব্যভিচারের অংশ নির্ধারণ করে দিয়েছে (আদম সন্তান যে ব্যভিচার করবে, সেটা মহান আল্লাহ পাক উনার ইলমে রয়েছে), তা নিশ্চয়ই করবে। চোখের জীনা হচ্ছে- দৃষ্টি করা, জবানের জীনা হচ্ছে- কথা বলা, নফস সেটা আকাঙ্খা করে এবং আগ্রহ প্রকাশ করে, আর লজ্জাস্থান সেটাকে সত্য বা মিথ্যায় পরিণত করে।” (পবিত্র বুখারী শরীফ পবিত্র মুসলিম শরীফ)
অনুরূপ সমার্থবোধক আরো পবিত্র হাদীছ শরীফ বুখারী ও মুসলিম শরীফ উনাদের মধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে।
উপরোক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে প্রথমে তাক্বদীর সম্পর্কে বলা হয়েছে। অর্থাৎ আদম সন্তানের তাক্বদীরে যা থাকবে, তা অবশ্যই সংঘটিত হবে। দ্বিতীয়তঃ জীনার প্রকারভেদ সম্পর্কে বলা হয়েছে। একটি হচ্ছে হাক্বীক্বী জীনা, যা লজ্জাস্থান দ্বারা সংঘটিত হয়ে থাকে। অপরটি হচ্ছে- মাজাজী জীনা, যা অঙ্গ-প্রতঙ্গের দ্বারা সংঘটিত হয়।
প্রশ্নে প্রশ্নকারী যা জানতে চেয়েছেন, তা হচ্ছে- মহান আল্লাহ পাক কি বান্দার জন্য পাপ কাজ নির্দিষ্ট করে দিয়েছে, যা সে অবশ্যই করবে? না, মহান আল্লাহ পাক কোন বান্দার জন্য কোন পাপ কাজ নির্দিষ্ট করে দেননি। এ কথা বুঝতে হলে প্রথমে তাক্বদীর সম্পর্কে বুঝতে হবে।
তাক্বদীরের অর্থ হচ্ছে- নির্ধারণ করা। মহান আল্লাহ পাক যদি নিজের তরফ থেকে বান্দার তাক্বদীর নির্ধারণ করে দেন, তাহলে বান্দার নেক কাজের ও বদ কাজের হিসাব-নিকাশের ফয়সালার অর্থ কি হতে পারে?  মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন,
خلق المرت والحيوة ليلو كم ايكم احسن عملا.
অর্থ : মহান আল্লাহ পাক তিনি হায়াত ও মউতকে সৃষ্টি করেছেন পরীক্ষা করার জন্য, কার আমল উত্তম।” (পবিত্র সূরা মূলক শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ, ২)
মূলত : মহান আল্লাহ পাক তিনি কোন বান্দার জন্য বেহেস্ত বা দোযখ, ভাল-মন্দ কোন কিছুই নির্দিষ্ট করে দিননি। বরং সব কিছুই মহান আল্লাহ পাক উনার ইলমে রয়েছে। সে ইলম থেকে প্রত্যেক বান্দার আমল লৌহ মাহফুজে লিপিবদ্ধ করে দিয়েছেন। আর এটাই হচ্ছে তাক্বদীর।
মহান আল্লাহ পাক তিনি হলেন,
عالم الغيب والشهادة
অর্থ : মহান আল্লাহ পাক তিনি দৃশ্য-অদৃশ্য সব বিষয়ে সম্পর্কে অবহিত (বিনা মধ্যস্থতায়)।
অতএব, মহান আল্লাহ পাক তিনি বান্দাদের ইহলৌকিক ও পারলৌকিক ভাল-মন্দ যাবতীয় কার্যাবলী সম্পর্কে অবহিত। অর্থাৎ কে বেহেস্তে যাবে, কে দোযখে যাবে, কে নেক কাজ করবে, কে বদ কাজ করবে, মহান আল্লাহ পাক তিনি সবকিছুই জানেন। এর অর্থ এ নয় যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি কোন বান্দাকে বেহেস্তী করে দিয়েছেন বা জাহান্নামী করে দিয়েছেন অথবা নেককার করে দিয়েছেন বা বদকার করে দিয়েছেন।
তাক্বদীরের ব্যাখ্যা সঠিকভাবে না বুঝার কারণে উপরোক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার ব্যাখ্যা মানুষ ভুল করে থাকে। তাক্বদীর যদি মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে নির্দিষ্ট করে দেয়া হতো, তাহলে মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনার শানে এ পবিত্র আয়াত শরীফ নাযিল করতেন না। মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন,
فاما يأتينكم منى هدى فمن تبع هذاى فلاخوف عليهم ولاهم يحزنون- والذبوا باياتنا فاولئك احصاب النار- هم فيها خالدون.
অর্থ : অতঃপর যদি আমার তরফ থেকে তোমাদের প্রতি কোন হিদায়েত পৌঁছে, তবে যে ব্যক্তি সে হিদায়েতের ইত্তেবা করবে, তার কোন ভয় থাকবেনা এবং সে চিন্তিতও হবেনা। আর যারা কুফরী করে এবং আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যারোপ করে, তারাই হবে জাহান্নামী। সেখানে তারা অনন্তকাল ধরে অবস্থান করবে।
অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি বান্দাকে ভাল-মন্দ কাজ করার ইখতিয়ার দিয়ে দিয়েছেন।
তাক্বদীরের হাক্বীক্বত না বুঝার কারণে উম্মতে হাবীবী উনাদের মধ্যে কয়েকটি ফিরকার উদ্ভব ঘটেছে। যারা আহলে নাযীর অন্তর্ভূক্ত নয় বরং আহলে নারের অন্তর্ভূক্ত। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে, মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
ستفرق امتى على ئلاث وسبعين فرقة كلهم فى النار الاملة واحدة قيل من هى رسول الله صلى الله عليه وسلم قال ما انا عليه واصحابى.
অর্থ : অতিশীঘ্রই আমার উম্মত ৭৩ দলে বিভক্ত হবে, তন্মধ্যে একটি দল ব্যতীত ৭২টি দলই জাহান্নামে যাবে। তখন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা জিজ্ঞাসা করলেন, কোন দল নাযাত প্রাপ্ত ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! তিনি বলেন, যারা আমি এবং আমার হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের মত ও পথের উপর কায়িম, তারা নাযাত প্রাপ্ত দল।” (তিরমিযী, আবূ দাউদ, আহমদ শরীফ)
অর্থাৎ উম্মতে হাবীবী উনাদের মধ্যে ৭৩ দল হবে। একদল হবে নাযাত প্রাপ্ত, আর বাকী ৭২ দল হবে জাহান্নামী। তার মধ্যে বিশেষ দুটি দল হচ্ছে- (১) ক্বদরীয়া, (২) জাবারীয়া। ক্বদরীয়া সম্প্রদায়ের মূল আক্বীদা হচ্ছে- তাক্বদীরের মধ্যে মহান আল্লাহ পাক উনার কোন হাত নেই। অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার কোন ক্ষমতাই খাটেনা তাক্বদীরের মধ্যে। তাক্বদীরের নিয়ন্ত্রণকারী হচ্ছে মানুষ স্বযং। অর্থাৎ তাক্বদীর মানুষের ইখতিয়ারে। এ আক্বীদার জন্য তারা জাহান্নামী।
আর জাবারীয়া সম্প্রদায়ের মূল আক্বীদা হচ্ছে- তাক্বদীর সম্পূর্ণরূপে মহান আল্লাহ পাক উনার নিয়ন্ত্রণে। এতে মানুষের কোন ইখতিয়ার নেই। অর্থাৎ ভাল-মন্দ, নেক কাজ, বদ কাজ, জীনা করা, শরাব পান করা, সুদ খাওয়া, জুয়া খেলা, ঘুষ খাওয়া, চুরি করা, মিথ্যা বলা ইত্যাদি সর্ব প্রকার পাপ কার মানুষ মহান আল্লাহ পাক উনার হুকুমে করে থাকে। এ আক্বীদার জন্যই তারা জাহান্নামী।
উল্লেখ্য যে, একদিন জাবারীয়া আক্বীদাভূক্ত জনৈক ব্যক্তি এক মুসলমানের আঙ্গুর ফলের বাগানে গিয়ে চুরি করার নিয়তে ফল ছেড়া শুরু করলো। তখন বাগানের মালিক এসে তাকে জিজ্ঞেস করলো, তুমি কে? সে জাবারীয়া উত্তর দিল, আমি মহান আল্লাহ পাক উনার বান্দা। তুমি এখানে কি করতেছ? সে জাবারীয়া উত্তর দিল, মহান আল্লাহ পাক উনার ওয়াস্তে চুরি করতেছি। তখন বাগানের মালিক চিন্তা করলো যে, এখন আমি কি করবো। কারণ, সে তো মহান আল্লাহ পাক উনার ওয়াস্তে চুরি করতেছে। হঠাৎ মালিকের মাথায় বুদ্ধি আসলো, তখন সে একটা লাঠি নিয়ে সেই জাবারীয়াকে মারা শুরু করলো। তখন জাবারীয়া বললো, তুমি কে? মালিক বললো, আমি মহান আল্লাহ পাক উনার বান্দা। তখন জাবারীয়া বললো, আহা! তুমি কি করতেছ?  মালিক বললো, আমি  মহান আল্লাহ পাক উনার ওয়াস্তে মারতেছি। তখন জাবারীয়া বেদম প্রহার সহ্য করতে না পেরে বলতে লাগলো, “জাবারীয়া আক্বীদা থেকে তওবা করলাম। মানুষের (আমলের) ইখতিয়ার রয়েছে, ইখতিয়ার রয়েছে, ইখতিয়ার রয়েছে।ভাল-মন্দ করার ইখতিয়ার বান্দার রয়েছে।
তাক্বদীর প্রসঙ্গে হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে, ক্বদরীয়া সম্প্রদায় বলে, তাক্বদীরের নিয়ন্ত্রণকারী মানুষ। এতে মহান আল্লাহ পাক উনার কোন ইখতিয়ার নেই। আর জাবারীয়া সম্প্রদায় বলে, তাক্বদীরের নিয়ন্ত্রণকারী মহান আল্লাহ পাক। এতে মানুষের কোন ইখতিয়ার নেই। কোনটি সঠিক?
তখন হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি প্রশ্নকারীকে বললেন, “দাঁড়াও।তখন সে এক পা উঠালো, পুনঃরায় তিনি তাকে বললেন, “দ্বিতীয় পা উঠাও।সে জবাব দিল হুযূর! দ্বিতীয় পা উঠাতে পারিনা। তখন হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, “তাক্বদীরের মধ্যে বান্দার এতটুকু ইখতিয়ার আর মহান আল্লাহ পাক উনার এতটুকু ইখতিয়ার। অর্থাৎ পা উঠানোর ব্যাপারে বান্দা যেমন একসাথে দুপা তুলতে পারেনা, তদ্রুপ তাক্বদীরের মধ্যে বান্দার পূর্ণ ক্ষমতা বা ইখতিয়ার নেই।
আর এক পা বান্দা নিজ ক্ষমতায় বা ইখতিয়ারে তুলতে পারে, যা মহান আল্লাহ পাক তিনি পূর্ব থেকেই বান্দাকে দিয়েছেন। তদ্রুপ তাক্বদীরের মধ্যে বান্দার ক্ষমতা বা ইখতিয়ার রয়েছে। আর মহান আল্লাহ পাক যদি ইখতিয়ার বা ক্ষমতা দেন, তাহলে বান্দা দুপা এক সাথেও তুলতে পারবে।
অর্থাৎ নেক কাজ বান্দা ইচ্ছে করলেই করতে পারবেনা। মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত ও ইখতিয়ার ছাড়া। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন,
وما اصابك من حسنة فمن الله.
অর্থ : তোমাদের প্রতি যে কল্যাণ বা হাসানাহ পৌঁছে (তোমরা যে নেক কাজ করে থাক), তা মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে (মহান আল্লাহ পাক উনার রহমতে)।অর্থাৎ বান্দার নেক কাজ করা মহান আল্লাহ পাক উনার রহমতের সাথে সম্পর্কযুক্ত।
আর বদ কাজ বান্দা নিজ থেকে করে থাকে, যার সাথে বান্দার নফসের সম্পর্ক রয়েছে। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন,
وما اصابك من سيئة فمن نفسك.
অর্থ : তোমাদের প্রতি যে মন্দ পৌঁছে বা উপস্থিত হয় (তোমরা যে মন্দ কাজ করে থাক), তা তোমাদের নিজ থেকে (নফসের তাড়নায়)।
আবা-৩০
৫১৯ নং- সুওয়াল : আমাদের ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতার কর্মধারার আলোকে বর্তমান সংবিধান বাতিল ঘোষণা করে ঈমানদার বুদ্ধিজীবি, হক্কানী আলিমের সহযোগিতায় একটি ইসলামী সংবিধানের খসড়া প্রনয়ন করে এবং গণভোটের মাধ্যমে তার অনুমোদনের পর যথারীতি ইসলামী পার্লামেন্টের নির্বাচণ অনুষ্ঠান এবং একটি ইসলামী সরকার গঠনই হচ্ছে চলমান সংকট থেকে উত্তরনের একমাত্র কার্যকর পন্থা।  আর বর্তমান জটিল মুহূর্তে এই যুক্তিগ্রাহ্য পন্থাটি অবলম্বন করে জাতি এক উজ্জল ভবিষ্যত নির্মানের লক্ষ্যে সাহসী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আমরা দেশের সকল শুভবুদ্ধি সম্পন্ন নাগরিক, দ্বীনদার বুদ্ধিজীবি, রাজনীতিবীদ, বিশেষতঃ সচেতন উলামায়ে কিরামগণ ইসলামের সংগঠনগুলোর প্রতি উদাত্ত আহবান জানাচ্ছি।  উপরে বর্নিত আমাদের কর্মধারাটি সুচিন্তিত রায়, অভিমতক্রমে  আপনার নির্দেশনা কামনা করি।

৫১৯ নং- সুওয়াল : আমাদের ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতার কর্মধারার আলোকে বর্তমান সংবিধান বাতিল ঘোষণা করে ঈমানদার বুদ্ধিজীবি, হক্কানী আলিমের সহযোগিতায় একটি ইসলামী সংবিধানের খসড়া প্রনয়ন করে এবং গণভোটের মাধ্যমে তার অনুমোদনের পর যথারীতি ইসলামী পার্লামেন্টের নির্বাচণ অনুষ্ঠান এবং একটি ইসলামী সরকার গঠনই হচ্ছে চলমান সংকট থেকে উত্তরনের একমাত্র কার্যকর পন্থা। আর বর্তমান জটিল মুহূর্তে এই যুক্তিগ্রাহ্য পন্থাটি অবলম্বন করে জাতি এক উজ্জল ভবিষ্যত নির্মানের লক্ষ্যে সাহসী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আমরা দেশের সকল শুভবুদ্ধি সম্পন্ন নাগরিক, দ্বীনদার বুদ্ধিজীবি, রাজনীতিবীদ, বিশেষতঃ সচেতন উলামায়ে কিরামগণ ইসলামের সংগঠনগুলোর প্রতি উদাত্ত আহবান জানাচ্ছি। উপরে বর্নিত আমাদের কর্মধারাটি সুচিন্তিত রায়, অভিমতক্রমে আপনার নির্দেশনা কামনা করি।


সুওয়াল : আমাদের ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতার কর্মধারার আলোকে বর্তমান সংবিধান বাতিল ঘোষণা করে ঈমানদার বুদ্ধিজীবি, হক্কানী আলিমের সহযোগিতায় একটি ইসলামী সংবিধানের খসড়া প্রনয়ন করে এবং গণভোটের মাধ্যমে তার অনুমোদনের পর যথারীতি ইসলামী পার্লামেন্টের নির্বাচণ অনুষ্ঠান এবং একটি ইসলামী সরকার গঠনই হচ্ছে চলমান সংকট থেকে উত্তরনের একমাত্র কার্যকর পন্থা।
আর বর্তমান জটিল মুহূর্তে এই যুক্তিগ্রাহ্য পন্থাটি অবলম্বন করে জাতি এক উজ্জল ভবিষ্যত নির্মানের লক্ষ্যে সাহসী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আমরা দেশের সকল শুভবুদ্ধি সম্পন্ন নাগরিক, দ্বীনদার বুদ্ধিজীবি, রাজনীতিবীদ, বিশেষতঃ সচেতন উলামায়ে কিরামগণ ইসলামের সংগঠনগুলোর প্রতি উদাত্ত আহবান জানাচ্ছি।
উপরে বর্নিত আমাদের কর্মধারাটি সুচিন্তিত রায়, অভিমতক্রমে  আপনার নির্দেশনা কামনা করি।


জাওয়াব : আমাদের সকলকেই প্রথমে একথা স্মরণ রাখতে হবে যে, আমরা মুসলমান মহান আল্লাহ পাক উনার বান্দা এবং আখিরী নবী, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উম্মত।
মুসলমান শব্দের অর্থ হলো-
كردن نهادن بطاعت
আনুগত্যতার সাথে আত্মসমর্পণ করা
অর্থাৎ যে মুসলমান হবে, সে মহান আল্লাহ পাক উনার মতে মত হবে এবং মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পথে পথ হবে। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন,
ان الدين عند الله الاسلام.
অর্থ : নিশ্চয়ই দ্বীন ইসলামই হচ্ছে মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে একমাত্র মনোনীত দ্বীন।” (পবিত্র সূরা ইমরান শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ, ১৯)।
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো বলেন,
ومن يبتغى غير الاسلام دينا فلن يقبل منه وهو فى الاخرة من الخاسرين.
অর্থ : যে ব্যক্তি দ্বীন ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন ধর্ম বা নিয়ম-নীতি তালাশ (অনুসরণ) করে, তার থেকে তা কখনই গ্রহণ করা হবেনা এবং সে পরকালে ক্ষতিগ্রস্থদের অন্তর্ভূক্ত হবে।” (পবিত্র সূরা ইমরান শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ, ৮৫)
মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্পর্কে বলেন,               
لقد كان لكم فى رسول الله اسوة حسنة.
অর্থ : নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল (ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উনার মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ।” (পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ, ২১)
এ পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে এটাই উল্লেখ্য করা হয়েছে যে, সকল মুসলমানের জন্য মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন, একমাত্র অনুসরণীয়, অনুকরণীয় ও আদর্শ।
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো বলেন,
لقد كان لكم فى رسول الله اسوة حسنة.
অর্থ : তোমাদের নিকট আমার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যা নিয়ে এসেছেন, তা তোমরা আঁকড়ে ধর এবং যা থেকে বিরত থাকতে বলেছেন তা থেকে বিরত থাক।” (পবিত্র সূরা হাশর শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ, ৭)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত হয়েছে, মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন,
وما اتاكم الرسول فخذوه وما نهاكم عنه فانتهوا واتقوا لله ان الله شديا لعقاب.
অর্থ : আমি তোমাদের নিকট যা এনেছি তা আঁকড়ে ধর, আর যা থেকে নিষেধ করেছি তা থেকে বিরত থাক।” (ইবনে মাযাহ শরীফ)
আর মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন,
ما اتيتكم فخدوه وما تهيتكم فانتهوا.
অর্থ : আমি তোমাদের নিকট দুটি জিনিস রেখে যাচ্ছি, যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা সে দুটিকে আকঁড়ে থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত কখনই তোমরা গোমরাহ (পথভ্রষ্ট) হবে না। তাহচ্ছে- মহান আল্লাহ পাক উনার কিতাব এবং উনার রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুন্নাহ। অর্থাৎ আমার সুন্নাহ (মুয়াত্তা)।
উপরোক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারা এ কথাই পরিস্ফুটিত হয় যে, মুসলমান মাত্রই অর্থাৎ সমস্ত মুসলমানকেই দ্বীন ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন নিয়ম-নীতি, তর্জ-তরীক্বা তথা ধর্ম অনুসরণ, অনুকরণ ও পালন করতে পারবে না এবং তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপনও করতে পারবে না।
মুসলমানের জন্য একমাত্র পালনীয় অনুস্বরণীয় ও অনুকরণীয় হচ্ছে দ্বীন ইসলাম। যার উসুল (উৎস) হচ্ছে- পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস, আর এর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে।
কাজেই প্রত্যেক মুসলমানকে সর্বক্ষেত্রেই তথা তার ব্যক্তিগত-পারিবারিক, সামাজিক-রাষ্ট্রীয় এবং আন্তর্জাতিক এক কথায় মাথার তালু থেকে পায়ের তলা, হায়াত থেকে মউত পর্যন্ত প্রতিটি ক্ষেত্রে পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র সুন্নাহ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস মোতাবেক চলতে হবে।
উপরোক্ত প্রশ্নে উল্লেখ করা হয়েছে গণতান্ত্রিক সংবিধান বাতিল করে তার পরিবর্তে ইসলামী সংবিধান প্রণয়ন করে, গণভোটের মাধ্যমে তার অনুমোদন নিয়ে নির্বাচন করে, ইসলামী পার্লামেন্ট তৈরী করে, তার সহযোগীতায় ইসলামী সরকার গঠন করা।
এ কথার মধ্যে কুফরী রয়েছে। কারণ ইসলাম হচ্ছে- মহান আল্লাহ পাক উনার মনোনীত দ্বীন, যা ওহীর মাধ্যমে মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি নাযিল হয়েছে। আর এ দ্বীন ইসলাম কারো অনুমোদনের মুখাপেক্ষী নয়। দ্বীন ইসলাম উনাকে জনগণের অনুমোদনের মুখাপেক্ষী করার অর্থ হচ্ছে- মহান আল্লাহ পাক এবং উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদেশ ও নিষেধসমূহ সরাসরি গ্রহণযোগ্য নয় জনগণের সমর্থন ব্যতীত। অথচ ইরশাদ মুবারক হয়েছে,  
تركت فيكم امرين لن تضلوا ما تمسكتم بهما كتا ب الله وسية رسوله.
অর্থ : তোমরা অনুসরণ কর, যা তোমাদের রবের তরফ হতে তোমাদের প্রতি নাযিল হয়েছে এবং তোমরা উনাকে (মহান আল্লাহ পাক উনাকে) ব্যতীত আর কাউকে অনুসরণ করোনা। (পবিত্র সুরা ইমরান শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ, ৩)
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো বলেন,
اتبعوا المرسلين.
অর্থ : তোমরা রসূলগণ উনাদের অনুসরণ কর।” (পবিত্র সূরা ইয়াসিন : পবিত্র আয়াত শরীফ, ২০)
উপরোক্ত পবিত্র আয়াত শরীফসমূহ দ্বারা এটাই সাবিত হয় যে, মহান আল্লাহ পাক উনার নাযিলকৃত কিতাব উনাকে এবং উনার প্রেরিত রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অনুসরণ-অনুকরণ করতে হবে। কারণ বান্দার জন্য কোনটি ভাল এবং কোনটি মন্দ, বান্দা জানেনা। তাই মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন,
عسى ان تكر هوا شيأ وهو خير لكم وعسى ان تحبوا شيأ وهو شر لكم والله يعلم وانتم لا تعلمون.
অর্থ : সম্ভবতঃ তোমরা যা খারাপ মনে করে থাক, সেটাই তোমাদের জন্য উত্তম। আর তোমরা যেটা ভাল মনে করে থাক, সেটাই তোমাদের জন্য খারাপ, মূলতঃ মহান আল্লাহ পাক তিনিই জানেন কোনটা ভাল, কোনটা মন্দ, তোমরা জাননা।” (পবিত্র সূরা বাক্বারাহ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ, ২১৬)
কাজেই মহান আল্লাহ পাক উনার প্রেরিত ও প্রদর্শিত পথের নির্দেশিকা পবিত্র কুরআন শরীফ এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনার অনুসরণ-অনুকরণই হচ্ছে একমাত্র কল্যাণের ও নাযাতের পথ।
উল্লেখ্য যে, নির্বাচন এবং তার আনুসাঙ্গিক ভোট শরীয়তসম্মত নয়। কারণ যারা পদপার্থী হয়, এমনকি যারা পদের আকাংখা করে, তাদেরকে মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পদ দেননি।
এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ আছে,
وعن ابى موسى قال دخلت على النبى صلى الله عليه وسلم انا ورجلان من بنى عمى فقال احد هما يا رسول الله امرنا على بعض ما ولاك الله وقال الاخر مثل ذلك فقال انا والله لا نولى على هذا العمل احدا ساله ولا احدا حرص عليه وفى رواية قال لا نستعمل على عملنا من اراده. (منفق عليه)
অর্থ : হযরত আবূ মুসা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত- তিনি বলেন, একদা আমি ও আমার দুজন চাচাত ভাই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট গেলাম। সে দুজনের একজন বললো, হে মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল (ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাকে যে সকল কাজের দায়িত্ব দিয়েছেন, আপনি আমাদেরকে ওটার মধ্য হতে কোন একটির শাসক নিযুক্ত করুন এবং দ্বিতীয়জন ও অনুরূপই বললো। উত্তরে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, “মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! আমরা এ কাজে (শাসক পদে) এমন কোন ব্যক্তিকে নিয়োগ করিনা, যে ওটার প্রার্থী হয় এবং ঐ ব্যক্তিকেও নিয়োগ করিনা, যে ওটার লোভ বা আকাঙ্খা করে।” (বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ)
وعن عبد الرحمن ابن سمرة قال- قال لىرسول الله صلى الله عليه وسلم لا تسال الامارة فائك ان اعطيتها عن مسنلة وكلت اليها وان اعطيتها عن غير مسئلة اعنن عليها. (متفق عليه)
অর্থ : হযরত আব্দুর রহমান বিন সামুরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত- তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে বললেন, “(হে সামুরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু!) আপনি নেতৃত্ব বা পদ চাবেন না। কেননা, যদি আপনাকে ওটা চাওয়ার কারণে দেয়া হয়, তবে ওটা আপনার উপর চাপিয়ে দেয়া হবে। আর যদি ওটা আপনাকে চাওয়া ব্যতীত দেয়া হয়, তাহলে এ ব্যাপারে আপনাকে সাহায্য করা হবে।” (মুয়াত্তা)
وعن ابى هريرة قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم تجدون من خير الناس اشدهم كراهية لهذا الامر حتى يقع فيه- (متفق عليه)
অর্থ : হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত- তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেছেন, “এই শাসনভারকে যারা কঠোরভাবে ঘৃণা করে, তাদেরকে তোমরা উত্তম লোক হিসেবে পাবে, যে পর্যন্ত তারা তাতে লিপ্ত না হয়। (মুয়াত্তা)
মূলতঃ নির্বাচন হচ্ছে গণতন্ত্রেরই একটি অংশ। কারণ মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেছেন, “যারা কোন পদপ্রার্থী হয়, তাদেরকে পদ দিওনা।
আর আপনার প্রশ্নে উল্লেখিত পদ্ধতি সম্পর্কে সংক্ষেপে বলতে গেলে বলতে হয় যে, এটা গণতন্ত্রেরই একটা নতুন রূপ। কারণ গণতন্ত্র জনগণ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। আর আপনারাও দ্বীন ইসলাম উনাকে গণভোটের মাধ্যমে জনগণের দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করতে চাচ্ছেন। অর্থাৎ জনগণ যে আইন পছন্দ করবে, গণভোটের মাধ্যমে সেটাই সমর্থন দিবে এবং আপনারা সে আইনই জারি করবেন। গণভোট বলতে এটাই বুঝানো হয় যে, দেশের যত প্রাপ্ত বয়স্ক নাগরিক তথা জনগণ রয়েছে, তাদের থেকে ভোট নেয়া। চাই তারা মুসলমান হোক বা অমুসলমান (হিন্দু, বৌদ্ধ, খৃষ্টান, ইহুদী, মুজুসী, মোশরেক, কাদিয়ানী, শিখ ইত্যাদি) হোক।
এখন গণভোটে জনগণ যদি দ্বীন ইসলাম উনার পক্ষে রায় দেয়, তবে ইসলাম থাকবে অন্যথায় নয়। আর যদি বিপরীতে রায় দেয়, তবে যে বিষয়ে রায় দেবে সেটাই বহাল থাকবে, হোক তা বেদ্বীনি ও বদদ্বীনি।
অথচ ইসলামের কোন আইন কোথায় প্রয়োগ করতে হবে, তা মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিই উল্লেখ্য করে দিয়েছেন।
এরপরও জন সমর্থন, গণ অনুমোদন ও গণভোট করার অর্থ হচ্ছে, মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে ইহানত করা এবং এটাই প্রমাণ করা যে, মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যা বলেছেন তা সঠিক নয়, তা গণ অনুমোদন দিয়ে সঠিক করে নিতে হবে। এককথায় মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যত আদেশ নিষেধই করুন না কেন, তা কখনই গ্রহণযোগ্য হবে না জনগণের অনুমোদন ব্যতীত। অর্থাৎ ইসলামী আইন ও তার প্রয়োগ জনগণের অনুমোদনের উপর নির্ভরশীল।
বর্তমানে কেউ যদি ইসলামী আন্দোলন করতে চায়, তবে তাকে খিলাফত আলা মিন হাযিন নুবুওওয়াহঅর্থাৎ নুবুওওয়াতের দৃষ্টিতে খিলাফতের জন্য কোশেশ করতে হবে। আর খিলাফত কায়িমের জন্য মজলিসে শুরা করতে হবে।
মজলিসে শুরার প্রধান তিনিই হবেন, যিনি সবচেয়ে বেশী তাকওয়াধারী হবেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন,
ان اكر مكم عند الله اتقاكم.
অর্থ : নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট ঐ ব্যক্তি সব চাইতে সম্মানিত, যিনি তোমাদের মধ্যে তাকওয়াধারী বা পরহেযগার।” (পবিত্র সূরা হুজরাত শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ, ১৩)
আর যিনি ইলম, আমল, ইখলাস অর্থাৎ প্রতিটি বিষয়ে তাকমীলে (পূর্ণতায়) পৌঁছেছেন, তিনিই হাক্বীক্বী তাকওয়াধারী।
খিলাফত প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন,
وعد الله الذين امنوا منكم وعملوا الصالحات ليستخلفتهم فى الارض كمما استخلف الذين من قبلهم وليمكنن لهم دينهم الذى ارتض لهم وليبد لنهم من بعد خوفهم امنا- يعبدو ننى ولا يشر كون بى شيأ ومن كفربعد ذالك فاولئك هم الفاسقون. واقيموا الصلواة واتوا الزكوة واطيعوا الرسول لعكم تر حمون لا تحسبن الذين كفروا معجرين فى الارض ومأواهم النار ولبئس تلكصير.
অর্থ : মহান আল্লাহ পাক তিনি ওয়াদা দিয়েছেন যে, তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছেন এবং আমলে সলেহ করেছেন, তাদেরকে অবশ্যই পৃথিবীতে খিলাফত (শাসন কর্তৃত্ব) দান করবেন। যেমন তিনি তাদের পূর্ববর্তীদেরকে খিলাফত দিয়েছিলেন এবং তিনি অবশ্যই সুদৃঢ় করবেন তাদের জন্য তাদের দ্বীনকে, যে দ্বীন তিনি তাদের জন্য পছন্দ করেছেন এবং নিশ্চয়ই তিনি তাদের ভয়ভীতির পরিবর্তে আসান (নিরাপত্তা) দান করবেন এ শর্তে যে, তারা আমার ইবাদত বন্দিগী করবে এবং আমার সাথে কাউকে শরীক করবে না। আর এর পর যারা কুফরী করবে, তারাই ফাসিক। তোমরা নামায কায়িম কর এবং যাকাত আদায় কর এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আনুগত্যতা প্রকাশ কর। আশা করা যায়, তোমরা (পূর্ণ) রহমত প্রাপ্ত হবে। তোমরা কাফিরদের সম্পর্কে এটা ধারণা করোনা যে, তারা জমিনে পরাক্রমশীল, তাদের জায়গা/ঠিকানা হবে জাহান্নাম, আর নিশ্চয়ই তাদের প্রত্যাবর্তন স্থল অত্যান্ত নিকৃষ্ট।” (পবিত্র সূরা নূর শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ, ৫৫-৫৭)
উপরোক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি ওয়াদা দিয়েছেন যারা খালিছভাবে ঈমান আনবে এবং খালিছ আমলে সলেহ করবে, তাদেরকে খিলাফত দান করবেন। যেমন পূর্ববর্তীগণ উনাদেরকে দান করেছেন। আর শুধু তাই নয়, সাথে সাথে দ্বীনে মজবুতী দান করবেন, ভয়ভীতি দূর করে নিরাপত্তা দান করবেন। আর এ খিলাফত কায়েম থাকবে মহান আল্লাহ পাক উনার ইবাদত-বন্দিগীতে দায়িম-কায়িম থাকবেন এবং কোন বিষযে মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে কাউকে শরীক করা যাবে না। আর বিশেষ করে শাসন পরিচালনার ক্ষেত্রে মহান আল্লাহ পাক উনার প্রদত্ত আইনের সাথে অন্য কারো প্রণীত আইন-কানুন, নিয়ম-নীতি (গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, রাজতন্ত্র, মাওবাদ, লেলিনবাদ, মার্কসবাদ ইত্যাদি), মিশ্রিত করে শরীক করা যাবে না। আর যে এর খেলাফ (বিপরীত) করবে, সে গোমরাহ হয়ে যাবে।
কাজেই প্রত্যেক ব্যক্তির উচিৎ নামায কায়িম, যাকাত আদায় এবং মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের ইত্তেবার দ্বারা খিলাফত কায়িমের কোশেশের মাধ্যমে রহমত হাছিল করা।
আর এটা যেন কোন মুসলমানই কখনো ঘুর্নাক্ষরেও চিন্তা না করে যে, কাফির, ফাসিক, জালিমরা পৃথিবীতে প্রতাপশালী, ক্ষমতাশালী, আধিপত্য বিস্তারকারী হয়ে গিয়েছে, তাই তাদের নিয়ম-নীতি, তর্জ-তরীকা ব্যতীত খিলাফত কায়িম করা সম্ভব নয়। অবশ্যই সম্ভব, কারণ তারা মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট মনোনীত, পছন্দনীয়, প্রিয় নয়, তাই তাদের অবস্থানস্থল করা হয়েছে জাহান্নাম।
আবা-৩০
৫১৮ নং- সুওয়াল : বর্তমানে আমাদের দেশে এমন কোন রাজনৈতিক দল আছে কি? যারা পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ মুতাবিক আন্দোলন করছে? দলীল-আদীল্লাহসহ জানতে চাই।

সুওয়াল : বর্তমানে আমাদের দেশে এমন কোন রাজনৈতিক দল আছে কি? যারা পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ মুতাবিক আন্দোলন করছে? দলীল-আদীল্লাহসহ জানতে চাই।

জাওয়াব : বর্তমানে আমাদের দেশে যতগুলি দল আন্দোলন করছে, তা দ্বীন ইসলাম উনার নাম দিয়ে হোক, আর দ্বীন ইসলাম উনার নাম ব্যতীতই হোক, তারা প্রত্যেকেই গণতন্ত্র ভিত্তিক আন্দোলন করছে। গণতন্ত্র ইসলাম সম্মত নয়। ইসলামের নাম দিয়ে যারা গণতন্ত্র করে, তারা প্রকৃতপক্ষে গণতন্ত্র সম্পর্কে ওয়াকিফহাল নয়। অর্থাৎ গণতন্ত্র সম্পর্কে তাদের তাহক্বীক নেই। কারণ মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
ان الدين عند الله الاسلام.
অর্থ : নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট একমাত্র মনোনীত দ্বীন হচ্ছে ইসলাম।” (পবিত্র সূরা ইমরান শরীফ, পবিত্র আয়াত শরীফ, ১৯)
উপরোক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ দ্বারা এ কথাই স্পষ্ট হচ্ছে যে, বান্দারা তাদের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয়, আন্তর্জাতিক প্রতি ক্ষেত্রেই দ্বীন ইসলাম মেনে চলবে। এ প্রসঙ্গে বলা হয় যে, ‘হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, একদিন হযরত উমর ফারুক আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট এসে বললেন, ‘হে আল্লাহ পাক উনার রাসুল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমরা ইহুদীদের নিকট থেকে কিছু কথা শুনি, যাতে আশ্চর্য্যবোধ করি। তার থেকে কিছু কি আমরা লিখে রাখব? তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, “হে হযরত ছাহাবয়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম! আপনারাও কি ইহুদী-নাসারাদের মত (দ্বীন ইসলাম সম্পর্কে) দ্বিধাগ্রস্থ রয়েছেন? নিশ্চয়ই আমি তোমাদের জন্য পরিপূর্ণ-উজ্জল দ্বীন নিয়ে এসেছি। এমন কি ইহুদীদের নবী হযরত মুসা আলাইহিস সালামও যদি জীবিত থাকতেন, তবে উনার উপরও আমার দ্বীন মানা ওয়াজিব হতো।” (আহমদ, বায়হাক্বী)
অতঃপর মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র সূরা ইমরান শরীফ উনার ৮৫নং পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে বলেন, “যে ব্যক্তি দ্বীন ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন ধর্ম বা নিয়ম-নীতি তালাশ (অনুসরণ) করে, তার থেকে তা কখনই গ্রহণ করা হবেনা এবং সে পরকালে ক্ষতিগ্রস্থের অন্তর্ভূক্ত হবে।
অর্থাৎ দ্বীন ইসলাম হচ্ছে মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে ওহীর মাধ্যমে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি নাযিলকৃত দ্বীন, যার শারেবা আইন-কানুন প্রণেতা হচ্ছেন, মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। যার মধ্যে কোন জ্বীন-ইনসানের পক্ষে কোন আইন-কানুন পরিবর্তন-পরিবর্ধন, সংশোধন-সংযোজন করার এবং দ্বিমত প্রকাশ করার কোন অবকাশ নেই। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন,
ماكان المومن ولا مؤمنة اذا قضى الله ورسوله امرا ان يكون لهم الخيرة من امرهم ومن يعص الله ورسوله فقد ضل ضللا مبينا.
অর্থ : কোন মুমিন নর-নারীর জন্য জায়িয হবেনা, মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যে ফয়সালা করেছেন, সেই ফয়সালার মধ্যে স্বীয়মত বা ইখতিয়ার পেশ করা। (যে ব্যক্তি স্বীয় মত পেশ করলো, সে নাফরমানী করল) আর যে মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাফরমানী করে, সে প্রকাশ্য গোমরাহীতে (বিভ্রান্তিতে) গোমরাহ বা বিভ্রান্ত।” (পবিত্র সুরা আহযাব শরীফ, পবিত্র আয়াত শরীফ, ৩৬)
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো বলেন,
من لم يحكم بما انزل الله فالئك هم الكافرون.
অর্থ : মহান আল্লাহ পাক তিনি যা নাযিল করেছেন, (শরীয়ত) সে অনুযায়ী যে হুকুম (আদেশ-নিষেধ) করে না, সে কাফির।
মুসলমান শব্দের অর্থ হচ্ছে-
كردن نهادن يطاعت
অর্থ : আনুগত্যতার সাথে আত¦সমর্পণ করা।
অর্থাৎ যে মুসলমান হবে সে মহান আল্লাহ পাক উনার মত ও নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পথে পথ হবে। এর খিলাফ কোন কাজ করতে পারবে না।
গণতন্ত্র শব্দের শাব্দিক অর্থ হচ্ছে- গণ অর্থ জনগণ, আর তন্ত্র অর্থ নিয়ম-নীতি ও পদ্ধতি। প্রচলিত অর্থে- জনগণের দ্বারা প্রবর্তিত নিয়ম-কানুন বা সরকার পদ্ধতি ও শাসন ব্যবস্থা, যা জনগণের খেয়াল খুশী মতই পরিচালিত হয়। আর এই জনগণ ইহুদী-নাসারা (খৃষ্টান), হিন্দ-বৌদ্ধ, মজুসী (অগ্নি উপাসক), মুশরিক, বেদ্বীন-বদদ্বীন, কাদিয়ানী-শিখ, পুরুষ ও মহিলা যে কেউ হতে পারে। অর্থাৎ গণতন্ত্র মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ হতে ওহীর মাধ্যমে নাযিলকৃত নয় বরং জনগণের দ্বারা প্রণীত পদ্ধতি।
অতএব কোন ব্যক্তির পক্ষেই দ্বীন ইসলাম উনার নাম দিয়ে গণতন্ত্র করা জায়িয নেই। দ্বীন ইসলাম উনার নাম দিয়ে যদি কেউ আন্দোলন করতে চায়, তবে তার উচিৎ খিলাফত আলা মিনহাযিন নুবুওওয়াহ অর্থাৎ নুবুওওয়াতের দৃষ্টিতে খিলাফতের জন্য কোশেশ করা। দুঃখের বিষয় আমাদের দেশে সমস্ত দলগুলিই গণতন্ত্র ভিত্তিক আন্দোলন করছে, যা শরীয়ত সম্মত নয়।

আবা-৩০