মূর্তি-ভাস্কর্য নিয়ে  নাস্তিকদের অপপ্রচারের  দাঁতভাঙ্গ জবাব




Image result for দাঁতভাঙ্গ জবাব
মূর্তি-ভাস্কর্য নিয়ে


নাস্তিকদের অপপ্রচারের

দাঁতভাঙ্গ জবাব





মূর্তি, ভাস্কর্য নিয়ে পবিত্র দ্বীন ইসলাম বিকৃতকারীদের অপপ্রচার এবং তার দলীলভিত্তিক জবাব
পিডিএফ লিংক- https://drive.google.com/open?id=11LWa7JiSjzon91nAFta-SqX5EX6Rev7r

গত ২৩শে ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে বিডি নিউজ২৪ডটকম নামক একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যমের ব্লগে মূর্তি বিড়ম্বনার ইসলামি আঙ্গিক শিরোনামে একটি পোস্ট প্রকাশ পেয়েছে। অনলাইনে লেখাটি পাওয়া যাবে এই লিংকে- http://bit.ly/2lfgwf9 যেখানে মনগড়া রেফারেন্স দিয়ে দাবি করা হয়েছে- ইসলামে মূর্তি বৈধনাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! যে ব্যক্তি ইসলামে মূর্তি বৈধ বলে এ পোস্টটি লিখেছে তার নাম- হাসান মাহমুদবাংলাদেশে নাস্তিকদের প্রথম মাদারব্লগসাইট মুক্তমনার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং মুক্তমনার উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য (মুক্তমনায় তার পরিচয় পাওয়া যায় এই লিংকে- http://bit.ly/2lQj3j9তার আইডি নাম- ফতেমোল্লাকয়েকবছর আগে মুক্তমনা থেকে তার লেখা ইসলাম ও শারিয়া নামক একটি ই-বুক বের হয়, যেখানে ঠাণ্ডা মাথায় ইসলামকে বিকৃত করে অপব্যাখ্যা সহকারে উপস্থাপন করা হয়। এছাড়া হিলা বিয়ের উপর সে ইসলাম বিকৃতকারী বেশ কয়েকটি নাটকও তৈরি করেছিলো। গত ২০১৫ সালে বইমেলায় তার একটি বই বের হয়। বইটির নাম- শরীয়া কি বলে, আমরা কি করিবইটির প্রতি পাতায় পাতায় মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের প্রশংসা করা হয়েছে, কিন্তু বিভিন্ন ভ্রান্ত দলিল ও যুক্তি দিয়ে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার আইনসমূহকে মিথ্যা প্রমাণ করার চেষ্টা করা হয়। নাউযুবিল্লাহ! https://goo.gl/bYpQd2

তার দাবি- সে ওয়ার্ল্ড মুসলিম কংগ্রেস-এর উপদেষ্টা বোর্ডের সদস্য, মুসলিমস রিফর্ম মুভমেন্ট ও আমেরিকান ইসলামিক লিডারশিপ কোয়ালিশনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য! সে কানাডায় স্থায়ী বসবাস করে মনগড়াভাবে ইসলাম এবং শরীয়তের অপব্যাখ্যা করে থাকে। তার নিরেট মূর্খতা এবং অজ্ঞতার খণ্ডন করা হবে ইনশাআল্লাহ।




প্রথম মিথ্যাচার:
সে লিখেছে- প্রথমেই তিনটে শব্দ বুঝে নেওয়া যাক: প্রতিমা, ভাস্কর্য ও মূর্তি। প্রতিমা হলো- মানুষ যার আরাধনা উপাসনা করে, ইহকালে-পরকালে মঙ্গল চায়, ভুলের ক্ষমা চায় ইত্যাদি। ভাস্কর্য হলো- মানুষসহ কোনো প্রাণী বা কোনো কিছুর মূর্তি, যাকে মানুষ রাখে সম্মান দেখাতে বা সৌন্দর্য বর্ধন করতে; যার মানুষ আরাধনা বা উপাসনা করে না। ইসলাম প্রতিমার বিরুদ্ধে, ভাস্কর্য ও মূর্তির বিরুদ্ধে নয়নাউযুবিল্লাহ!
মিথ্যাচারের দলিলভিত্তিক জবাব:
এই গ-মূর্খটা শব্দের ভিন্নতায় প্রতিমা, ভাস্কর্য এবং মূর্তিকে আলাদা আলাদা করতে চেয়েছে। অথচ জাহেল ব-কলম কী পড়ালেখা শিখলো যে- এসব যে একই জিনিসের বিভিন্ন নাম অর্থাৎ সমার্থক শব্দ তা সে বুঝলো না? ছবি, মূর্তি বা ভাস্কর্য-এর ইংরেজি হলো- sculpture বা statue বা picture এখন জানাবো মূর্তি বা ভাস্কর্য-এর সমার্থক আর কি কি আছে?

১. Sculpture - ভাস্কর্য, মূর্তি
২. Icon - মূর্তি, অঙ্কিত প্রতিমূর্তি, প্রতিমা, বিগ্রহ, অন্যভাবে নির্মিত প্রতিমূর্তি, খোদাই-করা প্রতিমূর্তি
৩. dummy - মূর্তি, পুতুল,
৪. form - ফর্ম, গঠন, আকার, আকৃতি, রুপ, মূর্তি
৫. incarnation - অবতার, মূর্তি, আবির্ভাব, দেহধারণ, মূর্র্তিগ্রহণ, মূর্তিদান
৬. shape - আকৃতি, আকার, গঠন, গড়ন, রুপ, মূর্তি
৭. picture - ছবি, চিত্র, চলচ্চিত্র, চলচ্চিত্রের প্রদর্শনী, চিত্রাঙ্কন, মূর্তি
৮. body - শরীর, দেহ, অঙ্গ, মৃতদেহ, শব, মূর্তি।

দেখা যাচ্ছে- ছবি, মূর্তি বা ভাস্কর্য একই জিনিসের ভিন্ন ভিন্ন নাম। একটি হারাম মানে সবগুলোই হারাম। এই গ-মূর্খের যে দ্বীনী ইলম মোটেই নাই, এমনকি দুনিয়াবী ইলমও যে নাই- এটা তার মন্তব্য দ্বারাই প্রমাণিত হয়।

সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে মূর্তি ও ভাস্কর্য দুটোই পরিত্যাজ্য। পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ এবং পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মধ্যে এ প্রসঙ্গে যে শব্দগুলো ব্যবহৃত হয়েছে সেগুলো মূর্তি ও ভাস্কর্য দুটোকেই নির্দেশ করে। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার স্পষ্ট নির্দেশ- তোমরা ছবি বা মূর্তির অপবিত্রতা বেঁচে থাকো এবং মিথ্যা কথা বা (গান-বাজনা, নাটক-সিনেমা, কাল্পনিক, মনগড়া-বানোয়াটি কাজ) থেকে বেঁচে থাকো। (পবিত্র সূরা হজ্জ্ব শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৩০)

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সুদ ভক্ষণকারী ও সুদ প্রদানকারী, উল্কি অঙ্কণকারী ও উল্কি গ্রহণকারী এবং প্রতিকৃতি প্রস্তুতকারীদের (ভাস্কর, চিত্রকরদের) উপর লানত করেছেন।(পবিত্র বুখারী শরীফ- ৫৯৬২)

মূর্তি ও ভাস্কর্যের বেচাকেনাও পবিত্র হাদীছ শরীফে সম্পূর্ণ হারাম সাব্যস্ত করা হয়েছে। অর্থাৎ মূর্তি হোক, প্রাণীর ছবি হোক, ভাস্কর্য হোক, আরাধনা করা হোক কিংবা না করা হোক- সবই সম্পূর্ণরূপে পবিত্র দ্বীন ইসলামে নিষিদ্ধ ও হারাম এবং জায়েজ মনে করা কুফরী। অর্থাৎ চিরজাহান্নামী হওয়ার কারণ।

দ্বিতীয় মিথ্যাচার:
উম্মুল মুমিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার বরাত দিয়ে সে বলতে চায়- তিনি নাকি পুতুল ব্যবহার করেছেন। অর্থাৎ ভাস্কর্য ব্যবহার করেছেন। নাউযুবিল্লাহ! সে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে প্রমাণ করতে চায়- দ্বীন ইসলামে ভাস্কর্য জায়িয। নাউযুবিল্লাহ! এমনকি সে বুখারী শরীফ-এর ব্যাখ্যাগ্রন্থ ফতহুল বারী-এর লেখক হযরত ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকেও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করেছে। নাউযুবিল্লাহ!

মিথ্যাচারের দলিলভিত্তিক জবাব:
মূর্তি, ছবি বা ভাস্কর্যকে জায়িয প্রমাণ করতে গিয়ে সে দলীল হিসেবে যে পবিত্র হাদীছ শরীফ উল্লেখ করেছে, তা তার চরম জিহালতী বৈ কিছুই নয়। কারণ এ পবিত্র হাদীছ শরীফখানা মানসূখ (রহিত) হওয়ার ব্যাপারে সকলেই একমত। যেমন এ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার ব্যাখ্যায় শরহুল কিরমানী আলাল বুখারীতে উল্লেখ আছে-শিশুদের জন্য খেলনা পতুল বা মূর্তি ব্যবহার করাকে বৈধ প্রমাণ করতে গিয়ে কেউ কেউ দলীল হিসেবে এ পবিত্র হাদীছ শরীফ পেশ করে থাকে। ... অথচ এ পবিত্র হাদীছ শরীফখানা ছবি ও মূর্তি সম্পর্কিত অসংখ্য পবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারা মানসূখ হয়ে গেছে। অর্থাৎ এর হুকুম এখন আর বলবৎ নেই। (হাশিয়াতুল বুখারী ২য় খ- ৯০৫ পৃষ্ঠা ৬নং হাশিয়াহ)
অতএব, প্রমাণিত হলো যে, পুতুল নিয়ে খেলা সম্পর্কিত পবিত্র হাদীছ শরীফখানা সকলের মতেই মানসূখ। কেননা অসংখ্য পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মধ্যে মূর্তি, পুতুল, ভাস্কর্য, ছবি ইত্যাদি তৈরি করতে সরাসরি নিষেধ করা হয়েছে এবং তৈরি করাকে কঠিন গুনাহের কারণ বলা হয়েছে। তাই সম্মানিত শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে পতুল তৈরি করা এবং পুতুল নিয়ে খেলা নাজায়িয ও হারাম।

এই জাহিল লোকটি জানে না সম্মানিত ইসলাম উনার শুরুতে অনেক বিষয় ছিল যা পরবর্তীতে মানসুখ বা রহিত হয়ে গেছে। যেমন শরাব, সুদ, বেপর্দা। এসব সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার শুরুতে নিষেধ না থাকলেও পরবর্তীতে মহান আল্লাহ পাক তিনি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। যেমন পর্দা ফরয হয় ৫ম হিজরী সনে। তার পুর্বে পর্দা ফরয হয়নি।

সে পূর্বেকার পবিত্র হাদীছ শরীফসমূহ উল্লেখ করেছে, কিন্তু ছবি, মূর্তি হারাম নিয়ে যে উম্মুল মুমিনীন সায়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার অনেক পবিত্র হাদীছ শরীফ আছে, তা উল্লেখ করেনি।

যেমন-
(১). উম্মুল মুমিনীন সায়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি একটি বালিশ মুবারক ক্রয় করেছিলেন। তাতে ছবি আঁকা ছিল। পবিত্র হুজরা শরীফে তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করার সময় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দৃষ্টি মুবারকে এসে পতিত হলে তিনি আর পবিত্র হুজরা শরীফে তাশরীফ গ্রহণ করলেন না। উম্মুল মুমিনীন সায়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি বুঝতে পেরে বললেন- আমি মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের নিকট তওবা করছি। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন: এই বালিশ মুবারক কোথায় পেলেন? তিনি বললেন: আমি এটা এজন্য খরিদ করেছি যাতে আপনি এতে হেলান দিয়ে বিশ্রাম গ্রহণ করতে পারেন। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন: যারা এই সমস্ত ছবি অঙ্কন করেছে তাদেরকে ক্বিয়ামতের দিন কঠিন আযাব দেয়া হবে। তাদেরকে বলা হবে: তোমরা যাদেরকে সৃষ্টি করেছিলে তাদের জীবিত করো। অতঃপর তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন: যে ঘরে ছবি থাকে সে ঘরে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করে না। (পবিত্র মুসলিম শরীফ/২১০৭ পোশাক ও সৌন্দর্য অধ্যায়, অনুচ্ছেদ নং ২৬ /৯৬।)

(২). উম্মুল মুমনীন সায়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বীয় পবিত্র হুজরা শরীফে (প্রাণীর) ছবিযুক্ত কোনো জিনিসই রাখতেন না। দেখলেই ভেঙ্গে চূর্ণ করে দিতেন। (পবিত্র বুখারী শরীফ : পবিত্র মিশকাত শরীফ/৪৪৯১)

(৩).  উম্মুল মুমিনীন সায়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার থেকে অপর একটি বর্ণনা মুবারকে এসেছে  যে, একবার তিনি পবিত্র হুজরা শরীফ উনার জানালা মুবারকে একটি পর্দা মুবারক ঝুলিয়ে ছিলেন, যাতে প্রাণীর ছবি ছিল। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পর্দাটিকে ছিঁড়ে ফেললেন(পবিত্র মিশকাত শরীফ/৪৪৯৩ )

উপরোক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ দিয়ে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে- খোদ উম্মুল মুমিনীন সায়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার বর্ণনা মুবারকে উল্লেখ রয়েছে ছবি, মূর্তি, ভাস্কর্য সম্পূর্ণরূপে হারাম। তাহলে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার বিকৃতকারী এই নাস্তিক কি করে উনার নাম মুবারকে মিথ্যাচার করতে পারলো? গুমরাহ মুনাফিক লানতগ্রস্তদের পক্ষেই উনার শান মুবারকে মিথ্যা তোহমত দেয়া সম্ভব। নাঊযুবিল্লাহ

তৃতীয় মিথ্যাচার:
সে বলেছে, তখন কাবার দেয়ালে ৩৬০টি মূর্তি (বুখারি ৩য় খণ্ড-৬৫৮) ও অনেক ছবির সঙ্গে ছিল হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম ও হযরত মরিয়ম আলাইহাস সালামউনার ছবিও। উদ্ধৃতি দিচ্ছি, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম ও হযরত মারইয়াম আলাইহাস সালাম উনাদের ছবি বাদে বাকি সব ছবি মুছিয়া ফেলিতে নির্দেশ দিলেন। (সিরাত ইবনে হিশাম/ইবনে ইসহাক-এর পৃষ্ঠা ৫৫২)

মিথ্যাচারের দলিলভিত্তিক জবাব:
(১). হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, পবিত্র মক্কা শরীফ বিজয়ের পর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন পবিত্র বায়তুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে বিভিন্ন প্রতিকৃতি/ছবি দেখলেন, তখন তা মুছে ফেলার নির্দেশ মুবারক দিলেন। প্রতিকৃতিগুলো মুছে ফেলার আগ পর্যন্ত তিনি তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেননি। (পবিত্র বুখারী শরীফ/ ৩৩৫২)

(২). হযরত জাবের রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, পবিত্র মক্কা শরীফ বিজয়ের দিন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আযম আলাইহিস সালাম উনাকে নির্দেশ মুবারক দিলেন- যেন তিনি পবিত্র কাবা শরীফ উনার ভিতরের সব ছবি/মূর্তি নষ্ট করে দেন। অতঃপর ছবি/মূতি নষ্ট করার আগে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র কাবা শরীফ উনার ভিতর তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেননি। (পবিত্র আবু দাউদ শরীফ, পবিত্র বায়হাকী শরীফ )

(৩). নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন পবিত্র কাবা শরীফ উনার কাছে আসলেন, তখন মূর্তি থাকায় উহার ভিতরে তিনি তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেননি। এরপর তিনি নির্দেশ মুবারক দিলেন সেগুলো অপসারণ করার জন্য; এবং ত-ই করা  হলো। সেখানে হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম ও হযরত ইসমাইল যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাদের প্রতিকৃতিও ছিল ছিল, উনাদের হাতে ভাগ্য নির্ধারণী তীর ছিল। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তা দেখে ইরশাদ মুবারক করলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদেরকে (যারা এগুলো বানিয়েছে তাদেরকে) ধ্বংস করুন। তারা কি জানতো না যে, হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম ও হযরত ইসমাইল যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনারা কখনো এসব ভাগ্য নির্ধারণী তীর ব্যবহার করেননি? এরপর তিনি পবিত্র কাবা শরীফ উনার মধ্যে তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করলেন এবং চতুর্দিকে তাকবীর ধ্বনি দেয়া হলো, তবে কোনো নামায পড়লেন না। (পবিত্র বুখারী শরীফ ১:২১৮, পবিত্র আবু দাউদ শরীফ :১:২৭৭, রশীদিয়া লাইব্রেরী, দিল্লী)

এভাবে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের অন্যান্য নির্ভরযোগ্য কিতাবেও এসেছেন।
(৪). হযরত উসামা বিন যায়দ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে পবিত্র কাবা শরীফ উনার মধ্যে প্রবেশ করলাম। তিনি তাতে কিছু ছবি দেখতে পেলেন। তখন তিনি এক বালতি পানি আনতে আদেশ মুবারক করলেন। আমি পানি আনার পর তিনি তা দিয়ে সেগুলো মুছে দিলেন এবং ইরশাদ মুবারক করলেন- মহান আল্লাহ পাক তিনি ঐ সম্প্রদায়কে ধ্বংস করুন, যারা এমন জিনিসের আকৃতি দেয় যা তারা সৃষ্টি করতে পারবে না(পবিত্র আবু দাউদ শরীফ)

এসব পবিত্র হাদীছ শরীফ অনুযায়ী নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্পষ্টতই সব ছবি/মূর্তি নষ্ট করেন এবং এতে হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম এবং হযরত মারইয়াম আলাইহাস সালাম উনাদের প্রতিকৃতি অক্ষুণ্ন থাকার কেনো প্রমাণ নেই। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম ও হযরত মারইয়াম আলাইহাস সালাম উনার ছবি নষ্ট করতে নিষেধ করেন, তা কেউ বর্ণনা করেননি। এটি সম্পূর্ণই বানোয়াট।

ইবনে ইসহাক রহমতুল্লাহি আলাইহি জীবনী গ্রন্থের দুই ধারক হযরত ইমাম তাবারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ও হযরত ইবনে হিশাম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনারা কেউই এ বর্ণনাটি উল্লেখ করেননি। এ দুটো জীবনী গ্রন্থ ছাড়াও কোনো জীবনী গ্রন্থেই এর উল্লেখ নেই। তাহলে প্রশ্ন, তা পেল কোথা থেকে? সে যে রেফারেন্স থেকে এই কথা উল্লেখ করেছে তাহলো আলফ্রেড গিয়োম নামক এক বিধর্মীর লিখা বই থেকে। ১৯৫৫ সালে সে হযরত ইমাম তাবারী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ও হযরত ইবনে হিশাম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাদের লিখিত কিতাব থেকে কেবল হযরত ইবনে ইসহাক রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বর্ণনাগুলো সঙ্কলন করে দি লাইফ অব মোহাম্মদ গ্রন্থটি রচনা করে। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে তা ২০০৩ ও ২০০৬ এ পুনঃমুদ্রিত হয়। আলফ্রেড গিয়োম সঙ্কলিত দি লাইফ অব মুহাম্মদ গ্রন্থটি খ্রিস্টান লোকদের নবীবিদ্বেষী মনোভাবের নিকৃষ্ট উদাহরণ বৈ কিছুই নয়। সে এখানে অনেক কিছু বিকৃত করে, যার মধ্যে এই মিথ্যাচার জঘন্যতম। অতএব, পবিত্র দ্বীন ইসলাম বিকৃতকারী এই নাস্তিক মাহমুদ সে যে রেফারেন্স দিয়ে মূর্তি বৈধ করতে চেয়েছে তা সম্পূর্ণরূপে জঘন্য মিথ্যাচারিতা বৈ কিছুই নয়।

চতুর্থ মিথ্যাচার:
৭১০ সালে হিন্দু শাসক দাহিরের এলাকা সিন্ধু জয় করার পর কয়টা মূর্তি ভেঙেছিলেন মুহম্মদ বিন কাশেম রহমতুল্লাহি আলাইহি? ভাস্কর্য-মূর্তি তো দূরের কথা কোনো প্রতিমাও ভেঙেছেন বলে জানা যায় না।

মিথ্যাচারের দলিলভিত্তিক জবাব:
একদিন এক মুশরিক পুরহিত সে হযরত মুহম্মদ বিন কাশিম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মূর্তি বানিয়ে শহরে ঘুরায়। হযরত মুহম্মদ বিন কাশিম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এই অবস্থা দেখে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে মূর্তি এবং মূর্তিপূজা যে হারাম তা শক্তভাবে সকলকে বুঝিয়ে দেন ও মূর্তিটি ধ্বংস করেন।

পঞ্চম মিথ্যাচার:
ইরান, সউদী আরবেও বিভিন্ন স্ট্যাচু (ভাস্কর্য) আছে ‘

মিথ্যাচারের দলিলভিত্তিক জবাব:
কোনো দেশ, কোনো ব্যক্তি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দলীল নয়। মুসলমান উনাদের দলীল হলেন- পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ, পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ। কোনো দেশ কিংবা ব্যক্তি যদি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার খিলাফ কাজ করে সম্মানিত ইসলাম উনার নামে চালিয়ে দেয়, তাহলে সে দায় একান্ত তার, সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার নয়। সে যেসব দেশের উদাহরণ দিয়েছে, সেসব দেশে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার খিলাফ অনেক কাজই হয়। এখন দ্বীন ইসলাম উনার হুকুমের খিলাফ করে তাদের সেসব হারাম কাজ গ্রহণ করতে হবে কি?

ষষ্ঠ মিথ্যাচার:
সে বলেছে, পবিত্র কোরআন শরীফ সুস্পষ্ট ভাষায় ভাস্কর্যের অনুমতি দেয়। উদ্ধৃতি: তারা সোলায়মান আলাইহিস সালাম ইচ্ছানুযায়ী দুর্গ, ভাস্কর্য, হাউয সদৃশ বৃহদাকার পাত্র এবং চুল্লির উপর স্থাপিত বিশাল ডেগ নির্মাণ করতো। (পবিত্র সূরা সাবা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৩)।

মিথ্যাচারের দলিলভিত্তিক জবাব:
হযরত সোলায়মান আলাইহিস সালাম উনার সময়কার শরীয়ত আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শরীয়ত এক নয়। সম্মানিত দ্বীন ইসলাম আসার পর পুর্বেকার সকল রীতিনীতি রহিত হয়ে গেছে। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, সেই মহান আল্লাহ্ পাক যিনি পূর্ববর্তী ওহী মুবারক দ্বারা নাযিলকৃত সমস্ত দ্বীন এবং অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতে মানবরচিত সমস্ত মতবাদ রদ করে এবং তাদের উপর প্রাধান্য দিয়ে উনার রসূল সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সত্য দ্বীন ও হিদায়েতসহ পাঠিয়েছেন। উনার সাক্ষী হিসেবে মহান আল্লাহ্ পাক তিনিই যথেষ্ট। (পবিত্র সূরা ফাতহা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ- ২৮)

মহান আল্লাহ পাক তিনি পূর্ববর্তী হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালামগণ উনাদের প্রতি নাযিলকৃত তিনখানা কিতাব-তাওরাত শরীফ, যাবূর শরীফ, ইন্জীল শরীফ এবং একশখানা ছহীফা শরীফ উনাদের হুকুম এবং পূর্ববর্তী, মধ্যবর্তী বা বর্তমান ও পরবর্তী মানবরচিত সমস্ত মতবাদ বাতিল ঘোষণা করে উনার যিনি হাবীব, যিনি কুল-কায়িনাতের হযরত নবী ও রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে হিদায়েতকারী, সাক্ষ্য দানকারী, সতর্ককারী, সুসংবাদ দানকারী হিসেবে পবিত্র দ্বীন ইসলাম দিয়ে, পবিত্র কুরআন শরীফ দিয়ে, পবিত্র হাদীছ শরীফ দিয়ে যমীনে পাঠিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!

মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট একমাত্র মনোনীত দ্বীন হচ্ছেন সম্মানিত ইসলাম
অর্থাৎ সম্মানিত দ্বীন ইসলামই হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের নিকট একমাত্র মনোনীত, হক্ব, পরিপূর্ণ ও সন্তুষ্টিপ্রাপ্ত দ্বীন

পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ উনার ৮৫নং পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে বলা আছে- যে লোক সম্মানিত দ্বীন ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো ধর্ম তালাশ করে, কস্মিণকালেও তা গ্রহণ করা হবে না এবং আখেরাতে সে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশ মুবারক দ্বারা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হচ্ছে যে, সম্মানিত দ্বীন ইসলাম আসার পর সমস্ত ধর্মই বাতিল ঘোষিত হয়েছে। মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত ইসলাম উনাকেই একমাত্র দ্বীন হিসেবে পছন্দ করেছেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করলাম ও তোমাদের প্রতি আমার নিয়ামত সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দ্বীন হিসাবে মনোনীত করলাম। সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা মায়েদা শরীফ- ৩)

অতীতের যেকোনো রীতিনীতিই বর্তমানে রহিত হয়ে গেছে, তা পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মাধ্যম দিয়েও প্রমাণিত। যে বিষয়টি পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছে- একদিন হযরত উমর ইবনুল খত্তাব আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট এসে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমরা ইহুদীদের থেকে তাদের কিছু ধর্মীয় কথা শুনে থাকি, যাতে আমরা আশ্চর্যবোধ করি, এর কিছু আমরা লিখে রাখবো কি? মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনারা কি দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছেন? যে রকম ইহুদী-নাছারারা দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছে? অবশ্যই আমি আপনাদের নিকট আপনাদের জন্য পরিপূর্ণ, উজ্জ্বল ও পরিষ্কার স্পষ্ট পবিত্র দ্বীন নিয়ে এসেছি। হযরত মুসা আলাইহিস সালাম তিনিও যদি এখন দুনিয়ায় থাকতেন, তাহলে উনাকেও আমার অনুসরণ করতে হতো। সুবহানাল্লাহ!
মূর্তি বিড়ম্বনার ইসলামী আঙ্গিক শিরোনামে হাসান মাহমুদ নামক এক কাট্টা মুনাফিকের লেখা সম্পূর্ণরূপে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার বিরোধী ও বিভ্রান্তিকর:

গত ২৩শে ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে বিডি নিউজ২৪ডটকম নামক একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যমে   মূর্তি বিড়ম্বনার ইসলামী আঙ্গিক শিরোনামে হাসান মাহমুদ নামক এক কাট্টা মুনাফিক একটি বিভ্রান্তিকর আর্টিকেল প্রকাশ করেছে। যা সম্পূর্ণরূপে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার বিরোধী।

সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে মূর্তি বা ভাস্কর্য ও ছবি তৈরি করা, আঁকা সম্পূর্ণরূপে নাজায়িয ও হারাম। বৈধ বা জায়িয মনে করা কুফরী। অথচ উক্ত মুনাফিক লোকটি মূর্তিকে জায়িয করার চেষ্টা করেছে এবং দলীল হিসেবে এমন কিছু বর্ণনা উল্লেখ করেছে, যা সম্মানিত দ্বীন ইসলামে মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়।

প্রকাশ থাকে যে, খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার শ্রেষ্ঠতম রসূল সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম দিয়ে পাঠিয়েছেন অতীতের সমস্ত দ্বীনের উপর প্রাধান্য দিয়ে।

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন সকল হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস উনারাসহ সমস্ত সৃষ্টির জন্য সম্মানিত নবী ও রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং উনার প্রতি নাযিলকৃত সম্মানিত দ্বীন ইসলামই হচ্ছেন একমাত্র পরিপূর্ণ, নিয়ামতপূর্ণ ও সন্তুষ্টিপূর্ণ দ্বীন এবং উনার হুকুম বা বিধানই ক্বিয়ামত পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। সুবহানাল্লাহ!

কাজেই সম্মানিত দ্বীন ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন দ্বীন বা ধর্মের বিধান, নিয়ম-নীতি, তর্জ-তরীক্বা মুসলমানের জন্য অনুসরণীয় নয়।
এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

مَنْ يَّبْتَغِ غَيْرَ الْاِسْلَامِ دِيْنًا فَلَنْ يُّقْبَلَ مِنْهُ وَهُوَ فِى الْاٰخِرَةِ مِنَ الْخَاسِرِيْنَ
অর্থ: যে ব্যক্তি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম ব্যতীত অন্য দ্বীন তালাশ বা গ্রহণ করবে তার থেকে তা কখনোই গ্রহণ করা হবে না এবং সে পরকালে ক্ষতিগ্রস্তদের তথা জাহান্নামীদের অন্তর্ভুক্ত হবে। (পবিত্র সূরা আলে ইমরান: পবিত্র আয়াত শরীফ ৮৫)

প্রতিভাত হলো, সম্মানিত দ্বীন ইসলাম আসার পর আর কোন দ্বীন-ধর্ম বা মতবাদের নিয়ম-নীতি, তর্জ-তরীক্বা, আইন-কানুন তা সম্মানিত ওহী মুবারক দ্বারা নাযিলকৃত হোক অথবা মানবরচিত হোক তা মুসলমান উনাদের জন্য গ্রহণযোগ্য ও অনুসরনীয় নয়। বরং তা সম্পূর্ণরূপে পরিত্যাজ্য ও পরিহারযোগ্য।

উল্লেখ্য, সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার উছূল বা দলীলসমূহ ৪খানা। ১. পবিত্র কুরআন শরীফ, ২. পবিত্র হাদীছ শরীফ, ৩. পবিত্র ইজমা শরীফ, ৪. পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ। অর্থাৎ মুসলমান উনাদেরকে কোনো কিছু করতে হলে উক্ত ৪খানা দলীলের ভিত্তিতেই করতে হবে।

অতএব, যে ইতিহাস বা ঐতিহাসিকের বর্ণনা উক্ত সম্মানিত দলীল চতুষ্ঠয়ের মুখালিফ তা মোটেই অনুসরণীয় ও গ্রহণযোগ্য নয়।

আরো উল্লেখ্য, পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে প্রসিদ্ধ মতে, ৬৬৬৬টি পবিত্র আয়াত শরীফ উনাদের মধ্যে এক হাজার পবিত্র আয়াত শরীফ ওয়াদা সংক্রান্ত, এক হাজার পবিত্র আয়াত শরীফ ভীতি প্রদর্শন সংক্রান্ত, এক হাজার পবিত্র আয়াত শরীফ আদেশ সংক্রান্ত, এক হাজার পবিত্র আয়াত শরীফ নিষেধ সংক্রান্ত, এক হাজার পবিত্র আয়াত শরীফ ঘটনা সংক্রান্ত, এক পবিত্র হাজার আয়াত শরীফ সংবাদপূর্ণ, পাঁচশ পবিত্র আয়াত শরীফ হালাম-হারাম তথা আহকাম সম্পর্কে, একশ পবিত্র আয়াত শরীফ দোয়া ও তাসবীহ সংক্রান্ত এবং ছিষট্টি পবিত্র আয়াত শরীফ নাসিখ-মানসূখ সংক্রান্ত। (তাফসীরে কাশশাফ, মারাকিউল ফালাহ, হাশিয়ায়ে তাহতাবী আলা দুররিল মুখতার)

স্মরণীয় যে, হালাল-হারাম তথা আহকাম সাব্যস্তকারী পাঁচশ পবিত্র আয়াত শরীফ উনাদের অন্তর্ভুক্ত বিশেষ একখানা পবিত্র আয়াত শরীফ হচ্ছেন পবিত্র সূরা হজ্জ শরীফ উনার ৩০নং পবিত্র আয়াত শরীফ। উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
فَاجْتَنِبُوا الرِّجْسَ مِنَ الْاَوْثَانِ
অর্থ: তোমরা মূর্তিসমূহের খারাবী, অপবিত্রতা, নাপাকী, নিষিদ্ধতা বা শাস্তি থেকে বেঁচে থাকো। (তাফসীরে আহকামুল কুরআন লিল জাসসাস)

অনুরূপ আরো একখানা পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
يَآ أَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوا إِنَّمَا الْخَمْرُ وَالْمَيْسِرُ وَالْأَنصَابُ وَالْأَزْلَامُ رِجْسٌ مِّنْ عَمَلِ الشَّيْطَانِ فَاجْتَنِبُوْهُ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَ
অর্থ: হে ঈমানদারগণ! নিশ্চয়ই মদ, জুয়া, মূর্তি, ভাগ্য নির্ধারণকারী তীর এসবগুলোই শয়তানে কাজ। অতএব, এগুলো থেকে তোমরা বিরত থাকো। অবশ্যই তোমরা সফলতা লাভ করবে। (পবিত্র সূরা মায়িদাহ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৯০)
উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনাদের দ্বারা মূর্তিকে হারাম ঘোষণা করা হয়েছে। অর্থাৎ মূর্তি মানেই হারাম তা যে নামেই হোক এবং যে কারণে বা উদ্দেশ্যেই তৈরি করা হোক।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, যারা প্রাণীর মূর্তি তৈরি করবে, ক্বিয়ামতের দিন তাদের কঠিন শাস্তি দেয়া হবে। এবং তাদেরকে বলা হবে, যে মূর্তিগুলো তোমরা তৈরি করেছ, সেগুলোর মধ্যে প্রাণ দান করো। (বুখারী শরীফ ২য় জি.., ৮৮০ পৃষ্ঠা, মুসলমি শরীফ ২য় জি:, ২০১ পৃষ্ঠা)

হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলতে শুনেছি যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন, মানুষের মধ্যে ঐ ব্যক্তি অধিক অত্যাচারী, যে ব্যক্তি আমার সৃষ্টির সাদৃশ্য কোনো প্রাণীর ছূরত বা আকৃতি তৈরি করে। (মিশকাত শরীফ ৩৮৫ পৃষ্ঠা)

উম্মুল মুমিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই ক্বিয়ামতের দিন ঐ ব্যক্তির কঠিন শাস্তি হবে, যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার সৃষ্টির সাদৃশ্য কোন প্রাণীর ছূরত বা আকৃতি তৈরি করবে। (মিশকাত শরীফ ৩৮৫ পৃষ্ঠা)

হযরত মুজাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক  ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমি বাদ্যযন্ত্র ও মূর্তি ধ্বংস করার জন্য প্রেরিত হয়েছি। (তাফসীরে রুহুল বয়ান)

হযরত আবূ উমামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ্ পাক তিনি আমাকে প্রেরণ করেছেন সমস্ত জাহানের জন্য রহমতস্বরূপ এবং হিদায়েতস্বরূপ। আর আমাকে আদেশ মুবারক করেছেন বাদ্যযন্ত্র, মূর্তি, ক্রুশ ও জাহিলী কাজসমূহ ধ্বংস করার জন্য। (মুসনাদে আহমদ শরীফ)

 নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সুদ ভক্ষণকারী ও সুদ প্রদানকারী, উল্কি অঙ্কনকারী ও উল্কি গ্রহণকারী এবং প্রতিকৃতি প্রস্তুতকারীদের (ভাস্কর, চিত্রকরদের) উপর লানত করেছেন। (বুখারী শরীফ)

অতএব, সম্মানিত দ্বীন ইসলামে মূর্তির ব্যাপারে কঠোর নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি ছবি আঁকা, তোলা ও রাখা সম্পর্কেও কঠোর নিষেধাজ্ঞা এবং ভয়াবহ পরিণতির কথাও বলা হয়েছে।

যেমন, এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, এক ব্যক্তি ইরাক থেকে আসলো এবং বললো, আমি এ রকম প্রাণীর ছবি আঁকি। এ ব্যাপারে আপনি কি বলেন? হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন, তুমি তা দূরে নিক্ষেপ করো, তুমি তা দূরে নিক্ষেপ করো। কেননা আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি দুনিয়ায় কোনো প্রাণীর ছবি তৈরি করবে, তাকে ক্বিয়ামতের দিন ওই ছবির মধ্যে প্রাণ দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করা হবে। কিন্তু সে তার মধ্যে প্রাণ দিতে পারবে না। (নাসায়ী শরীফ, কিতাবুয যীনাত বাবুত তাছাবীর ২য় জিঃ, ৩০০ পৃষ্ঠা)

উম্মুল মুমিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। একবার তিনি একটি আসন খরিদ করলেন, তাতে অনেকগুলো প্রাণীর ছবি ছিল। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি (বাহির থেকে) সেটা দেখে; ঘরে প্রবেশ না করে দরজায় দাঁড়িয়ে রইলেন। আমি উনার চেহারা মুবারকে অসন্তুষ্টির ভাব দেখতে পেলাম। উম্মুল মুমিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, তখন আমি বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের নিকট তওবা করছি। বলুন, অসন্তুষ্টির কি কারণ? তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, এই আসনটি কেন? আমি বললাম, আপনার বসার এবং বিছানা হিসেবে ব্যবহার করার জন্য আমি এটা খরিদ করেছি। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, এই সমস্ত ছবি যারা তৈরি করেছে, ক্বিয়ামতের দিন তাদেরকে শাস্তি দেয়া হবে এবং তাদেরকে বলা হবে, যা তোমরা বানিয়েছ তাতে জীবন দান কর, অতঃপর তিনি বললেন, হযরত ফেরেশ্তা আলাইহিমুস সালাম কখনো এমন ঘরে প্রবেশ করেন না, যেই ঘরে (প্রাণীর) ছবি থাকে। (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত, মিরকাত)

মোট কথা, মূর্তি হোক, ভাস্কর্য হোক, প্রাণীর ছবি হোক এবং সেগুলোর আরাধনা করা হোক কিংবা না করা হোক সম্মানিত দ্বীন ইসলামে তা নিষিদ্ধ ও হারাম এবং জায়িয মনে করা কাট্টা কুফরী এবং চির জাহান্নামী হওয়ার কারণ।

পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের এতসব সুস্পষ্ট দলীল থাকার পরও উক্ত মুসলমান নামধারী কাট্টা মুনাফিক ব্যক্তিটি বলেছে- সম্মানিত দ্বীন ইসলাম মূর্তির বিরুদ্ধে নয়নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ!

দ্বিতীয়ত, উম্মুল মুমিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার বরাত দিয়ে উক্ত কাট্টা মুনাফিক বলেছে, তিনি পুতুল ব্যবহার করেছেননাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! এমনকি সে বুখারী শরীফ-এর ব্যাখ্যাগ্রন্থ ফতহুল বারী-এর লেখক হযরত ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকেও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করেছে। নাউযুবিল্লাহ!

অথচ মূর্তি, ছবি বা ভাস্কর্যকে জায়িয প্রমাণ করতে গিয়ে সে দলীল হিসেবে যে পবিত্র হাদীছ শরীফ উল্লেখ করেছে, উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফখানা মানসূখ (রহিত) হওয়ার ব্যাপারে সকলেই একমত। যেমন উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার ব্যাখ্যায় শরহুল কিরমানী আলাল বুখারীতে উল্লেখ আছে-শিশুদের জন্য খেলনা পতুল বা মূর্তি ব্যবহার করাকে বৈধ প্রমাণ করতে গিয়ে কেউ কেউ দলীল হিসেবে এ পবিত্র হাদীছ শরীফ পেশ করে থাকে। উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফখানা ছবি ও মূর্তি সম্পর্কিত অসংখ্য পবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারা মানসূখ হয়ে গেছে। অর্থাৎ এর হুকুম এখন আর বলবৎ নেই। (হাশিয়াতুল বুখারী ২য় খণ্ড ৯০৫ পৃষ্ঠা ৬নং হাশিয়াহ)

অতএব, পুতুল নিয়ে খেলা সম্পর্কিত পবিত্র হাদীছ শরীফখানা সকলের মতেই মানসূখ। কেননা অসংখ্য পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মধ্যে মূর্তি, পুতুল, ভাস্কর্য, ছবি ইত্যাদি তৈরি করাকে সরাসরি নিষেধ করা হয়েছে এবং তৈরি করাকে কঠিন গুনাহের কারণ বলা হয়েছে।
তাই সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে পতুল তৈরি করা এবং পুতুল নিয়ে খেলা নাজায়িয ও হারাম।

এই চরম জাহিল ও কাট্টা মুনাফিক জানে না, সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার শুরুতে অনেক বিষয় ছিল যা পরবর্তীতে মানসূখ বা রহিত হয়ে গেছে।

উদাহরণস্বরূপ পর্দার বিধান নাযিল হয়েছে পঞ্চম হিজরী সনে। পর্দার বিধান নাযিল হওয়ার পূর্বে মহিলা ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্নাহ উনারা গইরে মাহরাম পুরুষদের সাথে দেখা করতেন। এখন সেই বর্ণনা বা হাদীছ শরীফ দলীল হিসেবে গ্রহণ করে কি মহিলারা বেগানা পুরুষদের সাথে দেখা করতে পারবে? কখনোই না।

অনুরূপভাবে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার প্রথমদিকে মদ হারাম ঘোষণা করা হয়নি। পর্যায়ক্রমে তা হারাম ঘোষণা করা হয়েছে। এখন প্রথমদিকের বর্ণনা বা পবিত্র হাদীছ শরীফ দলীল দিয়ে কেউ যদি মদ খায় বা মদের ব্যবসা করে তা কি জায়িয হবে? কখনোই নয়।

একইভাবে প্রথমদিকে নামাযের মধ্যে কথা বলা নিষেধ ছিল না, যার কারণে মুছল্লীগণ নামাযের বিষয়ে নামাযরত মুছল্লীদেরকে এবং অন্য বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ ও কথাবার্তা বলতেন। বুখারী শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত সেই হাদীছ শরীফ দলীল হিসেবে গ্রহণ করে এখন নামাযে কথা বলা যাবে কি? বললে নামায হবে কি?

এ ধরনের আরো অনেক বিষয়ই রয়েছে যা সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার প্রথমদিকে নাজায়িয ও হারাম ঘোষণা করা হয়নি। কিন্তু পরবর্তীতে তা নাজায়িয ও হারাম ঘোষণা করা হয়।

উক্ত বিষয়সমূহের ন্যয় একটি হচ্ছে মূর্তি ও ছবি।

চরম জাহিল ও কাট্টা মুনাফিক ব্যক্তিটি ছবি ও পুতুল সংক্রান্ত হযরত উম্মুল মুমিনীন সাইয়্যিদুনা হযরত আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার মানসূখ বর্ণনাসমূহ উল্লেখ করেছে, কিন্তু উনার থেকে ছবি, মূর্তি হারাম হওয়া সংক্রান্ত যে পবিত্র হাদীছ শরীফসমূহ উল্লেখ আছে, তা সে উল্লেখ করেনি। যেমন-

 (১) উম্মুল মুমিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি একটি বালিশ মুবারক ক্রয় করেছিলেন। তাতে ছবি আঁকা ছিল। পবিত্র হুজরা শরীফে তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করার সময় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দৃষ্টি মুবারক এতে পতিত হলো, তখন তিনি আর পবিত্র হুজরা শরীফে তাশরীফ গ্রহণ করলেন না। উম্মুল মুমিনীন সায়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি বুঝতে পেরে বললেন- আমি মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের নিকট তওবা করছি। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন: এই বালিশ মুবারক কোথায় পেলেন? তিনি বললেন: আমি এটা এজন্য খরিদ করেছি যাতে আপনি এতে হেলান দিয়ে বিশ্রাম গ্রহণ করতে পারেন। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন: যারা এই সমস্ত ছবি অঙ্কন করেছে তাদেরকে ক্বিয়ামতের দিন কঠিন আযাব দেয়া হবে। তাদেরকে বলা হবে: তোমরা যাদেরকে সৃষ্টি করেছিলে তাদের জীবিত করো। অতঃপর তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন: যে ঘরে ছবি থাকে সে ঘরে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করে না। (পবিত্র মুসলিম শরীফ পোশাক ও সৌন্দর্য অধ্যায়, অনুচ্ছেদ নং ২৬)

 (২) উম্মুল মুমনীন সায়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বীয় পবিত্র হুজরা শরীফে (প্রাণীর) ছবিযুক্ত কোনো জিনিসই রাখতেন নাদেখলেই ভেঙ্গে চূর্ণ করে দিতেন। (পবিত্র বুখারী শরীফ : পবিত্র মিশকাত শরীফ)

 (৩)  উম্মুল মুমিনীন সায়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার থেকে অপর একটি বর্ণনা মুবারকে এসেছে যে, একবার তিনি পবিত্র হুজরা শরীফ উনার জানালা মুবারকে একটি পর্দা মুবারক ঝুলিয়ে ছিলেন, যাতে প্রাণীর ছবি ছিল। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পর্দাটিকে ছিঁড়ে ফেললেন। (পবিত্র মিশকাত শরীফ)

উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফসমূহ দ্বারা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত যে- খোদ উম্মুল মুমিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার বর্ণনা মুবারকে উল্লেখ রয়েছে যে, ছবি, মূর্তি, ভাস্কর্য ইত্যাদি সম্পূর্ণরূপে হারাম।

কাজেই মূর্তি, ভাস্কর্য, ছবি ইত্যাদি জায়িয সাব্যস্ত করতে হলে উক্ত আহকাম সংক্রান্ত পবিত্র আয়াত শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মোকাবেলায় আহকাম সংক্রান্ত পবিত্র আয়াত শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ দলীল দিতে হবে। অন্যথায় কস্মিনকালেও তা গ্রহণযোগ্য হবে না। কেননা মূর্তি, ভাস্কর্য, ছবি তৈরি করা, আঁকা, তোলা ইত্যাদি হারাম ও কুফরী এবং তার পরিণতি জাহান্নাম এ সংক্রান্ত আহকাম সংক্রান্ত বহু পবিত্র আয়াত শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ বিদ্যমান।

তা না করে উক্ত চরম জাহিল ও গণ্ডমূর্খ লোকটি মূর্তির পক্ষে এমনসব দলীল উপস্থাপনের চেষ্টা করেছে, যা তাকে কাট্টা মুনাফিক ও কাট্টা কাফিরে পরিণত করেছে এবং সম্মানিত দ্বীন ইসলাম সম্পর্কে চরম অজ্ঞ, গণ্ডমূর্খ ও আশাদ্দুদ দরজার জাহিল ও ফেতনাবাজ হিসেবে সাব্যস্ত করেছে।

তৃতীয়তঃ কাট্টা মুনাফিক ব্যক্তিটি বলেছে, তখন সম্মানিত কাবা শরীফ উনার দেয়ালে ৩৬০টি মূর্তি ও অনেক ছবির সঙ্গে হযরত ঈসা রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম ও উনার সম্মানিত আম্মা আলাইহাস সালাম উনাদের ছবিও ছিল। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম ও উনার সম্মানিতা আম্মা আলাইহাস সালাম উনাদের ছবি বাদে বাকি সব ছবি মুছে ফেলতে নির্দেশ দিয়েছিলেন।

উপরোক্ত বর্ণনা ও ইতিহাস সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভুল। সঠিক বর্ণনাসমূহ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়েছে। যেমন-
(১) হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, পবিত্র মক্কা শরীফ বিজয়ের পর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন পবিত্র বায়তুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে বিভিন্ন প্রতিকৃতি/ছবি দেখলেন, তখন তা মুছে ফেলার নির্দেশ মুবারক দিলেন। প্রতিকৃতিগুলো মুছে ফেলার আগ পর্যন্ত তিনি তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেননি। (পবিত্র বুখারী শরীফ/ ৩৩৫২)

(২) হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, পবিত্র মক্কা শরীফ বিজয়ের দিন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আযম আলাইহিস সালাম উনাকে নির্দেশ মুবারক দিলেন- যেন তিনি পবিত্র কাবা শরীফ উনার ভিতরের সব ছবি/মূর্তি নষ্ট করে দেন। অতঃপর ছবি/মূতি নষ্ট করার আগে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র কাবা শরীফ উনার ভিতর তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেননি। (পবিত্র আবু দাউদ শরীফ, পবিত্র বায়হাকী শরীফ)

(৩) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন পবিত্র কাবা শরীফ উনার কাছে আসলেন, তখন মূর্তি থাকায় উহার ভিতরে তিনি তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেননি। এরপর তিনি নির্দেশ মুবারক দিলেন সেগুলো অপসারণ করার জন্য; এবং তাই করা  হলো। সেখানে হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম ও হযরত ইসমাইল যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাদের প্রতিকৃতিও ছিল, উনাদের হাতে ভাগ্য নির্ধারণী তীর ছিল। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তা দেখে ইরশাদ মুবারক করলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদেরকে (যারা এগুলো বানিয়েছে) ধ্বংস করুন। তারা কি জানতো না যে, হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম ও হযরত ইসমাইল যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনারা কখনো এসব ভাগ্য নির্ধারণী তীর ব্যবহার করেননি? এরপর তিনি পবিত্র কাবা শরীফ উনার মধ্যে তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করলেন এবং চতুর্দিকে তাকবীর ধ্বনি দেয়া হলো, তবে কোনো নামায পড়লেন না। (পবিত্র বুখারী শরীফ ১:২১৮, পবিত্র আবু দাউদ শরীফ :১:২৭৭, রশীদিয়া লাইব্রেরী, দিল্লী)

এভাবে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের অন্যান্য নির্ভরযোগ্য কিতাবেও এসেছে।

(৪) হযরত উসামা বিন যায়িদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে পবিত্র কাবা শরীফ উনার মধ্যে প্রবেশ করলাম। তিনি তাতে কিছু ছবি দেখতে পেলেন। তখন তিনি এক বালতি পানি আনতে আদেশ মুবারক করলেন। আমি পানি আনার পর তিনি তা দিয়ে সেগুলো মুছে দিলেন এবং ইরশাদ মুবারক করলেন- মহান আল্লাহ পাক তিনি ঐ সম্প্রদায়কে ধ্বংস করুন, যারা এমন জিনিসের আকৃতি দেয় যা তারা সৃষ্টি করতে পারবে না(পবিত্র আবু দাউদ শরীফ)

এসমস্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রতিভাত হয় যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সমস্ত মূর্তি ও ছবি নষ্ট করেন এবং এতে হযরত রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম এবং উনার সম্মানিতা আম্মা আলাইহাস সালাম উনাদের প্রতিকৃতি অক্ষুণœ থাকার কেনো প্রমাণ নেই। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম ও উনার সম্মানিতা আম্মা আলাইহাস সালাম উনাদের ছবি নষ্ট করতে নিষেধ করেন, তা কেউ বর্ণনা করেননি। এটি সম্পূর্ণই বানোয়াট।

যেমন ইবনে ইসহাক রহমতুল্লাহি আলাইহি জীবনী গ্রন্থের দুই ধারক হযরত ইমাম তাবারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ও হযরত ইবনে হিশাম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনারা কেউই এ বর্ণনাটি উল্লেখ করেননি। এ দুটো জীবনী গ্রন্থ ছাড়া অন্য কোনো জীবনী গ্রন্থেও এর উল্লেখ নেই। 

উল্লেখ্য, হিজরী ৮ম সনে পবিত্র মক্কা শরীফ বিজয়ের দিন স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম উনাদেরকে সঙ্গে নিয়ে সম্মানিত কাবা শরীফ উনার মধ্যে অবস্থিত সমস্ত মূর্তি, ভাস্কর্য, ছবি ধ্বংস করে ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করেছিলেন। বলার অপেক্ষা রাখে না, মূর্তি, ভাস্কর্য, ছবি ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করার পরেই অর্থাৎ  হিজরী ৯ম সনে পবিত্র হজ্জ ফরয করা হয়। সুবহানাল্লাহ!

আরো উল্লেখ্য, অতীতের কোনো বিষয় সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার মুখালিফ বা বিরোধী হলে তা মুসলমানদের জন্য গ্রহণ করা বা অনুসরণ করা জায়িয নেই। যেমন- আবুল বাশার হযরত আদম ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার যামানা থেকে শুরু করে হযরত নূহ আলাইহিস সালাম উনার যামানা পর্যন্ত আপন ভাই-বোনের মধ্যে বিবাহ জায়িয ছিল। তাই বলে কি এখন আপন ভাই-বোন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া জায়িয হবে? কখনোই নয়। কেউ যদি জায়িয মনে করে, সে কি মুসলমান থাকবে? বরং সে কাট্টা কাফির ও চির জাহান্নামী হবে। তদ্রƒপ হযরত সুলায়মান আলাইহিস সালাম উনার যামানায় মূর্তি, ভাস্কর্য থাকার দলীল সম্মানিত দ্বীন ইসলাম বা সম্মানিত মুসলমান উনাদের জন্য কখনোই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

কাজেই প্রতিমা বলা হোক, মূর্তি বলা হোক, ভাস্কর্য বলা হোক প্রত্যেকটাই মূর্তি এবং প্রত্যেকটার হুকুম এক। প্রতিমা, মূর্তি, ম্যানিকিন, ভাস্কর্যের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় করা চরম জিহালতি, গণ্ডমূর্খতা ও মনগড়া। মনগড়া বা বানোয়াট কোনো কথা সম্মানিত দ্বীন ইসলাম ও সম্মানিত মুসলমান উনাদের জন্য কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন-

هَاتُوْا بُرْهَانَكُمْ اِنْ كُنْتُمْ صَادِقِيْنَ
অর্থ: যদি তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাক, তবে দলীল পেশ করো। (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ:পবিত্র আয়াত শরীফ ১১১)
-0-