ছয় উছুলী তাবলীগী মুরুব্বীদরে হাক্বীকত ফাঁস


পিডিএফ লিংক- https://drive.google.com/open?id=1fXUFwHy2plfws4UMhDkSgqm5mA3hzWrk

Image result for ফাজায়েলে আমলছয় উছুলী তাবলীগী 

মুরুব্বীদের হাক্বীকত

 ফাঁস

ছয় উছুলী তাবলীগীদরে দুই গ্রুপরে কোন্দলে ফাঁস হয়ে গেছে তাদরে র্কণধারদরে চাঞ্চল্যকর গোপন তথ্য
মুরুব্বীদরে জীবন থেকে নামক একটি বইতে প্রকাশ করা হয়েছে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য। এটি সইে বইয়রেই একটি প্রন্টি কপি

বিস্মিল্লাহির রাহ্মানির রাহিম
ভূমিকা
এবং আমার গৃহকে পবিত্র রাখ তওয়াফকারীদের জন্যে, নামাজে দন্ডায়মানদের জন্যে এবং রুকু-সিজদাকারীদের জন্যে। এবং মানুষের মধ্যে হজ্জ্বের ঘোষণা প্রচার কর। তারা তোমার কাছে আসবে পায়ে হেটে এবং সর্বপ্রকার কৃশকায় উটের পিঠে সওয়ার হয়ে দূর-দূরান্ত থেকে।”
(সূরা-হজ্জ্ব, আয়াত:২৬-২৭)

যে ঘরের দিকে দাওয়াত দিব, সে ঘরের পবিত্রতা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে, নইলে আমাদের দাওয়াত হবে নিষ্ফল। হযরত ইউসুফ (আ:) জেল থেকে বের হবার আগে নিজ পবিত্রতা সম্বন্ধে সন্দেহ দূর করলেন। সন্দেহ থাকলে তাঁর দাওয়াত গ্রহণযোগ্য হবে না। (এই বক্তব্যটি কুফরী। নবী রাসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা সর্বাবস্থায় পবিত্র থেকে পবিত্রতর। অপবিত্রতার প্রশ্নই এখানে আসে না।)

এক ব্যক্তি ইয়াজিদ কে আমীরুল মু’মিনীন বলেছিল। হযরত উমর ইবনে আব্দুল আজীজ (র:) এর নির্দেশে তাকে র্দোরা মারা হয়। এ ঘটনা ইয়াজীদের মৃত্যুর অনেক পরে। আমীরুল মু’মিনীন বলাতে বাস্তবে কিছু আসে যায় না। কিন্তু আমাদের মনকে পবিত্র রাখা জরুরী। ইয়াজিদ কে আমিরুল মু’মিনীন বলাতে মনের আসন কলঙ্কিত হয়। (এই বক্তব্যটি কুফরী। কারণ ইয়াজিদ লানাতুল্লাহি আলাইহির প্রশংসাকারী অবশ্যই কাফির)

প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার উপযুক্ত আসনে স্থান দাও”
(আবু দাউদ শরীফ, উদ্ধৃতি: দ্বীনি দাওয়াত)
কাকরাইলের মিম্বরকে পবিত্র রাখাও আমাদের দ্বীনি দায়িত্ব, নিজের মনকে পাক রাখাও আমাদের দায়িত্ব।

প্রাসঙ্গিক বয়ান
শুধুমাত্র মুখের কথাটাকেই দাওয়াত বলে না বরং মহানবী (সা:) এবং সাহাবাদের পবিত্র জীবন আমলীভাবে নিজের জীবনে বাস্তবায়িত করাটাই প্রকৃত দাওয়াত ও তাবলীগ।
ঈমানের প্রধান আলামত হলো তাকওয়া। আর তাকওয়ার প্রথম ক্ষেত্র মুআ’মালাত অর্থাৎ লেন-দেন ও কামাই-রোজগার। গভর্নর সাহাবী হযরত উমায়ের ইবনে সা’দ (রা:) এর পরহেজগারী এবং দরিদ্র জীবন আমাদের জন্য উত্তম দৃষ্টান্ত। মেহেনতের উদ্দেশ্য এই তাকওয়া অর্জন করা। (এই বক্তব্যটি ভুল। দরিদ্র জীবন আমাদের অনুসরণীয় নয়। কারণ হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে রয়েছে, অতি গরীবী থেকে কুফরীর গন্ধ আসে)
- মাওলানা সা’দ (দা:বা:), বিশ্ব ইজতেমা-২০১৪

নবী (সাঃ) এর জীবনে যেমন বরকত ও কল্যান রয়েছে তেমনি তাঁর রেখে যাওয়া দ্বীনি মেহনতেও বরকত ও কল্যান রয়েছে। যতদিন বাংলাদেশবাসী এই দ্বীনি মেহনতের প্রকৃত শুকরিয়া আদায় করবে, ততদিন এখানে ইজতিমা হতে থাকবে। যখন এই দ্বীনি মেহনতকে হীনস্বার্থ, ক্ষমতা আর পয়সা উপার্জনের উপায় বানানো হবে, তখন এখানে ইজতিমাও বন্ধ হয়ে যাবে।
নবী (সাঃ) যা বলেছেন, তার সবটুকুই নিজের জীবন দিয়ে দেখিয়ে গিয়েছেন। নববী মেহনতের সহীহ পদ্ধতি আর সুনন্নতি মেজাজ হল সিফাতগুলিকে জীবন দিয়ে দেখিয়ে দেওয়া। কাউকে আগে বাড়ানো, কাউকে পিছিয়ে দেওয়া, কাউকে আক্রমন করা, স্বজনপ্রীতি করা, আঞ্চলিকতাকে প্রশ্রয় দেওয়া, তোষামোদকারী ও ঘুর ঘুর করনেওয়ালাদের বেশি প্রাধান্য দেওয়া, কারো রায় না নেওয়া, অমুকের মাশোয়ারা না নেওয়া, আপত্তি উত্থাপনকারীদের কান ধরে বের করে দেওয়া এগুলি নববী মেজাজ নয়।
যে অন্ধকার, ফিতনা ও দাজ্জালের কথা নবীজি (সাঃ) বলে গিয়েছিলেন, সেগুলি প্রকাশ পেয়ে যাচ্ছে। আমাদেরকে এসব থেকে বাঁচতে হবে এবং অন্যকে বাঁচানোর চেষ্টাও করতে হবে। আমাদের জীবন ও মৃত্যু ইসলামের জন্যই হতে হবে।
দুনিয়াবী স্বার্থ হাসিলের জন্য দাওয়াতের কাজ করলে কোনই লাভ হবে না, দুনিয়াতেও না আখিরাতেও না। কাউকে যে আঘাত করে আর যে আঘাত করার মন্ত্রনা দেয়, উভয়ে সমান অপরাধি। এটা পশুত্ব। এই পশুত্বকে দমন করেই দ্বীনি কাজ করতে হবে।
- মাওলানা আহ্মদ লাট (দা:বা:), বিশ্ব ইজতেমা-২০১৪

কতিপয় দূর্নীতিবাজ মুরুব্বীদের অপকর্মের প্রতিবাদে সাংবাদিক সম্মেলন
সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহ্ তায়ালার এবং দুরুদ ও সালাম বর্ষিত হোক মহা নবী (স.) এর উপর। তাবলীগ একটি পবিত্র দ্বীনি মেহনত। এর উদ্দেশ্য নিজে দ্বীনদার হওয়া ও সবাইকে দ্বীনদার বানানো। অর্থাৎ পরিপূর্ণ ভাবে আল্লাহর অনুগত হওয়া। সুনির্দিষ্ট নীতিমালার অধীনে তাবলীগের কাজ সম্পাদন করা হয়।
নীতিমালাঃ
১) সব কাজ সম্পাদিত হবে মাশওয়ারা বা পরামর্শের ভিত্তিতে। এখানে পূর্ণ স্বচ্ছতা থাকবে। যে কারো, যে কোন বিষয়ে কথা বলার পূর্ণ অধিকার থাকবে। ২) প্রত্যেক কর্মী নিজ অর্থে কাজ করবে। কোন ভাবে কোন চাঁদা তোলা যাবে না। ৩) ছয় কথার (ছয় উসূল) মধ্যে আমাদের বক্তব্য ও কর্মকান্ড সীমিত থাকতে হবে। এর বাইরে কোন আলোচনায় যাওয়া যাবে না। বিশেষ করে রাজনৈতিক আলোচনা থেকে দুরে থাকতে হবে। ৪) অনুরোধ ও তোষমোদের মাধ্যমেই কাজ করতে হবে। শক্তি প্রয়োগ করা যাবে না।
চোর হোক বা ডাকাত হোক তাবলীগের ঘোর বিরোধী হোক; কাউকেই একটি চড়ও মারা যাবে না। (এই প্রত্যেকটি বক্তব্যই সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার খিলাফ ও ইসলাম বিকৃতির শামিল। সম্মানিত দ্বীন ইসলাম তাবলীগীদের মনগড়া ছয় উসূলে সীমাবদ্ধ নয়। চোরের হাত কেটে ফেলাটা যেখানে সম্মানিত শরীয়ত উনার আইন, সেখানে চোর-ডাকাতকে চড় না মেরে উল্টো তোষামোদ করার নীতি এই গুমরাহ তাবলীগীরা অবলম্বন করেছে)
সম্প্রতি কাকরাইলের কয়েকজন মুরুব্বী (শুরা বা পরিচালনা পরিষদের সদস্য) উপরোক্ত চারটি নীতিই লংঘন করেছেন।
চাঁদাবাজীঃ
জনাব ওয়াসিফুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি দল দেশ ও বিদেশ থেকে তাবলীগ ও কাকরাইল মসজিদ নির্মানের নামে অনেক টাকা চাঁদা তুলেছেন ও তার সিংহ ভাগ (প্রায় দুইশত কোটি টাকা) আতন্নসাত করেছেন। ক) বিদেশ থেকে টাকা সংগ্রহ করেছেন নিজে, সহায়তা করেছেন তাঁর ছেলে ওসামা ইসলাম। খ) দেশের ভিতর চাঁদা তুলতে সহায়তা করেছেন ডা. ইরতেজা হাসান। গ) মহিলাদের মধ্যে চাঁদা (অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্বর্নালংকার) তুলেছেন তার স্ত্রী মিনু ইসলাম (মিনু আপা নামে পরিচিত)
রাজনীতিতে অংশগ্রহনঃ
ক) জনাব ওয়াসিফুল ইসলাম রাজনীতি সংক্রান্ত বিষয়ে প্রবন্ধ লিখেন যার অধিকাংশ ছাপা হয় “দ্যা ডেইলী ষ্টারে।”
খ) টুইটারে রাজনীতি সংক্রান্ত বিষয়ে বক্তব্য দিয়ে থাকেন।
গ) ফেসবুকে খুব উগ্র ও অশালীন ভাষায় অনেক উক্তি করেছেন আওয়ামী লীগ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। পরবর্তিতে (অক্টোবর ২০১৩) এ সব মুছে ফেলেছেন।

সন্ত্রাসঃ
উপরের অনিয়মগুলো সম্পর্কে কেউ কথা বলতে চাইলে বা সতর্ক করতে চাইলে তাকে বাধা দেওয়া হয়। কথা বলতে না পেরে আমরা লিফলেট বিলি করার চেষ্টা করেছি। তারা বাধা দিয়েছেন ও হামলা চালিয়েছেন আমাদের উপরে। আমাদের কয়েকজন সাথী আহতও হয়েছেন, আমাদের কয়েকজন সাথী চিকিৎসাধীন ছিলেন এবং কয়েকটি মামলাও চলছে। কাকরাইলের অভ্যন্তরে দুইটি সন্ত্রাসী গ্রুপ সর্বদা সক্রিয়। “ওয়াসিফ-ওসামা গ্রুপ” ও “যুবায়ের-হানজালা গ্রুপ”। যৌথ অপারেশন পরিচালনা করেন, প্রধানতঃ ইঞ্জিঃ মাহফুজ হানন্নান ও ইঞ্জিঃ আনিসুর রহমান। বাংলাদেশের মানুষ ধর্মপ্রান তাবলীগকে ভালবাসেন আর তাবলীগের মুরুব্বীদের প্রতি আছে তাদের অগাধ শ্রদ্ধা। এ ভালবাসা ও শ্রদ্ধার সুযোগ নিয়ে এসব অপকর্ম করে যাচ্ছেন তবলীগের কতিপয় ভন্ড মুরুব্বী। সবাইকে এ ব্যপারে সচেতন করে দেওয়া আমাদের ঈমানী দায়িত্ব। মহান আল্লাহ্ সমগ্র মুসলিম উম্মাহকে এদের ভন্ডামীর শিকার হওয়া থেকে হেফাজত করুন। আমীন।
মহাসংকটে তাবলীগ
তাবলীগ একটি পবিত্র দ্বীনি মেহনত। কিছু স্বার্থান্বেষী লোক তাবলীগের মুখোশ পরে সম্পদ লুটের জন্য বা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য এ মেহনত থেকে ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করছেন। কাকরাইল মসজিদ উন্নয়নের নাম করে বিদেশী দাতাদের কাছ থেকে অর্থ নিয়ে জনাব ওয়াসিফুল ইসলাম দুই শত কোটি টাকার উর্দ্ধে আত্মসাত করেছেন। ২০১২ সালের টঙ্গী ময়দানে অবকাঠামো উনন্নয়নের জন্য সরকারী অনুদান ছিল ৯৪ কোটি টাকা । তার প্রায় সম্পূর্ণটাই তিনি আত্মসাত করেছেন।
জনাব ওয়াসিফুল ইসলাম রাজনীতিতে পদার্পনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ফেসবুকে তিনি ও তার ছেলে ওসামা ইসলাম আওয়ামী লীগ ও প্রধান মন্ত্রীর বিরুদ্ধে খুব উগ্র কথা লিখেছেন অত্যন্ত অশালীন ভাষায়। উদ্দেশ্য ছিল উপযুক্ত সময়ে এ সব দেখিয়ে বিএনপি-জামাতের কাছে প্রিয় হওয়া।
ইতি মধ্যে জনাব ওয়াসিফুল ইসলাম সমগ্র বাংলাদেশ জুড়ে একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছেন। ঢাকার প্রায় প্রতিটি হালকায় (১৫/২০ টি মসজিদের সমন্বয়ে একটি হালকা) তার অনুগত লোক নিযুক্ত রয়েছেন। সামরিক বাহিনীরও (কর্মরত ও অবসর প্রাপ্ত) বেশ কিছু পদস্থ কর্মকর্তা এই নেটওয়ার্কে আছেন।
সহযোগী মাওলানা জুবায়ের সাহেব- এর ছেলে হানজালা ও ওসামার নেতৃত্বে একটি ক্যাডার বাহিনীও গড়ে তুলেছেন। এ ক্যাডার বাহিনী ২৪-১২-২০১৩ সালে দোয়ার প্রাক্কালে মৌলানা আশরাফ আলীকে টঙ্গী ময়দানের মঞ্চ থেকে নামিয়ে এনে বেদম প্রহার করেছে। তিনি জাতীয় হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ৩১ শে ডিসেম্বর রাতে মেহদী হাসান নামে এক তাবলীগের কর্মীকে কাকরাইল মসজীদের এক কামরায় নিয়ে নির্যাতন করেছে ও আটকিয়ে রেখেছে। রাত আনুমানিক ১:৪৫ মিনিটে রমনা থানা থেকে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। এ জাতীয় ঘটনা তাবলীগে অকল্পনীয় ছিল। কিন্তু এখন ঘটছে।
জামাতে ইসলামীর গোলাম আজম তাবলীগ থেকে রাজনীতিতে গিয়েছিলেন অল্প কয়েকজন অনুসারীসহ। জনাব ওয়সিফুল ইসলাম আশাবাদী তাঁর নেটওয়ার্কের সুবাদে সম্পূর্ণ তাবলীগকে নিজের সাথে টেনে নিতে পারবেন। জনাব ওয়াসিফুল ইসলাম এই আশা পোষণ করেন যে তথাকথিত ইসলামিক দলগুলোর মধ্যে তাঁর দলই হবে সর্ববৃহৎ।
জনাব ওয়াসিফুল ইসলামের হিসাব ঠিকমত মিলেনি। তাঁর ধারনা ছিল সরকার পতন হবে ২০১৩ সালেই। তা হয় নি। অপর দিকে উপযুক্ত সময়ের আগেই অক্টোবর ২০১৩ তে ফেসবুকের কথাগুলো প্রকাশ পেয়ে যায় ও পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। নিজের গড়ে তোলা নেটওয়ার্কের শক্তি প্রয়োগ করে তিনি পুলিশের হাত থেকে রেহাই পান।
এখন তিনি তাবলীগকে হেফজতে ইসলামের বিভিন্ন প্রোগ্রাম সমূহের সাথে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করছেন। রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়া তাবলীগের জন্য আতন্নহত্যার সমতুল্য। প্রত্যেক ধর্ম প্রাণ মুসলমানের দ্বীনি দ্বায়িত্ব হবে এই অপচেষ্টাকে প্রতিহত করা।

তাবলীগ কি সন্ত্রাসের পথে?
আদি বিন হাতিম (রাঃ) কে রাসূলুল্লাহ্ (সঃ) জানিয়েছিলেন- এক সুসজ্জিত সুন্দরী যুবতী হেরা থেকে বায়তুল্লাহতে যাবে একাকী, তার কোনও ভয় থাকবেনা। সেইদিনও এসেছিল আর আদি বিন হাতিম (রাঃ) নিজেই তা প্রত্যক্ষ করেছিলেন। কিন্তু সে প্রায় দেড় হাজার বছর আগের কথা। তারপর দীর্ঘকালের নৈরাশ্য।
তাবলীগের মেহনত মুসলমানদের মধ্যে আবার আশা জাগালো। হযরত মাওলানা আশরাফ আলী থানভী (রহঃ) বলেছেন “মৌলভী ইলিয়াস তো ইয়াস (নৈরাশ্য) কে আসে (আশায়) পরিবর্তন করে দিলেন।” আনন্দ ও গর্বের সাথে বলতাম টঙ্গীতে লাখো মানুষের সমাবেশ হয়, কোনো পুলিশের প্রয়োজন হয় না। তাবলীগের এ মোবারক মেহনতের মাধ্যমে ইন-শা-আল্লাহ্ শীঘ্রই এমন সময় আসবে যে দেশে আর পুলিশ বাহিনীরই প্রয়োজন থাকবেনা।
আফসোস! তা আর হয়নি। বিগত ০১/০১/২০১৪ তারিখে রমনা থানা সংবাদ পেয়ে পুলিশ বাহিনী পাঠায় এবং অভিযান চালিয়ে আনুমানিক রাত ১:৪৫ মিনিটে তাবলীগ কর্মী মেহেদি হাসান কে কাকরাইল মসজিদের অভ্যন্তরে নির্যাতন কক্ষ (টর্চার সেল) থেকে উদ্ধার করে।
সেলের নিয়ন্ত্রনে তখন ছিল ওয়াসিফ-ওসামা বাহিনী। ২৪/১২/২০১৩ তারিখ রাতে নির্যাতন করা হয় মাওলানা আশরাফ আলী সাহেবকে। রাত প্রায় ৭টায় মঞ্চ থেকে নামিয়ে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় টঙ্গী ময়দানের অস্থায়ী টর্চার সেলে ও রাত প্রায় ১০:৪৫ পর্যন্ত মাওলানার উপর নির্যাতন চালায় যুবায়ের-হানজালা বাহিনী।
মাওলানা যুবায়ের, জনাব ওয়াসিফুল ইসলাম এঁরাই হলেন আমাদের বড়, আমাদের মুরুব্বী। তাদের আদেশই আমরা পালন করি। আমরা সবাই এখন দেশের সর্ব বৃহৎ সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্য।
বড় আশা ছিল আখলাক শিখব। মুরুব্বিরা শিখালেন সন্ত্রাস।
স্বাক্ষরঃ আইয়ুব আবদুল কাদের, ঢাকা।

তাবলীগ কর্মীদের উদ্দেশ্যে চতুর্থ সতর্কীকরণ
প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় সতর্কীকরনের দায়িত্ব পালন করেছিলেন
-  হাজী আব্দুল মুকীত সাহেব (রহঃ)

তাবলীগ আক্রান্ত, আমরা আক্রান্ত। ২০১২ সালে টঙ্গী ইজতেমার মাঠ থেকে রাতের অন্ধকারে পুলিশ জনাব হারুন সাহেবকে (মোবাঃ ০১৬৮৫-৩৪২৩৭৬) নিয়ে যায়। সন্ত্রাসবাদে অভিযুক্ত হন। তাবলীগী অনেক সাথীরা পুলিশের হাত থেকে ছুটাবার অনেক চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। ঢাকার সাথীরা বুঝতে পারেন যে, এটা মুরব্বীদের নির্দেশনায় করা হয়েছে। তাঁরা দল বেঁধে মুরব্বীদের কাছে আসেন কিন্তু মুরব্বীদের অনাগ্রহ প্রকাশ করায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয় ও এক পর্যায়ে কাকরাইলের এক শীর্ষ স্থানীয় মুরব্বীর ছেলে আহত হন। পরের দিন হযরত মাওলানা জুবাইরুল হাসান সাহেব (দাঃবাঃ) ও হযরত মাওলানা সা’দ সাহেব (দাঃবাঃ) সহ নিজামুদ্দিনের সব বড়রা কাকরাইলের মুরব্বীদের উপর খুব চাপ সৃষ্টি করলেন তাকে ছাড়িয়ে আনার জন্য। কাকরাইলের মুরব্বীদের আদেশে পুলিশ ছেড়ে দিল। যাদের ইঙ্গিতে পুলিশ ধরেছে তাঁদের ইঙ্গিত ছাড়া পুলিশ ছাড়তে চায়নি। জনাব হারুন সাহেবকে ধরার জন্য পুলিশকে বড় অঙ্কের ঘুষ দিতে হয়েছে। পুলিশ বাহিনীর সাথে যোগাযোগ ও ঘুষ দেয়ার দায়িত্ব পালন করেন প্রধানত দ্বিতীয় স্তরের মুরব্বী ১। জনাব ইঞ্জিনিয়ার মাহফুজ সাহেব (মোবাঃ ০১৮১৯-২৪৯১৯৯) ২। জনাব ইঞ্জিনিয়ার আনিস সাহেব।
কাকরাইল মার্কাজ নির্মাণ কাজের নামে সংগ্রহ করা অনেক টাকা (২ শত কোটি টাকার অধিক) জনাব ওয়াসিফুল ইসলাম সাহেব (মোবাঃ ০১৭১২-৭৫০৪৬৯, ০১৭১৩-০০৫৩৯৮) ও তার সহযোগীরা আত্মসাত করেছেন। (২০১২ সালে সরকার টঙ্গী মাঠ উনন্নয়নের জন্য ৯৪ কোটি টাকা সরকারী অনুদানের ঘোষনা গনমাধ্যমে এসেছিল। সে অর্থেরও কোন হদিস পাওয়া যাচ্ছে না)। এ কথা জানতে পেরে জনাব হারুন সাহেব দেশে ও বিদেশে অনেককে জানিয়ে দেন। এ সংক্রান্ত কাগজ-পত্র উানার কাছে ছিল যা উনি টঙ্গির মাঠেও কিছু লোককে দেখিয়েছেন । জনাব ওয়াসিফুল ইসলাম সাহেব এ তথ্য প্রকাশ হওয়া নিজের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর মনে করেন।
পুলিশের জন্য সহজ ছিল ইজতেমা শেষ হওয়ার পরে উনাকে ধরা, কিন্তু জনাব ওয়াসিফুল ইসলাম সাহেব এ ব্যাপারে কোন বিলম্ব চাননি তাই ইজতেমা চলাকালীনই ধরা হয়েছে। এজন্য টাকাও দিতে হয়েছে অনেক বেশি। জনাব ওয়াসিফুল ইসলাম সাহেব অত্যন্ত বুদ্ধিমান ব্যক্তি। ইজতেমার মাঠে উনাকে ধরলে কথা খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে, তা ওনার জন্য হবে ক্ষতিকর। কিন্তু জনাব হারুন সাহেব এর কাছে যে তথ্য ছিল তা প্রকাশ হওয়া ছিল তার চেয়েও বেশি ক্ষতিকর। জনাব ওয়াসিফুল ইসলাম সাহেব তুলনামূলক কম ক্ষতির পথ অবলম্বন করেছেন।
গোপন কথা ফাঁস হয়ে যাওয়ার ব্যাপারে জনাব ওয়াসিফুল ইসলাম সাহেব ও তার সহযোগীরা খুবই আতঙ্কিত। জনাব হারুনকে ভয় দেখানো হচ্ছে বিভিন্ন ভাবে। গত ২০১৩ সালের জানু ৬ তারিখে উনার ১২ বছরের ছেলেকে অপহরণ করা হয়। হত্যার হুমকিও দেয়া হয়। তাবলীগ থেকে অসৎ ফায়দা নেওয়ার ইতিহাস জনাব ওয়াসিফুল ইসলাম সাহেবের অনেক দিনের। অসৎ ফায়দা নিতে হলে পূর্ণ কর্তৃত্বের প্রয়োজন। কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত করতে হলে নিজস্ব দল গঠনের ও যাকে বাঁধা মনে করে তাকে সরানোর প্রয়োজন। এ সব কিছুরই ইতিহাস অনেক দিনের।
জনাব ওয়াসিফুল ইসলাম সাহেবের আহলিয়া ও জনাব ওয়ালিউল ইসলাম সাহেবের (মোবাঃ ০১৬১২-৫৫২৩৮০) আহলিয়া উভয়ই মহিলা মহলে উল্লেখযোগ্য কর্মী ছিলেন। কাকরাইলে মাস্তুরাত সংক্রান্ত মাশওয়ারার দায়িত্বে ছিলেন জনাব ওয়ালিউল ইসলাম সাহেব, এজন্য উনি আমিরুননেসা নামেও পরিচিত ছিলেন (১৯৯২-৯৩)। ঐ সময় এক তাবলীগ কর্মী মহিলা (পরিচয় উহ্য রাখা হলো) জনাব ওয়ালিউল ইসলামের বিরুদ্ধে ধর্ষনের অভিযোগ এনে অনেক চিঠি বিলি করেন। কৌশলে জনাব ওয়ালিউল ইসলামকে তার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হল। জনাব ওয়াসিফুল ইসলাম সাহেব ও তাঁর আহলিয়া পেয়ে গেলেন মাস্তুরাতের কাজে পূর্ণ কর্তৃত্ব। তাদের বাসা হয়ে গেল একটি ‘মহিলা মারকাজ’। কিছু শবগুজারিও প্রবর্তন করা হল। নির্বাচিত কিছু মহিলারা ওখানে মুকিম হয়ে থাকতে আরম্ভ করলেন। এ মারকাজ পরিচালনা ও দেশ বিদেশের বিভিন্ন তাকাজা পূরণ করার জন্য চাঁদা চাওয়া যুক্তিসঙ্গত হয়ে গেল। মাস্তুরাতের কাজ জনাব ওয়াসিফুল ইসলাম পরিবারের জন্য আয়ের একটি ভাল উৎসও হয়ে গেল।
তাবলীগকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করে কর্মজীবনেও জনাব ওয়াসিফুল ইসলাম সাহেব অসৎ উপার্জনে লিপ্ত হয়েছেন। বার্ডেম এ কর্মরত থাকা অবস্থায় তিনি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে অভিযুক্ত হন, তদন্তও হয় (২০০২)। শেষ পর্যন্ত কয়েকজন তাবলীগী সহকর্মীর (নামঃ ১। মরহুম জনাব মুশফিকুর রহমান ২। জনাব শামছুল হক, ফোনঃ ৯৩৩-৭৮০৬) হস্তক্ষেপে উনি দন্ড থেকে বা বরখাস্ত হওয়া থেকে রেহাই পেয়ে যান। উনি পদত্যাগ করেন।
জনাব ওয়াসিফুল ইসলাম সাহেব এর “ঋণ” নিয়ে পরিশোধ না করাও ঘনিষ্ঠ মহলে জানা। (জনাব ওয়ালিউল ইসলাম, জনাব নাসিম সাহেব) জনাব ওয়াসিফুল ইসলাম সাহেব হয়ে গেলেন পেশাদার তাবলিগী। জনাব হাজী সিরাজুল ইসলাম সাহেব (মোবাঃ ০১৮১৯-৪৩৩০১৭) এর আহ্লিয়া “মহিলা মারকাজ” একজন মুকিম ও বেগম ওয়াসিফুল ইসলাম সাহেবের একজন বিশ্বস্ত সহযোগী ছিলেন। সম্প্রতি উনি ওখান থেকে বের হয়ে এসেছেন। আভ্যন্তরীন সব কথা জানা একজন মহিলার বের হয়ে আসা জনাব ওয়াসিফুল ইসলাম সাহেব ও তার পরিবারের জন্য খুবই অস্বস্তিকর। এ “মহিলা মারকাজ” কে অনেকে কুখ্যাত আশ্রম ও তার দেব-দাসীদের কেলেংকারীর সাথে তুলনা করেছেন। আমরা আশাকরি এ তুলনা অতিরঞ্জিত, কিন্তু তার পিছনে কিছুটা সত্যতা থাকার আশঙ্কা আছে। আর এটাই সম্ভবতঃ জনাব ওয়াসিফুল ইসলাম সাহেবের অস্বস্তি ও দুশ্চিন্তার প্রধান কারণ। জনাব সিরাজুল ইসলাম সাহেবের উপর আক্রমন হয়েছে কয়েকবার। নিজের এবং উনার পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে উনি খুবই উদ্বিগ্ন।
আরও আগে ১৯৮০ দশকের শেষের শুরুর দিকের কথা। জনাব ওয়াসিফুল ইসলাম সাহেবের আহলিয়া মুহতারামাহ মাস্তুরাতের কাজে অত্যন্ত সক্রিয় ও যোগ্যতাসম্পন্ন ছিলেন। উনি বেশ কিছু অনুসারী পেয়ে যান, যারা উনার বাসায় ঘনঘন আসা-যাওয়া করতেন। উনার বাসায় সবগুজারির কথাও শুনা গেছে। এ ব্যাপারে সেসব মহিলাদের পরিবার থেকে অভিযোগও আসে। এ নিয়ে কাকরাইলে মশওয়ারা হয় (১৯৮৪) ও জনাব ওয়াসিফুল ইসলামকে মশওয়ারা বহির্ভূত এ সব কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকতে বলা হয়। আদেশ অমান্য করে তাঁরা তাঁদের কর্মকান্ড বহাল রাখেন। তখন কাকরাইল থেকে ঢাকার সাথীদেরকে সতর্ক করে দেয়া হয় (প্রথম সতর্কীকরণ) যেন তাঁরা তাঁদের মাস্তুরাতকে ওখানে যেতে নিরুৎসাহিত করেন। এতে এ সমাবেশ ছোট হয়ে আসে ও ক্রমে বন্ধ হয়ে যায়।
মরহুম হাজী আব্দুল মুকীত সাহেবের সাথে জনাব ওয়াসিফুল ইসলাম সাহেব আমেরিকা সফরে গিয়েছিলেন, তখন আমেরিকার সাথীদের সাথে পরিচয় হয়েছিল। সে পরিচিতিকে পুঁজি করে জনাব ওয়াসিফুল ইসলাম সাহেব স্ব-পরিবারে আমেরিকা চলে যান (১৯৮৫) ও দাওয়াতের কাজ আরম্ভ করেন। শুরুতে ভাল সহায়তা পান। নিজস্ব কোন নির্ভরযোগ্য উপার্জন ছিল না। হাদিয়া তহফার উপরই নির্ভরশীল ছিলেন। তাবলীগকে জনাব ওয়াসিফুল ইসলাম সাহেব এর পেশা হিসেবে গ্রহণের আরম্ভ আমেরিকাতেই। মরহুম হাজী সাহেবের উদ্যোগে কাকরাইল থেকে আমেরিকার সাথীদেরকে সতর্ক করে দেয়া হয় (দ্বিতীয় সতর্কীকরণ)। এতে ওখানকার সাথীরা সরে গেলেন। হাদিয়ার পথ বন্ধ হয়ে যাওয়াতে আমেরিকায় থাকা কঠিন হয়ে গেল। তখন জনাব ওয়াসিফুল ইসলাম সাহেব পাড়ি দিলেন সৌদি আরবে (১৯৯০)। ওখানেও শুরুতে ভালই চললো কিন্তু আরবদেরকেও সতর্ক করে দেয়া হল (তৃতীয় সতর্কীকরণ)। নিরুপায় হয়ে জনাব ওয়াসিফুল ইসলাম সাহেব দেশে ফিরে এলেন ও মরহুম হাজী সাহেবের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে কাজে শরীক হলেন। (ও সম্ভবতঃ মরহুম হাজী সাহেবের ইন্তেকালের অপেক্ষায় থাকলেন)।
এ ইতিহাসের সাক্ষী কাকরাইলের বর্তমান সব মুরব্বীরা। মরহুম হাজী সাহেবের বিশ্বস্ত সহযোগী হিসেবে কাজ করেছেন জনাব নাসিম সাহেব (মোবাঃ ০১৭১৬-১৫৩৫৪৫) ও মাওলানা যোবায়ের সাহেব (মোবাঃ ০১৯৪৭-৬৬৮৬৫৮)।
মরহুম হাজী সাহেবের ইন্তেকালের পর ক্রমান্বয়ে কাকরাইলের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চলে এলো জনাব ওয়াসিফুল ইসলাম সাহেবের হাতে। এর বড় একটা কারণ হল উনার হাতে আছে অঢেল টাকা, আর অপরাধ সংগঠনে উনি নির্ভিক। বিপুল অর্থ ব্যয়ই জনাব ওয়াসিফুল ইসলাম সাহেবের প্রধান শক্তি। ২৪ অক্টোবর ২০১৩ ইং যখন পুলিশ উনাকে নিয়ে গেল, তখন মুক্তির জন্য উনি দিয়েছেন এক কোটি টাকার উর্দ্ধে। উনাকে কেউ মানে লোভে আর কেউ মানে ভয়ে।
ক্ষমতার হাত পরিবর্তনের সাথে কাকরাইলে বাতাসেরও দিক পরিবর্তন ঘটেছে। দক্ষ নাবিকরা নতুন করে পাল ধরেছেন। যাঁরা ছিলেন মরহুম হাজী সাহেবের বিশ্বস্ত সহযোগী তাঁরা এখন জনাব ওয়াসিফুল ইসলাম সাহেবের বিশ্বস্ত সহযোগী। যাঁদের দায়িত্ব ছিল সাবধান করে দেয়া তাঁরা এখন উচ্ছ্বসিত সমর্থক।
চতুর্থ সতর্কীকরণ এর দায়িত্বভার এসে পড়লো কয়েক জন অতি নগন্য মুসলমানের কাঁধে।
[স্বাক্ষরঃ
১। জনাব মনিরুল ইসলাম - উত্তরা, ঢাকা।
২। জনাব সাকিল আহ্মেদ - দিনাজপুর।
৩। জনাব এস, , এম মেহফুজুর রহমান - বগুড়া।
তথ্য সংগ্রহে সহায়তা করেছেনঃ
১। জনাব জাকারিয়্যা সাহেব, ২। জনাব ফেরদৌস সাহেব, ৩। জনাব মেহেদী হাসান সাহেব।]

তাবলীগ কর্মীদের উদ্দেশ্যে পঞ্চম সতর্কীকরণ
তাবলীগ একটি পবিত্র দ্বীনি মেহনত। কিছু লোক নিজ স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে এই পবিত্র দ্বীনি মেহনতকে রাজনীতির দিকে ধাবিত করার চেষ্টা করছেন। আল্লাহ্ যেন তাদের এ অপচেষ্টাকে ব্যার্থ করেন।
জাকের পার্টি আরম্ভ হলো জিকির দিয়ে। ক্রমে তা হয়ে গেল একটি রাজনৈতিক দল। চরমোনাইও তাই। তাহলে তাবলীগকে কেন ব্যবহার করা যাবে না রাজনৈতিক অভিলাষ অর্জনে? হয়ত এ প্রশ্নই আপন মনে করছেন কোন কোন উচ্চাভিলাষী তাবলীগী নেতা।
জনাব ওয়াসিফুল ইসলাম বিপুল অবৈধ সম্পদের মালিক। নিজের প্রভাব বিস্তারের জন্যে এ সম্পদ থেকে ব্যয় করেন; পুলিশ ও পেশাদার সন্ত্রাসীদেরকে ব্যবহার করেন, কাউকে অপদস্থ করার জন্যে অপবাদের সমর্থনে সাক্ষী জোগাড় করেন। জনাব ওয়াসিফুল ইসলাম সমগ্র দেশের বিভিন্ন স্তরের কর্মীদেরকে নিয়ে একটি যোগাযোগ নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন। এর মাধ্যমে আদেশ নির্দেশ দিয়ে থাকেন। পরিস্থিতির তারতম্যে এ গুলোকে জনাব ওয়াসিফুল ইসলামের আদেশ অথবা মাশাওয়ারার ফায়সালা বলা হয়।
জনাব ওয়াসিফুল ইসলাম রাজনীতি সংক্রান্ত বিষয়ে প্রবন্ধ লিখে থাকেন। অধিকাংশ ছাপা হয় ডেইলী ষ্টারে (ঞযব উধরষু ঝঃধৎ)। লেখক পরিচিতি দেওয়া হয় “ইসলামিক স্কলার” হিসাবে। এ সব লেখনির মাধ্যমে জনাব ওয়াসিফুল ইসলাম নিজেকে এক জন আলিম ও ইসলামিক রাজনৈতিক চিন্তাবিদ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছেন। টুইটারে (ঞরিঃঃবৎ) উনি নিজেকে একজন মানবতাবাদী (খড়াব ধহফ ৎবংঢ়বপঃ ভড়ৎ যঁসধহরঃু) হিসাবে প্রকাশ করেন। ফেসবুকে পাওয়া যায় তার রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষের স্বচ্ছ ছবি। ধারনা হয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে আত্ম প্রকাশের জন্য অপেক্ষা করছেন সময়োচিত মুহুর্তের যা হয়ত আসবে সরকার পরিবর্তনের মাধ্যমে।
জনাব ওয়াসিফুল ইসলাম ও তাঁর ছেলে জনাব ওসামা ইসলাম ফেসবুকে (ঋধপবনড়ড়শ) আওয়ামী লীগ ও প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনেক উক্তি ও ছবি দিয়েছেন অত্যন্ত অশালীন ভাষায়। ফেসবুকে থাকলেও এ গুলোকে প্রচার করা হয়নি। অক্টোবর ২০১৩ তে এগুলো প্রকাশ পেয়ে যায়। জনাব ওয়াসিফুল ইসলাম ফেসবুকে এ কথা গুলো দিয়েছেন একটি রাজনৈতিক অভিলাষকে সামনে রেখে। শীঘ্রই আসবে বিএনপি-জামাত সরকার। তখন ফেসবুকের এ কথা গুলোকে উপহার দিয়ে খুবই সহজে প্রিয় পাত্র হওয়া যাবে বিএনপি-জামাতের; মন্ত্রী হওয়ার আশাও কোন দূরাশা নয়। কিন্তু অংক আশানুরূপ মিলেনি। বিএনপি-জামাত এখনো ক্ষমতায় আসেনি, আর এদিকে সময়ের আগেই ফেসবুকে কথা গুলো প্রকাশ হয়ে গেছে। জনাব ওয়াসিফুল ইসলামের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া হলো ফেসবুক থেকে কথা গুলো মুছে ফেলা। কিন্তু নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এটুকু যথেষ্ট নয়। আওয়মী লীগের হাতে একটা উপযুক্ত উপহার তুলে দিতে পারলে নিজ নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়, তাদের প্রিয় পাত্রও হওয়া যায়।
টঙ্গীর মাঠের ৫দিনের জোড়ের কথা ছিল ১৩ই ডিসেম্বরে। এ তারিখ নির্ধারিত হয়েছে প্রায় ১ বছর আগে, আর দেশে-বিদেশে এ কথা জানিয়ে দেওয়াও হয়েছে অনেক আগে। হেফাজতে ইসলাম সমাবেশের তারিখ করল ২০শে ডিসেম্বর। হেফাজতের সমাবেশ কে প্রতিহত করার জন্য জোড়ের তারিখ পরিবর্তন করা হল ১৩ থেকে ২০ শে ডিসেম্বর। কারণ হিসেবে বলা হল হযরত মাওলানা ইব্রাহীম সাহেব ১৩ তারিখ আসতে পারবেন না। হেফাজত তখন সমাবেশের তারিখ পরিবর্তন করে করল ২৪শে ডিসেম্বর। জোড় শেষ হওয়ার কথা ছিল ২৪ শে ডিসেম্বর সকালে। আবার সমাবেশ কে বাধা দেওয়ার জন্য জোড়কে বর্ধিত করা হল রাত পর্যন্ত। আওয়মী লীগের বিরুদ্ধে কথাগুলো লিখার জন্য বিএনপি বা অন্য কেউ বলেনি। জনাব ওয়াসিফুল ইসলাম নিজ বিবেচনায় ও নিজ উদ্দ্যোগে করেছেন ভবিষ্যতের কিছু ফায়দা আশা করে। জোড় নিয়ে হেফজতের বিরুদ্ধে এ খেলাও নিজ উদ্যোগেই খেলেছেন নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্যে।।
তাবলীগের একটি মৈৗলিক বৈশিষ্ট ছিল রাজনীতি থেকে দুরে থাকা। তা আর থাকলো না। পরবর্তী পদক্ষেপ সম্ভবতঃ হবে তাবলীগের একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ। রাজনীতিতে লিপ্ত না হওয়ার নীতি তাবলীগের পথকে গোটা বিশ্বে সুগম করেছে। দেশের অভ্যন্তরেও তাবলীগ পেয়েছে সার্বজনীন গ্রহনযোগ্যতা। মুখোমুখি সংঘর্ষে লিপ্ত দুই দলের সদস্যদের জামাতে এসে এক পাতে খাওয়ার দৃষ্টান্ত অসংখ্য।
বাংলাদেশের এ প্রায় পঞ্চাশ বছরের ইতিহাসে কোন সরকারই তাবলীগের বিরোধীতা করেনি বরং সহায়তা করেছে। বর্তমান সরকারও কাকরাইল মসজিদ সম্প্রসারনের জন্য মুল্যবান জমি দিয়েছে ও টঙ্গী ময়দান উনন্নয়নের জন্য ২০১২ সালে ৯৪ কোটি টাকা দান করেছে। কোন সরকারই কোন বিনিময় দাবি করেনি। এ সার্বজনীন গ্রহনযোগ্যতার মুল শক্তিই হলো তাবলীগ রাজনীতি থেকে দুরে। নিজ স্বার্থ হাসিল করার জন্য তাবলীগকে রাজনীতির হাতে বিক্রি করে যেন জনাব ওয়াসিফুল ইসলাম তাবলীগকে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়ে দিলেন। রাজনৈতিক অঙ্গনের নেতারা প্রায়ই নিজস্ব ক্যাডার বাহিনী পুষেন সাধারনত এ বাহিনীর নেতৃত্ব দিয়ে থাকেন তাঁদের নিজেদের ছেলেরাই। আমাদের নেতাদের বেলায়ও তাই। জনাব ওয়াসিফুল ইসলামের ছেলে ওসামা ইসলাম একজন সন্ত্রাসী নেতা; বিভিন্ন অপরাধের সাথে বিশেষ করে যৌন অপরাধের সাথে জড়িত; যার যোগান দেয় তাঁদের পারিবারিক “মহিলা মারকাজ”। অন্দর মহলের বেশির ভাগ কথা অন্দর মহলেই রয়ে যায়। সচরাচর বাহিরে আসে না। প্রভাবশালী এক ব্যক্তির কন্যাকে এক রাতের জন্য ওসামা ইসলামের ভোগ দখলে রাখার ঘটনা প্রকাশ পেয়ে যায় ড্রাইভারের অসতর্কতার কারণে। ঘটনাটি কিঞ্চিৎ বিব্রতকর হয় ওয়াসিফ পরিবারের জন্য। জনাব ওসামা ইসলামের যোগ্যতার কদর আমাদের মুরুব্বিরা করে থাকেন। দেশের ইজতেমা গুলোতে প্রায়ই তাঁর বয়ান হয়- বিশেষ করে মাস্তুরাতের বয়ান। ফলে উনি গোটা দেশের নারী পুরুষ এর কাছে খুব পরিচিত ও প্রিয়।
মাওলানা জুবায়ের সাহেবেরও একটি ছোট ক্যাডার বাহিনী আছে তার ছেলে জনাব হানজালার তত্ত্বাবধানে। পরিচিতি অর্জন করেন। জনাব হানজালা কাকরাইল মাদ্রাসায় মোবাইল চোর হিসাবে পরিচিত ছিলেন। যশোর মাদ্রাসায় উনি অল্প দিনেই একই । ২০০৯ সালে পবিত্র কাবা ঘরে তাওয়াফ করার সময় পকেট মারতে ধরা পড়েন ও সৌদি আরবে জেল খাটেন। বর্তমানে হজ্জ ব্যবসা করেন। ঘনিষ্ঠ মহলে প্রতারক হিসাবে পরিচিত কিন্তু মাওলানা যোবায়ের সাহেব ও কাকরাইলের সব মুরুব্বিদের পৃষ্ঠপোষকতায় হাজী পান প্রচুর। বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় কাফেলা তারই। গত ২৪-১২-২০১৩ তে বয়ানের সময় মঞ্চ থেকে ধরে নামিয়ে মাওলানা আশরাফ আলী সাহেব কে হানজালা সাহেব প্রহার করেন। মাওলানা আশরাফ আলী সাহেব বর্তমানে জাতীয় হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ দিকে জনাব হানজালা সাহেবের মধ্যেও কিছু পরিবর্তন এসেছে; বর্তমানে তিনি (চোর নয়) সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত। ক্ষমতা ও ভীতি প্রদর্শন রাজনৈতিক অঙ্গনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ। মাওলানা আশরাফ আলী সাহেবকে মঞ্চ থেকে ধরে নিয়ে গেছে যখন দেশী বিদেশী সবার নজর মঞ্চের দিকে। ২০১২ তে জনাব হারুনকে টঙ্গীর ময়দান থেকে ধরার পেছনেও সম্ভবতঃ উদ্দেশ্য এটাও ছিল “গোটা দেশ দেখুক আমাদের ক্ষমতা কত”।
জনাব ওসামা ইসলাম এক পর্যায়ে রেগে গিয়ে মারহুম হাজী আব্দুল মুকীত সাহেবের ছেলেকে চড় মারলেন। এ চড় খুবই অর্থবহ। এক সময় মারহুম হাজী সাহেবের ছেলে ছিলেন বাংলাদেশের তাবলীগ রাজ্যের রাজকুমার। এ চড় মেরে জনাব ওসামা দেশবাসীকে জানিয়ে দিলেন “বর্তমান যুবরাজ আমিই”। এ চড়ের আর একটি দিকও আছে। সাত বছরের বিদ্রোহে ব্যর্থ হয়ে পায়ে পড়ে আত্মসমর্পন করতে হয়েছিল জনাব ওয়াসিফুল ইসলামকে। তাঁর স্ত্রীকেও ক্ষমা প্রার্থীনী হতে হয়েছিল মারহুম হাজী সাহেবের আহলিয়ার কাছে। আত্মসমর্পন ও ক্ষমা প্রার্থনা দুই ব্যক্তির মধ্যে সীমিত থাকেনি বরং ভারসাম্যহীন এ লেন দেনে জড়িয়ে পড়ে দুই পরিবার। মরহুম হাজী সাহেব আর এই জগতে নেই; নেই তাঁর আহলিয়াও। আর হিসাবের এ গরমিল রয়েই গেল। তাদের অবর্তমানে ছেলেকে চড় মেরে জনাব ওসামা এ পুরোনো হিসাবটাই মিলিয়ে দিলেন। উপস্থিত মুরুব্বিরা যাঁরা এক সময় ছিলেন হাজী সাহেব পরিবারের জন্যে নিবেদিত প্রাণ; তাঁরা চড়ের প্রতি মৌন সমর্থন জানিয়ে প্রমান দিলেন নিজ কিবলা পরিবর্তনের।
আমরা তাবলীগে এসেছি দ্বীন পাওয়ার আশায়। দ্বীন পেতে হলে ঈমানদার ও দ্বীনদারদের অনুসরণ অপরিহার্য্য। দুনিয়ার লিপসায় নিমজ্জিত ব্যক্তিদের অনুসরন করে দ্বীন পাওয়ার আশা বৃথা। আমাদেরকে যেন হাশরের দিন এ কথা বলে আপসোস করতে না হয়:
হে আমাদের রব আমরা অনুসরন করেছি আমাদের নেতাদের ও বড়দের অতপর তারা আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছে।” (সূরা আহযাব, আয়াত:৬৭)
[স্বাক্ষরঃ
১। জনাব মনিরুল ইসলাম - উত্তরা, ঢাকা, ২। জনাব সাকিল আহমেদ - দিনাজপুর,
৩। জনাব এস, , এম মেহফুজুর রহমান - বগুড়া।]

প্রাসঙ্গিক ফাতওয়া
হযরত উলামায়ে কেরাম ও মুফতিয়ানে এজামের খিদমতে আকুল আবেদন এই যে নি¤ন্ন বর্ণিত বিষয় সম্পর্কে শরীয়তের দৃষ্টিতে সমাধান দিয়ে বাধিত করিবেন।
প্রশন্নঃ “ঈমান জাগরণ” একটি দ্বীনী জামাত। এই জামাতের উদ্দেশ্য হলো নিজেদেরকে এবং পুরা দুনিয়ার মানুষকে দ্বীনদার বানানো। এই জামাতের সদস্যদের অধিকাংশই শিক্ষিত নয়। তাদের আমীরের কথাকেই তারা দ্বীনী কথা হিসাবে গ্রহণ করে। কথার শুদ্ধ-অশুদ্ধ যাচাই করার যোগ্যতা তাদের নেই। এই জামাতের আমিরের নাম আকবর। আকবরের ছেলে হেলাল একজন ফাসিক। তিনি বিভিন্ন রকম হারাম কাজে লিপ্ত। হেলালের সহায়তায় আকবর হারাম উপার্জনে লিপ্ত। তাদের এহেন কর্মকান্ডে বাধা দিলে সদস্যদের সাহায্য নিয়ে বাধা প্রদানকারীদের কে নির্যাতন করা হয়। আমির হিসেবে তার পরিচিতি তাকে দিয়েছে নিরাপত্তা এবং নির্যাতন করার ক্ষমতা। যারা এই নির্যাতনে অংশগ্রহন করে, তারা এই জামাতের যে উদ্দেশ্য সেই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে অর্থাৎ দ্বীন মনে করেই করে।
১। এই নির্যাতন যে শরীয়ত বিরোধী এই উপলব্ধি ঈমান জাগরণ সদস্য কামালের নাই। শরিয়ত সম্মত কিনা এ প্রশন্ন না করেই কামাল আদেশ পালন করে। কামাল ফাসেক কিনা? তার জন্য হুকুম কী ?
২। এই নির্যাতন শরীয়ত সম্মত নহে এ কথা বোঝার জ্ঞান সদস্য সুমনের আছে। কিন্তু আমীরের আদেশ পালন কে সুমন আল্লাহর হুকুমের উপর অগ্রাধিকার দেয়। এমতাবস্থায় সুমন মুরতাদ কিনা তার বিবি তালাক হবে কিনা এবং তার জন্য নতুন ভাবে ইসলাম গ্রহন অপরিহার্য্য কিনা ?
৩। আমীর হিসেবে আকবরের প্রতি আস্থা রাখা এবং তার অনুগত থাকা অর্থাৎ তার আদেশ পালনের জন্য বিনা দ্বিধায় প্রস্তুত থাকা জায়েজ কিনা? নাকি তার উপর আস্থাশীল না থাকা,তার আদেশকে সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখা এবং শরীয়তের মানদন্ডে শুদ্ধ-অশুদ্ধ যাচাই না করা পর্যন্ত আদেশ পালন করা থেকে বিরত হওয়া জরুরী ?
৪। দ্বীনের হেফাজতের উদ্দেশ্যে এবং মানুষকে গোমরাহীর পথ থেকে বাঁচানোর লক্ষ্যে আকবর এবং তার সহযোগীদের শরীয়ত বিরোধী কার্যকলাপ প্রকাশ করা (সবাইকে জানিয়ে দেওয়া);
ক) এই প্রকাশ করাটা কী দ্বীনী দায়িত্ব পালনের অংশ এবং সওয়াবের?
খ) না কি শরীয়তের দৃষ্টিতে জায়েজ কিন্তু সওয়াবের নয় ?
গ) না কি গীবত এবং গোনাহের ?
৫। আকবর এবং তার সহযোগীদের সম্মান ও ক্ষমতা রক্ষা করার লক্ষ্যে তাদের শরীয়ত বিরোধী কার্যকলাপ গোপন করা এবং অন্যদেরকে গোপন করতে বলা সওয়াবের কাজ, না গোনাহের কাজ?
বিঃ দ্রঃ উল্লেখিত নাম গুলি কোনটাই আসল নাম নহে। 

আল-জামিয়াতুল ইসলামিয়া দারুল উলূম মাদানীনগর, ঢাকা-৩০২৬
ফাতওয়ার সমাধান
মানুষকে দ্বীনের পথে আনা, অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখা, ন্যায় ও হকের পথ দেখানো অতীব গুরুত্বপূর্ণ কাজ ও ফরজে কেফায়া। তার সওয়াবও অনেক। আর এটা যদি সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে পরিচালিত হয়; আমীর ও মা’মুরের মাধ্যমে সুশৃঙ্খল জামাত হয়, নিয়ম মাফিক কাজ বন্টন থাকে তাহলে এটা আরো প্রশংসার যোগ্য। তবে এ ক্ষেত্রে শরীয়তের মানদ- ও গ-ির ভিতর থেকে কাজ পরিচালনা করতে হবে। শরীয়তের মানদ- ও গ-ির বাহিরে চলে গেলে তা বেদ’আত বা গোমরাহীতে পরিণত হবে। সুতরাং আপনার পাঁচ প্রশেন্নর উত্তর দেয়ার পূর্বে কয়েকটি মৌলিক কথার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
এক.
সুশৃঙ্খলভাবে জামাতের পরিচালনার জন্য আমীরের আদেশ পালনীয় বরং জরুরী। তবে সে আদেশ হতে হবে দ্বীন মোতাবেক। দ্বীন ও শরীয়তের খেলাফ আদেশ পালনীয় নয়। বরং প্রত্যাখ্যান ও পরিহার করার উপযুক্ত। কেননা, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম বলেছেন, ‘¯্রষ্টার হুকুম লঙ্ঘনে সৃষ্টির কোন আদেশই পালন করার, মানার উপযুক্ত নয়।’ (মুসনাদে আহমদ, ১৯৭৫৩) চাই সে যে কেউ হোক না কেন। মুনকার বা শরীয়ত বিরোধী কাজ পরিহার করার এবং সাধ্যমতে বাধা দেয়ার গুরুত্ব একাধিক আয়াত ও হাদীসে রয়েছে। সুতরাং আমীরের আদেশ শরীয়তের খেলাফ হলে তা না করে বিরত থাকতে হবে এবং যথাসাধ্য প্রতিহত করতে হবে।
দুই.
মুনকার কাজ বা অন্যায় কাজ থেকে মানুষকে বরিত রাখার কয়েকটি পদ্ধতি রয়েছে।
১. শক্তি-সামর্থ্য থাকলে হাতে বাধা দেয়া। ২. না থাকলে মুখে বাধা দিবে। ৩. তাতেও কোন কাজ না হলে অন্তর থেকে র্ঘণা করবে। তবে এ ক্ষেত্রে বিজ্ঞ ও হক্কানী আলেমদের শরণাপনন্ন হয়ে কাজ করলে আশা করা যায় ফলপ্রসূ হবে। এক হাদীসে এসেছে, “তোমরা কেউ যদি কাউকে কোন মুনকার কাজ করতে দেখে তাহলে সে তাকে হাতে বাধা দিবে, হাতে সক্ষম না হলে মুখে বাধা দিবে, তাতেও সাধ্য না থাকলে অন্তরে র্ঘণা করবে। আর এটা ঈমানের নি¤ন্ন স্তর।” (সহীহ মুসলিম, ৭০)
তিন.
যারা সমাজে দ্বীনী খেদমত আঞ্জামে আগ্রহী, তাদের জন্য কর্তব্য হলো, কারে কোন দোষ চর্চা না করা, এতে সমাজে বিভক্তি সৃষ্টি হয়। বরং সংশোধনের মানসে ধীরে ধীরে কাজ করে যাওয়া এবং বেশি বেশি দোয়া করতে থাকা। এ ক্ষেত্রেও সচেতন আলেমদের দ্বারস্থ হওয়া জরুরী।

এবার দেখুন আপনার প্রশ্নের উত্তরঃ
১. আপনার বক্তব্য অনুযায়ী ‘ঈমান জাগরণ’ জামাতের আমীর আকবর যদি বাস্তবেই হারাম উপার্জন করে এবং হারাম কাজে লিপ্ত থাকে তাহলে অন্যায়মূলক কাজে তার আনুগত্য করা যাবে না।
বরং তাকে আমীরের পদে বহাল রেখেও তার আনুগত্য করা যাবে না। বরং তাকে আমীরের পদে বহাল রেখেও তার আনুগত্য করা যাবে না। কাউকে নির্যাতন করা অন্যায় বা গুনাহের কাজ। সুতরাং উল্লেখিত কামাল তার আমীরের নির্দেশে কাউকে নির্যাতন করতে পারবে না। তাহলে সে জালেম ও ফাসেক হিসেবে বিবেচিত হবে।
২. উল্লেখিত সুমন যদি আমীরের আদেশ পালনকে ‘অন্যায়ভাবে কাউকে নির্যাতন না করা’ আল্লাহর এ হুকুমের উপর প্রাধান্য দেয় এবং আল্লাহর এ হুকুমের সাথে বিদ্রুপ ও ঠাট্টা করে অথবা তুচ্ছ মনে করে তাহলে সে মুরতাদ হয়ে যাবে, তার স্ত্রী তার থেকে বিচ্ছেদ হয়ে যাবে এবং তার জন্য নতুনভাবে ইসলাম গ্রহণ করে বিবাহ নতুন করে করাতে হবে। আর যদি বিদ্রুপ বা তুচ্ছ মনে না করে, বরং স্বাভাবিকভাবে করে তাহলে এটা জঘন্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে।
৩. আপনার বিবরণ মতে আমীর আকবর হারামখোর, তাই সে আমীর হওয়ারই যোগ্য না। তাহলে কীভাবে তার প্রতি আস্থা রাখা যায়, তার আনুগত্য করা যায় এবং তার আদেশ পালন করা যায়?
৪. ও ৫. মানুষকে আকবর ও তার অনুচরদের গোমরাহী থেকে বাঁচানোর লক্ষ্যে তাদের কার্যক্র ম প্রকাশ করা দ্বীনী দায়িত্বের অন্তর্ভূক্ত। তবে হেকমতের সাথে বিজ্ঞ ও সচেতন আলেমদের শরণাপনন্ন হয়েই করতে হবে, যাতে ফাসাদ সৃষ্টি না হয়। এতে গীবত হবে না, গুনাহও হবে না বরং সওয়াবের কাজে হিসেবেই গণ্য হবে।
হাদিসের বাণী
উম্মে সালমা (রা:) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের উপর এমন আমীর নিযুক্ত হবে যাদেরকে তোমাদের মধ্য হতে কেউ ভালবাসবে, কেউ অপছন্দ করবে। যে অপছন্দ করবে সে মুক্তি পাবে, আর যে ঘৃনা করবে সে নিরাপদ থাকবে। কিন্তু যারা পছন্দ করবে এবং অনুসরন করবে তারা ধ্বংস হবে। সাহাবায়ে কেরাম (রাযিঃ) জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ (সাঃ) আমরা কি তাদেরকে কতল করবো? তিনি বললেন না হত্যা করো না যতক্ষণ পর্যন্ত তারা নামাজ পড়ে। [মুসলিম শরিফ: ৪৬৪৯]
থানায় অভিযোগ
ওসামা ইসলামের সন্ত্রাসী ও অসামাজিক কর্মকা-ের কারণে প্রতিবেশীরাও অতিষ্ঠ। ওসামা ইসলাম পেশাদার বা প্রাইভেট মহিলাদের রাত যাপনের জন্য আনেন। মহিলাদের ও তাদের সরবরাহকারীদের আনাগোনার কারণে নিজ সম্ভ্রম রক্ষা করে বসবাস করা প্রতিবেশীদের জন্য দুষ্কর হয়ে উঠেছে। জনাব ওয়াসিফুল ইসলামের সাথে আলাপ করে তারা নিরাশ হয়েছেন। অনন্যোপায় হয়ে তারা ২০১৩ সালের অক্টোবরে ধানম-ি থানায় নিমেন্নর অভিযোগ দায়ের করেন:

ক্স       হলুদ হাইলাইট করা অংশটুকু স্পষ্টাক্ষরে পরবর্তী পৃষ্ঠায় দেখুন
ওসামার শ্বশুর বাড়ীর মুখ বন্ধ করার জন্য জনাব ওয়াসিফুল ইসলাম বেয়াইকে টাঙ্গাইলে তিনতলা বাড়ী নির্মাণ করে দিয়েছেন। অবশ্য কাকরাইল মুরুব্বীরা ওসামার নানানবিধ গুনে মুগ্ধ। জোড়, ইজতেমা ইত্যাদিতে তাকে দিয়ে মিম্বর অলংকৃত করা হয়। মহিলাদের ব্যাপারে ওসামার বিশেষ ফিকির ও যোগ্যতার কারণেই সম্ভবতঃ তাকে দিয়ে মাস্তরাতের বয়ান প্রায়ই করানো হয়।

* সন্ত্রাসী ওসামার কারণে ঐ বিল্ডিং এর বাসিন্দা সবাই ভয়ের মধ্যে থাকে। প্রতিদিন পুরুষ ও বোরকা পরা মহিলা দিনে-রাতে প্রবেশ করে, তাছাড়াও গভীর রাতে বহিরাগত লোকজন ওসামার বাসায় আনাগোনা করে। পাকিস্তানি লোকজন প্রায়ই ঐ বাসায় থাকে, তা নিয়ে উক্ত বিল্ডিংয়ে বসবাসকারী ও গেইটে নিরাপত্তা কাজে নিয়োজিত দারোয়ানদের সাথে বহুবার ঝগড়া বিবাদ হয়েছে, দারোয়ান ও বিল্ডিংয়ে বসবাসকারীদের গুলি করে মাথার খুলি উড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়েছে। ওসামা বলে তার লোকজন এসে সবাইকে দেখে নিবে ও গুলি করে মারবে। বাপের তাবলীগ জামাতের ভিতরে ছেলে জঙ্গি সংগঠনের সাথে জড়িত। সন্ত্রাসী ওসামা গভীর রাতে বোরকার আড়ালে নষ্ট মেয়ে মানুষ নিয়ে মাঝে মধ্যে মদের আসর বসায় এতে তার বাপকে অফিযোগ করে কোন প্রতিকার পাওয়া যায়না। সে তার বাপের কথাও পরোয় করে না। শাসন করার ক্ষমতা তার বাপের নেই। তার বাপও তো পরের টাকা পয়সা তাবলীগের ফা- মেরে দেশে দেশে ঘুরে বেড়ায়। তাছাড়াও গভীর রাতে জামাতের ও বিভিন্ন মাদ্রাসার লোকজন এসে ২/এ ফ্ল্যাটে প্রায় রাতেই অবস্থান ও বৈঠক করে খোঁজ-খবর নিলে তার প্রমাণ পাওয়া যাবে। ওসামার গতিবিধির উপর নজর দেয়া ও উক্ত বাসায় তাবলীগের নামে অন্য কিছু হচ্ছে কিনা দেখা অত্যন্ত জরুরী। দেশ ও রাষ্ট্রের নিরাপত্তার স্বার্থে তদন্ত হওয়া জরুরী উল্লেখ্য যে, তার বিরুদ্ধে নাম দিয়ে কোথাও অভিযোগ করার সাহস কারো নাই। ইতিপূর্বে ওসামার বিরুদ্ধে ধানম-ি থানাতে জিডি করেছি কিন্তু তার পিতার তাবলীগের কারণে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
এমতাবস্থায়, জঙ্গি সংগঠনের সাথে জড়িত অস্ত্রধারী, ভয়ঙ্কর চরিত্রের ছেলে ওসামা ইসলামের বিরুদ্ধে তদন্ত করে দেখা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ৪ নং রোডের বাসিন্দাদের একান্ত অনুরোধ রইল।
ধন্যবাদ,
ধানমন্ডি ৪ নং রোড এর বাসিন্দাবৃন্দ
১। স্বরাষ্ট্র সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা।
২। জয়েন্ট পুলিশ কমিশনার (ডিবি), ৩৬ নং মিন্টু রোড, ঢাকা।
৩। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, ধানম-ি থানা, রোড নং ৬, ধানম-ি, ঢাকা।

মাল্ফুজাত
হযরতজী মাওলানা ইলিয়াস (রহ:)
১৬৬। আমীরুল মু’মিনীন হযরত ওমর (রা:) হযরত আবু ওবায়দা (রা:) এবং মু’আজ ইবনে জাবাল (রা:) কে বলেন, “আমি তোমাদের নজরদারীর মুখাপেক্ষী। আমি তোমাদিগকে বলিতেছি আমার অবস্থার উপর দৃষ্টি রাখিও। আর যাহা সংশোধনের দরকার তাহা সংশোধন করিয়া দিও।”
২১০। হযরতজী মাওলানা ইলিয়াস (রহ:) বলেন,
আমার মর্যাদা একজন সাধারণ মু’মিন হইতে উপরে মনে করিবেনা। শুধু আমার কথার উপর আমল করা বদদ্বীনী।
আমি যাহা বলি উহাকে কিতাব ও সুনন্নাহর সহিত মিলাইয়া এবং
নিজে চিন্তা ফিকির করিয়া নিজ জিম্মাদারীতে আমল কর।
আমিত শুধু পরামর্শ দিয়া থাকি।
হযরত ওমর (রা:) নিজের সাথীদেরকে বলিতেন,
তোমরা আমার মাথার উপর বিরাট জিম্মাদারী তুলিয়া দিয়াছ।
তোমরা সকলে আমার কার্যসমূহ দেখা-শুনা কর।”
হযরতজী (রহ:) বলেন, আমিও আমার বন্ধুদের খেদমতে সর্বদা
সবিনয় অনুরোধ করিয়া থাকি তাঁহারা যেন আমার তত্বাবধান করেন।
আমার ভুল যেন তাঁহারা সংশোধন করিয়া দেন আর আমার
হেদায়েত ও সরল পথে সততার সহিত চলার জন্য যেন দোয়া করেন।


0 Comments: