***মহাসম্মানীত পুত ও পবিত্র রাজারবাগ দরবার শরীফ উনার ***  সাইয়্যিদুনা হযরত মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার আযীমুশ শান নূরানী সিলসিলা মুবারক :    চার তরীক্বার শাজরা শরীফ
***মহাসম্মানীত পুত ও পবিত্র রাজারবাগ দরবার শরীফ উনার ***
সাইয়্যিদুনা হযরত মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার আযীমুশ শান নূরানী সিলসিলা মুবারক :
 চার তরীক্বার শাজরা শরীফ

১।  নক্শবন্দিয়ায়ে মুজাদ্দিদিয়া তরীক্বা :

ইমামুল মুসলিমীন, মুকতাদায়ে জামীয়ে উমাম, ইনায়েতে হিলম, পেশওয়ায়ে আহলে বাছীরাত, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাবি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক উসীলায় নিয়ামতে পরিপূর্ণ হয়েছে ক্বাইয়্যূমে আউওয়াল, আফযালুল আউলিয়া, ইমামে রব্বানী, আজিমুল বারাকাত, খাযীনাতুর রহমাহ, মাখদূমে যামান, আল মুনাওওয়ার, খাজায়ে খাঁজেগা, আবুল বারাকাত, বদরুদ্দীন সাইয়্যিদুনা হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মক্ববূল মাশহুর নক্শবন্দিয়ায়ে মুজাদ্দিদিয়া তরীক্বা উনার শাজরা শরীফ :

একথা দিবালোকের ন্যায় সুস্পষ্ট যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের নিকট ইলমসহ সমস্ত নিয়ামতরাজি পুঞ্জীভূত। যা সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাবি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাধ্যমে সুস্পষ্ট হয়েছে। হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের উসীলা ব্যতিত কোনো কিছুই পূর্ণাঙ্গতা লাভ করে না। যার বাস্তব নমুনা ইলমে তাছাউফ উনার তরীক্বাসমূহ।
খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার অসীম রহমত বরকত সাকীনা মুবারক উনার বদৌলতে এবং সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, রহমতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক ইহসান উনার উসীলায় আজো বিশ্বব্যাপী জারি রয়েছে ক্বাইয়্যূমে আউওয়াল, আফযালুল আউলিয়া, ইমামে রব্বানী, আজিমুল বারাকাত, খাযীনাতুর রহমাহ, মাখদূমে যামান, আল মুনাওওয়ার, খাজায়ে খাঁজেগা, আবুল বারাকাত, বদরুদ্দীন সাইয়্যিদুনা হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মক্ববূল মাশহুর নক্শবন্দিয়ায়ে মুজাদ্দিদিয়া তরীক্বা। সুবহানাল্লাহ! ইনশাআল্লাহ ক্বিয়ামত পর্যন্ত তা ছহীহ তরতীবে জারি থাকবে সেটা নিঃসন্দেহে বলা যায়। তবে এ তরীক্বা নিয়ামতে পরিপূর্ণ হয়েছে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাবি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক উসীলায়। যা এ মহান ত্বরীক্বা উনার পবিত্র শাজরা শরীফ পর্যালোচনা করলেই দিবালোকের ন্যায় সুস্পষ্ট হবে। বিশ্বব্যাপী সুমহান শান মুবারক-এ জারি থাকা মুবারক নক্শবন্দিয়ায়ে মুজাদ্দিদিয়া তরীক্বা উনার সুমহান শাজরা শরীফ এখানে উল্লেখ করা হলো:-
১। ইলাহী বহুরমতে কুল-মাখলূক্বাতের নবী ও রসূল, হায়াতুন নবী, ছাহিবে ইলমে গইব, ছাহিবে মুত্তালা’ ‘আলাল গইব, জামিউল ইলম, ছাহিবে মাফাতীহুল ইলম, আল্হাদ্বির, আন্নাযির, ছাহিবে লাওলাক, ছাহিবে ক্বাবা ক্বওসাইনি আও আদনা, ছাহিবে কাওছার, ছাহিবে মাক্বামে মাহমূদ, ছাহিবে লিওয়ায়িল হামদ, ছাহিবে শাফাআতে কুবরা, ছাহিবে লাসতু কাআহাদিকুম, ছাহিবে মি’রাজ, ছাহিবে কুন ফা-ইয়াকুন, ছাহিবে ওয়াহয়ি, আশশারা’, আলগনিইইয়ু, রঊফুর রহীম, আত্ত্বাহির, আত্তইয়িব, শাফিউল উম্মাহ, খতীবুল আম্বিয়া ওয়াল উমাম, সাইয়্যিদুল মাখদূম, ছাহিবে জামিউল আসমা ওয়াছ ছিফাত, ফাদ্বলুল্লাহ, আকরামুল আওওয়ালীন ওয়াল আখিরীন, ফখরুল আম্বিয়া, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ সাইয়্যিদুনা হযরত মুহম্মদুর রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
২। ইলাহী বহুরমতে ছাহিবু রসূলিল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ছানী ইছনাইন, আরহামু উম্মাতিন নাবিইয়ি, আল আতীক্ব, আছছিদ্দীক্ব, আল আতক্বা, আফদ্বালুন নাস বা’দাল আম্বিয়া সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম।
৩। ইলাহী বহুরমতে ছাহিবু রসূলিল্লাহ হযরত সালমান ফারসী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু।
৪। ইলাহী বহুরমতে হযরত ইমাম ক্বাসিম বিন মুহম্মদ বিন আবূ বকর আলাইহিস সালাম।
৫। ইলাহী বহুরমতে ইমামুল মুহাক্বক্বিক্বীন, আওলাদু রসূলিল্লাহ, ইয়াদগারে নুবুওওয়াহ, ইমামুস সাদিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাদিস আলাইহিস সালাম।
৬। ইলাহী বহুরমতে ইমামুল মুহাক্বক্বিক্বীন, আওলাদু রসূলিল্লাহ, ইয়াদগারে নুবুওওয়াহ, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাবি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
৭। ইলাহী বহুরমতে ইমামুল মুহাক্বক্বিক্বীন, আওলাদু রসূলিল্লাহ, ইয়াদগারে নুবুওওয়াহ, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছামিন মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
৮। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়েখ মা’রূফ কারখী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৯। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়েখ আবুল হাসান সাররী সাকতী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
১০। ইলাহী বহুরমতে হযরত খাজা সাইয়্যিদুত ত্বায়িফা জুনায়িদ বাগদাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
১১। ইলাহী বহুরমতে হযরত খাজা আবূ আলী রোদবারী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
১২। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়েখ আবুল ক্বাসিম নাসিরাবাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
১৩। ইলাহী বহুরমতে হযরত আবূ আলী দাক্কাক রহমতুল্লাহি আলাইহি।
১৪। ইলাহী বহুরমতে হযরত ইমাম আবুল ক্বাসিম কুশাইরী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
১৫। ইলাহী বহুরমতে হযরত খাজা আবূ আলী ফারমুদী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
* তিনি পঞ্চম হিজরী শতকের মহান মুজাদ্দিদ হুজ্জাতুল ইসলাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম গাযযালী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সম্মানিত পীর ছাহিব। তিনি হযরত আবুল হাসান খারকানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকেও খিলাফত মুবারক পেয়েছেন। হযরত আবুল হাসান খারকানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সুলত্বানুল আরিফীন হযরত খাজা বায়েজীদ বোস্তামী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে রূহানী ফায়িয পেয়েছেন, যিনি ইমামুল মুহাক্বক্বিক্বীন, আওলাদু রসূলিল্লাহ, ইয়াদগারে নুবুওওয়াহ, ইমামুস সাদিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম জা’ফর ছাদিক্ব আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত খলীফা।
১৬। ইলাহী বহুরমতে হযরত খাজা আবূ ইউসুফ হামদানী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
১৭। ইলাহী বহুরমতে খাজায়ে জাহাঁ হযরত আব্দুল খালিক্ব গুজদাওয়ানী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
১৮। ইলাহী বহুরমতে হযরত খাজা আরিফ রেওগারী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
১৯। ইলাহী বহুরমতে হযরত খাজা মাহমূদ আনজীর ফাগনবী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
২০। ইলাহী বহুরমতে হযরত খাজা আযীযানে আলী রামিতানী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
২১। ইলাহী বহুরমতে হযরত খাজা মুহম্মদ বাবা সাম্মাসী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
২২। ইলাহী বহুরমতে হযরত খাজা সাইয়্যিদ আমীর কুলাল রহমতুল্লাহি আলাইহি।
২৩। ইলাহী বহুরমতে খাজায়ে খাজেগাঁ, ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত হযরত খাজা বাহাউদ্দীন নক্শবন্দ বুখারী আল হানাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
* তিনি পবিত্র নক্শবন্দিয়া তরীক্বা উনার সম্মানিত ইমাম। তিনি নবম হিজরী শতকের মহান মুজাদ্দিদ।
২৪। ইলাহী বহুরমতে হযরত খাজা আলাউদ্দীন আত্তার রহমতুল্লাহি আলাইহি।
২৫। ইলাহী বহুরমতে হযরত খাজা ইয়া’কুব চরখী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
২৬। ইলাহী বহুরমতে হযরত খাজা উবায়দুল্লাহ আহরার রহমতুল্লাহি আলাইহি।
২৭। ইলাহী বহুরমতে হযরত খাজা মুহম্মদ যাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহি।
২৮। ইলাহী বহুরমতে হযরত খাজা দরবেশ মুহম্মদ রহমতুল্লাহি আলাইহি।

২৯। ইলাহী বহুরমতে হযরত খাজা মুহম্মদ আমাকাংগী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৩০। ইলাহী বহুরমতে হযরত খাজা বাক্বী বিল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৩১। ইলাহী বহুরমতে আফদ্বালুল আউলিয়া, ইমামে রব্বানী, ক্বাইয়ূমে আউওয়াল, আজিমুল বারাকাত, গাউছুল সাক্বালাইন, খাযীনাতুর রহমাহ, মাখদূমে যামান, আল মুনাওওয়ার, খাজায়ে খাঁজেগা, আবুল বারাকাত বদরুদ্দীন শায়েখ আহমদ ফারূক্বী সাইয়্যিদুনা হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী সিরহিন্দী আল হানাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
* তিনি সম্মানিত মুজাদ্দিদিয়া তরীক্বা উনার ইমাম। তিনি পবিত্র নক্শবন্দিয়া তরীক্বা উনাকে এতদূর সংস্কার ও সম্প্রসারণ করেন; যা নতুন রূপ লাভ করে, পরবর্তী সময়ে তা পবিত্র মুজাদ্দিদিয়া তরীক্বা নামে মশহুর হয়। এই তরীক্বা উনাকে ‘পবিত্র নক্শবন্দিয়ায়ে মুজাদ্দিদিয়া’ তরীক্বাও বলা হয়। তিনি একাদশ হিজরী শতকের মহান মুজাদ্দিদ।
৩২। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়েখ আদম বিন নূরী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৩৩। ইলাহী বহুরমতে হযরত সাইয়্যিদ আব্দুল্লাহ আকবরাবাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৩৪। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়েখ আব্দুর রহীম মুহাদ্দিছ দেহলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৩৫। ইলাহী বহুরমতে রঈসুল মুহাদ্দিছীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত হযরত শাহ ওয়ালীউল্লাহ মুহাদ্দিছ দেহলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
* তিনি দ্বাদশ হিজরী শতকের মহান মুজাদ্দিদ।
৩৬। ইলাহী বহুরমতে হযরত শাহ আব্দুল আযীয মুহাদ্দিছ দেহলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৩৭। ইলাহী বহুরমতে মুজাহিদে আ’যম, ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত, ছাহিবুল আসরার, রূহুল হক্ব মুজাদ্দিদে মিল্লাত, আমীরুল মু’মিনীন, আওলাদে রসূল হযরত শাহ সাইয়্যিদ আহমদ শহীদ বেরেলবী আলাইহিস সালাম।
* তিনিই ত্রয়োদশ হিজরী শতাব্দীর মহান মুজাদ্দিদ এবং সুপ্রসিদ্ধ ‘মুহম্মদিয়া তরীক্বা’ উনার সম্মানিত ইমাম।
৩৮। ইলাহী বহুরমতে কুতুবুল আকতাব হযরত মাওলানা শাহ ছূফী নূর মুহম্মদ নিজামপুরী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৩৯। ইলাহী বহুরমতে ওয়াসিল বিল্লাহ, আশিক্বে রসূলিল্লাহ, কুতুবুল ইরশাদ হযরত মাওলানা শাহ ছূফী ফতেহ আলী বর্ধমানী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
* উনাকে রসূলে নোমা বলা হয়। কারণ তিনি অনায়াশে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক যিয়ারত করিয়ে দিতেন।
৪০। ইলাহী বহুরমতে আমীরুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত, মুজাদ্দিদে যামান, কুতুবুল আলম শাহ ছূফী আলহাজ্জ হযরত মাওলানা আব্দুল্লাহিল মা’রূফ মুহম্মদ আবূ বকর ছিদ্দীক্বী ফুরফুরাবী আল হানাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
* তিনি চতুর্দশ হিজরী শতকের মহান মুজাদ্দিদ।
৪১। (ক) ইলাহী বহুরমতে ওলীয়ে মাদারযাদ, কুতুবুল আলম, সুলত্বানুল আরিফীন, হযরত মাওলানা শাহ ছূফী আবূ নজম মুহম্মদ নাজমুস সায়াদাত ছিদ্দীক্বী ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
(খ) ইলাহী বহুরমতে, কুতুবুল আলম, ক্বাইয়ূমে যামান, শায়খুল মাশায়িখ, হযরত মাওলানা শাহ ছূফী আবূ নছর মুহম্মদ আব্দুল হাই ছিদ্দীক্বী ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৪২। ইলাহী বহুরমতে কুতুবুল আলম, আমীরুশ শরীয়ত, মাহতাবে তরীক্বত, সুলত্বানুল আরিফীন, মাহিয়ে বিদয়াত, মুহইয়ে সুন্নাত, মুজাদ্দিদে যামান, হুজ্জাতুল ইসলাম, তাজুল মুফাসসিরীন, রঈসুল মুহাদ্দিছীন, ফখরুল ফুক্বাহা আলহাজ্জ হযরত মাওলানা শাহ ছূফী আবুল খায়ের মুহম্মদ ওয়াজীহুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি।
* তিনি উপরোক্ত উনাদের দু’জন থেকেই খিলাফত প্রাপ্ত হন। তবে উনার প্রধান শায়েখ হচ্ছেন হযরত নাজমুস সায়াদাত ছিদ্দীক্বী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৪৩। ইলাহী বহুরমতে খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত, যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইউস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, গউছুল আ’যম, ইমামে আ’যম, হুজ্জাতুল ইসলাম, সুলত্বানুল আরিফীন, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, সুলত্বানুন নাছীর, ক্বইয়ূমুয যামান, জাব্বারিউল আউওয়াল, ক্বউইউল আউওয়াল, আস্ সাফফাহ, হাবীবুল্লাহ, জামিউল আলক্বাব, আওলাদে রসূল, মাওলানা সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম আল হাসানী ওয়াল হুসাইনী ওয়াল কুরাইশী ওয়াল হানাফী ওয়াল ক্বাদিরী ওয়াল চীশতী ওয়ান নক্শবন্দী ওয়াল মুজাদ্দিদী।
* তিনিই সারা বিশ্বে সমাদৃত, প্রশংসিত, গ্রহণযোগ্য ও হক্ব সিলসিলা “রাজারবাগ শরীফ”-উনার মহা সম্মানিত হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম। তিনিই হিজরী পঞ্চদশ শতাব্দীর মহান ‘মুজাদ্দিদ’।
আয় বারে ইলাহী! উনাদের উসীলায় আমাদের উপর আপনার খাছ রহমত, মুহব্বত ও মা’রিফত এবং নূরে মুজাসসাম,হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খাছ তাওয়াজ্জুহ, ফায়িয, যিয়ারত, মুহব্বত ও মা’রিফাত মুবারক দান করুন। পবিত্র সুন্নত উনার পূর্ণ পায়রবী করার তাওফীক দিন। যাহিরী ও বাতিনী দৃঢ়তা আর ইহকাল ও পরকালের সুস্থতা দান করুন। এই সকল সম্মানিত মহান বুযুর্গানে দ্বীন উনাদের ফুয়ূজাত, বারাকাত ও কামালাতের পূর্ণ হিসসা নছীব করুন। আমীন!
*****************************************

২।
***ক্ববূল মাশহূর চীশতিয়া তরীক্বা উনার শাজরা শরীফ : ***
 
 সাইয়্যিদুনা হযরত মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার আযীমুশ শান নূরানী সিলসিলা মুবারক উনার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী হাক্বীক্বী শানে জারি রয়েছে- মক্ববূল মাশহূর চীশতিয়া তরীক্বা উনার শাজরা শরীফ


১। ইলাহী বহুরমতে কুল-মাখলূক্বাতের নবী ও রসূল, হায়াতুন নবী, ছাহিবে ইলমে গইব, ছাহিবে মুত্তালা’ ‘আলাল গইব, জামিউল ইলম, ছাহিবে মাফাতীহুল ইলম, আল্হাদ্বির, আন্নাযির, ছাহিবে লাওলাক, ছাহিবে ক্বাবা ক্বওসাইনি আও আদনা, ছাহিবে কাওছার, ছাহিবে মাক্বামে মাহমূদ, ছাহিবে লিওয়ায়িল হামদ্, ছাহিবে শাফা’আতে কুবরা, ছাহিবে লাসতু কাআহাদিকুম, ছাহিবে মি’রাজ, ছাহিবে কুন ফাইয়াকুন, ছাহিবে ওয়াহ্য়ি, আশশারি’, আলগনিইইয়ু, রঊফুর রহীম, আত্ত্বাহির, আত্তইয়িব, শাফিউল উম্মাহ, খতীবুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, সাইয়্যিদুল মাখদূম, ছাহিবে জামিউল আসমা ওয়াছ ছিফাত, ফাদ্বলুল্লাহ, আকরামুল আউওয়ালীন ওয়াল আখিরীন, ফখরুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ সাইয়্যিদুনা হযরত মুহম্মদুর রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
২। ইলাহী বহুরমতে সাইয়্যিদুল আরব, বাবুল ইলমি ওয়াল হিকমাহ, আমীনু আহলি আরদ্ব, কুদওয়াতুল মুত্তাক্বীনা, যীনাতুল আরিফীন, নূরুল মুত্বীয়ীন, ইমামুল আদিলীন, আহলু বাইতিন নাবিইয়ি, আমীরুল মু’মিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন, ইমামুল আউওয়াল মিন আহলে বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আসাদুল্লাহিল গালিব সাইয়্যিদুনা হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম।
৩। ইলাহী বহুরমতে কাবীরুশ শান, আখতাবুল নাস, মুফাসসিরুল আলী, শায়খুশ শুয়ূখ, ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত হযরত ইমাম হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৪। ইলাহী বহুরমতে আলিমুল কাবীর, আফদ্বালুন আবিদীন হযরত শায়েখ ওয়াহিদ বিন যায়িদ রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৫। ইলাহী বহুরমতে হাদিউন নাস, ক্বামিউল বিদয়াত হযরত শায়েখ ফুযাইল ইবনে আয়ায রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৬। ইলাহী বহুরমতে আলিমুর রব্বানী, আতক্বান নাস হযরত শায়েখ ইব্রাহীম ইবনে আদ্হাম বলখী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৭। ইলাহী বহুরমতে আযীমুশ শান, আখশালিল্লাহ হযরত শায়েখ হুযাইফা মারয়াশী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৮। ইলাহী বহুরমতে আওরাউন নাস, আহলুত তাক্বওয়া হযরত শায়েখ আমীনুদ্দীন হুবায়রা বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৯। ইলাহী বহুরমতে ইলমুল আছফিয়া, আশিকুল্লাহ হযরত শায়েখ আবূ ইবরাহীম ইসহাক্ব মামশাদ উলু দিনারী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
১০। ইলাহী বহুরমতে আবিদুল মুখলিছ, আশিকু রসূলিল্লাহ হযরত খাজা আবূ ইসহাক্ব শামী চীশতি রহমতুল্লাহি আলাইহি।
১১। ইলাহী বহুরমতে আকরামুল ইবাদ, ছাহিবুত তাক্বওয়া হযরত খাজা আবূ আহমদ আবদাল চীশতি রহমতুল্লাহি আলাইহি।
১২। ইলাহী বহুরমতে আলিমুছ ছালিহ, আবিদুর রফী হযরত খাজা আবূ মুহম্মদ চীশতি রহমতুল্লাহি আলাইহি।
১৩। ইলাহী বহুরমতে আলিমু বিদদ্বীন, যাহিদুন ফিদ দুনইয়া হযরত খাজা নাছীরুদ্দীন আবূ ইউসুফ চীশতি রহমতুল্লাহি আলাইহি।
১৪। ইলাহী বহুরমতে আলিমুম বিল্লাহ, যাকিরুল লিল্লাহ হযরত খাজা কুতুবুদ্দীন মওদূদ চীশতি রহমতুল্লাহি আলাইহি।
১৫। ইলাহী বহুরমতে আলিমুল কামিল, মুতাশাম্মিরুল আবিদ হযরত খাজা হাজী শরীফ জিন্দানী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
১৬। ইলাহী বহুরমতে শায়েখুন নাস, শায়খুশ শুয়ূখ হযরত খাজা উছমান হারূনী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
১৭। ইলাহী বহুরমতে ছাহিবুল আসরার, ছাহিবু কুন ফাইয়াকুন, সাইয়্যিদুল আবিদীন, সুলত্বানুল আরিফীন, কুতুবুল মাশায়িখিল বাররি ওয়াল বাহরি, আলিমু ইলমিয যাহির ওয়াল বাতিন, মুহ্ইউস সুন্নাহ, সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল হিন্দ, খাজায়ে খাজেগাঁ, গরীবে নেওয়াজ, হাবীবুল্লাহ হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতি আজমীরী সানজরী আল হানাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
 তিনি চীশতিয়া তরীক্বার মহামান্য ইমাম। তিনি সপ্তম হিজরী শতকের মহান মুজাদ্দিদ। তিনিই খাজা ছাহেব নামে মশহূর।
১৮। ইলাহী বহুরমতে ওয়ারিছুল আম্বিয়া, আশরাফুল আওলিয়া, কুতুবুয যামান হযরত খাজা কুতুবুদ্দীন বখতিয়ার কাকী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
১৯। ইলাহী বহুরমতে ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস সুন্নাহ হযরত খাজা বাবা ফরীদুদ্দীন মাসঊদ গঞ্জেশকর রহমতুল্লাহি আলাইহি।
২০। ইলাহী বহুরমতে মুজাদ্দিদে মিল্লাত, সুলত্বানুল আউলিয়া, মাহবূবে ইলাহী হযরত খাজা নিজামুদ্দীন আউলিয়া আল হানাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি। তিনি অষ্টম হিজরী শতকের মহান মুজাদ্দিদ।
২১। ইলাহী বহুরমতে সুলত্বানুল উলামা, বুরহানুল আশিক্বীন হযরত খাজা আঁখি সিরাজুদ্দীন উছমান আওদাহী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
২২। ইলাহী বহুরমতে শায়খুল উলামা, উস্তাযুল আসাতিয়াহ হযরত শায়খ আলাউল হক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি।
২৩। ইলাহী বহুরমতে ওলিয়্যুল কামিল, শামসুল আরিফীন হযরত শায়েখ নূর কুতুবে আলম রহমতুল্লাহি আলাইহি।
২৪। ইলাহী বহুরমতে মুঈনুল হক্ব, রাহনুমায়ে মুসলিমীন হযরত শায়েখ হুসসামুদ্দীন মানিকপুরী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
২৫। ইলাহী বহুরমতে হাদিউয যামান, মুঈনুল মিল্লাহ হযরত শায়েখ রাযী হামিদ শাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি।
২৬। ইলাহী বহুরমতে সিরাজুস সালিকীন, সিরাজুল উম্মাহ শায়েখ হাসান বিন ত্বাহির রহমতুল্লাহি আলাইহি।
২৭। ইলাহী বহুরমতে নায়িবুর রসূল, মুরশিদুন নাস হযরত শায়েখ ক্বাযী খান আবূ ইউসুফ নাছিহী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
২৮। ইলাহী বহুরমতে মুত্বীউস সুন্নাহ, ইলমুল আছফিয়া হযরত শায়েখ আব্দুল আযীয রহমতুল্লাহি আলাইহি।
২৯। ইলাহী বহুরমতে ওয়ারিছু রসূলিল্লাহ, আহলুত তাক্বওয়া হযরত শায়েখ নাজমুল হক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৩০। ইলাহী বহুরমতে আফদ্বালুল আবিদীন, আবিদুল মুখলিছ হযরত শায়েখ আব্দুল আযীয রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৩১। ইলাহী বহুরমতে মুদাওয়িমু আলা ইবাদাতিল্লাহ, মুহ্ইউস সুন্নাহ হযরত শায়েখ কুতুবুল আলম রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৩২। ইলাহী বহুরমতে আহলুল ইল্ম্, আহলুত তাছাওউফ হযরত শাহ রফীউদ্দীন মুহাদ্দিছ দেহলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৩৩। ইলাহী বহুরমতে শামসুল উলামা, মুহাদ্দিছুশ শাহীর হযরত শায়েখ আব্দুর রহীম মুহাদ্দিছ দেহলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৩৪। ইলাহী বহুরমতে বাহরুল উলূম, রঈসুল মুহাদ্দিছীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত হযরত শাহ ওয়ালীউল্লাহ মুহাদ্দিছ দেহলবী আল হানাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি। তিনি দ্বাদশ হিজরী শতকের মহান মুজাদ্দিদ।
৩৫। ইলাহী বহুরমতে তাজুল মুহাদ্দিছীন, রঈসুল মুফাসসিরীন, আলিমুল ফাদ্বিল হযরত শাহ আব্দুল আযীয মুহাদ্দিছ দেহলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৩৬। ইলাহী বহুরমতে খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, আমীরুশ শরীয়ত ওয়াত ত্বরীক্বত, আমীরুল মু’মিনীন, মুজাদ্দিদে যামান, হযরত শাহ সাইয়্যিদ আহমদ শহীদ বেরেলবী আল হানাফী আলাইহিস সালাম। তিনি হিজরী ১৩ শতকের মহান মুজাদ্দিদ।
৩৭। ইলাহী বহুরমতে ফখরুল উলামা ওয়াল মাশায়িখ, কুতুবুল আকতাব হযরত আল্লামা শাহ ছূফী নূর মুহম্মদ নিজামপুরী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৩৮। ইলাহী বহুরমতে ওয়াসিল বিল্লাহ, আশিক্বে রসূলিল্লাহ, কুতুবুল ইরশাদ হযরত আল্লামা শাহ ছূফী ফতেহ আলী বর্ধমানী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
 উনাকে রসূলে নোমা বলা হয়। কারণ তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যিয়ারত মুবারক করিয়ে দিতে পারতেন।
৩৯। ইলাহী বহুরমতে আমীরুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত, মুজাদ্দিদে যামান, কুতুবুল আলম, শাহ ছূফী আলহাজ্জ হযরত আল্লামা আব্দুল্লাহিল মা’রূফ মুহম্মদ আবূ বকর ছিদ্দীক্বী ফুরফুরাবী আল হানাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি। তিনি হিজরী ১৪ শতকের মহান মুজাদ্দিদ।
৪০। (ক) ইলাহী বহুরমতে ওলীয়ে মাদারযাদ, কুতুবুল আলম, সুলত্বানুল আরিফীন, হযরত আল্লামা শাহ ছূফী আবূ নজম মুহম্মদ নাজমুস সায়াদাত ছিদ্দীক্বী ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
(খ) ইলাহী বহুরমতে, কুতুবুল আলম, কাইয়্যুমে যামান, শায়েখুল মাশায়িখ, হযরত আল্লামা শাহ ছূফী আবূ নছর মুহম্মদ আব্দুল হাই ছিদ্দীক্বী ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৪১। ইলাহী বহুরমতে কুতুবুল আলম, আমীরুশ শরীয়ত, মাহতাবে তরীক্বত, সুলত্বানুল আরিফীন, মাহিয়ে বিদয়াত, মুহইয়ে সুন্নাত, মুজাদ্দিদে যামান, হুজ্জাতুল ইসলাম, তাজুল মুফাসসিরীন, রঈসুল মুহাদ্দিছীন, ফখরুল ফুক্বাহা আলহাজ্জ হযরত আল্লামা শাহ ছূফী আবুল খায়ের মুহম্মদ ওয়াজীহুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি।
 তিনি উপরোক্ত দু’জন উনাদের থেকেই খিলাফত প্রাপ্ত হন। তবে উনার প্রধান শায়েখ হচ্ছেন হযরত নাজমুস সায়াদাত ছিদ্দীক্বী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৪২। ইলাহী বহুরমতে, খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্ইউস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, গওছুল আ’যম, কুতুবুল আলম, হুজ্জাতুল ইসলাম, সুলত্বানুল আরিফীন, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, ক্বইয়ূমুয যামান, জাব্বারিউল আউওয়াল, ক্বউইউল আউওয়াল, সুলত্বানুল নাছীর, আস সাফফাহ, হাবীবুল্লাহ, আওলাদে রসূল, নূরে মুকাররম, মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা কা’বা সাইয়্যিদুনা ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম।
 তিনিই সারা বিশ্বে সমাদৃত, প্রশংসিত, গ্রহণযোগ্য ও হক্ব সিলসিলা “রাজারবাগ শরীফ” উনার মহা সম্মানিত হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম। তিনিই হিজরী পঞ্চদশ শতাব্দীর মহান ‘মুজাদ্দিদ’।
আয় বারে ইলাহী! উনাদের উসীলায় আমাদেরকে আপনার খাছ রহমত, মুহব্বত ও মা’রিফাত এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খাছ তাওয়াজ্জুহ, ফায়িয, যিয়ারত, মুহব্বত ও মা’রিফাত দান করুন। সুন্নতের পূর্ণ পায়রবী করার তাওফীক দিন। যাহিরী ও বাতিনী দৃঢ়তা আর ইহকাল ও পরকালের সুস্থতা দান করুন। এই সকল বুযুর্গানে দ্বীন উনাদের ফুয়ূজাত, বারাকাত ও কামালাতের পূর্ণ হিসসা নছীব করুন। আমীন!


***************************************************************************************************************************৩। ক্বাদিরিয়া তরীক্বা উনার শাজরা শরীফ :

মুজাদ্দিদে আ’যম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম উনার আযীমুশ শান নূরানী সিলসিলা মুবারক উনার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী হাক্বীকী শানে জারি রয়েছে- মাহবূবে সুবহানী, কুতুবে রব্বানী, মুহিউদ্দিন, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মক্ববূল মাশহূর ক্বাদিরিয়া তরীক্বা উনার শাজরা শরীফ :

 বিশ্বব্যাপী সুমহান শান মুবারক-এ জারি থাকা উনার মুবারক ক্বাদিরিয়া তরীক্বা উনার সুমহান শাজরা শরীফ এখানে উল্লেখ করা হলো:-
 ১। ইলাহী বহুরমতে কুল-মাখলূক্বাতের নবী ও রসূল, হায়াতুন নবী, ছাহিবে ইলমে গইব, ছাহিবে মুত্তালা’ ‘আলাল গইব, জামিউল ইলম, ছাহিবে মাফাতীহুল ইলম, আল্হাদ্বির, আন্নাযির, ছাহিবে লাওলাক, ছাহিবে ক্বাবা ক্বওসাইনি আও আদনা, ছাহিবে কাওছার, ছাহিবে মাক্বামে মাহমূদ, ছাহিবে লিওয়ায়িল হামদ্, ছাহিবে শাফা‘আতে কুবরা, ছাহিবে লাসতু কাআহাদিকুম, ছাহিবে মি’রাজ, ছাহিবে কুন ফাইয়াকুন, ছাহিবে ওয়াহ্য়ি, ছাহিবে শারীআহ, আলগনিইয়্যূ, রঊফুর রহীম, আত্ত্বাহির, আত্তইয়িব, শাফিউল উম্মাহ, খতীবুল আম্বিয়া ওয়াল উমাম, সাইয়্যিদুল মাখদূম, ছাহিবে জামিউল আসমা ওয়াছ ছিফাত, ফাদ্বলুল্লাহ, আকরামুল আওওয়ালীন ওয়াল আখিরীন, ফখরুল আম্বিয়া, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ সাইয়্যিদুনা হযরত মুহম্মদুর রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
২। ইলাহী বহুরমতে সাইয়্যিদুল আরব, বাবুল ইলমি ওয়াল হিকমাহ, আমীনু আহলি আরদ্ব, কুদওয়াতুল মুত্তাক্বীনা, যীনাতুল আরিফীন, নূরুল মুত্বীয়ীন, ইমামুল আদিলীন, আহলু বাইতিন নাবিইয়ি, আমীরুল মু’মিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন, আসাদুল্লাহিল গালিব, আল ইমামুল আউওয়াল মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম।
৩। ইলাহী বহুরমতে সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ, সিবতু রসূলিল্লাহ, আলু রসূলিল্লাহ, আল ইমামুস সাইয়্যিদ, আল ইমামুল হুমাম, আমীরুল মু’মিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন, আল ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম।
 ৪। ইলাহী বহুরমতে সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ, সিবতু রসূলিল্লাহ, আলু রসূলিল্লাহ, আল ইমামুস সাইয়্যিদ, আল ইমামুল হুমাম, কাবীরুশ শা’ন, শহীদে কারবালা, সাইয়্যিদুশ শুহাদা, আল ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম।
 ৫। ইলাহী বহুরমতে ইমামুল মুহাক্বক্বিক্বীন, আওলাদু রসূলিল্লাহ, ইয়াদগারে নুবুওওয়াহ, পেশওয়ায়ে দ্বীন, আস সাজ্জাদ, আল ইমামুর রাবি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আলী আওসাত যাইনুল আবিদীন আলাইহিস সালাম।
 ৬। ইলাহী বহুরমতে ইমামুল হুদা, ইমামু আহলিল ইয়াক্বীন, সুলালাতুন নুবুওওয়াহ, সিরাজুল মিল্লাহ, আল ইমামুল খামিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম বাকির আলাইহিস সালাম।
 ৭। ইলাহী বহুরমতে ইমামুল মুহাক্বক্বিক্বীন, আওলাদু রসূলিল্লাহ, ইয়াদগারে নুবুওওয়াহ, ইমামুস সাদিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম জা’ফর ছাদিক্ব আলাইহিস সালাম।
 ৮। ইলাহী বহুরমতে ইমামুল মুহাক্বক্বিক্বীন, আওলাদু রসূলিল্লাহ, ইয়াদগারে নুবুওওয়াহ, ইমামুস সাবি’ মিন আহলে বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম মূসা কাযিম আলাইহিস সালাম। ৯। ইলাহী বহুরমতে ইমামুল মুহাক্বক্বিক্বীন, আওলাদু রসূলিল্লাহ, ইয়াদগারে নুবুওওয়াহ, ইমামুছ ছামিন মিন আহলে বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আলী রিযা আলাইহিস সালাম। ১০। ইলাহী বহুরমতে ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত হযরত শায়েখ মা’রূফ কারখী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
 ১১। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়েখ আবূল হাসান সাররী সাকতী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
 ১২। ইলাহী বহুরমতে হযরত খাজা সাইয়্যিদুত ত্বায়িফা জুনায়িদ বাগদাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
 ১৩। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়েখ আবূ বকর শিবলী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
১৪। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়েখ আব্দুল আযীয বিন হারিছ তামিমী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
 ১৫। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়েখ আব্দুল ওয়াহিদ বিন আব্দুল আযীয রহমতুল্লাহি আলাইহি।
১৬। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়েখ আবূল ফাররাহ মুহম্মদ তারতুসী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
 ১৭। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়েখ আবূল হাসান হাককারী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
১৮। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়েখ আবূ সাঈদ মুবারক মখদুমী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
 ১৯। ইলাহী বহুরমতে ইমামে রব্বানী, মাহবূবে সুবহানী, সাইয়্যিদুল আওলিয়া, ইমামুর রাসিখীন, সুলত্বানুল আরিফীন, গাউছে সামদানী, মাশায়েখে আকবর মাশরিক ওয়াল মাগরিব, কুতুবুল আলম, ফরদুল আহবাব, গউছুল আ’যম, শায়েখে শুইয়খিল আলম, গাউসে সাক্বালাইন, শাইখুল ইসলাম, ইমামুল আইম্মাহ, সাইয়্যিদুনা হযরত মুহিউদ্দীন আব্দুল ক্বাদির জিলানী বড়পীর ছাহিব আল হাম্বলী রহমতুল্লাহি আলাইহি। * তিনিই পবিত্র ক্বাদিরিয়া তরীক্বা উনার সম্মানিত ইমাম রহমতুল্লাহি আলাইহি। সকলের নিকট তিনি বড়পীর ছাহিব গাউছুল আ’যম, দস্তগীর লক্বম মুবারক-এ মশহূর।
 ২০। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়েখ সাইয়্যিদ আব্দুর রাযযাক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি।
২১। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়েখ শরফুদ্দীন কাত্তাল রহমতুল্লাহি আলাইহি।
২২। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়েখ আব্দুল ওয়াহহাব রহমতুল্লাহি আলাইহি।
২৩। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়েখ বাহাউদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহি।
২৪। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়েখ আক্বীল রহমতুল্লাহি আলাইহি।
 ২৫। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়েখ শামসুদ্দীন সাহরায়ি রহমতুল্লাহি আলাইহি।
 ২৬। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়েখ গাদায়ে রহমান আউওয়াল রহমতুল্লাহি আলাইহি।
২৭। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়েখ শামসুদ্দীন আরিফ রহমতুল্লাহি আলাইহি।
২৮। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়েখ গাদায়ে রহমান ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
 ২৯। ইলাহী বহুরমতে হযরত শাহ ফাযিল রহমতুল্লাহি আলাইহি।
 ৩০। ইলাহী বহুরমতে হযরত শাহ কামাল কায়থালী রহমতুল্লাহি আলাইহি। ৩১। ইলাহী বহুরমতে হযরত শাহ সিকান্দার কায়থালী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
 ৩২। ইলাহী বহুরমতে আফযালুল আওলিয়া, ইমামে রব্বানী, কাইয়্যুমে আউওয়াল, আজিমুল বারাকাত, গউছুল সাক্বালাইন, খাযীনাতুর রহমাহ, মাখদূমে যামান, আল মুনাওওয়ার, খাজায়ে খাঁজেগা, আবূল বারাকাত, বদরুদ্দীন শায়েখ আহমদ ফারূক্বী হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী সিরহিন্দী আল হানাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি। * তিনি মহান মুজাদ্দিদিয়া তরীক্বা উনার ইমাম রহমতুল্লাহি আলাইহি। তিনিই হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার খেরকা মুবারক হযরত শাহ সিকান্দার কায়থালী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মুবারক মারফত প্রাপ্ত হয়েছেন।
 ৩৩। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়েখ আদম বিন নূরী রহমতুল্লাহি আলাইহি। ৩৪। ইলাহী বহুরমতে হযরত সাইয়্যিদ আব্দুল্লাহ আকবরাবাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
 ৩৫। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়েখ আব্দুর রহীম মুহাদ্দিছ দেহলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
 ৩৬। ইলাহী বহুরমতে রঈসুল মুহাদ্দিছীন, মুজাদ্দিদে যামান ও মুজাদ্দিদে মিল্লাত হযরত শাহ ওয়ালীউল্লাহ মুহাদ্দিছ দেহলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি। * তিনি দ্বাদশ হিজরী শতকের মহান মুজাদ্দিদ।
 ৩৭। ইলাহী বহুরমতে হযরত শাহ আব্দুল আযীয মুহাদ্দিছ দেহলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
 ৩৮। ইলাহী বহুরমতে আমীরুল মু’মিনীন, মুজাদ্দিদে যামান, হযরত শাহ সাইয়্যিদ আহমদ শহীদ বেরেলবী আলাইহিস সালাম। * তিনিই ত্রয়োদশ হিজরী শতাব্দীর মহান মুজাদ্দিদ এবং সুপ্রসিদ্ধ ‘মুহম্মদিয়া তরীক্বা’ উনার সম্মানিত ইমাম।
 ৩৯। ইলাহী বহুরমতে কুতুবুল আকতাব হযরত মাওলানা শাহ ছূফী নূর মুহম্মদ নিজামপুরী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
 ৪০। ইলাহী বহুরমতে ওয়াসিল বিল্লাহ, আশিক্বে রসূলিল্লাহ, কুতুবুল ইরশাদ হযরত মাওলানা শাহ ছূফী ফতেহ আলী বর্ধমানী রহমতুল্লাহি আলাইহি। * উনাকে রসূলে নোমা বলা হয়। কারণ তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যিয়ারত করিয়ে দিতে পারতেন। ৪১। ইলাহী বহুরমতে আমীরুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত, মুজাদ্দিদে যামান, কুতুবুল আলম শাহ ছূফী আলহাজ্জ হযরত মাওলানা আব্দুল্লাহিল মা’রূফ মুহম্মদ আবূ বকর ছিদ্দীক্বী ফুরফুরাবী আল হানাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি। * তিনি চতুর্দশ হিজরী শতকের মহান মুজাদ্দিদ।
 ৪২। (ক) ইলাহী বহুরমতে ওলীয়ে মাদারজাদ, কুতুবুল আলম, সুলত্বানুল আরিফীন, হযরত মাওলানা শাহ ছূফী আবূ নজম মুহম্মদ নাজমুস সায়াদাত ছিদ্দীক্বী ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি। (খ) ইলাহী বহুরমতে, কুতুবুল আলম, কাইয়্যুমে যামান, শায়খুল মাশায়িখ, হযরত মাওলানা শাহ ছূফী আবূ নছর মুহম্মদ আব্দুল হাই ছিদ্দীক্বী ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৪৩। ইলাহী বহুরমতে কুতুবুল আলম, আমীরুশ শরীয়ত, মাহতাবে তরীক্বত, সুলত্বানুল আরিফীন, মাহিয়ে বিদয়াত, মুহইয়ে সুন্নাত, মুজাদ্দিদে যামান, হুজ্জাতুল ইসলাম, তাজুল মুফাসসিরীন, রঈসুল মুহাদ্দিছীন, ফখরুল ফুক্বাহা আলহাজ্জ হযরত মাওলানা শাহ ছূফী আবূল খায়ের মুহম্মদ ওয়াজীহুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি। তিনি উপরোক্ত উনাদের দু’জন থেকেই খিলাফত প্রাপ্ত হন। তবে উনার প্রধান শায়েখ হচ্ছেন হযরত নাজমুস সায়াদাত ছিদ্দীক্বী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৪৪। ইলাহী বহুরমতে, খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইউস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, ক্বইয়ূমুয যামান, হুজ্জাতুল ইসলাম, সুলত্বানুল আরিফীন, সাইয়্যিদুল আওলিয়া, জাব্বারিউল আউওয়াল, ক্বউইয়্যূল আউওয়াল, সুলত্বানুন নাছীর, হাবীবুল্লাহ, জামিউল আলক্বাব, আওলাদে রসূল, মাওলানা সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম। * তিনিই সারা বিশ্বে সমাদৃত, প্রশংসিত, গ্রহণযোগ্য ও হক্ব সিলসিলা “রাজারবাগ শরীফ”-উনার মহাসম্মানিত হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম। তিনিই হিজরী পঞ্চদশ শতাব্দীর ‘মুজাদ্দিদ’। আয় বারে ইলাহী! উনাদের ওসীলায় আমাদের উপর আপনার খাছ রহমত, মুহব্বত ও মা’রিফাত এবং হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খাছ তাওয়াজ্জুহ, ফায়িয, যিয়ারত, মুহব্বত ও মা’রিফাত দান করুন। সুন্নতের পূর্ণ পায়রবী করার তাওফীক দিন। যাহিরী ও বাতিনী দৃঢ়তা আর ইহকাল ও পরকালের সুস্থতা দান করুন। এই সকল বুযুর্গানে দ্বীন উনাদের ফুয়ূজাত, বারাকাত ও কামালাতের পূর্ণ হিসসা নছীব করুন। (আমীন)
লিখনে : খাজা মুহম্মদ ইউসুফ রাজী
pic : https://tinyurl.com/y88vdlz8
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া ( ৫ নং )

দাড়ি ও গোঁফের শরয়ী আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া
গবেষণা কেন্দ্র মুহম্মদীয়া জামিয়া শরীফ

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)

[সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীন উনার এবং অসংখ্য দরূদ ও সালাম মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্নাবিয়্যীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি। মহান আল্লাহ পাক উনার অশেষ রহমতে আমাদের গবেষণা কেন্দ্র, “মুহম্মদীয়া জামিয়া শরীফউনার ফতওয়া বিভাগের তরফ থেকে, বহুল প্রচারিত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, বাতিলের আতঙ্ক মাসিক আল বাইয়্যিনাতপত্রিকায় যথাক্রমে টুপির ফতওয়া, অঙ্গুলী চুম্বনের বিধান, নিয়ত করে মাযার শরীফ জিয়ারত করা, ছবি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় হারাম হওয়ার ফতওয়া, জুমুয়ার নামায ফরযে আইন ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া, মহিলাদের মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া মাকরূহ তাহরীমী সম্পর্কে ফতওয়া, কদমবুছী ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, তাহাজ্জুদ নামায জামায়াতে পড়া মাকরূহ তাহরীমী ও বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, ফরয নামাযের পর মুনাযাত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, ইনজেকশন নেয়া রোযা ভঙ্গের কারণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, তারাবীহ উনার নামাযে বা অন্যান্য সময় পবিত্র কুরআন শরীফ খতম করে উজরত বা পারিশ্রমিক গ্রহণ করা ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া এবং তারাবীহ নামায বিশ রাকায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া প্রকাশ করার পর ৩০তম সংখ্যা থেকে ৩৪তম সংখ্যা পর্যন্ত ত্রয়োদশ ফতওয়া হিসাবে দাড়ি ও গোঁফের শরয়ী আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কিত ফতওয়া শেষ করতে পারায় মহান আল্লাহ পাক উনার দরবার শরীফ এ অসংখ্য শুকরিয়া।]

কমপক্ষে একমুষ্ঠি পরিমাণ দাঁড়ী রাখা ফরয/ওয়াযিব, আর এর চেয়ে কমে কাঁটা ও মুণ্ডন করা হারাম হওয়ার অকাট্য দলীলসমূহ
(৮৭)
انه صلى الله عليه وسلم كان ....... كث اللحية تملى صدره- الخ. (شفاء قاضى عياض)
অর্থ : সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দাঁড়ী মুবারক ঘন ও সীনাপোর বা বুকভরা ছিল।” (শেফায়ে ক্বাজী আয়াজ)
(৮৮)
الحيهء اميرالمؤمنين على رضى الله عنه ...ر ميكرد سيتهء او رأ هم ..نين از عمر رضى الله عنه وعثمان رضى الله عنه نو شته اند- كان الشيخ محى الدين رحمه الله تعالى طويل اللحية وعريضا:- (مدارج النبوة جا صفه ১৯)
অর্থ : আমীরুল মুমিনীন, হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি বুকভরা বা সীনাপোর দাঁড়ী মুবারক রাখতেন। অনুরূপ হযরত উমর ইবনুল খত্তাব আলাইহিস সালাম ও হযরত উসমান যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনিও সীনাপোর দাঁড়ী রাখতেন। শায়খ মুহীউদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনিও লম্বা চওড়া দাড়ি রাখতেন।” (মাদারেজুন নুবুওওয়ত ১ম জিঃ পৃষ্ঠা-১৯) (৮৯)
عن كعب رضى الله عنه قال- يكون فى اخر الزمان اقوام يقصون لحاهم كذنب الحمامة ويعر قيون نعالهم كالمنا جل اولئك لا خلاق لهم= (احياء علوم الدين ج صفه ১২৯)
অর্থ : হযরত কাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, আখিরী যামানায় এমন একদল লোক বের হবে, যারা কবুতরের লেজের ন্যায় (কাটসাট) দাড়ি রাখবে এবং উটের কুজের ন্যায় উঁচু গোড়ালী বিশিষ্ট জুতা পরিধান করবে। মূলতঃ জান্নাতে তাদের কোন অংশ নেই।” (ইহইয়াউ উলুমিদ্দীন ১ম জিঃ পৃষ্ঠা-১২৯)
 (৯০-৯১) 
واما الاخذ منها وهى دون ذالك كما يفعله بعض المغارية ومخنثة الرجال فلم يبحه احد= (الفتا ر.. الشامى ج صفه ১১৭، وكذا فى تبيين الحقاتق)
অর্থ : একমুষ্ঠি ওয়ার পূর্বে দাড়ি কর্তন করা যেরূপ কতেক পশ্চিমা ও নপুংষকরা করে থাকে। উহাকে কেউ জায়িয বলেননি। অর্থাৎ সকলেই নাজায়িয বলেছেন।” (ফতওয়ায়ে শামী ২য় জিঃ পৃষ্ঠা-১১৭, অনুরূপ তাবয়ীনুল হাক্বায়িকে উল্লেখ আছে) (৯২)
حلق اللحية قبيح بل حرام. (الجوهرة النيرة صفه ২০৮)
অর্থ : দাড়ি মুণ্ডন করা অপছন্দনীয় কাজ বরং হারাম।” (আল জাওহারাতুন নাইয়্যারাহ পৃষ্ঠা-২০৮) (৯৩-৯৫)
المعتمد حرمة حلقها ومنهم من صرح بالحومة ولم يحك خلافا كصاحب الانصاف= (شرح المنتهى وكذا فى شرح المنظومة الادب. وجواهرالفقه(
অর্থ : নির্ভরযোগ্য মতে দাড়ি মুণ্ডন করা হারাম। অনেকে নিশ্চিত হারাম বলে উল্লেখ করেছেন, যেমন প্রসিদ্ধ আল ইনছাফ”-উনার লেখক। তিনি এ ব্যাপারে কারো দ্বিমত আছে বলে উল্লেখ করেননি।” (শরহুল মুনতাহা, অনুরূপ শরহে মাঞ্জুমাতুল আদব, জাওয়াহিরুল ফিক্বাহতে উল্লেখ আছে) (৯৬)
فلذ الك كان حلق اللحية محرما عند ائمة المسلمين ابى حنيفة ومالك والشافعى واحمد وغير هم= (المنهال(
অর্থ : এ কারণেই দাড়ি মুণ্ডন করা সকল ইমাম উনাদের নিকটই হারাম। যেমন- ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি, ইমাম মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি, ইমাম শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি ও ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি প্রমুখ।” (আল মিনহাল) (৯৭-৯৯)
وقد اتفقت المذاهب الاربعة على وجوب توفير اللحية وحرمة حلقها ......... ومذهب السادة المالكية حرمة حلق اللحية فكذا قصها اذا كان يحصل بها المثلة= (الابداع فى منار الابتداع وكذا فى جواهر الفقه وحكم للحيه فى الاسلام(
অর্থ : চার মাযহাবের ইমাম উনারা দাড়ি (কম পক্ষে একমুষ্ঠি পরিমাণ) লম্বা করা ওয়াজিব এবং মুণ্ডন করা হারাম হওয়ার ব্যাপারে একমত পোষণ করেছেন। ......... আর মালেকী মাযহাব উনার মতেও দাড়ি মুণ্ডন করা হারাম। অনুরূপ আকৃতির বিকৃতি ঘটার কারণে দাড়ি (এক মুষ্ঠির কমে) ছোট করাও হারাম।” (কিতাবুল ইবদা ফী মানারিল ইবতেদা, অনুরূপ জাওয়াহিরুল ফিক্বাহ ও হুকমুল লিহইয়া ফিল ইসালাম নামক কিতাবে উল্লেখ আছে)
(১০০-১০২)
قال ابن الرفعة ان الشافعى نص فى "الام" باالتحريم= (شرح العباب وكذا ى دارهى اور انبياء كى سنت وجواهر الفقه(
অর্থ : হযরত ইবনুর রাফয়াহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, ইমাম শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি কিতাবুল উম-এ দাড়ি মুণ্ডন করা হারাম বলে উল্লেখ করেছেন।” (আল ওবাব, অনুরূপ ডারহী আওর আম্বিয়া কী সুন্নত ও জাওয়াহিরুল ফিক্বাহ নামক কিতাবে উল্লেখ আছে। (১০৩)
"وقص اللحية" من صنع الاعاجم وهواليوم شعار كشير من المشر كين كالا فرنج والهنود ومن لا خلاق له فى الدين من الطائفة القلندرية= (التعليق الصبيح على مشكوة المصابيح ج صفه ২০১)
অর্থ : দাড়ি কাটা বা কর্তন করাআজমীদের আমল। আর বর্তমানে উহা অধিকাংশ মুশরিক যেমন- ফিরিঙ্গী, হিন্দু এবং দ্বীনের সাথে সম্পর্কহীন কলন্দরিয়াফিরকার বিশেষ আমল।” (আত তালীকুছ ছবীহ আলা মিশকাতিল মাছাবীহ ১ম জিঃ পৃষ্ঠা-২০১) (১০৪-১০৬)              
سوال:- کیا دارھی کا حلق کرنا جائز ھے?
جواب:- نھین-  کتاب تصاب الاحتساب" کے باب الاحساب مین لکھا ھے کہ دارھی کا موندانا جائز نھین- اسکو جنایات الھدایۃ مین ذکر کیاھے-
رسول اللہ صلی اللہ علیہ وسلم  نے فرمایا ھے کہ دارھی کو برھاؤ یعنی لبون کو تراشو اور دار ھی کو چھور دو جیسے کہ ھے نہ اسکو مندھو اور نہ کاطو اور نہ اسکو مسنون مقدار سے کم کرو اور مسنون مقدار وہ ایک مطھی ھے=
(نفع المفتی و السائل صفہ৪০০)
অর্থ : সুওয়াল- দাড়ি মুণ্ডন করা জায়িয কি?
জাওয়াব : না (জায়িয না), “নিছাবুল ইহতেসাবনামক কিতাবের ইহতিসাবঅধ্যায়ে লেখা আছে যে, দাড়ি মুণ্ডন করা নাজায়েয। ইহা জেনায়াতুল হেদায়ারমধ্যেও উল্লেখ করা হয়েছে।
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন যে, “দাড়ি লম্বা কর।অর্থাৎ মোঁছ ছোট কর, আর দাড়িকে ছেড়ে দাও নিজ অবস্থায়। (অতএব) দাড়ি মুণ্ডন করবেনা এবং সুন্নত পরিমাণ লম্বা হওয়ার পূর্বে দাড়ি কাটবেনা। আর সুন্নত পরিমাণ হলো এক মুষ্ঠি। (নাফউল মুফতী ওয়াস সায়িল পৃষ্ঠা-৪০০)
(১০৭)              
باجماع امت دار ھی مندانا حرام مے اسی "طرح ایک قبضہ (مطھی) سے کم ھونے کی صورت مین کتروانا بھی حرام ھے انہ اربعہ حنفیۃ- مالکیہ- شافعیۃ- حنبلیہ کا اس پر اتفاق ھے= (جواھر الفقہ ج صفہ ৪১৭)
অর্থ : উম্মতের ইজমা বা ঐক্যমতে দাড়ি মুণ্ডন করা হারাম। অনুরূপভাবে দাড়ি একমুষ্ঠি হওয়ার পূর্বে কাটাও হারাম। চার ইমাম- হানাফী, মালেকী, শাফেয়ী ও হাম্বলী উনারা এর উপর একমত।” (জাওয়াহিরুল ফিক্বাহ ২য় জিঃ পৃষ্ঠা-৪১৭) (১০৮-১০৯)

سوال:- دارمی رکھنی کو نسی ستت ھے اس کے تارک پر کیا حکم شرعا جاری ھوگا وہ جو کھتے ھین کہ اگر ساری دارمی صاف کرے تو کچھ گناہ نھین یہ کیا بات ھے- سیاسۃ اس پر کیا حکم دیا جاویگا؟
الجواب:- دارمی رکھنا واجب اور قبضہ سے زائد کطانا حرام ھے- لقولہ علیہ السلام- خالفوا المشکین او فروا اللحی (متفق علیہ) و فی الدر المختار "یحرم علی الرجل قطع لحیتہ و فیہ وسنۃ فیھا القبضۃ- اور کونی سیاست خاص اس کے بارے مین منصوص نھین دیکھی- مگر مقتضی قواعد کا یہ مے کہ تعزیر دیا جائے= (امداد الفتاوی ج صفہ ২২৩)
অর্থ : সুওয়াল - দাড়ি রাখা কোন ধরণের সুন্নত? দাড়ি মুণ্ডনকারীর উপর শরীয়ত উনার কি হুকুম বর্তাবে? যে ব্যক্তি বলে যে, সমস্ত দাড়ি কেটে ফেললেও কোন গুণাহ হবেনা, উহা কিরূপ কথা। আইনগতভাবে তার উপর কি হুকুম দেয়া যাবে?
জাওয়াব : দাড়ি রাখা ওয়াজিব, একমুষ্ঠি হওয়ার পূর্বে কাটা হারাম কেননা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেছেন, “মোশরিকদের বিরোধিতা কর, দাড়ি লম্বা কর। (বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ), আর দুররুল মোখতারকিতাবে উল্লেখ আছে যে, পুরুষের জন্যে তার দাড়ি কাটা হারাম। কমপক্ষে একমুষ্ঠি পরিমাণ রাখা সুন্নত (ওয়াজিব)। (আর মুণ্ডনকারীর ব্যাপারে) বিশেষ কোন প্রকার শাস্তির কথা উল্লেখ দেখি নাই। কিন্তু শরীয়ত উনার নিয়মানুসারে তাযীর দেয়া যাবে।” (ইমদাদুল ফতওয়া ৪র্থ জিঃ পৃষ্ঠা-২২৩) (১১০)

دارمی ایک مشت سے کم کرنا بالاتفاق حرام مے بلکہ شریعت کی علانیہ بغاوت ھونیکی وجہ سے دوسرے کبائر سے بھی شدید گناہ مے قال "فی شرح النویر: و اماالا خذ منھا وھی دون ذالک (القبضۃ) کما یفعلہ بعض المغاربۃ و مخنثۃ الرجال فلم بیحہ احد- (احسن الفتاوی ج صفہ ৫১৮)
অর্থ : একমুষ্ঠি হওয়ার পূর্বে দাড়ি কাটা সর্বসম্মতীক্রমে হারাম, বরং শরীয়ত উনার প্রকাশ্য বিরোধিতার কারণে অন্যান্য কবীরা গুণাহ হতেও শক্ত গুণাহ। শরহুত তানবীরেউল্লেখ আছে যে, “একমুষ্ঠি হওয়ার পূর্বে দাড়ি কাটা, যেরূপ কিছু সংখ্যক পশ্চিমা ও নপুংসকরা করে থাকে, এটাকে কেউ জায়েয বলেননি।” (আহসানুল ফতওয়া ৩য় জিঃ পৃষ্ঠা-৫১৮) (১১১-১১২)
سوال:- سنت تبویہ خصوصا دارمی کا مذاق ارانا کیسا ھے؟
الجواب:- کسی ادنی سے ادنی سنت کو برا سجھنا یا اسکا مذاق ارانا در حقیقت اسلام اور حضور اکرم صلی اللہ علیہ وسلم کے ساتھ استھزاء ھے- جس کے کفر ھونے مین کچھ شبہ نھین- جب سنت سے استھزاء کفر ھے تو دارمی تو واجب ھے اور شعار اسلام- ایک مشت سے  کم کرنا بالاجماع حرام ھے اسکا مذاق ارانا بطریق اولی کفر ھے-------- اسے دو بارہ مسلمان کر کے نکاح دو بارہ کیا جائے- اگر دو بارہ اسلام قبول نہ کرے تو حاکم پر فرض ھے کہ اس کے قتل کا حکم دے= (احسن الفتاوی ج صفہ ৪২)
অর্থ : সুওয়াল - সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুন্নত, বিশেষ করে দাড়ি নিয়ে মজাক্ব বা ঠাট্টা-বিদ্রুপ করা কিরূপ?
জাওয়াব : কোন আদনা হতে আদনা পবিত্র সুন্নত উনাকে খারাপ মনে করা বা উহা নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করা মূলতঃ পবিত্র ইসলাম এবং নূরে মুজসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করার নামান্তর, যেটা নিঃসন্দেহে কুফরী। যেখানে সুন্নত নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করা কুফরী, সেখানে দাড়ি রাখাতো ওয়াজিব এবং শেয়ারুল ইসলাম আর একমুষ্ঠির কমে দাড়ি রাখা সকলের ঐক্যমতে হারাম। ইহা নিয়ে মজাক্ব বা ঠাট্টা-বিদ্রুপ করা আরো জঘণ্যতম কুফরী। ............ (এরূপ ব্যক্তিকে) তওবা করে পুণরায় মুসলমান হতে হবে এবং বিবাহ দোহরাতে হবে। সে যদি পূণরায় মুসলমান না হয়, তবে হাকিম সাহেবের উপর ফরয তার মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা (খিলাফত কায়িম থাকলে)।” (আহসানুল ফতওয়া ১ম জিঃ পৃষ্ঠা-৪২) (১১৩)
حدیث صحیح مین دارمی کے برھانے اور
১২ নম্বর পৃষ্টা নাই
অর্থ : সহীহ হাদীছ শরীফে দাড়ি লম্বা করার এবং নিজ অবস্থায় ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ এসেছে। যেমন- মুসলিম শরীফের হাদীসে এসেছে- দশটি জিনিস ফিৎরাতের অন্তর্ভুক্ত, মোঁছ ছোট করা, দাড়ি লম্বা করা।উহার দ্বারা দাড়ি কাটা হারাম প্রমাণিত হলো। আর ফক্বীহগণ দাড়ি মুণ্ডন করা এবং একমুষ্ঠি হওয়ার পূর্বে কাটাকে হারাম লিখেছেন। যেমন দুররুল মোখতারকিতাবে উল্লেখ আছে, “এ জন্যেই পুরুষের জন্যে দাড়ি কাটা হারাম।আর দাড়ি একমুষ্ঠি পরিমাণ রাখা সুন্নত (ওয়াজিব)। সুতরাং বুঝা গেল যে, দাড়ি একমুষ্ঠি হওয়ার পূর্বে কাটা-ছাটা অথবা মুণ্ডন করা হারাম।” (ফতওয়ায়ে দারুল উলূম দেওবন্দ ৩য় জিঃ পৃষ্ঠা-২৮৯) (১১৪)

ঊদূ লেখা ঢুকবে.................................................
অর্থ : সুওয়াল - যায়েদ সুবংশীয় আলেম, কিন্তু দাড়ি ছেটে ছোট করে রাখে। (উনারূপ অবস্থায়) যায়েদের ইমামতী জায়েয হবে কিনা? আর দাড়ি কি পরিমাণ লম্বা রাখতে হবে? জাওয়াব : হযরত ইবনে ওমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূরে পাক ছল্লাল্লাহুর আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “মোশরেকদের বিপরীত কর, দাড়ি লম্বা কর, মোঁছ ছাট কর।অন্যত্র বর্ণিত আছে- মোঁছ ভালরূপ ছোট কর এবং দাড়ি লম্বা কর।” (মুত্তাঃ আলাইহি)। উক্ত হাদীছ শরীফের দ্বারা দাড়ি লম্বা করা এবং মোঁছ ছোট করার কথা প্রমাণিত হয়েছে।   আর যেহেতু দাড়ি মুণ্ডন করা এবং একমুষ্ঠি হওয়ার পূর্বে ছাটা হারাম, সেহেতু যায়েদ যদি হারাম কাজে লিপ্ত হয়ে থাকে, অর্থাৎ দাড়ি একমুষ্ঠি হওয়ার পূর্বে ছাটে অথবা মুণ্ডন করে, তবে সে ফাসেক্ব আর ফাসেক্ব ব্যক্তির ইমামতী মাকরূহ তাহরীমী। (আযীযুল ফতওয়া ১ম জিঃ পৃষ্ঠা-২০১) (১১৫-১১৬)

ঊদূ লেখা ঢুকবে................................
অর্থ : সুওয়াল - যে মুসলমান দাড়ি মুণ্ডন করে অথবা দাড়ি ছেটে এক মুষ্ঠির কম রাখে, তার পিছন নামাজ পড়া জায়েয হবে কিনা?
জাওয়াব : যে মুসলমান দাড়ি মুণ্ডন করে অথবা একমুষ্ঠি হওয়ার পূর্বে দাড়ি কাটে বা ছাটে, সে ফাসেক্ব, তার পিছনে নামায পড়া মাকরূহ ....... অর্থাৎ মাকরূহ তাহরীমী।” (ফতওয়ায়ে দারুল উলূম দেওবন্দ ৩য় জিঃ পৃষ্ঠা-২৪০)
(১১৭-১১৮)

ঊদূ লেখা ঢুকবে........................................
অর্থ : সুওয়াল - দাড়ি মুন্ডিত ব্যক্তি আযান ও ইক্বামত দিতে পারবে কি?
জাওয়াব : দাড়ি মুন্ডিত ব্যক্তি প্রকাশ্য ফাসেক্ব (যার ফাসেক্বী সুস্পষ্ট)। মালা-বুদ্দা-মিনহু” -উনার ১৩০ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে যে, “দাড়ি একমুষ্ঠি হওয়ার পূর্বে কাটা হারাম।দ্বীনদার লোক উপস্থিত থাকতে ফাসেক্ব ব্যক্তি ১৩ নং পৃষ্ঠা শুরু হল (পডিএিফ)আযান ও ইক্বামত দেওয়া মাকরূহ তাহরীমী।” (ফতওয়ায়ে রহীমিয়াহ ৩য় জিঃ পৃষ্ঠা-১৫)
(১১৯-১২১)
سوال:- جوحافظ کہ دارھی منداتا ھے اس کے پیچھے تراویح پر ھنے کا کیا حکم ھے؟
الجواب:- دارمی مندانا حرام ھے اور دارمی مندانے و الا از روئے شرع فاسق ھے- لھذا ایسے کو تراویح پرھنا مکروہ تحریمی= شامی ج صفہ ৫২৩= (فتاوے رحیمیہ ج صفہ ৩৫৩ و کذا فی فتاوی دار العلوم دیوبند ج صفہ ২৬২)
অর্থ : সুওয়াল - যে হাফিয সাহেব দাড়ি মুণ্ডন করে, তার পিছনে তারাবীহ নামায পড়ার হুকুম কি?
জাওয়াব : দাড়ি মুণ্ডন করা হারাম এবং দাড়ি মুণ্ডনকারী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে ফাসিক্ব। তাই এরূপ ব্যক্তিকে তারাবীহ নামাযের জন্যে ইমাম বানানো জায়িয নেই। এরূপ ইমামের পিছনে তারাবীহ নামায পড়া মাকরূহ তাহরীমী।” (ফতওয়ায়ে শামী ১ম জিঃ পৃষ্ঠা-৫২৩) (ফতওয়ায়ে রহীমিয়াহ ১ম জিঃ পৃষ্ঠা-৩৫৩, অনুরূপ ফতওয়ায়ে দারুল উলূম দেওবন্দ ৩য় জিঃ পৃষ্ঠা-২৬২তে উল্লেখ আছে।)
(১২২)

سوال:- دارمی کطانے یا مندو انے و الے کے پیچھے نماز پرھنا کیسا ھے؟
الجواب:- دارمی قبضہ سے کم کرنا حرام مے بلکہ یہ دوسرے کبیرہ گناھون سے بھی بدتر ھے اسلئے کہ اسکے علانیہ ھونے کی و جہ سے اس مین دین اسلام کی کھلی توھین ھے- اور اللہ و رسول اللہ صلی اللہ علیہ وسلم  سے بغاوت کا اظھار ھے و اعلان ھے- اسی لئے حضرات فقھاء رحمھم اللہ تعالی نے فیصلہ تحریر فرما یا ھے کہ جو شخص رمضان مین علانیہ کھائے ییئے وہ واجب القتل ھے کیونکہ وہ کھلی طور  پر شریعت کی مخالفت کررھا ھے حضور اکرم صلی اللہ علیہ وسلم کا ارشادھے"کل امتی معافی الا المجاھرین" (یعنی) "میرے پوری امت لائق  عفو ھے مگر علانیہ گناہ کرنے و الے معافی کے لائق نھین" دوسرا فرق یہ ھے کہ دوسرے گناہ کسی خاص و قت مین ھوے ھین مگر دارمی کطانے کا گناہ  ھر و قت ساتھ لگا مرا   ھے- سو رھا ھو تو بھی گناہ ساتھ ھے حتی کہ نماز و غیرہ عبادت مین مشغول مونے کی حالت مین بھی اس گناء مین دارمی کطانے یا مندانے و الے فاسق ھے اور فاسق کی امامت مکروہ تحریمی ھے- اس لئے ایسے شخص کو امام بنانا جائز نھین= (احسن الفتاوی ج صفہ২৬০)
অর্থ : সুওয়াল - দাড়ি কর্তন অথবা মুণ্ডনকারীর পিছনে নামায পড়া কিরূপ?
জাওযাব : দাড়ি (কেটে) একমুষ্ঠির কম করা হারাম বরং অন্যান্য কবীরাহ গুণাহ হতেও জঘণ্যতম। কেননা দাড়ি কাটার গুণাহ প্রকাশ্যে হওযার কারণে উহার দ্বারা পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার প্রকাশ্য ইহানত করা হয় এবং মহান আল্লাহ পাক ও নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিরোধীতার বহিঃপ্রকাশ ও ঘোষণা দেয়া হয়। এজন্যে হযরত ফুক্বাহায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা ফায়সালা মুবারক দিয়েছেন যে, “যে ব্যক্তি রমযান মাসে প্রকাশ্যে পানাহার করবে, তাকে হত্যা করা ওয়াযিব।কেননা সে প্রকাশ্যভাবে শরীয়ত উনার বিরোধীতা করছে। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, “আমার প্রত্যেক উম্মত মাফ পাবে কিন্তু প্রকাশ্যে গুণাহকারী মাফ পাবে না।
দ্বিতীয় পার্থক্য এই যে, অন্যান্য গুণাহ কোন নির্দিষ্ট সময়ে হয়ে থাকে কিন্তু দাড়ি কাটার গুণাহ সর্বদাই সাথে জড়িত থাকে। শায়িত অবস্থায়ও গুণাহ সাথে থাকে। এমনকি নামায ইত্যাদি ইবাদতে মশগুল থাকা অবস্থায়ও দাড়ি কাটার গুণাহে লিপ্ত থাকে। হযরত লূত্ব আলাইহিস সালাম উনার সম্প্রদায়কে শাস্তি দেয়ার কারণসমূহের মধ্যে দাড়ি কাটাও অন্তর্ভুক্ত। (দুররে মানছূর)
মোটকথা হলো- দাড়ি কর্তন অথবা মুণ্ডনকারী ফাসিক্ব, আর ফাসিক্বের ইমামতী মাকরূহ তাহরীমী। তাই এরূপ ব্যক্তিকে ইমাম হিসাবে নিয়োগ করা জায়িয নেই।” (আহসানুল ফতওয়া ৩য় জিঃ পৃষ্ঠা-২৬০)
(১২৩)
دارھی کتروانا یا مندوانا حرام ھے- کتروانے  سے یہ مراد ھے کہ اتنی کتروائے کہ ایک مشت سے کم رہ جائے ایک مشت کی مقدار حدیث سے ثابت ھے= (کفایۃ المفتی ج صفہ১৫৫)
অর্থ : দাড়ি ছাটা অথবা মুণ্ডানো হারাম। ছাটার দ্বারা উদ্দেশ্য এই যে, ছেটে একমুষ্ঠির কম রাখা। দাড়ির একমুষ্ঠি পরিমাণ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার দ্বারা প্রমাণিত।” (কিফায়াতুল মুফতী ৯ম জিঃ পৃষ্ঠা-১৫৪)
(১২৪)
دارھی رکھنا و اجب ھے- طرھر مند و انے و الافاسق ھے- اس کے پیچھے نماز مکروہ ھے (کفایۃ المفتی ج صفہ ১৫৫)
অর্থ : দাড়ি রাখা ওয়াযিব আর দাড়ি মুণ্ডনকারী ফাসিক্ব। তার পিছনে নামায পড়া মাকরূহ তাহরীমী।” (কিফায়াতুল মুফতী ৯ম জিঃ পৃষ্ঠা-১৫৫)
(১২৫)
দাড়ি সম্পর্কে প্রখ্যাত আলেম, আলেমে রাব্বানী, ফক্বীহুল উম্মত, রঈসুল মুনাজিরীন, রাহরুল উলূম, হাফিজুল হাদীছ, হযরতুল আল্লামা, শাহ সূফী হযরত মাওলানা, শায়খ রুহুল আমীন বশীরহাটী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার অভিমত হলো- এক কব্জা পরিমাণ দাড়ি রাখা ফরয, কেননা ফরয ত্যাগ করা হারাম।” (ফতওয়ায়ে আমীনিয়া ১ম জিঃ পৃষ্ঠা-৯০)
[বিঃদ্রঃ- দাড়ি সম্পর্কে উপরোক্ত দলীলসমূহ ছাড়াও আমাদের নিকট আরো দলীল মওজুদ রয়েছে, ফতওয়ার কলেবর বৃদ্ধির আশঙ্কায় তা পেশ করা হলোনা। তবে প্রয়োজনে আমরা তা পেশ করতে সক্ষম ইনশাআল্লাহ। ]


মোঁছ মুণ্ডনকারীদের বক্তব্য খণ্ড

মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ উনার ৩২তম সংখ্যায় মোঁছ বা গোঁফ সম্পর্কে ভূমিকায় মোটামুটি বিস্তারিত দলীল ভিত্তিক আলোচনা করা হয়েছে। যাতে প্রমাণিত হয়েছে যে, “মোঁছ সম্পূর্ণ নিঃচিহ্ন বা মুণ্ডন করা মাকরূহ তাহরীমী ও বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ। পক্ষান্তরে মোঁছ মুণ্ডন না করে, কেটে ছোট বা খাট করে রাখা সুন্নত। আর এটাই অধিক গ্রহণযোগ্য বা মোখতার মত।
সমাজে কিছু কিছু লোক রয়েছে, যারা নিজ মোঁছ মুণ্ডন করে এবং মোঁছ মুণ্ডন করা সুন্নত বলে ফতওয়া দেয়। আর দলীল হিসাবে তারা কতিপয় পবিত্র হাদীছ শরীফ ও ফিক্বাহের কিতাবের বর্ণনা পেশ করে থাকে। নিম্নে তাদের বক্তব্যগুলোর দলীলভিত্তিক খণ্ডনমূলক আলোচনা করা হলো- (১) যারা মোঁছ মুণ্ডন করা সুন্নত বলে থাকে, তারা প্রথমতঃ দলীল হিসাবে এ পবিত্র হাদীছ শরীফখানা পেশ করে থাকে- পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
وفرواللحى واحفوا الشوارب
তাদের বক্তব্য হলো- পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইহফাশব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। যার শাব্দিক অর্থ হলো ভালরূপে মুণ্ডন করা। অতএব, মোঁছ মুণ্ডন করাই যুক্তিযুক্ত।
আমাদের জবাব : উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে যদিও ইহফাশব্দ ব্যবহৃত হয়েছে, আর আহলে লোগাতগণ যদিও উনার অর্থ করেছেন ভালরূপে মুণ্ডন করাকিন্তু মোঁছের ব্যাপারে আহলে লোগাতগণের অর্থ গ্রহণযোগ্য নয় বরং অনুসরণীয় মুহাদ্দিস বা হাদীছ বিশারদ উনাদের দেয়া অর্থই অধিক গ্রহণযোগ্য। আর মুহাদ্দিসীনে কিরাম বা হাদীছ বিশারদ যেমন- ইমামুল মুহাদ্দিসীন, হযরত ইবনে হাজর আসকালানী রহমতুল্লাহি আলাইহি, তাজুল মুহাদ্দিসীন, হযরত ইমাম নববী রহমতুল্লাহি আলাইহি, রঈসুল মুহাদ্দিসীন, হযরত মুল্লা আলী ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহি ও সাইয়্যিদুল মুহাদ্দিসীন, হযরত আব্দুল হক্ব মুহাদ্দিস দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনারাসহ আরো অনেকেই ইহফাশব্দের অর্থ করেছেন, “ছোট করা বা অধিক খাটো করা।” (ফাতহুল বারী, শরহে মুসলিম, উেনারকাত, আশয়্যাতুল লোময়াত)
অতএব, “ইহফাশব্দের লোগাতী বা আভিধানিক অর্থ যদিও মুণ্ডন করাকিন্তু মোঁছের ক্ষেত্রে লোগাতী অর্থ গ্রহণযোগ্য নয় বরং মুহাদ্দিস উনাদের দেয়া ইস্তেলাহীঅর্থই গ্রহণযোগ্য। অর্থাৎ উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার দ্বারাও মোঁছ খাট বা ছোট করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে, মুণ্ডন করার নয়। তাই ফক্বীহগণের রায় হলো- মোঁছ খাট বা ছোট করা সুন্নত আর মুণ্ডন করা মাকরূহ তাহরীমী ও বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ। কেউ কেউ আকৃতি বিকৃত হওয়ার কারণে হারা উনারা ফতওয়া দিয়েছেন। এখানে উল্লেখ্য যে, যদি ইহফাশব্দের দ্বারা মুণ্ডন করাবুঝানো হতো, তবে ফক্বীহগণ মোঁছ মুণ্ডন করা বিদয়াত বা হারাম ফতওয়া দিতেন না।
অতএব, প্রমাণিত হলো যে, মোঁছ মু-নের পক্ষে উক্ত দলীল মোটেও গ্রহণযোগ্য নয় বরং সম্পূর্ণই অগ্রাহ্য ও বাতিল। (২) দ্বিতীয়তঃ তারা দলীল হিসাবে পবিত্র নাসাঈ শরীফ উনার মধ্যে এ পবিত্র হাদীছ শরীফ খানা পেশ করে থাকে- ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
الفطرة خمس ...... حلق الشارب
অর্থাৎ মোঁছ মুণ্ডন করা ফিৎরাতের অন্তর্ভুক্ত।
আমাদের জবাব : উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে যদিও মোঁছ মুণ্ডন করা ফিৎরাতের অন্তর্ভুক্ত বলা হয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মধ্যে মোঁছ ছোট বা খাট করার কথা বলা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে পবিত্র বুখারী শরীফ উনার শরাহ ফতহুল বারীতে উল্লেখ আছে,
روره الخبر بلفظ "الحلق" وهى رواية النسائى ....... ورواه جهور اصحاب ابن عيينة "القص" وكذا سائر الروايات= (فتح البارى فى شرح البخارى ১০ج صفه ৩৪৬)
অর্থ : নাসাঈ শরীফ উনার একটি বর্ণনায় ত্মম্নল্ফৈত্র
হলক্ব শব্দ উল্লেখ আছে ---- আর জমহুর ইবনে ওয়াইনাহ ত্মব্জল্ফৈম্বত্র কাচ্ছুনশব্দ উল্লেখ করেছেন। এরূপ সকল বর্ণনাতেই ল্ফম্ব বা ছোট করার কথা উল্লেখ আছে।
উপরোক্ত বর্ণনা দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয় যে, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে হলক্বেরচেয়ে মোঁছ ছোট করার বর্ণনা অধিক। অতএব, মোঁছ ছোট করার বর্ণনাই প্রাধান্য পাবে বা গ্রহণযোগ্য হবে।
সুতরাং মোঁছ ছোট করার অসংখ্য বর্ণনার বিরুদ্ধে শুধুমাত্র পবিত্র নাসাঈ শরীফ উনার একখানা বর্ণনা দলীল হিসাবে পেশ করা যুক্তিযুক্ত বা গ্রহণযোগ্য নয়।
(৩) তৃতীয়ত : তারা দলীল হিসাবে পবিত্র বুখারী শরীফ উনার এ পবিত্র হাদীছ শরীফ খানা পেশ করে থাকে-     
كان ابن عمر يحفى شاريه حتى ينظو الى بياض الجلد.
অর্থ : হযরত ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু নিজ মোঁছ এত অধিক ছোট করতেন যে, চামড়ার শুভ্রতা প্রকাশ পেত।
আমাদের জবাব : এ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যেও ইহফাশব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। আর পূর্বেই প্রমাণিত হয়েছে যে, মুহাদ্দিসগণের মতে ইহফাশব্দের অর্থ হলো- অধিক ছোট করা।অনেক সময় মোঁছ কেচী দ্বারা অধিক ছোট করলেও চামড়ার শুভ্রতা প্রকাশ পায় বা মু-নের ন্যায় বুঝা যায়, তাই বলে ওটাকে মুণ্ডন বলা যাবেনা।
আর উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার ব্যাখ্যায় পবিত্র বুখারী শরীফ উনার শরাহ ফতহুল বারী ও ইরশাদুস সারীতে উল্লেখ আছে যে,
قوله وكان ابن عمر= قلت وهو خطافان المعروف عن عمر انه كان يوفر شاربه.
অর্থ : “(হযরত ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু সম্পর্কিত মোঁছের বর্ণনা) আমি বলি তা ভুল, কেননা হযরত ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু সম্পর্কে প্রসিদ্ধি আছে যে, উনি মোঁছ ছোট করে রাখতেন অর্থাৎ মুণ্ডন করতেন না।
পবিত্র বুখারী শরীফ উনার শরাহ ফতহুল বারীতে আরো উল্লেখ আছে যে,
وقد روى مالك عن زيد بن اسلم- ان عمر كان اذا عضب فتل شاريه- فدل على انه كان يوفره.
নজ মোঁছ মোড়াতেন। এতে প্রমাণিত হয় যে, উনি মোঁছ ছোট করে রাখতেন, অর্থাৎ মুণ্ডন করতেন না।
সুতরাং প্রমাণিত হলো যে, উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার দ্বারাও মোঁছ মুণ্ডন করা প্রমাণিত হয়না।
(৪) চতুর্থত : মোঁছ মুণ্ডনকারীদের বক্তব্য হলো- ইমাম তাহাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ইহফাশব্দের উপর ভিত্তি করে মোঁছ ছোট করার চেয়ে মুণ্ডন করাকেই তারজীহ বা প্রাধান্য দিয়েছেন এবং মোঁছ মুণ্ডন করাকে আফজল বা উত্তম বলেছেন।
আমাদের জবাব : মোঁছ সম্পর্কে ইমাম তাহাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার উক্ত বক্তব্য, দুটি কারণে গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ দুটি হলো- (ক) ইমাম তাহাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ইহফাশব্দের লোগাতী শব্দের উপর ভিত্তি করে মোঁছ মুণ্ডন করার পক্ষে মত পেশ করেছেন। অথচ আমরা পূর্বেই আলোচনা করেছি যে, মোঁছের ব্যাপারে ইহফাশব্দের লোগাতী অর্থ গ্রহণযোগ্য নয় বরং মুহাদ্দিসগণের দেয়া অর্থই গ্রহণযোগ্য। অতএব, এ ব্যাপারে ইমাম তাহাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার উক্ত বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়।
(খ) আর ইমাম তাহাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি হজ্বের উপর ক্বিয়াস করে মোঁছ মুণ্ডন করা আফযল বা উত্তম বলেছেন।
কেননা হজ্ব সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ আছে যে,
دعا رسول الله صلى الله عليه وسلم للمحلقين ثلاث مرة وللمقصرين مرة واحدة.
অর্থ : সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, (হজ্বের মধ্যে) যারা চুল মুণ্ডন করবে, তাদের জন্যে তিনবার দোয়া করেছেন। আর যারা চুল ছোট করবে, তাদের জন্যে একবার দোয়া করেছেন।
অর্থাৎ হজ্বের মধ্যে মুণ্ডন করাকে ছোট করার উপর ফযীলত বা প্রাধান্য দেয়া হয়েছে।
ইমাম তাহাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি যে, হজ্বের উপর ক্বিয়াস করে মোঁছ মুণ্ডন করাকে ছোট করার উপর প্রাধান্য দিয়েছেন, নিম্নে তার প্রমাণ পেশ করা হলো-
পবিত্র বুখারী শরীফ উনার বিখ্যাত শরাহ ফাতহুল বারীতে উল্লেখ আছে যে,
وقد رجح الطحاوى الحلق بتفضبله صلى الله عليه وسلم الحلق على التقصير فى النسك. (ج صفه ৩৪৮)
অর্থ : সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হজ্বের মধ্যে মুণ্ডন করাকে ছোট করার উপর ফযীলত দিয়েছেন বিধায় ইমাম তাহাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি (মোঁছ) মুণ্ডন করাকে ছোট করার উপর প্রাধান্য দিয়েছেন।” (১ম জিঃ পৃষ্ঠা-৩৪৮)
অতএব, সুস্পষ্টভাবেই প্রমাণিত হলো যে, ইমাম তাহাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি পবিত্র হজ্বের উপর ক্বিয়াস করে মোঁছ মুণ্ডন করাকে আফযল বা উত্তম বলেছেন। মূলতঃ ইমাম তাহাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার উক্ত ক্বিয়াস গ্রহণযোগ্য নয়, কেননা হজ্বের হুকুম-আহকাম সম্পূর্ণই ভিন্ন ও আলাদা। হজ্বের সময় চুল মুণ্ডন করা খাছ সুন্নতে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু অন্য সময় চুল মুণ্ডন করা সুন্নতে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খেলাফ। কারণ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হজ্ব ও উমরাহ ব্যতীত কখনো চুল মোবারক মুণ্ডন করেননি বরং সর্বদাই বাবরী রেখেছেন।
মোটকথা হলো- হজ্বের সময় চুল মুণ্ডন করলে সুন্নত এবং ওয়াজিব উভয়টাই আদায় হয়। আর ছোট করলে ওয়াজিব আদায় হবে, সুন্নত আদায় হবেনা। যারা ওয়াজিবের সাথে সাথে সুন্নতও আদায় করবে অর্থাৎ মাথা মুণ্ডন করবে, তাদের জন্যে তিনবার দোয়া করেছেন, আর যারা শুধুমাত্র ওয়াজিব আদায় করবে, সুন্নত আদায় করবেনা অর্থাৎ চুল ছোট করবে, তাদের জন্যে একবার দোয়া করেছেন। এতে প্রমাণিত হয় যে, সুন্নতের গুরুত্ব ও ফযীলত অপরিসীম।
কাজেই হজ্বের উপর ক্বিয়াস করে সর্বদা চুল মুণ্ডন করা যেরূপ খিলাফে সুন্নত, তদ্রুপ মোঁছ মুণ্ডন করাও খিলাফে সুন্নত। তাছাড়া যেখানে অসংখ্য ইমাম, মুজতাহিদ, মুহাদ্দিসগণের মতে মোঁছ ছোট করে রাখা সুন্নত আর মুণ্ডন করা মাকরূহ তাহরীমী ও বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ, সেখানে শুধুমাত্র ইমাম তাহাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার উক্ত বক্তব্য গ্রহণযোগ্য হতে পারেনা।
সুতরাং মোঁছের ব্যাপারে ইমাম তাহাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার উক্ত বক্তব্যখানাও দলীল হিসাবে গ্রহণীয় নয়।
উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট হলো যে, মোঁছ মু-নের পক্ষে গ্রহণযোগ্য বা নির্ভরযোগ্য কোন দলীল নেই বরং অসংখ্য, অকাট্য, নির্ভরযোগ্য দলীলের দ্বারা প্রমাণিত যে, মোঁছ মুণ্ডন করা মাকরূহ তাহরীমী ও বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ। সাথে সাথে এটাও প্রমাণিত হলো যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, হযরত ছাহাবায়ে ক্বিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম, তাবেয়ীন, তাবে তাবেয়ীন উনাদের কেউ নিজ মোঁছ মুণ্ডন করতেন না, বরং কেউ কাচ্ছুন ত্মল্ফম্বত্র অর্থাৎ ছোট রাখতেন, কেউ ইহফা ত্মব্জম্নল্পব্জপ্টত্র অধিক ছোট রাখতেন।
কেননা যদি উল্লেখিত একজন থেকেও সুস্পষ্টভাবে নির্ভরযোগ্য দলীলের ভিত্তিতে মোঁছ মুণ্ডন করা প্রমাণিত থাকতো, তবে বিখ্যাত ও অনুসরণীয় ইমাম, মুজতাহিদ উনারা মোঁছ মুণ্ডন করা মাকরূহ তাহরীমী, বিদয়াত ও হারাম ফতওয়া দিতেন না।
এখানে উল্লেখ্য যে, মোঁছ ছোট করে রাখা সুন্নত হওয়ার ব্যাপারে কারো দ্বিমত নেই, বরং সকলেই একমত। কিন্তু মোঁছ মুণ্ডন করার ব্যাপারে মতভেদ রয়েছে, অধিকাংশের মতে মাকরূহ তাহরীমী ও বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ। আর কারো কারো মতে মোছলাবা আকৃতি বিকৃত হওয়ার কারণে মোঁছ মুণ্ডন করা হারাম। আবার কেউ মোঁছ মুণ্ডন করা জায়িযও বলেছেন, কিন্তু তাদের এ বক্তব্য যে গ্রহণযোগ্য নয়, পূর্বোক্ত আলোচনা দ্বারা তা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে। অর্থাৎ মোঁছ মুণ্ডন করার দলীল জঈফ বা দূর্বল বিধায় তা অগ্রহণযোগ্য বা পরিত্যাজ্য।
এ প্রসঙ্গে দুররুল মোখতার কিতাব উনার বিখ্যাত শরাহ গায়াতুল আওতার উনার মধ্যে উল্লেখ আছে যে,
مجتبی مین ھے کہ مونچھون کا مندھنا بدعت ھے اور قول ضعیف یہ ھے کہ سنت ھے. صفہ ১৩৫
অর্থ : মোজতবানামক কিতাবে উল্লেখ আছে যে, মোঁছ মুণ্ডন করা বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ। আর যারা মোঁছ মুণ্ডন করা সুন্নত বা জায়িয বলে, তাদের ক্বওল বা বক্তব্য জঈফ, অর্থাৎ  গ্রহণযোগ্য নয়।
মোটকথা হলো- মোখতারবা গ্রহণযোগ্য মতে- মোঁছ ছোট ছোট করে চোখের ভ্রুর ন্যায় রাখা সুন্নত। আর মোঁছ মুণ্ডন বা সম্পূর্ণ নিঃশ্চিহ্ন করে ফেলা মাকরূহ তাহরীমী ও বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ।

গোঁফ বা মোঁছ ছোট করে রাখা সুন্নত ও মুণ্ডন করা মাকরূহ তাহরীমী ও বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ হওয়ার অকাট্য দলীলসমূহ

নিম্নে মোঁছ বা গোঁফের অকাট্য ও নির্ভরযোগ্য দলীলসমূহ পেশ করা হলো-
(১)
عن ابى هريرة رضلى الله تعالى عنه- عن النبى صلى الله عليه وسلم انه كان يقلم اظفاره ويقص شاريه يوم الجمعة قبل ان يروح الى الجمعة (احام القران للجصاص ج صفه ৭২)
অর্থ : হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি জুমুয়ার দিন, জুমুয়ার নামায আদায় করতে যাওয়ার পূর্বে নিজ নখ মুবারক কাটতেন এবং মোঁছ মুবারক ছোট করতেন।” (তাফসীরে আহকামুল কুরআন লিল জাচ্ছাছ, ১ম জিঃ পৃষ্ঠা-৮২) (২)
وقال الليث- لا احب ان يحلق احد شاريه حتى يبدو الجلد واكره ولكن يقص الذى على طرف الشارب واكره ان يكون طويل الشارب= (احكام القران للجصاص ج صفه ৮৩)
অর্থ : হযরত আবুল লাইছ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমি পছন্দ করিনা যে, কেউ তার মোঁছ এরূপভাবে মুণ্ডন করবে, যাতে চামড়া প্রকাশ পায়, এরূপ করা আমি মাকরূহ মনে করি। বরং মোঁছের উপর থেকে ছোট করবে। অনুরূপ মোঁছ অধিক লম্বা রাখাও নিষিদ্ধ বা অপছন্দনীয়।” (তাফসীরে আহকামুল কুরআন লিল জাচ্ছাছ ১ম জিঃ পৃষ্ঠা-৮৩) (৩-৬)
عن زيد ين ارقم رضى الله عنه- قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من لم ياخذ من شاريه فليس منا. (رواه احمد والنسائى والترمذى والنيل الاوطار وقال حديث صحيح(
অর্থ : হযরত যাইদ ইবনে আরক্বাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত- সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, যে ব্যক্তি তার মোঁছ ছোট করেনা, সে আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়।” (আহমদ শরীফ, নাসাঈ শরীফ, তিরমিযী শরীফ, নাইলুল আওতার, সুনানুল কোবরা লিন নাসাঈ) (৭-১০)
عن ابن عمر عن النبى صلى الله عليه وسلم قال- من الفطرة قص الشارب. (رواه البخارى ج صفه ৭৮৪= وكذا فى فتح البارى، عمدة القارى= ارشاد السارى(
অর্থ : হযরত ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন- মোঁছ ছোট করা ফিৎরাতের অন্তর্ভুক্ত।” (পবিত্র বুখারী শরীফ ২য় জিঃ পৃষ্ঠা-৮৭৪, অনুরূপ ফাতহুল বারী, ওমদাতুল ক্বারী, ইরশাদুস সারীতে উল্লেখ আছে)
(১১-১৭)
عن ابى هريرة رضى الله عنه- قال رسول الله صلى الله عليه وسلم- الفطرة خمس او خمس من الفطرة- الختان- والاستحداد ونتف الابط وتقليم الاظفار وقص الشارب. (رواه البخارى ج صفه ৮৭৫= وكذا فى فتح البارى وعمدة القارى، ارشاد السارى، سنن الكبرى للنسانى، مصنف بن عبد الرزاق، جامع الترمذى(
অর্থ : হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত- সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ফিৎরাত পাঁচটি অথবা পাঁচটি জিনিস বা আমল ফিৎরাতের অন্তর্ভুক্ত। খাতনা, নাভীর নীচের লোম পরিস্কার করা, নখ কাটা, মোঁছ ছোট করা।” (পবিত্র বুখারী শরীফ ২য় জিঃ পৃষ্ঠা-৮৭৫, অনুরূপ ফতহুল বারী, ওমদাতুল ক্বারী, ইরশাদুস সারী, সুনানুল ক্বোবরা লিন নাসাঈ, মুছান্নেফ ইবনে আব্দুর রাজ্জাক, তিরমিযী শরীফে উল্লেখ আছে) (১৮)
عن انس بن مالك عن النبى صلى الله عليه وسلم- انه وقت لهم فى كل اربعين ليلة، تقليم الاظفار واخذ الشارب وحلق العانت. (رواه الترمذى ج صفه ১০০)
অর্থ : হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে বর্ণনা করেন, তিনি (হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে) প্রত্যেক চল্লিশ রাত্রের মধ্যে, নখ মুবারক কাটার, মোঁছ মুবারক ছোট করার ও নাভীর নীচের লোম পরিস্কার করার সময় নির্ধারিত করে দিয়েছেন।” (তিরমিযী শরীফ ২য় জিঃ পৃষ্ঠা-১০০)
(১৯)
عن ابن عباس رضى الله عنه قال- كان النبى صلى الله عليه وسلم يقص اوياخذ من شاربه. (رواه الترمذى ج صفه ১০০)
অর্থ : হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজ মোঁছ মুবারক ছোট করে রাখতেন।” (তিরমিযী শরীফ, ২য় জিঃ পৃষ্ঠা-১০০)
(২০)
عن انس بن مالك رضى الله عنه قال- وقت لنا رسول الله صلى الله عليه وسلم فى حلق العانة وقص الشارب ونتف الابط. (احام القران للجصاص ج صفه ৮৬)
অর্থ : হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাদেরকে নাভির নীচের লোম পরিস্কার করার, মোঁছ ছোট করার ও বোগল তলার লোম পরিস্কার করার সময় নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন।”(তাফসীরে আহকামুল কুরআন লিল জাচ্ছাছ, ১ম জিঃ পৃষ্ঠা-৮২) (২১)
(قال قاضى) – اما الشارب فذهب كشير من السلف الى استئصاله وحلقه بظا هر قوله صلى الله عليه وسلم- احفوا، انهكوا وهو قول الكو فيين وذهب كشير منهم الى منع الحلق والا ستئصال وقال مالك وكان يرى حلقه مثلة ويامر بادب فاعله وكان يكره ان ياخذ من اعلاه ويذهب هئلاء الى ان الاحفاء والجز والقص يمعنى واحد وهو الاخذ منه حتى يبدو طوف الشفة. (شرح المسلم للنووى ج صفه ১৫১)
অর্থ : হযরত ক্বাজী আয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, সলফে সালেহীন উনাদের অনেকে احفواانهكوا শব্দের উপর ভিত্তি করে মোঁছ মুণ্ডন করার মত ব্যক্ত করেছেন। আর কূফীগণের মত এটাই। কিন্তু সলফে সালেহীনগণের অধিকাংশই মোঁছ হলক্ব বা মুণ্ডন করার বিপক্ষে মত ব্যক্ত করেছেন। ইমাম মালেক রহতমুল্লাহি আলাইহি উনার বক্তব্য অনুযায়ী মোঁছ সম্পূর্ণ চেছে ফেলা মোছলাবা আকৃতি বিকৃত করার শামিল। ........ এবং মোঁছ মুণ্ডন করা মাকরূহ। উনাদের মতে
والقص- والجز- احفاء
ইত্যাদি শব্দগুলোর একই অর্থ, অর্থাৎ মোঁছ এরূপভাবে ছোট করা, যেন ঠোঁটের কিনারা প্রকাশ পায়।” (শরহুল মুসলিম লিন নববী, ২য় জিঃ পৃষ্ঠা-১৫১)
(২২)
واما قص الشارب فسنة ايضاويستحب واما حدما يقصه- فا لمختار انه يقص حتى يبدو طرف الشفة ولا يحفه من اصله واما رواية احفوا الشوارب" فمعناها احفوا ما طال على الشفتين. (شرح المسلم للنووى ج صفه ১৪৯)
অর্থ : মোঁছ ছোট করা সুন্নত ও মোস্তাহাব। গ্রহণযোগ্য বা মোখতার বর্ণনা মতে মোঁছ ছোট করার পরিমাণ বা সিমারেখা হলো- মোঁছ এরূপভাবে খাট বা ছোট করবে, যেন ঠোঁটের কিনারা প্রকাশ পায়। মোঁছ মূল থেকে তুলবেনা অর্থাৎ মুণ্ডন করবেনা। আর পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত- ট্টব্জম্নল্পèব্জষ্ক্রৈèব্জ॥ব্দট্ট -উনার অর্থ হলো- উভয় ঠোঁটের উপরের লম্বা মোঁছগুলো কেটে ছোট করা।” (শরহুল মুসলিম লিন নববী, ২য় জিঃ পৃষ্ঠা-১৪৯)
(২৩)
وقص الشارب وفى هذا الباب خلاف- فقال الطحاوى ذهب قوم من اهل المدينة الى ان قص الشارب هوا المختاو على الاحفاء ......
وسعيد بن المسيب وعورة بن الزبير وجعفر بن الزبير- عبيد الله بن عبد الله بن عتبة وابابكر بن عبدالر حمن بن الحارث فانهم قالوا المستحب هو ان يختار قص الشارب على احفانه واليه ذهب حميد بن هلال والحسن البصرى ومحمد بن سيرين وعطاء بن ابى رباح- وهو مذهب مالك ايضا وقال عياض ذهب كشير من السلف الى منع الحلق والاستنصال فى الشارب وهو مذهب مالك ايضا وكان يرى حلقه مثلة= (عمدة القارى شرح سحيح البخارى ج ২২ صفه ৪৪)
অর্থ : মোঁছ ছোট করার ব্যাপারে ইখতিলাফ বা মতবিরোধ রয়েছে। ইমাম তাহাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, পবিত্র মদীনা শরীফ বাসীগণের একদল তাদের মতে মুণ্ডন করার চেয়ে ছোট করাটাই গ্রহণযোগ্য। ........ আর সাঈদ ইবনে মুসায়্যিব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, আওরাতিবনে যুবায়ির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, জাফর ইবনে যুবায়ির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, ওবায়দুল্লাহ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে ওতবা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ও আবূ বকর ইবনে আব্দুর রহমান ইবনে হারিছ উনারা বলেন- মোঁছ মুণ্ডন না করে ছোট করাটাই মোস্তাহাব। হুমাইদ ইবনে হেলাল রহমতুল্লাহি আলাইহি, হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি, মুহম্মদ ইবনে সীরীন রহমতুল্লাহি আলাইহি ও আতা ইবনে রিবাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি এটাই গ্রহণ করেছেন। এটা ইমাম মালেক রহমতুল্লাহি আলাইগি উনারও মাযহাব বা অভিমত। আর ক্বাজী আয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, অধিকাংশ সলফে ছালিহীনগণ মোঁছ হলক্ব বা মুণ্ডন করার বিপক্ষে মত পেশ করেছেন। ইমাম মালেক রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মাযহাব এটাই। উনার মতে মোঁছ মুণ্ডন করা মোছলাবা আকৃতি বিকৃত করার শামিল।” (ওমদাতুল ক্বারী শরহে সহীহ বোখারী ২২তম জিঃ পৃষ্ঠা-৪৪)
(২৪)
وقال ابن القاسم عن مالك- احفاء الشارب عندى مثلة- والمراد بالحديث المبالغة فى اخذ الشارب حتى يبدو حرف الشفين وقال اشهب سألت مالكا عمن يحفى شاريه- فقال ارى ان يوجع ضربا وقال لمن يحلق شاربه هذه بدعة ظهرت فى الناس. (فتح البارى شرح صحيح البخارى ج ১০ صفه ৩৪৭)
অর্থ : হযরত ইবনুল ক্বাসিম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হযরত ইমাম মালেক রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণনা করে বলেন যে, মোঁছ মুণ্ডন করা আমার নিকট মোছলাবা আকৃতি বিকৃত করার শামিল। পবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারা উদ্দেশ্য হলো- মোঁছ এত অধিক ছোট করবে, যেন ঠোঁটের প্রান্ত প্রকাশ পায়। হযরত আশহাব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমি ইমাম মালেক রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে তাদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম- যারা নিজ মোঁছ মুণ্ডন করে, ইমাম মালেক রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমার মতে তারা শাস্তির উপযুক্ত। আরো বলেন, নিজ মোঁছ মুণ্ডন করা বিদয়াত, যা মানুষের মধ্যে প্রকাশ পেয়েছে।” (ফতহুল বারী শরহে সহীহ বোখারী ১০ম জিঃ পৃষ্ঠা-৩৪৭) (২৫)      
وقد اختلف الناس فى حد مايقص من الشارب وقد ذهب كشير من السلف الى استئصاله وحلقه لظاهر قوله. (احفوا وانهكوا) وهو قول الكوفيين- وذهب كشيرمنهم الى منع الحلق والا ستتصال واليه ذهب مالك وكان يرى تأديب من حلقه وروى عنه ابن القاسم انه قال احقاء الشارب مثلة- وقال النووى المختار انه يقص حتى يبدو طرف الشفة ولا يحفيه من اصله قال واما رواية. (احفوا الشوارب) فمعناء احفوا ما طال عن الشفتين. (نيل الاوطار ج صفه ১৩১)
অর্থ : মোঁছ ছোট করার ব্যাপারে ইমামগণের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। সলফগণের অনেকে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার বর্ণনা احفواانهكوا -উনার উপর ভিত্তি করে মোঁছ মুণ্ডন করার মত ব্যক্ত করেছেন, আর এটা মূলতঃ কুফীগণের বক্তব্য। আর সলফে ছালেহীনগণের অধিকাংশের মত মোঁছ মুণ্ডন করার বিপক্ষে। ইমাম মালেক রহমতুল্লাহি আলাইহিও উক্ত মত সমর্থন করেছেন। উনার মতে- মোঁছ মুণ্ডনকারী তাদীবের উপযুক্ত। ইমাম মালেক রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে ইবনে কাসিম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন, ইমাম মালেক রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, মোঁছ মুণ্ডন করা মোছলা”-উনার অন্তর্ভুক্ত। ইমাম নববী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, মোখতার বা গ্রহণযোগ্য বর্ণনা হলো- মোঁছ এতটুকু ছোট করবে, যেন ঠোঁটের প্রান্ত প্রকাশ পায়, মোঁছ মূল থেকে দুর করবেনা অর্থাৎ মুণ্ডন করবেনা। তিনি আরো বলেন, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ইহফাশব্দের অর্থ হলো- উভয় ঠোঁটের উপরস্থিত লম্বা মোছগুলো ভালরূপে ছোট করা” (নাইলুল আওতার ১ম জিঃ পৃষ্ঠা-১৩০)
(২৬)
واختاره النووى- انه يقصه حتى يبدو طوف الشفه ولا يحفيه من اصله ونقل ابن القاسم عن مالك- ان احفاء الشارب مثلة= (ارشاد السارى شرح صحيح الخارى ج صفه ৪৬৪)
অর্থ : ইমাম নববী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট গ্রহণযোগ্য মত হলো- মোঁছ এরূপভাবে ছোট করবে, যেন ঠোঁটের প্রান্ত দেখা যায়, মোঁছ মূল থেকে দুর করবেনা অর্থাৎ মুণ্ডন করবেনা। ইবনুল কাসিম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ইমাম মালেক রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণনা করেন, নিশ্চয় মোঁছ মুণ্ডন করা মোছলাবা আকৃতি বিকৃত করার শামিল।” (ইরশাদুস সারী শরহে সহীহ বুখারী ৮ম জিঃ পৃষ্ঠা-৪৬৪)
(২৭-২৮)
قال ابن حجر- فيسن احفائه حتى تبدو حمرة الشفة العليا ولا يحفيه من اصله والامر با حفائه محمول على ماذكر وخرج بقصه حلقه فهو مكروه وقيل حرام لانه مثلة= (مر قاة المفاتيح على شرح مشكوة المصابيح ج صفه ৫৫، وكذافى بذل المجهود على حل ابى داود ج صفه ৩৩)
অর্থ : হযরত ইবনে হাজর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, মোঁছ এরূপভাবে ছোট বা খাট করা সুন্নত যেন উপরের ঠোঁটের লালিমা প্রকাশ পায়। মোঁছ মূল থেকে উৎপাটন করবে না অর্থাৎ মুণ্ডন করবেনা। আর পবিত্র হাদীছ শরীফ ইহফাউনার যে নির্দেশ এসেছে, উহার দ্বারা এটাই বুঝানো হয়েছে, যা এখানে উল্লেখ করা হয়েছে। অন্য পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে কাচ্ছুনশব্দ ব্যবহৃত হয়েছে, উনার অর্থও খাট করা। যার দ্বারা প্রমাণিত হয়, মোঁছ মুণ্ডন করা মাকরূহ তাহরীমী, কেউ কউ হারামও বলেছেন, কেননা মোঁছ মুণ্ডন করার কারণে মোছলাঅর্থাৎ আকৃতি বিকৃত হয়।” (মিরকাতুল মাফাতীহ শরহে মিশকাতুল মাছাবীহ ২য় জিঃ পৃষ্ঠা-৫৫ অনুরূপ বজলুল মাজহুদ আলা হাল্লে আবী দাউদে ১ম জিঃ ৩৩ পৃষ্ঠাতে উল্লেখ আছে) (২৯)
(قص الشارب) سنة حتى يبدو طوف الشفة ولا يحفه من اصله واما معنى قوله صلى الله عليه وسلم- "احفوا الشوارب" فا حفوا ما طال على الشفتين. (شرح الطيبى على مشكوة المصابيح ج صفه ৫৫)
অর্থ : মোঁছ এতটুকু ছোট করা সুন্নত, যেন ঠোঁটের কিনারা প্রকাশ পায়। মোঁছ মূল থেকে মুণ্ডন করবেনা।
"احفوا الشوارب"
এ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার অর্থ হলো- ঠোঁটের উপরের যে লোমগুলো লম্বা হয়েছে, তা ভালরূপে ছোট কর।” (শরহুত ত্বীবী আলা মিশকাতিল মাছাবীহ ২য় জিঃ পৃষ্ঠা-৫৫)
(৩০)
"قض الشارب" یکے ازان دہ خصلت کو تاہ کردن سنت ست و شارب نام موئیاست کہ برلب زیرین است و مختار کوتاہ کردن آنھاست چنانکہ پیدا گردد جطرف لب و پست کردن آنھا چنا نکہ  اثرے ازان بماند و حلق کردن مکروہ است- ........ "واحفاء" پست گردانیدن موئے لب ست- وروایت کردہ شدہ است از امام ابو حنیفۃ کہ شارب بمقدار ابرو باید.
)اشعۃ للمعات شرح مشکوۃ ج صفہ ২১২(
অর্থ : হযরত আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম উনাদের দশটি সুন্নতের মধ্যে একটি হলো- মোঁছ বা গোঁফ কাটা।উপরের ঠোঁটের উপরিভাগে যে লোম বা কেশ উঠে, তাকে মোঁছ বা গোঁফ বলে। গ্রহণযোগ্য বা মোখতার মত হলো- গোঁফ বা মোঁছ ছোট বা খাট করে রাখবে, তা এরূপভাবে খাট করে রাখবে, যেন ঠোঁটের প্রান্ত দেখা যায়। (অর্থাৎ) এ পরিমাণ খাট করবে, যেন মোঁছের চিহ্ন পরিস্ফুটিত থাকে। আর মোঁছ সম্পূর্ণ মুণ্ডন ত্মম্নল্ফৈত্র করে ফেলা মাকরূহ তাহরীমী। ............ (পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত) ইহফাশব্দের অর্থ হলো- খাট করা।মোঁছ বা গোঁফ খাট করার পরিমাণের ব্যাপারে মতভেদ রয়েছে। তবে ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মত হলো- মোঁছ চোখের ভ্রুর ন্যায় রাখবে।” (আশয়্যাতুল লোময়াত শরহে মিশকাত ২য় জিঃ পৃষ্ঠা-২১২)
(৩১)
"قص الشراب" اور کم کرنا لبون کا روایت مختار اس مین یھی ھے کہ لبین کتروایا ھی کرے- اس طرح کترواوے کہ کنارہ اوپر کے ھونت کا معلوم ھونے لگے- اور ایک روایت امام ععظم سے ائی ھے کہ لبین مقدار بھؤون کے چاھنین ........... اور اس طرح کروانا کہ انکا نشان بھی باقی نہ لھے اور مندانا انکا مکروہ ھے اور بعضون نے حرام لکھا ھے-
(مظاھر حق شرح مشکوۃ ج صفہ ১৩১)
অর্থ : মোঁছ খাট করা (ফিৎরাতের অন্তর্ভুক্ত) মোঁছ ছোট করার ব্যাপারে গ্রহণযোগ্য বা মোখতার মত হলো- মোঁছ ছোট করবে, এরূপভাবে ছোট করবে, যেন উপরের ঠোঁটের প্রান্ত বুঝা যায় বা প্রকাশ পায়। ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত আছে যে, মোঁছ ভ্রুর পরিমাণ রেখে খাট বা ছোট করবে। ................ এরূপভাবে খাট করা যে, মোঁছের চিহ্নও রইলো না অথবা সম্পূর্ণ মুণ্ডন করা মাকরূহ তাহরীমী। অনেকে হারাম বলেছেন।” (মোযাহেরে হক্ব শরহে মিশকাত ১ম জিঃ পৃষ্ঠা-১৩১)
(৩২)
المستحب ان ياخذ منه حتى يبدو الاطار وهو طرف الشفة ايضا فيه وكان يرى حلقه مثلة ويامر بادب فاعله. (عينى شرح البخارى ج ১০ صفه ২৮২)
অর্থ : মোঁছ এ পরিমাণ ছোট করা মুস্তাহাব, যাতে ঠোঁটের কিনারা প্রকাশ পায়। (ইমাম মালেক রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার) মতে মোঁছ মুণ্ডন করা মোছলাবা আকৃতি বিকৃত করার নামান্তর। তিনি মোছ মুণ্ডনকারীকে শায়েস্তা করার নির্দেশ দিয়েছেন।” (আইনী শরহে বোখারী ১০ম জিঃ পৃষ্ঠা-২৮২)
(৩৩)
 "وقص الشارب" وقال ابن حجر فيسن احفائه حتى تبدو حمرة الشفة العليا ولا يحفيه من اصله وحرج بقصه حلقه فهو مكروه. (التعليق الصبيح على مشكوة المصابيح ج صفه ২০১)
অর্থ : মোঁছ ছোট করার ব্যাপারে ইবনে হাজর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, মোঁছ এরূপভাবে ছোট করা সুন্নত যেন উপরের ঠোঁটের লালিমা প্রকাশা পায়। মূল থেকে উঠাবেনা অর্থাৎ মুণ্ডন করবেনা। আর পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ত্মল্ফম্বত্র শব্দও এসেছে (উনার অর্থও  ছোট করা)। মূলত মোঁছ মুণ্ডন করা মাকরূহ তাহরীমী। (আততালীকুছছবীহ মিশকাতিল মাছাবীহ ১ম জিঃ পৃষ্ঠা-২০১) (৩৪)
ومذهب مالك قص الشارب حتى يبدو طرف الشفة كما يدل عليه حديث "خمس من الفطرة" وهو مختار النووى قال النووى واما رواية "احفوا فمعناه ازيلوا ماطال على الشفتين. (سنن النسائ على حاشية الامام السندى ج صفه ১৭)
অর্থ : হযরত ইমাম মালেক রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মতে মোঁছ এরূপভাবে ছোট করবে, যেন ঠোঁটের কিনারা দেখা যায়। যেটা পাঁচটি জিনিস ফিৎরাতের অন্তর্ভুক্তএ হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত হয়। ইমাম নববী রদ্বিয়াল্লাহু-উনার নিকট এটাই মোখতার বা গ্রহণযোগ্য মত। আর ইমাম নববী রদ্বিয়াল্লাহু বলেন, হাদীছ শরীফে যে ত্মব্জম্নল্পèব্জত্র শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে, ইহার অর্থ হলো- উভয় ঠোঁটের উপরস্থিত দীর্ঘ মোঁছগুলো ছোট কর বা কাট।” (সুনানুন নাসাঈ আলা হাশিয়ায়ে ইমামুস সিন্দী ১ম জিঃ পৃষ্ঠা-১৭)
(৩৫-৩৬)
ويأخذ من شاريه حتى يصير مثل الحاجب كذا فى الغياثية. (الفتاوى العالمكيرية ج صفه ৩৯৪)
অর্থ : চোখের ভ্রুর লোম পরিমাণ রেখে মোঁছ কেটে ফেলবে। অনুরূপ গিয়াছিযাতেও উল্লেখ আছে।” (ফতওয়ায়ে আলমগীরীয়াহ ৫ম জিঃ পৃষ্ঠা-৩৯৪) (৩৭)
وينبغى للر جال ان ياخذ من شاريه حتى يوازى الظرف العليا من الشفة ويصير مثل الحاجب. (بحرالرائق شرح كنز الدقائق ج ص ২০৪)
অর্থ : পুরুষের জন্যে নিজ মোঁছ এতটুকু ছোট করা উচিৎ, যেন ঠোঁটের কিনারা প্রকাশ পায় এবং ভ্রুর ন্যায় বুঝা যায়।” (বাহরুর রায়েক শরহে কানযুদ দাক্বায়েক্ব ৮ম জিঃ পৃষ্ঠা-২০৪)
(৩৮-৩৯)
مجتبی مین ھے کہ مونچھون کا مندھنا بدعتت ھے- اور قول ضعیف یہ ھے کہ سنت ھے (غایۃ الوطار شرح در المختار  ج صفہ ১৩৫(
অর্থ : মোজতবানামক কিতাবে উল্লেখ আছে যে, মোঁছ মুণ্ডানো বিদয়াত। আর যারা সুন্নত বলে, তাদের বক্তব্য জঈফ, অর্থাৎ গ্রহণযোগ্য নয়। (গায়াতুল আওতার শরহে দুররুল মোখতার ৪র্থ জিঃ পৃষ্ঠা-১৩৫)
(৪০-৪১)
مجتبی مین ھے کہ مونجھونک کترنا کہ لب بالا کے کنارے کے سأتھ برابر ھو جاوین یہ سنت بالاتفاق- (غایۃ الوطا ر شرح در المختار ج صفہ ১৩৫)
অর্থ : মোজতবানামক কিতাবে (আরো) উল্লেখ আছে যে, মোঁছ এরূপভাবে ছোট করবে, যেন উপরের ঠোঁটের কিনারার সমান হয়। এরূপভাবে মোঁছ ছোট করা সকলের ঐক্যমতে সুন্নত।” (গায়াতুল আওতার শরহে দুররুল মোখতার ৪র্থ জিঃ পৃষ্ঠা-১৩৫)
(৪২)
مو نچھین کترو انے کی دلیل یہ ھے کہ حضرت عمر بن الخطاب علیہ السلام  کے فرزند نے آ نحضرت صلی اللہ علیہ وسلم سے روایت کیا ھے کہ آپ صلی اللہ علیہ وسلم نے فرمایا- "مرنچھین کطو آؤ اور دارھی چھورو"-
حضرت ابو ھریۃ رضی اللہ تعالی عنہ  فرماتے ھین کہ انحضرت صلی اللہ علیہ  وسلم نے فرمایا- مرنچھین کطو اؤ اور دارھی چھورو-
ان دونون روایتون کے الفاظ ایک سے ھین اور انکا مطلب یہ ھے کہ بالون کو جرون کے پاس  سے قینچی کے ذریعہ کتراؤ- انھین استرے سے موندنا مکروہ ھے-
کیونکہ حضرت عبد اللہ بن عمر رضی اللہ تعال عنہ  کی روایت ھے کہ- آنحضرت صلی اللہ علیہ وسلم نے فرمایا- جو شخص اپنی مونچھین مونداتا ھے وہ ھم مین سے نھین-
مونچھین موندنے سے خلقت بدل حاتی ھے- منہ کی آبرو اور اسکا حسن چھن جاتا ھے- منہ کی آبرو اور اسکا حسن چھن جاتا ھے بالون کی جرین نمایا رکھی جائین- تو منہ کے حسن  اور زینت فاتم رھتی ھے- یہ معتبر روایت ھے کہ اصحاب کرام اپنی مونچین کاطا کرتے نھے= ( غنیۃ الطالبین لشیخ عبد القادر الجیلانی صفہ ৭৮)
অর্থ : মোঁছ ছোট করার দলীল এই যে, হযরত উমর ইবনুল খত্তাব আলাইহিস সালাম উনার ছেলে আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বর্ণনা করেন যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, “মোঁছ কাট (ছোট কর), আর দাড়ি ছাড় (লম্বা কর)।
হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, “মোঁছ ছোট কর, দাড়ি লম্বা কর।
উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের শব্দসমূহ একই রকম, আর উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনারর উদ্দেশ্য এই যে, “মোঁছের লোমসমূহ গোড়া থেকে কেঁচী দ্বারা ছোট কর।
মোঁছ মূল থেকে মুণ্ডন করা মাকরূহ তাহরীমী।
কেননা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত আছে যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, “যে ব্যক্তি নিজ মোঁছ মুণ্ডন করে, সে আমার দলভূক্ত নয়।
মোঁছ মুণ্ডন করার কারণে আকৃতির বিকৃতি ঘটে, চেহারার সৌন্দর্য দুরিভূত হয়। এরূপভাবে মোঁছ কাটা উচিৎ যেন মোঁছের চিহ্ন পরিস্ফুটিত থাকে, তবে চেহারার সৌন্দর্য ও উজ্জলতা অবশিষ্ট থাকবে। গ্রহণযোগ্য বা নির্ভরযোগ্য বর্ণনা এই যে, হযরত ছাহাবায়ে ক্বিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা মোঁছ কেটে ছোট করে রাখতেন (মুণ্ডন করতেন না)।” (গুনিয়াতুত তালেবীন লি শায়খ আব্দুল কাদের জ্বীলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি, পৃষ্ঠা-৭৮)
সুতরাং সুস্পষ্টভাবেই প্রমাণিত হলো যে মোঁছ বা গোঁফ ছোট ছোট করে ভ্রুর ন্যায় রাখা সুন্নত। আর মোঁছ মুণ্ডন করা মাকরূহ তাহরীমী ও বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ। এটাই অধিক গ্রহণযোগ্য বা মোখতারমত। উনার বিপরীত কোন মতই গ্রহণযোগ্য নয়।
উপসংহার
উপরোক্ত অকাট্য নির্ভরযোগ্য বিশ্ববিখ্যাত ও গ্রহণযোগ্য তাফসীর, পবিত্র হাদীছ শরীফ, ফিক্বাহ ও ফতওয়ার কিতাবসমূহের দলীলের ভিত্তিতে এটা দিবালোকের ন্যায় সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো যে,
১। একমুষ্ঠির কমে দাড়ি কাটা হারাম। কারণ দাড়ি কাটার কারণে আকৃতির বিকৃতি ঘটে, বিধর্মী বা বিজাতীয়দের অনুসরণ হয়। উপরুন্ত সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নির্দেশ অমান্য ও শয়তানের নির্দেশ মান্য করা হয়।
২। কমপক্ষে একমুষ্ঠি পরিমাণ দাড়ি রাখা ফরজ/ ওয়াজিবের অন্তর্ভুক্ত। কারণ হারাম থেকে বেঁচে থাকা ফরয/ওয়াজিবের অন্তর্ভুক্ত, এ ব্যাপারে সকলেই একমত।
৩। এক মুষ্ঠির কমে দাড়ি কর্তন বা মুণ্ডনকারী ফাসেক, সাধারণতঃ ফাসেকের পিছনে নামাজ পড়া মাকরূহ তাহরীমী।
৪। সীনাপোর দাড়ি রাখা সুন্নত, দাড়ি সীনা অতিক্রম করা আহমকীর লক্ষণ।
৫। নীম দাড়িও দাড়ির অন্তর্ভুক্ত, তা কাটাও বিদয়াত ও মাকরূহ তাহরীমী।
৬। মোঁছ বা গোঁফ ছোট ছোট করে ভ্রুর ন্যায় রাখতে হবে। মোঁছ অধিক লম্বা রাখা যেরূপ নাযায়িয, তদ্রুপ সম্পূর্ণ চেছে ফেলাও মাকরূহ তাহরীমী ও বিদয়াত, কারো কারো মতে হারাম।
৭। মোঁছ ভিজা পানি পান করা সম্পূর্ণ জায়েয।
৮। মেন্দী দ্বারা খেযাব ব্যবহার করা সুন্নতে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম। তবে কালো রংয়ের খেযাব (যা ব্যবহার করলে প্রলেপ পড়েনা) ব্যবহার করা মাকরূহ তাহরীমী। আর যে কালো রংয়ের খেযাব ব্যবহার করলে নেইল পলিসের ন্যায় প্রলেপ পড়ে, উহা ব্যবহার করা হারাম। আমাদের দেশের কালো খেযাবগুলো এ ধরণের খেযাবের অন্তর্ভুক্ত।
৯। দাড়ি নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করা কুফরীর নামান্তর।
১০। মোখতার বা গ্রহণযোগ্য মতে মোঁছ মুণ্ডন করা মাকরূহ তাহরীমী ও বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ আর মোঁছ ছোট ছোট করে ভ্রুর ন্যায় রাখা সুন্নত।
১১। নির্ভরযোগ্য বর্ণনা মতে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি, হযরত ছাহাবায়ে ক্বিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম ও ইমাম, মুজতাহিদ উনারা কেউ কেউ নিজ মোঁছ ত্মল্ফম্বত্র অর্থাৎ ছোট করে রাখতেন, আর কেউ কেউ  ত্মব্জম্নল্পব্জপ্টত্র অধিক ছোট করে রাখতেন। মূলকথা হলো- কেউ মোঁছ মুণ্ডন করতেন না।
মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সকলকে উক্ত ফতওয়া মুতাবিক আমল করে মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রাসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খাছ সন্তুষ্টি হাছিল করার তৌফিক দান করুন।    (সমাপ্ত)