সুমহান ১১  ই যিলক্বদ শরীফ












সুমহান পবিত্র ১১ই যিলক্বদ শরীফ:
সাইয়্যিদুল উমাম, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত শাহ নাওয়াসা আউওয়াল ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি হচ্ছেন জগৎ উজালাকারী সম্মানিত মেহমান


মহান মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, আস্ সাফফাহ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম এবং গুলে মুবিনা, নূরে মাদীনা, নূরে জাহান সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনাদের লখতে জিগার, নিবরাসাতুল উমাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত শাহযাদী ছানী ক্বিবলা আলাইহাস সালাম এবং হাদিউল উমাম সাইয়্যিদুনা হযরত শাহদামাদ ছানী ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনাদের পবিত্র মুবারক গৃহে যিনি পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন, তিনি হলেন সাইয়্যিদুল উমাম সাইয়্যিদুনা হযরত শাহ নাওয়াসা আউওয়াল ক্বিবলা আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ! আর হযরত শাহনাওয়াসা আউওয়াল ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি হচ্ছেন জগৎ ধন্যকারী সম্মানিত মুবারক মেহমান। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুল উমাম, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত শাহ নাওয়াসা আউওয়াল ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি পবিত্র যিলক্বদ শরীফ মাসে তাশরীফ এনে এমাস উনাকে ধন্য করেছেন এবং পবিত্র ১১ শরীফ তারিখে পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করে এ ‘১১’ সংখ্যাকে সম্মানিত করেছেন। সুবহানাল্লাহ! এমনকি আমাদের সকলকেও ধন্য করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
সুতরাং সাইয়্যিদুল উমাম সাইয়্যিদুনা হযরত শাহ নাওয়াসা আউওয়াল ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার শান, মান, মর্যাদা-মর্তবা, খুছুছিয়ত, সম্মান, বুযুর্গী, বৈশিষ্ট্য সীমাহীন ও অফুরান (অধিক) যা কস্মিনকালেও আমরা বলে, লিখে শেষ করতে পারবো না। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই সকলের উচিত- সাইয়্যিদুল উমাম সাইয়্যিদুনা হযরত শাহ নাওয়াসা আউওয়াল ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার শান, মান, মর্যাদা-মর্তবা, সম্মান, খুছুছিয়ত, বৈশিষ্ট্য, বুযুর্গী মুবারক সম্পর্কে সকলকে জানানো এবং এসব নিয়ে পরস্পর পরস্পরের সঙ্গে আলোচনা করা এবং উনাদের ছানা-ছিফত মুবারক করা।
 খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন তিনি যেন আমাদের সকলকে সেই তাওফীক দান করেন। আমীন!

**********************************************************************************************************************

ঈদে বিলাদতে সাইয়্যিদুল উমাম আল আউওয়াল আলাইহিস সালাম:
২. মুবারক হো- মহিমান্বিত পবিত্র ১১ই যিলক্বদ শরীফ

খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাপবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, “হে আমার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি জিন-ইনসান উনাদেরকে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার বিশেষ বিশেষ দিন সম্পর্কে জানিয়ে দিন, বুঝিয়ে দিন, স্মরণ করিয়ে দিন।”
আর কিতাবে এসেছে, “ব্যক্তির মর্যাদার কারণে স্থানের মর্যাদা বেড়ে যায়। আবার স্থানের মর্যাদার কারণে ওই স্থানের ব্যক্তিবর্গেরও মর্যাদা বেড়ে যায়।” সুবহানাল্লাহ!
 এরই পরিপ্রেক্ষিতে কোনো সুমহান ব্যক্তির সংস্পর্শ, ছোঁয়া, পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ, পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ, বিশেষ বিশেষ ঘটনা ইত্যাদির কারণে মাসের, দিনের, তারিখের, সময়ের শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত মুবারক বেড়ে যায়।
যেমন পবিত্র ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার কারণে সর্বশ্রেষ্ঠ ঈদ তথা সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনার মর্যাদায় অধিষ্ঠিত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
ঠিক তেমনিভাবে পবিত্র ১১ই যিলক্বদ শরীফ সাইয়্যিদুল উমাম রাজারবাগ শরীফ উনার সুসম্মানিত শাহ নাওয়াসা আউওয়াল ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার মুবারক বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার কারণে সুসম্মানিত ও মর্যাদাপূর্ণ হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
কেননা তিনি হলেন- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খাছ আওলাদ অর্থাৎ আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সুবহানাল্লাহ!
অপরদিকে তিনি হচ্ছেন- সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, হাবীবুল্লাহ ঢাকা রাজারবাগ শরীফ উনার সম্মানিত মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত প্রথম নাওয়াসা (নাতি) আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
আর এ কারণেই পবিত্র ১১ই যিলক্বদ শরীফ হয়েছেন, মহিমান্বিত, মর্যাদাবান।
তাই সকল সালিক-সালিকা, মুরীদ-মুরীদা, আশিক্বীন, মুহিব্বীনসহ সকল জিন-ইনসানের জন্য উচিত ১১ই যিলক্বদ শরীফ উনাকে অত্যন্ত জাঁকজমকপূর্ণভাবে, জৌলুসপূর্ণভাবে উদযাপন করা। আর তার জন্য এখন থেকেই আর্থিক, শারীরিক, মানসিক প্রস্তুতি নেয়া।
খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে সেই মুবারক তাওফীক দান করুন। আমীন!

****************
৩. সাইয়্যিদুল উমাম সাইয়্যিদুনা হযরত শাহ নাওয়াসা আউওয়াল ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি হলেন- সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী আলাইহিস সালাম এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম উনাদের ক্বায়িম-মাক্বাম। সুবহানাল্লাহ!

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদরের দুলাল নয়নের মণি কলিজার টুকরা দৌহিত্র হলেন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা।
উনাদের শান, মান, ফাযায়িল-ফযীলত মুবারক এতো বেশি যা কোনো জিন-ইনসানের পক্ষে বর্ণনা করা সম্ভব নয়। যেমন হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, একদা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এমন অবস্থায় বাইরে তাশরীফ মুবারক আনলেন যে, উনার এক কাঁধ মুবারক উনার উপর সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এবং অপর কাঁধ মুবারক উনার উপর সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতিন নাবিয়্যি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বসিয়ে ছিলেন; এভাবে আমাদের সামনে তাশরীফ মুবারক আনলেন এবং ইরশাদ মুবারক করলেন, যে ব্যক্তি এ দু’জন উনাদেরকে মুহব্বত করলো, সে ব্যক্তি আমাকে মুহববত করলো। সুবহানাল্লাহ! আর যে ব্যক্তি উনাদের সাথে দুশমনী করলো সে আমার সাথে দুশমনী করলো। নাউযুবিল্লাহ!
অত্র মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার হাক্বীক্বী মিছদাক হচ্ছেন সাইয়্যিদুল উমাম সাইয়্যিদুনা হযরত শাহ নাওয়াসা আউওয়াল ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সকলকে সাইয়্যিদুনা হযরত শাহ নাওয়াসা আউওয়াল আলাইহিস সালাম উনাকে মুহব্বত করার তাওফিক দান করুন। আমীন!
****************

৪.
পবিত্র ১১ই যিলক্বদ শরীফ দিনটিও ‘আইয়্যামিল্লাহ’ উনার অন্তর্ভুক্ত
অর্থাৎ পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ। সুবহানাল্লাহ! 
ايام الله (আইয়্যামিল্লাহ) অর্থ মহান আল্লাহ পাক উনার দিনসমূহ। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার কালাম পাক উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন,
وَذَكِّرْهُم بِأَيَّامِ اللَّـهِ ۚ إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَآيَاتٍ لِّكُلِّ صَبَّارٍ شَكُورٍ
অর্থ: “তাদেরকে মহান আল্লাহ পাক উনার দিনসমূহের কথা স্মরণ করিয়ে দিন। নিশ্চয়ই এতে প্রত্যেক ধৈর্যশীল শোকর-গোজারকারীগণের জন্য অনেক নির্দশন রয়েছে।” (পবিত্র সূরা ইবরাহীম আলাইহিস সালাম শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫)
দিন-কাল, মাস, বছরসহ কায়িনাতের সবকিছুরই মালিক মহান আল্লাহ পাক তিনি। তিনি সকলেরই একচ্ছত্র অধিপতি, মালিক। তারপরেও কিছু দিন, কাল, স্থান, মাস, বছর এবং বিষয়কে মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজের জন্য খাছ করেছেন। পবিত্র কা’বা শরীফ উনাকে بيت الله (বাইতুল্লাহ) মহান আল্লাহ পাক উনার ঘর, পবিত্র রজব মাস উনাকে شهرالله (শাহরুল্লাহ) মহান আল্লাহ পাক উনার মাস, পবিত্র কুরআন শরীফ অধিক তিলাওয়াতকারীকে اهل الله (আহলুল্লাহ) মহান আল্লাহ পাক উনার আহাল বা পরিবার বলা হয়েছে। এমনিভাবে আরো অনেক বিষয় বা বস্তু আছে যেগুলোকে মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার মহান শান মুবারক উনার সাথে নিসবত বা সম্পর্কযুক্ত করেছেন।
তাছাড়া মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালাম পাক উনার অনেক জায়গায় কিছু স্থান, কাল, সময়, বিষয় ইত্যাদির নামে শপথ বা কসম করেছেন। অনুসরণীয় হযরত ইমাম-মুজতাহিদ, আউলিয়ায়ে কিরাম তথা মুফাসসিরে কিরাম এবং মুহাদ্দিসীনে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা সেই নিসবত বা সম্পর্ক এবং শপথের ব্যাখ্যায় বলেছেন যে, মূলত মহান আল্লাহ পাক তিনি এর দ্বারা সেই বিষয়, স্থান, কাল, মাস, বছর ইত্যাদির মর্যাদা-মর্তবা, গুরুত্ব-তাৎপর্যের বিষয়টি বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরেছেন। সুবহানাল্লাহ!
একইভাবে ايام الله (আইয়্যামিল্লাহ) মহান আল্লাহ পাক উনার দিনসমূহ বলে বিশেষ বিশেষ দিন তথা পূর্ববর্তী বা পরবর্তী লোকদের উপর উনার দেয়া নিয়ামত, রহমত, মাগফিরাত, দয়া, দান ইহসান নাযিলের দিনসমূহের কথা বলেছেন। আবার পূর্বাপর সকল উম্মতের উপর আপতিত আযাব-গযব কিংবা ধ্বংসপ্রাপ্তির দিনগুলো সেই ايام الله (আইয়্যামিল্লাহ) উনার অন্তর্ভুক্ত।
হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা হচ্ছেন ولى الله (ওলীউল্লাহ) মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী বা বন্ধু। উনারা উনার আহাল তথা পরিবারভুক্ত, সদস্য। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই ওলীআল্লাহ বা হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের সাথে নিসবত বা সম্পর্কযুক্ত কিংবা সংশ্লিষ্ট সকল দিন, কাল, সময়, স্থান ইত্যাদি বিষয়গুলোও যে ايام الله (আইয়ামুল্লাহ) বা মহান আল্লাহ পাক উনার দিনসমূহের অন্তর্ভুক্ত তাতে কোনো সন্দেহ নেই। আর সে ব্যাপারে বিস্তারিত ব্যাখ্যার প্রয়োজন নেই।
উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ মুবারক দ্বারা এ কথা দিবালোকের ন্যায় পরিস্ফুটিত হয়েছে যে, হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক, পবিত্র বিছালী শান মুবারক এবং অন্যান্য বিশেষ ঘটনা বা স্মৃতি বিজড়িত দিনসমূহ স্মরণ করা বা করানো উচিত। কেন না সেইদিনগুলোতে ছবর ও শোকর ইখতিয়ারকারী তথা ধৈর্য্যশীল এবং চরম শোকর গোজার বা অধিক পরিমাণে শোকরিয়া আদায়কারীগণের জন্য এতে অসংখ্য অগণিত নিয়ামতরাজি রয়েছে। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই ১১ই যিলক্বদ শরীফ সেই রহমত, বরকত, সাকীনা, দয়া, দান, ইহসান নাযিলের বিশেষ দিন। সেই দিন মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাহবুব দুনিয়ায় মুবারক তাশরীফ এনেছেন। উনাকে দুনিয়াবাসী সকলেই সাইয়্যিদুল উমাম আল আউওয়াল আলাইহিস সালাম হিসেবে চিনে, জানে। তিনি আখাছছুল খাছ নিয়ামতপ্রাপ্ত মহান ওলীআল্লাহ। উনার বেমেছাল শান, মান, মর্যাদা-মর্তবা মুবারক। এক্ষেত্রে উনার দৃষ্টান্ত তিনি নিজেই। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই আসুন! সবাই মিলে অত্যন্ত আদব-ইহতিরামের সাথে সেই মহান দিনটি পালন করি এবং খালিছ বান্দা, উম্মত ও মুরীদ হওয়ার সর্বাত্মক কোশেশ করি।
হে মালিকে আ’যম আলাইহিস সালাম! আমাদের সবাইকে কবুল করুন। ইহসান করুন, গাইবী মদদ করুন। আমীন! আমীন!

 ************************
৫. ঐতিহাসিক ও অবিস্মরণীয় পবিত্র ১১ই যিলক্বদ শরীফ-
 নববী কানন মুবারকে নূরী ফুল, আওলাদুর রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত সাইয়্যিদুল উমাম আল আউওয়াল আলাইহিস সালাম উনার পবিত্রতম বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস। যা কুল-মুসলিম উম্মাহ উনাদের জন্য সবচেয়ে বড় ঈদ বা খুশির দিন

মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত আছে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “হে কুল-কায়িনাতবাসী তোমরা জেনে রেখ, শুনে রেখ, মনে রেখ যদি তোমরা আমার খাছ মুহব্বত, মা’রিফাত, রেযামন্দি, সন্তুষ্টি মুবারক পেতে চাও তাহলে আমার পবিত্রতম আহলে বাইত শরীফ তথা আমার পবিত্রতম আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে তোমরা মুহব্বত করো, ইজ্জত করো, তা’যীম করো, তাকরীম করো।” সুবহানাল্লাহ!
কাজেই এই মহাপবিত্র হাদীছ শরীফখানাই প্রমাণ  করে যে, হযরত আহলু বাইত শরীফ তথা আওলাদুর রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করাই হচ্ছে পবিত্র ঈমান। যার অন্তরে হযরত আওলাদুর রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের মুহব্বত নেই তারা কস্মিনকালেও মুসলমান নয়। সুবহানাল্লাহ! কেননা উনাদের মুহব্বতই হচ্ছে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্রতম মুহব্বত উনার অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!
পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ যেমন মহান আল্লাহ পাক উনার থেকে আলাদা করা যায় না, ঠিক অনুরূপভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র নূর মুবারক থেকে প্রবাহিত আওলাদুর রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারাও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে আলাদা নন। সুবহানাল্লাহ! একই পবিত্রতম নূর মুবারক উনার সাথেই সম্পৃক্ত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যেমন কুল-কায়িানতবাসীর জন্য সবচেয়ে বড় রহমত, বরকত, সাকীনা, মাগফিরাত ও নাজাত। ঠিক একইভাবে উনার পবিত্রতম আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনারাও সমগ্র কুল-কায়িনাতবাসীর জন্য সবচেয়ে বড় রহমত, বরকত, সাকীনা, মাগফিরাত ও নাজাত। সুবহানাল্লাহ!
এই ধারাবাহিকতায় আওলাদুর রসূল হযরত সাইয়্যিদুল উমাম আল আউওয়াল আলাইহিস সালাম উনার পবিত্রতম বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস হচ্ছে ঐতিহাসিক ও অবিস্মরণীয় পবিত্রতম ১১ই যিলক্বদ শরীফ। যা কুল-কায়িনাতবাসীদের জন্য সবচেয়ে বড় ঈদ বা খুশির দিন। সুবহানাল্লাহ!
তাই কুল-কায়িনাত-এর সকল জিন-ইনসান উনাদের একমাত্র পবিত্র ঈমানী দায়িত্ব-কর্তব্য হচ্ছে আওলাদুর রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুল উমাম আল আউওয়াল আলাইহিস সালাম উনাদের পবিত্রতম বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবসটি অত্যন্ত শান-শওকতের সাথে সর্বশ্রেষ্ঠ ঈদ বা খুশির দিন হিসেবে পালন করা।

*******************************

৬. সাইয়্যিদুল উমাম লক্বব মুবারক উনার শান বা মহিমা

سيد الامم“সাইয়্যিদুল উমাম” দু’খানি আরবী শব্দের সমন্বয়ে এই সম্মানিত লকব মুবারকখানি প্রদত্ত হয়েছে। পৃথকভাবে শব্দ মুবারক দু’খানি হচ্ছে سيد “সাইয়্যিদ” এবং الامم “আল উমাম”।
سيد (সাইয়্যিদুন) শব্দ মুবারকখানি একবচন এবং পুরুষবাচক শব্দ। এর বহুবচন হচ্ছে سادة “সা-দাতুন” ও اسياد “আসইয়াদুন”। এর স্ত্রীবাচক শব্দ মুবারকখানি হচ্ছে سيدة “সাইয়্যিদাতুন” এবং এর বহুবচন হচ্ছে سيدات “সাইয়্যিদা-তুন”। অর্থ মুবারক হচ্ছে সাইয়্যিদ, ইমাম, শ্রেষ্ঠ, সম্মানিত, পথপ্রদর্শক, নেতৃস্থানীয়, মুনীব, অভিভাবক ইত্যাদি।
الامم শব্দখানির মধ্যে ال আলিফ ও লাম অক্ষরদ্বয় সংযোগ স্থাপনের জন্য ব্যবহৃত হয়েছে। এছাড়া শব্দের শুরুতে একত্রে আলিফ ও লাম অক্ষরের ব্যবহারে শব্দটি ইসিম বা বিশেষ্য পদ এবং নির্দিষ্ট পদ হিসেবে পরিচয় বহন করে। মূল শব্দ মুবারকখানি হচ্ছে امم উমামুন”। এ শব্দ মুবারকখানি امة “উম্মাতুন” শব্দ মুবারকের বহুবচন। অর্থ হচ্ছে উম্মতগণ।
অতএব, একত্রে বা একসাথে سيد الامم “সাইয়্যিদুল উমাম” শব্দ মুবারক দু’খানির অর্থ  মুবারক হচ্ছে, উম্মতগণের ইমাম বা পথপ্রদর্শক। সুবহানাল্লাহ!
প্রকাশ থাকে যে, সাইয়্যিদুল খল্ক্ব, সাইয়্যিদুন নাস, সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, নূরুম মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার লখতে জিগার বিনতুর র-বিয়াহ (চতুর্থ মেয়ে) হচ্ছেন সাইয়্যিদাতুন নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি হাযিহিল উম্মাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি আর উনারই লখতে জিগার ইবনুল আউওয়াল (প্রথম ছেলে) হচ্ছেন সাইয়্যিদুর রিজাল, সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ, সাইয়্যিদুশ শুহাদা, ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
অনুরূপভাবে নূরুম মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পরিপূর্ণ ক্বায়িম-মাক্বাম হচ্ছেন সাইয়্যিদু আওলাদি রসূলিল্লাহ, সাইয়্যিদুন নাস, সাইয়্যিদুল আউলিয়া ওয়াল মুজাদ্দিদীন, সুলত্বানুন নাছীর, জাব্বারিউল আউওয়াল, ক্বউইয়্যুল আউওয়াল, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! এবং উনার লখতে জিগার বিনতুছ ছানিয়াহ (দ্বিতীয় মেয়ে) হচ্ছেন সাইয়্যিদাতুন নিসা ক্বায়িম-মাক্বামে বিনতু রসূলিল্লাহ, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদাতুনা হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি। আর উনারই লখতে জিগার ইবনুল আউওয়াল (প্রথম ছেলে) হচ্ছেন ক্বায়িম-মাক্বামে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত সাইয়্যিদুল উমাম আল আউওয়াল আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
উল্লেখ্য, নূরুম মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে ইরশাদ মুবারক করেন-
ان ابنى هذا سيد ولعل الله ان يصلح به بين فئتين عظيمتين من الـمسلمين
অর্থ: আমার এই সন্তান (পৌত্র) তিনি হচ্ছেন সাইয়্যিদ। অবশ্যই মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার দ্বারা মুসলমানদের বিবাদমান বিরাট দুটি দলের মধ্যে সমঝোতা করিয়ে দিবেন। (বুখারী শরীফ)
তদ্রƒপ ক্বায়িম-মক্বামে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদু আওলাদে রসূলিল্লাহ, সাইয়্যিদুল আউলিয়া ওয়াল মুজাদ্দিদীন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আল আউওয়াল আলাইহিস সালাম তিনি হযরত সাইয়্যিদুল উমাম আল আউওয়াল আলাইহিস সালাম উনার বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের পর নছীহত মুবারক প্রদানকালে ইরশাদ মুবারক করেন, স্বয়ং যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে একজন সম্মানিত ইমাম আলাইহিস সালাম উনাকে হাদিয়া মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ তিনি হচ্ছেন উম্মতের ইমাম, যার কারণে উনাকে সাইয়্যিদুল উমাম লক্বব বা উপাধি মুবারকে সম্বোধিত করা হয়। সুবহানাল্লাহ!
*************
৭. জান্নাতী ইমাম সাইয়্যিদুনা হযরত সাইয়্যিদুল উমাম আল আউওয়াল আলাইহিস সালাম উনার মুহব্বত মুবারক কায়িনাতের সকলের জন্য নাজাতের অন্যতম উসীলা

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- “হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আপনি জানিয়ে দিন, আমি তোমাদের নিকট কোনো বিনিময় চাই না। আর চাওয়াটাও স্বাভাবিক নয়। তোমাদের পক্ষে দেয়াও কস্মিনকালে সম্ভব নয়। আর দেয়ার চিন্তা করাটাও কুফরী। তবে তোমরা যদি ইহকাল ও পরকালে হাক্বীক্বী কামিয়াবি হাছিল করতে চাও, তাহলে তোমাদের জন্য ফরয হচ্ছে- আমার হযরত আহলে বাইত শরীফ ও আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করা, তাযীম-তাকরীম মুবারক করা, উনাদের খিদমত মুবারক উনার আঞ্জাম দেয়া।” (পবিত্র সূরা শূরা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ- ২৩)
উপরোক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় বলা হয়- “আমি তোমাদের নিকট কোনো প্রতিদান চাই না। তোমরা আমার নিকটাত্মীয় অর্থাৎ হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম ও আমার বংশধর উনাদের যথাযথ হক্ব আদায় করো।” (তাফসীরে মাযহারী শরীফ, ৮ম জি: ৩২০ পৃষ্ঠ।)
অতএব, বলার অপেক্ষা রাখে না যে, কায়িনাতের সকলের জন্য ফরয হচ্ছে- হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের হাক্বীক্বী খিদমত মুবারক উনার আঞ্জাম দেয়া।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে- “হযরত আবু যর গিফারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি পবিত্র কা’বা শরীফ উনার দরজা মুবারক ধরে বলেছেন, আমি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট শুনেছি, সাবধান! আমার হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা তোমাদের জন্য হযরত নূহ আলাইহিস সালাম উনার কিস্তির ন্যায়। যারা উনার মধ্যে আরোহণ করবে তারা নাযাত পাবেন আর যারা আরোহণ করবে না তারা হালাক হয়ে যাবে।” (মুসনাদে আহমদ শরীফ)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমি ক্বিয়ামতের দিন চার ব্যক্তিকে সুপারিশ করবো। ১. যারা আমার হযরত আহলূ বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মান মুবারক করবেন। ২. যারা আমার হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের আর্থিক খিদমত মুবারক উনার আঞ্জাম দিবেন। ৩. যারা আমার হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের শারীরিক খিদমত মুবারক উনার আঞ্জাম দিবেন। ৪. যারা আমার আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর দিয়ে মুহব্বত করবেন ও যবানে ছানা ছিফত করবেন।” সুবহানাল্লাহ!
উপরোক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ থেকে এটাই বুঝা যায়, হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারাই হলেন পুরো কায়িনাতের জন্য একমাত্র নাজাতের উসীলা। আর সেই হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের নয়নমণি, মাথার তাজ, তিনিই হলেন সাইয়্যিদুল কাওনাইন, সাইয়্যিদুস সাক্বালাইন, সাইয়্যিদুন নাস, ক্বায়িম-মাক্বামে ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ওয়া ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত সাইয়্যিদুল উমাম আল আউওয়াল আলাইহিস সালাম। অর্থাৎ সাইয়্যিদুনা হযরত সাইয়্যিদুল উমাম আল আউওয়াল আলাইহিস সালাম উনার মুহব্বত মুবারকই হলো পুরো কায়িনাতের জন্য অন্যতম নাজাতের উসীলা।
আর মহাসম্মানিত পবিত্র যিলক্বদ শরীফ মাস উনার পবিত্র ১১ই যিলক্বদ শরীফ হচ্ছেন সাইয়্যিদুনা হযরত সাইয়্যিদুল উমাম আল আউওয়াল আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই আমাদের জন্য ফরয হলো- এই দিনে হাক্বীক্বী খুশি প্রকাশ করে সাইয়্যিদুনা হযরত সাইয়্যিদুল উমাম আল আউওয়াল আলাইহিস সালাম উনার হাক্বীক্বী সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করা।
মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সকলকে সেই তাওফীক দান করুন। আমীন!

***********


৮. আওলাদে রসূল হযরত সাইয়্যিদুল উমাম আল আউওয়াল আলাইহিস সালাম উনাকে যারা মুহব্বত করবেন তারা ৯টি বিশেষ নিয়ামত মুবারক লাভ করবেন। সুবহানাল্লাহ!

সাইয়্যিদুল উমাম সাইয়্যিদুনা হযরত শাহ নাওয়াসা আউওয়াল ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি হচ্ছেন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত। তাই উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, খুছূছিয়াত মুবারক বেমেছাল। উনার মুহব্বত হচ্ছে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের হাক্বীক্বী সন্তুষ্টি মুবারক। আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত সাইয়্যিদুল উমাম আল আউওয়াল আলাইহিস সালাম উনাকে  যারা মুহব্বত করবেন তারা ৯টি বিশেষ নিয়ামত মুবারক লাভ করবেন। সুবহানাল্লাহ! 
এ প্রসঙ্গে সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “হযরত জারীর ইবনে আব্দুল্লাহ বাজিলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি সম্মানিত হযরত আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মুহব্বত মুবারক-এ ইন্তেকাল করবেন,
(১) তিনি শহীদী মৃত্যু পাবেন। সুবহানাল্লাহ!
(২) তিনি ক্ষমাপ্রাপ্ত হয়ে ইন্তেকাল করবেন। সুবহানাল্লাহ!
(৩) তিনি তওবাকারী হিসেবে ইন্তেকাল করবেন।  সুবহানাল্লাহ!
(৪) তিনি পরিপূর্ণ ঈমানদার মু’মিন হিসেবে ইন্তেকাল করবেন। সুবহানাল্লাহ!
(৫) উনাকে মালাকুল মউত আলাইহিস সালাম, হযরত মুনকার ও নকীর আলাইহিমুস সালাম উনারা সম্মানিত বেহেশত মুবারক উনার সুসংবাদ মুবারক দিবেন। সুবহানাল্লাহ!
(৬) উনাকে এমনভাবে সুসজ্জিত করে জান্নাতে নেয়া হবে, যেমনভাবে  নববধূকে সাজিয়ে তার স্বামীর ঘরে নেয়া হয়। সুবহানাল্লাহ!
(৭) উনার কবরে সম্মানিত জান্নাত উনার দিকে দুটি দরজা খুলে দেয়া হবে। সুবহানাল্লাহ!
(৮)  মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার কবরকে সম্মানিত রহমতের ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের যিয়ারতের স্থান বানাবেন। সুবহানাল্লাহ!
(৯)  তিনি সম্মানিত আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত উনার আকাইদের উপরই ইন্তেকাল করবেন।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!! সুবহানাল্লাহ!!! (তাফসীরে কুরতুবী ১৬/২৩, তাফসীরে কবীর ২৭/৫৯৫, তাফসীরে হাক্কী ১৩/৭৯, তাফসীরে রূহুল বয়ান ৮/২৩৯,  তাখরীজু আহাদীছুল কাশ্শাফ ৩/২৩৮, নুজহাতুল মাজালিস ১/৩৬৫) 
তাই সকলের জন্য ফরয হচ্ছে- হযরত আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে খাছ করে সাইয়্যিদুনা হযরত সাইয়্যিদুল উমাম আল আউওয়াল আলাইহিস সালাম উনাকে যথাযথ মুহব্বত ও তা’যীম তাকরীম করা এবং উনাদের মুহব্বত অন্তরে নিয়ে ইন্তেকাল করার কোশেশ করা।

**************
৯. জান্নাতী ইমাম সাইয়্যিদুনা হযরত সাইয়্যিদুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি হচ্ছেন-
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী আলাইহিস সালাম ও সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম উনাদের হাক্বীক্বী হুবহু ক্বায়িম-মাক্বাম

খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
لكل قوم هاد
অর্থ: “প্রত্যেক কওম বা জাতির জন্য রয়েছে একজন পথপ্রদর্শক।”
আর সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
ان الله عزوجل يبعث لهذه لامة على رأس كل مأة سنة من يجدرلها دينها
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি এই উম্মতের মাঝে প্রত্যেক হিজরী শতকের শুরুতে একজন মুজাদ্দিদ প্রেরণ করবেন। যিনি পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মাঝে বিভিন্ন বিষয়ে তাজদীদ বা সংস্কার করবেন।”
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অন্যত্র ইরশাদ মুবারক করেন-
العلماء ورثة الانبياء
অর্থ: “হযরত হক্কানী-রব্বানী উলামায়ে কিরামগণ তথা ওলীল্লাহগণ উনারা হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের ওয়ারিস বা ক্বায়িম-মাক্বাম।”
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
الشيج لقومه كاانبى فى امته
অর্থ: “উম্মতের মাঝে হযরত নবী রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা যেমন, মুরীদের মাঝে শায়েখ আলাইহিস সালাম তিনি তেমন।” সুবহানাল্লাহ!
উপরোক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের হাক্বীক্বী মিছদাক হচ্ছেন- মুজাদ্দিদে আ’যম, হাবীবে আ’যম, গাউছুল আ’যম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
আর আফদ্বালুন নাস, আফদ্বালুন নিসা, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, লাসতুন্নাকা আহাদিকুম মিনান নিসা হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের সাথে সর্বদিক থেকে তায়াল্লুক-নিসবত প্রাপ্ত ও ক্বায়িম-মাক্বাম হচ্ছেন- সাইয়্যিদাতুন নিসা, আফদ্বালুন নিসা, হাবীবাতুল্লাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
আর এরই ধারাবাহিকতায় হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের ক্বায়িম-মাক্বাম হচ্ছেন- খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, মুঈনুদ্দীন, বদরুদ্দীন, আল-মানছুর সাইয়্যিদুনা হযরত খলীফাতুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
আর হযরত বানাতু রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের ক্বায়িম-মাক্বাম হচ্ছেন- ত্বাহিরা, ত্বইয়িবা, তাওশিয়া, তাযকিয়া, গুলে মদীনা সাইয়্যিদাতুনা হযরত নাক্বীবাতুল উমাম ও সাইয়্যিদাতুনা হযরত নিবরসাতুল উমাম আলাইহিমাস সালাম উনারা। সুবহানাল্লাহ!
আর সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী ও ইমামুছ ছালিছ আলাইহিমাস সালাম উনাদের ক্বায়িম-মাক্বাম হচ্ছেন- ত্বাহিরা, ত্বইয়িবা, রহীমা, গালিবা সাইয়্যিদাতুনা হযরত সাইয়্যিদাতুল উমাম আলাইহিন্নাস সালাম উনারা ও সাইয়্যিদুনা হযরত সাইয়্যিদুল উমাম আল আউওয়াল আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
আর জান্নাতী মেহমান, জান্নাতী ইমাম সাইয়্যিদুনা হযরত সাইয়্যিদুল উমাম আল আউওয়াল আলাইহিস সালাম তিনি مذكر বা পুরুষ হওয়ার দিক থেকে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী আলাইহিস সালাম ও সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম উনাদের হুবহু হাক্বীক্বী মিছদাক মুবারক। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী আলাইহিস সালাম ও সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম উনাদেরকে তা’যীম-তাকরীম, মুহব্বত, খিদমত ইত্যাদি যেমন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সন্তুষ্টি-রেযামন্দি লাভের কারণ; ঠিক তেমনি কুতুবুল আলম, কুতুবুল আকতাব, আওলাদুর রসূল, জান্নাতী ইমাম সাইয়্যিদুনা হযরত সাইয়্যিদুল উমাম আল আউওয়াল আলাইহিস সালাম উনাকে তা’যীম-তাকরীম করা, সম্মান করা, খিদমত করা ইত্যাদিও সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আল আউওয়াল আলাইহিস সালাম উনার সন্তুষ্টি-রেযামন্দি মুবারক লাভের মহান উপলক্ষ। সুবহানাল্লাহ!
তাই কুল-কায়িনাতের জিন-ইনসানসহ সকল মাখলুকতের জন্য ফরয-ওয়াজিব হচ্ছে- জান্নাতী ইমাম সাইয়্যিদুনা হযরত সাইয়্যিদুল উমাম আল আউওয়াল আলাইহিস সালাম উনাকে তা’যীম তাকরীম ও সম্মান করা এবং মুবারক খিদমত উনার আনজাম দেয়া।
খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা আমাদের সকলকে জান্নাতী ইমাম সাইয়্যিদুনা হযরত সাইয়্যিদুল উমাম আল আউওয়াল আলাইহিস সালাম উনাকে তা’যীম-তাকরীম করার এবং উনার মুবারক খিদমতের আনজাম দেয়ার তাওফীক দান করুন। আমীন!

*******************
১০. ক্বিয়ামত অবধি সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা কা’বা আলাইহিস সালাম উনার মুবারক নছব জারির ক্রমধারায়  মহাসম্মানিত ইমাম, সাইয়্যিদুনা হযরত
সাইয়্যিদুল উমাম আল আউওয়াল আলাইহিস সালাম উনার নবতর অনুপম বিকাশ

পবিত্র সাইয়্যিদ বংশের মানুষ উনারা সকলেই সম্মানিত। কারণ উনাদের মুবারক বংশ-সম্পৃক্তি ক্রমান্বয়ে গিয়ে মিলিত হয়েছে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সঙ্গে। মুবারক ‘সাইয়্যিদ লক্বব’ উনাদের অর্জন নয়। মুবারক বিষয়টি মহান আল্লাহ পাক সুবহানাহু ওয়া তায়ালা এবং উনার প্রিয়তম হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মুবারক সদয় বখ্শিশ। সুবহানাল্লাহ!
‘সাইয়্যিদ’ হয়েও যারা ‘সাইয়্যিদ লক্বব’ উনার অনুপযুক্ত, যারা উনার শান-মান-মর্যাদা রক্ষা করতে পারে না, মন্দ স্বভাবে ও মন্দ আমলে পবিত্র বংশ মর্যাদার যারা ব্যত্যয় ঘটায়, যাদের স্বভাবে মুনাফিকী, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে তাদেরকে ‘সাইয়্যিদ’ বলতে, অর্থাৎ তাদেরকে ‘সাইয়্যিদ’ হিসেবে সম্মান ও মর্যাদা দিতে নিষেধ করা হয়েছে। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে: “মুনাফিকদেরকে ‘সাইয়্যিদ’ বলো না।” নাউযুবিল্লাহ!
জানা আবশ্যক যে, সত্যিকারভাবে যাঁরা আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারাই ‘সাইয়্যিদ’। দুনিয়ায় আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সংখ্যা অগণিত, অসংখ্য। সকল আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা পবিত্র আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত নন। সম্মানিত আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মধ্যে যারা আখাছছুল খাছভাবে পবিত্র আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত, উনাদের পাওয়ার আর কিছুই অবশিষ্ট থাকে না। এমন আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মুবারক মাধ্যমেই দুনিয়ায় হাক্বীক্বী পবিত্রতম নববী মুবারক আদর্শ বহমান রয়েছে। বহমান থাকবে ক্বিয়ামত অবাধি। সুবহানাল্লাহ!
পঞ্চদশ হিজরী শতকের সুমহান মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে মাদারযাদ, সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম, আওলাদে রসূল, ক্বায়িম-মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম, কুদরতে ইলাহী, মুজিযায়ে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, হুজ্জাতুল ইসলাম, গাউছুল আ’যম, জামিউল আলক্বাব, জামিউন নিসবত, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, সুলতানুন নাছীর, খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামুল আইম্মাহ, ক্বইয়্যূমুয্ যামান, জাব্বারিউল আউওয়াল, ক্বউইয়্যূল আউওয়াল, আস সাফফা, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা কা’বা আলাইহিস সালাম তিনি আখাছছুল খাছভাবে নূরে মুজাসসাম, মাশুকে মাওলা, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্রতম হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা কা’বা আলাইহিস সালাম তিনি মহান আল্লাহ পাক সুবহানাহু ওয়া তায়ালা এবং রহমতুল্লিল আলামীন, রউফুর রহীম, মাশুকে মাওলা, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের পক্ষে প্রকৃষ্ট দলীল এবং উনাদের পক্ষে কার্যসম্পাদনকারী। তিনি আমানতের ক্বিবলা। তিনি ইলমে ফিক্বাহ ও ইলমে তাছাউফ উনাদের অপার সমুদ্র। তিনি মুহব্বত-মা’রিফাত উনাদের কা’বা। তিনি ইশকে ইলাহী এবং ইশকে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের অনির্বাণ নূর। তিনি অপরাজেয়। তিনি সুরক্ষিত। সম্মানিত দ্বীন-ইসলাম উনার বিদ্বেষীদের মূলোৎপাটনে তিনি তীক্ষ্ম ধারসম্পন্ন খোলা তলোয়ার। তিনি প্রতিক্ষণ নতুন নতুন শান মুবারকে অধিষ্ঠিত থাকেন। সুবহানাল্লাহ!
প্রাণের আক্বা, সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা কা’বা আলাইহিস সালাম এবং উনার মহাসম্মানিত আহাল পাক শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা যে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্রতম হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত, সে সম্পর্কে মুবারক একখানা ঘটনার আলোকপাতই যথেষ্ট বলে আমরা মনে করি। মুবারক এ ঘটনা আমরা সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা কা’বা আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র যবান মুবারকে শুনেছি। সুবহানাল্লাহ!
তিনি বলেন: “আমি মুবারক স্বপ্নে দেখলাম- নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অতি সুন্দর জায়গায় সুন্দর একটি আসন মুবারকে বসে রয়েছেন। উনার মুবারক সামনে ঘেরাও করা মনোরম জায়গা মুবারক রয়েছে। তিনি আমাকে এবং আমার আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে ডেকে নিয়ে ওই মুবারক জায়গায় বসালেন এবং বললেন: ‘আপনারা সবাই আমার আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত।’
আমাদের সঙ্গে শাফিউল উমাম, হযরত শাহদামাদ আউওয়াল আলাইহিস সালাম এবং হাদিউল উমাম সাইয়্যিদুনা হযরত শাহদামাদ ছানী আলাইহিস সালাম উনারা দু’জনেও ছিলেন।” সুবহানাল্লাহ!
উপরোক্ত হাদিউল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি হলেন ওলীয়ে মাদারযাদ, আওলাদে রসূল, নকশায়ে যুননূরাইন আলাইহিস সালাম, কুতুবুল আলম, বাহরুল উলূম, বাবুল ইলম, ছাহিবুল ইলম ওয়াল হিকাম ওয়াল কাশফ ওয়াল কারামত, ছাহিবুশ শুকুর, ছাহিবুশ শরাফাত, ছাহিবে হিলম, ছাহিবাতুত তাক্বওয়া, মুহইস্ সুন্নাহ, মাহিউল বিদয়াত, হাদিয়ায়ে ইলাহী, শাহদামাদে হযরত সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত হাদিউল উমাম আলাইহিস সালাম উনার সঙ্গে পবিত্র নিসবাতুল আযীম মুবারক সংঘটিত হয় ওলীয়ে মাদারযাদ, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদাতুন নিসা, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, ত্বাহিরা, ত্বইয়িবা, মাহবুবা, ফক্বীহা, ওয়ারিছাতুন নাবিয়্যী, লাছতুন্নাকা আহাদিম মিনলান নিসায়ী, নূরে মাদীনা, গুলে মুবীনা, লখতে জিগারে হযরত সাইয়িদে মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম, ক্বায়িম-মাক্বামে হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম, হাবীবাতু সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম, ক্বায়িম-মক্বামে ওলীয়ে মাদারযাদ, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম, মাহবুবায়ে ইলাহী, উম্মু আবীহা, উম্মুল ওয়ারা, ছাহিবাতুল হুসনা, বাহরুল উলূম, মিছদাক্বে কুরআন ওয়াল হাদীছ, ছাহিবাতুল ইলম ওয়াল হিকাম ওয়াল কাশফ ওয়াল কারামত, নিবরাসাতুল উমাম, সাইয়্যিদাতুনা হযরত শাহযাদী ছানী ক্বিবলা কা’বা আলাইহাস সালাম উনার। সুবহানাল্লাহ!
উনাদের পবিত্রতম নিসবাতুল আযীম মুবারক অনুষ্ঠিত হয় পবিত্র জান্নাতে। পবিত্রতম ওই অনুষ্ঠানের একই আদলে সম্মানিত সুন্নতী তর্জ-তরীক্বায় পবিত্র রাজারবাগ শরীফে পবিত্রতম নিসবাতুল আযীম মুবারক অনুষ্ঠিত হয়। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সদয় উপস্থিতিতে পবিত্রতম অনুষ্ঠান মুবারক মক্ববুলিয়াতের শীর্ষতম ধাপে উপনীত হয়। ওলীয়ে মাদারযাদ, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদাতুনা হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম এবং ওলীয়ে মাদারযাদ, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত হাদিউল উমাম আলাইহিস সালাম উনাদের পবিত্রতম বন্ধনের মাধ্যমে ক্বিয়ামতব্যাপী আখাছছুল খাছ আওলাদে রসূল, অর্থাৎ মহা-সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অনুক্রমিক মুবারক আগমনের পথ সম্প্রসারিত হয়। সুবহানাল্লাহ!
ওলীয়ে মাদারযাদ, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদাতুনা হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম এবং ওলীয়ে মাদারযাদ, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত হাদিউল উমাম আলাইহিস সালাম উনাদের পবিত্র ঘর মুবারকেই উনাদের মুবারক কোল আলো করে ১৪৩৫ হিজরী সনের ১১ই যিলক্বদ শরীফ উনার লাইলাতুল আহাদ রাত ১.২৫ মিনিটে পবিত্রতম বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, ওলীয়ে মাদারযাদ, আওলাদে রসূল, জান্নাতী মেহমান, নূরে মুকাররাম, ক্বায়িম-মাক্বামে সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ, কুদরতে ইলাহী, আন নি’মাতুল কুরবা আলাল আলাম, মু’জিযায়ে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদুল কাওনাইন, সাইয়্যিদুন নাস, মহাসম্মানিত ইমাম, সাইয়্যিদুনা হযরত সাইয়্যিদুল উমাম আল আউওয়াল আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
তিনি সিবতু সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম, লখতে জিগারে সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম, লখতে জিগারে ওলীয়ে মাদারযাদ, আওলাদে রসূল, উম্মুল উমাম, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা কা’বা আলাইহাস সালাম, লখতে জিগারে ওলীয়ে মাদারযাদ, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদাতুনা হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম, লখতে জিগারে ওলীয়ে মাদারযাদ, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত হাদিউল উমাম আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
তিনি পবিত্রতম বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের অব্যবহিত পরেই সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা কা’বা আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন: “একজন সাইয়্যিদুল উমাম আল আউওয়াল আলাইহিস সালাম তিনি উনার পবিত্রতম বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ পবিত্রতম নববী ধারায় হক্ব মত-পথ প্রদর্শন ও বাস্তবায়ন এবং কুল-কায়িনাতবাসীর হাক্বীক্বী হিদায়েত ও নছীহতের অমিয় ধারা অক্ষুণœ রাখার জন্য, সুন্নতী তর্জ-তরীক্বায় দুনিয়ায় সম্মানিত দ্বীন-ইসলাম আবাদের জন্য, বাতিল ধ্বংস করে হক্ব প্রতিষ্ঠার জন্য এবং মহাসম্মানিত খিলাফত আলা মিন হাজিন নুবুওওয়াহ হাক্বীক্বীভাবে পরিচালনায় মুবারক আঞ্জামদানের জন্য সাইয়্যিদুনা হযরত সাইয়্যিদুল উমাম আলাইহিস সালাম উনার পবিত্রতম আবির্ভাব। সুবহানাল্লাহ!
মূলত, তিনি পবিত্রতম নববী উদ্যোনের সুরভিত গোলাপ। যে উৎকর্ষ ও মহিমায় বিজয়-মুকুট মাথা মুবারকে নিয়ে উনার মুবারক আবির্ভাব, তাতে বাতিলের পরাজয় এবং সম্মানিত দ্বীন-ইসলাম উনার পুনর্জাগরণ ও হাক্বীক্বী আবাদ অবশ্যম্ভাবিী। সুবহানাল্লাহ!
তীক্ষè সমঝ, গভীর মনোযোগ ও সূক্ষ্ম অনুধ্যানে বুঝে নেয়া চাই যে, সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা কা’বা আলাইহিস সালাম এবং উনার পূত-পবিত্র, মহাসম্মানিত হযরত আহাল পাক শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা নূরে মুজাসসাম, মাশুকে মাওলা, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহা সম্মানিত আখাছছুল খাছ আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত। উনাদের মাধ্যমেই ক্বিয়ামত অবধি হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের পবিত্রতম আগমন, উনাদের পর্যায়ক্রমিক মুবারক বিদ্যমানতা এবং পবিত্রতম নববী আদর্শে মহান আল্লাহ পাক সুবহানাহু ওয়া তায়ালা এবং উনার প্রিয়তম রসূল, ছাহিবু কা’বা কাওসাইনী আও আদনা, ছাহিবুল ওহী ওয়াল কুরআন, মাশুকে মাওলা, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের উদ্দিষ্ট যাবতীয় কার্যক্রম সম্পাদনের মুবারক ক্রমধারা অব্যাহত থাকবে। সুবহানাল্লাহ!
ওলীয়ে মাদারযাদ, আওলাদে রসূল, সাইয়িদুনা হযরত সাইয়্যিদুল উমাম আল আউওয়াল আলাইহিস সালাম উনার শান-মান এবং মর্যাদা ও মাক্বাম আমাদের সমঝ ও উপলব্ধির সীমাহীন উচ্চতায়। সীমিত আক্বলে আমরা শুধু এতোটুকু জানি ও বুঝি যে, ক্বিয়ামত অবধি দুনিয়ায় মহা-সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মুবারক আগমন এবং সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা কা’বা আলাইহিস সালাম উনার অপ্রতিরোধ্য তাজদীদসহ সকল কাজের ক্রমবর্ধিষ্ণু যে মুবারক ধারা অব্যাহত থাকবে, সাইয়্যিদুনা হযরত সাইয়্যিদুল উমাম আল আউওয়াল আলাইহিস সালাম তিনি সে মুবারক ক্রমধারারই অনুপম বিকাশ। সুবহানাল্লাহ! মুবারক বিষয়টি সূক্ষ্ম হলেও সমঝদার মানুষের বুঝতে কষ্ট হওয়ার কথা নয়।
সাইয়্যিদুনা হযরত সাইয়্যিদুল উমাম আল আউওয়াল আলাইহিস সালাম তিনি আমাদের ঈমান। বিশুদ্ধ আক্বীদায় উনাকে মুহব্বত করা, উনার তা’যীম-তাকরীম করা এবং উনার খিদমত মুবারক করা ফরযের উপর ফরয।

*****************
১১. সুলত্বানুল আউলিয়া, মাহবূবে আ’লা, মাশুকে মাওলা,  আওলাদু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
সাইয়্যিদুনা হযরত সাইয়্যিদুল উমাম আল আউওয়ালআলাইহিস সালাম উনার মহান শান-মান বুযুর্গী সম্মান মুবারক।

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
ومن الناس من يشرى نفسه ابتغاء مرضات الله والله رؤف بالعباد
অর্থ: “মানব জাতির মধ্যে এমন এক শ্রেণীর লোক রয়েছেন, যারা মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি মুবারক হাছিলের জন্য স্বীয় জীবনকে উৎসর্গ করে দেন। মহান আল্লাহ তিনি উনার বান্দাদের প্রতি অত্যন্ত দয়ালু, অনুগ্রহশীল।” (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ২০৭)
মহান আল্লাহ পাক উনার সকল সৃষ্টির মধ্যে মানুষ হচ্ছেন আশরাফুল মাখলূক্বাত, সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব। সেই আশরাফুল মাখলূক্বাতের মধ্যে আশরাফ বা আখাছছুল খাছ সম্মান-মর্যাদার অধিকারী রয়েছেন অনেক মানুষ। হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম এবং হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ উনারা উনাদের মধ্যে আখাছছুল খাছ, আশরাফ বা সর্বাধিক শ্রেষ্ঠত্বের অধিকারী তথা বিশেষ শ্রেণী।
ইবাদত-বন্দেগী, যিকির-ফিকির, রিয়াজত, মাশাক্কাত করলে মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত পেয়ে ওলীআল্লাহ হওয়া যায়। কিন্তু হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম হওয়া যায় না। হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের মাক্বাম মুবারকও হাছিল করা সম্ভব নয়। একইভাবে ওলীআল্লাহ উনাদের মধ্যে আখাছছুল খাছ বা চূড়ান্ত পর্যায়ের ওলীআল্লাহও হওয়া যায় না। আখাছছুল খাছ হওয়ার বিষয়টি মহান আল্লাহ পাক উনার খাছ মনোনয়ন বা কবুলের সাথে সংশ্লিষ্ট। তবে উনাদের সাথে নিসবত-তায়াল্লুক রাখলে, উনাদেরকে সম্মান ও মুহব্বত করলে, খিদমত মুবারকে আঞ্জাম দিলে উনাদের মাক্বাম মুবারকের হিসসা বা অংশ লাভ করা যায়, উনাদের সাথে থাকা যায়।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ইরশাদ মুবারক সেদিকেই দালালত করে-
الـمرء مع من احب
অর্থ: “যিনি যাকে মুহব্বত করেন উনার সাথেই উনার অবস্থান।” (বুখারী শরীফ)
সঙ্গতকারণে সেই আখাছছুল খাছ (বিশেষের মধ্যে বিশেষ) ব্যক্তিত্বগণের পরিচয় জানা আবশ্যক। সাথে সাথে মুহব্বত রাখা, সম্মান প্রদর্শন করা, খিদমত মুবারকে উনাদের সাথে আঞ্জাম দেয়া বান্দা ও উম্মতের দায়িত্ব কর্তব্য। উনাদের বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের দিন, বিছালী শান মুবারক প্রকাশের দিন এবং অন্যান্য স্মৃতি বিজড়িত দিনগুলো খাছ রহমত, বরকত, সাকীনা হাছিলের মোক্ষম সময়। আকলমান্দ, চক্ষুষ্মান লোকজন তা সহজেই অনুভব করতে পারেন। সুমহান ১১ই যিলক্বদ শরীফ একটি বিশেষ দিন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সুলত্বানুল আরিফীন, গাউছে ছাক্বালাইন, কুতুবুল আকতাব, সাইয়্যিদুনা হযরত শায়েখ মা’রূফ কারখী রহমতুল্লাহি আলাইহি। তিনি পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার পর একজন বুযুর্গ ব্যক্তি উনাকে স্বপ্নে দেখলেন। জিজ্ঞাসা করলেন, হে মহান শায়েখ রহমতুল্লাহি আলাইহি! আপনি কেমন আছেন? তিনি বললেন, মহান আল্লাহ পাক আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। শ্রেষ্ঠত্বের বিশেষ মাক্বাম মুবারক হাদিয়া করেছেন। জিজ্ঞাসা করা হলো, কিভাবে এমন মর্যাদা-মর্তবার আসন মুবারক লাভ করলেন। তিনি বললেন, বিছাল শরীফের পর আমাকে মহান আল্লাহ পাক উনার সামনে হাজির করা  হলো। তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে বললেন, হে মা’রূফ কারখী রহমতুল্লাহি আলাইহি! আপনার একটি আমল আমার খুবই পছন্দ হয়েছে। সেই আমলের কারণে আমি আপনাকে ক্ষমা করতঃ আমার আখাছছুল খাছ বান্দাগণের অন্তর্ভুক্ত করেছি। সুবহানাল্লাহ!
আমি বললাম, হে বারে ইলাহী! কোন সেই আমল? তিনি বললেন, আপনি সেদিন রোযা অবস্থায় ছিলেন। বাজারের নিকটে এক ভিস্তিওয়ালা (পানি বিক্রেতা), সে এই বলে পানি বিক্রি করছিল যে, যে ব্যক্তি আমার থেকে পানি কিনে পান করবে মহান আল্লাহ পাক পাক তাকে ক্ষমা করে দিবেন। সম্মানিত মা’রিফাত-মুহব্বত সন্তুষ্টি মুবারক দান করবেন। আর আপনি সেই ভিস্তিওয়ালা (পানি বিক্রেতার) কথা বিশ্বাস করে দিনের শেষাংশে রোযা ভেঙ্গে পানি পান করলেন। আপনার এই আমল আমার খুবই পছন্দ হয়েছে। সুবহানাল্লাহ!
সবার জীবনে অসংখ্য অগণিত বার এরূপ সুযোগ এসে যায় কিন্তু কতজন মানুষ সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পারে তা বলা কঠিন।
উপরোল্লিখিত পবিত্র আয়াত শরীফে মহান আল্লাহ পাক তিনি যে সকল মহান ব্যক্তিত্বের কথা ও উনাদের আমল তথা কর্মপদ্ধতির কথা বর্ণনা করেছেন উনারা হচ্ছেন সেই আখাছছুল খাছ ব্যক্তিত্বগণের অন্তর্ভুক্ত।
১৪৩৫ হিজরী সনের ১১ যিলক্বদ শরীফের সেই দিনে অনুরূপ একজন আখাছছুল খাছ মহান ব্যক্তিত্ব দুনিয়ার যমীনে তাশরীফ মুবারক এনেছেন। মাবনজাতির হিদায়েতের কান্ডারী, মুক্তিদাতা, আলোকবর্তিকা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। ইতোমধ্যে উনার পবিত্র হিদায়েতের মুবারক নূর লাভে ধন্য হয়েছেন অসংখ্য-অগণিত মানবকুল। যাঁরা মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মনোনীত উনারা প্রত্যেকেই সেই নূর মুবারকের হিস্সা পাচ্ছেন। তা উপলব্ধিও করতে পারছেন সন্দেহাতীতভাবে। যে বা যারা উনার পরিচয় মুবারক লাভ করেছেন, হুসনে যন বা সুধারণা রাখছেন, মুহব্বত ও তা’যীম-তাকরীম করেছেন তারা সবাই সৌভাগ্যবানগণের অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
তিনিই হচ্ছেন মাহবূবে আ’লা, মাশুকে মাওলা, সুলত্বানুল আউলিয়া, সাইয়্যিদুনা হযরত সাইয়্যিদুল উমাম আল আউওয়াল আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ! উনার মুবারক নাম আমাদের জানা নেই। তিনি উনার সঙ্গতিপূর্ণ লক্বব মুবারক “সাইয়্যিদুল উমাম” তথা সমস্ত উম্মতের সাইয়্যিদ বা সরদার নামে আমাদের কাছে সূচনালগ্ন থেকেই পরিচিত।
খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইউস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, হাকিমুল হাদীছ, ইমামুল উমাম, আওলাদু রসূলিল্লাহ রাজারবাগ শরীফ উনার মহান মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি হচ্ছেন উনার সম্মানিত নানাজান আলাইহিস সালাম। সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, ক্বায়িম-মাক্বামে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন, উম্মুল আশিকীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন উনার সম্মানিতা নানীজান আলাইহাস সালাম।
সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, ক্বায়িম-মাক্বামে হযরত উম্মু কুলছূম আলাইহাস সালাম, নিবরাসাতুল উমাম, সাইয়্যিদাতুনা হযরত শাহযাদী ছানী ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন উনার সম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম। আর কুতুবুল আলম, বাহরুল উলূম, আশরাফুল আউলিয়া, ক্বায়িম-মাক্বামে হযরত উছমান যুননূরাইন আলাইহিস সালাম, হাদিউল উমাম সাইয়্যিদুনা হযরত শাহদামাদ ছানী ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি হচ্ছেন উনার সম্মানিত পিতা আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
জীবনের সূচনালগ্ন থেকে সাইয়্যিদুল উমাম লক্বব মুবারকে মশহুর বা পরিচতি লাভ করা উনার বিশেষ কারামত মুবারকের অন্তুর্ভুক্ত। তিনি যেন রোজে আযল থেকেই এই লক্বব মুবারকের অধিকারী ছিলেন। দুনিয়াতে তাশরীফ মুবারক আনতে না আনতে সবার কাছে অতি সম্মানের সাথে, মুহব্বতের সাথে সবার মুখে মুখে এই লক্বব মুবারক উচ্চারিত হওয়া সেদিকেই দালালত (নির্দেশ) করে।
তিনি দুনিয়ার যমীনে তাশরীফ আনার পূর্বে মু’মিন মু’মিনাগণ স্বপ্নে দেখেছেন যে, পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম স্থান পবিত্র রাজারবাগ দরবার শরীফে একজন জান্নাতী ইমাম তাশরীফ মুবারক আনবেন। হাফিয মুহম্মদ মাছুম বিল্লাহ ভাই তিনি তো খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনাকে উনার স্বপ্নের কথা বলেই ফেললেন। তিনি সব শুনে উনার মাথা মুবারক নেড়ে সম্মতি জ্ঞাপন করলেন। মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার স্বীকৃতি জ্ঞাপন ও পবিত্র যবান মুবারকে উচ্চারিত জান্নাতী ইমাম তার সবচেয়ে বড় ও নির্ভরযোগ্য দলীল। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই, একথা বলার প্রয়োজন পড়ে না যে, যারাই উনাকে মুহব্বত করবেন, খিদমত করবেন, সম্মান করবেন, তায়াল্লুক, নিসবত রাখবেন উনারা সবাই আখাছছুল খাছ ব্যক্তিত্বগণের অন্তর্ভুক্ত হবেন। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি ১১ই যিলক্বদ শরীফের এই দিনে আমাকে এবং পাঠক-পাঠিকাসহ সবাইকে উনার সকল প্রকার খিদমত মুবারকের আঞ্জাম দেয়ার তাওফীক দান করুন, কবুল করুন। আমীন।

*****************
ঈদে মীলাদে শাহ নাওয়াসা আউওয়াল, ঈদ মুবারক


ঈদে মীলাদে শাহ নাওয়াসা আউওয়াল, ঈদ মুবারক!
ঈদে মীলাদে শাহ নাওয়াসা আউওয়াল, ঈদ মুবারক!!

আহালী বাগানে ফুল ফুটেছে,
জান্নাতী সুবাসে ভূলোক মেতেছে,
আশিকীনে মাওলা উনার যিকির জপছে।

ঈদে মীলাদে শাহ নাওয়াসা আউয়াল, ঈদ মুবারক!

 হেলালী শানেতে নূর চমকিছেন,
মহান আহাল পাক উনাদের,
নয়নের মণি এসেছেন।

ঈদে মীলাদে শাহ নাওয়াসা আউওয়াল, ঈদ মুবারক!

জিন-ইনসানে সবে আজি,
মীলাদে মাতোয়ারা রহি,
খুশির বানেতে যমীন ভাসছে।

ঈদে মীলাদে শাহ নাওয়াসা আউওয়াল, ঈদ মুবারক!

ব্যাকুলতা ভেদে জান্নাত কাঁদছে,
যমীনের মাঝে আজ দেখ
সুন্নতী ভূষণে হাসছে।

ঈদে মীলাদে শাহ নাওয়াসা আউওয়াল, ঈদ মুবারক!

নব ধ্বনিতে মুখরিত হচ্ছে,
আজ ঐ কারবালার আযান,
তাকবীর ধ্বনিত বাংলারই আসমান।

ঈদে মীলাদে শাহ নাওয়াসা আউওয়াল, ঈদ মুবারক!

রসূল পাক উনার লখতে জিগার,
মোদের শাহ নাওয়াসা ক্বিবলাজান,
গোলামরা আজি প্রস্তুত হতে কুরবান।

ঈদে মীলাদে শাহ নাওয়াসা আউওয়াল, ঈদ মুবারক!
ঈদে মীলাদে শাহ নাওয়াসা আউওয়াল, ঈদ মুবারক!

**************
মুজাদ্দিদ বাগানে উদয় শাহ নাওয়াসা আউওয়াল জান্নাতী মেহমান

মুজাদ্দিদ বাগানে উদয়
রসূলী আওলাদ মহান
নিবরাসাতুল উমাম দিলেন
শাহ নাওয়াসা আউওয়াল জান্নাতী মেহমান ॥
ইয়া আক্বা নাওয়াসা আউওয়াল আলাইহিস সালাম

আসমান যমীন নব রূপে
খোদা তায়ালা আজ সাজান
জিন-ইনসান মালায়িক
মীলাদী মাহফিলে শরীকান ॥

একাদশ যিলক্বদী চাঁদে
আলোকিত করেন ভুবন
ওলী, আব্দাল, কুতুব, দরবেশ
নিসবত পেতে হাজিরান ॥

মামাজানের আদরি ফুল
শান শওকতে রহেন অতুল
নানা-নানীজানের ছোঁয়ায়
খোদায়ী ইলমে বলীয়ান ॥

কুল-কায়িনাত আনন্দে
রহেন খুশির আহলাদে
নাওয়াসা রহেন সব হৃদে
হলো ঈদের আয়োজন ॥

বিলাদতে সাইয়্যিদুল উমাম আল আউওয়াল
কায়িনায় ঈদের আঞ্জাম
করি সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ পালন
মোরা সকল মুরীদান ॥
********************************************
ইয়া নূরী আক্বা

নূরী আক্বা এসেছেন,
নূর নিয়ে এসেছেন।

তাই দেখে আজ সকল গোলাম খুশি প্রকাশ করতেছেন।

আছ-ছলাতু আস সালামু আলাইকুম ইয়া আক্বা ক্বিবলা
আছ-ছলাতু আস সালামু আলাইকুম ইয়া শাহে ক্বিবলা।

উনার কারণে  খুশি হলো চন্দ্র সূর্য তারকা
উনার কারণে লৌহ কলম সবাই পেল মর্যাদা।

দোজাহানের ইমাম আক্বা খলীফাতুল মুসলিমীন
আরশ পাকে ফুটেছে আজ নাওয়াসাজীর শান-মান।

ওরে মুসলিম পড় সবাই নাওয়াসাজীর মীলাদ
জান্নাতী ইমাম এলেন সবাই জানাই জিন্দাবাদ।

মারহাবা মারহাবা হে শাহে দোআলম
মারহাবা, মারহাবা হে নূরী জান্নাতী ইমাম।

ধুম লেগেছে চারিদিকে নাওয়াসাজীর মীলাদে
ধুম লেগেছে আরশ পাকে তাকবীরে জিন্দাবাদ।

*********************************************
ইমামী ভূষণ

ঐ আরাবী, শানে নববী ইমাম সাইয়্যিদী
তোহফায়ে মাদানী কোলে ছানী শাহযাদী।

নিয়ে ইমামী ভূষণ, ছানী দামাদ নীড়ে
আসেন চাঁদকা টুকরা আহালী নীড়ে ॥

কুল-কায়িনাতের অপেক্ষা দেখ অধিরে
আসবেন শাহী মেহমান মুবারক কোল জুড়ে।

মুবারক সুন্নতী অভিরুচি পাক হুজরা ঘিরে
মাতাজী গড়েন অপূর্ব ক্ষণ মীলাদী নূরে।

অভূতপূর্ব মীলাদ শরীফ ধ্বনিত বারে বারে
হাজির ওই স্বয়ং রসূল পাক স্বপরিবারে ॥

উম্মুল বাশার থেকে উম্মু রুহিল্লাহ হাজিরে
হুজরাপুরে যেন খুশির উল্লাস উপচে পড়ে।

তা’যীম-তাকরীমে অপেক্ষমাণ দুরূদ পড়ে
কাতারে কাতারে মুরীদ-ভক্তকুল সমস্বরে।

শুভাগমন শাহ নাওয়াসা ওই ইমামী নূরে
সসম্মানে মামদূহজী কোলে নেন আদরে।

রহমতী নব আভায় সজীব দেন করে
কায়িনাহ আবৃত করেন করমী চাদরে।

শ্রদ্ধার উঁচু আসন পেতে হৃদ গভীরে
সাইয়্যিদুল উমাম আল আউওয়াল! প্রকম্পিত তাকবীরে।
****************************************************
‘জান্নাতী ইমাম’ তিনি এসেছেন

এসেছেন! এসেছেন!
‘জান্নাতী ইমাম’ তিনি এসেছেন।

মামদূহজীর গুলশানে - মহাশানে কলতানে
জান্নাতী পাখা মেলে - আসেন নূর ধরাতে।

মামদূজীর নূরানীবাগে - আম্মাজীর মুবারক হাতে
ছানী মালিকার কোলে - হাদিউল উমাম নসবে।

খলীফাতুল উমাম শানে - সাইয়্যিদাতাল উমাম প্রানে
শাফিউল উমাম হৃদে - মালিকা উনারই আদরে।

ইমামজী আগমণ করে - বর্ষেণ রহমত অঝোরে
উনাতে সিক্ত সবে - রুজু হই উনারাই নজরে।

সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ ক্বায়িমে - সকল বাতিল নিধনে
উম্মতের রাহবার হয়ে - সাইয়্যিদুল উমাম আল আউওয়াল লক্ববে।

মারিফাত নাজাতী তরী - মোরা আপনাকে যে স্মরি
কহি ক্বদম পাকে - রাখুন আমায় গোলাম করে।

এসেছেন-
খোদায়ী মেহেমান - এসেছেন!
হাবীবী আরমান - এসেছেন!
মুর্শিদী রায়হান - এসেছেন!
আম্মাজীর সুলত্বান - এসেছেন!
আহালী ইন’আম - এসেছেন!
জান্নাতী ইমাম - এসেছেন!

*****************************
জান্নাতী মেহমান

পবিত্র ১১ই যিলক্বদ শরীফ ধরার বুকে
তাশরীফ নিলেন এক সুমহান জানৎœাতী মেহমান।
উনার বিলাদত শরীফে ইস্তিকবাল জানান
জিন-ইনসান এবং সকল হুর-গেলমান।

চারিদিকে খুশির ফোয়ারা ও আনন্দের নবধারা
উনার আগমনে আনন্দিত সকল মুরীদ-সালিক-সালিকারা।

উনি কে?
কে সেই জান্নাতী সুলত্বান?
তিনি হলেন সাইয়্যিদুল উমাম আল আউওয়াল আলাইহিস সালাম
সম্মানিত জান্নাতী মেহমান। (সুবহানাল্লাহ)

তিনি মামদূহজী উনার লখতে জিগার
আম্মাজী উনার নয়নের মণি জান্নাতী ফোয়ারা
শাহযাদী ছানী শাহদামাদ ছানী উনাদের কলিজার টুকরা
উনার শান-মান বুযুর্গী-সম্মান ওয়ারাউল ওয়ারা।

কাফির-মুশরিকদের সব কষাঘাত
সমূলে তিনি করবেন নিপাত।
হে মোদের জান্নাতী ইমাম!
অধমা আপনায় জানাই বেশুমার ছলাত!

সম্মানিত আহলে বাইত উনাদের পবিত্র নূর
মহান আল্লাহ পাক-রসূল পাক উনাদের নাজে ভরপুর
আপনার শানে পড়ি মীলাদ
আপনায় জানাই মুবারকবাদ!

হে সাইয়্যিদুল উমাম আল আউওয়াল আলাইহিস সালাম!
কি লিখবো আপনার মুবারক শান
ক্ষমা করুন এই অধমারে
কবুল করুন মুবারক ক্বদমে আবাদুল আবাদান।

*************************************
শাহী খান্দানে নাওয়াসা আউওয়াল

শাহী হেরেমের ইলাহী নাজ
আওলাদে শাহযাদী ছানী -
এলেন হক্বের সওগাত আনি
মহানন্দে ধরণী আজ।

কোমল দেহ, কমল সাজ
কোমলতা চায় দিশেহারা উম্মত -
হে পবিত্র শিশু! দিন হিম্মত
ঘুচাতে বাতিলের রাজ।

হে খোদ মাহবুবে তাজ
রহমত ঘিরে আপনার শীরে -
নিয়ামত বীনে যাব না ফিরে
কাঙ্গাল কেবল চায় আপনার মিরাজ।

রাজারবাগের রাজাধিরাজ
আওলাদে শাহদামাদ ছানী
- নকশায়ে নবী, ফযল এ লোহানী
বঙ্গ মুলুকের মামদুহি শিরাজ।

আজ জ্বলে উঠুক সকল সিরাজ
ভূলে যাক সবে দ্বন্দ্ব সংঘাত
- দুঃখ কষ্ট যাক নিপাত
জোরসে উঠুক তাকবীরের আওয়াজ।

শাহী হেরেমের ইলাহী নাজ
আওলাদে শাহযাদী ছানী
আপনি হক্বের সওগাত জানি
মহা আনন্দ ধরণীতে আজ।

কোমল দেহ, কমল সাজ
কোমলতা চায় দিশেহারা উম্মত
হে আওলাদে রসূল, দিন হিম্মত
ঘোচাতে আজ বাতিলের রাজ।



হে খোদ মাহবুবী তাজ
রহমত রয় আপনার শীরে
নিয়ামত বিনে যাবনা ফিরে।
কাঙ্গাল কেবল চেয়ে আপনার মি’রাজ।

রাজারবাগের হে রাজাধিরাজ
আওলাদে শাহদামাদ ছানী
নকশায়ে নবী, ফযল এ লোহানী
বঙ্গ মুলুকের মামদূহী সিরাজ।

আজ জ্বলে উঠুক সকল সিরাজ
ভুলে যাক সবে দ্বন্দ্ব সংঘাত
দুঃখ কষ্ট যাক নিপাত।
জোরসে উঠুক তাকবীরের আওয়াজ।
******************************
ঈদের আনজাম
জান্নাতে ঈদের আনজাম
ধরাতেও আলোড়ন
 নেন তাশরীফ সাইয়্যিদুল উমাম আল আউওয়াল
খুশিতে তাই ভুবন।

ইমামুনা মুবারক শান
হাবীব পাকের ভূষণ
শাহ নাওয়াসা নিসবতে কারাম
সমুচ্চে রয় আসন।

ঈদ করেন খলিক্ব মালিক
আরশে আ’লায় গুঞ্জন
খাকে মাদীনায় ঈদের জোয়ার
 হাবীবজী করেন সিঞ্চন।

হুর ফিরিশতার ক্বাছীদা ধ্বনি
জুড়ায় মন মনন
মাখুলকাতের সিফত ছানায়
হচ্ছেন তিনি বরণ।

মালিক্বা ছানীর মুবারক হুজরায়
ঈদের মহা আয়োজন
মহামতি নূরের জ্যোতি
করেন তিনি পদার্পণ।

দুরূদ মাখা শীতল বাতাস
বইছে আজ যেমন
তেমন করে আলো বিলায়
রবি শশীর কিরণ।

হাজার ফুলের মালা গেঁথে
ইনতিজারে ওলীগণ
মুবারক ছোহবত নূরী দিদার
করেন উনারা অর্জন।

আহলান-সাহলান মারহাবান
 হে আউলিয়া সুলত্বান
শুভেচ্ছা আর স্বাগতম
সাদরে করেন গ্রহণ।

****************

শাহ নাওয়াসা আউওয়াল জালওয়া নুমা
সাইয়্যিদুল উমাম আল আউওয়াল শাহানশাহ
সাইয়্যিদী নসবে মুসকান
জান্নাতী ইমাম শাহে আক্বা
যাহরায়ী নূরে চমকান।

মামদূহী বাগে ঈদ লাগে
দোজাহানে খুশির বান, মওলা
ঈদে ঈদে ইশক জাগে
তাশরীফে আক্বা আলিশান।

আরশ হতে জান্নাত হতে
হুর-মালায়িক হাজিরান, মওলা
ত্বলায়াল-ইস্তিকবাল জানাতে
আগুয়ান আশিক গোলামান।

শাহী  মাহফিলে শামিল হলে
মিলে মামদূহী নাজরান, মওলা
ছানী মালিকা উনার কোলে
দোলে মামদূহী মারজান।

মাদানী  ইশকে গরক থেকে
গোলামীতে হতে অনির্বাণ, মওলা
ইরহাম ওয়ালা জাত পাকে
ছলাত-সালাম জানাই দায়িমান।

সাইয়্যিদী নূরে জগতজুড়ে
আলোর ঝিলমিল অফুরান, মওলা
ইমামী রোবের ভয়ে ডরে
বাতিল কুফফার সবে পেরেশান।

আপনার মহিমা আপনার উপমা
কি কহিব ক্বাছিদ-কাতিবান, মওলা
কবে দেখবো জালওয়া নুমা
নূর চুম্বনে হবো ইতমিনান।
**********************

শাহ নাওয়াসা আউওয়াল রসূলী ফুল


শাহ নাওয়াসা আউওয়াল রসূলী ফুল
মামদূহ পাক উনার সন্তুষ্টি
আপনি করুন মোদের কবুল।

ছানী শাহযাদীজান উনার জান
ছানী শাহদামাদ উনার প্রাণ
হন আপনি মোদের ঈমান।

আনন্দে আলোকিত নূরী হুজরা
সালেক সালিকারা আজ মাতোয়ারা
নব জীবন পেল এই ধরা।

পেতে ইলাহী রাযী
নিতে রসূলী নাজি
দরবারে এসো আজি।

আঁধার মিটাতে
বাতিল বিনাশে
তাশরীফান ধরাতে।

আম্মাজী উনার গোলাম বানান
হে আক্বা উনার নূরী আওলাদ
কবুল করুন গোলামের ফরিয়াদ।

১১তম মাস উনার ১১তম দিন
জান্নাতী মেহমান হলেন উড্ডীন
 গোলামী করার তাওফীক দিন।

*************************
কুল কায়িনাতে ঈদ ঈদ ধ্বনি

কুলকায়িনাতে ঈদ ঈদ ধ্বনি
বিলাদতে আওলাদে হাবীবী
নব সাজে আয়োজনের খুশি
করছেন ফেরেশতা ও খোদ ইলাহী।

ধরার বুকে নববী আভাস
করিতে সুন্নাহরি আবাদ
দিতে হাবীবী নাজ
তাশরীফ আনেন জান্নাতী মেহমান।

করিতে কুফরীকে বিলীন
জাগাতে জজবায়ে দ্বীন
দিতে ইলাহী ও হাবীবী দিদ
আগমন করেন আওলাদে রসূলীন।

ধ্বংস করিতে যুলুমের অন্ধকার
ছড়িয়ে দিতে ইসলামী প্রভাত
তাশরীফ নেন ছানী মালিকা উনার আওলাদ
সৃষ্টিরাজি জানাতে ব্যাকুল ইস্তেকবাল।

তিনি ইলাহী কুদরত
রসূলী নিয়ামত
মুজাদ্দিদী কারামত
আওলাদে হাবীবী আযমত।

****************************************************************

১৭. ইমামুল আউলিয়া, হাবীবে রহীম, মাহবূবে রহমান, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র সাওয়ানেহ উমরী মুবারক


পবিত্র নাম মুবারক ও পরিচিতি মুবারক:
ইমামুল আউলিয়া, হাবীবে ওয়া মাহবুবে রহমান, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছামিন মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আহলু বাইত শরীফ উনাদের ৮ম ইমাম। সুবহানাল্লাহ! উনার মুবারক নাম হযরত আলী আলাইহিস সালাম। কুনিয়াত আবুল হাসান। রিদ্বা উনার অন্যতম লক্বব মুবারক বা উপাধি। সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাবি’ আলাইহিস সালাম তিনি বর্ণনা করেন, আমি আমার কুনিয়াত মুবারক হযরত ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম উনাকে দিয়েছি। উনার মুবারক নাম উনার পিতা ‘মামুনুর রিদ্বা’ রেখেছিলেন এবং উনাকে বেলায়েত পদেরও ওসিয়ত করেছিলেন। তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার নাম ‘আর রিদ্বা, রাখেন। কেননা, তিনি আকাশে মহান আল্লাহ পাক উনার রিদ্বা (সন্তুষ্টি) এবং পৃথিবীতে রসূলে মকবুল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার রিদ্বা ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি এরূপ বৈশিষ্ট্যের অধিকারী ছিলেন যে, তিনি আপন মিত্রদের ন্যায় শত্রুদের প্রতিও সন্তুষ্ট থাকতেন। উনার সম্মানিত পিতা সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাবি’ আলাইহিস সালাম তিনি বলতেন, আমার সম্মানিত আওলাদকে তোমরা রিদ্বা বলে ডেকো। তিনি যখন উনাকে সম্বোধন করতেন, তখন বলতেন, হে আবুল হাসান আলাইহিস সালাম!

পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ:
ইমামুল আউলিয়া, হাবীবে ওয়া মাহবুবে রহমান, যিকরানে ক্বিবলায়ে জামীয়ে আহলিল ইসলাম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ সম্পর্কে- খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন- আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম তিনি পবিত্র ১১ই যিলক্বদ শরীফ ইয়াওমুল আহাদ ১৪৮ হিজরী সনে পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। আর এটাই হচ্ছে মু’তাবার বা নির্ভরযোগ্য মত। সুবহানাল্লাহ!

সম্মানিত পিতা-মাতা:
ইমামুল আউলিয়া, হাবীব ওয়া মাহবুবে রহমান, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম উনার পিতা, ইমামুল মুসলিমীন, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাবি’ আলাইহিস সালাম। উনার সম্মানিত মাতা উনার অনেক নাম মুবারক রয়েছে- ওরভী, নাজমা, শাম্মানা ও উম্মুল বানীন আলাইহাস সালাম। (শাওয়াহিদুন নুবুওয়াত-২৬১, মিরায়াতুল আসরার-২১৫, ইকতিরাসূল আনওয়ার-১৪৮, সাফীনাতুন আউলিয়া-৪০)
বর্ণিত আছে, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাবি’ আলাইহিস সালাম উনার মা সাইয়্যিদাতুনা হযরত হামীদা আলাইহাস সালাম উনার খাদিমাহ অর্থাৎ মুহব্বতের পাত্রী ছিলেন হযরত নাজমা আলাইহাস সালাম। উনার মা এক রাতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে স্বপ্নে দেখেন যে, তিনি উনাকে বলছেন, হযরত নাজমা আলাইহাস সালাম উনার শাদী মুবারক আপন আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাবি’ আলাইহিস সালাম উনার সাথে সম্পন্ন করুন। কেননা, উনার রেহেম শরীফ থেকে এক সম্মানিত আওলাদ সন্তান  পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করবেন, যিনি সমস্ত দুনিয়ার সকলের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হবেন। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিতা মাতা সাইয়্যিদাতুনা হযরত নাজমা আলাইহাস সালাম তিনি বর্ণনা করেন, ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম তিনি আমার পবিত্র রেহেম শরীফ-এ অবস্থান করাকালীন সময়ে আমি কোন প্রকার বোঝা বা কষ্ট অনুভব করিনি। ঘুমের সময় আমার রেহেম শরীফ থেকে ‘সুবহানাল্লাহ’ ও ‘আল্লাহ’ আল্লাহ’ শব্দ শুনা যেত। সুবহনাল্লাহ! এতে আমি জাগ্রত হয়ে যেতাম। কিন্তু এরপর কোন আওয়াজ শুনতাম না। যমীনে তাশরীফ আনার সময় তিনি আপন মুবারক হাতদ্বয় মাটিতে এবং মুবারক মুখম-ল আকাশের দিকে রেখে মুবারক ঠোঁট নাড়তে থাকেন যেমন কথা বলা ও দোয়া করার সময় নাড়া হয়। সুবহানাল্লাহ!
ইমামুল মুসলিমীন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাবি’ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত আছে। তিনি বলেন, আমি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সাথে সাইয়্যিদুনা ইমাম হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম উনাকে মুবারক স্বপ্নে দেখেছি। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, আপনার আওলাদ ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার বিশেষ নূর মুবারক থেকে সৃষ্টি। তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার রহস্যবলী বর্ণনা করবেন। উনার অভিমত সঠিক হবে। এতে ভুলত্রুটি থাকবে না। তিনি হাকিম বা বিজ্ঞ হবেন। উনার মজলিশে ইমাম-মুজতাহিদ, আউলিয়ায়ে কিরামসহ দার্শনিক উপস্থিত থাকবেন। সুবহানাল্লাহ!
আশিকে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুর রহমান মোল্লা জামী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, কিতাবসমূহে যা লেখা হয়েছে এবং মুখে মুখে যা প্রচলিত আছে, তা সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম উনার সীমাহীন ফযীলত ও গুণাবলীর সামান্য অংশ মাত্র। বলতে পারেন যে, মহা-সমুদ্র থেকে একটি বিন্দুমাত্র। সুবহানাল্লাহ! (শাওয়াহিদুন নুবুওওয়াত-২৬১, ইক্বতিরাসুল আনওয়ার-১৪৮, মিরায়াতুল আনওয়ার-২১৫, সাফীনাতুল আউলিয়া-৪০)

কতিপয় কারামত মুবারক:

১। আব্বাসী শাসক মামুনুর রশীদ যখন আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম উনাকে নিজের উত্তরাধিকারী মনোনীত করেন, তখন থেকে যখনই তিনি মামুনুর রশিদ-এর শাহী দরবারে যেতেন, খাদিমরা উনাকে অভ্যর্থনা জানাতেন এবং মামুনের দরজায় ঝুলন্ত পর্দা উঠিয়ে দিতেন, যাতে তিনি সহসাই অন্দর মহলে প্রবেশ করতে পারেন। এক পর্যায়ে কিছু ক্ষমতালিপ্সু, লালসা পূজারী ব্যক্তির মনে হিংসার সৃষ্টি হল। একদিন যখন আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা, হযরত ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম তিনি আগমন করলেন, তখন সেই ব্যক্তিরা বসাবস্থায় ছিল। তারা উনাকে দেখে স্বতঃস্ফূর্তভাবে দাঁড়াল এবং অভ্যর্থনার জন্যে পর্দা উঠালো। তিনি যখন ভিতরে চলে গেলেন, তখন তারা পরস্পরে বলাবলি করতে লাগলো, আমরা এরূপ কেন করলাম? এখন থেকে এরূপ করবো না।
এরপর যখন আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম তিনি আসলেন, তখন তারা উনার সম্মানার্থে দাঁড়ালো, সালামও করল; কিন্তু পর্দা উঠানোর ব্যাপারে ইতস্তত করল। কিন্তু তাদের পর্দা উঠানোর আগেই মহান আল্লাহ পাক তিনি পর্দা উঠিয়ে দেয়ার মত বাতাস চালালেন। তিনি ভিতরে চলে গেলে বাতাস বন্ধ হয়ে গেল। অতঃপর তিনি যখন ফিরে আসার ইচ্ছা করলেন, তখন আবার বাতাস প্রবাহিত হলো এবং পর্দা উঠে গেল। হিংসুকরা এ দৃশ্য দেখে বলতে বাধ্য হলো যে, যাকে আল্লাহ পাক তিনি উচ্চ করেন, তাকে খাটো করবে কে? এরপর থেকে তারা পূর্ববৎ খিদমতে আঞ্জাম দিতে থাকে। সুবহানাল্লাহ! (শাওয়াহিদুন নুবুওওয়াত-২৬২)
২। হযরত দা’বল ইবনে আলী খুযায়ী তৎকালীন বিশিষ্ট কবিদের অন্যতম ছিলেন। তিনি বললেন, আমি একটি প্রশংসামূলক কবিতা রচনা করে আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম উনার মুবারক খিদমতে পেশ করলাম। তখন খোরাসানে মামুনুর রশীদের উত্তরাধিকারীও উপস্থিত ছিল। আমি তাকেও শুনালাম। সে খুব পছন্দ করল এবং বলল এই প্রশংসামূলক কবিতাটি কারও কাছে পাঠ করবেন না। কেবল আমি যাকে চাই তার কাছেই পাঠ করবেন। এ সংবাদ মামুন জানতে পেরে আমাকে দরবারে তলব করলেন। কুশলাদি জিজ্ঞাসা করার পর তিনি বললেন, তোমার রচিত প্রশংসামূলক কাব্যটি পাঠ করে শুনাও। আমি ইতস্তত করলে তিনি আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম আরজী করে বললেন, হে আবুল হাসান আলাইহিস সালাম! আমি দা’বলকে তার প্রশংসামূলক কাব্য শুনাতে বলেছিলাম। কিন্তু সে শুনায়নি। তখন আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম আমাকে পড়তে বললে আমি পড়ে শুনালাম। খলিফা খুব পছন্দ করলেন। তিনি আমাকে পঞ্চাশ হাজার দীনার বখশিশ দিলেন এবং এই পরিমাণ অর্থই আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম উনার খিদমতে পেশ করলেন।
আমি আরজ করলাম, আমি চাই আপনি আমাকে নিজের কোন কাপড় মুবারক দান করেন যা দ্বারা আমি আমার কাফন করব। তিনি আমাকে একটি মুবারক কোর্তা ও একটি তোয়ালে দিলেন। এগুলো অত্যান্ত উৎকৃষ্ট ছিল। অতঃপর বললেন, এগুলো খুব সামলিয়ে রাখবেন। এগুলো স্বয়ং নিজেই হিফাযত করবেন। এরপর আমি ইরাক অভিমুখে রওয়ানা হলাম। পথিমধ্যে ডাকাতরা আমাদের সর্বস্ব লুট করে নিল। আমার কাছে কেবল একটি পুরাতন জামা অবশিষ্ট রইল। আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম উনার প্রদত্ত মুবারক কোর্তা ও তোয়ালের জন্য আমার আফসোসের অন্ত ছিল না। তিনি এগুলো সামলে রাখতে বলেছিলেন এবং এগুলো বিশেষভাবে হিফাযত করতে বলেছিলেন। উনার এসব মুবারক উক্তির ব্যাপারেও আমি গভীরভাবে চিন্তিত ছিলাম। হঠাৎ জনৈক ডাকাতকে ঘোড়ায় চড়ে ছুটে আসতে দেখলাম। সে আমার সামনে এসে দাঁড়িয়ে গেল এবং সঙ্গীদের জন্যে অপেক্ষা করতে লাগল। সঙ্গীরা সকলেই এসে গেল। সে আমার প্রশংসামূলক কাব্যটি পাঠ করতে শুরু করল এবং সাথে সাথে কাঁদতে লাগল। আমি মনে মনে বললাম, অদ্ভুদ ব্যাপার, এই ডাকাতরাও দেখছি আহলে বাইত আলাইহিমুস সালাম উনাদের মুহব্বতে বিভোর। সুবহানাল্লাহ!
এ কারণে আমার মধ্যে আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম উনার প্রদত্ত মুবারক কোর্তা ও তোয়ালে ফেরত পাওয়ার বাসনা প্রবল হয়ে গেল। আমি বললাম, হে সরদার! এই প্রশংসামূলক কাব্য কে রচনা করেছেন, জান? সে বললো, এতে তোমার কি? আমি বললাম, তার সম্পর্কে কিছু গোপন কথা আছে, যা বলব। সে বলল এই কাব্যের রচয়িতা এই কাব্যের চেয়েও সুখ্যাত। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, সে কে? সে বলল, দা’বল ইবনে আলী, যিনি রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পরিবার আলাইহিমুস সালাম উনাদের কবি। আমি বললাম, হে সরদার! আমি দা’বল। এই কাব্য আমিই রচনা করেছি। অতঃপর সরদার আমাকে অনেক প্রশ্ন করল এবং কাফেলার লোকদেরকে ডেকে আমার বক্তব্যের সত্যতা যাচাই করল। সকলেই সাক্ষ্য দিল যে, ইনিই দা’বল। এরপর ডাকাতরা কাফেলার কাছ থেকে যা যা ছিনিয়ে নিয়েছিল, সবই ফেরত দিল এবং কোন কিছুই নিজেদের কাছে রাখল না। শুধু তাই নয়, তারা আমাদের রক্ষক হয়ে সকল বিপদজনক স্থান অতিক্রম করতে সাহায্য করল। এভাবে আমরা সকলেই মুবারক কোর্তা ও তোয়ালের বরকতে এই বালা মুছিবত থেকে রেহাই পেলাম। সুবহানাল্লাহ! (শাওয়াহিদুন নুবুওওয়াত-২৬৩)
৩। জনৈক কুফাবাসী বর্ণনা করেন, আমি যখন খোরাসানের উদ্দেশ্যে কূফা থেকে রওয়ানা হই, তখন আমার কন্যা আমাকে একটি উৎকৃষ্ট মানের কাপড় দিয়ে বলল, আব্বাজান! এটি বিক্রি করে আমার জন্যে ফিরোজা পাথর কিনে আনবেন। আমি মার্ভ পৌঁছলে আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম উনার মুহব্বতকারীদের মধ্যে একজন এসে আমাকে বললেন, আমাদের একজন সাথী মারা গেছেন। তার কাফনের জন্য এই কাপড় আমাদের কাছে বিক্রি করুন। আমি বললাম, আমার কাছে কোন কাপড় নেই। একথা শুনে সে চলে গেল কিন্তু পুনরায় এসে বলতে লাগল, আমাদের মনিব আপনাকে সালাম পাঠিয়েছেন এবং বলেছেন যে, আপনার কাছে একটি কাপড় আছে, যা আপনার কন্যা বিক্রি করে ফিরোজা পাথর কিনে নেয়ার জন্য বলেছে। আমি এর মূল্য নিয়ে এসেছি।
আমি কাপড় তাকে দিয়ে দিলাম এবং আমি মনে মনে বললাম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম উনাকে কয়েকটি মাসয়ালা জিজ্ঞাসা করব। সে মতে আমি কয়েকটি মাসয়ালা কাগজে লিখে অতি প্রত্যুষে উনার দরবার শরীফ-এ পৌঁছে গেলাম। সেখানে অনেক জনসমাগম ছিল। এই ভিড় ঠেলে সহজে দেখা করার সাধ্য কারো ছিল না। আমি বিস্ময়াবিষ্ট হয়ে দাঁড়িয়েছিলাম। এমন সময় উনার এক খাদিম বাইরে এল এবং আমার নাম নিয়ে একটি লিখিত কাগজ আমাকে দিয়ে বললেন- এগুলো আপনার প্রশ্নের জাওয়াব। আমি দেখলাম যে, তাতে হুবহু আমার প্রশ্নগুলোরই জাওয়াব লিখিত ছিল। সুবহানাল্লাহ! (শাওয়াহিদুন নুবুওওয়াত-২৬৪)
৪। নাব্বাখ বাসীদের একজন বর্ণনা করেন, আমি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে স্বপ্নে দেখলাম যে, তিনি নাব্বাখে এসেছেন এবং হজ্জযাত্রীগণ যে মসজিদে অবস্থান করেন, সেখানে তিনি মুবারক অবস্থানরত আছেন। আমি উনার মুবারক খিদমতে উপস্থিত হয়ে সালাম আরজ করলাম। উনার সামনে একটি খাঞ্চা মুবারক ছিল, যাতে ছায়হানী খেজুর রাখা ছিল। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তা থেকে এক মুঠি খেজুর মুবারক আমাকে দিলেন। আমি গণনা করে সতেরটি খেজুর পেলাম। আমি এই স্বপ্নের তা’বীর বা ব্যাখ্যা করেছি যে, আমার বয়ঃক্রম আর সতের বছর বাকি আছে। এ ঘটনার বিশ দিন পরে আমি শুনতে পেলাম যে, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম সেই মসজিদে মুবারক আগমন করেছেন। আমি তৎক্ষণাৎ উনার মুবারক খিদমতে হাযির হলাম। আমি উনাকে সেই স্থানেই দেখলাম, যেখানে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে স্বপ্নে দেখেছি। উনার কাছেও তেমনি খেজুর ভর্তি খাঞ্চা রাখা ছিল। আমি এগিয়ে গিয়ে সালাম আরজ করলে তিনি জাওয়াব দিলেন এবং আমাকে কাছে ডেকে এক মুঠি খেজুর দিলেন। আমি গণনা করে দেখলাম সতেরটি খেজুর আছে। আমি বললাম, হে ইবনে রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমার তো আরও বেশি খেজুর দরকার। তিনি বললেন, যদি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তোমাকে আরো বেশি দিতেন, তবে আমিও দিতাম। সুবহানাল্লাহ! (শাওয়াহিদুন নুবুওওয়াত-২৬৪, ইক্বতিরাসুল আনওয়ার-১৪৯)
৫। জনৈক রাবী বর্ণনা করেন, রাইয়ান ইবনে ছলত আমাকে বললেন, আমি আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম উনার সাথে এই আশায় সাক্ষাৎ করতে চাই যে, তিনি আমাকে নিজের কোন কাপড় মুবারক পরাবেন এবং কয়েকটি দেরহামও দান করবেন। আপনি অনুগ্রহপূর্বক আমার জন্যে সাক্ষাতের অনুমতি হাসিল করুন। এরপর আমি যখন আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম উনার দরবার শরীফ-এ হাযির হলাম, তখন কোন কিছু বলার আগেই তিনি আমাকে বললেন, রাইয়ান ইবনে ছলত এখানে হাযির হতে চায়, যাতে আমি তাকে কাপড় পরিধান করাই এবং আমার নামে জারীকৃত দেরহাম থেকে তাকে কয়েকটি দেরহাম দেই। রাইয়ানকে এখানে নিয়ে এসো। রাইয়ান ভিতরে গেলে তিনি তাকে দু’টি কাপড় এবং ত্রিশটি দিরহাম দান করলেন। সুবহানাল্লাহ! (শাওয়াহিদুন নুবুওওয়াত-২৬৪)
৬। এক ডাকাত কোন ব্যবসায়ীকে কিরমানের পথে শীতকালে ধরে ফেলল। অতঃপর তার মুখ বরফের মধ্যে চেপে তাকে শুইয়ে দিল। ফলে, তার জিহ্বা বিকল হয়ে গেল। সে অনায়াসে কথা বলতে পারত না। সে খোরাসানে পৌঁছে জানতে পারল যে, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম তিনি নিশাপুর গমন করেছেন। সে মনে মনে বলল, উনি হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সদস্য। উনার খিদমতে হাযির হলে সম্ভবত আমার চিকিৎসা সম্ভব হবে। ব্যবসায়ী রাতে স্বপ্নে দেখলো যে, সে আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম উনার খিদমতে উপস্থিত হয়ে আরোগ্য প্রার্থনা করছে। তিনি বললেন, কমুনী, মরু এলাকার পুদিনা ও লবণ নিয়ে এগুলো পানিতে ভিজিয়ে দু’তিন বার মুখে রাখ। এতে আরোগ্য লাভ করবে। জাগ্রত হওয়ার পর এ স্বপ্নের প্রতি তার তেমন বিশ্বাস হল না। সে নিশাপুর পৌঁছে জানতে পারল যে, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম তিনি বাইরে কোন সরাইখানায় অবস্থান করছেন। ব্যবসায়ী উনার খিদমতে হাযির হয়ে নিজের অবস্থা বর্ণনা করলো; কিন্তু স্বপ্নের উল্লেখ করলো না। হযরত ইমামুছ ছামিন তিনি বললেন, তোমার ঔষধ তাই, যা আমি স্বপ্নে তোমাকে বলেছিলাম। সে বললো, ইয়া ইবনা রসূলিল্লাহ! অনুগ্রহপূর্বক সেটি পুনরায় বলুন। অতঃপর তিনি পূর্বের ব্যবস্থাপত্রই বলে দিলেন। ব্যবসায়ী তদনুযায়ী আমল করে সম্পূর্ণ আরোগ্য লাভ করল। (সুবহানাল্লাহ)
৭। একদিন হযরত ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম তিনি এক ব্যক্তিকে দেখে বললেন, হে মহান আল্লাহ পাক উনার বান্দা! যা ইচ্ছা ওছিয়ত কর এবং যা থেকে পলায়নের কোন পথ নেই তার জন্যে প্রস্তুত হও। একথা বলার পর তিনদিন অতিবাহিত হতেই লোকটি মারা গেল। (সুবহানাল্লাহ)
৮। হযরত আবূ ইসমাঈল সিন্ধী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমি যখন আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম উনার সাথে সাক্ষাত করতে যাই, তখন আরবী ভাষার আলিফ বা ও জানতাম না। আমি সিন্ধী ভাষায় উনাকে সালাম করি এবং তিনি সেই ভাষায়ই জাওয়াব দেন।  এরপর আমি আমার ভাষায় কয়েকটি প্রশ্ন করলাম। তিনি একই ভাষায় সকল প্রশ্নের উত্তর দিলেন। আমি ফিরে আসার সময় আরয করলাম, আমি আরবী বলতে পারি না। আপনি দোয়া করুন, যেন মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে এ ভাষা ইলহাম করেন। তিনি নিজের পবিত্র হাত আমার ঠোঁটের উপর বুলালেন। আর আমি তখনি আরবীতে কথা বলতে শুরু করলাম। (সুবহানাল্লাহ)
৯। এক রাবী বর্ণনা করেন, অতি উৎকৃষ্ট রেশমী বস্ত্র দিয়ে ইহরামের চাদর তৈরী করা হলো। ইহরাম বাঁধার সময় আমার মনে রেশমী বস্ত্রের ইহরাম হালাল, না হারাম- এ বিষয়ে সংশয় সৃষ্টি হলো। শেষ পর্যন্ত আমি রেশমী ইহরাম বর্জন করে অন্য কাপড় পরিধান করলাম। পবিত্র মক্কা শরীফ-এ পৌঁছার পর আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম উনার খিদমতে একটি পত্রসহ সেই বস্ত্রও পাঠিয়ে দিলাম। কিন্তু রেশমী বস্তের ইহরাম জায়েয কিনা, একথা পত্রে লিখতে ভুলে গেলাম। অথচ এ সম্পর্কেই পত্র পাঠানো হয়েছিল। অবশেষে দূত পত্রের জাওয়াব নিয়ে ফিরে এল। পত্রের শেষভাগে তিনি লিখেছিলেন, যদি কেউ রেশমী বস্ত্রে ইহরাম বাঁধে, তবে তাতে কোন দোষ হবে না।
১০। অন্য একজন বর্ণনা করেন, আমি একদিন আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম উনার সাথে এক বাগানে আলাপ করছিলাম। হঠাৎ একটি পাখি এসে মাটিতে পড়ে গেল এবং অস্তির অবস্থায় চিঁচিঁ করতে লাগল। আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, তুমি জান সে কি বলছে? আমি বললাম, না জানিনা। তিনি বললেন, সে বলছে, এই ঘরে একটি সাপ প্রবেশ করেছে সে আমার বাচ্চাগুলোকে খেয়ে ফেলতে চায়। তিনি আমাকে বললেন, উঠ, এই ঘরে গিয়ে সাপটি মেরে ফেল। আমি গিয়ে সেটি মেরে ফেললাম। সুবহানাল্লাহ! (শাওয়াহিদুন নুবুওওয়াত-২৬৮, ইকতিরাসূল আনওয়ার-১৫০)
১১। একজন রাবী বর্ণনা করেন, আমি আমার সন্তান সম্ভবা স্ত্রী সম্পর্কে আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম উনার খিদমতে নিয়ে গেলাম এবং আরজ করলাম, হুযূর! দোয়া করুন। মহান আল্লাহ পাক তিনি যেন তাকে আওলাদ সন্তান দান করেন। তিনি বললেন, তোমার আহলিয়া রেহেমে দু’টি সন্তান রয়েছে। ফিরে আসার সময় মনে মনে সাব্যস্ত করলাম এক সন্তানের নাম রাখব মুহম্মদ এবং অপরটি আলী। তিনি আমাকে ডেকে বললেন, এক সন্তানের নাম আলী রাখবে এবং অন্যজনের নাম ওমর। দুটি সন্তানই ভুমিষ্ট হওয়ার পর দেখা গেল, একটি আওলাদ এবং অপরটি কন্যাসন্তান। তাদের নাম যথাক্রমে আলী ও উম্মে ওমর রাখা হলো। একদিন আমি মাকে জিজ্ঞাসা করলাম, উম্মে ওমর কেমন নাম? মা জাওয়াব দিলেন, আমার মায়ের নাম উম্মে উমর ছিল।
১২। আব্বাসী শাসক মামুনুর রশিদ আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম উনাকে খিলাফতের পদ পেশ করলে তিনি কবুল করলেন না। খলিফার অনুরোধ এবং তাঁর অস্বীকৃতির টানাপোড়েন দু’মাস পর্যন্ত অব্যাহত রইল। অবশেষে ব্যাপারটি সীমা ছাড়িয়ে হুমকি ও ভীতি প্রদর্শন পর্যন্ত পৌঁছে গেলে তিনি কবুল করার সম্মতি দিলেন।
১৩। আবুছ ছলত বরদরির ঘটনা থেকেও আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম উনার কারামত মুবারক প্রকাশ পায়। ঘটনা এরূপ- আবুছ ছলত বলেন, একদিন আমি আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম উনার সামনে দ-ায়মান ছিলাম। তিনি আমাকে বললেন, এই কবরের কাছে যাও। এটা হারুনুর রশীদের কবর। এর চতুর্দিক থেকে মাটি তুলে আন। আমি মাটি তুলে আনলাম। তিনি এর ঘ্রাণ নিয়ে ফেলে দিলেন। অতঃপর বললেন, সত্বরই এখানে আমার জন্যে একটি গর্ত খনন করা হবে, যাতে একটি পাথর প্রকাশ পাবে। খোরাসানের সকল গোর খননকারী মিলেও এটি সরাতে পারবে না। এরপর আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, অমুক জায়গা থেকে মাটি তুলে আন। আমি নিয়ে এলে তিনি বললেন, সেখানে আমার জন্যে একটি গর্ত খনন করা হবে, যা সাত হাত গভীর হবে।
এরপর তার মধ্যে কবর রচনা করবে। রাজকীয় ফরমান পূর্ণ না হলে লহদই বানাবে, যা দু’হাত হবে। মহান আল্লাহ পাক তিনি যতকুটু চাইবেন, একে প্রশস্ত করে দিবেন। এই গর্ত খনন করার সময় আমার শিয়রের দিক থেকে এক প্রকার আর্দ্রতা সৃষ্টি হবে। আমি তোমাকে যা শিখিয়েছি, তুমি তাই করবে। পানি স্ফীত হবে এবং লহদ ভরে যাবে। তুমি তাতে ছোট ছোট মাছ দেখতে পাবে। আমি তোমাকে যে রুটিটি দিব, সেটি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র টুকরা করে পানিতে ফেলে দিবে, যাতে মাছেরা খেয়ে ফেলে। রুটি খাওয়া শেষ হলে একটি বড় মাছ আসবে। সে ছোট মাছগুলোকে খেয়ে ফেলবে। খাওয়া হয়ে গেলে বড় মাছটি উধাও হয়ে যাবে। উধাও হয়ে গেলে তুমি তোমার হাত পানিতে রেখে দিবে এবং আমি তোমাকে যা বলেছি, তা বলতে থাকবে যে পর্যন্ত পানির উচ্চতা না কমে যায়। এসব কাজ তুমি মামুনুর রশীদের উপস্থিতিতে করবে।
এরপর আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, হে আবুছ ছলত! কালই আমি মামুনের সাথে দেখা করতে আসব। যদি আমি মাথায় কোন কিছু পরিধান করে না আসি, তবে আমার সাথে কথা বলবে, অন্যথায় কথা বলবে না। আবুছ ছলত বলেন, সকাল হলে আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম তিনি কাপড় মুবারক পরিধান করলেন। যথাসময়ে তিনি মামুনের কাছে গেলেন। তার কাছে ফলমূলে ভরা একটি খাঞ্চা রাখা ছিল এবং মামুন আঙ্গুরের গুচ্ছ ধরে রেখেছিল। আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম উনাকে দেখে মামুন নিজের আসন থেকে লাফিয়ে উঠলেন এবং উনার সাথে কোলাকুলি করে কপাল মুবারকে চুম্বন করলেন। এরপর আঙ্গুরের গুচ্ছ উনাকে দিয়ে বললেন, হে ইবনে রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি কি এই আঙ্গুরের চেয়ে উৎকৃষ্ট আঙ্গুর কখনো দেখেছেন? তিনি বললেন, খান।
আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, আমি মা’যূর (ক্ষমার্হ)। মামুন বললেন, বাঁধা কিসের? সম্ভবত আপনি আমাকে দোষী মনে করেন। একথা বলে তিনি আঙ্গুরের গুচ্ছটি ফিরিয়ে নিলেন এবং কয়েকটি দানা খেয়ে পুনরায় আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম উনাকে দিয়ে দিলেন। তিনি তা থেকে দু’তিনটি দানা খেলেন এবং বাকিগুলো রেখে দিলেন। এরপর প্রস্তানোদ্যত হলে মামুন বললেন, আপনি কোথায় যাচ্ছেন? তিনি জওয়াব দিলেন, যেখানে আপনি পাঠিয়েছেন। অতঃপর তিনি মাথায় কোন কিছু বেঁধে বাইরে এলেন। আমি উনার সাথে কথা বললাম না। তিনি নিজের সরাইখানায় এসে বললেন সরাইখানার দরজা বন্ধ করে দাও। এরপর তিনি নিজের বিছানায় শুয়ে পড়লেন। আমি সরাইখানায় হতচকিত ও চিন্তিত অবস্থায় অপেক্ষমান রইলাম। হঠাৎ আমি একজন সুশ্রী যুবককে দেখলাম। উনার মেখদাম সুবাসিত ছিল। তার আকার-আকৃতি আওলাদে রসূল, হযরত ইয়ামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম উনার সাথে খুব সামঞ্জস্যশীল ছিল। আমি দৌড়ে উনার কাছে গেলাম এবং আরয করলাম, আপনি কিরূপে এসে গেলেন? দরজা তো বন্ধ ছিল। যুবক বললেন, আমাকে সেই ব্যক্তি এনেছে, যে মুহূর্তের মধ্যে যে কোন লোককে মদীনা শরীফ থেকে নিয়ে আসেন। আমি জিজ্ঞাসা করলাম আপনি কে? তিনি বললেন, আমি হুজ্জাতুল্লাহ মুহম্মদ ইবনে আলী। অর্থাৎ আমি আমার পিতা ইমামুত তাসি’ আলাইহিস সালাম উনার কাছে এসেছি।
অতঃপর আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম উনাকে দেখে দাঁড়ালেন। উনাকে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে কপালে চুম্বন করলেন এবং আপন বিছানায় নিয়ে বসতে দিলেন। যুবক উনার মুখম-ল স্বীয় পিতা উনার দিকে করে বসে গেলেন এবং কিছু গোপন কথাবার্তা বললেন, যা আমি বুঝতে পারিনি। এরপর আমি আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম উনার উভয় ঠোঁটে বরফের মত সাদা কিছু ফেনা দেখলাম, যা মুহম্মদ ইবনে আলী চেটে নিলেন। এরপর তিনি স্বীয় পিতার পরিধেয় বস্ত্রের মধ্যে হাত ঢুকালেন এবং ছোট পাখির মত একটি বস্তু তার বক্ষ থেকে বের হয়ে এল এবং মাটিতে পড়ে গেল। ঠিক তখনি আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র বিছাল হয়ে গেল।
মুহম্মদ ইবনে আলী আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, হে আবুছ ছলত ওঠ এবং বায়তুল মাল থেকে পানি এবং তক্তা নিয়ে এসো। আমি বললাম, বায়তুল মালে না পানি আছে, না তক্তা।
তিনি বললেন, আমি যা বলি, পালন কর। আমি বায়তুল মালে গিয়ে পানি ও তক্তা মওজুদ পেলাম। আমি তা নিয়ে এলাম। আমি উনাকে সাহায্য করতে চাইলে তিনি বললেন, আবুছ ছলত। অন্য একজন আমাকে সাহায্য করতে উপস্থিত আছেন। তিনি হযরত ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম উনাকে গোছল দিলেন। অতঃপর বললেন, বায়তুল মালে একটি কাপড়ের সিন্দুক আছে। তাতে কাফন ও সুগন্ধি রাখা আছে। সেটি নিয়ে এসো। আমি গিয়ে দেখলাম যে, সেখানে সেই সিন্দুক মওজুদ ছিল তা আমি ইতিপূর্বে দেখিনি। সিন্দুকটি এনে রাখলে তিনি আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম উনাকে কাফন দিয়ে নামাযে জানাযা আদায় করলেন। অতঃপর বললেন, শবাধার নিয়ে এসে। আমি বললাম শবাধার তৈরি করার জন্যে আমি এখনি গিয়ে কাঠমিস্ত্রি নিয়ে আসি। তিনি বললেন, বায়তুল মালে যাও। আমি গিয়ে সেখানে একটি শবাধার দেখলাম, যা পূর্বে কখনো দেখিনি। আমি সেটি নিয়ে এলে তিনি আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম উনাকে তাতে শুইয়ে দিলেন।
এরপর তিনি দু’রাকআত নামায পড়তে শুরু করলেন। নামায খতম না হতেই শবাধারটি নিজের জায়গা থেকে উপরে উঠতে লাগল। গৃহের ছাদ বিদীর্ণ হয়ে গেল এবং শবাধারটি সেখান দিয়ে বের হয়ে শূন্যে চলে গেল। আমি আরয করলাম হে ইবনে রসূলিল্লাহ! খলিফা মামুনকেও ডেকে নেয়া উচিত। তিনি বললেন, চুপ থাক। শবাধার এখনি ফিরে আসবে। অতঃপর বললেন, হে আবুছ ছলত, কোন পয়গম্বরের বিছাল শরীফ পশ্চিম দেশে এবং উনার প্রতিনিধির বিছাল শরীফ পূর্বদেশে হলে উনাদের রুহ ও শরীর মুবারক পরস্পরে সাক্ষাৎ করে। একথা শেষ না হতেই গৃহের ছাদ ফাঁক হয়ে গেল এবং শবাধার নিচে চলে এল। আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম উনাকে শবাধার থেকে বাইরে বের করলেন এবং বিছানায় শুইয়ে দিলেন। অতঃপর তিনি আমাকে দরজা খুলতে বললেন আমি দরজা খুলতেই খলিফা মামুন তার গোলামসহ কান্নাকাটি করতে করতে ভিতরে প্রবেশ করলেন এবং দুঃখ ও বেদনা প্রকাশ করতে লাগলেন।
এরপর সকলেই উনার কাফন-দাফনে আত্মনিয়োগ করল। ইমাম মুহম্মদ ইবনে আলী বললেন, যাও উনার কবর খনন কর। আমি সেখানে গেলাম। আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম তিনি যা বলেছিলেন, সেখানকার অবস্থা তেমনি পেলাম। পানি ও ছোট ছোট মাছ দেখে খলিফা বললেন, ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম উনার কাছ থেকে জীবদ্দশায় যেমন অত্যাশ্চর্য বিষয়াদি প্রকাশ পেত, বিছাল শরীফের পরও তেমনি প্রকাশ পায়। মামুনের এক সভাসদ একথা শুনে বলল, হে খলিফা, আপনি জানেন এর ইঙ্গিত কোন দিকে? এটা এই সত্যের প্রতি ইঙ্গিত করছে যে আপনার রাজত্ব প্রাচুর্য ও আনুগত্যের এই মৎস্যগুলির অনুরূপ। যখন আপনার মৃত্যুর সময় আসবে, তখন আল্লাহ পাক তিনি এক ব্যক্তিকে আপনার উপর চাপিয়ে দিবেন। সে আপনাকে ফানা করে দিবে।
অন্য এক রেওয়ায়েতে আবুছ ছলত বলেন, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম উনার দাফনকার্য সম্পন্ন হলে খলিফা মামুন বললেন, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম তিনি তোমাকে যে সকল কথাবার্তা বলেছেন, সেগুলো বলো। আমি বললাম, আমি তো এসব কথা তখনই ভুলে গিয়েছিলাম। আমি সত্য বলেছিলাম তাই তিনি আমাকে জেলে পাঠিয়ে দিলেন। আমি এক বছর জেলে রইলাম এবং আমার জীবিকা ভীষণরূপে ক্ষতিগ্রস্ত হলো। আমি দোয়া করলাম, হে আল্লাহ পাক! আপনার হাবীব এবং উনার আল-আওলাদ উনাদের বরকতে আমার জীবিকা প্রশস্ত করে দিন। আমার দোয়া শেষ হওয়ার পূর্বেই আমি আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম উনার দীদারে ধন্য হলাম। তিনি বলেছিলেন, হে আবুছ ছলত! অস্থির হয়ে গেছ? আমি আরয করলাম, হ্যাঁ, হুযূর। তিনি বললেন, উঠ এবং বাইরে যাও। তিনি আমার হাতের বন্ধন স্পর্শ করতেই তা খুলে গেল। এরপর তিনি আমার হাত ধরে জেলের বাইরে নিয়ে এলেন। রক্ষী ও গোলামরা কেবল দেখল। আমার সাথে কথা বলার সাহস কারও হলো না। তিনি বললেন, এখন মহান আল্লাহ পাক উনার আশ্রয় ও হিফাযতে চলে যাও। এখন থেকে তুমিও মামুনের সাথে দেখা করবে না এবং মামুনও তোমার সাথে দেখা করবে না। আবুছ ছলত বলেন, আমি তখন থেকে মামুনকে আর দেখিনি। সুবহানাল্লাহ! (শাওয়াহিদুন নুবুওওয়াত-২৬৯)
পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ:
খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন- ইমামুল আউলিয়া, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছামিন আলাইহি তিনি ২০৮ হিজরী সনের ২১শে রমাদ্বান শরীফ জুমুয়াহ বার পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। তিনি ৫৯ বছর ১০ মাস ১০ দিন দুনিয়াবী হায়াত মুবারক লাভ  করেছেন। আর এটাই হচ্ছে বিশুদ্ধ মত। সুবহানাল্লাহ!

সম্মানিত আহাল ও ইয়াল :
‘ইকতিবাসুল আনওয়ার’ কিতাবে আছে- ইমামুল আউলিয়া, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছামিন আলাইহিস সালাম উনার পাঁচজন ছেলে এবং একজন মেয়ে ছিলেন। অন্য বর্ণনায় রয়েছে- চারজন ছেলে এবং একজন মেয়ে ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! (মিরায়াতুল আসরার-২১৮)