রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-১১
হিদায়েতের কার্যক্রম বিস্তারের লক্ষ্যে বিভিন্ন দিক :
(ক). খানকা শরীফ ও মাদরাসা প্রতিষ্ঠা:
(ক-১). পবিত্র ইলমে তাছাউফ চর্চার জন্য পবিত্র দরবার শরীফ উনার মাঝে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে ‘খানকা শরীফ’।
(ক-২). পবিত্র দরবার শরীফ উনার মাঝে মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করা হয়। রয়েছে বালক শাখা, বালিকা শাখা এবং হিফজখানা।
(ক-৩). বিশ্বব্যাপী কোটি কোটি মসজিদ, মাদরাসা, খানকা শরীফ, গবেষণাগার, ঈদগাহ, কবরস্থান প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা। ইত্যাদি
(খ). মাহফিল:
(খ-১). অনন্তকালব্যাপী পবিত্র সায়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল জারি এবং উনার কার্যক্রম।
(খ-২). ইমামুল উমাম সাইয়্যিদুনা হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার একক ছফর।
(খ-৩). সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম এবং হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারাসহ ছফর।
(খ-৪). দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মাহফিলের আয়োজন (ওয়ায়িজ আঞ্জুমানের ছফর)।
(খ-৫). ছফর দল এবং উনাদের কার্যক্রম। ইত্যাদি
(গ) প্রকাশনা:
(গ-১). সংবাদ প্রকাশনা- দৈনিক আল ইহসান, মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ, পাক্ষিক আনজুমানে আল বাইয়্যিনাত, বার্ষিক আল-মুবাশ্শিরা, আত-তাজদীদ ইত্যাদি।
(গ-২). কিতাব প্রকাশনা- কিতাবুল আলকাব, কারবালার হৃদয়বিদারক ইতিহাস, চার তরীক্বার ওযীফা শরীফ ইত্যাদিসহ আরো অসংখ্য।
(গ-৩). গবেষণামূলক প্রকাশনা- আত-তাকঊমুশ শামসী, বর্ষপঞ্জীকা, হিজরি ক্যালেন্ডার, বিজ্ঞান মুসলমান উনাদেরই অবদান, নামাযের সময়সূচি ইত্যাদি।
(গ-৪). পবিত্র সায়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উপলক্ষে দ্রব্য-সামগ্রী প্রকাশনা।
(গ-৫). পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ গেইট স্থাপন। ইত্যাদি
(ঘ). আনজুমানে আল বাইয়্যিনাত উনার কার্যক্রম:
(ঘ-১). সর্বপ্রকার আঞ্জুমানের কার্যক্রম।
(ঘ-২). কুরবানীর টিম।
(ঘ-৩). যাকাত-উশর আদায় টিম।
(ঘ-৪). অনুবাদের টিম।
(ঘ-৬). সিলেবাস রচনার কার্যক্রম।
(ঘ-৭). বিশেষ কোর্স প্রচলন। ইত্যাদি
(ঙ). হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা:
(ঙ-১). আল-মুতমাইন্নাহ মা ও শিশু হাসপাতাল।
(ঙ-২). ব্লাডব্যাংক।
(ঙ-৩). প্যাথলজি সেন্টার। ইত্যাদি।
(চ) অনলাইন ভিত্তিক কার্যক্রম:
(চ-১). প্যালটক- নূরুন আ’লা নূর, সিরাজাম মুনিরা, আন-নিসা ভয়েস রুম ইত্যাদি।
(চ-২). ভয়েস আল হিকমাহ- দেশে ও বিদেশে অবস্থানরত সকলে যেন লাইভ অনুষ্ঠান শুনে নেক আমল করতে পারে তার জন্য বিশেষ আয়োজন।
(চ-৩). অনলাইন নিউজ পোর্টাল।
(ছ). কেন্দ্রীয় লাইব্রেরী এবং দেশব্যাপী লাইব্রেরী প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ:
(ছ-১). পূর্ববর্তী ওলীআল্লাহগণ উনার লিখিত এবং দুষ্প্রাপ্য কিতাবসমূহ সংগ্রহ ও বিতরণের উদ্যোগ।
(জ). বায়তুল মাল গঠন।
(ঝ). দান বাক্স ও হাদিয়া বাক্সের প্রচলন ও সম্প্রসারণ।
(ঞ). ক্বছীদা আঞ্জুমান, রেকর্ডিং, সিডি প্রকাশনা ও সম্প্রসারণ বিষয়:
(ঞ-১). বিশেষ না’ত শরীফ প্রকাশের উদ্যোগ ও প্রচারের গুরুত্ব।
(ট). মাজলিসু রুইয়াতিল হিলাল গঠনের উদ্যোগ ও গুরুত্ব।
(ঠ). ক্যান্টিন শরীফ প্রতিষ্ঠা (সুন্নতী পোশাক ও সুন্নতী সামগ্রী প্রচারের মহান উদ্যোগ, মহিলা শাখাসহ)
(ড). বিবাহ-শাদী দেয়ার বিশেষ উদ্যোগ ও কার্যক্রমের ব্যবস্থা ।
(ঢ). আমীল সংগ্রহ উদ্যোগের মাধ্যমে হেদায়ত দান ও জীবিকার ব্যবস্থা করা।
(ণ). ইসলামী তাহযীব-তামাদ্দুন প্রচার-প্রসারের উদ্যোগ।
রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-১০
মুবারক দফতর শরীফ -----হিদায়েত বিস্তারের এক অনন্য দিক : 
পূর্ববর্তী আউলিয়া কিরামগন উনাদের হিদা্প্রসারণ, উশর আদায়, আলেম উলামাগনের পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে তালিম-তালকিনের ব্যবস্থাও বাদশাহর পক্ষ থেকেই হত।
তা ছাড়া সে সময় ইসলাম উনার শত্রুদের গোপন কোন কার্যক্রমতো ছিলোইনা বরং বাইরের কোন দেশ থেকে সরাসরি আক্রমণ করাই ছিল একমাত্র প্রকাশ্য শত্রুতার বহিঃপ্রকাশ। আর ইউরোপ তখন নিজেই অন্ধকারে ছিল।
কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপট একেবারেই ভিন্ন। সরকারী তরফ থেকে যাকাত-উশর ব্যবস্থার কোন কার্যক্রম নেই সরকার সেটা বোঝেও না এবং গুরুত্বও দেয় না। সরকার ব্যাস্ত মানব রচিত আয়কর ব্যাবস্থা নিয়ে। আবার সাধারণ মানুষও যাকাত-উশরের অনুশাসন ভুলে এই ফরয আমল করতে অপারগ হচ্ছে। কুরবানীর পশু যবেহ করা দাড়িয়েছে কেবল একটি আনুষ্ঠানিকতায়। মসজিদ-মাদ্রাসার সম্প্রসারনে উদ্যোগ নেয়া দূরে থাক সরকার চাচ্ছে কিভাবে সেগুলোকে বন্ধ করে দেয়া যায়। কাফির মুশরিকরা চক্রান্ত করে নানা সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড, মিডিয়ার মাধ্যমে মুসলমান উনাদের কাফির বানানোর পরিকল্পনা নিচ্ছে অহর্নিশি। সেই সময় ১৫ শতকের সুমহান মুজাদ্দিদ , মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম তিনি দয়া করে মানুষকে সঠিক দিক নির্দেশনা সঠিকভাবে পৌছে দেবার লক্ষ্যে হাদিয়া করেন "মুবারক দফতর শরীফ"। ১৫ শতকের সম্মানিত মুজাদ্দিদ হযরত মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম মুবারক দফতর শরীফ পরিচালনার দায়িত্বভার ন্যস্ত করেন
হযরত শাহ দামাদে আউয়াল আলাইহিস সালাম এবং
হযরত শাহ দামাদে ছানী আলাইহিস সালাম উনাদের উপর । সুবহানাল্লাহ।
মুবারক দফতর শরীফ থেকে বহুবিধ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এটি তালিকা করে শেষ করা যাবে না। যদি খুব সংক্ষেপে বলতে হয় তবে বলা যায় মুবারক দফতর শরীফ থেকে
১) ব্যক্তিগতভাবে একজন মানুষকে এবং তার সকল সামাজিক কার্যক্রমকে সু-নিয়মতান্ত্রিকভাবে পরিচালনা এবং
২) প্রয়োজনীয় সকল ইলম-হিকমত অকাতর ভাবে দান করা হচ্ছে ।
য়েতের কার্যক্রম বিস্তৃত ছিল মূলত খানকা শরীফ ভিত্তিক বা উনাদের তালিমগাহ নির্ভর। তাসাউফের কিতাবসমুহ থেকে যা বোঝা যায় উনারা তাসাউফের শিক্ষার উপরই বেশী প্রাধান্য দিতেন। এর যথেস্ট কারণও আছে। মুসলিম প্রাধান্যযুক্ত অঞ্চল সমূহে পরিপূর্ণ খিলাফত ব্যবস্থা না থাকলেও খলিফাগণ শরিয়তের অনুশাসন সমূহ জানতেন এবং সে অনুযায়ী ব্যাবস্থা নিতেন। যাকাত ব্যবস্থা, মসজিদ-মাদ্রাসার সম
রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-৯
রাজারবাগ শরীফ সিলসিলার আকিদা মূলত আহলে সুন্নত ওয়াল জামাত উনার বিশুদ্ধ আকিদা।
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আকিদা বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেছেন, হযরত ইমাম আশায়ারী, হযরত ইমাম তাহাওয়ি এবং হযরত ইমাম আবু মনসুর মাতুরিদি রহমতুল্লাহি আলাইহিম। কিন্তু হযরত ইমাম আশায়ারী, হযরত ইমাম তাহাওয়ি রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা হযরত আবু হানিফা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার আকিদা থেকে খানিকটা ভিন্ন পথের ছিলেন। কিন্তু হযরত ইমাম মাতুরিদি রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হুবুহু সম্মানিত হানাফি মাযহাব উনার আকিদায় বিশ্বাসী ছিলেন এবং মাযহাব উনার আকিদাকে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেন। প্রসঙ্গত একটি বিষয় বলে রাখা প্রয়োজন যিনি খালিক, যিনি মালিক মহান আল্লাহ পাক উনার সঙ্গে নিসবত মুবারকের কারণে এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনার সঙ্গে নিসবত মুবারক থাকার কারণে অনেক ওলী আল্লাহ এবং সম্মানিত মুজাদ্দিদ উনারা সম্মানিত হানাফি মাযহাব উনার অনেক আকিদার বিষয় এমনকি আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত উনার অনেক আকিদার বিষয়কে ব্যাখ্যার মাধ্যমে আরও স্পষ্ট করেন। নীচে কেবল উপলব্ধির জন্য কয়েকটি উদাহরণ তুলে ধরা হল।
** মহান আল্লাহপাক যে কওমের কাছে কোন নবী পাঠান নি তাদের বিচারের হুকুম নিয়ে হযরত আবু হানিফা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ব্যাখ্যা করেন এবং পরবর্তীতে হযরত মুজাদ্দিদে আল ফেসানি রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বিষয়টি আরও স্পষ্ট করেন।
** নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক সল্লাল্লাহু আলিহি ওয়াসাল্লাম তিনি প্রতিদিন ৭০ বার তওবা করতেন এই বিষয়ের ব্যাখ্যা হযরত জালালুদ্দিন রুমি রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি যেভাবে উপস্থাপন করতেন তার চেয়ে অনেক বেশী স্পষ্ট ও সঠিকভাবে উপস্থাপন করেন যিনি পনেরো শতকের সম্মানিত মুজাদ্দিদ হযরত মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম।
** আবার নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনার "মানবীয় জিন্দেগী এবং নবুওতী জিন্দেগী" এই ধরণের প্রচলিত পুরনো ভুল ব্যাখ্যার সঠিক ফায়সালা প্রকাশ করেন পনেরো শতকের সম্মানিত মুজাদ্দিদ হযরত মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম।
এক কথায় রাজারবাগ সিলসিলার আকিদা সম্মানিত আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আকিদা হলেও অনেক অস্পস্ট বিষয়ে স্পস্টতা দিয়ে অনন্য নিয়ামত মুবারক দ্বারা ধন্য করেন পনেরো শতকের সম্মানিত মুজাদ্দিদ হযরত মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম। যা আলোচনার নির্দিষ্ট স্থানে সময়মত বিস্তারিত আলোচনা করা হবে ইনশাআল্লাহ।
রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-৮
হযরত মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম উনার কার্যক্রমের ব্যাপ্তি : 
একজন সম্মানিত মুজাদ্দিদ উনার কার্যক্রমের ব্যাপ্তি কেবল জানেন স্বয়ং তিনি এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং যিনি খালিক, যিনি মালিক, যিনি রব মহান আল্লাহ পাক। 
একজন মুজাদ্দিদ উনার সম্মানিত হায়াত মুবারকে যা তাজদীদ মুবারক করেন তা কেবল উনার সময়কালে সীমাবদ্ধ থাকে না তা কাল পেরিয়ে চলতে থাকে দীর্ঘসময় ব্যাপী। তবে এটা সহজে বলা যেতে পারে যেহেতু মহান আল্লাহ পাক ১০০ বছর পর পর একজন সম্মানিত মুজাদ্দিদ পাঠান তার অর্থ কমপক্ষে ১০০ বছর ধরে উনাদের তাজদীদের এক ধরণের ব্যাপকতা থাকে তারপর মানুষ সেখানে বিভ্রান্তি প্রবেশ করায়। আবার বলা হয় ৫০০ বছর এবং হাজার বছর পর পর যিনি মুজাদ্দিদ হিসেবে প্রকাশিত হন তিনি মহান আল্লাহ পাক এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনাদের সাথে নিসবত-কুরবত উনার দিক থেকে অনেক বেশী দৃঢ় হয়ে থাকেন ফলে উনাদের কার্যক্রম আরও ব্যাপক হয়ে থাকে।
কিন্তু ১৫ শতকের সম্মানিত মুজাদ্দিদ, সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম উনার সকল বিষয়গুলো কিতাবে উল্লেখিত বিষয় সমূহ থেকে একেবারেই আলাদা। উনার তাজদীদ মুবারকের ব্যাপ্তি কিয়ামত পর্যন্ত এবং কিছু বিষয় অনন্তকাল ব্যাপী। যেমন সাইয়্যিদুল আ'ইয়াদ শরীফ পালনের বিষয় মুবারক অনন্তকালের জন্য জারী থাকবে। সুবহানাল্লাহ।
এছাড়া আরও একটি বিষয় বলা যায় তা হচ্ছে পূর্ববর্তী মুজাদ্দিদগণ উনারা যেখানে অবস্থান করতেন সেখান থেকে সারা বিশ্বে উনাদের তাজদীদ মুবারক ছড়িয়ে পরতে সময়ের প্রয়োজন হত যেহেতু যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল দুর্বল। আবার বলা যায় বিশ্বের অন্য প্রান্তের সমস্যা দ্বারাও উনারা তেমন প্রভাবিত হতেন না। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপট একেবারেই ভিন্ন। প্রতিটি দেশেই রয়েছে উলামায়ে ছু যারা সম্মানিত ইসলামকে বিকৃত করে চলেছে। তাছাড়া মিডিয়া ব্যবস্থার উন্নতির কারণে পাশ্চাত্যের কাফিররা ইসলাম ধ্বংসের জন্য নানা ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করছে আর ওহাবী সলাফিরা সউদী আরব এবং মধ্য প্রাচ্যের সহায়তায় সারা বিশ্বে একটি নেট ওয়ার্ক গড়ে তুলেছে যার মাধ্যমে সম্মানিত ইসলাম উনাকে তাদের মন মত ব্যাখ্যা করে সাধারণ জনগণের আকিদা নস্ট করে যাচ্ছে। ফলে ১৫ শতকের সম্মানিত মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম উনাকে এই সকল অপ-ব্যবস্থার বিরুদ্ধে কার্যক্রম গ্রহন করতে হচ্ছে। তাহলে এক কথায় বলা যায় ১৫ শতকের সম্মানিত মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম উনার কার্যক্রম সারা বিশ্ব ব্যাপী এবং তার ব্যাপকতা কিয়ামত অবধি এবং কিছু বিষয়ের ব্যাপকতা অনন্তকাল ধরে। সময়মত বিষয়গুলো বিস্তারিত ব্যাখ্যা করা হবে। (চলবে)
রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-৭
সুন্নতি মাসজিদ প্রতিষ্ঠা প্রসঙ্গে দুই মহান ওলীআল্লাহ উনাদের প্রতি মহান নির্দেশ মুবারকঃ
পাঠক আমাদের আলোচনার সুবিধার্থে জানা প্রয়োজন রাজারবাগ শরীফ উনার মহান মুরশিদ কিবলা যিনি ১৫ শতকের সম্মানিত মুজাদ্দিদ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত পিতা , বিশিষ্ট বুজুর্গ হযরত মুখলেসুর রহমান রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে সম্বোধন করা হয় দাদা হুযুর কিবলা হিসেবে আর উনার সম্মানিত শায়েখ হযরত শাহ সুফি হযরত মুহম্মদ ওয়াজিউল্লাহ রহমতুল্লাহি যিনি অবস্থান করতেন ঢাকার যাত্রা বাড়ীতে, উনি যাত্রাবাড়ি পীর সাহেব কিবলা হিসেবে সবার কাছে পরিচিত। সম্মানিত শায়েখ হযরত শাহ সুফি হযরত মুহম্মদ ওয়াজিউল্লাহ রহমতুল্লাহি তিনি একদিন যাত্রাবাড়ী থেকে রাজারবাগ শরীফ এসে দেখা করেন ১৫ শতকের সম্মানিত মুজাদ্দিদ, হযরত মুজাদ্দিদ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত পিতা এবং বিশিষ্ট বুজুর্গ হযরত সৈয়দ মুহম্মদ মুখলেসুর রহমান ( দাদা হুযুর কিবলা) উনার সাথে। যাত্রাবাড়ীতে অবস্থিত সম্মানিত শায়েখ রাজারবাগ শরীফে মসজিদ প্রতিষ্ঠা নিয়ে একটি মুবারক স্বপ্ন দেখেন। তিনি স্বপ্নে দেখেন রাজারবাগ শরীফে মসজিদ প্রতিষ্ঠার জন্য জায়গা দেয়ার বিষয়ে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি উনাকে পবিত্রতম আদেশ মুবারক দান করেন আর তাই তিনি অবহিত করতে চলে আসেন ।” সুবহানাল্লাহ! উনার কাছ থেকে মসজিদ বিষয়ে স্বপ্নের কথা শুনে আওলাদুর রাসূল সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযুর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি খুবই খুশি হলেন এবং অত্যন্ত খুশী মনে হাসতে থাকেন। এবার তিনি বললেন “মাওলানা ছাহিব! আপনি আমার মুবারক আওলাদ উনার সম্মানিত পীর ছাহিব ক্বিবলা আলাইহিস সালাম। আমি উনার সম্মানিত পিতা আলাইহিস সালাম। আপনি শুনুন, সরাসরি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বয়ং আমাকেও হুবহু উক্ত আদেশ মুবারক প্রদান করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! । সুন্নতি মাসজিদ উনার ইতিহাস এখানে এ কারণেই তুলে ধরা হল যে রাজারবাগ শরীফ উনার মধ্যে অবস্থিত মাসজিদ কে কেন "সুন্নতি মাসজিদ" বলা হয় তার নেপথ্য কারণ মানুষের জানা প্রয়োজন। আর এই মাসজিদের ইতিহাস রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতির সাথে নিবিড় ভাবে জড়িয়ে আছে।
উল্লেখ্য খেজুর গাছের খুটি এবং মাটির তৈরি সুন্নতি মসজিদ এখন সময়ের প্রয়োজনে ভেঙ্গে অনেক বড় করে তৈরি করা হয়েছে এবং কাজ এখনো চলছে। (চলবে)
রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-৬
সুন্নতী মসজিদ ও মাদরাসা উনার মূল বুনিয়াদী অবকাঠামো ও তার পূর্ণ বিবরণী :
আলহামদুলিল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মুবারক নির্দেশ এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক দিক নির্দেশনায় রাজারবাগ শরীফে সুন্নতী জামে মসজিদ উনার নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে যায়। বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অক্লান্ত ও অবর্ণনীয় ত্যাগ ও পরিশ্রমে সর্বপ্রকার সুন্নতী নির্মাণ সামগ্রী সংগ্রহ করা হয়। যথাক্রমে যশোর ও ফরিদপুর এবং ঢাকা রূপগঞ্জের কালীগঞ্জ থেকে খেজুর গাছ, খেজুরের পাতা, কান্ড ও ছাল। আমাদের দেশের অধিকাংশ খেজুর গাছই রস সংগৃহীত কাটা গাছ। আর ঐ কাটা গাছ দিয়ে স্তম্ভ, কাঠ, রুয়া ইত্যাদি তৈরী করা সম্ভব নয়। পূর্ণাঙ্গ ভাল গাছের দরকার। তাই অনেক খোঁজাখুঁজি ও ব্যয়বহুল অবস্থায় দূর দুরান্ত থেকে ট্রাকযোগে ও নৌপথে সমস্ত সুন্নতী সামগ্রী সংগ্রহ করে পবিত্র দরবার শরীফ-এ আনা হয়। চাল বাঁধাই এর জন্যে বেত আনতে হয় সিলেট থেকে। দেয়াল নির্মাণের জন্য লালমাটি সংগ্রহ করা হয় ঢাকা কদমতলা রাজারবাগ থেকে। পাথর আনা হয় নূরানীগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) থেকে।
বিজ্ঞ বিজ্ঞ মিস্ত্রী যোগাড় করে ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪০৬ হিজরী/ ২৮ সাদিস-১৩৫৩ শামসী সন/ ১৯৮৬ ঈসায়ী সনে পবিত্র সুন্নতী জামে মসজিদ তৈরীর কাজ শুরু হয়। সুন্নতী জামে মসজিদের বারান্দা, হুজরা শরীফ ও সুফ্ফাখানাসহ দৈর্ঘ্য ৫০ ফুট এবং প্রস্থ হচ্ছে ৩০ ফুট। মূল মসজিদ হচ্ছে দৈর্ঘ্যে ৩০ ফুট এবং প্রস্থ হচ্ছে ২০ ফুট। মসজিদের চাল বা ছাদ ছিল ৯ ইঞ্চি পুরো খেজুর পাতার ছাউনি। চালের ফ্রেম ছিল ২/২ ইঞ্চি রুয়া। আড়া ছিল তাল ও খেজুর গাছের। আর ৬ খানা স্তম্ভ ছিল খেজুর গাছের। দেয়াল নির্মাণে লাল মাটির কঙ্কর (ছোট পাথর) বিছিয়ে দেয়া হয়। মসজিদের ভেতরে স্তম্ভে মাটির চেরাগ ব্যবহার করা হয়, যা সংগ্রহ করা হয়েছিল ঢাকার ঠাটারী বাজার ও টঙ্গি থেকে। উক্ত চেরাগে বাতি জ্বালানোর জন্যে পবিত্র সুন্নত মুবারক অনুসরণে সরিষার তেল ও যয়তুন তেল ব্যবহার করা হয়। সুবহানাল্লাহ! সুন্নতী মসজিদের বিছানা ছিল পবিত্র সুন্নত মুবারক অনুসরণে খেজুর পাতার চাটাই দিয়ে। সুবহানাল্লাহ!
পবিত্র জায়নামাযও ছিল খেজুর পাতার তৈরী। আর মিম্বর শরীফ তৈরী করা হয়েছিল চট্টগাম, কক্সবাজার থেকে ঝাউগাছ এনে তিন থাক বিশিষ্ট সুন্নতী মাপে। খেজুর গাছের পবিত্র সুন্নতী মাপে লাঠি মুবারকও তৈরী করা হয়। গরম কালে তাল পাতার পাখা ব্যবহার করা হতো। সুবহানাল্লাহ! (চলবে)
রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-৫
রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-৫
আমরা রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি দিতে গিয়ে পবিত্র সুন্নতি মসজিদের আলোচনা করছিলাম। এই পবিত্র সুন্নতি মসজিদ উনার সঙ্গে মিল রয়েছে সেই ১৪৩৬ বছর আগে পবিত্র মদিনা শরীফে প্রতিষ্ঠিত মসজিদে নববী শরীফ উনার সাথে। সে আলোচনা আজ শোনা যাক।
ঢাকার কেন্দ্রস্থলে রাজারবাগ এলাকায় আওলাদে রসূল, আল্লাহ পাক উনার মহান ওলী, বিশিষ্ট বুজুর্গ হযরত সৈয়দ মুহম্মদ মুখলেসুর রহমান (রহমতুল্লাহি আলাইহি ) উনাদের আবাস যিনি ১৫ শতকের সম্মানিত মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত পিতা। উনার ছেলে সন্তানগণের মধ্যে যিনি তৃতীয় তিনি সবার চেয়ে একেবারেই ব্যতিক্রম। উনার দুনিয়াভী বয়স মুবারক যখন কম তখন থেকেই লক্ষ্য করা গেছে তিনি সুন্নত পালনে অবিচল। উনার জীবন মুবারকের বিভিন্ন সময়ে সাক্ষাৎ হয় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ, হুযুর পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনার সঙ্গে। এছাড়াও অনেক হযরত সাহাবা আজমাইন,মাযহাব উনার ইমাম, তরিকার ইমাম উনারা দেখা করে উনাকে বভিন্ন বিষয়ে সু সংবাদ প্রদান করতেন। আর তিনি সেভাবেই উনার জীবন গড়ে তুলেন। উনার জীবন পরিপূর্ণ কুরআন শরীফ এবং হাদিস শরীফ উনার বাস্তবায়ন। আর পরবর্তীতে তিনিই রাজারবাগ শরীফ উনার সম্মানিত শায়খ হিসেবে মশহুর হন। তিনি এই রাজারবাগ শরীফে উনার পৈত্রিক বাড়িতে প্রতিষ্ঠা করেন মসজিদে নববী শরীফ উনার হুবহু নকশা অনুযায়ী " সুন্নতি জামে মসজিদ"। বিষয়টি বলা যত সহজ বাস্তবে ছিল অনেক কঠিন।কিন্তু যেহেতু তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার ইচ্ছা মুবারকেই এই মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তাই উনার জন্য ছিল গাইয়িবি সাহায্য। যা না জানলে কোন দিন বোঝা যাবেনা। আসুন সেই ইতিহাস এবার শুনি ।
একদিন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার প্রিয়তম আওলাদ, ঢাকা রাজারবাগ শরীফের সম্মানিত পীর সাহেব মুরশিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনাকে পবিত্র মসজিদে নববী শরীফ উনার নকশায় পবিত্র সুন্নতী জামে মসজিদ ও সঙ্গে মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ নির্মাণ করার জন্য মুবারক নির্দেশ প্রদান করেন। সুবহানাল্লাহ!
এমনকি সুন্নতী মসজিদ কোথায়, কিভাবে, কী কী উপকরণ দিয়ে, কী মাপে এবং উপকরণাদি কোথা থেকে সংগ্রহ করতে হবে ইত্যাদি সকল প্রকার মুবারক তথ্যাদি অবহিত করেন এবং তা দেখিয়ে দেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বয়ং পবিত্র রাজারবাগ দরবার শরীফ-এ তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করে পবিত্র মসজিদ নির্মাণের স্থান এবং মসজিদের কোন দিকে সুফ্ফা খানা, হুজরা শরীফ, কুয়া (কুপ) মুবারক, মিম্বর শরীফ, তালা মুবারক, লাঠি মুবারক কেমন হবে, তা এক এক করে স্পষ্টভাবে দেখিয়ে ও বুঝিয়ে দেন। সাথে তাশরীফ মুবারক নিয়েছিলেন- উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম এবং আফদ্বালুন নাস, বা’দাল আম্বিয়া হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনাকে বলেন যে, “এখানেই এবং এখান থেকে সমগ্র বিশ্বে আপনার প্রিয়তম আওলাদ আলাইহিস সালাম তিনি পবিত্র সুন্নত মুবারক কায়িম ও জিন্দা করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (চলবে)
রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-৪
৪. এক সুন্নতী মসজিদ উনার কথা :
রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি তুলে ধরতে হলে পবিত্র সুন্নতী জামে মসজিদ উনার কথা বলতেই হবে। এছাড়া সমস্ত বর্ণনা অপূর্ণ রয়ে যাবে। মসজিদ মহান আল্লাহ পাক উনার ঘর। খোঁজ নিয়ে দেখা যাবে- মুসলমান মাত্রই কোনো না কোনো মসজিদ তৈরিতে সাহায্য করেন বা দান করে থাকেন। শহরে থাকলে এলাকার মসজিদে, গ্রামে থাকলে গ্রামের মসজিদে আবার অনেকে শহরে থেকেও নিজের গ্রামের মসজিদের জন্য দান করে থাকেন। পাশ্চাত্যে যেমন- আমেরিকা, ব্রিটেন, ইটালী, ফ্রান্স এসব দেশে যখন কোনো মুসলিম দেশ যেমন- বাংলাদেশ, পাকিস্তান বা কোনো আফ্রিকার মুসলিম দেশ থেকে মুসলমানগণ যান; তারা সেদেশে গিয়ে অনেক মসজিদ-মাদরাসা তৈরি করেছেন তার বহু নজির রয়েছে। অনেক বেনামাযী লোকও কেবল মসজিদ প্রতিষ্ঠার সঙ্গে যুক্ত হয়ে নামাযী হয়ে গেছেন। এর কারণ মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত। অর্থাৎ খালিছ নিয়তে কেউ যদি মহান আল্লাহ পাক উনার ঘরের খিদমতের আঞ্জাম দেয়, তাহলে এক সময় তার আল্লাহওয়ালা হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়ে যায়।
তবে অবশ্যই একটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ, তা হচ্ছে- যদি কোনো ভ্রান্ত মত-পথ প্রচারের লক্ষ্যে, সমাজে নিজের অবস্থান প্রকাশের উদ্দেশ্যে, কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মসজিদ-মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করে বা সেখানে দান করে, তবে নেকী না হয়ে বিপরীত ফল বয়ে আনবে।
পবিত্র মসজিদুল হারাম শরীফ উনার মধ্যে নামায পড়লে এক রাকাতের সমান এক লক্ষ রাকাতের ছওয়াব, পবিত্র মসজিদে নববী শরীফ এবং পবিত্র বায়তুল মুকাদ্দাস শরীফ উনার মাঝে এক রাকাতের বিনিময়ে পঞ্চাশ হাজার রাকাতের সমান ছওয়াব পাওয়া যায়। আর যে মসজিদে জুমুয়াহ হয় সেখানে নামায পড়লে এক রাকাতের বিনিময়ে পাঁচশ’ রাকাত আর সাধারণ মসজিদে নামায পড়লে ঘরে পড়ার চেয়ে পঁচিশগুণ বেশি ছওয়াব পাওয়া যায়। এখানে ফতওয়া হচ্ছে, বেশি ছওয়াবের নিয়তে পবিত্র মসজিদুল হারাম শরীফ, পবিত্র মসজিদে নববী শরীফ এবং পবিত্র বায়তুল মুকাদ্দাস শরীফ ভিন্ন অন্য কোনো মসজিদে ভ্রমণ (ছফর) করা জায়িয নেই। কিন্তু এটা সত্য, এই তিন মসজিদে দান করা আর অন্য কোনো মসজিদে দান করা কখনোই সমান হবে না। একইভাবে যে মসজিদ কোনো মহান ওলীআল্লাহ উনার সঙ্গে নিছবতযুক্ত (সম্পর্কযুক্ত) এবং যে মসজিদ হতে হাক্বীক্বীভাবে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার কার্যক্রম হয়, সেখানে দান করা আর কেবল পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায়ের মসজিদে দান করা কখনো এক হবে না। এর মূল কারণ বুঝতে হলে একটি বিষয় জানা ও উপলব্ধি করা দরকার। যেমন সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার আমলনামা দাঁড়িপাল্লার এক অংশে রাখা হলে আর অন্য অংশে বিশ্বের সকল মুসলমান উনাদের আমলনামা রাখা হলে উনার অংশই ভারী হবে। এর কারণ তিনিই প্রথম সম্মানিত পুরুষ ব্যক্তিত্ব মুবারক যিনি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনাকে প্রথম কবুল করেছিলেন। সুবহানাল্লাহ! ফলে যত মুসলমান পবিত্র দ্বীন ইসলাম কবুল করবেন সবার আমলনামা সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার আমলনামায় জমা হচ্ছে এবং ক্বিয়ামত পর্যন্ত হতেই থাকবে। তাহলে সকলের সঞ্চিত নেক আমলনামা যোগে উনার আমলনামা ভারী হবে- এটাই স্বাভাবিক।
একইভাবে যে মসজিদ মুবারকে যিকির-ফিকির, ইলম আমলের, পবিত্র দ্বীন ইসলামের প্রচার প্রসারের কাজকর্ম চলতেই থাকে, সেই মসজিদে দান করলে অবশ্যই কেবল ওয়াক্তিয়া মসজিদে দান করার চেয়ে ছওয়াব বেশি পাওয়া যাবে। এটা মহান আল্লাহ পাক উনার ওয়াদা। কারণ তিনি সমস্ত নেক কাজের উত্তম প্রতিদান দিয়ে থাকেন। (চলবে)
রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-৩
৩. ঢাকাস্থ ‘রাজারবাগ শরীফ’ থেকে কার্যক্রম শুরু :
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পূর্ববর্তী সময়ে যে সকল হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা এসেছিলেন, উনারা একটি নির্দিষ্ট কওমের হিদায়েতের জন্য এসেছিলেন। একমাত্র নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এসেছেন পুরো কায়িনাতের জন্য। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন ‘খাতামুন নাবিইয়ীন’ অর্থাৎ উনার পর আর কোনো হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা আসবেন না; কিন্তু উনার উম্মতের মধ্য থেকে আসবেন সম্মানিত “মুজাদ্দিদ”। মুজাদ্দিদগণ কোনো একটি নির্দিষ্ট এলাকায় অবস্থান করলেও উনাদের হিদায়েতের কার্যপরিধি থাকে পৃথিবীব্যাপী।
আর একজন সম্মানিত মুজাদ্দিদসহ সকল ওলীআল্লাহগণ উনারা কে কোথায় অবস্থান করে হিদায়েতের কার্যক্রম পরিচালনা করবেন তা মূলত নিয়ন্ত্রণ করেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। যেমন হযরত খাজা ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি তৎকালীন বৃহত্তর পারস্যের অধিবাসী হলেও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক নির্দেশক্রমে ভারতের আজমীর শরীফে এসে হিদায়েতের কার্যক্রম শুরু করেন। আবার ৭ম শতকের মহান মুজাদ্দিদ মাহবুবে ইলাহী হযরত নিজামুদ্দিন আউলিয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ভারতের দিল্লীতে উনার হিদায়েতের কেন্দ্রস্থল গড়ে তোলেন। আবার হযরত মুজাদ্দিদে আলফেছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন স্থান ভ্রমণ করলেও উনার পৈতৃক নিবাস সিরহিন্দ শরীফই ছিল উনার মূল হিদায়েতের কর্মস্থল।
একইভাবে ১৫ শতকের মহান মুজাদ্দিদ, সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম, হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে অবস্থান করার কারণে সেখান থেকেই হিদায়েতের আলো বিতরণ শুরু করেন। যদিও উনার সম্মানিত শায়েখ ঢাকার যাত্রাবাড়িতে অবস্থান করতেন; কিন্তু নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক নির্দেশক্রমে তিনি উনার পৈতৃক নিবাস ঢাকার রাজারবাগ শরীফে মসজিদে নববী শরীফ উনার আদলে পবিত্র সুন্নতী মসজিদ স্থাপন করেন এবং এখান থেকেই উনার মূল হিদায়েতের কার্যক্রম সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেন। সম্মানিত রাজারবাগ শরীফ উনার অবস্থান হচ্ছেন- দেশের বৃহত্তম পুলিশ লাইন ‘রাজারবাগ পুলিশ লাইন’-এর ৩নং গেটের বিপরীত দিকে। যখন কাফির-মুশরিকরা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশসহ বিশ্বের চতুর্দিকে মুসলমানদেরকে সন্ত্রাসী বানানোর একটা অপচেষ্টায় লিপ্ত, ঠিক সেই সময়ে ‘রাজারবাগ পুলিশ লাইন’-এর ৩নং গেটের বিপরীতে হিদায়েতের এই কর্মকান্ড- হচ্ছে হক্বের একটি অনন্য নিশানা এবং সাইয়্যিদুনা হযরত মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার একটি কারামত মুবারকের অন্তর্ভুক্ত। (চলবে)
রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-২
২. মুবারক পূর্বপূরুষ উনাদের পরিচিতি :
আমাদের এ অঞ্চলে পবিত্র দ্বীন ইসলাম প্রচারের জন্য এসেছেন হযরত ওরাছাতুল আম্বিয়াগণ অর্থাৎ ওলীআল্লাহগণ উনারা। উনারাই এ অঞ্চল যথা: বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে পবিত্র দ্বীন ইসলাম প্রচার করেছেন, পথহারা মানুষদেরকে ঈমান দান করেছেন। এমনি এক মহান ওলীআল্লাহ ছিলেন খাজা গরীবে নাওয়াজ হযরত মুঈনুদ্দীন চিশতি রহমতুল্লাহি আলাইহি; যিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাইবিয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কর্তৃক স্বপ্নে আদিষ্ট হয়ে ভাতবর্ষের আজমীর শরীফে হেদায়েতের বার্তা নিয়ে আগমন করেন। তিনি সমরখন্দ, লাহোর, মুলতান হয়ে দিল্লী পৌঁছেন। পরবর্তীতে দিল্লী থেকে আজমীর শরীফ পৌঁছে পবিত্র দ্বীন ইসলাম প্রচার শুরু করেন। কিছু সঙ্গী-সাথী ছাড়া কোনো সৈন্য-সামন্ত উনার ছিল না। আজমীর শরীফের যালিম হিন্দু শাসক পৃথ্বীরাজ চৌহান কিছুতেই গরীবে নাওয়াজ হযরত খাজা ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে সহ্য করতে পারলো না। হযরত খাজা ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট পৃথ্বীরাজের প্রধান যাদুকর ও বিশাল সৈন্য বাহিনী তুলার মতো উড়ে গেল। পরবর্তীতে পৃথ্বীরাজ নিজে যুদ্ধে পরাজিত হয়ে হযরত শিহাবউদ্দিন মুহম্মদ ঘোরী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার হাতে প্রাণ দেয়। পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার সাম্য ও মাধুর্যে মুগ্ধ হয়ে প্রায় ১ কোটি বিধর্মী হযরত খাজা ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার হাতে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে দীক্ষিত হয় । মহান আল্লাহ পাক উনার এই মহান ওলীআল্লাহ বেশ কিছু সঙ্গী-সাথী ও অনুসারীদের নিয়ে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম প্রচারের জন্য ভারতবর্ষে এসেছিলেন। উনার সঙ্গীদের মধ্যে উনার এক অন্তরঙ্গ সঙ্গী ছিলেন ঐ যামানার খাছ লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ হযরত সাইয়্যিদ মুহম্মদ আবু বকর মুজাদ্দিদি রহমতুল্লাহি আলাইহি। তিনি আজমীর শরীফে পবিত্র দ্বীন ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে হযরত খাজা ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সাথে অবস্থান করেন এবং সেখানে পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। আজমীর শরীফে উনার মাজার শরীফ রয়েছে। উনারই অধস্তন বুযুর্গ আওলাদ হযরত সাইয়্যিদ মুহম্মদ আলাউদ্দিন রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং হযরত সাইয়্যিদ মুহম্মদ সালাউদ্দিন রহমতুল্লাহি আলাইহি উনারা ১১ হিজরী শতকের শেষার্ধে হিদায়াতের মহান ব্রত নিয়ে চট্টগ্রাম আসেন।
পাঠক, নিশ্চয়ই অবগত আছেন যে, সে কালে প্রধানতঃ পানিপথেই হিদায়াতের উদ্দেশ্যে মধ্যপ্রাচ্য থেকে অনেক ওলীআল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা বাংলাদেশে আসতেন। এজন্য চট্টগ্রামকে আজো ওলীআল্লাহগণের আগমনের কেন্দ্রবিন্দু (বা প্রধান পথ) মানা হয়ে থাকে। এই চট্টগ্রাম থেকেই উনারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়তেন। আজ বাংলাদেশের সব অঞ্চলে মুক্তার মতো ছড়িয়ে আছেন বহু ওলী-আউলিয়া রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের পবিত্র রওযা মুবারক। এই ধারাবাহিকতায় হযরত সাইয়্যিদ মুহম্মদ আলাউদ্দিন রহমতুল্লাহি আলাইহি ও হযরত সাইয়্যিদ মুহম্মদ সালাউদ্দিন রহমতুল্লাহি আলাইহি উনারা চট্টগ্রাম পৌঁছেন। কিছুদিন চট্টগ্রাম অবস্থানের পর উনারা দুই ভাই হিদায়াতের উদ্দেশ্যে উভয়ই না’গঞ্জের (নূরানীগঞ্জ) সোনারগাঁও আসেন। এই সোনারগাঁয়ে অসংখ্য হযরত ওলীআল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি এসেছিলেন; এর নিদর্শন এলাকায় ভুরিভুরি পাওয়া যায়। হযরত সাইয়্যিদ সালাউদ্দিন রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এই সোনারগাঁও এলাকায় হিদায়াতের কাজে ব্যস্ত থাকেন এবং সেখানেই বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন।
আর হযরত সাইয়্যিদ মুহম্মদ আলাউদ্দিন রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সোনারগাঁওয়ে কিছু দিন অবস্থান করার পর সোনারগাঁওয়ের অদূরে যে স্থানে উনার হিদায়াতের কেন্দ্র গড়ে তুললেন তার বর্তমান নাম “প্রভাকরদী”। এই প্রভাকরদীতে রয়েছে একটি মাজার শরীফ কমপ্লেক্স, যেখানে রয়েছেন বর্তমান যামানার মহান মুজাদ্দিদ, ইমামুল উমাম, হযরত মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত পূর্বপুরুষগণ উনারা। এই ‘সাইয়্যিদ বাড়ি’তে আজো রয়েছে সুমহান ঐতিহ্য ও ইযযত মুবারকের ছাপ।
এখানে একটি কথা বলে রাখা প্রয়োজন; তা হলো- হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম এবং হযরত ওলীআল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা সকলেই সম্ভ্রান্ত পূর্বপুরুষগণ উনাদের মাধ্যমে পৃথিবীতে তাশরীফ এনেছেন। এর সামান্য ব্যতিক্রম কেউ খুঁজে পাবে না।
হযরত সাইয়্যিদ মুহম্মদ আলাউদ্দিন রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বুযুর্গ আওলাদ হযরত সাইয়্যিদ মুহম্মদ মালাউদ্দিন রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সম্মানিত বুযুর্গ আওলাদ হযরত সাইয়্যিদ মুহম্মদ এলাহি বখ্স রহমতুল্লাহি আলাইহি। উনার সম্মানিত বুযুর্গ আওলাদ হযরত সাইয়্যিদ মুহম্মদ ওয়ালী বখ্স রহমতুল্লাহি আলাইহি। উনার সম্মানিত বুযুর্গ আওলাদ হযরত সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান রহমতুল্লাহি আলাইহি।
কুতুবুয যামান, আরিফ বিল্লাহ, লিছানুল হক, ফখরুল আউলিয়া, হযরত সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ১৩২৫ হিজরী (১৯০৮ ঈসায়ী) সালে ‘সাইয়্যিদ বাড়ি’র পুণ্যভূমিতে তাশরীফ আনেন। পিতা-মাতা উভয়ে ছিলেন যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি। সিলসিলা পরম্পরায় তিনি ছিলেন পিতা-মাতার দিক থেকে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী আলাইহিস সালাম এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম উনাদের সাথে সম্পৃক্ত। সুতরাং উনি ছিলেন আওলাদে রসূল।
এই মহান ওলীআল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হলেন আমাদের প্রাণাধিক প্রিয়, যামানার লক্ষ্যস্থল ওলী, মুজাদ্দিদে মাদারযাদ, আওলাদে রসূল মুজাদ্দিদে যামান, ইমামুল উমাম, হযরত মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম। উনার বুযুর্গ পূর্বপুরুষগণ উনাদের সম্পর্কে সামান্যই উল্লেখ করা হলো। প্রভাকরদী সাইয়্যিদ বাড়ির মুবারক মাজার শরীফ কমপ্লেক্স উনার নামফলকে সম্মানিত পূর্বপুরুষগণ উনাদের নাম মুবারকসমূহ উল্লেখ রয়েছে।
রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-১

১. রাজারবাগ শরীফ সিলসিলার পরিচিতি  : 
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনি পবিত্র হাদীস শরীফ উনার মাঝে ইরশাদ মুবারক করেছেন " আমার উম্মত আমার শিক্ষাকে ৭৩ টি দলে বিভক্ত করবে তবে তার মাঝে একটি দল হবে হক"। সেই সঠিক আকীদা বিশিষ্ট দলকে পরবর্তীতে বলা হয়েছে "আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত"। কিন্তু পরবর্তীতে দেখা গেলো অনেকেই নিজেদের সেই দলের সদস্য দাবী করছে কিন্তু তাদের আকায়েদ, আমল আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত থেকে ভিন্ন, যেমন ওহাবী ও সলাফী সম্প্রদায়। চার মাযহাবের অনুসারীগনই আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের অনুসারী । তারপরেও একই মাযহাবের অনুসারীগনের মধ্যে আবার ইলমে তাসাউফ, ইলমে আখলাক বা ইলমে বাতেন হাছিলের জন্য বিভিন্ন ধারা, তরিকা বা সিলসিলা পাওয়া যায়। সিলসিলা একটি আরবী শব্দ যার অর্থ চেইন বা সংযোগের ধারাবাহিকতা। এটা আধ্যাত্মিক বংশতালিকাও বটে যেখানে একজন কামিল মুর্শিদ বা শায়েখ উনার উত্তরপুরুষদের মধ্যে খেলাফতের ভার ন্যাস্ত করে যান। সিলসিলা হচ্ছে কামিল মুর্শিদ বা শায়েখগণের একটি পরযায়ক্রমিক ধারা। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় গাউসুল আযম, হযরত বড় পীর সাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং সুলতানুল হিন্দ হযরত খাজা গারীব নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনারা আহলে সুন্নাত জামাতের আকিদাভুক্ত হবার পরেও, মাযহাবের দিক থেকে এবং তাসাউফ শিক্ষার সিলসিলার দিক থেকে ভিন্ন। আর সে কারণে অনেক সময় তাসাউফ শিক্ষার পর্যায়ক্রমিক ধারাই সিলসিলা হিসেবে মশহুর হয়ে থাকে।
কখনো কখনো কোন সিলসিলার মধ্যে আগত কোন বিশিষ্ট আল্লাহ পাক উনার ওলীর নাম অনুসারে বা উনার অবস্থানস্থল অনুসারে সেই সিলসিলা ভিন্ন নামে মানুষের মাঝে পরিচিত হয়ে থাকে। কিন্তু নাম যাই হোক না কেন সেই সিলসিলা মূলের দিক থেকে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আকিদাভুক্ত এবং তসাউফের একটি নির্দিষ্ট ধারার সঙ্গে অবশ্যই সম্পৃক্ত থাকবে।
গাউসুল আযম হযরত বড় পীর সাহেব রহমতুল্লাহি উনার তরিকা বা সিলসিলা উনার সম্মানিত নাম মুবারক অনুসারে কাদেরিয়া তরিকা বা কাদেরিয়া সিলসিলা হিসেবে মশহুর । আবার হযরত মুজাদ্দিদে আল ফিসানী রহমতুল্লাহি উনার তরীকা প্রথম দিকে কেবল মুজাদ্দিদিয়া তরীকা হিসেবেও থাকলেও পরে নক্সবন্দীয়া তরিকা মিলিত হবার কারণে নাম হয় "নক্সবন্দীয়া-মুজাদ্দেদিয়া"। আবার চিশত নামক স্থান থেকে "চিশতিয়া" তরিকা নামের উদ্ভব হয়েছে বলে অনেকে মনে করেন। হযরত বাহাউদ্দিন নকশবান্দ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার তরিকা "নাক্সবান্দিয়া" তরিকা হিসেবে মশহর। এই "নকশবান্দ" নাম মুবারক মশহুর হবার পেছনে দুটি কারণ ব্যাখ্যা করা হয় ১) তিনি উনার সম্মানিত পিতাকে নক্সাদার চাদর বুনতে সাহায্য করতেন ২) তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার যিকির শরীফের মাধ্যমে উনার অন্তরে আল্লাহ পাক উনার নক্সা অঙ্কিত করেছিলেন। আবার বিশিষ্ট মুজাদ্দিদ হযরত সৈয়দ আহমদ বেরলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি চার তরীকার তালিম দেবার কারণে অনেক স্থানে এসে এই সিলসিলার নাম পরিবর্তিত হয়ে যায়। যেমন ১৪ শতকের বিশিষ্ট মুজাদ্দিদ তিনি ভারতের ফুরফুরা শরীফে অবস্থানের কারণে সিলসিলার নাম পরিবর্তিত হয়ে ফুরফুরা সিলসিলা হিসেবে মশহুর হয়ে যায়। তাহলে আমরা দেখতে পেলাম ওলী আল্লাহগণের নাম থেকে, এলাকার নাম থেকে, রুপক অর্থে বিভিন্নভাবে সিলসিলার নাম মশহুর হয়ে থাকে। একইভাবে ১৫ শতকের সম্মানিত মুজাদ্দিদ মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম তিনি রাজারবাগ শরীফে অবস্থান কারণে অনেকে এই সম্মানিত সিলসিলাকে রাজারবাগ সিলসিলা হিসেবে চেনে থাকেন। (চলবে)
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় নসবনামাহ মুবারক
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় নসবনামাহ মুবারক


উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ (হযরত সাওদাহ্) আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত পিতা হচ্ছেন সাইয়্যিদুনা হযরত যাম‘আহ ইবনে ক্বইস আলাইহিস সালাম। তিনি উনার সম্মানিত পিতা উনার দিক থেকে ৯ম পুরুষে যেয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মিলিত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! যেমন- 
اُمُّ الْمُؤْمِنِيْنَ سَيِّدَتُناَ حَضْرَتْ سَوْدَةُ بِنْتُ زَمْعَةَ بْنِ قَيْسِ بْنِ عَبْدِ شَمْسِ بْنِ عَبْدِ وُدّ بْنِ نَصْرِ بْنِ مَالِكِ بْنِ حِسْلِ بْنِ عَامِرِ بْنِ لُؤَيّ بْنِ غَالِبِ بْنِ فِهْرِ بْنِ مَالِكِ بْنِ النَّضْرِ بْنِ كِنَانَةَ بْنِ خُزَيـْمَةَ بْنِ مُدْرِكَةَ بْنِ اِلْيَاسَ بْنِ مُضَرَ بْنِ نِزَارِ بْنِ مَعَدِّ بْنِ عَدْنَانَ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ.
১.   اُمُّ الْمُؤْمِنِيْنَ سَيِّدَتُناَ حَضْرَتْ سَوْدَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত সাওদাহ আলাইহাস সালাম। 
২. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ زَمْعَةَ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত যাম‘আহ্ আলাইহিস সালাম।
৩. قَيْسِ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত ক্বইস্ আলাইহিস সালাম।
৪. عَبْدِ شَمْسِ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দু শাম্স আলাইহিস সালাম।
৫. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ عَبْدِ وُدّ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আবদু উদ্দ আলাইহিস সালাম।
৬. نَصْرِ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত নছ্র আলাইহিস সালাম।
৭. مَالِك عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত মালিক আলাইহিস সালাম।
৮. حِسْلِ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত হিস্ল আলাইহিস সালাম।
৯. عَامِرِ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আমির আলাইহিস সালাম।
১০. لُؤَىٌّ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত লুআই আলাইহিস সালাম।
১১. غَالِبٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত গ¦ালিব আলাইহিস সালাম।
১২. فِهْرٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত ফিহ্র আলাইহিস সালাম।
১৩. مَالِكٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত মালিক আলাইহিস সালাম।
১৪. اَلنَّضْرُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত নদ্বর আলাইহিস সালাম।
১৫. كِنَانَةُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত কিনানাহ্ আলাইহিস সালাম।
১৬. عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ خُزَيـْمَةُ সাইয়্যিদুনা হযরত খুযাইমাহ্ আলাইহিস সালাম।
১৭. مُدْرِكَةُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত মুদ্রিকাহ আলাইহিস সালাম।
১৮. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ اِلْيَاسُ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ইলইয়াস আলাইহিস সালাম।
১৯. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ مُضَرُ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত মুদ্বর আলাইহিস সালাম।
২০. نِزَارٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত নিযার আলাইহিস সালাম।
২১. مَعَدٌّ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত মা‘আদ্দ আলাইহিস সালাম।
২২. عَدْنَانُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আদ্নান আলাইহিস সালাম।
সাইয়্যিদুনা হযরত লুয়াই আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত পূর্বপুরুষ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিতা মাতা হচ্ছেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত শুমূস বিনতে ক্বইস্ আলাইহাস সালাম। তিনি ছিলেন সম্মানিত বনী নাজ্জার গোত্রের। সুবহানাল্লাহ! যেমন,
سَيِّدَتُناَ حَضْرَتْ الشُّمُوسُ بِنْتُ قَيْسِ بْنِ عَمْرِو بْنِ زَيْدِ بْن عَمْرو بْنِ لَبِيدِ بْنِ خِدَاشِ بْنِ عَامِرِ بْنِ غَنْمِ بْنِ عَدِيِّ بْنِ النَّجَّارِ بْنِ ثَعْلَبَةَ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْخَزْرَجِ بْنِ حَارِثَةَ بْنِ ثَعْلَبَةَ بْنِ عَمْرِو بْنِ عَامِرٍ بْن حَارِثَة الغطريف بْن امْرِئ الْقَيْس بْن ثَعْلَبَة بْن مَازِن بْن الأزد بْن الغوث بْنِ نَبْتِ بْنِ مَالِكِ بْنِ زَيْدِ بْنِ كَهْلانَ بْنِ سَبَأَ بْنِ يَشْجُبَ بْنِ يَعْرُبَ بْنِ قَحْطَانَ بن هود النبى عليه السلام بن شالخ بن أرفخشد بن سام بن نوح عَلَيْهِمُ السَّلَامُ.
১. سَيِّدَتُناَ حَضْرَتْ الشُّمُوسُ عَلَيْهَا السَّلَامُ  সাইয়্যিদাতুনা হযরত শুমূস আলাইহাস সালাম।
২. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ قَيْسِ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ক্বইস আলাইহিস সালাম।
৩. عَمْرِو عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আমর আলাইহিস সালাম।
৪. زَيْدِ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত যায়েদ আলাইহিস সালাম।
৫. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ عَمْرو عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আমর আলাইহিস সালাম।
৬. لَبِيدِ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত লাবীদ আলাইহিস সালাম।
৭. خِدَاشِ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত খিদাশ আলাইহিস সালাম।
৮. عَامِرِ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আমির আলাইহিস সালাম।
৯. غَنْمِ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত গ¦ন্ম আলাইহিস সালাম।
১০. عَدِيِّ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আদী আলাইহিস সালাম।
১১. النَّجَّارِ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত নাজ্জার আলাইহিস সালাম।
১২. ثَعْلَبَةَ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত ছা’লাবাহ্ আলাইহিস সালাম।
১৩. عَمْرِو عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আমর আলাইহিস সালাম।
১৪. الْخَزْرَجِ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত খয্রাজ আলাইহিস সালাম।
১৫. حَارِثَةَ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছহ্ আলাইহিস সালাম।
১৬. عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ ثَعْلَبَةَ সাইয়্যিদুনা হযরত ছা’লাবহ্ আলাইহিস সালাম।
১৭. عَمْرِو عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আমর আলাইহিস সালাম।
১৮. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ حَارِثَة الغطريف عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছহ্ গি¦ত্বরীফ আলাইহিস সালাম।
১৯. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ امْرِئ الْقَيْس عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমরিয়িল ক্বইস্ আলাইহিস সালাম।
২০. ثَعْلَبَة عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত ছা’লাবাহ্ আলাইহিস সালাম।
২১. مَازِن عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত মাযিনআলাইহিস সালাম।
২২. الْأَزْدِ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত আয্দ আলাইহিস সালাম।
২৩. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ الغوث عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত গ¦ওছ্ আলাইহিস সালাম।
২৪. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ نَبْتِ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত নব্ত আলাইহিস সালাম।
২৫. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ مَالِكِ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত মালিক আলাইহিস সালাম।
২৬. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ زَيْدِ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত যায়েদ আলাইহিস সালাম।
২৭. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ كَهْلانَ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত কাহ্লান আলাইহিস সালাম।
২৮. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ سَبَأَ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত সাবা’ আলাইহিস সালাম।
২৯. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ يَشْجُبَ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ইয়াশজুব আলাইহিস সালাম।
৩০. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ يَعْرُبَ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ইয়া’রুব আলাইহিস সালাম।
৩১. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ حَارِثَة الغطريف عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছহ্ গি¦ত্বরীফ আলাইহিস সালাম।
৩২. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ قَحْطَانَ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমরিয়িল ক্বহ্ত্বান আলাইহিস সালাম।
৩৩. هود عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত হূদ আলাইহিস সালাম।
৩৪. شَالَـخٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত শালাখ আলাইহিস সালাম।
৩৫. اَرْفَخْشَذُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত আরফাখ্শায আলাইহিস সালাম।
৩৬. سَامٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত সাম আলাইহিস সালাম।
৩৭. نُوْحٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত নূহ আলাইহিস সালাম।
(আল ইস্তী‘য়াব, ইবনে হিশাম, আর রওদ্বুল উন্ফ, ‘উয়ূনুল আছার, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ, ইবনে সা’দ, নসবু কুরাইশ, আছ ছিক্বাত ইবনে হিব্বান, উসদুল গ¦বাহ, তাহযীবুল কামাল, আল আনসাব, জমহুরাতুল আনসাব, আল মুন্তাখ¦ব ইত্যাদী) 
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিতা মাতা হচ্ছেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত শুমূস বিনতে ক্বইস্ আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল মুত্ত্বলিব আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান সাইয়্যিদাতুনা হযরত সালমা আলাইহাস সালাম ভাতিজী। সুবহানাল্লাহ! 
যেমন- কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
الشُّمُوسُ بِنْتُ قَيْسِ بِنْتُ أخي سلمى  بِنْتِ عَمْرِو بْنِ زَيْدِ أُمِّ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ عَلَيْهِ السَّلَامُ
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা হযরত শুমূস বিনতে ক্বইস্ আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল মুত্ত্বলিব আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান সাইয়্যিদাতুনা হযরত সালমা বিনতে ‘আমর ইবনে যায়েদ আলাইহাস সালাম ভাতিজী। সুবহানাল্লাহ! (‘উয়ূনুল আছার)
হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের পূর্ণ নকশারুপে যিনি মহিয়ানা


  • নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে যে সমস্ত সম্মানিত ব্যক্তিত্ব নিসবত মুবারক- ধন্য হয়েছেন, সমস্ত পবিত্রতম সম্মানিত ব্যক্তিত্বগণ পবিত্র কাবা শরীফ, কুরসী শরীফ এমনকি আরশে আযীমসহ যত মর্যাদা ফযীলতপূর্ণ বিষয়গুলো রয়েছেন তার চেয়েও লক্ষ-কোটিগুণে মর্যাদায় মর্যাদাবান হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
  • তাহলে যিনি আখাসসুল খাছ আহলে বাইত শরীফ, যিনি মহা সম্মানিত মাদানী নূর মুবারক, যিনি আসমান যমিন সৃষ্টিকূলে মহান আল্লাহ্ পাক উনার খাছ লক্ষ্যস্থল, যিনি হিদায়েতের আলোকবর্তিকা, যিনি ইসলাহ পবিত্রতার মালিকা, যিনি শরীয়ত মারিফাতের রাহনুমা, আমাদের সম্মানিত উম্মুল উমাম হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনার ফাযায়িল-ফযীলত, শান-মান, মর্যাদা-মর্তবা, বুযুর্গী-সম্মান কত বে-মিছাল তা আমাদের বোধগম্য নয়। 
  • উনার মর্যাদা মুবারকের ব্যাপকতা সমস্ত কায়িনতবাসীসহ সকল জিন-ইনসান মুমিন বান্দা-বান্দিগণের পবিত্রতম ঈমান নাজাত এর মূল তথা ঈমান নাজাতের একমাত্র উপায় অবলম্বন। সুবহানাল্লাহ! উনি নূরে মুজাসসাম হাবিবল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খাছ লখতে জিগার। উনি তো মিছদাকে হযরত উম্মাহাতুল মুমিনিন আলাইহিন্নাস সালাম। সুবহানাল্লাহ। হযরত উম্মাহাতুল মুমিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের পূর্ণ নকশারুপে তিনি মহিয়ানা। যা সংক্ষিপ্তাকারে পর্যালোচনা করা হলো।
  • সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল কায়িনাত, ত্বহিরা, ত্বইয়্যিবাহ, উম্মুল মুমিনীন আল উলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার আখাছছুল খাছ মিছদাক হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম।
  • ত্বহিরা, ত্বয়্যিবা উম্মুল মুমিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার ন্যায় অসীম পবিত্রতম ইলমে গইব তথা মিল্লাদুন্না ইলমাউনার অধিকারীণী আমাদের হযরত আম্মা হুযুর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম! সুবহানাল্লাহ! উনার পবিত্রতম জীবন মুবারক উনার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সীমাহীন ইলম মুবারক, প্রজ্ঞা মুবারক, জ্ঞান মুবারক, বুদ্ধিমত্তা মুবারক, বিচক্ষণতা মুবারক, উদারতা মুবারক, দয়াদ্রতা মুবারক, সহানুভূতী মুবারক, সহযোগীতা-সহমর্মিতা মুবারক, ত্যাগ-তিতিক্ষা মুবারক, ধৈর্য সহিষ্ণুতা মুবারক, দু:খে-সুখে সর্বাবস্থায় সান্তনা মুবারক সর্বোপরি পবিত্রতম জান মুবারক মাল মুবারক বিলীন করে দিয়ে সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার পবিত্রতম পাক ওযুদ মুবারক- যে সীমাহীন নজীরবিহীন খিদমত মুবারক- আনজাম দিচ্ছেন তা ভাষায় বর্ণনাতীত, কল্পনাতীত এবং কুলকায়িনাতবাসীর আকল-সমঝ উপলব্ধির সীমাহীন বাইরে। সুবহানাল্লাহ!
  • হযরত মুজাদ্দিদে যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার সর্বোচ্চ নিসবত কুরবত প্রাপ্ত ব্যক্তিত্বা হযরত উম্মুল উমাম আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনার প্রসঙ্গে স্বয়ং যিনি হযরত মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম তিনি উনার এক কওল শরীফ- ইরশাদ মুবারক করেন, “তোমাদের হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম এবং হযরত ছিদ্দিকা আলাইহাস সালাম উনাদের সরাসরি দায়েমী নিসবত প্রাপ্ত। সুবহানআল্লাহ!
  • আমাদের অনেক পীরবোন বর্ণনা করেছেন, স্বপ্নে উনারা প্রায়ই দেখে থাকেন হযরত উম্মুল উমাম আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনাকে এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনাকে। সাইয়্যিদাতুনা হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনার এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনাদের তাওয়াল্লুক নিছবত কুরবত মুবারক এতবেশী যে, সিরত-ছুরত, দর্স-তাদরিস চলা-ফেরা, বাহ্যিক আভ্যন্তরিন উনারা হুবহু একই রূপ। সুবহানআল্লাহ।
  • আমাদের অপর একজন পীরবোন তিনি স্বপ্নে দেখেন, একটি মজলিশে লক্ষ লক্ষ মেয়েরা উপস্থিত হয়েছেন। সকলেই সারিবদ্ধ ভাবে সামনে এগিয়ে যাচ্ছেন। আমাদের সেই পীরবোনও সামনে এগিয়ে গেলেন। দেখলেন কিছু খাদিমা উনারা শরবত তৈরী করে একজন বিশেষ নূরানী ব্যক্তিত্ব উনার হাত মুবারকে দিচ্ছেন, উনি অপর একজন নূরানী ব্যক্তিত্ব উনার হাত মুবারকে দিচ্ছেন তিনি সকল মেয়েদের মাঝে বিতরণ করছেন। আমাদের পীর বোন নিকটে যেয়ে লক্ষ্য করলেন দুজন নূরানী ব্যক্তিত্বই আমাদের হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম। কিন্তু উনার মনে হচ্ছে একজন মা একজন মেয়ে। তাহলে কে মা, কে মেয়ে? আম্মা হুযূর কিবলা আলাইহাস সালাম দুজন কেন? তিনি কাকে প্রশ্ন করবেন। তিনি আদবের সাথে সামনে যেয়ে একজন খাদিমা উনাকে জিজ্ঞেস করলেন, আপা- আমাদের আম্মা হুযূর দুজন কেন? তখন সেই খাদিমা বললেন, আপনি চিনতে পারেননি। একজন আমাদের হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম, আরেকজন সাইয়্যিদাতুন নিসাইল আলামীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ।
  • সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল কায়িনাত, উম্মুল মুমিনীন আছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন অত্যন্ত অতিথিপরায়ণ এবং দানশীলা। গরীব-দুস্থদের তিনি উনার কাছে যা থাকতো- তা দুহাত মুবারক- বিলিয়ে দিতেন।
  • আমাদের সকলেরই জানা রয়েছে, আমাদের মহা সম্মানিত সাইয়্যিদাতু নিসাইল আলামীন, উম্মুল খাইর, হাবীবাতুল্লাহ, উম্মুল উমাম মামদূহ হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনিও সীমহীন অতিথিপরায়ণ এবং দানশীলা। অসংখ্য গরীব-দুস্থদের ছেলে মেয়েদেরকে তিনি খাদ্য বস্ত্র বাসস্থান শিক্ষা চিকিৎসা বিয়ের ব্যবস্থা করে এক বিরল ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। প্রতিটি দিন সারা বছর তিন বেলা পবিত্র দরবার শরীফে হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ লোককে খাওয়ানো হচ্ছে তা মূলত উম্মুল খাইর, হাবীবাতুল্লাহ, উম্মুল উমাম মামদূহ হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনারই খাছ কারামত মুবারক। সুবহানাল্লাহ!
  • মহান বারে ইলাহী আল্লাহ পাক যেমন চান, যে বান্দা বান্দী তারা সব কিছু আরজু করুক, ঠিক উনার কায়িমোকাম সাইয়্যিদাতু নিসাইল আলামীন, উম্মুল খাইর, হাবীবাতুল্লাহ, উম্মুল উমাম মামদূহ হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনিও সকলের সব আরজু পূরণ করেন। যে যা চাই, তাকে তিনি তাই বরং তার চেয়েও বেশী দিয়ে থাকেন। সুবহানআল্লাহ।
  • সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, উম্মুল কায়িনাত, উম্মুল মুমিনীন আছ ছালিছা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার হুবহু মিছদাক আমাদের উম্মুল খাইর, হাবীবাতুল্লাহ, উম্মুল উমাম মামদূহ হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম।
  • হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, উম্মুল মুমিনীন হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম ছিলেন সকল মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বড় ফক্বীহ, সবচেয়ে বেশী জ্ঞানী ব্যক্তি এবং আম জনতার মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর মতামত মুবারক উনার অধিকারিণী। হযরত আম্মা হুযুর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনিও সবচেয়ে বড় ফক্বীহ, সবচেয়ে বেশী জ্ঞানী ব্যক্তি এবং আম জনতার মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর মতামত মুবারক উনার অধিকারিণী। যারা উনার ছোহবত মুবারক এখতিয়ার করেছেন উনারা সবাই জানেন উনার সীমাহীন ইলম মুবারক, প্রজ্ঞা মুবারক, জ্ঞান মুবারক, বুদ্ধিমত্তা মুবারক, বিচক্ষণতা মুবারক সত্যিই বেমেছাল। আর উনার মত বিশুদ্ধভাষিণী ২য় কেউ আর সৃষ্টি হয়নি। সুবহানাল্লাহ!
  • পবিত্র হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে, হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার কাছ থেকে তোমরা তোমাদের পবিত্র দ্বীন শিক্ষা করো। সুবহানাল্লাহ!
  • পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার হাক্বিক্বি মিছদাক সাইয়্যিদাতুন নিসা, নূরেজাহান, হাবীবাতুল্লাহ আমাদের প্রাণের আক্বা হযরত আম্মা হুযুর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম। তিনি প্রতি দিন প্রতি ক্ষণ প্রতিটি মুহুর্ত দ্বীন শিক্ষা দিচ্ছেন। আমরা জানি তিনি জারি করেছেন অনন্তকাল ব্যাপী মহা পবিত্র সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ উনার ফালইয়াফরাহু মাহফিল। তিনি প্রতিদিন পবিত্র কুরআন শরীফ পবিত্র হাদীছ শরীফ পবিত্র ইজমা শরীফ পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ থেকে তালিম দিচ্ছেন। হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ হিদায়েত শূণ্য মানুষ হিদায়েত পেয়ে ধণ্য হচ্ছে। সুবহানাল্লাহ!
  • সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল কায়িনাত, উম্মুল মুমিনীন আর রবিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন অধিক রাত্র জাগরণকারিনী। আমাদের সকলেরই জানা রয়েছে, আমাদের মহা সম্মানিত সাইয়্যিদাতু নিসাইল আলামীন, উম্মুল খাইর, হাবীবাতুল্লাহ, উম্মুল উমাম মামদূহ হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনিও অধিক রাত্র জাগরণকারিনী। শুধু তাই নয়, সম্মানিত নববী পরিবার তথা আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মুবারক সম্মানিত শিশুগণও রাত্র জাগরণ করে থাকেন। এটা মূলত উম্মুল উমাম মামদূহ হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনারই বিশেষ আয়োজন, বিশেষ তরতীব। সুবহানাল্লাহ!
  • সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল কায়িনাত, উম্মুল মুমিনীন আল খমিসাহ আলাইহাস সালাম উনারও পরিপূর্ণ মিছাল হচ্ছেন সাইয়্যিদাতুন নিসা, নূরেজাহান, হাবীবাতুল্লাহ আমাদের প্রাণের আক্বা হযরত আম্মা হুযুর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম। 
  • উম্মুল মুমিনীন হযরত আলাইহাস সালাম উনার সম্পর্কে উম্মুল মুমিনীন হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
  • আমি উম্মুল মুমিনীন হযরত আলাইহাস সালাম উনার চেয়ে কোন মহিলাকে বেশী দ্বীনদার, বেশী পরহেযগার, বেশী সত্যভাষিণী, বেশী উদার, দানশীল, সৎকর্মশীল এবং মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি মুবারক অর্জনের লক্ষ্যে বেশী তৎপর দেখিনি।” (মুসলিম শরীফ)
  • হাদীছ শরীফ উনার হুবহু মিছদাক হাবীবাতুল্লাহ আমাদের প্রাণের আক্বা হযরত আম্মা হুযুর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম। তিনি অধীক দ্বীনদার, অধীক পরহেযগার, খুবই সত্যভাষিণী, সবচেয়ে উদার, বেমেছাল দানশীল, সৎকর্মশীল এবং মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি মুবারক অর্জনের লক্ষ্যে খুবই তৎপর।
  • ) উম্মুল মুমিনীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু সালামা আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন অনুপম সৌন্দর্য মুবারক, পূর্ণ প্রজ্ঞা সঠিক সিদ্ধান্তের গুণে গুণান্বিতা।
  • উল্লেখিত গুণাবলী তথা খুছুছিয়ত মুবারকসমূহের পরিপূর্ণ নকশা আমাদের প্রাণপ্রিয় উম্মুল উমাম মামদূহ হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম। উনার জাহির-বাতিন প্রজ্ঞা সৌন্দর্য মুবারক এবং সঠিক সিদ্ধান্তের গুনাবলী কুদরতময় মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুজিজা শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
  • এক সালিককে স্বপ্নে হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, “আমার সব ইলম হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনাকে হাদিয়া করেছি, তোমাদের ইলম পেতে হলে উনার নিকট থেকেই নিতে হবে।সুবহানআল্লাহ!
  • সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল কায়িনাত, উম্মুল মুমিনীন আস সাবিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার অতিপ্রিয় কাজ মুবারক ছিল গরীব-দুঃখী, অসহায়দের ক্ষুধার্তকে খাদ্য দান করা, বস্ত্রহীনকে বস্ত্র দান করা।
  •  সাইয়্যিদাতুন নিসা, নূরেজাহান, হাবীবাতুল্লাহ আমাদের প্রাণের আক্বা হযরত আম্মা হুযুর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি উম্মুল মুমিনীন, উনার হাক্বিক্বি মিছদাক। তিনিও গরীবদেরকে দান করেন, অসহায়দেরকে সহায় দান করেন, ক্ষুধার্তকে খাদ্য দান করেন, বস্ত্রহীনকে বস্ত্র দান করেন। সুবহানাল্লাহ!
  • সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল কায়িনাত, উম্মুল মুমিনীন আছ ছামিনাহ আলাইহাস সালাম উনার পবিত্রতম শান মুবারক সম্পর্কে বর্ণিত রয়েছে, “তিনি ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ রূপবতী মহিলাদের সর্বশ্রেষ্ঠ ছূরত মুবারক উনার অধিকারীনী। 
  • সাইয়্যিদাতু নিসাইল আলামীন, উম্মুল খাইর, উম্মুল উমাম মামদূহ হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি হাদিছ শরীফ তথা এই খুছুছিয়ত মুবারক উনার হাক্বিক্বি মিছদাক। সুবহানাল্লাহ!
  • সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল কায়িনাত, উম্মুল মুমিনীন আত তাসিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি অত্যন্ত নরম শরাফত তবিয়ত মুবারক উনার মালিকা ছিলেন। উনার ব্যবহার মুবারক অত্যন্ত অমায়িক। পবিত্র ইসলাম উনার বিধি-বিধান অত্যন্ত খোদাভীতি, মুহব্বত আন্তরিকতার সঙ্গে পালন করেন।
  • উনারও হাক্বিক্বি মিছদাক পরিপূর্ণ মেছাল সাইয়্যিদাতুন নিসা, নূরেজাহান, হাবীবাতুল্লাহ আমাদের প্রাণের আক্বা হযরত আম্মা হুযুর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি। উনার ¤্রতা, উনার শরাফত, উনার অমায়িকতা, উনার খোদাভীতি, মুহব্বত আন্তরিকতা সৃষ্টি জগতের ইতিহাসে বিরল। সুবহানাল্লাহ!
  • সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল কায়িনাত, উম্মুল মুমিনীন আল আশিরাহ আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন সর্বাধিক শরীফ, সর্বাধিক মেধা মুবারকের অীধকারী, উঁচু বংশীয়া, অতি উত্তম ছূরত মুবারক উনার অধিকারীনী পবিত্র দ্বীন-ইসলাম উনার সুমহান আদর্শ মুবারক।সুবহানাল্লাহ! (সিয়ারু লামিন নুবালা শরীফ /২৩২)
  • সাইয়্যিদাতু নিসাইল আলামীন, উম্মুল খাইর, উম্মুল উমাম মামদূহ হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনার বংশ বা নসবী মর্যাদা তো বলা অপেক্ষায় রাখে না। তিনি সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ্ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অর্ন্তভুক্ত সুবহানাল্লাহ
  • মুজাদ্দিদে যম, সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুরশিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার যবান মুবারক- আমরা শুনেছি। তিনি বলেন : “আমি মুবারক দেখলাম- নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অতি সুন্দর জায়গায় সুন্দর একটি আসন মুবারকে বসে রয়েছেন। উনার মুবারক সামনে ঘেরাও করা মনোরম জায়গা মুবারক রয়েছে। তিনি আমাকে এবং আমার আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে ডেকে নিয়ে ওই মুবারক জায়গায় বসালেন এবং বললেন : ‘আপনারা সবাই আমার আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত।সুবহানাল্লাহ!
  • উম্মুল মুমিনীন আল আশিরাহ আলাইহাস সালাম তিনি একজন অত্যন্ত বিদূষী, শিক্ষানুরাগী অসীম ফিকহী জ্ঞানসম্পন্না ছিলেন। * তিনি উনার আত্মীয়-স্বজনের নিকট পবিত্র দ্বীনি আদর্শের সুন্দর ব্যাখ্যা দিয়ে দাওয়াত দিতেন। * তিনি সর্বদা পবিত্রতম দ্বীনি কাজে তালীম-তালক্বীনে ব্যস্ত থাকতেন, ফলে অনেক মহিলা ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা উম্মুল মুমিনীন হযরত আল আশিরাহ আলাইহাস সালাম উনার কাছে দ্বীনি মাসয়ালা-মসায়িলসহ- ফিকহী মাসয়ালা-মাসায়িলগুলো জেনে নিতেন। হেজাজ হেজাজের বাইরের হযরত মহিলা ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনারাও পবিত্র হজ্জের সময় উনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেন এবং অত্যন্ত জটিল মাসয়ালা-মাসায়িল জেনে নিতেন। সুবহানাল্লাহ!
  • উল্লেখিত প্রতিটি খুছুছিয়তের পরিপূর্ণ মেছদাক সাইয়্যিদাতু নিসাইল আলামীন, উম্মুল খাইর, উম্মুল উমাম মামদূহ হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
  • সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল কায়িনাত, উম্মুল মুমিনীন আল হাদী আশির আলাইহাস সালাম সম্পর্কে হযরত আবূ সুফইয়ান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, আরবের সর্বাধিক সুন্দর উত্তম ছূরত মুবারক আল হাদী আশির আলাইহাস সালাম তিনিই।” (মুসলিম শরীফ)
  • আরব আযম তথা সারা কায়িনাতের বুকে পবিত্র হাদিছ শরীফ উনার হাক্বিক্বি মিছদাক সাইয়্যিদাতু নিসাইল আলামীন, উম্মুল খাইর, উম্মুল উমাম মামদূহ হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
  • সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল কায়িনাত, উম্মুল মুমিনীন আছ্ ছানিয়াহ আশার আলাইহাস সালাম উনর সীমাহীন শান-মান, বুযুর্গী, মর্যাদা, খুছুছিয়ত পবিত্রতা মুবারক পরিপূর্ণ হিস্যা মুবারক লাভ করেছেন সাইয়্যিদাতু নিসাইল আলামীন, উম্মুল খাইর, উম্মুল উমাম মামদূহ হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
  • সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল কায়িনাত, উম্মুল মুমিনীন আছ ছালিছাহ আশার আলাইহাস সালাম উনার বে-মিছাল খুছূছিয়ত মুবারক বর্ণনা করতে গিয়ে উম্মুল মুমিনীন হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, “আমাদের মধ্যে উম্মুল মুমিনীন হযরত আছ ছালিছাহ আশার আলাইহাস সালাম তিনি সবচেয়ে বেশী মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করতেন এবং সবচেয়ে বেশী আত্মীয়তার সম্পর্ক অটুট রাখতেন।” (তবাক্বাত শরীফ /১৩৮)
  • উল্লেখিত গুনাবলীর হাক্বিক্বি মালিকা সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল খাইর, উম্মুল উমাম মামদূহ হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
  • মূলত, উম্মুল উমাম হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি হযরত উম্মাহাতুল মুমিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের পরিপূর্ণ কায়মোকাম তথা নকশা মুবারক। কাজেই, উনার মুবারক শানে সর্বোচ্চ হুসনে যন পোষণ করতে হবে। উনার খিদমত মুবারকের আনজাম দিতে হবে। মহান আল্লাহ পাক সকলকে তাওফীক্ব দান করুন।