একজন কুতুবুজ্জামান- উনার দিদারে মাওলার দিকে প্রস্থান- সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযুর ক্বিবলা সাইয়্যিদ মুখলেছুর রহমান আলাইহিস সালাম উনার সাওয়ানেহে উমরী মুবারক-পর্ব-১৪৯

 

ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দাওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশফ্ ওয়া কারামত, ফখরুল আওলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছাহিবে ইস্মে আযম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার স্মরণে-

একজন কুতুবুয্ যামান উনার দীদারে মাওলা উনার দিকে প্রস্থান- 

তিন দিনব্যাপী অঝোর ধারার বৃষ্টি

নেক দুআর উসীলায় নিমিষেই বন্ধ

 সুন্নতী মসজিদের দরজা মুবারক-উনার সামনে রোগীকে রেখে আমি ভেতরে প্রবেশ করে মুজাদ্দিদে আযম সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম এবং উনার সম্মানিত পিতা ওলীয়ে মাদারজাত, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলিছুর রহমান আলাইহিস সালাম উনাদের ক্বদম মুবারক চুম্বন করি। আমার ব্যস্ত সমস্ত অবস্থা দেখে মুজাদ্দিদে মাদারজাত, মুজাদ্দিদে আযম, সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি জানতে চান: তোমার কী হয়েছে? আমি সবিনয়ে উনাকে বিষয়টি অবহিত করি এবং রোগীকে উনার সামনে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দানের জন্য বিনীত প্রার্থনা জানাই। তিনি সদয় অনুমতি দান করেন। অতঃপর অতি কষ্টে রোগীকে ভেতরে নিয়ে যাই। রুগী ক্ষীণ কণ্ঠে সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার দয়া ও দুআ চান। তিনি রোগীর কাতরোক্তি ও অনুনয় শোনেন। কিন্তু একটিও কথা বলেন না। আমি উনার চেহারা মুবারক-এ অপ্রসন্নতার ছাপ লক্ষ্য করি।

মুজাদ্দিদে আযম, সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার একান্ত অদূরে উপবিষ্ট ওলীয়ে মাদারজাত, আওলাদে রসূল, ছাহিবে ইসমে আযম, সাইয়্যিদুনা হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলিছুর রহমান আলাইহিস সালাম তিনি ইতোমধ্যে রুগীর আপাদমস্তক লক্ষ্য করেছেন। উনার চেহারা মুবারক-এ অসন্তুষ্টির স্পষ্ট আভাস। মুবারক জালালী কণ্ঠে তিনি জানতে চান: কাকে নিয়ে এসেছো? আমি বিনীতভাবে বলি: আমার পরিচিত ব্যক্তি। তিনি আর কিছু বললেন না। উনার মুবারক চেহারায় অসন্তুষ্টি ও জালালীভাব রয়েই যায়। আমি কিছু না বুঝলেও ভয়ার্ত হই। রুগী এসবের কিছুই বুঝতে পারেন না। সমঝ্হীনতা এবং শারীরিক ও মানসিক বর্তমান দুরবস্থায় তার বুঝবার সামর্থ্যও নেই। সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার মুবারক নির্দেশে সুন্নতী মসজিদ থেকে বের করে রুগীকে আমি হাসপাতালে তার বেডে রেখে আসি।

মাহবূব ওলীআল্লাহ উনাদের মান, শান, মর্যাদা ও মাক্বামাত কতো যে ঊর্ধ্বে এবং উনাদের রূহানী কুওওয়াত, সূক্ষ্মদর্শিতা ও অন্তর্দৃষ্টি কত যে গভীর, তা কেবল আমরা আমাদের মতো করে ভাষায় বর্ণনা করতে পারি। কিন্তু বুঝতে পারি না। বুঝা সম্ভবও নয়। ঘটনার পরম্পরা, আদি-অন্ত এবং পরিণতি উনাদের মুবারক দৃষ্টিতে দৃশ্যমান। আমরা কিছুই দেখিনা এবং বুঝিনা বলে কেবলই অস্থির চিত্ত। জীবনের নানা ঘটনা প্রবাহে আমরা যখন তখন রাগ, গোস্বা, মান, অভিমান, দুঃখ, বেদনা, আনন্দ, ইতমিনান ও উৎফুল্লতায় আবর্তিত হই। ভেতর-বাহির, যাহির-বাতিন, দৃশ্য-অদৃশ্য যাবতীয় বিষয় দৃষ্টির নাগাল সীমানার মধ্যেই বিরাজিত থাকায় সূক্ষ্মদর্শী ওলীআল্লাহগণ উনারা কোন কিছুতেই পেরেশান হন না। আনন্দ-বেদনায় উদ্বেলিত ও উৎকণ্ঠিত হননা। উনারা সবসময় সবকিছুতেই সুস্থির। সব অবস্থায় অটল, অনড়। উনাদের মূল লক্ষ্য কেবল মহান আল্লাহ পাক এবং উনার প্রিয়তম হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সঙ্গে তায়াল্লুক-নিছবত নিরবচ্ছিন্ন রাখা এবং অনুক্ষণ পরম নৈকট্য সুধায় আপ্লুত থাকা।

রুগীকে দেখামাত্রই তার আদ্যোপান্ত বুঝে মুজাদ্দিদে মাদারজাত, মুজাদ্দিদে আযম, সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি একটিও কথা না বলে নীরব রয়েছেন। সূক্ষ্মদর্শী ওলীআল্লাহ, ওলীয়ে মাদারজাত, আফদ্বালুল আউলিয়া, ছাহিবে ইসমে আযম, ছাহিবে ইলহাম, ফখরুল আউলিয়া, লিসানুল হক্ব, মুসতাজাবুদ দাওয়াত, ছাহিবে ইলম ওয়াল হিকাম ওয়াল কাশফ ওয়াল কারামত, মিছদাক্বে কুরআন ওয়াল হাদীছ, আওলাদুর রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলিছুর রহমান আলাইহিস সালাম তিনিও যে আনুপূর্বিক সব বিষয় পূর্ণাঙ্গরূপে উপলব্ধি করেছেন এবং উনার মুবারক অন্তর্দৃষ্টিতে রোগীর কৃতকর্ম, তার অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ প্রতিবিম্বিত হয়েছে, তা বলারই অপেক্ষা রাখে না। সে কারণেই উনার মুবারক চেহারায় অসন্তুষ্টির ভাব স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। বিষয়টি আমি সম্যক বুঝতে পারি তখন, যখন রুগীকে হাসপাতালে রেখে আমি আবার এসে ওলীয়ে মাদারজাত, আওলাদুর রসূল সাইয়্যিদুনা হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলিছুর রহমান আলাইহিস সালাম উনার মুবারক ছোহবতে বসি।

(চলবে)

আবা-২০৯

0 Comments: