৬৭১ নং- সুওয়াল : মাসিক মুঈনুল ইসলাম সেপ্টেম্বর/৯৬ইং সংখ্যায় জিজ্ঞাসা-সমাধান বিভাগে এক জিজ্ঞাসার সমাধানে কছর নামায সংক্রান্ত নিম্নলিখিত অংশটুকুর ক্ষেত্রে আমি বিশেষরূপে সন্দিহান রয়েছি। তারা লিখেছে- “........... সুতারাং তারা যদি চার রাকআত বিশিষ্ট নামাযকে পুড়ো পড়েন এবং কছর না করেন, তাহলে তার দু’পর্যায়। যদি দ্বিতীয় রাকআতে আত্তাহিয়্যাতের পরিমাণ বসে থাকেন, তাহলে তার নামায সহিহ হয়ে যাবে বটে, কিন্তু তিনি শক্ত গোনাহগার হবেন। যদি দ্বিতীয় রাকআতে উক্ত পরিমাণ না বসে থাকেন, তবে তার নামাযই সহিহ হবে না ........।” এখন আমার সুওয়াল হচ্ছে- মাসিক মুঈনুল ইসলাম পত্রিকার উক্ত সমাধান কতটুকু শুদ্ধ হয়েছে, অনুগ্রহ


সুওয়াল : মাসিক মুঈনুল ইসলাম সেপ্টেম্বর/৯৬ইং সংখ্যায় জিজ্ঞাসা-সমাধান বিভাগে এক জিজ্ঞাসার সমাধানে কছর নামায সংক্রান্ত নিম্নলিখিত অংশটুকুর ক্ষেত্রে আমি বিশেষরূপে সন্দিহান রয়েছি। তারা লিখেছে- “........... সুতারাং তারা যদি চার রাকআত বিশিষ্ট নামাযকে পুড়ো পড়েন এবং কছর না করেন, তাহলে তার দুপর্যায়। যদি দ্বিতীয় রাকআতে আত্তাহিয়্যাতের পরিমাণ বসে থাকেন, তাহলে তার নামায সহিহ হয়ে যাবে বটে, কিন্তু তিনি শক্ত গোনাহগার হবেন। যদি দ্বিতীয় রাকআতে উক্ত পরিমাণ না বসে থাকেন, তবে তার নামাযই সহিহ হবে না ........।
এখন আমার সুওয়াল হচ্ছে- মাসিক মুঈনুল ইসলাম পত্রিকার উক্ত সমাধান কতটুকু শুদ্ধ হয়েছে, অনুগ্রহ পূর্বক নির্ভরযোগ্য দলীল-আদিল্লার মাধ্যমে জাওয়াব প্রদান করলে সন্দেহমুক্ত হতাম।

জাওয়াব : মাসিক মুঈনুল ইসলাম পত্রিকার কছর নামায সংক্রান্ত উক্ত সমাধানটি অস্পষ্ট ও অপূর্ণ হওয়ার কারণে সমাজে বিভ্রান্তি ও ফিৎনা বিস্তার লাভ করবে। যদিও তা কোন কোন ফিক্বাহ ও ফতওয়ার কিতাবে উল্লেখ রয়েছে। তথাপিও অপূর্ণ ও অস্পষ্ট হওয়ার কারণে তা বর্ণনা করা যাবে না। কারণ তাদের উপরোক্ত বক্তব্য দ্বারা এটিই প্রতীয়মান হয়ে উঠে যে, “মুসাফির ব্যক্তি যদি ইচ্ছাকৃতভাবে ফরয নামায কছর না করেই পুর্ণ নামায পড়ে, তাহলেও তার নামায সহীহ হবে অথচ ইহা সম্পূর্ণই অশুদ্ধ ও গোমরাহীমূলক।
আর এ ব্যাপারে স্পষ্ট, সঠিক ও পূর্ণ ফায়সালা, যা বিশ্ববিখ্যাত ও নির্ভরযোগ্য ফিক্বাহের কিতাবসমুহে উল্লেখ রয়েছে, তা হলো- মুসাফিরদের জন্য যোহর, আছর ও ইশার নামায কছর করা অর্থাৎ চার রাকায়াত বিশিষ্ট ফরজ নামাযের স্থলে দুরাকায়াত পড়া ফরয। আর নামাযে ভুলে ওয়াজিব তরক হলে সিজদায়ে সাহু ওয়াজিব হয়। সুতরাং কোন মুসাফির ব্যক্তি যদি ফরয নামায কছর না করে পূর্ণ নামায পড়ে, তাহলে সেক্ষেত্রে তিনটি অবস্থা পরিলক্ষিত হয়-
প্রথমতঃ যদি মুসাফির ব্যক্তি কছর নামায সংক্রান্ত শরয়ী হুকুমের প্রতি তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য বা অবজ্ঞা করে, তাহলে সে ব্যক্তির নামায তো হবেই না বরং তা হবে সম্পুর্ণ কুফরী।
দ্বিতীয়তঃ যদি শরয়ী হুকুমের প্রতি অবজ্ঞা না করে, বরং ইচ্ছাকৃতভাবে গাফলতির সহিত কছরের পরিবর্তে পূর্ণ নামায পড়ে, সেক্ষেত্রেও নামায সহীহ্ হবেনা। বরং নামাযী ব্যক্তি কবীরা গুণাহে গুণাহগার হবে। আর সে ব্যক্তিকে উক্ত নামায পূণরায় পড়ে নিতে হবে।
তৃতীয়তঃ যদি সে ব্যক্তি কছরের নিয়তে নামায শুরু করে এবং ভুলবশতঃ যথানিয়মে চার রাকায়াত পূর্ণ করে, তবে তার প্রতি ওয়াজিব তরকের জন্য সিজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে। যদি সে সিজদায়ে সাহু আদায় না করে, তাহলে তার নামায সহীহ হবেনা। অর্থাৎ তাকে পূণরায় উক্ত নামায আদায় করতে হবে। কেননা কোন নামাযে যদি ওয়াজিব ছুটে যায়, তাহলে সিজদায়ে সাহু ব্যতীত নামায শুদ্ধ হয়না।
(হেদায়া, আইনুল হেদায়া, ফাতহুল ক্বাদীর, আলমগীরী, বাহরুর রায়েক, দুররুল মোখতার, রদ্দুল মোহতার, শামী, খোলাছা, তাতারখানিয়া,  শরহে বেকায়া, কাহেস্তানী, ফতওয়ায়ে দেওবন্দ, বেহেস্তি জেওর ইত্যাদি।)
আবা-৩৮

0 Comments: