হুযুরপাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র জীবনী মুবারক । (পর্ব- ১৭৬১-১৭৭০)

পিডিএফ লিংক- https://drive.google.com/open?id=1umo8c6MnYMfK07E3v5CvZ7RMmdfA3FIF

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি হায়াতুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি শাহিদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি মুত্ত্বলা’ আলাল গইব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মহাসম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত জীবনী মুবারক (১৭৬১)
মহাসম্মানিত দ্বিতীয় বদর জিহাদ মুবারক:
মহাসম্মানিত দ্বিতীয় বদর জিহাদ মুবারক প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক ইরশাদ মুবারক করেন,
 الَّذِينَ قَالَ لَهُمُ النَّاسُ إِنَّ النَّاسَ قَدْ جَمَعُوا لَكُمْ فَاخْشَوْهُمْ فَزَادَهُمْ إِيمَانًا وَقَالُوا حَسْبُنَا اللَّـهُ وَنِعْمَ الْوَكِيلُ. فَانقَلَبُوا بِنِعْمَةٍ مِّنَ اللَّـهِ وَفَضْلٍ لَّمْ يَمْسَسْهُمْ سُوءٌ وَاتَّبَعُوا رِضْوَانَ اللَّـهِ ۗ وَاللَّـهُ ذُو فَضْلٍ عَظِيمٍ. إِنَّمَا ذَٰلِكُمُ الشَّيْطَانُ يُخَوِّفُ أَوْلِيَاءَهُ فَلَا تَخَافُوهُمْ وَخَافُونِ إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ.
 অর্থ: “উনাদেরকে লোকজন (তথা কাফির মুশরিকরা ও মুনাফিকরা) বলেছিল যে, আপনাদের বিরুদ্ধে লোকজন জমা হয়েছে সুতরাং আপনারা তাদেরকে ভয় করুন; কিন্তু ইহা (হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম) উনাদের ঈমানকে আরো দৃঢ়তর করেছিল এবং উনারা বলেছিলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনিই আমাদের জন্য যথেষ্ট; এবং তিনি কত উত্তম কামিয়াবী দানকারী। তারপর উনারা মহান আল্লাহ পাক উনার নিয়ামত মুবারক ও ফদ্বল-করম মুবারকসহ ফিরে এসেছিলেন, কোন  অনিষ্ট বা খারবী উনাদেরকে স্পর্শ করে নাই এবং মহান আল্লাহ পাক তিনি যাতে সন্তুষ্ট, উনারা তারই অনুসরণ করেছিলেন এবং মহান আল্লাহ পাক তিনি মহা অনুগ্রহশীল। শয়তানই আপনাদেরকে তার বন্ধুদের ভয় দেখায়। সুতরাং যদি আপনারা ঈমানদার হয়ে থাকেন তবে আপনারা তাদেরকে ভয় করবেন না, আমাকেই ভয় করুন। সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৭২-১৭৫)
উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ মুবারক সমূহ নাযিল করেছেন মহাসম্মানিত দ্বিতীয় বদর জিহাদ মুবারক সম্পর্কে। হযরত ইমাম রাজী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, সম্মানিত উহুদ ও সম্মানিত দ্বিতীয় বদর জিহাদ মুবারক অংশগ্রহণকারী হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের প্রশংসায় স্বয়ং যিনি খ¦লিক যিনি মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি অত্র আয়াত শরীফ মুবারক সমূহ নাযিল করেছেন। সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে মাযহারী)

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি হায়াতুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি শাহিদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি মুত্ত্বলা’ আলাল গইব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মহাসম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত জীবনী মুবারক (১৭৬২)
৪র্থ হিজরী ৫ই শা’বান শরীফ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস:
খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার আখাছছুল খাছ মনোনীত ব্যক্তিত্বগণ উনাদের মধ্যে ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম তিনি অন্যতম। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, সাইয়্যিদুশ শুহাদা সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতে রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নূরে মুজসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত এবং পূত-পবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে বিশেষ ব্যক্তিত্ব মুবারক। উনার ফাযায়িল-ফযীলত এবং খুছুছিয়াত মুবারক সম্পর্কে মহাপবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ এবং মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মাঝে ব্যাপক আলোচনা মুবারক রয়েছে। উনার মুবারক শানে হুসনে যন পোষণের ব্যাপারে রয়েছে অত্যাধিক তাক্বীদ। পবিত্র শা’বান শরীফ মাস হলো উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ উনার মাস। সুবহানাল্ল্হা! সাইয়্যিদুশ শুহাদা, সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাওয়ানেহে উমরী মুবারক সম্পর্কে এখানে সংক্ষিপ্ত আলোচনা মুবারক করা হলো।
 পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ: সাইয়্যিদুশ শুহাদা, সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি চতুর্থ হিজরী সনের পবিত্র শা’বান শরীফ মাস উনার ৫ তারিখ ইয়াওমুল জুমুয়াহ বা’দ আছর সম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ শহরে পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার পর স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত কান মুবারক-এ পবিত্র আযান মুবারক ও পবিত্র ইক্বামত মুবারক দিয়ে উনার জন্য দোয়া মুবারক করেন।
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি হায়াতুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি শাহিদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি মুত্ত্বলা’ আলাল গইব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মহাসম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত জীবনী মুবারক (১৭৬৩)
৪র্থ হিজরী ৫ই শা’বান শরীফ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস:
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার  মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
 عَنْ حَضْرَتْ أَبِي رَافِعٍ رَضِيَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ قَالَ رَأَيْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَذَّنَ فِي أُذُنِ الْحُسَيْنِ عَلَيْهِ السَّلَامُ حِينَ وَلَدَتْهُ فَاطِمَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ.
 অর্থ: হযরত আবু রাফি’ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ সাইয়্যিদাতুনা  আন নূরুর রবি’য়া হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র হুজরা শরীফে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাপবিত্র কান মুবারকে আযান মুবারক দিতে দেখেছি। সুবহানাল্লাহ! (আল মুসতাদরাক)
 নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আপন হাত মুবারকে সাইয়্যিদুশ শুহাদা, সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তাহনীক্ব মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!
 উল্লেখ্য যে, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ সাইয়্যিদাতুনা আন নূরুর রবি’য়া হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি সেদিন যথারীতি পবিত্র আছর নামায আদায় করেন। বা’দ আছর সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। অতঃপর সাইয়্যিদাতুনা আন নূরুর রবি’য়া হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি পবিত্র মাগরীব উনার নামায মুবারক আদায় করেন। উনার কোনো ওয়াক্ত নামায মুবারকই ক্বাযা হয়নি। সুবহানাল্লাহ! সুবহানা রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! সুবহানা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম!
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি হায়াতুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি শাহিদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি মুত্ত্বলা’ আলাল গইব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মহাসম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত জীবনী মুবারক (১৭৬৪)
৪র্থ হিজরী ৫ই শা’বান শরীফ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস:

 পবিত্র হুলিয়া মুবারক: ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
 عَنْ حَضْرَتْ عَلِيٍّ عَلَيْهِ السَّلَامُ، قَالَ " مَنْ سَرَّهُ أَنْ يَنْظُرَ إِلَى أَشْبَهِ النَّاسِ بِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا بَيْنَ عُنُقِهِ إِلَى وَجْهِهِ فَلْيَنْظُرْ إِلَى حَضْرَتْ الْحَسَنِ بن عَلِيٍّ عَلَيْهِ السَّلَامُ، وَمَنْ سَرَّهُ أَنْ يَنْظُرَ إِلَى أَشْبَهِ النَّاسِ بِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا بَيْنَ عُنُقِهِ إِلَى كَعْبِهِ خَلْقًا ولَوْنًا فَلْيَنْظُرْ إِلَى حَضْرَتْ الْحُسَيْنِ بن عَلِيٍّ عَلَيْهِ السَّلَامُ"
 অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, কোনো ব্যক্তি যদি পবিত্র মাথা মুবারক থেকে পবিত্র ছিনা মুবারক পর্যন্ত নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে পুরোপুরি সদৃশ কাউকে দেখে আনন্দিত হতে চায়, সে যেন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে দেখে নেয়। আর কোনো ব্যক্তি যদি পবিত্র সিনা মুবারক থেকে পবিত্র ক্বদম মুবারক পর্যন্ত নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পুরোপুরি সদৃশ কাউকে দেখে আনন্দিত হতে চায়, সে যেন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে দেখে নেয়।” সুবহানাল্লাহ! (মু’জামুল কবীর, মা’রিফাতুছ ছাহাবা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম)
 অর্থাৎ সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ছিলেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পুরোপুরি নকশা মুবারক। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি হায়াতুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি শাহিদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি মুত্ত্বলা’ আলাল গইব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মহাসম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত জীবনী মুবারক (১৭৬৫)
৪র্থ হিজরী ৫ই শা’বান শরীফ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস:
পবিত্র আকীক্বা মুবারক ও পবিত্র নাম মুবারক: পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের ৭ দিন পর অর্থাৎ পবিত্র ১১ই শা’বান শরীফ স্বয়ং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আকীক্বা মুবারক সম্পাদন করেন। আর তিনি উনার নাম মুবারক রাখেন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ‘হুসাইন’ আলাইহিস সালাম।
 মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ عِمْرَانَ بْنِ سُلَيْمَانَ رَضِيَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ قَالَ حَضْرَتْ الْحَسَنُ عَلَيْهِ السَّلَامُ وحَضْرَتْ الحُسَيْنُ عَلَيْهِ السَّلَامُ مِنْ اَسْمَاءِ اَهْلِ الْجَنَّةِ لَمْ يَكُوْنَا فِىْ الْجَاهِلِيَّةِ.
 অর্থ: “হযরত ইমরান ইবনে সুলাইমান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন। সাইয়্যিদুশ শুহাদা সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছানী হযরত হাসান আলাইহিস সালাম ও সাইয়্যিদুশ শুহাদা সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছালিছ হযরত হুসাইন আলাইহিস সালাম উনারা জান্নাতী নাম মুবারকসমূহ হতে দুখানা নাম মুবারক। উনাদের পূর্বে আরবের জাহিলিয়াত যুগে এ দু’নাম মুবারক প্রচলিত ছিলো না।” (সুবুলুল হুদা ওয়া রাশাদ, তারিখুল খ¦মীস, উসদুল গবাহ, তারিখুল খুলাফায়ি)
 সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কুনিয়াত মুবারক হলো, সাইয়্যিদুনা হযরত আবু আব্দিল্লাহ আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
 মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَقَّ عَنِ حَضْرَتْ الْحَسَنِ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَحَضْرَتْ الْحُسَيْنِ عَلَيْهِ السَّلَامُ بِكَبْشَيْنِ.
 অর্থ: “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের আকীক্বা মুবারক করার জন্য দুটি করে দুম্বা জবাই করেন।” (নাসায়ী শরীফ, মু’জামুল আওসাত, ফদ্বায়িলে খুলাফায়ে রাশিদীন, মুসনাদে আহমদ)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি হায়াতুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি শাহিদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি মুত্ত্বলা’ আলাল গইব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মহাসম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত জীবনী মুবারক (১৭৬৬)
৪র্থ হিজরী ৫ই শা’বান শরীফ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস:
 সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মুজাদ্দিদ ও ইমাম, মুজাদ্দিদে আ’যম, মুত্বহ্হার, মুত্বহহির, আহলে বাইতে রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার বেমেছাল শান-মান মুবারক উনার বহিঃপ্রকাশ সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারকে- এ মহাসম্মানিত আক্বীক্বা মুবারক দেয়া:
 নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
 حَضْرَتْ حُسَيْنٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ مِنِّي وَأَنَا مِنْ حَضْرَتْ حُسَيْنٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ.
অর্থ: “ইমামুছ ছালিছ মিন আহলে বাইতে রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম তিনি আমার থেকে আমিও উনার থেকে।” সুবহানাল্লাহ! ইমামুছ ছালিছ মিন আহলে বাইত রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র ৫ই শা’বান শরীফ, ইয়াওমুল জুমুয়া শরীফ, চতুর্থ হিজরী শরীফ-এ তিনি পবিত্র বিলাদত শরীফ গ্রহণ করেন। এ দিন স্বয়ং যিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এতো অধিক খুশি মুবারক প্রকাশ করেন তা কল্পনাতীত। সুবহানাল্লাহ! তিনি উনার সম্মানিত আওলাদ উনাকে পেয়ে অত্যন্ত খুশি মুবারক প্রকাশ করে উনাকে সম্মানিত কোল মুবারকে তুলে নেন। তা’যীন-তাহনীক মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর সপ্তম দিন সম্মানিত আক্বীক্বা মুবারক প্রদান করেন। সুবহানাল্লাহ! সেই সুমহান সম্মানিত শান মুবারকই চৌদ্দশ’ বছর পর পুনরায় প্রকাশ করছেন যিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মুজাদ্দিদ ও ইমাম, মুজাদ্দিদে আ’যম, মুত্বহ্হার, মুত্বহহির, আহলে বাইতে রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! তিনি ঘোষণা মুবারক করেন যে, হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস এবং উনাদের বিছালতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস উনাদের দিনসমূহে উনাদের সম্মানিত নাম মুবারক-এ আক্বীক্বা মুবারক প্রদান করবেন। সুবহানাল্লাহ! যা পৃথিবীর ইতিহাসে সারাবিশ্ব বাসীর জন্য নজীরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মুজাদ্দিদ ও ইমাম, মুজাদ্দিদে আ’যম, মুত্বহ্হার, মুত্বহহির, আহলে বাইতে রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি। যা উনার বেমেছাল শান মুবারক উনার বহিঃপ্রকাশ। সুবহানাল্লাহ! সুবহানা রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! সুবহানা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম!
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি হায়াতুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি শাহিদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি মুত্ত্বলা’ আলাল গইব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মহাসম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত জীবনী মুবারক (১৭৬৭)
৪র্থ হিজরী ৫ই শা’বান শরীফ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস:
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শৈশবকাল মুবারক: সাইয়্যিদুশ শুহাদা, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অত্যন্ত প্রিয়পাত্র ছিলেন। তিনি উনাকে অত্যন্ত মুহব্বত মুবারক করতেন। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দায়েমী ছোহবত মুবারক এবং পৃষ্ঠপোষকতা মুবারকে হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বেড়ে উঠেন। যা বিভিন্ন পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মাঝে ইরশাদ মুবারক হয়েছে।
 মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
 عَنْ حَضْرَتْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ، قَالَ خَرَجَ عَلَيْنَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَمَعَهُ حَضْرَتْ الْحَسَنُ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَحَضْرَتْ الْحُسَيْنُ عَلَيْهِ السَّلَامُ، هَذَا عَلَى عَاتِقِهِ وَهَذَا عَلَى عَاتِقِهِ، وَهُوَ يَلْثِمُ هَذَا مَرَّةً وَهَذَا مَرَّةً، حَتَّى انْتَهَى إِلَيْنَا، فَقَالَ لَهُ رَجُلٌ: يَا رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، إِنَّكَ تُحِبُّهُمَا؟ فَقَالَ: نَعَمْ، مَنْ أَحَبَّهُمَا فَقَدْ أَحَبَّنِي، وَمَنْ أَبْغَضَهُمَا فَقَدْ أَبْغَضَنِي.
 অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একদা এমন অবস্থায় বাহিরে তাশরীফ আনলেন যে, উনার এক কাঁধ মুবারক উনার উপর ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এবং অন্য কাঁধ মুবারক উনার উপর ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বসিয়ে ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! এক ব্যক্তি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি কি উনাদের দু’জনকে মুহব্বত মুবারক করেন? নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, হ্যাঁ আমি উনাদের উভয়কে মুহব্বত মুবারক করি। যে ব্যক্তি উনাদের (অর্থাৎ সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছানী ও ইমামুছ ছালিছ আলাইহিমাস সালাম উনাদেরকে) মুহব্বত মুবারক করবেন অবশ্যই তিনি যেন আমাকে মুহব্বত মুবারক করলেন। সুবহানাল্লাহ! আর যে উনাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করলো সে যেন আমার প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করলো। নাউযূবিল্লাহ! (মুসনদে আহমদ, মুসতাদরাক, ফাদ্বায়িলূছ ছাহাবা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম, ফায়দ্বুল ক্বদীর, মুখতাছারু তারিখে দামেশ্ক)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি হায়াতুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি শাহিদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি মুত্ত্বলা’ আলাল গইব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মহাসম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত জীবনী মুবারক (১৭৬৮)
৪র্থ হিজরী ৫ই শা’বান শরীফ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস:

 আল্লামা হযরত জামী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন, একদিন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ডান পার্শ¦ মুবারকে ও স্বীয় লখতে জিগার আওলাদ সাইয়্যিদুনা আন্ নূরুর রবি’ হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম উনাকে বাম পার্শ¦ মুবারকে বসিয়েছিলেন। এমতাবস্থায় হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি উপস্থিত হয়ে আরজ করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি উনাদের মধ্য থেকে একজনকে উনার সাক্ষাৎ মুবারক-এ নিতে চান। অতএব, আপনি উনাদের দু’জনের মধ্যে যাঁকে ইচ্ছা সাথে রাখুন আর যাঁকে ইচ্ছা উনাকে মহান আল্লাহ পাক উনার সাক্ষাৎ মুবারক-এ যেতে অনুমতি দিন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যদি মহান আল্লাহ পাক উনার সাক্ষাতে যান, তাহলে উনার বিরহে সাইয়্যিদাতুনা আন্ নূরুর রবি’য়া হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার খুবই কষ্ট মুবারক হবে। সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনারাও খুবই কষ্ট মুবারক হবে। আর উনাদের কষ্টের কারণে আমারও অনেক কষ্ট মুবারক হবে। আর সাইয়্যিদুনা হযরত আন্ নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম তিনি যদি মহান আল্লাহ পাক উনার মহান সাক্ষাতে চলে যান, তাহলে একমাত্র আমিই দুঃখ পাবো। আমি চাই- আমি একাই কষ্ট মুবারক করি। সাইয়্যিদাতুনা আন নূরুর রবি’য়া হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম এবং সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনাদের যেন কোনো কষ্ট মুবারক না হয়। এজন্য নিজে দুঃখ পাওয়াটাই আমি পছন্দ করি।
 এ ঘটনার তিনদিন পর ইবনু রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন্ নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম তিনি পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। এরপর থেকে যখনই সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সমীপে আসতেন, তখন তিনি উনাকে মুবারকবাদ দিতেন এবং উনার কপাল মুবারক-এ বুছা দিতেন এবং উপস্থিত হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে সম্বোধন করে বলতেন, “আমি সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য আপন আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত আন্ নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনাকে কুরবানী মুবারক দিয়েছি।” সুবহানাল্লাহ! (শাওয়াহিদুন নুবুওওয়াত)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি হায়াতুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি শাহিদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি মুত্ত্বলা’ আলাল গইব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মহাসম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত জীবনী মুবারক (১৭৬৯)
৪র্থ হিজরী ৫ই শা’বান শরীফ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস:

  সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলে বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ উনার কিছুদিন পরই উনার শাহাদাতের কথা সবার মধ্যে জানাজানি হয়ে গিয়েছিল। সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম, সাইয়্যিদাতুনা আন্ নূরুর রবি’য়া হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনারাসহ অন্যান্য ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম ও হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সংশ্লিষ্ট সকলেই সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলে বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শৈশবাবস্থায় জানতে পেরেছিলেন যে, উনাকে শহীদ করা হবে এবং কারবালার ময়দান উনার রক্ত মুবারক দ্বারা রঞ্জিত হবে। এ ব্যাপারে অনেক পবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণিত হয়েছে।
 হযরত উম্মুল ফজল বিনতে হারিছ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা (হযরত আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার আহলিয়া) তিনি বলেন, আমি একদিন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমতে হাযির হয়ে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলে বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কোল মুবারক-এ দিলাম। এরপর আমি দেখলাম, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দু’চোখ মুবারক থেকে টপটপ করে নূরুল মুহব্বত তথা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র অশ্রু মুবারক পড়ছেন। আমি আরজ করলাম, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য কুরবান হোক, এর কি কারণ? নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আমার কাছে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি এসে এ খবর দিয়ে গেলেন
أَنَّ أُمَّتِي سَتَقْتُلُ ابْنِي هَذَا
 অর্থ : “নিশ্চয়ই আমার উম্মত আমার এ শিশুকে শহীদ করবে।”
 হযরত উম্মুল ফজল বিনতে হারিছ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি বলেন, আমি আরজ করলাম, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! এই শিশুকে শহীদ করবে! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “হ্যাঁ, হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি আমাকে এ খবর জানিয়েছেন এবং উনার শাহাদাত স্থলের লাল মাটিও এনেছেন।” (মুস্তাদরিক, দালায়িলুন নুবুওওয়াহ, মিশকাত শরীফ)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি হায়াতুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি শাহিদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি মুত্ত্বলা’ আলাল গইব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মহাসম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত জীবনী মুবারক (১৭৭০)
৪র্থ হিজরী ৫ই শা’বান শরীফ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস:
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে সা’দ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হযরত শা’বী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণনা করেছেন। সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি জঙ্গে সিফফীনের সময় কারবালার পথ দিয়ে যাওয়ার সময় দাঁড়িয়ে গেলেন এবং সেই জায়গার নাম জানতে চাইলেন। লোকেরা বললো, এ জায়গার নাম ‘কারবালা’। ‘কারবালা’র নাম শুনামাত্র সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি এত কান্নাকাটি করলেন যে, উনার দু’চোখ মুবারক উনার পানি মুবারক দ্বারা মাটি পর্যন্ত ভিজে গিয়েছিল।  সুবহানাল্লাহ! অতঃপর তিনি ফরমালেন, আমি একদিন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমতে হাযির হয়ে দেখতে পেলাম, তিনি কাঁদছেন। আমি আরজ করলাম, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি কাঁদছেন কেন? জাওয়াবে রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি জানালেন, এইমাত্র হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি এসে আমাকে খবর দিয়ে গেলেন-
 ان ولدى حَضْرَتْ الـحسين عَلَيْهِ السَّلَامُ يقتل بِشَاطِئ الْفُرَأتِ بِـمَوْضِعِ يقال له كَرْبَلَا .
 অর্থ :“আমার ছেলে (দৌহিত্র) সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলে বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ফোরাত নদীর তীরে যে জায়গায় শহীদ করা হবে, সে জায়গার নাম কারবালা।” (সাওয়ায়িকে মুহরিকাহ, আল আশরাফু আলা ফাদ্বলিল আশরাফ)
 আর সত্যি সত্যিই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ভবিষ্যদ্বাণী মুতাবিক সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলে বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কারবালার প্রান্তরে শাহাদাত মুবারক গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ! সুবহানা রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! সুবহানা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম!

0 Comments: