একজন কুতুবুজ্জামান- উনার দিদারে মাওলার দিকে প্রস্থান- সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযুর ক্বিবলা সাইয়্যিদ মুখলেছুর রহমান আলাইহিস সালাম উনার সাওয়ানেহে উমরী মুবারক-পর্ব-৬৮



ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দাওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশ্ফ ওয়া কারামত, ফখরুল আউলিয়া, ছুফীয়ে বাতিন, ছাহিবে ইস্মে আযম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা রহমতুল্লাহি আলাইহিস সালাম-উনার স্মরণে- একজন কুতুবুয্ যামান-উনার দিদারে মাওলার দিকে প্রস্থান-

খাজিনাতুর রহমত, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক  ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সদয়  অনুমতিতে দেশে ফেরা অবিচ্ছেদ্য মনঃসংযোগের অনাবিল যোগসূত্রে ব্যথাতুর প্রেমিকের পাবার আকুতি প্রেমাস্পদের অবিদিত থাকেনা। সম্পর্ক স্থাপনকালে আশিক প্রেমিকের জানাই থাকেনা তার কি চাই, কতটুকু চাই। মুহব্বতের পরিণত স্তর পর্যন্ত নিয়ামত প্রাপ্তির গতি ও প্রকৃতি বদলাতে থাকে।  পর্যায়ক্রমে এসবের উৎকর্ষ সাধিত হয়। আজ যে প্রাপ্তি অতি জরুরী ও আনন্দের, কাল তাঅপ্রয়োজনীয় হলেও মুল্যহীন হয়ে পড়েনা। কারণ, অতীতের স্তরটি উপরে উঠার অপরিহার্য সিঁড়ি।

 জীবনে চাওয়া-পাওয়ার সকল সোপানে অবিরাম প্রার্থনায় নিমগ্ন থাকাই ওলীআল্লাহ্গণের সহজাত প্রবৃত্তি। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালিন, রহমতুল্লিল আলামিন, হাবীবুল্লাহ্, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার অন্তর মুবারকের গভীরে মিশে থাকা মধুর যন্ত্রণা, চিন্তার অনুপম নিবিষ্টতা, মোরাকাবার তন্ময়তায় তিনি বেমেছাল (অতুলনীয়) বিনয় ও অনুগত্যপূর্ণ মানসিকতার অধিকারী ছিলেন। পরওয়ারদিগার আল্লাহ পাক-উনার প্রতি অপার আগ্রহ ও আকর্ষণ এবং সীমাহীন নিবেদনে তিনি অবিরাম ব্যাপৃত রয়েছেন। অপরিসীম বেদনা ও উদ্বেলতায় নিশিদিন তিনি নিমগ্ন থেকেছেন। যদিও তিনি ছিলেন মাছূম (নিষ্পাপ)।

  এই সুন্নত মুবারক অনুসরণেই ওলীয়ে মাদারজাদ, আওলাদে রসূল, হযরতুল আল্লামা, সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছূর রহমান আলাইহিস সালাম আল্লাহ পাক এবং উনার প্রিয়তম হাবীব, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার প্রতি কাতর প্রার্থনায় নিবেদিত রয়েছেন।  আল্লাহ পাক উনার সৃষ্ট কোন মাখলুক সম্পর্কেই উদাসীন নন্। সকলের প্রতিই উনার সমান (পরিপূর্ণ) দৃষ্টি। মাহবুব ওলীগণের মনোবাঞ্ছা সম্পর্কেও তিনি পরিপূর্ণরূপে পরিজ্ঞাত। সুন্নত পরিপালনে তাঁরা (ওলীআল্লাহ্গণ) দুনিয়া বিরাগী মানসিকতায় নিরন্তর প্রার্থনায় রত থাকার দায়িমী অভ্যাস গড়ে তুলেছেন। হাদীছে কুদসীতে আল্লাহ পাক বলেছেন,

انا عند ظن عبدى بى

 অর্থঃ আমি আমার বান্দার ধারণার অনুরূপ।যে যা চায়, সে তাই  পায়। এ পাওয়ার মধ্যে তার দৃষ্টি সীমার বিপরীত এবং অনুভবের অতিরিক্ত (অন্যকিছু) বিষয় থাকেনা। পাওয়ার বিষয় দুটি।  একটি নিয়ামত এবং অপরটি ছাহিবে নিয়ামত। যিনি নিয়ামতের মালিক, তিনিই ছাহিবে নিয়ামত। আল্লাহ্ পাক ছাহিবে নিয়ামত। আল্লাহ পাক ছাড়া সবকিছুই গায়রুল্লাহ্। ছহিবে সুলতানিন্ নাছীর, ছাহিবে খুলুক্বে আযীম, হাবীবুল্লাহ্, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও ছাহিবে নিয়ামত। আল্লাহ্ পাক-উনার তরফ থেকে পরিপূর্ণরূপে দান সমৃদ্ধ হয়ে তিনিও নিয়ামতের অধিকারী এবং আপন সদয় ইচ্ছায় নিয়ামত বণ্টনকারী। উনার বোধগম্য ব্যাখ্যায় তিনি বলেন,

 انما انا قاسم والله يعطى.

অর্থঃ বণ্টন করি আমি, আর দাতা আল্লাহ পাক।সমগ্র বিশ্ব জগৎ প্রতিপালন ও পচিালনায় মাশুকে মাওলা, রফিকু ছাহিবুল কুদরত, রহমতে ইলাহী, হাবীবুল্লাহ্, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সম্পৃক্ত করে নিয়ে আল্লাহ্ পাক উনাকে আপন ইচ্ছা ও ইখতিয়ার প্রয়োগের জন্য ক্ষমতাবান করেছেন।  আল্লাহ্ পাক এবং নিয়ামত বণ্টনের জন্য ক্ষমতা প্রাপ্ত ছাহিবে লাওলাক, হাবীবুল্লাহ্, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে হাছিল করাই মাহবুব ওলীগণের অভীষ্ট লক্ষ্য। এ নিয়ামত হাছিলে কামিয়াব হয়েছেন কুতুবুয্ যামান, ওলীয়ে মাদারজাত, আওলাদে রসূল, হযরতুল আল্লামা, সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছূর রহমান আলাইহিস সালাম।  (অসমাপ্ত)

আবা-১২৭ 

0 Comments: