নূর হওয়া সম্পর্কিত বিখ্যাত হাদীস ও তাঁর বিশ্লেষণ

Related imageনূর হওয়া সম্পর্কিত বিখ্যাত হাদীস ও তাঁর বিশ্লেষণ
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আত তথা সাহাবায়ে কিরাম, আসলাফে কিরাম, আউলিয়ায়ে কিরাম এবং ওলামায়ে উম্মত এর স্বীকৃত আক্বিদা বা বিশ্বাস হচ্ছে, হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সত্ত্বাগত ভাবে নূর অর্থাৎ নূরের সৃষ্টি। এর স্বপক্ষে অসংখ্য প্রমাণাদি কুর’আন-হাদীসের মধ্যে বিদ্যমানও রয়েছে।তন্মধ্যে কুর’আন শরীফের উল্লেখযোগ্য আয়াত হলো, সূরা মায়েদার পনেরোতম আয়াতটি।যার ব্যাখ্যায় অধিকাংশ তাফসীরকারকগণ নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নূর বলে উল্লেখ করেছেন।আর অসংখ্য হাদীস শরীফের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হাদীস হচ্ছে, জলীল কদর সাহাবী হযরত জাবের রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু’র বর্ণিত হাদীসটি। যাতে হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা’র নবুয়তী জবানেই বলা হয়েছে যে,তিনি নূর।এর ফলে নবীজী যে নূরের সৃষ্টি,সেটা সাহাবায়ে কিরাম এবং আসলাফে কিরামের আক্বিদা হয়ে যায়।এবং পরবর্তীতে তাদের পদাঙ্ক অনুসরণে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আতেরও আক্বিদা বা বিশ্বাসে পরিণত হয় এটা।
এতকাল যাবত হাদীস শরীফটির ব্যাপারে কোন মুজতাহিদ,মুফাসসির বা মুহাদ্দিসগণের কোন সংশয় বা আপত্তি না থাকলেও, বর্তমান সময়ে মাথাচাড়া দেওয়া কিছু নব্য বিদ’আতী ফির্কার লোকেরা হাদীসটিকে অস্বীকার করে আসছে। হাদীসটিকে অস্বীকার করার মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে, নবীর নূর হওয়াকে অস্বীকার করা। সুতরাং ভূমিকা দীর্ঘ না করে আসুন জেনে নিই হাদীসটি এবং তাঁর বিশুদ্ধতা সম্পর্কে।
নুর সম্পর্কিত বিখ্যাত হাদীসটি হচ্ছে,
عن جابر بن عبد الله رضى الله عنه قال : قلت يا رسول الله بابى انت وامى اخبرنى عن اول شئ خلق الله تعالى قبل الاشياء ؟ قال يا جابر ان الله تعالى قد خلق قبل الاشياء نورنبيك من نوره فجعل ذالك النور يدور بالقدرة حيث شاء الله تعالى ولم يكن في ذالك الوقت لوح ولا قلم ولا جنة ولا ملك ولا سماء ولا ارض ولا شمس ولا قمر ولا جن ولا انس – فلما اراد الله تعالى ان يخلق الخلق قسم ذالك النور اربعة اجزاء فخلق من الجزء الاول القلم و من الثاني اللوح ومن الثالث العرش ثم قسم الجزء الربع اربعة اجزاء فخلق من الاول حملة العرش ومن الثانى الكرسى ومن الثالث باقى الملائكة ثم قسم الربع اربع اجزاء فخلق من الاول السماوات ومن الثانى الارضين ومن الثالث الجنة والنار————————————— الخ
হযরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত আছে। তিনি বলেন, আমি আরজ করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা ! আপনার প্রতি আমার পিতা মাতা উৎসর্গিত। আল্লাহ তায়ালা সব কিছুর পূর্বে কোন বস্তুটিট সৃষ্টি করেছেন ? জবাবে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা ইরশাদ করলেন, হে জাবের! আল্লাহ তায়ালা সর্বপ্রথম সমস্ত বস্তুর পূর্বে তাঁর আপন নূর হতে তোমার নবীর নূরকে সৃষ্টি করেছেন। তারপর আল্লাহ্‌র ইচ্ছানুযায়ী সেই নূর পরিভ্রমণ করতে লাগল। ওই সময় না ছিল লউহে-মাহফুজ, না ছিল কলম, না ছিল বেহেশত, না ছিল দোজখ, না ছিল ফেরেশতা, না ছিল আকাশ, না ছিল পৃথিবী, না ছিল সূর্য, না ছিল চন্দ্র, না ছিল জ্বিন জাতি, না ছিল মানবজাতী। অতঃপর যখন আল্লাহ্‌ তায়ালা অন্যান্য বস্তু সৃষ্টি করার মনস্থ করলেন, তখন ওই নূর কে চার ভাগ করে প্রথম ভাগ দিয়ে কলম, দ্বিতীয় ভাগ দিয়ে লউহে-মাহফুজ, তৃতীয় ভাগ দিয়ে আরশ সৃষ্টি করলেন। অবশিষ্ট এক ভাগকে আবার চার ভাগে ভাগ করে প্রথম ভাগ দিয়ে আরশ বহনকারী ফেরেশতা, দ্বিতীয় ভাগ দিয়ে কুরসি, তৃতীয় ভাগ দিয়ে অন্যান্য ফেরেশতা সৃষ্টি করলেন। দ্বিতীয় চার ভাগের অবশিষ্ট এক ভাগ কে আবার পুনরায় চার ভাগ করে প্রথম ভাগ দিয়ে আকাশ, দ্বিতীয় ভাগ দিয়ে জমিন, তৃতীয় ভাগ দিয়ে বেহেশত-দোজখ সৃষ্টি করলেন। অবশিষ্ট এক ভাগ কে আবার চার ভাগে ভাগ করে প্রথম ভাগ দিয়ে মোমেনদের নয়নের দৃষ্টি, দ্বিতীয় ভাগ দিয়ে কালবের নূর তথা আল্লাহ্‌র মারেফত, তৃতীয় ভাগ দিয়ে তাদের মহববতের নূর তথা তাওহিদী কালেমা “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা)” সৃষ্টি করলেন এবং বাকি এক ভাগ দিয়ে সমস্ত কিছু সৃষ্টি করলেন।
[হাদীস সূত্রঃ- মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাক, খন্ড-০১, পৃষ্ঠা-৯৯, হাদীস নং-১৮।সহীহ হাদীসের এই কিতাবটি ইমাম বুখারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর দাদা উস্তাদ মুহাদ্দীস আব্দুর রাজ্জাক রহমাতুল্লাহি কর্তৃক রচিত; প্রকাশনী- দারুল মুহাদ্দীস, রিয়াদ, সৌদি আরব]
বিঃদ্রঃ খারেজীরা হাদীসটিকে তার অধ্যায় সহকারেই পরবর্তীতে গায়েব করে ফেলে। আলহামদুলিল্লাহ ! তাদের ষড়যন্ত্রের শিকার হওয়া মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক সম্পাদিত আসল কিতাবের ‘নূরের’ অধ্যায়ের মূল কপিটি বহু বছর পর বর্তমানে উদ্ধার করা হয়েছে। তুরস্কের ইস্তাম্বুলের জাদুঘরে এটি সংরক্ষিত আছে।
হাদীস শরীফটির বিশুদ্ধতাঃ
(১) হাদীসের সনদটি নিম্নরূপঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে >> জাবির বিন আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে >> মুহাম্মাদ বিন মুকদার রাহমাতুল্লাহি আলাইহি হতে >> মা’মার বিন রাশীদ হতে >> আব্দুর রাজ্জাক রাহমাতুল্লাহি আলাইহি পর্যন্ত। অর্থাৎ হাদীসটিতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা হতে আব্দুর রাজ্জাক রহমাতুল্লাহি আলাইহি পর্যন্ত মাঝখানে মাত্র চারজন রাবী রয়েছেন।
(২) হাদীসটি সম্পর্কে মুহাদ্দীসগণের মন্তব্যঃ
(ক) হাফেজে হাদিস, উপমহাদেশের বুখারী, মুহাদ্দিস হযরত আব্দুল হক দেহলভী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তাঁর সুবিখ্যাত সিরাত গ্রন্থ “মাদারিজ নবুয়ত” গ্রন্থে হাদীসটিকে হাসান ও সহীহ বলেছেন।
(খ) আহমাদ ইবন সালীহ রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, “আমি একবার আহমাদ বিন হাম্বল রহমাতুল্লাহি আলাইহি’কে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনি হাদীস শাস্ত্রে আব্দুর রাজ্জাকের থেকে ভালো আর কাউকে পেয়েছেন ? আহমাদ বিন হাম্বল রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, না”। [আসকলানী, তাহজিবুত তাহজিব ২/৩৩১]
(গ) হাদীসটির একজন রাবী হলেন মা’মার বিন রাশীদ। উনার সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, আমি বসরা নগরীর সকল হাদীস শাস্ত্র বিশেষজ্ঞদের থেকে মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাকের মা’মার বিন রাশীদ এর সূত্রে পাওয়া হাদীসগুলো পছন্দ করি।
(ঘ) ইমাম ইবন হাজর আসকলানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনাকে দক্ষ মুখস্থবিদ এবং নির্ভরযোগ্য বলেন। [আসকলানী, তাহজিবুত তাহজিব ১/৫০৫]
(ঙ) বুখারী শরীফে মা’মার বিন রাশীদ সূত্রে বর্ণিত হাদীসের সংখ্যা প্রায় ২২৫ এবং মুসলিম শারীফে বর্ণিত হাদীস সংখ্যা প্রায় ৩০০।
(চ) হাদীসটির আরেক রাবী হলেন মুহাম্মাদ বিন মুকদার। ইমাম হুমায়দি বলেন, মুকদার একজন হাফিজ। ইবন মা’ঈন বলেন, উনি নির্ভরযোগ্য। [আসকলানী, তাহজিবুত তাহজিব খন্ডঃ-০৯/১১০৪৮]
(ছ) মুকদার থেকে বর্ণিত হাদীসের সংখ্যা বুখারী শরীফে ৩০টি এবং মুসলিম শরীফে ২২টি।
(জ) আর জাবির রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু একজন সুপ্রসিদ্ধ সাহাবী। বুখারী ও মুসলিম শরীফের উনার থেকে বর্ণিত অনেক হাদীস আছে।
সুতরাং বুঝা গেল। হাদীসটির সকল রাবীই নির্ভরযোগ্য এবং উনাদের সূত্রে বুখারী ও মুসলিম শরীফেও হাদীস বর্ণিত আছে।
(৩) নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম এর ‘নূর’ সম্পর্কিত ‘মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক’ আরবী মূল কিতাবের স্ক্যান কপিসহ বিস্তারিত দেখুন নিচের লিঙ্কে,
http://alturath.info/hadeeth/abdel-razek/abdel-razek.htm
এবং এই হাদীস শরীফটিকে আরও যে সমস্ত কিতাবে সহীহ হাদীস হিসেবে মন্তব্য করে দলীল হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে-
১। দালায়েলুন নবুওয়াত ১৩/৬৩ ।
২। মাওয়াহেবুল্লাদুন্নিয়া ১/৯ ।
৩। মাদারেজুন নবুওয়াত ২/২ ।
৪। যুরকানী ১/৪৬ ।
৫। রুহুল মায়ানী ১৭/১০৫ ।
৬। সিরাতে হালবীয়া ১/৩০ ।
৭। মাতালেউল মাসাররাত ২৬৫ পৃষ্ঠা ।
৮। ফতোয়ায়ে হাদীসিয়া ১৮৯ পৃষ্ঠা ।
৯। নি’ মাতুল কুবরা ২ পৃষ্ঠা;
১০। হাদিকায়ে নদীয়া ২/৩৭৫ ।
১১। দাইলামী শরীফ ২/১৯১ ।
১২। মকতুবাত শরীফ ৩ খন্ড ১০০ পৃষ্ঠা ।
১৩। ইনছানুল উয়ুন ১/২৯ ।
১৪। নূরে মুহাম্মদী ৪৭ পৃষ্ঠা ।
১৫। আল আনোয়ার ফি মাওলিদিন নবী ৫ পৃষ্ঠা ।
১৬। আফদ্বালুল ক্বোরাঃ তারীখুল খমীসঃ নুজহাতুল মাজালিস ১ খন্ড ।
১৭। দুররুল মুনাজ্জাম ৩২ পৃষ্ঠা ।
১৮। কাশফুল খফা ১/৩১১ ।
১৯। তারিখ আননূর ১/৮ ।
২০। আনোয়ারে মুহম্মদীয়া ১/৭৮ ।
২১। আল মাওয়ারিদে রাবী ফী মাওলীদিন নবী ।
২২। তাওয়ারীখে মুহাম্মদ ।
২৩। আনফাসে রহীমিয়া ।
১৪। মা’ য়ারিফে মুহম্মদী ।
১৫। মজমুয়ায়ে ফতোয়া ২/২৬০ ।
১৬। নশরুতত্বীব ৫ পৃষ্ঠা ।
১৭। আপকা মাসায়েল আওর উনকা হাল ৩/৮৩ ।
১৮। শিহাবুছ ছাকিব ৫০ পৃষ্ঠা ।
১৯। মুনছিবে ইছমত ১৬ পৃষ্ঠা ।
২০। রেসালায়ে নূর ২ পৃষ্ঠা ।
২১। হাদিয়াতুল মাহদী ৫৬ পৃষ্ঠা ।
২২। দেওবন্দী আজিজুল হক অনুবাদকৃত বুখারী শরীফ ৫/৩ ।
(৪) এ সম্পর্কে আরো কয়েকটি হাদীস শরীফঃ
=> বোখারী শরীফের ব্যাখ্যাকার আল্লামা ইমাম আহমদ কুস্তলানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তাঁর সুপ্রসিদ্ধ কিতাব মাওয়াহেবে লাদুন্নিয়ায় হযরত ইমাম জয়নাল আবেদীন রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে, তিনি তাঁর পিতা হযরত ইমাম হোসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে, তিনি তাঁর পিতা হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে, তিনি রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেন,
“নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, “আমি হযরত আদম আলাইহিস সালাম সৃষ্টির চৌদ্দ হাজার(১৪,০০০) বছর পূর্বে আল্লাহর নিকট ‘নূর’ হিসাবে বিদ্যমান ছিলাম।”
[মাওয়াহেবে লাদুনিয়া, প্রথম খন্ড, পৃষ্ঠা-৯; যুরকানী শরীফ, প্রথম খন্ড, পৃষ্ঠা-৪৬; সিরাতে হালভিয়া, প্রথম খন্ড, পৃষ্ঠা-৩৭, হুজ্জাতুল্লাহি আলাল আলামিম, পৃষ্ঠা- ২৮, আনোয়ারে মুহাম্মদীয়া, পৃষ্ঠা- ০৯; ফতওয়ায়ে হাদিসিয়া, পৃষ্ঠা-৫১
=> হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত,
হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, সৃষ্ট জীবের মধ্যে আমি সর্বপ্রথম নবী হিসাবে সৃষ্টি হয়েছি। কিন্তু আমি প্রেরিত হয়েছি (যমীনে প্রকাশ পেয়েছি) সব নবী আলাইহিমুস সালাম’দের শেষে।”
[ তাফসীরে বাগবী ৫/২০২, দূররে মানছুর ৫/১৮৪, শেফা ১/৪৬৬, মানাহিলুচ্ছফা ৫/৩৬, কানযুল উম্মাল ৩১৯১৬, দায়লামী ৪৮৫০]
=> হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা হতে বর্নিত,
নিশ্চয়ই হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা ইরশাদ করেন, হযরত জিব্রাইল আলাইহিস সালাম আমার নিকট আগমন করে বলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ! মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে এই বলে পাঠিয়েছেন যে, “আপনি যদি না হতেন তবে আমি(আল্লাহ) জান্নাত ও জাহান্নাম কিছুই সৃষ্টি করতাম না।”
[কানযুল উম্মাল- হাদীস ৩২০২২, দায়লামী শরীফ]
=> অপর একটি হাদীস শরীফের মধ্যে আসছে,
কোন এক সময় হযরত রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম এর নিকট জিজ্ঞাসা করলেন, হে ভাই জিব্রাইল! তোমার বয়স কত বৎসর হয়েছে ? হযরত জিব্রাইল আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরয করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি আমার বয়স সম্পর্কে কিছুই বলতে পারিনা। তবে আমি আপনাকে আমার বয়স সম্পর্কে এতটুকু তথ্য জানাতে পারি যে, চতুর্থ আসমানে একটি উজ্জ্বল তারকা ছিল। ঐ তারকাটি সত্তর হাজার বৎসর পর পর আসমানে একবার উদয় হত। আমি তাকে সত্তর হাজার বার উদয় হতে দেখেছি। এখন চিন্তা করুন, আমার বয়স কত হতে পারে ! নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত জিব্রাইল আলাইহিস সালাম এর উত্তর শুনে ইরশাদ করলেন, হে ভাই জিব্রাঈল! আমি আমার পরওয়ার দেগারের নামে শপথ করে বলছি যে, উক্ত উজ্জ্বল তারকাটি আমি-ই ছিলাম।
[তাফসিরে রুহুল বায়ান প্রথম খন্ড ৯৭৪ পৃষ্টা, ইমাম বুখারীর রহমাতুল্লাহি আলাইহি লিখিত তারিখ উল কাবির, ইমাম আন নুবানি রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর জাওয়াহিরুল নিহার কিতাব দ্রষ্টব্য]
সুতরাং, নূর সম্পর্কিত আরো অসংখ্য হাদীস শরীফ বিভিন্ন কিতাবে রয়েছে।পথহারা বাতিল ও বিদ’আতী সম্প্রদায় সরাসরি এসব সহিহ হাদিসকে একবাক্যে জাল বলে অস্বীকার করে।নূর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামা’র নূরকে অস্বীকার করার জন্যই মূলত তারা এসকল হাদীসকে মিথ্যা বলে আখ্যা দেয় করে।

আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে সহিহ আক্বিদা বুঝার এবং বাতিল আক্বিদাকে প্রত্যাখান করার তাওফিক দান করুন।আমিন,বিহুরমাতি সাইয়্যিদিল মুরসালিন।

0 Comments: