খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম প্রথম খণ্ড ( পর্ব -১)

খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম  প্রথম খণ্ড

পিডিএফ লিংক-https://drive.google.com/open?id=1BVNRKm1mdZD8r0zdui4WzMVhv3JwZJCX








সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর

পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনার সুমহান সম্মানার্থে প্রকাশিত

بِسْمِ اللهِ الرَّحْـمٰنِ الرَّحِيْمِ.
يَـخْرُجُ رَجُلٌ مّـِنْ اَهْلِ بَيْـتِىْ عِنْدَ اِنْقَطَاعٍ مّـِنَ الزَّمَانِ وَظُهُوْرٌ مّـِنَ الْفِتَنِ رَجُلٌ يُّقَالُ لَهُ السَّفَّاحُ...
অর্থ : “যামানার ক্রান্তিলগ্নে, যামানার শেষের দিকে যখন ফিতনা-ফাসাদসমূহ চরমভাবে প্রকাশ পাবে তথা বেপর্দা-বেহায়া, অত্যাচার-অবিচার, যুলুম-নির্যাতনে, বে-ইনসাফীতে পুরো পৃথিবী ভরে যাবে, কোথাও পবিত্র ইনসাফ উনার লেশমাত্র অবশিষ্ট থাকবে না। তখন আমার হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্য থেকে আমার একজন খাছ আওলাদ, একজন মহান খলীফা আলাইহিস সালাম তিনি দুনিয়ার যমীনে তাশরীফ মুবারক নিবেন। তিনি এমন একজন মহান ব্যক্তিত্ব মুবারক এমন একজন মহান খলীফা উনাকে ‘হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম’ বলা হবে।” (সুবহানাল্লাহ) (দালায়িলুন নুবুওওয়াহ লিল বাইহাক্বী ৬/৫১৪, খাছায়িছুল কুবরা লিস সুয়ূত্বী ২/২০৩, মুসনাদে আহমদ, জামিউল আহাদীছ, আস সুনানুল ওয়ারিদা, আবু নাঈম, আল ফিতান, বিদায়া-নিহায়া ৬/২৪৮ ইত্যাদি)

خَلِيْفَةُ اللهِ حَضْرَتْ اَلسَّفَّاحُ عَلَيْهِ السَّلَامُ

খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম
প্রথম খ-

গবেষণা কেন্দ্র : মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ

প্রকাশনায় :
গবেষণা কেন্দ্র : মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ
, আউটার সার্কুলার রোড, রাজারবাগ শরীফ, ঢাকা-১২১৭
ফোন (পিএবিএক্স) : ৯৩৩৮৭৮৭, ৮৩৩৩৯২৭, ৮৩৩৩০৮১
মোবাইল : ০১৭১১-২৩৮৪৪৭, ০১৭১১-২৬৪৬৯৪, ০১৭১২-৬৪৮৪৫৩
ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৯৩৩৮৭৮৮
ওয়েব সাইট : uswatun-hasanah.net; al-ihsan.net;
                         al-hilaal.net; attaqweemush-shamsi.net


পরিবেশনায় :
কিশোর আনজুমানে আল বাইয়্যিনাত, বাংলাদশে
, আউটার সার্কুলার রোড, রাজারবাগ শরীফ, ঢাকা-১২১৭
মোবাইল : ০১৯১৬-৯২৯১১২, ০১৭১১-২৭২৭৮২, ০১৭৪৬-১২১২৯৩
ওয়েব সাইট : যঃঃঢ়://শযধিষরভধঃঁষ-ঁসধস.হবঃ, যঃঃঢ়://শরংযড়ৎ-ধহলঁসধহ.হবঃ

প্রথম প্রকাশ :
পবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ         ১৪৩৫ হিজরী সন
ছামিন                               ১৩৮১ শামসী সন
জানুয়ারি                                      ২০১৪ ঈসায়ী সন
পৌষ                                ১৪২০ ফসলী সন

প্রাপ্তিস্থান :
মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ (বিক্রয় কেন্দ্র)
, আউটার সার্কুলার রোড, রাজারবাগ শরীফ, ঢাকা-১২১৭
ফোন : ৮৩১৪৮৪৮ মোবাইল : ০১৭১২-১৫৬৪৬২

কম্পিউটার অলঙ্করণ :
মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ (কম্পিউটার বিভাগ)
, আউটার সার্কুলার রোড, রাজারবাগ শরীফ, ঢাকা-১২১৭
ফোন : ৮৩১৭০১৯ মোবাইল : ০১৭১২-৮৫৫৩৪৫

মুদ্রণে :
মুহম্মদিয়া বুক বাইন্ডিং অ্যান্ড প্রিন্টিং প্রেস
১৩/২ কেএম দাস লেন, গোলাপবাগ, ঢাকা
ফোন : ৭৫৪৭৭৯৬ মোবাইল : ০১৭১১-১৭৮৬৮৪

হাদিয়া : ৩০ টাকা
الـمؤسس والـمشرف لـمركز البحث مـحمدية جامعة شريف والـمجلة الشهرية البينات والـجريدة اليومية الاحسان- خليفة الله، خليفة رسول الله، سلطان الاولياء، مـخزن الـمعرفة، خزينة الرحـمة، لسان الامة، فخر الفقهاء، حاكم الـحديث، حجة الاسلام، سيد الـمجتهدين، مـحى السنة، ماحى البدعة، صاحب الالـهام، رسول نـما، سيد الاولياء، سلطان العارفين، امام الصديقين، صاحب السلطان النصير، مستجاب الدعوات، قطب العالـم، قيوم الزمان، الـجبارى الاول، القوى الاول، امام الائمة، امام الشريعة والطريقة، حبيب الله، جامع الالقاب، سيد الـخلفاء، ابو الـخلفاء، اولاد رسول، الـمجدد الاعظم، سيدنا الامام
خَلِيْفَةُ اللهِ حَضْرَتْ اَلسَّفَّاحُ عَلَيْهِ السَّلَامُ
الـحسنى والـحسينى والقريشى والـحنفى والقادرى
والصيشتى والنقشبندى والـمجددى والـمحمدى
راجارباغ شريف، داكا
গবেষণা কেন্দ্র : মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ, দৈনিক আল ইহসান শরীফ এবং মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ উনাদের প্রতিষ্ঠাতা ও পৃষ্ঠপোষক- খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, সুলত্বানুল আওলিয়া, মাখযানুল মা’রিফাহ, খযীনাতুর রহমাহ, লিসানুল উম্মাহ, ফখরুল ফুক্বাহা, হাকীমুল হাদীছ, হুজ্জাতুল ইসলাম, সাইয়্যিদুল মুজতাহিদীন, মুহইস সুন্নাহ, মাহিউল বিদয়াহ, ছাহিবুল ইলহাম, রসূলে নুমা, সাইয়্যিদুল আওলিয়া, সুলত্বানুল ‘আরিফীন, ইমামুছ ছিদ্দীক্বীন, ছাহিবু সুলত্বানিন নাছীর, মুসতাজাবুদ দা’ওয়াত, কুতুবুল ‘আলম, ক্বইয়ূমুয যামান, আল জাব্বারিউল আউয়াল, আল ক্বউইউল আউয়াল, ইমামুল আইম্মাহ, ইমামুশ শরী‘য়াহ ওয়াত তরীক্বাহ, হাবীবুল্লাহ, জামি‘উল আলক্বাব, সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আওলাদে রসূল, মুজাদ্দিদ আ’যম সাইয়্যিদুনা ইমাম -
খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম
আল হাসানী ওয়াল হুসাইনী ওয়াল কুরাঈশী ওয়াল হানাফী ওয়াল ক্বাদিরী ওয়াল চীশতী ওয়ান নকশবন্দী ওয়াল মুজাদ্দিদী ওয়াল মুহম্মদী
রাজারবাগ শরীফ, ঢাকা
উনার সুমহান মক্ববুল দুয়া মুবারক, দয়া মুবারক এবং
মুবারক ইজাজতক্রমে প্রকাশিত।
সূচিপত্র

নং       শিরোনাম        পৃষ্ঠা
১.       اَلْبِدَايَةُ (আল বিদায়াহ) ......................................................................     
২.       ‘আস সাফফাহ’ লক্বব মুবারক উনার অর্থ ......................................       
          ক্স       সাফফাহ (سَفَّاحٌ) শব্দ মুবারক উনার তাহক্বীক্ব বা শাব্দিক  বিশ্লেষণ .........................................................................   

          ক্স       আস সাফফাহ (اَلسَّفَّاحُ) শব্দ মুবারক উনার শাব্দিক অর্থ        
৩.      মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আওলাদে রসূল, মামদূহ হযরত মুুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনিই হচ্ছেন পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহান খলীফা হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম  ......................................         


১০
          ক্স       عِنْدَ اِنْقَطَاع ٍ مّـِنَ الزَّمَانِ “যামানার ক্রান্তিলগ্নে, যামানার শেষের দিকে” .............................................................................        
১১
          ক্স       ظُهُوْرٌ مّـِنَ الْفِتَنِ “যখন ফিতনা-ফাসাদসমূহ চরমভাবে প্রকাশ পাবে” ...............................................................................      
১২
          ক্স       رَجُلٌ مّـِنْ اَهْلِ بَيْتِىْ “(মহান খলীফা, আওলাদে রসূল হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম) তিনি আমার হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্য থেকে আমার একজন খাছ আওলাদ হবেন” ....................        


১৪
          ক্স       رَجُلٌ يُّقَالُ لَهُ السَّفَّاحُ “তিনি এমন একজন মহান ব্যক্তিত্ব মুবারক, এমন একজন মহান খলীফা হবেন যে, উনাকে ‘হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম’ বলা হবে” ...........    

১৪
          ক্স       فَيَكُوْنُ اِعْطَاؤُهُ الْمَالَ حَثْيًا “(মহান খলীফা হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম) তিনি উনার দু’হাত মুবারক ভরে অঢেল, বেহিসাব ধন-সম্পদ বিলিয়ে দিবেন” .................       

১৮
৪.       اَلنّـِهَايَةُ (আন নিহায়াহ) ......................................................................       ২১
اَلْبِدَايَةُ (আল বিদায়াহ)
اَلْـحَمْدُ ِللهِ رَبّ ِالْعَالَمِيْنَ وَالصَّلـٰوةُ وَالسَّلَامُ عَلـٰى رَسُوْلِهِ الْكَرِيْـمِ وَعَلـٰى اُمَّهَاتِ الْمُؤْمِنِيْنَ عَلَيْهِنَّ السَّلَامُ وَاَهْلِ بَيْتِهِ الْعَظِيْمِ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ وَاَصْحَابِهٖ رَضِىَ اللهُ تَعَالىٰ عَنْهُمْ وَعَلـٰى اَوْلَادِهِ الْمُجَدِّدِ الْاَعْظَمِ سَيّـِدِنَا خَلِيْفَةِ اللهِ حَضْرَتْ اَلسَّفَّاحِ عَلَيْهِ الصَّلـٰوةُ وَالسَّلَامُ وَعَلىٰ اَهْلِ بَيْتِهِ الْكَرِيْـمِ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ. اَمَّا بَعْدُ:
পবিত্র বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, আবূ দাঊদ শরীফ, তিরমিযী শরীফ, আহমদ শরীফ, হাকিম শরীফ, বাযযার শরীফ, আবূ ইয়া’লা শরীফ, আবূ শায়বা শরীফ, আবূ আওয়ানা শরীফ, বাইহাক্বী শরীফ, ইবনে হিব্বান শরীফ, ইবনে জা’দ শরীফ, আবূ নাঈম শরীফ, শরহুস সুন্নাহ শরীফ, মুসনাদে ত্বয়ালসী শরীফ, আল মু’জামুল কাবীর শরীফ, আল মু’জামুল আওসাত্ব শরীফ, দায়লামী শরীফ, জামিউল আহাদীছ শরীফ, জামউল জাওয়ামি’ শরীফ, ইস্তিয়াব শরীফ, জামি’উল উছূল শরীফ, তারীখুল খুলাফা, মুখতাছারু তারীখি দিমাশক, তারীখে বাগদাদ, ফাতহুল কাবীর শরীফ, মাজমাউঝ ঝাওয়াইদ শরীফ, মাত্বালিবুল আলিয়া শরীফ, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ শরীফ, আছ ছওয়াইকুল মুহরিক্বাহ শরীফ, ইযালাতুল খফা শরীফ, বিদায়া-নিহায়া, আন নিহায়া ফিল ফিতান, তারীখ লিআবী নাঈম, মিশকাত শরীফ, খছাইছুল কুবরা শরীফসহ পৃথিবীর প্রায় সমস্ত বিশ্বখ্যাত সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনাদের কিতাব উনাদের মধ্যে এসেছে-
عَنْ حَضْرَتْ جَابِرِ بْنِ سَـمُرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالىٰ عَنْهُ قَالَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ لَا يَزَالُ الْاِسْلَامُ عَزِيْزًا اِلَى اثْنَىْ عَشَرَ خَلِيْفَةً كُلُّهُمْ مّـِنْ قُرَيْشٍ وَفِىْ رِوَايَةٍ لَا يَزَالُ الـِدّيْنُ قَـائِمًا حَتّٰـى تَقُوْمَ السَّاعَةُ اَوْ يَكُوْنُ عَلَيْهِمُ اثْنَا عَشَرَ خَلِيْفَةً كُلُّهُمْ مّـِنْ قُرَيْشٍ.
অর্থ : “হযরত জাবির ইবনে সমুরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি শুনেছি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, সম্মানিত দ্বীন ইসলাম ততদিন পর্যন্ত পরাক্রমশালী থাকবে, কুওওয়াতশালী থাকবে যতদিন পর্যন্ত ১২ জন মহান খলীফা আলাইহিমুস সালাম উনাদের মুবারক আর্বিভাব ঘটবে। উনারা প্রত্যেকেই সম্মানিত কুরাইশ বংশীয় হবেন।” (সুবহানাল্লাহ)
অন্য বর্ণনায় এসেছে, “ক্বিয়ামত অবধি সময়ের মধ্যে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম শক্তিশালী থাকবে ১২ জন মহান খলীফা আলাইহিমুস সালাম উনাদের মাধ্যমে। উনারা প্রত্যেকেই সম্মানিত কুরাইশ বংশীয় হবেন।” (সুবহানাল্লাহ)
যদি মুজাদ্দিদে যামান, আমীরুল মু’মিনীন হযরত সাইয়্যিদ আহমদ শহীদ বেরেলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে ৯ম খলীফা হিসেবে ধরা হয় তাহলে ১২ জন মহান আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্য থেকে এই পর্যন্ত ৯ জন মহান খলীফা আলাইহিমুস সালাম উনারা অতীত হয়েছেন। আরো ৩ জন মহান খলীফা আলাইহিমুস সালাম উনারা বাকি রয়েছেন। উনাদের ব্যাপারে আলাদাভাবে সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالىٰ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنَّا السَّفَّاحُ وَمِنَّا الْـمَنْصُوْرُ وَمِنَّا الْـمَهْدِىُّ
অর্থ : “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমার হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্য থেকে আখাচ্ছুুল খাছ তিনজন বিশেষ খলীফা আলাইহিমুস সালাম হবেন। উনারা হচ্ছেন- এক. হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম, দুই. হযরত আল মানছূর আলাইহিস সালাম এবং তিন. হযরত মাহদী আলাইহিস সালাম।” (সুবহানাল্লাহ) (বাইহাক্বী শরীফ ৬/৫১৪, খছাইছুল কুবরা শরীফ ২/২০৩, জামিউল আহাদীছ শরীফ ৭/৪১৯, সুবুলুল হুদা শরীফ ১০/৯২ ইত্যাদি)
আলোচ্য সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনাদের মধ্যে বর্ণিত এই তিনজন আখাচ্ছুল খাছ মহান খলীফা আলাইহিমুস সালাম উনারা হচ্ছেন-

এক. হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম তথা খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন, আওলাদে রসূল, আস সাফফাহ পবিত্র রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম,

দুই. হযরত আল মানছূর আলাইহিস সালাম তথা মুজাদ্দিদে আ’যমে ছানী, সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, খলীফাতুল উমাম আল মানছূর হযরত শাহযাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম এবং

তিন. হযরত মাহদী আলাইহিস সালাম তথা মুহম্মদ ইবনে আব্দুল্লাহ হযরত ইমাম মাহদী আলাইহিস সালাম। (সুবহানাল্লাহ)
মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম উনার মুবারক শানে আলাদাভাবে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
يَـخْرُجُ رَجُلٌ مّـِنْ اَهْلِ بَيْـتِىْ عِنْدَ اِنْقَطَاعٍ مّـِنَ الزَّمَانِ وَظُهُوْرٌ مّـِنَ الْفِتَنِ رَجُلٌ يُّقَالُ لَهُ السَّفَّاحُ...
অর্থ : “যামানার শেষের দিকে যখন ফিতনা-ফাসাদসমূহ চরমভাবে প্রকাশ পাবে তথা বেপর্দা-বেহায়া, অত্যাচার-অবিচার, যুুলুম-নির্যাতনে, বে-ইনসাফীতে পুরো পৃথিবী ভরে যাবে, কোথাও পবিত্র ইনসাফ উনার লেশ মাত্র অবশিষ্ট থাকবে না। তখন আমার হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্য থেকে আমার একজন খাছ আওলাদ, একজন মহান খলীফা আলাইহিস সালাম তিনি দুনিয়ার যমীনে তাশরীফ মুবারক নিবেন। তিনি এমন একজন মহান ব্যক্তিত্ব মুবারক, এমন একজন মহান খলীফা উনাকে ‘হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম’ বলা হবে।” (সুবহানাল্লাহ)
এই বক্ষমান কিতাবে আলোচিত হবেÑ খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনী, মাহিউল বিদয়াহ, জাব্বারিউল আউওয়াল, সুলত্বানুন নাছীর, মুজাদ্দিদে আ’যম, আওলাদে রসূল পবিত্র রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনিই হচ্ছেন পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহান খলীফা হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়া সালাম। (সুবহানাল্লাহ) তিনি বর্তমান যামানার সমস্ত ফিতনা-ফাসাদ, অত্যাচার-অবিচার, যুলুম-নির্যাতন, বে-ইনসাফীকে মিটিয়ে দিয়ে বাংলাদেশ তো অবশ্যই; এমনকি সারা পৃথিবীতে, সারা কায়িনাতে সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক প্রতিষ্ঠা করবেনই করবেন ইনশাআল্লাহ। (সুবহানাল্লাহ)
মহান আল্লাহ পাক তিনি মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন, সুলত্বানুন নাছীর, জামিউল আলক্বাব, আওলাদে রসূল মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম উনার মুবারক উসীলায় আমাদের সবাইকে, খাছ করে এই কিতাব মুবারক উনার প্রচার-প্রসার এবং খিদমত মুবারক-এ যারা সম্পৃক্ত আছেন এবং থাকবেন উনাদের সবাইকে আখাচ্ছুল খাছভাবে কবুল করুন, গাইবী মদদ করুন, ইহসান করুন। (আমীন)









আস সাফফাহ’ লক্বব মুবারক উনার অর্থ
সাফফাহ (سَفَّاحٌ) শব্দ মুবারক উনার তাহক্বীক্ব বা শাব্দিক বিশ্লেষণ : সাফফাহ (سَفَّاحٌ) শব্দ মুবারকখানা ইসমে ফায়িল মুবালাগাহ। ইহা سفح মাদ্দাহ হতে নির্গত। মহান আল্লাহ পাক উনার (غَفَّارٌ) গফফার, (سَتَّارٌ) সাত্তার, (جَبَّارٌ) জাব্বার ইত্যাদি সিফতী নাম মুবারক উনাদের ন্যায় এই (سَفَّاحٌ) সাফফাহ শব্দ মুবারকখানাও আধিক্যের অর্থ প্রদান করবে। অর্থাৎ (غَفَّارٌ) গফফার অর্থ যেমন সর্বশ্রেষ্ঠ ক্ষমাশীল। যাঁর উপর আর কোন ক্ষমাশীল নেই। তেমনিভাবে (سَفَّاحٌ) সাফফাহ অর্থ হচ্ছে সর্বশ্রেষ্ঠ মুুক্তিদানকারী। যাঁর উপর আর কোন মুক্তিদানকারী নেই। অর্থাৎ তিনি হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক উনার এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের পরে সর্বশ্রেষ্ঠ মুক্তিদানকারী। (সুবহানাল্লাহ) অনুরূপভাবে অন্যান্য অর্থ মুবারকগুলো হবে।
আস সাফফাহ (اَلسَّفَّاحُ) লক্বব মুবারক উনার শাব্দিক অর্থ : বিশ্বখ্যাত আরবী অভিধান ‘লিসানুল আরব’-এ এসেছে, অধিক খুন বা রক্ত বহানেওয়ালা, অধিক দানশীল, সর্বাধিক বিশুদ্ধভাষী, সর্বোত্তম বাক্যালাপকারী বা সর্বোত্তম নছীহতকারী। (লিসানুল আরব ৪র্থ খ- ২০২৩ পৃষ্ঠা)
বিশ্বখ্যাত আরবী অভিধান ‘তাজুল আরূস মিন যাওয়াহিরিল ক্বামূস’-এ এসেছে, সর্বাধিক বিশুদ্ধভাষী, অধিক দানশীল, সর্বোত্তম বাক্যালাপকারী বা সর্বোত্তম নছীহতকারী। (তাজুল আরূস মিন যাওয়াহিরিল ক্বামূস ২/১৬৪)
মাসঊদ প্রণীত বিশ্বখ্যাত আরবী অভিধান ‘আর রইদ’-এ এসেছে, অধিক খুন বা রক্ত বহানেওয়ালা, অধিক দানশীল, সর্বাধিক বিশুদ্ধভাষী, সর্বোত্তম বাক্যালাপকারী বা সর্বোত্তম নছীহতকারী। (আর রইদ ৪৪২ নং পৃষ্ঠা)
এছাড়াও আছ ছিহাহ ফিল লুগাহ, আল ক্বামূসুল মুহীত, আল মুহীতুল আ’যম, তাহযীবুল লুগাহ, মুখতারুছ ছিহাহ, তাজুল লুগাহ, আল মুহীত ফিল লুগাহ এবং আরো অন্যান্য বিশ্বখ্যাত আরবী অভিধানগুলোতে ‘আস সাফফাহ’ লক্বব মুবারক উনার অনুরূপ অর্থ উল্লেখ করা হয়েছে। আরো উল্লেখ্য যে, বিশ্বখ্যাত প্রতিটি আরবী অভিধানেই ‘আস সাফফাহ’ লক্বব মুবারক উনার অনেক সুন্দর সুন্দর অর্থ উল্লেখ করা হয়েছে এবং কোথাও এই নিয়মের ব্যতিক্রমটি ঘটেনি। আর তা কেউ আদৌ দেখাতেও পারবে না ।
বিশ্বখ্যাত অভিধান ‘ফীরূযুল লুগাত’-এ এসেছে, অধিক খুন বা রক্ত বহানেওয়ালা, সর্বশ্রেষ্ঠ আযাদদানকারী বা মুক্তিদানকারী, পরম বিশুদ্ধভাষী, অপরিসীম ফায়িযদানকারী, বেমেছাল ইছলাহদানকারী, অসীম দাতা। (ফীরূযুল লুগাত, আরবী-উর্দূ, পৃষ্ঠা ৮৮০)
আল মুনজিদ’-এ এসেছে, অধিক খুন বা রক্ত বহানেওয়ালা, বড়দাতা, বড় উদার, সুবক্তা তথা সর্বোত্তম ওয়ায়িজ বা নছীহতকারী, সর্বোত্তম ব্যাখ্যা বিশ্লেষণকারী, সর্বোত্তম বর্ণনাকারী, মিষ্টভাষী বা বিশুদ্ধভাষী। (আল মুনজিদ, আরবী-উর্দূ, পৃষ্ঠা ৪৭৬)
মিছবাহুল লুগাত’-এ এসেছে, অধিক খুন বা রক্ত বহানেওয়ালা, প্রচুর দানকারী বা অসীম দাতা, সর্বোত্তম বিশুদ্ধভাষী। (মিছবাহুল লুগাত, আরবী-উর্দূ, পৃষ্ঠা ৫৬৪)
হযরত হাফিয আবুল ফিদা আল্লামা ইবনে কাছীর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, সাফফাহ এই অর্থে যে, ইনসাফ ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি অকাতরে রক্তপাত ঘটাবেন বা রক্ত প্রবাহিত করবেন। (বিদায়া-নিহায়া ৬/২৪৮; বিদায়া-নিহায়া, অনুবাদ : ইসলামী ফাউন্ডেশন ৬/৩৬৮)
এছাড়া এই শব্দ মুবারকখানা ইসলাম ও মুসলমান উনাদের শত্রু, কাফির-মুশরিক, ইহুদী-নাছারা, মুনাফিক্ব¡ ও উলামায়ে সূ’দেরকে ধ্বংসকারী, নাহক্বকে নিশ্চিহ্নকারী, তাগুতী শক্তিকে বিলীনকারী, অসীম ইলম মুবারক উনার অধিকারী, পূত-পবিত্র, বিশুদ্ধ, সর্বোত্তম ও সুমহান চরিত্র মুবারক উনার অধিকারী, মহান আল্লাহ পাক উনার গুণে গুণান্বিত হয়ে কথা মুবারক বলনেওয়ালা, অনুসরণীয়, উসওয়াতুন হাসানাহ, পবিত্র অর্থাৎ নূরে মুকাররাম, নূরে মুয়াযযাম ইত্যাদি অর্থে ব্যবহৃত হয়। (সুবহানাল্লাহ)
সুতরাং আস সাফফাহ (اَلسَّفَّاحُ) লক্বব মুবারক উনার অর্থ হচ্ছে,
১. অধিক খুন বা রক্ত বহানেওয়ালা,     ২. সর্বশ্রেষ্ঠ মুক্তিদানকারী,
৩. মুক্তির দিশারী,                          ৪. সর্বশ্রেষ্ঠ আযাদদানকারী,
৫. অসীম দাতা,                             ৬. বড় উদার,
৭. অসীম ইলম মুবারক উনার অধিকারী,         ৮. সুবক্তা,
৯. সর্বোত্তম ওয়ায়িজ,                      ১০. সর্বশ্রেষ্ঠ নছীহতকারী,
১১. সর্বোত্তম ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণকারী,      ১২. সর্বোত্তম বর্ণনাকারী,
১৩. মিষ্টভাষী,                     ১৪. বিশুদ্ধভাষী,
১৫. বাগ্মী,                                   ১৬. সাখী বা সর্বশ্রেষ্ঠ দানশীল,
১৭. কাফির-মুশরিক, ইহুদী-নাছারা, গুমরাহ, মুনাফিক্ব¡ ও উলামায়ে সূ’দেরকে ধ্বংসকারী,
১৮. নাহক্বকে নিশ্চিহ্নকারী,               ১৯. তাগুতী শক্তিকে বিলীনকারী,
২০. বিশুদ্ধ,               ২১. খাঁটি,       ২২. পূত-পবিত্র,
২৩. সর্বোত্তম ও সুমহান চরিত্র মুবারক উনার অধিকারী,
২৪. অনুসরণীয়,                            ২৫. উসওয়াতুন হাসানাহ,
২৬. পবিত্র অর্থাৎ নূরে মুকাররাম, নূরে মুয়ায্যাম,
২৭. মহান আল্লাহ পাক উনার গুণে গুণান্বিত হয়ে কথা মুবারক বলনেওয়ালা,
২৮. সাখী বা হাবীবুল্লাহ,                   ২৯. অপরিসীম ফায়িযদানকারী,
৩০. বেমেছাল ইছলাহদানকারী ইত্যাদি। (সুবহানাল্লাহ)

মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আওলাদে রসূল, মামদূহ হযরত মুুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনিই হচ্ছেন পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহান খলীফা
হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম
         

0 Comments: