খায়রুল কুরুনের যুগে পবিত্র রবিউল আউয়াল শরীফ মাসে খলীফা হারুনুর রশীদের যামানায় পবিত্র মীলাদ শরীফ উনার সম্মানার্থে পবিত্র মীলাদ শরীফ মাসকে তাযীম করায় এক ব্যক্তি ওলী আল্লাহ হিসাবে আখ্যায়িত হলেন। সুবহানাল্লাহ!

খায়রুল কুরুনের যুগে পবিত্র রবিউল আউয়াল শরীফ মাসে খলীফা হারুনুর রশীদের যামানায় পবিত্র মীলাদ শরীফ উনার সম্মানার্থে পবিত্র মীলাদ শরীফ মাসকে তাযীম করায় এক ব্যক্তি ওলী আল্লাহ হিসাবে আখ্যায়িত হলেন। সুবহানাল্লাহ!
=================================================
খায়রুল কুরুনের যুগে পবিত্র রবিউল আউয়াল শরীফ মাসে খলীফা হারুনুর রশীদের যামানায় পবিত্র মীলাদ শরীফ উনার সম্মানার্থে পবিত্র মীলাদ শরীফ মাসকে তাযীম করায় এক ব্যক্তি ওলী আল্লাহ হিসাবে আখ্যায়িত হলেন। সুবহানাল্লাহ।
আল্লামা সাইয়্যিদ আবু বকর মক্কী আদ দিময়াতী আশ শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি (ওফাত: ১৩০২ হিজরী) উনার বিখ্যাত “ইয়নাতুল ত্বলেবীন” কিতাবে বর্ণনা করেন, বর্ণিত রয়েছে, খলীফা হারুনুর রশীদের যামানায় (১৪৮-১৯৩ হিজরী) বছরা শহরের এক যুবক সে নফসের অনুসরন করে চলতো। শহরের লোকেরা নিন্দনীয় আমলের জন্য তাকে নিন্দার চোখে দেখতো। তবে যখন পবিত্র রবিউল আউয়াল শরীফ মাস আসতো, এই যুবক কাপড় ধৌত করতেন, সুগন্ধি ব্যবহার করতেন ও খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকতেন। সেই সাথে ভালো খাবারের ব্যবস্থাও করতেন। এবং পবিত্র মীলাদ শরীফ উনার মাসে এ আমল লম্বা সময়ব্যাপী করতেন। অতপর যখন তিনি ইন্তেকাল করেন তখন শহরবাসীগণ গায়েবী আহ্বান শুনতে পান। সেখানে বলা হচ্ছিলো, হে বসরাবাসী! আপনারা আল্লাহ পাক উনার ওলীদের মধ্যে অর্ন্তভুক্ত একজন ওলীর জানাজায় শরীক হন। নিশ্চয়ই তিনি আমার কাছে খুবই প্রিয়। অতপর শহরবাসী উনার জানাজায় উপস্থিত হলেন এবং দাফন সম্পন্ন করলেন। উনারা (শহরবাসী) স্বপ্নে দেখলেন, উক্ত যুবক কারুকার্যপূর্ণ রেশমী কাপড় পরিহিত অবস্থায় ঘোরাফেরা করছেন। উনাকে জিজ্ঞাসা করা হলো, এ ফযিলত আপনি কি করে লাভ করলেন? তিনি বললেন, পবিত্র মীলাদ শরীফ উনাকে তাযীম করার কারনে।” (ইয়নাতুল ত্বলেবীন ৩য় খন্ড ৬১৩ পৃষ্ঠা ; প্রকাশনা: দারুল হাদীছ , কাহেরা, মিশর)
উল্লেখ্য যে খলীফা হারুনুর রশীদের যামানা ছিলো খায়রুল কুরুনে। উপরোক্ত ঘটনায় বোঝা যায় সে সময় পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠের রীতি ছিলো। তাই এক ব্যক্তি তার আমল কিছুটা মন্দ হলেও পবিত্র মীলাদ শরীফ উনাকে তাযীম করাকে মহান আল্লাহ পাক তার মর্যাদার কারণ হিসাবে প্রকাশ করলেন। এবং সম্মানিত ওলী আল্লাহ হিসাবে গ্রহন করলেন। সুবহানাল্লাহ।
সুতরাং উপরোক্ত ঘটনা ও সময়কাল থেকে জ্ঞানী মাত্রই যা বোঝার কথা সেটা হলো, উক্ত ঘটনা খায়রুল কুরনের। আর মীলাদ শরীফ নতুন কোন আমল নয়। বরং পবিত্র ইসলাম উনার প্রথম থেকেই এ আমল চলে আসছে। আর সে কারনে সম্মানিত খায়রুল কুরুনে মীলাদ শরীফ উনার ফযীলত সংশ্লিষ্ট অনেক ক্বওল শরীফ কিতাবে পাওয়া যায়। যেমন সে সময়কার বিখ্যাত ফক্বীহ, শাফেয়ী মাযহাব উনার ইমাম হযরত ইমাম শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি নিজেই বলেন,
قَالَ اَلاِمَامُ الشَّافِعِىُّ رَحِمَهُ اللهُ مَنْ جَمَعَ لِمَوْلِدِ النَّبِىِّ صَلّٰى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ اِخْوَانًا وَهَيَّاَ طَعَامًا وَاَخْلٰى مَكَانًا وَعَمَلَ اِحْسَانًا وَصَارَ سَبَبًا لِقِرَائَتِهٖ بَعَثَهُ اللهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مَعَ الصِّدِّيْقِيْنَ وَالشُّهَدَاءِ وَالصَّالِحِيْنَ وَيَكُوْنُ فِىْ جَنَّاتِ النَّعِيْمِ.
অর্থ: ‘যে ব্যক্তি পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপন উপলক্ষে লোকজন একত্রিত করলো, খাদ্য তৈরি করলো, জায়গা নির্দিষ্ট করলো এবং এ জন্য উত্তমভাবে তথা সুন্নাহ ভিত্তিক আমল করলো তাহলে উক্ত ব্যক্তিকে মহান আল্লাহ পাক সম্মানিত হাশরের দিন ছিদ্দীক্ব, শহীদ ছলিহীনগণ উনাদের সাথে উঠাবেন এবং উনার ঠিকানা হবে জান্নাতুন নাঈম এ।’ সুবহানাল্লাহ। (আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম ১০ পৃষ্ঠা, মাদরেজুজ সউদ ১৫ পৃষ্ঠা, নাফহতুল আম্বারিয়া ৮ পৃষ্ঠা, ইয়নাতুল ত্বলেবীন ৩য় খন্ড ৬১৩ পৃষ্ঠা)
সুতরাং যারা বলে পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবীল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আমল খায়রুল কুরুনে ছিলো না তারা গন্ডমূর্খ, ইলিমশূন্য।