একজন কুতুবুজ্জামান- উনার দিদারে মাওলার দিকে প্রস্থান- সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযুর ক্বিবলা সাইয়্যিদ মুখলেছুর রহমান আলাইহিস সালাম উনার সাওয়ানেহে উমরী মুবারক-পর্ব-৪৯


ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দাওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশ্ফ ওয়া কারামত, ফখরুল আউলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছাহিবে  ইস্মে আযম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলার্দু রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম-উনার স্মরণে-

একজন কুতুবুজ্জামান-উনার দিদারে মাওলা উনার দিকে প্রস্থান- 

            মানুষের বড় দুঃখ যে, প্রত্যাশা পূরণের আগেই তাকে বিদায় নিতে হয়। দুনিয়ার প্রতি প্রলুব্ধি এই দুঃখবোধের মূল কারণ। দুনিয়ার আসক্তি যতো বেপরোয়া, দুঃখের পরিধি ও গভীরতাও ততো প্রবল হয়। জাগতিক মোহগ্রস্থতায় মৃত্যু-চিন্তায় মানুষ বিষন্ন হয় এবং বেশী করে বেঁচে থাকার নিষ্ফল প্রয়াসে নিশিদিন ব্যাপৃত থাকে। প্রিয়জনের মৃত্যুর বিরহ যাতনায় মানুষ মনঃক্ষুন্ন হয়। মৃত্যুর অনিবার্যতা সাধারণ মানুষ মেনে নেয় না, শুধু বিশ্বাস করে মাত্র। মৃত্যুর হাক্বীক্বত জানতে না পারায় কেবল এই বাধ্যগত বিশ্বাসের কারণে অবধারিত মৃত্যু সম্পর্কে আমাদের যতো বিপত্তি, যতো অর্থহীন কথা। নির্ভুল সত্যের সংবাদ দাতা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন, হায়াতুন্ নবী, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, “আদম সন্তান সর্বদা দুটি জিনিস অপছন্দ করে থাকে। একটি হলো মৃত্যু, অপরটি দরিদ্রতা। অথচ ফিৎনা-ফাসাদের চেয়ে মৃত্যু তাদের জন্য শ্রেয়।তিনি আরো বলেছেন, “দুটি বস্তু আদম সন্তানের নিকট বড় প্রিয়। তার একটি হলো জীবন, অপরটি ধন-সম্পদের প্রাচুর্য। অথচ প্রকৃত প্রস্তাবে মৃত্যুই তাদের জন্য উত্তম বস্তু। আর দরিদ্রতা ও ধন-সম্পদহীনতা হিসাব-নিকাশ দেয়ার বেলায় খুবই সহজ।    দুনিয়ার প্রতি পরিপূর্ণরূপে আসক্ত মানুষের পক্ষে উপরোক্ত হাদীস শরীফের মর্মবাণী উপলব্ধি করা আদৌ সম্ভব নয়। কারণ মৃত্যু, দারিদ্র্য ও রোগ-শোকের ভয় আমাদেরকে আখিরাতের প্রতি উদাসীন করে রাখে। তবে মুমিনে কামিল, অর্থাৎ আল্লাহ্ পাক-উনার মাহবুব ওলীগণের নিগূঢ় বিবেচনায় ইন্তিকালের তাৎপর্য একান্তই ভিন্ন প্রকৃতির। আল্লাহ্ পাক-উনার সঙ্গে নৈকট্যের পরিণত ধাপে উপনীত হয়ে অকাট্য বোধ ও বিশ্বাসে জীবদ্দশাতেই তাঁরা প্রত্যয়ী হয়ে উঠেন যে, মৃত্যু সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস ও বিলীন হওয়ার নাম নয়। দৈহিক কাঠামো হতে আত্মা পৃথক হয়ে উভয়ের বিচ্ছেদ হয়ে যাওয়ার নামই হলো ইন্তিকাল। অন্য কথায়, দুনিয়া হতে আখিরাতে স্থানান্তরিত হওয়াকেই ইন্তিকাল বলে। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, আকরামুল আউয়ালীন ওয়াল আখিরীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া  সাল্লাম মৃত্যুর মর্ম ও মহিমা সম্পর্কে ইরশাদ করেছেন, “মুমিনদের উপঢৌকন হলো তাদের মৃত্যু।আল্লাহ্ পাক-উনার দিদার লাভের জন্য ওলীআল্লাহ্গণকে মৃত্যুরূপ সেতু পার হয়ে দুনিয়া থেকে আখিরাতে প্রস্থান করতে হয়। ওলীআল্লাহ্গণের অন্তররাজ্যে ও আখিরাতে যে সব নিয়ামতরাজি দেখা দেয়, ইন্তিকাল তার প্রাথমিক উপকরণ। তাই অধীর আগ্রহে ইন্তিকালের প্রহর গুণতে আল্লাহ্ পাক-উনার মাহবুব ওলীগণের অন্ত থাকেনা।

            ওলীয়ে মাদারজাদ, ফখরুল আউলিয়া, আওলার্দু রসূল, হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান আলাইহিস সালাম-উনার প্রাণের আঁকা মুর্শীদ ক্বিবলা আমীরে শরীয়ত, মাহতাবে তরীক্বত, হাজীউল হারামাইন, হাদীউস্ সাক্বালাইন, মাহিউল বিদ্য়াত, মুহইস্ সুন্নাতিন নুবুবিয়া, নাশিরুল মিল্লাতিল মুস্তাফিয়া, ছদরে জামিয়তে উলামায়ে হানাফিয়া, শাইখুল ইসলাম, ইমামুল হুদা, ক্বাইউমুয্ যামান, কুতুবুল আলম, নায়িবে মুজাদ্দিদ, খলিফাতুল্লাহ, ছাজ্জাদনশীন পীর, পীরে দস্তগীর, পীরে কামিলে মুকামিল, বড় হুযূর ক্বিবলা, আলহাজ্ব, হযরত মাওলানা আবূ নছর মুহম্মদ আব্দুল হাই ছিদ্দীকী ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি ও আল্লাহ্ পাক-উনার দিদারের জন্য এখন ইন্তিকালের প্রহর গুণছেন। তিনি তাঁর বুযুর্গ পিতা হাদীয়ে যামান, ইমামুল মুসলিমীন, মাশায়েখুল মিল্লাত ওয়াদ্দ্বীন, ইমামুল হুদা, কুদওয়াতুস্ সালিক্বীন, যুবদাতুল আরিফীন, ইমামে রব্বানী, ক্বাইউমুয্ যামান, আমীরুশ্ শরীয়ত, ইমামুত তরীক্বত, মুজাদ্দিদুয্ যামান, সিরাজুস্ সালিক্বীন, ফখরুল মুহাদ্দিসীন, হাদীয়ে দাওরান, আফতাবে শরীয়ত, মাহতাবে তরীক্বত, মাহিউল বিদ্য়াত, মুহইস্ সুন্নাহ, শাইখুল মুহাক্কিক্বীন, কুতুবে রব্বানী, মাহবুবে ছুবহানী, দস্তগীর, মুর্শীদে বেনজীর, কুতুবুল আকতাব, মারজাউল খালক্বি ওয়াল মায়াব, গাউসুস্ সাক্বালাইন, ক্বামিউদ্ দালালাত ওয়াল গাওইয়াত, আলা হযরত, আলহাজ্ব, হযরতুল আল্লামা আবূ বকর ছিদ্দীকী ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি-উনার স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন।  (অসমাপ্ত)

আবা-১০৮

0 Comments: