একজন কুতুবুজ্জামান- উনার দিদারে মাওলার দিকে প্রস্থান- সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযুর ক্বিবলা সাইয়্যিদ মুখলেছুর রহমান আলাইহিস সালাম উনার সাওয়ানেহে উমরী মুবারক-পর্ব-৪৮

 


ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দাওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছাহেবে কাশ্ফ ওয়া কারামত, ফখরুল আউলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছাহেবে  ইস্মে আযম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলার্দু রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম-উনার স্মরণে-

একজন কুতুবুজ্জামান-উনার দিদারে মাওলা উনার দিকে প্রস্থান

 

লব্ধ মাকাম মুবারকে ইস্তিকামত-

 

তিনি পরিপূর্ণরূপে আল্লাহ্ পাক কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত। এই নিয়ন্ত্রনের ব্যাখ্যায় কালামুল্লাহ শরীফে ইরশাদ হয়েছে,

 

وما ينطق عن الهوى ان هو الا وحى يوحى.

অর্থঃ- তিনি মনগড়া কথা বলেন না। উনার মুখ নিঃসৃত বাণী ওহীর মাধ্যমে আসে।” (সূরা নজম/ ৩-৪)    দুর্বল ও অস্থিরচিত্ত মানুষ আল্লাহ্ পাক-উনার আদেশ পালনে হেরফের করবে এবং কথা ও কাজে অবিচল থাকবেনা, বিশেষতঃ ঈমান, আক্বীদা, আমল, অনুভব ও কোশেশে ইস্তিকামত না থাকায় উম্মতের বিনাশ সাধন সম্পর্কে তিনি শঙ্কিত হয়েছেন।

            ঈমান এনে মুমিনে কামিল হওয়া, বিশুদ্ধ আক্বীদায় অনাবিল কর্মনিযুক্তিতে (আমলে ছলেহ) ব্যাপৃত থাকা বান্দার মূল দায়িত্ব। একই সঙ্গে আল্লাহ্ পাক এবং উনার প্রিয়তম হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্তৃক নির্দেশিত সকল বিষয়ে দৃঢ়পদ থাকা অপরিহার্য। আল্লাহ্ পাক-উনার রহমত এবং শাফিউল উমাম, রহমতুল্লিল আলামীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার মুবারক মধ্যস্থতায় কোশেশকারী বান্দার কামিয়াবী হাছিল হয়ে থাকে।

            আরম্ভ সবাই করে, কিন্তু গন্তব্যে পৌঁছে কেউ কেউ। এ গন্তব্যের পথিক সংখ্যা একান্তই নগণ্য। আয়াসসাধ্য আয়োজনে মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে প্রতিকুল পথ পাড়ি দিয়ে যাঁরা মন্জিলে মাকছূদে উপনীত হন, তাঁরা আল্লাহ্ পাক-উনার মনোনীত বন্ধু। এমন দৃঢ়চিত্ত মাহবুব ওলীগণকে আল্লাহ্ পাক উনার মুহব্বত-মারিফাত ও নৈকট্যসুধায় পরিপুষ্ট করে জান্নাতুল ফিরদাউস এবং উনার দিদারের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান। উনাদের কোন পিছুটান থাকেনা। দুনিয়া ও গায়রুল্লাহ্-উনার প্রতি তাঁরা বিমুখ ও বেপরোয়া। আল্লাহ্ পাক-উনার নিগূঢ় নৈকট্যসুধায় আপ্লুত এমন একজন পরিপূর্ণ ও শীর্ষ সোপান অর্জনকারী কামিয়াব মাহবুব ওলী হলেন, আফজালুল ইবাদ, ছহবে কাশ্ফ ও কারামত, ফখরুল আওলিয়া, আওলার্দু রসূল, হযরতুল আল্লামা, শাহ্ ছূফী, সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান রহমতুল্লাহি আলাইহি। লব্ধ মাকামে তিনি দৃঢ়চিত্ত, অটল ও অবিচল। ইস্তিকামতপূর্ণ আত্মনিবেদন, নিষ্ঠা ও নিমগ্নতায় আল্লাহ্ পাক-উনার অশেষ নৈকট্যসুধায় কামিয়াবীর অগ্রযাত্রায় এখন কেবলই উনার নিরন্তর উত্তরণ। মুরশিদ ক্বিবলার কর্মপরিধি ও ইন্তিকাল

            ওলী আল্লাহগণ উনাদের জীবন মুবারকের সামগ্রিক পরিসরে আভ্যন্তরীন ও বাহ্যিকভাবে পরিপূর্ণরূপে আল্লাহ্ পাক-উনার প্রতি সমর্পিত থাকেন। উনাদের জাহির, বাতিনের নূর ও অনুভব দ্বারা পরিচালিত হয়। বাহ্যিক আমল দেখে উনাদের কর্মপরিধির গভীরতা নিরূপণ করা সাধারণ মানুষের পক্ষে সম্ভব হয়না। কারণ উনাদের প্রয়োজন, আয়োজন ও কর্মপ্রয়াস অনুক্ষণ আল্লাহ্ পাক এবং উনার প্রিয়তম হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকে। উনাদের কথা, আচরণ, নিবেদন ও ইবাদত-বন্দেগীর অনাবিল একাগ্রতা দেখে শীর্ষ মাকামে কামিয়াবীর একটি প্রচ্ছন্ন ধারণা লাভ করা যায় মাত্র। সাধারণ মানুষের অভিজ্ঞতা, অনুভব ও অনুসন্ধানের তারতম্যের প্রেক্ষিতে সে আপেক্ষিক ধারণাও পৃথক হতে বাধ্য। উদ্দিষ্ট কাজ শেষে সকলকেই বিদায় নিতে হয়। ওলীআল্লাহগণও উনার ব্যতিক্রম নন। অবশ্য ইন্তিকালের পূর্বে ওলীআল্লাহ্গণকে বলতে শোনা যায়, “সব কাজই বাকী রয়ে গেল। কিছুই শেষ করা হলোনা।আল্লাহ্ পাক-উনার উদ্দিষ্ট ব্যবস্থায় আরোপিত দায়িত্বপালন সমাপ্ত না করে ইন্তিকালের প্রশ্নই উঠেনা। আল্লাহ্ পাক-উনার মাহবুব ওলীগণের এমন উচ্চারণ কেবলই উনাদের বিনয় প্রকাশ। অকাল মৃত্যুবলে কোন কথা নেই। বয়সের নির্ধারিত ধাপে উপনীত হয়েই সকলের ইন্তিকাল হয়। অনুপলব্ধির কারণে কম বয়সের ইন্তিকালকে মানুষ অকাল মৃত্যুনামে অভিহিত করে থাকে (নাউযুবিল্লাহ)! মানুষের ইহলৌকিক জীবন খুব সীমিত। নির্ধারিত সময় শেষে ইচ্ছা-অনিচ্ছায় সকল মানুষকেই আখিরাতে পাড়ি জমাতে হয়।  (অসমাপ্ত)

আবা-১০৭

0 Comments: