একজন কুতুবুজ্জামান- উনার দিদারে মাওলার দিকে প্রস্থান- সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযুর ক্বিবলা সাইয়্যিদ মুখলেছুর রহমান আলাইহিস সালাম উনার সাওয়ানেহে উমরী মুবারক-পর্ব-৪৩

 

ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দাওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছহিবে কাশ্ফ ওয়া কারামত, ফখরুল আউলিয়া, ছুফীয়ে বাতিন, ছহিবে ইস্মে আযম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম-উনার স্মরণে- একজন কুতুবুয্ যামান-উনার দিদারে মাওলার দিকে প্রস্থান-

 আনুষ্ঠানিক খিলাফত মুবারক লাভ-

হযরত খাজা উসমান হারূনী রহমতুল্লাহি আলাইহি-উনার মতো আখিরাতে চূড়ান্ত পরীক্ষার মুখোমুখী অবস্থানে আল্লাহ্ পাককে খুশী ও রাজী করার ক্ষেত্রে অনেক আল্লাহ্ প্রেমিকেরই প্রত্যাশা ও প্রত্যয়, মানসিক স্বস্তি, স্থিতি, দৃঢ়তা ও বলিষ্ঠতা উনাদের এমন যোগ্যতম মুরীদ তথা খলীফাকে কেন্দ্র করেও পল্লবিত ও প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। এখানে বুঝতে হবে যে, আল্লাহ্ পাক-উনার সঙ্গে প্রশ্নোত্তরে কোন কোন সময় যোগ্য মুরীদের প্রসঙ্গ গুরুত্ববহ হলেও মুর্শিদ ক্বিবলাই সব সময় প্রাধান্যে থাকেন। কারণ, মুরীদের  কামিয়াবী মুর্শিদ ক্বিবলার মুবারক মাধ্যমেই অর্জিত হয়। আজ সেই নিয়ামত আদান-প্রদান, গোপন আলাপন ও অব্যক্ত ভাব বিনিময়ে অথৈ প্রেম দরিয়ায় অবগাহনের জন্যে আল্লাহ্ পাক-উনার পূর্ব নির্ধারিত সময় উপস্থিত। প্রাণের আঁকা মুর্শিদ ক্বিবলা হযরত মাওলানা আবু নছর মুহম্মদ আব্দুল হাই ছিদ্দীকী ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং উনার অন্তরঙ্গ খলীফা হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান রহমতুল্লাহি আলাইহি-উনার পারস্পরিক জানাজানির গভীরতা পরিবৃদ্ধি এবং উভয়ের অন্তর্লীন হবার দুর্লভ মুহূর্ত উপস্থিত।      মাদারজাদ ওলী, আওলাদে রসূল, হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান রহমতুল্লাহি আলাইহি যে পরম নিয়ামতের জন্য অধীর অপেক্ষায় থেকেছেন এবং যে কামিয়াবী প্রত্যাশায় সুন্নত অনুসরণে নিজেকে সযত্নে গুছিয়ে তুলেছেন, প্রাণের আকাঁ মুর্শিদ ক্বিবলা আজ উনাকে তা-ই দান করবেন। অতি শৈশব থেকেই স্বতঃপ্রবৃত্ত স্বভাব, মনোগত আগ্রহ ও বেদনা-বিমুগ্ধ অনুভূতিতে তিনি মুবারক জীবনব্যাপী আন্দোলিত হয়েছেন। আল্লাহ্ পাক এবং উনার প্রিয়তম হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার পরিপূর্ণ সন্তুষ্টি হাছিলের লক্ষ্যে তিনি অনুক্ষণ মধুর বেদনায় আক্রান্ত থেকেছেন। এই অন্তর্দহন ও দুঃখবোধ  এবং আনন্দ ও আকুতি  জন্মসূত্রেই আল্লাহ্ পাক উনার অতল গভীর অন্তর মুবারকে ঠাঁই করে দিয়েছেন। অন্তরে স্থাপিত নৈকট্য হাছিলের মূল সূত্রগুলো উনার জীবনের বিভিন্ন সোপানে, আয়াসসাধ্য কোশেশের অসংখ্য মাকামে এবং মুর্শিদ ক্বিবলাগণের মুবারক সান্নিধ্যের প্রিয় মুহূর্তগুলোয় বিকশিত ও বাস্তবায়িত হয়েছে। কামিয়াবীর নির্ধারিত পথে চূড়ান্ত গন্তব্যে উপনীত হবার ক্ষেত্রে প্রত্যেক ওলীর জন্য একই নিয়ম প্রযোজ্য। মুকাম্মিল মুর্শিদের মুবারক ছোহ্বতে ছালিকের সুপ্ত মেধা, মনন, আগ্রহ ও আকুতির জাগরণ ঘটে এবং তার কামিয়াবীর দরজা অবারিত হয়। আল্লাহ্ পাক-উনার নির্ধারিত ব্যবস্থায় সহজ অথবা ভিন্ন প্রক্রিয়ায় জীবনের স্তরে স্তরে সাজানো অনেক সোপান অতিক্রমণে ছালিকের অবিরাম অগ্রযাত্রা ও পূর্ণতাপ্রাপ্তি নিশ্চিত হয়।    ছালিক তার পাওয়া না পাওয়ার হিসাব মিলাতে পারেনা। প্রকৃত ছালিকের তা কাজও নয়। সে শুধু জানে এবং সর্বক্ষণ মনে রাখে, তার পাবার আরো অনেক বাকি আছে। অতৃপ্তিবোধের এই দুঃসহ যাতনা তাকে আরো বেশী করে অনাবিল আনুগত্যে অভ্যস্ত করে তোলে। কামিয়াবীর পরিণত ধাপে উপনীত হয়ে হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান রহমতুল্লাহি আলাইহিও এখন আর পাওয়া না পাওয়ার হিসাব মিলাতে চাননা। শুধু চান, উত্তরণের অবারিত পথে নৈকট্যের অবিরাম পরিবৃদ্ধি ঘটতে থাকুক। মুর্শিদ ক্বিবলা সন্নিধানে প্রত্যাশা পূরণের ক্রমধারা অব্যাহত থাকুক। নৈকট্যসুধার মধুর প্রাপ্তিযোগ নিঃশেষ না হোক। উনাকে দিতে মুর্শিদ ক্বিবলা কিছু বাকি রাখেননি। যা বাকি আছে, তা কেবল নিয়ামতের নির্যাস সোপর্দ করণের আনুষ্ঠানিকতা। আজ সেই প্রতীক্ষিত আনুষ্ঠানিকতা পালনের মুবারক মুহূর্ত সমাগত।         খানকা শরীফে আজ অনেকের ভিড়। প্রবীণ ও নবীন অনেক মুরীদ উপস্থিত। অন্তরঙ্গ মুরীদ হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান রহমতুল্লাহি আলাইহি আজকের বরকতময় মাহ্ফিলের বিশেষ অতিথি। প্রাণের আঁকা মুর্শিদ ক্বিবলা উনাকে একান্ত কাছে ডেকে নিলেন। মুর্শিদ ক্বিবলার কদম মুবারকে তিনি নিজেকে সোপর্দ করলেন। নিবেদনের এই পরম মুহূর্তে বাধা-বিপত্তির আর কোন পর্দা অবশিষ্ট নেই। (অসমাপ্ত)

আবা-১০২

0 Comments: