হিজাব বা পর্দা ফরযে আইন হওয়ার প্রমাণ ( ৫ নং )


হিজাব বা পর্দা ফরযে আইন হওয়ার
প্রমাণ ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে
ফতওয়া দেয়ার কারণ

 সুন্নতের পথিকৃত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, দ্বীন ইসলামের নির্ভীক সৈনিক, সারা জাহান থেকে কুফরী, শিরিকী ও বিদ্য়াতের মূলোৎপাটনকারী, বাতিলের আতঙ্ক এবং আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদায় বিশ্বাসী একমাত্র দলীলভিত্তিক তাজদীদী মুখপত্র-

মাসিক আল বাইয়্যিনাতপত্রিকায় এ যাবৎ যত লিখা বা ফতওয়াই প্রকাশ বা পত্রস্থ হয়েছে এবং ইনশাআল্লাহ হবে তার প্রতিটিরই উদ্দেশ্য বা মাকছূদ এক ও অভিন্ন। অর্থাৎ মাসিক আল বাইয়্যিনাতেএমন সব লিখাই পত্রস্থ  হয়, যা মানুষের আক্বীদা ও আমলসমূহ পরিশুদ্ধ করণে বিশেষ সহায়ক।

তদ্রুপ মাসিক আল বাইয়্যিনাতেহিজাব বা পর্দা ফরযে আইন হওয়ার প্রমাণ ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া দেয়ার মাকছূদ বা উদ্দেশ্যও ঠিক তাই। 

কেননা,প্রথমতঃ কিছু লোক কিল্লতে ইল্ম ও কিল্লতে ফাহ্মঅর্থাৎ কম জ্ঞান ও কম বুঝের কারণে বক্তব্য ও লিখনীর মাধ্যমে পর্দা সম্পর্কে সমাজে নানাবিধ বিভ্রান্তি ছড়িয়ে থাকে। যেমন কিছুদিন পূর্বে একটি দৈনিক পত্রিকায় পর্দা সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে লিখেছে যে, “....... মহিলারা মুখ বা চেহারা, হাত ও পা খোলা রেখে বাহিরে বের হতে পারবে।” (নাঊযুবিল্লাহি মিন যালিক)

অথচ তাদের উক্ত বক্তব্য সম্পূর্ণ রূপেই কুরআন শরীফ, সুন্নাহ শরীফ, ইজ্মা ও ক্বিয়াসের খিলাফ। তারা মূলতঃ কুরআন শরীফের একখানা আয়াত শরীফের সঠিক অর্থ ও ব্যাখ্যা না বুঝার কারণেই এরূপ বিভ্রান্তিকর বক্তব্য পেশ করেছে।       মূলতঃ মহিলারা সমস্ত শরীর ঢেকে বা পর্দা করে বের হবে এটাই শরীয়তের নির্দেশ।

 অতএব তাদের উক্ত বক্তব্যের কারণে যে অনেকেই পর্দা তরক করে কবীরা গুণাহে গুণাহ্গার হবে তা আর বলার অপেক্ষাই রাখেনা।
 দ্বিতীয়তঃ কতিপয় নামধারী পীর, আমীর, শাইখুল হাদীস, মুফতী, মুফাস্সিরে কুরআন ও মাওলানারা প্রকাশ্যে বেগানা মহিলাদের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ করে, ইফতার করে, ঘরোয়া বৈঠক করে, মিটিং-মিছিল করে। আর এটাকে তারা ইসলামের বৃহত্তর স্বার্থের দোহাই দিয়ে জায়িয বলে প্রচার করছে। (নাঊযুবিল্লাহ)

মূলতঃ যুগে যুগে দুনিয়া লোভী উলামায়ে ছূরা দুনিয়াবী ফায়দা লুটার উদ্দেশ্যে হারামকে হালাল ও হালালকে হারাম ফতওয়া দিয়ে আসছে। যেমন, কাইয়্যূমে আউয়াল হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর যামানায় উলামায়ে ছূআবুল ফযল, ফৈজী ও মোল্লা মুবারক নাগোরী গংরা বাদশা আকবরকে সন্তুষ্ট করে দুনিয়াবী কিছু ফায়দা লাভের উদ্দেশ্যে কুরআন-সুন্নাহর মনগড়া অপব্যাখ্যা করে বহু হারামকে হালাল ও হালালকে হারাম ফতওয়া দিয়েছিল।

বর্তমান যামানার উলামায়ে ছূতথাকথিত পীর, আমীর, শাইখুল হাদীস, মুফতী, মুফাস্সিরে কুরআন ও তার অনুসারী গংরা যেন আবুল ফযল গংদেরই পূর্ণ মিছদাক। 

দুনিয়াবী ফায়দা লাভের উদ্দেশ্যে এবং খানিকটা পদ লাভের প্রত্যাশায় তারা হারাম কাজগুলো নির্দ্বিধায় করে যাচ্ছে। সাথে সাথে হারাম কাজগুলোকে হালাল বলে ফতওয়া দিচ্ছে। বস্তুতঃ এরাই হচ্ছে হাদীস শরীফে বর্ণিত দাজ্জালের চেলা।
যেমন হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে,
عن ابى هريرة رضى الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم يكون فى اخر الزمان دجالون كذابون يأتونكم من الاحاديث بما لم تسمعوا انتم ولا اباؤكم فاياكم واياهم لايضلونكم ولايفتنونكم.
অর্থঃ- হযরত আবূ হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আখিরী যামানায় কিছু সংখ্যক মিথ্যাবাদী দাজ্জাল বের হবে, তারা তোমাদের নিকট এমন সব (মিথ্যা-মনগড়া) কথা উপস্থাপন করবে, যা তোমরা কখনো শুননি এবং তোমাদের বাপ-দাদারাও শুনেনি। সাবধান! তোমরা তাদের থেকে দূরে থাকবে এবং তোমাদেরকে তাদের থেকে দূরে রাখবে। তবে তারা তোমাদেরকে গোমরাহ্ করতে পারবে না এবং ফিৎনায় ফেলতে পারবেনা।” (মুসলিম শরীফ, শরহুন্ নববী)

 স্মর্তব্য যে, ঐসকল দাজ্জালের চেলা নামক পীর, আমীর, শাইখুল হাদীস, মুফতী, মুফাস্সিরে কুরআন ও মৌলভীদের প্রকাশ্যে বেপর্দা হওয়ার কারণে আজ সাধারণ লোক বিভ্রান্তিতে পড়ছে। সাধারণ লোক মনে করছে পর্দার কোন প্রয়োজন নেই। যদি থাকতোই তবে নামধারী মৌলভীরা বেপর্দা হয় কি করে?

অতএব, উল্লিখিত উলামায়ে ছূদের বেপর্দা হওয়ার কারণে যে সাধারণ লোকেরা পর্দা সম্পর্কীয় বিষয়ে ঈমান-আমলের ক্ষেত্রে বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে তা আর বলার অপেক্ষাই রাখেনা।

অতএব, সকলেই যেন পর্দা সম্পর্কে সঠিক আক্বীদা পোষণ করতে পারে বা হিজাব তথা পর্দার ছহীহ্ আহকাম অবগত হতে পারে এবং যারা অজ্ঞতাহেতু ও নফ্সের তাড়নায় পর্দা সম্পর্কে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে এবং বেপর্দা হচ্ছে তারাও যেন বিভ্রান্তি ও বেপর্দা হতে হিদায়েত ও পর্দার ভিতর আসতে পারে, তাই মাসিক আল বাইয়্যিনাতে” “হিজাব বা পর্দা ফরযে আইন হওয়ার প্রমাণ ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়াদেয়া হলো।

আল্লাহ্ পাক আমাদের সকলকে প্রদত্ত ফতওয়া মুতাবিক আমল করে মহান আল্লাহ্ পাক ও তাঁর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর রেযামন্দি হাছিল করার তাওফীক দান করুন। (আমীন)

কুরআন শরীফ, সুন্নাহ শরীফ, ইজ্মাও ক্বিয়াসের দৃষ্টিতে পর্দা করা ফরযে আইন

দ্বীন ইসলামের ভিত্তি বা প্রধানতম ফরয হচ্ছে পাঁচটি (১) ঈমান বা আক্বীদা, (২) নামায , (৩) যাকাত, (৪) হজ্ব (৫) রমযানের রোযা।অতঃপর পুরুষদের জন্যে হালাল কামাই করা ফরয। আর মহিলাদের জন্যে হিজাব বা পর্দা করা ফরয। অর্থাৎ ফরযে আইন। 
কুরআন  শরীফ ও সুন্নাহ শরীফের বহু স্থানেই হিজাব বা পর্দার গুরুত্ব, তাৎপর্য ও ফযীলত বর্ণিত হয়েছে, পাশাপাশি বেপর্দা হওয়ার কারণে কঠিন আযাব ও অসন্তুষ্টির কথাও বর্ণিত হয়েছে। নিম্নে হিজাব বা পর্দা সম্পর্কিত উল্লিখিত বিষয়ে কুরআন শরীফ, হাদীস শরীফ, তাফসীর, শরাহ, ফিক্বাহ, ফতওয়া, ইতিহাস ও লুগাতের কিতাবসমূহ থেকে বিস্তারিত দলীল-আদিল্লাহ্ পর্যায়ক্রমে উল্লেখ করা হলো-

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
যে সকল আয়াত শরীফসমূহ দ্বারা হিজাব বা পর্দার নির্দেশ দেয়া হয়েছে তার বিস্তারিত তাফসীর বা ব্যাখ্যা

যে সকল আয়াত শরীফসমূহ দ্বারা হিজাব বা পর্দাফরয প্রমাণিত হয়েছে তা দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয়েছে যে, শুধু বোরকা বা পর্দা করে রাস্তায় বের হওয়ার নাম হিজাব বা পর্দা নয়। বরং তার সাথে সাথে সংশ্লিষ্ট ও আয়াত শরীফসমূহে উল্লিখিত সকল হুকুম-আহ্কামসমূহ মেনে চলার নামই হচ্ছে শরয়ী হিজাব বা পর্দা
যেমন, কারো ঘরে প্রবেশ করার পূর্বে অনুমতি নেয়া, মাহরাম ব্যতীত অন্য কারো সাথে দেখা-সাক্ষাত না করা, মাহরামদের সামনেও শালীনতা বজায় রাখা, চলাচলের সময় পুরুষ-মহিলা উভয়ের দৃষ্টিকেই অবনত রাখা, নিজেদের লজ্জাস্থানকে হিফাজত করা, বিনা প্রয়োজনে গলার আওয়াজ বা কক্তস্বর পরপুরুষকে না শুনানো, প্রয়োজনে কথা বলতে হলে ও কিছু চাইতে হলে পর্দার আড়াল থেকে বলা ও চাওয়া এবং শক্ত ভাষায় কথা বলা, নরম ভাষায় কথা না বলা ইত্যাদি সবই হিজাব বা পর্দার অন্তর্ভুক্ত। মহান আল্লাহ্ পাক উল্লিখিত আয়াত শরীফসমূহে এ বিষয়গুলোই মূলতঃ স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেছেন।   উল্লিখিত প্রতিটি বিষয়ে তাফসীর বা ব্যাখ্যাবিস্তারিতভাবে তুলে ধরলে বিষয়গুলো আরো সুস্পষ্ট হয়ে উঠবে এবং শরয়ী হিজাব বা পর্দারপরিচয় সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠবে। তাই নিম্নে নির্ভরযোগ্য তাফসীর গ্রন্থ থেকে উল্লিখিত প্রতিটি বিষয়ের তাফসীর বা ব্যাখ্যা পৃথক পৃথকভাবে আলোচনা করা হলো-

অনুমতি নিয়ে ঘরে প্রবেশ করা সংক্রান্ত আয়াত শরীফসমূহের বিস্তারিত তাফসীর বা ব্যাখ্যা
[৩২২]
يايها الذين امنوا لاتدخلوا بيوتا غير بيوتكم حتى تستانسوا وتسلموا على اهلها ذلكم خيرلكم لعلكم تذكرون.
অর্থঃ- হে ঈমানদারগণ! তোমরা নিজেদের ঘর ছাড়া অন্য ঘরে প্রবেশ করোনা, যে পর্যন্ত অনুমতি না নাও এবং গৃহবাসীদেরকে সালাম না করো। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা স্মরণ রাখ। (সূরা নূর/২৭)
উপরোক্ত আয়াত শরীফে মহান আল্লাহ্ পাক আমভাবে সকলকেই যে কোন কারো ঘরে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করতে নিষেধ করেছেন। অর্থাৎ কারো ঘরে প্রবেশ করার পূর্বে ঘরওয়ালাদের অনুমতি সাপেক্ষে প্রবেশ করার নির্দেশ দিয়েছেন। আর এটাও মূলতঃ হিজাব বা পর্দারএকটি অংশ।  অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করা সংক্রান্ত উল্লিখিত আয়াত শরীফের ব্যাখ্যায় ইমাম-মুজতাহিদ তথা অনুসরণীয় মুফাস্সিরীনে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ তাদের তাফসীর গ্রন্থসমূহে যে ফায়সালা দিয়েছেন নিম্নে তা উল্লেখ করা হলো-

অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করা সংক্রান্ত সূরা নূরের ২৭ নং আয়াত  শরীফের তাফসীর বা ব্যাখ্যা

সূরা নূরের ২৭ নং আয়াত শরীফের ব্যাখ্যায় অনুসরণীয় মুফাস্সিরীন-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ তাঁদের বিশ্ববিখ্যাত ও নির্ভরযোগ্য তাফসীরগ্রন্থ সমূহে লিখেন,
[৩২৩-৪০১]
................ فيه سبع عشرة مسألة الاولى- قوله تعالى (يايها الذين امنوا لاتدخلوا بيوتا) لما خصص الله سبحانه ابن ادم الذى كرمه وفضله بالمنازل وسترهم فيها عن الابصار، وملكهم الاستمتاع بها على الانفراد، وحجرعلى الخلق ان يطلعوا على ما فيها من خارج اويلجوها من غير اذن اربابها، ادبهم بما يرجع الى الستر عليهم لئلا يطلع احدمنهم على عورة. وفى صحيح مسلم عن ابى هريرة عن النبى صلى الله عليه وسلم قال "من اطلع فى فيت قوم من غير اذنهم حل لهم ان يفقئوا عينه" ...... وكذلك هذا يحتمل ان يكون ذكر فقء العين والمراد ان يعمل به عملا حتى لاينظر بعد ذلك فى بيت غيره. وقال بعضهم لاضمان عليه ولا قصاص وهو الصحيح.
অত্র আয়াতে কারীমায় ১৭ টি মাসয়ালা রয়েছেঃ-  -

প্রথম মাসয়ালা
কারো ঘরের ছিদ্র দিয়ে ভিতরে
দৃষ্টি দেয়া সংক্রান্ত

আল্লাহ্ তায়ালার বাণী- (يايها الذين امنوا لاتدخلوا بيوتا)
“(হে ঈমানদারগণ! তোমরা কারো ঘরে প্রবেশ করোনা) আল্লাহ্ সুবহানাহু তায়ালা সম্মানিত ও ফযীলতপূর্ণ হযরত আদম আলাইহিস্ সালাম এর সন্তানের জন্য আবাসস্থল তথা ঘর নির্ধারণ করেছেন। এর মাধ্যমে তাদেরকে অনেক দৃষ্টি থেকে আড়ালে রেখেছেন এবং আলাদাভাবে তাদেরকে উপকার লাভের মালিকানাস্বত্ত্ব দিয়েছেন। মানুষের জন্য সীমা যে, যা ঘরের বাইরে এবং ঘরের অভ্যন্তরে তা ঘরের মালিকের অনুমতি ছাড়া দেখবে না। তাদেরকে আদব শিক্ষা দিয়েছেন তাদের মধ্যে আওরাতদের থেকে ফিরানোর মাধ্যমে, যাতে তাদের মধ্যে কেউ অপর কোন মহিলার দিকে দৃষ্টি না দেয়। ছহীহ্ মুসলিমশরীফে আছে, হযরত আবূ হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- থেকে বর্ণনা করেন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, “কেউ যদি কোন সম্প্রদায়ের কোন বাড়ীতে তাদের অনুমতি ছাড়া উকি মেরে দেখে, বাড়ীওয়ালার জন্য বৈধ হবে তার চক্ষুকে ফুটা করে দেয়া।” ..... এখানে চক্ষু ফুটা করার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। এর দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে, যেন এর উপর আমল করার মত আমল করা হয়। এমনকি এরপর অপর কারো ঘরে দৃষ্টি দিবে না। আর কেউ কেউ বলেন; এতে জরিমানা হবেনা এবং কেছাছও হবে না।
এটাই ছহীহ্ মত।
الثانية سبب نزول هذه الاية مارواه الطبرى وغيره عن عدى بن ثابت ان امرأة من الانصار قالت يارسول الله صلى الله عليه وسلم انى اكون فى بيتى على حال لا احب ان يرانى عليها احد، لا والد ولا ولد فيأتى الاب فيدخل على وانه لايزال يدخل على رجل من اهلى وانا على تلك الحاب، فكيف اصنع؟ فنزلت الاية.

দ্বিতীয় মাসয়ালা
এ আয়াত শরীফ নাযিল হওয়ার শানে নুযূল বা  নাযিল হওয়ার কারণ সংক্রান্ত
যা ইমাম ত্ববারী রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং অন্যান্যগণ হযরত আদী ইবনে ছাবিত রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু সূত্রে বর্ণনা করেছেন, নিশ্চয়ই আনছারী একজন মহিলা ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা এসে হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কাছে আরজ করলেন যে, আমি আমার বাড়ীতে কখনো এমতাবস্থায় থাকি যে, আমি পছন্দ করিনা সে অবস্থায় কেউ আমাকে দেখুক। না আমার পিতা মাতা, আর না সন্তান-সন্তুতি। কিন্তু আমার বাড়ীর কেউ না কেউ বিনা বাঁধায় এ অবস্থায় আমার ঘরে প্রবেশ করে এবং আমাকে দেখে ফেলে। এ পরিস্থিতিতে আমি কি করব? এমন আরজের উত্তরে উক্ত আয়াত শরীফ নাযিল হয়।
الثالثة- مد الله سبحانه وتعالى التحريم فى دخول بيت ليس هو بيتك الى غاية هى الاستئناس وهو الاستئذان. قال ابن وهب قال مالك الاستئناس فيما نرى والله اعلم الاستئذان وكذا فى قراءة ابى وابن عباس وسعيدبن جبير "حتى تستأذنوا وتسلموا على اهلها" وقيل ان معنى "تستانسوا" تستعلموا اى تستعلموا من فى البيت. قال مجاهد بالتنحنح ........ قلت وفى سنن ابن ماجة ............ عن ابى ايوب الانصارى قال قلنا يارسول الله صلى الله عليه وسلم هذا السلام، فما الاستئناس؟ قال "يتكلم الرجل بتسبيحة وتكبيرة وتحميدة ويتنحنح ويؤذن اهل البيت".

তৃতীয় মাসয়ালা
ঘর ওয়ালার বিনা অনুমতিতে তার ঘরে প্রবেশ করা হারাম হওয়া সংক্রান্ত
আল্লাহ্ সুবহানাহু তায়ালার প্রশংসা। যে তোমার ঘরের সদস্য নয় তার জন্য (বিনা অনুমতিতে তোমার) ঘরে প্রবেশ করা হারাম। استئناس শব্দের অর্থই হচ্ছে استئذان তথা অনুমতি গ্রহণ। হযরত ইবনু ওহ্হাব রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, হযরত মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন, الاستئناس শব্দের অর্থ হচ্ছে الاستئذان তথা অনুমতি প্রার্থনা, আল্লাহ্ পাক অধিক জ্ঞাত। অনুরূপভাবে হযরত উবাই, হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনু আব্বাস এবং হযরত সাইদ ইবনু জুবাইর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের ক্বিরায়াত
"حتى تستأذنوا وتسلموا على اهلها"
অর্থাৎ যতক্ষণ না অনুমতি নিবে এবং ঘরের অধিবাসীদেরকে সালাম দিবে।কেউ বলেছেন, تستانسوا অর্থঃ تستعلموا তোমরা জানাবেঅর্থাৎ ঘরের অধিবাসীকে আগমনের সংবাদ জানাবে। হযরত মুজাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন, গলাখাকড়ানোর মাধ্যমে জানাবে। ....... আমি বলিঃ সুনানে ইবনু মাজাহ্তে আছে। ....... হযরত আবূ আইউব আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন; আমরা জিজ্ঞাসা করলাম, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আয়াতে উল্লিখিত সালামের বিষয়টি আমরা বুঝি। কিন্তু استئناس বলতে কি বুঝায়? হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, এর অর্থ হলো ঘরের বাইরে থেকে লোকেরা কথা বলার মাধ্যমে এবং তাছবীহ, তাকবীর, হামদ ও গলা খাকড়ানোর মাধ্যমে ঘরের অধিবাসীর কাছে অনুমতি প্রার্থনা করবে।
الرابعة- وروى عن ابن عباس وبعض الناس يقول عن سعيد بن جبير "حتى تستانسوا" خطا او وهم من الكاتب، انماهو "حتى تستاذنوا". وهذا غير صحيح عن ابن عباس وغيره، فان مصاحف الاسلام كلها قدثبت فيها "حتى تستأنسوا" وصح الاجماع فيها من لدن مدة عثمان، فهى التى لايجوز خلافها. واطلاق الخطأ والوهم على الكاتب فى لفظ اجمع الصحابة عليه قول لايصح عن ابن عباس، وقد قال عز وجل "لايأتيه الباطل من بين يديه ولا من خلفه تنزيل من حكيم حميد"، وقال تعالى انا نحن نزلنا الذكر وانا له لحافظون وقد روى عن ابن عباس ان فى الكلام تقديما وتاخيرا، والمعنى حتى تسلموا على اهلها وتستانسوا، حكاه ابو حاتم ........ وقد قال عمر للنبى صلى الله عليه وسلم استانس يارسول الله، وعمر واقف على باب الغرفة. الحديث المشهور. ........... قلت قد ذكرنا من حديث ابى ايوب ان الاستئناس انما يكون قبل السلام، وتكون الاية على بابها لاتقديم فيها ولاتاخير، وانه اذا دخل سلم.

চতুর্থ মাসয়ালা
আয়াত শরীফে বর্ণিত "تستأنسوا" শব্দের তাহক্বীক্ব ও অর্থ নিয়ে ইখতিলাফ বা
মতভেদ সংক্রান্ত

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এবং কতিপয় বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিত। তিনি হযরত সাঈদ ইবনু জুবাইর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণনা করে বলেন যে, حتى تستأنسوا শব্দটি লিখকের ভুল  অথবা ধারণায় লিখা। নিশ্চয়ই এটা حتى تستاذنوا হবে।হযরত ইবনু আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এবং অন্যান্যদের থেকে বর্ণিত ফয়সালাটি গাইরে ছহীহ্ তথা বিশুদ্ধ নয়। কেননা, নিশ্চয়ই ইসলামের মুছাহাফ তথা কুরআন শরীফের প্রত্যেকটিতে حتى تساتأنسوا হিসেবে উল্লেখ আছে, যা দলীল সম্মত। যার উপর হযরত উসমান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর সময় ইজ্মা সংঘটিত হয়েছে। যার বিপরীত মত (কিরায়াত) গ্রহণ করা জায়িয নেই। লিখকের পক্ষে শাব্দিক ভুল, ত্রুটি থেকে বাঁচার উপর হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ ইজ্মাতথা ঐক্যমত পোষণ করেছেন। তাই, হযরত ইবনু আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর উক্তি ছহীহ্ তথা বিশুদ্ধ নয়। আল্লাহ্ আয্যা ওয়া জাল্লা বলেন, “এতে (কুরআন শরীফে) মিথ্যার প্রভাব নেই, সামনের দিক থেকেও নেই এবং পিছন দিক থেকেও নেই। এটা প্রজ্ঞাময়, প্রশংসিত আল্লাহ্ পাক-এর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ।” (সূরা হা-মীম সাজদাহ ৪২ আয়াত)।
আল্লাহ্ তায়ালা আরো বলেন, “নিশ্চয়ই আমি কুরআন শরীফ নাযিল করেছি আর নিশ্চয়ই আমিই ইহার হিফাযতকারী।হযরত ইবনু আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত যে, নিশ্চয়ই এ বাক্যে অগ্র পশ্চাৎ হবে। যার অর্থ حتى تسلموا على اهلها وتستانسوا অর্থাৎ যতক্ষণ না ঘরের অধিবাসীকে সালাম দিবে এবং অনুমতি প্রার্থনা করবে। এটা হযরত আবূ হাতিম রহমতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেছেন। ..... একদা হযরত উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি অনুমতি প্রার্থনা করছি। এসময় হযরত উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ঘরের দরজায় দাঁড়িয়ে ছিলেন।
আমি বলিঃ আমরা হযরত আবূ আইউব আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর হাদীসে উল্লেখ করেছি যে, নিশ্চয়ই استئناس তথা অনুমতি সালামের পূর্বে হবে। (যদি ঘরের অধিবাসীকে দৃষ্টিগোচর না হয়)। আর আয়াতে কারীমায় শব্দের অগ্র পশ্চাৎ হবে না। তবে ঘরে প্রবেশ করতে সালাম দিবে।
الخامسة- السنة فى الاستئذان ثلاث مرات لايزاد عليها. قال ابن وهاب قال مالك. الاستئذان ثلاث، لااحب ان يزيد احد عليها، ......... وصرورة الاستئذان ان يقول الرجل السلام عليكم اادخل؟ فان اذن له دخل، وان امر بالرجوع انصرف، وان سكت عنه استأذن ثلاث، ثم ينصرف من بعد الثلاث وانما قلنا ان السنة الاستئذان ثلاث مرات لايزاد عليها ... واما ماذكرناه من صورة الا ستئذان فما رواه ابو داؤد عن ربعى قال حدثنا رجل من بنى عامر استأذن على النبى صلى الله عليه وسلم وهو فى بيت، فقال ألج؟ فقال النبى صلى الله عليه وسلم لخادمه "اخرج الى هذا فعلمه الاستئذان- فقال له- قل السلام عليكم أادخل" فسمعه الرجل فقال السلام عليكم أأدخل؟ فاذن له النبى صلى الله عليه وسلم فدخل وذكره الطبرى وقال فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم لأمة له يقال لها (روضة) "قولى لهذا يقول السلام عليكم ادخل؟ الحديث. وروى أن ابن عمر اذته الرمضاء يوما فاتى فسطاطا لأمراة من قريش فقال السلام عليكم أأدخل؟ فقال المراة ادخل بسلام، فأعاد فأعادت. فقال لها قولى ادخل. فقالت ذلك فدخل، فتوقف لما قالت بسلام.

পঞ্চম মাসয়ালা
অন্যের ঘরে প্রবেশের পূর্বে ঘর ওয়ালার নিকট  অনুমতি তলবের সুন্নত তরীক্বা সংক্রান্ত

অনুমতির সুন্নত হচ্ছে তিনবার, এর বেশী করবে না। হযরত ইবনু ওহ্হাব রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন যে হযরত মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেছেনঃ অনুমতি তিনবার, কারো জন্য এর অতিরিক্ত করা পছন্দনীয় নয়। ....... অনুমতির পদ্ধতি হলো, আগন্তুক ব্যক্তি বলবে السلام عليكم আস্ সালামু আলাইকুমأأدخل আমি কি প্রবেশ করতে পারি? যদি তাকে অনুমতি দেয়া হয় প্রবেশ করবে, যদি ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয় তবে ফিরে যাবে। যদি (অধিবাসী) চুপ থাকে, তবে তিনবার অনুমতি প্রার্থনা করবে অতপর তিনবারের পর ফিরে যাবে। আমরা বলিঃ নিশ্চয়ই অনুমতির সুন্নত হচ্ছে তিনবার অনুমতি চাওয়া, যার অতিরিক্ত করা যাবেনা। ..............
অনুমতির পদ্ধতি সম্পর্কে আমরা যা উল্লেখ করছি। হযরত আবূ দাউদ রহমতুল্লাহি আলাইহি হযরত রিব্য়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, আমাদের কাছে হাদীস বর্ণনা করেছেন বনূ আমের গোত্রের এক ব্যক্তি, যে হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট অনুমতি প্রার্থনা করেছিল, যখন তিনি ঘরের ভিতরে ছিলেন। সে ব্যক্তি বলল, আমি কি প্রবেশের অনুমতি পেতে পারি? হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর খাদিমকে বললেন; তুমি ঘরের বাইরে লোকটার কাছে গিয়ে তাকে অনুমতির পদ্ধতি জানিয়ে দাও। অতপর তিনি লোকটিকে বললেন তুমি বলো السلام عليكم أأدخل আস্সালামু আলাইকুম, আমি কি প্রবেশ করতে পারি? লোকটি তা শুনলো এবং বললোঃ السلام عليكم أأدخل আস্সালামু আলাইকুমআমি কি প্রবেশ করতে পারি? তখন হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লোকটিকে প্রবেশের অনুমতি দিলেন, আর লোকটি প্রবেশ করলো। হযরত ইমাম ত্ববারী রহমতুল্লাহি আলাইহি উল্লেখ করে বলেছেন, হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর দাসীকে বলতে বললেনঃ (রওযা) তুমি সে ব্যক্তিকে বলো, সে যেন বলে السلام عليكم أأدخل؟ আস্সালামু আলাইকুম, আমি প্রবেশ করতে পারি?” (হাদীস শরীফ)          বর্ণিত রয়েছে, নিশ্চয়ই একদা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনু উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু রোদ্রের তপ্ত পথ দিয়ে হেঁটে এক কুরাইশী মহিলার কাছে ফুসত্বাত্বে (একটি বড় ধরণের তাঁবুতে) আসলেন। তথাপি তিনি শান্তভাবে বললেন, السلام عليكم أأدخل؟ আস্সালামু আলাইকুম, আমি কি প্রবেশ করতে পারি? উত্তরে মহিলাটি বললেনঃ শান্তির সাথে প্রবেশ করুন। আবার তিনি পুনরাবৃত্তি করলেন মহিলাটিও পুনরাবৃত্তি করলো। (তৃতীয়বার) হযরত ইবনু উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তাকে বললেনঃ আপনি বলুন, আমি কি প্রবেশ করবো? মহিলাটি আগের মতই জবাব দিল। তাই, তিনি প্রবেশ করলেন। তিনি বাইরে অপেক্ষা করেছিলেন, যাতে মহিলাটি বলে যে, আপনি শান্তির সাথে প্রবেশ করুন।
السادسة- قال علماؤنا رحمة الله عليهم انما خص الاستئذان بثلاث لان الغالب من الكلام اذا كرر ثلاثا سمع وفهم؟ ولذلك كان النبى صلى الله عليه وسلم اذا تكلم بكلمة اعادها ثلاثا حتى يفهم عنه، واذا سلم على قوم سلم عليهم ثلاثا. واذا كان الغالب هذا، واذا لم يؤذن له بعد ثلاث ظهر ان رب المنزل لايريد الاذن، او لعله يمنعه من الجواب عنه عذر لايمكنه قطعه، فينبغى للمستأذن ان ينصرف، لأن الزيادة على ذلك قد تقلق رب المنزل، وربما يضره الالحاح حتى ينقطع عما كان مشغولا به، كما قال النبى صلى الله عليه وسلم لابى ايوب حين استأذن عليه فخرج مستعجلا فقال "لعلنا اعجلناك" ..... الحديث. وروى عقيل عن ابن شهاب قال اما سنة التسليمات الثلاث فان رسول الله صلى الله عليه وسلم اتى سعد ابن عبادة فقال "السلام عليكم" فلم يردوا، ثم قال رسول الله صلى الله عليه وسلم "السلام عليكم" فلم يردوا، فانصرف رسول الله صلى الله عليه وسلم، فلما فقد سعد تسليمه عرف أنه قد انصرف، فخرج سعد فى أثره حتى أدركه، فقال وعليكم السلام يا رسول الله، انما اردنا ان نستكثر من تسليمك، وقد والله سمعنا، فانصرف رسول الله صلى الله عليه وسلم مع سعد حتى دخل بيته. قال ابن شهاب انما اخذ التسليم ثلاثا من قبل ذلك، رواه الوليد ابن مسلم عن الأوزاعى قال سمعت يحيى بن أبى كثير يقول حدثنى محمد بن عبد الرحمن ابن أسعد بن زرارة (عن قيس بن سعد) قال زارنا رسول الله صلى الله عليه وسلم فى منزلنا فقال "السلام عليكم ورحمة الله" قال فرد سعد ردا خفيا، قال قيس فقلت الا تأذن لرسول الله صلى الله عليه وسلم؟ فقال ذره يكثر علينا من السلام ....... الحديث.

ষষ্ঠ মাসয়ালা
অন্যের ঘরে প্রবেশের লক্ষ্যে অনুমতি তলবের জন্য তিন বার সালাম করা সংক্রান্ত

আমাদের উলামা-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ বলেনঃ নিশ্চয়ই তিনবারকেই অনুমতির জন্য খাছ করা হয়েছে। কেননা, এটাই উত্তম কালাম। যখন তিনবার বলা হবে, শ্রবণের জন্য ও বুঝের জন্য সহজ হবে। সেহেতু হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন কথা বলতেন, তা পুনরাবৃত্তি করে তিনবার বলতেন, যাতে তা সহজে বোধগম্য হয়। যখন তিনি কোন সম্প্রদায়কে সালাম দিতেন, তখন তিনবার সালাম দিতেন। যখন এটাই বিজয়ী ছিল। স্পষ্টভাবে তিনবারের পরেও যদি তাকে অনুমতি না দেয়, বুঝতে হবে নিশ্চয়ই বাড়ীর মালিক অনুমতির ইচ্ছা করে না অথবা সে জাওয়াব দেয়া থেকে ফিরে থাকার বিষয়ে কোন ওযর আছে, সে চায় না এ অবস্থায় তাদের সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হোক। এ অবস্থায় অনুমতি প্রার্থনাকারীর ফিরে যাওয়াই উচিত। কেননা তিনের অধিক করার জন্য ঘর ওয়ালার অসুবিধা হবে। বেশী কাকুতি-মিনতির কারণে ক্ষতি হতে পারে এমনকি সে যে কাজে ব্যস্ত ছিল তাতেও ব্যাঘাত ঘটতে পারে। যেমন, হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত আবূ আইউব আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে বললেন, যখন তিনি তাঁর কাছে অনুমতি চেয়েছিলেন তিনি তাঁর জন্য তাড়াতাড়ি করে বের হলেন এবং বললেন, “আমি তোমার জন্য তাড়াতাড়ি করেছি।” (হাদীস শরীফ)।
হযরত উক্বাইল রহমতুল্লাহি আলাইহি হযরত ইবনু শিহাব রহমতুল্লাহি আলাইহি থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, অনুমতির সালাম তিনবার সুন্নত। নিশ্চয়ই হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদা হযরত সাদ ইবনু উবাদাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর কাছে আসলেন এবং বললেনঃ السلام عليكم তোমাদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক।তাঁদের কাছ থেকে কোন জবাব আসলো না। হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আবার বললেন, السلام عليكم তোমাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোকএবারো কোন উত্তর আসলো না। তাই হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফিরে যেতে ধরলেন। হযরত সাদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু সালামের জবাব লুকিয়ে দিতে ছিলেন। হযরত সাদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বাড়ী থেকে বের হয়ে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পিছনে গেলেন এমনকি তাঁকে সবকিছু জানালেন। বললেন, وعليكم السلام يا رسول الله ওয়া আলাইকুমুস্ সালাম ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামআমরা আকাঙ্খা করেছিলাম যে, আপনার সালাম দোয়া অধিক পরিমাণে আমাদের উপর বর্ষিত হোক। (এজন্য আস্তে জবাব দিয়েছিলাম)। আল্লাহ্ পাক-এর কসম! আমরা আপনার সালামের বরকতময় শব্দ শুনেছিলাম। তখন হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত সাদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর সাথে ফিরলেন এবং তাঁর বাড়ীতে এসে প্রবেশ করলেন।
হযরত ইবনু শিহাব রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, তিনি উক্ত ঘটনার সময় তিনবার সালাম গ্রহণ করেছিলেন।
হযরত ওয়ালীদ ইবনু মুসলিম রহমতুল্লাহি আলাইহি হযরত আওযায়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি থেকে রিওয়ায়েত করেন।
তিনি বলেন, আমি হযরত ইয়াহ্ইয়া ইবনু আবূ কাছীর রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর কাছ থেকে শুনেছি। তিনি বলেছেন, আমার কাছে হাদীস বর্ণনা করেছেন হযরত মুহম্মদ বিন আব্দুর রহমান ইবনু আসয়াদ বিন যুরারাহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহি। (তিনি হযরত কাইস্ বিন সাদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে, যিনি হযরত সাদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর ছেলে) তিনি বলেনঃ একদা হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের বাড়ীতে আসলেন এবং বললেন, السلام عليكم ورحمة الله তোমাদের উপর শান্তি এবং আল্লাহ্ পাক-এর রহমততিনি বলেনঃ (আমার পিতা) হযরত সাদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু সালামের জবাব অল্প আওয়াজে দিলেন। হযরত কাইস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, আমি বললাম, আপনি কি হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছেন না? উত্তরে তিনি বললেন, তাঁকে আমাদের উপর বেশী পরিমাণে সালাম, দোয়া দেয়ার সুযোগ দাও... (হাদীস শরীফ)।
اسابعة- روى عن ابن عباس رضى الله عنهما أن الاستئذان ترك العمل به الناس- قال علماؤنا رحمة الله عليهم وذلك لاتخاذ الناس الأبواب وقرعها، والله اعلم. روى ابو داود عن عبد الله بن بسر قال كان رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا اتى باب قوم لم يستقبل الباب من تلقاء وجهه ولكن من ركنه الايمن او الأيسر فيقول ّ"السلام عليكم السلام عليكم" وذلك ان الدور لم يكن عليها يومئذ ستور.

সপ্তম মাসয়ালা
অন্যের ঘরে প্রবেশের লক্ষ্যে অনুমতি নেয়ার জন্যে  কড়া নাড়া বা গলা খাকড়ানোর চেয়ে সালাম  দেয়াই আফযল ও উত্তম

হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনু আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা বর্ণনা করেন, নিশ্চয়ই অনুমতির আমলটি মানুষেরা ছেড়ে দিয়েছে। আমাদের উলামা-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ বলেন, মানুষেরা দরজাকে এবং গলাখাকড়ানোকে গ্রহণ করেছে। আল্লাহ্ পাক অধিক জ্ঞাত। হযরত আবূ দাউদ রহমতুল্লাহি হযরত আব্দুল্লাহ বিন বুছর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোন গোত্রের বাড়ীতে গেলে দরজাকে তাঁর মুখোমুখি করে দাঁড়াতেন না, বরং দরজার ডান পার্শ্বে অথবা বাম পার্শ্বে দাঁড়াতেন এবং বলতেন السلام عليكم السلام عليكم. আস্সালামু আলাইকুম আস্সালামু আলাইকুম। এরূপ এজন্য করতেন যে, সেসময় ঘরের দরজায় পর্দা দেয়া থাকতো না।
الثامنة- فان كان الباب مردودا فله ان يقف حيث شاء منه ويستأذن، وان شاء دق الباب، لما رواه ابو موسى الاشعرى ان رسول الله صلى الله عليه وسلم كان فى حائط بالمدينة على قف البئر فمد رجليه فى البئر فدق الباب ابو بكر فقال له رسول الله صلى الله عليه وسلم "ايذن له وبشره بالجنة."

অষ্টম মাসয়ালা
ঘরওয়ালা অনুমতি না দেয়া পর্যন্ত
অবশ্যই অপেক্ষা করবে

যদি দরজা বন্ধ থাকে, তবে সে ইচ্ছা করলে যতক্ষণ ইচ্ছা অপেক্ষা করবে এবং অনুমতি প্রার্থনা করবে। অথবা দরজায় খটখটি দিবে। হযরত আবূ মুসা আল্ আশয়ারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেছেন, হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদীনা শরীফের দেয়ালের পার্শ্বে কুপের পাথর ভূমিতে আসলেন এবং তাঁর পাঁ মুবারকদ্বয় কুপের মধ্যে প্রসারিত করলেন। হযরত আবূ বকর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু দরজায় খটখটি দিলেন। তখন হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁকে বললেন, “তাঁর কাছ থেকে অনুমতি নিন এবং তাঁকে জান্নাতের সুসংবাদ দান করুন।
التاسعة- وصفة الدق ان يكون خفيفا بحيث يسمع، ولا يعنف فى ذلك، فقد روى انس بن مالك رضى الله عنه قال كانت ابواب النبى صلى الله عليه وسلم تقرع بالاظافير، ذكره ابو بكر احمدبن على بن ثابت الخطيب فى جامعه.

নবম মাসয়ালা
অন্যের ঘরের দরজায় আওয়াজ করার
সুন্নত তরীক্বা সংক্রান্ত

খট্খটি দেয়ার পদ্ধতি হলো, এমন মৃদভাবে দেয়া যাতে ঘর ওয়ালা শোনে। খট্খটির মধ্যে কষ্টের কারণ সৃষ্টি করবেনা। হযরত আনাস বিন মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করে বলেন, হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ঘর সমূহে তিনি আঙ্গুলসমূহ দ্বারা খট্খটি দিতেন। যা হযরত আবূ বকর আহমদ বিন আলী বিন ছাবিত আল্ খত্বীব রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর জামে এর মধ্যে বর্ণনা করেছেন।
العاشر- روى الصحيحان وغيرهما عن جابربن عبد الله رضى الله عنهما قال استاذنت على النبى صلى الله عليه وسلم فقال "من هذا"؟ فقلت انا، فقال النبى صلى الله عليه وسلم "انا انا" كأنه كره ذلك. قال علماؤنا انما كره النبى صلى الله عليه وسلم ذلك لان قوله انا لايحصل بها تعريف، وانما الحكم فى ذلك ان يذكر اسمه كما فعل عمربن الخطاب رضى الله عنه وابو موسى، لان فى ذكر الاسم اسقاط كلفة السؤال والجواب. ثبت عن عمر بن الخطاب انه اتى النبى صلى الله عليه وسلم وهو فى مشربة له فقال السلام عليك وهو فى مشربة له فقال السلام عليك يا رسول الله، السلام عليكم ايدخل عمر؟ وفى صحيح مسلم ان ابا موسى جاء الى عمر ابن الخطاب فقال السلام عليكم، هذا ابو موسى، السلام عليكم، هذا الاشعرى ...... الحديث.

দশম মাসয়ালা
ঘর ওয়ালার প্রশ্নের জবাবে অনুমতি  প্রার্থনাকারী কি বলবে?

ছহীহান তথা বুখারী ও মুসলিম শরীফএবং অন্য কিতাবে হযরত জাবির ইবনু আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা থেকে বর্ণিত আছে। তিনি বলেন, একদা আমি হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কাছে প্রবেশের অনুমতি চাইলাম। তিনি বললেন, “তুমি কে?” আমি জবাবে বললাম আমি। তখন হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “আমি আমি”! এরকম আমি আমি জবাব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অপছন্দ করলেন।আমাদের উলামা-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম বলেন, হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরকম জবাব অপছন্দ করেছেন, যেহেতু انا আমিশব্দ দ্বারা পরিচয় মিলে না। অনুমতির মধ্যে তার নাম উল্লেখ করার হুকুম রয়েছে। যেমন হযরত উমর ইবনুল খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এবং হযরত আবূ মুছা আশয়ারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়অলা আনহু নাম উল্লেখ করে অনুমতি প্রার্থনা করেছিলেন। কেননা, নাম উল্লেখের মধ্যে সুওয়াল জবাবের অস্পষ্টতা দুরিভূত হয়।
হযরত উমর ইবনুল খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। একদা তিনি হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কাছে আসলেন, যখন তিনি পান করার স্থানে ছিলেন।
তিনি বললেন, السلام عليك يا رسول الله আস্সালামু আলাইকা ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম السلام عليكم ايدخل عمر؟ আস্সালামু আলাইকুম উমর কি প্রবেশ করতে পারে?” ছহীহ্ মুসলিমশরীফে আছে। হযরত আবূ মুসা আশয়ারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু একদা হযরত উমর ইবনুল খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর কাছে আসলেন এবং বললেন, السلام عليكم هذا ابو موسى আস্সালামু আলাইকুম, এ ব্যক্তি হযরত আবূ মুসা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুالسلام عليكم هذا الاشعرى আস্সালামু আলাইকুম, এ ব্যক্তি হযরত আশয়ারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু।’ ..........
الحادية عشرة- ذكر الخطيب فى جامعه عن على بن عاصم الواسطى قال قدمت البصرة فاتيت منزل شعبة فدققت عليه الباب فقال من هذا؟ قلت انا، فقال ياهذا! مالى صديق يقال له انا، ثم خرج الى فقال حدثنى محمد بن المنكدر عن جابربن عبد الله قال اتيت النبى صلى الله عليه وسلم فى حاجة لى فطرقت عليه الباب فقال "من هذا"؟ فقلت انا فقال "انا انا"! كان رسول الله صلى الله عليه وسلم كره قولى هذا، او قوله هذا. وذكر عن عمر بن شبة حدثنا محمد بن سلام عن ابيه قال دققت على عمروبن عبيد الباب فقال لى من هذا؟ فقلت انا، فقال لايعلم الغيب الا الله. قال الخطيب سمعت على ابن المحسن القاضى يحكى عن بعض الشيوخ انه كان اذا دق بابه فقال من ذا؟ فقال الذى على الباب انا، يقول الشيخ انا هم دق.

একাদ্বশ মাসয়ালা
ঘর ওয়ালার প্রশ্নের জবাবে অনুমতি প্রার্থনাকারী  শুধু আমি আমিবলা নিষেধ হওয়া সংক্রান্ত

খত্বীবতাঁর জামেতে হযরত আলী বিন আছিমিল্ ওয়াসিত্বী রহমতুল্লাহি আলাইহি থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, একদা আমি বছরায় আগমন করে হযরত শুবাহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর বাড়ীতে আসলাম এবং তাঁর ঘরের দরজায় খট্খটি দিলাম। তিনি বললেন, আপনি কে? আমি বললাম আমি। তিনি বললেন, হে আপনি! গর্বকারী বন্ধু সে তার বন্ধুর কাছে আমি বলছে। অতপর তিনি ঘর থেকে আমার দিকে বেড়িয়ে আসলেন এবং বললেন, আমার কাছে হাদীস বর্ণনা করেছেন হযরত মুহম্মদ ইবনুল মুনকাদির রহমতুল্লাহি আলাইহি হযরত জাবির ইবনু আব্দুল্লাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে। তিনি বলেছেন, আমি একদা আমার কোন প্রয়োজনে হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কাছে আসলাম এবং তাঁর দরজায় অনুমতির জন্য খট্খটি দিলাম। তিনি বললেন, “তুমি কে?’ আমি বললাম, আমি। উত্তরে তিনি বললেন, “আমি আমি!যেন হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার এ কথা অপছন্দ করেছেন অথবা তাঁর এ কথা।
হযরত উমর বিন শাব্বাহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহি থেকে বর্ণিত। আমাদের কাছে হাদীস বর্ণনা করেছেন, হযরত মুহম্মদ বিন সালাম রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর পিতা থেকে। তিনি বলেন, আমি হযরত আমর বিন উবাইদ্ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর দরজায় খট্খটি দিলাম। তিনি আমাকে বললেন, আপনি কে? আমি বললাম انا আমি। তিনি বললেন, আল্লাহ্ পাক ছাড়া গাইব-এর ইল্ম কেউ জানে না।
খত্বীববলেন, আমি হযরত আলী ইবনুল মুহাস্সিন আল্ কাযী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর কাছ থেকে শুনেছি। তিনি তাঁর কোন কোন শাইখ থেকে বর্ণনা করেছেন যে, যখন তাঁর দরজায় খটখটি দেয়া হলো, তখন তিনি বললেন, আপনি কে? যিনি দরজায় ছিলেন, তিনি বললেন আমিশাইখ বললেন, খট্খটির কারণে আমি চিন্তিত।
الثانية عشرة- ثم لكل قوم فى الاستئذان عرفهم فى العبارة، كما رواه ابوبكر الخطيب مسندا عن ابى عبد الملك مولى ام مسكين بنت عاصم بن عمر بن الخطاب قال ارسلتنى مولاتى الى ابى هريرة فجاء معى، فلما قام بالباب قال اندر؟ قالت اندرون. ...... وذكر عن احمد بن صالح قال كان الدراوردى من اهل اصبهان نزل المدينة، فكان يقول للرجل اذا اراد ان يدخل اندرون، فلقبه اهل المدينة الدراوردى. 

দাদ্বশ মাসয়ালা
অনুমতি প্রার্থনাকারী নিজ পরিচয়
দেয়ার পরিভাষাসম্পর্কে

প্রত্যেকটা সম্প্রদায়ের অনুমতি প্রার্থনার কিছু পরিভাষা আছে, যার মাধ্যমে পরিচয় লাভ করা যায়। যেমন, হযরত আবূ বকর আল খত্বীব রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর মুসনাদেহযরত আবূ আব্দুল মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি থেকে বর্ণনা করেছেন, যিনি ছিলেন হযরত উম্মু মিসকীন বিনতে আছিম বিন উমর ইবনুল খত্তাব রহমতুল্লাহি আলাইহা-এর মনিব। তিনি বলেন, আমার মনিব আমাকে হযরত আবূ হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর কাছে (ডাকতে) পাঠালেন। তিনি আমার সঙ্গে আসলেন। এবং দরজার কাছে দাঁড়িয়ে বললেন, اندر؟ আমি কি প্রবেশ করতে পারি? তিনি বললেন اندرون  প্রবেশ করুন। ....... তিনি (বর্ণনাকারী) হযরত আহমদ বিন ছালিহ রহমতুল্লাহি আলাইহি থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, মদীনা শরীফবাসী আছবাহান গোত্রের এক দারাওর্য়াদী ব্যক্তি যখন কারো কাছে প্রবেশ করতে ইচ্ছা করত, তখন সে ব্যক্তিকে বলতো: أندرون আমি কি প্রবেশ করব? এখানে সে লোকটির লক্বব উপাধি ছিল আহ্লুল্ মদীনা আদ্ দারাওয়ারদী। (দারাওয়ারদী হচ্ছেন, আব্দুল আযীয বিন মুহম্মদ বিন উবাইদ বিন আবূ উবাইদ। তাহযীবুত্ তাহযীব কিতাবে আছে) (অসমাপ্ত)

0 Comments: