অকাট্য দলীল-আদিল্লাহর ভিত্তিতে ‘ছোঁয়াচে রোগে বিশ্বাসী মুশরিকদের’ ভ্রান্ত যুক্তির দাঁতভাঙ্গা জবাব-৩

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ইসলামী শরীয়ত উনার ফতওয়া অনুযায়ী ছোঁয়াচে রোগ বা সংক্রামক রোগ বলতে কিছু নেই। ছোঁয়াচে রোগ বিশ্বাস করা কাট্টা হারাম, কুফরী এবং শিরকীর অন্তর্ভুক্ত-৩

‘মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ্ শরীফ’ উনার মধ্যে ‘আল আকলু মা‘আল মাজযূম বা কুষ্ঠরোগীর সাথে খাবার খওয়া’ নামক অধ্যায়ে উল্লেখ রয়েছে, ,
كَانُوا يَتَّقُونَ أَنْ يَأْكُلُوا مَعَ الْأَعْمَى وَالْأَعْرَجِ وَالْمَرِيضِ حَتَّى نَزَلَتْ هَذِهِগ্ধ الْآيَةُ: {لَيْسَ عَلَى الْأَعْمَى حَرَجٌ وَلَا عَلَى الْأَعْرَجِ حَرَجٌ وَلَا عَلَى الْمَرِيضِ حَرَجٌ} [النور: ৬১]অর্থ: “লোকজন অন্ধ, ল্যাংড়া এবং অসুস্থ লোকদের সাথে খাবার খেতে ভয় পেতো। তখন সম্মানিত ও পবিত্র সূরা নূর শরীফ উনার ৬১ নং সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ নাযিল হন-
لَيْسَ عَلَى الْأَعْمَى حَرَجٌ وَلَا عَلَى الْأَعْرَجِ حَرَجٌ وَلَا عَلَى الْمَرِيضِ حَرَجٌ‘(তোমরা) অন্ধের সাথে, ল্যাংড়ার সাথে এবং অসুস্থদের সাথে খাবার খেতে পারো, তাতে কোন অসুবিধা বা বিপদ নেই।” (মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ্ শরীফ ৫/১৪২ হাদীছ শরীফ নং ২৪৫৩৯, তাফসীরে দুররে মানছূর, ইবনে আবী হাতিম ইত্যাদি)
স্বয়ং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজে কুষ্ঠরোগীকে উনার পাশে বসিয়েছেন, কুষ্ঠরোগীর হাত ধরেছেন এবং একই পাত্র মুবারক-এ খাওয়া-দাওয়া করেছেন:
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ يَحْيَى بْنِ جَعْدَةَ، قَالَ: ্রجَاءَ رَجُلٌ أَسْوَدُ بِهِ جُدَرِيٌّ قَدْ تَقَشَّرَ، لَا يَجْلِسُ جَنْبَ أَحَدٍ إِلَّا أَقَامَهُ، فَأَخَذَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَجْلَسَهُ إِلَى جَنْبِهِঅর্থ: “হযরত ইয়াহ্ইয়া ইবনে জা’দাহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আবূ মা’শার রহতুল্লাহি আলাইহি তিনি একজন তাবেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণনা করেন যে, একদা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ একজন গুটিবসন্ত যুক্ত কালো লোক আসলো, যার গুটিবসন্তের কারণে গায়ের চামড়া উঠে গেছে। তিনি কারো সাথে না বসে দাঁড়য়ে থাকলেন। তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উক্ত ব্যক্তি উনাকে ধরে উনার পাশে বসালেন। সুবহানাল্লাহ! (মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ ৫/১৪১ হাদীছ শরীফ নং ২৪৫৩৭)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَخَذَ بِيَدِ مَجْذُومٍ فَأَدْخَلَهُ مَعَهُ فِي الْقَصْعَةِ ثُمَّ قَالَ كُلْ بِسْمِ اللَّهِ ثِقَةً بِاللَّهِ وَتَوَكُّلًا عَلَيْهِঅর্থ: “হযরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন। নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একজন কুষ্ঠরোগীর হাত ধরে তার হাতকে উনার সাথে (খাবার খাওয়ানোর জন্য) উনার পাত্র মুবারক-এ প্রবেশ করালেন। তারপর ইরশাদ মুবারক করলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার নাম মুবারক নিয়ে উনার উপর পূর্ণ বিশ্বাস রেখে এবং পূর্ণ ভরসা করে খাবার গ্রহণ করুন।” সুবহানাল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ, হাদীছ শরীফ নং ১৮১৭/ আবূ দাউদ শরীফ হাদীছ শরীফ নং ৩৯২৫, সুনানে ইবনে মাজাহ্ হাদীছ শরীফ নং ৩৫৪২, মুসনাদে আবী ইয়া’লা ৩/৩৫৪, মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ শরীফ ৫/১৪১, আল মুন্তাখাব মিন মুসনাদে আব্দ ইবনে হুমাইদ ১/৩২৯, আমালুল ইয়াওমি ওয়াল লাইলাতি ১/৪১২, আল আদাবু লিল বাইহাক্বী ১/১৪৬, শু‘আবুল ঈমান ২/৪৮৮, শারহু সুনানি ইবনে মাজাহ লিস সুয়ূত্বী ১/২৭১, বাযলু মাজহূদ ফী হাল্লি সুনানি আবী দাঊদ ১১/৬৫৩, আনীসুস সারী, আওনুল মা’বূদ ২১/২৪৭, আল মাসালিক ফী শারহি মুয়াত্ত্বাই মালিক ৭/৪১ ইত্যাদি)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ كَانَ لِي مَوْلًى مَجْذُومٌ، فَكَانَ يَنَامُ عَلَى فِرَاشِي وَيَأْكُلُ فِي صِحَافِي،অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ্ আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার একজন আযাদকৃত কুষ্ঠরোগী খাদেমা ছিলেন। তিনি আমার বিছানা মুবারক-এ ঘুমাতেন এবং আমার প্লেট মুবারক বা পাত্র মুবারক-এ খাবার খেতেন ।” (মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ ৫/১৪২ হাদীছ শরীফ নং ২৪৫৪১)
খলীফাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি কুষ্ঠরোগীর সাথে খেতেন এবং খাওয়ার জন্য নির্দেশ মুবারক দিয়েছেন; শুধু তাই নয়, কুষ্ঠরোগী যেস্থান থেকে খেতে তিনিও সেস্থান থেকে খেতেন:
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْقَاسِمِ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: قَدِمَ عَلَى أَبِي بَكْرٍ وَفْدٌ مِنْ ثَقِيفٍ، فَأَتَى بِطَعَامٍ فَدَنَا الْقَوْمُ، وَتَنَحَّى رَجُلٌ بِهِ هَذَا الدَّاءُ، يَعْنِي: الْجُذَامَ، فَقَالَ لَهُ أَبُو بَكْرٍ: ্রادْنُهُগ্ধ، فَدَنَا، فَقَالَ: ্রكُلْ، فَأَكَلَ، وَجَعَلَ أَبُو بَكْرٍ يَضَعُ يَدَهُ مَوْضِعَ يَدِهِঅর্থ: “হযরত আব্দুর রহমান ইবনে ক্বাসিম আলাইহিস সালাম তিনি উনার পিতা সাইয়্যিদুনা হযরত ক্বাসিম ইবনে মুহম্মদ ইবনে আবূ বকর আলাইহিমুস সালাম উনার থেকে বর্ণনা করেন। সাইয়্যিদুনা হযরত মুহম্মদ ইবনে আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, একদা সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার নিকট ছাক্বীফ গোত্র থেকে এক প্রতিনিধি দল আসলো। সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি খাবার মুবারক নিয়ে আসলেন, তখন গোত্রের সবাই নিকটবর্তী হলো। আর এক ব্যক্তি কোষ্ঠরোগী দেখে দূরে সরে গেলো। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি উক্ত ব্যক্তিকে উদ্দেশ্য করে বললেন, তুমি কোষ্ঠরোগীর নিকটবর্তী হও। তারপর উক্ত ব্যক্তি কুষ্ঠরোগীর নিকটবর্তী হলো। তারপর সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি তাকে বললেন, খাওয়া-দাওয়া করো। অতঃপর সে খাওয়া-দাওয়া করলো। আর সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি উনার হাত মুবারক কুষ্ঠরোগী যেখানে হাত রাখতো সেখানে রাখতেন। অর্থাৎ কুষ্ঠরোগী পাত্রের যে স্থান থেকে হাত দিয়ে লুকমা নিয়ে খেতো সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি হুবহু সেখান থেকে খাবার গ্রহণ করতেন। সুবহানাল্লাহ! (মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ ৫/১৪১ হাদীছ শরীফ নং ২৪৫৩৫)
বিশিষ্ট ছাহাবী হযরত সালমান ফার্সী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি কুষ্ঠরোগীদের সাথে খাওয়া-দাওয়া করতেন:
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنِ ابْنِ بُرَيْدَةَ أَنَّ سَلْمَانَ كَانَ يَصْنَعُ الطَّعَامَ مِنْ كَسْبِهِ، فَيَدْعُو الْمَجْذُومِينَ فَيَأْكُلُ مَعَهُمْঅর্থ; “হযরত ইবনে বুরাইদাহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন যে, নিশ্চয়ই হযরত সালমান ফার্সী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি উনার উপার্জিত অর্থ মুবারক দ্বারা খাদ্য প্রস্তুত করে কুষ্ঠরোগীদেরকে ডেকে এনে তাদের সাথে খাওয়া-দাওয়া মুবারক করতেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ ৫/১৪১ হাদীছ শরীফ নং ২৪৫৩৩)
রঈসুল মুফাস্সিরীন হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি কুষ্ঠরোগীর সাথে গা ঘেসে অবস্থান মুবারক করতেন:
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ عِكْرِمَةَ، قَالَ: لَزِقَ بِابْنِ عَبَّاسٍ مَجْذُومٌ، فَقُلْتُ لَهُ: تَلْزَقُ بِمَجْذُومٍ؟ قَالَ فَامْضِي، فَلَعَلَّهُ خَيْرٌ مِنِّي وَمِنْكَঅর্থ: “হযরত ইকরামাহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার শরীর মুবারক ঘেষে এক কুষ্ঠরোগী অবস্থান করতে থাকলো। তখন আমি হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে বললাম, আপনি কুষ্ঠরোগীর সাথে লেগে আছেন? জবাবে হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বলেন, আপনি চলে যান। হতে এই ব্যক্তি আমার এবং আপনার চেয়ে উত্তম।”(মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ ৫/১৪২ হাদীছ শরীফ নং ২৪৫৩৮)
হযরত ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি কুষ্ঠরোগীর সাথে খাওয়া-দাওয়া করতেন এবং কুষ্ঠরোগী যেস্থান থেকে খেতে তিনিও সেস্থান থেকে খেতেন:
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ أَبِي مَعْشَرٍ، عَنْ رَجُلٍ أَنَّهُ رَأَى ابْنَ عُمَرَ يَأْكُلُ مَعَ مَجْذُومٍ، فَجَعَلَ يَضَعُ يَدَهُ مَوْضِعَ يَدِ الْمَجْذُومِঅর্থ: “হযরত আবূ মা’শার রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি একজন তাবেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি হযরত ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে কুষ্ঠরোগীর সাথে খাওয়া-দাওয়া করতে এবং তার হাত রাখার স্থানে উনার হাত মুবারক রাখতে দেখেছেন। অর্থাৎ কুষ্ঠরোগী পাত্রের যে স্থান থেকে হাত দিয়ে লুকমা নিয়ে খেয়েছেন হযরত ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি হুবহু সেখান থেকে খাবার গ্রহণ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! ” সুবহানাল্লাহ! (মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ ৫/১৪১ হাদীছ শরীফ নং ২৪৫৩৪)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ سَعْدِ بْنِ مَالِكٍ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَا هَامَةَ وَلا عَدْوَى وَلا طِيَرَةَ إِنْ يَكُ، فَفِي الْمَرْأَةِ، وَالْفَرَسِ، وَالدَّارِঅর্থ: “হযরত সা’দ ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, পেঁচার মধ্যে কুলক্ষণ নেই, ছোঁয়াচে বা সংক্রামক রোগ বলে কিছু নেই এবং অশুভ বলতে কিছু নেই। যদি থাকতো, তাহলে মহিলা, ঘোড়া এবং ঘর-বাড়িতে থাকতো।” (মুসনাদে আহমদ ৩/৯২)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ السَّاعِدِيِّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ إِنْ كَانَ فِي شَيْءٍ، فَفِي المَرْأَةِ، وَالفَرَسِ، وَالمَسْكَنِঅর্থ: “হযরত সাহ্ল ইবনে সাদ’ আস সা‘ইদী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যদি কিছুর মধ্যে (কুলক্ষণ এবং ছোঁয়াচে বা সংক্রামক রোগ বলে) কিছু থাকতো, তাহলে মহিলা, ঘোড়া এবং ঘর-বাড়িতে থাকতো।” (বুখারী শরীফ হাদীছ শরীফ নং ২৮৫৯)
সুতরাং স্বয়ং যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারাই ঘোষণ মুবারক দিয়েছেন যে, ছোঁয়াচে বলতে কোন রোগ নেই। সুবহানাল্লাহ! আর স্বয়ং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা রোগীদের সাথে উঠা-বাস করেছেন, খাওয়া-দাওয়া করেছেন এবং গা ঘেসে অবস্থান করেছেন। কাজেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ইসলামী শরীয়ত উনার ফতওয়া অনুযায়ী ছোঁয়াচে রোগ বা সংক্রামক রোগ বলতে কিছু নেই। ছোঁয়াচে রোগ বিশ্বাস করা কাট্টা হারাম, কুফরী এবং শিরকীর অন্তর্ভুক্ত।
আর করোনা হচ্ছে- কাফির-মুশরিকদের প্রতি এবং তাদের গোলামদের প্রতি এক কাট্টা কঠিন গযব। কাজেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শরীয়ত উনার ফতওয়া অনুযায়ী যারা করোনাকে ছোঁয়াচে রোগ বা সংক্রমক বলবে, তারা কাট্টা কুফরী ও শিরক করবে। না‘ঊযুবিল্লাহ!
আর যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
لَا تُشْرِكْ بِاللَّهِঅর্থ: “তুমি মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে শিরিক করো না।” (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা লুক্বমান শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১৩)
আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عن جابر رضي الله عنه قال: قال رسولُ الله - صلى الله عليه وسلم-: ্রثِنْتَان مُوجِبَتان قال رجل: يا رسول الله، ما الموجِبتان؟ قال: مَنْ مَاتَ يُشْرِكُ بِالله شَيْئًا دَخَلَ الْنار، وَمَنْ مَاتَ لا يُشْرِكُ بِالله شَيْئًا دَخَلَ الجنةَঅর্থ: “হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, দুইটি জিনিস দুইটি জিনিসকে ওয়াজিব করে দেয়। একজন হযরত ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! কোন দুইটি জিনিস কোন দুইটি জিনিসকে ওয়াজিব করে দেয়। তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে শিরক করে যে ব্যক্তি মারা যাবে, সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে। না‘ঊযুবিল্লাহ! আর যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে শিরক না করে ইন্তেকাল করবেন, তিনি জান্নাতে প্রবেশ করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুসলিম শরীফ, জামিউল উছূল শরীফ, জামউল ফাওয়াইদ, ত্ববাক্বাতুশ শাফিইয়্যাহ্)
সুতরাং করোনা ভাইরাসের অযুহাতে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদসমূহে জামায়াত নিষিদ্ধ করা, মহাসম্মানিত আযান পরিবর্তন করা, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদসমূহে যেতে নিরুৎসাহিত করা এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদসমূহ নিয়ে কটুক্তি করা কুফরী, হারাম ও জাহান্নামী হওয়ার কারণ। তাই, সরকার ও সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য ফরযে আইন হচ্ছেÑ করোনা ভাইরাসের অযুহাতে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদসমূহে বিধি-নিষেধ আরোপ করা হতে বিরত থাকা, প্রতি নামাজের পর পবিত্র কুরআন শরীফ তিলাওয়াত এবং পবিত্র মীলাদ শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াম শরীফ উনাদের ব্যাপক আয়োজন করা। নচেৎ ইহকাল ও পরকালে কঠিন কাফ্ফারা আদায় করতে হবে।
মহান আল্লাহ পাক তিনি বিশ্ববাসী সবাইকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ১০ম খলীফা, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ফতওয়া মুবারক উনার উপর আমল করে ইহকাল ও পরকালে হাক্বীক্বী কামিয়াবী হাছিল করার তাওফীক্ব দান করুন।

0 Comments: