অকাট্য দলীল-আদিল্লাহর ভিত্তিতে ‘ছোঁয়াচে রোগে বিশ্বাসী মুশরিকদের’ ভ্রান্ত যুক্তির দাঁতভাঙ্গা জবাব-২


মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ইসলামী শরীয়ত উনার ফতওয়া অনুযায়ী ছোঁয়াচে রোগ বা সংক্রামক রোগ বলতে কিছু নেই। ছোঁয়াচে রোগ বিশ্বাস করা কাট্টা হারাম, কুফরী এবং শিরকীর অন্তর্ভুক্ত-২
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا طِيَرَةَ، وَلَا هَامَةَ وَلَا عَدْوَى، وَلَا صَفَرَ فَقَالَ رَجُلٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّا لَنَأْخُذُ الشَّاةَ الْجَرْبَاءَ، فَنَطْرَحُهَا فِي الْغَنَمِ فَتَجْرَبُ الْغَنَمُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَمَنْ أَعْدَى الْأَوَّلَ.অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, অশুভ বা কুলক্ষণ বলতে কিছু নেই, পেঁচার মধ্যে কোন কুলক্ষণ নেই, ছোঁয়াচে রোগ বলে কিছু নেই এবং সম্মানিত ছফর শরীফ মাসে কোন খারাপী নেই। তখন একজন ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! নিঃসন্দেহে অবশ্যই আমরা একটি খুঁজলি-পাঁচড়া যুক্ত একটি বকরী এনে আমাদের ছাগল পালের মধ্যে ছেড়ে দেই। তারপর আমাদের ছাগলগুলো খুঁজলি-পাঁচড়া যুক্ত হয়ে যায়। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, তাহলে প্রথম বকরীটিকে সংক্রামিত করলো? (মুসনাদে আহমদ ৫/১৫৯, আস সুন্নাহ্ লিইবনে আবী ‘আছিম ১/১২২, মুসনাদে আবী ইয়া’লা ৪/২২১, ছহীহ ইবনে হিব্বান ১৩/৪৮৬, আল মু’জামুল কাবীর লিত ত্ববারনী ১১/২৮৮, আল আহাদীছুল মুখতারাহ্ ১২/৬১, যাওয়াইদে ইবনে হিব্বান ১/৩৪৬ ইত্যাদি)
‘আবূ দাঊদ শরীফ’ উনার ব্যখ্যাগ্রন্থ ‘মু‘আমিলুস সুনান’ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছে,
قوله لا عدوى يريد أن شيئاً لا يعدي شيئاً حتى يكون الضرر من قبله وإنما هو تقدير الله جل وعز وسابق قضائه فيه ولذلك قال فمن أعدى الأول . يقول إن أول بعير جرب من الإبل لم يكن قبله بعير أجرب فيعديه وإنما كان أول ما ظهر الجرب في أول بعير منها بقضاء الله وقدره فكذلك ما ظهر منه في سائر الإبل بعد .অর্থ: “নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কথা মুবারক ‘ছোঁয়াচে বা সংক্রামক রোগ বলে কিছুই নেই’ উনার দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে, কোন কিছুই কোন কিছুকে সংক্রামিত করতে পারে না। আর ক্ষতি (রোগ) যেটা হয়, সেটা তার থেকেই হয়। আর নিঃসন্দেহে এটা মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে পূর্বনির্ধারিত এবং পূর্বফায়ছালাকৃত। আর এ কারণে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, প্রথম উটটিকে কে সংক্রামিত করলো? তিনি বলেন, নিশ্চয়ই উট হতে যে উটটি প্রথম খুঁজলি-পাঁচড়া যুক্ত হলো, তার পূর্বে তো কোন উট খুঁজলি-পাঁচড়া যুক্ত হয়নি যে, তাকে সংক্রামিত করবে। আর নিশ্চয়ই উটের মধ্য হতে প্রথম উটের মধ্যে যে খুঁজলি-পাঁচড়া প্রকাশ পেয়েছে, এটা মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে ফায়ছালাকৃত, যেটা মহান আল্লাহ পাক তিনি নির্ধারণ করে রেখেছিলেন। অনুরূপভাবে প্রথম উটটির পর বাকি যেই উটগুলোর মধ্যে খুঁজলি-পাঁচড়া প্রকাশ পেয়েছে, সেটাও মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে পূর্বনির্ধারিত ফায়ছালা।” সুবহানাল্লাহ! (মু‘আমিলুস সুনান ৪/২৩৩)
ইমাম বাগভী রহমতুল্লাহি উনার লিখিত ‘শারহুস সুন্নাহ শরীফ’ উনার মধ্য রয়েছে,
فقوله : " لا عدوى " يريد أن شيئا لا يعدي شيئا بطبعه ، إنما هو بتقدير الله عز وجل ، وسابق قضائه ، بدليل قوله للأعرابي : " فمن أعدى الأول " يريد أن أول بعير جرب منها ، كان جربه بقضاء الله وقدره ، لا بالعدوى ، فكذلك ما ظهر بسائر الإبل من بعد.
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কথা মুবারক ‘ছোঁয়াচে বা সংক্রামক রোগ বলে কিছুই নেই’ উনার দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে, কোন কিছুরই এমন কোন শক্তি নেই যে, সে অন্য কিছুকে সংক্রামিত করতে পারে। অর্থাৎ কোন কিছুই কোন কিছুকে সংক্রামিত করতে পারে না। নিশ্চয়ই রোগ যেটা হয়, সেটা মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে পূর্বনির্ধারিত এবং পূর্বফায়ছালাকৃত। এ বিষয়ে বেদুঈন ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে উদ্দেশ্য করে বলা ‘প্রথম উটটিকে কে সংক্রামিত করলো?’ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কথা মুবারক দ্বারা দলীল সাব্যস্ত হয়েছে। তিনি উদ্দেশ্য করেছেন, নিশ্চয়ই উটের পাল হতে যে উটটি প্রথম খুঁজলি-পাঁচড়া যুক্ত হলো, তার পূর্বে তো কোন উট খুঁজলি-পাঁচড়া যুক্ত হয়নি যে, তাকে সংক্রমিত করবে। আর উটের পাল হতে প্রথম উটের মধ্যে যে খুঁজলি-পাঁচড়া প্রকাশ পেয়েছে, এটা মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে ফায়ছালাকৃত, যেটা মহান আল্লাহ পাক তিনি নির্ধারণ করে রেখেছিলেন। এটা ছোঁয়াচের কারণে হয়নি। অনুরূপভাবে প্রথম উটটির পর বাকি যেই উটগুলোর মধ্যে খুঁজলি-পাঁচড়া প্রকাশ পেয়েছে, সেটাও মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে পূর্বনির্ধারিত এবং ফায়ছালাকৃত।” সুবহানাল্লাহ! (শারহুস সুন্নাহ শরীফ ১২/১৬৯)
আল্লামা ইবনে আব্দুল বার রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন,
أَمَّا قَوْلُهُ لَا عَدْوَى فَمَعْنَاهُ أَنَّهُ لَا يُعْدِي شَيْءٌ شَيْئًا وَلَا يُعْدِي سَقِيمٌ صَحِيحًا وَاللَّهُ يَفْعَلُ مَا يَشَاءُ لَا شَيْءَ إِلَّا مَا شَاءَঅর্থ: “নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কথা মুবারক ‘ছোঁয়াচে বা সংক্রামিত রোগ বলে কিছুই নেই’ উনার অর্থ হচ্ছে, কোন কিছুই কোন কিছুকে সংক্রামিত করতে পারে না এবং কোন রোগী কোন সুস্থ ব্যক্তিকে সংক্রামিত করতে পারে। অর্থাৎ কোন রোগী কোন সুস্থ ব্যক্তিকে রোগী বানাতে পারে না। বরং মহান আল্লাহ পাক তিনি যা ইচ্ছা তাই করেন। উনার ইচ্ছার বাইরে কোন কিছু হয় না।” সুবহানাল্লাহ! (আল ইস্তিযকার ৯/৩৮৫)
মুয়াত্ত¡া শরীফ উনার ব্যাখ্যাগ্রন্থ ‘আল মুন্তাক্বা শরীফ’ উনার মধ্যে রয়েছে,
قَوْلُهُ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم لَا عَدْوَى قَالَ :عِيسَى بْنُ دِينَارٍ مَعْنَاهُ لَا يُعْدِي شَيْءٌ شَيْئًا أَيْ لَا يَتَحَوَّلُ شَيْءٌ مِنْ الْمَرَضِ إِلَى غَيْرِ الَّذِي هُوَ بِهِঅর্থ: “নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কথা মুবারক ‘ছোঁয়াচে বা সংক্রামক রোগ বলে কিছুই নেই’। হযরত ঈসা ইবনে দীনার রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, উনার অর্থ হচ্ছে, কোন কিছুই কোন কিছুকে সংক্রামিত করতে পারে না অর্থাৎ রোগী যেই রোগে ভুগছে, সেই রোগ থেকে কোনো কিছুই অন্যের নিকট স্থানান্তরিত হয় না।” সুবহানাল্লাহ! (আল মুনতাক্বা ৭/২৬৩, তানওইরুল হাওলিক ২/২৩১)
মুসলিম শরীফ উনার বিশ্বখ্যাত শরাহগ্রন্থ ‘আল মু’লিম বিফাওয়াইদিল মুসলিম’ উনার মধ্যে রয়েছে,
وقوله: لاَ عَدوى.تفسيره أن العرب كانت تعتقد أنّ المرض يعدي وينتقل إلى الصحيح فأنكر صلى الله عليه وسلم اعتقادهم.অর্থ: “নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কথা মুবারক ‘ছোঁয়াচে বা সংক্রামক রোগ বলে কিছুই নেই’। উনার ব্যাখ্যা হচ্ছেন- নিশ্চয়ই জাহিলী যুগে আরবরা এটা বিশ্বাস করতো যে, রোগ অসুস্থ ব্যক্তির থেকে সুস্থ ব্যক্তির দিকে সংক্রমিত হয়, স্থানান্তরিত হয়। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাদের এই বিশ্বাসকে অস্বীকৃত জ্ঞাপন করেছেন, বাতিল বলে ঘোষণা করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (আল মু’লিম বিফাওয়াইদিল মুসলিম)
মুসলিম শরীফ উনার বিশ্বখ্যাত শরাহগ্রন্থ ‘আল কাওকাবুল ওয়াহ্হাজ’ উনার মধ্যে রয়েছে,
(لا عدوى) أي لا سراية لمرض عن صاحبه إلى غيرهঅর্থ: “নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কথা মুবারক ‘ছোঁয়াচে বা সংক্রামক রোগ বলে কিছুই নেই’। অর্থাৎ রোগ তার ছাহিব তথা রোগীর থেকে অন্যের দিকে কখনোই স্থানান্তরিত হয় না।” সুবহানাল্লাহ! (আল কাওকাবুল ওয়াহ্হাজ ২২/২৯৮)
এ জন্যই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَخَذَ بِيَدِ مَجْذُومٍ فَأَدْخَلَهُ مَعَهُ فِي الْقَصْعَةِ ثُمَّ قَالَ كُلْ بِسْمِ اللَّهِ ثِقَةً بِاللَّهِ وَتَوَكُّلًا عَلَيْهِঅর্থ: “হযরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন। নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একজন কুষ্ঠরোগীর হাত ধরলেন। অতঃপর তার হাতকে উনার সাথে (খাবার খাওয়ানোর জন্য) উনার পাত্র মুবারক-এ প্রবেশ করালেন। তারপর ইরশাদ মুবারক করলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার নাম মুবারক নিয়ে উনার উপর পূর্ণ বিশ্বাস রেখে এবং পূর্ণ ভরসা করে খাবার গ্রহণ করুন।” (তিরমিযী শরীফ, হাদীছ শরীফ নং ১৮১৭/ আবূ দাউদ শরীফ হাদীছ শরীফ নং ৩৯২৫, সুনানে ইবনে মাজাহ্ হাদীছ শরীফ নং ৩৫৪২, মুসনাদে আবী ইয়া’লা ৩/৩৫৪, মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ শরীফ ৫/১৪১, আল মুন্তাখাব মিন মুসনাদে আব্দ ইবনে হুমাইদ ১/৩২৯, আমালুল ইয়াওমি ওয়াল লাইলাতি ১/৪১২, আল আদাবু লিল বাইহাক্বী ১/১৪৬, শু‘আবুল ঈমান ২/৪৮৮, শারহু সুনানি ইবনে মাজাহ লিস সুয়ূত্বী ১/২৭১, বাযলু মাজহূদ ফী হাল্লি সুনানি আবী দাঊদ ১১/৬৫৩, আনীসুস সারী, আওনুল মা’বূদ ২১/২৪৭, আল মাসালিক ফী শারহি মুয়াত্ত¡াই মালিক ৭/৪১ ইত্যাদি)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ كَانَ لَنَا مَوْلَى مَجْذُومٌ فَكَانَ يَأْكُلُ فِي صِحَافِي وَيَشْرَبُ فِي أَقْدَاحِي وَيَنَامُ عَلَى فِرَاشِيঅর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ্ আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাদের একজন কুষ্ঠরোগী গোলাম ছিলেন। তিনি আমার পাত্র মুবারক-এ খাবার খেতেন, আমার বাটি মুবারক-এ পানি পান করতেন এবং আমার বিছানা মুবারক-এ ঘুমাতেন।” (শারহুন নববী, তুহফাতুল আহওয়যী, আওনুল মা’বূদ, নাইলুল আওত্বার ইত্যাদি)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত রয়েছে,
عن أبي ذر قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم كُلْ مَعَ صَاحِبِ الْبَلَاءِ تَوَاضُعًا لِرَبِّك وَإِيمَانًاঅর্থ: “হযরত আবূ যর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তুমি তোমার রব মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি বিনয়ী হয়ে এবং পূর্ণ বিশ্বাস রেখে রোগ-মুছীবতগ্রস্ত ব্যক্তির সাথে খাদ্য গ্রহণ করো।” (নাখবুল আফকার ফী তানক্বীহি মাবানিইল আখবার ফী শারহি মা‘আনিইল আছার লিবাদরিদ্দীন আইনী হানাফী ১৪/৯৪, আওনুল মা’বূদ ১০/৩০০, আত তানওইর ৮/২২১, আল ফাতহুল কাবীর ২/৩০০, জাম‘উল জাওয়ামি’ ৬/৪৪৩, ফাইযুল ক্বাদীর, জামিউছ ছগীর ইত্যাদি)
‘মুয়াত্ত শরীফ’ উনার বিশ্বখ্যাত শরাহগ্রন্থ ‘শারহুয যারক্বানী’ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছে,
্রأَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: لَا عَدْوَى أَيْ لَا يُعْدِي شَيْءٌ شَيْئًا، أَيْ لَا يَسْرِي، وَلَا يَتَجَاوَزُ شَيْءٌ مِنَ الْمَرَضِ إِلَى غَيْرِ مَنْ هُوَ بِهِ،অর্থ: “নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘ছোঁয়াচে বা সংক্রামক রোগ বলে কিছুই নেই’। অর্থাৎ কোন কিছুই কোন কিছুকে সংক্রমিত করতে পারে না অর্থাৎ রোগী যেই রোগে ভুগছে, সেই রোগ থেকে কোনো কিছুই অন্যের নিকট ভ্রমণ করে না এবং যায় না।” সুবহানাল্লাহ! (শারহুয যারক্বানী ‘আলাল মুওয়াত্ত¡া ৪/৪২৪)
মুয়াত্ত শরীফ উনার বিশ্বখ্যাত শরাহগ্রন্থ ‘আল মুন্তাক্বা উনার মধ্যে রয়েছে,
أن العرب كانت تعتقد أن الصحيح إذا جاور المريض أعداه مرضه أي تعلق به أو انتقل إليهঅর্থ: “জাহিলী যুগে আরবরা এটা বিশ্বাস করতো যে, কোন সুস্থ ব্যক্তি যখন কোন রোগীকে দেখতে যায়, তখন অসুস্থ ব্যক্তির রোগ সুস্থ ব্যক্তিকে সংক্রমিত করে। অর্থাৎ সুস্থ ব্যক্তির সাথে ঐ রোগটা সংগযুক্ত হয় অথবা রোগীর রোগটা সুস্থ ব্যক্তির নিকট স্থানান্তরিত হয়।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (আল মুনতাক্বা ৭/২৬৩)
‘আবূ দাঊদ শরীফ’ উনার ব্যখ্যাগ্রন্থ ‘আউনুল মা’বূদ’ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছে,
)لَا عَدْوَى (نَفْي لِمَا كَانُوا يَعْتَقِدُونَهُ مِنْ سِرَايَة الْمَرَض مِنْ صَاحِبه إِلَى غَيْرهঅর্থ: “ছোঁয়াচে বা সংক্রামক রোগ বলে কিছুই নেই’। এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মাধ্যমে ‘যারা এই আকীদা পোষণ করে থাকে যে, রুগ্ন ব্যক্তির রোগ তার থেকে অন্যের উপর যায়।’ তার আক্বীদাকে বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে।” সুবহানাল্লাহ! (আওনুল মা’বূদ শারহু সুনানি আবী দাঊদ ৯/৮৫৯)
মুয়াত্ত শরীফ উনার বিশ্বখ্যাত শরাহগ্রন্থ ‘শারহুয যারক্বানী’ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছে,
(لا عدوى) أي لا سراية لعلة من صاحبها لغيره يعني أن ما يعتقده الطبائعيون من أن العلل المعدية مؤثرة لا محالة باطل بل هو متعلق بالمشيئة الربانيةঅর্থ: “(নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,) ‘ছোঁয়াচে বা সংক্রামক রোগ বলে কিছুই নেই’। অর্থাৎ রোগ তার ছাহিব তথা রোগীর থেকে অন্যের দিকে স্থানান্তরিত হয় না। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ প্রকৃতিবাদী বা নাস্তিকরা যেটা বিশ্বাস করে যে, ‘সংক্রামক রোগসমূহ হচ্ছে ক্রিয়াশীল।’ না‘ঊযুবিল্লাহ! তাদের এই বক্তব্য নিঃসন্দেহে ভিত্তিহীন, বাতিল। বরং রোগের বিষয়টি খোদায়ী ইচ্ছা তথা মহান আল্লাহ পাক উনার ইরাদার সাথে সম্পৃক্ত।” সুবহানাল্লাহ! (ফাইযুল ক্বাদীর ৬/৫৬১)
সুতরাং করোনা কোন ছোঁয়াচে রোগ নয়। এটা হচ্ছে- কাফির-মুশরিকদের প্রতি এবং তাদের গোলামদের প্রতি এক কাট্টা কঠিন গযব। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শরীয়ত উনার ফতওয়া অনুযায়ী ছোঁয়াচে রোগ বা সংক্রামক রোগ বলতে কিছু নেই। ছোঁয়াচে রোগ বিশ্বাস করা কাট্টা হারাম, কুফরী ও শিরকীর অন্তর্ভুক্ত। যা অসংখ্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত। সুবহানাল্লাহ!
মূলত, মুসলমান দেশে আযান পরিবর্তন, দ্বীনি মাহফিল বন্ধ, জুমুয়া ও জামাতে আসতে নিষেধ করা এবং পবিত্র মসজিদসমূহ বন্ধ করা ইত্যাদি সবই কাফির-মুশরিকদের দীর্ঘদিনের পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্র। যা বর্তমান সময়ে কাফির-মুশরিকদের দোসর উলামায়ে সূ, মুনাফিক ও গোমরাহ শাসকরা করোনার অযুহাতে জারী করতে চাচ্ছে। না‘ঊযুবিল্লাহ!
কাজেই, করোনার অযুহাতে কাফির-মুশরিকদের ষড়যন্ত্র জারী করার অপচেষ্টা হতে বিরত থাকা সকলের জন্য ফরজে আইন। একইভাবে কাফির-মুশরিকদের ষড়যন্ত্র জারী করার ক্ষেত্রে বাধা দেয়া, প্রতিবাদ করা, প্রতিরোধ করা সকলের জন্য ফরজে আইন এবং ঈমানী দায়িত্ব।
মহান আল্লাহ পাক তিনি সবাইকে তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!

0 Comments: