দুর্ভিক্ষ, আযাব গযব বালা মুছিবত থেকে মুক্তি পাওয়ার একমাত্র ক্ববুল যোগ্য আমল হলো সারা কায়িনাত ব্যাপী সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ পালন করা।



হে মুসলমান সম্প্রদায়, কাফের মুশরিকদের সকল প্রকার নির্যাতন ও আজাব গজব থেকে বাছতে চাইলে এবং নিরাপত্তা ও স্বস্তি, জীবিকার মানোন্নয়ন, শিশু ও সম্পদ বৃদ্ধি এবং শহরের শান্তি অর্জন করতে হলে সার্বক্ষণিকভাবে ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করতে হবে।

কিছু লোক এমন আছে যারা বলে, “সারা বিশ্বে মুসলমানরা নির্যাতিত হচ্ছে, আর আপনারা ঈদে মীলাদুন নবী উপলক্ষে খুশি করছেন।” যারা এ ধরনের বক্তব্য দেয় তারা নিতান্তই জাহেল বা মূর্খ। একটি কথা কারোই অস্বীকার করার কোন উপায় নেই যে, মুসলমানরা ইসলাম পালন ছেড়ে দেওয়ায় দরূণ এই করুন অবস্থা। মুসলমানরা কুরআন শরীফ হাদীস শরীফ থেকে দূরে সরে যাওয়ায় মুসলমানদের এত হেনস্থা ও অধপতন।
কিন্তু কেন এই অবস্থা ?? মুসলমানরা আসলে কোন আমল ছেড়ে দিয়েছে ??

এই বিষয়ে মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআন শরীফে ঈরশাদ মুবারক করেন- ‘‘যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় করো, তবে আমি অবশ্যই তোমাদের বাড়িয়ে দেবো, আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, নিশ্চয় আমার আযাব বড় কঠিন।’’ (সূরা ইব্রাহীম : ৭)

অবশ্যই আমাদের জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার তরফ থেকে সবচেয়ে বড় নিয়ামত হচ্ছে রাসূলে আকরাম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। উনাকে পাওয়ার জন্য আমরা শুকরিয়া আদায় করতে হবে। আর সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ তথা ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেই শুকরিয়া আদায় করার জনই করা হয় । বর্তমানে মুসলমানরা যদি সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ তথা ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করতে পারতো, তবে অবশ্যই মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের নিয়ামত আরো বৃদ্ধি করে দিতেন, মুসলমানদের সমৃদ্ধি দিতেন। কিন্তু যেহেতু মুসলমানরা তা সঠিকভাবে করছে না তাই মুসলমানদের এত করুণ অবস্থা। মুসলমানরা ধাপে ধাপে নির্যাতিত হচ্ছে।

এই বিষয়ে হাফিজুল হাদীছ আবুল ফয়েয হযরত আব্দুর রহমান ইবনুল জাওযী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি লিখেন,

لَازَالَ اَهْلُ الْـحَرَمَيْنِ الشَّرِيْفَيْنِ وَالْـمِصْرِ وَالْيَمَنِ وَالشَّامِ وَسَائِرِ بِلَادِ الْعَرَبِ مِنَ الْـمَشْرِقِ وَالْـمَغْرِبِ يَـحْتَفِلُوْنَ بِـمَجْلِسِ مَوْلِدِ النَّبِىّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَيَفْرَحُوْنَ بِقُدُوْمِ هِلَالِ رَبِيْعِ الْاَوَّلِ وَيَغْتَسِلُوْنَ وَيَلْبَسُوْنَ الثّيَابَ الْفَاخِرَةَ وَيَتَزَيّـِنُوْنَ بِاَنْوَاعِ الزّيْنَةِ وَيَتَطَيّـِبُوْنَ وَيَكْتَحِلُوْنَ وَيَأْتُوْنَ بِالسُّرُوْرِ فِىْ هٰذِهِ الْاَيَّامِ وَيَبْذُلُوْنَ عَلَى النَّاسِ بِـمَا كَانَ عِنْدَهُمْ مِنَ الْـمَضْرُوْبِ وَالْاَجْنَاسِ وَيَهْتَمُّوْنَ اِهْتِمَامًا بَلِيْغًا عَلَى السّمَاعِ وَالْقِرَاءَةِ لِـمَوْلِدِ النَّبِىّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَيَنَالُوْنَ بِذَالِكَ اَجْرًا جَزِيْلًا وَفَوْزًا عَظِيْمًا.

অর্থ : “হারামাইন শরীফাইন, মিশর, ইয়ামেন, সিরিয়া এবং পূর্ব থেকে পশ্চিম পর্যন্ত আরবের সকল শহর ও নগরের অধিবাসীদের মধ্যে অব্যাহতভাবে এ নিয়ম চলে আসছে যে, তারা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র মীলাদ শরীফ উনার অনুষ্ঠান করেছেন। পবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ উনার নতুন চাঁদের আগমনে আনন্দিত হন, গোসল করেন, দামী পোশাক পরিধান করেন, নানা প্রকার সাজ-সজ্জা করেন, সুগন্ধি ব্যবহার করেন, সুরমা লাগান, এই দিনগুলোতে আনন্দ উৎসব করেন, ধন-সম্পদ, টাকা-পয়সা মানুষের মধ্যে বিলিয়ে দেন এবং অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ ও শ্রবণের ব্যবস্থা করে অধিক ছাওয়াব এবং বিরাট সাফল্য অর্জন করেন। উনারা পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করে যে নিরাপত্তা ও স্বস্তি, জীবিকার মানোন্নয়ন, শিশু ও সম্পদ বৃদ্ধি এবং শহরের শান্তি ও উনাদের সাফল্য অর্জন করেছেন তা প্রকাশ করতেন।” (তাফসীরে রূহুল বয়ান লি শেখ ইসমাইল হাক্কী রহমতুল্লাহি আলাইহি- ৯ম খ-, পৃষ্ঠা ৫৬; মীলাদুল উরুস- উর্দু “বয়ান-ই-মিলাদুন নবী”, পৃষ্ঠা ৩৪-৩৫, লাহোর; দুররুল মুনাজ্জাম, পৃষ্ঠা ১০০-১০১; মীলাদুন নবী, পৃষ্ঠা ৫৮)

সুতরাং যারা বলে- “সারা বিশ্বে মুসলমানরা নির্যাতিত হচ্ছে, আর আপনারা ঈদে মীলাদুন নবী নিয়ে খুশি করছেন?” তারা জাহিল, অকৃতজ্ঞ ও লানতপ্রাপ্ত ছাড়া অন্যকিছু নয়।
#7RobiulAwalShareef
#12RobiulAwalShareef
#90DaysMahfil
#RajarbagDorberShareef
sunnat.info
Sm40.com

0 Comments: