মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদুল আ'ইয়াদ শরীফ পালন করার নিয়ত করার কারণে মৃত্যুদণ্ড থেকে মুক্তিলাভ



মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদুল আ'ইয়াদ শরীফ পালন করার নিয়ত করার কারণে মৃত্যুদণ্ড থেকে মুক্তিলাভ

কিতাবে বর্ণিত রয়েছেন

إنه كان في زمان الخليفة عبد الملك بن مروان شاب حسن الصورة في الشام وكان يلهو بركوب الخيل فبينما هو ذات يوم على ظهر حضانه إذ أجمل الحصان وحمله في سكك الشام ولم يكن له قدرة على منعه فوقع طريقه على باب الخليفة فصادف ولده ولم يقدر الولد على رد الحصان فصدمة بالفرس وقتله فوصل الخبر إلى الخليفة فأمر بإحضاره فلما أن أشرف إليه خطر على باله أن قال إن خلصنى الله تعالى من هذه الواقعة أعمل وليمة عظيمة واستقرى فيها مولد النبي صلى الله عليه وسلم فلما حضر قدامه ونظر إليه ضحك بعد ما كان يخلفه الغضب فقال يا لهذا أتحسن السخر قال لا والله يا أمير المؤمنين فقال عفوت عنك ولكن قل لي ماذا قلت قال قلت إن خلصنى الله تعالى من هذه الواقعة الجسيمة أعمل له وليمة لأجل مولد النبي صلى الله عليه وسلم فقال الخليفة قد عفوت عنك وهذه ألف دينار لأجل مولد النبي صلى الله عليه وسلم وأنت في حل من دم ولدي فخرج الشاب وغفى عن القصاص وأخذ ألف دينار ببركة مولد النبي صلى الله عليه وسلم

অর্থ: “কথিত উমাইয়্যা খলীফা আব্দুল মালিক ইবনে মারওয়ান (ইবনে হাকাম ইবনে আবুল আছ আমর ইবনে উমাইয়্যাহ্) এর শাসনামলে শামদেশে একজন সুদর্শন যুবক ছিলেন। তিনি অশ্বারোহন খুব পছন্দ করতেন। একদিনের কথা যখন তিনি উনার একটি উন্নত জাতের ঘোড়ার পিঠে আরোহন করেন, তখন হঠাৎ ঘোড়াটি ভয় পেয়ে উনাকে নিয়ে শামদেশের রাস্তাসমূহে চলতে থাকে। কিন্তু ঘোড়াটিকে নিয়ন্ত্রণ করার উনার কোনো ক্ষমতা ছিলো না। ফলে ঘোড়াটি কথিত খলীফা আব্দুল মালিকের (রাজপ্রাসাদের) দরজায় গিয়ে উপনীত হয় । তখন কথিত খলীফা আব্দুল মালিকের এক ছেলে আকস্মিকভাবে ঘোড়ার সামনে এসে পড়ে, আর সেও ঘোড়াটিকে তাড়িয়ে দিতে সক্ষম হলো না। তখন ঘোড়াটি কথিত


খলীফার ছেলেকে আঘাত করে হত্যা করে ফেলে। এই সংবাদ কথিত খলীফার নিকট পৌঁছলে সে যুবক ছেলেটিকে তার সামনে উপস্থিত করার জন্য আদেশ করে। অতঃপর যখন কথিত খলীফা (রাজপ্রাসাদের) উপর থেকে উনার দিকে দৃষ্টি দেয়, তখন উনার অন্তরে এই কথার উদয় হয় যে, ‘মহান আল্লাহ পাক তিনি যদি আমাকে এই কঠিন বিপদ থেকে উদ্ধার করেন, তাহলে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদুল আ'ইয়াদ শরীফ উনার সম্মানার্থে আমি একটি বড় ওলীমা বা খাবারের মজলিসের ব্যবস্থা করে সেখানে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মু'জিযাহ্ শরীফসমূহ, ঘটনা মুবারকসমূহ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে আলোচনা করবো, বিশ্লেষণ করবো। অতঃপর যখন সেই যুবক কথিত খলীফার সামনে উপস্থিত হন, তখন কথিত খলীফার সেই যুবক উনাকে গলা টিপে হত্যা করার মত গোস্বা থাকা সত্ত্বেও উনাকে দেখে হেসে দিয়ে বললো- 'হে যুবক! আপনি কি নিখুঁত জাদু করেন?' জবাবে যুবক বললেন- 'হে আমীরুল মু'মিনীন! মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! আমি জাদু করিনা।' অতঃপর কথিত খলীফা বললো, “আমি আপনার অপরাধ ক্ষমা করে দিলাম; কিন্তু আপনি কি বলেছেন, তা আমাকে বলুন।' যুবক ছেলেটি বললেন, 'আমি বলেছিলাম- 'মহান আল্লাহ পাক তিনি যদি আমাকে এই কঠিন বিপদ থেকে উদ্ধার করেন, তাহলে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদুল আ'ইয়াদ শরীফ উনার সম্মানার্থে আমি একটি বড় ওলীমা বা খাবারের মজলিসের ব্যবস্থা করবো।' তখন কথিত খলীফা বললো, 'আমি আপনাকে ক্ষমা করে দিয়েছি। আর এই নিন ১ হাজার দীনার (স্বর্ণমুদ্রা), মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদুল আ'ইয়াদ শরীফ উনার সম্মানার্থে আপনাকে আমি এটা হাদিয়া করলাম এবং আপনি আমার ছেলের হত্যার অপরাধ থেকেও মুক্ত।' অতঃপর যুবক ছেলেটি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদুল আ'ইয়াদ শরীফ উনার সম্মানার্থে মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি থেকে ক্ষমা পেয়ে এবং এক হাজার স্বর্ণ মুদ্রা গ্রহণ করে বের হয়ে গেলেন।” সুবহানাল্লাহ! (ইয়ানাতুত ত্বালিবীন ৩/৪১৫)

অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদুল আ'ইয়াদ শরীফ পালন করা এবং উনার সম্মানার্থে খরচ করার নিয়ত করলেই মৃত্যুদণ্ডসহ ইহকালীন-পরকালীন সমস্ত প্রকার বিপদ-আপদ, বালা-মুসীবত থেকে মুক্তি লাভ করা যায়। সুবহানাল্লাহ!

উপরোক্ত ঘটনা মুবারক বর্ণনা করার পর ‘ইয়ানাতুত ত্বালিবীন' কিতাবের



লেখক আল্লামা সাইয়্যিদ আবূ বকর মক্কী দিমইয়াতী শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন,

وإنما أطلت الكلام في ذلك لأجل أن يعتني ويرغب جميع الإخوان في قراءة مولد سيد ولد عدنان صلى الله عليه وسلم لأن من لأجله خلقت الأرواح والأجسام بحق أن يهدي له الروح والمال والطعام وفقنا الله وإياكم لقراءة مولد نبيه الكريم صلى الله عليه وسلم على الدوام وإنفاق المال لأجله في سائر الأوقات والأيام. أمين

অর্থ: “প্রকৃতপক্ষে আমি এই বিষয়ে কথা দীর্ঘায়িত করেছি এই কারণে যে, যাতে সমস্ত মুসলমান উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদুল আ'ইয়াদ শরীফ পালনে মনযোগী এবং আগ্রহী হন। কেননা তিনিই সেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওজুদ পাক মুবারক যে, উনার সম্মানার্থেই সমস্ত রূহ এবং জিসিম সৃষ্টি করা হয়েছে অর্থাৎ সমস্ত কায়িনাত সৃষ্টি করা হয়েছে। উনার সম্মানার্থেই জান, মাল, খাদ্য-দ্রব্য সমস্ত কিছু হাদিয়া পেশ করা সকলের জন্য দায়িত্ব-কর্তব্য অর্থাৎ ফরয। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে এবং আপনাদেরকে দায়িমীভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদুল আ'ইয়াদ শরীফ পালন করার এবং উনার সম্মানার্থে, উনার জন্যই সর্বকালে এবং সবসময় সমস্ত ধন-সম্পদ ব্যয় করার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!” (ই—য়ানাতুত ত্বালিবীন ৩/৪১৫)

0 Comments: