আদ্ দুরারুল মুখতারাহ্ - ফী নিসবাতি সুলত্বানিন নাছীর (১ম খণ্ড) পর্ব-২


২. নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত নির্দেশ মুবারক-এ আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট সবচেয়ে বড় ওলীউল্লাহ হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বাই'আত গ্রহণ-

এটা চিরন্তন সত্য কথা যে

قدر نعمت بعد زوال

অর্থ: “সম্মানিত নি'য়ামত মুবারক উনার কদর সম্মানিত নি'য়ামত মুবারক হস্তচ্যুত হলে বুঝা যায়।”

আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বাহির, আছ ছমাদ মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যে আমাদের জন্য, এই উম্মাহর জন্য, সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের জন্য কতো বড় মহাসম্মানিত নি'য়ামত মুবারক, সেটা সকলের চিন্তা কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! সম্মানিত নি'য়ামত মুবারক পেয়ে সম্মানিত নি'য়ামত মুবারক উনার কদর করা এবং সেই সম্মানিত নি'য়ামত মুবারক সম্পর্কে বর্ণনা করা যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত নির্দেশ মুবারক। সুবহানাল্লাহ! সম্মানিত নি'য়ামত মুবারক পেয়ে সম্মানিত নি'য়ামত মুবারক উনার গুরুত্ব উপলব্ধি করা আবশ্যক। অন্যথায় প্রাপ্ত সম্মানিত নি'য়ামত মুবারক উনার কদর করা সম্ভব নয়। আর প্রাপ্ত সম্মানিত নি'য়ামত মুবারক উনার গুরুত্ব উপলব্ধি করার জন্য প্রাপ্ত সম্মানিত নি'য়ামত মুবারক সম্পর্কে বর্ণনা করা, আলোচনা করা ফরয এবং এটা সম্মানিত নি'য়ামত মুবারক প্রাপ্তির একটা কৃতজ্ঞতা প্রকাশও বটে। এই জন্য যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন

وأما بنعمة ربك فحدث.

অর্থ: “আপনার রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাকে যেই সম্মানিত নি'য়ামত মুবারক দিয়েছেন, সেই সম্মানিত নি'য়ামত মুবারক সম্পর্কে আপনি বর্ণনা করুন, আলোচনা করুন।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা দুহা শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১১)

আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন

عن حضرت النعمان بن بشير رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم التحدث بنعمة الله شكر وتركها كفر ومن لا يشكر القليل لا يشكر الكثير ومن لا يشكر الناس لا يشكر الله

অর্থ: “হযরত নুমান ইবনে বাশীর রদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে প্রাপ্ত সম্মানিত নি'য়ামত মুবারক সম্পর্কে বর্ণনা করা শুকরিয়া হিসেবে গণ্য এবং বর্ণনা না করা কুফরী। যে ব্যক্তি সামান্য সম্মানিত নি'য়ামত মুবারক পেয়ে শুকরিয়া আদায় করে না, সে অধিক সম্মানিত নি'য়ামত মুবারক পেয়েও শুকরিয়া আদায় করবে না। যে ব্যক্তি মানুষের শুকরিয়া আদায় করে না, সে মহান আল্লাহ পাক উনারও শুকরিয়া আদায় করতে পারবে না।” না—ঊযুবিল্লাহ! (শু‘য়াবুল ঈমান শরীফ, মুসনাদে আহমদ, আত ত্ববারনী, মাজমাউয যাওয়ায়িদ, মুসনাদে বাযযার, কাশফুল খফা, আল ফাতহুল কাবীর ইত্যাদি)

সেটাই আমরা দেখতে পাই যখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত হিজরত মুবারক করে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র

তাশরীফ মুবারক রাখেন, তখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার অধিবাসীগণ উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে স্বাগত মুবারক জানিয়ে পাঠ করেছিলেন

طلع البدر علينا ... من ثنيات الوداع

وجب الشكر علينا ... ما دعا الله داع

أيها المبعوث فينا... جفت بالأمر المطاع

অর্থ: “ছানিয়াতুল বিদা হতে আমাদের উপর পূর্ণচন্দ্র উদিত হয়েছেন। আমাদের উপর শুকরিয়া আদায় করা ফরয-ওয়াজিব হয়ে গেছে এজন্য যে, দায়ি' তথা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য আমাদেরকে সম্মানিত আহ্বান মুবারক করছেন। সুবহানাল্লাহ! হে মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে প্রেরিত মহাসম্মানিত রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি আমাদের মাঝে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র তাশরীফ মুবারক নিয়েছেন অনুসরণীয় বিষয়বস্তু তথা মহাসম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনাকে নিয়ে।” সুবহানাল্লাহ! (আল বিদায়াহ্ ওয়ান নিহায়াহ্, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ, রযীন ইত্যাদি)

আমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশার্থে এবং তা'য়াল্লুক-নিসবত ও রেযামন্দি সন্তুষ্টি মুবারক লাভের প্রত্যাশায় একখানা বিশেষ মহাসম্মানিত ওয়াক্বেয়াহ্ মুবারক বর্ণনা করবো। যা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘ফালইয়াফর″ শরীফ’ সাইয়্যিদুল আ'ইয়াদ শরীফ পালনের শামিল। সুবহানাল্লাহ! তাওফীক্ব ভিক্ষা চাচ্ছি সহজ-সরল, সুন্দর ও সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করার। আমীন!

তবে উক্ত বিশেষ মহাসম্মানিত ওয়াক্বেয়াহ্ মুবারক বর্ণনা করার পূর্বে তা ভালোভাবে উপলব্ধি করার লক্ষ্যে প্রাসঙ্গিক একখানা ওয়াক্বেয়াহ্ মুবারক উনার অবতারণা- হযরত আব্দুল হক্ব মুহাদ্দিছ দেহলভী

রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে চিনেন না, এমন কোনো আলিম পৃথিবীর বুকে নেই। উনারই জীবনী মুবারক-এ ঘটে যায় জগতবাসীর জন্য একটি শিক্ষনীয় ঘটনা। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে উনার গভীর তা'য়াল্লুক-নিসবত মুবারক। হযরত আব্দুল হক মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি প্রতিদিন বাদ 'ইশা মুরাকাবায় বসে হিন্দুস্থান থেকে চলে যেতেন সুদূর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দীদার মুবারক-এ। সুবহানাল্লাহ! নিয়মিতভাবে এই তরতীরে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করতেন তিনি। এভাবে বেশ কয়েক বছর অতিবাহিত হলো। একদিন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক-এ তিনি আরজী পেশ করলেন- ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি আপনার আরো অধিক সম্মানিত তা'য়াল্লুক-নিসবত, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করতে চাই। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, 'যদি তাই হয়, তাহলে আপনি শায়েখ আহমদ ফারূক্বী সিরহিন্দী মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট যান, উনার সম্মানিত হাত মুবারক-এ বাই'আত গ্রহন করুন এবং উনার ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করুন।' সুবহানাল্লাহ!

হযরত আব্দুল হক্ব মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি চুপ হয়ে গেলেন। তিনি আর কিছু বললেন না। তিনি প্রতিদিনের মতো আজও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার শেষে উনার বাসগৃহে চলে আসলেন। উনার মাথা চক্কর খেতে লাগলো। কারণ, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ‘যেই শায়েখ আহমদ ফারূক্বী সিরহিন্দী মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট যেতে, উনার সম্মানিত হাত

মুবারক-এ বাইয়াত হতে এবং উনার ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করতে হযরত আব্দুল হক্ব মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে নির্দেশ মুবারক দিয়েছেন তিনি তো উলামায়ে সূ'দের কথায় 'সেই শায়েখ আহমদ ফারূক্বী সিরহিন্দী মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি' উনাকে কাফির ফতওয়া দিয়ে উনার বিরুদ্ধে একখানা বই লিখেছেন!

হযরত আব্দুল হক্ব মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সকালে উঠে তাড়াতাড়ি লিখিত সেই বইখানা স্বহস্তে ছিড়ে টুকরো টুকরো করে আগুনে পুড়িয়ে নিশ্চিহ্ন করে দিলেন। রওয়ানা হলেন সিরহিন্দ শরীফ পানে। যদিও তিনি তখন ক্বাদেরীয়া ত্বরীক্বাহ উনার একজন বিশিষ্ট বুযূর্গ এবং খিলাফতপ্রাপ্ত খলীফা। তারপরেও তিনি সিরহিন্দ শরীফ গেলেন এবং হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সম্মানিত হাত মুবারক-এ বাই'আত গ্রহণ করে উনার ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করার মাধ্যম দিয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আরো অধিক সম্মানিত তা'য়াল্লুক-নিসবত, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করলেন । সুবহানাল্লাহ!

অর্থাৎ হযরত আব্দুল হক্ব মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সম্মানিত হাত মুবারক-এ বাই'আত গ্রহণ করে ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করার মাধ্যম দিয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আরো অধিক তা'য়াল্লুক-নিসবত, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করলেন। সুবহানাল্লাহ!

হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার শান মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক বলার অপেক্ষাই রাখে না। তিনি হচ্ছেন মুজাদ্দিদে আলফে ছানী তথা দ্বিতীয় সহস্রাব্দের মুজাদ্দিদ। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়, তিনি হচ্ছেন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহুম উনাদের পরে সবচেয়ে বড় ওলীউল্লাহ । সুবহানাল্লাহ! তাহলে তিনি কতো সীমাহীন মর্যাদা-মর্তবা, শান-শুয়ূনাত, মাক্বামত মুবারক উনাদের অধিকারী, সেটা এখান থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায়।

সুবহানাল্লাহ! উনার শান মুবারক-এ স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন

يبعث رجل على أحد عشر مائة سنة وهو نور عظيم إسمه إسمى السلطانين الجابرين يدخل الجنة بشفاعته رجال الوفا بين

অর্থ: “একাদশ হিজরী শরীফ-এ একজন মহান ব্যক্তিত্ব মুবারক উনার আবির্ভাব ঘটবে, তিনি হচ্ছেন ‘নূরুন আযীম তথা মহান নূর'। সুবহানাল্লাহ! উনার নাম মুবারক হবে আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসম বা নাম মুবারক-এ। তিনি দুই যালিম বাদশাহর মাঝে তাশরীফ মুবারক নিবেন। উনার মুবারক শাফায়াতে (সুপারিশে) হাজার হাজার (অসংখ্য-অগণিত) লোক সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ প্রবেশ করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (জাম—উল জাওয়াম, জামি—উদ দুরার)

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন

يكون في أمتى رجل يقال له صلة يدخل الجنة بشفاعته كذا وكذا من

الناس

অর্থ: “আমার উম্মতের মাঝে একজন মহান ব্যক্তিত্ব মুবারক উনার আবির্ভাব ঘটবে। উনাকে 'ছিলাহ' বলা হবে। উনার মুবারক শাফায়াতে অসংখ্য মানুষ সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ প্রবেশ করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (জাম—উল জাওয়াম, জামি—উদ দুরার, জামিউল আহাদীছ, যুহুদ, ইবনে সা'দ, বাইহাক্বী)

মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুদরত মুবারক এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মু'জিযা শরীফ যে কতো হিকমতপূর্ণ তা জিন-ইনসান কখনো চিন্তা কল্পনা করে মিলাতে পারবে না। সুবহানাল্লাহ! মূলত, উনারা বিভিন্ন সময়ে

বিভিন্ন বিশেষ মহাসম্মানিত ওয়াক্বিয়াহ মুবারক দ্বারা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সবাইকে শিক্ষা মুবারক দিয়ে থাকেন। হযরত আব্দুল হক্ব মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ন্যায় হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ক্ষেত্রেও একখানা বিশেষ বরকতময় মহাসম্মানিত ওয়াক্বেয়াহ্ মুবারক সংঘটিত হন। সেই মহাসম্মানিত ওয়াক্বিয়াহ মুবারক উনার মধ্যে সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের জন্য সীমাহীন বিশেষ ইবরত-নছীহত মুবারক নিহিত রয়েছেন। সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আর সেই বিশেষ বরকতময় মহাসম্মানিত ওয়াক্বেয়াহ্ মুবারকখানা হচ্ছেন- হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি একবার নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক-এ আরজি মুবারক পেশ করলেন- ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি আপনার আরো অধিক মহাসম্মানিত রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক, তা'য়াল্লুক-নিসবত মুবারক হাছিল করতে চাই, আরো অধিক নৈকট্য মুবারক অর্জন করতে চাই। তখন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, 'যদি তাই হয়, তাহলে আপনি আমার আখাছুল খাছ মাহবূব, মহাসম্মানিত আওলাদ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বাহির, আছ ছমাদ, সম্মানিত রাজারবাগ শরীফ উনার যিনি মহাসম্মানিত মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রয়েছেন উনার নিকট যান, উনার নিকট যেয়ে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মাগফিরাত মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাত মুবারক-এ) বাই—য়াত গ্রহন করুন এবং উনার থেকে মহাসম্মানিত বিশেষ নি'য়ামত মুবারক হাছিল করুন। তবেই আপনি আমার আরো অধিক মহাসম্মানিত রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক, তা'য়াল্লুক-নিসবত মুবারক হাছিল করতে পারবেন, আরো অধিক নৈকট্য মুবারক অর্জন করতে পারবেন।' সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!

অতঃপর সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত নির্দেশ মুবারক-এ হযরত শায়েখ আহমদ ফারূক্বী সিরহিন্দী মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সম্মানিত রাজারবাগ দরবার শরীফ এসে সম্মানিত রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক-এ বাই'আত হওয়ার জন্য বিনীতভাবে আরজী মুবারক পেশ করেন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যা ইরশাদ মুবারক করেছেন তা ব্যক্ত করেন। তখন আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বাহির, আছ ছমাদ মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত নির্দেশ মুবারক মুতাবেক দয়া করে উনার সম্মানিত আরজী মুবারক কবূল করে উনাকে মহাসম্মানিত বাই'আত মুবারক করিয়ে স্বীয় মুরীদ হিসেবে কবূল করে নেন। সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!

এই মহাসম্মানিত ওয়াক্বেয়াহ্ মুবারক আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বাহির, আছ ছমাদ মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ১৪৩৮ হিজরী শরীফ উনার ২২শে জুমাদাল ঊলা শরীফ মহাসম্মানিত বিশেষ মাহফিল মুবারক-এ বর্ণনা মুবারক করেন। সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!

তাহলে এই মহাসম্মানিত ওয়াক্বেয়াহ্ মুবারক থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায় যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুতুহ্হার, মুত্বাহির,

আছ ছমাদ মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কত বেমেছাল মহাসম্মানিত তা'য়াল্লুক-নিসবত মুবারক। সুবহানাল্লাহ! যেটা সমস্ত জিন ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী কস্মিনকালেও চিন্তা-কল্পনা করে মিলাতে পারবে না। সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!

মূলত, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মি'রাজ শরীফ উনার রাতে যেমন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছোহবত মুবারক-এ এসে সমস্ত হযরত নবী রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে মহাসম্মানিত বিশেষ নিয়ামত মুবারক হাছিল করেছিলেন, ঠিক তেমনিভাবে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহুম উনাদের পরে সবচেয়ে বড় ওলীউল্লাহ হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনিসহ পৃথি বীর ইতিহাসে এই পর্যন্ত যত হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম এবং হযরত মুজাদ্দিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম অতীত হয়েছেন, উনারা প্রত্যেকেই আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহির, আছ ছমাদ মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক-এ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছোহবত মুবারক-এ বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে এসে মহাসম্মানিত বিশেষ নি'য়ামত মুবারক হাছিল করেছেন এবং হাছিল করে যাচ্ছেন। সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! উনারা প্রত্যেকেই হচ্ছেন আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহার, মুত্বাহির, আছ ছমাদ মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুরীদের অন্তর্ভুক্ত,

আর আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুতুহ্হার, মুত্বহহির, আছ ছমাদ মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন উনাদের প্রত্যেকেরই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শায়েখ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়, তিনি হচ্ছেন একমাত্র যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা দুজন ব্যতীত সকলের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শায়েখ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!

কেউ যদি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের আখাচ্ছুল খাছ মহাসম্মানিত তা'য়াল্লুক নিসবত, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করতে চায়, তাহলে তার জন্য ফরযে আইন হচ্ছেন আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বাহির, আছ ছমাদ, মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মাগফিরাত মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাত মুবারক-এ) বাই'আত গ্রহণ করা। সুবহানাল্লাহ! এই দ্বার সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের জন্যই উন্মুক্ত। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!

তাহলে ফিকির করতে হবে যে, আমরা কতো বড় মহাসম্মানিত নি'য়ামত মুবারক লাভ করেছি। আমরা কি কস্মিনকালেও তা চিন্তা কল্পনা করে মিলাতে পারবো! হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহুম উনারা ব্যতীত পৃথিবীর ইতিহাসে আর কেউ কি এতো বড় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নি'য়ামতে ‘উমা মুবারক লাভ করতে পেরেছেন! তাহলে আমাদের কি করা উচিত। আমাদের কতোটুকু

মহাসম্মানিত খুশি মুবারক প্রকাশ করা এবং শুকরিয়া আদায় করা উচিত! উনার সম্মানার্থে শুকুরগুযারীর সাথে মহাসম্মানিত খুশি মুবারক প্রকাশ করে কতটুকু মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘ফালইয়ারহু শরীফ' সাইয়্যিদুল আ'ইয়াদ শরীফ পালন করা উচিত।

ছহিবু সাইয়্যিদিল আ'ইয়াদ শরীফ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহির, আছ ছমাদ, মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাদের সবাইকে হাক্বীক্বী ছহীহ সমঝ দান করুন এবং উনার সম্মানার্থে শুকুরগুয়ারীর সাথে মহাসম্মানিত খুশি মুবারক প্রকাশ করে হাক্বীক্বীভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘ফালইয়ার শরীফ' সাইয়্যিদুল আ'ইয়াদ শরীফ পালন করার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!

0 Comments: