উম্মুল মু'মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল খ্বমিসা উম্মুল মাসাকীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত যয়নব আলাইহাস সালাম উনার সংক্ষিপ্ত জীবনী মুবারক-



সাইয়্যিদাতুন মিসায়ি আলাল আলামীন, মালিকুদ দুনিয়া ওয়াল আখিরাহ, মালিকুল কায়িনাত, উম্মুল মু'মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল খ্বমিসা উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম উনার সংক্ষিপ্ত জীবনী মুবারক-

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১৩ জন হযরত উম্মাহাতুল মু'মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নেয়ার ধারাবাহিকক্রম মুবারক অনুযায়ী উম্মুল মু'মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল মিসাহ্ উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন 'আল মিসাহ তথা পঞ্চম। এ জন্য উনাকে 'উম্মুল মু'মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল মিসাহ্ আলাইহাস সালাম' বলা হয়। তিনি সকলের মাঝে ‘উম্মুল মু'মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল খমিসাহ্ উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম' হিসেবে পরিচিতি মুবারক গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি আইয়্যামে জাহিলিয়াতের যুগেই সকলের মাঝে ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম' হিসেবে পরিচিত ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! তবে উনার মূল মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক হচ্ছেন 'সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাইনাব আলাইহাস সালাম'। সুবহানাল্লাহ! তিনি ছিলেন বূন হিলাল গোত্রের। উম্মুল মু'মিনীন, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি 'আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, মুতুহ্হার, মুত্বহহির, মালিকুল জান্নাহ, মালিকুদ দুনিয়া ওয়াল আখিরাহ্, মালিকুল কায়িনাত ইত্যাদি উনার সম্মানিত বিশেষ লক্বব মুবারক উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ! তিনি শুধু যিনি খালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারিণী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত মুহব্বত মুবারকই হচ্ছেন সম্মানিত ঈমান। সুবহানাল্লাহ! উনাকে সম্মানিত মুহব্বত মুবারক করা, উনার সম্মানিত তা'যীম-তাকরীম মুবারক করা, সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করা এবং উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়া সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের জন্য ফরযে আইন। সুবহানাল্লাহ! তাই উনার মহাসম্মানিত জীবনী মুবারক জানাও সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের জন্য ফরযে আইন। সুবহানাল্লাহ!

উল্লেখ্য, উম্মুল মু'মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল মিসাহ্ উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম উনার প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করা কাট্টা কুফরী। যারা উনার শান-মান নিয়ে চু-চেরা, ক্বীল-ক্বাল করবে, উনার মানহানী করবে, তাদের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।

উম্মুল মু'মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল খমিসাহ্ উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত পিতা হচ্ছেন- সাইয়্যিদুনা হযরত খুযাইমাহ্ ইবনে হারিছ আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! তিনি মহাসম্মানিত পিতা আলাইহিস সালাম উনার দিক থেকে ১৮তম পুরুষে যেয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মিলিত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! উনার ৭ম পুরুষ হচ্ছেন সাইয়্যিদুনা হযরত হিলাল ইবনে 'আমির আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুনা হযরত হিলাল ইবনে 'আমির আলাইহিস সালাম তিনি ছিলেন আরবের প্রসিদ্ধ গোত্র 'বন্ হিলাল' গোত্রের মহাসম্মানিত প্রথম পুরুষ। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইসিম বা নাম মুবারক অনুযায়ী উনার সম্মানিত বংশ মুবারক উনার নামকরণ মুবারক করা হয় 'বনূ হিলাল' হিসেবে। সুবহানাল্লাহ! এজন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু'মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল খমিসাহ্ উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম উনাকে 'আল হিলালিয়্যাহ' বলা হয়। সুবহানাল্লাহ! আর উনার ৮ম পূর্বপুরুষ সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আমির ইবনে ছ’ছ‘আহ্ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইসিম বা নাম মুবারক অনুযায়ী উনাকে ‘আল ‘আমিরিয়্যাহ' বলা হয়। সুবহানাল্লাহ!

আর উনার মহাসম্মানিতা মাতা হচ্ছেন- সাইয়্যিদাতুনা হযরত হিন্দ বিনতে 'আউফ আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক উনার কায়িনাতে একমাত্র তিনিই সেই সুমহান ব্যক্তিত্বা মুবারক যিনি দুইজন উম্মুল মু'মিনীন আলাইহিমাস সালাম উনাদের মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ তিনি হচ্ছেন উম্মুল মু'মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল খমিসাহ্ উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম উনার এবং উম্মুল মু'মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের উভয়ের মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! এদিক থেকে তিনি ছিলেন এক অনন্য বেমেছাল শ্রেষ্ঠত্ব মুবারক উনার অধিকারিণী। সুবহানাল্লাহ! তিনি ছিলেন সম্মানিত বনী হিম্‌ইয়ার গোত্রের। সুবহানাল্লাহ! সে হিসেবে উম্মুল মু'মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল মিসাহ্ উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম তিনি উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান উনার দিক থেকে জলীলুল ক্বদর নবী ও রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত নূহ আলাইহিস সালাম উনার নিকট যেয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মিলিত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!

কেউ কেউ উনার মহাসম্মানিতা মাতা সাইয়্যিদাতুনা হযরত হিন্দ বিনতে ‘আউফ আলাইহাস সালাম উনাকে বনী কেনানাহ গোত্রের বলেছেন। সে হিসেবে উম্মুল মু'মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল মিসাহ্ উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম তিনি উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান উনার দিক থেকে ১৪তম পুরুষ হয়ে ১৫ তম

পুরুষে যেয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মিলিত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!

উম্মুল মু'মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল মিসাহ্ উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে মহাসম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালত মুবারক প্রকাশের ১৪ বছর পূর্বে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২০শে শাওওয়াল শরীফ ইয়াওমুছ ছুলাছা' শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি ছিলেন উম্মুল মু'মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ 'আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিতা বৈপিত্রেয় বোন অর্থাৎ মায়ের দিক থেকে বোন। সুবহানাল্লাহ!

উম্মুল মু'মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল মিসাহ্ উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত কুনিয়াত মুবারক হচ্ছেন 'সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম।' সুবহানাল্লাহ! আর উম্মুল মাসাকীন (Shaji) উনার অর্থ মুবারক হচ্ছেন- গরীব-মিসকীন, ফক্বীর-ফুক্বারা, নিঃস-অসহায়, সর্বহারা-দরিদ্রদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাতা আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! এ সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছেন,

وهي أم المساكين عليها السلام كنيت بذلك في الجاهلية لرأفتها بهم ورحمتها

وإحسانها إليهم

অর্থ: “আর তিনি হচ্ছেন 'সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম'। সুবহানাল্লাহ! গরীব-মিসকীন, ফক্বীর-ফুক্বারা, নিঃস-অসহায়, সর্বহারা-দরিদ্রদের প্রতি উনার সীমাহীন স্নেহ-মমতা, রহম-করুণা ও দয়া-ইহসান মুবারক উনাদের কারণে উনাকে জাহিলী যুগেই এই সম্মানিত কুনিয়াত মুবারক দ্বারা সম্বোধন মুবারক করা হতো।” সুবহানাল্লাহ! (আল মুতাহুরুল কাবীর ফী সীরাতির রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১/৫৯)

তিনি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার সূচনালগ্নেই সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! ৩য় হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২৬শে যিলহজ্জ শরীফ সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে উম্মুল মু'মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল মিসাহ্ উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হন। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে উনার মহাসম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ৩০ বছর ২ মাস ৬ দিন। সুবহানাল্লাহ! কিতাবে বর্ণিত রয়েছেন, “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উট যবেহ করে উম্মুল মু'মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল মিসাহ্ উম্মুল

মাসাকীন আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ওলীমা মুবারক উনার মেহমানদারী মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! সেই মহাসম্মানিত ওলীমা মুবারক-এ অসংখ্য গরীব-মিসকীন, ফক্বীর-ফুক্বারা', নিঃস-অসহায় ও দরিদ্র লোক উপস্থিত হন। হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহুম উনারা গরীব-মিসকীন, ফক্বীর-ফুক্বারা', নিঃস-অসহায় ও দরিদ্র সকলকে (প্রস্তুতকৃত সমস্ত) খাদ্য খাওয়ায়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ উপস্থিত হন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহুম উনাদের প্রতি মনোযোগী হন। তখন একজন হযরত ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহু তিনি 'হারীসাহ্' নামক (গম চূর্ণ ও গোশত দ্বারা তৈরী) এক প্রকার খাদ্য নিয়ে আসেন সুবহানাল্লাহ! তখন উনাদের জন্য 'হারীসাহ্” নামক খাদ্য ব্যতীত অন্য কোনো খাদ্য মুবারক উপস্থিত ছিলো না। অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এই সম্মানিত খাদ্য মুবারক-এ বরকত দানের জন্য সম্মানিত দো'আ মুবারক করেন।” সুবহানাল্লাহ! (আল মুনতাখাবু মিন কিতাবি আযওয়াজিন নাবিয়্যি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) “আস সীরাতুল হালাবিয়্যাহ' কিতাবে উল্লেখ রয়েছেন, “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে যখন উম্মুল মু'মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঋমিসাহ উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মনিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হন, তখন (আমার সম্মানিতা আম্মাজান) হযরত উম্মু সুলাইম রদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহা তিনি গিয়ে খেজুর, মাখন/ঘি এবং পনির মিশ্রিত করে 'হাইস্' নামক এক প্রকার খাবার তৈরী করে একটি পিতলের পাত্রের মধ্যে (গামলার মতো মোটামোটি একটি বড় পাত্রের মধ্যে) রাখেন। তারপর বলেন, হে হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহু! আপনি এই সম্মানিত খাবার মুবারক নিয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ গিয়ে বলুন, এই সম্মানিত খাবার মুবারক আপনার জন্য আমার সম্মানিতা আম্মাজান তিনি পাঠিয়েছেন এবং তিনি আপনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ সম্মানিত সালাম মুবারক পেশ করেছেন। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অনেকের নাম মুবারক উল্লেখ করে ইরশাদ মুবারক করেন, আমার নিকট আপনি অমুক, অমুক এবং যাঁদের সাথে আপনার সাক্ষাৎ হয় উনাদেরকে ডেকে আনুন। তারপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যাঁদের নাম মুবারক উল্লেখ করেছেন এবং আমার সাথে যাঁদের সাক্ষাৎ হয়েছে উনাদেরকে ডেকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত

মুবারক-এ ফিরে আসলাম। হঠাৎ দেখলাম যে, মহাসম্মানিত হুজরা শরীফ এবং মহাসম্মানিত হুজরা শরীফ উনার আশপাশ লোক দ্বারা পরিপূর্ণ হয়ে গেলেন। হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহু উনাকে জিজ্ঞাসা করা হলো, উনাদের সংখ্যা কত ছিলেন। তিনি বলেন, উনারা ৩০০ জন ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! (হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহু তিনি বলেন,) অতঃপর আমি দেখলাম যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মাগফিরাত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাত মুবারক) সেই খাবারের পাত্রের মধ্যে রেখে মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত ইরাদা বা ইচ্ছা মুবারক অনুযায়ী কিছু বাক্য মুবারক উচ্চারণ করলেন। সুবহানাল্লাহ! তারপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি খাবার খাওয়ার জন্য উনার নিকট ১০ জন ১০ জন করে লোক ডাকলেন এবং উনাদেরকে বললেন, আপনারা ‘বিসমিল্লাহ শরীফ' বলে প্রত্যেকেই পাত্রের নিজ নিজ দিক থেকে খাবার মুবারক গ্রহণ করুন । সুবহানাল্লাহ! অতঃপর উনারা প্রত্যেকেই তৃপ্তি সহকারে খেলেন । সুবহানাল্লাহ! তারপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে বললেন, হে হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহু! আপনি ঢাকনা মুবারক তুলুন। অতঃপর আমি ঢাকনা মুবারক তুললাম। আমি জানি না যে, যখন পাত্র মুবারক-এ খাবার রাখা হয়েছে তখন বেশি খাবার মুবারক ছিলো, না কি যখন ঢাকনা মুবারক তুললাম তখন বেশি (খাবার মুবারক ছিলো। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ পাত্র মুবারক-এ যখন খাবার মুবারক রাখা হয়েছে তখন যে পরিমাণ খাবার মুবারক ছিলো, যখন ঢাকনা মুবারক তুললাম তখনও ঠিক সেই পরিমাণই খাবার মুবারক ছিলো। খাবার মুবারক একটুও কমেনি।)” সুবহানাল্লাহ! (আস সীরাতুল হালাবিয়্যাহ শরীফ ৩/৪০৯)

উম্মুল মু'মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল মিসাহ উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম তিনি ৩ মাস ১ দিন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেন। সুবহানাল্লাহ! উনার মহাসম্মানিত মোহরানা মুবারক ছিলেন ৫০০ দিরহাম যা স্বর্ণ হিসেবে সাড়ে ১২ আউকিয়া। সুবহানাল্লাহ!

উম্মুল মু'মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল মিসাহ্ উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম তিনি ৪র্থ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২৭শে সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহুরিল আ'যম শরীফ ইয়াওমুস সাবৃত শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি দুনিয়ার যমীনে ৩০ বছর ৫ মাস ৭ দিন সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! উম্মুল মু'মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার পর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র

হযরত উম্মাহাতুল মু'মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে তিনিই সর্বপ্রথম মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত দিক-নির্দেশনা মুবারক অনুযায়ী উনার সম্মানিত গোসল মুবারক ও সম্মানিত কাফন মুবারক পরানো কাজ সম্পন্ন করা হয়। তারপর স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজে উম্মুল মু'মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল মিসাহ্ উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত জানাযা মুবারক উনার নামায মুবারক পড়ান এবং তিনি নিজেই উনার স্বীয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মাগফিরাত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাত মুবারক) দ্বারা উনাকে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ উনার মধ্যে রাখেন। সুবহানাল্লাহ! কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছেন,

فدفنها رسول الله صلى الله عليه وسلم بالبقيع بعد ما صلى عليها

অর্থ: “অত:পর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উম্মুল মু'মিনীন আল মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত জানাযা মুবারক উনার নামায মুবারক পড়ানোর পর উনাকে সম্মানিত জান্নাতুল বাক্বী শরীফ-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ উনার মধ্যে রাখেন।” সুবহানাল্লাহ! (আল ইমতা—উল আসমা')

উল্লেখ্য যে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু'মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঋমিসাহ্ উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম তিনিসহ সমস্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু'মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের একমাত্র হাক্বীক্বী পরিপূর্ণ ক্বায়িম মাক্বাম হচ্ছেন- উম্মুল উমাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহা ওয়া সাল্লাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! তাই কেউ যদি উনাদের হাক্বীক্বী মুহাব্বত-মা'রিফত, নিসবত-কুরবত, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করতে চায়, তাদের জন্য ফরযে আইন হচ্ছে, উম্মুল উমাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহা ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত তা'যীম-তাকরীম মুবারক করা, উনার সম্মানিত গোলামী মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়া, উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করা। সুবহানা হযরত উম্মুল উমাম ছল্লাল্লাহু আলাইহা ওয়া সাল্লাম!

মহান আল্লাহ পাক তিনি আহলু বাইতে রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে আমাদের সবাইকে কবুল করুন। আমীন!


0 Comments: