একজন কুতুবুজ্জামান- উনার দিদারে মাওলার দিকে প্রস্থান- সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযুর ক্বিবলা সাইয়্যিদ মুখলেছুর রহমান আলাইহিস সালাম উনার সাওয়ানেহে উমরী মুবারক-পর্ব-৮৫

 


ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ দাওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছহিবে কাশফ ওয়া কারামত, ফখরুল আউলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছহিবে ইসমে আযম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার স্মরণে-

একজন কুতুবুয্ যামান-উনার দিদারে মাওলা উনার দিকে প্রস্থান-

কারামত

আল্লাহ পাক-উনার মাহবুব ওলীগণের সকলেই কারামতদ্বারা সমৃদ্ধ। উনাদের অধিকারে থাকে কম-বেশী-অনেক কারামত। আফযালুল ইবাদ, ফখরুল আউলিয়া, লিসানুল হক্ব, ছাহিবে কাশ্ফ ওয়া কারামত, মাদারজাদ ওলী, আওলাদে রসূল, হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান রহমতুল্লাহি আলাইহিও অসংখ্য কারামতের অধিকারী ছিলেন। আলোচনার কলেবর বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনায় রেখে আমরা উনার অগণিত কারামতের কয়েকটি সম্পর্কে নাতিদীর্ঘ আলোকপাত করার প্রয়াস পাব। বর্ণনা শুরুর আগে কারামতশব্দটির অর্থ দ্যোতনা, তাৎপর্য ও বৈশিষ্ট্য এবং উনার প্রকৃতি ও ব্যাপ্তি জেনে নেয়া জরুরী বলে আমরা মনি করি। আক্বাইদের কিতাবে বর্ণিত রয়েছে:

كرامات الاولياء حق.

অর্থঃ- ওলীআল্লাহগণের কারামত সত্য (অভ্রান্ত)।অর্থাৎ, আল্লাহ পাক-উনার মাহবুব ওলীগণ হক্ব কারামতের অধিকারী। আল্লাহ পাক বলেন:

وهزى اليك بجذع النخلة تسقط عليك رطبا جنيا فكلى واشربى وقرى عينا.

অর্থঃ- “(হে মারইয়াম আলাইহাস্ সালাম!) ঐ খেজুর গাছের শাখা নিজের দিকে অবনমিত করুন, আপনার জন্য তাথেকে পড়বে সদ্যপক্ক খেজুর। অতএব, তা থেকে আপনি আহার করুন, পান করুন এবং নয়ন পরিতৃপ্ত করুন।” (সূরা মারইয়াম-২৫, ২৬)

এ আয়াত শরীফের যোগসূত্রে আল্লাহ পাক আরো বলেন:

فتقلها ربها بقبول حسن وانبتها نباتا حسنا وكفلها زكريا كلما دخل عليها زكريا المحراب وجد عندها رزقا قال يمريم انى لك هذا قالت هو من عند الله ان الله يرزق من يشاء بغير حساب.

অর্থঃ- যখনই হযরত যাকারিয়া আলাইহিস্ সালাম মেহরাবের মধ্যে (ইবাদতখানা) উনার কাছে আসতেন, তখনই দেখতে পেতেন কিছু খাদ্য সম্ভার। জানতে চাইতেন: হে মারইয়াম আলাইহাস্ সালাম! এসব কোথা থেকে পেলেন? হযরত মারইয়াম আলাইহাস্ সালাম জবাব দিতেন: এসব আল্লাহ পাক-উনার কাছ থেকে আসে। নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক যাকে ইচ্ছা অপরিমেয় রিযিক দান করে থাকেন।” (সূরা আলে ইমরান-৩৭)

হযরত মারইয়াম আলাইহাস্ সালাম নবী-রসূল ছিলেন না। উপরোক্ত আয়াত শরীফে বিধৃত অলৌকিক পন্থায় উনার খাদ্য সম্ভার প্রাপ্তি এবং উনার কারণ জানতে হযরত যাকারিয়া আলাইহিস্ সালাম-উনার ঔৎসুক্য, হযরত মারইয়াম আলাইহাস্ সালাম-উনার কারামত (সম্মান) নির্দেশ করে।

হযরত সুলাইমান আলাইহিস্ সালাম-উনার আদেশের প্রেক্ষিতে উনার উযীরে আযম, হযরত আসিফ বিন বরখিয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি সম্রাজ্ঞী বিলকিসের আশি হাত দীর্ঘ, চল্লিশ হাত প্রশস্ত এবং তিরিশ হাত উঁচু বিরাট এক সিংহাসন নিমিষেই অর্থাৎ, এক পলক সময়ের পূর্বেই ইয়েমেনের রাজধানী সাবা থেকে তুলে এনে হযরত সুলাইমান আলাইহিস্ সালাম সমীপে হাজির করেন। এ সম্পর্কে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন,

قال الذى عنده علم من الكتب انا اتيك به قبل ان يرتد اليك طرفك فلما راه مستقرا عنده قال هذا من فضل ربى.

অর্থঃ- কিতাবের জ্ঞান যার ছিলো তিনি বললেন, (হে হযরত সুলাইমান আলাইহিস্ সালাম!), আপনার দিকে আপনার চোখের পলক ফেলার পূর্বেই আমি তা আপনাকে এনে দেব। অত:পর হযরত সুলাইমান আলাইহিস্ সালাম যখন তাসামনে রক্ষিত দেখলেন, তখন বললেন, এটি আমার পালনকর্তার অনুগ্রহ।” (সূরা আন্ নমল-৪০)

হযরত আসিফ বিন বলখিয়া রহমতুল্লাহি আলাইহিও নবী-রসূল ছিলেন না। সুদূর ইয়েমেনের রাজধানী সাবা থেকে রাণী বিলকিসের বিশাল সিংহাসন নিমিষেই হযরত সুলাইমান আলাইহিস্ সালাম সমীপে হাযির করার পারঙ্গমতা নিঃসন্দেহে হযরত আসিফ বিন বরখিয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি-উনার কারামত নির্দেশ করে, যামহান আল্লাহ পাক-উনার দান। (অসমাপ্ত)

আবা-১৪৫

0 Comments: