একজন কুতুবুজ্জামান- উনার দিদারে মাওলার দিকে প্রস্থান- সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযুর ক্বিবলা সাইয়্যিদ মুখলেছুর রহমান আলাইহিস সালাম উনার সাওয়ানেহে উমরী মুবারক-পর্ব-১১৬


ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দাওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশফ্ ওয়া কারামত, ফখরুল আওলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছাহিবে ইস্মে আযম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম-উনার স্মরণে-

একজন কুতুবুয্ যামান-উনার দিদারে মাওলা উনার দিকে প্রস্থান-

আজমীর শরীফে চীশ্তিয়া তরীক্বার ইমাম, কুতুবুল আক্তাব, সুল্তানুল হিন্দ, গরীবে নেওয়াজ, হাবীবুল্লাহ, হযরত খাজা সাইয়্যিদ মুঈনুদ্দীন হাসান চীশ্তি রহমতুল্লাহি আলাইহি-উনার সঙ্গে প্রত্যক্ষ সংযোগ স্থাপন/অনুপম কারামত-উনার বহিঃপ্রকাশ

ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দাওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ফখ্রুল আওলিয়া, লিসানুল হক্ব, আওলাদে রসূল, হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান  আলাইহিস সালাম আজমীর শরীফ থেকে দেশে ফিরে এলেন। অবশেষে উনি ঢাকাস্থ ৫নং আউটার সার্কুলার রোড, রাজারবাগ শরীফে উনার বাসায় পৌঁছলেন। বেশ কিছুদিন পর সকলের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও কুশল বিনিময় হলো। মুজাদ্দিদে আযম মুদ্দা জিল্লুহুল আলী- উনার সঙ্গেও  সাক্ষাৎ হলো।

 যে মুবারক আওলাদকে কেন্দ্র করে কামিয়াবীর শীর্ষ ধাপে যোগ হয়েছে নবতর মাত্রা এবং অন্তরে জমে উঠেছে মধুর অনুভূতি, তাপ্রকাশের কী ব্যাকুলতা! কিন্তু কুশল বিনিময় ছাড়া বলা গেলোনা তেমন কিছুই। নির্বাক পিতা-আওলাদের অতলান্ত ভাব বিনিময়ে কেবল পরিতৃপ্তির পরম প্রশান্তি। বুযুর্গ পিতার জন্য মুজাদ্দিদে আযম-উনার এবং মুজাদ্দিদে আযম-উনার জন্য বুযুর্গ পিতার অতুলনীয় কামিয়াবী আল্লাহ পাক-উনার মহান দান এবং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, মাশুকে মাওলা, রউফুর রহীম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার খাছ বখ্শিশ।

নৈকট্যপ্রাপ্ত ওলীআল্লাহগণের শীর্ষ মাক্বামতের নির্যাস উনাদের মুবারক জীবনাচরণের সামগ্রিকতায় আবশ্যিকভাবে সম্পৃক্ত থাকলেও তার প্রচ্ছন্ন প্রকাশমানতা সাধারণের দৃষ্টিগোচর হয় না। প্রাপ্ত নিয়ামতের প্রতিভাস অলক্ষ্যে থাকায় মাহবুব ওলীগণের সাথে সীমাহীন ব্যবধান সাধারণ মানুষ খুঁজে পায় না। দুনিয়ায় ওলীআল্লাহগণের বিরোধিতা এবং যখন-তখন উনাদের কারামত দেখতে চাওয়ার এটি মূল কারণ। ছাহিবে কাশ্ফ ওয়া কারামত, ছাহিবে ইস্মে আযম, কুতুবুযযামান, আওলাদে রসূল, হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান  আলাইহিস সালাম-উনার ক্ষেত্রেও উনার মাক্বামের সূক্ষ্ম নির্যাস অন্তরালেই থেকে যায়। এ কারণে উনার অসংখ্য লক্ববের মধ্যে ছূফীয়ে বাতিনএবং ছাহিবে ইসমে আযমঅন্যতম।

কেবল ওলীআল্লাহগণেরই নয়। নবী-রসূল আলাইহিমুস সালামগণের প্রতি ঈমান না আনার মূল কারণই হলো উনাদের মান, শান, মর্যাদা এবং ওহীর গুরুত্ব ও তাৎপর্য উপলব্ধিতে কাফিরদের অযোগ্যতা ও অক্ষমতা। যে কারণে ছাহিবে ওহী ওয়াল কুরআন, রহমাতুল্লিল আলামীন, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে একান্ত কাছে পেয়ে এবং উনার মুবারক জীবনাচরণ প্রত্যক্ষ করেও অনুপলব্ধির কারণে কাফিররা বিস্মিত হয়েছে এবং রিসালতের প্রতি অসত্যারোপ করেছে।

এ বিষয়ে আল্লাহ পাক বলেনঃ

وَقَالُوْا مَالِ هٰذَا الرَّسُوْلِ يَاكُلُ الطَّعَامَ وَيَمْشِىْ فِى الْاسْوَاقِ لَوْلَاۤ انْزِلَ الَيْهِ  مَلَكٌ فَيَكُوْنَ مَعَهٗ نَذِيْرًا ۝

অর্থঃ তারা বলে, ইনি কেমন রসূল! যিনি খাদ্য খান এবং বাজারে গমন করেন? উনার সাথে কেন ফেরেশতা নাযিল করা হলোনা, যাতে উনার সাথে সতর্ককারী হয়ে থাকতো”? (সূরা আল ফুরক্বান-৩৭)

সূক্ষ্মদর্শী ওলীআল্লাহগণের মর্যাদা ও মর্তবাই তো মানুষ জানে না। নবী-রসূল আলাইহিমুস সালামগণের, বিশেষতঃ সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাস্সাম, মাশুকে মাওলা, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সীমাহীন মান, শান, বুযুর্গী ও সম্মান মানুষ বুঝবে কী করে?

অন্য কেউ না জানলেও কিশোর মুজাদ্দিদে আযম মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বুযুর্গ পিতার মাক্বাম সম্পর্কে সম্যক অবহিত। বয়স মুবারক কৈশোরে থাকলেও মূলতঃ উনি মাদারজাদ ওলীআল্লাহ। উনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার ক্বায়িম মক্বাম। উনি খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ। উনি আল্লাহ পাক এবং উনার প্রিয়তম হাবীব, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার খাছ লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ। জন্মসূত্রেই মহান আল্লাহ পাক উনার ভেতর মুজাদ্দিদে আযমসূলভ মানস তৈরী করে দিয়েছেন। বয়স মুবারকের ব্যবধানের প্রশ্ন তাই অবান্তর।

বলা হয়ঃ

الـمجدد مجددا ولو كان صبيا

অর্থঃ একজন মুজাদ্দিদ মূলতঃই মুজাদ্দিদ, যদিও উনি শিশু হয়ে থাকেন।পারস্পরিক অনুভব ও উপলব্ধির গভীরতায় বুযুর্গ পিতাকে প্রত্যক্ষ করে কিশোর মুজাদ্দিদে আযম-উনার মুজাদ্দিদিয়াতের ভিত্ মজবুত হয়। একইভাবে মুজাদ্দিদে আযম আওলাদের মাক্বাম প্রত্যক্ষ করে বুযুর্গ পিতার মাক্বামতের প্রবৃদ্ধি ঘটে। নিয়ামত লেনদেনে উভয়ের কী অনিঃশেষ মুয়ামিলা!

আজমীর শরীফ থেকে বহন করে আনা পাগড়ী মুবারক ওলীয়ে মাদারজাদ, গরীবে নেওয়াজ, ফখ্রুল আওলিয়া, কুতুবুয্যামান, আওলাদে রসূল, হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান  আলাইহিস সালাম উনার প্রাণ প্রিয়তম আওলাদ, মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম উনাকে এখন দিতে মনস্থ করলেন। উনার ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্যে অবস্থানকারী প্রিয়তম আওলাদকে ফযীলতপূর্ণ পাগড়ী মুবারকের ঘটনা উনি সবিস্তারে জানালেন। (চলবে)

আবা-১৭৬

0 Comments: