মুবারক হো মহামহিমান্বিত আযীমুশ শান ৯ই রমাদ্বান শরীফ

Related image


ঈদে বিলাদতে খলীফাতুল উমাম, ছাহিবে জামিউল মাক্বামত, জামিউল আলক্বাব, ওলীয়ে মাদারযাদ, ছানীয়ে মুজাদ্দিদে আ’যম, আল মানছূর, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম মামদূহ হযরত শাহযাদা আক্বা ক্বিবলা কা’বা আল হাসানী ওয়াল হুসাইনী ওয়াল কুরাইশী আলাইহিস সালাম আজ মহামহিমান্বিত আযীমুশ শান ৯ই রমাদ্বান শরীফ।
খলীফাতুল উমাম, লখতে জিগারে মুজাদ্দিদে আ’যম, মুজাদ্দিদে আ’যমে ছানী, কুতুবুল আলম, ওলীয়ে মাদারজাত, ছাহিবুল খাইর, মুত্বহিরুল আ’যীম, নূরে মুকাররম, শামসে ইলাহী, মাহবুবে ইলাহী, নূরে রহমানী, ছাহিবে জামিউল মাক্বামত, জামিউল আলক্বাব, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত শাহযাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার বেমেছাল সম্মানিত বিলাদত শরীফ।
যা আমাদের জন্য তথা কুল-কায়িনাতের জন্য সব ঈদের সেরা ঈদ। তথা সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ। মূলত সাইয়্যিদে ঈদে বিলাদতে মুজাদ্দিদে আ’যমে ছানী, খলীফাতুল উমাম হযরত শাহযাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার মহান ঈদ যথাযথ পালন ব্যতীত অন্য কোন ঈদ পালনই সম্ভব নয়। মহিমান্বিত ওই ঈদের বরকতেই অন্য সব ঈদ পালনের কুওওয়াত ও রহমত হাছিল হয়। তাই এ ঈদ সব ঈদের সরদার বা সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ।
প্রসঙ্গত মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি (উম্মতদেরকে) বলে দিন, মহান আল্লাহ পাক উনার ফযল ও রহমত মুবারক লাভ করার কারণে তারা যেন আনন্দ, খুশি প্রকাশ করে।” (পবিত্র সূরা ইউনূছ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৮)
বলাবাহুল্য, ক্বায়িম-মাক্বাম হিসেবে এ পবিত্র আয়াত শরীফ সাইয়্যিদে ঈদে বিলাদতে খলীফাতুল উমাম, মুজাদ্দিদে আ’যমে ছানী হযরত শাহযাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার জন্য খাছ।
বলাবাহুল্য, মহিমান্বিত এ সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ সম্পর্কে হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারাও অবগত ছিলেন না। হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে প্রশ্ন রেখেছিলেন- “আপনি কী এমন এক সম্প্রদায় সৃষ্টি করবেন, যারা মারামারি করবে, কাটাকাটি করবে।” মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেছিলেন, “আমি যা জানি তোমরা তা জানো না।”
মহান আল্লাহ পাক তিনি খলীফাতুল উমাম হযরত শাহযাদা আক্বা, ক্বিবলা কা’বা আলাইহিস সালাম উনাকে এমন ফযীলত ও বুযুর্গী দিয়ে সৃষ্টি করেছেন যে, খলীফাতুল উমাম হযরত শাহযাদা ক্বিবলা কা’বা আলাইহিস সালাম উনাকে দেখলে শয়তানের মাথা খারাপ হয়ে যাবে। সে পালানোর রাস্তা খুঁজে পাবে না।
শুধু তাই নয়, খলীফাতুল উমাম আলাইহিস সালাম উনার উসীলায় লক্ষ-কোটি উম্মতে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা শয়তানের ওয়াসওয়াসা প্রত্যাখ্যান করে খালিছ আল্লাহওয়ালা হবেন। সুবহানাল্লাহ!
পাশাপাশি মহান আল্লাহ পাক তিনি খলীফাতুল উমাম আলাইহিস সালাম উনাকে এতো ফযীলত দিয়েছেন যে, তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের যে মুহব্বত-মা’রিফত, কুরবত মুবারক হাসিল করবেন তার কাছে নিকটবর্তী হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালামগণ উনারাও পৌঁছতে পারবেন না। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম, উনাদের বক্তব্যের বিপরীতে খলীফাতুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার ফখর।
অপরদিকে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন যে, উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে তিনি কাওছার বা সর্বোত্তম বিষয় হাদিয়া করেছেন। খলীফাতুল উমাম আলাইহিস সালাম সেই সর্বোত্তম বিষয়ের অন্যতম এবং বর্তমান যামানার লক্ষ্যস্থল। অর্থাৎ খলীফাতুল উমাম আলাইহিস সালাম শুধু আখাচ্ছুল খাছ আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামই নন, তিনি অন্যতম কাওছারও বটে। সুবহানাল্লাহ!
পাশাপাশি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি পবিত্র ঈমান আনাই, ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার সব নেকী। খলীফাতুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি সে পবিত্র ঈমান উনারই মহিমান্বিত অংশ।
অপরদিকে ইমামুল হুমামাইন আলাইহিমুস সালাম উনাদের গোলাম হওয়াই হযরত ফারূকে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার শান। খলীফাতুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি ইমামুল হুমামাইন আলাইহিস সালাম উনাদেরই মুবারক ধারাবাহিকতা। তিনি যিন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার দু’নূরের বর্তমান অধিকারী। খলীফাতুল উমাম আলাইহিস সালাম উনার হুঙ্কার আজ হযরত আলী হায়দার কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনারই বেমেছাল হুঁশিয়ারী।
স্বয়ং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি যা পবিত্র ওহী মুবারক নাযিল হয়েছে উনার সবকিছুই খলীফাতুল উমাম আলাইহিস সালাম উনার অন্তরে তিনি নিক্ষেপ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! স্বীয় ইলমের সবকিছুই সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে হাদিয়া করেছেন।
তাই খলীফাতুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি সব শরীয়ত ও তরীক্বতের সব ইমাম ও মুজতাহিদ তথা আলিম, ফক্বীহ, মুহাদ্দিস, মুফতীই নয়, পাশাপাশি সব বিজ্ঞানী, কবি, বোদ্ধাদেরও বিস্ময়। সব বিজ্ঞানীদের গবেষণা পূর্ণতা পেতো এবং পাবে উনার মুবারক ছোহবতে। অতীতের বিজ্ঞানীরা নয় বর্তমান বিজ্ঞানীরাও বিস্মিত হচ্ছেন উনার জ্ঞানের গভীরতা দেখে। উনার বিবৃত সমকোণ যে লম্বাকোণ অথবা আত তাক্বউমুস শামসী এক্ষেত্রে বিচ্ছিন্ন উদাহরণ মাত্র।
হযরত শাহযাদা ক্বিবলা কা’বা আলাইহিস সালাম উনার তাশরীফে সব কবিদের সব আরজু পূরণ হয়েছে। নজরুলের বিদ্রোহী কবিতার যে আবেদন ছিলো উনার উসীলায় তা পূরণ হয়েছে। ফররুখ আহমেদের পাঞ্জেরীর যে আহবান ছিলো তা দিশা পেয়েছে। কবি ইকবালের খুদী দর্শনের যে সমুন্নত করার কথা ছিলো তা পূর্ণতা পেয়েছে। কবি ফেরদৌসীর কবিতার প্রশস্ততা, কবি খৈয়ামের কবিতার প্রেমধারা, কবি সাদীর হেকমতী বচন সব খলীফাতুল উমাম আলাইহিস সালাম উনার সুমহান ইলমেরই ক্ষুদ্রতম বহিঃপ্রকাশ।
মূলত, খলীফাতুল উমাম আলাইহিস সালাম উনার বেমেছাল ওজুদ মুবারক, উনার মহিমান্বিত দেহাবয়ব, উনার অপূর্ব, চেহারা মুবারক উনার ধারালো- তীক্ষè চাহনি, উনার বিস্মিত বাকভঙ্গী, উনার সুমন্নত দেহভঙ্গী, উনার সাবলীল নির্দেশনা সবকিছু যেন মহান আল্লাহ পাক উনার সুমহান কুদরত। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খাছ মু’জিযা শরীফ এবং যামানার ইমাম ও মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার আযীমুশ শান কারামত। সুবহানাল্লাহ! উনার দর্শনে ও ছোহবতে ভক্ত হৃদয়ে এমন ফল্গুধারা বহে যাতে, হযরত ছাহাবাযে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা যেমন সিজদার আকুতি জানিয়েছিলেন সে জজবারই পুনরাবৃত্তি জাগে। জাহিরীভাবে তা জায়িয না হলেও বাতিনীভাবে আত্মসমর্পণের মাধ্যমে পুরোটাই মিটে।
মূলত খলীফাতুল উমাম হযরত শাহযাদা আক্বাজান আলাইহিস সালাম উনার সুমহান শান মুবারক সম্পর্কে যুগপৎভাবে সম্যক অবগত এবং উনাকে যথাযথ সম্মান দানের মর্যাদা কেবল তদীয় পিতাজান ইমামুল আইম্মাহ, মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনারই।
তিনি এমন ফযীলত হাদিয়া করেছেন যেন উভয়ে উভয়ের প্রতিবিম্ব, প্রতিচ্ছবি। পার্থক্য শুধু একজন পিতা। অপরজন পুত্র। একজন মুজাদ্দিদে আ’যম। অপরজন মুজাদ্দিদে আ’যমে ছানী। একজন বর্তমান যামানায়ই তাজদীদ ও খিলাফত জারি করছেন। অপরজন অনাগত কালে সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য যথাযোগ্যরূপে দিন দিন বিকশিত হচ্ছেন।
সঙ্গতকারণেই এই সুমহান বিলাদত শরীফ-এর তাৎপর্য, গুরুত্ব, মহত্ত্ব, শান-শওকত লিখিবার যেমন কোনো ভাষার শুরু এবং শেষ নেই তেমনি বিলাদত শরীফ পালনের ব্যাপকতার, ঘনঘটার, শান-শওকতেরও তথা সমন্বিত আয়োজনেরও কোনো পরিশেষ নেই। সবকিছুই এখানে ব্যর্থ। সস্পৃক্ত শুধুই অক্ষমতা প্রকাশ। অনিবার্য এখানে ক্ষমা প্রার্থনা।
বলার অপেক্ষা রাখে না, পবিত্র ৯ই রমাদ্বান শরীফ উনার পরিসর কেবল রাজারবাগ শরীফ অথবা রাজারবাগ শরীফ উনার সিলসিলাভুক্ত পরিম-লেই পরিশেষ হবার জন্য নয়।
বরং অনিবার্য কারণেই তথা নিজস্ব প্রয়োজনেই পৃথিবীর প্রত্যেককেই খলীফাতুল উমাম, মুজাদ্দিদে আ’যমে ছানী উনার প্রসঙ্গে প্রজ্ঞাপূর্ণ ইলম পরিপূর্ণভাবে অর্জন করতে হবে।
মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন তিনি মুজাদ্দিদে আ’যম, গাউছুল আ’যম, দস্তগীর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার লখতে জিগার মুজাদ্দিদে আ’যমে ছানী, খলীফাতুল উমাম আমাদের প্রাণের আক্বা মামদূহ হযরত শাহযাদা ক্বিবলাজান আলাইহিস সালাম উনার মুবারক উসীলায় সেটা খুলুছিয়াতের সাথে করার তাওফিক দান করুন। (আমীন)

0 Comments: