সুমহান পুত ও পবিত্র ২০ শে জুমাদাল উখরা শরীফ। ( ক)



ঈদ মুবারক ! ঈদ মুবারক !! ঈদ মুবারক !!!
সুমহান পুত ও পবিত্র ২০ শে জুমাদাল উখরা শরীফ
ঈদে বিলাদতে ,
সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম
উনার নুরুদ দরাজাত মুবারকে জানাই লক্ষ কোটি বেশুমার ছলাত ও সালাম ।

গোলামীর আরজুতে ,
মুহম্মদ ইউসুফ রাজী খাজা

তারিখ – ২০/০৬/১৪৪১ হিজরী







এক নজরে সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত পরিচিতি মুবারক
সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা বানাত (মেয়ে) আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! আর এটাই উনার সর্বশ্রেষ্ঠ পরিচিতি মুবারক। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা হযরত বানাত আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে তিনি হচ্ছেন ‘আর রবি‘য়াহ তথা চতুর্থ।’ সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত মর্যাদা-মর্তবা মুবারক হচ্ছেন, তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারিণী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত মুহব্বত মুবারকই হচ্ছেন সম্মানিত ঈমান। সুবহানাল্লাহ!
নিম্নে এক নজরে উনার সম্মানিত পরিচিতি মুবারক তুলে ধরা হলো-
সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক: সাইয়্যিদাতুনা হযরত ফাত্বিমাহ আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত ও পবিত্র কুনিয়াত মুবারক: উম্মুল হাসান আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত ও পবিত্র লক্বব মুবারক: আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, বিদ্ব‘আতুম মির রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, আয যাহরা, আল বতূল, উম্মু আবীহা এছাড়াও আরো অসংখ্য-অগণিত। সুবহানাল্লাহ!
যেই সম্মানিত লক্বব মুবারক-এ সম্মানিত পরিচিতি মুবারক গ্রহণ করেছেন: সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত আব্বাজান ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম: সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম: উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ: আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালত মুবারক প্রকাশের প্রায় ৩ বছর পূর্বে ২০শে জুমাদাল উখরা শরীফ ইয়াওমুল জুমুয়াহ শরীফ সুবহে ছাদিক্ব উনার সময়। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার সম্মানিত স্থান মুবারক: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত অবস্থান মুবারক: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ভাই-বোন আলাইহিমুস সালাম ও আলাইহিন্নাস সালাম: মহসম্মানিত চার ভাই আলাইহিমুস সালাম এবং মহাসম্মমানিতা চার বোন আলাইহিন্নাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিতা বোন উনাদের মধ্যে উনার সম্মানিত অবস্থান মুবারক: চতুর্থ। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ভাই-বোন আলাইহিমুস সালাম ও আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে উনার সম্মানিত অবস্থান মুবারক: সপ্তম। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ: আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালত মুবারক প্রকাশ পাওয়ার সাথে সাথে। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন প্রায় ৩ বছর। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ: ২য় হিজরী সনের ২রা যিলহজ্জ শরীফ লাইলাতু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (ইছনাইনিল আযীম শরীফ রাত)।
মহাসম্মানিত যাওজুম মুর্কারম: আমীরুল মু’মিনীন সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
আযীমুশ শান মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে আ’যীম শরীফ অনুষ্ঠিত হওয়ার সময় দুনিয়াবী দৃষ্টিতে উনার সম্মানিত বয়স মুবারক: প্রায় ১৭ বছর ৬ মাস। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিমুস সালাম এবং আলাইহিন্নাস সালাম: মোট ৬ জন। ৩ জন মহাসম্মানিত আবনা’ (ছেলে) আলাইহিমুস সালাম এবং ৩ জন মহাসম্মানিতা বানাত (মেয়ে) আলাইহিন্নাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! উনারা হচ্ছেন-
১.       ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম। তিনি ৩য় হিজরী সনের ১৫ই রমাদ্বান শরীফ ইয়াওমুল আরবিয়া শরীফ বা’দ আছর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
২.       ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম। তিনি ৪র্থ হিজরী সনের ৫ই শা’বান শরীফ ইয়াওমুল জুমুয়াহ শরীফ বা’দ আছর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
৩.       সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাইনাব আলাইহাস সালাম। তিনি ৫ম হিজরী সনে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
৪.       সাইয়্যিদাতুনা হযরত রুক্বইয়্যাহ আলাইহাস সালাম। তিনি ৬ষ্ঠ হিজরী সনে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
৫.       সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম আলাইহাস সালাম। তিনি ৭ম হিজরী সনে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
৬.       সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম মুহসিন আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ! তিনি ৯ম হিজরী সনে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ: ১১ হিজরী শরীফ উনার ৩রা রমাদ্বান শরীফ সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (ইয়াওমুল ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ) বা’দ আছর। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার সম্মানিত স্থান মুবারক: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত অবস্থান মুবারক: ২৬ বছর ২ মাস ১৩ দিন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ: সম্মানিত জান্নাতুল বাক্বী’ শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
 সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত জীবনী মুবারক পাঠ করার, আলোচনা করার এবং উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করার গুরুত্ব, তাৎপর্য ও বেমেছাল সম্মানিত ফযীলত মুবারক
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
اِنَّ ذِكْرَ الصَّالِـحِيْنَ تَنْزِلُ الرَّحْمَةُ.
অর্থ: “নিশ্চয়ই ওলীআল্লাহগণ উনাদের আলোচনা মুবারক করলে সম্মানিত রহমত মুবারক নাযিল হয়।” সুবহানাল্লাহ্! (ইহইয়ায়ে ‘উলূমিদ্দীন, ফাদ্বাইলে আশারাহ লিযামাখশারী, কাশফুল খফা)
এখন বলার বিষয় হলো, যদি ওলীআল্লাহগণ উনাদের আলোচনা মুবারক করলে সম্মানিত রহমত মুবারক নাযিল হয়, তাহলে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার লখতে জিগার, মহাসম্মানিতা বানাত (মেয়ে) সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত সাওয়ানেহ ‘উমরী মুবারক আলোচনা করলে, উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক বর্ণনা করলে কতো সীমাহীন রহমত মুবারক বর্ষিত হবে, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! কেননা, উনার সম্মানার্থে, উনাকে মুহব্বত মুবারক করেই মানুষ ওলীআল্লাহ হয়ে থাকেন। সেই ওলীআল্লাহগণ উনাদের আলোচনা করলে যদি সম্মানিত রহমত মুবারক নাযিল হয়, তাহলে যিনি সম্মানিত রহমত মুবারক উনার মালিক, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার লখতে জিগার, মহাসম্মানিতা বানাত (মেয়ে) সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত সাওয়ানেহ ‘উমরী মুবারক আলোচনা করলে, উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করলে কি পরিমাণ সম্মানিত রহমত, বরকত, সাকীনা, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক বর্ষিত হবে, তা কেউ কস্মিনকালেও ভাষা দিয়ে প্রকাশ করতে পারবে না। সুবহানাল্লাহ!
প্রকৃত কথা হলো, যাঁরা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত সাওয়ানেহ ‘উমরী মুবারক আলোচনা করবেন, পাঠ করবেন, উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করবেন, উনারা মহান আল্লাহ পাক উনার, উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের আখাচ্ছুল খাছ সম্মানিত মুহব্বত-মা‘রিফত, নিসবত-কুরবত, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করবেন। সুবহানাল্লাহ!
মাওলানা জালালুদ্দীন রূমী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার লিখিত বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘মছনবী শরীফ’ উনার ফযীলত বর্ণনা করতে যেয়ে হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা বলেছেন, “যারা ‘মছনবী শরীফ’ পাঠ করবে, তারা ওলীউল্লাহ না হলেও ‘মছনবী শরীফ’ পাঠ করা অবস্থায় তাদের নামগুলো ওলীউল্লাহগণ উনাদের দফতরে লিখা থাকবে।” সুবহানাল্লাহ!
আর দ্বিতীয় হাজারের মুজাদ্দিদ হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘মাকতূবাত শরীফ’ উনার ব্যাপারে বলেছেন, “কেউ যদি উনার সম্মানিত ‘মাকতূবাত শরীফ’ পাঠ করে, ‘মাকতূবাত শরীফ’ পাঠ করা অবস্থায় নবী না হওয়া সত্ত্বেও তার নাম ‘সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক’ উনার দফতরে লিখা হয়।” সুবহানাল্লাহ!
যদি তাই হয়, তাহলে উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক আলোচনা করলে, উনার সম্মানিত শান মুবারক-এ লিখিত সম্মানিত কিতাব মুবারক পাঠ করলে, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাওয়ানেহ ‘উমরী মুবারক আলোচনা করলে, পাঠ করলে, বান্দা-বান্দী, উম্মত উনাদের নাম কোন ত্ববকায় লিখা থাকবে, সেটা চিন্তা-ফিকির করতে হবে। সুবহানাল্লাহ! মূলত, উনাদের নাম তখন সম্মানিত রিসালত মুবারক উনার তবক্বায় লিখা থাকবে। সুবহানাল্লাহ!
আর যদি কেউ মুহব্বতের সাথে উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক আলোচনা করেন, উনার সম্মানিত শান মুবারক-এ লিখিত সম্মানিত কিতাব মুবারক পাঠ করেন, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাওয়ানেহ ‘উমরী মুবারক আলোচনা করেন, পাঠ করেন, তাহলে অবশ্যই অবশ্যই উনার উপর জাহান্নাম হারাম হয়ে সম্মানিত জান্নাত মুবারক ওয়াজিব হয়ে যাবে। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়, সেই ব্যক্তি সর্বোচ্চ সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ স্বয়ং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে আবাদুল আবাদের তরে অবস্থান মুবারক করবেন। সুবহানাল্লাহ! এতে বিন্দু থেকে বিন্দুতমও সন্দেহের অবকাশ নেই। সুবহানাল্লাহ! কেননা, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ اَحَبَّ سُنَّتِـىْ فَقَدْ اَحَبَّـنِـىْ وَمَنْ اَحَبَّنِـىْ كَانَ مَعِـىَ فِـى الْـجَنَّةِ .
 অর্থ: “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি আমার কোনো একখানা সম্মানিত সুন্নত মুবারক উনাকে মুহব্বত করলেন, তিনি মূলত, আমাকেই মুহব্বত করলেন। আর যিনি আমাকে মুহব্বত করলেন, তিনি মূলত, আমার সাথেই সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ অবস্থান মুবারক করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (তুহফাতুল আহওয়াযী বিশরহি জামিয়িত তিরমিযী ৭/৩৭১, জামি‘উল উছূল ফী আহাদীছির রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ৯/৫৬৭, ক্বওয়া‘িয়দুত তাহদীছ ১/৫৫, তিরমিযী শরীফ, শরহুল বুখারী, মিরক্বাত শরীফ ১/২৬২, মিশকাত শরীফ ইত্যাদি)
এখন বলার বিষয় হচ্ছে একখানা সম্মানিত সুন্নত মুবারক উনাকে মুহব্বত করলে যদি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ অবস্থান করা যায়, তাহলে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার লখতে জিগার, মহাসম্মানিতা বানাত (মেয়ে), উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি তো হচ্ছেন সমস্ত সম্মানিত সুন্নত মুবারক উনাদের মহাসম্মানিতা মালিকাহ। সুবহানাল্লাহ! তাহলে উনাকে যাঁরা মুহব্বত করবেন, উনাদের ফায়ছালা কী হবে? উনারা কার সাথে, কোন সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ অবস্থান করবেন? মূলত, অবশ্য অবশ্যই ওই সকল ব্যক্তি উনারা স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে সর্বোচ্চ সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ চিরস্থায়ীভাবে বসবাস করবেন এবং উনাদের মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক ও জিয়ারত মুবারক-এ আবাদুল আবাদের তরে মশগূল থাকবেন। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়, উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আখাচ্ছুল খাছ উম্মত হিসেবে বিবেচিত হবেন এবং স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার ওই সকল উম্মত উনাদেরকে ইহকাল ও পরকালে দায়িমীভাবে সম্মানিত শাফায়াত মুবারক করবেন, উনার আখাচ্ছুল খাছ বিশেষ নেক দৃষ্টি মুবারক, মুহব্বত-মা’রিফত, নিসবত-কুরবত, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক দান করবেন। সুবহানাল্লাহ!
সৃষ্টির সূচনাতেই সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার বেমেছাল অনন্য খুছূছিয়াত মুবারক আবুল বাশার সাইয়্যিদুনা হযরত আদম আলাইহিস সালাম তিনি এবং উম্মুল বাশার সাইয়্যিদাতুনা হযরত হাওয়া আলাইহাস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা অবলোকন করেন। সুবহানাল্লাহ!
নুযহাতুল মাজালিস’ কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
قَالَ الْكِسَائِىُّ وَغَيْرُهٗ لَمَّا خَلَقَ اللهُ حَضْرَتْ اٰدَمَ عَلَيْهِ السَّلَامُ خَلَقَ مِنْ ضِلْعِهِ الْاَيْسَرِ حَضْرَتْ حَوَّاءَ عَلَيْهَا السَّلَامُ وَهُوَ فِى الْـجَنَّةِ وَاَوْدَعَهَا حُسْنَ سَبْعِيْنَ حَوْرَاءَ فَصَارَتْ حَضْرَتْ حَوَّاءُ عَلَيْهَا السَّلَامُ بَيْنَ الْـحُوْرِ الْعِيْنِ كَالْقَمَرِ بَيْنَ الْكَواكِبِ وَكَانَ حَضْرَتْ اٰدَمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ نَائِمًا فَلَمَّا اسْتَيْقَظَ مَدَّ يَدَهٗ اِلَيْهَا فَقِيْلَ لَهٗ حَتّٰى تُؤَدِّىَ مَهْرَهَا قَالَ وَمَا هُوَ قَالَ اَنْ تُصَلِّـىَ عَلـٰى سَيِّدِنَا مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ وَّقِيْلَ حَتّٰى تَعَلَّمَهَا مَعَالِـمَ دِيْنِهَا وَكَانَ حَضْرَتْ اٰدَمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ اَوْدَعَهُ اللهُ مِنَ الْـحُسْنِ وَالْكَمَالِ حَتّٰى اَنَّ خَدَّهُ الْاَيْـمَنَ يَغْلِبُ شُعَاعَ الشَّمْسِ وَكَانَ نُوْرُ سَيِّدِنَا مُـحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِىْ خَدِّهِ الْاَيْسَرِ يَغْلِبُ عَلَى الْقَمَرِ وَكَانَ حَضْرَتْ يُوْسُفُ عَلَيْهِ السَّلَامُ فِيْهِ فَلَمَّا نَظَرَ حَضْرَتْ اٰدَمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ فِـىْ وَجْهِ حَضْرَتْ حَوَّاءَ عَلَيْهَا السَّلَامُ نَظَرَتْ حَضْرَتْ حَوَّاءُ عَلَيْهَا السَّلَامُ فِـىْ وَجْهِ حَضْرَتْ اٰدَمَ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ يَا حَضْرَتْ حَوَّاءُ عَلَيْهَا السَّلَامُ مَا اَرٰى اَنَّ اللهَ تَعَالـٰى خَلَقَ خَلْقًا اَحْسَنَ مِنْكِ وَمِنِّـىْ فَاَوْحَى اللهُ تَعَالـٰى اِلـٰى حَضْرَتْ جِبْرِيْلَ عَلَيْهِ السَّلَامُ خُذْ بِـيَدِ حَضْرَتْ حَوَّاءَ عَلَيْهَا السَّلَامُ وَحَضْرَتْ اٰدَمَ عَلَيْهِ السَّلَامُ اِلَـى الْفِرْدَوْسِ الْاَعْلـٰى وَافْتَحْ لَـهُمَا قَصْرًا مِّنَ الْقُصُوْرِ فَفَتَحَ بَابَ قَصْرٍ مِّنَ الْيَاقُوْتِ الْاَحْمَرِ فِيْهِ قُبَّةٌ مِّنَ الْكَافُوْرِ عَلـٰى قَوَائِمِهِ الزَّبَرْجَدِ فِـىْ رَوْضَةٍ مِّنْ زَعْفَرَانَ فَفَتَحَ حَضْرَتْ جِبْرِيْلُ عَلَيْهِ السَّلَامُ بَابَ الْقُبَّةِ فَرَاٰى سَرِيْرًا مِّنَ الذَّهَبِ قَوَائِمَهٗ مِنَ الدُّرِّ عَلَيْهِ جَارِيَةٌ لَّـهَا نُوْرٌ وَّشُعَاعٌ عَلـٰى رَاْسِهَا تَاجٌ مِّنْ ذَهَبٍ مُّرَصَّعٌ بِالْـجَوَاهِرِ لَـمْ يَرَ حَضْرَتْ اٰدَمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ اَحْسَنَ مِنْهُ عَلَيْهِ صُوْرَةً جَمِيْلَةً قَالَ حَضْرَتْ اٰدَمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ يَا رَبِّ مَنْ هٰذِهِ الصُّوْرَةُ قَالَ اَلنُّوْرُ الرَّابِعَةُ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اَلزَّهْرَاءُ (حَضْرَتْ فَاطِمَةُ) عَلَيْهَا السَّلَامُ بِنْتُ نَبِىِّ سَيِّدِنَا مُـحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ يَا رَبِّ مَنْ يَّكُوْنُ بَعْلُهَا فَقَالَ اللهُ تَعَالـٰى يَا حَضْرَتْ جِبْرِيْلُ عَلَيْهِ السَّلَامُ اِفْتَحْ بَابَ قَصْرٍ مِّنْ يَّاقُوْتٍ فَفَتَحَ لَهٗ فَرَاٰى فِيْهِ قُبَّةً مِّنَ الْكَافُوْرِ فِيْهَا سَرِيْرٌ مِّنْ ذَهَبٍ عَلَيْهِ شَابٌّ حُسْنُهٗ كَحُسْنِ حَضْرَتْ يُوْسُفَ عَلَيْهِ السَّلَامُ فَقَالَ هٰذَا بَعْلُهَا حَضْرَتْ عَلِىُّ بْنُ اَبِـىْ طَالِبٍ عَلَيْهِ السَّلاَمُ فَقَالَ يَا رَبِّ هَلْ لَّـهُمْ اَوْلَادٌ فَاَمَرَ اللهُ تَعَالـٰى حَضْرَتْ جِبْرِيْلَ عَلَيْهِ السَّلَامُ اَنْ يَّفْتَحَ بَابَ قَصْرٍ مِّنَ اللُّؤْلُؤِ فَفَتَحَ بَابَ قَصْرٍ مِّنَ اللُّؤْلُؤِ فِيْهِ قُبَّةٌ مِّنَ الزَّبَرْجَدِ فِيْهَا سَرِيْرٌ مِّنَ الْعَنْۢبَرِ عَلَيْهِ صُوْرَةُ حَضْرَتْ اَلْـحَسَنِ عَلَيْهِ السَّلاَمُ وَحَضْرَتْ اَلْـحُسَيْنِ عَلَيْهِ السَّلَامُ فَرَجَعَ حَضْرَتْ اٰدَمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ اِلـٰى مَوْضِعِهٖ.
অর্থ: “হযরত ইমাম কিসায়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনিসহ আরো অনেকেই বর্ণনা করেন, সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার মধ্যে যখন মহান আল্লাহ পাক তিনি আবুল বাশার সাইয়্যিদুনা হযরত আদম ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে সৃষ্টি মুবারক করার পর উনার বাম পাঁজরের হাড় মুবারক থেকে উম্মুল বাশার সাইয়্যিদাতুনা হযরত হাওয়া আলাইহাস সালাম উনাকে সৃষ্টি মুবারক করেন। তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি উম্মুল বাশার সাইয়্যিদাতুনা হযরত হাওয়া আলাইহাস সালাম উনার মধ্যে ৭০ জন সম্মানিতা হুর উনাদের সৌন্দর্য মুবারক হাদিয়া মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! ফলে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল বাশার আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত সৌন্দর্য মুবারক সকল সম্মানিতা হুর উনাদের মঝে এরূপভাবে ফুটে উঠলো যেমন সমস্ত তারকারাজির মাঝে চন্দ্রের সৌন্দর্য। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল বাশার আলাইহাস সালাম উনাকে বেমেছাল সম্মানিত সৌন্দর্য মুবারক হাদিয়া মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি ঘুমিয়ে ছিলেন। যখন তিনি ঘুম থেকে উঠলেন, তখন তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল বাশার আলাইহাস সালাম উনার দিকে স্বীয় হাত মুবারক বাড়ালেন। তখন উনাকে বলা হলো, সম্মানিত মোহরানা মুবারক আদায় করা ব্যতীত সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল বাশার আলাইহাস সালাম উনাকে স্পর্শ করা যাবে না। সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, উনার সম্মানিত মোহরানা মুবারক কী? মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, আপনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত শান মুবারক-এ তিনবার সম্মানিত দুরূদ শরীফ পাঠ করুন। সুবহানাল্লাহ! আর কেউ কেউ বলেন (কোনো কোনো বর্ণনা মতে), আপনি উনাকে সম্মানিত দ্বীনী তা’লীম দিবেন- এই শর্তে স্পর্শ মুবারক করতে পারবেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে বেমেছাল সৌন্দর্য মুবারক এবং পূর্ণতা মুবারক হাদিয়া মুবারক করলেন। ফলে উনার সম্মানিত ডান গাল মুবারক উনার সৌন্দর্য মুবারক সূর্যের আলোক উজ্জ্বলকে হার মানালেন। যা ছিলেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত নূর মুবারক উনার এক অংশ মুবারক। সুবহানাল্লাহ! আর সম্মানিত বাম গাল মুবারক-এ এমন সৌন্দর্য মুবারক রাখা হলো, যা চন্দ্রের আলো থেকে সমুজ্জ্বল। আর এটা সাইয়্যিদুনা হযরত ইঊসুফ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত সৌন্দর্য মুবারক ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর যখন সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল বাশার আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত চেহারা মুবারক উনার দিকে এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল বাশার আলাইহাস সালাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত চেহারা মুবারক উনার দিকে দৃষ্টি মুবারক দিলেন, তখন সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, হে হযরত উম্মুল বাশার আলাইহাস সালাম! আমার দেখা মতে মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনার এবং আমার চেয়ে আর কাউকে এতো অধিক সৌন্দর্য মুবারক হাদিয়া মুবারক করেননি। সুবহানাল্লাহ! তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনাকে সম্মানিত আদেশ মুবারক করলেন, (হে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম!) আপনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল বাশার আলাইহাস সালাম উনার এবং সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের সম্মানিত হাত মুবারক ধরে উনাদেরকে ‘ফিরদাউসে ‘আলা’ উনার নিকট নিয়ে যান এবং উনাদের জন্য সেখানকার সম্মানিত বালাখানাসমূহ থেকে দুইটি সম্মানিত বালাখানা মুবারক খুলে দিন। অতঃপর হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি লাল ইয়াকুত পাথরের একটি সম্মানিত বালাখানা মুবারক উনার দ্বার মুবারক উন্মুক্ত করে দিলেন। সুবহানাল্লাহ! সেখানে জাফরানের বাগানের মধ্যে কর্পূরের একখানা সম্মানিত গম্বুজ মুবারক ছিলো, যার পায়া ছিলো গোমেদ তথা পীতবর্ণের মণিবিশেষ দ্বারা তৈরি। অতঃপর হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি উক্ত গম্বুজ মুবারক উনার দরজা মুবারক উন্মুক্ত করে দিলেন। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি সেখানে একখানা স্বর্ণ নির্মিত খাট মুবারক দেখতে পেলেন, যার পায়াগুলো ছিলে মুক্তার। তিনি উক্ত খাট মুবারক-এ একজন মহাসম্মানিতা মহিলা আলাইহাস সালাম উনাকে দেখতে পেলেন, যেই মহাসম্মানিতা মহিলা আলাইহাস সালাম উনার থেকে অবিরত ধারায় সম্মানিত ও পবিত্র নূর মুবারক এবং রশ্মি মুবারক বিচ্ছূরিত হচ্ছেন। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত মাথা মুবারক-এ জাওহার খচিত স্বর্ণের তাজ মুবারক শোভা পাচ্ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি উক্ত মহাসম্মানিতা মহিলা আলাইহাস সালাম উনার থেকে এতো অধিক বিস্ময়কর খুব ছূরত মুবারক উনার অধিকারিণী আর কাউকে কখনো দেখেননি। সুবহানাল্লাহ! তখন সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, আয় বারে এলাহী মহান আল্লাহ পাক! এতো অধিক বেমেছাল বিস্ময়কর সৌন্দর্য মুবারক উনার অধিকারিণী এই সুমহান ব্যক্তিত্বা মুবারক তিনি কে? মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, তিনি হচ্ছেন আমার যিনি মাহবূব হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত লখতে জিগার মুবারক, মহাসম্মানিতা বানাত (মেয়ে) সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, আয় বারে এলাহী! উনার মহাসম্মানিত যাওজুম মুকাররাম (মহাসম্মানিত আহাল) কে হবেন? অতঃপর মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, হে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম! আপনি ইয়াকুত নির্মিত সম্মানিত বালাখানা মুবারক উনার দরজা মুবারক খুলে দিন। তারপর হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি উক্ত সম্মানিত বালাখানা মুবারক উনার দরজা মুবারক খুলে দিলেন। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি সেখানে একখানা কর্পূর নির্মিত গম্বুজ মুবারক উনার ভিতর স্বর্ণের খাট মুবারক-এ সাইয়্যিদুনা হযরত ইঊসুফ আলাইহিস সালাম উনার ন্যায় (বরং উনার চেয়েও) অত্যধিক সৌন্দর্য মুবারক উনার অধিকারী একজন সম্মানিত যুবক উনাকে দেখতে পেলেন। সুবহানাল্লাহ! তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, ইনিই হচ্ছেন সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত জাওযুম মুকাররাম সাইয়্যিদুনা হযরত আলী ইবনে আবী ত্বালিব আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ! তখন সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, আয় বারে এলাহী! উনাদের কী কোনো আওলাদ রয়েছেন? তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনাকে লু’লু’ তথা অতি মূল্যবান মুক্তা মুবারক দ্বারা নির্মিত একখানা সম্মানিত বালাখানা মুবারক উনার দ্বার মুবারক খুলে দিতে নির্দেশ মুবারক দিলেন। ফলে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি উক্ত সম্মানিত বালাখানা মুবারক উনার দ্বার মুবারক উন্মুক্ত করে দিলেন। সুবহানাল্লাহ! সেখানে জমরূদ নির্মিত একখানা গম্বুজ মুবারক উনার ভিতরে একখানা আম্বরের খাট মুবারক-এ সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম) উনার এবং সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম) উনার অর্থাৎ উনাদের উভয়ের সম্মানিত ছূরত মুবারক শোভা পাচ্ছিলেন। (উনাদেরকে দেখে, সবশেষে) সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি উনার স্থান মুবারক-এ ফিরে আসলেন। সুবহানাল্লাহ! (নুযহাতুল মাজালিস ২/১৭২)
উপরোক্ত সম্মানিত ঘটনা মুবারক দ্বারা সৃষ্টির শুরুতেই উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার বেমেছাল মহাসম্মানিত মর্যাদা-মর্তবা মুবারক, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনার বিষয়টি অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে প্রকাশ করা হয়েছে। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, উম্মু আবীহা, উম্মুল আইম্মাহ, উম্মুল হাসানাঈন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার কতিপয় বেমেছাল খুছূছিয়াত মুবারক
 একখানা সম্মানিত বরকতময় ঘটনা
আল্লামা হাফিয আবুল আব্বাস আহমদ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে মুহম্মদ মুহিব্বুদ্দীন ত্ববারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (বিছাল শরীফ ৬৯৪ হিজরী) উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘যাখায়েরুল ‘উক্ববাহ ফী মানাক্বিবে যাওইল কুরবা শরীফ’ কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
اِنَّ النَّبِـىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ اَتَانِـىْ حَضْرَتْ جِبْرِيْلُ عَلَيْهِ السَّلَامُ بِتُفَّاحَةٍ مِّنَ الْـجَنَّةِ فَاَكَلْتُهَا وَوَاقَعْتُ اُمَّ الْـمُؤْمِنِيْنَ الْاُوْلـٰى سَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ اَلْكُبْرٰى (حَضْرَتْ خَدِيْـجَةَ) عَلَيْهَا السَّلَامُ فَحَمَلَتْ بِـحَضْرَتْ فَاطِمَةَ الزَّهْرَاءِ عَلَيْهَا السَّلَامُ.
অর্থ: “সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, একদা হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত জান্নাত মুবারক থেকে একখানা আপেল মুবারক নিয়ে আমার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ উপস্থিত হন। অতঃপর আমি উক্ত সম্মানিত জান্নাতী আপেল মুবারক খাই। তারপর উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি আমার সম্মানিত ছোহবত মুবারক গ্রহণ করেন। অতঃপর উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রেহেম শরীফ-এ ধারণ মুবারক করেন।” সুবহানাল্লাহ! (যাখায়েরুল ‘উক্ববাহ ১/৪৪, তারীখুল খমীস ১/২৭৭) এ সম্মানিত ওয়াকেয়া মুবারক দ্বারা সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার বেমেছাল খুছূছিয়াত বা বৈশিষ্ট্য মুবারক উনার বিষয়টি স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত বিশেষ সুসংবাদ মুবারক হাদিয়া:
বর্ণিত রয়েছে যে, উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র রেহেম শরীফ-এ অবস্থানকালীন সময় একদা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ মুবারক করেন, হে উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম! হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে একখানা বিশেষ সম্মানিত সুসংবাদ মুবারক নিয়ে এসেছেন। তিনি বলেছেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, আপনার সম্মানিত ও পবিত্র রেহেম শরীফ-এ আমার একজন মহাসম্মানিতা মেয়ে আওলাদ আলাইহাস সালাম তিনি সম্মানিত অবস্থান মুবারক করছেন। আমার সম্মানিত বংশ মুবারক উনার মাধ্যম দিয়ে দুনিয়ার যমীনে বিস্তার লাভ করবেন এবং ক্বিয়ামত পর্যন্ত জারি থাকবেন। সুবহানাল্লাহ! আর উনার বংশধরগণ অত্যন্ত দ্বীনদার, পরহেযগার এবং মহান আল্লাহ পাক উনার আখাচ্ছুল খাছ মাহবূব হবেন। সুবহানাল্লাহ! উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহিস সালাম তিনি এই সুসংবাদ মুবারক শুনে অত্যন্ত খুশি মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি
উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম
উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ অবস্থানকালীন সময় কোনো প্রকার তাকলীফী শান মুবারক গ্রহণ করতে হয়নি:
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেন, তখন সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কোনো প্রকার তাকলীফী শান মুবারক গ্রহণ করতে হয়নি। সুবহানাল্লাহ! ঠিক একইভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার লখতে জিগার সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি যখন উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র রেহেম শরীফ-এ সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন, তখন উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনাকেও কোনো প্রকার তাকলীফী শান মুবারক গ্রহণ করতে হয়নি। সুবহানাল্লাহ! এ সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
فَحَمَلَتْ بِـحَضْرَتْ فَاطِمَةَ الزَّهْرَاءِ عَلَيْهَا السَّلَامُ فَقَالَتْ اِنِّـىْ حَمَلْتُ حَمْلًا خَفِيْفًا.
অর্থ: “অতঃপর উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে উনার সম্মানিত ও পবিত্র রেহেম শরীফ-এ ধারণ মুবারক করেন। উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, আমি উনাকে আমার সম্মানিত ও পবিত্র রেহেম শরীফ-এ অতি উত্তমভাবে এবং অতি সহজে ধারণ মুবারক করেছি। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ এতে আমার কোনো প্রকার তাকলীফী শান মুবারক গ্রহণ করতে হয়নি।” সুবহানাল্লাহ! (যাখায়েরুল ‘উক্ববাহ ১/৪৫, তারীখুল খমীস)
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ অবস্থানকালীন সময় তিনি সবসময় সম্মানিত বেহেশতী সুঘ্রাণ মুবারক পেতেন: সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রেহেম শরীফ-এ থাকা অবস্থায় উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি সবসময় সম্মানিত বেহেশতী সুঘ্রাণ মুবারক পেতেন। সুবহানাল্লাহ! এ সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
فَلَمَّا حَمَلَتْ اُمُّ الْـمُؤْمِنِيْنَ الْاُوْلـٰى سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اَلْكُبْرٰى (حَضْرَتْ خَدِيْـجَةُ) عَلَيْهَا السَّلَامُ بِـالنُّوْرِ الرّابِعَةِ سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ اَلزَّهْرَاءِ (حَضْرَتْ فَاطِمَةَ) عَلَيْهَا السَّلَامُ وَجَدَتْ رَائِحَةَ الْـجَنَّةِ تِسْعَةَ اَشْهُرٍ فَلَمَّا اَرْضَعَتْهَا اِنْتَقَلَتِ الرَّائِحَةُ اِلَيْهَا.
অর্থ: “যখন উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে সম্মানিত ও পবিত্র রেহেম শরীফ-এ ধারণ মুবারক করেন, তখন থেকে তিনি দীর্ঘ ৯ মাস (অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ পর্যন্ত) সম্মানিত বেহেশতী সুঘ্রাণ মুবারক পেতে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর যখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন উক্ত সম্মানিত বেহেশতী সুঘ্রাণ মুবারক উনার মাঝে শোভা পেতে থাকেন।” সুবহানাল্লাহ! (নুযহাতুল মাজালিস ২/১৭১)
মূলত, সম্মানিত জান্নাত মুবারকসহ সমস্ত কায়িনাত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইতি শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের কারণে সমস্ত প্রকার নি‘য়ামত মুবারক লাভ করেছে। শুধু তাই নয়, সম্মানিত জান্নাত মুবারক যে সুঘ্রাণ মুবারক লাভ করেছে, সেটা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিস সালাম উনাদের থেকেই লাভ করেছে। সুবহানাল্লাহ! সেই সম্মানিত সুঘ্রাণ মুবারকই সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মাঝে শোভা পেয়েছে। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ এবং সম্মানিত বিশেষ ঘটনা মুবারক:
সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার সময় উনার এবং উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার জন্য স্বয়ং যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত জান্নাত মুবারক থেকে বিশেষ চার জন সম্মানিতা মহিলা আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে প্রেরণ করেন। সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
 دَخَلَ عَلَيْهَا اَرْبَعُ نِسْوَةٍ عَلَيْهِنَّ مِنَ الْـجَمَالِ وَالنُّوْرِ مَا لَا يُوْصَفُ فَقَالَتْ لَـهَا اِحْدَاهُنَّ اَنَا اُمُّكِ حَضْرَتْ حَوَّاءُ عَلَيْهَا السَّلَامُ وَقَالَتِ الْاُخْرٰى اَنَا حَضْرَتْ اٰسِيَةُ بِنْتُ مُزَاحِمٍ عَلَيْهَا السَّلَامُ وَقَالَتِ الْاُخْرٰى اَنَا حَضْرَتْ كُلْثُوْمٌ عَلَيْهَا السَّلَامُ اُخْتُ حَضْرَتْ مُوْسٰى عَلَيْهِ السَّلَامُ وَقَالَتِ الْاُخْرٰى اَنَا حَضْرَتْ مَرْيَـمُ بِنْتُ عِمْرَانَ عَلَيْهَا السَّلَامُ اُمُّ عِيْسٰى عَلَيْهِ السَّلَامُ جِئْنَا لِنَلِىْ مِنْ اَمْرِكِ.
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার জন্য চারজন সম্মানিতা মহিলা আলাইহিন্নাস সালাম উনারা সম্মানিত ও পবিত্র হুজরা শরীফ-এ প্রবেশ করলেন, উপস্থিত হলেন। উনাদের চেহারা মুবারক অত্যন্ত সুন্দর ও নূরানী। ছূরতান উনাদেরকে পরিচিত মনে হচ্ছিলো না। তখন উনাদের মধ্যে প্রথমজন উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে বললেন, আমি আপনার সম্মানিতা আম্মাজান উম্মুল বাশার সাইয়্যিদাতুনা হযরত হাওয়া আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! দি¦তীয়জন বললেন, আমি সাইয়্যিদাতুনা হযরত ‘আসিয়াহ্ বিনতে মুযাহিম আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! তৃতীয়জন বললেন, আমি জলীলুল ক্বদর রসূল হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত বোন হযরত কুলছূম আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! চতুর্থজন বললেন, আমি জলীলুল ক্বদর রসূল হযরত ঈসা রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিতা আম্মাজান হযরত মারইয়াম বিনতে ইমরান আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! আমরা এসেছি আপনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার জন্য।” সুবহানাল্লাহ! (যাখায়েরুল ‘উক্ববাহ ১/৪৫)
অতঃপর মহান আল্লাহ পাক তিনি কুদরতীভাবে উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের বিষয়টা ফায়ছালা মুবারক করেন। অর্থাৎ তিনি কুদরতীভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! সময় মুবারক ছিলেন আনুষ্ঠানিকভাবে মহাসম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালাত মুবারক প্রকাশের প্রায় ৩ বছর পূর্বে ২০শে জুমাদাল উখরা শরীফ ইয়াওমুল জুমু‘য়াহ্ শরীফ সুবহে ছাদিক্ব উনার সময়। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ৩৭ বছর পার হয়ে ৩৮ বছর চলাকালীন। সুবহানাল্লাহ! আর উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ৫২ বছর পার হয়ে ৫৩ বছর চলাকালীন। সুবহানাল্লাহ!
স্মরণীয় যে, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ছাহিবু ইলমিল আউওয়ালি ওয়াল ইলমিল আখিরি, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “শুধু উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সময় নয়; বরং মহাসম্মানিত হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের এবং মহাসম্মানিতা হযরত বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের প্রত্যেকের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের সময়ই উনাদের সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার জন্য মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত জান্নাত মুবারক থেকে বিশেষ বিশেষ সম্মানিতা মহিলা আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে প্রেরণ করেছেন এবং উনারা উনাদের যথাযথ সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়ে নিজেদেরকে ধন্য করেছেন।” সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত সিজদারত অবস্থায় এবং সম্মানিত ও পবিত্র অঙ্গুলি মুবারক উত্তোলন করা অবস্থায় দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক:
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যেমন সম্মানিত সিজদারত অবস্থায় এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুশ শক্ব মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র অঙ্গুলি মুবারক) উত্তোলন করা অবস্থায় দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক রেখেছেন, ঠিক তেমনিভাবে উনার মহাসম্মানিত লখতে জিগার মুবারক, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনিও সম্মানিত সিজদারত অবস্থায় এবং সম্মানিত ও পবিত্র অঙ্গুলি মুবারক উত্তোলন করা অবস্থায় দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক রেখেছেন। সুবহানাল্লাহ!
 এ সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
قَالَتْ فَوُلِدَتْ اَلنُّوْرُ الرَّابِعَةُ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اَلزَّهْرَاءُ (حَضْرَتْ فَاطِمَةُ) عَلَيْهَا السَّلَامُ فَوَقَعَتْ حِيْنَ وَقَعَتْ عَلَى الْاَرْضِ سَاجِدَةً رَّافِعَةً اُصْبُعَهَا.
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, অতঃপর সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি যখন দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক রাখেন, তখন তিনি সম্মানিত সিজদারত অবস্থায় এবং সম্মানিত ও পবিত্র অঙ্গুলি মুবারক উত্তোলন করা অবস্থায় দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক রাখেন।” সুবহানাল্লাহ! (যাখায়েরুল ‘উক্ববাহ ফী মানাক্বিবে যাওইল কুরবা শরীফ ১/৪৫)
সম্মানিত ও পবিত্র জিসম মুবারক থেকে সারা কায়িনাতে সম্মানিত নূর মুবারক বিচ্ছূরিত হওয়া:
উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র হুজরা শরীফ এমনিতেই নূরানী। সুবহানাল্লাহ! তথাপি সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের কারণে উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র হুজরা শরীফ আরো নূরানী হয়ে গেলেন এবং উনার সম্মানিত ও পবিত্র জিসম মুবারক থেকে সম্মানিত নূর মুবারক বিচ্ছূরিত হতে লাগলেন। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত নূর মুবারক উনার আলোতে সমস্ত কিছু আলোকিত হয়ে গেলো। সুবহানাল্লাহ! পৃথিবীর চতুর্দিকে এবং সারা কায়িনাতে উনার সম্মানিত নূর মুবারক উনার আলো মুবারক ছড়িয়ে পড়লেন। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত জান্নাত মুবারক থেকে সম্মানিত হুর উনাদের আগমন এবং সম্মানিত জান্নাতী পানি মুবারক দ্বারা সম্মানিত গোসল মুবারক করানো:
 সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের সময় উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার জন্য মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত জান্নাত মুবারক থেকে বিশেষ চার জন সম্মানিতা মহিলা আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকেই শুধু প্রেরণ করেননি; বরং অসংখ্য-অগণিত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম এবং অসংখ্য-অগণিত সম্মানিত জান্নাতী বিশেষ হুর-গেলমান উনাদেরকেও প্রেরণ করেছিলেন। সুবহানাল্লাহ! সম্মানিতা জান্নাতী বিশেষ হুর উনাদের হাত মুবারক-এ গোসল মুবারক করানোর জন্য বড় বাটি এবং উজ্জ্বল, চাকচিক্যময় পানির মশক ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! প্রত্যেকটি মশক সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার সম্মানিত পবিত্র পানি মুবারক দ্বারা পরিপূর্ণ ছিলেন। এই সকল সম্মানিতা বিশেষ হুর উনারা অত্যন্ত আদবের সাথে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার সম্মানিত পানি মুবারক দ্বারা সম্মানিত গোসল মুবারক করান এবং খুশবূ মুবারক মিশ্রিত সম্মানিত জান্নাতী লেবাস মুবারক পরিধান করিয়ে দেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর উনারা অত্যন্ত আদবের সাথে উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত কোল মুবারক-এ সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে তুলে দেন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেই উম্মতে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের জন্য
সম্মানিত দু’য়া মুবারক করা:
আল্লামা হাফিয আবুল আব্বাস আহমদ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে মুহম্মদ মুহিব্বুদ্দীন ত্ববারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন,
قَالَتْ فَوُلِدَتْ اَلنُّوْرُ الرَّابِعَةُ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اَلزَّهْرَاءُ (حَضْرَتْ فَاطِمَةُ) عَلَيْهَا السَّلَامُ فَوَقَعَتْ حِيْنَ وَقَعَتْ عَلَى الْاَرْضِ سَاجِدَةً رَّافِعَةً اُصْبُعَهَا.
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, অতঃপর সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি যখন দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক রাখেন, তখন তিনি সম্মানিত সিজদা মুবারকরত অবস্থায় এবং সম্মানিত ও পবিত্র অঙ্গুলি মুবারক উত্তোলন করা অবস্থায় দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক রাখেন।” সুবহানাল্লাহ! (যাখায়েরুল ‘উক্ববাহ শরীফ ১/৪৫)
মূলত, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার পর পর সম্মানিত সিজদারত অবস্থায় যেমন উনার উম্মত উনাদের গুণাহ মাফের জন্য সম্মানিত দু’য়া মুবারক করেছেন, ঠিক তেমনিভাবে সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনিও মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার পর পর সম্মানিত সিজদারত অবস্থায় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উম্মত উনাদের গুণাহ মাফের জন্য সম্মানিত দু’য়া মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! উপরোক্ত সম্মানিত ওয়াকেয়াহ মুবারক সেই দিকেই ইঙ্গিত বহন করে। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশে মহাসম্মানিত ‘ফালইয়াফরহূ শরীফ’ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন:
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
یٰۤاَیُّہَا النَّاسُ قَدْ جَآءَتْكُمْ مَّوْعِظَةٌ مّـِنْ رَّبّـِكـُمْ وَشِفَآءٌ لِّـمَا فِى الصُّدُوْرِ وَهُدًى وَّرَحْمَةٌ لّـِلْمُؤْمِنِيْنَ. قُلْ بِفَضْلِ اللهِ وَبِرَحْمَتِهٖ فَبِذٰلِكَ فَلْيَفْرَحُوْا هُوَ خَيْرٌ مِّـمَّا يَـجْمَعُوْنَ.
অর্থ: “হে মানুষেরা! হে সমস্ত জিন-ইনসান, কায়িনাতবাসী! অবশ্যই তোমাদের মাঝে মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে সর্বশ্রেষ্ঠ নছীহতকারী, তোমাদের অন্তরের সর্বপ্রকার ব্যাধিসমূহের সর্বশ্রেষ্ঠ আরোগ্যদানকারী, সর্বশ্রেষ্ঠ হিদায়েত দানকারী এবং খাছ করে ঈমানদার উনাদের জন্য, আমভাবে সমস্ত কায়িনাতবাসীর জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ রহমতস্বরূপ আমার যিনি হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাশরীফ মুবারক এনেছেন। সুবহানাল্লাহ! হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীকে জানিয়ে দিন, মহান আল্লাহ পাক তিনি যে, সম্মানিত ফযল মুবারক এবং সম্মানিত রহমত মুবারক হিসেবে উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পাঠিয়েছেন, সেজন্য তারা যেন মহাসম্মানিত ‘ফালইয়াফরহূ শরীফ’ তথা সম্মানিত খুশি মুবারক প্রকাশ করে, মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করে। এই মহাসম্মানিত ‘ফালইয়াফরহূ শরীফ’ তথা সম্মানিত খুশি মুবারক প্রকাশ করা, মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করা সবকিছু থেকে সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সর্বোত্তম, যা তারা দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য সঞ্চয় করে।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা ইউনূস শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৭-৫৮)
এ সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার পরিপূর্ণ মিছদাক্ব হচ্ছেন উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! তাই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ উপলক্ষে মহাসম্মানিত ‘ফালইয়াফরহূ শরীফ’ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করা যেমন ফরয, তেমনিভাবে উনার মহাসম্মানিতা আওলাদ উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ উপলক্ষে মহাসম্মানিত ‘ফালইয়াফরাহূ শরীফ’ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করাও ফরয তো অবশ্যই; বরং ফরয উনার উপর ফরয। সুবহানাল্লাহ!
কেননা উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশে স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা এবং হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারাসহ কুল-কায়িনাতের সকলেই মহাসম্মানিত ‘ফালইয়াফরহূ শরীফ’ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত ও পবিত্র জিসম মুবারক থেকে সম্মানিত বেহেশতী সুঘ্রাণ মুবারক:
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে যে, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত ও পবিত্র রেহেম শরীফ-এ থাকা অবস্থায় উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি সবসময় সম্মানিত বেহেশতী সুঘ্রাণ মুবারক পেতেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর যখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন উক্ত বেহেশতী সুঘ্রাণ মুবারক উনার মাঝে শোভা পেতে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! যেমন এই সম্পর্কে ‘নুযহাতুল মাজালিস’ কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
فَلَمَّا حَمَلَتْ اُمُّ الْـمُؤْمِنِيْنَ الْاُوْلـٰى سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اَلْكُبْرٰى (حَضْرَتْ خَدِيـْجَةُ) عَلَيْهَا السَّلَامُ بِالنُّوْرِ الرَّابِعَةِ سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ اَلزَّهْرَاءِ (حَضْرَتْ فَاطِمَةَ) عَلَيْهَا السَّلَامُ وَجَدَتْ رَائِحَةَ الْـجَنَّةِ تِسْعَةَ اَشْهُرٍ فَلَمَّا اَرْضَعَتْهَا اِنْتَقَلَتِ الرَّائِحَةُ اِلَيْهَا.
অর্থ: “যখন উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে সম্মানিত ও পবিত্র রেহেম শরীফ-এ ধারণ মুবারক করেন, তখন থেকে তিনি দীর্ঘ ৯ মাস (অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ পর্যন্ত) সম্মানিত বেহেশতী সুঘ্রাণ মুবারক পেতে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর যখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন উক্ত সম্মানিত বেহেশতী সুঘ্রাণ মুবারক উনার মাঝে শোভা পেতে থাকেন।” সুবহানাল্লাহ! (নুযহাতুল মাজালিস ২/১৭১)
মূলত, সম্মানিত জান্নাত মুবারকসহ সমস্ত কায়িনাত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইতি শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের কারণে সমস্ত প্রকার নিয়ামত মুবারক লাভ করেছে। শুধু তাই নয়, সম্মানিত জান্নাত মুবারক যে সুঘ্রাণ মুবারক লাভ করেছে, সেটা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিস সালাম উনাদের থেকেই লাভ করেছে। সুবহানাল্লাহ! সেই সম্মানিত সুঘ্রাণ মুবারকই সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মাঝে শোভা পেয়েছে। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত ও পবিত্র আক্বীক্বাহ মুবারক দেয়া এবং সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক রাখা:
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার লখতে জিগার সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের ৭ম দিন তথা ২৬ শে জুমাদাল উখরা শরীফ ইয়াওমুল খমীস শরীফ উনার পক্ষ থেকে সম্মানিত ও পবিত্র আক্বীক্বাহ মুবারক দেন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক রাখেন ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত ফাত্বিমাহ আলাইহাস সালাম’। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত কুনিয়াত মুবারক:
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত কুনিয়াত মুবারক হচ্ছেন ‘উম্মুল হাসান আলাইহাস সালাম’। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন সম্মানিত বেহেশতী সুঘ্রাণ মুবারক গ্রহণ করার ইচ্ছা মুবারক প্রকাশ করতেন, তখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে সম্মানিত বুছা মুবারক দিতেন
 নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার প্রতি আগ্রহী হতেন তথা সম্মানিত বেহেশতী সুঘ্রাণ মুবারক গ্রহণ করার ইচ্ছা মুবারক প্রকাশ করতেন, তখন সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে সম্মানিত বুছা মুবারক দিতেন। সুবহানাল্লাহ!
 এ সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে যে,
فَلَمَّا حَمَلَتْ اُمُّ الْـمُؤْمِنِيْنَ الْاُوْلـٰى سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اَلْكُبْرٰى (حَضْرَتْ خَدِيـْجَةُ) عَلَيْهَا السَّلَامُ بِالنُّوْرِ الرَّابِعَةِ سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ اَلزَّهْرَاءِ (حَضْرَتْ فَاطِمَةَ) عَلَيْهَا السَّلَامُ وَجَدَتْ رَائِحَةَ الْـجَنَّةِ تِسْعَةَ اَشْهُرٍ فَلَمَّا اَرْضَعَتْهَا اِنْتَقَلَتِ الرَّائِحَةُ اِلَيْهَا فَكَانَ النَّبِـىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِذَا اشْتَاقَ اِلَـى الْـجَنَّةِ قَبَّلَ النُّوْرَ الرَّابِعَةَ سَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ اَلزَّهْرَاءَ (حَضْرَتْ فَاطِمَةَ) عَلَيْهَا السَّلَامُ.
অর্থ: “যখন উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে সম্মানিত ও পবিত্র রেহেম শরীফ-এ ধারণ মুবারক করেন, তখন থেকে তিনি দীর্ঘ ৯ মাস (অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ পর্যন্ত) সম্মানিত বেহেশতী সুঘ্রাণ মুবারক পেতে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর যখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন উক্ত সম্মানিত বেহেশতী সুঘ্রাণ মুবারক উনার মাঝে শোভা পেতে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! আর যখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার প্রতি আগ্রহী হতেন তথা সম্মানিত বেহেশতী সুঘ্রাণ মুবারক গ্রহণ করার ইচ্ছা মুবারক প্রকাশ করতেন, তখন সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে সম্মানিত বুছা মুবারক দিতেন।” সুবহানাল্লাহ! (নুযহাতুল মাজালিস ২/১৭১)
মূলত, সম্মানিত জান্নাত মুবারকসহ সমস্ত কায়িনাত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইতি শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের কারণে সমস্ত প্রকার নিয়ামত মুবারক লাভ করেছে। শুধু তাই নয়, সম্মানিত জান্নাত মুবারক যে সুঘ্রাণ মুবারক লাভ করেছে, সেটা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিস সালাম উনাদের থেকেই লাভ করেছে। সুবহানাল্লাহ! সেই সম্মানিত সুঘ্রাণ মুবারকই সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মাঝে শোভা পেয়েছে। সুবহানাল্লাহ!
হযরত ফাত্বিমাহ আলাইহাস সালাম’ এই সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক রাখার বেমেছাল হিকমত মুবারক
 মূলত, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত নির্দেশ মুবারক মুতাবিক উনার মহাসম্মানিতা আওলাদ সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক রাখেন ‘হযরত ফাত্বিমাহ আলাইহাস সালাম’। সুবহানাল্লাহ!
উক্ত সম্মানিত নাম মুবারক উনার অর্থ মুবারক হচ্ছেন- উদ্ধারকারিণী, পৃথককারিণী, রক্ষাকারিণী। সুবহানাল্লাহ! এই সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক রাখার পিছনে লক্ষ কোটি হিকমত মুবারক নিহিত রয়েছে। যেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম-কায়িনাতবাসীর চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! নিম্নে এ বিষয়ে সংক্ষিপ্তাকারে কিছু আলোচনা করা হলো-
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ عَنِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ اِنَّـمَا سَـمَّيْتُ حَضْرَتْ فَاطِمَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ لِاَنَّ اللهَ فَطَمَ مَنْ اَحَبَّهَا مِنَ النَّارِ.
অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রাহ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে বর্ণনা করেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে যাঁরা মুহব্বত করবেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদেরকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিবেন। সুবহানাল্লাহ! তাই উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক রাখা হয়েছে ‘হযরত ফাত্বিমাহ আলাইহাস সালাম’ ।” সুবহানাল্লাহ! (ইমাতুল ইসমা’ ৪/১৯৬)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّـمَا سَـمَّيْتُ بِنْتِـىْ حَضْرَتْ فَاطِمَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ لِاَنَّ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ فَطَمَهَا وَفَطَمَ مُـحِـبِّـيْهَا عَنِ النَّارِ .
অর্থ: “হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই আমার মহাসম্মানিতা বানাত (মেয়ে) সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক ফাত্বিমাহ আলাইহাস সালাম রাখার কারণ হচ্ছে, মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাকে এবং উনার মুহব্বতকারী উনাদেরকে জাহান্নাম থেকে পৃথক রেখেছেন, মুক্তি দিয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ! (আল ফিরদাউস লিদ দায়লামী ১/৩৪৬)
অপর বর্ণনায় এসেছে,    
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ابْـنَتِـىْ حَضْرَتْ فَاطِمَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ حَوْرَاءُ اٰدَمِيَّةٌ لَـمْ تَـحِضْ وَلَـمْ تَطْمِثْ وَاِنَّـمَا سَـمَّاهَا حَضْرَتْ فَاطِمَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ لِاَنَّ اللهَ فَطَمَهَا وَمُـحِبِّـيْهَا مِنَ النَّارِ.
অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমার মহাসম্মানিতা বানাত (মেয়ে), লখতে জিগার সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন ‘মহাসম্মানিতা মানবীয় হুর মুবারক’। সুবহানাল্লাহ! মহিলাদের যে স্বাভাবিক মাজূরতা রয়েছে সেটা উনার নেই। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে এবং উনার মুহব্বতকারী উনাদেরকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়েছেন, তাই উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক ‘হযরত ফাত্বিমাহ আলাইহাস সালাম’ রাখা হয়েছে।” সুবহানাল্লাহ! (তারীখে বাগদাদ ১২/৩৩১, কানযুল ‘উম্মাল ১২/১০৯, মু‘জামুশ শুয়ূখ ২/২১৬)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ عَلِىٍّ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِلنُّوْرِ الرَّابِعَةِ سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ اَلزَّهْرَاءِ (حَضْرَتْ فَاطِمَةَ) عَلَيْهَا السَّلَامُ يَا حَضْرَتْ فَاطِمَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ تَدْرِيْنَ لـِمَ سُـمِّيْتَ حَضْرَتْ فَاطِمَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ قَالَ حَضْرَتْ عَلِىٌّ عَلَيْهِ السَّلَامُ يَا رَسُوْلَ اللهِ لـِمَ سُـمِّيَتْ حَضْرَتْ فَاطِمَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ قَالَ اِنَّ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ قَدْ فَطَمَهَا وَذُرِّيَّتَهَا عَنِ النَّارِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ.
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ মুবারক করেন, হে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম! আপনার কি জানা রয়েছে যে, কেন আপনার সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক ‘হযরত ফাত্বিমাহ আলাইহাস সালাম’ রাখা হয়েছে? সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! কেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক ‘হযরত ফাত্বিমাহ আলাইহাস সালাম’ রাখা হয়েছে? নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই নিশ্চয়ই যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে এবং উনার সম্মানিত বংশধর উনাদেরকে ক্বিয়ামতের দিন জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্ত রাখবেন। সুবহানাল্লাহ! (এ জন্য উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক রাখা হয়েছে, ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত ফাত্বিমাহ আলাইহাস সালাম’।) সুবহানাল্লাহ! (যাখায়িরুল ‘উক্ববাহ শরীফ ১/২৬)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُوْدٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّ حَضْرَتْ فَاطِمَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ اَحْصَنَتْ فَرْجَهَا فَحَرَّمَ اللهُ ذُرِّيَتَهَا عَلَى النَّارِ.
অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাস‘ঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি উনার সম্মানিত চরিত্র মুবারক পবিত্র থেকে পবিত্রতম রেখেছেন, ফলে মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার সম্মানিত বংশধর উনাদের উপর জাহান্নাম হারাম করে দিয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে বাযযার ১/২৯৫, ৫/২২৩, হিলইয়াতুল আউলিয়া ৪/১৮৮, মুস্তাদরকে হাকিম ৩/১৫২, ৩/১৬৫, আস সওয়ায়িকুল মুহরিক্বহ)
সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, উম্মু আবীহা, উম্মুল আইম্মাহ, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে যাঁরা জাররাহ থেকে জাররাহ পরিমাণ মুহব্বত করবেন, উনারা প্রত্যেকই নাজাতপ্রাপ্ত। সুবহানাল্লাহ! আর এ বিষয়টি উনার সম্মানিত নাম মুবারক থেকেই স্পষ্টভাবে প্রকাশিত প্রমাণিত। সুবহানাল্লাহ!
উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত লক্বব মুবারক-
 মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
وَلِلّٰهِ الْاَسْـمَآءُ الْـحُسْنٰـى فَادْعُوْهُ بِـهَا.
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক উনার অনেক সুন্দর সুন্দর সম্মানিত নাম মুবারক তথা সম্মানিত লক্বব মুবারক রয়েছেন, তোমরা উনাকে সেই সম্মানিত নাম মুবারক তথা সম্মানিত লক্বব মুবারক দ্বারা আহ্বান মুবারক করো।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আ’রাফ শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১৮০)
মহান আল্লাহ পাক তিনি যেমন অসীম ঠিক তেমনিভাবে উনার সম্মানিত লক্বব মুবারক উনাদের সংখ্যাও অসীম। সুবহানাল্লাহ! অনুরূপভাবে মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত লক্বব মুবারক উনাদের সংখ্যাও অসংখ্য-অসীম। এক কথায় তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন; এছাড়া সমস্ত লক্বব মুবারক উনাদের অধিকারী। সুবহানাল্লাহ! ঠিক একইভাবে বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া যত সম্মানিত লক্বব মুবারক রয়েছেন সমস্ত সম্মানিত লক্বব মুবারক উনাদের মালিকাহ তথা অধিকারিণী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ!
এখানে উনার অসংখ্য-অগণিত সম্মানিত বরকতময় লক্বব মুবারক থেকে সামান্য কতিপয় সম্মানিত বরকতময় লক্বব মুবারক উল্লেখ করা হলো:
১.       بِنْتُ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ (বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা বানাত (মেয়ে) আলাইহাস সলাম।
২.       اَهْلُ بَيْتِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ (আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আহলু বাইত শরীফ।
৩.       سَيِّدَةُ النِّسَاءِ عَلَى الْعَالَمِيْنَ (সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল ‘আলামীন)- সারা কায়িনাতে যত মহিলা রয়েছেন উনাদের প্রত্যেকের সাইয়্যিদাহ।
৪.       سَيِّدَةُ نِسَاءِ اَهْلِ الْـجَنَّةِ (সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ)- সম্মানিত জান্নাতবাসী সমস্ত মহিলাগণ উনাদের সাইয়্যিদাহ।
৫.       بِضْعَةٌ مِّنْ رَّسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ (বিদ্ব‘আতুম মির রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত জিসিম মুবারক উনার সম্মানিত গোশত মুবারক উনার একখানা সম্মানিত টুকরো মুবারক।
৬.       اَلنُّوْرُ الرَّابِعَةُ (আন নূরুর রবি‘য়াহ)- আন নূরুর রবি‘য়াহ, সম্মানিত চতুর্থ নূর মুবারক। তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা বানাত আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে চতুর্থ, তাই উনাকে “আন নূরুর রবি‘য়াহ” বলা হয়। সুবহানাল্লাহ!
৭.       اَلزَّهْـرَاءُ (আয যাহরা’)- সম্মানিত ফুল মুবারক বা সম্মানিত কলি মুবারক, সম্মানিত কুসম মুবারক, বেমেছাল সৌন্দর্য মুবারক উনার অধিকারিণী, মা’ছূমাহ।
৮.       اَفْضَلُ الـنِّـسَاءِ وَالنَّاسِ بَعْدَ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ (আফদ্বলুন নিসা ওয়ান নাস বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পর সমস্ত মহিলা এবং সমস্ত মানুষের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বোত্তম ব্যক্তিত্বা মুবারক।
৯.       اُمُّ اَبِيْهَا (উম্মু আবীহা)- উনার মহাসম্মানিত পিতা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহাস সালাম।
১০.     اُمُّ الْـحَسَنَيْنِ (উম্মুল হাসানাইন)- অত্যন্ত সুদর্শন, খুব সুন্দর, অতি উত্তম দুইজন মহাসম্মানিত ব্যক্তিত্ব মুবারক তথা সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
১১.     اُمُّ الْاَئِمَّةِ (উম্মুল আইম্মাহ)- মহাসম্মানিত হযরত ইমাম আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম,
১২.     اَلسَّيِّدَةُ (আস সাইয়্যিদাহ)- সর্বশ্রেষ্ঠা।
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত হিজরত মুবারক
 মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে সম্মানিত ওহী মুবারক পেয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন সম্মানিত ও পবিত্র মদীনা শরীফ-এ সম্মানিত হিজরত মুবারক করেন, তখন বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা প্রত্যেকেই সম্মানিত মক্কা শরীফ-এ অবস্থান মুবারক করছিলেন। সুবহানাল্লাহ!
মুজাদ্দিদে আ’যম, ক্বইয়ূমুয যামান, আল জাব্বারিউল আউওয়াল, আল ক্বউইউল আউওয়াল, সুলত্বানুন নাছীর, হাবীবুল্লাহ, জামি‘উল আলক্বাব, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত হিজরত মুবারক করে সম্মানিত ও পবিত্র মদীনা শরীফ-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করার প্রায় এক থেকে দেড় মাস পর উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি, উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম তিনি, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা এক সাথে সম্মানিত হিজরত মুবারক করে সম্মানিত ও পবিত্র মদীনা শরীফ-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেন।” সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, বিদ‘আতুম মির রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা আন নূরুর রাবিয়া’হ হযরত যাহরা আলাইহস সালাম উনার সাথে খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন, যুন নূর সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ
সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ উনার বিষয়ে বিভিন্ন দিকে থেকে প্রস্তাব মুবারক এবং এই বিষয়ে খোদায়ী ফায়ছালা মুবারক:
বিভিন্ন কিতাবের বিভিন্ন বর্ণনা থেকে বিষয়টি স্পষ্ট যে, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত নিসবত মুবারক হাছিল করার লক্ষ্যে এবং উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার জন্য সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনিসহ আরো অনেক ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সাথে সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ-এ আবদ্ধ হওয়ার জন্য আরজী মুবারক পেশ করেন। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, এই বিষয়ে আমি মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত ওহী মুবারক উনার অপেক্ষায় আছি। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের পরামর্শে সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার বিষয়ে প্রস্তাব নিয়ে যান এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ উপস্থিত হয়ে উনাকে সম্মানিত সালাম মুবারক দেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত সালাম মুবারক উনার জবাব দিয়ে বলেন, হে সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম! আপনি কিছু বলবেন কী? তখন সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহূ ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ উনার সম্মানিত প্রস্তাব মুবারক নিয়ে এসেছি। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি জবাবে বললেন, ‘মারহাবান ওয়া আহলান’। সুবহানাল্লাহ! এর অধিক কিছু বললেন না। সাইয়্যিদুনা হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, সে সময় আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ উপস্থিত ছিলাম। দেখলাম যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত চেহারা মুবারক-এ সম্মানিত ওহী মুবারক নাযিল হওয়ার আলামত প্রকাশ পাচ্ছেন। সুবহানাল্লাহ! সেটাই নিম্নোক্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার দ্বারা আরো স্পষ্ট হয়ে যায়।
عَن حضرت أنس رضى الله تعالى عنه قَالَ كنت قَاعِدا عِنْد النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم فغشيه الْوَحْي فَلَمَّا سري عَنهُ قَالَ لي يَا أنس أَتَدْرِي مَا جَاءَ بِهِ حضرت جِبْرِيل عليه السلام من عِنْد صَاحب الْعَرْش قلت بِأبي أَنْت وَأمي وَمَا جَاءَ بِهِ حضرت جِبْرِيل عليه السلام من عِنْد صَاحب الْعَرْش قَالَ إِن الله أَمرنِي أَن أزوج فَاطِمَة من عَليّ.
অর্থ: “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একদা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ বসা ছিলাম। এমতাবস্থায় উনার নিকট সম্মানিত ওহী মুবারক আসলেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর তিনি যখন সম্মানিত ওহী মুবারক উনার কারণে আনন্দিত হলেন, তখন আমাকে বলেন, হে হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু! আপনি কি জানেন হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত আরশ উনার মালিক মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে কি সংবাদ মুবারক নিয়ে এসেছেন? আমি বললাম, আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য কুরবান হোক! হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত আরশ উনার মালিক মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে কি সংবাদ মুবারক নিয়ে এসেছেন? নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে বলেছেন আমি যেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সাথে সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ সুসম্পন্ন করি।” সুবহানাল্লাহ! (জামিউল আহাদীছ ২৩/৯৭, কানযুল ‘উম্মাল ১৩/৬৮৩, আল বায়ান ওয়াত তা’রীফ ১/১৭৪)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عن حضرت عبد الله بن مسعود رضى الله تعالى عنه عن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال ان الله تعالى امرنى ان ازوج حضرت فاطمة عليها السلام من حضرت على عليه السلام.
অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে ওহী মুবারক করেছেন, আমি যেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সাথে সাইয়্যিদুনা হযরত কাররমাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ সুসম্পন্ন করি।” সুবহানাল্লাহ! (মুজামুল কবির লিত তাবরানী, মাজমাউয যাওয়ায়িদ লিল হায়সামী, কানযুল উম্মাল ১৩/৩৮১, আল বয়ান ওয়াত তা’রীফ ইত্যাদি)     

মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার সান্নিধ্যপ্রাপ্ত বিশেষ সম্মানিত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের উপস্থিতিতে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার আযীমুশ শান সম্মানিতনিসবতে আযীম শরীফ সুসম্পন্ন করেছেন:
নুযহাতুল মাজালিস’ কিতাবে বর্ণিত রয়েছে যে,
فجاءه حضرت جِبْرِيل عليه السلام في بعض الأيام وقال إن الله تعالى يقرئك السلام ويقول لك اليوم كان عقد حضرت فاطمة عليها السلام في مَوْطِنِهَا في قَصْرٍ أمها في الجنة الخاطب حضرت إسرافيل عليه السلام، وحضرت جبريل عليه السلام وحضرت ميكائيل عليه السلام الشهود والولي رب العزة والزوج حضرتعلي عليه السلام.
অর্থ: “হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি একদা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ উপস্থিত হয়ে বলেন, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাকে সালাম জানিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! আর তিনি আপনাকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ মুবারক করেছেন, আজ সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত বালাখানা মুবারক উনার মধ্যে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত আক্বদ মুবারক সম্পন্ন হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! খতীব হচ্ছেন হযরত ইসরাফীল আলাইহিস সালাম তিনি। আর হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি ও হযরত মীকাঈল আলাইহিস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা দু‘জন সাক্ষী, স্বয়ং খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি হচ্ছেন অলী তথা অভিভাবক এবং সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি হচ্ছেনমহাসম্মানিতযাওজুম মুকাররাম।” সুবহানাল্লাহ! (নুযহাতুল মাজালিস)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো এসেছে,
عن حضرت أنس رضي الله عنه قال بينما رسول الله صلى الله عليه وسلم في المسجد إذ قال صلى الله عليه وسلم لعليهذا حضرت جبريل عليه السلام يخبرني أن الله عز وجل زوجك حضرت فاطمة عليها السلاموأشهد على تزويجك أربعين ألف ملك وأوحى إلى شجرة طوبى أن انثري عليهم الدر والياقوت فنثرت عليهم الدر والياقوت فابتدرت إليه الحور العين يلتقطن من أطباق الدر والياقوت فهم يتهادونه بينهم إلى يوم القيامة.
অর্থ: “হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। একদা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত মসজিদে নববী শরীফ উনার মধ্যে অবস্থান মুবারক করছিলেন। হঠাৎ তিনি সাইয়্যিদানা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে বললেন, তিনি হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম। তিনি আমাকে এই সংবাদ দিচ্ছেন যে, নিশ্চয়ই যিনি খ¦ালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সাথে আপনার সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ সুসম্পন্ন করেছেন। সুবহানাল্লাহ! আপনাদের সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ-এ চল্লিশ হাজার ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে সাক্ষী হিসেবে আযীমুশ শান নিসবতে আযীম শরীফ উনার অনুষ্ঠানে হাজির করা হয়েছিলো। আর ‘তুবা’ বৃক্ষকে নির্দেশ মুবারক দেয়া হয়েছিলো যেন উনাদের উপর মুক্তা ও ইয়াকুত (মূল্যবান পাথর) ছিটায়। অতঃপর চিত্তাকর্ষী নয়না বিশিষ্ট হুরেরা ওই মুক্তা এবং ইয়াকুত দ্বারা পাত্র পূর্ণ করতে লাগলেন। যেগুলো উনারা ক্বিয়ামত পর্যন্ত পরস্পর হাদিয়াস্বরূপ বিনিময় করবেন।” (আর রিয়াদুন নাদরাহ ফী মানাকিবি আশারাহ ৩/১৪৬, যখায়িরুল ‘উকবা ফী মানাক্বিবে যাওইল কুরবা ৩২)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عن حضرت على عليه السلام قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم أتانى ملك فقال يا محمد صلى الله عليه وسلم ان الله تعالى يقرأ عليك السلام ويقول لك انى قد زوجت زوجك حضرت فاطمة عليها السلام ابنتك من حضرت على بن أبى طالب عليه السلام في الملا الاعلى فزوجها منه في الارض.
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত কাররমাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমার নিকট একজন ফেরেশতা আলাইহিস সালাম তিনি এসে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাকে সালাম দিয়েছেন। আর বলেছেন, আমি (মহান আল্লাহ পাক) আপনার সম্মানিত লখতে জিগার মুবারক সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ সাইয়্যিদুনা হযরত কাররমাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার সাথে হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের একটি সুউচ্চ মজলিস মুবারক-এ সম্পন মুবারক করেছি। কাজেই, আপনি দুনিয়ার যমীনে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সাথে সাইয়্যিদুনা হযরত কাররমাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার আযীমুশ শান মুবারক নিসবতে আযীম শরীফ সুম্পন্ন করুন।” সুবহানাল্লাহ! (যখায়িরুল ‘উকবাহ ফী মানাক্বিবে যাওইল কুরবা ৩২)
 সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সাথে মাশওয়ারা করা:
এই সম্পর্কে ‘যাখায়েরুল ‘উক্ববা শরীফ’ উনার বর্ণিত রয়েছে যে,
لما خطب حضرت على عليه السلام حضرت فاطمة عليها السلام أتاها رسول الله صلى الله عليه وسلم فقال ان حضرت عليا عليه السلام قد ذكرك فسكتت فخرج فزوجها.
অর্থ: “যখন সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সাথে সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ-এ আবদ্ধ হওয়ার জন্য আরজী মুবারক পেশ করলেন, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি উনার নিকট আসলেন। তারপর তিনি বললেন, নিশ্চয়ই সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি আপনার সাথে সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ-এ আবদ্ধ হওয়ার জন্য আরজী মুবারক পেশ করেছেন। তখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি চুপ থাকলেন। অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বের হয়ে গেলেন। তারপর উনার সম্মানিত আযীমুশ শান নিসবতে আযীম শরীফ সম্পন্ন করলেন।” সুবহানাল্লাহ! (যাখায়েরুল ‘উক্ববাহ শরীফ)
এখান থেকে একটি মাসয়ালা বের করা হয়েছে যে,
السكوت نصف الرجاء.
অর্থ: “চুপ থাকা হচ্ছে অর্ধ সমর্থন।”
অর্থাৎ সমর্থনের লক্ষণ। সুতরাং বিবাহ শাদীর বিষয়ে কোনো মেয়েকে যদি প্রস্তাব দেয়া হয়, আর উক্ত মেয়ে যদি প্রস্তাব শুনে চুপ থাকে। তাহলে বুঝতে হবে যে, উক্ত মেয়ে এই প্রস্তাবে রাজি রয়েছে।
আযীমুশ শান নিসবতে আযীম শরীফ উনার প্রস্তুতি মুবারক:
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনাকে বললেন, আপনার কাছে কিছু আছে কি? তখন সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, আমার নিকট একটি ঘোড়া ও একটি বর্ম রয়েছে। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, ঘোড়াটি আপনার প্রয়োজন রয়েছে। আপনি বর্মটি বিক্রি করে এর হাদিয়া আমার নিকট নিয়ে আসুন। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি বর্মটি বিক্রি করার জন্য সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাঈন আলাইহিস সালাম উনার নিকট নিয়ে যান। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাঈন আলাইহিস সালাম তিনি বর্মটি নিয়ে এর হাদিয়াস্বরূপ সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত হাত মুবারক-এ ৫০০ দিরহাম দেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাঈন আলাইহিস সালাম তিনি নিজ হাত মুবারক-এ উক্ত বর্মটি সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার শির (মাথা) মুবারক-এ পরিয়ে দিয়ে বললেন, এই বর্ম মুবারক একমাত্র ‘আসাদুল্লাহ তথা শে’রে খোদ’ উনার মাথা মুবারকেই শোভা পায়। সুবহানাল্লাহ! এটা বলে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাঈন আলাইহিস সালাম তিনি উক্ত বর্মটিও সাইয়্যিদুনা হযরত কাররমাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনাকে হাদিয়া মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!
অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি ৫০০ দিরহাম নিয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ পেশ করেন।আর সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাঈন আলাইহিস সালাম তিনি যে বর্মটির বিনিময়ে ৫০০ দিরহাম দেয়ার সাথে সাথে বর্মটিও উনাকে হাদিয়া মুবারক করেন সে বিষয়টি সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারক-এ পেশ করেন। বিষয়টি শুনে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অত্যন্ত খুশী হন এবং সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাঈন আলাইহিস সালাম উনার জন্য অনেক দু‘য়া মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!
তারপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উক্ত অর্থ থেকে কয়েকটি মুদ্রা হযরত বেলাল রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার হাত মুবারক-এ দিয়ে আতর ও খুশবু কিনে আনতে বললেন। অবশিষ্ট মুদ্রাগুলো উম্মু সুলাইম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা উনার হাত মুবারক দিয়ে উনাকে বললেন সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ উনার সাজসজ্জা, সংসারের কিছু প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনে আনতে। ‘মাদারেজুন নুবুওওয়াহ শরীফ’ উনার বর্ণনা অনুযায়ী হযরত উম্মু সুলাইম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি দুটি চাদর, কাতানের দুটি নেহালী, চার বিঘত কাপড়, পরিধেয় বস্ত্র, রৌপ্যের দুটি বাযুবন্দ, গদী, বালিশ, একটি পেয়ালা, একটি চৌকি, একটি মশক এবং কিছু পানপাত্র ক্রয় করেন। অতঃপর সেগুলো এনে স্তরে স্তরে সাজিয়ে রাখেন। সুবহানাল্লাহ! কেনাকাটা করার পর অবশিষ্ট যেই মুদ্রা থাকে, সেগুলো মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হওয়ার পর সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে সম্মানিত হাদিয়া মুবারক করা হয়। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত বায়তুল মামুর শরীফ-এ সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ:
 কিতাবে বর্ণিত রয়েছে, মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে সম্মানিত আদেশ মুবারক দিলেন, উনারা যেনো সুন্দর পোশাকে সুসজ্জিত হন। তারপর জান্নাতের হুরদেরকেও সুন্দরভাবে সুসজ্জিত হওয়ার জন্য সম্মানিত নির্দেশ মুবারক দিলেন। তুবা বৃক্ষকে হুকুম দিলেন সুন্দরভাবে সুসজ্জিত হওয়ার জন্য। অতঃপর সমস্ত হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে চতুর্থ আসমানে অবস্থিতসম্মানিত বাইতুল মামুর-এ শরীফ-এ উপস্থিত হওয়ার সম্মানিত নির্দেশ মুবরক দিলেন। সেই বাইতুল মামুর শরীফ উনার মেম্বর শরীফ-এ আবুল বাশার সাইয়্যিদুনা হযরত আদম ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি বসে খুতবাহ মুবারক দিলেন। তারপর মহান আল্লাহ পাক উনার ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে মিষ্টভাষী ‘রাহিল’ ফেরেশতা আলাইহিস সালাম উনাকে মিম্বরে এসে মহান আল্লাহ পাক উনার প্রশংসা মুবারক করার নির্দেশ মুবারক দিলেন। ‘রাহিল’ ফেরেশতা আলাইহিস সালাম তিনি যখন খুৎবাহ পাঠ করলেন উনার অতি সুমিষ্ট কণ্ঠের সুমধুর আওয়াযে আসমানের সমস্ত হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা তন্দ্রাচ্ছন্ন হলেন। অতঃপর মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনাকে বললেন, আমি আমার খাছ মাহবুবাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সাথে আমার আখাচ্ছুল খাছ প্রিয় বা মাহবূব ব্যক্তিত্ব মুবারক সাইয়্যিদুনা হযরত আলী ইবনে আবি ত্বলিব আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ সুসম্পন্ন করলাম। সুবহানাল্লাহ! হে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম! আপনি এই সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালামগণ উনাদের মজলিসে সম্পাদন করে দিন। মহান আল্লাহ পাক উনার হুকুম মুতাবিক সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার ও সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ উনার অর্থাৎ উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার আক্বদ মুবারক হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে সাক্ষী বানিয়ে সম্পন্ন করা হলো। এই সম্মানিত আক্বদ মুবারক উনার অনুষ্ঠানের সমস্ত কার্যক্রম সম্মানিত জান্নাতী রেশমী কাপড় মুবারক উনার মধ্যে লিখে রাখা হলো। হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে সম্মানিত ওহী মুবারক নিয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ উপস্থিত হন। তারপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত ওহী মুবারক অনুযায়ী উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ বাস্তবায়ন করেন। সুবহানাল্লাহ!
দুনিয়ার যমীনে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ অনুষ্ঠান:
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের উপস্থিতিতে ‘মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদে নববী শরীফ’-এ সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ পড়ান। এই সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে লক্ষ্য করে ইরশাদ মুবারক করেন, হে হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু! আপনি যান, সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনাকে, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনাকে, সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাঈন আলাইহিস সালাম উনাকে, সাইয়্যিদুনা হযরত ত্বলহা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে, সাইয়্যিদুনা হযরত যুবাইর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে এবং হযরত আনছার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে ডেকে আনুন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত নির্দেশ মুবারক-এ সকল ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা উপস্থিত হন। তারপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ পড়ান। সুবহানাল্লাহ! বিভিন্ন কিতাবের বর্ণনা অনুযায়ী নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ-এ নিম্নোক্ত খুতবাহ মুবারক পাঠ করেন,
الحمد لله المحمود بنعمته المعبود بقدرته المطاع بسلطانه المرهوب من عذابه وسطوته النافذ أمره فى سمائه وأرضه الذى خلق الخلق بقدرته وميزهم بأحكامه وأعزهم بدينه وأكرمهم بنبيه محمد صلى الله عليه وسلم. إن الله تبارك اسمه وتعالت عظمته جعل المصاهرة سببا لا حقا وأمرا مفترضا أوشج به الأرحام وألزم به الأنام فقال عز من قائل وَهُوَ الَّذِي خَلَقَ مِنَ الْماءِ بَشَراً فَجَعَلَهُ نَسَباً وَصِهْراً وَكانَ رَبُّكَ قَدِيراً . فأمر الله تعالى يجرى إلى قضائه وقضاؤه يجرى إلى قدره ولكل قضاء قدر ولكل قدر أجل ولكل أجل كتاب يمحو الله ما يشاء ويثبت وعنده أم الكتاب. ثم إن الله عزّ وجل أمرنى أن أزواج حضرت فاطمة عليها السلام من حضرت على بن أبى طالب عليه السلام فاشهدوا أنى قد زوجته على أربعمائة مثقال فضة إن رضى بذلك حضرت على عليه السلام وفى رواية أرضيت يا حضرت على عليه السلام فقال حضرت على عليه السلام رضيت عن الله وعن رسوله فقال جمع الله شملكما وأسعد جدّكما وبارك عليكما وأخرج منكما كثيرا طيبا.
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ অনুষ্ঠানে স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিজ হাত মুবারক-এসকলের উদ্দেশ্যে খেজুর মুবারক ছিটানো:
শায়েখ আব্দুল হক্ব মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার ‘মাদারেজুন নুবুওওয়াহ শরীফ’ উনার মধ্যে উল্লেখ করেছেন, যখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, হে সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম! আপনি কবূল করলেন এবং রাজি হলেন? সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, আমি কবুল করলাম এবং রাজী হলাম। তারপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একপাত্র খেজুর মুবারক নিয়ে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাদের মাঝে ছিটিয়ে দিলেন। সুবহানাল্লাহ!
এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারা বিবাহ অনুষ্ঠানে যে, খেজুর ছিটানো খাছ সুন্নত উনার অন্তর্ভুক্ত সেই বিষয়টিও প্রমাণিত হয়। সুবহানাল্লাহ!
এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হয় ২য় হিজরী শরীফ উনার ২রা যিলহজ্জ শরীফ লাইলাতু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ রাত)তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে উম্মু আবীহা, আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহ্রা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ১৭ বছর ৫ মাস ১২ দিন অর্থাৎ সাড়ে ১৭ বছর। সুবহানাল্লাহ! আর সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ২৪ বছর ৪ মাস ১৯ দিন। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পক্ষ থেকে আযীমুশ শান সম্মানিত সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ-এ উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে হাদিয়া মুবারক
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ-এ হাদিয়া মুবারক:
বিভিন্ন কিতাবের বর্ণনা অনুযায়ী নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পক্ষ থেকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ-এ উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে যেই সকল সম্মানিত বিষয় মুবারকগুলো হাদিয়া মুবারক করেছিলেন, তার কিছু নিম্নে উল্লেখ করা হলো,
          ১.একটি মাদুর মুবারক। যা মিশরীয় কাপড় মুবারক দ্বারা তৈরি ছিলো এবং যার ভিতরে দেয়া হয়েছিলো পশম।
          ২.একটি বিছানা মুবারক,
          ৩. একটি চকি মুবারক,
          ৪. চামড়ার তৈরি বালিশ মুবারক যা খেজুরের ছালে পূর্ণ ছিলো,
          ৫. একটি অথবা দুইট মাটির তৈরি পাত্র,
          ৬. একটি পানির মশক- যা চামড়ার তৈরি ছিলো,
          ৭. একটি বাটি মুবারক,
          ৮. একটি শস্য ভাঙ্গানোর জাঁতা, কোনো বর্ণনায় দুটি জাঁতা,
          ৯. একটি নামাযের মাদুর,
 ১০. একটি খেজুর পাতার তৈরি চাটাই,
          ১১. ১টি তামার বদনা,
          ১২. একটি কম্বল মুবারক,
          ১৩. দুই টুকরো কাপড় মুবারক,
          ১৪. রুপার তৈরি দুটি বাহুবন্ধনী,
          ১৫. ২টি ঘোড়া,
          ১৬. হাতির দাতের তৈরী চিরুনী মুবারক।
১৭. এগুলো ছাড়া আরেকটি চামড়ার পাট্টা দেয়া হয়েছিলো। যেটাতে কোরআন শরীফ উনার কয়েকটি সম্মানিত সূরা শরীফ লিখা ছিলো। ইত্যাদি
উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিমুস সালাম এবং মহসম্মানিতা আওলাদ আলাইহিন্নাস সালাম
 উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিমুস সালাম ছিলেন মোট ৬ জন। ৩ জন আবনা’ (ছেলে) আলাইহিমুস সালাম এবং ৩ জন বানাত (মেয়ে) আলাইহিন্নাস সালাম। উনারা হচ্ছেন,
          (১) ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম,
(২) ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম,
          (৩)সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাইনাব আলাইহাস সালাম,
          (৪)সাইয়্যিদাতুনা হযরত রুক্বইয়্যাহ আলাইহাস সালাম,
 (৫)সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম আলাইহাস সালাম এবং
          (৬)সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম মুহসিন আলাইহিস সালাম।
উনাদের মধ্যেসাইয়্যিদাতুনা হযরত রুক্বইয়্যাহ আলাইহাস সালাম তিনি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম মুহসিন আলাইহিস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা দু’জন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে অল্প বয়স মুবারক-এ মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পর সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন,সাইয়্যিদাতুনা আন নূরুর রাবি’য়াহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে সবচাইতে বেশি মুহব্বত করতেন, সম্মান করতেন এবং উনার মাক্বাম মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের পরেই জানতেন
 মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম,সম্মানিত রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি অল্প কথা মুবারক-এ সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক এইভাবে বর্ণনা করে থাকেন যে, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া যত মর্যাদা-মর্তবা, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান রয়েছেন, সমস্ত মর্যাদা-মর্তবা, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারী। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَن حَضْرَتْ الْمِسْوَرِ بْنِ مَخْرَمَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّمَا حَضْرَتْ فَاطِمَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ بِضْعَةٌ مِنّـِىْ يُؤْذِينِىْ مَا اٰذَاهَا.
অর্থ: “হযরত মিসওয়ার ইবনে মাখরামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিঃসন্দেহে সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন, আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূর মুবারক অর্থাৎ পবিত্র নূরুল মুজাসসাম (জিস্ম) মুবারক উনার সম্মানিত নূর মুবারক অর্থাৎ পবিত্র গোশত মুবারক উনার একখানা সম্মানিত টুকরো মুবারক। সুবহানাল্লাহ! উনাকে যে সকল বিষয়গুলো কষ্ট দেয়, সেগুলো আমাকেও কষ্ট দেয়।” নাঊযুবিল্লাহ! (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মুসনাদে আহমদ শরীফ)
অন্য বর্ণনায় এসেছে,
مَنْ اَحَبَّهَا فَقَدْ اَحَبَّنِىْ وَمَنْ اَبْغَضَهَا فَقَدْ اَبْغَضَنِىْ.
অর্থ: “যে ব্যক্তি উনাকে মুহব্বত করলেন, তিনি মূলত আমাকেই মুহব্বত করলেন। সুবহানাল্লাহ! আর যে ব্যক্তি উনাকে অসন্তুষ্ট করলো, সে মূলত আমাকেই অসন্তুষ্ট করলো। নাঊযুবিল্লাহ!”
তাই হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পর উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে সবচাইতে বেশি মুহব্বত মুবারক করতেন, সম্মান মুবারক করতেন এবং উনারা মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের পরেই উনার সম্মানিত মর্যাদা মুবারক জানতেন। সুবহানাল্লাহ!
এই সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে এসেছে,
عَنْ حَضْرَتْ عُمَرَ عَلَيْهِ السَّلَامُ اَنَّهٗ دَخَلَ عَلٰى حَضْرَتْ فَاطِمَةَ بِنْتِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ يَا حَضْرَتْ فَاطِمَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ وَاللهِ مَا رَايْتُ اَحَدًا اَحَبَّ اِلٰى رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْكِ وَاللهِ مَا كَانَ اَحَدٌ مِنَ النَّاسِ بَعْدَ اَبِيْكِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَحَبَّ اِلَىَّ مِنْكِ.
অর্থ: “খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি একদা সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন,উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ গিয়ে বললেন যে, হে সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম! মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! আপনি ব্যতীত অন্য কাউকে আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট অধিক প্রিয় দেখিনি। মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! আপনার সম্মানিত পিতা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পর মানুষের মধ্যে আপনিই হচ্ছেন আমার নিকট সর্বাধিক প্রিয়।” সুবহানাল্লাহ! (মুস্তাদরকে হাকিম ৩/১৫৫, জামিউল আহাদীছ ২৬/১০০)
অর্থাৎ সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের পর সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন,উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে বেশি মুহব্বত করতেন, সম্মান করতেন এবং মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের পর উনার সম্মানিত মাক্বাম মুবারক জানতেন। সুবহানাল্লাহ!
অন্য বর্ণনায় এসেছে, খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন,
يَا بِنْتَ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهِ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَاللهِ مَا مِن الْـخَلْقِ اَحَدٌ اَحَبَّ اِلَيْنَا مِنْ اَبِيْكِ وَمَا مِنْ اَحَدٍ اَحَبَّ اِلَيْنَا بَعْدَ اَبِيْكِ مِنْكِ.
অর্থ: “হে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা আওলাদ, সম্মানিত লখতে জিগার মুবারক সাইয়িদাতুনা আন নূরুর রবি‘য়াহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম, মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! আমরা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সমস্ত মাখলূকাত থেকে সবচাইতে বেশি মুহব্বত করে থাকি। আর আপনার মহাসম্মানিত পিতা, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পর আমরা আপনাকে সবচাইতে বেশি মুহব্বত করে থাকি, সম্মান করে থাকি। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ আপনার সম্মানিত মাক্বাম মুবারক আমরা মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের পরেই জানি। সুবহানাল্লাহ!’
সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা আন নূরুর রাবি’য়াহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার হাশরের ময়দানে এবং সম্মানিত পুলসীরাত অতিক্রমকালে সীমাহীন মর্যাদা-মর্তবা মুবারক উনার বহিঃপ্রাকশ
 এ সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ اَبـِىْ اَيُّوْب الْاَنْصَارِىِّ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِذَا كَانَ يَوْمُ الْقِيَامَةِ نَادَى مُنَادٍ مّـِنْ بُطْنَانِ الْعَرْشِ يَا اَهْلَ الْـجَمْعِ نَكِّسُوْا رُؤُوْسَكُمْ وغُضُّوْا اَبْصارَكُمْ حَتّى تَـمُرَّ حَضْرَتْ فاطِمَةُ عَلَىْهَا السَّلَامُ بِنْتُ سَيِّدِنِا مُـحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى الصِّرَاطِ فَتَمُرُّ مَعَ سَبْعِيْنَ اَلْفَ جَارِيَةٍ مِّنَ الْحُوْرِ الْعِيْنِ كَمَرِّ الْبَرْقِ الَّامِعِ.
অর্থঃ“হযরত আবূ আইয়ূব আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ক্বিয়ামতের দিবসে একজন নিদা বা আহবানকারী সম্মানিত আরশ মুবারক উনার কেন্দ্রস্থল থেকে এই বলে সম্মানিত নিদা মুবারক করবেন যে, হে আহলে মাহশার! (হাশরবাসী) তোমরা তোমাদের মস্তক ও দৃষ্টি অবনত করে নাও। কারণ এখন যিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার লখতে জিগার, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা আন নূরুর রাবি’য়াহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি সম্মানিত পুলসীরাত মুবারক অতিক্রম করবেন। অতঃপর সমস্ত হাশরবাসী তারা তাদের মস্তক ও দৃষ্টি অবনত করবে, আর যিনিসাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, উম্মু আবীহা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি সত্তর হাজার তথা অসংখ্য-অগণিত ডাগর নয়না সম্মানিতা হুর খাদিমা উনাদের বেষ্টনী মুবারক-এ থেকে অতি উজ্জ্বল দীপ্তিমান বিজলীর ন্যায় চোখের পলকে সম্মানিত পুলসীরাত পার হয়ে যাবেন।” সুবহানাল্লাহ! (আছ ছওয়াইকুল মুহরিক্বাহ, ফয়জুল কদীর, কানযুল উম্মাল ১২/১০৫, মুহিব্বে ত্ববারী, আল ফাতহুল কাবীর ১/১৪১, জামি‘উল আহাদীছ লিস সুয়ূত্বী ৪/১৬, জাম‘উল জাওয়ামি’ ১/৩০৩২ ইত্যাদি)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عن حَضْرَتْ على عليه السلام قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم تحشر إبنتى حَضْرَتْ فاطِمَةُ عَلَىْهَا السَّلَامُ يوم القيامة وعليها حلة الكرامة قد عجنت بماء الحيوان فتنظر إليها الخلائق فيتعجبون منها ثم تكسى حلة من حلل الجنة على الف حلة مكتوب بخط أخضر أدخلوا ابنة سَيِّدِنِا محمد صلى الله عليه وسلم الجنة على أحسن صورة وأكمل هيبة وأتم كرامة وأوفر حظ فتزف إلى الجنة كالعروس حولها سبعون ألف جارية.
অর্থঃ“সাইয়্যিদুনা হযরত র্কারামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা আন নূরুর রাবি’য়াহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি ক্বিয়ামতের দিন এভাবে উঠবেন যে, উনার সম্মানিত জিসম মুবারক-এ ইজ্জত-সম্মান মুবারক উনার এমন সম্মানিত চাদর মুবারক থাকবেন, যেই সম্মানিত চাদর মুবারক উনাকে আবে হায়াতের পানি মুবারক দ্বারা ধোয়া হয়েছে। সকল সৃষ্টি তা দেখে বিস্মিত হয়ে যাবে। অতঃপর উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা আন নূরুর রাবি’য়াহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে সম্মানিত জান্নাতী পোশাক মুবারক পরিধান করানো হবে; যার প্রত্যেকটি জোড়া হবে হাজারো জোড়ার সমষ্টি। প্রত্যেকটির উপর সবুজ রেখায় লিখিত থাকবে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা আওলাদ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে সর্বোত্তম ছূরত মুবারক, পূর্ণাঙ্গ প্রতাপ এবং মহাসম্মান ও ইজ্জতের সঙ্গে সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ নিয়ে যাও। সুতরাং উনাকে বেমেছালভাবে সুসজ্জিত করে, পূর্ণাঙ্গ প্রতাপ এবং মহাসম্মান ও ইজ্জতের সাথে সত্তর (৭০) হাজার তথা অসংখ্য-অগণিত হুর খাদিমা সমভিব্যহারে চোখের পলকে পুলসীরাত পার করে সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ নিয়ে যাওয়া হবে।” সুবহানাল্লাহ! (যখায়েরুল উক্ববা ফী মানাক্বিবে যবিল কুবরা- ৪৮, মানাক্বিবে আলী র্কারামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম লিইবনে মাগাযালী ১/৪৬৮)
সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার প্রতি যে বা যারা বিন্দু থেকে বিন্দুতমও বিদ্বেষ পোষণ করবে, তার হাশর-নশর হবে ইহুদীদের সাথে; যদিও তারা রোযা রাখে, নামায পড়ে এবং দাবি করে যে, তারা মুসলমান
 এই সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ الْاَنْصَارِىِّ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ خَطَبَنَا رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَسَمِعْتُهٗ وَهُوَ يَقُوْلُ يَا اَيُّهَا النَّاسُ مَنْ اَبْغَضَنَا اَهْلَ الْبَيْتِ حَشَّرَهُ اللهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يَهُوْدِيًّا فَقُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَاِنْ صَامَ وَصَلّٰى قَالَ وَاِنْ صَامَ وَصَلّٰى وَزَعِمَ اَنَّهٗ مُسْلِمٌ.
অর্থ: “হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একদা আমাদের উদ্দেশ্যে সম্মানিত খুতবা মুবারক দিলেন। তখন আমি শুনলাম যে, তিনি উক্ত সম্মানিত খুতবা মুবারক-এ ইরশাদ মুবারক করতেছেন, হে লোক সকল! যে ব্যক্তি আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করবে, উনাদের বিরোধিতা করবে, তার হাশর-নশর হবে ইহুদীদের সাথে। আমি আরজ করলাম, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! যদি সে রোযা রাখে এবং নামায পড়ে? উত্তরে তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, হ্যাঁ! যদিও সে রোযা রাখে, নামায পড়ে এবং দাবি করে যে, সে মুসলমান। (তা সত্ত্বেও মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের বিরোধিতা করার কারণে, উনাদের শত্রু হওয়ার কারণে যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি তার সমস্ত ইবাদত বিনষ্ট করে দিয়ে তাকে ক্বিয়ামতের দিন ইহুদীদের দলভুক্ত করে উঠাবেন।)” না‘ঊযুবিল্লাহ! (আল মু’জামুল আওসাত্ব লিতত্ববারণী ৪/২১২, জামিউল আহাদীছ লিস সুয়ূত্বী ১০/৪৭৫, জামউল জাওয়ামি‘ লিস সুয়ূত্বী, মাজমাউয যাওয়াইদ লিল হাইছামী ৯/৭১২, তারীখে জুরজান ৩৬৯ পৃষ্ঠা)
আরসাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসাই আহলিল জান্নাহ, উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনারা হচ্ছেন মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্যতম বিশেষ ব্যক্তিত্বা মুবারক। তাই যে বা যারা উনার সামান্য থেকে সামান্যতম বিরোধিতা করবে,উনার প্রতি বিন্দু থেকে বিন্দুতমও বিদ্বেষ পোষণ করবে তার হাশর-নশর হবে ইহুদীদের সাথে। যদিও তারা রোযা রাখে, নামায পড়ে এবং দাবি করে যে, তারা মুসলমান। নাঊযুবিল্লাহ!
স্বয়ং যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই সরাসরি সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ, সম্মানিত দীদার মুবারক-এ নিয়ে যান
 সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের সময় যখন নিকটবর্তী হলেন, তখন মালাকুল মাউত হযরত আজরাইল আলাইহিস সালাম তিনি সিজদায় পড়ে গেলেন। তিনি সিজদায় পড়ে কান্নাকাটি করে মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট আরজী পেশ করতে থাকলেন, আয় বারে এলাহী! আপনার যিনি হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত লখতে জিগার মুবারক বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত রূহ মুবারক আপনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ নিয়ে আসতে, সম্মানিত দীদার মুবারক-এ নিয়ে আসতে, আমার কোন বেআদবী হয়ে যায় কি না, সেই বিষয় আমি ভয় পাচ্ছি। তাই আমি উনার সম্মানিত রূহ মুবারক আপনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ নিয়ে আসার ব্যাপারে, আপনার সম্মানিত দীদার মুবারক-এ নিয়ে আসার ব্যাপারে রুখসত ভিক্ষা চাচ্ছি। আপনি যদি দয়া করে, কুদরতীভাবে উনার সম্মানিত রূহ মুবারক আপনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ নিয়ে আসতেন, আপনার সম্মানিত দীদার মুবারক-এ নিয়ে আসতেন তাহলে আমার জন্য ইতমিনানের কারণ হতো। সুবহানাল্লাহ! তখন সরাসরি যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই কুদরতীভাবে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত রূহ মুবারক উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ,উনার সম্মানিত দীদার মুবারক-এ নিয়ে যান। সুবহানাল্লাহ!
অন্য দিকে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনিও চেয়েছিলেন যে, স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি যেন কুদরতীভাবে উনাকে উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ নিয়ে যান,উনার সম্মানিত দীদার মুবারক-এ নিয়ে যান । সুবহানাল্লাহ!
এই সম্পর্কে বিশ্বখ্যাত তাফসীরগ্রন্থ ‘তাফসীরে রূহুল বয়ান শরীফ ও তাফসীরে হাক্কী শরীফ’ উনাদের মধ্যে বর্ণিত রয়েছে,
اَنَّ سَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ فَاطِمَةَ الزَّهْرَاء عَلَيْهَا السَّلَامُ لَـمَّا نَزَلَ عَلَيْهَا مَلَكُ الْـمَوْتِ لَـمْ تَرْضَ بِقَبْضِهٖ فَقَبَضَ اللهُ رُوْحَهَا.
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা আন নূরুর রাবিয়া’হ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার নিকট যখন মালাকুল মাউত হযরত আজরাইল আলাইহিস সালাম তিনি আসলেন, সাইয়্যিদাতুনা আন নূরুর রাবিয়া’হ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি এটা পছন্দ করেননি যে, উনার সম্মানিত রূহ মুবারক হযরত আজরাঈল আলাইহিস সালাম তিনি কবয করেন। তাই স্বয়ং যিনি খ¦ালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি কুদরতীভাবে সাইয়্যিদাতুনা আন নূরুর রাবিয়া’হ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত রূহ মুবারক কবয করেন তথা উনাকে উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ নিয়ে যান, উনার সম্মানিত দীদার মুবারক-এ নিয়ে যান।” সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে রূহুল বয়ান শরীফ ৮/৮৬, তাফসীরে হাক্কী শরীফ ১২/২৯৩)
তাহলে এখান থেকে স্পষ্ট হয়ে যায় সাইয়্যিদাতুনা আন নূরুর রাবিয়া’হ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ!

0 Comments: