সুমহান পুত ও পবিত্র ২২ শে জুমাদাল উখরা শরীফ


 
ঈদ মুবারক ! ঈদ মুবারক !! ঈদ মুবারক !!!
সুমহান পুত ও পবিত্র ২২ শে জুমাদাল উখরা শরীফ
মহাস্মানীত পুত ও পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস ও সম্মানীত খিলাফত মুবারক গ্রহণ দিবস
আফদ্বালুন নাস বা’দাল আম্বিয়া সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার  আমীরুল মু’মিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনাদের নুরুদ দরাজাত মুবারকে জানাই লক্ষ কোটি বেশুমার ছলাত ও সালাম ।

গোলামীর আরজুতে ,
মুহম্মদ ইউসুফ রাজী খাজা

তারিখ – ২২/০৬/১৪৪১ হিজরী




আফদ্বালুন নাস বা’দাল আম্বিয়া সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার সংক্ষিপ্ত পবিত্র সাওয়ানেহ উমরী মুবারক-
খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার আখাছছুল খাছ মনোনীত ব্যক্তিত্বগণ উনাদের মধ্যে হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি অন্যতম। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি সারা কায়িনাতবাসীর জন্য সর্বোত্তম আদর্শ মুবারক। নূরে মুজসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার খিদমতে তিনি যে অবদান রেখে গেছেন, তা উনাকে উম্মতের মাঝে একক ও অদ্বিতীয় বানিয়েছে। জুমাদাল উখরা শরীফ মাস উনার বিছাল শরীফ গ্রহণের মাস। সঙ্গতকারণেই এ মাসে উনার সাওয়ানেহে উমরী মুবারক আলোচনা-পর্যালোচনা করা অতীব প্রয়োজন। আর এ কারণেই সংক্ষিপ্তাকারে উনার সাওয়ানেহে উমরী মুবারক আলোচনা করা হলো।
 পবিত্র বিলাদত শরীফ:
 আইয়ামে জাহিলিয়াতের সময় আরববাসীগণ নাসী বা তারিখ আগ-পিছ করতো। যার কারণে অনেক ক্ষেত্রেই সঠিক তারিখ পাওয়া সম্ভব হয় না। তেমনিভাবে হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার বিলাদত শরীফের সঠিক তারিখ নির্ধারণে ঐতিহাসিকগণ সক্ষম হননি। তবে সকল ঐতিহাসিকগণ একমত যে, হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি ৬৩ বছর বয়স মুবারকে পবিত্র বিছাল শরীফ গ্রহণ করেন। সে অনুযায়ী নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ উনার প্রায় দুই বছর পর মুবারক হিজরতপূর্ব ৫১ সন মুতাবিক শামসীপূর্ব ৬১ সন আর ঈসায়ী ৫৭২ সনে পবিত্র মক্কা শরীফে বনী তামীম গোত্রে হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি বিলাদত শরীফ গ্রহণ করেন।
 পবিত্র নসব মুবারক:
 হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম ইবনে আবী কুহাফা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ইবনে উসমান ইবনে আমির ইবনে আমর ইবনে কা’ব ইবনে সা’দ ইবনে তায়ীম ইবনে মুররাহ আলাইহিস সালাম। উনার অষ্টম পুরুষ হযরত মুররাহ আলাইহিস সালাম উনাতে গিয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নসব মুবারকের সাথে মিলিত হয়েছেন। (তারীখুল খুলাফা)
হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিতা আম্মাজান হযরত উম্মুল খইর সালমা বিনতে ছখর বিন আমের রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা। উনার নসব মুবারকও কয়েক ধাপ পেরিয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নসব মুবারক উনার সাথে মিলিত হয়েছেন। উনার পিতা-মাতা উভয়ই সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেছেন।
 পবিত্র হুলিয়া মুবারক:
 হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম বেমেছাল বুযূর্গী-সম্মানের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিলো উনার হুলিয়া মুবারকে। উনার জিসম মুবারক ছিল উজ্জ্বল বর্ণের। স্বাভাবিক গড়ন আর প্রশস্ত কপাল মুবারকে তিনি ছিলেন সুশোভিত। চেহারা মুবারক, চাল-চলন মুবারক, কথা-বার্তা মুবারক, চলাচল মুবারক সর্বক্ষেত্রেই উনার বেনযীর বিনয় আর অপরিসীম জামালিয়াতের উন্মেষ ঘটতো। উনার বরকতময় হুলিয়া মুবারক সকলকে আকর্ষণ করতো, প্রভাবান্বিত করতো।
 মুবারক শৈশবকাল:
 খুবই অল্প বয়স মুবারকে যাঁরা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছোহবত মুবারক গ্রহণ করতেন, উনাদের মধ্যে হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম তিনি অন্যতম। অন্যান্য ছেলেরা যখন দৌড়-ঝাঁপ আর খেলাধুলায় লিপ্ত থাকতো, তখন তিনি নীরবতা অবলম্বন করতেন। সকলেই যখন হৈহুল্লোড়ে লিপ্ত থাকতো, তখন তিনি একাকিত্ব গ্রহণ করতেন। আর সময়-সুযোগ পেলেই তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছোহবত মুবারকে নিজেকে সপে দিতেন। উনার মুবারক শৈশবকালীন অবস্থা দেখেই কুরাঈশগণ উনাকে তা’যীম-তাকরীম করতে থাকে।
 ইলম অর্জনের আনুষ্ঠানিকতা:
 আফদ্বালুন নাস বা’দাল আম্বিয়া হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার আখাচ্ছুল খাছ লক্ষ্যস্থল। সর্বপ্রকার ইলম, হিকমত এবং নিয়ামতে পরিপূর্ণ করেই উনাকে প্রেরণ করা হয়। তথাপি তিনি ইলম অর্জনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন।
কিতাবে উল্লেখ করা হয় যে, আইয়ামে জাহিলিয়াতে হাতেগোণা যে সমস্ত লোক ইলম ও হিকমতে পারদর্শী ছিলেন, উনাদের মধ্যে তিনি অন্যতম। আরবদের নসবনামা ও গোত্র পরিচিত উনার নখদর্পণে ছিলো। সুবহানাল্লাহ!
 কিসাস ও দিয়াতের জিম্মাদার:
 পবিত্র মক্কা শরীফ উনার বিভিন্ন কার্যক্রম কুরাঈশগণ নিজেদের গোত্রের মধ্যে বণ্টন করে নেয়। আবদে মানাফ গোত্রের দায়িত্ব ছিলো হাজীগণ উনাদেরকে পানি পান করানো এবং অন্যান্য খিদমতের আঞ্জাম দেয়া। আব্দুদ দার গোত্রের দায়িত্ব ছিলো পবিত্র মক্কা শরীফ উনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, দারুন নদওয়া বৈঠক ঘরের রক্ষণাবেক্ষণ করা এবং যুদ্ধের ময়দানে পতাকা বহন করা। মাখযুম গোত্রের দায়িত্ব ছিলো সেনাপতিত্ব করা। হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার তাইম গোত্রের দায়িত্ব ছিল কিসাস ও দিয়াতের ফায়সালা করা ও তা বাস্তবায়ন করা। (তারীখুল খুলাফা)
হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম যৌবনে পদার্পণ করলে গোত্রের সকলের দৃষ্টিতে পড়ে যান। উনার অনন্য বেশিষ্ট্যাবলী সকলকে আকর্ষিত করে। সঙ্গতকারণেই গোত্রের লোকেরা উনাকে দিয়াত ও কিসাসের ব্যাপারে দায়িত্বশীল মনোনীত করে। কিসাসের ব্যাপারে তিনি যে ফায়সালা দিতেন, তা পবিত্র মক্কা শরীফ উনার সকলেই মেনে নিতো। দিয়াত বা ক্ষতিপূরণের সমুদয় অর্থ উনার নিকট জমা দিতে হতো। সর্বক্ষেত্রেই তিনি সূক্ষ্মদর্শিতা এবং আমানতদারীর পরিচয় দেন। সুবহানাল্লাহ!
 জাহিলিয়াতের প্রভাবমুক্ত:
 আইয়ামে জাহিলিয়াতের সেই কঠিন সময়ে যাঁরা দ্বীনে হানিফ উনার উপর ইস্তিকামত থেকে যাবতীয় অনাচার হতে নিজেদেরকে পূত-পবিত্র রেখেছেন, উনাদের মধ্যে হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম তিনি অন্যতম। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে
عن ام المومنين حضرت الصديقة عليها السلام قالت لقد حرم حضرت ابو بكر عليه السلام الخمر على نفسه فى الجاهلية
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি জাহিলিয়াতের সময় নিজের জন্য মদকে হারাম করেছিলেন।” সুবহানাল্লাহ! (আবু নুআইম)
অন্য পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عن حضرت أبي العالية الرياحي قال : قيل لأبي بكر الصديق عليه السلام في مجمع من أصحاب رسول الله صلى الله عليه و سلم : هل شربت الخمر في الجاهلية ؟ فقال : أعوذ بالله فقيل : و لم قال : كنت أصون عرضي و أحفظ مروءتي فإن من شرب الخمر كان مضيعا في عرضه و مروءته قال : فبلغ ذلك رسول الله صلى الله عليه و سلم فقال : صدق أبو بكر عليه السلام صدق  أبو بكر عليه السلام مرتين
অর্থ: “হযরত আবু আলিয়াহ আর রিয়াহী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের এক বিশেষ মজলিসে হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনাকে জিজ্ঞাসা করা হলো যে, আপনি কি জাহিলিয়াতের যুগে শরাব পান করেছিলেন? তিনি বললেন, মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট আমি পানাহ চাই। তখন উনাকে বলা হলো, আপনি কেন শরাব হতে বিরত ছিলেন? তিনি বললেন, আমি আমার ইজ্জত-হুরমত সংরক্ষণ করেছি। হিফাযত করেছি আমার মুরওওয়াত অর্থাৎ মনুষত্ব। কেননা যে ব্যক্তি শরাব পান করে সে তার ইজ্জত সম্মান ও মুরুওয়াত বিনষ্ট করে ফেলে। রাবী বলেন, এ বিষয়টি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারকে পৌঁছলে তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি সত্যই বলেছেন। তিনি এই বাক্যখানা পরপর দু’বার বলেছেন।” (ইবনে আসাকীর)

ব্যবসা-বাণিজ্য:

ব্যবসা-বাণিজ্য ছিলো আরবী সম্ভ্রান্তদের প্রতীক; যা ছিলো সর্বোচ্চ মানের পেশা। হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি পারিবারিকভাবেই ব্যবসা-বাণিজ্য লাভ করেন। প্রাপ্ত বয়সে পদার্পণ করে তিনি পরিবারের ব্যবসা-বাণিজ্যের তত্ত্বাবধান গ্রহণ করেন। ব্যবসায়িক কাজে তিনি কয়েকবার সিরিয়া ও ইয়ামেন গমন করেন। কালক্রমে তিনি আরবের বড় ব্যবসায়ীতে পরিণত হন। সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্নকালে তিনি চল্লিশ হাজার দিনারের মালিক ছিলেন। যা বর্তমান সময়ে কয়েকশত কোটি টাকার সমপরিমাণ।

সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণের আনুষ্ঠানিকতা:

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন আনুষ্ঠানিকভাবে নবুওওয়াত মুবারক ও রিসালত মুবারক উনাদের বিষয়টি প্রকাশ করেন, তখন হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি ব্যবসায়িক কাজে সিরিয়া বা ইয়ামেনে অবস্থান করছিলেন। পবিত্র মক্কা শরীফে ফেরত এসে আত্মীয়-স্বজনকে নতুন সংবাদ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। তারা বললো, একটি নতুন ও আশ্চর্যজনক সংবাদ রয়েছে। খাজা আবু তালিব উনার ভাতিজা তিনি নবুওওয়ত মুবারক প্রকাশ করেছেন। তা শুনে হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাক্ষাৎ মুবারক লাভ করার জন্য অস্থির হয়ে পড়েন। দ্রুত নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাক্ষাৎ মুবারক গ্রহণ করেন এবং তৎক্ষণাত সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন। (সমুদয় সীরাত গ্রন্থ)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,

ما دعوت احدا الى الاسلام الا كانت له عنه كبوة و تردد نظر الا ابا بكر عليه السلام ما عتم عنه حين ذكربه وما تردد فيه.
অর্থ: “আমি যাকেই সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দাওয়াত মুবারক দিয়েছি তিনিই চু-চেরা করেছেন, সময়ক্ষেপণ করেছেন। তবে হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি ব্যতিক্রম। উনাকে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দাওয়াত দেয়া মাত্রই কোনো প্রকার চু-চেরা না করে, কালবিলম্ব না করে তৎক্ষণাত তিনি দাওয়াত মুবারক গ্রহণ করেন। পবিত্র দ্বীন ইসলাম গ্রহণের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন।” (ইবনে ইসহাক্ব)

সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণকারী প্রথম পুরুষ:

হযরত মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণের আনুষ্ঠানিকতা সর্বপ্রথম সম্পন্ন করেন হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা। সেই সময়ে আহলু বাইত শরীফ উনার অন্তর্ভুক্ত ছিলেন- উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম, বিনতু রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন হযরত আন নুরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন হযরত আন নুরুল ঊলা আলাইহাস সালাম, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম এবং সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন আন নূরুর রবিয়াহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম।
আনুষ্ঠানিক নবুওওয়াত প্রকাশের সেই মুবারক সময়ে হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে হতে যাঁরা যমীনে অবস্থান মুবারক করছিলেন, উনারা সকলেই ছিলেন মহিলা। সে অনুযায়ী সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণকারী প্রথম পুরুষ হলেন- ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম। উনার পূর্বে প্রাপ্ত বয়স্ক কোনো পুরুষ সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেননি। এ মতের উপর রায় দিয়েছেন ইমামে আ’যম হযরত ইমাম আবু হানীফাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি। সুবহানাল্লাহ!

সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার প্রচার-প্রসার:

সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার পর হতে হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারকে একনিষ্ঠভাবে আঞ্জাম দেন। শারীরিক, মানসিক, অর্থনৈতিক সর্ব দিকেই উনার খিদমতের আঞ্জাম বিস্তৃতি ছিলো। পবিত্র হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত হয়েছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমি যখন ঘোষণা করতাম যে আমি তোমাদের সকলের জন্য রসূল স্বরূপ প্রেরিত হয়েছি, তখন সকলেই আমাকে অস্বীকার করতো। তবে শুধুমাত্র হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি ব্যতীত। তিনি বলতেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আপনি সত্যই বলেছেন। (বুখারী শরীফ)
অর্থাৎ সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার প্রাথমিক যুগে হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি যে খিদমত মুবারক উনার আঞ্জাম দিয়েছেন, তা অন্য কারো পক্ষেই সম্ভব হয়নি।
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণের কারণে কাফিররা যে সমস্ত ব্যক্তিত্ব উনাদের উপর যুলুম-নির্যাতন করতো উনাদের মধ্যে যারা আযাদ ছিলেন না উনাদেরকে হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম চড়া মূল্যে ক্রয় করে আযাদ করে দিতেন। প্রথম মুয়াজ্জিন হযরত বেলাল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত আমের ইবনে ফুহাইরাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনারাসহ আরো অনেকে উনাদের অন্তর্ভুক্ত।

শত যুলুমেও অবিচল:

সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণের কারণে কাফিররা নির্মম যুলুম-নির্যাতন করতো। অর্থনৈতিক মানসিক নির্যাতনের পাশাপাশি শারীরিক নির্যাতন ছিলো নিত্যদিনের ব্যাপার। কাফিররা সুযোগ পেলেই মুসলমান উনাদেরকে নির্যাতনের কোশেশ করতো। কিন্তু তাদের শত যুলুম সত্ত্বেও হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারকে সুদৃঢ় ও অবিচল ছিলেন।
কাফিরদের দীর্ঘ তিন বছরের অবরোধ ক্ষেত্র শিয়াবে আবু তালিবে অবস্থানকারীগণ উনাদের মধ্যে হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি অন্যতম। কাফিরদের অসহ্য যুলুমের দরুন অনেকেই হিজরত মুবারক করেছেন। কিন্তু তিনি কখনোই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছোহবত মুবারক ত্যাগ করেননি।

ছিদ্দীক্ব লক্বব মুবারক:

আমুল হুযন তথা আনুষ্ঠানিক নবুওওয়াত প্রকাশের দশম বছর এবং হিযরত মুবারক উনার তিন বছর পূর্বে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ২৭শে রজবুল হারাম শরীফ লাইলাতু ইছনাইনিল আযীম পবিত্র মি’রাজ শরীফে গমন করেন। সকালে তিনি পবিত্র মি’রাজ শরীফ উনার ঘটনাবলী বর্ণনা করতে থাকেন। তা শুনে কাফিররা বিভিন্ন ধরনের কুৎসা রটনা করতে থাকে। আর এ সময়ে হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি উনার হুজরা শরীফে অবস্থান করছিলেন। ছোহবত মুবারকে যাওয়ার জন্য তিনি যখন বের হলেন, পথিমধ্যে এক কাফির উনার নিকট পবিত্র মি’রাজ শরীফ উনার বিষয়টি বললো। তিনি বললেন, তুমি কি সরাসরি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যবান মুবারক হতে শুনেছ? সে বললো- হ্যাঁ, উনার যবান মুবারক হতেই আমি শুনেছি। তখন তিনি বললেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র মি’রাজ শরীফ উনার বিষয়টি যতই আশ্চর্যজনক হোক না কেন, আমি তা বিনা বাক্যে নিঃসন্দেহে বিশ্বাস করি। উনার এই চরম সত্যবাদিতার দরুন উনাকে ‘ছিদ্দীক্ব’ লক্বব মুবারকে ভূষিত করা হয়। সুবহানাল্লাহ! (মুস্তাদেরেকে হাকীম)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
ان الله سمى ابا بكر عليه السلام على لسان نبيه صلى الله عليه وسلم صديقا-
নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যবান মুবারকে হযরত আবূ বকর আলাইহিস সালাম উনাকে ‘ছিদ্দীক্ব’ লক্বব মুবারকে ভূষিত করেছেন। (দারুকুতনী)

উম্মুল মু’মিনীন হাদিয়া করণ:

আমুল হুযন তথা আনুষ্ঠানিক নবুওওয়াত প্রকাশের দশম বছরে উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সেই সময়ে উম্মুল মু’মিনীন হিসেবে তিনি এককভাবে ছিলেন। বিধায়, উনার বিদায়ের দরুণ পবিত্র হুজরা শরীফ অভ্যন্তরীণ খিদমতের আঞ্জাম দেয়ার জন্য একজন উম্মুল মু’মিনীন উনার প্রয়োজনীয়তা তীব্রভাবে দেখা দেয়। হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি বাহিরের যাবতীয় খিদমত মুবারকের আঞ্জাম দিতেন। এখন পবিত্র হুজরা শরীফের খিদমতের আঞ্জাম দেয়ার জন্য তিনি হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনাকে নিসবাতুল আযীম মুবারক দেয়ার ব্যাপারে মুবারক খিদমতে আরজি পেশ করেন। নূরে মুজসাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার আরজি কবুল করতঃ হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনাকে নিসবাতুল আযীম মুবারক করেন। হযরত ছিদ্দীক্বে আকবার আলাইহিস সালাম তিনি আপন আওলাদ উনাকে মুবারক খিদমতে দিয়েছেন। আবার তিনি নিজেই মোহর মুবারক পরিশোধ করেছেন। যা দ্বারা উনার খিদমত মুবারকের ব্যাপকতা দিবালোকের ন্যায় সুস্পষ্ট হয়।

পবিত্র হিজরত মুবারক:

কাফিরদের চরম যুলুম-নির্যাতনের দরুণ হযরত সাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের অনেকেই হিজরত করেন। এহেন পরিস্থিতিতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর  পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, হে ছিদ্দীক্বে আকবার আলাইহিস সালাম! মহান আল্লাহ পাক তিনি যে কোনো সময় হিজরত মুবারক উনার অনুমতি প্রদান করবেন। তখন আপনি হবেন আমার সাথী। আপনি হিজরত মুবারকের প্রস্তুতি নিন। অতঃপর, সুদীর্ঘ ছয় মাস অতিবাহিত হয়ে গেছে।
আনুষ্ঠানিক নবুওওয়াত প্রকাশের এয়োদশ বছর পবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ মাসে মহান আল্লাহ পাক তিনি হিজরত মুবারকের নির্দেশ করলেন। আদেশ মুবারক পেয়ে হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনাকে স্বীয় বিছানা মুবারকে রেখে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহু হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হুজরা শরীফ হতে বের হয়ে হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার হুজরা শরীফ উনার দরজায় করাঘাত করেন। সাথে সাথে তিনি বের হয়ে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি উপস্থিত। উনার দ্রুতগামীতার দরুণ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আশ্চর্যবোধ করে ইরশাদ মুবারক করলেন, এতো গভীর রাতে আপনি কি ঘুমাননি? এত দ্রুত বের হয়ে আসলেন কিভাবে? তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি যেদিন হিজরত মুবারকের কথা বলেছেন, সেদিন হতে আমি কখনোই বিছানায় পিঠ লাগাইনি। সেদিনই  হিজরতের জন্য প্রয়োজনীয় যানবাহন, অর্থকড়ি, খাবার, পোশাক এমনকি মদীনা শরীফ উনার পথ  দেখানোর জন্য অভিজ্ঞ ও বিশ্বস্ত লোক সংগ্রহ করে রেখেছি। আপনার ছোহবত মুবারক হতে হুজরা শরীফে এসে হিজরতের প্রস্তুতি নিয়ে বিগত ছয় মাস যাবৎ আমি দরজায় দাঁড়িয়ে থাকি। আপনি নির্দেশ মুবারক করার সাথে সাথেই  যেন আপনার নির্দেশ মুবারক পালন করতে পারি সে জন্য সর্বদা সতর্কভাবে আমি অবস্থান করি। সুবহানাল্লাহ!
বলার অপেক্ষাই রাখেনা যে, হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি হিজরত মুবারক উনার জন্য যে ত্যাগ স্বীকার করেছেন, তা সাধারণ মানুষের পক্ষে কস্মিনকালেও সম্ভব নয়। আর এজন্যই পুরো উম্মতের মাঝে উনাকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফে মহান আল্লাহ পাক উনার তা’রীফ মুবারক করেছেন। হাদীছ শরীফেও রয়েছে উনার ফযীলত মুবারকের বর্ণনা।
হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তারকারাজির সমপরিমাণ নেকী রয়েছে হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার। আর হিজরত মুবারক উনার সময় ছাওর গুহায় অবস্থানকালীন সময়ে হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি যে নেকী হাছিল করেছেন, তা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার সমস্ত নেকী হতেও বেশি। সুবহানাল্লাহ!

মসজিদে নববী শরীফ স্থাপন:

হিজরত মুবারক এবং তার পরবর্তী প্রতিটি ক্ষেত্রে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খাদিম হিসেবে হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম খিদমত মুবারকের আঞ্জাম দেন। শারীরিক, মানুষিক এবং অর্থনৈতিক কোনো ধরনের খিদমত মুবারক হতে তিনি পিছপা হননি।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মদীনা শরীফে হিজরত মুবারক করার পর মসজিদ নির্মাণ করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। সে সময় তিনি হযরত আবু আইউব আনসারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার হুজরা শরীফে অবস্থান করছিলেন। হুজরা শরীফ উনার সন্নিকটে অবস্থিত খোলা জায়গায়টি মসজিদে নববী শরীফ উনার জন্য নির্ধারিত করা হলো। বনী নাজ্জার গোত্রের হযরত সাহল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এবং হযরত সুহাইল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনারা দুই সহোদর ভাই মসজিদে নববী শরীফ উনার জন্য নির্ধারিত জমির মালিক ছিলেন। হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি সেই জমিখানা ক্রয় করে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারকে হাদিয়া করেন। আর এজন্য বলা হয়েছে, ক্বিয়ামত পর্যন্ত মসজিদে নববী শরীফে যত নেক আমল হবে, তার একটা হিস্যা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম লাভ করবেন। সুবহানাল্লাহ!

জিহাদ:

হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে প্রতিটি জিহাদে শরীফ হয়েছেন। সর্বক্ষেত্রেই তিনি ছায়ার মতো লেগে ছিলেন। এমন কোনো জিহাদ অতিবাহিত হয়নি যে জিহাদে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উপস্থিত ছিলেন কিন্তু হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উপস্থিত ছিলেন না।
দ্বিতীয় হিজরীতে অনুষ্ঠিত বদর জিহাদে অত্যধিক বীরদর্পে তিনি কাফিরদের মুন্ডুুপাত করেন। হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ করেন, বদর জিহাদে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য একখানা তাবু মুবারক খাটালাম। যেখানে অবস্থান মুবারক করে তিনি যুদ্ধ পর্যবেক্ষন করবেন। জিজ্ঞেস করা হলো, এই তাবুতে পাহারার দায়িত্বে কে থাকবে? কেউ এগিয়ে আসলেন না। আল্লাহ পাক উনার কসম! শুধুমাত্র হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি এগিয়ে আসেন। সে দিন তিনি নাঙ্গা তরবারী নিয়ে এমনভাবে খিদমত মুবারক উনার আঞ্জাম দেন যে, কোনো শত্রুকেই তিনি তাবু মুবারক উনার নিকটবর্তী হতে দেননি। যে আসতো তাকেই তিনি আঘাত করে প্রতিরোধ করতেন। (আল মুসনাদ)
তৃতীয় হিজরীতে অনুষ্ঠিত উহুদে অত্যন্ত কঠিন যুদ্ধ হয়। এ যুদ্ধে নূরে মুজসাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আহত হন। ঘোরতর যুদ্ধের সেই কঠিন সময়ে হাতে গণা যে কয়জন উনার পুরো খিদমত মুবারক উনার আঞ্জাম দেন, উনাদের মধ্যে হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি অন্যতম। যুদ্ধ শেষে কাফিরদেরকে তাড়াতে যে সত্তর জন নিবেদিত প্রাণ অগ্রসর হয়েছিলেন, উনাদের প্রথম ব্যক্তিত্ব হলেন হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম।
পঞ্চম হিজরীতে অনুষ্ঠিত বনু মুস্তালিকের যুদ্ধে তিনি অপরিসীম বীরত্বে কাফিরদের প্রতিহত করেন। এ যুদ্ধে তিনি মুহাজিরগণ উনাদের পতাকাবাহী হন। খন্দকের যুদ্ধে পরিখা খননে তিনি অবিরাম শ্রম মুবারক দিয়েছেন। তিনি নির্দিষ্ট দিকের মুহাফিয হিসেবে দায়িত্বশীল ছিলেন। সে যুদ্ধে দলপতিগণ উনাদের মধ্যে তিনি অন্যতম। তিনি উনার অধীনস্থগণ উনাদেরকে নিয়ে তিনি যেখানে অবস্থান মুবারক করেছিলেন, সেখানে মসজিদে আছ ছিদ্দীক্ব প্রতিষ্ঠা করেন। যা অদ্যবধি রয়েছে। (সাখাবী)
ষষ্ঠ হিজরীতে অনুষ্ঠিত হুদায়বিয়ার সন্ধির সেই সুদীর্ঘ সফরে তিনিও উপস্থিত ছিলেন। সন্ধির আলোচনা করতে এসে কুরাইশ প্রতিনিধি উরওয়াহ ইবনে মাসউদ যখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক  ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকের খিলাফ কথা বলেছিল, তখন হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনিই তার জোরালো প্রতিবাদ করেছিলেন। (বুখারী শরীফ)
সপ্তম হিজরীতে অনুষ্ঠিত খাইবার যুদ্ধে তিনি শারীরিক-মানসিক সর্বপ্রকার খিদমত মুবারকের আঞ্জাম দেন। উনার দূরদর্শিতার দরুণ খাইবারের বিশাল খেজুর বাগান ও অঢেল সম্পদ সুরক্ষিত থাকে। খাইবারের কামুস দুর্গ বিজয়ে নিয়োজিত সেনাপতি উনাদের মধ্যে তিনি অন্যতম।
অষ্টম হিজরীর মক্কা শরীফ বিজয় অভিযানে হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সাল্লাম তিনি বিশেষ শান মুবারক জাহির করেন। হিজরত মুবারকের দিন তিনি নূরে মুজাসসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পাশাপাশি বাহনে যেভাবে মক্কা শরীফ হতে বের হয়েছিলেন, পবিত্র মক্কা শরীফ বিজয়ের দিন সেভাবেই মক্কা শরীফ প্রবেশ করেন। (মা’রিফুস সাহাবা)
ইসলাম উনার ইতিহাসে হুনাইন ঘোরতর যুদ্ধের উপমা। হাওয়াজিন ও ছাকীফ গোত্র পূর্ব হতে ওৎপেতে থেকে যুদ্ধের নিয়ম ভঙ্গ করে আকস্মিক আক্রমণ চালায়। এতে কঠিন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। প্রতিরোধের স্থলে আত্মরক্ষা করাই কঠিন হয়ে পড়ে। সেই কঠিন সময় সাতজন বিশিষ্ট ছাহাবী হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ঘিরে রেখে বীরত্বপূর্ণ খিদমত মুবারকের আঞ্জাম দেন। উনাদের মধ্যে হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি অন্যতম। এমনকি পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার পতাকা তিনিই উঁচু করে রেখেছিলেন। (ইবনু  হিশাম)
নবম হিজরীতে তাবুক যুদ্ধ অনুষ্ঠিত হয়। তাবুক যুদ্ধে হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি উনার সমস্ত সম্পদ হাদিয়া করে যে নজির সৃষ্টি করেছেন, পৃথিবীর ইতিহাসে এরূপ নজির সৃষ্টিকারী দ্বিতীয় কেউ নেই। এ যুদ্ধে পুরো বাহিনীকে বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত করা হয়। উনাকে দেয়া হয় বৃহত্তম ভাগের বৃহত্তম পতাকা এবং সেনাপতিত্ব। (ওয়াকিদী, আছ ছহীহ)

আমীরে হজ্জ:

নবম হিজরীতে পবিত্র হজ্জ ফরয করা হয়। এ বছর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনাকে তিনশত হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরসহ পবিত্র হজ্জ উনার জন্য পবিত্র মক্কা শরীফে প্রেরণ করেন। পাশাপাশি উনাকে আমীরে হজ্জ লক্বব মুবারকে ভূষিত করা হয়। মুশরিকদের বিরুদ্ধে পবিত্র মক্কা শরীফে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা সে বছর উনার মাধ্যমেই ঘোষণা করা হয়। পবিত্র হজ্জ উনার ইসলামী পদ্ধতি সর্বপ্রথম তিনিই পালন করেন। (ইবনু হিশাম, যাদুল মাআদ)

বিদায় হজ্জ উনাতে একনিষ্ঠ সাথী:

দশম হিজরীতে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হজ্জ মুবারক সম্পন্ন করেন। এই ছফর মুবারকে উনার মালামাল মুবারক এবং হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার মালামাল মুবারক একই উটে বহন করা হয়। সুবহানাল্লাহ! (আবু দাউদ)
এই ছফর মুবারকে উনার আওলাদ হযরত মুহম্মদ ইবনে আবি বকর রহমতুল্লাহি আলাইহি বিলাদত শরীফ গ্রহণ করেন। (ইবনু সা’দ)
বিদায় হজ্জের সময় সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার পরিপূর্ণতা ঘোষণা করা হয়। আর ইসলাম উনার পূর্ণাঙ্গতার মাধ্যমে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিদায় মুবারক উনার মুবারক সময় নিকটবর্তী হওয়ার বিষয়টি তিনিই সর্বপ্রথম উপলব্ধি করেন। তার কারণে তিনি অনেক কান্নাকাটি করেন।
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘হযরত নবী ও রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের পর সর্বশ্রেষ্ঠ মর্যাদার অধিকারী হচ্ছেন- হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম।’ হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি পবিত্র জুমাদাল উখরা শরীফ মাস উনার ২২ তারিখ পবিত্র বিছাল শরীফ গ্রহণ করেন। অর্থাৎ বছরের জন্য ২২শে জুমাদাল উখরা শরীফ হচ্ছে; ২৩ হাদি আশার-১৩৮১ শামসী সন, ২৩ এপ্রিল-২০১৪ ঈসায়ী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া বা বুধবার। তাই সকলের জন্য ফরয হচ্ছে, উনাকে যথাযথ মুহব্বত করা ও পরিপূর্ণ অনুসরণ-অনুকরণ করা এবং সর্বত্র উনার বেশি বেশি আলোচনা করা। আর সরকারের জন্য ফরয হচ্ছে- বাংলাদেশের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সিলেবাসের পাঠ্যপুস্তকে উনার পবিত্র জীবনী মুবারক অন্তর্ভুক্ত করা। পাশাপাশি উনার পবিত্র বিছাল শরীফ উপলক্ষে মাসব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা এবং ২২শে জুমাদাল উখরা শরীফ উপলক্ষে সরকারিভাবে ছুটি ঘোষণা করা। যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, আফদ্বালুন নাস বা’দাল আম্বিয়া হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম উনার বুযুর্গী ও ফযীলত বর্ণনার অপেক্ষা রাখে না। পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি একাধিক স্থানে উনার ছানা-ছিফত করেছেন। উনার প্রশংসা অসংখ্য পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে। হযরত নবী ও রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের পরে যিনি সর্বশ্রেষ্ঠ মর্যাদার অধিকারী তিনিই হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম এবং এই “ছিদ্দীক্বে আকবর” লক্বব মুবারক উনার একক বৈশিষ্ট্য। উনার মর্যাদা স্বল্প পরিসরে উল্লেখ করা সম্ভব নয়। এমন কোনো ভাষা নেই, যে ভাষায় উনার জীবনীগ্রন্থ রচিত হয়নি। তিনি ছিলেন সেই মহান ব্যক্তি যিনি প্রথম ইসলাম গ্রহণ করেন, প্রথম পবিত্র কুরআন শরীফ সংগ্রহকারী অর্থাৎ জামিউল কুরআন এবং নাম দেন মুছহাফ এবং উনাকেই প্রথম ‘খলীফাতু রসূলিল্লাহ’ বলে অভিহিত করা হয়েছে। হযরত ছিদ্দীক্ব আকবর আলাইহিস সালাম তিনি ইসলামী জগতে এক নজিরবিহীন বিরল ব্যক্তিত্ব। সম্মানিত নুবুওওয়াত উনার পর উনার সম্মানিত ইমামত ও খিলাফত সকলেই বিনা দ্বিধায় মেনে নেন।  মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছাওর গুহার সঙ্গী হওয়ার বিষয়টি মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার কালাম পাক উনার মধ্যে উল্লেখ করেছেন। এর ফযীলত বর্ণনা প্রসঙ্গে স্বয়ং হযরত উমর ফারূক্ব আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, আমার সারা জীবনের আমল যদি হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার সেই তিন রাত্রির আমলের সমান হতো! সেই তিন রাত্রি হলো, যেই তিন রাত্রিতে তিনি (পবিত্র হিজরত উনার ছফরে) নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সঙ্গে মুবারক খিদমতে ছিলেন। সুবহানাল্লাহ!  মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মূলত উনার ফাযায়িল-ফযীলত, মর্যাদা-মর্তবা ও বুযুর্গী মুবারক সম্পর্কিত ইলম না থাকার কারণেই অনেকে উনাকে যথাযথ মুহব্বত ও অনুসরণ করতে পারছে না। যার ফলে তারা মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের খাছ রেযামন্দি হাছিলে ব্যর্থ হচ্ছে। তাই উনার সম্পর্কে জানা সকলের জন্যই ফরয। কেননা যে বিষয়টা আমল করা ফরয সে বিষয়ে ইলম অর্জন করাও ফরয। অথচ আশ্চর্যের বিষয় হলো- ৯৭ ভাগ মুসলমানের দেশ বাংলাদেশের মাদরাসা, স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচিতে উনার সম্পর্কে কোনো আলোচনাই নেই। তাহলে মুসলমানগণ কি করে উনার সম্পর্কে জানবে? আর কি করে হাক্বীক্বী মুসলমান হবে? তাই সরকারের জন্য দায়িত্ব কর্তব্য হচ্ছে- শতকরা ৯৭ ভাগ মুসলমানের দেশ বাংলাদেশের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সিলেবাস বা পাঠ্যপুস্তকে উনার পবিত্র জীবনী মুবারক অন্তর্ভুক্ত করা। মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, হযরত নবী ও রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের পর সর্বশ্রেষ্ঠ মর্যাদার অধিকারী, খলীফাতু রসূলিল্লাহ হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র বিছাল শরীফ উনার দিন হচ্ছে ‘২২শে জুমাদাল উখরা শরীফ’। তাই প্রত্যেক মুসলিম-অমুসলিম সরকারের জন্য দায়িত্ব ও কর্তব্য হচ্ছে, এ মুবারক দিবস উপলক্ষে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা পাশাপাশি উনার পবিত্র বিছাল শরীফ উপলক্ষে মাসব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা।


২২ জুমাদাল ঊখরা শরীফ:
আমীরুল মু’মিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার সংক্ষিপ্ত সাওয়ানেহ উমরী মুবারক

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার মুহব্বত ঈমান এবং উনার প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করা কুফরী।” সঙ্গতকারণেই উনার শান মুবারক সম্পর্কে অবগত হওয়া সকলের জন্য ফরয।
--------------------------------------------------------------------------------------
নিম্নে উনার সংক্ষিপ্ত সাওয়ানেহে উমরী মুবারক আলোচনা করা হলো।
মুবারক নসব নামা: আমিরুল মু’মিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে নসবগতভাবে সম্পৃক্ত। উনার পিতা খত্তাব ইবনে নুফাইল ইবনে আব্দুল উজ্জা ইবনে রিয়াহ আব্দুল্লাহ ইবনে কুরত ইবনে রজ্জাহ ইবনে আদী ইবনে কা’ব আলাইহিমুস সালাম। এ অনুযায়ী উনার নবম পুরুষ হাবীবী নসব মুবারক উনার সাথে মিশে গেছে। উনার মাতা হানতামা বিনতে হিশাম বা হাশিম ইবনে মুগীরা ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর ইবনে মাখযুম ইবনে ইয়াক্বযাহ ইবনে মুররা আলাইহিমুস সালাম। এ অনুযায়ী উনার অষ্টম পুরুষ হাবীবী নসব মুবারক উনার সাথে মিশে গেছে।
পবিত্র বিলাদত শরীফ: সর্বাধিক প্রসিদ্ধ ও প্রণিধানযোগ্য মতে, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তাশরীফ মুবারক গ্রহণের পৌনে ১৩ বছর পর তথা ৫৮৩ ঈসায়ী সনের যিলহজ্জ মাসে কুরাইশ বংশের আদী গোত্রে পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। (তারীখুল খুলাফা)
নাম মুবারক: সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার মূল নাম হযরত ‘উমর’ আলাইহিস সালাম। উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত হাফসা আলাইহাস সালাম উনার নাম মুবারক অনুযায়ী তিনি আবু হাফস মুবারক কুনিয়াতে অভিহিত। সর্বপোরি তিনি “ফারূক্বে আ’যম” লক্বব মুবারকে বিশ্বব্যাপী খ্যাত। তাছাড়া আশাদ্দু ফি আমরিল্লাহ ও আশিদ্দাউ আলাল কুফফার প্রভৃতি লক্বব মুবারকে তিনি সমধিক পরিচিত।
হুলিয়া মুবারক: কিতাবে উল্লেখ করা হয়, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি সাধারণ মানুষদের তুলনায় এক হাত বেশি লম্বা ছিলেন। তিনি সুঠাম দেহের অধিকারী ছিলেন। তিনি দুই হাত দ্বারা সমানভাবেই কাজ করতে পারতেন। সঙ্গতকারণেই তিনি পালোয়ানদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে কুরাইশদের গর্বের পাত্র হিসেবে গ্রহণীয় হন।
ইসলামপূর্ব জীবন: নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “জাহিলিয়াতের সময় যে সমস্ত ব্যক্তিত্ব উত্তম ছিলেন, উনারা ইসলামী যুগেও উত্তম ও শ্রেষ্ঠ।” সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উপরোক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার পরিপূর্ণ মিছদাক্ব। জাহিলিয়াতের কোনো কুসংস্কার উনার চরিত্র মুবারকে আঘাত হানতে পারেনি। তিনি শৈশবকালে আনুষ্ঠানিকভাবে আক্ষরিক জ্ঞান অর্জন করেন। আরবের শিক্ষিত লোকদের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম। তাছাড়া বাল্য বয়সেই তিনি যুদ্ধবিদ্যা রপ্ত করেন। পরিণত বয়সে তিনি ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ ব্যক্তিত্ব হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। ব্যবসাকে কর্ম হিসেবে তিনি গ্রহণ করেন। কয়েকবার ব্যবসায়ীদের নেতৃত্ব দিয়ে তিনি সিরিয়া সফর করেন। এছাড়া ধাবমান ঘোড়ায় চড়া আর কুস্তি প্রতিযোগিতা ছিল উনার জন্য নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার।
আনুষ্ঠানিকভাবে ইসলাম প্রকাশ: আনুষ্ঠানিক নবুওয়ত প্রকাশের পঞ্চম বছরে। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক দোয়ার বদৌলতে ৩২ বছর মুবারক বয়সে সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি পবিত্র দ্বীন ইসলাম গ্রহণের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন। তিনি হলেন চল্লিশতম মুসলমান। সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে পবিত্র দ্বীন ইসলাম গ্রহণের দরুন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা সমস্বরে তাকবীর বলেন। উনার পবিত্র দ্বীন ইসলাম গ্রহণ ছিল বিজয়স্বরূপ।
পবিত্র হিজরত মুবারক: নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হিজরত মুবারক করার কিছুদিন পূর্বে মুবারক ইযাযতক্রমে সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি ঘোষণা দিয়ে মদীনা শরীফে হিজরত করেন। উনার ঘোষণা সত্তেও উনার রোবের দরুন কুরাইশরা উনার পিছু নেয়ার সাহস পায়নি। তিনি নির্বিঘ্নে বীরদর্পে মদীনা শরীফে তাশরীফ মুবারক রাখেন।
বিশেষ শান মুবারক: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হুজরা শরীফ উনার আভ্যন্তরীণ খিদমতের আঞ্জাম দেয়ার লক্ষ্যে সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম সদা সচেষ্ট ছিলেন। আর তারই ধারাবাহিকতার তৃতীয় হিজরীতে তিনি উনার আওলাদ উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত হাফসা আলাইহাস সালাম উনাকে মুবারক খিদমতে নিসবতে আযীম মুবারক দেন। যা উনার অনন্য ব্যক্তিত্বের বহিঃপ্রকাশ। তিনি প্রতিটি জিহাদেই শরীক হয়েছেন। তিনি বদর-উহুদ যুদ্ধসহ খন্দক, বাইয়াতে রিদ্বওয়ান, খাইবার, পবিত্র মক্কা শরীফ বিজয়, হুনাইনসহ প্রতিটি অভিযানে যে বীরত্ব প্রকাশ করেছেন, তা আজো ইতিহাসে সোনালী অক্ষরে লিপিবদ্ধ রয়েছে। এমনকি তাবুক জিহাদের জন্য তিনি উনার সমস্ত সম্পদের অর্ধেক ব্যয় করেন। যা উনার ফানা-বাক্বার সুমহান নজির।
পবিত্র খিলাফত: বলার অপেক্ষা রাখে না যে, সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার মুবারক খিলাফতের ব্যাপারে ইজমা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার ক্ষেত্রে সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার ভূমিকা ছিলো মুখ্য। প্রথম খলীফা উনার সময়কালে তিনি প্রধান কাতিব এবং প্রধান পরামর্শক হিসেবে দায়িত্ব মুবারক পালন করেন। উনারই মুবারক পরামর্শে মুরতাদ, ভন্ড নবী এবং যাকাত অস্বীকারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এছাড়া পবিত্র কুরআন শরীফ সংকলন ও সংরক্ষণের বিষয়টি উনার মুবারক পরামর্শেরই ফলাফল। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি ১৩ হিজরী সনের ২২শে জুমাদাল উখরা শরীফে ইয়াওমুছ ছুলাছা পবিত্র বিছাল শরীফ গ্রহণ করেন। তিনি পবিত্র বিছাল শরীফ গ্রহণের পূর্বে সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনাকে খলীফা হিসেবে ঘোষণা করেন। যা তিনি স্বয়ং নিজেই সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম কর্তৃক ওয়াসীয়তনামা হিসেবে লিপিবদ্ধ করিয়ে যান। বলা হয় যে, সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার খিলাফতকালের সর্বোত্তম কাজ হলো সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনাকে খলীফা হিসেবে ঘোষণা করা। আর এভাবেই সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি ১৩ হিজরী সনের ২২শে জুমাদাল উখরা শরীফে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত খিলাফতের দায়িত্ব মুবারক গ্রহণ করে প্রথম খুতবা মুবারক প্রদান করেন। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি সুদীর্ঘ ১০ বছর ৬ মাসেরও অধিককাল যাবৎ মুবারক খিলাফত পরিচালনা করেন। এই সুদীর্ঘ সময়ে বাইতুল মাল, সেনাবাহিনী, মজলিসে শুরা, ডাক বিভাগ, বিচার বিভাগ, ফতওযা বিভাগ, জরিপ বিভাগ, কৃষি বিভাগ, সেচ বিভাগ, শিক্ষা বিভাগ প্রভৃতি প্রতিষ্ঠা করেন। এ সময়ে নতুন শহর আবাদ, রাস্তা-ঘাট নির্মাণ, খাল খনন, বৃক্ষ রোপনসহ জনকল্যাণমূলক বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পাদন করেন। যা দ্বারা অদ্যাবধি মানুষ ফায়দা লাভ করছে। তন্মধ্যে নীলনদের পানি প্রবাহিত হওয়ার বিষয়টি অন্যতম। উনার খিলাফতকালে ১০৩৬টি রাজ্যে ইসলামী খিলাফত বিস্তৃতি লাভ করে। যা প্রায় ২২ লক্ষ্য বর্গ মাইল। ১৪ হিজরী সনে তিনি দামেশক, হিমস, বসরা এবং এগুলোর আশপাশের এলাকাসমূহ বিজয় করেন। তন্মধ্যে খোরাসান, সিজিস্তান, তসতর, হামদান, তাহারিস্তান, ফারগানা, বলখ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। উনার মুবারক খিলাফতকালে রোম-পারস্য তথা অগ্নিপূজক ও নাছারাদের মূলোৎপাটন করা হয়। এর পরে মজুসীরা অদ্যাবধি স্বকীয় কোনো রাজ্যে প্রতিষ্ঠিত হতে পারেনি। মুসলমান উনাদের প্রথম ক্বিবলা বাইতুল মুক্বাদ্দাস শরীফ উদ্ধার সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার বিজয় অভিযানসমূহে অন্যতম। ঐতিহাসিক বহু ঘটনার অবতারণা করে তিনি স্বয়ং স্বশরীর মুবারকে মদীনা শরীফ হতে বাইতুল মুক্বাদ্দাস শরীফ গিয়ে মসজিদে আক্বসা শরীফ উনার চাবি মুবারক ইহুদীদের কাছ থেকে গ্রহণ করেন। যা অদ্যাবধি ঐতিহাসিক ঘটনা হিসেবে বিশ্বজুড়ে বিখ্যাত। তিনি বিশ্বের ইতিহাসে সর্বপ্রথম আদমশুমারী করেন। তিনিই সর্বপ্রথম ইসলামী মুদ্রার প্রচলন করেন। উনার মুবারক তত্ত্বাবধানে হিজরী সাল ও তারাবীহর জামাতের প্রচলন হয়। তাছাড়া ইসলামী হুকুমত সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার মুবারক ইযাযতক্রমে মহিলাদের মসজিদে গিয়ে জামাতে নামায পড়ার রীতি বিলুপ্ত করেন। তিনি মুতা বিবাহের নিষেধাজ্ঞাও বাস্তবায়ন করেন। উনার মুবারক খিলাফতকালে চার তাকবীরের সহিত জানাযা নামাযের বিধানের ব্যাপারে ইজমা প্রতিষ্ঠিত হয়। ফারায়িয তথা সম্পদ বণ্টন সম্পর্কিত বিধানে তিনি পূর্ণাঙ্গতা প্রকাশ করেন। তিনি ইহুদীদেরকে হিজায হতে সিরিয়ায় নির্বাসিত করেন। আর নাছারাদেরকে নির্বাসিত করেন কুফায়। তিনি মসজিদে নববী শরীফ উনার জন্য নতুন জমি ক্রয় করতঃ উনার পরিধি বৃদ্ধি করেন। তাছাড়া নূরে মুজাসসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক ইচ্ছা অনুযায়ী তিনি মাক্বামে হযরত ইবরাহীম শরীফ স্থানান্তরিত করেন।
মুবারক শাহাদাত: পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি দোয়া মুবারক করেন,আয় বারে ইলাহী! আমাকে আপনার রাস্তায় শাহাদাত নসীব করুন। এবং আপনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পূত-পবিত্র শহর মুবারকে আমাকে বিছাল শরীফ প্রদান করুন। মহান আল্লাহ পাক তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার দুআ ও ইচ্ছা মুবারক ক্ববুল করেছেন। বিশিষ্ট ছাহাবী হযরত মুগীরা ইবনে শু’বা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার চুক্তিবদ্ধ দাস আবু লুলু। সে ছিল মজুসী মুশরিক। সে মুনাফিক ইবনে সাবা গোষ্ঠীর প্ররোচনায় বিষ মিশ্রিত দুই দিকে ধার বিশিষ্ট ছুরি নিয়ে ফজরের নামাযের সময় মসজিদে নববী শরীফে লুকিয়ে রইলো। সে ছুরি দ্বারা উনাকে নামাযরত অবস্থায় আঘাত করে। ছুরির আঘাতে উনার পাকস্থলি পর্যন্ত কেটে যায়। উনাকে বিছানা মুবারকে শুইয়ে দেয়া হলো। উনাকে দুধ-মধু যেটাই খাওয়ানো হলো, সেটাই বেরিয়ে আসলো। যার কারণে ২৩ হিজরী সনের ২৭শে যিলহজ্জ শরীফ ইয়াওমুস সাবত তিনি সম্মানিত শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। মুশরিকরা যে মহান আল্লাহ পাক কর্তৃক ঘোষিত সবচেয়ে বড় শত্রু, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার শাহাদাত মুবারক তার সুস্পষ্ট উদাহরণ।
সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার ওসীয়ত মুবারক অনুযায়ী উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার মুবারক ইযাযতক্রমে হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার কাঁধ মুবারক বরাবর উনার রওযা শরীফ স্থাপন করা হয়।
মহান আল্লাহ পাক উম্মাহকে সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার মুবারক শানে সর্বোচ্চ হুযনে যন পোষণ করত উনার পবিত্র সাওয়ানেহে উমরী মুবারক হতে ইবরত নসীহত হাছিল করে তা আসলে বাস্তবায়ন করায় তাওফীক দান করুন। আমীন!




0 Comments: