হুযুরপাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র জীবনী মুবারক । (পর্ব- ৯২৫-১০৬৯) (গ)


হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার পবিত্র দ্বীন ইসলাম গ্রহণ
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
 قال حضرت الامام أحمد رحمة الله عليه عن حضرت عبد الله بن سلام رضى الله تعالى عنه. قال: لما قدم رسول الله صلى الله عليه وسلم المدينة انجفل الناس، فكنت فيمن انجفل، فلما تبينت وجهه عرفت أنه ليس بوجه كذاب. فكان أول شئ سمعته يقول: "يا أيها الناس افشوا السلام وأطعموا الطعام وصلوا الارحام وصلوا بالليل والناس نيام، تدخلوا الجنة بسلام"
অর্থ: হযরত ইমাম আহমদ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যে তাশরীফ মুবারক নিলে সমস্ত লোকজন দ্রুত উনার খিদমত শরীফে ছুটে আসেন। যাঁরা উনার খিদমত শরীফে হাজির হন উনাদের মধ্যে আমিও ছিলাম। আমি উনার নূরময় চেহারা মুবারক দেখেই চিনতে পারি যে, ইহা কোন মিথ্যাবাদীর চেহারা নয়। আমি সর্বপ্রথম উনাকে যে পবিত্র হাদীছ শরীফ ইরশাদ মুবারক করতে শুনি, তা হলো, হে লোক সকল: সালাম দাও: (আত্মীয়-অনাত্মীয় সকলকেই সালাম দাও), মানুষকে আহার করাও, (দরিদ্র ও অভাবগ্রস্থদের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন করো), এবং আত্মীয়তার মর্যাদা রক্ষা করো। (যারা তোমাদের নিকটাত্মীয় তাদের হক্ব আদায় করো। কারণ তাদের সাথে তোমাদের ঘনিষ্ট সম্পর্ক রয়েছে। কাজেই ঘনিষ্টতার মূল্য অনুধাবণ করো, তাদেরকে ত্যাগ করো না। তাদের সাথে সম্পর্ক নষ্ট করো না), রাত্রি বেলায় মানুষ যখন ঘুমিয়ে থাকে তখন তোমরা ছলাত বা নামায আদায় করো। আর এর প্রতিদান হলো সুখে-শান্তিতে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (তিরমিযী শরীফ)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে এসেছে,
عن حضرت أنس رضى الله تعالى عنه قال: فلما جاء النبي صلى الله عليه وسلم جاء حضرت عبد الله بن سلام رضى الله تعالى عنه فقال أشهد أنك رسول الله وأنك جئت بحق، وقد علمت يهود أني سيدهم وابن سيدهم وأعلمهم وابن أعلمهم فأدعهم فسلهم عني قبل أن يعلموا أني قد أسلمت فإنهم إن يعلموا اني قد أسلمت قالوا في ما ليس في. فأرسل نبي الله صلى الله عليه وسلم إلى اليهود فدخلوا عليه. فقال لهم: "يا معشر اليهود ويلكم اتقوا الله فوالله الذي لا إله إلا هو إنكم لتعلمون أني رسول الله حقا وأني جئتكم بحق فأسلموا " قالوا ما نعلمه. قالوا ذلك للنبي صلى الله عليه وسلم قالها ثلاث مرار.

অর্থ: হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যে তাশরীফ মুবারক নিলে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পুতঃপবিত্র খিদমত শরীফে উপস্থিত হয়ে বললেন আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং হক্ব বা সত্য নিয়ে আপনি আগমন করেছেন। ইহুদীরা একথা ভালো করে জানে যে, আমি তাদের সরদার ও তাদের সরদারের পুত্র এবং আমি তাদের মধ্যে সবচেয়ে বড় আলিম বা জ্ঞানী ব্যক্তি এবং সবচেয়ে বড় আলিম বা জ্ঞানী ব্যক্তির সন্তান। আমি পবিত্র দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেছি একথা ইহুদীরা জানার আগেই দয়া করে তাদেরকে ডেকে আমার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করুন। কারণ, তারা যদি জানতে পারে যে, আমি পবিত্র দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেছি তাহলে তারা আমার সম্পর্কে এমন সব মিথ্যা কথা বলবে যা আমার মধ্যে নেই সুতরাং দয়া করে ইয়া রসূল্লাল্লাহ ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! তাদের নিকট বার্তাবাহক প্রেরণ করুন। অতঃপর ইহুদীদেরকে ডাকা হলো অতঃপর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাদেরকে বললেন, হে ইহুদী সম্প্রদায়! তোমাদের জন্য আফসোস তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় কর’! মহান আল্লাহ পাক তিনি ছাড়া কোন ইলাহ নেই মহান আল্লাহ পাক ছাড়া কোন ইলাহ নেই সে মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! তোমরা অবশ্যই একথা জানো যে, আমি সত্য সত্যই মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং তোমরা একথাও জানো যে আমি তোমাদের নিকট হক্ব বা সত্য নিয়ে আগমন করেছি। সুতরাং তোমরা সকলে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে গ্রহণ করো। তারা বললো, আমরা তো জানি না। তারা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্পর্কে (একথা) তিনবার বললো।
قال: " فأي رجل فيكم حضرت عبد الله بن سلام رضى الله تعالى عنه؟ قالوا ذاك سيدنا وابن سيدنا وأعلمنا وابن أعلمنا. قال: أفرأيتم إن أسلم، قالوا حاش لله ما كان ليسلم قال: " يا ابن سلام اخرج عليهم " فخرج فقال: يا معشر يهود اتقوا الله فوالله الذي لا إله إلا هو إنكم لتعلمون أنه رسول الله وأنه جاء بالحق. فقالوا: كذبت. فأخرجهم رسول الله صلى الله عليه وسلم
এরপর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, তোমাদের মধ্যে আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম কে? তিনি কেমন ব্যক্তি? তারা বললো, তিনি তো আমাদের সরদার এবং সরদারের পুত্র, তিনি আমাদের মধ্যে সবচেয়ে বড় আলিম বা বড় জ্ঞানী এবং সবচেয়ে বড় জ্ঞানীর পুত্র সন্তান। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আচ্ছা বলো দেখি, তিনি যদি পবিত্র দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেন? তখন কেমন হবে? তারা বললো, মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট পানাহ চাই; তিনি কখনও মুসলমান হতে পারেন না। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, হে ইবনে সালাম! বেরিয়ে আসুন! তিনি বের হয়ে এসে বললেন, হে ইহুদী সম্প্রদায়! তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করো, মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! তিনি ছাড়া কোন ইলাহ নেই। তোমরাতো নিশ্চিত জানো যে, তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং তিনি হক্ব বা সত্য নিয়ে আগমন করেছেন। তখন তারা বললো, আপনি মিথ্যা বলছেন। অতঃপর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাদেরকে সেখান থেকে বের হতে বললেন তারা সেখান থেকে চলে যায়। (বুখারী শরীফ)
অন্য বর্ণনায় এসেছে,
فلما خرج عليهم شهد شهادة الحق قالوا: شرنا وابن شرنا، وتنقصوه فقال: يا رسول الله هذا الذي كنت أخاف.
অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহ তায়ালা আনহু তিনি সেখান থেকে বের হয়ে এসে হক্ব বা সত্য সাক্ষ্য দান করলেন, ইহুদীরা বলতে লাগলো ইনিতো আমাদের মধ্যে দুষ্ট লোক এবং দুষ্ট লোকের সন্তান। নাউযুবিল্লাহ! তারা উনাকে গালমন্দ করে। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এটাইতো আমি আশংকা করেছিলাম।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত রয়েছে,
عن حضرت أنس رضى الله تعالى عنه قال: سمع حضرت عبد الله بن سلام رضى الله تعالى عنه بقدوم النبي صلى الله عليه وسلم. وهو في أرض له - فأتى النبي صلى الله عليه وسلم: فقال إني سائلك عن ثلاث لا يعلمهن إلا نبي، ما أول أشراط الساعة ؟ وما أول طعام يأكله أهل الجنة ؟ وما بال الولد إلى أبيه أو إلى أمه ؟ قال: " أخبرني بهن جبريل آنفا " قال جبريل ؟ قال: "نعم ! " قال: عدو اليهود من الملائكة.
অর্থ : হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্নিত, তিনি বলেন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি উনার এক খামার থেকেই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমনের বার্তা মুবারক শুনতে পান। তখন তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট আগমন করলেন, এবং বললেন ইয়া রসূলাল্লাহ ইয়া হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমি আপনাকে ৩টি বিষয়ে সুওয়াল করতে চাই কোন নবী ও রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা ব্যতীত অন্য কেউ এর জাওয়াব জানেন না। সুওয়াল গুলো হচ্ছে, (১) কিয়ামতের প্রথম লক্ষণগুলো কি? (২) জান্নাতবাসীগণ প্রথম কি খাদ্য খাবেন? (৩) শিশু কখনো মায়ের অবয়বে আবার কখন পিতার অবয়বে হয় এর হিকমত কি?
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি এই বিষয় আমার নিকট পবিত্র ওহী মুবারক নাযিল করেছেন। তিনি বলেছেন, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন, জিবরীল?
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, হ্যাঁ। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন, ইনি তো হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে একজন, আর তিনি ইহুদীদের শত্রু। নাউযুবিল্লাহ!
ثم قرأ: "من كان عدوا لجبريل فإنه نزله على قلبك باذن الله) قال: "أما أول أشراط الساعة: فنار تخرج على الناس من المشرق تسوقهم إلى المغرب، وأما أول طعام يأكله أهل الجنة فزيادة كبد حوت، وأما الولد فإذا سبق ماء الرجل ماء المرأة نزع الولد إلى أبيه، وإذا سبق ماء المرأة ماء الرجل نزعت الولد " فقال. أشهد أن لا إله إلا الله أو (و) أنك رسول الله. يا رسول الله إن اليهود قوم بهت
অতপর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহু হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নি¤œাক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ তিলাওয়াত করলেন,
مَن كَانَ عَدُوًّا لِّجِبْرِيلَ فَإِنَّهُ نَزَّلَهُ عَلَى قَلْبِكَ بِإِذْنِ اللّهِ
অর্থ: “যে ব্যক্তি হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনার দুশমন এই জন্য যে, তিনি আপনার ক্বলব মুবারকে পবিত্র কুরআন শরীফ পবিত্র ওহী মুবারক করেছেন মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশক্রমে”। (পবিত্র সূরা বাক্বারা : আয়াত শরীফ ৯৭)
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, কিয়ামতের প্রথম আলামত হলো, একটা আগুন যা দেখা দেবে মানুষের (অর্থাৎ মানুষের নিকট প্রকাশ পাবে।) এবং লোকদের যে চালিত করবে প্রাচ্য থেকে প্রতীচ্যের দিকে। আর জান্নাতবাসীগণ প্রথম যে, খাদ্য আহার করবেন তা হলো মাছের তাজা কলিজা। আর শিশু সন্তান, যখন পুরুষের পবিত্র পানী নারীর পবিত্র পানির উপর প্রবল হয় তখন শিশু হয় পিতার আবয়বে আর যখন নারীর পবিত্র পানি পুরুষের পবিত্র পানির উপর প্রবল হয়, তখন সন্তান হয় মায়ের আকৃতির। তখন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি ছাড়া কোন ইলাহ নেই এবং আপনি মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল! হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। ইয়া রসূলাল্লাহু ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! ইহুদীরা হলো বড়ই অপরাধ প্রবণ জাতি।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
قال حضرت محمد إبن إسحاق رحمة الله عليه: حدثني حضرت عبد الله بن أبي بكر رحمة الله عليه عن حضرت يحيى بن عبد الله رحمة الله عليه عن رجل من آل حضرت عبد الله بن سلام رضى الله تعالى عنه: قال: كان من حديث حضرت عبد الله بن سلام رضى الله تعالى عنه حين أسلم - وكان حبرا عالما - قال: لما سمعت برسول الله وعرفت صفته واسمه وهيئته و [ زمانه ] الذي كنا نتوكف له، فكنت بقباء مسرا بذلك صامتا عليه حتى قدم رسول الله صلى الله عليه وسلم، المدينة فلما قدم نزل بقباء في بني عمرو بن عوف. فأقبل رجل حتى أخبر بقدومه، وأنا في رأس نخلة لي أعمل فيها،
অর্থ: মুহম্মদ ইবনে ইসহাক রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমার নিকট হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আবু বকর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন, তিনি হযরত ইয়াহইয়া ইবনে আব্দুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে, তিনি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার পরিবার পরিজনের জনৈক ব্যক্তির বরাতে উনার পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে গ্রহণের ওয়াকিয়া বর্ণনা করেন, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, আমি যখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমনের কথা মুবারক শুনতে পেলাম এবং উনার নাম মুবারক ও উনার ছানা-ছিফত মুবারক ও উনার পরিচয় জানতে পারলাম এবং উনার যামানায় আমরা যার অপেক্ষা করছিলাম তখন আমি কুবায় বিষয়টি গোপন রেখে চুপে চুপে ছিলাম। শেষ পর্যন্ত নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যে হিজরত মুবারক করলেন, পবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যে আগমন করে তিনি কুবায় বনূ আমর ইবনে আওফের মহল্লায় অবস্থান করেন। জনৈক ব্যক্তি এগিয়ে এসে উনার শুভ আগমনের বার্তা জানায়। এ সময় আমি খেজুর গাছের মাথায় কাজ করছিলাম।
وعمتي خالدة بنت الحارث تحتي جالسة، فلما سمعت الخبر بقدوم رسول الله صلى الله عليه وسلم كبرت، فقالت [ لي ] عمتي حين سمعت تكبيري: لو كنت سمعت بموسى بن عمران عليه السلام ما زدت، قال: قلت لها: أي عمة. والله هو أخو موسى بن عمران وعلى دينه بعث بما بعث به. قال فقالت له: يا ابن أخي أهو الذي كنا نخبر أنه يبعث مع نفس الساعة ؟ قال: قلت لها: نعم ! قالت فذاك إذا. قال فخرجت إلى رسول الله صلى الله عليه وسلم فأسلمت ثم رجعت إلى أهل بيتي فأمرتهم فأسلموا
আর আমার ফুফু হযরত খালিদা বিনতে হারিছ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি নীচে বসে ছিলেন। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমনের খবর শুনে আমি তাকবীর ধ্বনী দেই। আমার তাকবীর ধ্বনী শ্রবণ করে আমার ফুফু বললেন, আপনি হযরত মূসা ইবনে ইমরান আলাইহিস সালাম উনার আগমনের খবর শুনলে এর চাইতে উচ্চ আওয়াজে তাকবীর ধ্বনী দিতেন না। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন, আমি উনাকে বললাম, হে আমার ফুফু মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! তিনিতো হযরত মূসা কালিমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার মতো নবী ও রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং তিনি উনাদের মত দ্বীন ইসলাম নিয়ে প্রেরিত হয়েছেন। তিনি বললেন, হে ভ্রাতুস্পুত্র। তিনি কি সে ব্যক্তি যার সম্পর্কে আমরা জানতাম যে, কিয়ামতের পূর্বে উনার আগমন ঘটবে? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেন, তবে তিনিই সেই আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহু হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তিনি বললেন, আমি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট গেলাম, পবিত্র দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করলাম অতপর আমরা পরিবার পরিজনের নিকট ফিরে এসে তাদেরকে দাওয়াত দিলে উনারাও পবিত্র দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, মুসনাদে আহমদ, দালায়িলুল বাইহাক্বী, আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, সীরতে ইবনে হিশাম)

0 Comments: