১০০টি চমৎকার ঘটনা - পর্ব-৬ (বনের হরিণীও হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আজ্ঞাবহ)


বনের হরিণীও হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আজ্ঞাবহ- পর্ব-৬

একবার এক ইহুদী একটা হরিণীকে শিকারের পর গাছের সাথে আটকে রাখলো। সেই হরিণীর ছোট ছোট বাচ্চা ছিল। একে তো বন্দি হওয়ার দুর্বিষহ যন্ত্রণা, তদুপরি ছোট বাচ্চাদের মমতায় ওই হরিণী উদ্বেলিত হয়ে উঠছিল। ক্ষুধার্ত ছোট বাচ্চাদেরকে দুধ পান করাতে হবে। তাই সে মুক্তি চায়। কিন্তু মুক্তির উপায় কি? হরিণীর চোখে পানি। অঝোর ধারায় সে কাঁদছে। ওই পথ দিয়েই যাচ্ছিলেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তিনি তো সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত কিছুই জানেন । তবুও কায়িনাতবাসীর ইবরত-নছীহতের লক্ষ্যে হরিণীকে তিনি জিজ্ঞেস করলেন, 'কী হয়েছে তোমার?' হরিণীর বিনীত নিবেদন, ‘ইয়া রহমাতুল্লিল আলামীন, রউফুর রহীম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! এক ইহুদী আমাকে আটকে রেখেছে। আমার ছোট বাচ্চারা ক্ষুধার্ত। ওদেরকে দুধ পান করাতে হবে। দয়া করে যদি আপনি কিছু সময়ের জন্য আমার বাঁধন খুলে দিতেন, তাহলে বাচ্চাদেরকে দুধ পান করিয়েই আমি আবার এখানে চলে আসবো।'

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ওই হরিণীকে মুক্ত করে দেন। হরিণী অতি দ্রুত বাচ্চাদের কাছে গিয়ে বলে, *আজ এক মুবারক ঘটনার অবতারণা হয়েছে। এক ইহুদী আমাকে আটকে রেখেছিল। আমার খোশ নসীব। ইতোমধ্যে আমি রহমাতুল্লিল আলামীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক সাক্ষাৎ লাভ করি। তোমাদেরকে দুধ পান করানোর লক্ষ্যে সাময়িক মুক্তির জন্য আমি উনার ক্বদম মুবারকে সবিনয়ে প্রার্থনা জানাই। তিনি অল্প সময়ের জন্য আমাকে বন্দীদশা থেকে মুক্ত করে দিয়েছেন। তখন ইহুদী সেখানে উপস্থিত ছিল না। দ্রুত ফিরে যাবো বলে আমি উনাকে প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছি। প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে হবে। তোমরা অতিসত্বর দুধপান করে আমাকে যেতে দাও।' বাচ্চারা শুনে বলে, ‘মাগো! আমাদের দুধপান করার প্রয়োজন নেই। এতে বিলম্ব হবে। বিলম্ব হলে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সঙ্গে চরম বেয়াদবি হবে। আমরা দুধ পান করবো না। চলো আমরা একসঙ্গে এখনই উনার মুবারক খিদমতে গিয়ে হাযির হই।'

ইতোমধ্যে ইহুদীটি ঘটনাস্থলে ফিরে এসে দেখতে পায়, তার আটককৃত হরিণী যথাস্থানে নেই। সাইয়্যিদুল মুরসালীন ইমামুল মুরসালীন খতামুন নাবিয়্যীন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইহুদীকে বলেন, 'বাচ্চাকে দুধ পান করানোর জন্য হরিণীকে আমি অল্প সময়ের জন্য ছেড়ে দিয়েছি। সে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে, কিছুক্ষণের মধ্যেই ফিরে আসবে।' বিষয়টি ইহুদীর বিশ্বাস হয়নি। ক্ষুব্ধ ইহুদী মনে মনে ভাবে, ‘হরিণী কি মানুষ? সে কিভাবে প্রতিশ্রুতি দিবে? কিভাবে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবে? আর কেনই বা সে ফিরে আসবে?' আসলে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যে ওই হরিণীরও রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং হরিণী যে উনার একান্ত আজ্ঞাবহ, তা অজ্ঞ ইহুদী বুঝবে কি করে?

কিন্তু দেখা গেলো, ইহুদীর ক্ষোভ মিশ্রিত দুর্ভাবনা শেষ না হতেই হরিণী তার বাচ্চাসহ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক খিদমতে ফিরে আসলো! এ অভাবিত ঘটনা দেখে ইহুদী মুসলমান হয়ে গেলো। সুবহানাল্লাহ।




0 Comments: