ফরজ নামাযের পর মুনাজাত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া ( ৬ নং )


ফরজ নামাযের পর হাত উঠায়ে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)

গবেষণা কেন্দ : মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ

          সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীন উনার এবং অসংখ্য দুরূদ ও সালাম মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি। মহান আল্লাহ পাক উনার রহমতে গবেষণা কেন্দ্র মুহম্মদীয়া জামিয়া শরীফ উনার ফতওয়া বিভাগের তরফ থেকে মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকায় যথাক্রমে টুপি, অঙ্গুলী চুম্বনের বিধান, নিয়ত করে মাজার শরীফ জিয়ারত করা, ছবি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় হারাম হওয়ার ফতওয়া, জুমুয়ার নামায ফরজে আইন ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া, মহিলাদের মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া মাকরূহ্ তাহরীমী সম্পর্কে ফতওয়া, কদমবুছী ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া এবং তাহাজ্জুদ নামায জামায়াতে পড়া মাকরূহ্ তাহরীমী ও বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ্ এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া প্রকাশ করার পর নবম ফতওয়া হিসাবে ফরজ নামাযের পর মুনাজাত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া প্রকাশ করতে পারায় মহান আল্লাহ পাক উনার দরবারে অসংখ্য শুকরিয়া।
          আমাদের মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকায় ফরজ নামাযের পর হাত উঠায়ে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া গত পাঁচ সংখ্যা থেকে ধারাবাহিকভাবে ছাপা হচ্ছে। গত দুসংখ্যা হতে মুনাজাত সংশ্লিষ্ট প্রতিটি বিষয়ের অকাট্য দলীলসমূহ পেশ করা হচ্ছে।
ফরজ নামাযের পর হাত তুলে, সম্মিলিতভাবে, আওয়াজ করে,
মুনাজাত করার অকাট দলীল
          ফরজ নামাযের পর হাত উঠায়ে, সম্মিলিতভাবে, আওয়াজ করে, মুনাজাত করা জায়েয ও সুন্নত হওয়া সম্পর্কে পবিত্র তাফসীর শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ ও ফতওয়ার কিতাবসমূহে স্পষ্ট বর্ণিত রয়েছে এবং তা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া  সাল্লাম উনার **  ক্রিয়া দ্বারা সুন্নত প্রমাণিত হয়। যার স্বপ্ন সহীহ্, জঈফ, ক্বওলী, ফেলী সব ধরণের পবিত্র হাদীছ শরীফ বিদ্যমান রয়েছে।
          এখানে মূলতঃ চারটি বিষয়ে আলোচনা করা হবে- (১) ফরজ নামাযের পর মুনাজাত করা, (২) ফরজ নামাযের পর হাত উঠায়ে মুনাজাত করা, (৩) ফরজ নামাযের পর সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করা, (৪) ফরজ নামাযের পর আওয়াজ করে মুনাজাত করা।
নিম্নে বিশ্ববিখ্যাত তাফসীর শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ ও তার শরাহ এবং ফিক্বাহ্ ও ফতওয়ার কিতাবসমূহ হতে প্রতিটি বিষয়ের পৃথক পৃথক অকাট্য ও নির্ভরযোগ্য দলীলসমূহ পেশ করা হলো-
ফরজ নামাযের পর মুনাজাত করা
          ফরজ নামাযের পর মুনাজাত করা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খাছ সুন্নত মুবারক উনার অন্তর্ভূক্ত। শুতু তাই নায়, ফরজ নামাযের পর মুনাজাত করার জন্য বিশেষভাবে নির্দেষ মুবারক দেয়া হয়েছে এবং ফরজ নামাযের পর মুনাজাত কবূল হওয়ারও নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীন তিনি পবিত্র কালাম পাক উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক ফরমান,
فاذا فرغت فاتصب والى ربك فارغب. (سوره الم نشرح-৭)
          উপরোক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় বলা হয়-
 (১)
قال ابن عباس رضى الله عنه وقتاده رمقاتل وكلبى- فاذا فرغت من الصلوة المكتوبة فانصب الى ربك فى الدعاء وارغب اليه فى المسنلة يعطيك- عن مجاهد- فاذا صليت فا جتهذ فى الدعاء والمسئلة. (تفسير بغرى)
অর্থঃ- হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত ক্বাতাদা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত মাক্বাতিল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ও হযরত কাল্বী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন যে, উপরোক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার অর্থ হলো- ফরজ নামায শেষ করে, মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট আগ্রহভরে মুনাজাত কর, আর মনে দৃঢ় বিশ্বাস রাখ যে, মহান আল্লাহ পাক তোমার মনের আশা পূর্ণ করবেন। হযরত মুজাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, নামায শেষ করে মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট মুনাজাত বা সুওয়াল কর।(তাফসীরে বাগবী)
(২)    
قال قتادة والضحاك رمقاتل- اذا فرغت من الصلوة المكتوبة فا نصب اى اتعب للدعاء وارغب الى ربك. (تقسير نشايورى)
অর্থঃ- হযরত ক্বাতাদা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত জোহাক্ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ও হযরত মাক্বাতিল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনারা বলেন, উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার অর্থ হলো- যখন তুমি ফরজ নামায শেষ করবে, তখন আকুল প্রাণে মুনাজাত করবে এবং মহান আল্লাহ পাক উনার দিকে অধির আগ্রহে রুজু হবে।(তাফসীরে নিশাপুরী)
(৩)
اختلف اهل التاويل فى ذالك فقال بعضهم فاذا فرغت عن صلوا تك فا رغب الى ربك فى الدعا ء واسئله حاجتك. (تفسير جرير تبرى)
অর্থঃ- উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় তাফসীরকারকগণ মতভেদ করেছেন, কেউ কেউ বলেন, উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার অর্থ হলো- যখন তুমি নামায শেষ করবে, তখন তোমার অভাব, অভিযোগের জন্য মহান আল্লাহ্ পাক উনার নিকট মুনাজাত কর।(তাফসীরে জ্বরীর তাবারী)
(৪)
عن قتاده قوله تعالى فاذا فرغت فانصب والى ربك فارغب= اى امره اذافرغ من صلواته ان يبالغ فى دعائه. (تفسير جرير تبرى)
অর্থ:- হযরত ক্বাতাদা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, উল্লেখিত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক রাব্বুল ইজ্জত, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে আদেশ মুবারক করেন যে, যখন আপনি নামায শেষ করবেন, তখন মুনাজাতে মশগুল হউন।(তাফসীরে জ্বরীর তাবারী)
(৫)    
واخرج ابن جرير رغيره من طرق عن ابن عباس انه قال- اى اذا فرغت من الصلوة فا نصب فى الدعاء. (تفسبر روح المعانى ج ১৫ صفه ১৯৮)
অর্থঃ- হযরত ইবনে জ্বরীর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ও অন্যান্য রাবীগণ উনারা হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার হতে বর্ণনা করেন- হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার অর্থ: হলো- যখন তুমি নামায শেষ করবে, তখন মুনাজাতে মশগুল হবে।(তাফসীরে রুহুল মায়ানী ১৫তম জিঃ পৃষ্ঠা-১৯৮)
(৬)    
قال قتادة والضحاك فاذا فرغت من الصلوة فانصب فى الدعاء. (تفسمير روح البيان ১০ج صفه ৪৬৪.      
অর্থঃ- হযরত ক্বাতাদা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ও হযরত জোহহাক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনারা বলেন, (উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার অর্থ হলো-) যখন নামায শেষ করবে, তখন মুনাজাতে মশগুল হবে।(তাফসীরে রুহুল বয়ান, ১০ম জিঃ পৃঃ-৪৬৪)
(৭)
قال ابن عباس- اذافرغت من الصلوة المكتوبة فائصب الى ربك فى الدعاء وارغب اليه فى المسئلة. (تفسير الخازن ج صفه ৩৯০)
অর্থঃ- হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, (উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যা হলো- যখন ফরজ নামায শেষ করবে, তখন উক্ত ফরজ নামাযের পর মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট সুওয়াল করবে।(তাফসীরে খাযেন, ৪র্থ জিঃ পৃষ্ঠা-৩৯০)
(৮-৯)
فاذا فرغت من الصلوة فا نصب اى اتعب الى الدعاء. تغسير جلالين وكذا فى تفسير البيضاوى)
অর্থঃ- নামায শেষ করে, মুনাজাতের প্রতি রুজু হবে।(তাফসীরে জ্বালালাইন, অনুরূপ তাফসীরে বায়জাবীতে উল্লেখ রয়েছে)
          এছাড়াও তাফসীরে কবীরী, আবূসৌদ, মুয়াল্লিমুত্তান্যীল, ইবনে কাছীর ইত্যাদি কিতাবসমূহে অনুরূপ উল্লেখ রয়েছে।
          উপরোল্লিখিত আলোচনা দ্বারা এটা স্পষ্ট প্রতিয়মান হয় যে, হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম  রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ উনাদের মধ্যে অন্যতম, সুপ্রসিদ্ধ মহীমাম্বিত, চরিত্র অভিধানের পুত পবিত্রচরি যিনি কুরআন শরীফের মর্মোদ্ধারে অসাধারণ প্রতিভার অধিকারী, যাঁর জন্য স্বয়ং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ফিক্বাহ্ ও হিক্বমত শাস্ত্রে বুৎপত্তি লাভের দোয়া করেছেন। যিনি স্বয়ং হযরত জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম উনাকে দেখার সৌভাগ্য অর্জন করেছেন এবং যাঁকে লক্বব (উপাধী) দেয়া হয়েছে- রঈসুল মুফাসসিরীন (মুফাসসিরিনগণ  উনাদের সর্দার) সেই হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু স্বয়ং এবং হযরত ক্বাতাদা রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত মাকাতিল রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত জোহাক কালবী রহমতুল্লাহি আলাইহী উনারা তাবেঈনগণ উনাদের অন্যতম। উনাদের ব্যাখ্যায় উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ দ্বারা ফরজ নামাযের পর মুনাজাত করা স্পষ্ট প্রমাণিত হয়।
(১০)   
اخرج عبد الرزاق عن النبى صلى الله عليه وسلم اى الدعاء اسمع اى اقرب الى الاجابة؟ قال شطر الليل الاخير وادبار المكتوبة. (مصنف عبداالرزاق)
অর্থঃ- হযরত আব্দুর রাজ্জাক রহমতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে প্রশ্ন করা হলো- কোন দোয়া অধিক কবূলযোগ্য নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, শেষ রাত্রের দোয়া এবং ফরজ নামাযের পরের দোয়া।(মুছান্নেফ আব্দুর রাজ্জাক)
(১১)
ذكر الامام المحدث ابو الربيغ عن النبى صلى الله عليه وسلم انه قال- من كانت له الى الله حاجة فليسألها دبر صلوة مكتوبة. (مصباح الظلام)
অর্থঃ- ইমামুল মুহাদ্দিস, হযরত আবূ রবী রহমতুল্লাহি আলাইহি উল্লেখ করেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন- যে ব্যক্তির মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট কিছু চাওয়ার প্রয়োজন রয়েছে, সে যেন তা ফরজ নামাযের পর চায়। ”(অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট হতে কিছু পেতে হলে, সে যেন ফরজ নামাযের পর মুনাজাত করে)। (মিছবাহুয্ যলাম)
(১২-১৩)        
عن ابى امامة رضى الله عنه قال قيل يا رسول الله اى الدعاء اسمع قال- حوف لليل الاخر ودبر الصلوات المكتويات. (ترمذى شريف، فتح البارى)
অর্থঃ- হযরত আবূ উমামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার হতে বর্ণিত, প্রশ্ন করা হলো- ইয়া রসূলাল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! কোন্ দোয়া বা মুনাজাত অধিক কবূলযোগ্য? নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, শেষ রাত্রের দোয়া এবং ফরজ নামাযসমূহের পরের দোয়া।(তিরমিযী শরীফ, ফাতহুল বারী)
(১৪-১৬)
اخرج الطبرانى من رراية جعفربن محسد الصادق قال- الدعاء تعد المكتوبة افضل من الدعاء بعد النافله كفضل المكتوبة على النافلة. (المواهب للقسطلانى، فتح المللهم، سعاية)
অর্থঃ- হযরত ইমাম তিবরানী হযরত জাফর ইবনে মুহম্মদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণনা করেন, নফল নামাযের পর মুনাজাত করা হতে, ফরজ নামাযের পর মুনাজাত করা বেশী ফযীলতপূর্ণ। যেমন- নফল নামাযের উপর ফরজ নামাযের ফযীলত।(আল মাওয়াহিবু লিল কুস্তলানী, ফতহুল মুলহিম, সায়াইয়াহ্)
(১৭)
عن ابى امامة رضى الله عنه قال مادنوت من رسول الله صلى الله عليه وسلم فى دبرضلوة مكتوبة ولا تطوع الا سمعته يقول اللهم اغفرلى ذنوبى وخطاياى كلها. (عمل اليوم واليل لابن السنى)
অর্থঃ- হযরত আবূ উমামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, আমি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে নামায আদায় করেছি এবং শুনেছি, তিনি ফরজ ও নফল নামাযের পর বলেছেন- আল্লাহুম্মাগ্ফিরলী ......।(আমালুল ইয়াত্তম ওয়াল লাইল)
(১৮-২১)
 عن معاذ بن جبل رضى الله تعالى عنه قال- ان رسول الله صلى الله عليه وسلم اخذ بيدى يوما ثم قال يا معاده والله انى لا حبك- فقال معاذ بابى انت وامى يا رسول الله صلى الله عليه وسلم وانا والله احبك- فقال او صيك يا معاذ لا تدعن فى دبر كل صلوة- ان تقول ....... اعنى على ذكرك وشكرك الخ- (ابودود شريف، نساى شريف مستدرك حاكم، ابن حبان)
অর্থঃ- হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একদিন আমার হাত ধরে বলেন, হে মুয়াজ! মহান আল্লাহ পাক উনার কসম, আমি তোমাকে মুহব্বত করি। হযরত মুয়াজ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনার জন্যে আমার পিতা-মাতা কুরবান হোক।  মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! আমিও আপনাকে মুহব্বত করি। তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, হে মুয়াজ! আমি তোমাকে উপদেশ দিচ্ছি- তুমি প্রত্যেক নামাযের পর কখনো এই দোয়া পড়া ছেড়ে দিওনা। দোয়াটি হলো- আল্লাহুম্মা আঈনী আলা যিক্রিকা ওয়া শুক্রিক্ ...। (আবূ দাউদ শরীফ, নাসাঈ শরীফ, মুস্তাদ্রেকে হাকিম, ইবনে হাব্বান)
(২২-২৫)
عن المغيرة ابن شعبة رضى الله عنه قال- ان رسول الله صلى الله عليه وسلم كان اذافرغ من الصلوة- قال لا اله الا الله وحده ..... الخ وفى التخارى انه صلى الله عليه وسلم كان يقول هذه الكلمات دبر كل صلوة وفى كتاب الصلوت فى دبر كل صلوة مكتوبة. (بخارى شريف، مسلم شريف، ابودود شريف، نساى شريف)
অর্থঃ- হযরত মুগীরা ইবনে শোবা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামায শেষ করে বলতেন, লাইলাহা ইল্লাল্লা ওয়াহদা ”........। বুখারী শরীফ উনার বর্ণিত রয়েছে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এ দোয়া পড়তেন প্রত্যেক নামাযের পর, আর কিতাবুস সালাত এ রয়েছে, প্রত্যেক ফরজ নামাযের পর।(বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, আবূ দাউদ শরীফ, নাসাই শরীফ)
(২৬)   
اخرج ابوبكر بن ابيض ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال من صلى فريضة فله دعوة مستجابة. (سهام الاصابه لجلال الدين السيوطى)
অর্থঃ- হযরত আবূ বকর ইবনে আব্ইয়াদ  রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন- নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি ফরজ নামায আদায় করলো, তার একটি দোয়া অবশ্যই কবুলযোগ্য।(সিহামুল ইছাবাহ্ লিজালালুদ্দীন সুয়ূতী)
(২৭)
عن ابى موسى قال- قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من كانت له الى الله حاجة فليدع بها دبر صلوة مفروضة.
অর্থঃ- হযরত আবূ মূসা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন- নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, যে ব্যক্তির মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট কোন বিষয় চাওয়ার প্রয়োজন হয়, সে যেন ফরজ নামাযের পর তার জন্য মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট দোয়া করে।(তরজমাতুল হুজ্জাজ লিইবনে আসাকির)
(২৮)  
استحباب الذكر عقيب الصلوة لا نها او قات فاصلة ير تحبى فيها اجابة الدعاء. (عمدة القارى شرح بخارى)
অর্থঃ- নামাযের পর যিকির অর্থাৎ তাসবীহ্-তাহ্লীল পাঠ করা মুস্তাহাব। কেননা উহা উত্তম সময়ের অন্তর্ভূক্ত। আর তাই ফরয নামাযের পর মুনাজাত কবূল হওয়ার নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে।(উমদাতুল ক্বারী শরহে বুখারী)
(২৯)
واستدل البخارى بمشروعية الذكر بعد الصلوة على مشروعية الدعاء بعدها. (فتح اللهم شرح المسلم)
অর্থঃ- হযরত ইমাম বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি শরীয়ত মতে নামাযের পর মুনাজাতের বিধান রয়েছে, এ কথার প্রমাণ পেশ করেছেন নামাযের যিকিরের বিধান থাকার ভিত্তিতে।(ফতহুল মুলহিম শরহে মুসলিম)
(৩০)
وقال الحافظ- وما ادعاه من النفى مطلقا مردردرد- فقد ثبت عن معاذ بن جبل ان النبى صلى الله عليه وسلم قال له يا معاذ انى والله احبك .......... وحديث ابى بكرة فى قول اللهم انى اعوذبك ..... كان النبى صلى الله عليه وسلم يدعو بهن دبركل صلوة. (فتح اللهم شرح صحيح مسلم)
অর্থঃ- হাফিজুল হাদীছ, হযরত ইবনে হাজর আসকালানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, ফরজ নামাযের পর দোয়া করা যাবেনা বলে যে দাবী করা হয়েছে, তা গ্রহণযোগ্য নয়। কেননা হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার হতে বর্ণিত রয়েছে যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন- হে মুয়াজ! মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! আমি আপনাকে ভালবাসি ...... তুমি প্রত্যেক ফরজ নামাযের পর এ দোয়া করতে ছাড়বেনা। হযরত আবূ বাকরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত আছে- নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি প্রত্যেক নামাযের পর এ দোয়া করতেন। আল্লাহুম্মা ইনি আউযূবিকা .......। (ফতহুল মুলহিম শরহে সহীহ্ মুসলিম)
(৩১)
ان الصلوة جعلت فى خير الساعات فعليكم بالدعاء خلف الصلوة. (احياء علوم الدين)
অর্থঃ- নিশ্চয়ই নামাযকে উত্তম সময়ে নির্ধারিত করা হয়েছে। সুতরাং তোমাদের নামাযের পর মুনাজাত করা কর্তব্য। (ইহইয়াউ উলুমুদ্দীন)
(৩২-৩৩)
فاذا فرغت من الصلوة فا رغب للدعاء الى الله تعالى فانه اقرب الى الاجابة. (المبسوط للسر خسى وكذا فى التحفة المرغوبة)
অর্থঃ- যখন (ফরজ) নামায শেষ করবে, তখন মহান আল্লাহ পাক উনার দরবারে মুনাজাত করবে, কেননা ফরজ নামাযের পর মুনাহাত কবূল হওয়া অধিক নিকটবর্তী। (মাব্ছূত লিস্ সারাখসী, অনুরূপ তোহ্ফাতুল মারগুবা কিতাবেও বর্ণিত আছে)
(৩৪-৩৫)
اور دعاء مین سنت یہ ھے کہ نماز سے پیچ ھون- اور ابو امامۃ سے روایت ھے کہ حضرت صلی اللہ علیہ وسلم سے کھا کہ کون دعا زیادہ مقبول ھے فرمایا کہ اخیر رات کا درمیان اور نماز فریضہ کا پیچھا- اور مغیرہ ابن شعبہ نے کھا کہ حضرت صلی اللہ علیہ وسلم ھر  نماز کے پیچھے دعا کرتے تھے رواہ البخاری فی تاریخ الاوسط= (عین الھدایۃ ج 1 صفہ 680)
অর্থঃ- এবং নামাযের পরে মুনাজাত করাই পবিত্র সুন্নত উনার অন্তর্ভূক্ত। হযরত আবূ উমামাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন- নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে প্রশ্ন করা হলো- কোন্ দোয়া অধিক কবূলযোগ্যতিনি উত্তর দিলেন, শেষ রাত্রের মধ্যখানে এবং ফরজ নামাযের পরে মুনাজাত কবূল হয়। আর হযরত মুগীরা ইবনে শোবা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি প্রত্যেক নামাযের পর মুনাজাত করতেন। হযরত ইমাম বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এটা  তারীখুল আওসাত্ব কিতাবে বর্ণনা করেন।(আইনুল হেদায়া ১ম জিঃ পৃঃ ৬৮০)
(৩৬)
ھر فریضہ نماز کے بعد دعا کرنے کا حکم ایا ھے کہ وہ محل قبولیت ھے-
(عین الھدایۃ ج 1 صفہ 684)
অর্থঃ- প্রত্যেক ফরজ নামাযের পর মুনাজাত করার আদেশ মুবারক রয়েছে, কেননা ফরজ নামাযের পর মুনাজাত কবূল হওয়ার স্থান। (অর্থাৎ উহার পর মুনাজাত কবূল হয়।। (আইনুল হেদায়া ১ম জিঃ পৃঃ ৬৮৪)
(৩৭-৩৮)       
ان الدعاء تعد الصلوة المكتوبة مسنون. (منهج العمال والعقائد السنية ةكذا فى التحفة المرغوبة)
অর্থঃ- নিশ্চয়ই ফরজ নামাযের পর মুনাজাত করা সুন্নত।(মিনহাজুল উম্মাল ও আকায়িদুস সুন্নিয়া, অনুরূপ তোহফাতুল মারগুবাতে উল্লেখ আছে)
(৩৯-৪০)
قد اجمع العلماء على استحباب الذكر والدعاء بعد الصلوت وجاءت فيه احاديث كشيرة= تهل يب الاذكار للر ملى- كذا فى التحفة المر غوبة.
অর্থঃ- আলেমগণ একমত যে, নামাযের পর যিকির ও মুনাজাত করা মুস্তাহাব। এ ব্যাপারে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে।(তাহ্যীবুল আয্কার র্লিরমলী, অনুরূপ তোহ্ফাতুল মারগুবাতেও উল্লেখ আছে)
(৪১-৪৩)
(يدعو) بعد المكتوبة اى قبل السنة (مفاتيح الجنان- كذا فى التحفة المرغوبة والسعاية)
অর্থঃ- ফরজ নামাযের পর, সুন্নতের পূর্বে সকলে মুনাজাত করবে।(মাফাতিহুল জিনান, অনুরূপ তোহ্ফাতুল মারগুবাহ্ ও সায়াইয়াহ্ কিতাবেও বর্ণিত আছে)
(৪৪-৪৫)
وفى شرغة الاسلام- وبغتنم اى الصلى الدعاء بعد المكتوبة كذا فى التحفة المرغوبة.
অর্থঃ- শরয়াতুল ইসলাম কিতাবে বর্ণিত রয়েছে- মুসল্লীগণ ফরজ নামাযের পর মুনাজাত করাকে গণীমত মনে করবে।অনুরূপ তোহফাতুল মারগুবাহতেও উল্লেখ আছে।
(৪৬)
عن البستى- انه قال فى تفسير قوله تعالى فاذ اقضيتم الصلوة فاذكروالله... اى اذ كروالله تعالى واد عوا تعد الفراغ من الصلوة. (..صوفيه)
অর্থঃ- হযরত বুস্তী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র কুরআন শরীফ উনার পবিত্র আয়াত শরীফ
فاذا قضيتم الصلوة فاذكروا الله
 -এর তাফসীরে বলেন, অর্থাৎ তোমরা নামায শেষ করে মহান আল্লাহ পাক উনার যিকির কর এবং উনার নিকট মুনাজাত কর। (ফতওয়ায়ে সূফীয়াহ্)
(৪৭-৪৯)
وان منها الدعاء اثر الصلوة- وانكر الامام ابن عر فة وجود الخلاف فى ذالك وقال لا اعرف فبه كراهة دعاء الامام عقب الصلوة وتأ مين الحاضرين على دعائه. (الاكمال لعبد الحق محدث دهلوى، استحباب الدعواث، امداد النتاوى)
অর্থঃ- এবং নিশ্চয়ই নামাযের পরক্ষণ মুনাজাত কবূলের উত্তম স্থান। ইমাম ইবনে আরফা এ বিষয়ে কোন মতানৈক আছে বলে মনে করেন না। তিনি আরো বলেন- নামাযের পর ইমাম সাহেবের মুনাজাত ও উহার উপর উপস্থিতগণ উনার আ-মীন বলার মধ্যে কোন মাকরূহ্ আছে বলে আমি মনে করিনা।(আল ইক্মাল লি আব্দিল হক মুহাদ্দিস দেহ্লভী, ইস্তেহবাবুদ্ দাওয়াত, ইমদাদুল ফতওয়া)
(৫০-৫১)
ان رجلا صاد ظبية فقالت يا رسول الله صلى الله عليه وسلم ارسالى حتى ارضح اولادى اعود اليه وان لم اعد اليه اكن كمن صلى ولم يدع واشر ممن ذكرت عنده ولم يصلى عليك. (نزهة المجالس لعبد الحق محدث دهلوى، وكذا فى الاعتصام بالصلوة على النبى)
অর্থঃ- এক ব্যক্তি একটি হরিনী শিকার করে, (নিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তায় নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সাক্ষাত হলে) হরিনী বললো- ইয়া রাসূলাল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! এই শিকারীকে বলুন, আমাকে ছেড়ে দেয়ার জন্য যেন আমি আমার বাচ্চাদেরকে দুধ পান করায়ে ফিরে আসতে পারি। যদি আমি ফিরে না আসি, তবে আমি ঐ (হতভাগ্য ব্যক্তির ন্যায় হবো, যে ব্যক্তি নামায পড়লো অথচ মুনাজাত করলো না। অথবা সেই নরাধমের ন্যায় হবো, যার সম্মুখে আপনার নাম  মুবারক উচ্চারিত হয় অথচ সে আপনার প্রতি সালাত (দুরূদ) পড়েনা।(নুজহাতুল মাযালিস শায়খ আঃ হক মুহাদ্দিস দেহলভী, আল ইতেছামে বিস সলাত আলান নবী)
(৫২-৫৩)
اذا انصرف العبد من الصلوة ولم يحضر الدعاء تقول الملئكة انظر واالى هذا العبد استغنى عن الله. (غنية الطالبين لشيخ عبدا القادر جيلانى وهكذا فى ئز هة المجالس)
অর্থঃ- কোন বান্দা যখন নামায শেষ করে মুনাজাতে উপস্থিত না থেকে চলে যায়, তখন ফেরেশতাগণ উনারা তাকে লক্ষ্য করে বলতে থাকেন- এ বান্দার প্রতি লক্ষ্য কর, সে মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত বা নিয়ামত থেকে অমুখাপেক্ষী (বেপরোয়া) হয়ে গেল। (গুনিয়াতুত্ তালেবীন লি শায়খ আব্দুল কাদের জ্বিলানী, অনুরূপ নুযহাতুল মাযালিসেও উল্লেখ আছে)
(৫৪)
سوال:- فرضون کے بعد دعاء مانگنا جئزھین؟
جواب:- دعاء مانگنا تمام فرضون اور نمازون کے بعد جائز و مستحب ھے-
(فتاوے دیوبند ج6 صفہ 210)
অর্থঃ-সুওয়াল- ফরজ নামাযের পর মুনাজাত করা জায়েয আছে কি
জাওয়াব- সকল ফরজ নামায ও অন্যান নামাযের পর মুনাজাত করা জায়েয ও মুস্তাহাব।(ফতওয়ায়ে দেওবন্দ ২য় জিঃ পৃঃ ২১০)
(৫৫)
سوال:- بعد نماز سنت و  نفل بھی دعا ھاتھ اطھا کر مانگنا چاھئے یا صرف بعد فرض ھی دعا ضروری ھے؟
جواب:- فرض نمازون کے بعد دعا مانگنا  اکد ھے کنوبکہ حدیثون مین اسکی ترتیب زیادہ ھے-  بفی سنن و نوافل کے بعد دعا مانگنا ضروری نھین اگر مانگ لیاکرے تو اچھا ھے-
(امداد الاحکام ج 1 صفہ 226)
অর্থঃ- সুওয়াল- সুন্নত ও নফল নামাযের পরও কি হাত উঠায়ে মুনাজাত করতে হবে, না শুধু ফরজ নামাযের পর মুনাজাত করাই জরুরী
জাওয়াব- ফরজ নামাযসমূহের পর মুনাজাত করাই অধিক তাকীদপূর্ণ। কেননা ফরজ নামাযের পর মুনাজাত করার জন্যই পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাকে বেশী উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে। সুন্নত ও নফলের পর মুনাজাত করা অত্যাবশ্যকীয় নয়, যদি মুনাজাত করে, তবে উত্তম হবে। (ইমদাদুল আহকাম ১ম জিঃ পৃঃ-২২৬)
ان حضرت صلی اللہ علیہ وسلم سے پوچھا گیا کہ کونسی دعا مقبول ھوتی؟ اپ نے فرمایا رات کے اخری حصہ کی اور فرض نماز کے بعد کی دعا- دوسری حدیث مین ھے کہ انحضرت صلی اللہ علیہ وسلم نے حضرت معاذ بن جبل رضی اللہ تعالی عنہ سے فرمایا کہ تم کسی بھی  نماز کے بعد اس دعا کونہ چورنا ..... کتاب دلیل الطالب علی ارجح المطلوب" مین یہ دو حدیثین بیان فرمائے کے بعد لکھا ھے- و این ھردو حدیث دلالت دارد بر ان کہ دعا بعد فریضہ می یابد، یعنی یہ دو حدیث نمز فرض کے بعد دعا مسنون ھونے پر دلالت کرتی ھے-
(فتاوے رحیمیہ ج1 صفہ 20)
অর্থঃ- নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে জিজ্ঞাসা করা হলো- কোন্ দোয়া কবূলযোগ্য তিনি বলেন- শেষ রাত্রের দোয়া এবং ফরজ নামাযের পরের দোয়া। অন্য পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ আছে- নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল  রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে বললেন যে, আপনি কোন নামাযের পরেই এ দোয়া করতে ছেড়ে দিবেননা ..........। দলীলত্ তালিব্ আলা আরজিহিল মাত্লূব কিতাবে উপরোক্ত দুটি পবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করে লিখেন যে, এ পবিত্র হাদীছ শরীফদ্বয় এটাই প্রমাণ করে যে, ফরজ নামাযের পর মুনাজাত করা উচিৎ। অর্থাৎ এ পবিত্র হাদীছ শরীফদ্বয় ফরজ নামাযের পর মুনাজাত সুন্নত হওয়ারই প্রমাণ বহন করে। (ফতওয়ায়ে রহীমিয়া ১ম জিঃ পৃঃ-২০৪)
(৫৭)
فرائض کے بعد دعا حضور صلی اللہ علیہ وسلم سے ثابت ھے- اور فقہ مین اسکا جواز مصرح- فقط فرق یہ ھے کہ جن فرائض کے بعد سنتین ھین انکے بعد دعائے طویل نہ چاھئے- (احسن الفتاوی ج 1 صفہ  346)
অর্থঃ- ফরজ নামাযের পর মুনাজাত করা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হতে প্রমাণিত আছে। তবে পার্থক্য এতটুকুই যে, যে সকল ফরজ নামাযের পর সুন্নত নামায রয়েছে, উহার পর মুনাজাত দীর্ঘ করা যাবেনা। (আহ্সানুল ফতওয়া ১ম জিঃ পৃঃ-৩৪৬)
(৫৮)  
فرض نمازون کے بعد دعا مقبول ھوتی ھے اس وقت دعا کرنا حدیث و فقہ سے ثابت ھے- (فتاوے محمودیہ ج 2 صفہ 50)
অর্থঃ- ফরজ নামাযের পর মুনাজাত কবূল হয়, ফরজ নামাযের পর মুনাজাত করা পবিত্র হাদীছ শরীফ ও পবিত্র ফিক্বা উনার কিতাব দ্বারা প্রমাণিত রয়েছে। (ফতওয়ায়ে মাহমুদিয়া ২য় জিঃ পৃঃ-৫০)
(৫৯)
فتحصل من هذا كله ان الدعاء دبر الصلوة مسنون ومشروغ فى المذاهب الاربعة لم ينكره الا نا هق خجنون قد ضل فى سبيل هواه روسوس له الشيطان واغواه. (استحبات الدعوات عقيب الصلوات)
অর্থঃ- উপরোক্ত দলীলভিত্তিক আলোচনা দ্বারা এটাই সাব্যস্ত হয় যে, চার মাযহাবের প্রত্যেকের মতানুসারে (ফরজ) নামাযের পর মুনাজাত করা অবশ্যই সুন্নত ও শরীয়তসম্মত। যে ব্যক্তি এটা অস্বীকার করবে, সে নিশ্চিত মতিভ্রম ও নফসের তাড়নায় পথভ্রষ্ট হয়েছে এবং সে শয়তানী ওয়াস্ওয়াসা ও ধোকায় পড়েছে। (ইস্তেহবাবুদ্ দাওয়াত আক্বিবুছ ছালাওয়াত)
(৬০)
احادیث و فقہ سے اس امر کی شھادت ملتی ھے کہ فرائض کے بعد دعا مانگنے کا طریقہ نہ صرف جائز بلکہ افضل ھے (کفایۃ المفتی ج3 صفہ 291)
অর্থঃ- পবিত্র হাদীছ শরীফ ও পবিত্র ফিক্বাহ শরীফ উনাদের আলোচনা দ্বারা একথাই প্রমাণিত হয় যে, সকল ফরজ নামাযের পরে মুনাজাত করার পদ্ধতি জায়েযই নয় বরং সর্বোত্তম। (কিফায়াতুল মুফতী ৩য় জিঃ পৃঃ-২৯১)
(৬১)
الحاصل ان تمام روایات سے یہ بات نھایت صراحت کے ساتھ ثابت ھوگئی کہ فرائض کے بعد دعا مانگنا انحضرت صلی اللہ علیہ وسلم کاطریقہ اور اپ کی سنت ھے اور اسکی مقبولیت کی امید بھی زیادہ ھے- (کفایۃ المفتی ج 1 صفہ 295)
অর্থঃ- মোটকথা হলো- (এ কিতাবে উল্লেখিত) সকল বর্ণনা দ্বারা এটা স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে, ফরজ নামাযসমূহের পরে মুনাজাত করা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পত্রি তরীক্বা ও পবিত্র সুন্নাত উনার অন্তর্ভূক্ত এবং ফরজ নামাযের পরে মুনাজাত কবূল হওয়ারও অধিক নিশ্চয়তা রয়েছে। (কিফায়াতুল মুফতী ৩য় জিঃ পৃঃ-২৯৫)
(৬২)
احادیث صحیحہ اور روایات فقھیہ سے نھایت و اضح طور پر یہ بات ثابت ھوگئی ھے کہ فرائض کے بعد سنتون سے پھلے دعا مانگنا اور ادعیہ ماثورہ کی مقدار تک دعائین پرھنا اور ذکر کرنا بلا کراھت جائز ھے بلکہ اس وقت دعا مانگنا افضل ھے اور اس دعا مین مقبولیت کی زیادہ امید ھے- (کفایۃ الفتی ج 3 صفہ 307)
অর্থঃ- সহীহ হাদীছ শরীফ ও ফিক্বাহের বর্ণনাসমূহ দ্বারা একথা অত্যান্ত সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে, ফরজ নামাযের পর সুন্নত নামাযের পূর্বে মুনাজাত করা এবং দোয়ায়ে মাসূরার সমপরিমাণ দোয়া-দুরূদ পাঠ ও যিকির-আযকার করা, বিনা মাকরূহে জায়েয বরং ফরজ নামাযের পর মুনাজাত করা সর্বোত্তম এবং ঐ সময় মুনাজাত কবূল হওয়ার অধিক নিশ্চয়তা রয়েছে। (কিফায়াতুল মুফতী ৩য় জিঃ পৃঃ ৩০৭)
৬৩-৬৪)
خوب سھجھ لیجئے کہ مذاھب اربعہ (یعنی حنفیہ- شافعیہ- مالکیہ- حنابلہ) مین اس بارہ مین کوئی اختلاف نھین کہ نماز  کے بعد اھستہ دعا مانگنا امام اور منفرد کیئے مستحب  ھے- (استحباب الدعوات عقیب الصلوات ج 3 صفہ 802)
অর্থঃ- অত্যন্তভালরূপে জেনে রাখুন যে, চারি মাযহাব অর্থাৎ হানাফী, শাফিয়ী, মালিকী ও হাম্বলী মায্হাবের মধ্যে (ফরজ) নামাযের পর ইমাম সাহেব ও মুক্তাদীগণ উনাদের জন্য আওয়াজে মুনাজাত করা মুস্তাহাব হওয়ার ব্যাপারে কোন প্রকার ইখতিলাফ বা মতবিরোধ নেই। (এস্তহ্বাবুদ দাওয়াত আক্বীবছ ছলাওয়াত ৩য় জিঃ পৃঃ ৮০২, অনুরূপ ইমদাদুল ফতওয়াতেও উল্লেখ আছে)
          সুতরাং স্পষ্ট প্রমাণিত হয় যে, ফরজ নামাযের পর মুনাজাত করা শুধু জায়েযই নয় বরং খাছ সুন্নত উনার অন্তর্ভূক্ত।


ফরজ নামাযের পর
হাত উঠায়ে মুনাজাত করা
          ফরজ নামাযের পর উভয় হাত উঠায়ে মুনাজাত করাও সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র সুন্নত মুবারক। কেননা পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে তা স্পষ্ট বর্ণিত রয়েছে। নিম্নে তার দলীলসমূহ পেশ করা হলো-
(১)
عن انس بن مالك رضى الله عنه- ان النبى صلى الله عليه وسلم قال ما من عبد يبسط كفيه فى دبركل صلوة- يقول اللهم الهى.......الا كان حقا على الله ان لا ير ديديه خانبتين. (العمل اليوم وايل لا بن السنى)
অর্থঃ- হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, যখন কোন বান্দা প্রত্যেক নামাযের পর উভয় হাত উঠায়ে বলবে- আয় আল্লাহ পাক ..........। তখন মহান আল্লা পাক উনার দায়িত্ব হয়ে যায়, তাকে খালী হাতে না ফিরানো। (আল আমালুল লাইল ওয়াল ইয়াত্তম)
(২)              
حدننا محمد بن يحيى الاسلمى قال رأيت عبدا لله بن زبير رضى الله عنه وواى رجلا رافعا يديه يدعو قبل ان يفرغ من صلوته فلما فرغ منها قال له ان رسول الله صلى الله عليه وسلم لم يكن ير فغ يديه حتى يفرغ من صلوته- رجاه ثقات- (فض الوعاء للسيوطى)
অর্থঃ- মুহম্মদ ইবনে ইয়াহ্ইয়া আসলামী  রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার হতে বর্ণিত। তিনি বলেন- হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি কোন এক ব্যক্তিকে নামায শেষ না করেই হাত উঠায়ে মুনাজাত করতে দেখলেন, সে ব্যক্তি নামায শেষ করার পর তাকে বললেন, নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নামায শেষ করে উভয় হাত মুবারক উঠায়ে মুনাজাত করতেন। (ফাদ্দুল ওয়া লি জালালুদ্দীন সূয়ূতী)
(৩-৫)
عن الفضل بن عباس رضى الله عنه قال- قال رسول الله صلى الله عليه وسلم الصلوة مثنى مشنى تشهد فى كل ركعتين وتخثغ وتضرغ وتمكن ثم تقنع يديك يقول تر فعهما الى ربك ..... من لم يفعل ذالك فهى كذا وكذا= (رواه الترمذى، النساى، اعلاء السنن)
অর্থঃ- হযরত ফজল ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, নামায দুই দুই রাকায়াত করে, প্রত্যেক দুই রাকায়াতের মধ্যে তাশাহ্হুদ পড়বে এবং খুব খুযো, বিনয় ও সুকূনাতের সাথে নামায পড়বে। অতঃপর তোমার উভয় হাত মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট উঠায়ে বলবে, হে আমার রব- ......। আর যে ব্যক্তি এরূপ না করবে, তার নামায অপূর্ণ থাকবে। (তিরমিযী শরীফ, নাসাঈ  শরীফ, ইলাউস সুনান শরীফ)
(৬)
عن الاسود العامرى عن ابيه- قال صليت مع رسول الله صلى الله عليه وسلم الفجر فلما سلم انحرف ورفغ يديه ودعا. (مصف ابن ابى شيبه)
অর্থঃ- হযরত আস্ওয়াদ আমেরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার পিতা হতে বর্ণনা করেন। উনার পিতা বলেন, আমি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে ফজর নামায পড়লাম। যখন তিনি সালাম ফিরালেন, তখন উভয় হাত মুবারক উঠায়ে মুনাজাত করলেন।(মুসান্নেফ ইবনে আবী শায়বা)
(৭)
یہ بات مخفی نھین ھے کہ ائمہ حدیث نے ذکر فرمایا ھے کہ ایک ضعیف روایت کے ساتھ جب دوسری ضعیف روایت (اس کی موید) مل جاتی ھے و وہ ساقط و غیر معتبر ھونے کے درجہ سے ترقی کرکے درجہ اعتبار و اعتماد پر پھونچ جاتی ھے= (استحباب الدعوات عقیب الصلوات)
অর্থঃ- একথা স্পস্ট যে, মুহাদ্দিসীনে কিরামগণ বলেন- যখন কোন বিষয়ে একাধিক জঈফ বর্ণনা পাওয়া যায়, তখন সেটা গ্রহণযোগ্যতা ও নির্ভরযোগ্যতার স্তরে পৌঁছে যায়। (ইস্তেহ্বাবুদ দাওয়াত আক্বীবুচ্ছালাওয়াত)
          সুতরাং উপরোক্ত হাদীছ শরীফ হতে বুঝা যাচ্ছে যে, ফরজ নামাযের পর উভয় হাত উঠায়ে মুনাজাত করা, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আমল অর্থাৎ সুন্নত।
(৮)
ھاتھ اٹھاکر دعا کا جو حکم دیا گیا ھے یہ نماز کے بعد کیلےء ھے- کیونکہ نماز مین ھاتھ اٹھا کر دعا کرنا ثابت نھین- بعض غیر مقلد حضرت نماز کے بعد ھاتھ اٹھا کر دعا کرنے سے منع کرتے ھین- نجدیون نے اسکو بالکل چھور دیا ھے اور بدعت سمجھ کر بعض دوسرے علماء نے بھی بھی کیا ھے مگر یہ بات درست نھین کیونکہ اس حدیث سے بعد صلوۃ ھاتھ اٹھا کر دعا مانگنا ثابت ھوتی ھے- اسکے علاوہ اور احادیث بھی اسکی تائید مین موجود ھین) معارف مدنیہ شرح ترمذی ج 7 صفہ 23)
অর্থঃ- মুনাজাতে হাত উঠানোর যে আদেশ দেয়া হয়েছে, তা নামায শেষের (মুনাজাতের) জন্যই দেয়া হয়েছে। কেননা নামাযের মধ্যে হাত উঠায়ে মুনাজাত করা প্রমাণিত নেই। কোন কোন মায্হাব অস্বীকারকারী ব্যক্তিবগ নামাযের পর হাত উঠায়ে মুনাজাত করতে নিষেধ করে থাকে। নজদীরা (ওহাবীরা) এটাকে একেবারেই ছেড়ে দিয়েছে, আর কিছু কিছু আলেম এটাকে বিদয়াত মনে করে তাদের পন্থাই গ্রহণ করেছে। কিন্তু তাদের উক্ত বক্তব্য সঠিক নয়, কেননা উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারা নামাযের পর হাত উঠায়ে মুনাজাত করা স্পষ্ট প্রমাণিত হয়। এছাড়াও আরো বহু পবিত্র হাদীছ শরীফ এ ব্যাপারে মওজুদ রয়েছে। (মায়ারেফে মাদানিয়া শরহে তিরমিযী ৭ম জিঃ পৃঃ-২৩)
(৯-১৪)         

صاحب التعلیق نے منتخب سے نقل کیا کہ مطلقا دعا کے اندر رفع الیدیں احادیث متراتر سے ثابت ھے- لیکن رفع الیدین فی الدعاء بعد الصلوۃ المکتوبۃ کے صاحب المنتخب  نے کھا کہ ایک صحیح حدیث ھے اور انس رضی اللہ عنہ سے مرفوعا منقول ھے-  "ما من عبد مؤمن یبسط کفیہ فی دبر کل صلوۃ- ثم یقول اللہم الھی .... الا کان حقا علی اللہ ان لا یرد یدیہ خائبتین- رواہ ابن السنی و الدیلمی و ابن  الجعفر کما فی التعلیق الصبیح ج 3 صفہ 53- و اشعۃ اللمعات ج2 صفہ 176= تنظیم الاشتات ج3 صفہ 145-                                     
অর্থঃ- ছাহিবুত তালীক মুস্তাখাব’ হতে বর্ণনা করেন যে, সাধারণভাবে সকল দোয়াতে হাত উঠানো সহীহ্ হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত রয়েছে। কিন্তু ছাহিবুল মুন্তাখাব বলেন যে, ফরজ নামাযের পর হাত উঠায়ে মুনাজাত করা প্রসঙ্গে একটি ছহীহ হাদীছ শরীফ বর্ণিত রয়েছে, সেটাই হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত হয়েছে- যে মুমিন বান্দা প্রত্যেক ফরজ নামাযের পর নিজের উভয় হাত উঠায়ে বলবে, আয় আল্লাহ পাক .....। তখন তাকে খালি হাতে না ফিরানো মহান আল্লাহ পাক উনার দায়িত্ব ও কর্তব্য হয়ে যায়। এটা ইবনুস্ সান্নী, দায়লমী ও জুফার বর্ণনা করেন। অনুরূপ তালীকুস্ সবীহ্, আশয়াতুল লুময়াতে উল্লেখ আছে। (তানযীমুল আশতাত ৩য় জিঃ পৃঃ-১৪৫)
(১৫-১৮)                 
ثم بعد الفراغ عن الصلوة يدعو الامام لنفسه وللمسلمين رافعى ايديهم حذو مالعدور وبطونها لمايلى الوجه نو رالا يضاح. (امداد الفتاح، ةكذا فى فحفة المر غوبة، والسعايه)
অর্থঃ- অতঃপর নামায শেষ করে ইমাম ছাহেব নিজের জন্যে ও সকল মুসলমানের জন্য উভয় হাত সিনা পর্যন্ত উঠায়ে মুনাজাত করবে। (নূরুল ইজাহ্, ইমদাদুল ফাত্তাহ্, অনুরূপ তোহফাতুল মুরগুবা ও সায়াইয়াহ্ কিতাবেও উল্লেখ আছে।)
(১৯-২১)        
ان الدعاء بعد الصلوة المكتوبة مسنون وكذا رفغ البدين ومسح الوجه بعد الفراغ (منهج العمال والعقائد السنيه، وكذافى تحفة الموغوبة، كفاية المفتى ج صفه ২৯৭)
অর্থঃ- নিশ্চয়ই ফরজ নামাযের পর মুনাজাত করা সুন্নত। অনুরূপ মুনাজাতে উভয় হাত উঠানো ও মুনাজাত শেষে উভয় হাত দ্বারা মুখ মোসেহ্ করাও সুন্নত। (মিনহাজুল উম্মাল ওয়াল আক্বাইদুস সুন্নীয়া, অনুরূপ তোহ্ফাতুল মারগুবা ও কেফায়াতুল মুফতীতে উল্লেখ আছে।
(২২)
دعاء بعد الفرائض مین رفع یدین بھی ثابت ھے- اگرچہ اس سے متعلق بعض روایات مین ضعف ھے مگر فضائل مین عمل بالضعیف بھی جائز ھے- (احسن الفتاوی ج 3 صفہ 66)
অর্থঃ- ফরজ নামাযের পর হাত উঠায়ে মুনাজাত করাও প্রমাণিত রয়েছে। যদিও এ সম্পর্কে কোনটি জঈফ। কিন্তু ফযীলত অর্জনের লক্ষ্যে জঈফ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার উপরও আমল করা জায়েয। (আহসানুল ফতওয়া ৩য় জিঃ পৃঃ ৬৬)
২৩)
فرضون کے بعد ھتھ اٹھا کر دعا کرنا اور بعد دعاکے منہ پر ھاتھ پھیرنا احادیث صحیحہ سے ثابت ھے- منکر اسکا جاھل اور بے خبر ھے سنت سے اور تارک سنت ھو کر مورد ملامت و طعن ھے ترمذی شریف مین مروی ھے- عن ابی امامۃ- قال- قیل یا رسول اللہ صلی اللہ علیہ وسلم ای الدعاء اسمع قال-  جوف اللیل اخر و دبر الصلوۃ- اور حصن حصین مین بروایت ترمذی و حاکم نقل کیا ھے- وبسط الیدین- اور صحاح ستہ کی روایت سے نقل کیا ھے ورفعھما  پس مجموعہ ان احادیث صحیحہ سے ھر ایک نماز کے بعد ھاتھ اٹھا کر دعا مانگنا اور اسکا سنت ھونا ثابت ھوا- (عزیز الفتاوی ج 1 صفہ 149)
অর্থঃ- ফরজ নামাযসমূহের পর হাত উঠায়ে মুনাজাত করা এবং মুনাজাতের শেষে হাত দ্বারা মুখ মোসেহ্ করা, সহীহ্ হাদীছ শরীফসমূহ দ্বারা প্রমাণিত রয়েছে। এটা অস্বীকারকারী জাহিল (মূর্খ এবং সুন্নত সম্পর্কে নিহায়েত অজ্ঞ। আর সুন্নত পরিত্যাগকারী হয়ে শাস্তি ও তিরস্কারের পাত্র হয়েছে। তিরমিযী শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে, হযরত আবূ উমামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সুওয়াল করা হলো- কোন্ দোয়া কবূলযোগ্য? নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, মধ্য রাত্রের শেষের ও ফরজ নামাযের পরের দোয়া এবং হিছনে হাছীনে। তিরমিযী ও হাক্বিম হতে বর্ণনা করা হয়েছে, (মুনাজাতে) উভয় হাত বিছায়ে দিবে। আর সিহাহ্ সিত্তায় বর্ণিত রয়েছে, উভয় হাত উঠাবে। সুতরাং উপরোক্ত ছহীহ্ হাদীছ শরীফসমূহের সমষ্টি হলো- প্রত্যেক নামাযের পর হাত উঠায়ে মুনাজাত করা সুন্নত প্রমাণিত হয়। (আযীযুল ফতওয়া ১ম জিঃ পৃঃ ১৪৯)
২৪)
بعد نماز ختم کرچکنے کے دونو ھاتھ سینہ تک اٹھا کر پھیلائے اور اللہ تعالی سے اپنے لئے دعا مانگے- (اشرفیہ بھشتی زیور ج 11 صفہ 32)
অর্থঃ- (ফরজ) নামায শেষ করার পর উভয় হাত সিনা পর্যন্ত উঠাবে এবং নিজের জন্য মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট মুনাজাত করবে। (আশ্রাফী বেহেস্তী জিওর ১১তম জিঃ পৃঃ ৩২)
(২৫-২৬)
جو بندہ ھر فرض نماز کے بعد ھاتھ پھیلا کر اللہم الھی الخ- پرھے تو اللہ تعالی پر حق ھو جاتا ھے کہ اسکو خالی ھاتھ نہ لوٹائے ( کذا فی عمل الیوم و اللیل فتاوئے محمودیدہ ج 2 صفہ 123)
অর্থঃ- যে বান্দা প্রত্যেক ফরজ নামাযের পর হাত উঠায়ে বলবে, আয় আল্লাহ পাক ...। তখন মহান আল্লাহ পাক উনার দায়িত্ব ও কর্তব্য হয়ে যায়, তাকে খালী হাতে না ফিরানো। অনুরূপ আমালুল ইয়াত্তম ওয়াল লাইল কিতাবে উল্লেখ রয়েছে।(ফতওয়ায়ে মাহমুদিয়া ২য় জিঃ পৃঃ-১২৩)
 (27) 
سوال:- بعد نماز پنجگانہ دعاء کے و اسطے ھاتھ اٹھا نا سنت ھے یا بدعت؟ زید نے دعا اس غرض سے ترک کردی کہ اس بارہ مین کوئی حدیث و ارد نھین- یہ فعل کیسا ھے؟
الجواب:- نماز پنجگانہ کے بعد ھاتھ اٹھا کر دعا مانگنا سنت نبویہ صلی اللہ علیہ وسلم  ھے- حصن حصین جو معتبر کتاب حدیث کی ھے اس مین احادیث مرفوعہ دعا مین ھاتھ اٹھانے اور بعد دعا کے منہ پر ھاتھ پھرنے کی موجود ھین انکو دیکھ لیا جائے- نمازون کے بعد دعا کا مسنون ھونا بھی اس مین مذکور ھین- پس زید کا یہ فعل ترک دعا بعد الصلوات خلاف سنت ھے- (فتاوئے دیوبند ج2 صفہ 199)
অর্থঃ- সুওয়াল- পাঁচ ওয়াক্ত (ফরজ) নামাযের পর হাত উঠায়ে মানুজাত করা সুন্নত না বিদয়াত, যায়েদ একারণে উক্ত মুনাজাত করা পরিত্যাগ করেছে যে, এ ব্যাপারে কোন পবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণিত নেই, এটা কিরূপ কাজ।
জাওয়াব- পাঁচ ওয়াক্ত (ফরজ) নামাযের পর হাত উঠায়ে মুনাজাত করা সুন্নতে নববী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অন্তর্ভূক্ত। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার নির্ভরযোগ্য কিতাব হিছনে হাছীন উনার মধ্যে মুনাজাতে হাত উঠানো ও মুনাজাত শেষে মুখ মোসেহ্ করা প্রসঙ্গে উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণিত রয়েছে। উহা দেখে নেয়া যেতে পারে। নামাযের পর মুনাজাত করা সুন্নত হওয়াও উহাতে উল্লেখ আছে। সুতরাং নামাযের পর যায়েদের মুনাজাত পরিত্যাগ করা সুন্নতের খিলাফ (বিপরীত)। (ফতওয়ায়ে দেওবন্দ ২য় জিঃ পৃঃ-১৯৯)
(28-29)
سوال:- زید کھتا ھے کہ بعد صلوات مکتوبات کے ھاتھ اٹھا کر دعا مانگنا رسول اللہ صلی اللہ علیہ وسلم سے ثابت نھین- لھذا بدعت سیئہ ھے زید کا قول کیسا ھے؟ دعا کا ثبوت ھے تو تحریر فرماوین=
الجواب:- ھان صحاح ستہ کی روایت مین اسکا صراحۃ ذکر نھین- مگر ابن ابی شیبہ رحمۃ اللہ علیہ کے مصنف مین ایک روایت موجود ھے جن مین نماز کے بعد ھاتھ اٹھا کر دعاء کرنا مذکور ھے اعلاء السنن مین یہ دیث مذکور ھے-
(امداد الاحکام ج 1 صفہ 246)
অর্থঃ- সুওয়াল- যায়েদ বলে যে, ফরজ নামাযসমূহের পর হাত উঠায়ে মুনাজাত করা, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে প্রমাণিত নেই, তাই এটা বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ্। যায়েদের একথাটি কিরূপ? মুনাজাতের প্রমাণ থাকলে পবিত্র হাদীছ শরীফ পেশ করবেন।
জাওয়াব- হ্যাঁ, ‘সিহাহ্ সিত্তার’ বর্ণনায় এটা স্পষ্টভাবে উল্লেখ নেই। কিন্তু মুছান্নেফ ইবনে আবী শায়বা কিতাব উনার মধ্যে একটি বর্ণনা রয়েছে, যার মধ্যে ফরজ নামাযের পর হাত উঠায়ে মুনাজাত করার কথা উল্লেখ রয়েছে। এ পবিত্র হাদীছ শরীফ আলাউস সুনান কিতাব উনার মধ্যেও উল্লেখ রয়েছে। (ইমদাদুল আহকাম ১ম জিঃ পৃ-২৪৬)
          অতএব, প্রমাণিত হয় যে, ফরজ নামাযের পর উভয় হাত উঠায়ে মুনাজাত করা সুন্নতে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অন্তর্ভূক্ত।
ফরজ নামাযের পর
সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করা
          ফরজ নামাযের পর ইমাম ও মোক্তাদীগণ সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করাও জায়েয ও শরীয়ত সম্মত। যার স্বল্প অসংখ দলীল বিদ্যমান রয়েছে। তাছাড়া কেউ প্রমাণ করতে পারবেনা যে, ইসলামী শরীয়ত উনার কোথাও ফরজ নামাযের পর সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করতে নিষেধ করা হয়েছে। মূলতঃ সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করা মুস্তাহাবের অন্তর্ভূক্ত।
(১)              
عن ثوبان قال- قال النبى صلى الله عليه وسلم لايؤم قوما فيخص نفسه بدعوة دونهم فان فغل خائهم- (ترمذى شريف ج صفه ৪৭)
অর্থঃ- কোন ইমাম সাহেব মুক্তাদীগণকে বাদ দিয়ে শুধু নিজের জন্য মুনাজাত করবে না। যদি সে তা করে, তবে সে মুক্তাদীগণের প্রতি খিয়ানতকারী হবে। (তিরমিযী শরীফ ২য় জিঃ পৃঃ-৪৭)
          উল্লেখিত পবিত্র হাদীছ শরীফখানা ফরজ নামাযের পর সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার প্রতিই ইঙ্গিত দেয়। কেননা এ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে সরাসরি ইমাম ও মুক্তাদীর কথা উল্লেখ রয়েছে।
(২)
لا يجتمع ملاء فيدعو بعضهم ويؤمن بعضهم الااجابهم. (معارف السنن)
অর্থঃ- সম্মিলিত মুনাজাতে কিছু লোক মুনাজাত করলো, আর কিছু লোক আমিন’ বললো, মহান আল্লাহ পাক তিনি অবশ্যই তাদের এ মুনাজাত কবুল করবেন। (মায়ারেফুস্ সুনান)
          উল্লেখিত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ফরজ, নফল বা কোন সময়ের নির্ধারণ ছাড়াই সম্মিলিত মুনাজাত কবূল হওয়ার কথা বলা হয়েছে। সুতরাং এ পবিত্র হাদীছ শরীফ ফরজ নামাযের পর সম্মিলিত মুনাজাত জায়েয হওয়ারও প্রমাণ বহন করে।
          তাছাড়া হযরত আসওয়াদ আমেরী  রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার বর্ণিত পবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারাও ফরজ নামাযের পর (ইজতেমায়ী) সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করা মোস্তাহাব প্রমাণিত হয়। যেমন মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বায় উল্লেখ রয়েছে,
(৩)    
عن الاسود العامري عن ابيه قال صليت مع رسول الله صلى الله عليه وسلم الفجر- فلما سلم انصرف ورفغ يدبه ودعا. (مصف ابن ابى شيبه)
অর্থঃ- হযরত আসওয়াদ আমেরী  রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার হতে বর্ণিত। তিনি উনার পিতা হতে বর্ণনা করেন। উনার পিতা বলেন- আমি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে ফজর নামায পড়লাম। যখন তিনি নামাযের সালাম ফিরালেন, ঘুরে বসলেন এবং উভয় হাত মুবারক উঠিয়ে মুনাজাত করলেন।
ব্যাখ্যা : উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে যে সমস্ত বিষয় রয়েছে তাহলো- হযরত আসওয়াদ আমীরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার পিতা, তিনি বলেছেন, “আমি ফজর নামায পড়েছি।
এর দ্বারা ফরজ নামায সাবেত হলো, অন্য কোন নফল নামায এটা হতে এস্তেছনাবা বাতিল হলো। দ্বিতীয়তঃ ** বলা হয়েছে। এটা হতে বুঝা গেল, পবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনাকারী নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে একা ছিলেন না, কেননা মাসয়ালা হলো ইমামের সাথে মুক্তাদী যদি একজন হয়, তাহলে তো মুক্তাদী ইমামের সাথে দাঁড়াবে। আর সাথে দাঁড়ালে তো ** হওয়ার অর্থাৎ ঘুরে বসার কোন প্রয়োজন নেই। সুতরাং ** দ্বারা বুঝা গেল, জামায়াতে একাধিক মুক্তাদী ছিল, তাই তিনি মুক্তাদীগণের দিকে মুখ  মুবারক ফিরিয়ে বসেছেন।
          এক্ষেত্রে মুনাজাত বিরোধীগণ বলে থাকেন যে, হযরত আসওয়াদ আমেরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত হাদীছ শরীফ দ্বারা হাত উঠায়ে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করা প্রমাণিত হয়না। কারণ  পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার শব্দগুলো একবচনে ব্যবহৃত হয়েছে। কাজেই এর দ্বারা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ উনাদের মুনাজাত করা বুঝায় না। আর হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ উনারা সর্বক্ষেত্রে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অনুসরণ করতেন না, অনুরূপ এখানেও করেননি। যদি অনুসরণ করতেন, তবে তা পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ থাকতো।
          মুনাজাত বিরোধীদের উক্ত বক্তব্যের জবাব হলো- হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ অনেক ক্ষেত্রে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অনুসরণ করেননি একথা সম্পূর্ণই অজ্ঞতাপ্রসূত। কারণ সর্বক্ষেত্রেই হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অনুসরণ করেছেন। তবে যে ক্ষেত্রে মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পক্ষ হতে কোন বিষয়ে অনুসরণ না করার নির্দেশ মুবারক রয়েছে, তা ব্যতীত সকল ক্ষেত্রেই অনুসরণ করতেন। তবে নিষেধকৃত বিষয় আমল না করাটাও অনুসরণ-অনুকরণের অন্তর্ভূক্ত। এ প্রসঙ্গে  হাদীছ শরীফে বর্ণিত রয়েছে, একদিন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি জুতা মুবারকসহ মসজিদে নামায পড়ছিলেন, এমন সময় হযরত জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম তিনি এসে বললেন, “ইয়া রাসূলাল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনার জুতা মোবারক উনার মধ্যে নাপাকি রয়েছে। তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি জুতা  মুবারক খুলে ফেললেন। সাথে সাথে উপস্থিত সকল  হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ উনারাও জুতা খুলে ফেললেন। তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, “এ হুকুম তোমাদের জন্য নয়, এটা আমার জন্যে খাছ। এখানে আরো উল্লেখ্য যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে যা করতে দেখতেন, হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণও তাই করতেন। আর যা বর্জন করতেন, উনারা তাই বর্জন করতেন, কখনো কি ও কেন প্রশ্ন করতেন না। যেমন- হযরত ইমাম বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার হতে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন- সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একটি স্বর্ণের আংটি ব্যবহার করতেন, হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ উনারাও স্বর্ণের আংটি বানিয়ে ব্যবহার করা শুরু করলেন। কিন্তু যখন স্বর্ণ ব্যবহার পুরুষের জন্য সম্পূর্ণ হারাম হয়ে যায়, তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আংটিটি খুলে ছুঁড়ে ফেলে দিলেন এবং বললেন, আমি আর কখনও এটা ব্যবহার করবো না। তখন হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ উনারা সকলেই উনাদের আংটিগুলো খুলে ছুঁড়ে ফেলে দিলেন। এটাই ছিল হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ উনাদের নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অনুসরণের নমুনা। এরকম হাজারো লাখো ঘটনার দ্বারা প্রমাণ করা সম্ভব যে, হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ উনারা সব ব্যাপারে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অনুসরণ-অনুকরণ করেছেন। কেবলমাত্র যেসব ব্যাপারে নিষেধ করা হয়েছে, ঐ নিষেধ মানাও অনুসরণ-অনুকরণের অন্তর্ভূক্ত।
কাজেই মুনাজাত বিরোধীরা কি এরকম একটি ঘটনাও দেখাতে পারবেন, যেখানে নিষেধাজ্ঞা ব্যতীত হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অনুসরণ-অনুকরণ করেননি বা মুনাজাতে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ উনাকে হাত উঠাতে নিষেধ করেছেন।
          হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ উনাকে হুকুম না দেয়া সত্বেও হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অনুসরণের লক্ষে সকলেই জুতা ও আংটি মুবারক খুলে ফেললেন। এটাই যদি হতে পারে, তবে যেখানে ফরজ নামাযের পর দোয়া কবুল হওয়ার সুসংবাদ দেয়া হয়েছে এবং সম্মিলিতভাবে দোয়া কবুল হয় বলে সহীহ্ ক্বাওলী হাদীছ শরীফ রয়েছে এবং যেখানে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বয়ং হাত মুবারক উঠালেন, সেখানে উপস্থিত হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ উনারা হাত উঠাননি এরূপ ধারণা তারাই করতে পারে- যাদের, হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ উনারা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে যে কতটুকু অনুসরণ-অনুকরণ করতেন, সে সম্পর্কে মোটেও ইলম নেই এবং হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম  রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ উনাদের মান-মর্যাদা সম্পর্কে নেহায়েত অজ্ঞ ও মূর্খ। কাজেই পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার ইবারত দ্বারা হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ উনাদের হাত না উঠান যতটুকু প্রমাণিত হয়, তার চেয়ে বেশী প্রমাণিত হয় হাত উঠানোর। কারণ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে স্পষ্ট বলা হয়নি যে,  নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হাত  মুবারক উঠালেন কিন্তু আমরা হাত উঠাইনি। এখন মুনাজাত বিরোধীদের নিকট আমাদের জিজ্ঞাসা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ হাত উঠাননি, এরূপ স্পষ্ট বর্ণনা আপনারা একটিও দেখাতে পারবেন কিন্তু; কখনো নয়। তবে কিসের ভিত্তিতে বলেন, হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ হাত উঠাননি।
          অতএব, উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ উনাদেরকে নিয়ে ফরজ নামাযের পর সম্মিলিত বা ইজতেমায়ীভাবে মুনাজাত করেছেন। সুতরাং ফরজ নামাযের পর সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করা মুস্তাহাব।
(৪-৬)
اما الدعاء اجتماعا فهو ايضا ثابت بحديث رواه الحاكم وقال على شرط يجتمع ملاء فيدعو بعضهم ويأمن بعضهم الا استجاب الله دعائهم. (المريد الى المراد رحذا فى سباحة الفكر، وكتاب الاذكار)
অর্থঃ- মূলতঃ সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করাও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার দ্বারা প্রমাণিত রয়েছে। যেটা হাকেম বর্ণনা করেছেন এবং তিনি বলেছেন, এ পবিত্র হাদীছ শরীফখানা হযরত ইমাম মুসলিম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার শর্তানুসারে উক্ত হিসাবে সাব্যস্ত। (পবিত্র হাদীছ শরীফখানা হলো- নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, সম্মিলিত মুনাজাতে কিছু লোক মুনাজাত করলো, আর কিছু লোক আমীন বললো, মহান আল্লাহ পাক তিনি অবশ্যই তাদের এ মুনাজাত কবূল করবেন। (আল মুরীদ ইলাল মুরাদ, অনুরূপ সাবাহাতুল ফিক্র ও কিতাবুল আযকারে বর্ণিত রয়েছে)
(৭)    
كان فى زمن النبى صلى الله عليه وسلم رجل يقال له ابودجانة فاذا صلى الصبح خرج من المسجد سريعا ولم يحضو الدعاء- فسأله النبى صلى مالله عليه وسلم من ذالك فقال ان جارى له نخلة يسقط رطبها فى دارى ليلا من الهواء- فاسيق اولادى قبل ان يستيقظرا فا طرحه فى داره قفال النبى صلى الله عليه وسلم لصاحبها بعنى نخلتك بعشر نخلات فى الجنة عروقها من ذهت احمر وزبرجد اخضر واغصانها من الؤلؤ الابيض- فقال لا ابيع حاضر الغائب فقال ابوبكر صديق رضى الله عنه قد اشتريتها منه بعشر نخلات فى مكان كذا ... الخ. (نزهة المجالس لعبد الحق محدث دهلوى)
অর্থঃ- সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সময় আবূ দাজানা নামক এক ব্যক্তি ছিল। সে একদিন ফজরের নামায (জামায়াতে) আদায় করে, মুনাজাতে শরীক না হয়ে দ্রুতবেগে মসজিদ হতে বের হয়ে গেল। পরবর্তীতে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আবূ দাজানাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেন যে, (তুমি কেন মুনাজাতে হাজির না থেকে তাড়াতাড়ি চলে গেলে) আবূ দাজানা উত্তর দিল- আমার প্রতিবেশীর একটি খেজুর গাছ রয়েছে, রাত্রিবেলায় ঝড়ে উক্তগাছের খেজুর আমার সিমানায় পড়ে, আমার সন্তানগণ ঘুম হতে উঠার পূর্বেই আমি সেখানে পৌঁছে যাই এবং উক্ত খেজুরগুলো কুড়ায়ে তার সিমানায় পৌঁছে দেই। (যেন আমার সন্তানগণ উক্ত খেজুর খেয়ে পরের হক্ব নষ্ট না করে)
          অতঃপর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আবূ দাজানার উত্তর শুনে, উক্ত খেজুর গাছের মালিককে বললেন- তোমার খেজুর গাছটি বেহেস্তী লাল, সোনালী ও সবুজ, হলুদ শিকড় ও সাদা মুতি-জহরতের ডালা বিশিষ্ট দশটি খেজুর গাছের বিনিময়ে আমার নিকট বিক্রি করে দাও। সে ব্যক্তি বললো- আমার বিদ্যমান গাছটিকে অদৃশ্য গাছের বিনিময়ে বিক্রি করবোনা। তখন হযরত আবূ বকর সিদ্দীক আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, তাহলে আমি আমার অমুক স্থানের দশটি খেজুর গাছের বিনিময়ে এই খেজুর গাছটি (আবূ দাজানার জন্যে কিনে নিলাম .... । সুবহানাল্লাহ! (নুজহাতুল মাজালিস লি আবদিল হক মুহাদ্দিস দেহ্লভী)
          উক্ত ঘটনার মধে বিশেষভাবে লক্ষনীয় বিষয় হলো- বলা হয়েছে- ولم يحضر فى الدعاء অর্থাৎ আবূ দাজানা মুনাজাতে উপস্থিত না হয়ে দ্রুতবেগে চলে গেল। একথা বলা হয়নি যে, অর্থাৎ মুনাজাত করলোনা।
          সুতরাং এতে স্পষ্টই বুঝা যায় যে, তখন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণকে নিয়ে সম্মিলিতভাবে ফরজ নামাযের পর মুনাজাত করতে ছিলেন।
          কাজেই উক্ত ঘটনা দ্বারাও ফরজ নামাযের পর সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করা মোস্তাহাব প্রমাণিত হলো।
(অসমাপ্ত)