উম্মুল মু’মিনীন আল খমিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সংক্ষিপ্ত জীবনী মুবারক






উম্মুল মু’মিনীন আল খমিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সংক্ষিপ্ত জীবনী মুবারক-



যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

اَلنَّبِـىُّ اَوْلـٰى بِالْمُؤْمِنِيْنَ مِنْ اَنْفُسِهِمْ وَاَزْوَاجُهۤٗ اُمَّهٰتُهُمْ.

অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন মু’মিন উনাদের নিকট উনাদের জানের চেয়ে অধিক প্রিয়, উনাদের মহাসম্মানিত পিতা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং উনার মহাসম্মানিতা ‘আযওয়াজুম মুত্বহহারাত’ (হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম) উনারা হচ্ছেন সমস্ত মু’মিন উনাদের মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহিন্নাস সালাম।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৬)

 হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা ছিলেন মোট ১৩ জন। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নেয়ার মুবারক ধারাবাহিকক্রম অনুযায়ী উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন ‘আল খ¦মিসাহ তথা পঞ্চম’। এ জন্য উনাকে ‘উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল খ¦মিসাহ্ আলাইহাস সালাম’ বলা হয়। তিনি সকলের মাঝে ‘উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম’ হিসেবে পরিচিতি মুবারক গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি আইয়্যামে জাহিলিয়াতের যুগেই সকলের মাঝে ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! তবে উনার মূল মহাম্মানিত ও মহাপবিত্র ইসম মুবারক হচ্ছেন ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাইনাব আলাইহাস সালাম’। সুবহানাল্লাহ! তিনি শুধু যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং উনার মাহবূব  হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারিণী। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত মুহব্বত মুবারকই হচ্ছেন সম্মানিত ঈমান। সুবহানাল্লাহ! উনাকে সম্মানিত মুহব্বত মুবারক করা, উনার সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম মুবারক করা, সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করা এবং উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়া সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের জন্য ফরযে আইন। সুবহানাল্লাহ! তাই উনার সম্মানিত জীবনী মুবারক জানাও সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের জন্য ফরযে আইন। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত পিতা আলাইহিস সালাম:

উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত পিতা আলাইহিস সালাম হচ্ছেন সাইয়্যিদুনা হযরত খুযাইমাহ্ ইবনে হারিছ আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুনা হযরত খুযাইমাহ্ ইবনে হারিছ আলাইহিস সালাম তিনি ছিলেন বনূ হিলাল গোত্রের সবচেয়ে সম্মানিত ও অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব মুবারক। সুবাহনাল্লাহ! সকলেই উনাকে বেমেছাল সম্মান-ইজ্জত ও তা’যীম-তাকরীম মুবারক করতো। সুবহানাল্লাহ! উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম তিনি মহাসম্মানিত পিতা আলাইহিস সালাম উনার দিক থেকে ১৭তম পুরুষ হয়ে ১৮তম পুরুষে যেয়ে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মিলিত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! উনার ৭ম পূর্বপুরুষ সাইয়্যিদুনা হযরত হিলাল ইবনে ‘আমির আলাইহিস সালাম তিনি ছিলেন আরবের প্রসিদ্ধ গোত্র ‘বনূ হিলাল’ গোত্রের মহাসম্মানিত প্রথম পুরুষ। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক অনুযায়ী উনার সম্মানিত বংশ বা গোত্র মুবারক উনার নামকরণ মুবারক করা হয় ‘বনূ হিলাল’ গোত্র হিসেবে। সুবহানাল্লাহ! এজন্য উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম উনাকে ‘আল হিলালিয়্যাহ’ বলা হয়। সুবাহনাল্লাহ! যেমন- কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
اُم الْـمُوْمِنيْنَ سيدتنا  حَضْرَتْ زينب بنت خزيمة الهلالية عليها السلام 
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাইনাব বিনতে খুযাইমাহ্ আল হিলালিয়্যাহ্ আলাইহাস সালাম।” সুবহানাল্লাহ! (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/২০৫, দালাইলুন নুবুওওয়াহ্ লিল বাইহাক্বী ৩/১৫৯, শরফুল মুস্ত¡ফা শরীফ ৩/২৫১, উস্দুল গবাহ্ ১/১৯, বিদায়াহ্-নিহায়াহ্ ৫/৩২১, সিমতুন নুজূম ১/৪৫৪, আল মুন্তাখাব ফী কিতাবে আযওয়াজিন নাবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১/১২)

হযরত ইমাম আল্লামা যারক্বানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন,
"الهلالية"  عليها السلام نسبة إلى جدها هلال عليه السلام
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম উনাকে ‘আল হিলালিয়্যাহ’ বলা হয় উনার মহাসম্মানিত পূর্বপুরুষ সাইয়্যিদুনা হযরত হিলাল আলাইহিস সালাম উনার সাথে নিসবত করে।” সুবহানাল্লাহ! (শরহুয যারক্বানী আলাল মাওয়াহিব ৪/৪১৬)
উনার ৮ম পূর্বপুরুষ সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আমির ইবনে ছ’ছ‘আহ্ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইসম মুবারক অনুযায়ী উনাকে উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আল ‘আমিরিয়্যাহ আলাইহাস সালাম’ বলা হয়। সুবহানাল্লাহ! যেমন-
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
أم المؤمنين سيدتنا  حَضْرَتْ زينب بنت خُزَيْمَة بْن حَارِث الْهِلَالِيَّة العامرية عليها السلام
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাইনাব বিনতে খুযাইমাহ্ আল হিলালিয়্যাহ্ আল ‘আমিরিয়্যাহ্ আলাইহাস সালাম।” সুবহানাল্লাহ! (ওয়াসীলাতুল ইসলাম বিন নাবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)

মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম:
উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম তিনি কে, যদিও এ বিষয়ে অনেকে অনেক ইখতিলাফ করেছেন, তবে বিশুদ্ধ কথা হচ্ছে- উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান হচ্ছেন- ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত হিন্দ বিনতে ‘আউফ আলাইহাস সালাম তিনি।’ সুবহানাল্লাহ! তিনি ছিলেন উনার সম্প্রদায়ের মধ্যে সবচেয়ে সম্মানিতা ব্যক্তিত্বা মুবারক। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক উনার কায়িনাতে একমাত্র তিনিই সেই সুমহান ব্যক্তিত্বা মুবারক যিনি দুইজন মহাসম্মানিতা উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিমাস সালাম উনাদের মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ তিনি হচ্ছেন উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম উনার এবং  উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের উভয়ের মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! এদিক থেকে তিনি ছিলেন এক অনন্য বেমেছাল শ্রেষ্ঠত্ব মুবারক উনার অধিকারিণী। সুবহানাল্লাহ! কায়িনাতের বুকে দ্বিতীয় আর কেউ এই অনন্য বেমেছাল ফযীলত মুবারক হাছিল করতে পারেন নি। সুবহানাল্লাহ! তাহলে উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুর্যূগী-সম্মান মুবারক এবং বংশীয় পবিত্রতা মুবারক কতো বেমেছাল, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত শান মুবারক-এ বর্ণিত রয়েছে,
التي توصف بأنها أكرم عجوز في الأرض أصهاراً. فسيدتنا  حَضْرَتْ هند بنت عوفٍ عليها السلام هذه أم كل من:
أم المؤمنين سيدتنا  حَضْرَتْ زينب بنت خزيمة الهلالية عليها السلام زوج النبى صلى الله عليه وسلم
أم المؤمنين سيدتنا  حَضْرَتْ ميمونة بنت الحارث زوج النبى صلى الله عليه وسلم
سيدتنا  حَضْرَتْ أسماء بنت عميس الخثعمية رضي الله تعالى عنها، تزوجت من حضرت جعفر بن أبي طالب رضي الله تعالى عنه  ، ثم تزوجها سيدنا حضرت أبي بكر الصديق  عليه السلام ثم تزوجها سيدنا حضرت علي بن أبي طالب كرم الله وجهه عليه السلام
سيدتنا حضرت سلمى بنت عميس الخثعمية رضي الله تعالي عنه، زوج سيدنا حضرت حمزة بن عبد المطلب. عليه السلام
أم الفضل سيدتنا  حَضْرَتْ لبابة الكبرى بنت الحارث الهلالية رضي الله تعالى عنها، زوج سيدنا حضرت العباس بن عبد المطلب عليه السلام  
 سيدتنا  حَضْرَتْ لبابة الصغرى بنت الحارث الهلالية رضي الله تعالى عنها ، سيدنا حضرت أم خالد بن الوليد رضي الله تعالى عنه
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা হযরত হিন্দ বিনতে ‘আউফ আলাইহাস সালাম তিনি এমন সুমহান মহাসম্মানিতা ব্যক্তিত্বা মুবারক যে, উনার সম্মানিত প্রশংসা মুবারক করা হয় এভাবে- ‘নিশ্চয়ই তিনি হচ্ছেন আত্মীয়তার দিক থেকে দুনিয়ার যমীনে সবচেয়ে সম্মানিতা মহিলা।’ সুবহানাল্লাহ! কেননা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত হিন্দ বিনতে ‘আউফ আলাইহাস সালাম তিনি যেই সমস্ত মহাসম্মানিতা ব্যক্তিত্বা মুবারক উনাদের মহাসম্মানিতা আম্মাজান ছিলেন উনারা হচ্ছেন, 
১. উম্মুল মু‘মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম তিনি। যিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা যাওজাতুম মুত্বহ্হারহ (মহাসম্মানিতা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহাস সালাম) ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! 
২. উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি। যিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা যাওজাতুম মুত্বহ্হারহ (মহাসম্মানিতা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহাস সালাম) ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! 
৩. সাইয়্যিদাতুনা হযরত আসমা’ বিনতে ‘উমায়েস আল খ¦ছ‘আমিয়্যাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি। তিনি সর্বপ্রথম হযরত জা’ফর ইবনে আবী ত্বালিব রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার আহলিয়াহ্ ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! তারপর (উনার সম্মানিত শাহাদাত মুবারক উনার পর) সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি উনাকে সম্মানিত শাদী মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর (উনার সম্মানিত বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পর) ইমামুল আউওয়াল মিন আহ্লি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত র্কারামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি উনাকে সম্মানিত শাদী মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! 
৪. সাইয়্যিদাতুনা হযরত সালমা বিনতে ‘উমায়েস আল খ¦ছ‘আমিয়্যাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি। তিনি ছিলেন, সাইয়্যিদুশ শুহাদা’ সাইয়্যিদুনা হযরত হামযাহ্ ইবনে ‘আব্দুল মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত আহলিয়াহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহা। সুবহানাল্লাহ! 
৫. সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল ফযল লুবাবাহ্ কুবরা বিনতে হারিছ আল হিলালিয়্যাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি। তিনি ছিলেন, খতিমুল মুহাজিরীন সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আব্বাস ইবনে ‘আব্দুল মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিতা আহলিয়াহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহা। সুবহানাল্লাহ! 
৬. সাইয়্যিদাতুনা হযরত লুবাবাহ্ ছুগরা বিনতে হারিছ আল হিলালিয়্যাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি। তিনি ছিলেন, সাইয়্যিদুনা হযরত খ¦ালিদ ইবনে ওয়ালীদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার সম্মানিতা আম্মাজান। সুবহানাল্লাহ!

আল্লামা দিয়ার বাক্রী রহমতুল্লাহি আলাইহি (বিছাল শরীফ: ৯৬৬ হিজরী শরীফ) তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘তারীখুল খমীস শরীফ’ উনার মধ্যে উল্লেখ করেন, 
فكان يقال: أكرم عجوز في الأرض أصهارا: سيدتنا حضرت هند الجرشية عليهاالسلام، لأن أصهارها: رسول الله صلى الله عليه وسلم، و سيدنا حضرت حمزة عليه السلام ، وسيدنا حضرت علي عليه السلام ، وسيدنا حضرت جعفر رضي الله تعالي عنه، وسيدنا حضرت أبو بكرالصديق عليه السلام ، وسيدنا حضرت العباس عليه السلام ، و سيدنا حضرت شداد بن الهاد رضي الله تعالي عنه.
অর্থ: “এ কথা প্রচলিত ছিলো যে, দুনিয়ার যমীনে আত্মীয়তার দিক থেকে সবচেয়ে সম্মানিতা মহিলা হচ্ছেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত হিন্দ বিনতে ‘আউফ আল জুরাশিয়্যাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! কেননা উনার মহাসম্মানিত আত্মীয় হচ্ছেন-
১. স্বয়ং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
২. সাইয়্যিদুশ শুহাদা’ সাইয়্যিদুনা হযরত হামযাহ্ ইবনে আব্দুল মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! 
৩. সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
৪. সাইয়্যিদুনা হযরত জা’ফর ইবনে আবী ত্বালিব রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি। সুবহানাল্লাহ!  
৫. সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!  
৬. সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আব্বাস আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
৭. সাইয়্যিদুনা হযরত শাদ্দাদ ইবনে হাদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা ‘আনহু তিনি।” সুবহানাল্লাহ! (তারীখুল খমীস ১/২৬৭)
কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে, 
سيدتنا حضرت هند بنت عوف بن زهير بن الحارث عليها السلام، التي قيل عنها إنها أكرم عجوز في الأرض أصهارا، حيث إن أصهارها: رسول الله صلى الله عليه وسلم، وسيدنا حضرت أبو بكر الصديق عليه السلام، وسيدنا حضرت حمزةعليه السلام، و سيدنا حضرت العباس عليه السلام، و سيدنا حضرت جعفر رضي الله تعالي عنه، و سيدنا حضرت علي بن أبي طالب عليه السلام أجمعين. وكان لها أيضا أصهار آخرون من المبرزين وذوي المكانة والمنزلة بين أقوامهم.
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা হযরত হিন্দ বিনতে ‘আউফ ইবনে যুহাইর ইবনে হারিছ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত শান মুবারক-এ বলা হয় যে, ‘নিশ্চয়ই তিনি হচ্ছেন আত্মীয়তার দিক থেকে দুনিয়ার যমীনে সবচেয়ে সম্মানিতা মহিলা।’ সুবহানাল্লাহ! কেননা উনার মহাসম্মানিত আত্মীয় হচ্ছেন- 
১. স্বয়ং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
২. সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
৩. সাইয়্যিদুশ শুহাদা’ সাইয়্যিদুনা হযরত হামযাহ্ ইবনে আব্দুল মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
৪. সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আব্বাস আলাইহিস সালাম তিনি। 
৫. সাইয়্যিদুনা হযরত জা’ফর ইবনে আবী ত্বালিব রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু তিনি।  
৬. সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
এছাড়াও উনার আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিলো উনাদের সম্প্রদায়ের মধ্যে যাঁরা সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ, সম্মানিত ও নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্ব মুবারক উনাদের সাথে।” সুবহানাল্লাহ! (নিসাউন নাবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
সাইয়্যিদাতুনা হযরত হিন্দ বিনতে ‘আউফ আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন বনূ হিম্ইয়ার গোত্রের। সুবহানাল্লাহ! উনার ৩১তম পূর্বপুরুষ সাইয়্যিদুনা হযরত হিম্ইয়ার ইবনে সাবা’ আলাইহিস সালাম তিনি ছিলেন সাইয়্যিদুনা হযরত হূদ আলাইহিস সালাম উনার বংশধর। সুবহানাল্লাহ! আর সাইয়্যিদুনা হযরত হূদ আলাইহিস সালাম তিনি ছিলেন সাইয়্যিদুনা হযরত নূহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত সাম আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত বংশধর। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুনা হযরত হিম্ইয়ার আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইসম মুবারক অনুযায়ী পরবর্তীতে উনার বংশ বা গোত্র মুবারক উনার নামকরণ মুবারক করা হয় ‘বনূ হিমইয়ার’ গোত্র হিসেবে। সেই দিকে নিসবত মুবারক রেখে সাইয়্যিদাতুনা হযরত হিন্দ বিনতে ‘আউফ আলাইহাস সালাম উনাকে ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত হিন্দ বিনতে ‘আউফ আল হিম্ইয়ারিয়্যাহ্ আলাইহাস সালাম’ বলা হয়। সুবহানাল্লাহ! আর উনার ৯ম পুরুষ সাইয়্যিদুনা হযরত জুরাশ ইবনে আসলাম আলাইহিস সালাম উনার দিকে নিসবত করে উনাকে ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত হিন্দ বিনতে ‘আউফ আল জুরাশিয়্যাহ্ আলাইহাস সালাম’ বলা হয়। সুবহানাল্লাহ!
উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিতা আখাওয়াত বা বোন আলাইহিন্নাস সালাম
উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম উনারা ছিলেন মোট ১২ বোন। সুবহানাল্লাহ!
১.উম্মুল মু’মিনীন উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম তিনি। উনার সম্মানিত পিতা হচ্ছেন- বনূ হিলাল গোত্রের সাইয়্যিদুনা হযরত খুযাইমাহ্ আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! উম্মুল মু’মিনীন উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম উনার আপন কোন ভাই-বোন ছিলেন কি না, সে বিষয়ে কিতাবে কোন বর্ণনা পাওয়া যায় না। সুতরাং উম্মুল মু’মিনীন উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম তিনি ব্যতীত উনার যে বাকী ১১ বোন রয়েছেন, উনারা প্রত্যেকেই হচ্ছেন- উনার বৈপিত্রেয় বোন। সুবহানাল্লাহ!
২. উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! 
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,  
قَالَ اَبُو الحسن علي بْن عبد العزيز الجرجاني النسابة كانت ام المؤمنين سيدتنا حضرت زينب بنت خزيمة عليها السلام اخت ام المؤمنين سيدتنا حضرت ميمونة بنت الحارث عليها السلام لامها
অর্থ: “নসববীদ হযরত ইমাম আবুল হাসান আলী ইবনে আব্দুল আযীয জুরজানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিতা বৈপিত্রেয় বোন। অর্থাৎ মায়ের দিক থেকে বোন।” সুবহানাল্লাহ! (আল ইস্তি‘য়াব ৪/১৮৫৩, আল বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ্ ৪/১১০, তারীখুল খমীস ১/২৬৬, শারহুয যারক্বানী ‘আলাল মাওয়াহিব ৪/২১৬ ইত্যাদী)
৩. সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল ফযল লুবাবাহ্ কুবরা বিনতে হারিছ আল হিলালিয়্যাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি। তিনি ছিলেন খাতিমুল মুহাজিরীন সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আব্বাস ইবনে ‘আব্দুল মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিতা আহলিয়াহ্। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুনা হযরত ফযল ইবনে আব্বাস  রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি, সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ‘আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি, সাইয়্যিদুনা হযরত ‘উবাইদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি, সাইয়্যিদুনা হযরত মা’বাদ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি, সাইয়্যিদুনা হযরত কুছাম ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুর রহমান ইবনে ‘আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি অর্থাৎ উনারা প্রত্যেকেই ছিলেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল ফযল লুবাবাহ্ কুবরা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা উনার সম্মানিত আওলাদ। সুবহানাল্লাহ! 
৪. সাইয়্যিদাতুনা হযরত লুবাবাহ্ ছুগরা বিনতে হারিছ আল হিলালিয়্যাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি। সুবহানাল্লাহ! তিনি ছিলেন হযরত খালিদ ইবনে ওয়ালীদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার সম্মানিতা আম্মাজান। সুবহানাল্লাহ!
৫. সাইয়্যিদাতুনা হযরত ‘আছমা বিনতে হারিছ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা। কেউ কেউ বলেছেন, তিনিই হচ্ছেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত লুবাবাহ্ ছুগরা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা।
৬. উম্মু হুফাইদ সাইয়্যিদাতুনা হযরত হুযাইলাহ্ বিনতে হারিছ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা। 
৭. উম্মু যিয়াদ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ‘আয্যাহ্ বিনতে হারিছ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা। 
৮. সাইয়্যিদাতুনা হযরত র্বাযাহ্ বিনতে হারিছ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা। উনার সম্মানিত আওলাদ হচ্ছেন হযরত ইয়াযীদ ইবনে আছাম্ম রহমতুল্লাহি আলাইহি।
এই ৭ জন উনাদের মহাসম্মানিত পিতা হচ্ছেন সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছ ইবনে হায্ন আলাইহিস সালাম।
৯. সাইয়্যিদাতুনা হযরত আসমা বিনতে ‘উমায়েস আল খ¦ছ‘আমিয়্যাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি। তিনি সর্বপ্রথম হযরত জা’ফর ইবনে আবী ত্বালিব রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার আহলিয়াহ্ ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! তখন উনার ঘরে সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে জা’ফর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি, সাইয়্যিদুনা হযরত মুহম্মদ ইবনে জা’ফর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আওন ইবনে জা’ফর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি অর্থাৎ উনারা ৩ জন সম্মানিত বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুনা হযরত জা’ফর ইবনে আবী ত্বলিব উনার সম্মানিত শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশের পর সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি উনাকে সম্মানিত শাদী মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন উনার ঘরে সাইয়্যিদুনা হযরত মুহম্মদ ইবনে আবূ বকর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সম্মানিত বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পর ইমামুল আউওয়াল মিন আহ্লি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত র্কারামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি উনাকে সম্মানিত শাদী মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন উনার ঘরে সাইয়্যিদুনা হযরত ইয়াহ্ইয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আওন রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি অর্থাৎ উনারা সম্মানিত বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
১০. সাইয়্যিদাতুনা হযরত সালমা বিনতে ‘উমায়েস আল খ¦ছ‘আমিয়্যাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি। তিনি সর্বপ্রথম আমীরুল মুজাহিদীন, আসাদুল্লাহ ওয়া আসাদু রসূলিহী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ‘আম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত সাইয়্যিদুশ শুহাদা’ আলাইহিস সালাম (সাইয়্যিদুনা হযরত হামযাহ্ ইবনে ‘আব্দুল মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম) উনার সম্মানিত আহলিয়াহ্ ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! তখন উনার ঘরে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আমাতুল্লাহ বিনতে হামায্হ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি সম্মানিত বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুনা হযরত সাইয়্যিদুশ শুহাদা’ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশের পর সাইয়্যিদুনা হযরত শাদ্দাদ ইবনে হাদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি উনাকে সম্মানিত শাদী মুবারক করেন। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে শাদ্দাদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুর রহমান ইবনে শাদ্দাদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি অর্থাৎ উনারা ২ জন সম্মানিত বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
১১. সাইয়্যিদাতুনা হযরত সালামাহ্ বিনতে ‘উমাইস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি।
১২. সাইয়্যিদাতুনা হযরত সুলাইমা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি। সুবহানাল্লাহ!
 এই ৪ জন উনাদের মহাসম্মানিত পিতা হচ্ছেন সাইয়্যিদুনা হযরত ‘উমাইস তিনি।
সে হিসেবে উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিতা বৈপিত্রেয় বোন মোট ১১ জন। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম তিনিসহ উনারা ছিলেন মোট ১২ বোন। সুবহানাল্লাহ! উনাদের প্রত্যেকেরই আম্মাজান ছিলেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত হিন্দ বিনতে ‘আউফ আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! 

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ:
পৃথিবীর কোনো কিতাবে উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের মহাসম্মানিত তারীখ মুবারক উল্লেখ নেই। এটা মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত আফসোসের বিষয় যে, মুসলমানরা উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের মহাসম্মানিত তারীখ মুবারক সংরক্ষণ করতে পারেনি। না‘ঊযুবিল্লাহ!
উল্লেখ্য যে, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি হচ্ছেন একমাত্র যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মাহবূব হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ সম্মানিত নি‘য়ামত মুবারক। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে আখাছ্ছুল খাছভাবে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের সাথে উনার রয়েছেন বেমেছাল হাক্বীক্বী দায়িমী তা‘য়াল্লুক্ব-নিসবত এবং যিয়ারত মুবারক। সুবহানাল্লাহ!
এ প্রসঙ্গে আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
أَخْبِرْنِي عَنِ الْإِحْسَانِ قَالَ أَنْ تَعْبُدَ اللَّهَ كَأَنَّكَ تَرَاهُ فَإِنْ لَمْ تَكُنْ تَرَاهُ فَإِنَّهُ يَرَاكَ.
 অর্থ: “আমাকে ইহসান সম্পর্কে সংবাদ দিন। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তুমি এমনভাবে যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত ইবাদাত মুবারক করো, যেন তুমি উনাকে দেখতে পাচ্ছো। আর যদি তুমি উনাকে দেখতে না পাও, তবে (ধারণা করো যে) তিনি তোমাকে দেখছেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুসলিম শরীফ)
অর্থাৎ ইহ্সানের দুইটি দরজা- ১. যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনাকে দেখে দেখে ইবাদাত-বন্দেগী করতে হবে। ২. যদি তা সম্ভব না হয়, তাহলে ধারণা করতে হবে যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে দেখছেন। দায়িমীভাবে এই দুইটি অবস্থার যে কোনো একটি অবস্থা থাকতে হবে। সুবহানাল্লহ!
আর দায়িমী হুযূরী বলতে যেটা বুঝায়- সেটা হচ্ছে, সবসময় যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনাকে দেখে দেখে ইবাদত-বন্দেগী করা। সুবহানাল্লাহ! আর ২৪ ঘন্টা দায়িমীভাবে তো হুযূরী থাকবেই, তবে নামায উনার মধ্যে বিশেষ হুযূরী থাকবে। সুবহানাল্লাহ!
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মাহবূব হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের সাথে সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে দায়িমীভাবে দেখে দেখে সমস্ত ইবাদত-বন্দেগী করতে হবে। সুবহানাল্লাহ! তাহলে হুযূরী পূর্ণতায় পৌঁছবে, অন্যথায় কস্মিনকালেও হুযূরী পূর্ণতায় পৌঁছবে না।” সুবহানাল্লাহ!
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ১৪৩৯ হিজরী শরীফ উনার ২৩শে রমাদ্বান শরীফ লাইলাতুস সাব্ত শরীফ সম্মানিত তারাবীহ নামায এবং মক্ববূল মুনাজাত শরীফ শেষে ইরশাদ মুবারক করেন, “আজ আমি যখন সম্মানিত ‘ঈশার নামায উনার সম্মানিত নিয়ত মুবারক করলাম, তখন দেখলাম যিনি উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস  সালাম উনার বিশেষ যিয়ারত মুবারক করালেন। সুবহানাল্লাহ! সবসময় তো উনাদের সম্মানিত যিয়ারত মুবারক রয়েছে, তবে এটা বিশেষ যিয়ারত মুবারক। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা সম্মানিত রুকু ও সম্মানিত সিজদাহ মুবারক উনার তাসবীহ্ মুবারকগুলো নিয়ন্ত্রণ মুবারক করে থাকেন। সুবহানাল্লাহ!
স্বাভাবিকভাবে যদি ধরা হয়, তাহলে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের পুরো বিষয়টা নিয়ন্ত্রণ করেন উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি। এরপরে হচ্ছেন বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি।” সুবহানাল্লাহ!
তাহলে যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার, উনার মাহবূব হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে, আখাছ্ছুল খাছভাবে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের সাথে মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার কতো বেমেছাল তা‘য়াল্লুক্ব-নিসবত মুবারক, তা এখান থেকে স্পষ্ট হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ! তিনি দায়িমীভাবেই উনাদের হাক্বীক্বী দায়িমী দীদার মুবারক, তা‘য়াল্লুক্ব-নিসবত মুবারক-এ মশগূল রয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! যার কারণে একমাত্র উনার পক্ষেই সম্ভব হয়েছে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের, আখাছ্ছুল খাছভাবে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মহাম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের মহাসম্মানিত তারীখ মুবারকসমূহ প্রকাশ করা। সুবহানাল্লাহ! তিনি ১৪৩৯ হিজরী শরীফ উনার ৪ঠা শাওওয়াল শরীফ লাইলাতুছ ছুলাছা’ শরীফ হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের প্রত্যেকের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের মহাসম্মানিত তারীখ মুবারকসমূহ ঘোষণা মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! 
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন যে, “উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালত মুবারক প্রকাশের ১৪ বছর পূর্বে ২০শে শাওওয়াল শরীফ ইয়াওমুছ ছুলাছা’ শরীফ বনূ হিলাল গোত্রে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন।” সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের দিবস মুবারক উদ্যাপনের গুরুত্ব-তাৎপর্য ও ফাযায়িল-ফযীলত মুবারক
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত ও পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন,
سَلَامٌ عَلَيْهِ يَوْمَ وُلِدَ وَيَوْمَ يَمُوتُ وَيَوْمَ يُبْعَثُ حَيًّا.
অর্থ: “হযরত ইয়াহইয়া আলাইহিস সালাম উনার প্রতি সম্মানিত সালাম তথা সম্মানিত রহমত, বরকত, সাকীনা, সন্তুষ্টি-রেযামন্দি মুবারক। যেদিন তিনি সম্মানিত বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন, যেদিন তিনি সম্মানিত বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন এবং যেদিন তিনি পুনরুত্থিত হবেন।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা মারইয়াম শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১৫)
হযরত রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত শান মুবারক-এ ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
السَّلَامُ عَلَيَّ يَوْمَ وُلِدْتُ وَيَوْمَ أَمُوتُ وَيَوْمَ أُبْعَثُ حَيًّا
অর্থ: “আমার (হযরত ঈসা রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার) প্রতি সম্মানিত সালাম তথা সম্মানিত রহমত, বরকত, সাকীনা, সন্তুষ্টি-রেযামন্দি মুবারক। যেদিন আমি সম্মানিত বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছি, যেদিন আমি সম্মানিত বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করবো এবং যেদিন আমি পুনরুত্থিত হবো।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা মারইয়াম শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৩)
সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফদ্বয় উনাদের ব্যাখ্যায় আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “আলোচ্য সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফদ্বয় উনাদের মধ্যে বর্ণিত ‘সালাম’ উনার অর্থ মুবারক হচ্ছেন- সর্বপ্রকার সম্মানিত নিয়ামত, রহমত, বরকত, সাকীনাহ, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক।” সুবহানাল্লাহ!
তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, “যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আলোচ্য সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফদ্বয় উনাদের মাধ্যমে সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সবাইকে বিষয়টি জানিয়ে দিলেন যে, মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত মাহবুব ব্যক্তিত্ব মুবারক তথা হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের, হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের এবং হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের সাথে সংশ্লিষ্ট সম্মানিত দিন ও রাত মুবারক-এ সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের উপর আখাচ্ছুল খাছ সর্বপ্রকার সম্মানিত নিয়ামত, রহমত, বরকত, সাকীনাহ, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক বর্ষিত হয়ে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! বান্দা-বান্দী, উম্মতের মধ্যে যারা এ সকল সম্মানিত দিন ও রাত মুবারক উনাদেরকে তা’যীম-তাকরীম মুবারক করবেন, উনারাই এ সকল আখাচ্ছুল খাছ সর্বপ্রকার সম্মানিত নি‘য়ামত, রহমত, বরকত, সাকীনাহ, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক লাভে ধন্য হবেন।” সুবহানাল্লাহ!
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اَلنَّبِـىُّ اَوْلـٰى بِالْمُؤْمِنِيْنَ مِنْ اَنْفُسِهِمْ وَاَزْوَاجُهۤٗ اُمَّهٰتُهُمْ.
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন মু’মিন উনাদের নিকট উনাদের জানের চেয়ে অধিক প্রিয়, উনাদের মহাসম্মানিত পিতা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং উনার মহাসম্মানিতা ‘হযরত আযওয়াজুম মুত্বহহারাত’ (হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম) উনারা হচ্ছেন সমস্ত মু’মিন উনাদের মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহিন্নাস সালাম।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৬)
কাজেই, উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন একমাত্র মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মাহবূব হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারাসহ, সাইয়্যিদুনা হযরত রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ইয়াহইয়া আলাইহিস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারাসহ সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িানাতবাসী সকলেরই মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!  এখন বলার বিষয় হচ্ছে সাইয়্যিদুনা হযরত রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ইয়াহইয়া আলাইহিস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের দিন যদি আখাছ্ছুল খাছ সর্বপ্রকার সম্মানিত নিয়ামত, রহমত, বরকত, সাকীনাহ, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক বর্ষিত হয়, তাহলে উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের দিন ও রাত মুবারক-এ কতো বেমেছাল আখাছ্ছুল খাছ সর্বপ্রকার সম্মানিত নি‘য়ামত, রহমত, বরকত, সাকীনাহ, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক বর্ষিত হয়ে থাকেন, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত ত্বরীক্বত, ইমামু আইম্মাতি আহলিস সুন্নাতি ওয়াল জামায়াত, মুত্বহ্হার, মুত্বহহির, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার সম্মানার্থে আমাদের সবাইকে উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের দিন ও রাত মুবারক উনাকে যথাযথ আদব ও তা‘যীম-তাকরীম মুবারক উনাদের সাথে পালন করার তাওফীক্ব দান করুন। (আমীন!)
সম্মানিত ও পবিত্র কুনিয়াত মুবারক
উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র কুনিয়াত মুবারক ছিলেন ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম।’ সুবহানাল্লাহ! আর উম্মুল মাসাকীন (أُمُّ المساكين) উনার অর্থ মুবারক হচ্ছেন- গরীব-মিসকীন, ফক্বীর-ফুক্বারা, নিঃস-অসহায়, সর্বহারা-দরিদ্রদের মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
وهي أُمُّ المساكين كُنِّيتْ بذلك في الجاهلية لرأفتها بهم ورحمتها وإحسانها إليهم
অর্থ: “আর তিনি হচ্ছেন ‘উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম’। সুবহানাল্লাহ! গরীব-মিসকীন, ফক্বীর-ফুক্বারা, নিঃস-অসহায়, সর্বহারা-দরিদ্রদের প্রতি উনার সীমাহীন ¯েœহ-মমতা, রহম-করুণা ও দয়া-ইহসান মুবারক উনাদের  কারণে উনাকে জাহিলী যুগেই এই সম্মানিত ও পবিত্র কুনিয়াত মুবারক-এ সম্বোধন মুবারক করা হতো।” সুবহানাল্লাহ! (আল মুখ্তাছরুল কাবীর ফী সীরাতির রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১/৫৯)
কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে,
وَهِيَ أُمُّ الْمَسَاكِينِ كَانَتْ تُسَمَّى بِهِ فِي الْجَاهِلِيَّةِ
অর্থ: “আর তিনি হচ্ছেন ‘হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম।’ সুবহানাল্লাহ! জাহিলী যুগেই উনাকে এই সম্মানিত ও পবিত্র কুনিয়াত মুবারক-এ আহ্বান মুবারক করা হতো।” সুবহানাল্লাহ! (মুস্তাদরকে হাকিম)
আল্লামা দিয়ার বাক্রী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘তারীখুল খমীস শরীফ’ উনার মধ্যে বলেন,
وكانت تسمى فى الجاهلية أمّ المساكين للين قلبها
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র অন্তর মুবারক উনার সম্মানিত দয়া-অনুগ্রহ, মায়া-মমতা ও কোমলতা মুবারক উনার কারণে জাহিলী যুগ থেকেই উনাকে ‘হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম’ সম্মানিত ও পবিত্র কুনিয়াত মুবারক-এ আহ্বান করা হতো।” সুবহানাল্লাহ! (তারীখুল খমীস শরীফ ১/৪১৭)
আল্লামা ইবনে জাওযী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন,
وكانت تسمى في الجاهلية أم المساكين،
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন আল খমিসাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম উনাকে জাহিলী যুগ থেকেই ‘হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম’ বলে আহ্বান মুবারক করা হতো।” সুবহানাল্লাহ! (তারীখুল উমাম ওয়াল মুলক ৩/১৬১)
কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে,
وكانت تُسمى في الجاهلية أم المساكين لبرها بهم وإطعامها لهم.
অর্থ: “গরীব-মিসকীন, ফক্বীর-ফুক্বারা, নিঃস-অসহায়, সর্বহারা-দরিদ্রদের প্রতি অত্যধিক দানশীলতা, সদ্বব্যবহার এবং তাদেরকে অধিক পরিমাণে খাদ্য খাওয়ানোর কারণে উনাকে জাহিলী যুগ থেকেই ‘হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম’ বলে সম্বোধন মুবারক করা হতো।” সুবহানাল্লাহ! (আল ক্বওলুল মুবীন ফী সীরতে সাইয়্যিদুল মুরসালীন ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে,
زَيْنَبَ بنتَ خُزَيْمَةَ، وَهِيَ أُمُّ الْمَسَاكِينِ، سُمِّيَتْ لِكَثْرَةِ إِطْعَامِهَا الْمَسَاكِينَ،
অর্থ: “উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল খমিসাহ্ আলাইহাস সালাম তিনিই হচ্ছেন ‘হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম।’ সুবহানাল্লাহ! গরীব-মিসকীন, ফক্বীর-ফুক্বারা, নিঃস-অসহায়, সর্বহারা-দরিদ্রদের অধিক পরিমাণে খাদ্য খাওয়ানোর কারণে উনাকে ‘হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম’ বলে সম্বোধন মুবারক করা হয়।” সুবহানাল্লাহ! (আল মু‘জামুল কাবীর)
কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে, 
تعرف بأم المساكين سميت بها لكثرة إطعامها المساكين
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু‘মিনীন আল খামিসাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি ‘হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! গরীব-মিসকীন, ফক্বীর-ফুক্বারা নিঃস-অসহায়, সর্বহারা-দরিদ্রদেরকে অধিক পরিমাণে খাদ্য খাওয়ানোর কারণে উনাকে ‘হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম’ এই সম্মানিত ও পবিত্র কুনিয়াত মুবারক-এ সম্বোধন মুবারক করা হতো।” সুবহানাল্লাহ! (মা’রিফাতুছ ছাহাবাহ)
 উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম তিনি যে জাহিলী যুগ থেকে সকলের মাঝে ‘হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম’ কুনিয়াত মুবারক-এ সকলের মাঝে পরিচিত ছিলেন, এই বিষয়টি পৃথিবীর সমস্ত সীরাতগ্রন্থসমূহে উল্লেখ রয়েছে। সুবহানাল্লাহ! তাহলে উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কয়িনাতবাসী সকলের চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত শৈশবকাল মুবারক
উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম তিনি উনার মহাসম্মানিত শৈশবকাল মুবারক উনার মহাসম্মানিত পিতা-মাতা আলাইহিমাস সালাম উনাদের সাথে অতিবাহিত করেন। সুবহানাল্লাহ! উনার সহোদর কোনো ভাই-বোন ছিলেন কিনা, এ বিষয়ে কিতাবে কোনো বর্ণনা পাওয়া যায় না।

সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ-
উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম তিনি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার সূচনালগ্নেই সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!

 মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ:
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উম্মুল মু’মিনীন  আর রবি‘য়াহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ইবনাতু আবীহা আলাইহাস সালাম উনার পর ৩য় হিজরী শরীফ উনার ২৬শে যিলহজ্জ শরীফ লাইলাতু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম উনাকে উম্মুল মু’মিনীন হিসেবে গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে উম্মুল মু’মিনীন আল খামিসাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম উনার বয়স মুবারক ছিলেন ৩০ বছর ২ মাস ৬ দিন। তিনি ৩ মাস ১ দিন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেন। সুবহানাল্লাহ! 

উম্মতদেরকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক লাভের তা’লীম দান:
এ প্রসঙ্গে হযরত ইমাম ত্ববারনী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘আল মু’জামুল কাবীর শরীফ’ উনার মধ্যে একখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উল্লেখ করেন-
عَنْ حُرَيْثِ بْنِ الأَبَحِّ السَّلِيحِىِّ أَنَّ امْرَأَةً مِنْ بَنِى أَسَدٍ قَالَتْ كُنْتُ يَوْمًا عِنْدَ اُمِّ الْـمُؤْمِنِيْنَ الْـخَامِسَةِ سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ اُمِّ الْـمَسَاكِيْنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ زَيْنَبَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) امْرَأَةِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَنَحْنُ نَصْبُغُ ثِيَابًا لَهَا بِمَغْرَةٍ فَبَيْنَا نَحْنُ كَذَلِكَ إِذْ طَلَعَ عَلَيْنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَلَمَّا رَأَى الْمَغْرَةَ رَجَعَ فَلَمَّا رَأَتْ ذَلِكَ زَيْنَبُ عَلِمَتْ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم- قَدْ كَرِهَ مَا فَعَلَتْ فَأَخَذَتْ فَغَسَلَتْ ثِيَابَهَا وَوَارَتْ كُلَّ حُمْرَةٍ ثُمَّ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- رَجَعَ فَاطَّلَعَ فَلَمَّا لَمْ يَرَ شَيْئًا دَخَلَ.
অর্থ: “হযরত হুরাইছ ইবনুল আবাহ্ সালীহী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সূত্রে বর্ণিত। বনী আসাদ গোত্রের একজন মহিলা ছাহাবীয়া রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি বলেন, একদিন আমি উম্মুল মু‘মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম উনার নিকট ছিলাম। আমরা উনার জন্য একখানা সম্মানিত কাপড় মুবারক-এ লাল গেরুয়া রং লাগাচ্ছিলাম, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সেখানে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নিয়ে গেরুয়া রং দেখে চলে গেলেন। উম্মুল মু‘মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম তিনি বিষয়টা খেয়াল করলেন যে, কাপড় থেকে লাল রং তুলে ফেললে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করবেন। সুবহানাল্লাহ! তাই তিনি সেই কাপড়টা ধুয়ে সবটুকু লাল রং উঠিয়ে ফেলেন। অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাশরীফ মুবারক আনলেন, এনে লাল রং না দেখে সম্মানিত সন্তুষ্টি মুবারক প্রকাশ করে (সম্মানিত হুজরা শরীফ উনার মধ্যে) প্রবেশ করেন।” সুবহানাল্লাহ! (আবূ দাউদ শরীফ, আল আহাদ ওয়াল মাছানী ৫/৪১৩, আল মু’জামুল কাবীর লিত্ব¡ ত্ববারনী ২৪/৫৭ ইত্যাদী)
উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম তিনি এ সম্মানিত ওয়াক্বেয়াহ মুবারক দ্বারা সমস্ত সৃষ্টি জগতকে এই বিষয়টিই শিক্ষা দিলেন যে, সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের জন্য ফরযে আইন হচ্ছে- দায়িমীভাবে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক ত্বলব করা এবং তিনি যেই সম্মানিত ‘আমল মুবারক করলে সম্মানিত সন্তুষ্টি মুবারক প্রকাশ করবেন, সবসময় সেই সম্মানিত আমল মুবারক করা। সুবাহানাল্লাহ!

সমস্ত জিন-ইনসান ও কায়িনাতবাসীর প্রতি উনার সম্মানিত দয়া-ইহসান ও করুণা মুবারক
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
 فكانت تحب الخير، وتشعر بسعادة كبيرة فى العطف على المساكين والإحسان إليهم، لذا سميت بأم المساكين. 
وقد كنيت بهذه الكنية فى الجاهلية، حيث عرفت واشتهرت بالإنفاق والكرم على الفقراء والمساكين، والعطف عليهم والرأفة بهم،  وبعد دخولها الإسلام زاد حنانها وتصدقها عليهم، فكانت عليها السلام لا يأتيها دينار ولا درهم إلا أنفقته على الفقراء والمساكين، وعلى إطعامهم وكسوتهم. وذكر أنها كانت تبذل قصارى جهدها فى رعاية الأيتام والأرامل وتفقد شؤونهم، ورعايتهم، وقضاء حوائجهم.
অর্থ: “উম্মুল মু‘মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম তিনি মহানুভবতা ও উদারতাকে অত্যন্ত পছন্দ মুবারক করতেন এবং গরীব-মিসকীন, ফক্বির-ফুক্বারা, নিঃস্ব-অসহায়, সর্বহারা-দরীদ্রদের প্রতি সহানুভূতি, দয়া-করুণা ও ইহসান করার মাধ্যমে কিভাবে তাদের অনেক বড় উন্নতি করা যায় তা নিয়ে তিনি সবসময় ফিকির মুবারক করতেন। সুবহানাল্লাহ! এ কারণে উনাকে ‘হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম’ বলে সম্বোধন মুবারক করা হয়। সুবহানাল্লাহ! 
আর জাহিলী যুগ থেকেই উনাকে এই সম্মানিত ও পবিত্র কুনিয়াত মুবারক-এ সম্বোধন মুবারক করা হতো। সুবহানাল্লাহ! কেননা তিনি গরীব-মিসকীন, ফক্বীর-ফুক্বারা, নিঃস-অসহায়, সর্বহারা-দরিদ্রদেরকে অত্যধিক দান-খয়রাত, তাদের প্রতি সীমাহীন উদারতা, দানশীলতা, বদান্যতা, দয়া-ইহসান, করুণা এবং ¯েœহ-মমতার জন্য সকালের মাঝে পরিচিত ও প্রসিদ্ধ ছিলেন। সুবহানাল্লাহ!  সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করার পর গরীব-মিসকীন, ফক্বীর-ফুক্বারা, নিঃস-অসহায়, সর্বহারা-দরিদ্রদের প্রতি উনার দয়া-অনুগ্রহ ও দান মুবারক আরো বৃদ্ধি পায়। সুবহানাল্লাহ! যখনই উম্মুল মু‘মিনীন আল খ¦মিসাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম উনার নিকট কোনো দীনার-দিরহাম আসতো, তখনই তিনি তা ফক্বীর-ফুক্বারা, গরীব-মিসকীন, নিঃস্ব-অসহায়, সর্বহারা-দরীদ্রদেরকে দান করে শেষ করে দিতেন, তাদের খাবার-দাবার ও পোষাক-পরিচ্ছদের জন্য খরচ করে শেষ করে দিতেন। সুবহানাল্লাহ! 
আরো উল্লেখ্য যে, নিশ্চয়ই উম্মুল মু‘মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম তিনি উনার সর্বশক্তি দিয়ে গরীব-মিসকীন, ফক্বীর-ফুক্বারা, নিঃস্ব-অসহায়, সর্বহারা-দরিদ্র এবং বিধবা, অভাবী ও  দুর্বলদের পৃষ্ঠপোষকতা ও তত্ত্বাবধান মুবারক করতেন এবং তিনি তাদের অবস্থা পরিদর্শন করতেন, লালন-পালন করতেন এবং তাদের সমস্ত প্রকার চাহিদা ও প্রয়োজন পূরণ করতেন।” সুবহানাল্লাহ!
তিনি হচ্ছেন মুত্বহ্হার এবং মুত্বহহির
মুজাদ্দিদে আ’যম, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “আমি একটি বিষয় ফিকির করতে থাকলাম যে, হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত শান মুবারক-এ বলা হয় ‘মা’ছূম’ তথা নিস্পাপ। হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের সম্মানিত শান মুবারক-এ বলা হয় ‘মাহ্ফূয’ তথা সংরক্ষিত। তাহলে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত শান মুবারক-এ কী বলা হবে? আমি বিষয়টি যখন ফিকির করতে থাকলাম, তখন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, 
فَاَنَا وَاَهْلُ بَيْتِىْ مُطَهَّرُوْنَ مِنَ الذُّنُوْبِ.
অর্থ: ‘আমি এবং আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম আমরা সকলে যুনূব তথা সমস্ত প্রকার ছগীরা-কবীরা এবং যাবতীয় অপছন্দনীয় কাজ থেকে পূত-পবিত্র।’ সুবহানাল্লাহ!
আমার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত শান মুবারক-এ مُطَهَّرٌ (মুত্বহ্হার) তথা পূত-পবিত্র এবং مُطَهِّرٌ (মুত্বহ্হির) তথা পূত-পবিত্রতাদানকারী বলতে হবে। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করলেন, আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত শান মুবারক-এ স্বয়ং যিনি খালিক্ব¡ মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত ত্বহারাত তথা পবিত্রতা মুবারক উনার বিষয়টি সম্পৃক্ত করেছেন। সুবহানাল্লাহ! 
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, 
اِنَّـمَا يُرِيْدُ اللهُ لِيُذْهِبَ عَنْكُمُ الرِّجْسَ اَهْلَ الْبَيْتِ وَيُـطَـهِّـرَكُـمْ تَطْهِيْرًا.
অর্থ: ‘হে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম! নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি চান আপনাদের থেকে সমস্ত প্রকার অপবিত্রতা দূর করে পবিত্র করার মতো পবিত্র করতে। অর্থাৎ তিনি আপনাদেরকে পবিত্র করার মতো পবিত্র করেই সৃষ্টি মুবারক করেছেন।’ সুবহানাল্লাহ!
আমি আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে আমার নিজের অন্তর্ভুক্ত করে নিয়েছি। সুবহানাল্লাহ! তাই আমার এবং আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত শান মুবারক-এ مُطَهَّرٌ (মুত্বহ্হার) তথা পূত-পবিত্র এবং مُطَهِّرٌ (মুত্বহ্হির) তথা পূত-পবিত্রতাদানকারী বলতে হবে।” সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
اَنَّ النَّبِـىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَقُوْلُ نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ طَهَّرَهُمُ اللهُ مِنْ شَجَرَةِ النُّبُوَّةِ وَمَوْضِعِ الرِّسَالَـةِ وَمُـخْتَلِفِ الْمَلَائِكَةِ وَبَيْتِ الرَّحْمَةِ وَمَعْدِنِ الْعِلْمِ.
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সবসময় ইরশাদ মুবারক করতেন। আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে (আমাদেরকে) সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক উনার বৃক্ষ, সম্মানিত রিসালাত মুবারক উনার স্থান, বিভিন্ন ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের, উনাদের দ্বারা সম্মানিত খিদমত মুবারক, সম্মানিত রহমত মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারক উনার খনি মুবারক (ইত্যাদি সমস্ত কিছু) থেকে পবিত্র রেখেছেন, ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী) করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে দুররে মানছূর ৬/৬০৬, তাফসীরে ইবনে আবী হাতিম ৯/৩১৩৩)
অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা একমাত্র মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের মুহতাজ এবং উনাদের সম্মানার্থে উনারা সম্মানিত এবং উনাদের প্রতিই উনারা দায়েমীভাবে রুজু। সুবহানাল্লাহ! ফলে উনারা সমস্ত কিছু থেকেই পবিত্র, ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী)। সুবহানাল্লাহ! কাজেই সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক, সম্মানিত রিসালাত মুবারক, বিভিন্ন ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের, উনাদের দ্বারা সম্মানিত খিদমত মুবারক, সম্মানিত রহমত মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারক উনার খনি মুবারক ইত্যাদি বরকতময় নিয়ামত মুবারক উনাদের প্রতি রুজু হওয়ার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের কোন সুযোগ নেই। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের কারণেই সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক, সম্মানিত রিসালাত মুবারক, সমস্ত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা, সম্মানিত রহমত মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারকসহ সমস্ত কিছুই ফযীলতপ্রাপ্ত হয়েছেন, সম্মানিত হয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ!
সুতরাং উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন মুত্বহ্হার, মুত্বহহির। সুবহানাল্লাহ! তাহলে উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ:
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহহার, মুত্বহহির, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম তিনি ৪র্থ হিজরী শরীফ উনার ২৭শে সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ ইয়াওমুস সাব্ত শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি দুনিয়ার যমীনে ৩০ বছর ৫ মাস ৭ দিন সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন।” সুবহানাল্লাহ!
উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার পর হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম তিনিই সর্বপ্রথম মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!  
এ সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
فماتت بالمدينة أول نسائه موتا ولم يصب رسول الله صلى الله عليه وسلم منها ولدا.
অর্থ: “অতঃপর হযরত উম্মাহাতুল মু‘মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্য থেকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যে উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল খ¦মিসাহ্ আলাইহাস সালাম তিনিই সর্বপ্রথম মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহনাল্লাহ! উনার মাধ্যমে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কোনো মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিমুস সালাম, আলাইহিন্নাস সালাম উনারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেননি।” (সীরাতে ইবনে ইসহাক্ব)
উল্লেখ্য যে, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে তিনিই সবচেয়ে কম সময় সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত ছোহবত মুবারক লাভ করেছেন।
সম্মানিত জানাযা উনার নামায মুবারক
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত দিক-নির্দেশনা মুবারক অনুযায়ী উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত গোসল মুবারক ও সম্মানিত কাফন করা হয়। তারপর স্বয়ং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজে উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত জানাযা উনার নামায মুবারক পড়ান। সুবহানাল্লাহ! 
এ সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
وتوفيت في حياة النبي صلى الله عليه وسلم  وصلى عليها
অর্র্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত অবস্থান করা অবস্থায় উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! সয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার সম্মানিত ছলাতুল জানাযা মুবারক পড়ান। সুবহানাল্লাহ! (মা‘রিফাতুছ ছাহাবা)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ উনার মধ্যে রাখা:
স্বয়ং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহু হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজেই উনার স্বীয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মাগফিরহ্ মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাত মুবারক-এ) উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম উনাকে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ উনার মধ্যে রাখেন। সুবহানাল্লাহ! 
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
أم المساكين رضي الله عنها و أول من دفن من أمهات المؤمنين في المدينة
অর্থ: “হযরত উম্মাহাতুল মু‘মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে উম্মুল মু‘মিনীন আল খামিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফই সর্বপ্রথম মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যে করা হয়।” সুবহানাল্লাহ! (নিসাউ হাওলির রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে,
فدفنها رسول الله صلّى الله عليه وسلم بالبقيع بعد ما صلّى عليها.
অর্থ: “অত:পর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উম্মুল মু‘মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত জানাযা মুবারক উনার নামায মুবারক পড়ানোর পর উনাকে সম্মানিত জান্নাতুল বাক্বী শরীফ-এ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ উনার মধ্যে রাখেন।” সুবহানাল্লাহ! (আল ইমতা‘উল আসমা’)

0 Comments: