ত্বহিরা, ত্বইয়িবাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামিন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছামিনাহ আলাইহাস সালাম উনার সীরাত মুবারক

ত্বহিরা, ত্বইয়িবাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামিন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছামিনাহ আলাইহাস সালাম উনার সীরাত মুবারক



খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত সূরা আহযাব শরীফ উনার ৬ নং সম্মানিত আয়াত শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন,
النَّبِيُّ أَوْلَىٰ بِالْمُؤْمِنِينَ مِنْ أَنفُسِهِمْ وَأَزْوَاجُهُ أُمَّهَاتُهُمْ
অর্থ : নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মু’মিনগণ উনাদের নিকট উনাদের জীবনের চেয়ে সর্বাধিক প্রিয়। (তিনি মু’মিনগণ উনাদের অভিভাবক এবং পিতৃতুল্য) আর উনার মহাসম্মানিতা হযরত আযওয়াজুম মুত্বহহারাহ আলাইহিন্নাস সালাম উনারা হচ্ছেন মু’মিনগণ উনাদের মাতা তথা উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম। সুবহানাল্লাহ।
পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত রয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ الْـجَنَّةَ تَـحْتَ أقْدَامِ الأُمَّهَاتِ
অর্থ: হযরত আনাস বিন মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, সন্তানের জান্নাত মায়ের ক্বদম তলে। (জামিউল আহাদিছ, মসনদে শিহাব)
অর্থাৎ হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা সমস্ত মু’মিনের মহাসম্মানিত মাতা। আর উনাদের সন্তুষ্টি রেযামন্দি মুবারক এবং তায়াল্লুক নিসবত মুবারক উনার উপর মু’মিনদের নাজাত নির্ভরশীল। উনারা যাদেরকে রেযামন্দিপ্রাপ্ত হিসেবে সত্যায়ন করবেন, উনারাই মক্ববূল হিসেবে পরিগণিত হবেন। অন্য কথায়, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের প্রতি যারা সর্বোচ্চ হুসনে যন বা সুধারণা পোষণ করেন, উনাদের ছানা-ছিফত মুবারক করেন, উনাদের সাওয়ানেহ উমরী মুবারক বা জীবনী মুবারক বেশি বেশি আলোচনা-পর্যালোচনা করেন, যে বা যারা উনাদের খালিছ সন্তুষ্টি রেযামন্দি মুবারক হাছিল করতে পারবেন, উনারাই উত্তম বা শ্রেষ্ঠ হিসেবে মনোনীত হবেন। আর এ জন্যই উনাদের সাওয়ানেহ উমরী মুবারক বা জীবনী মুবারক জানা প্রত্যেকের জন্য অতীব জরুরী।
সর্বাধিক প্রাধান্যপ্রাপ্ত, বিশুদ্ধ এবং দলীলসমৃদ্ধ মতে, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা তেরজন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারকে তাশরীফ মুবারক গ্রহণের ধারাবাহিকতায় অষ্টম হচ্ছেন ত্বহিরা, ত্বইয়িবাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামিন, উম্মুল মুমিনীন হযরত আছ ছামিনাহ আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ। আর চলমান পবিত্র যিলক্বদ শরীফ মাস ত্বহিরা, ত্বইয়িবাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামিন, উম্মুল মুমিনীন হযরত আছ ছামিনাহ আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার সম্মানিত মাস। সঙ্গত কারণেই এ সম্মানিত মাসে উনার সাওয়ানেহ উমরী মুবারক বা উনার পবিত্র সীরাত মুবারক বেশি বেশি আলোচনা করা প্রয়োজন। তাই, ত্বহিরা, ত্বইয়িবাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামিন, উম্মুল মুমিনীন হযরত আছ ছামিনাহ আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র সীরাত মুবারক ধারাবাহিকভাবে আলোচনা করা হবে। ইনশায়াল্লাহ।

পবিত্র নাম মুবারক

একথা দিবালোকের ন্যায় সত্য যে, ত্বহিরা, ত্বইয়িবাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামিন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছামিনাহ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মূল নাম মুবারক হচ্ছেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত জুওয়াইরিয়া আলাইহাস সালাম।  
বলাবাহুল্য যে, সম্মানিত ব্যক্তিত্ব উনাদেরকে উনাদের নাম মুবারকে বারবার সম্বোধন করা আদবের খিলাফ। উনাদেরকে উনাদের লক্বব মুবারকে সম্বোধন করতে হয়। এটাই আদব এবং রেযামন্দি লাভের কারণ। কেননা মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক,
لَّا تَجْعَلُوا دُعَاءَ الرَّسُولِ بَيْنَكُمْ كَدُعَاءِ بَعْضِكُم بَعْضًا
অর্থ: “তোমরা পরস্পরকে যেভাবে সম্বোধন করো, সেভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্বোধন করো না।” (পবিত্র সুরা নূর শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৬৩)
অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সাধারণ মানুষের ন্যায় আহবান করা তথা বারবার উনার পবিত্র নাম মুবারকে উনাকে সম্বোধন করা যাবে না। এই পবিত্র আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় বলা হয়, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খাছ নিসবতপ্রাপ্ত উনাদেরকেও উনাদের পবিত্র নাম মুবারকে বারবার সম্বোধন করা নিষিদ্ধ। উনাদেরকে উনাদের লক্বব মুবারকে সম্বোধন করতে হবে। 
তাই, ত্বহিরা, ত্বইয়িবাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামিন, উম্মুল মুমিনীন হযরত আছ ছামিনাহ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মূল নাম মুবারক উল্লেখ না করে সর্বত্র ‘উম্মুল মুমিনীন হযরত আল আশিরাহ আলাইহাস সালাম’ উল্লেখ করা হবে।

সম্মানিত পিতা আলাইহিস সালাম

ত্বহিরা, ত্বইয়িবাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামিন, উম্মুল মুমিনীন হযরত আছ ছামিনাহ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত পিতা আলাইহিস সালাম সম্পর্কে কিতাবে উল্লেখ করা হয়,
أبوها الصحابي الجليل وسيد بني المصطلق واسمه حضرت الـحارث بن أبي ضرار رضى الله تعالى عنه
অর্থ: ত্বহিরা, ত্বইয়িবাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামিন, উম্মুল মুমিনীন হযরত আছ ছামিনাহ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত পিতা আলাইহিস সালাম তিনি বিশিষ্ট ছাহাবী এবং বণী মুস্তালিকের সাইয়্যিদ হযরত হারিস ইবনে আবী দ্বরার রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু।

পবিত্র নসব মুবারক:

তেরজন হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে দুইজন হযরত হারূন আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত বংশধর। অর্থাৎ, মহাসম্মানিত দুইজন  হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিমাস সালাম উনারা ইহুদী সম্প্রদায় হতে তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেছেন। আর দুইজন তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেছেন নাছারা সম্প্রদায় হতে। উনাদেরই একজন হলেন ত্বহিরা, ত্বইয়িবাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামিন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছামিনাহ আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ।
ত্বহিরা, ত্বইয়িবাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামিন, উম্মুল মুমিনীন হযরত আছ ছামিনাহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত নসব মুবারক সম্পর্কে বলা হয়,
هي جويرية عليها السلام بنت الحارث بن أبي ضرار بن حبيب بن عائذ بن مالك من خزاعة ،
অর্থ: সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামিন, উম্মুল মুমিনীন হযরত আছ ছামিনাহ আলাইহাস সালাম বিনতে হারিছ ইবনে আবী দ্বরার ইবনে হাবীব ইবনে আয়িদ ইবনে মালিক আলাইহিমুস সালাম।
মূলত, ত্বহিরা, ত্বইয়িবাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামিন, উম্মুল মুমিনীন হযরত আছ ছামিনাহ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত নসব মুবারক উনার ১২তম ধারা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ১৭তম পূর্বপুরুষ হযরত ইলইয়াস আলাইহিস সালাম উনার সাথে মিলিত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ।

পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ:

অত্যন্ত আফসুস এবং পরিতাপের বিষয় হলো, প্রচলিত কিতাবাদিসমূহে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক সম্পর্কে কোন আলোচনাই নেই। কারো কারো পবিত্র বিছালী শান মুবারক সম্পর্কে সামান্য আলোচনা থাকলেও অধিকাংশই বিভ্রান্তিকর এবং ভূল।
সাইয়্যিদুল আউলিয়া, সুলত্বানুল ‘আরিফীন, ইমামুছ ছিদ্দীক্বীন, ইমামুল আইম্মাহ, মুজাদ্দিদে আ’যম, ক্বইয়ূমুয যামান, আল জাব্বারিউল আউওয়াল, আল ক্বউইয়্যুল আউওয়াল, সুলত্বানিন নাছীর, হাবীবুল্লাহ, জামি‘উল আলক্বাব, আহলে বাইতে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মুবারক শানে বেমেছাল বেনযীর তাজদীদ মুবারক করেছেন। তিনি উনার বেমেছাল তায়াল্লুক-নিসবত মুবারকের উম্মেষ ঘটিয়ে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক ও পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশের সন, তারিখ ও বারসহ প্রতিটি বিষয় সূক্ষ¥াতি সূক্ষ¥ ভাবে প্রকাশ করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
সুলত্বানিন নাছীর, হাবীবুল্লাহ, জামি‘উল আলক্বাব, আহলে বাইতে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম বলেন, ত্বহিরা, ত্বইয়িবাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামিন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছামিনাহ আলাইহাস সালাম তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে  সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালত মুবারক প্রকাশের ২ বছর পূর্বে ১৩ যিলক্বদ শরীফ ইয়াওমুল খমীস শরীফ পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!

সম্মানিত শৈশবকাল মুবারক

ত্বহিরা, ত্বইয়িবাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামিন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছামিনাহ আলাইহাস সালাম তিনি বনু মুস্তালিক গোত্রে পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। সঙ্গত কারণেই উনার সম্মানিত শৈশবকাল মুবারক এ গোত্রেই অতিবাহিত হয়েছেন। বলা হয়, এ গোত্র পবিত্র মক্কা শরীফ উনার অধিবাসী না হলেও পবিত্র মক্কা শরীফ উনার নিকটবর্তী হওয়ার কারণে এ গোত্রের অধিবাসীগণ কুরাঈশদের দ্বারা প্রভাবিত ছিলেন।
উল্লেখ্য যে, ত্বহিরা, ত্বইয়িবাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামিন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছামিনাহ আলাইহাস সালাম উনার পিতা ছিলেন নাছারা ধর্ম অনুসরনকারী গোত্রের সাইয়্যিদ। সঙ্গত কারণেই ত্বহিরা, ত্বইয়িবাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামিন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছামিনাহ আলাইহাস সালাম তিনি এবং উনার পরিবার হযরত ঈসা রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার দ্বীন এবং ইনজিল শরীফ উনাদের উপর পূর্ণাঙ্গ দায়িম-কায়িম ছিলেন। এ বিষয়ে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই।
মূলত, ত্বহিরা, ত্বইয়িবাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামিন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছামিনাহ আলাইহাস সালাম উনার অনন্য খুছুছিয়াত মুবারক উনাদের কারণে উনার পিতাসহ সকলেই উনাকে সর্বাধিক মুহব্বত করতেন। উনাকে তা’যীম-তাকরীম করতেন। আর এরুপ হওয়াটাই স্বাভাবিক। কারণ, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা পূর্ব হতেই মনোনীত। 

শাদী মুবারক

অল্প বয়সে কন্যা সন্তানদেরকে পাত্রস্থ করা তথা বিবাহ দেয়ার রীতি ছিল আহলে কিতাব ও সম্ভ্রান্ত আরব উনাদের প্রতীক স্বরূপ। বর্তমান সময়ে নিকৃষ্ট শ্রেণীর কিছু লোক রয়েছে, যারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার বিরোধীতা করতে বাল্য বিবাহের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালায়। প্রকৃতপক্ষে বাল্য বিবাহের বিরোধীতাকারীরা একদিকে ইসলাম বিদ্বেষী, অপর দিকে এরা চারিত্রিক দোষে চরমভাবে দোষী। এদের সর্ব প্রকার কার্যক্রম হতে সাবধান থাকা সকল মুসলমানের জন্য অত্যাবশকীয়।
ত্বহিরা, ত্বইয়িবাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামিন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছামিনাহ আলাইহাস সালাম উনার প্রথম শাদী মুবারক সম্পর্কে কিতাবে উল্লেখ করা হয়,
كان زوجها قبل أن يسلم ابن عمها مسافع بن صفوان. 
অর্থ: ত্বহিরা, ত্বইয়িবাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামিন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছামিনাহ আলাইহাস সালাম তিনি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম প্রকাশ করার পূর্বে উনাকে উনার চাচাতো ভাই মাসাফিহ ইবনে ছফওয়ান ইবনে আবী শাফর শাদী করে। (ত্ববাক্বাত)
মূলত, ত্বহিরা, ত্বইয়িবাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামিন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছামিনাহ আলাইহাস সালাম উনার দুনিয়াবী হায়াত মুবারক অল্প থাকা অবস্থাতেই উনার প্রথম শাদী সম্পন্ন হয়। উনার চাচাতো ভাইয়ের সাথে উনার প্রথম শাদী সম্পন্ন  হয়েছিল। কিন্তু বনু মুস্তালিকের জিহাদে সে নিহত হয়।

সুসংবাদ মুবারক

ত্বহিরা, ত্বইয়িবাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামিন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছামিনাহ আলাইহাস সালাম তিনি মহাসম্মানিত উম্মুল মু’মিনীন হিসেবে পূর্ব হতেই মনোনীত। যার কারণে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে তিনি সুসংবাদ মুবারক লাভ করেন। আর সে সুসংবাদ সমূহের মধ্যে উনার কয়েকখানা স্বপ্ন মুবারক অন্যতম। এ সম্পর্কে কিতাবে উল্লেখ করা হয়,
عن هشام بن عروة، عن أبيه قال: قالت جويرية بنت الحارث: رأيت قبل قدوم النبي صلى الله عليه وسلم بثلاث ليال كأن القمر يسير من يثرب حتى وقع في حجري، فكرهت أن أخبر به أحداً من الناس، حتى قدم رسول الله صلى الله عليه وسلم، فلما سبينا رجوت الرؤيا.
অর্থ: হযরত হিশাম ইবনে উরওয়াহ রহমতুল্লাহি আলাইহি হতে বর্ণিত। তিনি উনার পিতা হতে বর্ণনা করে বলেন, ত্বহিরা, ত্বইয়িবাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামিন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছামিনাহ আলাইহাস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, (নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বনু মুস্তালিক জিহাদে আসার পূর্বে) আমি তিন রাত স্বপ্ন মুবারকে দেখলাম, মদীনা শরীফ হতে চাঁদ এসেছে এবং তা আমার মুবারক কোলে এসে পৌছেছে। আমি আমার এ স্বপ্ন মুবারক সম্পর্কে কাউকে বলতে অপছন্দ করলাম। এমনকি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি (বনু মুস্তালিক জিহাদে) তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেন। অতপর, আমাদেরকে যখন মুসলমানদের জিম্মায় নেয়া হলো, তখন আমি আমার স্বপ্ন মুবারক বাস্তবায়নের আকাঙ্খা করতে লাগলাম। (বাইহাক্বী, শরহুয যারক্বানী)
অর্থাৎ, কখনো চাঁদ দেখিয়ে, কখনো সূর্য দেখিয়ে এমনকি কখনো সরাসরি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে দেখিয়ে বারবার ত্বহিরা, ত্বইয়িবাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামিন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছামিনাহ আলাইহাস সালাম উনাকে সুসংবাদ মুবারক প্রদান করা হয়। সুবহানাল্লাহ। ত্বহিরা, ত্বইয়িবাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামিন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছামিনাহ আলাইহাস সালাম তিনি যে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সরাসরি নিসবাত মুবারক লাভ করবেন, তা উনাকে আগেই জানানো হয়েছিল। সুবহানাল্লাহ!

মুবারক খিদমতে তাশরীফ মুবারক গ্রহণ

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক খিদমতে ত্বহিরা, ত্বইয়িবাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামিন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছামিনাহ আলাইহাস সালাম উনার তাশরীফ মুবারক গ্রহণের প্রেক্ষাপট বিভিন্ন জন বিভিন্নভাবে বর্ণনা করেছেন। তবে সর্বাধিক বিশুদ্ধ মতে, পবিত্র মক্কা শরীফ হতে প্রায় ১২০ কিলো এবং পবিত্র মদীনা শরীফ হতে প্রায় ৩০০ কিলো দূরে বসবাসকারী বনু মুস্তালিক গোত্র পবিত্র মদীনা শরীফ আক্রমণের প্রস্তুতি নেয়। তাদের ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দিতে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পঞ্চম হিজরীর শেষের দিকে বনু মুস্তালিকে তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেন। জিহাদ সম্পন্ন হয়। জিহাদের তারতীব অনুযায়ী বিজিত অঞ্চলের পুরুষদেরকে একত্রিত করা হয় আবার মহিলাদেরকেও আলাদাভাবে একত্রিত করা হতো। সে অনুযায়ী বনু মুস্তালিক জিহাদের পর সে এলাকার মহিলাদেরকে শরয়ী নির্দেশনা অনুযায়ী একত্রিত করা হয়। সঙ্গতকারণেই ত্বহিরা, ত্বইয়িবাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামিন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছামিনাহ আলাইহাস সালাম তিনিও সেখানে তাশরীফ মুবারক রাখেন। আর তিনি যেহেতু মহাসম্মানিত উম্মুল মু’মিনীন হিসেবে পূর্ব হতেই আখাছছুল খাছভাবে মনোনীত এবং এ বিষয়ে তিনি পূর্ব হতেই অবগত, সেহেতু তিনি মুসলমানদের প্রতিটি বিষয় স্বাভাবিকভাবেই গ্রহণ করেন। 
পরবর্তীতে মুসলমানদের জিম্মায় আসা মহিলাদেরকে জিহাদের তারতীব অনুযায়ী জিহাদে অংশগ্রহণকারীদের মাঝে বন্টন করে দেয়া হয়। অন্যান্যদের সাথে ত্বহিরা, ত্বইয়িবাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামিন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছামিনাহ আলাইহাস সালাম উনাকেও একজন ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার জিম্মায় দেয়া হয়। কিন্তু তিনি তো জানেন উনার বিষয়টি এমন হওয়ার কথা নয়, কারণ তিনি তো উম্মুল মু’মিনীন হিসেবে মনোনীত। তাই, তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক খিদমতে এ বিষয়ে আরজী পেশ করেন। 

সম্মানিত দ্বীন ইসলাম প্রকাশ

ত্বহিরা, ত্বইয়িবাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামিন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছামিনাহ আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক খিদমতে তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করে শুরুতেই সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করার বিষয়টি প্রকাশ করেন।

আযীমুশ শান নিসবাতুল আযীম শরীফ

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পুরোপুরিভাবে ওহী মুবারক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত। উনার যাবতীয় কার্যক্রম মুবারক ওহী মুবারক দ্বারা সম্পাদিত হয়। আর তারই ধারাবাহিকতায় ত্বহিরা, ত্বইয়িবাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামিন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছামিনাহ আলাইহাস সালাম উনার সাথে নিসবাতুল আযীম শরীফ বা নিকাহ মুবারক উনার বিষয়টিও ওহী মুবারক দ্বারা সম্পাদিত।
ত্বহিরা, ত্বইয়িবাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামিন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছামিনাহ আলাইহাস সালাম তিনি নিজেকে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম উনাদের জিম্মা মুক্ত করার ব্যাপারে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক খিদমতে আরজী করেন। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার আরজী মুবারক কবুল করেন এবং উনাকে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের অন্তর্ভূক্ত করার ঘোষণা মুবারক দেন। আর এ ভাবেই ৫ম হিজরীর পবিত্র ২৮শে যিলহজ্ব শরীফ ইয়াওমুল জুময়াহ শরীফ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে ত্বহিরা, ত্বইয়িবাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামিন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছামিনাহ আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র নিসবাতুল আযীম শরীফ সম্পন্ন হয়। সুবহানাল্লাহ! পবিত্র নিসবাতুল আযীম শরীফ সম্পন্ন হওয়ায় হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা এবং বনু মুস্তালিক গোত্রের সবাই অত্যধিক খুশি প্রকাশ করেন।

পবিত্র মোহর মুবারক

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র নিসবতে আযীম মুবারক উনার সময় উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছামিনাহ আলাইহাস সালাম উনাকে কি পরিমাণ মোহর প্রদান করেছেন, তা নিয়ে বিভিন্ন মত পাওয়া যায়। তবে সর্বাধিক বিশুদ্ধ মতে, প্রথমত উনার জিম্মি অবস্থার অবসান করা হয়। যা উনার বিশেষ খুছুছিয়ত মুবারক। দ্বিতীয়ত উনাকে আলাদাভাবে মোহর প্রদান করা হয়। কেননা, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের প্রত্যেকের জন্য মোহর নির্ধারিত ছিলো। আর মোহর মুবারকের বিষয়টি একখানা হাদীছ শরীফ দ্বারা সহজেই স্পষ্ট করা যায়। পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত রয়েছে,
عن حضرت ابـى سلمة رضى الله تعالى عنه انه قال سالت عائشة عليها السلام كم كان صداق رسول الله صلى الله عليه وسلم قالت كان صدافه لـازواجه عليهن السلام نتـى عشرة اوقتة ونشا قالت اندرى ما النش قال قلت لا قالت نصف اوقية فتلك خـمس ماة درهم.
অর্থ: হযরত আবু সালামাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনাকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কর্তৃক প্রদত্ত মুবারক মহর সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মোহর মুবারক ছিলো বার উকিয়া ও এক নাশ। তিনি বললেন, আপনি কি এক নাশের পরিমাণ সম্পর্কে জানেন। আমি বললাম, ‘না’। তিনি বললেন, এক নাশ এর পরিমাণ হলো অর্ধ উকিয়া। যা ছিলো মোট পাঁচশত দিরহাম। (মুসলিম শরীফ)
অর্থাৎ সমস্ত হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মুবারক মোহর ছিলো পাঁচশত দিরহাম। তবে কারো কারো মতে, উম্মুল মু’মিনীন হযরত উম্মু হাবীবাহ আলাইহাস সালাম উনার মুবারক মোহর আরো বেশি ছিলো। যা বাদশাহ নাজ্জাসী নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পক্ষ থেকে পরিশোধ করেছিলেন।
পাঁচশত দিরহাম হলো একশত সোয়া একত্রিশ তোলা রৌপ্যের সমান। যা মোহরে যাহরী শরীফ নামে বিখ্যাত। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বিবাহের ক্ষেত্রে আমভাবে এরূপ মোহর নির্ধারণ করতেন। বর্তমান সময়ে মুহইস সুন্নাহ, মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি এই মুবারক সুন্নত জারী করেছেন। উনার মুবারক পৃষ্ঠপোষকতায় যত বিবাহ অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে, সবই মোহরে যাহরী শরীফ উনার ভিত্তিতে হয়ে থাকে। 

কতিপয় জরুরী বিষয়

নিসবাতুল আযীম শরীফ উপলক্ষে অলীমার আয়োজন করা খাছ সুন্নত উনার অন্তর্ভূক্ত। ত্বহিরা, ত্বইয়িবাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামিন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছামিনাহ আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র নিসবাতুল আযীম শরীফ সম্পন্ন হওয়ার পরও অলীমার আয়োজন করা। 
বনু মুস্তালিক জিহাদের সার্বিক কার্যক্রম শেষ করে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ষষ্ঠ হিজরীর শুরুতে পবিত্র মদীনা শরীফে ফিরে আসেন। অন্যান্য হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের ন্যায় ত্বহিরা, ত্বইয়িবাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামিন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছামিনাহ আলাইহাস সালাম উনার জন্য বিশেষ হুজরা শরীফ নির্ধারণ করা হয়।

পবিত্র হজ্ব মুবারক আদায়

কিতাবের বর্ণনা অনুযায়ী, বিদায় হজ্বের সময় এগারো জন হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা দুনিয়ার জমীনে অবস্থান মুবারক করছিলেন এবং উনারা প্রত্যেকেই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে হজ্ব মুবারক সম্পন্ন করেন।

 খুলাফায়ে রাশিদীন উনাদের আমলে:

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র বিছাল শরীফ গ্রহণের পর হতে ত্বহিরা, ত্বইয়িবাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামিন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছামিনাহ আলাইহাস সালাম তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার প্রচার-প্রসারে নিবেদিত থাকেন।  অর্থাৎ পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ সম্পর্কে তা’লীম-তালকীনে তিনি ছিলেন সদা ব্যস্ত। তাছাড়া জটিল অনেক বিষয়ের ফায়ছালা তিনি দিতেন।

 কতিপয় বিশেষ শান মুবারক

ত্বহিরা, ত্বইয়িবাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামিন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছামিনাহ আলাইহাস সালাম উনার পুরো জিন্দেগী মুবারকই পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার অন্তর্ভুক্ত। তথাপি মুহাদ্দিসগণ উনার থেকে মাত্র ৭ খানা পবিত্র হাদীছ শরীফ সঙ্কলনের অবকাশ পেয়েছেন। 
ত্বহিরা, ত্বইয়িবাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামিন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছামিনাহ আলাইহাস সালাম তিনি বেমেছাল তাক্বওয়া প্রকাশ করেছেন। তিনি অধিকাংশ সময় রোজা রাখতেন। সারাদিন তাসবীহ-তাহলীলে ব্যস্ত থাকতেন। প্রায়ই উম্মাহর জন্য সুদীর্ঘ সময় ধরে অত্যন্ত করুণভাবে দুআ-মুনাজাত মুবারক করতেন।

 পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ

সুলত্বানিন নাছীর, হাবীবুল্লাহ, জামি‘উল আলক্বাব, আহলে বাইতে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম বলেন, ত্বহিরা, ত্বইয়িবাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামিন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছামিনাহ আলাইহাস সালাম তিনি ৫০ হিজরী সনের মহাসম্মানিত ১৭ রবীউল আউওয়াল শরীফ ইয়াওমুছ ছুলাছা প্রায় ৬৫ বছর বয়স মুবারকে হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার খিলাফতকালে পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। উনার জানাযা নামায পবিত্র মদীনা শরীফ উনার গভর্ণর মারওয়ান পড়ায়। উনার রওযা শরীফ সম্মানিত জান্নাতুল বাক্বী উনার মধ্যে স্থাপন করা হয়।

ক্বায়িম-মাক্বাম ও নকশা

ত্বহিরা, ত্বইয়িবাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামিন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছামিনাহ আলাইহাস সালাম উনার পরিপূর্ণ ক্বায়িম-মাক্বাম হলেন সাইয়্যিদাতুন নিসা হযরত উম্মুল উমাম হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম। যা বিভিন্নজন স্বপ্ন, কাশফ এবং রিয়াজত-মাশাক্কাতের মাধ্যমে সরাসরি দেখতে সক্ষম হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
মূলত, ত্বহিরা, ত্বইয়িবাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামিন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছামিনাহ আলাইহাস সালাম উনার আলোচনা মুবারক শুরু হবে কিন্তু শেষ করার সীমানা কারোরই জানা নেই। তথাপি উনার শান মুবারকে হুসনে যন বিশুদ্ধ করতে, উনার সম্পর্কে জানতে, উনার সাওয়ানেহ উমরী মুবারক হতে ইবরত-নসীহত হাসিল করতে, সর্বপোরি উনার মুবারক ফায়িয-তাওয়াজ্জুহ এবং নেক দৃষ্টি ও নিসবত মুবারক হাসিলে বর্তমান সময়ে মহিলাদের জন্য উম্মুল উমাম হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনার কোনো বিকল্প নেই। মহান আল্লাহ পাক তিনি মুসলিম উম্মাকে এ ব্যাপারে তাওফীক্ব দান করুন। আমীন।

0 Comments: