উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত সংক্ষিপ্ত জীবনী মুবারক

উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত সংক্ষিপ্ত জীবনী মুবারক



সম্মানিত পরিচিতি মুবারক

যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اَلنَّبِـىُّ اَوْلـٰى بِالْمُؤْمِنِيْنَ مِنْ اَنْفُسِهِمْ وَاَزْوَاجُهۤٗ اُمَّهٰتُهُمْ.
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন মু’মিন উনাদের নিকট উনাদের জানের চেয়ে অধিক প্রিয়, উনাদের মহাসম্মানিত পিতা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং উনার মহাসম্মানিতা ‘আযওয়াজুম মুত্বহহারাত’ (হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম) উনারা হচ্ছেন সমস্ত মু’মিন উনাদের মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহিন্নাস সালাম।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৬)
 হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা ছিলেন মোট ১৩ জন। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নেয়ার মুবারক ধারাবাহিকক্রম অনুযায়ী উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন ‘আছ ছানিয়াহ্ তথা দ্বিতীয়া’। এ জন্য উনাকে ‘উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম’ বলা হয়। সুবহানাল্লাহ! তবে উনার মূল মহাম্মানিত ও মহাপবিত্র ইসম বা নাম মুবারক হচ্ছেন ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত সাওদাহ্ আলাইহাস সালাম’। সুবহানাল্লাহ! তিনি শুধু যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং উনার মাহবূব  হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারিনী। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত মুহব্বত মুবারকই হচ্ছেন সম্মানিত ঈমান। সুবহানাল্লাহ! উনাকে সম্মানিত মুহব্বত মুবারক করা, উনার সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম মুবারক করা, সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করা এবং উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়া সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের জন্য ফরযে আইন। সুবহানাল্লাহ! তাই উনার সম্মানিত জীবনী মুবারক জানাও সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের জন্য ফরযে আইন। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বংশ পরিচয় মুবারক

উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত পিতা আলাইহিস সালাম হচ্ছেন সাইয়্যিদুনা হযরত যম‘আহ ইবনে ক্বইস আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ! তিনি উনার মহাসম্মানিত পিতা আলাইহিস সালাম উনার দিক থেকে মহাসম্মানিত ৯ম পুরুষ হয়ে ১০ম পুরুষে যেয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মিলিত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি হচ্ছেন-
اُمُّ الْمُؤْمِنِيْنَ سَيِّدَتُناَ حَضْرَتْ سَوْدَةُ بِنْتُ زَمْعَةَ بْنِ قَيْسِ بْنِ عَبْدِ شَمْسِ بْنِ عَبْدِ وُدّ بْنِ نَصْرِ بْنِ مَالِكِ بْنِ حِسْلِ بْنِ عَامِرِ بْنِ لُؤَيّ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত সাওদাহ আলাইহাস সালাম বিনতে যাম‘আহ ইবনে ক্বইস্ ইবনে আব্দু শাম্স ইবনে ‘আবদু উদ্দ ইবনে নছ্র ইবনে মালিক ইবনে হিস্ল ইবনে ‘আমির ইবনে লুআই আলাইহিমুস সালাম।” সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত লুয়াই আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত পূর্বপুরুষ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিতা মাতা হচ্ছেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত শুমূস বিনতে ক্বইস আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! উনার মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার বনী নাজ্জার বংশের। সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহাস সালাম উনার দিক থেকে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় নসবনামাহ মুবারক হচ্ছেন- 
اُمُّ الْمُؤْمِنِيْنَ سَيِّدَتُناَ حَضْرَتْ سَوْدَةُ بِنْتُ الشُّمُوس بِنْت قَيْسِ بْنِ عَمْرِو بْنِ زَيْدِ بْن عَمْرو بْنِ لَبِيدِ بْنِ خِدَاشِ بْنِ عَامِرِ بْنِ غَنْمِ بْنِ عَدِيِّ بْنِ النَّجَّارِ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত সাওদাহ আলাইহাস সালাম বিনতে শুমূস বিনতে ক্বইস ইবনে ‘আমর ইবনে যায়েদ ইবনে ‘আমর ইবনে লাবীদ ইবনে খিদাশ ইবনে ‘আমির ইবনে গ¦ন্ম ইবেন ‘আদী ইবনে নাজ্জার আলাইহিমুস সালাম।” সুবহানাল্লাহ! 
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিতা মাতা ছিলেন জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল মুত্ত্বলিব আলাইহিস সালাম উনার আপন মামাতো বোন। সুবহানাল্লাহ! 

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ:

উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের ৪ বছর পর সম্মানিত কুরাইশ বংশ মুবারক উনার বিশেষ শাখা ‘আমিরী গোত্রে ৫ই ছফর শরীফ ইয়াওমুছ ছুলাছা’ শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!

সম্মানিত ও পবিত্র কুনিয়াত মুবারক

উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র কুনিয়াত মুবারক সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু আব্দিল্লাহ আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!

সম্মানিত ও পবিত্র লক্বব মুবারক:

উম্মুল মু’মিনীন, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, আত্ব ত্বাহিরাহ, আত্ব ত্বইয়্যিবাহ্, আল মুত্বহ্হার, আল মুত্বহ্হির, যাতুল হিজরাতাঈন, মালিকাতুল জান্নাহ, মালিকাতুল কায়িনাত এছাড়াও আরো অসংখ্য-অগণিত। সুবহানাল্লাহ! 

মহাসম্মানিত শৈশবকাল মুবারক

উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি উনার মহাসম্মানিত শৈশবকাল মুবারক-এ উনার মহাসম্মানিত পিতা-মাতা আলাইহিমাস সালাম এবং পরিবার-পরিজন উনাদের সাথে সম্মানিত ও পবিত্র মক্কা শরীফেই অতিবাহিত করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি পরিবারের সকালের নিকট সবচেয়ে প্রিয়, পছন্দীয় এবং সম্মানিত ছিলেন। সুবহানাল্লাহ!

সম্মানিত ও পবিত্র মদীনা শরীফ সম্মানিত হিজরত মুবারক:

মুজাদ্দিদে আ’যম, ক্বইয়ূমুয যামান, আল জাব্বারিউল আউওয়াল, আল ক্বউইউল আউওয়াল, সুলত্বানুন নাছীর, হাবীবুল্লাহ, জামি‘উল আলক্বাব, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত হিজরত মুবারক করে সম্মানিত ও পবিত্র মদীনা শরীফ-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করার প্রায় এক থেকে দেড় মাস পর উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি, উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম তিনি, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা এক সাথে সম্মানিত হিজরত মুবারক করে সম্মানিত ও পবিত্র মদীনা শরীফ-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেন।” সুবহানাল্লাহ!

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে খুশি মুবারক করানো:

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে এসেছে,
قَالَتْ سَوْدَةُ لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلَّيْتُ خَلْفَكَ الْبَارِحَةَ فَرَكَعْتَ بِي حَتَّى أَمْسَكْتُ بِأَنْفِي مَخَافَةَ أَنْ يَقْطُرَ الدَّمُ فَضَحِكَ وَكَانَتْ تُضْحِكُهُ الأَحْيَانَ بِالشَّيْءِ.
অর্থ: “(একবার) উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলেন, গত রাত্রে আমি আপনার পেছনে নামায পড়েছি। কিন্তু আপনি সম্মানিত রুকু মুবারক উনার মধ্যে এত দেরী করছেন যে, আমার নাক ফেটে রক্ত বের না হয়, সেজন্য আমি নাক চেপে ধরেছিলাম। অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার কথা মুবারক শুনে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুশ শাহাদাত মুবারক প্রকাশ করেন (মুচকি হাসি মুবারক থেকে একটু বেশি হাসি মুবারক দেন)। সুবহানাল্লাহ! আর তিনি প্রায়ই কিছু কিছু বিষয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে (সন্তুষ্ট মুবারক কারার জন্য) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুশ শাহাদাত মুবারক প্রকাশ করাতেন। সুবহানাল্লাহ!    (আত্ব ত্ববাক্বাতুল কুবরা ৮/৫৪, সিয়ারু আ’লামিন নুবালা’ ৩/২৩৬)

সম্মানিত বিদায় হজ্জ মুবারক

দশম হিজরী শরীফ-এ সম্মানিত হজ্জ মুবারক উনার সময় উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনিও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! 
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে,
عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ ্রنَزَلْنَا المُزْدَلِفَةَ فَاسْتَأْذَنَتِ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَوْدَةُ، أَنْ تَدْفَعَ قَبْلَ حَطْمَةِ النَّاسِ، وَكَانَتِ امْرَأَةً بَطِيئَةً، فَأَذِنَ لَهَا، فَدَفَعَتْ قَبْلَ حَطْمَةِ النَّاسِ
 অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি  বলেন, আমরা মুজদালিফায় অবতরণ করলাম। তখন উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি জনতার ভিড়ের আগেই মুজদালিফা থেকে (মিনায়) চলে যাওয়ার অনুমতি চাইলেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে সম্মানিত অনুমতি মুবারক দিলেন, তিনি লোকজনের ভিড়ের পূর্বেই তিনি (মিনায়) চলে যান। কারণ তিনি ছিলেন একটু স্বাস্থ্যবান। সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, মুসনাদে ইসহাক্ব)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে এসেছে,
عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ يَقُولُ حَجَّ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِنِسَائِهِ عَامَ حَجَّةِ الْوَدَاعِ ثُمَّ قَالَ هَذِهِ الْحَجَّةُ ثُمَّ ظُهُورَ الْحُصُرِ(أى الْزَمْنَ بيوتكنّ ولا تخرجْنَ منها) قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ وَكَانَ كُلُّ نِسَاءِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَحْجُجْنَ إِلاَّ سَوْدَةَ بِنْتَ زَمْعَةَ وَزَيْنَبَ بِنْتَ جَحْشٍ قَالَتَا لاَ تُحَرِّكُنَا دَابَّةٌ بَعْدَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.
অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সম্মানিত বিদায় হজ্জের বছর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সমস্ত হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে নিয়ে সম্মানিত হজ্জ মুবারক করেন। এই সম্মানিত বিদায় হজ্জ মুবারক উনার পর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত উম্মাহাতুল মু‘মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে বলেন, অতঃপর আর ঘরের বাইরে যাবেন না। হযরত আবূ হুরায়রা  রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বলেন, (নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক উনার পরও) অন্যান্য হযরত উম্মাহাতুল মু‘মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা হজ্জ মুবারক করেন। কিন্তু উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি এবং উম্মুল মু‘মিনীন আস সাবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত আত্বয়ালু ইয়াদান আলাইহাস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা দুজন ব্যতীত। উনারা বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পর পশু তথা সম্মানিত বাহন মুবারক আমাদেরকে নাড়াতে পারবে না। অর্থাৎ উনারা এই সম্মনিত নির্দেশ মুবারক এমন দৃঢ়তার সাথে মেনে চলেন যে, আর সম্মানিত হুজরা শরীফ থেকে বাইরে যাননি।” সুবহানাল্লাহ! (তবাকত ৮/৫৫)
আরো বর্ণিত রয়েছে,
قَالَتْ سَوْدَةُ حَجَجْتُ وَاعْتَمَرْتُ فَأَنَا أَقَرُّ فِي بَيْتِي  كَمَا أَمَرَنِي اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ.
অর্থ: “উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, আমি হজ্জ করেছি, ওমরা করেছি। এখন মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত নির্দেশ মুবারক মতো সম্মানিত হুজরা শরীফ উনার মধ্যে বসে কাটাবো।” সুবহানাল্লাহ! (তবাকত ৮/৫৫)

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা এবং বাক্বা মুবারক

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে,
عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا أَرَادَ سَفَرًا أَقْرَعَ بَيْنَ نِسَائِهِ فَأَيَّتُهُنَّ خَرَجَ سَهْمُهَا خَرَجَ بِهَا مَعَهُ وَكَانَ يَقْسِمُ لِكُلِّ امْرَأَةٍ مِنْهُنَّ يَوْمَهَا وَلَيْلَتَهَا غَيْرَ أَنَّ سَوْدَةَ بِنْتَ زَمْعَةَ وَهَبَتْ يَوْمَهَا وَلَيْلَتَهَا لِعَائِشَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم تَبْتَغِي بِذَلِكَ رِضَا رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم.
 অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন সম্মানিত সফর মুবারক করার ইচ্ছা মুবারক করতেন, তখন হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে সম্মানিত লটারী মুবারক করতেন। সম্মানিত লটারী মুবারক উনার মাধমে যিনি নির্ধারিত হতেন, উনাকে তিনি সম্মানিত সফর মুবারক-এ সাথে নিতেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি সমস্ত হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে দিন-রাত মুবারক ভাগ করে দিয়েছিলেন উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনাকে ব্যতীত। কারণ তিনি উনার সম্মানিত দিন-রাত মুবারক উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনাকে হাদিয়া মুবারক করেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিলে লক্ষ্যে।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, সুনানুল কুবরা লিলবাইহাক্বী ৭/২৯৬, মুস্তাখরজে আবী ‘আওয়ানাহ ৫/২০৭, আল মুন্তাক্বা ১/২৯৬ ইত্যাদি)
  
উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ্ আলাইহাস সালাম উনার আকাঙ্খা মুবারক:

‘মুসলিম শরীফ’-এ বর্ণিত রয়েছে, 
عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: مَا رَأَيْتُ امْرَأَةً أَحَبَّ إِلَيَّ أَنْ أَكُونَ فِي مِسْلَاخِهَا مِنْ سَوْدَةَ بِنْتِ زَمْعَةَ،
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ্ আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি মহিলাদের মধ্যে ছিলেন আমার নিকট সবচেয়ে প্রিয়। তিনি ব্যতীত অন্য কারো ক্ষেত্রে আমার এ আকাঙ্খা জাগেনি যে, উনার দেহে যদি আমার প্রাণ হতো।” সুবহানাল্লাহ! (মুসলিম শরীফ)
অপর বর্ণনায় এসেছে,
عن عائشة قالت ما من الناس أحد أحب الي أن أكون في مسلاخه من سودة
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ্ আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সমস্ত মানুষের মধ্যে উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন আমার নিকট সবচেয়ে প্রিয়। তিনি ব্যতীত অন্য কারো ক্ষেত্রে আমার এ আকাঙ্খা জাগেনি যে, উনার দেহে যদি আমার প্রাণ হতো।” সুবহানাল্লাহ! (শরহুয যারক্বানী ৪/৩৮০)

দানশীলতা:

عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ بَعَثَ إِلَى سَوْدَةَ بِنْتِ زَمْعَةَ بِغِرَارَةٍ مِنْ دَرَاهِمَ , فَقَالَتْ : مَا هَذَهِ ؟ قَالُوا : دَرَاهِمُ . قَالَتْ : فِي الْغِرَارَةِ مِثْلُ التَّمْرِ: فَفَرَقَتْهَا.
অর্থ: “হযরত মুহম্মদ ইবনে সীরীন রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। একবার হযরত ফারূকে আযম আলাইহিস সালাম তিনি দিরহামপূর্ণ একটি থলি উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ হাদিয়া পাঠান। তখন উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, এতে কি আছে? সকলে বললো, দিরহাম। তিনি বললেন, খেজুরের থলির মতো থলিতে! এ কথা মুবারক বলে তখনই তিনি দিরহামগুলো বণ্টন করে দেন।” সুবহানাল্লাহ! (ইছাবাহ ৭/৭২১)
কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে,
وكانت السيدة سودة -رضى الله عنها- زاهدة في الدنيا مقبلة على الآخرة. بعث إليها عمر بن الخطاب -رضى الله عنه- في خلافته ببعض الدراهم، فوَزَّعَتْهَا على الفقراء والمساكين.
অর্থ: “উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি দুনিয়া প্রতি বিরাগ এবং আখেরাতের প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন। একবার সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি উনার খিলাফতকালে হাদিয়া স্বরূপ কিছু দিরহাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ পাঠান। তখন তিনি এগুলো ফক্বীর-মিসকীনদের মাঝে বণ্টন করে দেন।” সুবহানাল্লাহ! 

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা:

হযরত ইমাম আল্লামা শামসুদ্দীন যাহাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, 
يُرْوَى لِسَوْدَةَ خَمْسَةُ أَحَادِيْثَ: مِنْهَا فِي الصَّحِيْحَيْنِ حَدِيْثٌ وَاحِدٌ، عَنِ البُخَارِيِّ.
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার থেকে পাঁচখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণিত রয়েছে।” সুবহানাল্লাহ! (সিয়ারু আ’লামিন নুবালা’ ৩/৫০৮)
এর মধ্যে ইমাম বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ‘বুখারী শরীফ’-এ একখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন। উক্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফখানা হচ্ছেন-
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، عَنْ سَوْدَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَتْ مَاتَتْ لَنَا شَاةٌ، فَدَبَغْنَا مَسْكَهَا، ثُمَّ مَا زِلْنَا نَنْبِذُ فِيهِ حَتَّى صَارَ شَنًّا
অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণনা করেন। উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, আমাদের একটা বকরী মারা গেলে আমরা তার চামড়া দাবাগাত করে (পাত্র তৈরী করে) তাতে নাবীয তৈরী করতাম। অবশেষে তা পুরাতন হয়ে যায়।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ)
আরো একখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ হচ্ছেন-
عَنِ ابْنِ الزُّبَيْرِ عَنْ سَوْدَةَ أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ، أَنَّ رَجُلًا قَالَ: يَا رَسُولَ اللهِ، أَبِي شَيْخٌ كَبِيرٌ لَا يَسْتَطِيعُ الْحَجَّ، أَفَأَحُجُّ عَنْهُ؟ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ্রأَرَأَيْتَ لَوْ كَانَ عَلَى أَبِيكَ دَيْنٌ فَقَضَيْتَهُ أَكَانَ يُجْزِئُ عَنْهُ؟গ্ধ قَالَ: نَعَمْ، قَالَ: ্রحُجَّ عَنْهُগ্ধ
অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণনা করেন। উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, একদা একজন ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ এসে বললেন,  আমার পিতা অতি বৃদ্ধ, তিনি সম্মানিত হজ্জ মুবারক আদায় করতে অক্ষম, আমি উনার পক্ষ থেকে সম্মানিত হজ্জ মুবারক আদায় করবো? তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আপনার পিতার যদি ঋণগ্রস্থ থাকতেন, আর আপনি যদি উনার পক্ষ থেকে তা আদায় করে দিতেন, তাহলে কি তা উনার পক্ষ থেকে যথেষ্ট হতো? উক্ত ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বললেন, হ্যাঁ। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আপনি আপনার সম্মানিত পিতা উনার  পক্ষ থেকে সম্মানিত হজ্জ মুবারক আদায় করুন।” সুবহানাল্লাহ! (আল মু’জামুল কাবীর লিত ত্ববারনী ২৪/৩৭) 
অপর বর্ণনায় রয়েছে,
عن سودة بنت زمعة، قالت: جاء رجل إلى رسول الله صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فقال: إن أبي شيخ كبير لا يستطيع أن يحج قال: " أرأيت لو كان على أبيك دين فقضيته عنه قبل منك " قال: نعم. قال " فالله أرحم، حج عن أبيك
অর্থ: “ উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা একজন ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ এসে বললেন,  আমার পিতা অতি বৃদ্ধ, তিনি সম্মানিত হজ্জ মুবারক আদায় করতে অক্ষম। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আপনার পিতার যদি ঋণগ্রস্থ থাকতেন, আর আপনি যদি উনার পক্ষ থেকে তা আদায় করে দিতেন, তাহলে কি তা আপনার নিকট থেকে কবুল করা হতো না? উক্ত ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বললেন, হ্যাঁ। তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি অধিক দয়ালু। সুবহানাল্লাহ! আপনি আপনার সম্মানিত পিতা উনার  পক্ষ থেকে সম্মানিত হজ্জ মুবারক আদায় করুন।” সুবহানাল্লাহ! (উসদু গবাহ্ ফী মা’রিফাতিছ ছাহাবাহ্ ৬/১৫৮)
মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আছ ছমাদ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার পুরো জিন্দেগী মুবারকই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার অন্তর্ভুক্ত। কেননা, তিনি যা করেছেন এবং উম্মতদেরকে যা করতে আদেশ মুবারক করেছেন, প্রত্যেকটাই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ অনুযায়ীই করেছেন। সুবহানাল্লাহ! তবে রাবীগণ উনার থেকে মাত্র ৫ খানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করতে সক্ষম হয়েছেন।”
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি, আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি, হযরত ‘আতা ইবনে ইয়াসার রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, মুহম্মদ ইবনে আব্দুর রহমান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ:

উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত খিলাফত মুবারককালে ২২  হিজরী শরীফ উনার ২৯শে যিলহজ্জ শরীফ ইয়াওমুল খমীস শরীফ মহাসম্মানিত  ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি দুনিয়ার যমীনে ৭০ বছর ১০ মাস ২৪ দিন সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত ছলাতুল জানাযা মুবারক পড়ান সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত রওযা শরীফ জান্নাতুল বাক্বী’ শরীফ অবস্থিত। সুবহানাল্লাহ!

সম্মানিত আওলাদ:

উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত সাকরান রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার নিকট থাকা অবস্থায় ‘সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুর রহমান রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু’ নাম মুবারক-এ উনার একজন সম্মানিত আওলাদ তিনি বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি পারস্যের জালূলার জিহাদে সম্মানিত শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! কেউ কেউ উনার আওলাদ গণের সংখ্যা ৫ থেকে ৬ জনও বলেছেন। তবে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ আসার পর উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার কোনো আওলাদ বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেননি।

0 Comments: