উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম

Image result for উম্মুল মুমিনীন আলাইহিমাস সালাম উনাদের ফযীলতউম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম





সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক এবং সম্মানিত পরিচিতি মুবারক :
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম উনার প্রকৃত সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক ছিলেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত যয়নব আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! তবে তিনি ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছফিয়্যাহ আলাইহাস সালাম’ এই সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক-এ মশহূর হন। সুবহানাল্লাহ! আরবের প্রথা অনুযায়ী যুদ্ধলব্ধ মাল বন্টনের সময় যে উৎকৃষ্ট বা উত্তম মাল দলপতির জন্য রাখা হত তাকেই ‘ছফিয়্যাহ’ বলা হতো। সম্মানিত খায়বার জিহাদ মুবারক-এ প্রাপ্ত সকল কিছুর মধ্যে যেহেতু উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ এবং শেষ পর্যন্ত তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ তাশরীফ মুবারক আনেন, এজন্য উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নামকরণ মুবারক করা হয়েছিল সাইয়্যিদাতুনা হযরত সফিয়্যাহ আলাইহাস সালাম। আর এই সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারকেই তিনি প্রসিদ্ধি লাভ করেন। সুবহানাল্লাহ! উনার পিতার নাম ছিলো হুইয়াই ইবনে আখতাব। তিনি ছিলেন হযরত হারূন ইবনে ‘ইমরান আলাইহিমাস সালাম উনাদের অধস্তন পুরুষ। 
পারিবারিক অবস্থান মুবারক: উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরাহ আলাইহাস সালাম উনার পিতা ও মহাসম্মনিত দাদা আলাইহিস সালাম উভয়েই ছিলেন তৎকালীন ইয়াহূদী জাতির সম্মানিত ও মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব। যে কারণে বনী ইসরাঈলের সমস্ত আরবীয় গোত্রের মধ্যে উনাদেরকে আলাদা সম্মান করা হতো। বিশেষ করে উনার বাবা হুইয়াই ইবনে আখ্ত্ববকে মর্যাদার শীর্ষে স্থান দেয়া হয়েছিল। ইয়াহূদীরা বিনা বাক্য তার নেতৃত্ব মেনে চলতো। উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরাহ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মনিত নানা সাইয়্যিদুনা হযরত সামওয়াল আলাইহিস সালাম তিনি শান-মান, মর্যাদা, গৌরব, শ্রেষ্ঠত্ব ও বীরত্বের জন্য গোটা জাযিরাতুল আরবে বিখ্যাত ছিলেন। মূল কথা হলো, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত বংশধারা  মুবারক এক বিশেষ খুছূছিয়াত মুবারক অধিকারী ছিল। সুবহানাল্লাহ!
প্রথম শাদী মুবারক: উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম উনার প্রথম শাদী মুবারক হয় আরবের বিখ্যাত কবি ও সর্দার সালাম ইবনে মিশকাম  কুরাইযীর সাথে। প্রথম দিকে উনার দাম্পত্য জীবন সুখের হলেও পরবর্তীতে মনোমালিন্য ঘটে এবং শেষ পর্যন্ত ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। ফলে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম পিতৃগৃহে ফিরে আসেন। 
এ সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
وكانت صفية تزوجها سلام بن مشكم القرظي ثم فارقها 
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম উনার প্রথম শাদী মুবারক হয়েছিলো বনী কুরাইযার সালাম ইবনে মিশকামের সাথে। তারপর তিনি সেখান থেকে পিতৃগৃহে চলে আসেন।” (ইবনে সা’দ ৮/৯৫) 
দ্বিতীয় শাদী মুবারক: এরপর উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম উনার দ্বিতীয় শাদী মুবারক হয় কিনানাহ্ ইবনে রবী ইবনে আবুল হাক্বীক্ব ইহুদীর সাথে।
এ সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
فتزوجها كنانة بن الربيع بن أبي الْـحُقَيْقِ النضري
অর্থ: “তারপর বনী নাযীর গোত্রের কিনানাহ্ ইবনে রবী’ ইবনে আবুল হুক্বাইক্বের সাথে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম উনার দ্বিতীয় শাদী মুবারক অনুষ্ঠিত হয়।” (ইবনে সা’দ ৮/৯৫)
অপর বর্ণনায় রয়েছে, 
وكانت عند كنانة بن الربيع بن أبي الْـحُقَيْقِ
 অর্থ: “নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ আসার পূর্বে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন কিনানাহ্ ইবনে রবী’ ইবনে আবুল হুক্বাইক্বের নিকট।” (ইবনে হিশাম, আর রওদ্বুল উনফ, ্অল বিদায়া ওয়ান নিহায়াহ) 
এ সময় উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ১৭ বছর। 
পিতা ও চাচার মৃত্যু: উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম উনার পিতা ও চাচা আবূ ইয়াসির নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলিাইহি ওয়া সাল্লাম উনার চরম শত্রু ছিলো। তারা সম্মানিত ও পবিত্র মদীনা শরীফ থেকে বিতারিত হয়ে চতুর্থ হিজরী শরীফ-এ খায়বারে যেয়ে কিনানার সাথে বসবাস করতে থাকে। এখানে বসেই হুইয়াই ইবনে আখ্ত্বব সম্মানিত মুসলমান উনাদের ক্ষতি করার সর্বপ্রকার চেষ্টা করতে থাকে। পরবর্তীতে ৭ম হিজরী সনের মুহররমুল হারাম শরীফ মাসে যখন নুরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি খায়বার অভিযান পরিচালনা করেন, তখন মুসলমান উনাদের হাতে আল কামূস দুর্গের পতন ঘটে। যুদ্ধে ইয়াহূদীদের চূড়ান্ত পরাজয় ঘটে। বহু নেতৃস্থানীয় ইয়াহূদী নিহত হয়। কিনানাহ ইবনে রবী’ ইবনে আবুল হুক্বাইক্ব দুর্গের অভ্যন্তরে নিহত হয়। এমন কি উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম উনার পিতা হুইয়াই ইবনে আখ্ত্ববও নিহত হয়। 

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে আযীমুশ শান মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ:
খায়বার বিজয়ের পর যখন উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরাহ আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ উপস্থিত হন, তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরাহ আলাইহাস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনি যা পছন্দ করেন, তা বেছে নিন। যদি আপনি সম্মানিত ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে পছন্দ করেন, তাহলে আমি আপনাকে আমার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ কবূল করবো। আর যদি আপনি ইয়াহূদী ধর্ম পছন্দ করেন, তাহলে আমি আপনাকে মুক্ত করে দিবো, যাতে আপনি আপনার কাওমের সাথে মিলিত হতে পারেন। জবাবে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরাহ আলাইহাস সালাম তিনি বলেন,
يَا رَسُولَ اللَّهِ لَقَدْ هَوَيْتُ الإِسْلامَ وَصَدَّقْتُ بِكَ قَبْلَ أَنْ تَدْعُوَنِي.
অর্থ: “ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি সম্মানিত ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে মুহব্বত করি। আপনি আমাকে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার প্রতি আহ্বান করার পূর্বেই আমি আপনাকে সত্য হিসেবে তথা যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন হিসেবে স্বীকার করে নিয়েছি।” সুবহানাল্লাহ!
 ইহুদী ধর্মের প্রতি আমার কোন টান নেই। উম্মুল মু‘মিনী সাইয়্যিদাতুনা হযরত ‘আশিরাহ আলাইহাস সালাম তিনি আরো বলেন,
وَخَيَّرْتَنِي الْكُفْرَ وَالإِسْلامَ فَاللَّهُ وَرَسُولُهُ أَحَبُّ إِلَيَّ مِنَ الْعِتْقِ وَأَنْ أَرْجِعَ إِلَى قَوْمِي. 
অর্থ: “ আর আপনি আমাকে কুফরী বা সম্মানিত ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম যে কোন একটি গ্রহণের ইখতিয়ার মুবারক দিয়েছেন। স্বাধীন হওয়ার চেয়ে এবং আমার কওমের নিকট ফিরে যাওয়ার চেয়ে যিনি খালিক্ব মালিক রব আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মাহবূব হাবীব, মহাসম্মানিত রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারাই আমার নিকট অধিক প্রিয়।” সুবহানাল্লাহ! 
ইয়া রাসূলল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি আপনার সম্মানিত খিদমত মুবারকেই থাকতে চাই। দয়া করে আপনি আমাকে গ্রহণ করুন। সুবহানাল্লাহ! তারপর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার আরজী মুবারক কবূল করেন। সুবহানাল্লাহ!
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
وجمع السبي فجاءه دحية فقال: يا رسول الله أعطني جارية من السبي فقال: "اذهب فخذ جارية" فأخذ صفية بنت حيي فجاء رجل إلى نبي الله صلى الله عليه وسلم فقال: يا نبي الله أعطيت دحية صفية بنت حيي سيدة قريظة والنضير؟ ما تصلح إلا لك قال: "ادعوه بها" فجاء بها فلما نظر إليها النبي صلى الله عليه وسلم قال: "خذ جارية من السبي غيرها" وأعتقها وتزوجها 
অর্থ: “আর (খায়বর বিজয়ের পর) বন্ধিদেরকে একত্রিত করা হলে হযরত দাহ্ইয়তুল কালবী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি এসে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ আরজী পেশ করেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! দয়া করে আমাকে একজন দাসী দান করুন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনি গিয়ে একজনকে গ্রহণ করুন। তারপর তিনি উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরাহ আলাইহাস সালাম উনাকে গ্রহণ করলেন। অত:পর একজন হযরত ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি এসে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি উম্মুল মু‘মিনী সাইয়্যিদাতুনা হযরত ‘আশিরাহ আলাইহাস সালাম উনাকে হযরত দাহ্ইয়াতুল কালবী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার দিয়েছেন। উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরাহ আলাইহাস সালাম তিনি বনূ ক্বুরাইযাহ্ এবং বনূ নযীর গোত্রের সাইয়্যিদাহ। তিনি একমাত্র আপনার জন্যই উপযুক্ত। সুবহানাল্লাহ! তারপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরাহ্ আলাইহাস সালাম উনাকেসহ হযরত দাহ্ইয়াতুল কালবী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে আসতে বলুন। অত:পর উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরাহ আলাইহাস সালাম উনাকেসহ হযরত দাহ্ইয়াতুল কালবী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি আসলেন। যখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরাহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত মর্যাদা মুবারক উনার বিষয় লক্ষ্য করলেন, তখন হযরত দাহ্ইয়াতুল কালবী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে বললেন, উনাকে ব্যতীত অন্য কাউকে আপনি গ্রহণ করুন। তারপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরাহ আলাইহাস সালাম উনাকে মুক্ত করে দিয়ে সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ করেন।” সুবহানাল্লাহ! (‘আক্বীদাতু আহলিস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘য়াহ)
অপর বর্ণনায় রয়েছে,
وقد قتل زوجها وكانت عروساً فاصطفاها النبي صلى الله عليه وسلم لنفسه 
অর্থ: “উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরাহ্ আলাইহাস সালাম উনার দ্বিতীয় আহাল কিনানাহ্ খায়বরের জিহাদে নিহত হয়, তখন উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন নববধু। অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম উনার দ্বিতীয় শাদী মুবারক হওয়ার পর পরই উনার দ্বিতীয় আহাল কিননাহ্ খায়বার জিহাদে নিহত হয়। তারপর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরাহ্ আলইহাস সালাম উনাকে নিজের জন্য কবূল করেন।” সুবহানাল্লাহ! (্অল বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ ৪/২২৩)
খায়বার থেকে রওয়ানা হওয়ার পর ছহ্বা’ নামক স্থানে আযীমুশ শান মহাসম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ হওয়ার পর আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। এখানে সম্মানিত ওয়ালিমা মুবারক উনার মেহমানদারী মুবারক সম্পন্ন করা হয়। ছহ্বা আগমনকালে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে নিজ উটের পিঠে বসান আর নিজর সম্মানিত জুব্বা মুবারক দিয়ে উনাকে ছায়া মুবারক দেন, যাতে লোকেরা জানতে পারে যে, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম তিনি হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহু হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি তিনি সম্মানিত ও পবিত্র মদীনা শরীফ পৌঁছে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম উনাকে নিয়ে বিশিষ্ট ছাহাবী হযরত হারেস ইবনে নু’মান রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার সম্মানিত বাড়ী মুবারক-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক রাখেন। তিনি ছিলেন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার একজন অত্যন্ত প্রিয় ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক উনাকে অনেক সম্পদ মুবারক দিয়েছিলেন। তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার ব্যাপারে অগ্রগামী উনাদের অন্তুর্ভুক্ত ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম তিনি যখন হযরত হারেস ইবনে নু’মান রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার সম্মানিত বাড়ী মুবারক-এ সম্মানিত অবস্থান করছিলেন, তখন উনার সম্মানিত খুব ছূরত মুবারক উনার কথা শুনে উনাকে দেখার জন্য হযরত আনসার মহীলা ছাহাবীয়া রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুন্না উনারা সেখানে গমন করেন।” সুবহানাল্লাহ!

0 Comments: